মাধ্যমিক দশম শ্রেণীর ভূগোল প্রশ্ন ও উত্তর
বর্জ্য ব্যবস্থাপনা (চতুর্থ অধ্যায়)
SOURCE-BHUGOLSHIKSHA.COM
মাধ্যমিক ভূগোল প্রশ্ন ও উত্তর
বর্জ্য ব্যবস্থাপনা (চতুর্থ অধ্যায়)
- কঠিন বর্জ্য থেকে যে গ্যাস পাওয়া যায় , তা হল –
(A) কার্বন ডাইঅক্সাইড
(B) জৈব গ্যাস
(C) মিথেন
(D) অ্যামোনিয়া
Ans: (C) মিথেন
- একটি পরিবেশ মিত্র বর্জ্য হল –
(A) চট
(B) প্লাস্টিক
(C) কাচ
(D) সিসা
Ans: (A) চট
- একটি কঠিন বর্জ্যের উদাহরণ হল –
(A) হাসপাতালে ব্যবহৃত সিরিঞ্জ
(B) পয়ঃপ্রণালীর বর্জ্য
(C) বাতানুকূল যন্ত্র থেকে নির্গত ক্লোরোফ্লুরোকার্বন
(D) কোনোটিই নয়
Ans: A) হাসপাতালে ব্যবহৃত সিরিঞ্জ
- একটি তরল বর্জ্যের উদাহরণ হল –
(A) খবরের কাগজ
(B) ছেঁড়া জুতো
(C) কীটনাশক মিশ্রিত জল
(D) শিল্পকারখানার বিষাক্ত কণা
Ans: (C) কীটনাশক মিশ্রিত জল
- একটি গ্যাসীয় বর্জ্যের উদাহরণ হল –
(A) ক্র্যাপ
(B) ডিটারজেন্ট
(C) জীবাশ্ম জ্বালানি
(D) ক্রুড অয়েল
Ans: (C) জীবাশ্ম জ্বালানি
- হিরোসিমা – নাগাসাকিতে নিক্ষিপ্ত বোমা –
(A) গ্যাসীয় বর্জ্যের উদাহরণ
(B) বিষাক্ত বর্জ্যের উদাহরণ
(C) বিষহীন বর্জ্যের উদাহরণ
(D) তেজস্ক্রিয় বর্জ্যের উদাহরণ
Ans: (C) বিষহীন বর্জ্যের উদাহরণ
- ভাঙা মগ কী প্রকার ?
(A) জৈব ভঙ্গুর
(B) জৈব অভঙ্গুর
(C) বিষহীন
(D) বিষাক্ত
Ans: (A) জৈব ভঙ্গুর
- তেজস্ক্রিয় বর্জ্যের প্রধান উৎসস্থল –
(A) শিল্প কারখানা
(B) জলবিদ্যুৎ কেন্দ্ৰ
(C) জলশোধন কেন্দ্র
(D) পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র
Ans: (D) পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র
- Hazardous waste ‘ বলা হয় –
(A) বিষহীন বর্জ্য পদার্থকে
(B) বিষাক্ত বর্জ্য পদার্থকে
(C) জৈব ভঙ্গুর বর্জ্য পদার্থকে
(D) জৈব অভঙ্গুর বর্জ্য পদার্থকে
Ans: B) বিষাক্ত বর্জ্য পদার্থকে
- খবরের কাগজ একপ্রকার –
(A) জৈব অভঙ্গুর পচনশীল তরল
(B) জৈব ভঙ্গুর
(C) গ্যাসীয় বর্জ্য
(D) জৈব অভঙ্গুর পদার্থকে
Ans: (B) জৈব ভঙ্গুর
- চিকিৎসা সংক্রান্ত বর্জ্যের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল –
(A) পলিথিন ব্যাগ
(B) স্যালাইন বোতল
(C) মিথেন
(D) পয়ঃপ্রণালীর বর্জ্য
Ans: (B) স্যালাইন বোতল
- বর্জ্য জল শোধনের প্রক্রিয়াকে ভাগ করা যায়—
(A) ২ টি স্তরে
(B) ১ টি স্তরে
(C) ৩ টি স্তরে
(D) ৪ টি স্তরে
Ans: (C) ৩ টি স্তরে
- বর্জ্য ব্যবস্থাপনা প্রক্রিয়ায় ক – টি স্তর দেখা যায় ?
(A) ১ টি
(B) ২ টি
(C) ৩ টি
(D) ৪ টি
Ans: (C) ৩ টি
- বায়ুতে উপস্থিত জীবাণু বর্জ্যে জৈব পদার্থের বিশ্লেষণ ঘটালে তাকে বলে
(A) কম্পোস্টিং
(B) ওভার ফিলিং
(C) ল্যান্ডফিলিং
(D) কম্পাউন্ডিং
Ans: (A) কম্পোস্টিং
- পৌর বর্জ্য শহর থেকে দূরে সরিয়ে মাটিতে পুঁতে দেওয়ার পদ্ধতিকে বলে—
(A) বর্জ্য পৃথকীকরণ
(B) কম্পোস্টিং
(C) জমি ভরাটকরণ
(D) নিষ্কাশন
Ans: (C) জমি ভরাটকরণ
- বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে কোনো ব্যবহৃত দ্রব্যকে পুনরায় পূর্বাবস্থায় ফিরিয়ে আনার পদ্ধতিকে বলে—
(A) বর্জ্যের পরিমাণগত হ্রাস
(B) পুনর্ব্যবহার
(C) পুনর্নবীকরণ
(D) নিষ্কাশন
Ans: (B) পুনর্ব্যবহার
- ফ্লাই অ্যাশ কী প্রকার বর্জ্যের উদাহরণ ?
(A) গৃহস্থালি
(B) শিল্প
(C) কৃষিজ
(D) পৌর
Ans: C) কৃষিজ
- DDT কী প্রকার বর্জ্যের উদাহরণ ?
(A) কৃষিজ
(B) চিকিৎসা
(C) গৃহস্থালি
(D) পৌর
Ans: (A) কৃষিজ
- বিভিন্ন ইলেকট্রনিক্স বস্তুজাত বর্জ্যকে বলে—
(A) Toxic waste
(B) E – waste
(C) Radioactive waste
(D) Hazardous waste
Ans: (B) E – waste
- ল্যান্ডফিল থেকে উৎপন্ন গ্যাস হল –
(A) মিথেন
(B) অ্যামোনিয়া
(C) নাইট্রোজেন
(D) কোনোটিই নয়
Ans: B) অ্যামোনিয়া
SOURCE-BHUGOLSHIKSHA.COM
মাধ্যমিক ভূগোল প্রশ্ন ও উত্তর
বর্জ্য ব্যবস্থাপনা (চতুর্থ অধ্যায়)
অতিসংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর
- জৈব বর্জ্য পদার্থের পচনের ফলে উৎপন্ন সারকে কী বলে ?
Ans: জৈবসার বা বায়োফার্টিলাইজার ।
- দুটি তেজস্ক্রিয় বর্জ্যের উদাহরণ দাও ।
Ans: রেডিয়াম -২২৬ এবং কার্বন -১৪ ।
- দুটি লৌহ – ইস্পাত শিল্পের এর নাম লেখো যেখান থেকে দূষিত গরম জল নির্গত হয় ।
Ans: ব্লাস্ট ফার্নেসে ও তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে ।
- জৈব ভঙ্গুর দুটি বর্জ্যের উদাহরণ দাও ।
Ans: শাকসবজি , খাবারের অবশিষ্টাংশ ।
- জৈব অভঙ্গুর দুটি বর্জ্যের উদাহরণ দাও ।
Ans: প্লাস্টিক , কাচ ।
- কাগজ শিল্প থেকে কী বর্জ্য নির্গত হয় ?
Ans: সেলুলোজ ।
- দুটি বিষাক্ত জৈব বর্জ্যের নাম লেখো ।
Ans: সিসা , পারদ ।
- দুটি চিকিৎসা বর্জ্যের উদাহরণ দাও ।
Ans: ক্যাথিটার , সিরিঞ্জ ।
- শিল্পের বায়ুকে শোধনের জন্য প্রচলিত পদ্ধতিকে কী বলে ?
Ans: স্ক্রাবার ।
- জীবাণু দ্বারা বর্জ্যের বিয়োজন পদ্ধতিকে কী বলে ?
Ans: কম্পোস্টিং ।
- বর্জ্য জল শোধনের পদ্ধতিকে কী বলে ?
Ans: নিষ্কাশন ।
- মাটিতে পুঁতে বর্জ্য অপসারণ পদ্ধতিকে কী বলে ?
Ans: জমি ভরাটকরণ ( Land Filling ) |
- দুটি কৃষিবর্জ্যের উদাহরণ দাও ।
Ans: পেস্টিসাইড ; কীটনাশক দ্রব্য ।
- গৃহস্থালিতে ব্যবহৃত দুটি কঠিন বর্জ্যের উদাহরণ দাও ।
Ans: কোল্ড ড্রিংকসের বোতল ; দুধের প্লাস্টিক প্যাকেট
15.গৃহস্থালিতে ব্যবহৃত দুটি তরল বর্জ্যের উদাহরণ দাও ।
Ans: সাবান কাচা জল , তরকারির জলীয় অবশিষ্টাংশ বা উচ্ছৃষ্ট , অংশ ।
- বর্জ্য ‘ পুনর্নবীকরণ ’ বিদ্যুৎ উৎপাদনে ব্যবহৃত হচ্ছে , উদাহরণ দাও ।
Ans: আখের ছিবড়া থেকে উৎপাদিত বিদ্যুৎ ।
- বর্জ্যের পরিমাণ কমানোর পদ্ধতিকে কী বলে ?
Ans: Reduce .
- বর্জ্যের আবার ব্যবহারযোগ্য হওয়ার পদ্ধতিকে কী বলে ?
Ans: Reuse .
- বর্জ্যের মধ্যে যেগুলি জীবাণু দ্বারা বিয়োজিত হয় তাকে কোন ধরনের বর্জ্য বলে ?
