সংঘব্ধতার গোড়ার কথা : বৈশিষ্ট্য ও বিশ্লেষণ (চতুর্থ অধ্যায়)

Table of Contents

সংঘব্ধতার গোড়ার কথা : বৈশিষ্ট্য ও বিশ্লেষণ (চতুর্থ অধ্যায়) – মাধ্যমিক দশম শ্রেণীর ইতিহাস প্রশ্ন ও উত্তর | West Bengal Madhyamik Class 10th History Question and Answer 

 

 

MCQ প্রশ্নোত্তর | মাধ্যমিক ইতিহাস – সংঘব্ধতার গোড়ার কথা : বৈশিষ্ট্য ও বিশ্লেষণ (চতুর্থ অধ্যায়) প্রশ্ন ও উত্তর | Madhyamik History Question and Answer : 

  1. গগনেন্দ্রনাথ ঠাকুর কোন শিল্পকর্মের জন্য বিখ্যাত ? 

(A) ব্যঙ্গচিত্র 

(B) প্রাকৃতিক চিত্র 

(D) মিনিয়েচার 

(C) তেল – রংয়ে চিত্র 

Ans: (A) ব্যঙ্গচিত্র

  1. ‘ বর্তমান ভারত ’ প্রথম প্রকাশিত হয়— 

(A) চন্দ্রভানু পত্রিকায় 

(B) দিগদর্শনে

(C) উদ্বোধন পত্রিকায় 

(D) হিকির গেজেটে

Ans: (C) উদ্বোধন পত্রিকায়

  1. জমিদার সভা ছিল একটি – 

(A) সামাজিক সংগঠন

(B) রাজনৈতিক সংগঠন

(C) অরাজনৈতিক সংগঠন । 

(D) ভারত সচিব

Ans: (B) রাজনৈতিক সংগঠন

  1. মহাবিদ্রোহের পর ভারতের শাসনভার গ্রহণ করেন 

(A) মহারানি ভিক্টোরিয়া 

(B) ভাইসরয় 

(C) লর্ড মাউন্টব্যাটেন 

(D) ভারত সচিব

Ans: (A) মহারানি ভিক্টোরিয়া

  1. নানা সাহেবের প্রকৃত নাম কী ? 

(A) গোবিন্দ সিং 

(B) গোবিন্দ ধন্দু পন্থ

(C) হজরত মহল 

(D) আব্দুল ওয়াহাব

(A) লর্ড মাউন্টব্যাটেন 

Ans: (B) গোবিন্দ ধন্দু পন্থ

  1. ভারতের প্রথম ভাইসরয় ছিলেন –

(A) লর্ড মাউনটব্যাটেন

(B) লর্ড এলগিন

(C) লর্ড ক্যানিং

(D) লর্ড ক্লাইভ 

Ans: (C) লর্ড ক্যানিং

  1. মহারানির ঘোষণাপত্র জারি হয়েছিল ১৮৫৮ সালের 

(A) ১০ নভেম্বর 

(B) ১ সেপ্টেম্বর 

(C) ৭ সেপ্টেম্বর 

(D) ১ নভেম্বর 

Ans: (D) ১ নভেম্বর 

  1. কোম্পানির আমলের শেষ গভর্নর জেনারেল ছিলেন— 

(A) লর্ড ক্যানিং 

(B) লর্ড ডালহৌসি 

(C) লর্ড ডাফরিন 

(D) লর্ড লিটন 

Ans: (A) লর্ড ক্যানিং

  1. জমিদার সভা প্রতিষ্ঠিত হয়— 

(A) ১৮৩৫ খ্রিস্টাব্দে 

(B) ১৮৩৮ খ্রিস্টাব্দে

(C) ১৮৫০ খ্রিস্টাব্দে 

(D) ১৮৫৮ খ্রিস্টাব্দে

Ans: (B) ১৮৩৮ খ্রিস্টাব্দে

  1. দেশীয় সংবাদপত্র আইন প্রবর্তিত হয়— 

(A) ১৮৭৬ খ্রিস্টাব্দে 

(B) ১৮৭৮ খ্রিস্টাব্দে

(C) ১৮৮১ খ্রিস্টাব্দে 

(D) ১৮৯০ খ্রিস্টাব্দে

Ans: (B) ১৮৭৮ খ্রিস্টাব্দে

  1. হিন্দুমেলার প্রতিষ্ঠা করেন—

(A) রামমোহন রায়

(C) নবগোপাল মিত্র

(B) দ্বারকানাথ ঠাকুর

(D) কেশবচনদ্র সেন 

Ans: (C) নবগোপাল মিত্র

  1. ১৯০৫ খ্রিস্টাব্দে ভারতমাতা চিত্রটি এঁকেছেন—

(A) গগনেন্দ্রনাথ ঠাকুর

(B) সরলাদেবী 

(C) অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুর

(D) রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর 

Ans: (C) অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুর

  1. জমিদার সভার সভাপতি ছিলেন 

(A) দ্বারকানাথ ঠাকুর

(B) প্রসন্নকুমার ঠাকুর

(C) রাধাকান্ত দেব

(D) আনন্দমোহন বসু 

Ans: (C) রাধাকান্ত দেব

  1. ছিয়াত্তরের মন্বস্তরের পটভূমিকায় রচিত উপন্যাসটি হলো

(A) গোরা

(B) দুর্গেশনন্দিনী

(C) আনন্দমঠ

(D) ক্যাপটিভ লেডি 

Ans: (C) আনন্দমঠ

  1. ব্রিটিশ শাসনের বিরুদ্ধে ভারতের প্রথম জাতীয় বিদ্রোহটি হলো—

(A) নীল বিদ্রোহ

(B) সাঁওতাল বিদ্রোহ

(C) সিপাহি বিদ্রোহ

(D) মুন্ডা বিদ্ৰোহ 

Ans: (C) সিপাহি বিদ্রোহ

  1. সিপাহি বিদ্রোহের সময়ে অযোধ্যায় বিদ্রোহীদের নেতৃত্ব দেন—

(A) বেগম হজরত মহল

(B) লক্ষ্মীবাঈ

(C) কুনওয়ার সিং

(D) নানা সাহেব 

Ans: (A) বেগম হজরত মহল

অতিসংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর | মাধ্যমিক ইতিহাস – সংঘব্ধতার গোড়ার কথা : বৈশিষ্ট্য ও বিশ্লেষণ (চতুর্থ অধ্যায়) প্রশ্ন ও উত্তর | Madhyamik History Question and Answer : 

  1. ১৮৫৭ খ্রিস্টাব্দে কাকে ‘ হিন্দুস্থানের সম্রাট ‘ বলে ঘোষণা করা হয় ? 

Ans: মোগল সম্রাট দ্বিতীয় বাহাদুর শাহকে । 

  1. সাধারণ জ্ঞানোপার্জিকা সভার মুখপত্র কী ছিল ? 

Ans: সাধারণ জ্ঞানোপার্জিকা সভার মুখপত্র ছিল Bengal Spectator 

  1. ১৮৫৭ খ্রিস্টাব্দে কাকে ‘ হিন্দুস্থানের সম্রাট ‘ বলে ঘোষণা করা হয় ? 

Ans: মোগল সম্রাট দ্বিতীয় বাহাদুর শাহকে । 

  1. জমিদার সভার প্রথম সম্পাদক কে ছিলেন ?

Ans: জমিদার সভার প্রথম সম্পাদক ছিলেন প্রসন্নকুমার ঠাকুর । 

  1. ১৮৫৭ – র বিদ্রোহকে কারা ‘ সিপাহি বিদ্রোহ ‘ বলেছেন ? 

Ans: জন কে , রাজনারায়ণ বসু প্রমুখ । 

  1. ‘ হিন্দুমেলা ’ প্রথমে কী নামে পরিচিত ছিল ?

Ans: হিন্দুমেলা চৈত্রসংক্রান্তির দিনে শুরু হয় বলে প্রথমে নাম ছিল চৈত্রমেলা । 

  1. কাকে বলা হয় স্বাধীনতার অগ্রদূত ? 

Ans: কবি ঈশ্বর গুপ্তকে স্বাধীনতার অগ্রদূত বলা হয় । 

  1. অমৃতবাজার পত্রিকার প্রতিষ্ঠাতা কে ছিলেন ?

Ans: শিশিরকুমার ঘোষ । 

  1. বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের প্রথম উপন্যাসের নাম কী ? 

