ভারতের জনসংখ্যা (ভারত – পঞ্চম অধ্যায়) মাধ্যমিক দশম শ্রেণীর ভূগোল প্রশ্ন ও উত্তর | West Bengal Madhyamik Class 10th Geography Bharater Janasankhya Question and Answer
MCQ | ভারতের জনসংখ্যা (ভারত – পঞ্চম অধ্যায়) মাধ্যমিক ভূগোল প্রশ্ন ও উত্তর | Madhyamik Geography Bharater Janasankhya Question and Answer :
- ভারতে কত খ্রিস্টাব্দ থেকে জনগণনা শুরু হয় ?
(A) ১৭৭১
(B) ১৮৭১
(C) ১৯৭১
(D) ১৯০০
Ans: (B) ১৮৭১
- সাম্প্রতিকতম লোকগণনা ভারতে কত খ্রিস্টাব্দে হয়েছিল ?
(A) ২০১০
(B) ২০১২
(C) ২০১১
(D) ২০১৩
Ans: (C) ২০১১
- ভারতে কত বছর অন্তর অন্তর জনগণনা করা হয় ?
(A) ১০
(B) ১৫
(C) ৫
(D) ২০
Ans: (A) ১০
- কৃষিকাজ , মাছ চাষ , খনিজ আহরণ ইত্যাদি কোন ক্ষেত্রের কার্যকলাপ ?
(A) গৌণ
(B) অন্যান্য
(C) প্রাথমিক
(D) প্রগৌণ
Ans: (C) প্রাথমিক
- ভারতের জনসংখ্যা বৃদ্ধির একটি কারণ হল –
(A) কন্যাসন্তানের আকাঙ্ক্ষা
(B) স্ত্রীশিক্ষার অগ্রগতি
(C) চিকিৎসাশাস্ত্রের অবনতি
(D) পরিবার পরিকল্পনায় ব্যর্থতা
Ans: (D) পরিবার পরিকল্পনায় ব্যর্থতা
- Census শব্দের উৎপত্তি হয় একটি ____ শব্দ থেকে ।
(A) লাতিন
(B) ফরাসি
(C) সংস্কৃত
(D) গ্রিক
Ans: (A) লাতিন
- পৃথিবীর প্রায় কত শতাংশ লোক ভারতে বাস করে ?
(A) ১৭.৫০ %
(B) ১১.৬০ %
(C) ২১.৫০ %
(D) ২৬.৫০ %
Ans: (A) ১৭.৫০ %
- কোনো দেশের জনসংখ্যা ও সম্পদের পরিমাণ সমান হলে তখন তাকে বলে –
(A) জনাকীর্ণতা
(B) কাম্য জনসংখ্যা
(C) ধারণযোগ্য উন্নয়ন
(D) শূন্য জনসংখ্যা বৃদ্ধি
Ans: (B) কাম্য জনসংখ্যা
- ধারণযোগ্য উন্নয়নের জন্য—
(A) সঞ্চিত উপকরণের ব্যবহার হ্রাস করতে হবে
(B) জীবনযাত্রার মান উন্নত করতে হবে
(C) জাতীয় আয় বৃদ্ধি করতে হবে
(D) এইগুলির কোনোটাই নয়
Ans: (A) সঞ্চিত উপকরণের ব্যবহার হ্রাস করতে হবে
- কোনো অঞ্চলের মানুষের বণ্টনগত তারতম্যের সূচক হল –
(A) ধারণযোগ্য উন্নয়ন
(B) কাম্য জনসংখ্যা
(C) জনঘনত্ব
(D) নগরায়ণ
Ans: (C) জনঘনত্ব
[ আরোও দেখুন: Madhyamik Geography Suggestion 2023 Click here ]
- কোনো পৌর এলাকাকে তখনই শহর বলা যায় , যখন সেখানে লোকসংখ্যা কত জনের বেশি হয় ।
(A) ২০০০
(B) ৩০০০
(C) 8000
(D) ৫০০০
Ans: (D) ৫০০০
- কোনো অঞ্চলের জনঘনত্ব নির্ণয় করতে হলে সেই অঞ্চলের মোট আয়তন দিয়ে সেই অঞ্চলের মোট জনসংখ্যাকে _____ করতে হয় ।
(A) ভাগ
(B) যোগ
(C) গুন
(D) বিয়োগ
Ans: (A) ভাগ
- ভারতে কোন্ রাজ্যটিতে জনঘনত্ব সর্বাধিক –
(A) বিহার
(B) পশ্চিমবঙ্গ
(C) উত্তরপ্রদেশ
(D) কেরল
Ans: (A) বিহার
- গ্রামাঞ্চল ধীরে ধীরে শহরে পরিণত হয় যে প্রক্রিয়ার মাধ্যমে তা হল –
(A) কাম্য জনসংখ্যা
(B) ধারণযোগ্য উন্নয়ন
(C) নগরায়ণ
(D) কোনোটাই নয়
Ans: (C) নগরায়ণ
- কোটি ভারতের বৃহত্তম মহানগর –
(A) দিল্লি
(B) চেন্নাই
(C) কলকাতা
(D) মুম্বাই
Ans: (D) মুম্বাই
- ভারতে নগরায়ণের হার কত শতাংশ ?
(A) ৪০
(B) ৩০
(C) ৩৫
(D) ৪৫
Ans: (B) ৩০
- কোন্ কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে জনঘনত্ব সবচেয়ে কম –
(A) দিল্লি
(B) আন্দামান ও নিকোবর
(C) পুদুচেরি
(D) লক্ষাদীপ
Ans: (B) আন্দামান ও নিকোবর
- অতিবিরল জনঘনত্বযুক্ত একটি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল হল—
(A) দিল্লি
(B) লাক্ষাদ্বীপ
(C) আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জ
(D) পুদুচেরি
Ans: (C) আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জ
- কোনো শহরের লোকসংখ্যা কত – এর বেশি হলে , সেইসব শহরকে নগর বলে ?
(A) ৪৫
(B) ১ লক্ষ
(C) ১০ লক্ষ
(D) ২ লক্ষ
Ans: (B) ১ লক্ষ
- ভারতে বর্তমানে ক – টি মহানগর রয়েছে ?
(A) ৬৮
(B) ৪৯
(C) ৭৩
(D) ৫৩
Ans: (D) ৫৩
- ধারণযোগ্য উন্নয়ন ধারণাটি কার –
(A) জিমারম্যান
(B) ডেভিস
(C) টলেমি
(D) এভারবেলফোর
Ans: (D) এভারবেলফোর
অতিসংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর | ভারতের জনসংখ্যা (ভারত – পঞ্চম অধ্যায়) মাধ্যমিক ভূগোল প্রশ্ন ও উত্তর | Madhyamik Geography Bharater Janasankhya Question and Answer :
- Census শব্দের উৎপত্তি হয় কোন্ শব্দ থেকে ?
Ans: লাতিন শব্দ ‘ Censre ‘ ।
- ভারতের বর্তমানে মোট জনসংখ্যা কত ?
Ans: ১২১. কোটি ।
- ভারতের জনঘনত্ব কত ?
Ans: প্রতি বর্গকিমিতে ৩৮২ জন ।
- ভারতের কোন্ রাজ্যের জনঘনত্ব সবচেয়ে বেশি ?
Ans: বিহার ( ১১০২ জন / বর্গকিমি ) ।
- ভারতের কোন্ রাজ্যে জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার ঋণাত্মক ( ২০০১–২০১১ ) ?
Ans: নাগাল্যান্ড ।
- ভারতের কোন্ দুটি রাজ্যে কন্যা শিশু মৃত্যুর হার খুব বেশি ?
Ans: হরিয়ানা ও রাজস্থান রাজ্যে ।
- ভারতের কোন্ রাজ্যে জনসংখ্যা সবচেয়ে বেশি ?
Ans: উত্তরপ্রদেশ রাজ্যে ( ১৯.৯৬ কোটি ) ।
- সময়ের অগ্রগতির সাথে সাথে জন্মহার ও মৃত্যুহারে তারতম্যের জন্য জনসংখ্যার স্বাভাবিকভাবে বেড়ে যাওয়াকে কী বলে ?
Ans: জনসংখ্যা বৃদ্ধি ।
- ভারতের মানুষ – জমির অনুপাত কত ?
Ans: প্রতি বর্গকিমিতে প্রায় ৪৩২ জন ।
- এককথায় জনঘনত্ব বলতে কী বোঝ ?
Ans: দেশের মোট জনসংখ্যার সঙ্গে মোট জমির অনুপাত । 10. এককথায় মানুষ – জমি অনুপাত বলতে কী বোঝ ?
Ans: দেশের মোট জনসংখ্যার সঙ্গে মোট কার্যকরী জমির অনুপাত ।
- কোনো দেশের প্রাকৃতিক সম্পদের তুলনায় জনসংখ্যার আধিক্যকে কী বলে ?
Ans: জনাকীর্ণতা বা জনাধিক্যতা ।
- কোনো দেশের প্রাকৃতিক সম্পদের তুলনায় জনসংখ্যা কম । হলে তাকে কী বলে ?
Ans: জনস্বল্পতা বা জনবিরলতা ।
- ভারতের কোন্ কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে শহরবাসীর সংখ্যা সবচেয়ে বেশি ?
Ans: দিল্লির জনসংখ্যার ৯৩.১৮ % শহরবাসী ( ২০১১ ) ।
- ভারতে মোট ক – টি মেগাসিটি রয়েছে ।
Ans: ৩ টি ।
- ভারতের মেগাসিটিগুলি কী কী ?
Ans: বৃহত্তর মুম্বাই , বৃহত্তর কলকাতা ও বৃহত্তর দিল্লি ।
- ভারতের একটি সাংস্কৃতিক শহরের নাম লেখো ।
Ans: পশ্চিমবঙ্গের শান্তিনিকেতন ।
- ভারতের একটি বন্দর নগরের নাম লেখো ।
Ans: পশ্চিমবঙ্গের হলদিয়া ।
- ভারতের কোন রাজ্যের জনঘনত্ব সবচেয়ে বেশি ও সাক্ষরতার হার সবথেকে কম ?
Ans: বিহার ।
- ভারতের ১ টি প্রশাসনিক শহর ও একটি শিল্পশহরের নাম লেখো ।
Ans: ভারতের প্রশাসনিক শহর – দিল্লি , এবং ভারতের জনসংখ্যাশহর — জামসেদপুর ।
- ভারতের ২ টি সামরিক শহরের উদাহরণ দাও ।
Ans: ভারতের ২ টি দুর্গ বা সামরিক শহর হল— পশ্চিমবঙ্গের ব্যারাকপুর ও মধ্যপ্রদেশের গোয়ালিয়র ।
- ভারতের ২ টি বন্দর শহরের নাম লেখো ।
Ans: ভারতের ২ টি বন্দর শহর হল পশ্চিমবঙ্গের হলদিয়া ও ওড়িশার পারাদ্বীপ ।
- ভারতের একটি অত্যধিক জনঘনত্বযুক্ত রাজ্য ও একটি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের নাম লেখো ।
Ans: ভারতের অত্যাধিক জনঘনত্বযুক্ত রাজ্য হল বিহার এবং কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল হল দিল্লি ।
সংক্ষিপ্ত উত্তরভিত্তিক প্রশ্নোত্তর | ভারতের জনসংখ্যা (ভারত – পঞ্চম অধ্যায়) মাধ্যমিক ভূগোল প্রশ্ন ও উত্তর | Madhyamik Geography Bharater Janasankhya Question and Answer :
- আদমশুমারি ( Census ) বলতে কী বোঝ ?
