হারিয়ে যাওয়া কালি কলম

হারিয়ে যাওয়া কালি কলম (প্রবন্ধ) শ্রীপান্থ – মাধ্যমিক দশম শ্রেণীর বাংলা প্রশ্ন ও উত্তর | West Bengal Madhyamik Class 10th Bengali Hariye Jawa Kali Kolom Question and Answer 

MCQ প্রশ্নোত্তর | হারিয়ে যাওয়া কালি কলম (প্রবন্ধ) শ্রীপান্থ – মাধ্যমিক বাংলা প্রশ্ন ও উত্তর | Madhyamik Bengali Hariya Jawa Kali Kolom Question and Answer : 

  1. ‘ শ্রীপান্থ ‘ ছদ্মনামে লিখেছেন –

(A) সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়

(B) সমরেশ বসু

(C) বলাইচাঁদ মুখোপাধ্যায়

(D) নিখিল সরকার

Ans: (D) নিখিল সরকার

  1. নীচের কোন্ বইটি শ্রীপাস্থের নয় — 

(A) আজব দুনিয়া 

(B) মিছিলনগরী

(C) আজবনগরী 

(D) আনন্দনগরী

Ans: (C) আজবনগরী

  1. লেখক যে – অফিসে কাজ করতেন , সেটি হল –

(A) সরকারি অফিস 

(B) পত্রিকা অফিস 

(C) সওদাগরি অফিস 

(D) বেসরকারি অফিস

Ans: (B) পত্রিকা অফিস

  1. লেখকের অফিসে সবাই –

(A) ফাঁকিবাজ 

(B) লেখক 

(C) ইঞ্জিনিয়ার

(D) গম্ভীর 

Ans: (B) লেখক

  1. লেখকের হাতে ছাড়া আর কারও হাতে কী নেই ? 

(A) সময় 

(B) ঘড়ি 

(C) কাজ 

(D) কলম 

Ans: (D) কলম

  1. লেখক ছাড়া তাঁর অফিসের আর সকলের সামনেই রয়েছে –

(A) ক্যালকুলেটর 

(B) কম্পিউটার 

(C) টাইপরাইটার 

(D) টেলিফোন 

Ans: (B) কম্পিউটার

  1. লেখকের লেখাকে ভালোবেসে ছাপার জন্য তৈরি করে দেন – 

(A) তাঁর অধস্তন কর্মচারী 

(B) তাঁর বন্ধু

(C) তাঁর সহকর্মীরা 

(D) তাঁর সহকারী 

Ans: (C) তাঁর সহকর্মীরা

  1. একদিন কোনো কারণে অফিসে কী নিয়ে যেতে ভুলে গেলে বিপদ ? 

(A) চাবি 

(B) কলম 

(C) চশমা 

(D) ঘড়ি 

Ans: (B) কলম

  1. কীসে লিখে লেখকের সুখ নেই ?

(A) কম্পিউটারে 

(B) টাইপরাইটারে

(C) গলা – শুকনো ভোঁতা – মুখ কলমে

(D) ফাউন্টেন পেন – এ 

Ans: (C) গলা – শুকনো ভোঁতা – মুখ কলমে

  1. বাংলা প্রবাদটি হল — কালি নেই , কলম নেই , বলে আমি –

(A) কলমচি 

(B) মুনশি 

(C) লেখক

(D) মন 

Ans: (D) মন

[ আরোও দেখুন: Madhyamik Bengali Suggestion 2023 Click here ]

  1. লেখক ছোটোবেলায় থাকতেন—

(A) গ্রামে 

(B) শহরে 

(C) মফস্সলে 

(D) বিদেশে 

Ans: (A) গ্রামে

  1. লেখক জন্মেছেন ‘ হারিয়ে যাওয়া কালি কলম ‘ প্রবন্ধরচনার— 

(A) ২০ – ২৫ বছর আগে 

(B) ৩০ বছর আগে

(C) ৫০–৬০ বছর আগে

(D) ৭৫ বছর আগে 

Ans: (D) ৭৫ বছর আগে

  1. লেখকরা ছোটোবেলায় কলম তৈরি করতেন –

(A) পাখির পালক দিয়ে 

(B) নলখাগড়া দিয়ে 

(C) হাড় দিয়ে 

(D) রোগা বাঁশের কঞ্চি দিয়ে

Ans: (D) রোগা বাঁশের কঞ্চি দিয়ে

  1. কলমের কালি ধীরে ধীরে চুঁইয়ে পড়ার জন্য কী করণীয় ? 

(A) কলমের মুখটা চিরে দিতে হবে 

(B) কলমের মুখটা সাপ করতে হবে

(C) কলমের মুখটা ঘষে নিতে হবে

(D) কলমের মুখটা একটু ভোঁতা হতে হবে 

Ans: (A) কলমের মুখটা চিরে দিতে হবে

  1. লেখকরা হোমটাস্ক করতেন

(A) শুকনো তালপাতায়

(B) কলাপাতায়

(C) পদ্মপাতায়

(D) শালপাতায়

Ans: (B) কলাপাতায়

  1. অক্ষরজ্ঞানহীনকে লোকে বলে – 

(A) অশ্বের কীবা দিন কীবা রাত 

(B) ক অক্ষর গোমাংস 

(C) কুয়োর ব্যাং 

(D) চোখ থাকতেও অন্ধ

Ans: (B) ক অক্ষর গোমাংস 

  1. ছোটোবেলার কালি তৈরি করতে লেখকদের সাহায্য করতেন— 

(A) মা – পিসি – দিদিরা 

(B) বাবা – কাকা – দাদারা 

(C) স্কুলের মাস্টারমশাইরা

(D) বন্ধুবান্ধবরা

Ans: (A) মা – পিসি – দিদিরা

  1. ত্রিফলা বলতে যে – তিনটি ফলকে বোঝায় , সেগুলি হল – 

(A) হরীতকী ,  সুপারি , এলাচ 

(B) হরীতকী , সুপারি , আমলকী

(C) বহেড়া , হরীতকী , আমলকী 

(D) বহেড়া , সুপারি , আমলকী

Ans: (C) বহেড়া , হরীতকী , আমলকী

  1. ছোটোবেলায় লেখকদের বাড়িতে রান্না হত 

(A) গ্যাসে

(B) স্টোভে

(C) সৌর কুকারে

(D) কাঠের উনুনে

Ans: (D) কাঠের উনুনে

  1. কাঠের উনুনে রান্নার ফলে কড়াইয়ের তলায় জমত—  

(A) কালি 

(B) তেল 

(C) কাঠের গুঁড়ো 

(D) ছাই

Ans: (A) কালি

  1. কড়াইয়ের তলার কালি ঘষে তোলা হত –

(A) কচু পাতা দিয়ে

(B) শিউলি পাতা দিয়ে 

(C) লাউ পাতা দিয়ে

(D) কুমড়ো পাতা দিয়ে

Ans: (C) লাউ পাতা দিয়ে

  1. ছোটোবেলায় লেখকদের লেখালেখির প্রথম উপকরণগুলি ছিল –

(A) খাগের কলম , মাটির দোয়াত , ভূর্জপত্র , ভেষজ কালি 

(B) পালকের কলম , তুলট কাগজ , কাচের দোয়াত , ঘরে বানানো কালি

(C) বাঁশের কলম , মাটির দোয়াত , কলাপাতা , ঘরে তৈরি কালি 

(D) স্লেট , পেনসিল

Ans: (C) বাঁশের কলম , মাটির দোয়াত , কলাপাতা , ঘরে তৈরি কালি 

  1. লেখক প্রাচীন মিশরে জন্মালে কী দিয়ে লিখতেন ?

(A) বাঁশের কঞ্চি

(B) নলখাগড়ার কলম

(C) পালক 

(D) হাড়ের কলম

Ans: (B) নলখাগড়ার কলম

  1. লেখক প্রাচীন ফিনিসীয় হলে লেখার জন্য ব্যবহার করতেন—

(A) পালক

(B) স্টাইলাস

(C) হাড়

(D) নলখাগড়া

Ans: (A) পালক

  1. ‘ স্টাইলাস ‘ আসলে কী ?

(A) প্ল্যাটিনাম শলাকা 

(B) লৌহ শলাকা

(C) ব্রোঞ্জের শলাকা 

(D) তামার শলাকা

Ans: (C) ব্রোঞ্জের শলাকা

  1. সিজার কলম দিয়ে কাকে আঘাত করেছিলেন ?

(A) রোমুলাসকে

(B) কাসকাকে

(C) হেনরিয়েটাকে

(D) ডরোথিকে

Ans: (B) কাসকাকে

  1. চিনারা চিরকাল লিখে আসছে –

(A) তুলিতে

(B) ব্রোঞ্জের শলাকাতে

(C) কুইলে

(D) খাগড়ার কলমে

Ans: (A) তুলিতে

  1. জ্ঞানাঞ্জন শলাকা আসলে –

(A) কাজল পরার কাঠিবিশেষ

(B) কলম 

(C) পেনসিল 

(D) হাড় থেকে তৈরি পেনবিশেষ

Ans: (B) কলম

  1. খাগের কলম একমাত্র দেখা যায় – 

(A) নববর্ষের সময় 

(B) সরস্বতী পূজার সময় 

(C) পরীক্ষার সময়

(D) সরস্বতী পুজোর সময় 

Ans: (B) সরস্বতী পূজার সময়

  1. কাচের দোয়াতে কালির বদলে থাকে –

(A) জল 

(B) রং 

(C) মধু 

(D) দুধ

Ans: (D) দুধ

  1. কুইল হল – 

(A) খাগের কলম

(B) খাগড়ার কলম

(C) পালকের কলম

(D) কঞ্চির কলম

Ans: (C) পালকের কলম

  1. ‘ বাবু কুইল ড্রাইভারস ‘ কথাটি কাদের বলা হত ?

(A) গরম গরম ইংরেজি বলা বাঙালি সাংবাদিকদের 

(B) সরল হিন্দি ভাষায় কথা বলা সাংবাদিকদের 

(C) ভাঙা ভাঙা হিন্দিভাষী সাংবাদিকদের 

(D) সাবলীল বাংলাভাষী সাংবাদিকদের

Ans: (A) গরম গরম ইংরেজি বলা বাঙালি সাংবাদিকদের

  1. ‘ বাবু কুইল ড্রাইভারস ‘ কথাটি বলেছেন—

(A) লর্ড বেন্টিঙ্ক 

(B) লর্ড কার্জন

(C) উইলিয়াম কেরি

(D) হেস্টিংস

Ans: (B) লর্ড কার্জন

  1. পালকের কলম এখন দেখতে পাওয়া যায়

(A) পত্রিকার অফিসে 

(B) সরস্বতী পুজোর সময় 

(C) বিশ্বকর্মা পুজোর সময়

(D) পুরোনো দিনের তৈলচিত্র ফোটোগ্রাফে

Ans: (D) পুরোনো দিনের তৈলচিত্র ফোটোগ্রাফে

  1. কার ছবিতে সামনে দোয়াতে গোঁজা পালকের কলম দেখা যায় ?

