শ্রেণি – নবম |
বিভাগ – বাংলা |
অধ্যায় – চিঠি (Chithi)
নবম শ্রেণির বাংলা বিভাগ থেকে চিঠি প্রবন্ধ সম্পূর্ণ প্রশ্ন উত্তর আলোচনা।
সঠিক উত্তর নির্বাচন করো (MCQ)
[প্রতিটি প্রশ্নের প্রশ্নমান ১]
১। ‘একখানা চিঠি কাল পেয়েছি’ – এখানে স্বামী বিবেকানন্দ যাঁর চিঠি পাওয়ার কথা লিখেছেন তিনি হলেন- ক) মিসেস সেভিয়ার খ) মিস মুলার গ) মিঃ ই টি স্টার্ডি ঘ) মিস নোব্ল
উত্তর- ‘একখানা চিঠি কাল পেয়েছি’ – এখানে স্বামী বিবেকানন্দ যাঁর চিঠি পাওয়ার কথা লিখেছেন তিনি হলেন- গ) মিঃ ই টি স্টার্ডি।
২। সর্বোপরি তোমার ধমনিতে প্রবাহিত – ক) কেল্টিক রক্ত খ) ভারতীয় রক্ত গ) জার্মান রক্ত ঘ) মিশরীয় রক্ত
উত্তর- সর্বোপরি তোমার ধমনিতে প্রবাহিত – ক) কেল্টিক রক্ত।
৩। তিনি আমেরিকায় আমার বিশেষ উপকারী বন্ধু ছিলেন – এখানে তিনি হলেন – ক) মিসেস বুল খ) মিসেস সেভিয়ার গ) মিস ম্যাকলাউড ঘ) মার্গারেট নোব্ল
উত্তর- তিনি আমেরিকায় আমার বিশেষ উপকারী বন্ধু ছিলেন – এখানে তিনি হলেন – ক) মিসেস বুল।
৪। কর্মে ঝাঁপ দেবার পূর্বে বিশেষভাবে চিন্তা করো – যাঁকে চিন্তা করার কথা হয়েছে তিনি হলেন- ক) নিবেদিতা খ) মিসেস সেভিয়ার গ) মিসেস বুল ঘ) মি. স্টার্ডি
উত্তর- কর্মে ঝাঁপ দেবার পূর্বে বিশেষভাবে চিন্তা করো – যাঁকে চিন্তা করার কথা হয়েছে তিনি হলেন – ক) নিবেদিতা।
৫। ইংল্যান্ডে বেদান্ত প্রচারের কাজে স্বামী বিবেকানন্দকে বিশেষ সাহায্য করেছিল – ক) মিস্টার ই টি স্টার্ডি খ) মিস হেনরিয়েটা মুলার গ) ক্যাপ্টেন যে এইচ সেভিয়ার ঘ) মিসেস সারা বুল
উত্তর- ইংল্যান্ডে বেদান্ত প্রচারের কাজে স্বামী বিবেকানন্দকে বিশেষ সাহায্য করেছিলেন – ক) মিস্টার ই টি স্টার্ডি।
৬। … তুমি ঠিক সেইরূপ নারী – ক) যে বিদ্রোহিণী খ) যে শান্ত গ) যাকে আজ প্রয়োজন ঘ) যে সরল প্রকৃতির
উত্তর- … তুমি ঠিক সেইরূপ নারী – গ) যাকে আজ প্রয়োজন
৭। ‘সরাসরি তোমাকে লেখা ভালো।’ – এখানে ‘তোমাকে’ বলতে স্বামীজি যার কথা বুঝিয়েছেন- ক) মিস্ নোব্ল খ) মিসেস সেভিয়ার গ) মিসেস বুল ঘ) মিস ম্যাকলাউড
উত্তর- ‘সরাসরি তোমাকে লেখা ভালো।’ – এখানে ‘তোমাকে’ বলতে স্বামীজি যার কথা বুঝিয়েছেন – ক) মিস্ নোব্ল।
৮। স্বামী বিবেকানন্দ পাঠ্য ‘চিঠি’টি লিখেছেন – ক) মাদ্রাজ থেকে খ) শিলং থেকে গ) আলমোড়া থেকে ঘ) আমেরিকা থেকে
উত্তর- স্বামী বিবেকানন্দ পাঠ্য ‘চিঠি’টি লিখেছেন – গ) আলমোড়া থেকে।
৯। ‘নারীকূলের রত্নবিশেষ ;’ হলেন – ক) মিস মুলার খ) মিসেস সেভিয়ার গ) মিস নোব্ল্ ঘ) মিসেস বুল।
উত্তর- ‘নারীকূলের রত্নবিশেষ ;’ হলেন – খ) মিসেস সেভিয়ার।
১০। মিসেস বুলের বয়স প্রায় – ক) ষাট বছর খ) আশি বছর গ) পঞ্চাশ বছর ঘ) নব্বই বছর
উত্তর- মিসেস বুলের বয়স প্রায় – গ) পঞ্চাশ বছর।
©kamaleshforeducation.in
অতিসংক্ষিপ্ত প্রশ্ন (VSAQ)
[প্রতিটি প্রশ্নের প্রশ্নমান ১]
১। ‘আমেরিকার সংবাদে জানলাম…’ – আমেরিকার কোন্ সংবাদ পত্রলেখক পেয়েছেন?