Ans: Biodigradable বা জৈব ভঙ্গুর বর্জ্য ।
- তেজস্ক্রিয় বর্জ্য কোন্ শিল্প থেকে মূলত নির্গত হয় ?
Ans: পারমাণবিক শিল্প ।
- রাসায়নিক শিল্প থেকে নির্গত বর্জ্যের উল্লেখ করো ।
Ans: রং , অ্যাসিড , তেল ।
- ভারতে শহরে প্রতিদিন কত পরিমাণ বর্জ্য সৃষ্টি হয় ?
Ans: ৫০০ গ্রাম / জন ।
- ভারতে গ্রামে প্রতিদিন কত পরিমাণ বর্জ্য সৃষ্টি হয় ?
Ans: ৩০০ গ্রাম / জন ।
- তৈলশোধনাগার থেকে অসম্পূর্ণ দহনের ফলে উদ্ভূত কণাকে কী বলে ?
Ans: পেট্রোকোক ।
- কয়লা দহনে সৃষ্ট সূক্ষ্ম আণুবীক্ষণিক ভস্মকে কী বলে ?
Ans: ফ্লাই অ্যাশ ।
SOURCE-BHUGOLSHIKSHA.COM
মাধ্যমিক ভূগোল প্রশ্ন ও উত্তর
বর্জ্য ব্যবস্থাপনা (চতুর্থ অধ্যায়)
সংক্ষিপ্ত উত্তর ভিত্তিক প্রশ্নোত্তর
- বর্জ্য ( Waste ) কাকে বলে ?
Ans: ব্যবহারের অযোগ্য , পরিত্যক্ত , কঠিন – তরল – গ্যাসীয় অবস্থায় প্রকৃতিতে পড়ে থাকা বস্তু যা পরিবেশদূষণের অন্যতম কারণ তাকে বলে বর্জ্য । যেমন — ভাঙা প্লাস্টিক , ছেঁড়া কাগজ , নোংরা জল ইত্যাদি ।
- পদার্থের বস্তুগত অবস্থা অনুসারে বর্জ্য ক – প্রকার প্রশ্ন । কী কী ?
Ans: পদার্থের বস্তুগত অবস্থার ভিত্তিতে বর্জ্য তিন প্রকার যথা— কঠিন , তরল ও গ্যাসীয় বর্জ্য ।
- কঠিন বর্জ্য ( Solid waste ) কাকে বলে ?
Ans: যে কঠিন বস্তু অব্যবহৃত অবস্থায় পরিবেশের অবনমন বা দূষণ ঘটাতে সাহায্য করে , তাকে বলে কঠিন বর্জ্য্য । যেমন — খাবারের অবশিষ্ট অংশ , গৃহস্থালির জঞ্ঝাল , প্লাস্টিক , পেপার , ভাঙা কাচের বোতল , চট , সিরিঞ্জ , ইলেকট্রনিকস দ্রব্য ইত্যাদি ।
- কঠিন বর্জ্য পোড়ানো উচিত নয় কেন ?
Ans: কঠিন বর্জ্য পোড়ালে তা থেকে যে গ্যাসগুলি ( যেমন — সালফার ডাইঅক্সাইড , হাইড্রোজেন ফ্লুরাইড , কার্বন মনোক্সাইড ) নির্গত হয় , তা পরিবেশদূষণ ঘটায় । তাই কঠিন বর্জ্যকে অবৈজ্ঞানিকভাবে পোড়ানো উচিত নয় । জেনে রাখো ভস্মীভূতকরণ ( Incineration ) : কঠিন বর্জ্য পদার্থকে আবর্জনা পোড়ানোর চুল্লিতে বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে অতি উচ্চচাপে পোড়াবার পদ্ধতিকে ভস্মীভূতকরণ বলা হয় । পুড়ে যাবার পরে যে ছাই , কাচ ও অন্যান্য ধাতু অদাহ্যবস্তুরুপে পড়ে থাকে তা সংগ্রহ করে পুনর্ব্যবহার করা হয় ।
- তরল বর্জ্য ( Liquid Waste ) কাকে বলে ?
Ans: প্রকৃতিতে দূষণ সৃষ্টিকারী তরল অব্যবহৃত যৌগ যখন অপরিশোধিত অবস্থায় পরিবেশের ক্ষতি করে , তখন তাকে তরল বর্জ্য বলে । যেমন — গৃহস্থালি , কলকারখানার ব্যবহৃত দুষিত জল , কাপড় কাচা , বাসন মাজার দূষিত জল ইত্যাদি ।
- গৃহস্থালির কঠিন বর্জ্যের কয়েকটি উদাহরণ দাও ।
Ans: গৃহস্থালির কঠিন বর্জ্যের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল আনাজের খোসা , ভাঙা খেলনা , প্লাস্টিক মগ , ধাতুর ভাঙা অংশ ছেঁড়া কাপড় , পুরোনো কাগজ , প্লাস্টিক প্যাকেট ইত্যাদি ।
- গৃহস্থালির তরল বর্জ্যের উদাহরণ দাও ।
Ans: বাথরুমে ব্যবহৃত ডিটারজেন্ট , শ্যাম্পু , রিচিং পাউডার , অ্যাসিড , মিউরিটিক অ্যাসিড , ফিনাইল মিশ্রিত জল , রান্নাঘরের মশলা , তেল মিশ্রিত তরল , রান্নার উচ্ছিষ্টাংশ ইত্যাদি ।
- বর্জা জলকে কীভাবে জীবাণুমুক্ত করা হয় ?
Ans: বিভিন্ন প্রকার জীবাণুনাশক পদ্ধতির মাধ্যমে বর্জ্য জলকে জীবাণুমুক্ত করা হয় । যেমন— অতিবেগুনি রশ্মির ব্যবহার , জলে ক্লোরিনের ব্যবহার , জল ফুটিয়ে খাওয়া ইত্যাদির মাধ্যমে জল শুদ্ধ করা হয় ।
- গ্যাসীয় বর্জ্য ( Gaseous Waste ) কাকে বলে ?
Ans: বাতাসে ভাসমান লবণকণা , বায়ুকণা , ধুলোকণা , যখন পরিবেশের ক্ষতিসাধন করে , তাকে বলে গ্যাসীয় বর্জ্য । যেমন —– কলকারখানা এবং ইটভাটা থেকে নির্গত ধোঁয়া , যানবাহনের ধোঁয়া , গৃহস্থালি থেকে নির্গত কার্বন মনোক্সাইড ও কার্বন ডাইঅক্সাইড , মিথেন , অ্যামোনিয়া ইত্যাদি ।
- বিষাক্ত বর্জ্য ( Toxic Waste ) বলতে কী বোঝ ?
Ans: নানা ধরনের বর্জ্য পদার্থ , যা থেকে বিভিন্ন ধরনের বিষক্রিয়তার উদ্ভব হয় এবং যেগুলি একেবারেই পরিবেশবান্ধব নয় , সেগুলিকে বলা হয় বিষাক্ত বর্জ্য পদার্থ । যেমন — শিল্পজাত নানান প্রকার তেজস্ক্রিয় পদার্থ ( ইউরেনিয়াম , থোরিয়াম প্রভৃতি ) এবং কিছু রাসায়নিক তরল পদার্থ , যা বিষক্রিয়া ঘটাতে পারে ।
- বিষহীন বর্জ্য ( Non – toxic Waste ) বলতে কী বোঝ ?
Ans: যেসব বর্জ্য পদার্থগুলির বিষক্রিয়তা নেই , যেগুলি পরিবেশের কোনো প্রকার ক্ষতিসাধন করে না , তাদের বিষহীন বর্জ্যা পদার্থ বলে । এই বিষহীন বর্জ্য পদার্থগুলি সাধারণত Biodegradable | বা জৈবিকভাবে বিয়োজিত হয় । যেমন- বাজারের বর্জ্য পদার্থ , কলকারখানার বর্জ্য প্রভৃতি ।
- ‘ E- বর্জ্য ‘ বা বৈদ্যুতিন বর্জ্য ( Electronic waste ) কাকে বলে ?
Ans: বর্তমানে বিশ্বে নানান ইলেকট্রনিকস দ্রব্য ব্যবহৃত হয় । এই দ্রব্যগুলির অব্যবহৃত বাতিল অংশের মধ্যে পরিবেশ দূষণকারী পদার্থ থাকে । এই জাতীয় বর্জ্যকে B waste বলে । যেমন — সার্কিট বোর্ড , টিভি বা কম্পিউটার মনিটর , কম্পিউটারের ব্যাটারি ইত্যাদি ।
- জীব বিশ্লেষ্য বর্জ্যা ( Biodegradable Waste ) কী ?
Ans: যে বর্জ্য পদার্থ পরিবেশের কোনো ক্ষতি করে না , ব্যবহারের পরবর্তী বাতিল অংশ , পরিবেশে উপস্থিত বিভিন্ন জীবাণু বা ব্যাকটেরিয়া দ্বারা বিয়োজিত হয়ে পুনরায় পরিবেশে মিশে যায় , তাকে জীব বিশ্লেষ্য বর্জ্য বা Biodegradable waste বলে । যেমন — সবজি , পাতা , ফল , ফুল ইত্যাদি জৈব বর্জ্যা হল এর উদাহরণ ।
- জীব অবিশ্লেষ্য বর্জ্যা ( Non – biodegradable Waste ) কী ?
Ans: যেসব বর্জ্যা পরিবেশে পুনরায় মিশে যেতে পারে না , পরিবেশের ওপর একই অবস্থায় পড়ে থেকে দূষণ সৃষ্টি করে , তাকে বলে Non – biodegradable বা জীব – অবিশ্লেষ্য বর্জ্য । যেমন — প্লাস্টিক , পলিথিন , বিভিন্ন শিল্পজাত বর্জ্য ইত্যাদি ।
- জৈব বর্জ্য ( Biological Waste ) কাকে বলে ?
Ans: উদ্ভিদ ও প্রাণীদেহের অংশবিশেষ বা দেহাবশেষকে মূলত জৈব বর্জ্য বলা হয় । যেমন — মৃত পশু – পাখির দেহ , ফুল – ফল – শাকসবজি ইত্যাদি হল জৈব বর্জ্য । এইগুলি পচনশীল বলে সহজেই পরিবেশে মিশে যায় ।
- Hazardous Waste কাকে বলে ?