Ans: কোনো দেশ বা নির্দিষ্ট ভৌগোলিক অঞ্চলে নির্দিষ্ট সময় অন্তর জনসংখ্যা সংক্রান্ত বিভিন্ন প্রকার তথ্য সংগ্রহ ও সংরক্ষণের পদ্ধতি হল সেনসাস বা আদমশুমার ।
- জনসংখ্যা ( Population ) কাকে বলে ?
Ans: বিজ্ঞানের পরিভাষায় কোনো একটি নির্দিষ্ট স্থানে C একটি নির্দিষ্ট সময়ে একই প্রজাতির অন্তর্ভুক্ত সমস্ত জীবকে একত্রিতভাবে জনসংখ্যা বলে । জনসংখ্যা বলতে কোনো স্থানে বসবাসকারী মানুষের সংখ্যাকেই বোঝায় ।
- জনাকীর্ণতা বা জনাধিক্য ( Over population ) কাকে বলে ?
Ans: দেশের জনসংখ্যা যদি বাড়ে এবং তার তুলনায় সম্পদের পরিমাণ যদি কমে যায় , তাহলে সেই দেশে বাড়তি জনসংখ্যা দেখা দেবে । জনসংখ্যার এই অবস্থাকে জনাকীর্ণতা বা জনাধিক্য বলে । যেমন— ভারত , পাকিস্তান , বাংলাদেশ , মায়ানমার ইত্যাদি উন্নয়নশীল দেশে এই অবস্থা লক্ষ করা যায় । জনাকীর্ণতার ফলে দেশে খাদ্যসংকট , হিংসা , রোগব্যাধি , আইন – শৃঙ্খলার অবনতি প্রভৃতি সমস্যা দেখা যায় ।
- জনস্বল্পতা বা জনবিরলতা ( Under population ) কাকে বলে ?
Ans: কোনো দেশে সম্পদের তুলনায় লোকসংখ্যা কম হলে । বা লোকসংখ্যার অভাবে সম্পদ সৃষ্টি না হলে , সেই জনসংখ্যাকে জনস্বল্পতা বা জনবিরলতা বলা হয় । যেমন- অস্ট্রেলিয়া , কানাজ প্রভৃতি দেশে সম্পদের তুলনায় লোকসংখ্যা খুবই কম ।
- জনবিস্ফোরণ ( Population Explotion ) কাকে বলে ?
Ans: যখন কোনো দেশে অতি অল্প সময়ের ব্যবধানে জনসংখ্যা খুব দ্রুত বৃদ্ধি পায় , তখন তাকে জনবিস্ফোরণ বলে । এই অবস্থা তখনই সৃষ্টি হয় , যখন বিজ্ঞানের উন্নতির ফলে জন্মহারের তুলনায় মৃত্যুহার কমে যায় ।
- শূন্য জনসংখ্যা বৃদ্ধি বা স্থির / সুস্থিত জনসংখ্যা ( Stable population ) বলতে কী বোঝ ?
Ans: দেশের জন্মহার ও মৃত্যুহার প্রায় সমান হলে অর্থাৎ জনসংখ্যা বৃদ্ধি প্রায় স্থিতাবস্থা লাভ করলে , তাকে শূন্য জনসংখ্যা বৃদ্ধি বা স্থির জনসংখ্যা বা সুস্থিত জনসংখ্যা বলে ।
- জনসংখ্যার ঋণাত্মক বৃদ্ধি ( Negative Population Growth ) বলতে কী বোঝ ?
Ans: যে সমস্ত দেশে মৃত্যুহারের থেকে জন্মহার কম সেইসব দেশে জনসংখ্যা না বেড়ে বরং হ্রাস পায় । একেই জনসংখ্যার ঋণাত্মক বৃদ্ধি বলা হয় ।
- নির্ভরশীল জনসংখ্যা ( Depending Population ) বলতে কী বোঝ ?
Ans: কর্মঠ কম বা মধ্যবয়স্ক জনসংখ্যার ( যুবক বা যুবতী ) ওপর শিশু , নারী ও বয়স্কদের অর্থনৈতিক নির্ভরশীলতাকেই নির্ভরশীল জনসংখ্যা বলে । নির্ভরশীল জনসংখ্যাকে প্রধানত দু – ভাগে ভাগ করা যায় । যথা- ( i ) শিশু নির্ভরশীলতার অনুপাত বা অপ্রাপ্তবয়স্ক নির্ভরশীল জনসংখ্যা এবং ( ii ) বয়স্ক নির্ভরশীলতার অনুপাত ।
- অপ্রাপ্তবয়স্ক নির্ভরশীল জনসংখ্যার অনুপাত ( Youth Dependency Ratio or YDR ) বলতে কী বোঝানো হয় ?
Ans: ১৫ বছরের নীচের জনসংখ্যাকে অপ্রাপ্তবয়স্ক জনসংখ্যা বলা হয় । ১৫ বছর বয়সের উপরের জনসংখ্যার ওপর এই অপ্রাপ্তবয়স্ক জনসংখ্যার অর্থনৈতিকভাবে নির্ভরশীলতার গাণিতিক অনুপাতকে অপ্রাপ্তবয়স্ক নির্ভরশীল জনসংখ্যার অনুপাত বলে ।
- ধারণযোগ্য উন্নয়ন ( Substainable Development ) কাকে বলে ?
Ans: যে উন্নয়ন ভবিষ্যৎ প্রজন্মের প্রয়োজন মেটানোর জন্য সম্পদের ভাণ্ডারকে অটুট রেখে , বর্তমান প্রজন্মের চাহিদা মেটায় , তাকেই ধারণযোগ্য উন্নয়ন বলা হয় ।
- শহর ( Town ) কাকে বলে ?
Ans: আদমশুমারি অনুযায়ী যে স্থানের পুরুষ অধিবাসীদের ৭৫ % -এর অধিক কৃষি ছাড়া অন্যান্য জীবিকার ওপর নির্ভর করে , জনঘনত্ব কমপক্ষে ৪০০ জন / বর্গকিমি , ৫০০০ জনের অধিক লোক বসবাস করে এবং এলাকাটি পৌর এলাকা হলে তাকে শহর বা পৌরবসতি ( Town ) বলে ।
- নগরায়ণ ( Urbanisation ) কাকে বলে ?
Ans: নগরায়ণ হল এমন এক প্রক্রিয়া যার মাধ্যমে গ্রামাঞ্চল ধীরে ধীরে শহরে পরিণত হয় এবং যেখানে আধুনিক জীবনযাত্রা জটিল ও সরল উভয়ভাবেই জীবনে চলার পথ সৃষ্টি করে ।
- নগর ( City ) কাকে বলে ?
Ans: যেসব শহরের জনসংখ্যা ১ লক্ষ বা তার বেশি হয় , তাকে নগর বলে । নগরের উদাহরণ — দুর্গাপুর , কল্যাণী , বিধাননগর ইত্যাদি ।
- মহানগর ( Metropolis ) কাকে বলে ?
Ans: যেসব নগরের জনসংখ্যা ১০ লক্ষ বা তার বেশি , সেই নগরগুলিকে মহানগর বলে । গ্রিক শব্দ ‘ Metropolis ‘ কথার অর্থ ‘ মূলনগরী ’ বা ‘ Mother city ‘ । উদাহরণ দিল্লি , মুম্বাই ইত্যাদি ।
- মেগাসিটি ( Megacity ) কাকে বলে ?
Ans: যে সমস্ত শহরের জনসংখ্যা ৫০ লক্ষের বেশি , তাদের মেগাসিটি ( Megacity ) বলে । যেমন — মুম্বাই , কলকাতা দিল্লি ।
- স্ট্যাটুটরি শহর ( Statutory Town ) কাকে বলে ?
Ans: যখন কোনো অঞ্চল , মিউনিসিপ্যালিটি , কর্পোরেশন , ক্যান্টনমেন্ট বোর্ড বা নোটিফায়েড টাউন এরিয়া কমিটি দ্বারা পরিচালিত হয় , তখন তাকে স্ট্যাটুটরি শহর বলে ।
- সেনসাস শহর ( Census Town ) কাকে বলে ?
Ans: কোনো অঞ্চলের নূন্যতম জনসংখ্যা যদি ৫০০০ জন হয় এবং জনসংখ্যার ঘনত্ব যদি ৪০০ জন / বর্গকিমি হয় এবং অঞ্চলটির মোট কর্মক্ষম জনসংখ্যার ৭৫ % যদি কৃষিছাড়া অন্যান্য কাজের সঙ্গে নিযুক্ত থাকে , তখন তাকে সেনসাস শহর বলে ।
পার্থক্য নিরূপণ করো | ভারতের জনসংখ্যা (ভারত – পঞ্চম অধ্যায়) মাধ্যমিক ভূগোল প্রশ্ন ও উত্তর | Madhyamik Geography Bharater Janasankhya Question and Answer :
- জনসংখ্যা ও জনঘনত্ব – এর মধ্যে পার্থক্য লেখো ।
বিষয় | জনসংখ্যা | জনঘনত্ব |
সংঙ্ঘা | কোনো একটি নির্দিষ্ট স্থানে একটি নির্দিষ্ট সময়ে একই প্রজাতির অন্তর্ভুক্ত সমস্ত জীবকে একত্রিত ভাবে জনসংখ্যা বলে । | কোনো স্থানের বা দেশের প্রতি বর্গকিলোমিটার ক্ষেত্রফলে যতজন লোক বাস করে তাকেই জনঘনত্ব বলে । |
নির্ণয়ের পদ্মতি | কোনো স্থানে বসবাসকারী মানুষ – এর সংখ্যাকে গণনা করে নির্ণয় করা হয় । | কোনো অঞ্চলের মোট ক্ষেত্রফল দিয়ে সেই অঞ্চলের মোট জনসংখ্যাকে ভাগ করে নির্ণয় করতে হয় । |
রচনাধর্মী প্রশ্নোত্তর | ভারতের জনসংখ্যা (ভারত – পঞ্চম অধ্যায়) মাধ্যমিক ভূগোল প্রশ্ন ও উত্তর | Madhyamik Geography Bharater Janasankhya Question and Answer :
1. ভারতের জনসংখ্যা বৃদ্ধির কারণ কী ?