(A) দেবী সরস্বতীর 

(B) রবীন্দ্রনাথের

(C) উইলিয়াম জোন্স কিংবা কেরি সাহেবের 

(D) বিদ্যাসাগরের

Ans: (C) উইলিয়াম জোন্স কিংবা কেরি সাহেবের

  1. লেখকের মতে তিনিই হলেন দার্শনিক , যিনি – 

(A) দর্শনের অধ্যাপক 

(B) কানে কলম গুঁজে দুনিয়া খোঁজেন

(C) চোখে চশমা এঁটে বই পড়েন

(D) ভাবের জগতে থাকেন

Ans: (B) কানে কলম গুঁজে দুনিয়া খোঁজেন

  1. লেখক ছেলেবেলায় কাকে পায়ের মোজায় কলম রাখতে দেখেছিলেন ?

(A) মন্ত্রীমশাইকে 

(B) দারোগাবাবুকে 

(C) মাস্টারমশাইকে

(D) পণ্ডিতমশাইকে

Ans: (B) দারোগাবাবুকে

  1. কোনো কোনো অতি আধুনিক ছেলে কোথায় কলম রাখে ?

(A) বুক পকেটে 

(B) পাঞ্জাবির পকেটে 

(C) কাঁধের ছোট্ট পকেটে 

(D) পায়ের মোজায় 

Ans: (C) কাঁধের ছোট্ট পকেটে

  1. ‘ কায়স্থ ‘ আর ‘ রাজপুত ‘ – কে চেনা যায় যথাক্রমে –

(A) কলম ও গায়ের রঙে 

(B) কলম ও গোঁফে

(C) আভিজাত্য ও গোঁফে

(D) দেশপ্রেম ও সত্যবাদিতায়

Ans: (B) কলম ও গোঁফে

  1. কালির অক্ষর নাইকো পেটে , চন্ডী পড়েন –

(A) কালীঘাটে 

(B) বাবুঘাটে 

(C) গঙ্গাঘাটে 

(D) খেয়াঘাটে

Ans: (A) কালীঘাটে

  1. দেশে সবাই সাক্ষর না হলেও কলম এখন – 

(A) অস্পৃশ্য 

(B) সর্বজনীন 

(C) দুর্লভ 

(D) মহার্ঘ

Ans: (B) সর্বজনীন

  1. কলমের দুনিয়ায় সত্যিকারের বিপ্লব ঘটায় –

(A) ব্রোঞ্জের শলাকা

(B) বল – পেন

(C) ফাউন্টেন পেন

(D) কুইল বা পালকের পেন

Ans: (C) ফাউন্টেন পেন

  1. ফাউন্টেন পেনের বাংলা নাম ‘ ঝরনা কলম ‘ দেন – 

(A) বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়

(B) রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

(C) শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়

(D) ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর 

  1. ফাউন্টেন পেনের স্রষ্টা— 

(A) রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর 

(B) লুইস অ্যাডসন

(C) পিটার পার্কার

(D) লুইস অ্যাডসন ওয়াটারম্যান 

Ans: (D) লুইস অ্যাডসন ওয়াটারম্যান

  1. লেখক প্রথম যে – ফাউন্টেন পেনটি কিনেছিলেন , তার নাম হল 

(A) শেফার্ড 

(B) পার্কার 

(C) ওয়াটারম্যান 

(D) জাপানি পাইলট

Ans: (D) জাপানি পাইলট

  1. লেখক তাঁর প্রথম ফাউন্টেন পেনটি কবে নাগাদ কেনেন ? 

(A) প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পর

(B) দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর 

(C) ভারতের স্বাধীনতার পর 

(D) ভারত ছাড়ো আন্দোলনের সময়

Ans: (B) দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর

  1. বিখ্যাত লেখক শৈলজানন্দের ফাউন্টেন পেনের সংগ্রহ ছিল –

(A) ডজন খানেক 

(B) হাফ ডজন

(C) ডজন দুয়েক

(D) ডজন তিনেক

Ans: (C) ডজন দুয়েক

  1. শৈলজানন্দ ফাউন্টেন পেন সংগ্রহের নেশা পেয়েছিলেন 

(A) শরৎচন্দ্রের থেকে 

(B) রবীন্দ্রনাথের থেকে

(C) অবনীন্দ্রনাথের থেকে

(D) তারাশঙ্করের থেকে

Ans: (A) শরৎচন্দ্রের থেকে

  1. আদিতে ফাউন্টেন পেনের নাম ছিল – 

(A) ঝরনা কলম 

(B) রিজার্ভার পেন 

(C) ওয়াটারম্যান 

(D) শেফার্ড

Ans: (B) রিজার্ভার পেন

  1. উন্নতমানের ফাউন্টেন পেনের নির্মাতা কে ছিলেন ? 

(A) ওয়াটারম্যান 

(B) লুইস ওয়াল্টার

(C) অ্যান্ডারসন 

(D) জন স্টিভেনসন

Ans: (C) অ্যান্ডারসন

  1. লেখক কঞ্চির কলমকে ছুটি দেন – 

(A) শহরে হাই স্কুলে ভরতির পর 

(B) কলেজে ওঠার পর

(C) এমএ পরীক্ষার সময়

(D) চাকরিতে ঢোকার পর

Ans: (A) শহরে হাই স্কুলে ভরতির পর

  1. বিদেশে উন্নত ধরনের টেকসই নিব তৈরি হত –

(A) বাঁশ বা কঞ্চি কেটে 

(B) পালক কেটে 

(C) গোরুর শিং বা কচ্ছপের খোল কেটে 

(D) প্ল্যাটিনাম কেটে

Ans: (C) গোরুর শিং বা কচ্ছপের খোল কেটে

  1. প্রথম দিকে লেখা শুকনো করা হত –

(A) ব্লটিং পেপার দিয়ে 

(B) শুকনো বালি দিয়ে 

(C) চক দিয়ে 

(D) কাপড়ের টুকরো দিয়ে

Ans: (B) শুকনো বালি দিয়ে

  1. প্রথম দিকে শুকনো বালি দিয়ে কালি শুকনো করলেও পরের দিকে তা করা হত –

(A) ব্লটিং পেপার দিয়ে 

(B) চক দিয়ে

(C) শুকনো কাপড় দিয়ে 

(D) কোনোটিই নয়

Ans: (A) ব্লটিং পেপার দিয়ে

  1. সোনার দোয়াত কলমের সত্যতা লেখক জেনেছিলেন –

(A) অবনীন্দ্রনাথের দোয়াত সংগ্রহ থেকে 

(B) শৈলজানন্দের কাছ থেকে

(C) সুভো ঠাকুরের দোয়াত সংগ্রহ দেখে

(D) শরৎচন্দ্রের কলম সংগ্রহ থেকে 

Ans: (C) সুভো ঠাকুরের দোয়াত সংগ্রহ দেখে

  1. ফাউন্টেন পেনের পর বাজারে এল –

(A) খাগের কলম 

(B) কঞ্চির কলম 

(C) পালকের কলম 

(D) বল – পেন

Ans: (D) বল – পেন

  1. কম্পিউটার কাদের জাদুঘরে পাঠাবে বলে প্রতিজ্ঞা করেছে ? 

(A) ফাউন্টেন পেনকে 

(B) খাগের কলমকে 

(C) বল – পেনকে 

(D) সব কলমকে

Ans: (D) সব কলমকে

  1. যারা ওস্তাদ কলমবাজ তাদের বলা হত – 

(A) স্টেনোগ্রাফার 

(B) ক্যালিগ্রাফিস্ট 

(C) টাইপিস্ট 

(D) জার্নালিস্ট

Ans: (B) ক্যালিগ্রাফিস্ট

  1. ‘ হারিয়ে যাওয়া কালি কলম ‘ রচনায় লেখকের বয়স কত বলে ধারণা করা হয়েছে – 

(A) চল্লিশ – পঞ্চাশ 

(B) পঞ্চাশ – ষাট 

(C) পঁয়তাল্লিশ – পঞ্চাশ 

(D) ষাট – সত্তর

Ans: (B) পঞ্চাশ – ষাট

  1. উনিশ শতকে বত্রিশ হাজার অক্ষর লেখানোর পারিশ্রমিক ছিল – 

(A) আটআনা 

(B) ষোলোআনা 

(C) বারোআনা 

(D) চারআনা 

Ans: (C) বারোআনা

  1. কলমের শক্তিকে কীসের শক্তির সঙ্গে তুলনা করা হয়ে থাকে ? 

(A) বক্তব্যের 

(B) বন্দুকের 

(C) তলোয়ারের 

(D) কামানের

Ans: (C) তলোয়ারের

.৬২ ‘ অনেক ধরে ধরে টাইপরাইটারে লিখে গেছেন মাত্র একজন । তিনি হলেন – 

(A) সত্যজিৎ রায়

(B) অন্নদাশঙ্কর রায় 

(C) রাজশেখর বসু

(D) সুবোধ ঘোষ

Ans: (B) অন্নদাশঙ্কর রায়

অতিসংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর | হারিয়ে যাওয়া কালি কলম (প্রবন্ধ) শ্রীপান্থ – মাধ্যমিক বাংলা প্রশ্ন ও উত্তর | Madhyamik Bengali Hariya Jawa Kali Kolom Question and Answer : 

  1. ‘ হারিয়ে যাওয়া কালি কলম প্রবন্ধের লেখক শ্রীপান্থের আসল নাম কী ?

Ans: ‘ হারিয়ে যাওয়া কালি কলম ’ প্রবন্ধের লেখক শ্রীপাস্থের আসল নাম নিখিল সরকার । 

  1. লেখে তিনজন ? – এই তিন জন কে কে ?

Ans: ‘ হারিয়ে যাওয়া কালি কলম ‘ প্রবন্ধে বর্ণিত বাংলা প্রবাদ অনুযায়ী এই তিন জন হল- কালি , কলম আর মন । 

  1. লেখক যেখানে কাজ করেন সেটা কীসের অফিস ?

Ans: ‘ হারিয়ে যাওয়া কালি কলম ‘ প্রবন্ধের লেখক শ্রীপান্থ যেখানে কাজ করেন , সেটা লেখালেখির অফিস । 

  1. ‘ কিন্তু আমি ছাড়া কারও হাতে কলম নেই / –কেন ?  

Ans: লেখক শ্রীপান্থ কাজ করতেন একটি সংবাদপত্র অফিসে । সেখানে একমাত্র তিনিই কলমে লিখতেন , বাকি সকলেই লিখতেন কম্পিউটারে । তাই কারও হাতে কলম থাকত না । 

  1. লেখকরা মাঝে মাঝে লেখা থামিয়ে পর্দার দিকে তাকাচ্ছেন কেন ?

