রাধারানী প্রশ্ন উত্তর |
শ্রেণি – নবম |
বিভাগ – বাংলা | অধ্যায় –
রাধারানী (Radharani)
নবম শ্রেণির বাংলা বিভাগের রাধারানী গল্প থেকে সম্পূর্ণ প্রশ্ন উত্তর আলোচনা।
সঠিক উত্তর নির্বাচন করো (MCQ)
[প্রতিটি প্রশ্নের প্রশ্নমান ১]
১। ‘রাধারাণী’ রচনাংশের ঘটনার সময় – (ক) শীতকাল (খ) বর্ষাকাল (গ) গ্রীষ্মকাল (ঘ) বসন্তকাল
উত্তর- ‘রাধারাণী’ রচনাংশের ঘটনার সময় – (খ) বর্ষাকাল।
২। রাধারাণীর মা পীড়িত হয়েছিলেন – (ক) রথের দিন (খ) রথের আগে (গ) রথের পরে (ঘ) রথের পনেরো দিন আগে
উত্তর- রাধারাণীর মা পীড়িত হয়েছিলেন – (খ) রথের আগে।
৩। রাধারাণীরদের সম্পত্তির অর্থমূল্য ছিল – (ক) কুড়ি লক্ষ টাকা (খ) তিরিশ লক্ষ টাকা (গ) আট লক্ষ টাকা (ঘ) দশ লক্ষ টাকা
উত্তর- রাধারাণীরদের সম্পত্তির অর্থমূল্য ছিল – (ঘ) দশ লক্ষ টাকা।
৪। ‘নোটখানি তাহারা ভাঙাইল না’ – কারণ – (ক) তাদের দরকার ছিল না (খ) নিজের টাকা নয় বলে (গ) তাতে নাম লেখা ছিল বলে (ঘ) তারা দরিদ্র কিন্তু লোভী নয়
উত্তর- ‘নোটখানি তাহারা ভাঙাইল না’ – কারণ – (ঘ) তারা দরিদ্র কিন্তু লোভী নয়।
৫। রাধারাণীর মা আপিল করেছিলেন- (ক) হাইকোর্টে (খ) প্রিভি কাউন্সিলে (গ) লোয়ার কোর্টে (ঘ) সুপ্রিম কোর্টে
উত্তর- রাধারাণীর মা আপিল করেছিলেন-(খ) প্রিভি কাউন্সিলে।
৬। যে ঘাড়ের উপর আসিয়া পড়িয়াছিল, সে বলিল- (ক) কে তুমি? (খ) কে গা তুমি কাঁদ? (গ) কে গা? (ঘ) কে গা, তুমি?
উত্তর- যে ঘাড়ের উপর আসিয়া পড়িয়াছিল, সে বলিল-(খ) কে গা তুমি কাঁদ?
৭। রাধারাণী পথিককে নিজের বাড়ি বলেছিল- (ক) শ্রীরামপুর (খ) শ্রীরামচন্দ্রপুর (গ) চণ্ডীপুর (ঘ) রামকৃষ্ণপুর
উত্তর- রাধারাণী পথিককে নিজের বাড়ি বলেছিল-(ক) শ্রীরামপুর।
৮। “এক্ষণেও বালিকার হৃদয়মধ্যে লুক্কায়িত আছে।” – এখানে যে বিষয়টি সম্পর্কে বলা হয়েছে- (ক) বনফুলের মালা (খ) চারি টাকার কাপড় (গ) একখানা নোট (ঘ) একটি বকুল ফুলের মালা
উত্তর- “এক্ষণেও বালিকার হৃদয়মধ্যে লুক্কায়িত আছে।” – এখানে যে বিষয়টি সম্পর্কে বলা হয়েছে- (ক) বনফুলের মালা।
৯। “সমভিব্যাহারী এই বলিয়া মুল্য দিল।” – ‘সম্যভিব্যাহারী’ শব্দটির অর্থ হল- (ক) সঙ্গী (খ) সমান (গ) মূল্যযুক্ত (ঘ) আহার করা
উত্তর- “সমভিব্যাহারী এই বলিয়া মুল্য দিল।” – ‘সম্যভিব্যাহারী’ শব্দটির অর্থ হল-(ক) সঙ্গী।
১০। “আমরাও ভিখারি হইয়াছি” – বক্তা হলেন- (ক) পদ্মলোচন (খ) রাধারাণীর মা (গ) রাধারাণী (ঘ) রুক্মিণীকুমার
উত্তর- “আমরাও ভিখারি হইয়াছি” – বক্তা হলেন-(খ) রাধারাণীর মা।
রাধারানী গল্পের প্রশ্ন উত্তর আলোচনা↓
