স্কুলের ম্যানেজিং কমিটি, ষ্টাফ কাউন্সিল এবং একাডেমিক কাউন্সিলের গঠন ও কার্যাবলী

 

স্কুলের ম্যানেজিং কমিটি, ষ্টাফ কাউন্সিল এবং একাডেমিক কাউন্সিলের গঠন ও কার্যাবলী সংক্রান্ত বিভিন্ন RULES এবং ORDERS এবং CLARIFICATIONS আছে। সেগুলো থেকে মূল কথাটা বুঝে নেওয়া বেশ কঠিন ও কষ্টসাধ্য। এখানে চেষ্টা করলাম GOVT SPONSORED স্কুলের এমসি ও তার অধীনে থাকা সাব কমিটিগুলোর সম্পর্কে চালু যাবতীয় রুলসগুলোকে একত্রিত করে প্রশ্ন উত্তরের মাধ্যম একটি পরিষ্কার ধারণা তৈরি করতে । এটা পড়ে নিলে এ ব্যাপারে যাবতীয় কনফিউশন দূর হবে বলেই ধারণা। পোস্টটি স্বাভাবিক ভাবেই বড় হয়েছে। ম্যানুয়ালের এবং তার বাইরে 50 – 60 পাতা জুড়ে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা অর্ডারগুলিকে একত্রিত করতে হয়েছে । যদি সময় ও ধৈর্য্য থাকে তবেই পড়বেন। নাহলে এড়িয়ে যান । সবটা না পড়ে  –SR,  ।

——————————————————————————————–

১) প্রশ্ন – GOVT AIDED আর GOVT SPONSORED স্কুলের এমসির গঠনগত পার্থক্য ঠিক কতখানি ?

উত্তর – Govt Aided স্কুলের এমসি গঠিত হয় Management Rules for Aided Schools , 1969 অনুসারে। আর Govt Sponsored স্কুলের এমসি গঠিত হয় Management of Sponsored Schools Rules, 1972 অনুসারে। দুই ধরনের স্কুলের কমিটির মূল পার্থক্য হচ্ছে Aided স্কুলের এমসি মূলত ইলেকটেড মেম্বারদের নিয়ে আর স্পন্সরড স্কুলের এমসি মূলত Govt nominated মেম্বারদের নিয়ে গঠিত হয়।

২) প্রশ্ন – Govt Sponsored স্কুলের এমসির গঠনটা মূলত কী রকম ?

উত্তর – ক ) ডিপার্টমেন্ট অফ স্কুল এডুকেশন দ্বারা নিয়োজিত প্রেসিডেন্ট
খ) SI Of Schools – মেম্বার
গ) কমিশনার অফ স্কুল এডুকেশন দ্বারা মনোনীত দুইজন শিক্ষানুরাগী ব্যক্তি – মেম্বার
ঘ) BMOH এর থেকে প্রাপ্ত একজন মেডিকেল অফিসার — মেম্বার
ঙ) স্কুলের সমস্ত স্টাফের দ্বারা নির্বাচিত তিনজন টিচার এবং একজন নন টিচিং স্টাফ — মেম্বার
চ) HOI এর সঙ্গে আলোচনার পর প্রেসিডেন্ট দ্বারা মনোনীত দুইজন গার্জেন প্রতিনিধি। ( গার্লস স্কুল হলে ঐ দুজনের মধ্যে একজন অবশ্যই মহিলা হবেন ) । গার্জেন প্রতিনিধি মনোনীত করার ক্ষেত্রে প্রেসিডেন্ট এবং HOI এর মতবিরোধ হলে সেই ব্যাপারটা কমিশনার অফ স্কুল এডুকেশন দৃষ্টিতে আনতে হবে। তখন এই ব্যাপারে তাঁর সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত।

৩) প্রশ্ন – কমিটির এবং সদস্যদের মেয়াদ কতদিন হবে ?

উত্তর – নবগঠিত কমিটির প্রথম মিটিং থেকে তিন বছর ভ্যালিড থাকবে একটি কমিটি। গার্জেন প্রতিনিধি ছাড়া সমস্ত সদস্যরাও ততদিন পর্যন্ত সদস্য থাকবেন। গার্জেন প্রতিনিধিগণ একবছর অন্তর পাল্টে যাবেন।

৪) প্রশ্ন – একবছর পর গার্জেন নতুন গার্জেন প্রতিনিধি কেমনভাবে নিতে হবে ?