Ans: লেখকরা ইতিমধ্যে যা লিখেছেন , তা পর্দায় ফুটে উঠেছে । সেগুলি পড়ার জন্যই তারা মাঝে মাঝে পর্দার দিকে তাকাচ্ছেন ।

  1. কারা , কীভাবে লেখকের লেখাকে ছাপার জন্য তৈরি করে দেন ? 

Ans: লেখকের সহকর্মীরা তাঁকে ভালোবেসে তাঁর লেখা কম্পিউটারে টাইপ করে ছাপার জন্য তৈরি করে দেন ।

  1. একদিন যদি কোনও কারণে কলম নিয়ে যেতে ভুলে যাই তবেই বিপদ । — কী ধরনের বিপদের কথা বলা হয়েছে ?

Ans: লেখক শ্রীপাস্থের অফিসে তিনি ছাড়া সকলেই কম্পিউটারে লিখতেন । কলম নিতে ভুলে গেলে কলম পাওয়া ভার ছিল । আর পেলেও তাতে তিনি লিখে সুখ পেতেন না । 

  1. ‘ দায়সারা ভাবে কোনও মতে সেদিনকার মতো কাজ সারতে হয় । বক্তার এমন মন্তব্যের কারণ কী ?

Ans: লেখক অফিসে কলম নিয়ে না – এলে সেদিন তাঁর লেখায় ব্যাঘাত ঘটত । চেষ্টা করে যদিও বা ভোঁতামুখ একখানি কলম জুটত , তাতে লিখে সুখ পেতেন না । লেখক কাজটি তখন দায়সারাভাবে সারতেন ।

  1. ‘ কালগুণে বুঝি বা আজ আমরাও তা – ই’— বক্তব্যটি প্রশ্ন পরিস্ফুট করো ।

Ans: লেখকের লেখালেখির অফিস , অথচ কলম নেই । তাই ‘ কালি নেই , কলম নেই , বলে আমি মুনশি ‘ প্রবাদটির মাধ্যমে তিনি বলতে চেয়েছেন আমরাও যেন তা অনুসরণ করছি ।

  1. ‘ বড়োরা শিখিয়ে দিয়েছিলেন , ‘ — বড়োরা কী শিখিয়ে দিয়েছিলেন ?

Ans: লেখকরা ছোটোবেলায় বাঁশের কঞ্চি দিয়ে কলম বানাতেন । বড়োরা তখন কলমের মুখটা সরু করার সঙ্গে সঙ্গে চিরে দেওয়ার কথাও শিখিয়ে দিতেন , কালি যাতে চুইয়ে পড়ে ।

  1. ‘ আর সেগুলি বান্ডিল করে নিয়ে যেতাম স্কুলে ।— ‘ সেগুলি বলতে কীসের কথা বলা হয়েছে ?

Ans: লেখকরা ছোটোবেলায় কলাপাতাকে কাগজের মতো করে কেটে তাতে স্কুলের কাজ করতেন । মাস্টারমশাইকে দেখানোর জন্য সেগুলি বান্ডিল করে নিয়ে যাওয়ার কথা বলা হয়েছে । 

  1. গোরু খেয়ে নিলে অমঙ্গল / – গোরু কী খেয়ে নিলে অমঙ্গল এবং সেই অমঙ্গল এড়ানোর জন্য কী করা হত ।

Ans: যে – কলাপাতায় লেখকরা ছোটোবেলায় হোমটাস্ক করতেন , সেগুলি বাইরে ফেললে যদি গোরু খেয়ে নেয় , তবে অমঙ্গল হতে পারে । অমঙ্গল এড়াতে সেগুলো পুকুরে ফেলে দেওয়া হত ।

  1. ‘ আমরা কালিও তৈরি করতাম নিজেরাই কালি তৈরির পদ্ধতিটি কীরুপ ছিল ? 

অথবা , লেখকেরা কীভাবে সহজ পদ্ধতিতে কালি তৈরি করতেন ?

Ans: কড়াইয়ের ভুসো কালি জলে গুলে তাতে হরীতকী ঘষে বা আতপ চাল পোড়া মিশিয়ে , সবশেষে খুস্তিকে লাল করে পুড়িয়ে সেই জলে ছাঁকা দিয়ে কালি তৈরি হত । 

  1. ‘ দোয়াত মানে মাটির দোয়াত ।— ‘ দোয়াত ‘ বলতে কী বোঝায় ?

Ans: ‘ দোয়াত ’ হল কালি রাখার পাত্র । ছোটোবেলায় কালি তৈরির পর ন্যাকড়ায় হেঁকে লেখকরা মাটির দোয়াতে ঢেলে রাখতেন । দোয়াত মাটি ছাড়াও কাচ ও অন্যান্য ধাতুর হত । 

  1. প্রাচীনদের কালি তৈরি প্রসঙ্গে অভিমত কী ছিল ? 

Ans: প্রাচীনেরা তিল , ত্রিফলা আর শিমুল ছাল ছাগলের দুধে ফেলে লোহার পাত্রে রেখে অন্য একটি লোহার খুন্তি দিয়ে উপকরণগুলি ঘষে কালি বানাতেন ।

  1. লেখক ভারতে না – জন্মে যদি প্রাচীন মিশরে জন্মাতেন । তবে কী করতেন ?

Ans: লেখক যদি ভারতে না – জন্মে প্রাচীন মিশরে জন্মাতেন তবে , নীলনদের তীর থেকে নলখাগড়া ভেঙে সেটাকে ভোঁতা করে তুলি কিংবা ছুঁচোলো করে কলম বানাতেন ।

  1. ‘ কলম সেদিন খুনিও হতে পারে বইকি ।’— বক্তব্যটি স্পষ্ট করো ।

Ans: খ্রিস্টের জন্মের আগে রোমের অধীশ্বর জুলিয়াস সিজার ব্রোঞ্চের কলম বা স্টাইলাস দিয়ে কাসকাকে আঘাত করেছিলেন । সে – কথাই এখানে বলা হয়েছে ।

  1. ‘ পালকের কলমও আর চোখে পড়ে না । ‘ –’হারিয়ে যাওয়া কালি কলম ‘ প্রবন্ধ থেকে পালকের কলম সম্পর্কে কী জানা যায় ? অথবা , কুইল কী ?

Ans: পালকের কলমের ইংরেজি নাম ‘ কুইল ’ । কার্জন বাঙালি সাংবাদিকদের ইংরেজি দেখে নাম দেন ‘ বাবু কুইল ড্রাইভারস ‘ । এখন এই ‘ কুইল ‘ কেবল পুরোনো দিনের ছবিতেই দেখা যায় ।

  1. ‘ যন্ত্রটা এক ধরনের পেনসিল সার্পনারের মতো । —কোন যন্ত্রের কথা বলা হয়েছে ?

Ans: পালককে কেটে কলম বানানোর জন্য সাহেবরা একটা ছোটো যন্ত্র বের করেছিলেন । যার মধ্যে পালক ঢুকিয়ে চাপ দিলেই তৈরি হয়ে যেত কলম , সেই কথাই বলা হয়েছে । 

  1. কলম বিক্রি পেশা সম্পর্কে হারিয়ে যাওয়া কালি কলম ‘ প্রবন্ধে লেখক কী বলেছেন ?

Ans: শ্রীপান্থ তাঁর প্রবন্ধে কলম বিক্রির পেশা সম্পর্কে এক বিদেশি সাংবাদিকের কথার প্রতিধ্বনি করে বলেছেন যে , ‘ চৌরঙ্গির ফুটপাতের প্রতি তিনজন বিক্রেতার একজন হলেন কলম বিক্রেতা ।

  1. “ ও দিদি , আপনার খোঁপায় কলম । প্রসঙ্গটি বুঝিয়ে দাও ।

Ans: অনেক সময় ভিড় ট্রামে – বাসে যাতায়াত করতে গিয়ে কারও বুক পকেটে রাখা পেন আটকে যায় কোনো মহিলা যাত্রীর খোঁপায় । সেই প্রসঙ্গেই বক্তার এমন সরস মন্তব্য । 

  1. ‘ কলম তাদের কাছে অস্পৃশ্য । — কেন ?

Ans: বর্তমানে ডট – পেন বা বল – পেনের রমরমার যুগে কলম অত্যন্ত সত্তা ও সর্বভোগ্য হয়ে পড়েছে । পকেটমারদের কাছে তাই হাতসাফাইয়ের বস্তু হিসেবে কলম অস্পৃশ্য ।

  1. ‘ আবার তিনি ছুটলেন কালির সন্ধানে । — কে , কেন কালির সন্ধানে ছুটেছিলেন ?

Ans: ফাউন্টেন পেনের আবিষ্কর্তা লুইস অ্যাডসন ওয়াটারম্যান একজন ব্যবসায়ীর সঙ্গে চুক্তিপত্র সই করার সময় দোয়াত উলটে সব কালি পড়ে যায় । তখন তিনি কালির সন্ধানে ছোটেন ।

  1. ‘ জন্ম নিল ফাউন্টেন পেন। — ফাউন্টেন পেনের জন্মবৃত্তান্তটি উল্লেখ করো ।

Ans: লুইস অ্যাডসন ওয়াটারম্যান একবার এক চুক্তিপত্র সই করার সময় দোয়াত উলটে যাওয়ায় চুক্তি বাতিল হয়ে যায় । এরই বিহিত করতে তিনি ফাউন্টেন পেন আবিষ্কার করেন । 

  1. লেখক কোথা থেকে তাঁর জীবনের প্রথম ফাউন্টেন পেনটি কিনেছিলেন ?

Ans: লেখক শ্রীপান্থ দ্বিতীয় মহাযুদ্ধের বেশ কয়েক বছর পরে কলকাতার কলেজ স্ট্রিটের এক নামি দোকান থেকে তাঁর জীবনের প্রথম ফাউন্টেন পেনটি কিনেছিলেন ।

  1. পেনের নিব ঠিক আছে কিনা তা দোকানদার কীভাবে লেখককে দেখিয়েছিলেন ? 

Ans: দোকানদার টেবিলের একপাশে দাঁড় করানো একটা কাঠের বোর্ডের ওপর কলমটা ছুড়ে দিলেন । তারপর সেটা খুলে নিয়ে লেখককে । দেখালেন যে , নিবটা অক্ষত আছে । 

  1. এই নেশা পেয়েছি আমি শরৎদার কাছ থেকে । – কোন্ নেশার কথা বলা হয়েছে ? 