Ans: বিষাক্ত ধাতুজ বর্জ্য , যেমন— সিসা , পারদ , ক্যাডমিয়াম , আর্সেনিক , অ্যাসবেস্টস , ডায়ক্সিন জাতীয় দ্রব্য পরিবেশে বিষক্রিয়া সৃষ্টি করে মানবদেহে রোগ সৃষ্টি করে , একে বলে Hazardous Waste |
- বর্জ্য ব্যবস্থাপনা ( Waste Management ) কাকে বলে ?
Ans: বর্জ্য পদার্থগুলিকে সম্পূর্ণরূপে নিঃশেষ করে দেওয়া বা পুনর্ব্যবহারের যোগ্য করে তোলার ব্যবস্থাকেই বিজ্ঞানের ভাষায় বলা হয় বর্জ্য ব্যবস্থাপনা ।
- BOD কী ?
Ans: BOD- র পুরো কথা হল Biological Oxygen Demand । নদী বা জলাশয়ের জলে নির্দিষ্ট পরিমাণে অক্সিজেন উপস্থিত থাকে যা জীবের বৃদ্ধি ও বিকাশের জন্য আবশ্যক । প্রতি একক আয়তনের জৈব জারণের ফলে অণুজীবদের যে পরিমাণ অক্সিজেন দরকার হয় , তাকে বলে BOD .
- ইউটিফিকেশন কী ?
Ans: জলাশয়ের পুষ্টি মৌল বৃদ্ধির প্রক্রিয়াকে বলে ইউট্রিফিকেশন । জলাশয়ে জলদূষণের ( কাপড় কাচা , ডিটারজেন্ট , রাসায়নিক সার ) ফলে জলের নাইট্রেট ও ফসফেটের পরিমাণ বাড়ে । পুষ্টি মৌলের প্রাচুর্যে জলে ভাসমান কচুরিপানা , শৈবাল , অ্যালগি জাতীয় প্রাণীর পরিমাণ বাড়ে । ফলে জলের নীচে প্রাণীদের বৃদ্ধি ও বিকাশ ব্যাহত হয় , একে বলে ইউট্রিফিকেশন ।
- Take back policy কাকে বলে ?
Ans: যেসব ব্যবহার্য দ্রব্যের পুনর্বিয়োজন সম্ভব নয় অর্থাৎ যেগুলি প্রকৃতিতে মিশে যায় না , সেগুলি যথাসম্ভব ব্যবহার না – করা উচিত অথবা ব্যবহার কমানোর প্রবণতা তৈরি করা আবশ্যক । তা সত্ত্বেও যেগুলি একান্তই ব্যবহার করতে হচ্ছে যেমন ইলেকট্রনিকস দ্রব্য , কম্পিউটার , সেলফোন প্রভৃতি ; সেগুলি ব্যবহারের পর অকেজো হলে পুনরায় প্রস্তুতকারক কোম্পানিকে তা ফিরিয়ে নিতে হবে । এই পদ্ধতির নাম Take Back Policy .
- নিষ্কাশন ( Drainage ) কাকে বলে ?
Ans: পয়ঃপ্রণালী , নর্দমা , শহরের আবর্জনা পাইপলাইন পথে দূরবর্তী স্থানে নিয়ে যাওয়ার পর তার থেকে বিষাক্ত রাসায়নিক মুক্ত করে বিশুদ্ধ করার পদ্ধতিকে বলে নিষ্কাশন । এই পদ্ধতিতে ভারতবর্ষের বিভিন্ন স্থানে তরল বর্জ্যের ব্যবস্থাপনা করা হচ্ছে ।
- উন্মুক্ত বর্জ্য ( Open Dumping ) বলতে কী বোঝ ?
Ans: সাধারণত শহরে নীচু খোলা জমিতে বর্জ্য উন্মুক্তভাবে ফেলে রাখা থাকলে , তাকে উন্মুক্ত বর্জ্য বলে ।
- লিচেট ( Leachate ) বলতে কী বোঝ ?
Ans: বৃষ্টির যে জল ল্যান্ডফিলের বর্জ্য পদার্থ ধুয়ে নিয়ে জলাশয়ে বা ভৌমজলে মেশে , সেই বর্জ্য পদার্থ ধোয়া জলকে লিচেট বলে ।
- আখের ছিবড়ে বা ব্যাগাসে ( Bagasse ) কী ?
Ans: চিনি শিল্পে ব্যবহৃত অবশিষ্ট আখের ছিবড়ে ও অন্যান্য বর্জ্যকে ব্যাগাসে বলে ।
- Waste Exchange বলতে কী বোঝ ?
Ans: অনেক সময় পদার্থ বা বস্তু ব্যবহার করে পুনরায় অবিকল অবিকৃত অবস্থায় পরিবেশে ফিরিয়ে দেওয়া সম্ভব । পদার্থ সহায়িকা , বা বস্তুর পুনর্ব্যবহারের এই পদ্ধতিকে বলে Waste Exchange জেনে রাখো যেমন— পুরোনো কাগজ থেকে নতুন কাগজ প্রস্তুত করা ।
আবর্জনা ( Garbage ) : আমাদের প্রত্যেক দিন বাতিল করে দেওয়া গৃহস্থালির ব্যবহৃত ও পরিত্যক্ত শাকসবজি ফল ইত্যাদির খোসা , উচ্ছিষ্ট অংশকেই আবর্জনা বলে ।
জন্মাল ( Rubbish ) : সকল প্রকার দাহ্য কঠিন পদার্থ , যেমন – কাঠ , কাগজ , কাচ , চামড়া , প্লাস্টিক ও বিভিন্ন প্রকার ধাতুকে জন্মাল বলে ।
- NPK কী ?
Ans: NPK- র পুরো নাম নাইট্রোজেন , ফসফেট , পটাশিয়াম । এগুলি উদ্ভিদের পুষ্টিমৌল , উদ্ভিদ বৃদ্ধির সহায়ক উপাদান । এই উপাদানগুলি না – থাকলে উদ্ভিদের পাতায় ক্লোরোসিস রোগ হয় । অর্থাৎ গাছের পাতা হলুদ হয়ে যায় ।
- তেজস্ক্রিয় বর্জ্য ( Nuclear waste ) বলতে কী বোঝ ?
Ans: পারমাণবিক চুল্লি , পারমাণবিক শক্তি উৎপাদন কেন্দ্র , পারমাণবিক গবেষণাগার থেকে নির্গত বর্জ্য পদার্থকে তেজস্ক্রিয় বর্জ্য বলে । যেমন — ইউরেনিয়াম -235 , 238 , থোরিয়াম -230 , কার্বন -14 ইত্যাদি ।
- ভার্মি – কম্পোস্টিং ( Vermi – composting ) বলতে কী বোঝ ?
Ans: স্বাভাবিক জীবনযাত্রার মাধ্যমে জৈব বর্জ্যের বিয়োজন ঘটে হিউমাসে পরিণত হওয়ার পদ্ধতিকে ভার্মি – কম্পোস্টিং বলে ।
- বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় ভরাটকরণ বলতে কী বোঝ ?
Ans: ফাঁকা জমি বা জমিতে গর্ত খুঁড়ে বর্জ্য পদার্থ ভরাট করাকে বর্জ্য ভরাটকরণ বলে । এতে বর্জ্য পদার্থ ধীরে ধীরে বিশ্লেষিত হয়ে মাটির সঙ্গে মিশে যায় ।
- বর্জ্যের পুনর্ব্যবহার কাকে বলে ?