Ans: বিভিন্ন অর্থনৈতিক , সামাজিক , ধর্মীয় এবং রাজনৈতিক কারণের জন্য ভারতের জনসংখ্যা দ্রুত গতিতে বেড়ে চলেছে । ভারতের জনবৃদ্ধির প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ কারণগুলি হল –
১. বেশি জন্মহার ( High birth rate / Fertility rate ) : ভারতে জন্মহার খুব বেশি ( প্রতি হাজারে ২৭.৫ জন ) । তাই ভারতের জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার স্বাভাবিক ভাবেই বেশি ।
২. মৃত্যুর হার কমে যাওয়া ( Low rate of Mortality ) : চিকিৎসাবিজ্ঞানে অভূতপূর্ব উন্নতির জন্য ভারতে মৃত্যুহার কম । প্রতি হাজার জনসংখ্যায় ভারতে মৃত্যুহার হল মাত্র ৯.৪ জন । জন্মহারের তুলনায় মৃত্যুহার কমে যাওয়া ভারতের জনসংখ্যা বৃদ্ধির অন্যতম কারণ ।
৩. অল্প বয়সে বিবাহ ( Early Marriage ) কয়েকটি ব্যতিক্রম ছাড়া ভারতের বেশিরভাগ গ্রামাঞ্চলে ছেলেমেয়েদের অল্প বয়সে বিয়ে হয় । অল্প বয়সে বিয়েও ভারতের জনসংখ্যার অতিরিক্ত বৃদ্ধিতে সহায়তা করে ।
৪. স্বল্প শিক্ষার হার ( Low Literacy Rate ) : ভারতের গ্রামগুলিতে বিশেষ করে নারীশিক্ষার হার এখনও বেশ কম ( ৩৯.২৯ শতাংশ ) হওয়ায় নানান বিষয়ে অজ্ঞতা ও ধর্মীয় কুসংস্কার ভারতের জনসংখ্যা বৃদ্ধিতে সহায়তা করে ।
৫. দারিদ্র্য ( Poverty ) : ভারতের বেশিরভাগ অধিবাসীই দরিদ্র । তাই অর্থনৈতিক নিরাপত্তার আশায় দরিদ্র পরিবারগুলির জনসংখ্যা বৃদ্ধি পায় ।
৬. কৃষি ব্যবস্থার গুরুত্ব ( Importance of Agriculture ) : যে কোনো কৃষিভিত্তিক সমাজব্যবস্থায় পরিবারের সদস্যসংখ্যা বাড়ানোর দিকে সব সময়ই জোর দেওয়া হয় , কারণ কৃষিকাজের জন্য প্রচুর শ্রমিকের প্রয়োজন । শিল্পোন্নতি হওয়া সত্ত্বেও এখনও ভারত কৃষিপ্রধান দেশ , স্বাভাবিক ভাবেই ভারতে জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার বেশি ।
৭. মেয়েদের স্বপ্ন সামাজিক মূল্য ও মর্যাদা ( Lack of respect towards women ) : ভারতের পুরুষতান্ত্রিক সমাজব্যবস্থায় মেয়েদের সামাজিক মর্যাদা পুরুষের তুলনায় কম । ফলে নারীশিক্ষার ব্যাপারে এবং অন্যান্য সামাজিক বিষয়ে মেয়েরা অবহেলার শিকার হয় , যা পরোক্ষভাবে ভারতের জনবৃদ্ধি ঘটাতে সহায়তা করে ।
৮. পুত্র সন্তানাকাঙ্ক্ষা ( Desire for a boy child ) : ভারতের বিশেষত কুসংস্কারাচ্ছন্ন সমাজব্যবস্থায় পুত্র সন্তানের জন্য অতিরিক্ত আকাঙ্ক্ষা ভারতের জনসংখ্যা বাড়াতে সাহায্য করে ।
৯. যৌথ সামাজিক প্রথা ( Joint Family Tradition ) : কৃষিপ্রধান ভারতে , বিশেষত গ্রামাঞ্চলের যৌথ পরিবার প্রথা জনসংখ্যা বৃদ্ধিতে পরোক্ষভাবে সহায়তা করে ।
১০. উদ্বাস্তু সমস্যা ও অনুপ্রবেশ ( Illigal Immigration ) : উদ্বাস্তু সমস্যা ও অনুপ্রবেশের ফলেও ভারতের অস্বাভাবিক জনবৃদ্ধি ঘটেছে , কারণ— ( ১ ) স্বাধীনতার পর সাবেক পূর্ব ও পশ্চিম পাকিস্তান থেকে এবং বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর বাংলাদেশ থেকে উদাস্তুরা নানান কারণে বাধ্য হয়ে সীমান্ত পেরিয়ে ভারতে এসে স্থায়ীভাবে বসবাস করছেন ; ( ২ ) বিগত কয়েক বছর হল পশ্চিমবঙ্গ , অসম , ত্রিপুরা প্রভৃতি রাজ্যের সীমান্ত অঞ্চলগুলিতে পার্শ্ববর্তী বিদেশি রাষ্ট্র বাংলাদেশ থেকে ব্যাপকভাবে বেআইনি অনুপ্রবেশও ভারতের জনসংখ্যাকে বাড়িয়ে তুলেছে ।
2. ভারতের জনসংখ্যা বৃদ্ধির প্রভাব কী ?
Ans: ভারতের জনসংখ্যা বৃদ্ধির অনুকুল ও প্রতিকূল প্রভাবগুলি আলোচনা করা হল । vt অনুকূল প্রভাব ( Positive Effect of Population Growth ) :
- জনসংখ্যা বৃদ্ধি পেলে অনেক ক্ষেত্রে সম্পদ উৎপাদনের হার বাড়ে । কৃষি শিল্প , বাণিজ্য ও অন্যান্য কর্মক্ষেত্রে শ্রমের জোগান বৃদ্ধি পায় ।
- উৎপাদন বৃদ্ধি পায় এবং শ্রমিকের চাহিদা বৃদ্ধি পায় ।
- কর্মসংস্থান ও আয়ের সুযোগ বৃদ্ধি পেলে জীবনযাত্রার মান বাড়ে ।
- বিশ্বায়নের সাথে সাথে শিল্পায়ন ও নগরায়ণ ঘটে । উন্নত নগরসভ্যতা গড়ে ওঠে ।
- দেশে উৎপাদনে সক্ষম জনগোষ্ঠীর আয়তন বৃদ্ধি পেলে সম্পদ উৎপাদনের সাথে সাথে মূলধন বাড়তে থাকে যা বিনিয়োগ করে পুনরায় জাতীয় আয় বৃদ্ধি করা যায় ।
- উন্নত নগরসভ্যতার সম্প্রসারণ ঘটে গ্রামাঞ্চলগুলিতেও ফলে গ্রাম্য জীবনের অর্থনৈতিক তথ্য সামাজিক কাঠামোতে পরিবর্তন আসতে থাকে ।
- অভ্যন্তরীণ বাণিজ্যের সাথে সাথে বৈদেশিক বাণিজ্যও বৃদ্ধি পায় ফলে দেশে বৈদেশিক মুদ্রার সঞ্চয় ঘটতে থাকে । দেশের অর্থনৈতিক উন্নতি ঘটতে থাকে ।
- জনসংখ্যা বৃদ্ধির ফলে মানব সম্পদের পরিমাণ বাড়তে থাকে ।
- শিক্ষা , স্বাস্থ্য , পরিবহণ ও সর্বোপরি জীবনযাত্রার মানে উন্নতি ঘটে ।
প্রতিকূল প্রভাব ( Negative Effect of Population Growth ) :
১. দ্ৰুত জনসংখ্যা বৃদ্ধি পেলে দেশে খাদ্যাভাব দেখা দেয় । ফলে অপুষ্টি ও দারিদ্র্য প্রকট হয়ে ওঠে ।
২. সম্পদের তুলনায় জনসংখ্যা বেশি হলে দেশে অনুৎপাদক মানুষের সংখ্যা বাড়ে , বেকারত্ব বাড়ে ফলে এক প্রতিকূল অর্থনৈতিক পরিস্থিতির সৃষ্টি হয় ।
৩. প্রয়োজনের তুলনায় কর্মসংস্থান কম হওয়ায় বেকারত্ব বাড়ে ।
৪. মাথাপিছু আয় ও উৎপাদন কম হয় ফলে জীবনযাত্রার মান কমে ।
৫. অধিক জনসংখ্যা পরিবেশের ভারসাম্য নষ্ট করে , কৃষিজোত ক্রমশ ক্ষুদ্র থেকে ক্ষুদ্রতর হতে থাকে ।
৬. মানুষের প্রয়োজন মেটাতে গিয়ে বনভূমি ধ্বংস হয় এবং দূষণ বাড়ে । আর্থসামাজিক ভারসাম্য নষ্ট হয় ।
৭. ঘিঞ্জি অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ সৃষ্টি হয় , রোগজীবাণুর প্রকোপ বাড়ে , শিক্ষা , স্বাস্থ্য ব্যবস্থার অনুন্নতি ঘটে , অপরাধ প্রবণতা বাড়ে ।
৮. উৎপাদন ব্যয় বাড়ে , উৎপাদন কমে , মূলধন সঞ্জয় ও বিনিয়োগ কমে । ফলে জাতীয় আয় কমে ফলে সার্বিকভাবে অর্থনীতির ক্ষতি হয় ।
3. ভারতের বিভিন্ন অঞ্চলে জনবণ্টনের তারতম্যের কারণ কী ?