উত্তর – প্রেসিডেন্ট আগের মতোই HOI এর সঙ্গে আলোচনা করে নতুন দুজনের নাম প্রস্তাব করবেন। এরপর একটা রেজোলিউশন করে সেই দুজনকে কমিটির অন্তর্ভুক্ত করে নিতে হবে।

৫) প্রশ্ন – সরকার কি ম্যানেজিং কমিটির মেয়াদ বৃদ্ধি বা হ্রাস করে দিতে পারেন ?

উত্তর – হ্যাঁ, পারেন। সরকার মনে করলে কোনও কমিটিকে তার মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই ভেঙে দিতে পারেন অথবা তার মেয়াদ বৃদ্ধি করতে পারেন।

৬) প্রশ্ন – প্রেসিডেন্ট বা শিক্ষানুরাগী ব্যক্তিদের নমিনেশন কি তাদের মেয়াদ শেষ হওয়ার পূর্বেই ফিরিয়ে নেওয়া যেতে পারে?

উত্তর – হ্যাঁ পারে। যে কর্তৃপক্ষ নমিনেশন দিয়েছিল সেই কর্তৃপক্ষই নোমিনেটেড সদস্যের মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই তাকে ফিরিয়ে নিতে পারেন এবং তার জায়গায় নতুন কাউকে নোমিনেট করতে পারেন। নতুন সদস্য ঐ কমিটির বাকি মেয়াদ পর্যন্ত ঐ কমিটিতে তাঁর কাজ করবেন।

৭ ) প্রশ্ন – এমসি তে টিচিং নন টিচিং স্টাফ কী ভাবে সদস্য পদ পান ?

উত্তর – বিদ্যালয়ের সমস্ত টিচার এবং নন টিচিং স্টাফ মিলে ইলেকশন এর মাধ্যমে তিনজন টিচিং স্টাফ এবং একজন নন টিচিং স্টাফকে নির্বাচিত করে কমিটিতে পাঠাবেন।

৮ ) প্রশ্ন – এমসিতে গার্জেন প্রতিনিধিগণ কীভাবে যাবেন ?

উত্তর – অন্য সমস্ত মেম্বারদের নমিনেশন ও ইলেকশন হয়ে যাওয়ার পর নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট দুইজন গার্জেন প্রতিনিধির নাম নোমিনেট করবেন HOI এর সঙ্গে পরামর্শ করে। তাঁদের মতের অমিল হলে ব্যাপারটার ফাইন্যাল ডিসিশন এর জন্য কমিশনার অফ স্কুল এডুকেশন এর নিকট পাঠাতে হবে।

৯) প্রশ্ন – এমসির শিক্ষক প্রতিনিধি ও গার্জেন প্রতিনিধিদের মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ার আগে অপসারণ করার কি কোনও সুযোগ আছে ?

উত্তর – না। RULES এ এমন কথা বলা নেই।

১০) প্রশ্ন – তাহলে বেনিয়মকারী গার্জেন ও শিক্ষক প্রতিনিধিদের সরিয়ে দেওয়ার কি কোনো উপায় নেই ?

উত্তর – এরকম কিছু করতে চাইলে ঐ সদস্যকে নিজে থেকে পদত্যাগ করতে হবে অথবা এমসি রেজোলিউশন করে এবং HOI Forwarding letter দিয়ে আর উক্ত মেম্বারের বেআইনি কাজের প্রমাণ দিয়ে ডি আই এর মাধ্যমে WBBSE ( কপি দিতে হবে ডিএসই কে) তে পাঠাতে হবে তার সদস্যপদ খারিজ করার আবেদন জানিয়ে। কর্তৃপক্ষ সেই আবেদন মঞ্জুর করলে তার সদস্যপদ খারিজ হয়ে যাবে। গার্জেন প্রতিনিধিদের ward চলে গেলেও তাদের সদস্যপদ খারিজ হবে।

১১) প্রশ্ন – যদি Govt nominated মেম্বারদের সদস্যপদ বিভিন্ন কারনে খালি হয় তাহলে সেই শূন্যস্থান কী ভাবে পূরণ হবে ?