Ans: বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের প্রথম উপন্যাস হলো দুর্গেশনন্দিনী । 

  1. ভারতে কবে কোম্পানির শাসনের অবসান ঘটে ? 

Ans: ১৮৫৮ সালের ২ আগস্ট ভারতে কোম্পানির শাসনের অবসান ঘটে । 

  1. কানপুরে সিপাহি বিদ্রোহে কে নেতৃত্ব দেন ?

Ans: কানপুরে সিপাহি বিদ্রোহে নানা সাহেব নেতৃত্ব দেন । 

  1. কোন আইনের বলে কোম্পানির শাসনের অবসান ঘটে ? 

Ans: ১৮৫৮ খ্রিস্টাব্দে ব্রিটিশ পার্লামেন্টের ‘ ভারত শাসন ’ আইনের দ্বারা । 

  1. ঊনবিংশ শতাব্দীকে কে সভাসমিতির যুগ বলেছেন ? 

Ans: ঐতিহাসিক অনিল শীল । 

  1. ইলবার্ট বিল কে রচনা করেন ? 

Ans: লর্ড রিপনের আইনসচিব ইলবার্ট । 

  1. ‘ বন্দেমাতরম ’ সংগীতটি কোন উপন্যাস থেকে নেওয়া হয়েছিল ? 

Ans: বঙ্কিমচন্দ্রের ‘ আনন্দমঠ ‘ উপন্যাস থেকে । 

  1. কোম্পানির শাসনের অবসান কবে হয়েছিল ? 

Ans: ১৮৫৮ খ্রিস্টাব্দে । 

  1. কার উদ্যোগে অ্যাকাডেমিক অ্যাসোসিয়েশন গঠিত হয়েছিল ? 

Ans: ভিভিয়ান ডিরোজিওর উদ্যোগে । 

  1. গগনেন্দ্রনাথ ঠাকুর কী ধরনের ছবি আঁকতেন ? 

Ans: তিনি মূলত ব্যঙ্গচিত্র অঙ্কন করতেন । 

  1. জাতাসুর কীসের নাম ? 

Ans: জাতাসুর হলো গগনেন্দ্রনাথ ঠাকুরের একটি ব্যঙ্গচিত্রের নাম ।

  1. হিন্দুমেলা কত খ্রিস্টাব্দে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল ?

Ans: ১৮৬৭ খ্রিস্টাব্দে । 

  1. মহাবিদ্রোহের দু’জন নেতার নাম লেখো । 

Ans: রানি লক্ষ্মীবাঈ , নানা সাহেব । 

  1. তাতিয়া তোপির প্রকৃত নাম কী ? 

Ans: তাতিয়া তোপির প্রকৃত নাম রামচন্দ্র পাণ্ডুরঙ্গ তোপি । 

সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর | মাধ্যমিক ইতিহাস – সংঘব্ধতার গোড়ার কথা : বৈশিষ্ট্য ও বিশ্লেষণ (চতুর্থ অধ্যায়) প্রশ্ন ও উত্তর | Madhyamik History Question and Answer : 

  1. সিপাহি বিদ্রোহের প্রথম শহিদ কে ছিলেন ? তিনি কবে শহিদ হন ? 

Ans: সিপাহি বিদ্রোহের প্রথম শহিদ ছিলেন মঙ্গল পাণ্ডে । ১৮৫৭ খ্রিস্টাব্দে ৪ এপ্রিল তাঁর ফাসি হয় । 

  1. ঐতিহাসিক অনিল শীল ঊনবিংশ শতককে সভাসমিতির যুগ বলেছেন কেন ? 

Ans: ঊনবিংশ শতাব্দীর একটি বিশেষ বৈশিষ্ট্য হলো জাতীয়তাবাদের জন্ম । এই জাতীয়তাবাদের বিকাশের অনিবার্য ফল হিসেবে নানা সভাসমিতির জন্ম হয় । তাই ঐতিহাসিক অনিল শীল এইসময়কে সভাসমিতির যুগ হিসেবে উল্লেখ করেছেন । 

  1. ভারতসভা বা ইন্ডিয়ান অ্যাসোসিয়েশন কাদের উদ্যোগে এবং কোথায় প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল ?

Ans: ভারতসভা সুরেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায় , আনন্দমোহন বসু , শিবনাথ শাস্ত্রী , দ্বারকানাথ গাঙ্গুলি প্রমুখের উদ্যোগে ১৮৭৬ খ্রিঃ গড়ে ওঠে । এর প্রথম অধিবেশন হয়েছিল কলকাতার অ্যালবার্ট হলে । 

  1. ইলবার্ট বিল বিতর্ক কী ? / ইলবার্ট বিল কী ? 

Ans: ভারতীয় কোনো বিচারকের ব্রিটিশদের শাসন করার অধিকার ছিল না । লর্ড রিপনের শাসনকালে আইনসচিব ইলবার্ট একটি বিল দ্বারা ভারতীয় বিচারকদের এই অধিকার প্রদান করেন । একে ইলবার্ট বিল বলে । 

  1. ব্রিটিশ ইন্ডিয়া অ্যাসোসিয়েশনের প্রথম সভাপতি ও সম্পাদক কে ছিলেন ? 

Ans: প্রথম সভাপতি –রাধাকান্ত দেব । সম্পাদক – দ্বারকানাথ ঠাকুর । 

  1. ইলবার্ট বিল কী ? 

Ans: ব্রিটিশ ভারতের বিচার ব্যবস্থায় ভারতের কৃষ্ণাঙ্গ বিচারকদের দ্বারা শ্বেতাঙ্গদের বিচার করার অধিকার দিয়ে লর্ড রিপনের আইন সচিব ইলবার্ট যে আইনের খসড়া রচনা করেন তা ইলবার্ট বিল নামে পরিচিত । 

  1. আনন্দমঠ উপন্যাস কে , কোন পটভূমিকায় রচনা করেন ? 

Ans: ১১৭৬ সনের ( ১৭৭০ খ্রিস্টাব্দে ) মন্বস্তরের পটভূমিকায় বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় আনন্দমঠ রচনা করেন । 

বিশ্লেষণধর্মী প্রশ্নোত্তর | মাধ্যমিক ইতিহাস – সংঘব্ধতার গোড়ার কথা : বৈশিষ্ট্য ও বিশ্লেষণ (চতুর্থ অধ্যায়) প্রশ্ন ও উত্তর | Madhyamik History Question and Answer : 

  1. অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘ ভারতমাতা ’ ছবির তাৎপর্য ব্যাখ্যা করো । 

অথবা , অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুর তাঁর ভারতমাতা চিত্রের মাধ্যমে কীভাবে জাতীয়তাবাদী ধারণার বিকাশ ঘটিয়েছেন ?

Ans: সূচনা : ব্রিটিশ ভারতে বিভিন্ন চিত্রের মাধ্যমে ব্রিটিশ বিরোধী মনোভাব তৈরির ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুর । ১৯০৫ খ্রিস্টাব্দে আঁকা তার ভারতমাতা চিত্রটি বিশ শতকে ভারতের জাতীয়তাবাদী চেতনার প্রসার ঘটিয়েছিল । এই চিত্রে তিনি ভারতের প্রতীক হিসেবে ভারতমাতাকে দেখিয়েছিলেন ।

 

 

স্বদেশিকতা : ভারতমাতা চিত্রে অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুর ভারতমাতার হাতে থাকা বেদ , ধানের শিষ , যপের মালা ও শ্বেতবস্ত্রকে ভারতীয় সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যের প্রতীক হিসেবে তুলে ধরেছেন । আসলে এই চিত্রের স্বদেশবোধের দ্বারা তিনি জাতীয়তাবাদী ভাবনার প্রসার করতে চেয়েছিলেন । 

জাতীয় চেতনা বৃদ্ধি : সমকালীন ভারতে বিভিন্ন ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনের মিছিলের সামনে ভারতমাতার চিত্র রাখা হতো , যার দ্বারা ভারতমাতাকে জাতীয়তাবাদের প্রতীক হিসেবে দেখিয়ে ভারতে জাতীয় চেতনা বৃদ্ধি করা হয়েছিল বলে মনে করা হয় । 

 

 

মূল্যায়ন : ভারতমাতার চিত্র নিয়ে বিতর্কও লক্ষণীয় । ভগিনী নিবেদিতা ভারতমাতার ভূয়সী প্রশংসা করে বলেছেন , “ এই চিত্রটির মাধ্যমে বিমূর্ত জাতীয়তাবাদকে মূর্ত করে তোলা হয়েছে । ” অন্যদিকে অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুর যে হিন্দু স্বাদেশিকতার উগ্র সমর্থক ছিলেন তার কোনো প্রমাণও এখান থেকে পাওয়া যায় না । 