Ans: কিছু কিছু বর্জ্য পদার্থ আছে যেগুলি পুনরায় ব্যবহার করা যায় , তাকে বর্জ্যের পুনর্ব্যবহার বলে । যেমন — খবরের কাগজ , পুরোনো শিশি , বোতল ইত্যাদি । এতে অর্থের সাশ্রয় হয় এবং সম্পদ বাঁচে ।
SOURCE-BHUGOLSHIKSHA.COM
মাধ্যমিক ভূগোল প্রশ্ন ও উত্তর
বর্জ্য ব্যবস্থাপনা (চতুর্থ অধ্যায়)
সংক্ষিপ্ত ব্যাখ্যাধর্মী প্রশ্নোত্তর
- বর্জ্য পদার্থের শ্রেণিবিভাগ করো ।
Ans: বর্জ্যের প্রকারভেদ ( Classification of waste ) : পরিবেশের বর্জ্য পদার্থগুলিকে বিভিন্ন ভিত্তির ওপর সাধারণত বিশেষ কয়েকটি ভাগে বিভক্ত করা যায় ।
( a ) পার্থিব বৈশিষ্ট্য অনুযায়ী প্রকারভেদ :
( i ) কঠিন ( Solid ) : পদার্থের বিভিন্ন প্রকার ভৌত অবস্থাগুলির মধ্যে কঠিন বর্জ্যের উপস্থিতি পরিবেশে সবচেয়ে বেশি লক্ষ করা হয় । যেমন : গৃহস্থালির জঞ্জাল , প্লাস্টিক , পেপার , পুরোনো অব্যবহার্য আসবাবপত্র , ভাঙা বোতল ও কাচের টুকরো , চট , খবরের কাগজ । এ ছাড়া বাজারের আনাজপাতি ও হাসপাতালের নানা অব্যবহার্য দ্রব্যাদি , যেমন সিরিজ , গজ কাপড় তুলো , রোগীর জামাকাপড় ইত্যাদি । এ ছাড়াও রয়েছে নানান শিল্পজাত বর্জ্য পদার্থ , যা সাধারণত কলকারখ নাগুলি থেকে উৎপন্ন হয় ।
( ii ) তরল ( Liquid ) তরল বর্জ্য পদার্থগুলির মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল নর্দমা ও নালাবাহিত গৃহস্থালির পয়ঃপ্রণালীজাত নানান তরল পদার্থ , কৃষিজমিতে কীটনাশক প্রয়োগের পরে জলসেচ দ্বারা বাহিত জল যা পার্শ্ববর্তী নদী ও জলাশয়ে মেশে । এ ছাড়াও রয়েছে নানান শিল্পজাত তরল বর্জ্য , নানান রাসায়নিক পদার্থ প্রভৃতি ।
( iii ) গ্যাসীয় ( Gaseous ) : কলকারখানা থেকে নির্গত নানান SPM ( সাসপেনডেড পারটিকুলেট ম্যাটার ) বিষাক্ত ধোঁয়া , ধুলোকণা , বিষাক্ত কণা , কার্বন মনোক্সাইড , বাতানুকূল যন্ত্র থেকে নির্গত CFC প্রভৃতি বিষাক্ত গ্যাস সমূহ এই প্রকার গ্যাসীয় বর্জ্য পদার্থের উদাহরণ ।
( b ) বিষক্রিয়তা অনুযায়ী প্রকারভেদ : বিষক্রিয়তার তারতম্য অনুযায়ী বর্জ্য পদার্থকে দু – ভাগে বিভক্ত করা যায়—
( i ) বিষাক্ত ( Toxic ) : নানান ধরনের বর্জ্য পদার্থ , যা থেকে । বিভিন্ন ধরনের বিষক্রিয়তার উদ্ভব হয় এবং যেগুলি একেবারেই পরিবেশবান্ধব নয় , সেগুলিকে বলা হয় বিষাক্ত বর্জ্য পদার্থ । যেমন — শিল্পজাত নানান প্রকার তেজস্ক্রিয় পদার্থ ( ইউরেনিয়াম , থোরিয়াম প্রভৃতি ) এবং কিছু রাসায়নিক তরল পদার্থ , যা বিষক্রিয়া ঘটাতে পারে ।
( ii ) বিষহীন ( Non – toxic ) : যেসব বর্জ্য পদার্থগুলির বিষক্রিয়তা নেই , যেগুলি পরিবেশের কোনো প্রকার ক্ষতিসাধন করে না তাদের বিষহীন বর্জ্য পদার্থ বলে । এই বিষহীন বর্জ্য পদার্থগুলি সাধারণত Biodegradable বা জৈবিকভাবে বিয়োজিত হয় ।
যেমন — বাজারের বর্জ্য পদার্থ , কলকারখানার বর্জ্য প্রভৃতি ।
- বর্জ্য পদার্থের বৈশিষ্ট্যগুলি উল্লেখ করো ।
Ans: বর্জ্য পদার্থের বৈশিষ্ট্যগুলি হল—
1 ) উপাদান : বর্জ্য পদার্থ কঠিন , তরল , গ্যাসীয় তিন প্রকারেরই হতে পারে ।
ii ) প্রকৃতি : বর্জ্য পদার্থের কিছু অংশ জীবাণু দ্বারা বিয়োজিত হয় , কিছু অংশ অবিয়োজিত থাকে ।
( iii ) দূষণ বর্জ্য উপাদানে পরিবেশের দূষণ সৃষ্টি হয় । ভারসাম্য নষ্ট হয় ।
( iv ) পরিমাণ গ্রামের তুলনায় শহরে বর্জ্যের পরিমাণ বেশি থাকে ।
( v ) বর্জ্য উৎসস্থল গৃহস্থালি , শিল্পাঞ্চল , কৃষিক্ষেত্র , চিকিৎসাকেন্দ্র , খনিজ আহরণ ও প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চল , নির্মাণ ও উৎপাদক স্থান , ব্যাবসাকেন্দ্র , উৎপাদক স্থান ইত্যাদি হল বর্জ্যের উৎসস্থল ।
- কৃষিজ বর্জ্য কীভাবে সৃষ্টি হয় ?
Ans: চাষবাসের সময় যে রাসায়নিক সার ও কীটনাশক জমিতে বা শস্যখেতে ব্যবহার করা হয়ে থাকে , সেগুলির অবশিষ্টাংশ সাধারণত মাটিতে মিশে বৃষ্টির জলের সঙ্গে বা জলসেচের সঙ্গে ধুয়ে পার্শ্ববর্তী কোনো জলাশয় , পুকুর বা নদীতে গিয়ে মেশে । এগুলিই কৃষিজ তরল বর্জ্য । এ ছাড়াও যখন শস্যখেতে পোকা লেগে যায় বা খেতে ফসল নষ্ট হয়ে যায় তখন তা বিক্রির বা আহারের অযোগ্য হয়ে পড়ে এবং কৃষিজ বর্জ্য হিসেবে পরিগণিত SAPP হয় । কৃষির ফলন বাড়াতে রাসায়নিক সার , কীটনাশক , আগাছানাশক ওষুধ ব্যবহার করা হয় ।
এগুলিতে নাইট্রেট , ফসফেট , পটাশ , অ্যামোনিয়া , ক্লোরাইড প্রভৃতি রাসায়নিক মৌল থাকে । এ ছাড়াও জৈব সার হিসেবে গবাদি পশুর বিষ্ঠা , গাছের পাতা , ডাল , কেঁচোর | কম্পোস্ট প্রভৃতি ব্যবহৃত হয় । যদিও এগুলি জৈব ভঙ্গুর অর্থাৎ নিজস্ব প্রক্রিয়ায় পুনরায় মাটিতে মিশে যায় তবুও সাময়িক সময়ের জন্য এগুলি পরিবেশের আবর্জনা । এ ছাড়া কৃষিফসল কেটে নেওয়ার পর পড়ে থাকা গাছের গোড়ার অংশে আগাছা বা ধান , গম – এর তুষ বা খোলস , পাট , তুলোর আঁশের বাতিল অংশ পরিবেশে বর্জ্য সৃষ্টি করে ।
- কঠিন বর্জ্যের সৃষ্টির উৎসগুলি চিহ্নিত করো ।
Ans: কঠিন বর্জ্যের সৃষ্টির উৎসগুলি হল
( i ) গৃহে ব্যবহৃত উপকরণ যেমন — পুরোনো কাগজ , বাতিল কাপড় , ভাঙা প্লাস্টিক ও কাচের অংশ ।
( ii ) শিল্প কারখানায় ব্যবহৃত যন্ত্রাংশ , টায়ার , টিউবের বাতিল অংশ , সিমেন্ট , তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের আবর্জনার অংশবিশেষ ।
( iii ) কৃষিখেতে : জমিতে ব্যবহৃত যন্ত্রাংশের অকেজো অংশ , ফসল তোলার পর পড়ে থাকা অবশিষ্টাংশ বা ধানের তুষ , আখের ছিবড়া , পাটের আঁশ বের করার পর পড়ে থাকা অংশবিশেষ ।
( iv ) খনি ও নির্মাণকার্যে খনিজ আহরণের পর খনিজের অবশিষ্টাংশ ; গৃহ বা অন্যান্য নির্মাণের পর পড়ে থাকা চুনসুরকি , লোহার ছাঁট , ইটের কুচি , বালির আবর্জনা , পাথরের টুকরো , কয়লা ব পোড়ানোর পর পড়ে থাকা ছাই ইত্যাদি ।
- শিল্প বর্জ্যের নানা উৎস সমূহের উল্লেখ করো ।
Ans: শিল্পাঞ্চল তথা নগরাঞ্চলগুলিতে অবস্থিত কলকারখানাগুলি থেকে যে বিষাক্ত কালো ধোঁয়া , বিভিন্ন বিষাক্ত ধাতুকণা ও তরল পদার্থ নির্গত হয় , তাকেই শিল্প বর্জ্যা বলে ।
খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ শিল্প এই শিল্পে ফল , ফুল থেকে নির্যাস বের করার পর পড়ে থাকা অবশিষ্টাংশ ।
শর্করা শিল্প : আখ থেকে চিনির রস নিঃসরণের পর পড়ে থাকা আখের ছিবড়া ।
পাটশিল্প : পাটের আঁশ বের করার পর পড়ে থাকা অবশিষ্টাংশ ।
কাগজ শিল্প কাষ্ঠমণ্ড , সেলুলোজ , কাগজের অবশিষ্টাংশ , শিল্পে ব্যবহৃত রাসায়নিক উপাদানের অব্যবহৃত অংশ প্রভৃতি ।
বয়ন শিল্প : ব্লিচিং পাউডার , রঙের অবশিষ্টাংশ , তুলো , সুতো , কাপড়ের ছাঁট অংশ । ধাতব শিল্প : অ্যালুমিনিয়াম , ইস্পাত শিল্পের ছাঁট , খনিজ , রাসায়নিক শিল্পের ক্ষতিকারক রাসায়নিক দ্রব্য , অ্যাসিড , রং , তেল ইত্যাদি ।
ইলেকট্রনিক শিল্প : যন্ত্রাংশের অংশ , তামার তার , সিসা , অ্যালুমিনিয়ামের অংশবিশেষ ।
সিমেন্ট শিল্প : চুনাপাথরের অবশিষ্টাংশ , বিদ্যুৎকেন্দ্রে ব্যবহৃত কয়লা , খনিজ তেল , পারমাণবিক উপাদানের অংশ ।
- তরল বর্জ্য কীভাবে সৃষ্টি হয় ?
Ans: যেসব বর্জ্য তরল আকারে থাকে , তাকে তরল বর্জ্য বলে । তরল বর্জ্য সৃষ্টির বিভিন্ন প্রক্রিয়া হল—
( i ) গৃহস্থালির তরল বর্জ্য বাথরুমে ব্যবহৃত ডিটারজেন্ট , শ্যাম্পু , ব্লিচিং পাউডার , অক্সালিক অ্যাসিড , মিউরিটিক অ্যাসিড , ফিনাইল মিশ্রিত জল , রান্নাঘরে মশলা , তেল মিশ্রিত তরল , রান্নার উচ্ছিষ্টাংশ ইত্যাদি ।
( ii ) কলকারখানার তরল বর্জ্যা : কলকারখানা থেকে নির্গত গরম জল , তৈলাক্ত জল , কারখানা ধোয়ার জল ইত্যাদি ।
( iii ) কৃষিক্ষেত্রের তরল বর্জ্যা : কৃষিতে ব্যবহৃত সার , কীটনাশক ওষুধ জলের সাথে ধুয়ে এসে নদীতে মেশে । এগুলি কৃষিজ তরল বর্জ্যের উদাহরণ ।
- চিকিৎসা সংক্রান্ত বর্জ্য কীভাবে সৃষ্টি হয় ?