Ans: ‘ হারিয়ে যাওয়া কালি কলম ‘ প্রবন্ধে প্রবন্ধকার শ্রীপাখ শৈলজানন্দের ফাউন্টেন পেন সংগ্রহের নেশার কথা বলেছেন । তাঁর সংগ্রহে মূল্যবান কলম ছিল প্রায় দু – ডজন ।

  1. লেখক হাই স্কুলে পড়ার সময় কী ধরনের কালি ব্যবহার করতেন ? 

Ans: হাই স্কুলে পড়ার সময় লেখক লাল , নীল কালির ট্যাবলেট দিয়ে কালি বানাতেন । এ ছাড়া দোয়াতে আর বোতলে তৈরি কালিও পাওয়া যেত । 

  1. ‘ অবাক হয়ে সেদিন মনে মনে ভাবছিলাম / – লেখক কী ভাবছিলেন ?

Ans: সুভো ঠাকুরের বিখ্যাত দোয়াত সংগ্রহ দেখে লেখক শ্রীপাদ ভেবেছিলেন যে , শেকসপিয়র থেকে শুরু করে আমাদের শরত্চন্দ্র পর্যন্ত সাহিত্য ও ইতিহাসের বিখ্যাত চরিত্ররা সেইসব দোয়াত ব্যবহার করেই অমর সব রচনা লিখে গেছেন । 

  1. ‘ যন্ত্রযুগ সকলের দাবি মেটাতেই তৈরি । — কী ধরনের দাবির কথা বলা হয়েছে ? 

Ans: ফাউন্টেন পেনের বিজ্ঞাপনে ব্যক্তিবিশেষের চাহিদা ও পছন্দের কথা প্রসঙ্গে শ্রীপান্থের এই উক্তি । কোম্পানি বিভিন্ন শ্রেণির লেখকদের জন্য সাতশো রকমের নিব ও ধনীদের জন্য সোনায় গড়া হিরে বসানো কলমও তৈরি করেছিল ।

  1. ‘ কিন্তু ইতিহাসে ঠাই কিন্তু তার পাকা।— কার , কেন ইতিহাসে ঠাঁই পাকা ?

Ans: কম্পিউটারের যুগে কলমের সুদিনের অবসান হয়েছে । তবু ইতিহাসে কলমের স্থান পাকা । মোগল – সহ বিশ্বের সব দরবারেই লিপিকুশলীরা বিশেষভাবে সম্মানিত হয়ে এসেছেন এই কলম দিয়ে লিখেই । 

  1. শ্রীপান্থের লেখা ‘ হারিয়ে যাওয়া কালি কলম ‘ প্রবন্ধটি থেকে আঠেরো শতকের লিপিকরদের পারিশ্রমিক সম্পর্কে কী জানতে পারা যায় ? 

Ans: অষ্টাদশ শতকে একজন লিপিকর চারখণ্ড রামায়ণ কপি করে পেয়েছিলেন নগদ সাত টাকা , কিছু কাপড় আর মিঠাই । 

  1. ‘ সম্ভবত শেষ পর্যন্ত নিবের কলমের মানমর্যাদা বাঁচিয়ে রেখেছিলেন একমাত্র সত্যজিৎ রায় । ‘ –এ কথার যৌক্তিকতা কতখানি ?

Ans: সত্যজিৎ রায়ের লিপিশিল্পের প্রতি আকর্ষণ সর্বজনবিদিত । তাঁর হস্তলিপির কুশলতা তাঁর অন্যান্য শিল্পকর্মের সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত । তাই তিনিই কেবল নিবের কলমের মানমর্যাদা বাঁচিয়ে রেখেছিলেন ।

  1. মনে মনে সেই ফরাসি কবির মতো বলেছি — ফরাসি কবি কী বলেছিলেন ? 

Ans: ফরাসি কবি বলেছিলেন— ‘ তুমি সবল , আমি দুর্বল । তুমি সাহসী , আমি ভীরু । তবু যদি তুমি আমাকে হত্যা করতে চাও , আচ্ছা , তবে তা – ই হোক । ধরে নাও আমি মৃত ।

  1. ‘ সেই আঘাতেরই পরিণতি নাকি তাঁর মৃত্যু । -কোন্ আঘাতের পরিণতির কথা বলা হয়েছে ।

Ans: বাংলা সাহিত্যে ‘ কঙ্কাবতী ’ ও ‘ ডমরুধর ’ – এর স্রষ্টা ত্রৈলোক্যনাথ মুখোপাধ্যায় নিজের হাতের কলম অসাবধানতাবশত বুকে বিঁধে মারা যান । সেই ঘটনার কথা বলা হয়েছে ।

  1. ‘ দোয়াত যে কত রকমের হতে পারে প্রবন্ধে কত রকমের দোয়াতের কথা বলা হয়েছে ?

Ans: হারিয়ে যাওয়া কালি কমল ‘ প্রবন্ধে লেখক মাটির , কাচের , কাট – গ্লাসের , পোর্সেলিনের , শ্বেতপাথরের , জেডের , পিতলের , ব্রোঞ্জের , ভেড়ার শিংয়ের ও সোনার তৈরি দোয়াতের কথা বলেছেন ।

  1. লেখক শ্রীপান্থ ছোটোবেলায় কীসে ‘ হোম – টাস্ক ’ করতেন ? 

Ans: লেখক শ্রীপান্থ ছোটোবেলায় কলাপাতা কেটে কাগজের মতো সাইজ করে নিয়ে তাতে ‘ হোম – টাস্ক ‘ করতেন । ‘ খাগের কলম দেখা যায় একমাত্র সরস্বতী পুজোর 

  1. সময়’- কেন এমন বলা হয়েছে ?

Ans: এখনকার স্কুলের ছেলেমেয়েরা কলমে লেখে । শহর কিংবা গ্রাম কোথাও আর বাঁশের কঞ্চির কলমের কোনো ব্যবহার নেই । তাই সরস্বতী পুজোর সময়েই একমাত্র খাগের কলম দেখা যায় ।

  1. ফাউন্টেন পেনের আবিষ্কারক কে ?

Ans: ফাউন্টেন পেনের আবিষ্কারক হলেন লুইস অ্যাডসন ওয়াটারম্যান । ‘ নামটা রবীন্দ্রনাথের দেওয়াও হতে পারে 

  1. রবীন্দ্রনাথের দেওয়া নামটি কী ?

Ans: রবীন্দ্রনাথের দেওয়া ফাউন্টেন পেনের নামটি হল ঝরনা কলম । 

  1. দুজন সাহিত্যিকের নাম করো যাঁদের নেশা ছিল ফাউন্টেন পেন সংগ্রহ করা ।  

Ans: শৈলজানন্দ মুখোপাধ্যায় এবং শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় হলেন সেই দুজন সাহিত্যিক , যাঁদের নেশা ছিল ফাউন্টেন পেন সংগ্রহ করা ।

  1. লেখক ছোটোবেলায় কেমন করে কলম তৈরি করতেন ?

Ans: ‘ হারিয়ে যাওয়া কালি কলম ‘ প্রবন্ধ অনুসারে লেখকেরা রোগা বাঁশের কঞ্চি কেটে কলম তৈরি করতেন । আর কলম শুধু ছুঁচোলো হত না , তার মুখটাও চিরে দিতে হত । 

  1. ‘ দার্শনিক তাকেই বলি’— কাকে প্রাবন্ধিক দার্শনিক বলেন ? 

Ans: হারিয়ে যাওয়া কালি কলম ‘ প্রবন্ধে প্রাবন্ধিক ; যিনি কানে কলম খুঁজে রেখে তা সারাদুনিয়ায় কলম খুঁজে বেড়ান , তাকেই দার্শনিক আখ্যা দিয়েছেন । 

  1. … দু’একটা পাশ দিতে পারলেই বুড়ো বুড়িরা আশীর্বাদ করতেন— কী বলে আশীর্বাদ করতেন ? 

Ans: ‘ হারিয়ে যাওয়া কালি কলম ‘ রচনা অনুসারে দু – একটা পাস দিতে পারলেই বুড়োবুড়িরা আশীর্বাদ করে বলতেন , বেঁচে থাকো বাছা তোমার সোনার দোয়াত – কলম হোক ।

  1. ‘ আমি যেখানে কাজ করি— লেখক কোথায় কাজ করতেন ? 

Ans: হারিয়ে যাওয়া কালি কলম ‘ রচনার লেখক একটি লেখালেখির অফিস তথা সংবাদপত্রের অফিসে সাংবাদিকতার কাজ করতেন ।

  1. ‘ ভাবি , আচ্ছা , আমি যদি যিশু খ্রিস্টের আগে জন্মাতাম তাহলে কী হত বলে লেখক মনে করেন ?

Ans: ‘ হারিয়ে যাওয়া কালি কলম ‘ প্রবন্ধে লেখক মনে করেন তিনি জিশু খ্রিস্টের আগে জন্মালে হয়তো নলখাগড়া ভেঙে ভোঁতা করে তুলি বানিয়ে কিংবা বন থেকে হাড় কুড়িয়ে কলম তৈরি করে , মিশরীয় বা ফিনিসীয়দের মতো লিখতেন । 

  1. ‘ মোগল দরবারে একদিন তাদের কত না খাতির , কত না সম্মান এখানে তাঁদের বলতে কাদের বোঝানো হয়েছে ?

Ans: ‘ হারিয়ে যাওয়া কালি কলম ‘ প্রবন্ধ অনুসারে , এখানে ‘ তাঁদের ’ বলতে ‘ ক্যালিগ্রাফিস্ট ‘ বা লিপিকুশলী ওস্তাদ কলমবাজদের কথা বলা হয়েছে ।

  1. ‘ যার পোশাকি নাম স্টাইলাস’— ‘ স্টাইলাস ‘ বলতে কী বোঝানো হয়েছে ? 

Ans: রোম সাম্রাজ্যের অধীশ্বর জুলিয়াস সিজার যে – ব্রোঞ্জের শলাকা বা কলম ব্যবহার করতেন , তার পোশাকি নাম ছিল ‘ স্টাইলাস ‘ ।

  1. ‘ কুইল ড্রাইভারস ‘ কাদের বলা হত ?

Ans: ‘ হারিয়ে যাওয়া কালি কলম ’ প্রবন্ধ অনুসারে , পালকের কলমকে ইংরেজিতে বলা হয় ‘ কুইল ‘ । লর্ড কার্জন বাঙালি সাংবাদিকদের গরম গরম ইংরেজি দেখে তাঁদের ‘ বাবু কুইল ড্রাইভারস ‘ আখ্যা দিয়েছিলেন ।

  1. কালি তৈরির উৎকৃষ্ট পদ্ধতি সম্পর্কে প্রাচীনদের বলা ছড়া বা প্রচলিত প্রবাদটি উল্লেখ করো । অথবা , ‘ প্রাচীনেরা বলতেন — প্রাচীনেরা কী বলতেন ? 