  1. হিন্দুমেলার সীমাবদ্ধতাগুলি সংক্ষেপে লেখো । 

অথবা , হিন্দুমেলা কেন জনপ্রিয়তা লাভ করতে পারেনি । 

Ans: নবগোপাল মিত্র প্রতিষ্ঠিত ‘ হিন্দুমেলা ’ জনপ্রিয়তা না পেলেও উনিশ শতকের বিশেষ উল্লেখযোগ্য সংগঠন ছিল । এর সীমাবদ্ধতাগুলি নিম্নরূপঃ 

  1. ধর্মীয় প্রাধান্য : নবগোপাল মিত্র হিন্দু ভারতের পুনর্জাগরণের স্বপ্ন দেখতেন । শিক্ষিত তরুণ প্রজন্ম ও মধ্যবিত্ত শ্রেণি নবগোপাল ও তার সংগঠনের ভাবধারাকে সমর্থন করতে পারেনি । 
  2. রাজনৈতিক কর্মসূচির অভাব : রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে গুরুত্ব না দিয়ে শুধু দেশাত্মবোধের প্রচার করায় হিন্দুমেলার উদ্যোগ বিশেষ সাফল্য পায়নি । 
  3. সক্রিয়তার অভাব : ব্রিটিশ – বিরোধী যুগোপযোগী সক্রিয়তা ছিল না হিন্দুমেলার কর্মকাণ্ডে । সাধারণ মানুষকে তাই কাছে টানতে পারেনি হিন্দুমেলা । 
  4. মহারানি ভিক্টোরিয়ার ঘোষণাপত্র আলোচনা করো । 

অথবা , মহারানির ঘোষণাপত্রে কী বলা হয়েছে ? 

অথবা , ১৮৫৮ খ্রিস্টাব্দে মহারানি ভিক্টোরিয়ার ঘোষণাপত্রের ঐতিহাসিক তাৎপর্য লেখো । 

Ans: সূচনা : ১৮৫৭ খ্রিস্টাব্দের সিপাহি বিদ্রোহ ভারতবর্ষের বিস্তীর্ণ অঞ্চলে অতি দ্রুত ছড়িয়ে পড়লেও শেষ পর্যন্ত তা ব্যর্থ হয়েছিল । স্বল্পকালীন এই সর্বভারতীয় বিদ্রোহ ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের ভিত কাঁপিয়ে দিয়েছিল । এইসময়ে কোম্পানির হাত থেকে ব্রিটিশ সরকারের ক্ষমতা গ্রহণের বিষয়টি মহারানির ঘোষণাপত্রের মাধ্যমে করা হয় । 

 

 

মহারানির ঘোষণাপত্রের ঐতিহাসিক তাৎপর্য / বিষয়বস্তু : 

  1. কোম্পানির শাসনের অবসান : ১৮৫৮ খ্রিস্টাব্দে ভারত শাসন আইনের দ্বারা ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির শাসনের অবসান ঘটে ও ভারতের শাসনভার মহারানি নিজের হাতে তুলে নেন । 
  2. ঘোষণাপত্রের বক্তব্য : মহারানির ঘোষণাপত্রের মাধমে ভারতীয় শাসন ব্যবস্থায় নতুন নীতি ও আদর্শের কথা প্রকাশ করা হয় । যেখানে বলা হয়— 

প্রথমত , এই ঘোষণাপত্র দ্বারা ১৮৪৮ খ্রিস্টাব্দে জারি করা স্বত্ববিলোপ নীতি বাতিল হয় । 

দ্বিতীয়ত , স্থির করা হয় ভবিষ্যতে যে কোনো সরকারি চাকরির ক্ষেত্রে যোগ্যতাকেই সার্বিক প্রাধান্য দিতে হবে। 

তৃতীয়ত , ব্রিটিশ সরকার জাতি , ধর্ম , বর্ণ নির্বিশেষে কারোর প্রচলিত সামাজিক ও ধর্মীয় রীতিনীতিতে হস্তক্ষেপ করবে না । 

 

 

চতুর্থত , এই ঘোষণাপত্র অনুসারে স্থির হয় , সরকার দেশীয় রাজ্যগুলির সাথে স্বাক্ষরিত চুক্তি ও সন্ধিগুলো মেনে চলবে । 

মূল্যায়ন : আসলে মহারানির ঘোষণাপত্র ছিল সিপাহি বিদ্রোহের সুদূরপ্রসারী ফলাফল । যদিও এই বিদ্রোহের পরবর্তীকালে সংস্কার ও পুনর্গঠনের নামে ব্রিটিশরা যা কিছু করেছিল বা প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল তা সঠিকভাবে কার্যকরী হয়নি । 

  1. ১৮৫৭ খ্রিস্টাব্দের মহাবিদ্রোহের প্রতি শিক্ষিত বাঙালি সমাজের কীরূপ মনোভাব ছিল ? 

Ans: সূচনা : ১৮৫৭ খ্রিস্টাব্দের বিদ্রোহ প্রথম অবস্থায় সিপাহিদের দ্বারা শুরু হলেও কৃষক , কারিগর , শ্রমিক , শিল্পী প্রভৃতি সম্প্রদায়ের মানুষ বিদ্রোহে যোগদান করেছিল । কিন্তু মধ্যবিত্ত শিক্ষিত সমাজের মানুষেরা এই বিদ্রোহকে সমর্থন করেনি বরং তারা আন্দোলনের সাথে যুক্ত নেতাদের ব্যঙ্গ করেছিল ।

মহাবিদ্রোহের প্রতি শিক্ষিত বাঙালি সমাজের মনোভাব :

  1. অধিকাংশ শিক্ষিত বাঙালির বিরূপ মনোভাব : সিপাহি বিদ্রোহের সময় শিক্ষিত বাঙালি সমাজের মানুষেরা ব্রিটিশ শাসনের দিকে ঝুঁকে পড়েছিল । কারণ তারা ব্রিটিশ সরকারের অধীনে সরকারি চাকরির প্রতি অনুরক্ত ছিল । 
  2. মধ্যযুগীয় শাসন পুনঃপ্রতিষ্ঠার ভয় : শিক্ষিত সমাজের মানুষের ধারণা ছিল বিদ্রোহীরা জয়লাভ করলে মধ্যযুগীয় বর্বরতা প্রতিষ্ঠিত হবে । তাই তারা বিদ্রোহকে সমর্থন করেনি । 
  3. আধুনিকতা অবসানের ভয় : শিক্ষিত মধ্যবিত্ত সম্প্রদায়ের মানুষেরা ছিল আধুনিক শিক্ষা ও সংস্কারের সমর্থক । তারা মনে করত সিপাহি বিদ্রোহীরা সাফল্য পেলে আধুনিকতার অবসান ঘটবে । তাই তারা বিদ্রোহকে সমর্থন করেনি । 

মূল্যায়ন : সিপাহি বিদ্রোহের শেষ পর্বে ব্রিটিশ সরকার যখন কঠোর দমননীতি প্রয়োগ করে তখন শিক্ষিত মধ্যবিত্ত সম্প্রদায়ের ব্রিটিশদের প্রতি মোহভঙ্গ হয় । তারা অনুভব করে যে ব্রিটিশ শাসন কখনো ভারতবাসীর কল্যাণ করতে পারে না । 

  1. ১৮৫৭ খ্রিস্টাব্দের মহাবিদ্রোহ বা সিপাহি বিদ্রোহের ব্যর্থতার কারণ লেখো ।

Ans: সূচনা : ১৮৫৭ খ্রিস্টাব্দের ২৯ মার্চ শুরু হওয়া সিপাহি বিদ্রোহ খুব অল্প সময়ে দ্রুত ভারতের বিস্তীর্ণ অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়ে এবং এক গণআন্দোলনে পরিণত হয় । যদিও গোর্খা বাহিনীর সাহায্যে ব্রিটিশ সরকার এই বিদ্রোহ স্তব্ধ করেছিল । এর কারণে বলা যায় 