Ans: হাসপাতাল , নার্সিংহোম বা বিভিন্ন প্যাথোলজিক্যাল য ল্যাবরেটরি থেকে যে বর্জ্য নির্গত হয় , তাকে চিকিৎসা সংক্রান্ত বর্জ্য বলে । চিকিৎসাক্ষেত্রে ব্যবহৃত ছুঁচ , সিরিঞ্জ , ছুরি , কাঁচি , ব্লেড , স্যালাই , গজ , বোতল , তুলো , ব্যান্ডেজ , মানব অঙ্গের ব্যবচ্ছিন্ন অংশ , চিকিৎসায় ব্যবহৃত বিভিন্ন ওষুধ , ওষুধের প্যাকেট , প্যাথোলজির রক্ত , মল , মুত্র ইত্যাদি হল চিকিৎসা সংক্রান্ত বর্জ্যের উদাহরণ । প্রশ্ন ৮ গ্যাসীয় বর্জ্যের উৎসগুলি কী কী ? উত্তর বাতাসে ভাসমান লবণকণা , বায়ুকণা , ধূলোবা যখন পরিবেশে ক্ষতিসাধন করে , তাকে বলে গ্যাসীয় বন্ধ কলকারখানা , যানবাহন থেকে নির্গত কার্বন ডাইঅক্সাইড , মিথে ক্লোরোফ্লুরোকার্বন , নাইট্রোজেন অক্সাইড , সালফার অক্সাইড , কার্বন মনোক্সাইড ইত্যাদি হল গ্যাসীয় বর্জ্যের উদাহরণ ।
- পরিবেশের ওপর বর্জ্যের প্রভাব আলোচনা করো ।
Ans: ( ক ) বায়ুদূষণ ( Air pollution ) : বর্জ্য পদার্থগুলিতে পরিবেশের বিভিন্ন স্থানে জমিয়ে রাখার ফলে তা থেকে যে পা দুর্গন্ধ নির্গত হয় তা পারিপার্শ্বিক পরিবেশ তথা সমগ্র বায়ুমণ্ডলে বায়ুদূষণ ঘটায় এবং এটি মানুষ তথা যে – কোনো প্রাণীর ক্ষেত্রে ফুসফুস ও অন্যান্য অঙ্গে পৌঁছে শ্বাসরোধ , বমি ইত্যাদি নানা সমস্যা সৃষ্টি করে ।
( খ ) জল ও মৃত্তিকা দূষণ ( Water & soil pollution ) কৃষিজ জমিতে ব্যবহৃত রাসায়নিক সার অথবা কীটনাশক তথ্য পয়ঃপ্রণালী নির্গত তরল বর্জ্যগুলি বৃষ্টি বা জলসেচের জল দ্বারা বুদ্ধে গিয়ে পার্শ্ববর্তী কোনো নদীতে মিশে সেখানকার স্বাভাবিক জলছ বাস্তুতন্ত্রকে ব্যাহত করে । এ ছাড়া মাটির উর্বরাশক্তির পক্ষেও এটি যথেষ্ট ক্ষতিকারক । অতিরিক্ত সার ও কীটনাশকের ব্যবহার মাটিকে আম্লিক করে দেয় ।
( গ ) রাসায়নিক বিক্রিয়া ( Chemical reaction ) : বিভিন্ন তেজস্ক্রিয় পদার্থ , যেগুলি কোনোভাবেই মাটির সাথে মেশে না , সেইসব অজৈব পদার্থগুলি ক্রমাগত যেখানে সেখানে সজ্জিত হয়ে জল নিষ্কাশন ব্যবস্থাকে ব্যাহত করছে । এগুলি মাটির সঙ্গে রাসায়নিক বিক্রিয়া ঘটিয়ে এমন কিছু ক্ষতিকর যৌগের সৃষ্টি করে , যা মানবসভ্যতার সমূহ ক্ষতি করতে পারে ।
( ঘ ) বাস্তুতন্ত্রের ভারসাম্যহীনতা ( Imbalanced ecosystem ) এই বর্জ্য পদার্থের সঞ্চয় এবং তার পরিমাণ পরিবেশে বেড়েই চলেছে । ফলে পুকুর , বনভূমি , তৃণভূমি প্রভৃতি বিভিন্ন স্থানের বাস্তুতন্ত্রগুলি দিনের পর দিন তাদের ভারসাম্য হারাচ্ছে এবং বিঘ্নিত হচ্ছে ।
( ঙ ) জীববৈচিত্র্য হ্রাস ( Decrease in biodiversity ) : পৃথিবীর বিভিন্ন বাস্তুতন্ত্রগুলি উক্ত নানান পরিবেশদূষণের কবলে পড়ে তাদে ভারসাম্য হারাচ্ছে । ফলে পরিবেশের ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র জীবগুলি লুপ্ত হয়ে যাচ্ছে এবং পরিবেশের জীববৈচিত্র্য হ্রাস পাচ্ছে ।
( চ ) দৃশ্যদূষণ : যেখানে সেখানে জমা ময়লা আবর্জনায় প্রকৃতির সৌন্দর্য হারিয়ে যায় ।
( ছ ) জমি ও জলাভূমি ধ্বংস : বিভিন্ন প্রকার বর্জ্য কখনও জমিতে এবং কখনও জলাভূমিতে ফেলা হয় । ফলে জমি ও জলাভূমির ক্ষতি হয় ।
( জ ) গন্ধদূষণ : বর্জ্যের পচন শুরু হলে চারপাশ দুর্গন্ধে ভরে যায় ও পরিবেশের ক্ষতি হয় ।
- তেজস্ক্রিয় বর্জ্য ( Radioactive waste ) বলতে কী বোঝ ?
Ans: তেজস্ক্রিয় বর্জ্য হল উচ্চ তেজস্ক্রিয় ক্ষমতাসম্পন্ন পদার্থগুলির অবশিষ্টাংশ বিশেষ । PROINDE তেজস্ক্রিয় পদার্থ ইউরেনিয়াম , থোরিয়াম , রেডিয়াম প্রভৃতি উপাদান শিলাস্তরে থাকে ; খনিগর্ভ থেকে ওই পদার্থ আহরণের সময় এই বর্জ্য সৃষ্টি হয় । এ ছাড়া মহাজাগতিক বিকিরণ থেকেও তেজস্ক্রিয় পদার্থ উৎপন্ন হয় , এগুলিও এই বর্জ্যের অন্যতম উৎস । এ ছাড়া পারমাণবিক বোমা তৈরি ; ও নিক্ষেপের সময়ও তেজস্ক্রিয় বর্জ্য উৎপন্ন হয়ে থাকে । বিভিন্ন শিল্পে যেমন বিদ্যুৎ শিল্পে পারমাণবিক জ্বালানি ব্যবহৃত হয় ; এটিও বর্জ্যের অন্যতম উৎস । ঘড়ি বা যন্ত্র শিল্পের নানা কাজে রেডিয়াম ব্যবহৃত হয় । চিকিৎসাশাস্ত্রে ক্যানসার প্রতিরোধে কেমোথেরাপি দেওয়ার সময়ও তেজস্ক্রিয় বর্জ্য সৃষ্টি হয় ।
- বর্জ্য প্রক্রিয়াকরণে 3R- এর ভূমিকা উল্লেখ করো ।
Ans: বর্জ্য প্রক্রিয়াকরণের পদ্ধতি হল 3R অর্থাৎ Reduce , Reuse & Recycle- কে একত্রে বলে 3R .
- বর্জ্য ব্যবস্থাপনা ( Waste Management ) কী ?
অথবা , বর্জ্যের পুনর্নবীকরণ বলতে কী বোঝ ?
Ans: বর্জ্য পদার্থগুলিকে বিজ্ঞানসম্মত উপায়ে সম্পূর্ণ | নিঃশেষ করা অথবা পুনরায় ব্যবহারযোগ্য উপাদানে পরিণত করার নি ব্যবস্থা বা পদ্ধতিকে বলে বর্জ্য ব্যবস্থাপনা ।
গুরুত্ব : বর্জ্য ব্যবস্থাপনা পরিবেশকে দূষণমুক্ত করে , জনস্বাস্থ্য সুরক্ষিত রাখে । জৈব বৈচিত্র্য রক্ষা করে পরিবেশের বাস্তুতান্ত্রিক ভারসাম্য সুরক্ষিত রাখে । কর্মসূচী : বর্জ্য ব্যবস্থাপনা তিনটি কর্মসূচির মাধ্যমে বাস্তবায়িত করা হয় ।
যেমন— ( ১ ) বর্জ্যের পরিমাণগত হ্রাস ( ২ ) পুনর্ব্যবহার ( ৩ ) পুনর্নবীকরণ ; এই ত্রিমূখী কর্মসূচিকে সংক্ষেপে বলে 3R – Reduce ; Reuse , Recycling .
