অভিব্যক্তি ও অভিযোজন

  মাধ্যমিক জীবন বিজ্ঞান –

 অভিব্যক্তি অভিযোজন (চতুর্থ অধ্যায়) প্রশ্ন ও উত্তর | 

  1. ক্যাকটাসের কাঁটা যে অঙ্গের রূপান্তর সেটি হলো 

(A) কাণ্ড / 

(B) মূল / 

(C) পাতা / 

(D) ফুল 

Ans: (C) পাতা

  1. আধুনিক ঘোড়ার নাম হলো— 

(A) ইওহিপ্পাস / 

(B) মেরিচিপ্পাস / 

(C) ইকুয়াস / 

(D) মেসোহিপ্পাস 

Ans: (C) ইকুয়াস

  1. নীচের কোনটি আন্তঃপ্রজাতি সংগ্রামকে নির্দেশ করে তা শনাক্ত করো 

(A) মশার লার্ভা খাওয়ার জন্য গাপ্পি মাছদের মধ্যে সংগ্রাম 

(B) ইঁদুর ধরে খাওয়ার জন্য সাপ ও পেঁচার মধ্যে সংগ্রাম 

(C) একই জায়গার ঘাস খাওয়ার জন্য একদল হরিণদের মধ্যে সংগ্রাম 

(D) হরিণ শিকারের জন্য একটি জঙ্গলের বাঘদের মধ্যে সংগ্রাম । 

Ans: (B) ইঁদুর ধরে খাওয়ার জন্য সাপ ও পেঁচার মধ্যে সংগ্রাম 

  1. ল্যামার্কের তত্ত্বের সঙ্গে সম্পর্কিত শব্দগুচ্ছটি সঠিকভাবে নিরুপণ করো 

(A) অস্তিত্বের জন্য সংগ্রাম 

(B) প্রকরণের উৎপত্তি 

(C) অর্জিত গুণের বংশানুসরণ 

(D) প্রাকৃতিক নির্বাচন । 

Ans: (C) অর্জিত গুণের বংশানুসরণ

  1. পায়রার ফুসফুসের সঙ্গে যুক্ত বায়ুথলির সংখ্যা— 

(A) 7 / 

(B) 9 / 

(C) 11 / 

(D) 13 

Ans: (B) 9

  1. নীচের কোন প্রাণীটি বিশেষ নৃত্যভঙ্গি দ্বারা নিজ দলের অন্য সদস্যদের সাথে খাদ্যের উৎস সংক্রান্ত তথ্য আদান প্রদান করে তা শনাক্ত করো (A) শিম্পাঞ্জি 

(B) আরশোলা 

(C) ময়ূর 

(D) মৌমাছি । 

Ans: (D) মৌমাছি । 

  1. তিমির ফ্লিপার , পাখির ডানা ও মানুষের হাত হলো— 

(A) সমসংস্থ অঙ্গ / 

(B) সমবৃত্তীয় অঙ্গ / 

(C) নিষ্ক্রিয় অঙ্গ / 

(D) কোনোটিই নয় । 

Ans: (A) সমসংস্থ অঙ্গ

  1. কুমিরের হৃৎপিণ্ডের প্রকোষ্ঠের সংখ্যা 

(A) 2 / 

(B) 3 / 

(C) 4 / 

(D) 13 

Ans: (C) 4

  1. ‘ ফিলোজফিক জুলজিক ‘ গ্রন্থটির লেখক হলেন 

(A) মেন্ডেল / 

(B) ডারউইন / 

(C) অ্যারিস্টটল / 

(D) ল্যামার্ক 

Ans: (D) ল্যামার্ক

  1. সমসংস্থ অঙ্গ হলো— 

(A) তিমির প্যাডেল , পাখির ডানা ও মানুষের হাত / 

(B) পতঙ্গের ডানা / 

(C) পাখির ডানা / 

(D) উপরের কোনোটিই নয় 

Ans: (A) তিমির প্যাডেল , পাখির ডানা ও মানুষের হাত 

[ আরোও দেখুন:- Madhyamik Life Science Suggestion 2024 Click here ]

  1. জীবন সৃষ্টির সময় আদিম পরিবেশে নীচের কোনটি অনুপস্থিত ছিল ? 