Ans: ভারতের বিভিন্ন অঞ্চলে জনবল্টনের তারতম্যের কারণ ( Factors Influencing the regional distribution of Population in India ) : বিরাট আয়তনের দেশ ভারতের জনসংখ্যা বিশাল ( ২০১১ খ্রিস্টাব্দের জনগণনা অনুযায়ী ভারতের জনসংখ্যা ১২১ কোটির বেশি ) এবং জনঘনত্বও বেশি , কিন্তু এই সুবিশাল জনসংখ্যা , ভারতের সর্বত্র সমানভাবে ছড়িয়ে নেই । ভারতের অঞ্চল বিশেষে জনবণ্টনের এই তারতম্যের প্রাকৃতিক ও অপ্রাকৃতিক কারণগুলি হল –
ভূপ্রাকৃতিক অবস্থা ( Physiographic Condition ) : উত্তরের হিমালয় পার্বত্য অঞ্চল , উত্তর – পূর্বের পাহাড়ি ও মালভূমি অঞ্চল এবং দক্ষিণ ভারতের বিস্তীর্ণ মালভূমি ও পাহাড়ি অঞ্চলের উঁচু – নীচু বন্ধুর ভূমি কৃষিকাজের অনুপযুক্ত ও কিছু কিছু অঞ্চল | দুর্গম বলে এখানে জনসংখ্যা বেশ কম । অন্যদিকে উত্তরের সিন্ধু , গঙ্গা , ব্রহ্মপুত্র সমভূমি অঞ্চল , ও উপকূলের সমভূমি কৃষিকাজের ও বাসস্থান নির্মাণের , যোগাযোগ ব্যবস্থার পক্ষে ভালো বলে এখানে জনসংখ্যা অনেক বেশি ।
- জলবায়ুর বৈচিত্র্য ( Climatic Variation ) সমুদ্র উপকূলবর্তী অঞ্চলে সমভাবাপন্ন জলবায়ুর উপস্থিতি , বৃষ্টিপাতের সমান বণ্টনের জন্য এখানে লোকবসতি ঘন । অপরদিকে , রাজস্থানের মরু অঞ্চল বা গুজরাটের কচ্ছ অঞ্চলে চরমভাবাপন্ন জলবায়ু ও বৃষ্টিপাতের অসম বণ্টনের জন্য জনসংখ্যা কম ।
- নদী ( Rivers ) নদনদীর অবস্থানের জন্য । ( ১ ) যোগাযোগ ও পরিবহণ ব্যবস্থার সুবিধা ও ( ২ ) নদীতীরবর্তী অঞ্চলের পলিসমৃদ্ধ উর্বর মৃত্তিকায় কৃষিকাজে সুবিধা ( ৩ ) জলবিদ্যুৎ উৎপাদন , ( ৪ ) জলসেচ ও জলনিকাশি ব্যবস্থার সুবিধা আছে বলে , উত্তর ভারতের গঙ্গা , সিন্ধু , ব্রহ্মপুত্র ও দক্ষিণ ভারতের মহানদী , গোদাবরী , কৃষ্ণা , কাবেরী নদী উপত্যকায় লোকবসতি বেশি ।
৪. মৃত্তিকা ( Soil ) : উত্তর ও দক্ষিণ ভারতের নদীতীরবর্তী উর্বর মৃত্তিকা ও দাক্ষিণাত্যের উর্বর কৃষ্ণ মৃত্তিকা কৃষিকাজের পক্ষে উপযুক্ত বলে এই সকল অঞ্চলে লোকবসতি ঘন ।
৫. স্বাভাবিক উদ্ভিদ ( Natural Vegetation ) বৃক্ষহীন মরুভূমি ( যেমন — রাজস্থানের মরু অঞ্চল ) অথবা গভীর অরণ্য সংকুল অঞ্চল ( যেমন সুন্দরবন , হিমালয় ও পশ্চিমঘাট পর্বতের পাদদেশ , আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জের বনভূমি অঞ্চল ) মানুষের জীবিকানির্বাহের পক্ষে অসুবিধাজনক বলে এইসব অঞ্চল ঘনবসতিপূর্ণ নয় ।
৬. খনিজসম্পদ ( Mineral resources ) : প্রতিকূল জলবায়ু ও অনুর্বর মৃত্তিকা থাকা সত্ত্বেও যেখানে খনিজসম্পদের প্রাচুর্য দেখা যায় , সেখানে ভূপ্রকৃতি দুর্গম হলেও জীবিকানির্বাহের সুবিধা থাকায় জনসংখ্যা বেশি হয় । ভারতের বিভিন্ন কয়লাখনি অঞ্চলে ( রানিগঞ্জ ও ঝরিয়া ) এইজন্য জনসংখ্যা বেশি । ছোটোনাগপুর ও ছত্তিশগড় মালভূমি অঞ্চলের বিভিন্ন খনি ও শিল্পাঞ্চলে এই একই কারণে জনসংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে ।
৭. যোগাযোগ ব্যবস্থা ( Transport System ) : উত্তর ভারতের সমভূমি অঞ্চলে সড়কপথ , রেলপথ , জলপথের সুবিধা উপকূলবর্তী বন্দর এলাকায় পরিবহণের সুবিধার জন্য জনবসতি বেশি ।
৮. শিল্পাল ( Industry ) : শিল্পকেন্দ্র কর্মসংস্থান সৃষ্টি করে । বলে সেই সকল স্থানে লোকবসতি বেশি । যেমন— কলকাতা শিল্পাঞ্চল , হুগলি শিল্পাঞ্চল ইত্যাদি ।
৯. অর্থনৈতিক , রাজনৈতিক এবং প্রশাসনিক কেন্দ্র ( Economic , Political & Administrative Centre ) : ব্যাবসাবাণিজ্যে অর্থ বিনিয়োগের উপযুক্ত পরিবেশ এবং রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক কেন্দ্র হওয়ার জন্য দিল্লি , মুম্বাই , কলকাতা প্রভৃতি শহর ও তার আশপাশের অঞ্চলগুলিতে জীবিকানির্বাহের সুবিধা থাকায় ভারতের বিভিন্ন অঞ্চলের অধিবাসীদের আকৃষ্ট করে অত্যন্ত ঘনবসতিপূর্ণ মহানগরীতে রূপান্তরিত হয়েছে ।
১০. অন্যান্য কারণ ( Other Reasons ) : উপরের কারণগুলি ছাড়াও প্রচুর জনসমাগমের জন্য ( 1 ) ঐতিহাসিক স্থান ( আগ্রা , লখনউ , মুরশিদাবাদ ) , ( ২ ) তীর্থকেন্দ্র ( পুরী , বারাণসী , গয়া , তিরুপতি , আজমীর ) , ( ৩ ) গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষাকেন্দ্র ( শান্তিনিকেতন , আলিগড় ) , ( ৪ ) পর্যটন কেন্দ্র ( দার্জিলিং , সিমলা ) , ( ৫ ) স্বাস্থ্যকেন্দ্র ( মধুপুর , চুনার ) , ( ৬ ) গুরুত্বপূর্ণ সামরিক কেন্দ্র ( মিরাট , আম্বালা ) , ( ৭ ) সীমান্ত অঞ্চল ( বনগাঁ , বিরাটনগর প্রভৃতি ) ইত্যাদি স্থানের জনবণ্টনের হার বেশি হয় ।
4. ভারতবর্ষে নগরায়ণ সম্পর্কে যা জান লেখো এবং এর কারণগুলি সংক্ষেপে আলোচনা করো ।
Ans: জোন্সের সংজ্ঞা অনুযায়ী নগরায়ণ হল এমন এক প্রক্রিয়া যার মাধ্যমে গ্রামাঞ্চল ধীরে ধীরে শহরে পরিণত হয় এবং সেখানে আধুনিক জীবনযাত্রা বা জটিল ও সরল উভয়পথে জীবনের চলার পথ সৃষ্টি হয় । • ভারতবর্ষে নগরায়ণ ( Urbanisation In India ) : জোন্সের সংজ্ঞা অনুযায়ী ভারতবর্ষে নগরায়ণের এক সুদীর্ঘ ইতিহাস আছে । আমাদের দেশে খ্রিস্টপূর্ব ৩০০০ বছর আগে থেকেই এই প্রক্রিয়া শুরু হয়েছিল । প্রায় ২৩৫০ খ্রিস্টপূর্বাব্দ থেকে ১৭৫০ খ্রিস্টপূর্বাব্দের মধ্যে হরপ্পা ও মহেন – জো – দারো নগরকেন্দ্রিক সভ্যতার পত্তন ঘটে । ইরাক , ইরান , গ্রিস , মিশর – এর সঙ্গে উত্তর – পশ্চিম ভারতে নগরের বিস্তার ঘটে । আমাদের দেশে ইংরেজরা বিশেষ করে ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি আসার সঙ্গে সঙ্গে নগরায়ণ প্রক্রিয়া দ্রুত ঘটতে থাকে । নগরায়ণের কারণগুলি হল –
( ১ ) রেল , সড়ক ও জলপথে বাণিজ্যের প্রসার
( ২ ) শিক্ষা , স্বাস্থ্যের উন্নতি প্রভৃতির সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণভাবে শহরগুলি বিস্তার লাভ করে ।
( ৩ ) আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের সম্প্রসারণ , সরকারি পরিকল্পনায় গৃহীত নীতি রূপায়ণের ফলে খুব দ্রুতহারে বর্তমানে নগরায়ণ ঘটেছে ।
( ৪ ) ছোটো ছোটো শহরগুলিতে ক্রমে আর্থিক উন্নতি ঘটায় কর্মসংস্থান বাড়ে ফলে জীবিকার তাগিদে বহু মানুষ গ্রাম থেকে শহরমুখী হয় ।
( ৫ ) শিক্ষা ও সাংস্কৃতিক উন্নতির ভাগীদার হওয়ার জন্য বহু মানুষ শহরে চলে আসে এভাবে কোনো ছোটো শহর পরবর্তীকালে নগরে রূপান্তরিত হয় । ২০১১ খ্রিস্টাব্দের আদমশুমারি অনুযায়ী গোয়ায় শহরবাসীর সংখ্যা সর্বাধিক ৪৯.৭৬ % । এ ছাড়া কালক্রমে তামিলনাড়ু ৪৪.৪ % , মহারাষ্ট্র ৪২,৪৩ % , মিজোরাম এর ৪৯.৬৩ % মানুষ শহরবাসী । কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলির মধ্যে দিল্লির জনসংখ্যার ৯৩.১৮ % নগরবাসী , চণ্ডীগড়ের ৮৯.৭৭ % মানুষ নগরবাসী ।
=========================================
ভারতের জনসংখ্যা (ভারত – পঞ্চম অধ্যায়)
অতিসংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর | ভারতের জনসংখ্যা (ভারত – পঞ্চম অধ্যায়) – মাধ্যমিক ভূগোল সাজেশন | Madhyamik Geography Suggestion :
- এককথায় মানুষ – জমি অনুপাত বলতে কী বোঝ ?
Answer : দেশের মোট জনসংখ্যার সঙ্গে মোট কার্যকরী জমির অনুপাত ।
- কোনো দেশের প্রাকৃতিক সম্পদের তুলনায় জনসংখ্যার আধিক্যকে কী বলে ?
Answer : জনাকীর্ণতা বা জনাধিক্যতা ।
- কোনো দেশের প্রাকৃতিক সম্পদের তুলনায় জনসংখ্যা কম । হলে তাকে কী বলে ?
Answer : জনস্বল্পতা বা জনবিরলতা ।
- ভারতের কোন্ কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে শহরবাসীর সংখ্যা সবচেয়ে বেশি ?
Answer : দিল্লির জনসংখ্যার ৯৩.১৮ % শহরবাসী ( ২০১১ ) ।
- ভারতে মোট ক – টি মেগাসিটি রয়েছে ।
Answer : ৩ টি ।
- ভারতের মেগাসিটিগুলি কী কী ?
Answer : বৃহত্তর মুম্বাই , বৃহত্তর কলকাতা ও বৃহত্তর দিল্লি ।
- ভারতের একটি সাংস্কৃতিক শহরের নাম লেখো ।
Answer : পশ্চিমবঙ্গের শান্তিনিকেতন ।
- ভারতের একটি বন্দর নগরের নাম লেখো ।
Answer : পশ্চিমবঙ্গের হলদিয়া ।
- ভারতের কোন রাজ্যের জনঘনত্ব সবচেয়ে বেশি ও সাক্ষরতার হার সবথেকে কম ?
Answer : বিহার ।
- ভারতের ১ টি প্রশাসনিক শহর ও একটি শিল্পশহরের নাম লেখো ।
Answer : ভারতের প্রশাসনিক শহর – দিল্লি , এবং ভারতের জনসংখ্যাশহর — জামসেদপুর ।
- ভারতের ২ টি সামরিক শহরের উদাহরণ দাও ।
Answer : ভারতের ২ টি দুর্গ বা সামরিক শহর হল— পশ্চিমবঙ্গের ব্যারাকপুর ও মধ্যপ্রদেশের গোয়ালিয়র ।
- ভারতের ২ টি বন্দর শহরের নাম লেখো ।
Answer : ভারতের ২ টি বন্দর শহর হল পশ্চিমবঙ্গের হলদিয়া ও ওড়িশার পারাদ্বীপ ।
- ভারতের একটি অত্যধিক জনঘনত্বযুক্ত রাজ্য ও একটি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের নাম লেখো ।
Answer : ভারতের অত্যাধিক জনঘনত্বযুক্ত রাজ্য হল বিহার এবং কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল হল দিল্লি ।
- Census শব্দের উৎপত্তি হয় কোন্ শব্দ থেকে ?
Answer : লাতিন শব্দ ‘ Censre ‘ ।
- ভারতের বর্তমানে মোট জনসংখ্যা কত ?
Answer : ১২১. কোটি ।
- ভারতের জনঘনত্ব কত ?
Answer : প্রতি বর্গকিমিতে ৩৮২ জন ।
- ভারতের কোন্ রাজ্যের জনঘনত্ব সবচেয়ে বেশি ?
Answer : বিহার ( ১১০২ জন / বর্গকিমি ) ।
- ভারতের কোন্ রাজ্যে জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার ঋণাত্মক ( ২০০১–২০১১ ) ?
Answer : নাগাল্যান্ড ।
- ভারতের কোন্ দুটি রাজ্যে কন্যা শিশু মৃত্যুর হার খুব বেশি ?
Answer : হরিয়ানা ও রাজস্থান রাজ্যে ।
- ভারতের কোন্ রাজ্যে জনসংখ্যা সবচেয়ে বেশি ?
