সংস্কার বৈশিষ্ট্য ও পর্যালোচনা (দ্বিতীয় অধ্যায়) – মাধ্যমিক দশম শ্রেণীর ইতিহাস প্রশ্ন ও উত্তর | West Bengal Madhyamik Class 10th History Question and Answer
MCQ প্রশ্নোত্তর | মাধ্যমিক ইতিহাস – সংস্কার বৈশিষ্ট্য ও পর্যালোচনা (দ্বিতীয় অধ্যায়) প্রশ্ন ও উত্তর | Madhyamik History Question and Answer :
- ‘ সংবাদ প্রভাকর ‘ – এর সম্পাদক ছিলেন—
(A) ভবানীচরণ
(B) ঈশ্বর
(C) গঙ্গাকিশোর ভট্টাচার্য
(D) মার্শম্যান
Ans: (B) ঈশ্বর
- ‘ বামাবোধিনী ‘ পত্রিকার প্রথম সম্পাদক ছিলেন—
(A) সুকুমার দত্ত
(B) উমেশচন্দ্র দত্ত
(C) দেবকুমার দত্ত গুপ্ত
(D) সন্তোষকুমার দত্ত
Ans: (B) উমেশচন্দ্র দত্ত
- বাংলায় সংবাদপত্রের সূচনা ঘটায়—
(A) সোমপ্রকাশ
(B) সমাচার দর্পণ
(C) বেঙ্গল গেজেট
(D) দিগদর্শন
Ans: (C) বেঙ্গল গেজেট
- ‘ গ্রামবার্ত্তা প্রকাশিকা ‘ – র সম্পাদক ছিলেন— (A) ভোলানাথ মুখোপাধ্যায়
(B) দীনবন্ধু মিত্র
(C) হরিনাথ চট্টোপাধ্যায়
(D) হরিনাথ মজুমদার
Ans: (D) হরিনাথ মজুমদার
- জেনারেল কমিটি অব পাবলিক ইনস্ট্রাকশন বা জনশিক্ষা কমিটি স্থাপিত হয়—
(A) ১৮০০ খ্রিস্টাব্দে
(B) ১৮১৩ খ্রিস্টাব্দে
(C) ১৮২৩ খ্রিস্টাব্দে
(D) ১৮৩৩ খ্রিস্টাব্দে
Ans: (C) ১৮২৩ খ্রিস্টাব্দে
- ভারতবর্ষীয় ব্রাহ্মসমাজ প্রতিষ্ঠা করেন—
(A) রামমোহন রায়
(B) দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর
(C) কেশবচন্দ্র সেন
(D) আনন্দমোহন বসু
Ans: (C) কেশবচন্দ্র সেন
- ১৮৯৩ খ্রিস্টাব্দে বিশ্বধর্ম সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়—
(A) ইংল্যান্ডে
(B) ফ্রান্সে
(C) মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে
(D) জার্মানিতে
Ans: (C) মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে
- কোন খ্রিস্টান মিশনারি এদেশে ইংরেজি শিক্ষা প্রসারে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা নিয়েছিলেন ?
(A) রবার্ট মে
(B) ওয়ার্ড
(C) উইলিয়াম কেরি
(D) মার্শম্যান
Ans: (C) উইলিয়াম কেরি
- ভারতের প্রথম মহিলা গ্র্যাজুয়েটদের মধ্যে অন্যতম
(A) শাস্তিসুধা ঘোষ
(B) কল্পনা মিত্র
(C) প্রিয়ংবদা দেবী
(D) চন্দ্ৰমুখী বসু
Ans: (D) চন্দ্ৰমুখী বসু
- কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রখ্যাত বাঙালি উপাচার্য –
(A) আশুতোষ মুখোপাধ্যায়
(B) উমাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়
(C) শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়
(D) গঙ্গাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়
Ans: (A) আশুতোষ মুখোপাধ্যায়
- ইয়ং বেঙ্গল দলের প্রধান মুখপত্র ছিল –
(A) সমাচার দর্পণ
(B) পার্থেনন
(C) সম্বাদ কৌমুদী
(D) মিরাৎ – উল – আখবার
Ans: (B) পার্থেনন
- কলকাতা মেডিক্যাল কলেজের প্রথম এম.ডি. উপাধি প্রাপক –
(A) মধুসূদন গুপ্ত
(B) নীলরতন সরকার
(C) ডা . মহেন্দ্রলাল সরকার
(D) চন্দ্রকুমার দে
Ans: (D) চন্দ্রকুমার দে
- রামমোহন রায় কার কাছ থেকে ‘ রাজা ’ উপাধি পেয়েছিলেন ?
(A) দ্বিতীয় বাহাদুর শাহ
(B) সম্রাট ফারুকশিয়ার
(C) জাহান্দার শাহ
(D) দ্বিতীয় আকবর
Ans: (D) দ্বিতীয় আকবর
- দেশীয় ভাষায় সংবাদপত্র আইন চালু হয়—
(A) 1872
(B) 1878
(C) 1876
(D) 1894
Ans: (B) 1878
- দেশীয় ভাষায় সংবাদপত্র আইন চালু করেন—
(A) লর্ড কার্জন
(B) লর্ড ক্যানিং
(C) লর্ড লিটন
(D) লর্ড নথক
Ans: (C) লর্ড লিটন
- নাট্যাভিনয় নিয়ন্ত্রণ আইন চালু করেন—
(A) লর্ড নর্থক
(B) লর্ড কার্জন
(C) লর্ড ওয়েলেসলি
(D) ওয়ারেন হেস্টিংস
Ans: (A) লর্ড নর্থক
- ভারতের প্রথম বিশ্ববিদ্যালয়—
(A) বোম্বাই বিশ্ববিদ্যালয়
(B) মাদ্রাজ বিশ্ববিদ্যালয়
(C) বেনারস বিশ্ববিদ্যালয়
(D) কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়
Ans: (D) কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়
- গ্রামবার্ত্তাপ্রকাশিকা প্রকাশিত হতো—
(A) কলকাতা
(B) ঢাকা
(C) নদিয়া
(D) কুষ্টিয়া থেকে
Ans: (D) কুষ্টিয়া থেকে
- ভারতে প্রথম পাশ্চাত্য শিক্ষার সূত্রপাত ঘটে—
(A) বাংলায়
(B) দিল্লিতে
(C) মাদ্রাজে
(D) বোম্বাইয়ে
Ans: (A) বাংলায়
- ব্রাহ্মসমাজ প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল—
(A) 1878
(B) 1892
(C) 1882
(D) 1902
Ans: (A) 1878
- বাংলায় কোন শতককে নবজাগরণের শতক বলা হয় ?
(A) ঊনবিংশ শতক
(B) বিংশ শতক
(C) একবিংশ শতক
(D) অষ্টাদশ শতক
Ans: (A) ঊনবিংশ শতক
- ব্রহ্মানন্দ উপাধি কার ছিল ?
(A) দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর
(B) কেশবচন্দ্র সেন
(C) শিবনাথ শাস্ত্রী
(D) আনন্দমোহন বসু
Ans: (B) কেশবচন্দ্র সেন
- রামকৃস্ল মিশন কবে প্রতিষ্ঠিত হয় ?
(A) 1872
(B) 1892
(C) 1887
(D) 1897
Ans: (D) 1897
- ‘ আদি ব্রাহ্মসমাজ ‘ – এর প্রধান নেতা ছিলেন—
(A) কেশবচন্দ্র সেন
(B) আনন্দমোহন বসু
(C) দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর
(D) শিবনাথ শাস্ত্রী
Ans: (C) দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর
- ‘ বামাবোধিনী ‘ পত্রিকার সম্পাদক ছিলেন— (A) শিশিরকুমার ঘোষ
(B) কৃস্লচন্দ্র মজুমদার
(C) উমেশচন্দ্র দত্ত
(D) দ্বারকানাথ বিদ্যাভূষণ
Ans: (C) উমেশচন্দ্র দত্ত
- সাধারণ ব্রাহ্মসমাজ প্রতিষ্ঠা হয়—
(A) 1880
(B) 1891
(C) 1895
(D) 1878
Ans: (D) 1878
- সতীদাহ প্রথা নিষিদ্ধ ঘোষণা করেন—
(A) বেন্টিঙ্ক
(B) ওয়ারেন হেস্টিংস
(C) লর্ড ওয়েলেসলি
(D) রবার্ট ক্লাইভ
Ans: (A) বেন্টিঙ্ক
- ” বিধবা পুনর্বিবাহ আইন ‘ পাশ হয়—
(A) 1856
(B) 1900
(C) 1857
(D) 1875
Ans: (A) 1856
- ব্রাহ্ম ধর্মের প্রবর্তক হলেন—
(A) রামমোহন রায়
(B) বিবেকানন্দ
(C) কেশবচন্দ্র সেন
(B) দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর
Ans: (A) রামমোহন রায়
- ‘ বর্তমান ভারত ‘ রচনা করেন—
(A) রামমোহন রায়
(B) দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর
(C) কেশবচন্দ্র সেন
(D) স্বামী বিবেকানন্দ
Ans: (D) স্বামী বিবেকানন্দ
- মিরাৎ – উল – আখবার যে ভাষায় প্রকাশিত হতো তা –
(A) ইংরেজি
(B) পোর্তুগিজ
(C) ফারসি
(D) উর্দু
Ans: (C) ফারসি
- ব্রাহ্মসমাজ ক’টি বিভাগে বিভক্ত হয় ?
(A) এক
(B) দুই
(C) তিন
(D) চার
Ans: (C) তিন
- বাংলার বাউল কবিদের মধ্যে অগ্রগণ্য ছিলেন—
(A) ফকির শাহ
(B) মজনু শাহ
(C) কাঙাল হরিনাথ
(D) লালন শাহ
Ans: (D) লালন শাহ
- বাংলার ইতিহাসে ‘ রেনেসাঁস ’ বা ‘ নবজাগরণ ‘ শব্দের প্রথম ব্যবহার করেন সম্ভবত –
(A) সুমিত সরকার
(B) সুশোভনচন্দ্র সরকার
(C) শিপ্রা সরকার
(D) তনিমা সরকার
Ans: (B) সুশোভনচন্দ্র সরকার
- বেথুন স্কুলে সর্বপ্রথম কে নিজের কন্যাদের প্রেরণ করেছিলেন ?
(A) রাধাকান্ত দেব
(B) রবীন্দ্রনাথ
(C) মাইকেল মধুসূদন
(D) মদনমোহন তর্কালঙ্কার
Ans: (D) মদনমোহন তর্কালঙ্কার
অতিসংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর | মাধ্যমিক ইতিহাস – সংস্কার বৈশিষ্ট্য ও পর্যালোচনা (দ্বিতীয় অধ্যায়) প্রশ্ন ও উত্তর | Madhyamik History Question and Answer :
- বাংলায় কোন শতককে ‘ নবজাগরণের শতক ‘ বলা হয় ?
Ans: ঊনবিংশ শতককে ।
- এশিয়াটিক সোসাইটির প্রতিষ্ঠা কে করেন ? Ans: উইলিয়াম জোন্স ( ১৭৮৪ খ্রিস্টাব্দে ) ।
- মেকলে কে ছিলেন ?
Ans: লর্ড উইলিয়াম বেন্টিঙ্ক – এর সচিব এবং ‘ মেকলে মিনিটস ’ – এর প্রবর্তক ছিলেন ।
- চার্লস উড কে ছিলেন ?
Ans: বোর্ড অব কন্ট্রোলের সভাপতি ।
- কোন গভর্নর জেনারেল এর আমলে সতীদাহ নিবারণ আইন প্রবর্তিত হয় ?
Ans: লর্ড উইলিয়াম বেন্টিঙ্ক – এর সময়ে ।
- স্কুল বুক সোসাইটি কে প্রতিষ্ঠা করেন ?
Ans: ডেভিড হেয়ার ।
- কে ‘ স্ত্রীশিক্ষা বিধায়ক ‘ নামক পুস্তিকা প্রকাশ করেন ?
Ans: রাধাকান্ত দেব ( ১৮২২ খ্রিস্টাব্দে ) ।
- কে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার সুপারিশ করেছিলেন ?
Ans: চার্লস উড তাঁর ডেসপ্যাচ বা নির্দেশনামার মাধ্যমে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার সুপারিশ করেন ।
- হিন্দু কলেজ যাঁরা প্রতিষ্ঠা করেন তাঁদের নাম উল্লেখ করো ।
Ans: স্যার হাইড ইস্ট , বৈদ্যনাথ মুখোপাধ্যায় , রাধাকান্ত দেব ।
- হিন্দু কলেজের পরবর্তীতে যে নাম হয় তা কী ?
Ans: প্রেসিডেন্সি কলেজ ।
- বাংলা ভাষায় প্রকাশিত প্রথম মাসিক পত্রিকার নাম কী ?
Ans: ‘ দিগ্দর্শন ’ ।
- বাংলা ভাষায় প্রকাশিত প্রথম সাপ্তাহিক পত্রিকার নাম কী ?
Ans: ‘ সমাচার দর্পণ ‘ ।
- ‘ সম্বাদ কৌমুদী’র সম্পাদনা কে শুরু করেন ?
Ans: রামমোহন রায় ।
- বামাবোধিনী সভা কবে স্থাপিত হয় ?
Ans: 1863 খ্রিস্টাব্দে ।
- ফোর্ট উইলিয়াম কলেজ কে প্রতিষ্ঠা করেছিলেন ?
Ans: লর্ড ওয়েলেসলি ।
- ফোর্ট উইলিয়াম কলেজ কবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল ?