Ans: হারিয়ে যাওয়া কালি কলম ‘ প্রবন্ধে উল্লিখিত প্রাচীনদের বলা ছড়াটি হল , “ তিল ত্রিফলা সিমুল ছালা / ছাগ দুগ্ধে করি মেলা / লৌহপাত্রে লৌহায় ঘসি / ছিঁড়ে পত্র না ছাড়ে মসি । 

  1. ‘ যন্ত্রযুগ সকলের দাবি মেটাতেই তৈরি / — কী ধরনের দাবির কথা বলা হয়েছে ?

Ans: ‘ হারিয়ে যাওয়া কালি কলম ‘ প্রবন্ধ অনুসারে এক ফাউন্টেন পেন কোম্পানির বিজ্ঞাপনে ছিল গায়ক , স্টেনোগ্রাফার , লেখক প্রভৃতি বিভিন্ন পেশার মানুষদের জন্য তাদের সাতশো রকম নিবের বন্দোবস্ত রয়েছে । অর্থাৎ যন্ত্রযুগ সকলের চাহিদা পুরণের জন্যই প্রস্তুত এ কথাই লেখক বলেছেন । 

  1. ক্যালিগ্রাফিস্ট কাদের বলে ?

Ans: হারিয়ে যাওয়া কালি কলম ’ প্রবন্ধ অনুসারে মধ্যযুগে এবং তার পরবর্তীকালে যাঁরা ছিলেন ওস্তাদ কলমবাজ বা লিপিকুশলী , যে সমস্ত লিপিকরদের লেখা পুথি দেখলে চোখ জুড়িয়ে যায় , তাদের বলা হত ক্যালিগ্রাফিস্ট ।

  1. ‘ বাংলায় একটা কথা চালু ছিল— কথাটি কী ? 

Ans: পাঠ্য রচনা অনুসারে চালু কথাটি হল , ‘ কালি নেই , কলম নেই , বলে আমি মুনশি । 

  1. ‘ তখন মনে কষ্ট হয় বই কী ! — কখন মনে কষ্ট হয় ? 

Ans: ‘ হারিয়ে যাওয়া কালি কলম ‘ রচনা অনুসারে লেখকদের প্রথম লেখালেখির সূত্রপাত ঘটেছিল বাঁশের কলম , মাটির দোয়াত , ঘরে তৈরি কালি আর কলাপাতায় । কিন্তু পরে সে – সমস্তই কালের নিয়মে হাতছাড়া হওয়ার উপক্রম হলে তার মনে এমন অনুভূতি হয়েছিল । 

  1. ‘ এই দেখো । নিব ঠিক আছে । কোন্ ঘটনায় বক্তা এরুপ বলেছিলেন ? 

Ans: ‘ হারিয়ে যাওয়া কালি কলম ’ রচনা অনুসারে এক দোকানি লেখককে একটি জাপানি পাইলট কলম দেখিয়ে আচমকা খাপ সরিয়ে সেটি ছুড়ে দিয়েছিলেন টেবিলের এক পাশে দাঁড় করানো একটি কাঠের বোর্ডের ওপর । তারপর অক্ষত কলমটি বোর্ড থেকে খুলে নিয়ে তিনি আলোচ্য মন্তব্যটি করেছিলেন । 

  1. কোন্ প্রধান কবি বা লেখক টাইপরাইটারে লিখতেন ?

Ans: ‘ হারিয়ে যাওয়া কালি কলম ‘ রচনা অনুসারে লেখক অন্নদাশঙ্কর রায় টাইপরাইটারে লিখতেন ।

  1. ‘ কঙ্কাবতী ‘ এবং ‘ ডমরুধর ’ উপন্যাস দুটির লেখক কে বা কারা ? 

Ans: ‘ কঙ্কাবতী ‘ এবং ‘ ডমরুধর ‘ উপন্যাস দুটিরই লেখক হলেন ত্রৈলোক্যনাথ মুখোপাধ্যায় । 

  1. ‘ ওর কাছে ক ’ অক্ষর গোমাংস –’ক ‘ অক্ষর গোমাংস কথার অর্থ কী ?

Ans: ‘ হারিয়ে যাওয়া কালি কলম ‘ প্রবন্ধ অনুসারে ‘ ক’অক্ষর গোমাংস ‘ বলতে অক্ষরজ্ঞানহীন মানুষকে বোঝানো হয় । যার অর্থ গোরুকে অক্ষর খাওয়ালে পাপ কিংবা অমঙ্গল হয় ।

  1. পকেটমাররা এখন আর কলম নিয়ে হাত সাফাইয়ের খেলা দেখায় না কেন ?

Ans: ‘ হারিয়ে যাওয়া কালি কলম ‘ প্রবন্ধের লেখক শ্রীপান্থর মতে কলম এখন এতই সস্তা এবং সর্বভোগ্য হয়ে গেছে যে , পকেটমাররাও আর তা নিয়ে হাত সাফাইয়ের খেলা দেখায় না ।

  1. ‘ রিজার্ভার পেন ‘ কী ? 

Ans: হারিয়ে যাওয়া কালি কলম ‘ রচনা অনুসারে আদিতে ফাউন্টেন পেনের নাম ছিল ‘ রিজার্ভার পেন ‘ । লুই ওয়াটারম্যান তাকেই অনেক উন্নত করে ফাউন্টেন পেন তৈরি করেন । 

  1. ‘ কিন্তু সেসব ফাঁকি মাত্র।- তাৎপর্য লেখো । 

Ans: পালক কলম অর্থাৎ কুইল এবং দোয়াত কলমের পরিবর্তে অফিসে ছদ্মবেশী বল – পেন সাজানো থাকে , যাকে লেখক বলেছেন ‘ ফাকি মাত্র ’ ।

  1. ‘ আমি যদি হতাম স্বয়ং জুলিয়াস সিজার – তাহলে কী হত ?

Ans: লেখক শ্রীপান্থ কল্পনা করেছেন তিনি জুলিয়াস সিজার হলে শ্রেষ্ঠ কারিগরেরা তাঁর হাতে বড়োজোর একটা স্টাইলাস নামের ব্রোঞ্জের শলাকা তুলে দিত , এর বেশি কিছু নয় ।

  1. ‘ আমরা এতকিছু আয়োজন কোথায় পাব ? – ‘ এতকিছু আয়োজন ‘ বলতে কী বোঝানো হয়েছে ? 

Ans: ভালো কালি তৈরি করতে তিল , ত্রিফলা ও শিমুলের । ছাগলের দুধে ফেলে লোহার পাত্রে রেখে , আর একটি লোহার খুক্তি দিয়ে ঘষে কালি বানাতে হত । এখানে এই আয়োজনের কথাই বলা হয়েছে । 

  1. ‘ ফাউন্টেন পেনের এক বিপদ — বিপদটি কী ? 

Ans: ‘ হারিয়ে যাওয়া কালি কলম ‘ রচনা অনুসারে ফাউন্টেন পেনের এক বিপদ হল তা লেখককে নেশাগ্রস্ত করে । লেখক পয়সাওয়ালা হলে তাঁকে দামি কলম সংগ্রহের নেশায় পেয়ে বসে । 

  1. ‘ এত বছর পরে সেই কলম যখন হাতছাড়া হওয়ার উপক্রম— কলম হাতছাড়া হওয়ার উপক্রম কেন ? 

Ans: শ্রীপান্থের মতে ফাউন্টেন , বল – পেন কিংবা ডট – পেনের বহুল প্রচলনের ফলে বাঁশের কলম আজ হাতছাড়া হওয়ার উপক্রম । 

রচনাধর্মীয় প্রশ্নোত্তর | হারিয়ে যাওয়া কালি কলম (প্রবন্ধ) শ্রীপান্থ – মাধ্যমিক বাংলা প্রশ্ন ও উত্তর | Madhyamik Bengali Hariya Jawa Kali Kolom Question and Answer : 

1. ‘ কালগুণে বুঝিবা আজ আমরাও তা – ই ।— ‘ আমরা ‘ কারা ? বক্তব্যটির সাহায্যে লেখক কী বোঝাতে চেয়েছেন ?

Ans: প্রাবন্ধিক শ্রীপান্থের ‘ হারিয়ে যাওয়া কালি কলম ‘ প্রবন্ধে উদ্ধৃত ‘ আমরা ’ শব্দটি পাই । কালি – কলমে যাঁরা ছোটোবেলা থেকে লিখে এসেছেন । এখন তাঁরাই কম্পিউটারের কাছে আত্মসমর্পণ করেছেন । ‘ আমরা ‘ বলতে সেইসব আত্মসমর্পণকারী অগণিত মানুষকে বোঝানো হয়েছে । লেখক যা বলতে চেয়েছেন । | লেখক শ্রীপান্থ তাঁর প্রবন্ধ হারিয়ে যাওয়া কালি কলম – এ যা বলতে চেয়েছেন প্রবন্ধের নামকরণেই তা লুকিয়ে আছে । তিনি এই প্রবন্ধে কতগুলি প্রবাদের সাহায্যে বিষয়টিকে আলাদা একটা মাত্রা দিয়েছেন । লেখার জগতে যন্ত্র – নির্ভরতা বেড়ে যাওয়ায় ক্রমশ বিদায় নিচ্ছে কালি – কলম । বাংলায় একটা প্রবাদ আছে ‘ কালি – কলম – মন , লেখে তিনজন ” অর্থাৎ এই তিনের সামঞ্জস্যই সুন্দর লেখার মূল । বর্তমানে মন থাকলেও কালি – কলম প্রায় লুপ্ত । লেখক সংবাদপত্রের অফিসে কর্মরত । সেখানে তিনি ছাড়া প্রায় সকলেই । কম্পিউটারে লেখালেখির কাজটা করতেন । কোনো কারণে একদিন লেখক কলম না নিয়ে গেলে বিপদে পড়তেন । আর যদিও – বা খুঁজে পেতে কলম একটা জুটত তবে তাতে তিনি লিখে সুখ পেতেন না । সেদিন সব কাজ তিনি দায়সারাভাবে সারতেন । এই বাস্তব অভিজ্ঞতার কথা বলতে গিয়ে কালি নেই , কলম নেই , বলে আমি মুনশি ‘ প্রবাদটি তুলে ধরেছেন । আমরাও যে সময়ের পরিবর্তনে সেই দিকেই এগোচ্ছি অর্থাৎ কালি – কলম না থেকেও আমি লেখক সে – কথা বোঝাতেই উক্ত প্রসম্পটির অবতারণা করেছেন ।

 

 