Answer : উত্তরপ্রদেশ রাজ্যে ( ১৯.৯৬ কোটি ) ।
- সময়ের অগ্রগতির সাথে সাথে জন্মহার ও মৃত্যুহারে তারতম্যের জন্য জনসংখ্যার স্বাভাবিকভাবে বেড়ে যাওয়াকে কী বলে ?
Answer : জনসংখ্যা বৃদ্ধি ।
- ভারতের মানুষ – জমির অনুপাত কত ?
Answer : প্রতি বর্গকিমিতে প্রায় ৪৩২ জন ।
- এককথায় জনঘনত্ব বলতে কী বোঝ ?
Answer : দেশের মোট জনসংখ্যার সঙ্গে মোট জমির অনুপাত ।
MCQ | ভারতের জনসংখ্যা (ভারত – পঞ্চম অধ্যায়) – মাধ্যমিক ভূগোল সাজেশন | Madhyamik Geography Suggestion :
- কোনো অঞ্চলের মানুষের বণ্টনগত তারতম্যের সূচক হল -(A) ধারণযোগ্য উন্নয়ন(B) কাম্য জনসংখ্যা(C) জনঘনত্ব (D) নগরায়ণ
Answer : (C) জনঘনত্ব
- কোনো পৌর এলাকাকে তখনই শহর বলা যায় , যখন সেখানে লোকসংখ্যা কত জনের বেশি হয় । (A) ২০০০ (B) ৩০০০(C) 8000(D) ৫০০০
Answer : (D) ৫০০০
- কোনো অঞ্চলের জনঘনত্ব নির্ণয় করতে হলে সেই অঞ্চলের মোট আয়তন দিয়ে সেই অঞ্চলের মোট জনসংখ্যাকে _____ করতে হয় ।(A) ভাগ(B) যোগ (C) গুন (D) বিয়োগ
Answer : (A) ভাগ
- ভারতে কোন্ রাজ্যটিতে জনঘনত্ব সর্বাধিক -(A) বিহার (B) পশ্চিমবঙ্গ(C) উত্তরপ্রদেশ (D) কেরল
Answer : (A) বিহার
- গ্রামাঞ্চল ধীরে ধীরে শহরে পরিণত হয় যে প্রক্রিয়ার মাধ্যমে তা হল -(A) কাম্য জনসংখ্যা (B) ধারণযোগ্য উন্নয়ন(C) নগরায়ণ(D) কোনোটাই নয়
Answer : (C) নগরায়ণ
- কোটি ভারতের বৃহত্তম মহানগর -(A) দিল্লি (B) চেন্নাই(C) কলকাতা(D) মুম্বাই
Answer : (D) মুম্বাই
- ভারতে নগরায়ণের হার কত শতাংশ ?(A) ৪০(B) ৩০(C) ৩৫(D) ৪৫
Answer : (B) ৩০
- কোন্ কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে জনঘনত্ব সবচেয়ে কম -(A) দিল্লি (B) আন্দামান ও নিকোবর(C) পুদুচেরি(D) লক্ষাদীপ
Answer : (B) আন্দামান ও নিকোবর
- অতিবিরল জনঘনত্বযুক্ত একটি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল হল— (A) দিল্লি(B) লাক্ষাদ্বীপ(C) আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জ(D) পুদুচেরি
Answer : (C) আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জ
- কোনো শহরের লোকসংখ্যা কত – এর বেশি হলে , সেইসব শহরকে নগর বলে ?(A) ৪৫ (B) ১ লক্ষ(C) ১০ লক্ষ(D) ২ লক্ষ
Answer : (B) ১ লক্ষ
- ভারতে বর্তমানে ক – টি মহানগর রয়েছে ? (A) ৬৮(B) ৪৯(C) ৭৩(D) ৫৩
Answer : (D) ৫৩
- ধারণযোগ্য উন্নয়ন ধারণাটি কার -(A) জিমারম্যান(B) ডেভিস (C) টলেমি(D) এভারবেলফোর
Answer : (D) এভারবেলফোর
- ভারতে কত খ্রিস্টাব্দ থেকে জনগণনা শুরু হয় ?(A) ১৭৭১(B) ১৮৭১ (C) ১৯৭১ (D) ১৯০০
Answer : (B) ১৮৭১
- সাম্প্রতিকতম লোকগণনা ভারতে কত খ্রিস্টাব্দে হয়েছিল ?(A) ২০১০(B) ২০১২(C) ২০১১(D) ২০১৩
Answer : (C) ২০১১
- ভারতে কত বছর অন্তর অন্তর জনগণনা করা হয় ? (A) ১০ (B) ১৫(C) ৫ (D) ২০
Answer : (A) ১০
- কৃষিকাজ , মাছ চাষ , খনিজ আহরণ ইত্যাদি কোন ক্ষেত্রের কার্যকলাপ ? (A) গৌণ (B) অন্যান্য(C) প্রাথমিক(D) প্রগৌণ
Answer : (C) প্রাথমিক
- ভারতের জনসংখ্যা বৃদ্ধির একটি কারণ হল -(A) কন্যাসন্তানের আকাঙ্ক্ষা (B) স্ত্রীশিক্ষার অগ্রগতি(C) চিকিৎসাশাস্ত্রের অবনতি(D) পরিবার পরিকল্পনায় ব্যর্থতা
Answer : (D) পরিবার পরিকল্পনায় ব্যর্থতা
- Census শব্দের উৎপত্তি হয় একটি ____ শব্দ থেকে । (A) লাতিন (B) ফরাসি(C) সংস্কৃত(D) গ্রিক
Answer : (A) লাতিন
- পৃথিবীর প্রায় কত শতাংশ লোক ভারতে বাস করে ? (A) ১৭.৫০ %(B) ১১.৬০ %(C) ২১.৫০ %(D) ২৬.৫০ %
Answer : (A) ১৭.৫০ %
- কোনো দেশের জনসংখ্যা ও সম্পদের পরিমাণ সমান হলে তখন তাকে বলে -(A) জনাকীর্ণতা(B) কাম্য জনসংখ্যা(C) ধারণযোগ্য উন্নয়ন (D) শূন্য জনসংখ্যা বৃদ্ধি
Answer : (B) কাম্য জনসংখ্যা
- ধারণযোগ্য উন্নয়নের জন্য— (A) সঞ্চিত উপকরণের ব্যবহার হ্রাস করতে হবে(B) জীবনযাত্রার মান উন্নত করতে হবে(C) জাতীয় আয় বৃদ্ধি করতে হবে(D) এইগুলির কোনোটাই নয়
Answer : (A) সঞ্চিত উপকরণের ব্যবহার হ্রাস করতে হবে
সংক্ষিপ্ত উত্তরভিত্তিক প্রশ্নোত্তর | ভারতের জনসংখ্যা (ভারত – পঞ্চম অধ্যায়) – মাধ্যমিক ভূগোল সাজেশন | Madhyamik Geography Suggestion :
- অপ্রাপ্তবয়স্ক নির্ভরশীল জনসংখ্যার অনুপাত ( Youth Dependency Ratio or YDR ) বলতে কী বোঝানো হয় ?
Answer : ১৫ বছরের নীচের জনসংখ্যাকে অপ্রাপ্তবয়স্ক জনসংখ্যা বলা হয় । ১৫ বছর বয়সের উপরের জনসংখ্যার ওপর এই অপ্রাপ্তবয়স্ক জনসংখ্যার অর্থনৈতিকভাবে নির্ভরশীলতার গাণিতিক অনুপাতকে অপ্রাপ্তবয়স্ক নির্ভরশীল জনসংখ্যার অনুপাত বলে ।
- ধারণযোগ্য উন্নয়ন ( Substainable Development ) কাকে বলে ?
Answer : যে উন্নয়ন ভবিষ্যৎ প্রজন্মের প্রয়োজন মেটানোর জন্য সম্পদের ভাণ্ডারকে অটুট রেখে , বর্তমান প্রজন্মের চাহিদা মেটায় , তাকেই ধারণযোগ্য উন্নয়ন বলা হয় ।
- শহর ( Town ) কাকে বলে ?
Answer : আদমশুমারি অনুযায়ী যে স্থানের পুরুষ অধিবাসীদের ৭৫ % -এর অধিক কৃষি ছাড়া অন্যান্য জীবিকার ওপর নির্ভর করে , জনঘনত্ব কমপক্ষে ৪০০ জন / বর্গকিমি , ৫০০০ জনের অধিক লোক বসবাস করে এবং এলাকাটি পৌর এলাকা হলে তাকে শহর বা পৌরবসতি ( Town ) বলে ।
- নগরায়ণ ( Urbanisation ) কাকে বলে ?
Answer : নগরায়ণ হল এমন এক প্রক্রিয়া যার মাধ্যমে গ্রামাঞ্চল ধীরে ধীরে শহরে পরিণত হয় এবং যেখানে আধুনিক জীবনযাত্রা জটিল ও সরল উভয়ভাবেই জীবনে চলার পথ সৃষ্টি করে ।
- নগর ( City ) কাকে বলে ?
Answer : যেসব শহরের জনসংখ্যা ১ লক্ষ বা তার বেশি হয় , তাকে নগর বলে । নগরের উদাহরণ — দুর্গাপুর , কল্যাণী , বিধাননগর ইত্যাদি ।
- মহানগর ( Metropolis ) কাকে বলে ?
Answer : যেসব নগরের জনসংখ্যা ১০ লক্ষ বা তার বেশি , সেই নগরগুলিকে মহানগর বলে । গ্রিক শব্দ ‘ Metropolis ‘ কথার অর্থ ‘ মূলনগরী ’ বা ‘ Mother city ‘ । উদাহরণ দিল্লি , মুম্বাই ইত্যাদি ।
- মেগাসিটি ( Megacity ) কাকে বলে ?
Answer : যে সমস্ত শহরের জনসংখ্যা ৫০ লক্ষের বেশি , তাদের মেগাসিটি ( Megacity ) বলে । যেমন — মুম্বাই , কলকাতা দিল্লি ।
- স্ট্যাটুটরি শহর ( Statutory Town ) কাকে বলে ?
Answer : যখন কোনো অঞ্চল , মিউনিসিপ্যালিটি , কর্পোরেশন , ক্যান্টনমেন্ট বোর্ড বা নোটিফায়েড টাউন এরিয়া কমিটি দ্বারা পরিচালিত হয় , তখন তাকে স্ট্যাটুটরি শহর বলে ।
- সেনসাস শহর ( Census Town ) কাকে বলে ?
Answer : কোনো অঞ্চলের নূন্যতম জনসংখ্যা যদি ৫০০০ জন হয় এবং জনসংখ্যার ঘনত্ব যদি ৪০০ জন / বর্গকিমি হয় এবং অঞ্চলটির মোট কর্মক্ষম জনসংখ্যার ৭৫ % যদি কৃষিছাড়া অন্যান্য কাজের সঙ্গে নিযুক্ত থাকে , তখন তাকে সেনসাস শহর বলে ।
- আদমশুমারি ( Census ) বলতে কী বোঝ ?
Answer : কোনো দেশ বা নির্দিষ্ট ভৌগোলিক অঞ্চলে নির্দিষ্ট সময় অন্তর জনসংখ্যা সংক্রান্ত বিভিন্ন প্রকার তথ্য সংগ্রহ ও সংরক্ষণের পদ্ধতি হল সেনসাস বা আদমশুমার ।
- জনসংখ্যা ( Population ) কাকে বলে ?