১১। পোড়ারমুখো কাপুড়ে মিনসের প্রকৃত নাম – (ক) পদ্মলোচন দত্ত (খ) পদ্মলোচন মণ্ডল (গ) পদ্মলোচন সাহা (ঘ) পদ্মলোচন কুণ্ডু
উত্তর- পোড়ারমুখো কাপুড়ে মিনসের প্রকৃত নাম –(গ) পদ্মলোচন সাহা।
১২। রাধারাণীদের যখন অবস্থা ভালো ছিল পদ্মলোচন চার টাকার কাপড়ের দাম নিত- (ক) আট টাকা সাড়ে চোদ্দো আনা (খ) আট টাকা সাড়ে বারো আনা (গ) আট টাকা সাড়ে দশ আনা (ঘ) সাত টাকা সাড়ে চোদ্দো আনা
উত্তর- রাধারাণীদের যখন অবস্থা ভালো ছিল পদ্মলোচন চার টাকার কাপড়ের দাম নিত-(ক) আট টাকা সাড়ে চোদ্দো আনা।
১৩। রাধারানী ঘর ঝাঁট দিতে গিয়ে খুঁজে পেয়েছিল- (ক) একটি স্বর্ণমুদ্রা (খ) একটা ছবি (গ) একটা নোট (ঘ) মায়ের ওষুধ
উত্তর- রাধারানী ঘর ঝাঁট দিতে গিয়ে খুঁজে পেয়েছিল-(গ) একটা নোট।
১৪। “তাঁহার নামও নোটে লেখা আছে”- কারণ – (ক) যাতে বুঝতে অসুবিধা হয় (খ) যাতে কেউ না নিতে পারে (গ) পাছে কেউ চোরা নোট বলে (ঘ) যাতে অসুবিধায় পড়তে না হয়
উত্তর- “তাঁহার নামও নোটে লেখা আছে”- কারণ –(গ) পাছে কেউ চোরা নোট বলে।
১৫। রাধারাণী তার প্রাপ্ত টাকা ভাঙিয়ে সংগ্রহ করেছিল- (ক) মায়ের ওষুধ (খ) মায়ের শীতবস্ত্র (গ) মায়ের পথ্য (ঘ) কোনোটাই নয়
উত্তর- রাধারাণী তার প্রাপ্ত টাকা ভাঙিয়ে সংগ্রহ করেছিল-(গ) মায়ের পথ্য।
অতিসংক্ষিপ্ত প্রশ্ন (VSAQ)
[প্রতিটি প্রশ্নের প্রশ্নমান ১]
১। রাধারাণী কোথায় রথ দেখতে গিয়েছিল?
উত্তর- রাধারাণী মাহেশের রথের মেলায় গিয়েছিল।
২। রাধারাণীদের সম্পত্তির অর্থমূল্য কত ছিল?
উত্তর- রাধারাণীদের সম্পত্তির অর্থমূল্য প্রায় দশ লক্ষ টাকা।
৩। রাধারাণীর মা কখন অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন?
উত্তর- রথের আগে রাধারাণীর মা অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন।
৪। ‘রাধারাণী’ গল্পে কোন মাসের উল্লেখ আছে?
উত্তর- রাধারাণী গল্পে শ্রাবণ মাসের উল্লেখ আছে।
৫। রাধারাণী একা রথের মেলায় গিয়েছিল কেন?
উত্তর- রাধারাণী বনফুলের মালা বিক্রি করে মা-র পথ্য সংগ্রহ করবে বলে মাহেশের রথের মেলায় গিয়েছিল।
৬। “রথের হাট শীঘ্র ভাঙিয়া গেল।” – কেন?
উত্তর- রথের হাট প্রবল বৃষ্টির কারনে শীঘ্রই ভেঙে গিয়েছিল।
৭। “মালা কেহ কিনিল না”। – মালা না কেনার কারণ কী ছিল?
উত্তর- রথের দড়ির টান অর্ধেক হতে না হতেই প্রবল বৃষ্টিতে মেলা ভেঙে গেলে মালা কেনার লোক থাকে না।
৮। “লোক আর জমিল না।” – কোথায় লোক জমেনি?
উত্তর- রথের মেলায় লোক জমেনি।
৯। “রাধারাণী রোদন বন্ধ করিয়া বলিল…” রাধারাণী কি বলেছিল?