  1. বিদ্রোহের বিচ্ছিন্নতা : ভারতের সর্বত্র বিদ্রোহ একযোগে না হওয়ায় বিভিন্ন স্থানে বিক্ষিপ্ত ও বিচ্ছিন্নভাবে এই বিদ্রোহ হয় । ফলে ইংরেজদের পক্ষে বিদ্রোহ দমন খুব সহজ হয়ে ওঠে । 
  2. সুযোগ্য নেতৃত্বের অভাব : সিপাহি বিদ্রোহ পরিচালনার জন্য নানা সাহেব , লক্ষ্মীবাঈ , তাঁতিয়া টোপি প্রমুখ সাহসী ও সমরকুশলী হলেও ইংরেজ সেনাপতি লরেন্স , হ্যাভলক , আউটরাম প্রমুখের মতো সুযোগ্য নেতৃত্বের অভাবকে অনেকে এই বিদ্রোহের ব্যর্থতার অন্যতম কারণ মনে করেছেন । 
  3. সুনির্দিষ্ট লক্ষ্যের অভাব : বিদ্রোহীরা জনগণের কাছে সুনির্দিষ্ট লক্ষ্য তুলে ধরতে পারেনি যা ছিল বিদ্রোহের ব্যর্থতার অন্যতম কারণ । 
  4. সংকীর্ণতা : সিপাহি বিদ্রোহের নেতাদের মধ্যে আঞ্চলিক স্বার্থ ও সংকীর্ণতা বিদ্যমান থাকায় তারা সর্বত্র একই নীতি অনুসরণ করতে পারেনি । 

মূল্যায়ন : উপরের আলোচনায় স্পষ্ট যে সিপাহি বিদ্রোহের ব্যর্থতা ছিল একাধিক কারণের যৌগিক প্রক্রিয়ার ফলশ্রুতি । 

  1. জাতীয় চেতনার প্রসার ঘটানোর জন্য হিন্দুমেলা কী ভূমিকা নিয়েছিল ? 

Ans: সূচনা : বিংশ শতকের ভারতবর্ষে জাতীয়তাবাদী ব্রিটিশ বিরোধী পটভূমি তৈরির ক্ষেত্রে যেসব সভা এগিয়ে এসেছিল তার মধ্যে অন্যতম ছিল হিন্দুমেলা । 

বার্ষিক সম্মেলন : ভারতীয় দেশপ্রেমিকদের জাগিয়ে তোলার জন্য হিন্দুমেলার প্রথম বার্ষিক সম্মেলনে ‘ মলিন মুখচন্দ্র মা ভারত তোমারি ‘ গানটি গাওয়া হয় এবং পরের সম্মেলনগুলিতে জ্ঞানেন্দ্রনাথ ঠাকুরের লেখা ‘ গাও ভারতের জয় ’ গানটি গাওয়া হয় । 

 

 

হিন্দুমেলার উদ্দেশ্য : হিন্দুমেলা প্রতিষ্ঠার প্রধান উদ্দেশ্য ছিল— 

  1. হিন্দু ধর্মের ঐতিহ্য : হিন্দু ধর্মের প্রাচীন ঐতিহ্য ও গৌরবময় দিকগুলি সাধারণ মানুষের মধ্যে তুলে ধরাই ছিল হিন্দুমেলার প্রধান উদ্দেশ্য । 
  2. দেশাত্মবোধ জাগ্রত করা : দেশীয় ভাষাচর্চা , দেশাত্মবোধক কবিতাপাঠ , দেশীয় শিল্পীদের প্রসার , দেশীয় শরীরচর্চার মাধ্যমে দেশাত্মবোধ জাগিয়ে তোলা ছিল হিন্দুমেলার অপর উদ্দেশ্য । 
  3. পাশ্চাত্য সংস্কৃতির অগ্রগতি রোধ : সমকালীন ভারতে পাশ্চাত্য সংস্কৃতির প্রসার রোধ করা ছিল অন্যতম উদ্দেশ্য । 

মূল্যায়ন : হিন্দুমেলার উদ্দেশ্য সম্পর্কে গগনেন্দ্রনাথ ঠাকুর লিখেছেন , “ আমাদের এই মিলন সাধারণ ধর্ম – কর্মের জন্য নহে , কোনো বিশেষ সুখের জন্য নহে , কোনো আমোদপ্রমোদের জন্য নহে , ইহা স্বদেশের জন্য , ভারতভূমির জন্যে । ” 

রচনাধর্মী প্রশ্নোত্তর | মাধ্যমিক ইতিহাস – সংঘব্ধতার গোড়ার কথা : বৈশিষ্ট্য ও বিশ্লেষণ (চতুর্থ অধ্যায়) প্রশ্ন ও উত্তর | Madhyamik History Question and Answer : 

  1. উনিশ শতকে লেখায় ও রেখায় জাতীয়তাবাদ কীভাবে ফুটে উঠেছে । এবং ঊনবিংশ শতকে রেখায় ও লেখায় জাতীয়তাবাদ কী ভাবে ফুটে উঠেছে । 

Ans: ভূমিকা : ঊনিশ শতকের শেষদিকে শিক্ষিত ভারতবাসীর চিন্তায় ও কর্মে এক ব্যাপক পরিবর্তন ঘটে । ব্রিটিশ শাসকদের আচার আচরণে জাতি বৈরিতা এবং অর্থনৈতিক – রাজনৈতিক অসাম্যের প্রতিবাদে ‘ আনন্দমঠ ‘ , ‘ বর্তমান ভারত ’ , ‘ গোরা ’ গ্রন্দ্বে ভারতমাতা চিত্রে এক জাতীয়তাবাদী ধ্যানধারনার বিষয় ও প্রেক্ষাপট তুলে ধরা হয় । 

  1. জাতীয়তাবাদী বিকাশে আনন্দমঠের ভূমিকা : 

পটভূমি : একদিকে ১৭৭০ খ্রিস্টাব্দে ( ১১৭৬ বঙ্গাব্দে ) বাংলার ভয়াবহ দুর্ভিক্ষ ( ছিয়াত্তরের মন্বন্তর ) ও অন্যদিকে সন্ন্যাসী ও ফকির বিদ্রোহের প্রেক্ষাপটে এটি রচিত হয়েছে । 

উদ্দেশ্য : আনন্দমঠ উপন্যাসটি রচনার মূল উদ্দেশ্য ভারতীয়দের মধ্যে স্বদেশপ্রেম জাগরিত করা ও জাতীয়তাবাদের বিকাশ ঘটানো তথা দেশবাসীকে মুক্তি আন্দোলনে আন্দোলিত করা । 

 

 

বিভিন্ন চরিত্র : এই উপন্যাসের বিভিন্ন চরিত্রের মধ্যে রয়েছে সর্বত্যাগী সন্ন্যাসীদের চরিত্র যেমন — মহেন্দ্র , ভবানন্দ , সত্যানন্দ প্রমুখ । এটি ভারতকে মাতৃরূপে কল্পনা করে তার তিনটি রূপ দেখিয়েছে । যথা — জগদ্ধাত্রী , কালী , ও দশভূজা মূর্তি । 

ব্রিটিশ শাসনের দুর্দশার চিত্র : এই উপন্যাসে সমকালীন ভারতবাসীর সামনে পরাধীন ভারতমাতার দুর্দশার চিত্র তুলে ধরে বঙ্কিম স্বৈরাচারী ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে ভারতবাসীকে আহ্বান জানায় ।

বন্দেমাতরম সংগীত : এখানে বন্দেমাতরম সংগীতটি তুলে ধরা হয়েছে ১৮৭৫ খ্রিস্টাব্দে , যা ছিল পরাধীন ভারতের জাতীয় সংগীত তথা বিপ্লবীদের মন্ত্র । পরে ১৯০৭ খ্রিস্টাব্দে মাদাম ভিকাজি কামা রূপায়িত জাতীয় পতাকায় এই ধ্বনি স্থান পেয়েছে । 

দেশমাতার আদর্শ : আনন্দমঠে দেশমাতার আদর্শ হিসাবে বঙ্কিমচন্দ্র বলেছেন দেশমাতা হলেন মা , দেশপ্রেম হলো ধর্ম , দেশসেবা হলো পূজা । 

  1. জাতীয়তাবাদ বিকাশে বর্তমান ভারতের গুরুত্ব : 

‘ বর্তমান ভারত ‘ গ্রন্থটি ভারতীয়দের মধ্যে জাতীয়তাবাদী ভাবধারা প্রসারের জন্য গুরুত্বপূর্ণ । 