Answer : বিজ্ঞানের পরিভাষায় কোনো একটি নির্দিষ্ট স্থানে C একটি নির্দিষ্ট সময়ে একই প্রজাতির অন্তর্ভুক্ত সমস্ত জীবকে একত্রিতভাবে জনসংখ্যা বলে । জনসংখ্যা বলতে কোনো স্থানে বসবাসকারী মানুষের সংখ্যাকেই বোঝায় ।
- জনাকীর্ণতা বা জনাধিক্য ( Over population ) কাকে বলে ?
Answer : দেশের জনসংখ্যা যদি বাড়ে এবং তার তুলনায় সম্পদের পরিমাণ যদি কমে যায় , তাহলে সেই দেশে বাড়তি জনসংখ্যা দেখা দেবে । জনসংখ্যার এই অবস্থাকে জনাকীর্ণতা বা জনাধিক্য বলে । যেমন— ভারত , পাকিস্তান , বাংলাদেশ , মায়ানমার ইত্যাদি উন্নয়নশীল দেশে এই অবস্থা লক্ষ করা যায় । জনাকীর্ণতার ফলে দেশে খাদ্যসংকট , হিংসা , রোগব্যাধি , আইন – শৃঙ্খলার অবনতি প্রভৃতি সমস্যা দেখা যায় ।
- জনস্বল্পতা বা জনবিরলতা ( Under population ) কাকে বলে ?
Answer : কোনো দেশে সম্পদের তুলনায় লোকসংখ্যা কম হলে । বা লোকসংখ্যার অভাবে সম্পদ সৃষ্টি না হলে , সেই জনসংখ্যাকে জনস্বল্পতা বা জনবিরলতা বলা হয় । যেমন- অস্ট্রেলিয়া , কানাজ প্রভৃতি দেশে সম্পদের তুলনায় লোকসংখ্যা খুবই কম ।
- জনবিস্ফোরণ ( Population Explotion ) কাকে বলে ?
Answer : যখন কোনো দেশে অতি অল্প সময়ের ব্যবধানে জনসংখ্যা খুব দ্রুত বৃদ্ধি পায় , তখন তাকে জনবিস্ফোরণ বলে । এই অবস্থা তখনই সৃষ্টি হয় , যখন বিজ্ঞানের উন্নতির ফলে জন্মহারের তুলনায় মৃত্যুহার কমে যায় ।
- শূন্য জনসংখ্যা বৃদ্ধি বা স্থির / সুস্থিত জনসংখ্যা ( Stable population ) বলতে কী বোঝ ?
Answer : দেশের জন্মহার ও মৃত্যুহার প্রায় সমান হলে অর্থাৎ জনসংখ্যা বৃদ্ধি প্রায় স্থিতাবস্থা লাভ করলে , তাকে শূন্য জনসংখ্যা বৃদ্ধি বা স্থির জনসংখ্যা বা সুস্থিত জনসংখ্যা বলে ।
- জনসংখ্যার ঋণাত্মক বৃদ্ধি ( Negative Population Growth ) বলতে কী বোঝ ?
Answer : যে সমস্ত দেশে মৃত্যুহারের থেকে জন্মহার কম সেইসব দেশে জনসংখ্যা না বেড়ে বরং হ্রাস পায় । একেই জনসংখ্যার ঋণাত্মক বৃদ্ধি বলা হয় ।
- নির্ভরশীল জনসংখ্যা ( Depending Population ) বলতে কী বোঝ ?
Answer : কর্মঠ কম বা মধ্যবয়স্ক জনসংখ্যার ( যুবক বা যুবতী ) ওপর শিশু , নারী ও বয়স্কদের অর্থনৈতিক নির্ভরশীলতাকেই নির্ভরশীল জনসংখ্যা বলে । নির্ভরশীল জনসংখ্যাকে প্রধানত দু – ভাগে ভাগ করা যায় । যথা- ( i ) শিশু নির্ভরশীলতার অনুপাত বা অপ্রাপ্তবয়স্ক নির্ভরশীল জনসংখ্যা এবং ( ii ) বয়স্ক নির্ভরশীলতার অনুপাত ।
রচনাধর্মী প্রশ্নোত্তর | ভারতের জনসংখ্যা (ভারত – পঞ্চম অধ্যায়) – মাধ্যমিক ভূগোল সাজেশন | Madhyamik Geography Suggestion :
1. ভারতের বিভিন্ন অঞ্চলে জনবণ্টনের তারতম্যের কারণ কী ?
Answer : ভারতের বিভিন্ন অঞ্চলে জনবল্টনের তারতম্যের কারণ ( Factors Influencing the regional distribution of Population in India ) : বিরাট আয়তনের দেশ ভারতের জনসংখ্যা বিশাল ( ২০১১ খ্রিস্টাব্দের জনগণনা অনুযায়ী ভারতের জনসংখ্যা ১২১ কোটির বেশি ) এবং জনঘনত্বও বেশি , কিন্তু এই সুবিশাল জনসংখ্যা , ভারতের সর্বত্র সমানভাবে ছড়িয়ে নেই । ভারতের অঞ্চল বিশেষে জনবণ্টনের এই তারতম্যের প্রাকৃতিক ও অপ্রাকৃতিক কারণগুলি হল –
ভূপ্রাকৃতিক অবস্থা ( Physiographic Condition ) : উত্তরের হিমালয় পার্বত্য অঞ্চল , উত্তর – পূর্বের পাহাড়ি ও মালভূমি অঞ্চল এবং দক্ষিণ ভারতের বিস্তীর্ণ মালভূমি ও পাহাড়ি অঞ্চলের উঁচু – নীচু বন্ধুর ভূমি কৃষিকাজের অনুপযুক্ত ও কিছু কিছু অঞ্চল | দুর্গম বলে এখানে জনসংখ্যা বেশ কম । অন্যদিকে উত্তরের সিন্ধু , গঙ্গা , ব্রহ্মপুত্র সমভূমি অঞ্চল , ও উপকূলের সমভূমি কৃষিকাজের ও বাসস্থান নির্মাণের , যোগাযোগ ব্যবস্থার পক্ষে ভালো বলে এখানে জনসংখ্যা অনেক বেশি ।
- জলবায়ুর বৈচিত্র্য ( Climatic Variation ) সমুদ্র উপকূলবর্তী অঞ্চলে সমভাবাপন্ন জলবায়ুর উপস্থিতি , বৃষ্টিপাতের সমান বণ্টনের জন্য এখানে লোকবসতি ঘন । অপরদিকে , রাজস্থানের মরু অঞ্চল বা গুজরাটের কচ্ছ অঞ্চলে চরমভাবাপন্ন জলবায়ু ও বৃষ্টিপাতের অসম বণ্টনের জন্য জনসংখ্যা কম ।
- নদী ( Rivers ) নদনদীর অবস্থানের জন্য । ( ১ ) যোগাযোগ ও পরিবহণ ব্যবস্থার সুবিধা ও ( ২ ) নদীতীরবর্তী অঞ্চলের পলিসমৃদ্ধ উর্বর মৃত্তিকায় কৃষিকাজে সুবিধা ( ৩ ) জলবিদ্যুৎ উৎপাদন , ( ৪ ) জলসেচ ও জলনিকাশি ব্যবস্থার সুবিধা আছে বলে , উত্তর ভারতের গঙ্গা , সিন্ধু , ব্রহ্মপুত্র ও দক্ষিণ ভারতের মহানদী , গোদাবরী , কৃষ্ণা , কাবেরী নদী উপত্যকায় লোকবসতি বেশি ।
৪. মৃত্তিকা ( Soil ) : উত্তর ও দক্ষিণ ভারতের নদীতীরবর্তী উর্বর মৃত্তিকা ও দাক্ষিণাত্যের উর্বর কৃষ্ণ মৃত্তিকা কৃষিকাজের পক্ষে উপযুক্ত বলে এই সকল অঞ্চলে লোকবসতি ঘন ।
৫. স্বাভাবিক উদ্ভিদ ( Natural Vegetation ) বৃক্ষহীন মরুভূমি ( যেমন — রাজস্থানের মরু অঞ্চল ) অথবা গভীর অরণ্য সংকুল অঞ্চল ( যেমন সুন্দরবন , হিমালয় ও পশ্চিমঘাট পর্বতের পাদদেশ , আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জের বনভূমি অঞ্চল ) মানুষের জীবিকানির্বাহের পক্ষে অসুবিধাজনক বলে এইসব অঞ্চল ঘনবসতিপূর্ণ নয় ।
৬. খনিজসম্পদ ( Mineral resources ) : প্রতিকূল জলবায়ু ও অনুর্বর মৃত্তিকা থাকা সত্ত্বেও যেখানে খনিজসম্পদের প্রাচুর্য দেখা যায় , সেখানে ভূপ্রকৃতি দুর্গম হলেও জীবিকানির্বাহের সুবিধা থাকায় জনসংখ্যা বেশি হয় । ভারতের বিভিন্ন কয়লাখনি অঞ্চলে ( রানিগঞ্জ ও ঝরিয়া ) এইজন্য জনসংখ্যা বেশি । ছোটোনাগপুর ও ছত্তিশগড় মালভূমি অঞ্চলের বিভিন্ন খনি ও শিল্পাঞ্চলে এই একই কারণে জনসংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে ।
৭. যোগাযোগ ব্যবস্থা ( Transport System ) : উত্তর ভারতের সমভূমি অঞ্চলে সড়কপথ , রেলপথ , জলপথের সুবিধা উপকূলবর্তী বন্দর এলাকায় পরিবহণের সুবিধার জন্য জনবসতি বেশি ।
৮. শিল্পাল ( Industry ) : শিল্পকেন্দ্র কর্মসংস্থান সৃষ্টি করে । বলে সেই সকল স্থানে লোকবসতি বেশি । যেমন— কলকাতা শিল্পাঞ্চল , হুগলি শিল্পাঞ্চল ইত্যাদি ।
৯. অর্থনৈতিক , রাজনৈতিক এবং প্রশাসনিক কেন্দ্র ( Economic , Political & Administrative Centre ) : ব্যাবসাবাণিজ্যে অর্থ বিনিয়োগের উপযুক্ত পরিবেশ এবং রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক কেন্দ্র হওয়ার জন্য দিল্লি , মুম্বাই , কলকাতা প্রভৃতি শহর ও তার আশপাশের অঞ্চলগুলিতে জীবিকানির্বাহের সুবিধা থাকায় ভারতের বিভিন্ন অঞ্চলের অধিবাসীদের আকৃষ্ট করে অত্যন্ত ঘনবসতিপূর্ণ মহানগরীতে রূপান্তরিত হয়েছে ।
১০. অন্যান্য কারণ ( Other Reasons ) : উপরের কারণগুলি ছাড়াও প্রচুর জনসমাগমের জন্য ( 1 ) ঐতিহাসিক স্থান ( আগ্রা , লখনউ , মুরশিদাবাদ ) , ( ২ ) তীর্থকেন্দ্র ( পুরী , বারাণসী , গয়া , তিরুপতি , আজমীর ) , ( ৩ ) গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষাকেন্দ্র ( শান্তিনিকেতন , আলিগড় ) , ( ৪ ) পর্যটন কেন্দ্র ( দার্জিলিং , সিমলা ) , ( ৫ ) স্বাস্থ্যকেন্দ্র ( মধুপুর , চুনার ) , ( ৬ ) গুরুত্বপূর্ণ সামরিক কেন্দ্র ( মিরাট , আম্বালা ) , ( ৭ ) সীমান্ত অঞ্চল ( বনগাঁ , বিরাটনগর প্রভৃতি ) ইত্যাদি স্থানের জনবণ্টনের হার বেশি হয় ।
2. ভারতবর্ষে নগরায়ণ সম্পর্কে যা জান লেখো এবং এর কারণগুলি সংক্ষেপে আলোচনা করো ।
Answer : জোন্সের সংজ্ঞা অনুযায়ী নগরায়ণ হল এমন এক প্রক্রিয়া যার মাধ্যমে গ্রামাঞ্চল ধীরে ধীরে শহরে পরিণত হয় এবং সেখানে আধুনিক জীবনযাত্রা বা জটিল ও সরল উভয়পথে জীবনের চলার পথ সৃষ্টি হয় । • ভারতবর্ষে নগরায়ণ ( Urbanisation In India ) : জোন্সের সংজ্ঞা অনুযায়ী ভারতবর্ষে নগরায়ণের এক সুদীর্ঘ ইতিহাস আছে । আমাদের দেশে খ্রিস্টপূর্ব ৩০০০ বছর আগে থেকেই এই প্রক্রিয়া শুরু হয়েছিল । প্রায় ২৩৫০ খ্রিস্টপূর্বাব্দ থেকে ১৭৫০ খ্রিস্টপূর্বাব্দের মধ্যে হরপ্পা ও মহেন – জো – দারো নগরকেন্দ্রিক সভ্যতার পত্তন ঘটে । ইরাক , ইরান , গ্রিস , মিশর – এর সঙ্গে উত্তর – পশ্চিম ভারতে নগরের বিস্তার ঘটে । আমাদের দেশে ইংরেজরা বিশেষ করে ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি আসার সঙ্গে সঙ্গে নগরায়ণ প্রক্রিয়া দ্রুত ঘটতে থাকে । নগরায়ণের কারণগুলি হল –