Ans: 1800 খ্রিস্টাব্দে ।
- শ্রীরামপুর কলেজ কত খ্রিস্টাব্দে প্রতিষ্ঠিত হয় ?
Ans: 1818 খ্রিস্টাব্দে ।
- ‘ হুতুম পাচার নকশা ‘ কার লেখা ?
Ans: কালীপ্রসন্ন সিংহ ।
- কত খ্রিস্টাব্দে ‘ মেকলে মিনিট ’ পেশ করা হয় ?
Ans: 1835 খ্রিস্টাব্দে ।
- অ্যাংলো হিন্দু স্কুল প্রতিষ্ঠা করেন কে ?
Ans: রামমোহন রায় , 1815 খ্রিস্টাব্দে ।
- আত্মীয়সভা ’ কে প্রতিষ্ঠা করেন ?
Ans: রাজা রামমোহন রায় ( 1815 খ্রি 🙂 ।
- সতীদাহ প্রথা নিবারণ আইন কে পাশ করেন ?
Ans: লর্ড উইলিয়াম বেন্টিঙ্ক ।
- আধুনিক ভারতের জনক কাকে বলা হয় ?
Ans: রাজা রামমোহন রায়কে ।
- নব্যবঙ্গ গোষ্ঠীর দু’টি মুখপত্রের নাম লেখো ।
Ans: ‘ জ্ঞানান্বেষণ ’ , ‘ এনকোয়ারার ’ ।
- হাজি মহম্মদ মহসিন কে ছিলেন ?
Ans: একজন ধর্মপ্রাণ মহান লোকহিতৈষী ব্যক্তি ।
- ‘ যত মত তত পথ ‘ এই মতবাদের প্রবক্তা কে ?
Ans: রামকৃষ্বদেব ।
- রামকৃষ্ণ মিশন কে প্রতিষ্ঠা করেন ?
Ans: স্বামী বিবেকানন্দ ( 1897 খ্রি 🙂 ।
সত্য মিথ্যা নির্বাচন করো | মাধ্যমিক ইতিহাস – সংস্কার বৈশিষ্ট্য ও পর্যালোচনা (দ্বিতীয় অধ্যায়) প্রশ্ন ও উত্তর | Madhyamik History Question and Answer :
- মেকলে এবং আলেকজান্ডার ডাফ ছিলেন পাশ্চাত্যবাদী ।
Ans: সত্য
- ‘ নীলদর্পণ ‘ নাটক ইংরেজিতে অনুবাদ করেন জেমস লঙ ।
Ans: মিথ্যা
- শ্রীরামকৃষ্ণ রামকৃণ্ণ মিশন প্রতিষ্ঠা করেন ।
Ans: মিথ্যা
- ‘ নাট্যাভিনয় নিয়ন্ত্রণ আইন ‘ পাশ হয় 1876 খ্রিস্টাব্দে ।
Ans: সত্য
- ‘ ছুঁতোম প্যাঁচার নকশা ’ – একটি ব্যঙ্গাত্মক রচনা ।
Ans: সত্য
- বোর্ড অব কন্ট্রোলের সভাপতি ছিলেন স্যার চার্লস উড ।
Ans: সত্য
- মদনমোহন তর্কালঙ্কার বেথুনকে ‘ ক্যালকাটা ফিমেল স্কুল ’ প্রতিষ্ঠা করতে সাহায্য করেন ।
Ans: সত্য
- কলকাতা ছিল বাংলার নবজাগরণের প্রধান প্রাণকেন্দ্র ।
Ans: সত্য
- ‘ নব্যবঙ্গ ’ গোষ্ঠীর প্রাণপুরুষ ডেভিড হেয়ার ।
Ans: মিথ্যা
- মেকলে মিনিটস প্রবর্তিত হয় লর্ড বেন্টিঙ্কের আমলে ।
Ans: সত্য
- হরিনাথ মজুমদার পরিচিত ছিলেন ‘ কাঙাল হরিনাথ ’ নামে ।
Ans: সত্য
- আত্মীয়সভা পরবর্তীকালে ব্রাহ্মসমাজে পরিণত হয় ।
Ans: সত্য
সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর | মাধ্যমিক ইতিহাস – সংস্কার বৈশিষ্ট্য ও পর্যালোচনা (দ্বিতীয় অধ্যায়) প্রশ্ন ও উত্তর | Madhyamik History Question and Answer :
- বামাবোধিনী পত্রিকার উদ্দেশ্য কী ছিল ?
Ans: 1863 খ্রিস্টাব্দে প্রকাশিত এই পত্রিকার উদ্দেশ্য ছিল সমকালীন সমাজের অস্ত্র পুরস্থ মহিলাদের শিক্ষাদানের মাধ্যমে পুরুষ সমাজের শাসনের হাত থেকে মুক্তিদান করা ।
- হুতোম প্যাঁচার নকশা কবে প্রকাশিত হয় ?
Ans: কালীপ্রসন্ন সিংহের লেখা গ্রন্থটি 1862 খ্রিস্টাব্দে প্রথম খণ্ড ও 1864 খ্রিস্টাব্দে দ্বিতীয় খণ্ড প্রকাশিত হয় ।
- মেকলে মিনিট কী ? অথবা মেকলে মিনিট বলতে কী বোঝো ?
Ans: ইংরেজি তথা পাশ্চাত্য শিক্ষার সমর্থনে উইলিয়াম বেন্টিঙ্কের আইন সচিব মেকলে 1835 খ্রিস্টাব্দে যে প্রতিবেদন পেশ করেন , তা মেকলে মিনিট নামে খ্যাত ।
- ‘ গ্রামবার্তাপ্রকাশিকা’য় সমাজের কোন দিকগুলি তুলে ধরা হয়েছে ?
Ans: সমকালীন সমাজের জমিদার , নীলকর , মহাজন , চাষি প্রভৃতি সম্প্রদায়ের উল্লেখ রয়েছে । কাঙাল হরিনাথ সম্পাদিত এই পত্রিকায় সুদখোর মহাজন , অত্যাচারী নীলকর এবং জমিদার শ্রেণির শোষণের কথা তুলে ধরা হয়েছে । 5. প্রশ্ন উডের ডেসপ্যাচ কী ? / পাশ্চাত্য শিক্ষা প্রসারের ম্যাগনা কার্টা বলতে কী বোঝো ?
Ans: বোর্ড অব কন্ট্রোলের সভাপতি চার্লস উড 1854 খ্রিস্টাব্দে শিক্ষা সংক্রান্ত যে নির্দেশনামা ঘোষণা করেন তা পাশ্চাত্য শিক্ষাবিস্তারের ‘ ম্যাগনা কার্টা ‘ বা উডের ডেসপ্যাচ নামে পরিচিত ।
- উডের ডেসপ্যাচের সুপারিশগুলি কী ?
Ans: 1) কলকাতা , বোম্বাই , মাদ্রাজে বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন করা । 2) পৃথক শিক্ষা দপ্তর ও শিক্ষক শিক্ষন বিদ্যালয় স্থাপন করা । 3) সরকারি অনুদান দিয়ে বিদ্যালয়গুলিকে উন্নত করে তোলা ।
- স্কুল সোসাইটি কে , কেন , কবে প্রতিষ্ঠা করেন ?
Ans: কলকাতার বিভিন্ন অঞ্চলে বিদ্যালয় গঠনের উদ্দেশ্যে 1818 খ্রিস্টাব্দে ডেভিড হেয়ারের উদ্যোগে প্রতিষ্ঠিত হয় স্কুল সোসাইটি ।
- প্রাচ্য ও পাশ্চাত্য দ্বন্দ্বের অবসান কীভাবে হয়েছিল ?
Ans: 1813 খ্রিস্টাব্দের পর থেকে প্রাচ্য – পাশ্চাত্য শিক্ষা নিয়ে যে দ্বন্দ্ব চলছিল , 1835 খ্রিস্টাব্দের মার্চ মাসে উইলিয়াম বেন্টিঙ্কের নির্দেশে মেকলের ঘোষণার দ্বারা সেই প্রাচ্য – পাশ্চাত্য দ্বন্দ্বের অবসান হয় ।
- শ্রীরামপুর ত্রয়ী কাদের বলা হয় ?
Ans: শ্রীরামপুরের খ্রিস্টান মিশনারি উইলিয়াম কেরি , উইলিয়াম ওয়ার্ড এবং মার্শম্যানকে একত্রে শ্রীরামপুর ত্রয়ী বলা হয় ।
- স্কুল বুক সোসাইটি প্রতিষ্ঠার উদ্দেশ্য কী ?
Ans: 1817 খ্রিস্টাব্দে ডেভিড হেয়ারের উদ্যোগে স্কুল বুক সোসাইটি প্রতিষ্ঠার উদ্দেশ্য ছিল – গরিব ও দুঃস্থ ছাত্রদেরবিনামূল্যে পাঠ্যপুস্তক বিতরণ করা ।
- নববিধান / নববিধান ব্রাহ্মসমাজ কী ?
Ans: 1880 খ্রিস্টাব্দে কেশবচন্দ্র সেনের নেতৃত্বে ভারতীয় ব্রাহ্ম সমাজ পরিবর্তিত হয়ে গড়ে ওঠে এই নববিধান ব্রাহ্মসমাজ ।
- কবে , কার নেতৃত্বে ব্রাক্মসমাজ গড়ে ওঠে ?
Ans: 1828 খ্রিস্টাব্দে রামমোহন রায়ের নেতৃত্বে গঠিত ব্রাহ্মসভা যা পরের বছর ব্রাহ্মসমাজে পরিবর্তিত হয় ।
- লালন ফকির কে ছিলেন ?
Ans: হিন্দু ও মুসলিম ধর্মশাস্ত্রের বিশ্লেষক তথা উনিশ শতকের বাংলার একজন বাউল সাধক ছিলেন লালন ফকির ।
- নব্যবঙ্গ আন্দোলন কী ?
Ans: হিন্দু কলেজের অধ্যক্ষ ডিরোজিও – এর নেতৃত্বে ঊনবিংশ শতকের প্রথমার্ধে ধর্মীয় , সামাজিক ও পাশ্চাত্য শিক্ষা সংক্রান্ত যে আন্দোলন হয়েছিল তা নব্যবঙ্গ আন্দোলন নামে পরিচিত ।
- নীলদর্পণ নাটক কার রচনা ? কোন বিষয়কে কেন্দ্র করে রচিত হয় ?
Ans: দীনবন্ধু মিত্র রচিত ‘ নীলদর্পণ ‘ মূলত নীলচাষিদের ওপর নীলকর সাহেবদের অকথ্য অত্যাচারের ঘটনাকে কেন্দ্র করে রচিত হয়েছিল ।
বিশ্লেষণধর্মী প্রশ্নোত্তর | মাধ্যমিক ইতিহাস – সংস্কার বৈশিষ্ট্য ও পর্যালোচনা (দ্বিতীয় অধ্যায়) প্রশ্ন ও উত্তর | Madhyamik History Question and Answer :
- বাংলায় নারীশিক্ষা বিস্তারে ড্রিঙ্কওয়াটার বিটনের ( বেথুন ) উদ্যোগ সম্পর্কে লেখো ।
অথবা , নারীশিক্ষা প্রসারে বেথুন সাহেবের অবদান কী ছিল ?