  1. i) স্বামীজি বর্তমান ভারতে বৈদিক যুগ থেকে ব্রিটিশ শাসনকাল পর্যন্ত ভারতের ইতিহাস বর্ণনা করেছেন । 
  2. ii) গ্রন্থটিতে স্বামীজি পরাধীনতার গ্লানির চিত্রটি তুলে ধরেছেন । ভারতবাসীকে স্বাধীনতার মন্ত্রে দীক্ষিত করেছেন । 

  iii) তিনি উপলব্ধি করেছিলেন স্বাধীনতা লাভের জন্য ভারতীয়দের মধ্যে ঐক্য খুবই প্রয়োজন । 

  1. iv) তিনি সমাজের দলিত ও নিম্নশ্রেণির মানুষের প্রতি শোষণের তীব্র নিন্দা করেছেন । তার মতে , ভারতে প্রাচীনকাল থেকে শূদ্রদের দমিয়ে রাখা হয়েছে । এবার শূদ্রজাতির জাগরণ ঘটবে । তাদের আধিপত্য প্রতিষ্ঠিত হবে । তিনি দেশপ্রেমের আদর্শে ভারতবাসীকে দীক্ষিত করেছেন । 
  2. জাতীয়তাবাদ বিকাশে ‘ গোরা ‘ উপন্যাসের ভূমিকা : বিংশ শতকের গোড়ায় বঙ্গভঙ্গ আন্দোলনের অন্যতম পথিকৃৎ ছিলেন স্বয়ং রবীন্দ্রনাথ । তিনি তাঁর লেখনীর মাধ্যমে ক্রমাগত জাতীয়তাবোধের আদর্শকে এক অন্য পর্যায়ে এগিয়ে নিয়ে গিয়েছিলেন । তাঁর অন্যতম শ্রেষ্ঠ উপন্যাস ‘ গোরা ‘ ১৯০৭-০৯ খ্রিস্টাব্দ অবধি ‘ প্রবাসী ’ পত্রিকায় ধারাবাহিকভাবে প্রকাশিত হয়েছিল । গোরা উপন্যাসটিকে সমগ্র আধুনিক ভারতীয় সাহিত্যের একটি যুগান্তকারী রচনা হিসেবে গণ্য করা হয় । এখানে ‘ গোরা ‘ চরিত্রটি প্রবল ইংরেজ বিদ্বেষী । তাঁর বিদ্বেষকে আরও বাড়িয়ে তোলে ইংরেজদের ভারতীয় সভ্যতা , সমাজ ও সংস্কৃতি নিয়ে তীব্র ঘৃণা ৷ গোরা প্রথমে উগ্র হিন্দুত্ববাদের প্রতি অনুরক্ত হয় কিন্তু পরবর্তীতে তার দৃষ্টিভঙ্গি পালটে যায় । সে উগ্র হিন্দুত্ব তথা সকল প্রকার ধর্মীয় আচারবিচার বর্জন করে সংকল্প নেয় প্রাচীন ভারতীয় সভ্যতার উৎকর্ষ প্রচারের মাধ্যমে ভারতবাসীর মনে স্বদেশপ্রেমের জোয়ার আনবে । ধর্মীয় ও সামাজিক রীতিনীতি ও আচারবিচারের পরিবর্তে স্বদেশপ্রেমের দ্বারাই যে জাতীয়তাবোধের জাগরণ সম্ভব তা সে উপলব্ধি করে এবং সেই কর্মযজ্ঞে সে নিজেকে উৎসর্গ করে । 
  3. জাতীয়তাবাদ বিকাশে ‘ ভারতমাতা ’ ছবির গুরুত্ব : 

সূচনা : ব্রিটিশ ভারতে বিভিন্ন চিত্রের মাধ্যমে ব্রিটিশ বিরোধী মনোভাব তৈরির ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুর । ১৯০৫ খ্রিস্টাব্দে আঁকা তার ভারতমাতা চিত্রটি বিশ শতকে ভারতের জাতীয়তাবাদী চেতনার প্রসার ঘটিয়েছিল । এই চিত্রে তিনি ভারতের প্রতীক হিসেবে ভারতমাতাকে দেখিয়েছিলেন । 

স্বাদেশিকতা : ভারতমাতা চিত্রে অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুর ভারতমাতার হাতে থাকা বেদ , ধানের শিষ , যপের মালা ও শ্বেতবস্ত্রকে ভারতীয় সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যের প্রতীক হিসেবে তুলে ধরেছেন । আসলে এই চিত্রের স্বদেশবোধের দ্বারা তিনি জাতীয়তাবাদী ভাবনার প্রসার করতে চেয়েছিলেন । 

জাতীয় চেতনা বৃদ্ধি : সমকালীন ভারতে বিভিন্ন ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনের মিছিলের সামনে ভারতমাতার চিত্র রাখা হতো , যার দ্বারা ভারতমাতাকে জাতীয়তাবাদের প্রতীক হিসেবে দেখিয়ে ভারতে জাতীয় চেতনা বৃদ্ধি করা হয়েছিল বলে মনে করা হয় । 

  1. ১৮৫৭ খ্রিস্টাব্দের বিদ্রোহের চরিত্র ও প্রকৃতি বিশ্লেষণ করো ।

Ans: সূচনা : ব্যারাকপুরের সেনাছাউনিতে ১৮৫৭ খ্রিস্টাব্দে সিপাহি বিদ্রোহ শুরু হলেও তা কেবলমাত্র সিপাহিদের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকেনি । সমাজের বিভিন্ন শ্রেণির মানুষের যোগদান এই বিদ্রোহে স্পষ্ট হয়ে ওঠে । তবে ব্রিটিশ শাসনের ভিত কাঁপিয়ে দেওয়া এই বিদ্রোহের প্রকৃতি এক বিতর্কিত বিষয় । 

১৮৫৭ – র বিদ্রোহের প্রকৃতি : 

  1. সিপাহি বিদ্রোহ : ১৮৫৭ খ্রিস্টাব্দে ভারত সচিব আর্ল স্ট্যানলি তাঁর এক প্রতিবেদনে এই বিদ্রোহকে ‘ Sepoy Mutiny ‘ বলে উল্লেখ করেছেন । এক্ষেত্রে তাঁদের অভিমত হলো , সিপাহিরাই বিদ্রোহের সূচনা করে যেখানে দেশের সকল শ্রেণির মানুষ , বিশেষ করে শিক্ষিত মধ্যবিত্ত শ্রেণির যোগদান ঘটেনি । এছাড়া এই বিদ্রোহের মূলে কোনো রাজনৈতিক আকাঙ্ক্ষা ছিল না। 
  2. সামস্ত বিদ্রোহ : ঐতিহাসিক রমেশচন্দ্র মজুমদার , সুরেন্দ্রনাথ সেন , রজনীপাম দত্ত প্রমুখ ১৮৫৭ – র বিদ্রোহকে সামস্ততান্ত্রিক প্রতিক্রিয়া বা সনাতন পন্থীদের বিদ্রোহ বলেছেন । কারণ কোম্পানির বিভিন্ন নীতির দ্বারা ক্ষমতাচ্যুত শাসকেরা যেমন রানি লক্ষ্মীবাঈ , নানা সাহেব , তাঁতিয়া টোপি সহ একাধিক প্রাদেশিক শাসক এই বিদ্রোহে সামিল হয়েছিলেন । 
  3. গণবিদ্রোহ : ডান কে , বল , সি . এ . বেইলি প্রমুখ ১৮৫৭ – র বিদ্রোহকে গণবিদ্রোহ বলার পক্ষপাতী । কারণ সিপাহিদের সাথে সাধারণ মানুষ স্বতস্ফূর্তঃভাবে অংশগ্রহণ করে এই বিদ্রোহকে গণবিদ্রোহের রূপ দিয়েছিল । এছাড়া মুজাফফরনগর , অযোধ্যা , কানপুর , ঝাসি প্রভৃতি অঞ্চলে বিদ্রোহে গণবিস্ফোরণ ঘটে । 
  4. জাতীয় বিদ্রোহ : ঐতিহাসিক নর্টন , ডাফ , আউটরাম , ডিসরেলি প্রমুখ ১৮৫৭ – র বিদ্রোহকে জাতীয় বিদ্রোহ বলে অভিহিত করেছেন । তাঁদের মতে , বিহার , উত্তরপ্রদেশ , মুজফফরনগর প্রভৃতি স্থানে সিপাহি নেতৃত্ব ছাড়াও স্থানীয় রাজন্যবর্গ , জমিদাররা বিদ্রোহে যোগদান করেন এবং দ্বিতীয় বাহাদুর শাহকে ভারতের সম্রাট বলে ঘোষণা করে বিদেশি শাসনমুক্ত এক দেশীয় শাসন ব্যবস্থা স্থাপনে উদ্যোগী হন । 
  5. ভারতের প্রথম স্বাধীনতা যুদ্ধ : বিনায়ক দামোদর সাভারকর ১৮৫৭ – র বিদ্রোহকে ভারতের প্রথম স্বাধীনতা যুদ্ধ বলে অভিহিত করেছেন । কিন্তু অধিকাংশ ঐতিহাসিক এই মত স্বীকার করেন না । কারণ না ছিল বিদ্রোহীদের নির্দিষ্ট কোনো লক্ষ্য , না এই বিদ্রোহ থেকে ভারতীয়দের মধ্যে জাতীয়তাবাদের জন্ম হয়েছিল । এছাড়া অনেক ভারতীয় রাজা , শিখ ও গোর্খা সৈনিকরা ইংরেজদের সাহায্য করেছিল । 
  6. মহাবিদ্রোহ : ভারতের বেশ কিছু জাতীয়তাবাদী ঐতিহাসিক এই বিদ্রোহের ব্যাপকতা লক্ষ করে এই বিদ্রোহকে মহাবিদ্রোহ বলে অভিহিত করেছিলেন । এরিখ স্টেকস বলেছেন যে এই বিদ্রোহ ছিল ভারতে ইংরেজ শাসনের বিরুদ্ধে সশস্ত্র আন্দোলনের শেষ অধ্যায় । 