(A) CH , / 

(B) NH , / 

(C) CO , 

(D) O² , 

Ans: O²

  1. শ্বাসমূল ( নিউম্যাটাফোর ) দেখা যায়- 

(A) পদ্ম / 

(B) সুন্দরী / 

(C) ক্যাকটাস / 

(D) সবক’টিতে 

Ans: (B) সুন্দরী

  1. মৌমাছির চক্রাকার নৃত্য সাহায্য করে— 

(A) বাসস্থান সন্ধানে / 

(B) প্রজননের জন্য / 

(C) খাদ্যের সন্ধানে / 

(D) শত্রুর হাত থেকে বাঁচার জন্য 

Ans: (C) খাদ্যের সন্ধানে

  1. বাষ্পমোচন হ্রাসে পাতা কাঁটায় রূপান্তরিত হয়— 

(A) পদ্ম / 

(B) ওপানশিয়া / 

(C) সুন্দরী / 

(D) সবক’টিতে 

Ans: (B) ওপানশিয়া

[ আরোও দেখুন:- Madhyamik All Subjects Suggestion 2024 Click here ]

অতিসংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর | মাধ্যমিক জীবন বিজ্ঞান – অভিব্যক্তি অভিযোজন (চতুর্থ অধ্যায়) প্রশ্ন ও উত্তর | Madhyamik Life Science Question and Answer : 

  1. একটি জীবন্ত জীবাশ্ম উদ্ভিদের উদাহরণ দাও । 

Ans: গিংক্‌গো বাইলোবা । 

  1. আলুর স্ফীতকন্দ ও ফণীমনসার পর্ণকাণ্ড কী জাতীয় অঙ্গ ? 

Ans: সমসংস্থ অঙ্গ ।

  1. মৌমাছিদের ভাষা 1967 খ্রিস্টাব্দে কোন বিজ্ঞানী আবিষ্কার করেন ? 

Ans: কার্ল ভন ফ্রিশ । 

  1. জীবাশ্ম বিষয়ক বিদ্যাকে কী বলে ? 

Ans: প্রত্ন জীববিদ্যা বাপ্যালিওণ্টলজি ।

  1. মানুষের একটি নিষ্ক্রিয় অঙ্গের নাম লেখো । 

Ans: অ্যাপেনডিক্স ।

  1. প্রথম উৎপন্ন নিউক্লিক অ্যাসিডটির নাম কী ? 

Ans: RNAT .

  1. উভচর প্রাণীর হৃৎপিণ্ডে কয়টি প্রকোষ্ঠ ? 

Ans: তিনটি ।

  1. ডারউইন কোন গ্রন্থে তাঁর ‘ প্রাকৃতিক নির্বাচনবাদ ’ – এর ব্যাখ্যা দেন ? 

Ans: ‘ অন দ্য অরিজিন অব স্পেসিস বাই মিস অব ন্যাচারাল সিলেকশন ’ গ্রন্থে ।

  1. বিবর্তনের ফলে উৎপন্ন কার্যহীন অঙ্গকে কী বলে ? 

Ans: নিষ্ক্রিয় অঙ্গ বলে ।

  1. জীবের উৎপত্তি সম্পর্কিত জৈবরাসায়নিক মতবাদের প্রশ্ন : প্রবক্তা কে ? 

Ans: ওপারিন ও হ্যালডেন । 

  1. বায়োজেনি কী ? 

Ans: আদিম কোশের উৎপত্তি ও জীবনের বিবর্তনের ঘটনা ।

  1. প্রাকৃতিক নির্বাচনবাদের প্রবক্তা কে ? 

Ans: চার্লস ডারউইন । 

  1. কুমিরের হৃৎপিণ্ডে প্রকোষ্ঠ সংখ্যা কত ? 

Ans: চার প্রকোষ্ঠ ।

  1. কোশের অগ্রদূত কাকে বলা হয় ? 

Ans: কোয়াসারভেটকে ।

  1. মৌমাছির বার্তা আদান প্রদানে কোন কোন নৃত্য সাহায্য করে ? 

Ans: চক্রাকার নৃত্য ও ওয়াগ্‌টেল নৃত্য ।

  1. ‘ ব্যবহার ও অপব্যবহার ‘ কার মতবাদ ? 