পদ্ধতি : কঠিন , তরল , গ্যাসীয় বর্জ্যের ব্যবস্থাপনা ভিন্ন ভিন্ন পদ্ধতিতে করা হয় । কঠিন বর্জ্য ব্যবস্থাপনার ধাপগুলি হল ( ক ) বর্জ্য পৃথকরণ ( খ ) বর্জ্য ভরাটকরণ ( গ ) কম্পোস্টিং । তরল ।
( a ) Reduce বা বর্জ্যের পরিমাণ হ্রাস : আমাদের দৈনন্দিন ও জীবনের অদরকারি পদার্থ যত কমানো সম্ভব হবে , বর্জ্যের পরিমাণও তত কমবে । অর্থাৎ দ্রব্য ব্যবহারে আমাদের মিতব্যয়ী হতে হবে ; অপ্রয়োজনীয় জিনিসই পরিবেশে বর্জ্যের পরিমাণ বাড়ায় ।
( b ) Reuse বা পুনর্ব্যবহার : পরিবেশের কিছু কিছু উপাদান = পুনর্ব্যবহারযোগ্য । যেমন— ধাতব বস্তু , কাগজ , যন্ত্রাংশ প্রভৃতি । এগুলি একবার ব্যবহারের পর পুনরায় ব্যবহার করা যায় । দ্রব্যের পুনর্ব্যবহার সম্পদের সঞ্চয় বাড়ায় , তাই অপুনর্ভব সম্পদগুলিকে সাশ্রয় করা ও পুনর্ব্যবহার খুব জরুরি ।
( c ) Recycle পুনর্নবীকরণ : পুনর্নবীকরণ বোঝায় বিশেষ বা Reuse বলতে বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে কোনো ব্যবহৃত দ্রব্যকে পুনরায় ব্যবহারযোগ্য সম্পদে পরিণত করে পরিবেশে ফিরিয়ে দেওয়া । যেমন — কাচ , ধাতু , প্লাস্টিক , কাগজ , ছেঁড়া কাপড় থেকে পুনরায় অনুরূপ দ্রব্য উৎপাদন সম্ভব । বর্জ্য সাধারণত নিষ্কাশন পদ্ধতিতে ও গ্যাসীয় বর্জ্য স্ক্রাবার পদ্ধতিতে ব্যবস্থাপনা করা হয় ।
- বর্জ্য ব্যবস্থাপনার প্রয়োজনীয়তা উল্লেখ করো ।
Ans: বর্জ্য পরিবেশকে দূষিত করে বাস্তুতন্ত্রের ভারসাম্য বিঘ্নিত করে ; বৃহত্তর অর্থে দেশের , সমাজের , জৈব বৈচিত্র্যের ক্ষতিসাধন করে । তাই বর্জ্য ব্যবস্থাপনা একান্ত প্রয়োজন । যে যে কারণে বর্জ্য ব্যবস্থাপনা দরকার সেগুলি হল ( a ) পরিবেশকে রক্ষা করা পরিবেশের অজৈব উপাদান জল , মাটি , বায়ু বর্জ্যের কারণে দূষিত হয় ; তাই পরিবেশকে দূষণমুক্ত করতে বর্জ্য ব্যবস্থাপনা অত্যাবশ্যক । ( b ) বাস্তুতন্ত্রের ভারসাম্য রক্ষায় পরিবেশের জীবজ উপাদানগুলি বর্জ্যের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হয় । রাসায়নিক বিষাক্ত বর্জ্য দেহে রোগের প্রাদুর্ভাব ঘটায় , ক্ষতিকারক প্রাণীর সংখ্যা বৃদ্ধি করে , বাস্তুতন্ত্রের ভারসাম্য বিঘ্নিত হয় । তাই বাস্তুতন্ত্রকে বাঁচাতে বর্জ্য ব্যবস্থাপনা আবশ্যক । ( c ) জৈব বৈচিত্র্য রক্ষা পৃথিবীতে বসবাসকারী উদ্ভিদ ও প্রাণীকুল নিয়ে যে জৈব বৈচিত্র্য গড়ে ওঠে তা বর্জ্যের কারণে বিনষ্ট হয় । জৈব বৈচিত্র্য বাঁচাতে বর্জ্য ব্যবস্থাপনা প্রয়োজন । ( d ) খাদ্যজালক ও খাদ্যশৃঙ্খলার ভারসাম্য বজায় রাখতে । পরিবেশের বিভিন্ন জীবজ ও অজীবজ উপাদনের পারস্পরিক মিথোস্ক্রিয়ায় সুনির্দিষ্ট খাদ্যজালক ও খাদ্যশৃঙ্খল গড়ে ওঠে । পরিবেশ জীবনের সুস্থতা বজায় রাখতে বর্জ্য ব্যবস্থাপনা জরুরি পদক্ষেপ ।
- ম্পোস্টিং ( Composting ) বলতে কী বোঝ ?
Ans: জৈব ভঙ্গুর বর্জ্য পদার্থগুলি জীবাণুর দ্বারা বিয়োজিত হয়ে হিউমাসে পরিণত হলে , তাকে বলে কম্পোস্টিং । পদ্ধতি । বর্জ্য জীবাণুর দ্বারা বিয়োজিত হয়ে এই প্রক্রিয়ায় হিউমাসে পরিণত হয় । কম্পোস্টিং মূলত দু – প্রকার —
( ক ) সবাত কম্পোস্টিং : বায়ুর উপস্থিতিতে জীবাণুর জৈব বিশ্লেষণ ঘটানোর পদ্ধতিকে বলে সবাত কম্পোস্টিং ।
( খ ) অরাত কম্পোস্টিং : বায়ুর প অনুপস্থিতিতে জীবাণুর জৈব বিশ্লেষণ ঘটানোর পদ্ধতির নাম অবাত কম্পোস্টিং । এর অপর নাম ব্যাঙ্গালোর পদ্ধতি । সাধারণত বাড়ি , শহর , দোকান ঘরের অব্যবহার্য আনাজ , ডিমের খোসা , অবশিষ্ট খাবারের অংশ প্রভৃতি এই পদ্ধতিতে প্রক্রিয়াকরণ করে জৈব সারে পরিণত করা হয় । এই পদ্ধতি ল্যান্ডফিলিং পদ্ধতিরই একটি বিশেষ রূপ । অল্প স্থানে গভীর গর্ত খুঁড়ে প্রথমে শাকসবজির অংশবিশেষ বা রেচনজাত বর্জ্য ফেলা হয় । পরে তা ভরাট হয়ে গেলে মাটি চাপা দেওয়া হয় ; তা পচে জৈব পদার্থ মাটিতে মিশে মাটির পুষ্টিমৌল বৃদ্ধি করে । আবার অন্যত্র একই পদ্ধতিতে মাটি খুঁড়ে বর্জ্য ভরাট করে মাটির মুখ বন্ধ করে বিয়োজিত করা হয় ।
সুবিধা : ( ক ) মৃত্তিকায় জৈব উপাদানের পরিমাণ বৃদ্ধি পায় । ( খ ) কৃষিক্ষেত্রে এই দ্রব্য সহজেই ব্যবহৃত হয় । ( গ ) কঠিন বজা খুব বেশি পরিমাণে হ্রাস পায় । অসুবিধা : জনবসতি অঞ্চলের নিকটবর্তী স্থানে এই পদ্ধতি অবলম্বন করায় গন্ধদূষণের ও রোগজীবাণু আক্রমণের সম্ভাবনা প্রবল । তাই বিশেষ সতর্কতা অবলম্বন আবশ্যিক ।
- বার ( Scrubber ) সম্পর্কে লেখো ।
অথবা , গ্যাসীয় বর্জ্য নিয়ন্ত্রণের উপায়গুলি কী কী ?
Ans: বর্জ্য ব্যবস্থাপনার একটি বিশেষ বিজ্ঞাননির্ভর প্রক্রিয়ার নাম স্কাবার । এই পদ্ধতিতে শিল্প থেকে নির্গত দূষিত বায়বীয় পদার্থ ও গ্যাসীয় উপাদানের অপসারণ ঘটিয়ে বায়ুকে বিশুদ্ধ করা হয় ।
পদ্ধতি : স্ক্রাবিং পদ্ধতি দু – প্রকার । ( ক ) শুষ্ক স্ক্রাবার ( Dry scrubbers ] : এই পদ্ধতির মাধ্যমে দুষিত নির্গত ধোঁয়াকে অম্লমুক্ত করা হয় । ( খ ) আর্দ্র স্ক্রাবার [ Wet Scrubber ] : এই পদ্ধতি প্রয়োগে দূষণকারী গ্যাস , দূষণকণা অপসারণ করা হয় । সাধারণত ক্ষেত্রে দ্রবণের মাধ্যমে গ্যাসীয় দূষিত পদার্থকে স্কাবার দ্বারা অপসারণ হয় । দ্রবণে গ্যাসের দ্রাব্যতার ওপর এই পদ্ধতির কার্যকারিতা করে ।
উদাহরণ : দহনের সময় সালফার জারিত হয়ে সালফার ডাইঅক্সাইডে পরিণত হয় । পরে ধৌতাগারে স্কাবার পদ্ধতিতে অপসৃত হয় । ( ii ) অ্যামোনিয়া বা হাইড্রোজেন সালফাইড মিশ্রিত জলীয় দ্রবণ থেকে দুর্বি স্ক্যাবার পদ্ধতিতে দুষণমুক্ত করা হয় । ( im ) চুনাপাথরের গুঁড়ে জলের সঙ্গে মিশে থাকা গ্যাসও এই পদ্ধতিতে পরিকৃত ভরাটকরণ বলে ।
- ( Land filling ) পদ্ধতি কী ?