Ans: ভূমিকা ঃ বাংলায় মেয়েদের মধ্যে শিক্ষা বিস্তারে যে সমস্ত বিদেশি অগ্রণী ভূমিকা নেন , তাঁদের মধ্যে অন্যতম হলেন কাউন্সিল অব এডুকেশনের সভাপতি ড্রিঙ্কওয়াটার বিটন ।
ভারতে আগমন : ১৮৪৮ সালের এপ্রিল মাসে বড়োলাটের আইন পরিষদের সদস্য হিসেবে ভারতে আসেন বিটন বা বেথুন সাহেব ।
ভারতপ্রেম : তিনি বিদেশি হলেও ভারতীয়দের কল্যাণে নিবেদিতপ্রাণ । ছিলেন । তার এই মানসিকতার জন্য তিনি শ্বেতাঙ্গ সমাজের বিরাগভাজন হন ।
শিক্ষা বিস্তারে ভূমিকা : তিনি বাংলার পাশাপাশি এদেশে পাশ্চাত্য শিক্ষার প্রসারে জোর দেন । এজন্য ১৮৪৯ সালে হিন্দু বালিকা বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেন । পরে একটি মহিলা কলেজও স্থাপন করেন । এখন এটি বেথুন স্কুল ও বেথুন কলেজ রূপে পরিচিত ।
মূল্যায়ন : এদেশে নারীশিক্ষা প্রসারে বেথুন সাহেব চিরস্মরণীয় হয়ে আছেন ।
- এদেশে শিক্ষাবিস্তারে প্রাচ্যবাদী ও পাশ্চাত্যবাদী বিতর্ক আলোচনা করো ।
Ans: সূচনা : উনিশ শতকের ভারতে শিক্ষাবিস্তারে যে জোয়ার এসেছিল সেক্ষেত্রে ভারতীয়দের পাশাপাশি ব্রিটিশ সরকারের উদ্যোগও ছিল যথেষ্ট । ভারতে ইস্ট ইন্ডিয়া | কোম্পানি প্রথম পর্বে প্রাচ্য শিক্ষাবিস্তারের ওপরই জোর দিয়েছিল । কিন্তু পরবর্তীকালে ভারতে প্রাচ্য না পাশ্চাত্য কোন শিক্ষাবিস্তার ঘটবে তা নিয়েই শুরু হয় প্রাচ্য – পাশ্চাত্য দ্বন্দ্ব ।
1813 খ্রিস্টাব্দের সনদ আইন : ব্রিটিশ সরকার 1813 খ্রিস্টাব্দের সনদ আইন অনুসারে শিক্ষাখাতে বার্ষিক এক লক্ষ টাকা ব্যয় করার সিদ্ধান্ত নেয় । কিন্তু সেই টাকা প্রাচ্য না পাশ্চাত্য কোন খাতে ব্যয় করা হবে তা নিয়ে প্রাচ্য ও পাশ্চাত্য শিক্ষার সমর্থকদের মধ্যে শুরু হয় দ্বন্দ্ব যা প্রাচ্য – পাশ্চাত্য দ্বন্দ্ব নামে পরিচিত ।
মিশনারি ও বুদ্ধিজীবীদের মতামত : ভারতে শিক্ষাবিস্তারের ব্যাপারে খ্রি : মিশনারিরা প্রথম থেকেই ইংরেজি শিক্ষাবিস্তারের সমর্থক ছিলেন । কারণ তাঁরা মনে করতেন এর ফলে ভারতে হিন্দুরা তাদের ধর্মের অসারতা বুঝতে পারবে । আবার বুদ্ধিজীবীরা মনে করতেন ভারতে পাশ্চাত্য শিক্ষা প্রবর্তিত হলে গোঁড়া হিন্দুরা কুসংস্কার ও কুপ্রথা মুক্ত হয়ে মনুষত্ব লাভ করবে ।
প্রাচ্যবাসীদের অভিমত : দেশীয় শিক্ষার সমর্থকদের দাবি ছিল কোম্পানির শিক্ষানীতির লক্ষ্য হোক ভারতীয় ভাষা – সাহিত্য , দর্শন । তাই তাঁরা দেশীয় প্রাচ্য শিক্ষাকে সমর্থন করেছিলেন । এই প্রাচ্য শিক্ষানীতির সমর্থক ছিলেন কোলব্রুক , স্যার প্রিন্সেপ , উইলসন প্রমুখ ।
দ্বন্দ্বের অবসান : উপরোক্ত প্রাচ্য – পাশ্চাত্য দ্বন্দ্বের অবসানের জন্য অবশেষে জেনারেল কমিটি অব পাবলিক ইন্সট্রাকসনের সভাপতি লর্ড মেকলে দায়িত্ব নেন । 1835 খ্রিস্টাব্দে 2 ফেব্রুয়ারি মেকলে তাঁর রিপোর্টে পাশ্চাত্য শিক্ষাকেই সমর্থন করেন । এইভাবে প্রাচ্য – পাশ্চাত্য দ্বন্দ্বের অবসান হয় ।
- ডেভিড হেয়ার স্মরণীয় কেন ?
অথবা , পাশ্চাত্য শিক্ষাবিস্তারের ক্ষেত্রে ডেভিড হেয়ারের উদ্যোগ সম্পর্কে লেখো ।
Ans: সূচনা : ভারতের ইতিহাসে পাশ্চাত্য শিক্ষাবিস্তারে একজন অগ্রণী ব্যক্তিত্ব ছিলেন ডেভিড হেয়ার । বেসরকারি উদ্যোগে শিক্ষার প্রসারে তাঁর নিরলস ভূমিকা সর্বজনবিদিত । একজন বিদেশি ঘড়ি ব্যবসায়ী হিসেবে ভারতে এসে বাংলার মানুষের কল্যাণে বিশেষ করে শিক্ষার প্রসারে তিনি নিজেকে সঁপে দিয়েছিলেন ।
শিক্ষার প্রসারে অবদান : ঊনবিংশ শতকে ভারতে বিশেষ করে বাংলায় শিক্ষার প্রসারে ডেভিড হেয়ারের অবদান
- হিন্দু কলেজের স্থাপনা : ডেভিড হেয়ার পাশ্চাত্য শিক্ষা প্রসারের জন্য হাইড ইস্ট , রামমোহন ও রাধাকাস্তের সক্রিয় সহযোগিতায় ১৮১৭ সালে ২০ জানুয়ারি কলকাতায় হিন্দু কলেজ প্রতিষ্ঠা করেন যা বর্তমানে প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয় নামে পরিচিত ।
- ক্যালকাটা স্কুল বুক সোসাইটি প্রতিষ্ঠা : কিছু মহৎ উদ্দেশ্য সাধনের জন্য ডেভিড হেয়ার ১৮১৭ খ্রিস্টাব্দে ক্যালকাটা স্কুল বুক সোসাইটি তৈরি করেন । তার উদ্দেশ্য ছিল— → পাঠ্যপুস্তকের প্রকাশ : ইংরেজি ও প্রাচ্য ভাষায় পাঠ্য বই প্রকাশ করে তা গরিব ছাত্রদের মধ্যে বিতরণ করা ছিল স্কুল বুক সোসাইটির উদ্দেশ্য ।
- ক্যালকাটা স্কুল সোসাইটি প্রতিষ্ঠা : কলকাতা শহর ও শহরতলির স্কুলগুলির উন্নয়ন করা এবং বিভিন্ন জায়গায় নতুন স্কুল প্রতিষ্ঠার জন্য তিনি ১৮১৮ সালে ক্যালকাটা স্কুল সোসাইটি প্রতিষ্ঠা করেন । মন্তব্য : উপরের আলোচনায় স্পষ্ট , আধুনিক শিক্ষার প্রসারে তাঁর অসামান্য উদ্যোগ বাংলা তথা ভারতের ইতিহাসে এক নতুন অধ্যায়ের সূচনা করে । পরে তাঁর সম্মানে স্কুল ও রাস্তার নামকরণ হয়েছে ।
রচনাধর্মী প্রশ্নোত্তর | মাধ্যমিক ইতিহাস – সংস্কার বৈশিষ্ট্য ও পর্যালোচনা (দ্বিতীয় অধ্যায়) প্রশ্ন ও উত্তর | Madhyamik History Question and Answer :
- স্বামী বিবেকানন্দের ধর্মসংস্কারের আদর্শ ব্যাখ্যা করো ।
Ans: সূচনা : ঊনবিংশ শতকের দ্বিতীয়ার্ধে ধর্মসংস্কার আন্দোলনে অদ্বৈতবাদে বিশ্বাসী , নিখাদ দেশপ্রেমিক , নির্ভীক যৌবনের প্রতীক , Ciclonik Monk , বেদাস্তবাদী বিবেকানন্দের আদর্শ ছিল এক বৈপ্লবিক পদক্ষেপ । অদ্বৈতবাদে বিশ্বাসী স্বামী বিবেকানন্দের মতে , “ মানবসেবাই ধর্মের সর্বোচ্চ লক্ষ্য ।
বিবেকানন্দের ধর্মসংস্কার :
- সাম্যবাদ ও মানবতাবাদের আদর্শ : জাতপাতের ভেদাভেদের সম্পূর্ণ বিরোধী বিবেকানন্দের আদর্শ ছিল সাম্যবাদ । এ উদ্দেশ্যে তিনি দেশের কাছে আহ্বান জানিয়েছিলেন— “ হে ভারত ভুলিও না , নীচ জাতি , মূর্খ , দরিদ্র , অজ্ঞ , মুচি , মেথর তোমার রক্ত , তোমার ভাই । ” বিবেকানন্দ ধর্মের দ্বারা নয় মানুষের মনুষ্যত্বে বিশ্বাসী ছিলেন , যার একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক হলো মানবতাবাদ ৷
- দরিদ্রসেবা : ভারতের সুদীর্ঘ পথ পরিভ্রমণ করে বিবেকানন্দ দরিদ্র , অজ্ঞ , ভারতবাসীর মধ্যে ঈশ্বরকে প্রত্যক্ষ করেছিলেন । জীবের মধ্যে তিনি শিবকে অনুভব করে বলেছিলেন , “ যত্র জীব তত্র শিব । ”
- নব বেদান্তবাদ : বেদান্তবাদী স্বামী বিবেকানন্দ বনের বেদান্তকে ঘরে আনার কথা প্রচার করেন । জনগণের কল্যাণে তিনি বেদাস্তকে সম্পূর্ণরূপে ব্যবহারের নির্দেশ দেন যা নব বেদান্তবাদ নামে পরিচিত।
- মানুষ গড়ার ধর্মতত্ত্ব : বিবেকানন্দের ধর্ম ছিল মানুষ তৈরির ধর্ম । সমকালীন বিভিন্ন ধরনের সামাজিক , ধর্মীয় কুসংস্কার দূর করে প্রকৃত মানুষ গড়ার লক্ষ্যে মানবতাবাদকে ধর্মের স্তরে উন্নীত করতে তিনি এই মানুষ গড়ার ধর্মতত্ত্ব প্রচার করেন ।
- প্রাচ্য – পাশ্চাত্যের সমন্বয় : বিবেকানন্দ নব ভারত গঠনের উদ্দেশ্যে প্রাচ্য ও পাশ্চাত্য , প্রাচীন ও আধুনিক ভারতের জীবনাদর্শের সংমিশ্রণে এক নতুন ভারতবর্ষ গড়তে চেয়েছিলেন ।
- রামকৃষ্ণ মিশন প্রতিষ্ঠা : জাতির মধ্যে ত্রাণকার্য , শিক্ষার প্রসার , সুচিকিৎসার প্রসার এবং প্রকৃত মানুষ গড়ার উদ্দেশ্যে ১৮৯৭ সালে ৫ মে তিনি রামকৃস্ল মিশন প্রতিষ্ঠা করেন ।
- যুবসমাজের প্রতি আহ্বান : দুর্বলতা কাটিয়ে ভারতীয় যুবসমাজকে মানসিকভাবে শক্তিশালী করার ক্ষেত্রে তাদের আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন— “ উত্তিষ্ঠিত , জাগ্রত , প্রাপ্য বরান নিবোধিত ” অর্থাৎ ওঠো জাগো ও নিজের প্রাপ্য বুঝে নাও ।
- নব্যবঙ্গ বা ইয়ংবেঙ্গল আন্দোলন কী ? এই আন্দোলনের উদ্দেশ্য এ আন্দোলনের ক্রিয়া কান্ড কী ছিল ? কেন এই আন্দোলন শেষ পর্যন্ত ব্যর্থ হয়েছিল ?