Ans: ল্যামার্কের । 

সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর | মাধ্যমিক জীবন বিজ্ঞান – অভিব্যক্তি অভিযোজন (চতুর্থ অধ্যায়) প্রশ্ন ও উত্তর | Madhyamik Life Science Question and Answer : 

  1. মৌমাছিদের বার্তা আদান – প্রদান কৌশল সংক্ষেপে লেখো । 

Ans: মৌমাছিদের সামাজিক জীব বলে । এদের মধ্যে বার্তা আদান – প্রদানের উন্নত প্রক্রিয়া দেখা যায় । যেসব শ্রমিক মৌমাছি খাবার সন্ধান করে তাদের স্কাউট বলে । খাবারের সন্ধান পেলে শ্রমিক মৌমাছি দুই প্রকার নৃত্য করে— 

চক্রাকার নৃত্য : যখন খাদ্যের উৎস 100 মিটারের মধ্যে । 

ওয়াল নৃত্য : যখন খাদ্যের উৎস 100 মিটারের বেশি তখন এই প্রকার নৃত্য করে । এটি দেখতে ইংরেজি 8 – এর মতো । 

  1. উটের জলক্ষয় কমানোর দু’টি অভিযোজনগত বৈশিষ্ট্য উল্লেখ করো । 

Ans: উটের জলক্ষয় কমানোর অভিযোজনগত বৈশিষ্ট্য – এদের চামড়া রোমযুক্ত এবং পুরু আবরণী দ্বারা আবৃত থাকে । ফলে বাষ্পীভবন কম হয় । ও এরা রেচন পদার্থকে শুষ্ক ইউরিক হিসেবে দেহ থেকে ত্যাগ করে । দেহে জলের পরিমাণ কমে গেলে এরা ঘন মূত্র ত্যাগ করে এবং দেহের জল সংরক্ষণ করে । 

  1. উটের RBC- এর অভিযোজনগত বৈশিষ্ট্য লেখো । 

Ans: উটের RBC ( লোহিত রক্তকণিকা ) ডিম্বাকার এবং নিউক্লিয়াসযুক্ত হয় । উটের ডিহাইড্রেশনের সময় অভিস্রবণীয় চাপের তারতম্য বা বেশি পরিমাণে জলগ্রহণ করলেও অভিস্রবণীয় চাপের কম বা বেশিতে RBC ফেটে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে না । কারণ RBC- র পর্দার প্রসারণ ক্ষমতা অনেক বেশি । 

  1. সমসংস্থ অঙ্গ কাকে বলে ? উদাহরণ দাও 

Ans:  যেসব অঙ্গ উৎপত্তি ও গঠনগতভাবে এক কিন্তু কার্যগতভাবে আলাদা তাদের সমসংস্থ অঙ্গ বলে । 

উদাহরণ : পাখির ডানা , মানুষের হাত । 

  1. জীব বিবর্তন বা জৈব অভিব্যক্তি কাকে বলে ?

Ans: যে মন্থর অথচ গতিশীল প্রক্রিয়ার মাধ্যমে পূর্বপুরুষ অর্থাৎ উদ্‌ংশীয় সরল জীব থেকে নতুন ধরনের অপেক্ষাকৃত জটিল জীবের উদ্ভব ঘটে তাকে জীব বিবর্তন বা জৈব অভিব্যক্তি বলে । 

  1. দুইটি জীবন্ত জীবাশ্ম উদ্ভিদের উদাহরণ দাও ।

Ans: জীবন্ত জীবাশ্ম উদ্ভিদ – সাইকাস , গিংক্‌গো বাইলোবা । 

  1. বায়োজেনেটিক সূত্র কাকে বলে ? 

Ans: হেকেল বায়োজেনেটিক সূত্রের প্রবক্তা । তাঁর মতানুসারে প্রতিটি জীব ভ্রুণ অবস্থায় খুব অল্পসময়ের জন্য হলেও পূর্বপুরুষের আকৃতি ও গঠনকে পুনরাবৃত্তি করে , একে ‘ অনটোজেনি রিপিটস ফাইলোজেনি ‘ বা বায়োজেনেটিক সূত্র বলে । 

  1. জীবাশ্ম কাকে বলে ? 

Ans: জীবের সম্পূর্ণ দেহ বা দেহের কোনো অংশ লক্ষ লক্ষ বছর ধরে পাললিক হ º = শিলাস্তরে চাপা পড়ে থাকার ফলে জীবের সামগ্রিক বা দেহাংশের ছাপ বা ছাঁচ সংরক্ষিত হন থাকলে তাকে জীবাশ্ম বলে । 

  1. অপসারী অভিব্যক্তি কাকে বলে ? 