Ans: কোনো নীচু স্থানে কঠিন বর্জ্য ব্যবস্থাপনার ও বিশেষ পদ্ধতি হল বর্জ্য ভরাটকরণ ।
পদ্ধতি : জনবসতি , শিল্পাঞ্চল বা বাণিজ্যকেন্দ্র থেকে দূরে কোনে উন্মুক্ত খোলা জায়গাকে , খুব গভীরভাবে খনন করে মাটির নীচে বর্জ্য চাপা দেওয়া হয় । সাধারণত বর্জ্য ২ মিটার উঁচু স্তরে বিছিয়ে দেওয়া হয় ও তার ওপর ২০-২৫ সেমি মাটির স্তর চাপা জো হয় । মাটির মধ্যে থাকা জীবাণু বর্জ্যের ভৌত রাসায়নিক পরিবর্তন । ঘটায় । দীর্ঘদিন চাপা পড়া অবস্থায় থেকে ওই জৈব ভঙ্গুর বর্জ মাটিতে মিশে যায় ।
সতর্কীকরণ : তবে এক্ষেত্রে কতকগুলি সতর্কীকরণ নেওয়া আবশ্যিক ।
যথা— ( i ) ল্যান্ডফিলিং – এর নির্বাচিত স্থান শহরাঞ্চল থেকে দূরে হতে হবে । ( ii ) জায়গাটির আয়তন বেশি হতে হবে । ( iii ) স্থানটিতে জনবসতি থাকবে না ; কারণ বর্জ্যের দূষণ মানবশরীরের পক্ষে ক্ষতিকর । ( iv ) ময়লা জল বা বর্জ্যের বিয়োজিত অংশ যাতে কোনোভাবেই ভৌম জলস্তরকে দূষিত ন করে সেদিকে বিশেষ নজর দিতে হবে । ( v ) ময়লার গাড়ি যাতে সুনির্দিষ্ট খোলা স্থানে সহজে পৌঁছোতে পারে অর্থাৎ অঞ্চলটি পরিবহণযোগ্য হয় তা দেখা । ( vi ) অনেক দেশে সমুদ্রতীরে বর্জ্য নিক্ষেপ করা হয় । এক্ষেত্রে দেখতে হবে স্থানটি যেন সামুদ্রিক জীববৈচিত্র্যকে বিনষ্ট না করে । ( vii ) ময়লা জমা করার স্থানগুলিকে উন্মুক্ত না – রেখে কংক্রিটের দেয়াল দিয়ে বাঁধিয়ে দিতে হবে । জমি ভরাটকরণের সুবিধা : ( i ) বায়ুদূষণ তথা পরিবেশ দূষণের পরিমাণ কমে যায় । ( ii ) ল্যান্ডফিলিং – এর ফলে যে গ্যাস নির্গত হয় , তা বিভিন্ন কাজে ব্যবহার করা হয় । ( iii ) বর্জ্য পদার্থ আবৃত অবস্থায় থাকে বলে মাছি , মশা , ইঁদুর , কীটপতঙ্গ বাসা বাঁধতে পারে না । জমি ভরাটকরণের অসুবিধা : জমে থাকা বর্জ্য পদার্থ থেকে নির্গত জল চুঁইয়ে ভৌম জলস্তরে মিশে যায় ।
- নিষ্কাশন পদ্ধতির বিভিন্ন ধাপগুলি উল্লেখ করো ।
Ans: মূলত তরল বর্জ্য নিষ্কাশন পদ্ধতিতে বিশুদ্ধ করা হয় । শহরে শিল্পকারখানা বা গৃহস্থালি থেকে যে বিষাক্ত তরল জল নিষ্কাশিত হয় তা পর্যায়ক্রমে তিনটি ধাপে জীবাণুমুক্ত বা দূষণমুক্ত করা হয় ।
( a ) প্রাথমিক ধাপ : প্রথমে পাইপলাইন পথে নোংরা জল একটি বড়ো জলাধারে ফেলা হয় । সেখানে ভারী বর্জ্যগুলি থিতিয়ে জলাধারের নীচে । পড়ে থাকে ।
( b ) দ্বিতীয় ধাপ : জলে ভাসমান কঠিন জৈব ও অজৈব পদার্থ এই পর্যায়ে অন্যত্র সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয় ।
( c ) তৃতীয় ধাপ : এই পর্যায়ে রাসায়নিক ও বিষাক্ত অভঙ্গুর পদার্থগুলিকে বিশেষ প্রক্রিয়ায় শোধন করা হয় ও অন্যত্র নিষ্ক্রমণ করা হয় । বিশেষ বিশেষ তথ্য Electronic Waste : বাইয়োসাইড : কৃষিক্ষেত্রে অবাঞ্ছিত উদ্ভিদ বিনাশ করতে সাহায্য করে এমন জৈব উপাদান । পেস্টিসাইড : কৃষিকাজে প্রতিকূল প্রভাব সৃষ্টিকারী ছত্রাক , কৃমি , ব্যাকটেরিয়া , ধ্বংস করে এমন রাসায়নিক উপাদান । ইনসেক্টিসাইডস্ : কৃষিজফসলের ক্ষতি করে এমন কীটপতঙ্গকে বিনাশ করতে যেসব রাসায়নিক দ্রব্য ব্যবহৃত হয় । হাৰ্বিসাইডস : আগাছা দমন করার জন্য কৃষিক্ষেত্রে যেসব রাসায়নিক ব্যবহৃত হয় ।
- কঠিন , তরল ও গ্যাসীয় বর্জ্যের ব্যবস্থাপনার পদ্ধতিগুলি আলোচনা করো ।
অথবা , বর্জ্য পৃথকরণ কীভাবে করা হয় ?
Ans: ( ক ) বর্জ্য পৃথক্করণ ( Segregation of waste ) : কোনো স্থানে যখন বর্জ্য পদার্থ জমা হয় , তখন সেখানে নানান ধরনের বর্জ্য পদার্থ ( শুষ্ক বর্জ্য ও আর্দ্র বর্জ্য ) একত্রিত হয়ে থাকে । সেগুলিকে আলাদা না – করলে বর্জ্য ব্যবস্থাপনা করা সম্ভব হয় না । এই পদ্ধতিটিকেই বলা হয় বর্জ্য পৃথক্করণ । এই পদ্ধতিটি পৃথিবীর উন্নত দেশ , যেমন — মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র , জাপান প্রভৃতি স্থানে যন্ত্রের মাধ্যমে করা হলেও ভারতবর্ষে মূলত মানুষের দ্বারাই করা হয়ে থাকে ।
( খ ) জমি ভরাটকরণ ( Land filling ) : এই পদ্ধতিতে বৃহদায়তন ফাঁকা জমিকে খুব গভীর ভাবে খনন করা হয় । কঠিন জৈব বর্জ্যা পদার্থগুলিকে এর মধ্যে ফেলে ভরাট করা হয় এবং সবশেষে , পুনরায় মাটি চাপা দিয়ে দেওয়া হয় । সেগুলি মাটির তলায় চাপা পড়ে থাকাকালীন চাপে ও তাপে খুব সহজেই মাটি হয়ে যায় ।
( গ ) কম্পোস্টিং ( Composting ) গ্রামাঞ্চলে বাড়ির মধ্যেই খালি জায়গায় কিছুটা জমি খনন করে তাতে গৃহস্থালির দৈনিক উৎপন্ন বর্জ্য ফেলা হয় । কিছুদিন পর বর্জ্যা দ্বারা ওই জায়গা ভরতি হয়ে গেলে মাটি চাপা দিয়ে অপর কোনো স্থান পুনরায় খনন করে । বর্জ্যা নিক্ষেপ করা হয় । কম্পোস্টিং পদ্ধতিটি খানিকটা ভরাটকরণ পদ্ধতির মতো । এই পদ্ধতিতেও একটি গর্তকে কিছু পরিমাণ জৈব বর্জ্য , যেমন— পশুপাখির মৃতদেহ , গৃহস্থালি ও বাজারের নানান আনাজের খোসা ও পচা । শাকসবজি , মলমূত্র প্রভৃতি দ্বারা ভরাট করা হয় ও মাটি দিয়ে এই গর্তের মুখ বন্ধ করে দেওয়া হয় । কিছুদিন পরে দেখা যায় । যে ওই জৈবাংশগুলি বিয়োজিত হয়ে জৈব সার গঠন করেছে , যার পুষ্টিমাত্রা খুব বেশি ।
( ঘ ) নিষ্কাশন / নিকাশি ( Drainage ) : মূলত তরল বর্জ্য নিকাশি বা নিষ্কাশন ব্যবস্থার মাধ্যমে নিষ্কাশিত করে একটি বিশেষ আধারে সঞ্চয় করলে পরে ওই জল বিশুদ্ধিকরণের মাধ্যমে পুনরায় ব্যবহার করা হয় । এই পদ্ধতিতে ভারতবর্ষের বিভিন্ন স্থানে তরল বর্জ্যের ব্যবস্থাপনা করা হচ্ছে ।
(ঙ) স্ক্রাবার ( Scrubber ) : ধ্রুাবার হল এমন একটি যন্ত্র যা বায়ুদূষণ নিয়ন্ত্রণের কাজে ব্যবহৃত হয় । এটি দুষিত পদার্থগুলিকে আলাদা করে দেয় । বিভিন্ন কঠিন , তরল এবং গ্যাসীয় শিল্প বর্জ্য , পৌরসভার বর্জ্য এবং চিকিৎসা সংক্রান্ত বর্জ্যকে পরিশোধিত করে সেখান থেকে দূষিত পদার্থকে আলাদা করা হয় । স্ক্রাবার দুই ধরনের হয় । যথা – ( i ) শুষ্ক স্ক্রাবার , ( ii ) আর্দ্র স্ক্রাবার ।
- ফ্লাই অ্যাশ কী ?