উত্তর – পত্রলেখক অর্থাৎ স্বামী বিবেকানন্দ ‘আমেরিকার সংবাদে’ জানতে পেরেছেন যে, তাঁর দুজন বন্ধু – মিস ম্যাকলাউড এবং মিসেস বুল শরৎকালে ভারত পরিভ্রমণে আসছেন।
২। ‘… তাঁর সঙ্গে বনিয়ে চলা অসম্ভব।’ কার সঙ্গে বনিয়ে চলা অসম্ভব বলে পত্রলেখক মনে করেন?
উত্তর – পত্রলেখক অর্থাৎ স্বামী বিবেকানন্দ তাঁর লেখা চিঠিতে মিস মুলার-এর সঙ্গে বনিয়ে চলা অসম্ভব বলে উল্লেখ করেছেন।
৩। ‘ধীরামাতা’ কে?
উত্তর – স্বামীজির শিষ্যা, মিসেস সারা বুল-কে স্বামীজি অনেক চিঠিতে ‘মা’ বা ‘ধীরামাতা’ নামে সম্বোধন করতেন।
৪। মিস নোব্ল্ – এর লেখা একটি বই এর নাম লেখো।
উত্তর – মিস নোব্ল্ বা ভগিনী নিবেদিতার রচিত একটি উল্লেখযোগ্য বইয়ের নাম ‘The Master as I saw him’।
5। “তিনি আজন্ম নেত্রী!” – কার সম্পর্কে স্বামী বিবেকানন্দ এ কথা বলেছেন?
উত্তর – স্বামী বিবেকানন্দ মিস মুলার সম্পর্কে এ কথা বলেছেন।
©kamaleshforeducation.in
6। “তাঁর বর্তমান সংকল্প এই যে” – কোন সংকল্পের কথা বলে হয়েছে?
উত্তর – মিসেস মুলার কলকাতায় নিজের, মিস নোবেল এবং ইউরোপ থেকে আসা বন্ধুদের জন্য বাড়ি ভাড়া নেওয়ার সংকল্প নিয়েছেন; এখানে তার কথাই বলা হয়েছে।
7। মিস মুলারের সংকল্প সফল না হওয়ার কারণ হিসাবে স্বামীজি কি মত পোষণ করেছেন?
উত্তর – স্বামীজির মতে মিস মুলারের রুক্ষ মেজাজ এবং অস্থিরচিত্ততাই তাঁর সংকল্প সফল না হওয়ার কারণ।
8। মিসেস বুল কোথায় থাকতেন?
উত্তর –মিসেস বুল আমেরিকার বস্টন শহরে থাকতেন।
9। মিঃ স্টার্ডির হতাশ হওয়ার কারণ কি?
উত্তর – লন্ডনের কাজ পন্ড হওয়ার কারণে মিঃ স্টার্ডির হতাশ হয়েছেন।
10। স্বামী বিবেকানন্দের মতে সেভিয়ার দম্পতি কেমন মানুষ ছিলেন?
উত্তর – স্বামীজীর মতে বিবেকানন্দের মতে সেভিয়ার দম্পতিই একমাত্র ইংরেজ যারা ভারতীয়দের ঘৃণা করেন না এবং কোনভাবেই ভারতীয়দের উপর কর্তৃত্ব জাহির করেন না।
©kamaleshforeducation.in
সংক্ষিপ্ত উত্তর ভিত্তিক প্রশ্ন (SAQ)
[প্রতিটি প্রশ্নের প্রশ্নমান ৩]
১। পাঠ্য ‘চিঠি’ টি মিস নোব্লকে স্বামী বিবেকানন্দ কবে, কোথা থেকে লিখেছিলেন? (১+২)
উত্তর – পাঠ্য ‘চিঠি’-টি স্বামী বিবেকানন্দ, মিস নোব্ল অর্থাৎ ভগিনী নিবেদিতাকে আলমোড়া থেকে ২৯শে জুলাই ১৮৯৭ সালে লিখেছিলেন।
২। কোন্ বিশেষ প্রয়োজনে স্বামী বিবেকানন্দ মিস নোব্ল্কে এই চিঠিটি লিখেছেন?