2. ‘ আমরা কালিও তৈরি করতাম নিজেরাই / -কালি তৈরির পদ্ধতি সম্পর্কে যা জান লেখো ।

Ans: কালি – কলমের অতীত সম্পর্কে আলোচনা করতে গিয়ে লেখক শ্রীপান্থ বাঁশের কঞ্চির কলম তৈরির কথা বলেছেন । একইসঙ্গে সেই কঞ্চির কলম যে কালিতে ডুবিয়ে লেখা হত সেই কালি কীভাবে তৈরি করা হত তাও বলেছেন । লেখকরা নিজেরাই এই কালি তৈরি করলেও মা , পিসিদের সাহায্যও নিতেন । প্রবন্ধে লেখক কালি তৈরির যে দু – রকম পদ্ধতির কথা বলেছেন , তার মধ্যে প্রথমটি আয়োজন – নির্ভর ; সেইসব উপকরণ লেখকদের পক্ষে সংগ্রহ করা কঠিন ছিল । প্রাচীন এই পদ্ধতিতে তিল , ত্রিফলা ( হরীতকী , বহেড়া , আমলকী ) লোহার পাত্রে ছাগলের দুধে ভিজিয়ে রাখতে হত । তারপর একটি লোহার দণ্ড দিয়ে সেটি ভালো করে ঘষে নিতে হত । এই কালি এতটাই টেকসই হত যে , লেখার পাতা ছিঁড়লেও কালি উঠত না । 

  লেখকদের কালি তৈরির পদ্ধতিটি ছিল বেশ সহজ । বাড়িতে কাঠের উনুনে যে – কড়াইয়ে রান্না হত তার তলায় কালি জমত ; সেই কালি লাউপাতা দিয়ে ঘষে তুলে নিয়ে পাথরের বাটিতে রাখা জলে লেখকরা কালি তৈরি গুলে নেওয়া হত । কেউ কেউ এর মধ্যে হরীতকী যেভাবে করতেন ঘষতেন ও পোড়া আতপচাল গুঁড়িয়ে মেশাতেন । সবশেষে খুন্তিকে লাল করে পুড়িয়ে সেই জলে ডোবালে জল ফুটে উঠত । ঠান্ডা হলে ন্যাকড়ায় হেঁকে দোয়াতে ভরে নেওয়া হত ঘরে তৈরি এই কালি । 

 

 

3. ‘ ভাবি , আচ্ছা , আমি যদি জিশু খ্রিস্টের আগে জন্মাতাম ! ‘ — জিশু খ্রিস্ট কে ? লেখক তাঁর আগে জন্মালে কী হত বলে জিশু খ্রিস্ট কে ? 

 Ans: জিশু খ্রিস্ট হলেন খ্রিস্টধর্মের অনুসারীদের উপাস্য ঈশ্বরপুত্র , যিনি প্রেম ও প্রশান্তির সপক্ষে দাঁড়িয়ে ক্রুশবিদ্ধ হয়েছিলেন । জিশু খ্রিস্টের জন্মের সময় থেকে ইংরেজি সাল বা খ্রিস্টাব্দের হিসাব করা হয় । শ্রীপান্থ ছদ্মনামের আড়ালে লেখক নিখিল সরকার কল্পনা করেছেন যে , জিশু খ্রিস্টের আগে জন্মালে তিনি হয়তো ভারতে নয় , জন্ম নিতেন প্রাচীন মিশরে । বাঙালি না হয়ে হতেন প্রাচীন সুমেরিয়ান বা ফিনিসিয়ান । হয়তো নীলনদের তীর থেকে নলখাগড়া ভেঙে লেখকের পূর্বে এনে তাকে ভোঁতা করে তুলি বানিয়ে লিখতেন । কিংবা ছুঁচোলো করে কলম তৈরি করতেন । ফিনিসীয় হলে হয়তো বন থেকে হাড়ের টুকরো কুড়িয়ে নিয়ে কলম বানাতেন । যদি তিনি রোমের অধীশ্বর স্বয়ং জুলিয়াস সিজার হতেন , তবে হয়তো স্টাইলাস নামক ব্রোঞ্জের শলাকাই হত তাঁর কলম । প্রাবন্দির এভাবেই কখনও সুমেরীয় বা ফিনিসীয় , আবার কখনও রোমান হিসেবে নিজেকে কল্পনা করে কলমের ঐতিহাসিক পূর্বসুরিদের সঙ্গে আমাদের পরিচয় করিয়েছেন । এর ফলে তিনি সুকৌশলে হাজার হাজার বছর ধরে । কলমের যাত্রাপথটিকে পাঠকের চোখের সামনে অনায়াসে ফুটিয়ে তুলতে পেরেছেন । 

4. ‘ হারিয়ে কালি কলম ‘ প্রবন্ধে যে নানা ধরনের কলমের বর্ণনা রয়েছে , তা সংক্ষেপে আলোচনা করো । 

Ans: হারিয়ে যাওয়া কালি কলম ‘ প্রবন্ধে লেখক শ্রীপাৰ্শ্ব নানা ধরনের কলমের কথা লিখেছেন । একসময় কলম তৈরি হত সরু বাঁশের কঞ্চি কেটে । তারও বহুকাল আগে , জিশু খ্রিস্টের জন্মের আগে হাড় , নলখাগড়া প্রভৃতি দিয়ে কলম বানানো হত । তারপরে এল স্টাইলাস বা ব্রোঞ্চের শলাকা দিয়ে তৈরি কলম । এ ছাড়া চিনারা চিরকালই তুলিতে লেখে । আবার সরস্বতী পুজোয় দেখা যায় খাগের কলম । একসময় পাখির পালকের মুখ সরু করে তৈরি হত কলম , যার নাম ছিল ‘ কুইল ‘ । আধুনিক যুগে সস্তা ও সহজলভ্য কলমকে বলে ডট – পেন বা বল – পেন । তবে কলমের দুনিয়ায় বিপ্লব এনেছিল ফাউন্টেন পেন বা ঝরনা কলম । একইসঙ্গে আভিজাত্য ও সাবলীলতাই ছিল এই ফাউন্টেন পেনের বিশেষত্ব । একসময় এই কলমের নাম ছিল রিজার্ভার পেন । এভাবে বিভিন্ন কলমের বৈচিত্র্যপূর্ণ বর্ণনা প্রসঙ্গো প্রাবন্ধিক মুনশিয়ানার সঙ্গে কলমের উন্মেষ , বিকাশ ও বিবর্তনের যাত্রাপথটিকেও ফুটিয়ে তুলেছেন ।

 

 

5. ‘ জন্ম নিল ফাউন্টেন পেন । — ফাউন্টেন পেনের স্রষ্টা কে ? বাংলায় কে এই পেনের নামকরণ করেছিলেন ? ফাউন্টেন পেনের জন্মবৃত্তান্তটি সংক্ষেপে লেখো ।

Ans: উদ্ধৃতাংশটি লেখক শ্রীপান্থের ‘ হারিয়ে যাওয়া কালি কলম নামক প্রবন্ধ থেকে গৃহীত । প্রবন্ধে ফাউন্টেন পেনের স্রষ্টা বলা হয়েছে লুইস অ্যাডসন ওয়াটারম্যানকে । বাংলায় এই পেনের নামকরণ করেছিলেন রবীন্দ্রনাথ । তিনি এই পেনের নাম দেন ঝরনা কলম । 

  পৃথিবীর প্রতিটি আবিষ্কারের পিছনেই থাকে নানান গল্প বা ঘটনা । তবে গল্প বা ঘটনা যাই থাক না কেন প্রয়োজনের তাগিদেই যে আবিষ্কার এ কথা সকলেই মানতে বাধ্য । লুইস অ্যাডসন ওয়াটারম্যানের ফাউন্টেন পেন আবিষ্কারের পিছনেও এমনই একটি বৃত্তান্ত রয়েছে । তিনি ছিলেন একজন ব্যবসায়ী । সেকালের অন্য ব্যবসায়ীদের মতো তিনিও দোয়াত – কলম নিয়ে কাজে বের হতেন । একবার তিনি এক ব্যবসায়ীর ফাউন্টেন পেনের সঙ্গে চুক্তিপত্র সই করতে গিয়েছিলেন । দলিল জন্মবৃত্তান্ত কিছুটা লেখা হয়েছে এমন সময় দোয়াত হঠাৎ উপুড় হয়ে পড়ে গেল কাগজে । আবার তিনি ছুটলেন কালির সন্ধানে । ফিরে এসে তিনি শোনেন , ইতিমধ্যে আর একজন ব্যবসায়ী সইসাবুদ করে চুক্তি পাকা করে ফেলেছেন । এই ঘটনার প্রেক্ষিতে বিমর্ষ ওয়াটারম্যান প্রতিজ্ঞা করেন যে , এর একটা বিহিত তাঁকে করতেই হবে । এরপরেই তাঁর নিরলস প্রচেষ্টায় জন্ম নিল ফাউন্টেন পেন । 

6. ‘ আমার মনে পড়ে প্রথম ফাউন্টেন কেনার কথা ।— ‘ আমার ‘ বলতে কার কথা বোঝানো হয়েছে ? তাঁর ফাউন্টেন কেনার ঘটনাটি সংক্ষেপে বিবৃত করো । 

Ans: শ্রীপাস্থের ‘ হারিয়ে যাওয়া কালি কলম ‘ প্রবন্ধে ‘ আমার ‘ বলতে এখানে স্বয়ং লেখককে বোঝানো হয়েছে । পেন কেনার অভিজ্ঞতা 

  লেখকের প্রথম ফাউন্টেন কেনার অভিজ্ঞতাটি তাঁর মনে রয়ে গেছে । সময়টা ছিল দ্বিতীয় মহাযুদ্ধের কয়েক বছর পর । লেখক কলেজ স্ট্রিটের এক নামি দোকানে ফাউন্টেন পেন কিনবেন বলে গিয়েছিলেন । কী পেন কিনবেন দোকানি এ কথা জানতে চাওয়ায় লেখক কিছুটা ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে যান । তারপর দোকানি তার স্বভাবসুলভ ভঙ্গিতে পার্কার , শেফার্ড , ওয়াটারম্যান , সোয়ান , পাইলট প্রভৃতি পেনের দামসহ নামগুলি মুখস্থ বলতে লাগলেন । ইতিমধ্যে দোকানদার তাঁর মুখের দিকে তাকিয়ে পকেটের অবস্থা আন্দাজ করে সস্তার এক পাইলট নিয়ে যাওয়ার কথা বলেন । জাপানি পাইলট কতটা টেকসই তা বোঝানোর জন্য দোকানি খাপ খুলে সার্কাসের ছুরির খেলা দেখানোর আদলে একটা কার্ডবোর্ডের ওপর সেটি ছুঁড়ে মারেন । তারপর পেনটি কার্ডবোর্ড থেকে খুলে লেখককে নিরটি যে অক্ষত আছে তা দেখালেন । এইভাবে সেদিন লেখক জাপানি পাইলটে মুগ্ধ হয়েছিলেন । দিনের শেষে একখানি জাদু পাইলট নিয়ে বাড়ি ফিরেছিলেন । নামিদামি ফাউন্টেনের ভিড়ে সেই জাপানি পাইলটকে লেখক অনেক দিন অবধি বাঁচিয়ে রেখেছিলেন ।

