================================================================================================================
***সুন্দর গল্পে উপদেশ***
================================================================================================================
,♨️আজকের অনুপ্রেরণামূলক গল্প♨️***
! সিংহ আর মানুষ!!*
~~~~~~~
একটা গ্রাম ছিল, সেই গ্রামে যাওয়ার পথে ছিল খুব ঘন জঙ্গল । বন ঘন হওয়ার কারণে বনে বিভিন্ন ধরনের পশু-পাখির বসবাস ছিল। সেখানে একটি সিংহও বাস করত। মাঝে মাঝে সিংহ গ্রামে ঢুকে ব্যাপক তোলপাড় করত। এ কারণে গ্রামবাসীরা বনে যাওয়ার পথে একটি খাঁচা রেখেছিলেন। রাত হয়ে গেছে সবাই যার যার ঘরে চলে গেল। নিস্তব্ধ হয়ে গেল গ্রাম। ঠিক তখনই একই পথ ধরে গ্রামের দিকে যাচ্ছিল সিংহ। পথে স্থাপিত খাঁচায় তার পা আটকে যায় এবং ভারী শরীরের কারণে সিংহটি খাঁচায় আটকে যায়। এখন সে খাঁচায় আটকা পড়েছিল। অনেক চেষ্টা করেও সেখান থেকে বের হতে পারেননি। সিংহ সারারাত খাঁচায় বন্দী থাকে।
ভোরবেলা এক ব্যক্তি একই পথ দিয়ে গ্রামের দিকে যাচ্ছিলেন। তখন সিংহ বলল- “ও ভাই! হে ভাই!” খাঁচায় সিংহ দেখে লোকটা ভয় পেয়ে গেল। সিংহ খুব ক্ষুধার্ত ছিল।
সিংহ লোকটিকে বলল – “আমাকে সাহায্য কর। আমি খুব তৃষ্ণার্ত। দয়া করে আমাকে একটু জল দাও।”
লোকটি বলল – “না! না! আমি তোমাকে সাহায্য করতে পারব না। তুমি একটা মাংসাশী প্রাণী, যদি তুমি আমাকে তোমার শিকারে পরিণত করো!” সিংহ বলল- “না ভাই! আমি এসব করব না।”
সিংহের অসহায়ত্ব দেখে লোকটি সিংহের প্রতি করুণা পেল এবং পাশের পুকুর থেকে পানি এনে সিংহকে পান করতে দিল। সিংহ পানি পান করে আবার লোকটিকে বলল- “তৃষ্ণা নিবারণ হয়েছে, এখন সারা রাত থেকে ক্ষুধার্ত, দয়া করে আমাকে কিছু খেতে দিন।” সেই ব্যক্তি সিংহের খাবারের ব্যবস্থা করতে লাগল এবং কোথাও থেকে তার খাবার নিয়ে এল। সিংহের খাবারও খেয়েছেন।
সিংহ আবার ডাক দিল – “ওরে ভালো মানুষ! আমি এই খাঁচায় খুব খারাপভাবে আটকা পড়েছি। দয়া করে আমাকে এই খাঁচা থেকে মুক্ত করুন।”
লোকটি বলল- “না! আমি তোমার পরিবারেরও কোনো ক্ষতি করব না।”
লোকটি তার কথায় রাজি হয়ে খাঁচার দরজা খুলে সিংহটি বেরিয়ে এলো। সিংহটি বের হওয়ার সাথে সাথে সে প্রথমে স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলে বলল, ” আমি এখনও আমার ক্ষুধা মেটাতে পারিনি এবং আমার সামনে খাবারও রয়েছে।” তাই খাবারের সন্ধান করার দরকার নেই। এখন আমি অবিলম্বে তোমাকে আমার শিকারে পরিণত করব।
একথা শুনে লোকটি ভয়ে কাঁপতে লাগল এবং বলল – “তুমি। অসৎ হতে পারে না। তুমি তো আগেই বলেছিলে যে আমি তোমাকে খাব না এবং তোমার পরিবারের কোনো ক্ষতি করব না, তাহলে এখন এমন করছ কেন।”
সিংহ বলল- আমি সেই রকম প্রাণী। আমার খুব ক্ষুধা লেগেছে, তাই এখন কিছু নেই। কাকতালীয়ভাবে একটা বানর। কাছের একটা গাছে বসে এই ঘটনা দেখছিল সিংহ আর লোকটার মধ্যে তর্ক চলছিল তখন বানর বলল, ব্যাপারটা কি? বিতর্ক কি চলছে? লোকটা পুরো ব্যাপারটা বানরকে বলল। বানর বলল- ঠিক আছে! তো ব্যাপারটা এমনই। আচ্ছা, একটা জিনিস বুঝলাম না, এত বড় সিংহ এই ছোট খাঁচায় কিভাবে আসবে? না! না! এটা হতে পারে না!”
সিংহ নিজের অপমান দেখে সইতে না পেরে সিংহ বলল-“এই পণ্ডিত ঠিকই বলেছেন, আমি সারারাত এই খাঁচায় বন্দি ছিলাম।বানর বলল, আমি কি করে বিশ্বাস করব?
সিংহ বললো- “এই খাঁচায় গিয়ে আবার দেখাবো এখনই।” আর এই বলে সিংহ আবার খাঁচায় ঢুকে যায় এবং খাঁচার দরজা বন্ধ করে দেয় তার পর সিংহ বললো- দেখো, আমি এভাবেই খাঁচায় ছিলাম।
বানর সেই ব্যক্তিকে বললো – “এখন কি দেখছো, প্রাণ বাঁচাতে এক্ষুনি পালিয়ে যাও!” আর পণ্ডিত সেখান থেকে পালিয়ে যায়। সিংহ আবার খাঁচায় বন্দী হয়।
*শিক্ষা:-*