উত্তর – স্বামী বিবেকানন্দের ইংরেজ ভক্ত স্টার্ডির চিঠি পড়ে স্বামীজি জানতে পেরেছেন যে মিস নোব্ল্ অর্থাৎ স্বামীজির শিষ্যা ভগিনী নিবেদিতা ভারতে এসে কাজ করার জন্য সংকল্প নিয়েছেন। বর্তমান পাঠ্য চিঠির মাধ্যমে স্বামীজি ভারতের বাস্তব চিত্র, ভারতের হিতে ভগিনী নিবেদিতার প্রয়োজনীয়তা, সম্ভাব্য প্রতিকুলতা এবং ভবিষ্যৎ কর্মপন্থা সম্পর্কে মিস নোব্ল্-কে অবগত করেছেন।
৩। ‘… তবে অবশ্য তোমাকে শতবার স্বাগত জানাচ্ছি।’ – উদ্দিষ্ট ব্যাক্তি’কে ‘শতবার স্বাগত’ জানানোর কারণ কী?
উত্তর – স্বামী বিবেকানন্দ তাঁর চিঠিতে মিস নোব্ল্-এর উদ্দেশ্যে আলচ্য উক্তিটি করেছেন। বেদান্ত ভাবনায় উদ্দিপিত হয়ে, মিস নোব্ল্ ভারতে এসে ভারতবাসীর সেবার জন্য সংকল্প করেছেন। কিন্তু তাঁর এই কাজে অনেক প্রতিকুলতা রয়েছে, যেমন মিস নোব্ল্ ইউরোপের বাসিন্দা, ইউরোপের সুখ – স্বাচ্ছন্দ্যের মধ্যে দিয়ে বড় হয়েছেন, পরাধীন ভারতে সেই সুখ – স্বাচ্ছন্দ্য অমিল। আবার গ্রীষ্মপ্রধান ভারতের আবহাওয়া, ইউরোপের আবহাওয়ার সম্পূর্ণ বিপরীত। তৎকালীন ভারতে অনগ্রসর ভারতবাসী জাত – ধর্মের ভিত্তিতে শ্বেতাঙ্গ-দের ঘৃণা করত, ফলে মিস নোব্ল্ তাদের কাছ থেকে অভ্যর্থনা পাবেন না। অপরদিকে তাঁর নিজের লোক অর্থাৎ অন্যান্য ইউরোপিয়ানরা মিস নোব্ল্-কে খামখেয়ালি মনে করবে এবং তাঁর প্রতি পদক্ষেপকে সন্দেহের চোখে দেখবে। স্বামীজির মতে এই সকল প্রতিকুলতাকে দূরে সরিয়ে রেখে মিস নোব্ল্ যদি ভারতে এসে কাজ করতে চান তাহলে তিনি তা ‘শতবার স্বাগত’ জানাবেন।
৪। ‘মরদ কি বাত হাতি কা দাঁত’ – কথাটি কোন্ অর্থে ব্যবহৃত হয়েছে?
উত্তর – এই প্রবাদটি স্বামী বিবেকানন্দ, মিস নোব্ল্-কে লেখা চিঠিতে তাঁর নিজ স্বভাব বোঝাতে ব্যবহার করেছেন। এই কথার অর্থ হল হাতির দাঁত যেমন একবার গজালে তা আর ভেতরে প্রবেশ করে না ঠিক তেমন ভাবে মরদ বা পুরুষের জবান বা মুখের কথা একবার উচ্চারিত হলে তা ফিরিয়ে নেওয়া যায় না। তাঁর লেখা চিঠিতে স্বামীজী মিস নোব্ল্-কে ভারতের নানান প্রতিকূলতা সম্পর্কে অবহিত করিয়েছেন। এর সাথে তিনি উল্লেখ করেছেন যে মিস নোব্ল্-এর কাজে যদি তিনি অসফল হন বা তিনি তাঁর কাজ ত্যাগ করেন, তা স্বতেও স্বামীজি মিস নোব্ল্-এর সাথে থাকবেন কারণ তিনি তাকে কথা দিয়েছেন এবং খাঁটি লোকের কথায় কোনো নড়চড় নেই।
৫। “এখন আমার দৃঢ় বিশ্বাস হয়েছে যে”, – বক্তার এখন কোন্ বিশ্বাস দৃঢ় হয়েছে? তিনি কাকে নিজের সেই বিশ্বাসের কথা জানিয়েছেন? (২+১)