উত্তর- রাধারাণী কান্না বন্ধ করে বলেছিল সে দুঃখী লোকের মেয়ে এবং তার মা ছাড়া কেউই নেই।
১০। “রাধারাণী বড়ো বালিকা।” কীভাবে এই ধারণা হয়েছিল?
উত্তর- আগন্তুক প্রথমে রাধারাণীর গলার আওয়াজে এবং পরে তার হাতের ছোঁয়ায় বুঝতে পারেন রাধারাণী খুবই ছোটো একটি মেয়ে।
Kamaleshforeducation.in
সংক্ষিপ্ত উত্তর ভিত্তিক প্রশ্ন (SAQ)
[প্রতিটি প্রশ্নের প্রশ্নমান ৩]
১। ‘তাহাদিগের অবস্থা পূর্বে ভালো ছিল’ – পরবর্তীকালে তাদের দুর্দশার কারণ কী?
উত্তর – আলোচ্য অংশটি বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় রচিত রাধারানী পাঠ্যাংশের অন্তর্গত। এই পাঠ্যাংশে লেখক বলছেন পিতৃহারা রাধারাণী বড়ো ঘরের মেয়ে হওয়া সত্ত্বেও একটি মামলার কারণে তাঁর বিধবা মা সর্বস্বান্ত হয়, দশ লক্ষ টাকার সম্পত্তি সবই বাদীপক্ষ কেড়ে নেয় এবং তাঁদেরকে গৃহচ্যুত করে। এমন অবস্থায় তাঁদের সকল অন্ন-সংস্থানের কোনো উপায় থাকে না। এটিই ছিল তাদের দুর্দশার কারণ।
২। ‘সুতরাং আর আহার চলে না।’ – কাদের প্রসঙ্গে এই উক্তি? তাদের আহার বন্ধের উপক্রম হল কেন? (১+২)
উত্তর – এই উক্তিটি লেখক বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় তাঁর রাধারাণী পাঠ্যাংশে, রাধারানী এবং তার বিধবা মা সম্পর্কে করেছেন।
জ্ঞাতিপক্ষের কাছে মামলায় হেরে সর্বস্বান্ত হয় রাধারানী এবং তার বিধবা মাতা। এর পর শারীরিক পরিশ্রম করে কোনোরকমে তাদের গ্রাসাচ্ছাদন চলতে থাকে। কিন্তু এর কিছুদিন পরে, রাধারানীর মা ‘ঘোরতর’ ব্যাধিতে আক্রান্ত হলে, তার কায়িক পরিশ্রমের উপায় বন্ধ হয়ে যায়। ফলে তাদের আহারাদির ব্যবস্থাও বিপন্ন হয়।
৩। ‘…তাহাতেই মার পথ্য হইবে।’ – রাধারাণী কীভাবে মায়ের পথ্য জোগাড়ের চেষ্টা করেছিল?
উত্তর – আলোচ্য অংশটি বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় রচিত রাধারানী পাঠ্যাংশের অন্তর্গত। লেখকের কলমে আমরা জানতে পারি যে, রাধারানীর বিধবা মা অসুস্থ হওয়ায় তাদের পরিবারের উপার্জনের উপায় বন্ধ হয়ে যায়। মায়ের চিকিৎসার জন্য প্রয়োজনীয় পথ্য জোগাড় করার জন্য বালিকা রাধারানী একটি উপায় বের করে। সে কিছু বনেরফুল তুলে, দিয়ে মালা গাথে এবং সেই মালা রথের মেলা উপলক্ষে বসা হাটে বিক্রি করে পয়সা রোজগার করে, তাই দিয়ে মায়ের পথ্য বা ওষুধ জোগাড় করার কথা ভাবে।
৪। ‘অগত্যা রাধারাণী কাঁদিতে কাঁদিতে ফিরিল।’ – কোন পরিস্থিতিতে কাঁদতে কাঁদতে রাধারাণী বাড়ির পথ ধরল?
উত্তর – বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় রচিত রাধারানী পাঠ্যাংশের প্রধান চরিত্র বালিকা রাধারানী; সে তার অসুস্থ মায়ের জন্য ওষুধ কেনার অর্থ জোগাড়ের উদ্দ্যেশে মাহেশের রথের মেলায় বনফুলের মালা বিক্রির উদ্দেশ্যে গিয়েছিল। কিন্তু ‘রথের টান’ অর্ধেক হওয়ার সাথে সাথে বৃষ্টি নামে এবং লোকের ভিড় কমে যায়। এরপর সন্ধ্যে নামলেও রাধারানীর মালা অবিকৃত অবস্থায় থেকে যায়। রাতের অন্ধকার নামলে হতোদ্যম রাধারানী ভগ্নহৃদয়ে কাঁদতে কাঁদতে বাড়ির পথ ধরে।
৫। ‘সকাতরে বলিল মা! এখন কী হবে?’ – কোন্ পরিস্থিতিতে রাধারাণী একথা বলেছিল? উত্তরে তার মা কী বলেছিলেন? (১+২)
উত্তর – রাধারানী অচেনা ব্যক্তির সাথে বাড়ি ফিরে আসার পর আবিষ্কার করে আগন্তুক রাধারানীকে পয়সার বদলে টাকা দিয়েছে, এরপর সে বাড়ির বাইরে এসে আগন্তুকের সন্ধানে বিফল হয়। এরপর কিংকর্তব্যবিমূঢ় রাধারানী তার মাকে আলোচ্য উক্তিটি করে।
আলচ্য উক্তির পরিবর্তে রাধারানীর মা, তাকে বলে – “কি হবে বাছা! সে কি আর না জেনে টাকা দিয়েছে? সে দাতা, আমাদের দুঃখ সুনিয়ে দান করিয়াছে – আমরাও ভিখারি হইয়াছি, দান গ্রহণ করিয়া খরচ করি”।
Kamaleshforeducation.in
রচনাধর্মী প্রশ্ন (LA)
[প্রতিটি প্রশ্নের প্রশ্নমান ৫]
১। ‘তাহারা দরিদ্র, কিন্তু লোভী নহে’ – কাদের কথা বলা হয়েছে? পাঠ্যাংশ অনুসরণে তাদের দারিদ্র্য এবং নির্লোভতার প্রসঙ্গ আলোচনা করো।
উত্তর – আলোচ্য উক্তিটি বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় রচিত রাধারানী পাঠ্যাংশের অন্তর্গত, লেখক এখানে ‘তাদের’ বলতে পাঠ্যাংশের দুটি প্রধান চরিত্র রাধারানী এবং তার মায়ের কথা বুঝিয়েছেন।
একসময় আর্থিক অবস্থা ভালো হওয়া সত্বেও, বর্তমানে রাধারানী ও তার মা প্রবল অর্থকষ্টে জর্জরিত। এমনকি তাদের দৈনিক আহারটুকু জোটে না। অসুস্থ মায়ের জন্য ঔষধ কেনার অর্থ সংগ্রহ করার উদ্দেশ্যে বনফুলের মালা নিয়ে, মাহেশের রথের মেলায় যায় বালিকা রাধারানী, কিন্তু তার মালা অবিকৃত থেকে যায়। দুঃখী রাধারানী বাড়ি ফেরার পথে পথ ভুল করে এবং এই সময় তার একজন পুরুষ আগন্তুকের সাথে দেখা হয়, আগন্তুক তাকে বাড়ি ফিরিয়ে আনে এবং তার সব মালা কিনে নেয়।আগন্তুক পুরুষ যখন তাকে টাকা দেয় এবং রাধারাণীর সন্দেহ হয় যে সেটি পয়সা নয়, চকচকে টাকা তখন সে আগন্তুককে বাইরে অপেক্ষা করতে বলে ভিতরে যায় সেটি টাকা না পয়সা আলো জ্বালিয়ে পরীক্ষা করে দেখতে। আগন্তুক সত্যই টাকা দিয়েছে দেখে সে টাকা ফেরত দিতে বাইরে আসে। এই ঘটনা থেকে রাধারানীর চরিত্রের সততার দিকটি প্রকাশিত হয়।
পুনরায় তাঁর মা এই ঘটনা শুনে যখন বলেন, ‘…সে দাতা, আমাদের দুঃখ শুনিয়া দান করিয়াছে – আমরাও ভিখারী হইয়াছি, দান গ্রহণ করিয়া খরচ করি।’
তখন স্পষ্টই বোঝা যায় যে প্রাচুর্য একসময় তাঁদের ছিল তা তাঁদের কখনোই অসৎ কিংবা মূল্যবোধহীন হতে শেখায়নি। ভাগ্যের ফেরে আজ এমন দুঃসহ দারিদ্র্য গ্রাস করলেও মাথা নীচু করে দান গ্রহণ করতে তাঁদের বিবেকে বাধে। তাই যখন ঘর ঝাঁট দিতে গিয়ে একটি নোট খুঁজে পায় রাধারাণী যাতে সেই আগন্তুকের নাম লেখা আছে, সেই নোট কিন্তু তাঁরা সযত্নে রেখে দেয়।
লেখক তাই লিখেছেন, ‘…তাহারা দরিদ্র, কিন্তু লোভী নহে।’