7. ‘ আমি ছিলাম কালি কলমের ভক্ত / -উদ্ধৃতিটির অর্থ বুঝিয়ে দাও । ফাউন্টেন পেনের নানা ধরনের নিবের বর্ণনা দাও ।

Ans: হারিয়ে যাওয়া কালি কলম ‘ প্রবন্ধের লেখক শ্রীপান্থ নিজের উদ্ধৃতিটির অর্থ ছেলেবেলার স্মৃতিচারণ করেছেন । তিনি ‘ কালি – কলম ‘ ভক্ত বলতে বোঝাতে চেয়েছেন দোয়াত ও নিবের কলমকে । একে তিনি ‘ কালি – খেকো কলম ’ বলে রসিকতাও করেছেন । এই কলমই তাঁর সবচেয়ে পছন্দ । 

  ফাউন্টেন পেনের শৌখিনতা ও আভিজাত্য ছিল উল্লেখযোগ্য । তাদের জন্য ছিল বিদেশি কালি । নিব এবং হ্যান্ডেলও ছিল নানা ধরনের । যেমন ছিল ছুঁচোলো মুখের নিব , তেমনই চওড়া মুখের ফাউন্টেনের নানা নিবও ছিল । বিদেশে গোরুর শিং বা কচ্ছপের খোল ধরনের নিব কেটে টেকসই ও উন্নতমানের নিব তৈরি হত । কখনো কখনো শিংয়ের নিবের মুখে বসানো হত হিরে । প্ল্যাটিনাম , সোনা ইত্যাদিতে মুড়ে তাকে আরও দামি আর মজবুত করা হত । পালকের কলম তাড়াতাড়ি ভোঁতা হয়ে যায় বলে ফাউন্টেন পেনের নিবকে মজবুত করতে এসব ব্যবস্থা গ্রহণ করা হত । এই প্রসঙ্গ আলোচনাকালে ‘ কালি – থেকো কলম ’ – এর প্রতি লেখকের ব্যক্তিগত ভালোবাসা ও দুর্বলতাটিও স্পষ্টরূপে ফুটে ওঠে । বিশেষত কলমপ্রিয় এক লেখকের বিভিন্ন ধরনের কলমের শৈল্পিক বিশেষত্ব ও সুষমার প্রতি আগ্রহ – আকর্ষণের দিকটিও এখানে প্রচ্ছন্ন থাকে না । কলমের সঙ্গে তার ভক্তের যে পরমমমতার সম্পর্ক , পাঠক যেন তার চিরকালীন সাক্ষী হয়ে ওঠে ।

8. দোয়াত যে কত রকমের হতে পারে , না দেখলে বিশ্বাস করা শম্ভু ।— ‘ হারিয়ে যাওয়া কালি কলম ‘ প্রবন্ধে লেখক শ্রীপাদ কালির দোয়াতের যে – বৈচিত্র্যোর কথা লিখেছেন , তা আলোচনা করো । 

Ans: হারিয়ে যাওয়া কালি কলম ‘ প্রবন্ধে প্রাবন্ধিক শ্রীপান্থ কালির দোয়াতের নানা বৈচিত্র্যের কথা জানিয়েছেন । দোয়াত নানারকমের হয় কাচের , কাটগ্লাসের , পোর্সেলিনের শ্বেতপাথরের , জেডের , পিতলের , ব্রোঞ্ঝের , ভেড়ার শিংয়ের , এমনকি সোনারও । একসময়ে মেধাবী ছেলেমেয়েরা পরীক্ষায় ভালোভাবে পাস করলে , গুরুজনরা ‘ সোনার দোয়াত কলম হোক ‘ বলে আশীর্বাদ করতেন । সোনার দোয়াত – কলম যে সত্যিই হত , প্রাবন্ধিক তা প্রত্যক্ষ করেছিলেন স্বনামধন্য সুভো ঠাকুরের ব্যক্তিগত দোয়াত সংগ্রহ দেখতে গিয়ে । তাঁর সংগ্রহের কোনো কোনো দোয়াতের সঙ্গে সাহিত্য ও ইতিহাসের নানা চরিত্রের যোগ পর্যন্ত ছিল । এই সমস্ত দোয়াত দেখে বিস্মিত প্রাবন্ধিকের মনে হয়েছিল শেকসপিয়র , দাস্তে , মিলটন , কালিদাস , ভবভূতি , কাশীরাম দাস , কৃত্তিবাস , রবীন্দ্রনাথ , বঙ্কিমচন্দ্র , শরৎচন্দ্র প্রমুখ দিপাল ব্যক্তি তাঁদের অমর সৃষ্টি রচনা করেছেন এমনই কোনো – না – কোনো দোয়াতের কালি দিয়ে । পৃথিবীর বিখ্যাত সমস্ত কাব্য – নাটকের জন্ম এ হেন সব দোয়াতের কালি থেকে ভেবে প্রাবন্ধিক রোমান্বিত হয়েছেন । 

10. ‘ ফলে আমার মতো আরও কেউ কেউ নিশ্চয় বিপন্ন বোধ করছেন । আমার মতো আরও কেউ কেউ বলতে কাদের কথা বলা হয়েছে । তাঁরা বিপন্ন বোধ করছেন কেন ?

Ans: আমার মতো আরও কেউ কেউ – কারা উত্তর হারিয়ে যাওয়া কালি কলম ‘ প্রবন্ধের রচয়িতা শ্রীপান্থ ‘ আমার মতো আরও কেউ কেউ বলতে তাঁর মতো কলমপ্রিয় মানুষের কথা বোঝাতে চেয়েছেন । বিশেষত সেইসব লেখক , যাঁরা কালি – কলমের বিশেষ ভক্ত , তাঁদের কাছে কম্পিউটারের রমরমা এক দুঃসংবাদ । কারণ এতে কালি – কলমের ব্যবহার ক্রমশ কমতে কমতে একসময় সম্পূর্ণ লুপ্ত হবে । 

  কম্পিউটারের আবিষ্কার মানুষকে বেগ দিলেও তার আবেগ কেড়ে নিয়েছে । হাতের লেখার মধ্যে যে – মর্মস্পর্শিতা থাকে , তা যান্ত্রিক হরফে খুঁজে পাওয়া যায় না । মানুষের দীর্ঘদিনের লেখার সাথি কালি – কলমকে ধীরে ধীরে অবলুপ্তির পথে ঠেলে দিচ্ছে এই কম্পিউটার । ফলে যেসব মানুষজন আজও কম্পিউটারের কি – বোর্ডের তুলনায় কালি – কলমকেই বেশি আপন মনে করেন , শ্রীপান্থের মতো সেইসব লোকজন বিপন্ন বোধ করছেন । এই বিপন্নতা কলমের সঙ্গে তার ভক্তের সম্পর্কচ্ছেদের বিপন্নতা । কলমের সঙ্গে মানুষের সম্পর্ক বহু পুরোনো । প্রাচীনকাল থেকে কলমের নানা বিবর্তনের সাক্ষী থেকেছে মানুষ । তার ভাব প্রকাশের হাতিয়ারের অবলুপ্তির আশঙ্কায় সন্দিহান প্রাবন্ধিক আন্তরিক বেদনাবোধ থেকে এমন মন্তব্য করেছেন ।

11. ‘ মোগল দরবারে একদিন তাঁদের কত না খাতির , কত না সম্মানি ‘ — ‘ তাদের বলতে কাদের কথা বলা হয়েছে ? তাঁদের খাতির ও সম্মানের পরিচয় দাও । 

Ans: হারিয়ে যাওয়া কালি কলম ‘ প্রবন্ধে উদ্ধৃত অংশে ‘ তাঁদের বলতে ওস্তাদ কলমবাজাদের বোঝানো হয়েছে । পারিভাষিক শব্দে এদের বলে ‘ ক্যালিগ্রাফিস্ট ‘ বা ‘ তাদের পরিচয় ‘ লিপিকুশলী ‘ । খাতির ও সম্মান → যাঁরা ওস্তাদ কলমবাজ , তাঁদের স্থান ইতিহাসে পাকা । মোগল দরবারে তাঁদের প্রচুর খাতির ও সম্মান ছিল । শুধু মোগল দরবার নয় , পৃথিবীর সর্বত্রই তাঁদের কদর ছিল । এমনকি বাংলা দেশেও রাজা – জমিদাররা লিপিকুশলীদের গুণের কদর করতেন । তাঁদের ভরণ – পোষণের ব্যবস্থাও করা হত । সাধারণ গৃহস্থেরাও এই লিপিকরদের ডেকে পুথি নকল করাতেন । আজও সেসব পুথি দেখলে চোখ জুড়িয়ে যায় । সংস্কৃতে যাকে বলে ‘ সমানি সমশীর্ষাণি ঘনানি বিরলানি চ ’ অর্থাৎ সব অক্ষর সমান , প্রতিটি ছত্র সুশৃঙ্খল ও পরিচ্ছন্ন । এইসব লিপিকরদের হস্তাক্ষর ছিল মুক্তোর মতো । অথচ এঁদের রোজগার ছিল সামান্যই । অষ্টাদশ শতকে এক লিপিকুশলী চারখণ্ড রামায়ণ কপি করে নগদ সাত টাকা , কিছু কাপড় আর মিঠাই সাম্মানিক হিসেবে পেয়েছিলেন অর্থাৎ সেসময়ে এদের উপার্জন কম হলেও গুণের সমাদর ছিল ।

12. ‘ কলমকে বলা হয় তলোয়ারের চেয়েও শক্তিধর । —বিষয়টি ব্যাখ্যা করো । এমন বলার কারণ কী বলে তোমার মনে হয় ?  