Ans: নব্যবঙ্গ বা ইয়ংবেঙ্গল : ঊনবিংশ শতকের দ্বিতীয় ও তৃতীয় দশকে হিন্দু কলেজের অধ্যাপক হেনরি লুই ভিভিয়ান ডিরোজিওর নেতৃত্বে কিছু তরুণ ছাত্র পাশ্চাত্য ভাবধারার আদর্শে যুক্তিবাদ , মুক্তচিন্তা , মানসিক চিন্তা , সততার মাধ্যমে সমাজ সংস্কারে ব্রতী হয় । তারা ইয়ং বেঙ্গল বা নব্যবঙ্গ গোষ্ঠী নামে পরিচিত । তাদের পরিচালিত আন্দোলনই ছিল নব্যবঙ্গ আন্দোলন ।
আন্দোলনের উদ্দেশ্য : নব্যবঙ্গ গোষ্ঠীর প্রধান উদ্দেশ্য ছিল একদিকে হিন্দুসমাজ , খ্রিস্টধর্ম ও পাশ্চাত্য শিক্ষার প্রভাব থেকে সনাতন হিন্দু ধর্ম ও হিন্দুসমাজকে | রক্ষা করা এবং অপরদিকে পাশ্চাত্য শিক্ষার প্রসার ঘটিয়ে হিন্দুসমাজের গোঁড়ামি , কুপ্রথা ও কুসংস্কারের বিরুদ্ধে জনমত গঠন করা ।
নব্যবঙ্গ দলের কার্যকলাপ : নব্যবঙ্গীয়দের মূল আক্রমণের কারণ ছিল হিন্দুসমাজের চিরাচরিত কুপ্রথাগুলির বিরোধিতা করা । ডিরোজিওর ভাবধারায় উদ্বুদ্ধ ছাত্ররা ১৮২৮ খ্রিস্টাব্দে ‘ অ্যাকাডেমিক অ্যাসোসিয়েশন ‘ নামে এক বিতর্ক সভা প্রতিষ্ঠা করেন সামাজিক কুসংস্কার ও কুপ্রথা দূর করার জন্যে । এছাড়া পার্থেনন ও ক্যালাইডোস্কোপ পত্রিকায় তাঁরা হিন্দুসমাজের বহুবিবাহ , নারীর শিক্ষা , জুরির বিচার , সংবাদপত্রের স্বাধীনতা ও বিভিন্ন বিষয়ে লেখালেখি শুরু করেন ।
আন্দোলনের নেতৃত্ব : ডিরোজিও ছাড়াও অন্যান্য অনুগামীদের মধ্যে ছিলেন | কৃস্লমোহন বন্দ্যোপাধ্যায় , রামগোপাল ঘোষ , রাধানাথ শিকদার , রসিককৃয়মল্লিক , রামতনু লাহিড়ী প্রমুখ ।
আন্দোলনের ব্যর্থতার কারণ : ডিরোজিওর নেতৃত্বে ইয়ং বেঙ্গল আন্দোলন | সাময়িকভাবে সমাজকে ভীষণ নাড়া দিয়েছিল । তবে এই প্রভাব ছিল ক্ষণস্থায়ী । বিভিন্ন কারণে এই আন্দোলন ব্যর্থ হয় ।
প্রথমত , এই আন্দোলন ছিল পুরোপুরি শহরকেন্দ্রিক । অল্প শিক্ষিত ও গ্রামে | বসবাসকারী বিশাল সংখ্যক মানুষ আন্দোলনে যোগ দেয়নি । ছিল ।
দ্বিতীয়ত , কৃষক সমাজের দুর্দশা মোচনে নব্যবঙ্গ গোষ্ঠী পুরোপুরি উদাসীন
তৃতীয়ত , এঁরা নেতিবাচক চিন্তাভাবনা আঁকড়ে ছিলেন বলে উগ্রভাবে হিন্দু বিরোধিতার পথ বেছে নেন । এর ফলে হিন্দুসমাজ দুরে সরে যায় ।
চতুর্থত , মুসলিম সমাজের সংস্কারে নব্যবঙ্গ গোষ্ঠী উদাসীন ছিল ।
পঞ্চমত , উপযুক্ত নেতৃত্বের অভাবে আন্দোলন দীর্ঘস্থায়ী হয়নি ।
- ঊনবিংশ শতকের শিক্ষা ও সমাজ সংস্কার আন্দোলনে বিদ্যাসাগর কী ভূমিকা নিয়েছিলেন ? অথবা , উনিশ শতকের নবজাগরণে বিদ্যাসাগরের অবদান আলোচনা করো ।
Ans: ভূমিকা : ঊনবিংশ শতকের বৌদ্ধিক বিকাশ বা নবজাগরণের অন্যতম প্রাণপুরুষ ছিলেন ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর সমকালীন শিক্ষাক্ষেত্র ও সামাজিক ক্ষেত্রকে কুসংস্কারমুক্ত করে পুনর্জীবন দানের জন্য বিদ্যাসাগর স্মরণীয় হয়ে আছেন । সামাজিক কুসংস্কার রোধের পাশাপশি নারীমুক্তির জন্য নারীশিক্ষা প্রসারে বিদ্যাসাগর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেন ।
শিক্ষাসংস্কার : উনিশ শতকের বাংলাদেশে নারীশিক্ষা বিস্তারের ক্ষেত্রে বিদ্যাসাগর বিশেষ ভূমিকা পালন করেন । তাঁকে বলা হয় “ নারীশিক্ষা বিস্তারের পথিকৃৎ । ”
উদ্দেশ্য: উনিশ শতকের প্রথমদিকে বাংলায় নারীরা পুরুষের থেকে পিছিয়ে পড়েছিল । কারণ তারা ছিল নিরক্ষর । বিদ্যাসাগর বুঝেছিলেন , শিক্ষাবিস্তারের মাধ্যমেই নারীমুক্তি সম্ভব । একইসঙ্গে তিনি উপলব্ধি করেন , মেয়েরা শিক্ষিত না হলে সামাজিক সংস্কার অসম্পূর্ণ থেকে যাবে । তাই কুসংস্কারমুক্ত সমাজ গড়তে তিনি বালিকা বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার ব্রত নেন ।
সংস্কারের কর্মসূচি : ১৮৪৯ সালে বেথুন সাহেবকে হিন্দু বালিকা বিদ্যালয় গড়ে তোলায় সাহায্য করেন বিদ্যাসাগর । পরে তিনি স্কুলের সম্পাদক হন । তাঁর উদ্যোগে বাংলার চারটি জেলায় গ্রামাঞ্চলে ৩৫ টি বালিকা বিদ্যালয় গড়ে ওঠে । ব্যক্তিগত চেষ্টায় তিনি প্রতিষ্ঠা করেন মেট্রোপলিটন ইনস্টিটিউশন ( বিদ্যাসাগর কলেজ ) । বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা ছাড়াও অভিভাবকরা যাতে কন্যাসন্তানকে স্কুলে পাঠান সেজন্য প্রচারের কাজেও নেমেছিলেন বিদ্যাসাগর । এছাড়া সংস্কৃত কলেজের অধ্যক্ষ থাকাকালীন কলেজের দরজা হিন্দু ছাত্রদের জন্য উন্মুক্ত করে দেন । তিনি বাংলা বর্ণমালার পুনর্বিন্যাস করেন এবং বর্ণ পরিচয় নামে বাংলা ভাষাশিক্ষার দু’টি পুস্তক রচনা করেন । তার রচিত কথামালা , বোধোদয় বাংলা সাহিত্যের অমূল্য সম্পদ ।
সমাজ সংস্কার : ব্রাহ্মসমাজ আন্দোলনের ফলে নারীমুক্তির যে পরিবেশ তৈরি হয়েছিল তারই ফল বিদ্যাসাগরের বিধবাবিবাহ আন্দোলন ।
বিধবাবিবাহ আন্দোলন : সেসময় বাল্যকালে মেয়েদের বিয়ে দেওয়া হতো বৃদ্ধের সঙ্গে , ফলে অল্প বয়সেই তারা বিধবা হতো । বিদ্যাসাগর বিভিন্ন শাস্ত্র থেকে উদ্ধৃতি দিয়ে বিধবাবিবাহের সমর্থনে প্রচার শুরু করেন । তিনি তত্ত্ববোধিনী পত্রিকায় এবিষয়ে প্রবন্ধ লেখেন । ১৮৫৫ সালে তিনি ১০০০ ব্যক্তির স্বাক্ষর সংবলিত আবেদনপত্র সরকারকে জমা দেন । ১৮৫৬ সালের ২৬ জুলাই লর্ড ক্যানিং ‘ বিধবাবিবাহ আইন ‘ পাশ করেন । এই বছরে শ্রীশচন্দ্র বিদ্যারত্ন কালীমতী নামে এক বিধবাকে বিয়ে করেন । সেটাই কলকাতায় প্রথম বিধবাবিবাহ নিজ পুত্র নারায়ণের সঙ্গে তিনি এক বিধবার বিয়ে দেন ।
অন্যান্য সংস্কার : বহুবিবাহের বিরুদ্ধে বিদ্যাসাগর জোরদার আন্দোলন | করেন । এছাড়া গঙ্গাসাগরে সন্তান বিসর্জন , কুলীন প্রথা , অস্পৃশ্যতার বিরুদ্ধেও তিনি সোচ্চার হন ।
মূল্যায়ন : বিদ্যাসাগর সর্বার্থেই ছিলেন আধুনিক সমাজ সংস্কারক । তার এই সংস্কার আন্দোলন নারীমুক্তি আন্দোলনে গতি দিয়েছিল । একইসঙ্গে নবজাগরণেও কার্যকর ভূমিকা নিয়েছিল বিদ্যাসাগরের এই সংস্কার আন্দোলন ।
========================================================
সংস্কার : বৈশিষ্ট্য ও পর্যালোচনা (দ্বিতীয় অধ্যায়)
ব্যাখ্যামূলক প্রশ্ন (প্রতিটি প্রশ্নের মান-৮)
========================================================
(১) বহুবিকল্প ভিত্তিক প্রশ্নগুলির উত্তর দাওঃ
১.১ ‘নববিধান’ প্রতিষ্ঠা করেছিলেন –
(ক) দয়ানন্দ সরস্বতী
(খ) কেশবচন্দ্র সেন
(গ) স্বামী বিবেকানন্দ
(ঘ) মহর্ষি দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর
উত্তরঃ (খ) কেশবচন্দ্র সেন
১.২ জনশিক্ষা কমিটি গঠিত হয় –
(ক) ১৭১৩ খ্রিস্টাব্দে
(খ) ১৮১৩ খ্রিস্টাব্দে
(গ) ১৮২৩ খ্রিস্টাব্দে
(ঘ) ১৯১৩ খ্রিস্টাব্দে
উত্তরঃ (গ) ১৮২৩ খ্রিস্টাব্দে
১.৩ বামাবোধিনী পত্রিকার সম্পাদক ছিলেন –
(ক) উমেশচন্দ্র দত্ত
(খ) শিশির কুমার ঘোষ
(গ) কৃষ্ণচন্দ্র মজুমদার
(ঘ) দ্বারকানাথ বিদ্যাভূষণ
উত্তরঃ (ক) উমেশচন্দ্র দত্ত
১.৪ সতীদাহ প্রথা রদ হয় –
(ক) ১৮২৮ খ্রিস্টাব্দে
(খ) ১৮২৯ খ্রিস্টাব্দে
(গ) ১৮৩০ খ্রিস্টাব্দে
(ঘ) ১৮৫৬ খ্রিস্টাব্দে
উত্তরঃ (খ) ১৮২৯ খ্রিস্টাব্দে
১.৫ সর্বধর্মসমন্বয়ের আদর্শ প্রচার করেছিলেন –
(ক) বিজয় কৃষ্ণ গোস্বামী
(খ) স্বামী বিবেকানন্দ
(গ) শ্রীরামকৃষ্ণ
(ঘ) কেশবচন্দ্র সেন
উত্তরঃ (গ) শ্রীরামকৃষ্ণ
১.৬ নীলদর্পন নাটকের ইংরেজি অনুবাদের প্রকাশক ছিলেন –
(ক) কালীপ্রসন্ন সিংহ
(খ) মাইকেল মধুসূদন দত্ত
(গ) হরিশচন্দ্র মুখোপাধ্যায়
(ঘ) জেমস লঙ
উত্তরঃ (ঘ) জেমস লঙ
১.৭ ব্রহ্মানন্দ নামে পরিচিত ছিলেন –
(ক) দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর
(খ) কেশবচন্দ্র সেন
(গ) শিবনাথ শাস্ত্রী
(ঘ) আনন্দমোহন বসু
উত্তরঃ (খ) কেশবচন্দ্র সেন
১.৮ কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম বিএ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয় –
(ক) ১৮৫৭ খ্রিস্টাব্দে
(খ) ১৮৫৮ খ্রিস্টাব্দে
(গ) ১৮৫৯ খ্রিস্টাব্দে
(ঘ) ১৮৬০ খ্রিস্টাব্দে
উত্তরঃ (খ) ১৮৫৮ খ্রিস্টাব্দে
১.৯ গ্রামবার্তা প্রকাশিকা প্রকাশিত হতো –
(ক) যশোর থেকে
(খ) রানাঘাট থেকে
(গ) কুষ্টিয়া থেকে
(ঘ) বারাসাত থেকে
উত্তরঃ (গ) কুষ্টিয়া থেকে
১.১০ বামাবোধিনী পত্রিকার প্রধান উদ্দেশ্য ছিল –
(ক) জাতীয়তাবাদের প্রসার সাধন
(খ) নারীদের শিক্ষাদান
(গ) নারী শিক্ষার বিরোধিতা
(ঘ) ব্রিটিশ বিরোধিতা
উত্তরঃ (খ) নারীদের শিক্ষাদান
১.১১ ‘হুতোম প্যাঁচার নকশা’ গ্রন্থটি রচনা করেন –
(ক) রাধাকান্ত দেব
(খ) কৃষ্ণদাস পাল
(গ) কালীপ্রসন্ন সিংহ
(ঘ) দীনবন্ধু মিত্র
উত্তরঃ (গ) কালীপ্রসন্ন সিংহ
১.১২ ‘হিন্দু প্যাট্রিয়ট’ পত্রিকা প্রথম সম্পাদনা করেন –
(ক) হরিশচন্দ্র মুখোপাধ্যায়
(খ) গিরিশচন্দ্র ঘোষ
(গ) রসিককৃষ্ণ মল্লিক
(ঘ) বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
উত্তরঃ (খ) গিরিশচন্দ্র ঘোষ
১.১৩ হিন্দু কলেজ বর্তমানে যে নামে পরিচিত –
(ক) স্কটিশচার্চ কলেজ
(খ) প্রেসিডেন্সি কলেজ
(গ) প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়
(ঘ) সেন্ট জেভিয়ার্স
উত্তরঃ (গ) প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়
১.১৪ ক্যালকাটা স্কুল বুক সোসাইটি প্রতিষ্ঠা করেন –
(ক) রামমোহন রায়
(খ) রাধাকান্ত দেব
(গ) ডেভিড হেয়ার
(ঘ) ড্রিঙ্কওয়াটার বিটন
উত্তরঃ (গ) ডেভিড হেয়ার
১.১৫ কলকাতা মেডিকেল কলেজে প্রথম শব ব্যবচ্ছেদ করেন –
(ক) মধুসূদন গুপ্ত
(খ) মহেন্দ্রলাল সরকার
(গ) সূর্য কুমার ব্যানার্জি
(ঘ) জগদীশচন্দ্র বসু
উত্তরঃ (ক) মধুসূদন গুপ্ত
১.১৬ কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম ভারতীয় উপাচার্য ছিলেন –
(ক) জেমস উইলিয়াম কলভিল
(খ) আশুতোষ মুখোপাধ্যায়
(গ) গুরুদাস বন্দ্যোপাধ্যায়
(ঘ) বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
উত্তরঃ (গ) গুরুদাস বন্দ্যোপাধ্যায়
১.১৭ ‘গোলদিঘির গোলামখানা’ নামে পরিচিত ছিল –
(ক) হিন্দু কলেজ
(খ) সংস্কৃত কলেজ
(গ) কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়
(ঘ) কলকাতা মাদ্রাসা
উত্তরঃ (গ) কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়
১.১৮ কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম উপাচার্য ছিলেন –
(ক) স্যার এলিজা ইম্পে
(খ) উইলিয়াম কলভিল
(গ) আশুতোষ মুখোপাধ্যায়
(ঘ) লর্ড ক্যানিং
উত্তরঃ (ঘ) লর্ড ক্যানিং
১.১৯ ব্রহ্ম সমাজ প্রতিষ্ঠা করেন –
(ক) ইশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর
(খ) রাজা রামমোহন রায়
(গ) দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর
(ঘ) প্যারীচাঁদ মিত্র
উত্তরঃ (খ) রাজা রামমোহন রায়
১.২০ ব্রাহ্মসমাজ প্রতিষ্ঠা হয় –
(ক) ১৮১৩ খ্রিস্তাব্দে
(খ) ১৮২৮ খ্রিস্টাব্দে
(গ) ১৮২৯ খ্রিস্টাব্দে
(ঘ) ১৮৩২ খ্রিস্টাব্দে
উত্তরঃ (খ) ১৮২৮ খ্রিস্তাব্দে
১.২১ যে আইনের মাধ্যমে সতীদাহ প্রথা রদ করা হয় –
(ক) তিন আইন
(খ) পঞ্চদশ আইন
(গ) সপ্তদশ বিধি
(ঘ) অষ্টাদশ বিধি
উত্তরঃ (গ) সপ্তদশ বিধি
১.২২ তত্ত্ববোধিনী সভা প্রতিষ্ঠা করেন –
(ক) রাজা রামমোহন রায়
(খ) দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর
(গ) রামচন্দ্র বিদ্যাবাগীশ
(ঘ) অক্ষকুমার কুমার দত্ত
উত্তরঃ (খ) দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর
১.২৩ শিকাগো ধর্মসভায় স্বামী বিবেকানন্দ কত খ্রিস্টাব্দে যোগদান করেন?