উত্তর – যে ভাবে আগের মেম্বার ঐ সদস্যপদ পেয়েছিলেন সেই একই প্রসেসে । এরকম ভ্যাকান্সি তৈরি হলে স্কুল কর্তৃপক্ষ এমসি রেজোলিউশন করে ডি আই through দিয়ে যে কর্তৃপক্ষ ঐ সদস্যকে nominate করতে দায়িত্বপ্রাপ্ত তাঁর কাছে নতুন সদস্যের নমিনেশন এর জন্য আবেদন করবেন। সেখান থেকে পরিবর্ত নাম পেলে তাঁকে কমিটিতে আগের সদস্যের জায়গায় নিয়ে নেবেন।

১২) প্রশ্ন – কোনও টিচিং বা নন টিচিং সদস্যের সদস্যপদ খারিজ হলে সেই শূন্যস্থান কী ভাবে পূরণ করা হবে ?

উত্তর – ঠিক আগের মতই ইলেকশন এর মাধ্যমে।

১৩ ) প্রশ্ন – কতগুলি মিটিং এ অনুপস্থিত থাকলে একজন সদস্যের সদস্যপদ খারিজ হতে পারে ?

উত্তর – HOI ছাড়া কোনও এমসির সদস্য যদি পরপর চারটি মিটিং এ অনুপস্থিত থাকেন তাহলে এমসির বাকি সদস্যরা চাইলে একটা রেজোলিউশন করে তার সদস্যপদ খারিজ করে দিতে পারেন। আবার উপযুক্ত কারন থাকলে এমসি ঐ অনুপস্থিতি সত্ত্বেও তাঁর সদস্যপদ বজায় রাখতে পারে।

১৪) প্রশ্ন – এমসির সব মেম্বারদের কি গ্র্যাজুয়েট হতেই হবে ?

উত্তর – টিচিং স্টাফ, সরকারি প্রতিনিধি, বিএমওএইচ এর প্রতিনিধি এঁরা স্বাভাবিক ভাবেই গ্র্যাজুয়েট হবেন। PIE এবং প্রেসিডেন্টকে গ্র্যাজুয়েট হতেই হবে। নন টিচিং প্রতিনিধি এবং গার্জেন প্রতিনিধিদের জন্য এমন কোনো বাধ্যবাধকতা নেই।

১৫) প্রশ্ন – ইন সার্ভিস টিচাররা কি PIE বা প্রেসিডেন্ট হিসাবে কমিটিতে আসতে পারবেন ?

উত্তর – না।

১৬ ) প্রশ্ন – যদি কোনো ইন সার্ভিস টিচার বা Non Graduate ব্যক্তি PIE বা প্রেসিডেন্ট হয়ে যান তাহলে কী করতে হবে ?

উত্তর – যদি কোনো ইন সার্ভিস টিচার উক্ত ক্যাটাগরিতে কমিটিতে অন্তর্ভুক্ত হয়ে থাকেন তাহলে ডি আই মাধ্যমে দ্রুত কমিশনার অফ স্কুল এডুকেশন কে বিষয়টা জানাতে হবে। তখন তাদের নমিনেশন এর cancellation order এবং নতুন প্রেসিডেন্ট বা PIE দের নাম আসবে। যতদিন না নতুন নাম আসছে ততদিন ঐ ইন সার্ভিস PIE বা প্রেসিডেন্টই কাজ চালিয়ে যেতে পারবেন। যেখানে NON GRADUATE প্রেসিডেন্ট বা PIE এসেছে দ্রুত সেই খবরটা ডি আই এর মাধ্যমে DSE তে পাঠাতে হবে। সেখান থেকে এদের নমিনেশন এর CANCELLATION এবং নতুন ব্যক্তিদের উক্ত ক্যাটাগরিতে নমিনেশন অর্ডার আসবে।

১৭) প্রশ্ন – প্রেসিডেন্ট হিসাবে কারোর নাম NOMINATED হওয়ার পর তিনি যদি সেই কাজ করতে অস্বীকার করেন তাহলে কী হবে ?

উত্তর – সেক্ষেত্রে ঐ কমিটিতে যে SI আছেন তিনি নতুন প্রেসিডেন্ট না আসা পর্যন্ত প্রেসিডেন্ট হিসাবে ঐ কমিটিতে কাজ চালাবেন।

১৭) প্রশ্ন – যদি নমিনেশন পাওয়া PIE রা ঐ কমিটিতে কাজ করতে অস্বীকার করেন তাহলে কী হবে ?