মন্তব্য : উপরোক্ত আলোচনায় স্পষ্ট যে ১৮৫৭ – র বিদ্রোহে সিপাহিদের অসন্তোষ মূল কারণ হলেও এই বিদ্রোহের মূলে ছিল বিভিন্ন শ্রেণির মানুষের গভীর অসন্তোষ ও হতাশা । অধ্যাপক রণজিৎ গুহ , গৌতম ভদ্র প্রমুখ ত্রুটিবিচ্যুতি সত্ত্বেও এই আন্দোলনে গণচরিত্রের উপর গুরুত্ব দিয়েছেন ।

=======================================================================================

সংঘবদ্ধতার গোড়ার কথা (চতুর্থ অধ্যায়)

বিভাগ-ক

 

বহুবিকল্পভিত্তিক প্রশ্ন (প্রতিটি প্রশ্নের মান-১)
১। জমিদার সভা প্রতিষ্ঠিত হয়
(ক) ১৮৩৬ খ্রিস্টাব্দে (খ) ১৮৩৮ খ্রিস্টাব্দে (গ) ১৮৭৬ খ্রিস্টাব্দে (ঘ) ১৮৬৭ খ্রিস্টাব্দে
উত্তরঃ (খ) ১৮৩৮ খ্রিস্টাব্দে
২। ইলবার্ট বিলের পক্ষে আন্দোলন গড়ে তোলে
(ক) ভারত সভা (খ) ইন্ডিয়ান লিগ (গ) জাতীয় কংগ্রেস (ঘ) মুসলিম লিগ
উত্তরঃ (ক) ভারত সভা
৩। বঙ্গভাষা প্রকাশিকা’ সভার সম্পাদক ছিলেন
(ক) কালীনাথ রায় (খ) গৌরীশঙ্কর তর্কবাগীশ (গ) রাধাকান্ত দেব (ঘ) প্রসন্নকুমার ঠাকুর
উত্তরঃ (ঘ) প্রসন্নকুমার ঠাকুর
৪। বিদ্রোহী সিপাহীদের নেতৃত্বদানকারী নানা সাহেবের সামরিক বাহিনীর নেতা ছিলেন
(ক) কুনওয়ার সিং (খ) মঙ্গল পান্ডে (গ) তাতিয়া টোপি (ঘ) খান বাহাদুর খান
উত্তরঃ (গ) তাতিয়া টোপি
৫। মহাবিদ্রোহের সময় ভারতের বডোলাট ছিলেন
(ক) ক্যানিং (খ) ডালহৌসি (গ) কার্জন (ঘ) বেন্টিঙ্ক
উত্তরঃ (ক) ক্যানিং
৬। মহাবিদ্রোহের পর ভারতের শাসনভার গ্রহণ করে।
(ক) মহারানি ভিক্টোরিয়া (খ) লর্ড ক্যানিং (গ) ভারত সচিব (ঘ) ভাইসরয়
উত্তরঃ (ক) মহারানি ভিক্টোরিয়া
৭। কার্ল মার্কস ১৮৫৭ খ্রিস্টাব্দের বিদ্রোহকে বলেছেন
(ক) জাতীয় বিদ্রোহ (খ) মহাবিদ্রোহ (গ) সিপাহী বিদ্রোহ (ঘ) গণবিদ্রোহ
উত্তরঃ (ক) জাতীয় বিদ্রোহ
৮। হিন্দুমেলা প্রতিষ্ঠা করেন।
(ক) রাজনারায়ণ বসু (খ) দ্বারকানাথ ঠাকুর (গ) গৌরীশঙ্কর ভট্টাচার্য (ঘ) নবগোপাল মিত্র
উত্তরঃ (ঘ) নবগোপাল মিত্র
৯। হিন্দুমেলা প্রতিষ্ঠিত হয়
(ক) ১৮৬৭ খ্রিস্টাব্দে (খ) ১৮৭০ খ্রিস্টাব্দে (গ) ১৮৭৫ খ্রিস্টাব্দে (ঘ) ১৮৭২ খ্রিস্টাব্দে
উত্তরঃ (ক) ১৮৬৭ খ্রিস্টাব্দে
১০। “বর্তমান ভারত’ গ্রন্থটির লেখক হলেন
(ক) স্বামী বিবেকানন্দ (খ) রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর (গ) অরবিন্দ ঘোষ (ঘ) বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
উত্তরঃ (ক) স্বামী বিবেকানন্দ
১১। মহাবিদ্রোহকে ভারতের স্বাধীনতার প্রথম যুদ্ধ’ বলেছেন
(ক) সুভাষচন্দ্র বসু (খ) সাভারকার (গ) রমেশচন্দ্র (ঘ) সুরেন্দ্রনাথ
উত্তরঃ (খ) সাভারকার
১২। মহাবিদ্রোহকে ‘সামন্ত বিদ্রোহ’ বলেছেন
(ক) কার্ল মার্কস (খ) রমেশচন্দ্র (গ) সুভাষচন্দ্র (ঘ) সাভারকার
উত্তরঃ (খ) রমেশচন্দ্র
১৩। সিপাহীদের বিদ্রোহ দমন করা উচিত বলে মনে করতেন
(খ) কৃষ্ণকমল ভট্টাচার্য (গ) শ্যামসুন্দর সেন (ঘ) চণ্ডীচরণ সেন
উত্তরঃ (ক) ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর
১৪। গোরা’ উপন্যাসটি রচনা করেন
(ক) অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুর (খ) বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় (গ) রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর (ঘ) স্বামী বিবেকানন্দ
উত্তরঃ (গ) রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
১৫। মাদ্রাজ মহাজন সভা প্রতিষ্ঠিত হয়
(ক) ১৮৮৪ খ্রিস্টাব্দে (খ) ১৮৮৫ খ্রিস্টাব্দে (গ) ১৮৮৬ খ্রিস্টাব্দে (ঘ) ১৮৮৭ খ্রিস্টাব্দে
উত্তরঃ (ক) ১৮৮৪ খ্রিস্টাব্দে
১৬। কোন বিদ্রোহে এনফিল্ড রাইফেলে টোটার প্রচলন বিদ্রোহের প্রধান কারণ হিসেবে উঠে আসে?
(ক) সাঁওতাল বিদ্রোহে (খ) কোল বিদ্রোহে (গ) সিপাহী বিদ্রোহে (ঘ) মুন্ডা বিদ্রোহে
উত্তরঃ (গ) সিপাহী বিদ্রোহে
১৭। বেঙ্গল ব্রিটিশ ইন্ডিয়া সোসাইটি প্রতিষ্ঠিত হয়
(ক) ১৮৪২ খ্রিস্টাব্দে (খ) ১৮৪৪ খ্রিস্টাব্দে (গ) ১৮৫৪ খ্রিস্টাব্দে (ঘ) ১৮৪৬ খ্রিস্টাব্দে
উত্তরঃ (ক) ১৮৪২ খ্রিস্টাব্দে
১৮। ভারতমাতা’ ছবিটির স্রষ্টা
(ক) অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুর (খ) রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর (গ) গগনেন্দ্রনাথ ঠাকুর (ঘ) নন্দলাল বসু
উত্তরঃ (ক) অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুর
১৯। বন্দেমাতরম’ সংগীতটি নেওয়া হয়েছে
(ক) “গোরা’ থেকে (খ) বর্তমান ভারত থেকে (গ) ‘আনন্দমঠ’ থেকে (ঘ) ‘জীবনস্মৃতি থেকে
উত্তরঃ (গ) ‘আনন্দমঠ’ থেকে
২০। হিন্দুমেলার উদ্দেশ্য ছিল
(ক) ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলন সংগঠিত করা (খ) হিন্দুধর্মের সংস্কার সাধন (গ) দেশজ শিল্পের প্রসার (ঘ) জাতীয়তাবাদী ভাবধারার প্রসার
উত্তরঃ (গ) দেশজ শিল্পের প্রসার
২১। রবীন্দ্রনাথের ‘গোরা’ উপন্যাসটি প্রকাশিত হয়
(ক) ১৯০৫ খ্রিস্টাব্দে (খ) ১৯০৬ খ্রিস্টাব্দে (গ) ১৯১০ খ্রিস্টাব্দে (ঘ) ১৯১১ খ্রিস্টাব্দে
উত্তরঃ (গ) ১৯১০ খ্রিস্টাব্দে
২২। ভারতের প্রথম রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠান
(ক) ভারত সভা (খ) জমিদার সভা (গ) জাতীয় কংগ্রেস (ঘ) বঙ্গভাষা প্রকাশিকা সভা
উত্তরঃ (ঘ) বঙ্গভাষা প্রকাশিকা সভা