Ans: উৎপত্তি ও গঠনগতভাবে একইরকমের অঙ্গযুক্ত জীবদেহে বিভিন্ন পরিবেশে অভিযোজনের জন্য যে বিবর্তন দেখা যায় তাকে অপসারী অভিব্যক্তি বলে । উদাহরণ : ঘোড়ার অগ্রপদ , মানুষের হাত , তিমির ফ্লিপার ইত্যাদি অঙ্গের উৎপত্তি ও গঠন একই কিন্তু কাৰ্য আলাদা ৷

  1. ভেনাস হৃৎপিণ্ড কাকে বলে ? উদাহরণ দাও ।

Ans: মাছের তৃৎপিণ্ডে সর্বদা কার্বন ডাই – অক্সাইড সমৃদ্ধ রক্ত প্রবাহিত হয় । তাই মাছের হৃৎপিণ্ডকে ভেনাস হৃৎপিণ্ড বলে । 

  1. জীবন্ত জীবাশ্ম কাকে বলে ? 

Ans: যেসকল জীব বহুবছর ধরে কোনোরকম পরিবর্তন ছাড়াই পৃথিবীতে বেঁচে আছে অথচ তাদের সমসাময়িক ও সমগোত্রীয় জীব অনেক আগেই পৃথিবী থেকে বিলুপ্ত হয়ে গেছে , তাদের জীবন্ত জীবাশ্ম বা লিভিং ফসিল বলে । 

উদাহরণ : পেরিপেটাস নামক সন্ধিপদ প্রাণী , সিলাকান্ধ নামক মাছ , হংসচঞ্জু নামক স্তন্যপায়ী প্রাণী ইত্যাদি হলো জীবন্ত জীবাশ্মের উদাহরণ । 

রচনাধর্মী প্রশ্নোত্তর | মাধ্যমিক জীবন বিজ্ঞান – অভিব্যক্তি অভিযোজন (চতুর্থ অধ্যায়) প্রশ্ন ও উত্তর | Madhyamik Life Science Question and Answer : 

  1. ল্যামার্কের অভিব্যক্তি সংক্রান্ত তত্ত্বের প্রতিপাদ্যের প্রধান দুটি বিষয় বর্ণনা করো । হৃৎপিন্ডের তুলনামূলক অংঙ্গসংস্থান কীভাবে অভিব্যক্তি মতবাদের স্বপক্ষে প্রমাণ হিসাবে কাজ করে ? 

Ans: 1. অঙ্গের ব্যবহার ও অব্যবহারের সূত্র : পরিবেশের সঙ্গে অভিযোজিত হওয়ার সময় কোনো কোনো অঙ্গ খুব বেশি ব্যবহার হওয়ার ফলে সবল ও সুগঠিত হয় । অন্যদিকে , কোনো কোনো অঙ্গ কম ব্যবহার হওয়ায় ধীরে ধীরে দুর্বল হয় এবং অবলুপ্ত হয়ে যায় । এটি অঙ্গের ব্যবহার ও অব্যবহারের সূত্র নামে পরিচিত । 

  1. অর্জিত বৈশিষ্ট্যের উত্তরাধিকার সূত্র : ল্যামার্কের মতে পরিবেশে অভিযোজিত হওয়ার সময় যেসব বৈশিষ্ট্য অর্জিত হয় বা উৎপন্ন হয় তা বংশপরম্পরায় সঞ্চারিত হয় এবং জীবের বিবর্তনে সাহায্য করে । এটি অর্জিত বৈশিষ্ট্যের উত্তরাধিকার সূত্র বা অর্জিত বৈশিষ্ট্যের বংশানুসরণ সূত্র নামে পরিচিত । 

  যে মন্থর অথচ গতিশীল প্রক্রিয়ার মাধ্যমে পূর্বপুরুষ অর্থাৎ উদ্বংশীয় সরল জীব থেকে নতুন ধরনের অপেক্ষাকৃত জটিল জীবের উদ্ভব ঘটে , তাকে বিবর্তন বা জৈব অভিব্যক্তি বলে ।

   বিভিন্ন মেরুদণ্ডী প্রাণীর হৃৎপিণ্ডের তুলনামূলক অঙ্গসংস্থান থেকে অভিব্যক্তির প্রমাণ সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যায় । মাছ , উভচর , সরীসৃপ , পক্ষী ও স্তন্যপায়ীর হৃৎপিণ্ড ক্রমান্বয়ে জটিল থেকে জটিলতর হয়েছে । মাছের হৃৎপিণ্ড একটি অলিন্দ ও একটি নিলয় নিয়ে গঠিত । অলিন্দ দু’টি পর্দা দিয়ে পৃথক থাকায় দূষিত ও বিশুদ্ধ রক্ত পৃথক থাকে কিন্তু নিলয়ে একটি প্রকোষ্ঠ থাকায় দুইপ্রকার রক্ত মিশে যায় । সরীসৃপের দু’টি অলিন্দ এবং নিলয়টি অর্ধবিভক্ত , তাই দুইপ্রকার রক্ত পৃথক করার প্রবণতা লক্ষ করা যায় । পক্ষী ও স্তন্যপায়ী প্রাণীর হৃৎপিণ্ড দু’টি অলিন্দ ও দুটি নিলয়যুক্ত , তাই দূষিত ও বিশুদ্ধ রক্ত পৃথকভাবে প্রবাহিত হয় । হৃৎপিণ্ডের গঠনগত পরিবর্তন থেকে সিদ্ধান্তে আসা যায় যে এরা সকলেই একই উদ্‌ংশীয় জীব থেকে উদ্ভূত হয়েছে এবং পরিবেশের সঙ্গে অভিযোজনের ফলে ক্রমশ জটিল থেকে জটিলতর হয়েছে । 