উত্তর – সেক্ষেত্রে PIE ছাড়াই কমিটি গঠিত হয় যাবে। PIE ক্যাটাগরিটা VACANT হয়ে থাকবে। যখন PIE দের নাম নতুন করে আসবে তখন তারা ঐ কমিটিতে অন্তর্ভুক্ত হয়ে যাবেন।

১৮) প্রশ্ন – অনেক সময় নতুন কমিটির প্রেসিডেন্ট এবং PIE নমিনেশন পাওয়ার পরও নানা কারনে কমিটি গঠন করতে দেরি হয় । সেই সময়টাতে যদি আগের কমিটির VALIDITY শেষ হয়ে যায় তাহলে কীভাবে কাজ চলবে ?

উত্তর – যতদিন না নতুন কমিটি গঠন হচ্ছে ততদিন পুরোনো কমিটি কাজ চালাবে। তবে গার্জেন প্রতিনিধিরা নিয়ম অনুযায়ী এক বছর পর পর পাল্টে যাবেন।

১৯) প্রশ্ন – ম্যানেজিং কমিটির ভ্যালিডিটি শেষ হয়ে যাওয়ার পরও যদি নতুন কমিটি গঠিত না হয় তাহলে কী করতে হবে ?

উত্তর – সেক্ষেত্রে প্রথমে স্কুলের DDO নিয়োগ করার জন্য ডি আই এর কাছে আবেদন করতে হবে। DDO সাধারনত SI কে দেওয়া হয়। এই নিয়োগ করার দায়িত্বপ্রাপ্ত হলেন ডি আই। এটা খুব দ্রুত হয়ে যায়। DDO পাওয়ার পরই ডি আই এর মাধ্যমে ডিপার্টমেন্ট অফ স্কুল এডুকেশন ও কমিশনার অফ স্কুল এডুকেশনকে আবেদন করতে হবে নতুন কমিটির জন্য যথাক্রমে প্রেসিডেন্ট এবং PIE দের এর নমিনেশন পাঠানোর জন্য আর তার সঙ্গে আবেদন করতে হবে যতদিন না কমিটি গঠিত হচ্ছে ততদিনের জন্য একজন অ্যাডমিনিস্ট্রেটর নিয়োগ করতে। অ্যাডমিনিস্ট্রেটর নিয়োগ দেবেন কমিশনার অফ স্কুল এডুকেশন।

২০) প্রশ্ন – ADMINISTRATOR ও DDO এর মেয়াদ কতদিন ? তাদের ক্ষমতাই বা কতটা ?

উত্তর – ADMINISTRATOR এর ক্ষমতা এমসির ক্ষমতার সমান। অর্থাৎ এমসি যা যা কাজ করতে পারে একজন অ্যাডমিনিস্ট্রেটরও ঠিক তাই তাই করতে পারেন । অ্যাডমিনিস্ট্রেটর হলেন One Man Committee। DDO এর ক্ষমতা খুব সীমিত। শুধুমাত্র শিক্ষকদের বেতন সংক্রান্ত কাজ তিনি করতে পারবেন। অর্থাৎ DDO থাকলে স্কুলের সব কাজ থমকে থাকবে। DDO এবং এডমিনিস্ট্রেটর রেজোলিউশন করবেন এবং সেখানে শুধুমাত্র তিনিই সই করবেন। তাঁদের মেয়াদ হচ্ছে যতদিন না পর্যন্ত নতুন কমিটি গঠিত হচ্ছে বা অর্ডারে যে মেয়াদের কথা বলা আছে সেটার লাস্ট ডেট ,– এই দুটির মধ্যে যেটি আগে হবে সেই পর্যন্ত ভ্যালিড থাকবে।

২১) প্রশ্ন – এমসি মিটিং কে, কখন ডাকবেন ?

উত্তর – প্রতি দুইমাস অন্তর কমপক্ষে সাত দিন আগে নোটিশ দিয়ে একটি এমসি মিটিং ডাকবেন সেক্রেটারি ( HOI) । ভ্যাকেশন এর মধ্যে সাধারনত মিটিং ডাকা হবে না।

২২) প্রশ্ন – ভ্যাকেশন এর মধ্যে তাহলে জরুরি প্রয়োজনে বা অন্য সময়েও হঠাৎ প্রয়োজনে কী ভাবে মিটিং হবে ?