( ১ ) রেল , সড়ক ও জলপথে বাণিজ্যের প্রসার
( ২ ) শিক্ষা , স্বাস্থ্যের উন্নতি প্রভৃতির সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণভাবে শহরগুলি বিস্তার লাভ করে ।
( ৩ ) আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের সম্প্রসারণ , সরকারি পরিকল্পনায় গৃহীত নীতি রূপায়ণের ফলে খুব দ্রুতহারে বর্তমানে নগরায়ণ ঘটেছে ।
( ৪ ) ছোটো ছোটো শহরগুলিতে ক্রমে আর্থিক উন্নতি ঘটায় কর্মসংস্থান বাড়ে ফলে জীবিকার তাগিদে বহু মানুষ গ্রাম থেকে শহরমুখী হয় ।
( ৫ ) শিক্ষা ও সাংস্কৃতিক উন্নতির ভাগীদার হওয়ার জন্য বহু মানুষ শহরে চলে আসে এভাবে কোনো ছোটো শহর পরবর্তীকালে নগরে রূপান্তরিত হয় । ২০১১ খ্রিস্টাব্দের আদমশুমারি অনুযায়ী গোয়ায় শহরবাসীর সংখ্যা সর্বাধিক ৪৯.৭৬ % । এ ছাড়া কালক্রমে তামিলনাড়ু ৪৪.৪ % , মহারাষ্ট্র ৪২,৪৩ % , মিজোরাম এর ৪৯.৬৩ % মানুষ শহরবাসী । কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলির মধ্যে দিল্লির জনসংখ্যার ৯৩.১৮ % নগরবাসী , চণ্ডীগড়ের ৮৯.৭৭ % মানুষ নগরবাসী ।
3. ভারতের জনসংখ্যা বৃদ্ধির কারণ কী ?
Answer : বিভিন্ন অর্থনৈতিক , সামাজিক , ধর্মীয় এবং রাজনৈতিক কারণের জন্য ভারতের জনসংখ্যা দ্রুত গতিতে বেড়ে চলেছে । ভারতের জনবৃদ্ধির প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ কারণগুলি হল –
১. বেশি জন্মহার ( High birth rate / Fertility rate ) : ভারতে জন্মহার খুব বেশি ( প্রতি হাজারে ২৭.৫ জন ) । তাই ভারতের জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার স্বাভাবিক ভাবেই বেশি ।
২. মৃত্যুর হার কমে যাওয়া ( Low rate of Mortality ) : চিকিৎসাবিজ্ঞানে অভূতপূর্ব উন্নতির জন্য ভারতে মৃত্যুহার কম । প্রতি হাজার জনসংখ্যায় ভারতে মৃত্যুহার হল মাত্র ৯.৪ জন । জন্মহারের তুলনায় মৃত্যুহার কমে যাওয়া ভারতের জনসংখ্যা বৃদ্ধির অন্যতম কারণ ।
৩. অল্প বয়সে বিবাহ ( Early Marriage ) কয়েকটি ব্যতিক্রম ছাড়া ভারতের বেশিরভাগ গ্রামাঞ্চলে ছেলেমেয়েদের অল্প বয়সে বিয়ে হয় । অল্প বয়সে বিয়েও ভারতের জনসংখ্যার অতিরিক্ত বৃদ্ধিতে সহায়তা করে ।
৪. স্বল্প শিক্ষার হার ( Low Literacy Rate ) : ভারতের গ্রামগুলিতে বিশেষ করে নারীশিক্ষার হার এখনও বেশ কম ( ৩৯.২৯ শতাংশ ) হওয়ায় নানান বিষয়ে অজ্ঞতা ও ধর্মীয় কুসংস্কার ভারতের জনসংখ্যা বৃদ্ধিতে সহায়তা করে ।
৫. দারিদ্র্য ( Poverty ) : ভারতের বেশিরভাগ অধিবাসীই দরিদ্র । তাই অর্থনৈতিক নিরাপত্তার আশায় দরিদ্র পরিবারগুলির জনসংখ্যা বৃদ্ধি পায় ।
৬. কৃষি ব্যবস্থার গুরুত্ব ( Importance of Agriculture ) : যে কোনো কৃষিভিত্তিক সমাজব্যবস্থায় পরিবারের সদস্যসংখ্যা বাড়ানোর দিকে সব সময়ই জোর দেওয়া হয় , কারণ কৃষিকাজের জন্য প্রচুর শ্রমিকের প্রয়োজন । শিল্পোন্নতি হওয়া সত্ত্বেও এখনও ভারত কৃষিপ্রধান দেশ , স্বাভাবিক ভাবেই ভারতে জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার বেশি ।
৭. মেয়েদের স্বপ্ন সামাজিক মূল্য ও মর্যাদা ( Lack of respect towards women ) : ভারতের পুরুষতান্ত্রিক সমাজব্যবস্থায় মেয়েদের সামাজিক মর্যাদা পুরুষের তুলনায় কম । ফলে নারীশিক্ষার ব্যাপারে এবং অন্যান্য সামাজিক বিষয়ে মেয়েরা অবহেলার শিকার হয় , যা পরোক্ষভাবে ভারতের জনবৃদ্ধি ঘটাতে সহায়তা করে ।
৮. পুত্র সন্তানাকাঙ্ক্ষা ( Desire for a boy child ) : ভারতের বিশেষত কুসংস্কারাচ্ছন্ন সমাজব্যবস্থায় পুত্র সন্তানের জন্য অতিরিক্ত আকাঙ্ক্ষা ভারতের জনসংখ্যা বাড়াতে সাহায্য করে ।
৯. যৌথ সামাজিক প্রথা ( Joint Family Tradition ) : কৃষিপ্রধান ভারতে , বিশেষত গ্রামাঞ্চলের যৌথ পরিবার প্রথা জনসংখ্যা বৃদ্ধিতে পরোক্ষভাবে সহায়তা করে ।
১০. উদ্বাস্তু সমস্যা ও অনুপ্রবেশ ( Illigal Immigration ) : উদ্বাস্তু সমস্যা ও অনুপ্রবেশের ফলেও ভারতের অস্বাভাবিক জনবৃদ্ধি ঘটেছে , কারণ— ( ১ ) স্বাধীনতার পর সাবেক পূর্ব ও পশ্চিম পাকিস্তান থেকে এবং বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর বাংলাদেশ থেকে উদাস্তুরা নানান কারণে বাধ্য হয়ে সীমান্ত পেরিয়ে ভারতে এসে স্থায়ীভাবে বসবাস করছেন ; ( ২ ) বিগত কয়েক বছর হল পশ্চিমবঙ্গ , অসম , ত্রিপুরা প্রভৃতি রাজ্যের সীমান্ত অঞ্চলগুলিতে পার্শ্ববর্তী বিদেশি রাষ্ট্র বাংলাদেশ থেকে ব্যাপকভাবে বেআইনি অনুপ্রবেশও ভারতের জনসংখ্যাকে বাড়িয়ে তুলেছে ।
4. ভারতের জনসংখ্যা বৃদ্ধির প্রভাব কী ?
Answer : ভারতের জনসংখ্যা বৃদ্ধির অনুকুল ও প্রতিকূল প্রভাবগুলি আলোচনা করা হল । vt অনুকূল প্রভাব ( Positive Effect of Population Growth ) :
- জনসংখ্যা বৃদ্ধি পেলে অনেক ক্ষেত্রে সম্পদ উৎপাদনের হার বাড়ে । কৃষি শিল্প , বাণিজ্য ও অন্যান্য কর্মক্ষেত্রে শ্রমের জোগান বৃদ্ধি পায় ।
- উৎপাদন বৃদ্ধি পায় এবং শ্রমিকের চাহিদা বৃদ্ধি পায় ।
- কর্মসংস্থান ও আয়ের সুযোগ বৃদ্ধি পেলে জীবনযাত্রার মান বাড়ে ।
- বিশ্বায়নের সাথে সাথে শিল্পায়ন ও নগরায়ণ ঘটে । উন্নত নগরসভ্যতা গড়ে ওঠে ।
- দেশে উৎপাদনে সক্ষম জনগোষ্ঠীর আয়তন বৃদ্ধি পেলে সম্পদ উৎপাদনের সাথে সাথে মূলধন বাড়তে থাকে যা বিনিয়োগ করে পুনরায় জাতীয় আয় বৃদ্ধি করা যায় ।
- উন্নত নগরসভ্যতার সম্প্রসারণ ঘটে গ্রামাঞ্চলগুলিতেও ফলে গ্রাম্য জীবনের অর্থনৈতিক তথ্য সামাজিক কাঠামোতে পরিবর্তন আসতে থাকে ।
- অভ্যন্তরীণ বাণিজ্যের সাথে সাথে বৈদেশিক বাণিজ্যও বৃদ্ধি পায় ফলে দেশে বৈদেশিক মুদ্রার সঞ্চয় ঘটতে থাকে । দেশের অর্থনৈতিক উন্নতি ঘটতে থাকে ।
- জনসংখ্যা বৃদ্ধির ফলে মানব সম্পদের পরিমাণ বাড়তে থাকে ।
- শিক্ষা , স্বাস্থ্য , পরিবহণ ও সর্বোপরি জীবনযাত্রার মানে উন্নতি ঘটে ।
প্রতিকূল প্রভাব ( Negative Effect of Population Growth ) :
১. দ্ৰুত জনসংখ্যা বৃদ্ধি পেলে দেশে খাদ্যাভাব দেখা দেয় । ফলে অপুষ্টি ও দারিদ্র্য প্রকট হয়ে ওঠে ।
২. সম্পদের তুলনায় জনসংখ্যা বেশি হলে দেশে অনুৎপাদক মানুষের সংখ্যা বাড়ে , বেকারত্ব বাড়ে ফলে এক প্রতিকূল অর্থনৈতিক পরিস্থিতির সৃষ্টি হয় ।
৩. প্রয়োজনের তুলনায় কর্মসংস্থান কম হওয়ায় বেকারত্ব বাড়ে ।
৪. মাথাপিছু আয় ও উৎপাদন কম হয় ফলে জীবনযাত্রার মান কমে ।
৫. অধিক জনসংখ্যা পরিবেশের ভারসাম্য নষ্ট করে , কৃষিজোত ক্রমশ ক্ষুদ্র থেকে ক্ষুদ্রতর হতে থাকে ।
৬. মানুষের প্রয়োজন মেটাতে গিয়ে বনভূমি ধ্বংস হয় এবং দূষণ বাড়ে । আর্থসামাজিক ভারসাম্য নষ্ট হয় ।
৭. ঘিঞ্জি অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ সৃষ্টি হয় , রোগজীবাণুর প্রকোপ বাড়ে , শিক্ষা , স্বাস্থ্য ব্যবস্থার অনুন্নতি ঘটে , অপরাধ প্রবণতা বাড়ে ।
৮. উৎপাদন ব্যয় বাড়ে , উৎপাদন কমে , মূলধন সঞ্জয় ও বিনিয়োগ কমে । ফলে জাতীয় আয় কমে ফলে সার্বিকভাবে অর্থনীতির ক্ষতি হয় ।
=========================================
সঠিক উত্তর নির্বাচন কর (MCQ)
[প্রতিটি প্রশ্নের প্রশ্নমান ১]
1। কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলির মধ্যে জনঘনত্ব সর্বাধিক-
ক) পুদুচেরি খ) লাক্ষাদ্বীপ গ) দিল্লী ঘ) চণ্ডীগড়
উত্তর- কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলির মধ্যে জনঘনত্ব সর্বাধিক গ) দিল্লী।
2। ভারতে সার্বিক স্বাক্ষরতার হার (2011) –
ক) 74.04% খ) 77.2% গ) 70.8% ঘ) 84.2%
উত্তর- ভারতে সার্বিক স্বাক্ষরতার হার (2011) ক) 74.04%.
3। জনসংখ্যাকে মোট ক্ষেত্রমান দিয়ে ভাগ করলে পাওয়া যায়-
ক) জনঘনত্ব খ) স্বাক্ষরতা হার গ) শিশু মৃত্যু হার ঘ) কোনোটিই নয়
উত্তর- জনসংখ্যাকে মোট ক্ষেত্রমান দিয়ে ভাগ করলে পাওয়া যায় ক) জনঘনত্ব।
4। অতিস্বল্প ঘনত্বযুক্ত রাজ্যটি হল –
ক) উত্তর প্রদেশ খ) কেরালা গ) গোয়া ঘ) সিকিম
উত্তর- অতিস্বল্প ঘনত্বযুক্ত রাজ্যটি হল ঘ) সিকিম।
5। ভারতের সর্বাধিক জনবহুল রাজ্য-
ক) কর্ণাটক খ) উত্তরপ্রদেশ গ) পশ্চিমবঙ্গ ঘ) উত্তরাখন্ড
উত্তর- ভারতের সর্বাধিক জনবহুল রাজ্য খ) উত্তরপ্রদেশ।
দীর্ঘ উত্তরভিত্তিক প্রশ্ন (LA)
[প্রতিটি প্রশ্নের প্রশ্নমান ৫]
1। ভারতের জনসংখ্যা বণ্টনের তারতম্যের পাঁচটি কারণ আলোচনা করো।
উত্তর- বিশ্বের জনবহুল দেশগুলির মধ্যে ভারত দ্বিতীয়। সেই ভারতে জনসংখ্যা বন্টনে তারতম্যে দেখা যায়। এর কারণগুলি হল,
a) ভূ-প্রকৃতি- ভারতে ভূপ্রকৃতির বৈচিত্র্যতা বেশ বেশী যার ফলস্বরূপ জনসংখ্যা বন্টনের তারতম্য লক্ষ্য করা যায়। উত্তরের হিমালয় পার্বত্য অঞ্চল উত্তর পূর্বের পাহাড়ি অঞ্চল এবং দক্ষিণ ভারতের পার্বত্য অঞ্চলের ভূ প্রকৃতি বন্ধুর ও দুর্গম ফলে পরিবহণ ও যোগাযোগ ব্যবস্থার অভাব এবং কৃষি ও শিল্পের বিকাশের অভাবের জন্য এই সমস্ত অঞ্চলে বিক্ষিপ্ত জনবসতি গড়ে উঠেছে। আর লক্ষ্য করা যায় যে সমভূমি অঞ্চলে উন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থা এবং কৃষি ও শিল্পের উন্নতির জন্য জনঘনত্ব বেশী। যেমন- গাঙ্গেয় সমভূমি অঞ্চল।
b) জলবায়ু- ভারতের উত্তরে হিমালয়ের শৈত্যের জন্য লোকসংখ্যা কম আবার তামিলনাড়ু অন্ধ্রপ্রদেশ প্রভৃতি রাজ্যে অনুকূল জলবায়ুর জন্য এখানে জনসংখ্যা বেশী। থর মরুভূমিতে অতিরিক্ত উষ্নতার জন্যেও জনসংখ্যা কম হতে দেখা যায়।ভারতে মূলত উষ্নতার পাশাপাশি বৃষ্টিপাতের ও তারতম্যের জন্য জনসংখ্যার অসম বন্টন লক্ষ্য করা যায়।
c) মৃত্তিকা- উর্বর মৃত্তিকা অঞ্চলে কৃষিকাজ ভালো হওয়ায় জনবসতি ঘন হয়। যেমন- গঙ্গা, ব্রহ্মপুত্র, শতদ্রু, প্রভৃতি নদী অববাহিকা, উর্বর পলিমাটি, দাক্ষিণাত্য মালভূমির উর্বর কৃষ্ণমৃত্তিকা অঞ্চল জনঘনবসতিপূর্ন, আবার দক্ষিণ ভারতের ল্যাটেরাইট মাটি রাজস্থানের সিরোজেম মাটিতে জনসংখ্যা পরিমাণ কম।
d) খনিজ সম্পদ- খনিজ সম্পদ উত্তোলনকে কেন্দ্র করে ভারতের অনেকাংশে গড়ে ওঠে জনবসতি। এই কারণে ভারতের বিভিন্ন অঞ্চলে বিশেষ করে ছোটোনাগপুর মালভূমি অঞ্চলে জনসংখ্যা বেশি লক্ষ্য করা যায়।
e) চাষবাস- ভারত কৃষি প্রধান দেশ হওয়ায় জনঘনত্ব খুবই বেশি। যে সমস্ত অঞ্চলে মৃত্তিকা উর্বর সেখানে জলসেচের সুবিধা আছে, এই সমস্ত অঞ্চল কৃষিকাজে উন্নত হওয়ার দরুণ এখানে জনসংখ্যা অত্যধিক বেশী আবার যে সমস্ত অঞ্চল কৃষিকাজের অনুপযোগী সেখানে জনসংখ্যাও খুবই কম।
f) শিল্প- ভারতের যে সমস্ত জায়গায় শিল্পের আধিক্য বেশী সেখানে কর্মসংস্থানের সুযোগ সুবিধা থাকায় জনসংখ্যা বহু অংশে বেড়ে চলেছে। যেমন দিল্লী মুম্বই কলকাতা ব্যাঙ্গালোর প্রভৃতি শহরে শিল্প সংস্কৃতির উপর ভিত্তি করে জনসংখ্যা প্রায় প্রচুর।
2। শহর গড়ে ওঠার কারণগুলি উল্লেখ করে ভারতের বিভিন্ন শহরের উদাহরণসহ বিষয়টি বিস্তৃত আলোচনা করো।
উত্তর- জীবনের সমস্ত রকমের চাহিদা যেখানে মেটানোর উপায় থাকে সেই স্থান বা অঞ্চলকে কেন্দ্র করেই নগর গড়ে ওঠে। নগর গড়ে ওঠার প্রধান কারণগুলি নিম্মলিখিত
• প্রাকৃতিক কারণ
a) বন্দরের নৈকট্য- সমুদ্র উপকূলবর্তী অবস্থানের কারণে কোনো কোনো স্থানে প্রাকৃতিক বন্দর গড়ে ওঠে। আর এই বন্দরকে কেন্দ্র করেই শহর বা নগর তৈরি হয়। যেমন- কলকাতা, বিশাখাপত্তনম প্রভৃতি।
b) অবস্থানগত কারণ- কোনো স্থানের অবস্থানগত অনুকূল পরিবেশ সেই স্থানে শহর গড়ে তুলতে সাহায্য করে। যেমন- মুম্বাই শহরের অবস্থানের উপর ভিত্তি করে সেখানকার মনোরম আবহাওয়ার জন্য নগর বা শহর গড়ে ওঠে।
c) দৃশ্যগত কারণ- নৈসর্গিক প্রাকৃতিক দৃশ্যের কারণে বিভিন্ন স্থানে পর্যটন শিল্পের বিকাশ ঘটেছে, আর এই পর্যটন শিল্পকে কেন্দ্র করেই গড়ে উঠেছে শহর বা নগর। যেমন- শ্রীনগর, কুলু, মানালি, উটি প্রভৃতি।
• অর্থনৈতিক কারন
a) শিল্প- বেশিরভাগ জায়গায় লক্ষ্য করলে দেখা যায় যে শিল্পকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠেছে শহর। যেমন- দুর্গাপুর, জামশেদপুর, বোকারো প্রভৃতি
b) বাণিজ্যিক ক্রিয়াকলাপ- বাজার বা বাণিজ্যের উপর ভিত্তি করেও শহর বা নগর গড়ে উঠে। যেমন- কলকাতা, দিল্লি, মুম্বাই প্রভৃতি।
• সাংস্কৃতিক কারণ
a) শিক্ষা- শিক্ষাকেন্দ্র বা বিশ্ববিদ্যালয়কে কেন্দ্র করেও নগর গড়ে ওঠে। যেমন- নালন্দা, শান্তিনিকেতন, কলকাতা প্রভৃতি।
b) ধর্ম:- শিক্ষার পাশাপাশি ধর্মকে কেন্দ্র করেও নগর গড়ে ওঠে সেখানে সারাবছর ধরে তীর্থক্ষেত্রের টানে মানুষ ভিড় জমায় যেমন:- হরিদ্বার, পুরী, বৃন্দাবন, গয়া প্রভৃতি।
• অন্যান্য কারণ
a) সামরিক ক্রিয়াকলাপ- সামরিক ক্রিয়াকলাপ, সেনাবাহিনীর প্রয়োজনীয় শিল্প, উন্নত পরিবহন ব্যবস্থার উপর ভিত্তি করেও শহর গড়ে উঠে। যেমন- পাঁচমারি, ব্যারাকপুর প্রভৃতি।
b) প্রশাসনিক ক্রিয়াকলাপ- প্রশাসনিক কাজকর্মের জন্য রাজধানী, মহকুমা, সদর শহর প্রভৃতি গড়ে ওঠে। যেমন- দিল্লি, ভুবনেশ্বর প্রভৃতি।
c)পরিব্রাজন কারণ- পার্শ্ববর্তী অঞ্চল বা দেশ থেকে বহু মানুষ বা শরণার্থীদের আগমনে জনসংখ্যা চাপ বেড়ে গেলে কোনো স্থান, শহর বা নগরে পরিণত হয়। যেমন- সল্টলেক।
©kamaleshforeducation.in(2023)