 

বিভাগ-খ

 

অতিসংক্ষিপ্ত প্রশ্ন (প্রতিটি প্রশ্নের মান-১)
১। হিন্দুমেলা’ প্রথমে কী নামে পরিচিত ছিল?
উত্তরঃ চৈত্র মেলা
২। হিন্দুমেলার বার্ষিক সভায় কোন গানটি গাওয়া হয়?
উত্তরঃ গাও ভারতের জয়গান
৩। কীসের দ্বারা ভারতে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির শাসনের অবসান ঘটে?
উত্তরঃ মহারানীর ঘোষণাপত্র
৪। ‘আনন্দমঠ উপন্যাসে লেখক কোন সময়ের কথা তুলে ধরেছেন?
উত্তরঃ সন্ন্যাসী ও ফকির বিদ্রোহের সময়কাল
৫। কোন্ গ্রন্থটি ‘স্বদেশপ্রেমের গীতা’ নামে পরিচিত?
উত্তরঃ ‘আনন্দমঠ
৬। ভারতমাতা’ চিত্রটি কে অঙ্কন করেন?
উত্তরঃ অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুর
৭। বিবেকানন্দের বর্তমান ভারত’ গ্রন্থটি কবে প্রকাশিত হয়?
উত্তরঃ ১৮৯৯ খ্রিস্টাব্দে
৮। এনফিল্ড রাইফেলের টোটা কীভাবে ব্যবহার করতে হত?
উত্তরঃ দাঁতে কেটে
৯| ভারত সভার নেতৃত্বে গড়ে ওঠা দুটি আন্দোলনের উল্লেখ করো।
উত্তরঃ ইলবার্ট বিলের পক্ষে আন্দোলন, সিভিল সার্ভিস আন্দোলন
১০। ব্রিটিশ ভারত সভা কোন দুটি সংস্থাকে যুক্ত করে গড়ে ওঠে?
উত্তরঃ জমিদার সভা ও বেঙ্গল ব্রিটিশ ইন্ডিয়া সোসাইটি
১১। ১৮৫৭ খ্রিস্টাব্দে বিদ্রোহ সম্পর্কে জে বি নর্টন কী মন্তব্য করেছিলেন?
উত্তরঃ জাতীয় বিদ্রোহ
১২। কে ‘বন্দেমাতরম’সংগীতটির সুর দেন?
উত্তরঃ যদু ভট্ট
১৩। ভারতের প্রথম ভাইসরয় কে?
উত্তরঃ লর্ড ক্যানিং
১৪। ইলবার্ট বিল কে রচনা করেন?
উত্তরঃ লর্ড রিপনের আইনসচিব কোর্টনি ইলবার্ট
১৫।‘গোরা’ উপন্যাসে ব্রিটিশ শাসনের অনুরাগী দুটি চরিত্রের নাম লেখো।
উত্তরঃ পরেশবাবু ও কৃয়দয়াল
১৬। ১৮৫৭-এর বিদ্রোহ কোন্ কোন্ অঞলে অনুষ্ঠিত হয়?
উত্তরঃ অযোধ্যা ও বিহারে
১৭। ভারত সভার প্রথম অধিবেশন কোথায় অনুষ্ঠিত হয়?
উত্তরঃ কলকাতার অ্যালবার্ট হলে
১৮| বঙ্গভাষা প্রকাশিকা সভায় কী বিষয়ে আলোচনা হত?
উত্তরঃ ভারতবাসীর মঙ্গল ও অমঙ্গল বিষয়ে
১৯। সিপাহী বিদ্রোহের প্রথম শহিদ কে?
উত্তরঃ মঙ্গল পান্ডে
২০। জমিদার সভার সঙ্গে যুক্ত কয়েকজনের নাম উল্লেখ করো।
উত্তরঃ দ্বারকানাথ ঠাকুর, প্রসন্নকুমার ঠাকুর, রাধাকান্ত দেব প্রমুখ

 

ঠিক বা ভুল নির্ণয় করো (প্রতিটি প্রশ্নের মান-১)
১। ১৮৫৮ খ্রিস্টাব্দে ব্রিটিশ পার্লামেন্ট ভারত শাসন আইন পাশ করে।[T]
২। বঙ্গভাষা প্রকাশিকা সভা ভারতের জাতীয়তাবাদী প্রথম সংগঠন।[T]
৩। মহাবিদ্রোহের সময় ভারতের গভর্নর জেনারেল ছিলেন লর্ড ডালহৌসি।[F]
৪। সমকালীন বাঙালি বুদ্ধিজীবীগণ মহাবিদ্রোহকে সমর্থন করেছিল।[F]
৫। রাজনারায়ণ বসু হিন্দুমেলার অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা।[T]
৬। ১৮৭৬ খ্রিস্টাব্দে ভারত সভা কলকাতা শহরে প্রতিষ্ঠিত হয়।[T]
৭। গোরা’ উপন্যাসে মানবপ্রেম, দেশপ্রেম ও দেশাত্মবোধের সমন্বয় ঘটেছে।[T]
৮। ১৮৭৯ খ্রিস্টাব্দে বর্তমান ভারত’ গ্রন্থাকারে প্রকাশিত হয়।[F]
৯। ‘আনন্দমঠ’ জাতীয় আন্দোলনের গীতা।[T]
১০। ভারতমাতা চিত্রটিতে ভারতমাতার চারটি হাত।[T]

 

‘ক’ স্তম্ভের সঙ্গে ‘খ’ স্তম্ভ মেলাও : (প্রতিটি প্রশ্নের মান-১)
1.
‘ক’ স্তম্ভ
(ক) বিবেকানন্দ
(খ) রবীন্দ্রনাথ
(গ) অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুর
(ঘ) বঙ্কিমচন্দ্র
‘খ’ স্তম্ভ
আনান্দমঠ
বর্তমান
গোরা
ভারত মাতা
উত্তরঃ (ক)-(ii), (খ)-(iii), (গ)-(iv), (ঘ)-(i)
2.
‘ক’ স্তম্ভ
(ক) মহাবিদ্রোহ
(খ) মহারানির ঘোষণাপত্র
(গ) ভারতসভা
(ঘ) হিন্দু সভা
‘খ’ স্তম্ভ
(I)১৮৫৮ খ্রিস্টাব্দ
(ii)১৮৫৭ খ্রিস্টাব্দ
(ii) ১৮৬৭খ্রিস্টাব্দ
(iii) ১৮৭৬ খ্রিস্টাব্দ
উত্তরঃ (ক)-(ii), (খ)-(i), (গ)-(iv), (ঘ)-(iii)

 