Ans: শ্রীপান্থ লিখিত ‘ হারিয়ে যাওয়া কালি কলম ‘ প্রবন্ধ থেকে উদ্ধৃত উক্তিটি একটি প্রবাদপ্রতিম বাক্য । প্রাবন্ধিক ঈষৎ ঠাট্টার হলে এটিকে আক্ষরিক অর্থে ব্যবহার করেছেন । তলোয়ারের চেয়ে বন্দুকের শক্তি বেশি । তাই ফাউন্টেন পেন যেন আভাসে – ইঙ্গিতে সে কথাই বলতে চায় । কারণ ফাউন্টেন পেনের বিভিন্ন অংশগুলিকে ‘ ব্যারেল , ‘ কার্টিজ ’ ইত্যাদি নামে ডাকা হয় । এই শব্দগুলির সঙ্গে গোলা – বন্দুকের যোগাযোগের কথা কে না জানে । তবে বারুদের সঙ্গে কলমের কোনো সম্পর্ক নেই । ইতিহাসে এমন অনেক লেখকের উল্লেখ পাওয়া যায় , যাঁদের লেখনীর ধার , তলোয়ারের চেয়েও বেশি । আর সেই ক্ষুরধার কলমকে হাতিয়ার করে তাঁরা অনেক কুর , মিথ্যেবাদী প্রতিপক্ষের সঙ্গে লড়াই চালিয়েছেন । উদ্ধৃত বক্তব্যের কারণ 

  এখানে কলমের শক্তির অন্তর্নিহিত অর্থ হল , মানুষের লিখন – দক্ষতা বা লেখনীর ক্ষমতা । বন্দুক বা তলোয়ারের মতো অস্ত্র প্রয়োগ করে মানুষকে হত বা আহত করা যায় , কিন্তু মানুষের চিন্তাশক্তি তথা লেখনীর শক্তি শত সহস্র মানুষের ভাবনা , আদর্শ কিংবা দর্শনকে কেবল প্রভাবিতই করে না , সম্পূর্ণ বদলেও দিতে পারে । আর লেখার এই প্রভাব বা প্রতিক্রিয়া যুগযুগান্তরব্যাপী স্থায়ী হয় । তাই কলমকে তলোয়ারের চেয়েও শক্তিধর বলে বিবেচনা করা হয় । বরং এক্ষেত্রে বলা চলে , কলমই সর্বশ্রেষ্ঠ অস্ত্র ।

12. ‘ সুতরাং , যখন দেখি এত পরিবর্তনের মধ্যে কেউ কলম আঁকড়ে পড়ে আছেন তখন বেশ ভালো লাগে’- কোন পরিবর্তনের কথা বলা হয়েছে । ‘ কলম আঁকড়ে পড়ে থাকা ‘ – র কয়েকটি নিদর্শন প্রবন্ধ অনুসারে লেখো । কোন পরিবর্তন ধরার বিবর্তন । 

Ans: প্রাবন্ধিক শ্রীপান্থ উদ্ধৃত অংশে কলমের প্রাচীন থেকে আধুনিক যুগে বিবর্তনের কথা বলেছেন । এই বিবর্তন আসলে কালি – কলম ছেড়ে কম্পিউটারের কি – বোর্ড আঁকড়ে ‘ কলম আঁকড়ে পড়ে থাকা – র নিদর্শন আধুনিক যুগে কম্পিউটারের ব্যবহার অপ্রতিরোধ্য হওয়া সত্ত্বেও এই যুগের সাহিত্যিকদের অধিকাংশই কলম ব্যবহারেই স্বচ্ছন্দ । অন্নদাশঙ্কর রায় ও সুভাষ মুখোপাধ্যায় টাইপরাইটার ব্যবহার করলেও , অন্যেরা প্রায় সকলেই কলমে লিখতেন । সত্যজিৎ রায় নিবের কলম ব্যবহার করেছেন । সারাজীবন । লিপিশিল্প ছিল তাঁর শখ । স্বয়ং রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরও যে চিত্রশিল্পী হিসেবে সম্মান লাভ করেছিলেন তারও সূত্রপাত তাঁর পাণ্ডুলিপিতে । তিনি অক্ষর কাটাকুটি করতে গিয়ে সৃষ্টি করেছিলেন ছন্দবদ্ধ সাদা – কালো চিত্রের । কম্পিউটারের আঁকা ছবি কতটা মানবিক , এই প্রশ্ন তোলেন প্রাবন্ধিক । এই যন্ত্রসভ্যতার যুগেও কলমের সঙ্গে লেখকের মানবিক বন্ধনটুকু সযত্নে রক্ষা করে চলেছেন যাঁরা , প্রাবন্ধিক তাঁদের দেখে আনন্দিত হন এবং আশ্বস্ত বোধ করেন । এই বিবর্তমান সভ্যতার মাঝে লেখকের সঙ্গে কলমের চিরকালীন অপরিবর্তনীয় ধ্রুব সম্পর্ককে আঁকড়ে ধরেই তিনি বেঁচে থাকতে চান ।

13. কালি – কলমের প্রতি ভালোবাসা ‘ হারিয়ে যাওয়া কালি কলম ‘ প্রবন্ধে কীভাবে ফুটে উঠেছে , তা আলোচনা করো ।

Ans: শ্রীপান্থের লেখা ‘ হারিয়ে যাওয়া কালি কলম ‘ প্রবন্ধে দোয়াত , কলম , কালি প্রভৃতি লেখার সরঞ্জামগুলিকে ঘিরে লেখকের মমতা , স্মৃতিমেদুরতা আর ভালোবাসা ফুটে উঠেছে । কলমের প্রতি ভালোবাসার প্রকাশ ছোটোবেলায় লেখক তাঁর গ্রামের বাড়িতে নিজের হাতেই কালি , কলম বানিয়ে নিতেন । বাঁশের কঞ্চি কেটে তৈরি হত কলম । রান্নার কড়াইয়ের নীচের ভুসো কালি লাউপাতা দিয়ে ঘষে জলে গুলে ফুটিয়ে কালি বানানো হত । ক্রমশ বাঁশের কলমের বদলে জায়গা করে নিল ফাউন্টেন পেন । সে – পেনের প্রেমে পড়ে গেলেন লেখক । এরপর বাজারে বল পয়েন্ট পেন এলেও সে – পেন লেখকের মনে ধরল না । যদিও সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে গিয়ে তার কাছেই আত্মসমর্পণ করতে হল তাঁকে । যন্ত্রসভ্যতার হাত ধরে এল কম্পিউটার । দিন ফুরোল কলমের । এখন সবাই কম্পিউটারেই লেখে । কিন্তু লেখক এবং তাঁর মতো কিছু মানুষ এখনও কলম ফেলে কম্পিউটারকে আপন করে নিতে পারেননি । তাই যন্ত্রের দাপটে কালি – কলমের এই হারিয়ে যাওয়ার যুগে লেখক বারবার আঁকড়ে ধরেছেন তাঁর ছেলেবেলার কলমের স্মৃতিকে । হারিয়ে যাওয়া সেইসব কালি – কলমের কথা ভেবে ভারাক্রান্ত হয়ে উঠেছে তাঁর মন ।

14. ‘ হারিয়ে যাওয়া কালি কলম ‘ প্রবন্ধে লেখক আধুনিক যন্ত্রযুগকে মেনে নিতে চাইছেন না — মন্তব্যটির যথার্থতা বিচার করো ।

  ‘ হারিয়ে যাওয়া কালি কলম ‘ প্রবন্ধে লেখক শ্রীপান্থ কলমের উদ্ভব – বিবর্তন ও পরিণতির দীর্ঘ যাত্রাপথের এক মনোগ্রাহী বিবরণ লিপিবদ্ধ করেছেন । সুদূর অতীতে নীলনদের তীরে নলখাগড়া ভেঙে কলম বানানো থেকে ফিনিসীয়দের মতো হাড়কে কলম হিসেবে ব্যবহার কিংবা জুলিয়াস সিজারের স্টাইলাস নামের শলাকা , তাঁর কাল্পনিক পথ – পরিক্রমায় বাদ যায়নি কোনো কিছুই । এসবই হয়ে উঠেছে কলমের প্রতি লেখকের আন্তরিক ভালোবাসার প্রমাণ । তিনি পরমমমতায় নিজের ছোটোবেলার গ্রামের বাড়িতে কঞ্চি কেটে কলম এবং রান্নার কড়াইয়ের নীচের ভুসো কালি লাউপাতা দিয়ে ঘষে জলে গুলে ও ফুটিয়ে কালি তৈরির গল্প বলেছেন । প্রসঙ্গক্রমে এসেছে কঞ্চি , খাগ কিংবা পালকের কলমের সঙ্গে বিভিন্ন রকমের দোয়াতের প্রসঙ্গ । সে – সময়ে লেখালেখি যে ছোটোখাটো একটা অনুষ্ঠান ছিল , তা যেন আমাদের কাছে জীবন্ত হয়ে উঠেছে । এরপর আবিষ্কৃত হল ফাউন্টেন পেন ; লেখক তার প্রেমে পড়লেন । কলমের সঙ্গে এক চিরকালীন মানবিকতার সম্পর্কে আবদ্ধ হলেন । তারপর কালের নিয়মে হাজির হল কম্পিউটার । দিন ফুরোল কলমের । এখন সবাই অভ্যস্ত হয়ে উঠেছে কম্পিউটারের সঙ্গে । কিন্তু এত পরিবর্তনের মধ্যেও লেখক কলমকে আঁকড়ে ধরেই বেঁচে থাকতে চান । তাঁর সঙ্গে কলমের আশৈশব ভালোবাসা – দুর্বলতার সম্পর্ক । কলমের কাছে এক ভক্তের সমর্পণের সেই ছবিই রচনায় ফুটে ওঠে ; যে – যন্ত্রযুগকে অস্বীকার করে আজও কলমের স্বপ্ন – সম্ভাবনায় বিভোর হয়েই বাকি জীবনটা কাটিয়ে দিতে চায় । 

15. ‘ কলম তাদের কাছে আজ অস্পৃশ্য – কলম কাদের কাছে অস্পৃশ্য ? প্রবন্ধ অনুসারে অস্পৃশ্য হওয়ার কারণ লেখো ।

Ans: শ্রীপান্থর হারিয়ে যাওয়া কালি কলম ’ প্রবন্ধ অনুসারে এখন পকেটমারেরাও আর কলম নিয়ে হাতসাফাইয়ের কলম যাদের কাছে অস্পৃশ্য খেলা দেখায় না । সস্তা কলম আজ তাদের কাছেও নিতান্তই অস্পৃশ্য । অস্পৃশ্য হওয়ার কারণ

   লেখক পাঠ্য রচনায় কলমের সর্বজনীন হয়ে ওঠার বিবরণ দিয়েছেন । কঙি , খাগ কিংবা পালকের কলমকে সরিয়ে ক্রমে ফাউন্টেন পেন সকলের মন জয় করে নেয় । এরপর ডট – পেন কিংবা বল – পেন আসার পরে দেখা দেয় কলমের বিস্ফোরণ । একসময় বলা হত , ‘ কলমে কায়স্থ চিনি , গোঁফেতে রাজপুত । ‘ কিন্তু বর্তমানে কলম বা গোঁফ কোনোটাই আর বিশেষ কারও নয় । এক বিদেশি সাংবাদিকের মতে চৌরঙ্গি অঞ্চলের প্রতি তিনজন ফেরিওয়ালার একজনের পেশা কলম বিক্রি । ফলে সবাই সাক্ষর না – হলেও প্রত্যেকের পকেটে এখন কলম । অতিআধুনিক ছেলেদের কলম আবার বুক – পকেটে নয় ; কাