!! ভদ্রলোক এবং ধোপা!!*
~~~~~~

এক ভদ্রলোক নদীর তীরে অবস্থিত একটি বড় পাথরের উপর বসে ছিলেন। একজন ধোপা সেখানে আসে এবং তীরে একমাত্র পাথর ছিল যেখানে সে প্রতিদিন কাপড় ধুতেন। ভদ্রলোককে পাথরে বসে থাকতে দেখে তিনি ভাবলেন- আমি এখন উঠব, কিছুক্ষণ অপেক্ষা করে পরে আমার কাজ করব। এক ঘণ্টা পেরিয়ে গেল, দুই ঘণ্টা পেরিয়ে গেল তারপরও ভদ্রলোক উঠলেন না!

তাই ধোপা হাত গুটিয়ে বিনয়ের সাথে অনুরোধ করল স্যার, এটা আমার কাপড় ধোয়ার জায়গা, আপনি অন্য কোথাও বসলে আমি আমার কাজ শেষ করতে পারি। ভদ্রলোক সেখান থেকে উঠে একটু দূরে গিয়ে বসলেন। ধোপা কাপড় ধোয়া শুরু করলো, আর কাপড় ধোয়ার সময় ভদ্রলোকের গায়ে কিছু ছিটা পড়তে লাগলো। ভদ্রলোক রেগে গিয়ে ধোপাকে গালি দিতে লাগলেন। শান্তি না পেয়ে পাশে রাখা ধোপাদের লাঠিটা তুলে নিয়ে তাকে মারতে থাকে। উপর থেকে সাপকে নরম মনে হলেও লেজ চাপলেই এর বাস্তবতা প্রকাশ পায়।

ভদ্রলোককে রাগান্বিত দেখে ধোপা ভাবলো আমি নিশ্চয়ই কোনো অপরাধ করেছি। তাই হাত গুটিয়ে ভদ্রলোকের কাছে ক্ষমা চাইতে লাগলেন। ভদ্রলোক বললেন- তোমার বদমাইশের আদব-কায়দা নেই, তুমি আমার গায়ে নোংরা জিনিস ছিটিয়ে দেখছ না? ধোপা বলল – স্যার, শান্ত হোন, আমি বোকা বলে ভুল করেছি, মানুষের নোংরা কাপড় ধোয়ার সময় আমি মনোযোগ দেইনি, আমাকে ক্ষমা করুন। ধোপাদের কাজ শেষ, সে পরিষ্কার কাপড় সংগ্রহ করে আবার ভদ্রলোকের কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করে ফিরে এলো, ভদ্রলোক দেখলেন, ধোয়ারের পাথর থেকে বের হওয়া নোংরা পানি মাটির সংস্পর্শে এসে আবার বিশুদ্ধ হয়ে যাচ্ছে। নদীর সাদা প্রবাহ কিন্তু ভদ্রলোকের সাদা পোশাকে ছিল তীব্র আর্দ্রতা এবং দুর্গন্ধ। কে ধোপা আর কে ভদ্রলোক? প্রকৃতপক্ষে ধাবকই ছিলেন প্রকৃত মহাত্মা, তিনি ধৈর্য ও নিরপেক্ষতার সঙ্গে মানুষের দাগ দূর করতেন।

ভদ্রলোক নিজের ভুল বুঝতে পারলেন এবং পরে রাগ নিয়ন্ত্রণ করে মহাত্মা হয়ে গেলেন।

*শিক্ষা:-*

 

আমরা যেমন ফুটন্ত পানিতে আমাদের প্রতিফলন দেখতে পাই না, ঠিক তেমনি রাগের অবস্থায়ও আমরা বুঝতে পারি না আমাদের জন্য কী ভালো..!!

 

*সদা হাসিখুশি থাকুন – যা অর্জন করাই যথেষ্ট।*
*যার মন খুশি তার সবই আছে।
✍️✍️✍️✍️✍️✍️✍️✍️✍️✍️✍️✍️✍️

©kamaleshforeducation.in(2023)