  1. বিবর্তনের সপক্ষে ঘোড়ার জীবাশ্মের গুরুত্ব সংক্ষেপে বর্ণনা করো । 

Ans: ঘোড়ার বিবর্তন : আধুনিক যুগের ঘোড়া ইকুয়াস ইওসিন যুগের ইওহিপ্পাস নামক শিয়ালের মতো জীব থেকে সৃষ্টি হয়েছে । ঘোড়ার বিবর্তনের মুখ্য বৈশিষ্ট্যগুলি হলো 

  1. ইওহিপ্পাস : ইওসিন যুগে সৃষ্টি হয় । উচ্চতা 40 cm । এদের অগ্রপদে চারটি ও পশ্চাদ্‌পদে তিনটি আঙুল ছিল । পেষকদাঁত খাঁজবিহীন । ইওহিপ্পাস থেকে মেসোহিপ্পাসের আবির্ভাব হয় । 
  2. মেসোহিপ্পাস : অলিগোসিন যুগে আবির্ভাব ঘটে । উচ্চতা 60 cm । দেখতে ভেড়ার মতো , অগ্র ও পশ্চাদ্‌পদে তিনটি আঙুল এবং মাঝের আঙুল মজবুত এবং লম্বা । তৃণভূমিতে বাস করত । মেসোহিপ্পাস থেকে মেরিচিপ্পাসের উৎপত্তি হয় । 
  3. মেরিচিপ্পাস : মায়োসিন যুগে আবির্ভাব ঘটে । অগ্র ও পশ্চাপদে আঙুলের সংখ্যা তিনটি কিন্তু শুধু মাঝেরটি মাটি স্পর্শ করত । উচ্চতা 100 cm , পেষক ও পুরপেষক ক্রাউনযুক্ত । এদের থেকে প্লিওহিপ্পাসের উৎপত্তি হয় । 
  4. প্লিওহিপ্পাস : প্লায়োসিন যুগে আবির্ভাব ঘটে । উচ্চতা 108 cm , মাঝের আঙুল লম্বা , মজবুত এবং খুরযুক্ত । দেখতে অনেকটা আধুনিক ঘোড়ার মতো । প্লিওহিপ্পাস থেকে বর্তমান ঘোড়ার আবির্ভাব হয় । 
  5. ইকুয়াস ( আধুনিক ঘোড়া ) : প্লিস্টোসিন যুগে আবির্ভাব হয় । উচ্চতা 1.5-16 | মিটার , মাঝের আঙুল মজবুত ও ক্ষুরযুক্ত । পেষক ও পুরুপেষক ক্রাউনযুক্ত । 
  6. জীবনের রাসায়নিক উৎপত্তির সংক্ষিপ্ত রূপরেখা মিলার ও ঊরের পরীক্ষার সাহায্যে বর্ণনা করো । 

Ans: মিলার ও ঊরের পরীক্ষা প্রমাণ করে জীবনের রাসায়নিক উৎপত্তি সঠিক । তার জন্য তারা একটি বড়ো গোলাকার কাঁচের ফ্লাক্সে CH ,, NH , ও H , গ্যাস 2 : 2 : 1 অনুপাতে নিয়ে জলীয় বাষ্পে রেখে , অন্য একটি গোলতল কাঁচের ফ্লাক্স থেকে ফোটানো জলীয় বাষ্প নলের সাহায্যে ঐ বড়ো ফ্লাক্সে পাঠান । এরপর বড়ো ফ্লাক্সে টাংস্টেন ইলেকট্রোডের সাহায্যে 60,000 ভোল্টের বিদ্যুৎ পাঠান । এবার ঘনীভবন যন্ত্রে উৎপন্ন হওয়া জৈব যৌগ U আকৃতির নলে জলীয় মাধ্যমে জমা হয় । প্রায় এক সপ্তাহ ধরে এই ঘটনা ঘটার পরে তারা উৎপন্ন জৈব যৌগগুলি শনাক্ত করে । তারা পেলেন গ্লাইসিন , অ্যালানিন ইত্যাদি অ্যামাইনো অ্যাসিড । এমনকী তাঁরা অ্যাডেনিনও পেয়েছিলেন । 