ভারতের রেখামানচিত্রে নিম্নলিখিত স্থানগুলি চিহ্নিত করো (প্রতিটি প্রশ্নের মান-১)
১। মহাবিদ্রোহের এলাকা।
২। মহাবিদ্রোহের কেন্দ্ররূপে ব্যারাকপুর, অযোধ্যা, কানপুর, দিল্লী, ঝাসী, বেরিলি ও মীরাট
বিবৃতিগুলির সঠিক ব্যাখ্যাটি নির্বাচন করো (প্রতিটি প্রশ্নের মান-১)
১। বিবৃতি : শিক্ষিত বাঙালি সমাজ মহাবিদ্রোহকে স্বাগত জানায়নি
ব্যাখ্যা ১: তারা বিদ্রোহীদের স্বার্থের সঙ্গে নিজেদের স্বার্থের কোনো যোগ খুঁজে পায়নি।
ব্যাখ্যা ২ : তারা বিদ্রোহের মধ্যে প্রাক্-ব্রিটিশ যুগের নৈরাজ্যময় অবস্থার পুনরাবির্ভাবের সম্ভাবনা দেখেছিল।
ব্যাখ্যা ৩ : তারা ইংরেজদের প্রতি অনুগত থাকতে চেয়েছিল।
উত্তরঃ ব্যাখ্যা ২
২। বিবৃতি : উনিশ শতককে সভাসমিতির যুগ বলা হয়।
ব্যাখ্যা ১: উনিশ শতকে ভারতে বিভিন্ন রাজনৈতিক সভাসমিতি গড়ে ওঠে।
ব্যাখ্যা ২: ড. অনিল বসু উনিশ শতককে ‘সভাসমিতির যুগ বলে অভিহিত করেছেন।
ব্যাখ্যা ৩: উনিশ শতকের সভাসমিতির মধ্যে সর্বাধিক উল্লেখযোগ্য ছিল জাতীয় কংগ্রেস।
উত্তরঃ ব্যাখ্যা ১
৩। বিবৃতি : গগনেন্দ্রনাথ ঠাকুর চিত্রশিল্পের এক ব্যতিক্রমী উদ্যোগ গ্রহণ করেছিলেন।
ব্যাখ্যা ১: তিনি সমকালীন সমাজ ও সময়ের ছবি আঁকেন।
ব্যাখ্যা ২ : তিনি বাস্তবধর্মী ছবি আঁকার প্রতি মনোনিবেশ করেন।
ব্যাখ্যা ৩: তিনি সমকালীন নানান অসংহতিকে ব্যঙ্গচিত্রের মাধ্যমে তুলে ধরেন।
উত্তরঃ ব্যাখ্যা ৩
৪। বিবৃতি : ১৮৫৭ খ্রিস্টাব্দের বিদ্রোহে দেশীয় সিপাহীরা বিদ্রোহ করে।
ব্যাখ্যা ১।ইংরেজরা দেশীয় সিপাহীদের ওপর অকথ্য অত্যাচার
ব্যাখ্যা ২। দেশীয় সিপাহীদের সঙ্গে ইংরেজরা বৈষম্যমূলক আচরণ।
ব্যাখ্যা ৩ ; দেশীয় সিপাহীরা বিনা বেতনে কাজ করতে বাধ্য হত।
উত্তরঃ ব্যাখ্যা ২

 

সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন (প্রতিটি প্রশ্নের মান-২)
১। ‘ইলবার্ট বিল’ কী?
২। সভাসমিতির যুগ” কাকে বলে?
৩। জমিদার সভা গঠনের উদ্দেশ্য কী ছিল?
৪। হিন্দুমেলা গড়ে ওঠার পিছনে কী কারণ ছিল ?
৫। সিপাহীরা তাদের বিদ্রোহকে সংগঠিত করার ক্ষেত্রে কী পদক্ষেপ গ্রহণ করেছিল?
৬। ভারতের ধর্মীয় বিষয়ে গোরার কী উপলদ্ধি ছিল ?
৭। ১৮৫৭-র বিদ্রোহকে কারা, কেন জাতীয় বিদ্রোহ’ বলেছেন?
৮। বঙ্গভাষা প্রকাশিকা’ সভার সীমাবদ্ধতা কী ছিল?
৯। কে, কেন ‘ভাইসরয়’ উপাধি লাভ করেন?
১০। গগনেন্দ্রনাথ ঠাকুরের ব্যঙ্গচিত্রের বিষয় কী ছিল?
১১। শিক্ষিত বাঙালি সমাজ কেন ১৮৫৭-র বিদ্রোহকে সমর্থন করেনি?
১২। ভারতের প্রথম রাজনৈতিক সংগঠন কোনটি এর উদ্দেশ্য কী ছিল?
১৩। মহাবিদ্রোহের সময় বিদ্রোহীরা কাকে, কেন ভারতের সম্রাট’ বলে ঘোষণা করে?
১৪। অযোধ্যাতে মহাবিদ্রোহ কীরূপ আকার ধারণ করেছিল?
১৫। মহারানীর ঘোষণাপত্রের প্রধান ঘোষণাগুলি কী কী?
১৬। হিন্দুমেলা কেন ‘চৈত্রমেলা’ নামে পরিচিত ছিল?
১৭। অস্ত্র আইনের বিরুদ্ধে ভারত সভার আন্দোলন কী ছিল?
১৮। হিন্দুমেলার সঙ্গে যুক্ত কয়েকজন বিশিষ্ট ব্যক্তির নাম লেখো।
১৯। গগনেন্দ্রনাথ ঠাকুরের আঁকা কয়েকটি ব্যঙ্গচিত্রের নাম লেখো।
২০। জাতীয়তাবাদের বিকাশে ‘আনন্দমঠ’-এর ভূমিকা বিশ্লেষণ করো।
বিভাগ-ঘ
বিশ্লেষণধর্মী প্রশ্ন (প্রতিটি প্রশ্নের মান-৪)
১। বঙ্কিমচন্দ্রের ‘আনন্দমঠ উপন্যাসটি কীভাবে জাতীয়তাবাদী ভাবধারা প্রসারের পক্ষে সহায়ক হয়ে উঠেছে?
২। মহাবিদ্রোহকে কি জাতীয় সংগ্রাম বলা যায় ? তোমার উত্তরের সপক্ষে যুক্তি দাও।
৩। ভারতের জাতীয় জাগরণে বর্তমান ভারত ও বিবেকানন্দের ভূমিকা উল্লেখ করো।
৪। টীকা লেখো : বঙ্গভাষা প্রকাশিকা সভা।
৫। ভারত সভা গঠনের উদ্দেশ্যগুলি কী কী ছিল?
৬। ভারতমাতা চিত্রটির মধ্য দিয়ে জাতীয়তাবোধ কীভাবে ফুটে উঠেছে?
৭। ভারতের জাতীয় চেতনার বিকাশে ‘গোরা’ ও বিশ্বকবির ভূমিকা লেখো।
৮। টীকা লেখো : সভাসমিতির যুগ।
৯। জমিদার সভা সম্পর্কে যা জানো লেখো।
১০। মহাবিদ্রোহের প্রত্যক্ষ কারণ কী ছিল?
১১। ১৮৫৭ খ্রিস্টাব্দের মহাবিদ্রোহে বাঙালি বুদ্ধিজীবী শ্রেণির মনোভাব আলোচনা করো।

 

বিভাগ-ঙ

 

বিভাগব্যাখ্যামূলক প্রশ্ন (প্রতিটি প্রশ্নের মান-৮)
১। জাতীয়তাবাদী ভাবধারার ক্ষেত্রে হিন্দুমেলার অবদান উল্লেখ করো।
২। ১৮৫৭ খ্রিস্টাব্দের বিদ্রোহের চরিত্র বিশ্লেষণ করো।
৩। ভারতের জাতীয়তাবাদের বিকাশে সাহিত্যিক ও শিল্পীদের ভূমিকা লেখো।৫+৩
৪। ভারত সভার মূল উদ্দেশ্যগুলি কী কী ছিল? ভারত সভার নেতৃত্বে গড়ে ওঠা বিভিন্ন রাজনৈতিক আন্দোলনগুলির পরিচয় দাও। ৩+৫
৫। কোন্ সময়কে সভাসমিতির যুগ বলা হয়? ওই যুগের সভাসমিতির বৈশিষ্ট্যগুলি লেখো। ৩+৫
৬।গোরা’ উপন্যাসের মধ্য দিয়ে স্বদেশ ভাবনা ও জাতীয়তাবোধ কীভাবে ফুটে উঠেছে, তা আলোচনা করো।
৭। লেখায় ও রেখায় জাতীয়তাবোধের বিকাশের পরিচয় দাও। ৫+৩

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!