Ans: ফ্লাই অ্যাশ : এর বাংলা প্রতিশব্দ ‘ ভাসমান বা উড়ন্ত বস্তুকণা ‘ বা ‘ ছাই ‘ । ব্যাস ০.০২ মাইক্রোমিটার থেকে ১০ মাইক্রোমিটার । ( ১um = ১ মিটারের ১০ লক্ষ ভাগের ১ ভাগ ) ★ উৎস : তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের কয়লা পোড়ানোর ছাই , তামাকের গুঁড়ো , কারখানার দূষিত গ্যাস ও ধুলোকণা , সিমেন্টের ধুলো , চাষের জমির পেস্টিসাইডের অংশবিশেষ , বাড়ির বর্জ্য বা ঘরবাড়ির ডাস্টিং – এর সময় ওড়া ধুলোকণা , ইটভাটার ধুলো বা গুঁড়ো উপাদান , উড়ন্ত ছাই – এ যে – উপাদানগুলি বিদ্যমান থাকে সেগুলি হল কার্বন , ফসফরাস , ক্যালশিয়াম , পটাশিয়াম , নাইট্রোজেন , সালফার । * মানব স্বাস্থ্যে প্রভাব : মানবশরীরে ফুসফুসজনিত রোগ হাঁপানি , ব্রংকাইটিস , শ্বাসকষ্ট , চোখজ্বালা , মাথাব্যথা প্রভৃতির উপসর্গ দেখা যায় । অন্যান্য প্রভাব : পাতলা আস্তরণে বাতাস ঢেকে যাওয়ায় ধোঁয়াশা সৃষ্টির অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টি হয় , ফলে বায়ু দূষিত হয় । কোলডাস্ট : ভাসমান কয়লার গুঁড়োকে বলে কোলডাস্ট । পেট্রোকোক : তৈল শোধনাগারে ক্রুড অয়েল শোধনের সময় অসম্পূর্ণ দহনের মাধ্যমে যে কণা উৎপন্ন হয় , তাকে বলে পেট্রোকোক । পেট্রোকোকে ৯ % কার্বনকণার উপস্থিতি থাকে ।
- সদ প্রক্রিয়াকরণে শিক্ষার্থীর ভূমিকা উল্লেখ করো ।
Ans: পরিবেশকে বর্জ্য মুক্ত করতে শিক্ষার্থীকেই প্রাথমিকভাবে দায়িত্ব পালন করতে হবে । শিশুমনে পরিবেশ সচেতনতা যত বাড়বে , পৃথিবী ও পরিবেশ ততই বাসযোগ্য ভূমিতে পরিণত হবে । বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় শিক্ষার্থীরা যেসব উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করতে পারে সেগুলি হল –
( a ) জৈব ভঙ্গুর , জৈব অভঙ্গুর , বিষাক্ত , বিষহীন বর্জ্য সম্পর্কে প্রাথমিকভাবে জ্ঞান অর্জন করতে হবে । চেষ্টা করতে হবে জৈব অভঙ্গুর ও বিষাক্ত বর্জ্যগুলির ব্যবহার হ্রাস করা । যেমন – Use & Throw পেনের পরিবর্তে কালির পেন ব্যবহারের অভ্যাস গড়ে তোলা ।
( b ) পরিবেশ পরিচ্ছন্নতায় রোগমুক্তি ঘটে । এই বিষয়ে বিদ্যালয় সচেতনতার দৃষ্টি দেখালে , বাড়ির চারপাশে বর্জ্য নিক্ষেপে নির্দিষ্ট ডাস্টবিন ব্যবহার করার গুরুত্ব বাড়বে ।
( c ) অপ্রয়োজনীয় উদ্বৃত্ত জিনিসই বর্জ্যের পরিমাণ বাড়ায় । তাই পরিমিত ও প্রয়োজনীয় জিনিসই কেনার নিয়ম শিক্ষার্থীকে গড়ে তুলতে হবে ।
( d ) শৌচাগার ব্যবহারে সচেতনতা বৃদ্ধি করা আবশ্যক । এ ছাড়াও বিতর্ক বা সাংস্কৃতিক নাটক , অ্যাওয়ার্নিং ক্যাম্প করে পরিবার ও সমাজের মানুষকে এ বিষয়ে জানাতে পারে ।
- নাগরিক সচেতনতা বৃদ্ধি হল বর্জ্য ব্যবস্থাপনার প্রাথমিক ধাপ – কেন ব্যাখ্যা করো ।
Ans: জনসচেতনতা বৃদ্ধি পেলে তবেই পরিবেশকে জঞ্জালমুক্ত করে বিশুদ্ধ রাখা যাবে । প্রকৃতি বর্জ্যমুক্ত হলে জীববৈচিত্র্য সুরক্ষিত হবে ; বাস্তুতন্ত্রের ভারসাম্য বজায় থাকবে । গৃহস্থালি , শিল্পক্ষেত্র , কৃষিক্ষেত্র , চিকিৎসাকেন্দ্র থেকে প্রতিদিন যেসব বর্জ্য উৎপন্ন হয় তার মধ্যে কোন্গুলি কীভাবে মানবশরীরে কুপ্রভাব ফেলে সে বিষয়ে সরকারি , বেসরকারি , স্বেচ্ছাসেবক সংগঠনের মাধ্যমে মানুষকে সচেতন করতে হবে । বিভিন্ন পত্রপত্রিকা , মিডিয়াকে এ বিষয়ে সক্রিয় অংশগ্রহণ করতে হবে । মানুষ নিজেও স্বশিক্ষায় শিক্ষিত হবেন । সুনির্দিষ্ট জায়গায় ময়লা আবর্জনা ফেলার সু – অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে । নিয়মিত ময়লা ফেলার গাড়ি পাড়ায় পাড়ায় ময়লা সংগ্রহ করে যাতে সুনির্দিষ্ট স্থানে নিক্ষেপ না করে তার নজরদারি মানুষকে রাখতে হবে । খোলা ভ্যাটগুলিতে নিয়মিত | ব্লিচিং ছড়াতে হবে যাতে রোগজীবাণুর সংক্রমণ কমে । চাপা দেওয় যায় এমন স্থানে ময়লা ফেলা হলে গন্ধদূষণের পরিমাণ কমবে । | প্রত্যেকে নিজেকে সচেতন রাখবে ; তাহলেই সমাজ সচেতন হবে । প্রকৃতি বাঁচলে আমরাও বাঁচব এই অঙ্গীকারে সবাইকে দীক্ষিত হতে হবে ।
- বর্জ্য ভরাটকরণ প্রক্রিয়া মানবজীবনে অনেকসময় বিপর্যয় ঘটায় কী করে ?
Ans: জনবসতি থেকে দূরবর্তী স্থানে খোলা উন্মুক্ত প্রান্তরে প্রথমে কিছুটা মাটি গভীরভাবে খনন করে বর্জ্য ফেলা হয় , পরে আবার মাটি চাপা দেওয়া হয় । পরবর্তী সময় মাটির তাপে , চাপে খুব সহজেই তা মাটিতে পরিণত হয় । এই পদ্ধতিতে কয়েকটি বিশেষ সতর্কতা অবলম্বন না – করলে তা মানবজীবনে নানা সমস্যার সৃষ্টি করতে পারে ।
যেমন : – ( i ) উন্মুক্ত স্থানটি আয়তনে বড়ো হওয়া প্রয়োজন ; নির্বাচিত খোলা স্থানটি অবশ্যই লোকালয় থেকে দূরে হওয়া বাঞ্ছনীয় , তা না হলে দুর্গন্ধ ছড়ায় ও স্বাস্থ্যহানির কারণ ঘটে । জৈব প্রক্রিয়াকরণের সময় রোগাক্রান্ত পোকা , ভাইরাস , ব্যাকটেরিয়া দ্বারা আক্রান্ত হয়ে মানবশরীরে ডেঙ্গু , ম্যালেরিয়া , টাইফয়েড প্রভৃতির সংক্রমণ ঘটাতে পারে ।
( ii ) ময়লা ফেলার গাড়ি ঢাকা হওয়া প্রয়োজন যাতে যাওয়ার পথে আবর্জনা রাস্তায় পড়ে না যায় ; ময়লার গাড়ি যাতে শব্দদূষণ না – ঘটায় সেদিকে বিশেষ সতর্ক হওয়া উচিত ।
( iii ) ময়লা ফেলা গর্ত ততটাই খনন করা দরকার যা মাটির নিজস্ব পুষ্টি মৌল নষ্ট না করে অথবা ওই বর্জ্য দূষণ ভৌম জলস্তর পর্যন্ত না পৌঁছোয় ; সেক্ষেত্রে পানীয় জলে নানা রোগজীবাণু সংক্রমণের সম্ভাবনা তৈরি হয় ।
( iv ) অনেকসময় সমুদ্রেও বর্জ্য ফেলা হয় । এক্ষেত্রে নজর দেওয়া প্রয়োজন সামুদ্রিক জীববৈচিত্র্য যাতে বিনষ্ট না হয় , তাহলে মানবজীবনে নানা অস্বাস্থ্যকর পরিস্থিতি সৃষ্টি হতে পারে ।
INTERESTING FACTS : সচ্ছ ভারত অভিযান : ২০১১ খ্রিস্টাব্দের ২ অক্টোবর নয়াদিল্লিতে বর্তমান প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী স্বচ্ছ ভারত অভিযানের সূচনা করেন । ভারতবর্ষের ৪০৪১ টি নগর ও গ্রামে স্বচ্ছতার সচেতনতা বৃদ্ধিতে এই প্রকল্পের সূচনা হয় । স্বচ্ছতার | জন্য গৃহীত এটি ভারতের বৃহত্তম প্রয়াস । এই অভিযানের সময়সীমা |
বছর ( ২০১৪–২০১৯ ) । এর প্রধান উদ্দেশ্যগুলি হল- ( ১ ) স্বাস্থ্যক | শৌচালয় নির্মাণ , ( ২ ) প্রকাশ্যে মলমূত্র ত্যাগ বন্ধ করা , ( ৩ ) পৌরসভার বর্জ্যের ১০০ % ব্যবস্থাপনা করা ইত্যাদি । এই অভিযান সফল করার জন্য ২০১৯ খ্রিস্টাব্দের অক্টোবর মাসের মধ্যে গ্রামে ১২ কোটি শৌচাগার নির্মাণের পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয় ।
মাধ্যমিক ভূগোল প্রশ্ন ও উত্তর
বর্জ্য ব্যবস্থাপনা (চতুর্থ অধ্যায়)
পার্থক্য নিরূপণ করো
- জৈব ভঙ্গুর ও জৈব অভঙ্গুর – এর মধ্যে পার্থক্য ।
বিষয় | জৈব ভঙ্গুর | জৈব অভঙ্গুর |
সংজ্ঞা | যেসব বর্জ্য পচে, ভেঙে আবার মাটিতে মিশে যায় । | যে বর্জ্য পদার্থ প্রকৃতিতে পড়ে থাকে, মাটিতে মিশে না । |
প্রকৃতি | এরা জীবাণু বা ব্যাকটেরিয়া দ্বারা দ্রুত বিয়োজিত হয় । | এরা সাধারণত বিয়োজিত হয় না, হলেও সুদীর্ঘ সময় লাগে । |
উৎস | মূলত গৃহস্থালি ও কৃষিক্ষেত্র এদের উৎপত্তিস্থল । | বেশিরভাগই উৎপাদিত ধাতব ও অধাতব শিল্প বর্জ্য থাকে । |
প্রভাব | পরিবেশকে দূষণমুক্ত করে । | পরিবেশ দূষিত করে । |
উদাহরণ | আনাজের খোসা, মাটির টব, কাগজের ব্যাগ, কাপড়ের অংশ । | প্লাস্টিক ক্যারি ব্যাগ, মিনারেল ওয়াটার বোতল, ব্যাগ শিল্পের ধাতব, আধাতব আবর্জনা । |
SOURCE-BHUGOLSHIKSHA.COM
©kamaleshforeducation.in(2023)