  এই পরীক্ষা থেকেই রাসায়নিক সংশ্লেষবাদ , জীবন উৎপত্তির ক্ষেত্রে বড় প্রমাণ সত্য হিসাবে পরিগণিত হয় । অর্থাৎ সরল যৌগ থেকেই ধীরে ধীরে জটিল জৈব যৌগের উৎপত্তি । 

  1. নয়া ডারউইনবাদ বলতে কী বোঝায় ? ডারউইনবাদের ত্রুটি উল্লেখ করো । 

Ans: ভাইসম্যান , হুগো দ্য ভ্রিস , গোল্ডস্মিথ , হ্যালডেন প্রমুখ বিজ্ঞানী ডারউইনের তত্ত্বকে বা মতবাদকে নতুন করে আণবিক জীববিদ্যা , জেনেটিক্স , বাস্তুবিদ্যা প্রভৃতির আলোকে বর্ণনা করেছেন যা নয়া ডারউইনবাদ বা আধুনিক সংশ্লেষণবাদ [ Modern Synthetic Theory ] নামে পরিচিত । 

ডারউইনবাদের ত্রুটি : 1) ডারউইন দেহকোশ ও জননকোশের প্রকরণকে পৃথক করতে পারেননি । 2) ডারউইন প্রকরণের বর্ণনা করলেও প্রকরণের উৎপত্তির কারণ বর্ণনা করেননি । 2) ডারউইন যোগ্যতমের উদ্বর্তন বর্ণনা করলেও এর কারণ সঠিকভাবে বর্ণনা করতে পারেননি । 4) ডারউইন পরিব্যক্তি বা মিউটেশনকে ‘ প্রকৃতির খেলা ‘ বলেছিলেন । 

  1. জলজ অভিযোজনে রুই মাছের পটকার এবং খেচর প্রাণী হিসেবে পায়রার বায়ুথলির গুরুত্ব আলোচনা করো । 

Ans: রুই মাছের পটকার ভূমিকা : রুই মাছের জলজ অভিযোজনে পটকা অন্যতম ভূমিকা পালন করে । রুই মাছের পটকা দেহগহ্বরে অবস্থান করে । পটকা দুই প্রকোষ্ঠ বিশিষ্ট । অগ্রপ্রকোষ্ঠে রেড গ্রন্থি থাকে যা গ্যাস সৃষ্টি করে এবং পশ্চাৎ প্রকোষ্ঠে রেটিয়া মিরাবিলিয়া গ্রন্থি থাকে যা গ্যাস শোষণ করে । পটকাতে গ্যাস উৎপন্ন হলে দেহ হালকা হয় এবং মাছ জলে ভাসে । আবার পটকাতে গ্যাস শোষিত হলে দেহ ভারী হয় এবং মাছ জলের নীচে নেমে যায় । এইভাবে মাছের পটকা মাছকে জলে ভাসতে এবং জলের নীচে নামতে সাহায্য করে । 

পায়রার বায়ুথলির ভূমিকা : বায়ুতে ওড়ার জন্য পায়রার বায়ুথলি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে । পায়রার ফুসফুসের সঙ্গে 9 টি বায়ুথলি ( Air Sac ) যুক্ত থাকে । বায়ুথলিগুলি বায়ুপূর্ণ থাকার জন্য দেহ হালকা হয় , ফলে সহজেই পায়রা উড়তে পারে । বায়ুথলি ওড়ার সময় দেহের ভারসাম্য নিয়ন্ত্রণ করে । 

  1. অভিব্যক্তির সপক্ষে পরোক্ষ প্রমাণ হিসেবে মেরুদণ্ডী প্রাণীদের অগ্রপদের সদৃশ ব্যাখ্যা করো । 

অথবা , সমসংস্থ অঙ্গ বলতে কী বোঝায় ? উদাহরণ দিয়ে বোঝাও । 

Ans: সমসংস্থ অঙ্গ : বিভিন্ন প্রকার প্রাণীর যে সকল অঙ্গ উৎপত্তিগত ও গঠনগতভাবে একই কিন্তু কার্য আলাদা তাদের সমসংস্থ অঙ্গ বা হোমোলোগাস অর্গান ( Homologous organ ) বলে । 

উদাহরণ : পাখির ডানা , বাদুড়ের ডানা , সিল বা তিমির অগ্রপদ ( ফ্লিপার ) , ঘোড়ার অগ্রপদ এবং মানুষের অগ্রপদ ( হাত ) হলো সমসংস্থ অঙ্গ । কারণ এদের উৎপত্তি ও গঠন একই রকমের । প্রত্যেকটি অঙ্গ হিউমেরাস , রেডিয়াস ও আলনা , করপাল , মেটাকরপাল এবং ফ্যালেঞ্জস অস্থি নিয়ে গঠিত এবং প্রত্যেকটি পেকটোরাল গার্ডেল নামক হাড়ের সঙ্গে যুক্ত । বিভিন্ন প্রকার কাজ করে , যেমন— পাখি ও বাদুড়ের অগ্রপদ ওড়ার জন্য , তিমির অগ্রপদ ( ফ্লিপার ) সাঁতার কাটার জন্য , ঘোড়ার অগ্রপদ দৌড়ানোর জন্য , মানুষের অগ্রপদ বিভিন্ন প্রকার কাজ করার জন্য ব্যবহার হয় । 

  সমসংস্থ অঙ্গগুলি থেকে বোঝা যায় যে উক্ত জীবগুলির উৎপত্তি একই জায়গা থেকে অর্থাৎ পূর্বপুরুষ একই কিন্তু বিভিন্ন পরিবেশে বসবাসের জন্য অভিযোজনের ফলে বিভিন্ন অঙ্গের গঠনগত পরিবর্তন হয়েছে । 

  1. ল্যামার্কের মতবাদের সপক্ষে এবং বিপক্ষে একটি করে উদাহরণ দাও । ল্যামার্কবাদের সঙ্গে ডারউইনবাদের পার্থক্য লেখো । 

Ans: ল্যামার্কবাদের সপক্ষে উদাহরণ : ল্যামার্কের মতে বহুবছর আগে ছোটো গলাযুক্ত জিরাফের আবির্ভাব হয়েছিল । পরবর্তীকালে ঘাস ও ছোটো উদ্ভিদ হ্রাস পাওয়ার কারণে খাদ্যাভাব দেখা দেয় , ফলে জিরাফ উঁচু গাছের পাতা খাওয়ার চেষ্টা করে এবং কালক্রমে লম্বা গলা ও লম্বা পাযুক্ত জিরাফের আবির্ভাব হয় । 

ল্যামার্কের মতবাদের বিপক্ষে উদাহরণ : বিজ্ঞানী ভাইসম্যান ইঁদুরের ওপরে পরীক্ষা করে ল্যামার্কের মতবাদকে ভুল বলে যুক্তি দেন । তিনি প্রথমে একজোড়া ইঁদুর দম্পতির লেজ কেটে দেন এবং প্রজনন ঘটান । দেখা গেল অপত্যদের লেজ আছে । তিনি এইভাবে 35 জনু পর্যন্ত লেজ কাটলেন , তা সত্ত্বেও লেজবিহীন ইঁদুর সৃষ্টি করা সম্ভব হয়নি । 

  1. জীবাশ্ম কাকে বলে ? জীবাশ্মের গুরুত্ব লেখো ।

Ans: জীবাশ্ম : দীর্ঘকাল যাবৎ ভূগর্ভের পাললিক শিলাস্তরে চাপা পড়ে থাকা জীবের সমগ্র দেহ বা আংশিক দেহ বা ছাপকে জীবাশ্ম বলে । জীবাশ্ম সম্পর্কিত বিজ্ঞানকে প্রত্নজীববিদ্যা বা প্যালেনটোলজি বলে । 

জীবাশ্মের গুরুত্ব – 1) জীবাশ্ম অভিব্যক্তির প্রত্যক্ষ প্রমাণ হিসেবে কাজ করে । 

2) জীবাশ্ম আধুনিক যুগের জীবের পূর্বপুরুষের অস্তিত্ব খুঁজে পেতে সাহায্য করে । 

3) জীবাশ্ম প্রাণী বা উদ্ভিদের বয়স ও সৃষ্টির সময়কাল জানতে সাহায্য করে । 

4) জীবাশ্ম লুপ্ত প্রাণী ও উদ্ভিদের ভৌগোলিক বিস্তার জানতে সাহায্য করে । 

5) জীবাশ্ম দু’টি ভিন্ন গোষ্ঠীর প্রাণী বা উদ্ভিদের মধ্যে সংযোগ রক্ষাকারী জীবের অধ্যয়নে এবং এক প্রকার জীব থেকে অপর প্রকার জীবের উৎপত্তির বিষয়ে ধারণা দিতে সাহায্য করে । 