উত্তর – সেক্ষেত্রে ইমারজেন্সি মিটিং ডাকবেন প্রেসিডেন্ট অন্তত 24 ঘণ্টা আগে নোটিশ দিয়ে।

২৩) প্রশ্ন – ধরা যাক এমসির মেম্বাররা চাইছেন কোনও একটি বিষয় নিয়ে এমসি তে আলোচনা করতে। তখন কী ভাবে মিটিং করা যাবে ?

উত্তর – এই ধরনের মিটিং কে বলে স্পেশাল মিটিং। যদি অন্তত চারজন এমসি সদস্য এই মিটিং চেয়ে সেক্রেটারির কাছে রিকুইজিশন দেন তাহলে সেক্রেটারি পনেরো দিনের মধ্যে একটি স্পেশাল মিটিং ডাকবেন। যদি সেক্রেটারি সেই মিটিং উক্ত সময়ের মধ্যে ডাকতে ব্যর্থ হন তাহলে ঐ আবেদনকারী সদস্যরা তখন প্রেসিডেন্ট এর কাছে এই মিটিং ডাকার আবেদন করবেন। তখন প্রেসিডেন্ট দশ দিনের মধ্যে মিটিং ডাকবেন। যদি প্রেসিডেন্টও মিটিং ডাকতে ব্যর্থ হন তাহলে কমিটির অন্তত অর্ধেক সদস্য চাইলে নিজেরাই সাত দিনের নোটিশ দিয়ে মিটিং করতে পারবেন।

২৪) প্রশ্ন – মিটিং এর স্থান ও সময় কী হবে?

উত্তর – সাধারণত school hours এর বাইরে এবং স্কুলের মধ্যেই এমসি মিটিং হবে।

২৫) প্রশ্ন – কোরাম কী ?

উত্তর – একটি মিটিং এ কমপক্ষে যতজন মেম্বার উপস্থিত থাকলে মিটিং এর সিদ্ধান্ত বৈধ হয় সেই সংখ্যাকে কোরাম বলে। এমসির ক্ষেত্রে সাত জন সদস্য অন্তত উপস্থিত থাকলে কোরাম হয়।

২৬) প্রশ্ন – এমসি তে কীভাবে সিদ্ধান্ত গৃহীত হয় ?

উত্তর – উপস্থিত সদস্যদের অর্ধেকের বেশি যে বিষয়ে মত দেবে সেই সিদ্ধান্ত গৃহীত হবে। যারা বিপক্ষে মত দেবে তাদের নাম দিয়ে তাদের আপত্তির কথাও লেখা হবে রেজোলিউশন এ। তবে conclusion এ লেখা হবে অধিকাংশের মতের ভিত্তিতে কোন সিদ্ধান্ত গৃহীত হলো সেটা। সই কিন্তু উপস্থিত সকলেই করবেন। কোনও একটা বিষয়ে যদি অর্ধেক অর্ধেক পক্ষে বিপক্ষে মত হয়ে যায় তখন প্রেসিডেন্ট তাঁর নিজের ভোট ছাড়াও একটি অতিরিক্ত ভোট ( কাস্টিং ভোট ) দিয়ে একটা সিদ্ধান্তে উপনীত হবেন।

২৭) প্রশ্ন – এমসি মিটিংয়ে যদি HOI ( সেক্রেটারি) বা প্রেসিডেন্ট বা অন্য কোনো সদস্য অনুপস্থিত থাকেন তাহলে কী মিটিং করা যাবে ?

উত্তর – অবশ্যই করা যাবে। কোনো সদস্য বা পদাধিকারীর অনুপস্থিতির জন্য মিটিং হতে পারবে না এমন কোনো কথা নেই। মিটিংয়ে সাতজন সদস্য উপস্থিত থাকলেই সিদ্ধান্ত গৃহীত হবে ।

২৮) প্রশ্ন – এমসি মিটিং এ কে সভাপতিত্ব করেন ? তিনি কোনও মিটিংয়ে অনুপস্থিত থাকলে সেই মিটিংয়ে কে সভাপতিত্ব করবেন ?

উত্তর – সভাপতি উপস্থিত থাকলে তিনিই মিটিংয়ে সভাপতিত্ব করবেন। কিন্তু তিনি উপস্থিত না থাকলে উপস্থিত সদস্যরা প্রথমে তাঁদের মধ্যে থেকে একজনকে সেই মিটিংয়ের জন্য সভাপতি নির্বাচিত করে নেবেন । তারপর তিনি সেই মিটিংয়ে সভাপতিত্ব করবেন ।

২৯) প্রশ্ন – ম্যানেজিং কমিটির সঙ্গে সঙ্গে কোন কোন সাব কমিটি গঠিত হয় ?