উত্তর – আলোচ্য উক্তিটি স্বামী বিবেকানন্দের, মিস নোব্ল্-কে লেখা চিঠি থেকে নেওয়া হয়েছে। এই চিঠির মাধ্যমে স্বামীজি মিস নোব্ল্-কে জানিয়েছেন যে তাঁর – ‘দৃঢ় বিশ্বাস’ হয়েছে যে – ভারতের কাজে মিস নোব্ল্-এর এক বিরাট ভবিষ্যৎ রয়েছে। স্বামীজি বলেছেন যে তিনি মনে করেন – ভারতের জন্য, বিশেষত ভারতের নারী সমাজের জন্য, পুরুষের চেয়ে নারীর – একজন প্রকৃত সিংহীর প্রয়োজন।
©kamaleshforeducation.in
রচনাধর্মী প্রশ্ন (LA)
[প্রতিটি প্রশ্নের প্রশ্নমান ৫]
১।“নারীকূলের রত্নবিশেষ;” – কার সম্পর্কে লেখকের এই মন্তব্য? তাঁর চরিত্র সম্পর্কে লেখক কী কী জানিয়েছেন? (২+৩)
উত্তর – স্বামীজি তাঁর চিঠিতে মিসেস সেভিয়ার সম্পর্কে এই প্রশংসাসূচক মন্তব্য করেছেন। ক্যাপ্টেন জে এইচ সেভিয়ারের স্ত্রী মিসেস সেভিয়ার ছিলেন স্বামী বিবেকানন্দের বিখ্যাত ইংরেজ শিষ্যা। তিনি বেদান্ত প্রচারের কাজে নিজ জীবন উৎসর্গ করেছিলেন।
স্বামীজী, মিসেস সেভিয়ার দম্পতী সম্পর্কে বলেছেন যে তারাই একমাত্র ইংরেজ যারা এশিয় তথা ভারতীয়দের ঘৃণা করেন না। তাঁরা ভারতীয়দের উপর মুরুব্বীয়ানা বা অধিপত্য ফলাতে আসেননি। কিন্তু তাদের কোন নির্দিষ্ট কার্যপ্রণালী নেই, ফলে তাঁদের সদিচ্ছা থাকা স্বত্বেও তা ফলপ্রসু হচ্ছে না। স্বামীজী, মিস নোব্ল্-কে উপদেশ দিয়েছেন যে তিনি সেভিয়ার দম্পতীকে তাঁর সহকর্মীরূপে গ্রহণ করতে পারেন এর ফলে উভয়েরই কাজ করতে সুবিধা হবে।
২।‘চিঠি’ রচনা অবলম্বনে স্বামী বিবেকানন্দের স্বদেশভাবনার পরিচয় দাও।
উত্তর – মহান সাধক স্বামী বিবেকানন্দ ছিলেন একজন প্রকৃত ভারতপ্রেমী। তিনি আজীবনকাল তাঁর কাজের মধ্যে দিয়ে ভারতের সামাজিক এবং আধ্যাত্মিক উন্নতিসাধনের নিরলস প্রচেষ্টা করেগেছেন। আলোচ্য চিঠিটি স্বামীজি তাঁর অন্যতম শিষ্যা মিস নোব্ল্-কে লিখেছেন। চিঠিটির মূল উদ্দেশ্য ভিন্ন হলেও এই চিঠির মাধ্যমে ভারতবাসীর প্রতি তাঁর মনোভাব স্পষ্ট ভাবে ফুটে উঠেছে।
স্বামীজি বিশেষ করে ভারতের পিছিয়ে পড়া নারীসমাজকে নিয়ে চিন্তিত, তিনি বলেছেন ‘ভারতের নারীসমাজের জন্য, পুরুষের চেয়ে নারীর – একজন প্রকৃত সিংহীর প্রয়োজন’। স্বামীজি মনে করেছেন মিস নোব্ল্-এর শিক্ষা, ঐকান্তিকতা, পবিত্রতা, অসীম ভালোবাসা, দৃঢ়তা ভারতের নারীসমাজকে এগিয়ে নিয়ে চলতে পারে। আবার, আমরা স্বামীজির কলমে ভারতবাসীর কুসংস্কারাচ্ছন্ন ভাবনা, পরাধীন মানসিকতা, জাতি ভাবনা প্রভৃতি সম্পর্কে গভীর ক্ষেদ লক্ষ্য করতে পারি। এভাবে স্বামীজির লেখনী থেকে তাঁর তীব্র দেশপ্রেমের পরিচয় সুস্পষ্টভাবে পাওয়া যায়।