  1. অভিযোজন কাকে বলে ? অভিযোজনের তিনটি গুরুত্ব লেখো । 

Ans: সংজ্ঞা : পরিবর্তনশীল পরিবেশের সঙ্গে খাপ খাইয়ে চলার জন্য জীবদেহের গঠনগত , শারীরবৃত্তীয় এবং আচরণগত স্থায়ী পরিবর্তন যা বিবর্তনে সাহায্য করে তাকে অভিযোজন বলে । — অভিযোজনের গুরুত্ব বা উদ্দেশ্য 1) পরিবর্তনশীল পরিবেশে খাপ খাইয়ে নিতে সাহায্য করে । 2) অভিযোজন প্রতিকূল পরিবেশকে সহজে অতিক্রম করতে সাহায্য করে । 3) অভিযোজন জীবকে আত্মরক্ষায় সাহায্য করে ।

  1. জাঙ্গল উদ্ভিদ বা জেরোফাইট কাকে বলে ? ক্যাকটাসের অভিযোজনগত বৈশিষ্ট্য উল্লেখ করো । 

Ans: জেরোফাইট : ক্যাকটাস জাতীয় উদ্ভিদ যেমন ফণীমনসা , শতমূলী ইত্যাদি | শুষ্ক ও বালুকাময় পরিবেশে জন্মায় । এদের জাঙ্গল বা জেরোফাইট বলে । এদের অভিযোজনগত বৈশিষ্ট্যগুলি হলো— 

কাণ্ড : 1) কাণ্ড রসালো , সবুজ ও চ্যাপ্টা । একে পর্ণকাণ্ড বলে ( ফণীমনসা ) । খর্বাকার এবং কাষ্ঠল হয় । 2) বাষ্পমোচন রোধ করার জন্য কাণ্ডের ত্বক পুরু , কিউটিকলযুক্ত । 

মূল :  1) মূল সুগঠিত , দীর্ঘ ও শাখাপ্রশাখাযুক্ত । 

পাতা : 1) বাষ্পমোচনের হার কমানোর জন্য পাতা কাঁটায় রূপান্তরিত । 

  1. নিম্নলিখিত অঙ্গগুলির অভিযোজনগত গুরুত্ব উল্লেখ করো । – 1) সুন্দরীর শ্বাসমূল , 2) ক্যাকটাসের পাতা , 3) রুই মাছের পটকা , 4) পায়রার বায়ুথলি । 

Ans: 1. সুন্দরীর শ্বাসমূল : লবণাক্ত মাটিতে অক্সিজেনের পরিমাণ কম থাকায় বেশ কিছু শাখা – প্রশাখা , মূল মাটির উপরে উঠে আসে । এদের শ্বাসমূল বলে । শ্বাসমূলের অসংখ্য ছিদ্র দিয়ে উদ্ভিদ অক্সিজেন গ্রহণ করে । 

  1. ক্যাকটাসের পাতা : বাষ্পমোচন রোধ করার জন্য ক্যাকটাসের পাতা কাঁটায় রূপান্তরিত হয়েছে । 
  2. রুই মাছের পটকা : রুই মাছের পটকা মাছকে জলের উপরে ভাসতে ও জলের নীচে নামতে সাহায্য করে । 
  3. পায়রার বায়ুথলি : পায়রার বায়ুথলি দীর্ঘক্ষণ ওড়ার সময় অতিরিক্ত অক্সিজেন সরবরাহ করে এবং দেহের ভারসাম্য নিয়ন্ত্রণ করে । 
  4. উটের লোহিত রত্তকণিকার আকৃতি : উটের লোহিত রক্তকণিকা তুলনামূলকভাবে বড়ো , ডিম্বাকার ও নিউক্লিয়াসযুক্ত । ফলে উট অভিস্রবণীয় চাপের তারতম্য সহ্য করতে পারে । বেশি পরিমাণে জলগ্রহণ করলেও লোহিত রক্তকণিকা ফেটে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে না ।

আরো প্রশ্নোত্তর

অভিব্যক্তি ও অভিযোজন -PART-2

 অভিব্যাক্তি ও অভিযোজন – সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর-PART-3

অভিব্যক্তি ও অভিযোজন -PART-4

অভিব্যক্তি ও অভিযোজন-PART-5

 ©kamaleshforeducation.in(2023)

 

 

 

 

 

 

 

 

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!