উত্তর – একাডেমিক কাউন্সিল ও স্টাফ কাউন্সিল। উল্লেখ্য স্পন্সরড স্কুলের ম্যানেজমেন্ট রুলস এ ফিন্যান্স সাব কমিটির কোনও উল্লেখ নেই।

৩০) প্রশ্ন- স্টাফ কাউন্সিলের গঠন কী ভাবে হয় ?

উত্তর – অনুমোদিত স্থায়ী পদে বা অ্যাডিশনাল পদে কমপক্ষে দুই বছর ধরে কর্মরত স্থায়ী ও অস্থায়ী সমস্ত কর্মীদের নিয়ে স্টাফ কাউন্সিল গঠিত হবে। HOI হবেন এই কমিটির প্রেসিডেন্ট আর সমস্ত সদস্যদের দ্বারা নির্বাচিত হবেন একজন সেক্রেটারি ।

৩১) প্রশ্ন – প্যারা টিচার, আইসিটি ইন্সট্রাক্টর, ভোকেশনাল টিচার, কনট্র্যাকচুয়াল পার্ট টাইম টিচার, এঁরা কি স্টাফ কাউন্সিলের মেম্বার হবেন ?

উত্তর – না। কারন এনারা SANCTIONED পোস্টে কাজ করেন না। SANCTIONED POST বলতে বোঝায় ডিএসই কর্তৃক অনুমোদিত HM , AT, ক্লার্ক বা GROUP D পোস্টকে।

৩২) প্রশ্ন – স্টাফ কাউন্সিলের মিটিং কে কতদিন অন্তর ডাকবেন ?

উত্তর – HOI ডাকবেন প্রতি তিন মাস অন্তর। সেক্রেটারি বা সাধারণ সদস্যদের এই মিটিং ডাকার ক্ষমতা নেই।

৩৩) প্রশ্ন – স্টাফ কাউন্সিলের কার্যাবলী ও ক্ষমতা কতটা ?

উত্তর – স্টাফ কাউন্সিল স্কুলের সমস্ত একাডেমিক এবং অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ ব্যাপারে এমসির কাছে প্রস্তাব রাখতে পারে। কিন্তু এমসি সেই প্রস্তাব নাও মানতে পারে লিখিত কারন দেখিয়ে।

৩৪) প্রশ্ন – নতুন এমসি গঠনের সঙ্গে সঙ্গে কি নতুন করে স্টাফ কাউন্সিল গঠন করে নতুনভাবে সেক্রেটারি নির্বাচিত করতে হবে ?

উত্তর – এরকম কোনো কথা ম্যানেজমেন্ট রুলস এ বলেনি। ষ্টাফ কাউন্সিলের সেক্রেটারিকে কি স্টাফের ভোটের মাধ্যমে অপসারণ করে অন্য কাউকে সেক্রেটারী করা যায় ? এই প্রশ্নের উত্তর রুলস এ নেই। তবে যুক্তি বলছে যেহেতু স্টাফ কাউন্সিল এমন একটা বডি যেটা কখনই DISSOLVE হয় না তাই এর একমাত্র অপসারণযোগ্য পদাধিকারী সেক্রেটারিকে স্টাফের ভোটে অপসারণ ও ঐ জায়গায় অন্য কাউকে বসানো যায় যে কোনও সময়।

৩৫) প্রশ্ন – অ্যাকাডেমিক কাউন্সিলের গঠন কীরূপ ?

উত্তর – একাডেমিক কাউন্সিলে থাকবেন HOI, AHM এবং কমপক্ষে দুই বছর অনুমোদিত পদে কর্মরত অনধিক তিনজন নির্বাচিত টিচিং স্টাফ ( লাইব্রেরিয়ান বা অ্যাসিসট্যান্ট লাইব্রেরিয়ান সহ) । HOI হবেন এর প্রেসিডেন্ট এবং AHM হবেন সেক্রেটারী। যদি AHM না থাকেন তাহলে নির্বাচিত সদস্যদের মধ্যে একজন অ্যাকাডেমিক কাউন্সিলের সেক্রেটারি নির্বাচিত হবেন ।

৩৬) প্রশ্ন – অ্যাকাডেমিক কাউন্সিল গঠনের প্রক্রিয়া কখন শুরু হয় এবং প্রক্রিয়াটা কী রকম ?