(ক) ১৮৯০ খ্রিস্টাব্দে
(খ) ১৮৯১ খ্রিস্টাব্দে
(গ) ১৮৯২ খ্রিস্টাব্দে
(ঘ) ১৮৯৩ খ্রিস্টাব্দে
উত্তরঃ (ঘ) ১৮৯৩ খ্রিস্টাব্দে
১.২৪ “যত মত তত পথ” – উক্তিটি করেছিলেন –
(ক) রাজা রামমোহন রায়
(খ) কেশবচন্দ্র সেন
(গ) রামকৃষ্ণ পরমহংসদেব
(ঘ) স্বামী বিবেকানন্দ
উত্তরঃ (গ) রামকৃষ্ণ পরমহংসদেব
১.২৫ ‘বেঙ্গল এশিয়াটিক সোসাইটি’ প্রতিষ্ঠিত হয় –
(ক) ১৭৮০ খ্রিস্টাব্দে
(খ) ১৭৮৪ খ্রিস্টাব্দে
(গ) ১৭৮৬ খ্রিস্টাব্দে
(ঘ) ১৭৯০ খ্রিস্টাব্দে
উত্তরঃ (খ) ১৭৮৪ খ্রিস্টাব্দে
(২) অতি সংক্ষিপ্ত প্রশ্নগুলির উত্তর দাওঃ
(২.১) একথায় প্রশ্নগুলির উত্তর দাওঃ
২.১.১ নীলদর্পণ নাটকটির রচয়িতা কে?
উত্তরঃ নীলদর্পণ নাটকটির রচয়িতা হলেন দীনবন্ধু মিত্র।
২.১.২ গ্রামবার্তা প্রকাশিকা সম্পাদক কে ছিলেন?
উত্তরঃ গ্রামবার্তা প্রকাশিকা সম্পাদক ছিলেন হরিনাথ মজুমদার
২.১.৩ শ্রীরামপুর ত্রয়ী কাদের বলা হত?
উত্তরঃ উইলিয়াম কেরি মার্শম্যান ও উইলিয়াম ওয়ার্ড কে একসঙ্গে শ্রীরামপুর ত্রয়ী বলা হত।
২.১.৪ হিন্দু কলেজ কত খ্রিস্টাব্দে প্রতিষ্ঠিত হয়?
উত্তরঃ হিন্দু কলেজ ১৮১৭ খ্রিস্টাব্দে প্রতিষ্ঠিত হয়।
২.১.৫ কলকাতা মেডিকেল কলেজ কবে প্রতিষ্ঠিত হয়?
উত্তরঃ কলকাতা মেডিকেল কলেজ ১৮৩৫ খ্রিস্টাব্দে প্রতিষ্ঠিত হয়।
২.১.৬ আত্মীয় সভা কে প্রতিষ্ঠা করেন?
উত্তরঃ আত্মীয় সভা রাজা রামমোহন রায় প্রতিষ্ঠা করেন
২.১.৭ সতীদাহ নিবারণ আইন কে পাস করেন?
উত্তরঃ সতীদাহ নিবারণ আইন পাস করেন লর্ড উইলিয়াম বেন্টিঙ্ক
২.১.৮ কোন্ বছর সাধারণ ব্রাহ্মসমাজ প্রতিষ্ঠা হয়?
উত্তরঃ ১৮৭৮ খ্রিস্টাব্দে সাধারণ ব্রাহ্মসমাজ প্রতিষ্ঠা হয়।
২.১.৯ বাংলায় কোন্ ‘শতকে নবজাগরণের শতক’ বলা হয়?
উত্তরঃ উনিশ শতকে বাংলার নবজাগরণের শতক বলা হয়।
২.১.১০ উনিশ শতকে নারী জাতির বন্দনা করেছিল এমন একটি পত্রিকার নাম লেখ।
উত্তরঃ বামাবোধিনী পত্রিকা উনিশ শতকে নারী জাতির বন্দনা করেছিলেন।
২.১.১১ নীলদর্পণ নাটকটির রচয়িতা কে?
উত্তরঃ দীনবন্ধু মিত্র নীল-দর্পণ নাটকের রচয়িতা।
২.১.১২ চার্লস উড কে ছিলেন?
উত্তরঃ চার্জ উঠছিলেন ‘বোর্ড অফ কন্ট্রোল সভাপতি’ এবং ‘উডের ডেসপ্যাচ’ – এর প্রবক্তা।
২.১.১৩ ‘বর্ণপরিচয়’ ও ‘কথামালা’ গ্রন্থটি কার লেখা।
উত্তরঃ ‘বর্ণপরিচয়’ ও ‘কথামালা’ গ্রন্থ দুটি ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের লেখা।
২.১.১৪ ভারতের প্রথম আধুনিক মানুষ কাকে বলা হয়?
উত্তরঃ ভারতের প্রথম আধুনিক মানুষ রাজা রামমোহন রায়কে বলা হয়।
২.১.১৫ ডেভিড হেয়ার কে ছিলেন?
উত্তরঃ উনিশ শতকের বাংলায় পাশ্চাত্য শিক্ষা বিস্তারের ক্ষেত্রে একজন বিশিষ্ট ব্যক্তিত্ব যিনি ডেভিড হেয়ার নামে পরিচিত।
২.১.১৬ ফোর্ট উইলিয়াম কলেজ কবে প্রতিষ্ঠিত হয়?
উত্তরঃ ১৮০০ খ্রিস্টাব্দে ফোর্ট উইলিয়াম কলেজ প্রতিষ্ঠিত হয়।
২.১.১৭ ভারতে কিভাবে প্রাচ্যবাদী ও পাশ্চাত্য বাদীর দ্বন্দ্বের অবসান ঘটে?
উত্তরঃ মেকলে মিনিট – এর দ্বারা প্রাচ্যবাদী ও পাশ্চাত্য বাদী ভাবনার দ্বন্দ্বের অবসান ঘটে।
২.১.১৮ কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম উপাচার্য কে ছিলেন?
উত্তরঃ কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম উপাচার্য ছিলেন স্যার উইলিয়াম কেলভিন।
২.১.১৯ কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন প্রথম স্নাতক এর নাম লেখ।
উত্তরঃ কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম স্নাতক ছিলেন বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়।
২.১.২০ ‘নারীশিক্ষা ভান্ডার’ কে গঠন করেন?
উত্তরঃ ইশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর ভারতবর্ষের নারীশিক্ষা প্রসারের জন্য ‘নারীশিক্ষা ভান্ডার তহবিল’ নামে একটি তহবিল তৈরি করেন।
২.১.২১ ডিরোজিওর অনুগামীরা কী নামে পরিচিত?
উত্তরঃ ডিরোজিওর অনুগামী বা তার শিষ্যরা ইয়ং বেঙ্গল বা নব্য বঙ্গ নামে পরিচিত।
২.১.২২ এশিয়াটিক সোসাইটি কে প্রতিষ্ঠা করেন?
উত্তরঃ উইলিয়াম জোন্স এশিয়াটিক সোসাইটি প্রতিষ্ঠা করেন।
২.১.২৩ ‘বর্তমান ভারত’ ও ‘পরিব্রাজক’ গ্রন্থটির রচয়িতা কে?
উত্তরঃ ‘বর্তমান ভারত’ ও ‘পরিব্রাজক’ গ্রন্থটির রচয়িতা হলেন স্বামী বিবেকানন্দ।
(২.২) ঠিক বা ভুল নির্ণয় করঃ
২.২.১ নীলদর্পণ নাটকের রচয়িতা ছিলেন জেমস লং।
উত্তরঃ ভুল
২.২.২ গ্রামবার্তা প্রকাশিকা পত্রিকার প্রথম মাসিক পত্রিকা হিসেবে প্রকাশিত হতো।
উত্তরঃ ঠিক
২.২.৩ কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম মহিলা এম এ ছিলেন চন্দ্রমুখি বসু।
উত্তরঃ ঠিক
২.২.৪ শ্রীরামকৃষ্ণ রামকৃষ্ণ মিশন প্রতিষ্ঠা করেছিলেন।
উত্তরঃ ভুল
২.২.৫ নীলদর্পণ নাটকটির ইংরেজি অনুবাদ করেছিলেন মাইকেল মধুসূদন দত্ত।
উত্তরঃ ঠিক
২.২.৬ হরিনাথ মজুমদার কাঙাল হরিনাথ নামেও পরিচিত ছিলেন।
উত্তরঃ ঠিক
২.২.৭ রাজা রাধাকান্ত দেব স্কুল বুক সোসাইটির সভাপতি ছিলেন।
উত্তরঃ ঠিক
২.২.৮ আত্মীয় সভা পরবর্তীকালে ব্রাহ্মসমাজে পরিণত হয়।
উত্তরঃ ঠিক
২.২.৯ ব্রিটিশ ইন্ডিয়া সোসাইটি বিধবা বিবাহ প্রবর্তন এর বিরোধিতা করেছিল।
উত্তরঃ ভুল
২.২.১০ রাজা রামমোহন রায় বিধবা বিবাহ সমর্থন করেন।
উত্তরঃ ভুল
২.২.১১ শিকাগো ধর্ম সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয় ১৭৯৩ খ্রিস্টাব্দে।
উত্তরঃ ভুল
২.২.১২ নব্যবঙ্গ সম্প্রদায় ‘ইয়ং ক্যালকাটা’ নামেও পরিচিত ছিল।
উত্তরঃ ঠিক
(২.৩) ক স্তম্ভের সঙ্গে খ স্তম্ভ মেলাওঃ
ক স্তম্ভ খ স্তম্ভ
২.৩.১ ইয়ং বেঙ্গল (ক) স্বামী বিবেকানন্দ
২.৩.২ ব্রাহ্ম সমাজ (খ) কেশবচন্দ্র সেন
২.৩.৩ রামকৃষ্ণ মিশন (গ) লুই ভিভিয়ান ডিরোজিও
২.৩.৪ নববিধান (ঘ) রাজা রামমোহন রায়
উত্তরঃ ২.৩.১ ইয়ং বেঙ্গল – (গ) লুই ভিভিয়ান ডিরোজিও
২.৩.২ ব্রাহ্ম সমাজ – (ঘ) রাজা রামমোহন রায়
২.৩.৩ রামকৃষ্ণ মিশন – (ক) স্বামী বিবেকানন্দ
২.৩.৪ নববিধান – (খ) কেশবচন্দ্র সেন
(২.৫) নিম্ন লিখিত বিবৃতি গুলোর সঠিক ব্যাখ্যা নির্বাচন করোঃ
২.৫.১ রাজা রামমোহন রায় লর্ড আমহার্স্টকে চিঠি লিখেছিলেন।
(১) সতীদাহ প্রথা বন্ধের অনুরোধ জানিয়ে
(২) ভারতের পাশ্চাত্য শিক্ষা বিস্তারের আবেদন জানিয়ে
(৩) ভারতে সংস্কৃত শিক্ষা বিস্তারের আবেদন জানিয়ে
উত্তরঃ (২) ভারতে পাশ্চাত্য শিক্ষা বিস্তারের আবেদন জানিয়ে
২.৫.২ উনিশ শতকে বাংলার নবজাগরণ এর ব্যপ্তি ছিল খুবই সীমিত।
(১) কারণ শুধুমাত্র গ্রাম বাংলার নবজাগরণ হয়েছিল
(২) কারণ এই নবজাগরণ সীমিত ছিল শুধুমাত্র সাহিত্যের ক্ষেত্রে
(৩) কারণ এই নবজাগরণ শুধুমাত্র পাশ্চাত্য শিক্ষায় শিক্ষিত প্রগতিশীল সমাজের মধ্যে সীমিত ছিল
উত্তরঃ (৩) কারণ এই নবজাগরণ শুধুমাত্র পাশ্চাত্য শিক্ষায় শিক্ষিত প্রগতিশীল সমাজের মধ্যে সীমিত ছিল
২.৫.৩ ১৮৭২ খ্রিস্টাব্দে ইংরেজ সরকার তিন আইন পাশ করেন।
(১) এই আইন প্রণয়নের উদ্দেশ্য ছিল হিন্দু মুসলমান খ্রিস্টান সমাজকে ঐক্যবদ্ধ করা
(২) এই আইন প্রণয়নের উদ্দেশ্য ছিল জনগণের অর্থনৈতিক সামাজিক সাংস্কৃতিক উন্নতি সাধন করা
(৩) এই আইন প্রণয়নের উদ্দেশ্য ছিল বাল্যবিবাহ ও বহুবিবাহ নিষিদ্ধ করা এবং বিধবা বিবাহ আইন সিদ্ধ করা।
উত্তরঃ (৩) এই আইন প্রণয়নের উদ্দেশ্য ছিল বাল্যবিবাহ বহুবিবাহ নিষিদ্ধ করা এবং বিধবা বিবাহ আইন সিদ্ধ করা।
২.৫.৪ জেমস লং-কে জেল ও জরিমানার শাস্তি ভোগ করতে হয়েছিল।
(১) জেমস লং সরকারি নথিপত্র বিক্রয় করেছিলেন
(২) তিনি নীলদর্পণ নাটক ইংরেজিতে প্রকাশ করেছিলেন
(৩) তিনি নীল বিদ্রোহ কে সমর্থন করেছিলেন
উত্তরঃ (২) তিনি নীলদর্পণ নাটক ইংরেজিতে প্রকাশ করেছিলেন।
২.৫.৫ উডের ডেসপ্যাচ হলো ভারতের শিক্ষা ক্ষেত্রে ম্যাগনাকার্টা।
(১) ইংল্যান্ডের অনুকরণে ভারতের শিক্ষা ব্যবস্থা প্রবর্তিত হয়
(২) ভারতীয়দের শিক্ষার সব দায়িত্ব সরকার গ্রহণ করে।
(৩) প্রাথমিক থেকে উচ্চ শিক্ষা পর্যন্ত শিক্ষা ব্যবস্থায় সামঞ্জস্য প্রতিষ্ঠা করা হয়
উত্তরঃ (৩) প্রাথমিক থেকে উচ্চ শিক্ষা পর্যন্ত শিক্ষা ব্যবস্থায় সামঞ্জস্য প্রতিষ্ঠা করা হয়।
২.৫.৬ ভারতে বেশকিছু সমাজ সংস্কারক ব্রিটিশ শাসন কে উন্নতির সোপান বলে মনে করতেন।
(১) এই সমাজ সংস্কারের ঔপনিবেশিক ভাবনার প্রতি আস্থাশীল ছিলেন
(২) এদের মনে হয়েছিল ব্রিটিশের শিক্ষা-সংস্কৃতি হল আধুনিক
(৩) তারা মনে করতেন যে ইংরেজদের সাহায্যেই দেশের উন্নতি সাধন হবে।
উত্তরঃ (৩) তারা মনে করতেন যে ইংরেজদের সাহায্যে দেশের উন্নতি সাধন হবে।
২.৫.৭ মধুসূদন গুপ্ত জাতিচ্যুত হন।
(১) সামাজিক কুসংস্কার কে দূরে সরিয়ে রেখে তিনি প্রথম শব ব্যবচ্ছেদ করেন
(২) তিনি প্রথম সমুদ্র পার করে ইংল্যান্ডে যাত্রা করেন
(৩) জাতিভেদ প্রথার বিরুদ্ধে তিনি রুখে দাঁড়ান
উত্তরঃ (১) সামাজিক কুসংস্কার থেকে দূরে সরিয়ে রেখে তিনি প্রথম শব ব্যবচ্ছেদ করেন।
২.৫.৮ হেনরি লুই ভিভিয়ান ডিরোজিওকে হিন্দু কলেজ ত্যাগ করতে হয় –
(১) তার মারাত্মক অসুস্থ তার জন্য
(২) ছাত্রদের মধ্যে প্রগতিশীল মনোভাবের সঞ্চারের জন্য
(৩) শিক্ষকতায় সাফল্য অর্জন করতে না পারার জন্য
উত্তরঃ (২) ছাত্রদের মধ্যে প্রগতিশীল মনোভাবের সঞ্চারের জন্য।
২.৫.৯ শ্রীরামকৃষ্ণদেব সর্বধর্মসমন্বয় সাধন করেন।
(১) সকল ধর্মের গঠনগত সমস্যা সমাধান করা ছিল তার উদ্দেশ্য
(২) সকল ধর্মের বিশেষ আদর্শের সমন্বয় করা ছিল তার উদ্দেশ্য
(৩) সকল ধর্মের পৃথক পৃথক আদর্শ চিহ্নিত করা ছিল তার উদ্দেশ্য
উত্তরঃ (২) সকল ধর্মের বিশেষ আদর্শের সমন্বয় করা ছিল তার উদ্দেশ্য
(৩) নিচের সংক্ষিপ্ত প্রশ্নগুলির উত্তর দাওঃ
প্রশ্নঃ হিন্দু প্যাট্রিয়ট বিখ্যাত কেন?
উত্তরঃ হিন্দু প্যাট্রিয়ট পত্রিকা ইংরেজ শাসন-শোষণের সমালোচনা ও বিরোধিতা করে এবং নীলচাষিদের পক্ষ সমর্থন করে জাতীয়তাবাদী পত্রিকার মর্যাদা লাভ করে।
প্রশ্নঃ বামাবোধিনী পত্রিকার উদ্দেশ্য কী ছিল?
উত্তরঃ ১৮৬৩ খ্রিস্টাব্দে প্রকাশিত এই পত্রিকার উদ্দেশ্য ছিল সমকালীন সমাজের অস্ত্র পুরস্থ মহিলাদের শিক্ষাদানের মাধ্যমে পুরুষ সমাজের শাসনের হাত থেকে মুক্তিদান করা।
প্রশ্নঃ দেশপ্রেমের উন্মেষে নীলদর্পণ নাটকের কী ভূমিকা ছিল?
উত্তরঃ দীনবন্ধু মিত্র তাঁর নীলদর্পণ নাটকে অনিচ্ছুক নীলচাষিদের ওপর নীলকরদের বা ইংরেজদের অত্যাচারের বাস্তব চিত্র তুলে ধরেছিলেন।
প্রশ্নঃ মেকলে মিনিট কী?
অথবা,
মেকলে মিনিট বলতে কী বোঝো?
উত্তরঃ ইংরেজি তথা পাশ্চাত্য শিক্ষার সমর্থনে উইলিয়াম বেন্টিঙ্কের আইন সচিব মেকলে 1835 খ্রিস্টাব্দে যে প্রতিবেদন পেশ করেন, তা মেকলে মিনিট নামে খ্যাত।
প্রশ্নঃ জনশিক্ষা কমিটি কেন তৈরি হয়েছিল?
উত্তরঃ লর্ড হেস্টিংসের আমলে ১৮২৩ খ্রিস্টাব্দে বাংলা প্রদেশের শিক্ষাব্যবস্থার প্রসার ও উন্নয়নের উদ্দেশ্যে জনশিক্ষা কমিটি বা জি সি পি আই হয়েছিল।
প্রশ্নঃ গ্রামবার্তাপ্রকাশিকায় সমাজের কোন দিকগুলি তুলে ধরা হয়েছে?
উত্তরঃ সমকালীন সমাজের জমিদার, নীলকর, মহাজন, চাষি প্রভৃতি সম্প্রদায়ের উল্লেখ রয়েছে। কাঙাল হরিনাথ সম্পাদিত এই পত্রিকায় সুদখোর মহাজন, অত্যাচারী নীলকর এবং জমিদার শ্রেণির শোষণের কথা তুলে ধরা হয়েছে।
প্রশ্নঃ ভারতে নারীশিক্ষা বিস্তারে বিদ্যাসাগরের অবদান কী ছিল?
উত্তরঃ দক্ষিণবঙ্গের বিদ্যালয় পরিদর্শকের সরকারি পদে থাকার সুবাদে তিনি ৪০টি বালিকা বিদ্যালয় এবং ১০০টি বাংলা স্কুল প্রতিষ্ঠা করেন।
প্রশ্নঃ উডের ডেসপ্যাচ কী?
অথবা,
পাশ্চাত্য শিক্ষা প্রসারের ম্যাগনা কার্টা বলতে কী বোঝো?
উত্তরঃ বোর্ড অব কন্ট্রোলের সভাপতি চার্লস উড ১৮৫৪ খ্রিস্টাব্দে শিক্ষা সংক্রান্ত যে নির্দেশনামা ঘোষণা করেন তা পাশ্চাত্য শিক্ষাবিস্তারের ‘ম্যাগনা কার্টা’ বা উডের ডেসপ্যাচ নামে পরিচিত।
উডের ডেসপ্যাচের সুপারিশগুলি হল –
(১) কলকাতা, বোম্বাই, মাদ্রাজে বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন করা।
(২) পৃথক শিক্ষা দপ্তর ও শিক্ষক শিক্ষন বিদ্যালয় স্থাপন করা।
(৩) সরকারি অনুদান দিয়ে বিদ্যালয়গুলিকে উন্নত করে তোলা।
প্রশ্নঃ বাংলার নারীশিক্ষা বিস্তারে রাজা রাধাকান্ত দেবের ভূমিকা বিশ্লেষণ করো।
উত্তরঃ রাজা রাধাকান্ত দেব নিজে সংস্কৃত পণ্ডিত হয়েও জাতির নৈতিক চরিত্র ও সামাজিক সুখ বৃদ্ধির উদ্দেশ্যে নারীদের মধ্যে শিক্ষাবিস্তারের উদ্দেশ্যে ক্যালকাটা ফিমেল জুভেনাইল সোসাইটি প্রতিষ্ঠায় সাহায্য করেছিলেন।
প্রশ্নঃ প্রাচ্য ও পাশ্চাত্য দ্বন্দ্বের অবসান কীভাবে হয়েছিল?
উত্তরঃ ১৮১৩ খ্রিস্টাব্দের পর থেকে প্রাচ্য–পাশ্চাত্য শিক্ষা নিয়ে যে দ্বন্দ্ব চলছিল, ১৮৩৫ খ্রিস্টাব্দের মার্চ মাসে উইলিয়াম বেন্টিঙ্কের নির্দেশে মেকলের ঘোষণার দ্বারা সেই প্রাচ্য–পাশ্চাত্য দ্বন্দ্বের অবসান হয়।
প্রশ্নঃ শ্রীরামপুর ত্রয়ী কাদের বলা হয়?
উত্তরঃ শ্রীরামপুরের খ্রিস্টান মিশনারি উইলিয়াম কেরি, উইলিয়াম ওয়ার্ড এবং মার্শম্যানকে একত্রে শ্রীরামপুর ত্রয়ী বলা হয়।
প্রশ্নঃ ডঃ মধুসূদন গুপ্ত বিখ্যাত কেন?
উত্তরঃ মধুসূদন গুপ্ত ছিলেন কলকাতা সংস্কৃত কলেজের ছাত্র। তিনি ১৮৩৬ খ্রিস্টাব্দের ১০ জানুয়ারি হিন্দু কুসংস্কার উপেক্ষা করে নিজ হাতে শব ব্যবচ্ছেদ করেন।
প্রশ্নঃ স্কুল বুক সোসাইটি প্রতিষ্ঠার উদ্দেশ্য কী?
উত্তরঃ ১৮১৭ খ্রিস্টাব্দে ডেভিড হেয়ারের উদ্যোগে স্কুল বুক সোসাইটি প্রতিষ্ঠার উদ্দেশ্য ছিল – গরিব ও দুঃস্থ ছাত্রদেরবিনামূল্যে পাঠ্যপুস্তক বিতরণ করা।
প্রশ্নঃ ডিরোজিও কেন কর্মচ্যুত হন?
উত্তরঃ ডিরোজিওর প্রভাবে তার ছাত্র সম্প্রদায় প্রকাশ্যে হিন্দুধর্মের আচার-ব্যবহার লঙ্ঘন করতে থাকলে হিন্দুসমাজের রক্ষণশীল সমাজপতিরা কলেজ কর্তৃপক্ষের কাছে ডিরোজিওর বিরুদ্ধে নালিশ জানান এবং এর ফলে ডিরোজিও কর্মচ্যুত হয়েছিল।
প্রশ্নঃ কবে, কার নেতৃত্বে ব্রাক্মসমাজ গড়ে ওঠে?
উত্তরঃ ১৮২৮ খ্রিস্টাব্দে রামমোহন রায়ের নেতৃত্বে গঠিত ব্রাহ্মসভা যা পরের বছর ব্রাহ্মসমাজে পরিবর্তিত হয়।
প্রশ্নঃ নববিধান ব্রাহ্মসমাজ কী?
উত্তরঃ ১৮৮০ খ্রিস্টাব্দে কেশবচন্দ্র সেনের নেতৃত্বে ভারতীয় ব্রাহ্ম সমাজ পরিবর্তিত হয়ে গড়ে ওঠে এই নববিধান ব্রাহ্মসমাজ।
প্রশ্নঃ লালন ফকির কে ছিলেন?
উত্তরঃ হিন্দু ও মুসলিম ধর্মশাস্ত্রের বিশ্লেষক তথা উনিশ শতকের বাংলার একজন বাউল সাধক ছিলেন লালন ফকির।
প্রশ্নঃ ভারতীয় ব্রাহ্মসমাজ বিভক্ত হল কেন?
উত্তরঃ কয়েকটি বিষয়কে কেন্দ্র করে শিবনাথ শাস্ত্রী, আনন্দমোহন বসু প্রমুখ নবীন ব্রাহ্মনেতার সঙ্গে কেশবচন্দ্র সেনের মতের পার্থক্য দেখা যায়। যার ফল স্বরূপ ভারতীয় ব্রাহ্মসমাজ বিভক্ত হয়েছিল।
প্রশ্নঃ নব্যবঙ্গ আন্দোলন কী?
উত্তরঃ হিন্দু কলেজের অধ্যক্ষ ডিরোজিও–এর নেতৃত্বে ঊনবিংশ শতকের প্রথমার্ধে ধর্মীয়, সামাজিক ও পাশ্চাত্য শিক্ষা সংক্রান্ত যে আন্দোলন হয়েছিল তা নব্যবঙ্গ আন্দোলন নামে পরিচিত।
প্রশ্নঃ নব্য বেদান্ত কী?
উত্তরঃ বিবেকানন্দ বেদান্তের নতুন যে ব্যাখ্যা দেন তা নব্যবেদান্ত নামে পরিচিত। অদ্বৈতবাদে বিশ্বাসী বিবেকানন্দ বনের বেদান্তকে ঘরে আনার কথা প্রচার করেন এবং বেদান্তকে মানুষের কল্যাণে কাজে ব্যবহারের কথা বলেন।
প্রশ্নঃ নীলদর্পণ নাটক কার রচনা? কোন বিষয়কে কেন্দ্র করে রচিত হয়?
উত্তরঃ দীনবন্ধু মিত্র রচিত ‘নীলদর্পণ’ মূলত নীলচাষিদের ওপর নীলকর সাহেবদের অকথ্য অত্যাচারের ঘটনাকে কেন্দ্র করে রচিত হয়েছিল।
প্রশ্নঃ বাংলার নবজাগরণ কী?
উত্তরঃ উনিশ শতকে বাংলায় প্রাচ্য ও পাশ্চাত্য আদর্শবাদের ভিত্তিতে সমাজ ও সংস্কৃতিতে এক নবচেতনার উন্মেষ ঘটে, যা নবজাগরণ নামে পরিচিত।
(৪) নিচের বিশ্লেষণধর্মী প্রশ্নগুলির উত্তর দাওঃ
প্রশ্নঃ বাংলায় পাশ্চাত্য শিক্ষাবিস্তারে রাজা রামমোহন রায়ের ভূমিকার উল্লেখ করো।
উত্তরঃ উনিশ শতকে বাংলায় আধুনিক পাশ্চাত্য শিক্ষার প্রসারে রাজা রামমোহন রায় বিশেষ ভূমিকা নিয়েছিলেন। তিনি যে কাজগুলি করেছিলেন তা হল –
(১) বিভিন্ন বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠাঃ পাশ্চাত্য শিক্ষা বিস্তারের উদ্দেশ্যে রামমোহন রায় ১৮১৫ খ্রিস্টাব্দে কলকাতায় অ্যাংলো-হিন্দু স্কুল নামে একটি ইংরেজি বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেন।
(২) বেদান্ত কলেজ প্রতিষ্ঠাঃ শিক্ষার্থীদের মন থেকে নানা কুসংস্কার দূর করে পাশ্চাত্য সমাজবিজ্ঞান ও পদার্থবিদ্যা শিক্ষাদানের উদ্দেশ্যে রামমোহন রায় ১৮২৬ খ্রিঃ বেদান্ত কলেজ প্রতিষ্ঠা করেন।
(৩) সরকারকে পত্রঃ ভারতীয়দের শিক্ষার জন্য এক লক্ষ টাকা ব্যয়ের সিন্ধান্ত নিলে রামমোহন ১৮২৩ খ্রিঃ আধুনিক বিজ্ঞান ও ইংরেজি শিক্ষা প্রসারের জন্য ব্যয় করার কথা বলেন।
(৪) পাশ্চাত্য শিক্ষার প্রসারেঃ রামমোহন পাশ্চাত্য গণিত, দর্শন, রসায়ণ, অস্থিবিদ্যা প্রভৃতি শিক্ষার সপক্ষে প্রচার চালান।
প্রশ্নঃ বাংলায় নারীশিক্ষা বিস্তারে ড্রিঙ্কওয়াটার বিটনের (বেথুন) উদ্যোগ সম্পর্কে লেখো।
অথবা,
নারীশিক্ষা প্রসারে বেথুন সাহেবের অবদান কী ছিল?
উত্তরঃ
ভূমিকাঃ বাংলায় মেয়েদের মধ্যে শিক্ষা বিস্তারে যে সমস্ত বিদেশি অগ্রণী ভূমিকা নেন, তাঁদের মধ্যে অন্যতম হলেন কাউন্সিল অব এডুকেশনের সভাপতি ড্রিঙ্কওয়াটার বিটন।
ভারতে আগমনঃ ১৮৪৮ সালের এপ্রিল মাসে বড়োলাটের আইন পরিষদের সদস্য হিসেবে ভারতে আসেন বিটন বা বেথুন সাহেব।
ভারতপ্রেমঃ তিনি বিদেশি হলেও ভারতীয়দের কল্যাণে নিবেদিতপ্রাণ ছিলেন। তার এই মানসিকতার জন্য তিনি শ্বেতাঙ্গ সমাজের বিরাগভাজন হন।
শিক্ষা বিস্তারে ভূমিকাঃ তিনি বাংলার পাশাপাশি এদেশে পাশ্চাত্য শিক্ষার প্রসারে জোর দেন। এজন্য ১৮৪৯ সালে হিন্দু বালিকা বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেন। পরে একটি মহিলা কলেজও স্থাপন করেন। এখন এটি বেথুন স্কুল ও বেথুন কলেজ রূপে পরিচিত।
প্রশ্নঃ এদেশে শিক্ষাবিস্তারে প্রাচ্যবাদী ও পাশ্চাত্যবাদী বিতর্ক আলোচনা করো।
উত্তরঃ উনিশ শতকের ভারতে শিক্ষাবিস্তারে যে জোয়ার এসেছিল সেক্ষেত্রে ভারতীয়দের পাশাপাশি ব্রিটিশ সরকারের উদ্যোগও ছিল যথেষ্ট। ভারতে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি প্রথম পর্বে প্রাচ্য শিক্ষাবিস্তারের ওপরই জোর দিয়েছিল। কিন্তু পরবর্তীকালে ভারতে প্রাচ্য না পাশ্চাত্য কোন শিক্ষাবিস্তার ঘটবে তা নিয়েই শুরু হয় প্রাচ্য–পাশ্চাত্য দ্বন্দ্ব।
১৮১৩ খ্রিস্টাব্দের সনদ আইনঃ ব্রিটিশ সরকার ১৮১৩ খ্রিস্টাব্দের সনদ আইন অনুসারে শিক্ষাখাতে বার্ষিক এক লক্ষ টাকা ব্যয় করার সিদ্ধান্ত নেয়। কিন্তু সেই টাকা প্রাচ্য না পাশ্চাত্য কোন খাতে ব্যয় করা হবে তা নিয়ে প্রাচ্য ও পাশ্চাত্য শিক্ষার সমর্থকদের মধ্যে শুরু হয় দ্বন্দ্ব যা প্রাচ্য–পাশ্চাত্য দ্বন্দ্ব নামে পরিচিত।
মিশনারি ও বুদ্ধিজীবীদের মতামতঃ ভারতে শিক্ষাবিস্তারের ব্যাপারে খ্রিঃ মিশনারিরা প্রথম থেকেই ইংরেজি শিক্ষাবিস্তারের সমর্থক ছিলেন। কারণ তাঁরা মনে করতেন এর ফলে ভারতে হিন্দুরা তাদের ধর্মের অসারতা বুঝতে পারবে। আবার বুদ্ধিজীবীরা মনে করতেন ভারতে পাশ্চাত্য শিক্ষা প্রবর্তিত হলে গোঁড়া হিন্দুরা কুসংস্কার ও কুপ্রথা মুক্ত হয়ে মনুষত্ব লাভ করবে।
প্রাচ্যবাসীদের অভিমতঃ দেশীয় শিক্ষার সমর্থকদের দাবি ছিল কোম্পানির শিক্ষানীতির লক্ষ্য হোক ভারতীয় ভাষা–সাহিত্য, দর্শন। তাই তাঁরা দেশীয় প্রাচ্য শিক্ষাকে সমর্থন করেছিলেন। এই প্রাচ্য শিক্ষানীতির সমর্থক ছিলেন কোলব্রুক, স্যার প্রিন্সেপ, উইলসন প্রমুখ।
দ্বন্দ্বের অবসানঃ উপরোক্ত প্রাচ্য–পাশ্চাত্য দ্বন্দ্বের অবসানের জন্য অবশেষে জেনারেল কমিটি অব পাবলিক ইন্সট্রাকসনের সভাপতি লর্ড মেকলে দায়িত্ব নেন। ১৮৩৫ খ্রিস্টাব্দে ২ ফেব্রুয়ারি মেকলে তাঁর রিপোর্টে পাশ্চাত্য শিক্ষাকেই সমর্থন করেন। এইভাবে প্রাচ্য–পাশ্চাত্য দ্বন্দ্বের অবসান হয়।
প্রশ্নঃ ডেভিড হেয়ার স্মরণীয় কেন?
অথবা,
পাশ্চাত্য শিক্ষাবিস্তারের ক্ষেত্রে ডেভিড হেয়ারের উদ্যোগ সম্পর্কে লেখো।
উত্তরঃ ভারতের ইতিহাসে পাশ্চাত্য শিক্ষাবিস্তারে একজন অগ্রণী ব্যক্তিত্ব ছিলেন ডেভিড হেয়ার। বেসরকারি উদ্যোগে শিক্ষার প্রসারে তাঁর নিরলস ভূমিকা সর্বজনবিদিত। একজন বিদেশি ঘড়ি ব্যবসায়ী হিসেবে ভারতে এসে বাংলার মানুষের কল্যাণে বিশেষ করে শিক্ষার প্রসারে তিনি নিজেকে সঁপে দিয়েছিলেন।
শিক্ষার প্রসারে অবদানঃ ঊনবিংশ শতকে ভারতে বিশেষ করে বাংলায় শিক্ষার প্রসারে ডেভিড হেয়ারের অবদান
হিন্দু কলেজের স্থাপনাঃ ডেভিড হেয়ার পাশ্চাত্য শিক্ষা প্রসারের জন্য হাইড ইস্ট, রামমোহন ও রাধাকাস্তের সক্রিয় সহযোগিতায় ১৮১৭ সালে ২০ জানুয়ারি কলকাতায় হিন্দু কলেজ প্রতিষ্ঠা করেন যা বর্তমানে প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয় নামে পরিচিত।
ক্যালকাটা স্কুল বুক সোসাইটি প্রতিষ্ঠাঃ কিছু মহৎ উদ্দেশ্য সাধনের জন্য ডেভিড হেয়ার ১৮১৭ খ্রিস্টাব্দে ক্যালকাটা স্কুল বুক সোসাইটি তৈরি করেন। তার উদ্দেশ্য ছিল –
পাঠ্যপুস্তকের প্রকাশঃ ইংরেজি ও প্রাচ্য ভাষায় পাঠ্য বই প্রকাশ করে তা গরিব ছাত্রদের মধ্যে বিতরণ করা ছিল স্কুল বুক সোসাইটির উদ্দেশ্য।
ক্যালকাটা স্কুল সোসাইটি প্রতিষ্ঠাঃ কলকাতা শহর ও শহরতলির স্কুলগুলির উন্নয়ন করা এবং বিভিন্ন জায়গায় নতুন স্কুল প্রতিষ্ঠার জন্য তিনি ১৮১৮ সালে ক্যালকাটা স্কুল সোসাইটি প্রতিষ্ঠা করেন।
মূল্যায়নঃ উপরের আলোচনায় স্পষ্ট, আধুনিক শিক্ষার প্রসারে তাঁর অসামান্য উদ্যোগ বাংলা তথা ভারতের ইতিহাসে এক নতুন অধ্যায়ের সূচনা করে। পরে তাঁর সম্মানে স্কুল ও রাস্তার নামকরণ হয়েছে।
প্রশ্নঃ বিজয়কৃষ্ণ গোস্বামী সমর্কে যা জানো লেখো।
উত্তরঃ বিজয়কৃষ্ণ গোস্বামী ছিলেন ঊনিশ শতকের বাংলার একজন সাধক ও ধর্মসংস্কারক। তিনি নদিয়া জেলার দহকুল গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি শান্তিপুরে গোবিন্দ গোস্বামীর টোলে প্রাথমিক শিক্ষা করে কলকাতায় সংস্কৃত কলেজে ভর্তি হন।
সংস্কৃত কলেজে পড়াশোনার সময় বিজয়কৃষ্ণ গোস্বামী ব্রাহ্মধর্মের প্রতি আকৃষ্ট হয়ে ব্রাহ্মসমাজে যোগ দেন। এরপর ব্রাহ্মধর্ম প্রচারের উদ্দেশ্যে তিনি দীর্ঘ ২৫ বছর ভারতের বিভিন্ন স্থানে ভ্রমন করেন। কিছুদিন পর সাধারণ ব্রাহ্মসমাজের সঙ্গে তাঁর মতভেদ দেখা দিলে তিনি ব্রাহ্মসমাজের আচার্যের পদ থেকে বিতাড়িত হন।
তিনি স্ত্রীশিক্ষা ও নারী জাতির উন্নতির জন্য চেষ্টা চালান। পরবর্তীকালে শ্রীরামকৃষ্ণ ও ত্রৈলঙ্গস্বামীর সর্বধর্মসমন্বয় এবং সাকার ব্রহ্মের আদর্শে অণুপ্রানিত হয়ে মূর্তিপূজাকে সমর্থন করেন।
প্রশ্নঃ স্বামী বিবেকানন্দের ধর্মসংস্কারের আদর্শ ব্যাখ্যা করো।
উত্তরঃ ঊনবিংশ শতকের দ্বিতীয়ার্ধে ধর্মসংস্কার আন্দোলনে অদ্বৈতবাদে বিশ্বাসী, নিখাদ দেশপ্রেমিক, নির্ভীক যৌবনের প্রতীক, বেদাস্তবাদী বিবেকানন্দের আদর্শ ছিল এক বৈপ্লবিক পদক্ষেপ। অদ্বৈতবাদে বিশ্বাসী স্বামী বিবেকানন্দের মতে, “মানবসেবাই ধর্মের সর্বোচ্চ লক্ষ্য”।
: বিবেকানন্দের ধর্মসংস্কার :
সাম্যবাদ ও মানবতাবাদের আদর্শঃ জাতপাতের ভেদাভেদের সম্পূর্ণ বিরোধী বিবেকানন্দের আদর্শ ছিল সাম্যবাদ। এ উদ্দেশ্যে তিনি দেশের কাছে আহ্বান জানিয়েছিলেন – “হে ভারত ভুলিও না, নীচ জাতি, মূর্খ, দরিদ্র, অজ্ঞ, মুচি, মেথর তোমার রক্ত, তোমার ভাই।” বিবেকানন্দ ধর্মের দ্বারা নয় মানুষের মনুষ্যত্বে বিশ্বাসী ছিলেন, যার একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক হলো মানবতাবাদ।
নব বেদান্তবাদঃ বেদান্তবাদী স্বামী বিবেকানন্দ বনের বেদান্তকে ঘরে আনার কথা প্রচার করেন। জনগণের কল্যাণে তিনি বেদাস্তকে সম্পূর্ণরূপে ব্যবহারের নির্দেশ দেন যা নব বেদান্তবাদ নামে পরিচিত।
দরিদ্রসেবাঃ ভারতের সুদীর্ঘ পথ পরিভ্রমণ করে বিবেকানন্দ দরিদ্র, অজ্ঞ, ভারতবাসীর মধ্যে ঈশ্বরকে প্রত্যক্ষ করেছিলেন। জীবের মধ্যে তিনি শিবকে অনুভব করে বলেছিলেন, “যত্র জীব তত্র শিব।”
মানুষ গড়ার ধর্মতত্ত্বঃ বিবেকানন্দের ধর্ম ছিল মানুষ তৈরির ধর্ম। সমকালীন বিভিন্ন ধরনের সামাজিক, ধর্মীয় কুসংস্কার দূর করে প্রকৃত মানুষ গড়ার লক্ষ্যে মানবতাবাদকে ধর্মের স্তরে উন্নীত করতে তিনি এই মানুষ গড়ার ধর্মতত্ত্ব প্রচার করেন।
যুবসমাজের প্রতি আহ্বানঃ দুর্বলতা কাটিয়ে ভারতীয় যুবসমাজকে মানসিকভাবে শক্তিশালী করার ক্ষেত্রে তাদের আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন – “উত্তিষ্ঠিত, জাগ্রত, প্রাপ্য বরান নিবোধিত” অর্থাৎ ওঠো জাগো ও নিজের প্রাপ্য বুঝে নাও।
প্রাচ্য–পাশ্চাত্যের সমন্বয়ঃ বিবেকানন্দ নব ভারত গঠনের উদ্দেশ্যে প্রাচ্য ও পাশ্চাত্য, প্রাচীন ও আধুনিক ভারতের জীবনাদর্শের সংমিশ্রণে এক নতুন ভারতবর্ষ গড়তে চেয়েছিলেন।
রামকৃষ্ণ মিশন প্রতিষ্ঠাঃ জাতির মধ্যে ত্রাণকার্য, শিক্ষার প্রসার, সুচিকিৎসার প্রসার এবং প্রকৃত মানুষ গড়ার উদ্দেশ্যে ১৮৯৭ সালে ৫ মে তিনি রামকৃস্ল মিশন প্রতিষ্ঠা করেন।
(৫) নিচের রচনাধর্মী প্রশ্নগুলির উত্তর দাওঃ
প্রশ্নঃ নব্যবঙ্গ বা ইয়ংবেঙ্গল আন্দোলন কী? এই আন্দোলনের উদ্দেশ্য এই আন্দোলনের ক্রিয়া কান্ড কী ছিল? কেন এই আন্দোলন শেষ পর্যন্ত ব্যর্থ হয়েছিল?
উত্তরঃ ঊনবিংশ শতকের দ্বিতীয় ও তৃতীয় দশকে হিন্দু কলেজের অধ্যাপক হেনরি লুই ভিভিয়ান ডিরোজিওর নেতৃত্বে কিছু তরুণ ছাত্র পাশ্চাত্য ভাবধারার আদর্শে যুক্তিবাদ, মুক্তচিন্তা, মানসিক চিন্তা, সততার মাধ্যমে সমাজ সংস্কারে ব্রতী হয়। তারা ইয়ং বেঙ্গল বা নব্যবঙ্গ গোষ্ঠী নামে পরিচিত। তাদের পরিচালিত আন্দোলনই ছিল নব্যবঙ্গ আন্দোলন।
আন্দোলনের উদ্দেশ্যঃ নব্যবঙ্গ গোষ্ঠীর প্রধান উদ্দেশ্য ছিল একদিকে হিন্দুসমাজ, খ্রিস্টধর্ম ও পাশ্চাত্য শিক্ষার প্রভাব থেকে সনাতন হিন্দু ধর্ম ও হিন্দুসমাজকে। রক্ষা করা এবং অপরদিকে পাশ্চাত্য শিক্ষার প্রসার ঘটিয়ে হিন্দুসমাজের গোঁড়ামি, কুপ্রথা ও কুসংস্কারের বিরুদ্ধে জনমত গঠন করা।
নব্যবঙ্গ দলের কার্যকলাপঃ নব্যবঙ্গীয়দের মূল আক্রমণের কারণ ছিল হিন্দুসমাজের চিরাচরিত কুপ্রথাগুলির বিরোধিতা করা। ডিরোজিওর ভাবধারায় উদ্বুদ্ধ ছাত্ররা ১৮২৮ খ্রিস্টাব্দে ‘অ্যাকাডেমিক অ্যাসোসিয়েশন’ নামে এক বিতর্ক সভা প্রতিষ্ঠা করেন সামাজিক কুসংস্কার ও কুপ্রথা দূর করার জন্যে। এছাড়া পার্থেনন ও ক্যালাইডোস্কোপ পত্রিকায় তাঁরা হিন্দুসমাজের বহুবিবাহ, নারীর শিক্ষা, জুরির বিচার, সংবাদপত্রের স্বাধীনতা ও বিভিন্ন বিষয়ে লেখালেখি শুরু করেন।
আন্দোলনের নেতৃত্বঃ ডিরোজিও ছাড়াও অন্যান্য অনুগামীদের মধ্যে ছিলেন। কৃস্লমোহন বন্দ্যোপাধ্যায়, রামগোপাল ঘোষ, রাধানাথ শিকদার, রসিককৃয়মল্লিক, রামতনু লাহিড়ী প্রমুখ।
আন্দোলনের ব্যর্থতার কারণঃ ডিরোজিওর নেতৃত্বে ইয়ং বেঙ্গল আন্দোলন। সাময়িকভাবে সমাজকে ভীষণ নাড়া দিয়েছিল। তবে এই প্রভাব ছিল ক্ষণস্থায়ী। বিভিন্ন কারণে এই আন্দোলন ব্যর্থ হয়।
(১) এই আন্দোলন ছিল পুরোপুরি শহরকেন্দ্রিক। অল্প শিক্ষিত ও গ্রামে বসবাসকারী বিশাল সংখ্যক মানুষ আন্দোলনে যোগ দেয়নি ছিল।
(২) কৃষক সমাজের দুর্দশা মোচনে নব্যবঙ্গ গোষ্ঠী পুরোপুরি উদাসীন।
(৩) এঁরা নেতিবাচক চিন্তাভাবনা আঁকড়ে ছিলেন বলে উগ্রভাবে হিন্দু বিরোধিতার পথ বেছে নেন। এর ফলে হিন্দুসমাজ দুরে সরে যায়।
(৪) মুসলিম সমাজের সংস্কারে নব্যবঙ্গ গোষ্ঠী উদাসীন ছিল।
(৫) উপযুক্ত নেতৃত্বের অভাবে আন্দোলন দীর্ঘস্থায়ী হয়নি।
প্রশ্নঃ ঊনবিংশ শতকের শিক্ষা ও সমাজ সংস্কার আন্দোলনে বিদ্যাসাগর কী ভূমিকা নিয়েছিলেন?
অথবা,
উনিশ শতকের নবজাগরণে বিদ্যাসাগরের অবদান আলোচনা করো।
উত্তরঃ ঊনবিংশ শতকের বৌদ্ধিক বিকাশ বা নবজাগরণের অন্যতম প্রাণপুরুষ ছিলেন ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর সমকালীন শিক্ষাক্ষেত্র ও সামাজিক ক্ষেত্রকে কুসংস্কারমুক্ত করে পুনর্জীবন দানের জন্য বিদ্যাসাগর স্মরণীয় হয়ে আছেন। সামাজিক কুসংস্কার রোধের পাশাপশি নারীমুক্তির জন্য নারীশিক্ষা প্রসারে বিদ্যাসাগর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেন।
শিক্ষাসংস্কারঃ উনিশ শতকের বাংলাদেশে নারীশিক্ষা বিস্তারের ক্ষেত্রে বিদ্যাসাগর বিশেষ ভূমিকা পালন করেন। তাঁকে বলা হয় “নারীশিক্ষা বিস্তারের পথিকৃৎ।”
উদ্দেশ্যঃ উনিশ শতকের প্রথমদিকে বাংলায় নারীরা পুরুষের থেকে পিছিয়ে পড়েছিল। কারণ তারা ছিল নিরক্ষর। বিদ্যাসাগর বুঝেছিলেন, শিক্ষাবিস্তারের মাধ্যমেই নারীমুক্তি সম্ভব। একইসঙ্গে তিনি উপলব্ধি করেন, মেয়েরা শিক্ষিত না হলে সামাজিক সংস্কার অসম্পূর্ণ থেকে যাবে। তাই কুসংস্কারমুক্ত সমাজ গড়তে তিনি বালিকা বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার ব্রত নেন।
সংস্কারের কর্মসূচিঃ ১৮৪৯ সালে বেথুন সাহেবকে হিন্দু বালিকা বিদ্যালয় গড়ে তোলায় সাহায্য করেন বিদ্যাসাগর। পরে তিনি স্কুলের সম্পাদক হন। তাঁর উদ্যোগে বাংলার চারটি জেলায় গ্রামাঞ্চলে ৩৫টি বালিকা বিদ্যালয় গড়ে ওঠে। ব্যক্তিগত চেষ্টায় তিনি প্রতিষ্ঠা করেন মেট্রোপলিটন ইনস্টিটিউশন (বিদ্যাসাগর কলেজ)। বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা ছাড়াও অভিভাবকরা যাতে কন্যাসন্তানকে স্কুলে পাঠান সেজন্য প্রচারের কাজেও নেমেছিলেন বিদ্যাসাগর। এছাড়া সংস্কৃত কলেজের অধ্যক্ষ থাকাকালীন কলেজের দরজা হিন্দু ছাত্রদের জন্য উন্মুক্ত করে দেন। তিনি বাংলা বর্ণমালার পুনর্বিন্যাস করেন এবং বর্ণ পরিচয় নামে বাংলা ভাষাশিক্ষার দু’টি পুস্তক রচনা করেন। তার রচিত কথামালা, বোধোদয় বাংলা সাহিত্যের অমূল্য সম্পদ।
সমাজ সংস্কারঃ ব্রাহ্মসমাজ আন্দোলনের ফলে নারীমুক্তির যে পরিবেশ তৈরি হয়েছিল তারই ফল বিদ্যাসাগরের বিধবাবিবাহ আন্দোলন।
বিধবাবিবাহ আন্দোলনঃ সেসময় বাল্যকালে মেয়েদের বিয়ে দেওয়া হতো বৃদ্ধের সঙ্গে, ফলে অল্প বয়সেই তারা বিধবা হতো। বিদ্যাসাগর বিভিন্ন শাস্ত্র থেকে উদ্ধৃতি দিয়ে বিধবাবিবাহের সমর্থনে প্রচার শুরু করেন। তিনি তত্ত্ববোধিনী পত্রিকায় এবিষয়ে প্রবন্ধ লেখেন। ১৮৫৫ সালে তিনি ১০০০ ব্যক্তির স্বাক্ষর সংবলিত আবেদনপত্র সরকারকে জমা দেন। ১৮৫৬ সালের ২৬ জুলাই লর্ড ক্যানিং ‘বিধবাবিবাহ আইন’ পাশ করেন। এই বছরে শ্রীশচন্দ্র বিদ্যারত্ন কালীমতী নামে এক বিধবাকে বিয়ে করেন। সেটাই কলকাতায় প্রথম বিধবাবিবাহ নিজ পুত্র নারায়ণের সঙ্গে তিনি এক বিধবার বিয়ে দেন।
অন্যান্য সংস্কারঃ বহুবিবাহের বিরুদ্ধে বিদ্যাসাগর জোরদার আন্দোলন করেন। এছাড়া গঙ্গাসাগরে সন্তান বিসর্জন, কুলীন প্রথা, অস্পৃশ্যতার বিরুদ্ধেও তিনি সোচ্চার হন।
মূল্যায়নঃ বিদ্যাসাগর সর্বার্থেই ছিলেন আধুনিক সমাজ সংস্কারক। তার এই সংস্কার আন্দোলন নারীমুক্তি আন্দোলনে গতি দিয়েছিল। একইসঙ্গে নবজাগরণেও কার্যকর ভূমিকা নিয়েছিল বিদ্যাসাগরের এই সংস্কার আন্দোলন।