উত্তর – নতুন এমসির প্রথম মিটিং এর তারিখ থেকে এক মাসের মধ্যে HOI একটা লাইব্রেরিয়ান , অ্যাসিসট্যান্ট লাইব্রেরিয়ান ও অনুমোদিত পদে কর্মরত টিচিং স্টাফদের নিয়ে একটা মিটিং ডাকবেন। সেখানে অ্যাকাডেমিক কাউন্সিলের সদস্যরা নির্বাচিত হবেন। সেই নামগুলি এরপর এমসি তে ফরওয়ার্ড করা হবে। এমসি তারপর সেটাকে মান্যতা দিলে নতুন একাডেমিক কাউন্সিল গঠিত হয়ে যাবে।

৩৭) প্রশ্ন – একাডেমিক কাউন্সিলের মিটিং কে কতবার ডাকবেন ?

উত্তর – প্রতি দুই মাস অন্তর HOI ACADEMIC কাউন্সিলের মিটিং ডাকবেন।

৩৮) প্রশ্ন – একাডেমিক কাউন্সিলের কাজ ও ক্ষমতা কতটা ?

উত্তর – একাডেমিক কাউন্সিল একটি পরামর্শদাতা কমিটি। তাদের নিজের সিদ্ধান্তে কোনও কাজ সরাসরি সম্পাদন করার ক্ষমতা নেই। এই কাউন্সিলের সদস্যরা নিজেদের মধ্যে আলোচনা করে স্কুলের ভর্তি, প্রমোশন ,ক্লাস রুটিন তৈরি, বিষয় শিক্ষকের সঙ্গে আলোচনা করে পাঠ্য পুস্তক নির্বাচন, পঠন পাঠন সংক্রান্ত যাবতীয় বিষয়ে HOI কে পরামর্শ দিতে পারেন। HOI এর অবশ্য ক্ষমতা আছে সেই ADVICE কে অগ্রাহ্য ( OVERRULE ) করার । তবে তিনি তাঁর এই সিদ্ধান্তের কারন লিখিতভাবে নোট করবেন। কাউন্সিলের কোনও সদস্য তখন HOI এর সেই পদক্ষেপের বিরুদ্ধে এমসির কাছে অভিযোগ জানাতে পারেন। তারপর এই ব্যাপারে এমসির সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত বলে ধরা হবে।

৩৯) প্রশ্ন – অ্যাডমিনিস্ট্রেটর বা অ্যাডহক কমিটি থাকলে কি স্টাফ কাউন্সিল বা অ্যাকাডেমিক কাউন্সিল একইভাবে গঠিত হবে ?

উত্তর – হ্যাঁ।

৪০) প্রশ্ন – স্টাফ কাউন্সিল বা একাডেমিক কাউন্সিলের কোনও সদস্যকে কি অপসারণ করা যায় ?

উত্তর – এরকম কোনো সুযোগের কথা RULES এ বলা নেই। যদি একান্তই প্রয়োজন হয় তাহলে ডি আই এর মাধ্যমে বোর্ডের ও কমিশনার অফ স্কুল এডুকেশন এর দৃষ্টি আকর্ষণ করতে হবে। সেখান থেকে কিছু নির্দেশ এলে সেই অনুযায়ী কাজ করতে হবে।

৪১) প্রশ্ন – বর্তমানে কি এমসির ক্ষমতা কিছুটা হ্রাস করা হয়েছে ?

উত্তর – হ্যাঁ। গেজেট নোটিফিকেশন নং 214 SE, dated- 08/03/2018 জারি করে এমসির হাত থেকে নিয়োগের ক্ষমতা, চাকরি কনফার্মেশন এর ক্ষমতা এবং ডিসিপ্লিনারি অ্যাকশান নেওয়ার ক্ষমতা সরিয়ে নিয়ে বোর্ডের ( WBBSE ) হাতে ন্যস্ত করা হয়েছে। তবুও বলা যায় ছুটি অনুমোদন, স্কুলের আয় ব্যয় সহ সামগ্রিক ভাবে স্কুল পরিচালনার দায়িত্ব এখনও এমসির হাতেই আছে। — SR

 

 

©kamaleshforeducation.in(2023)  

 

 

 

error: Content is protected !!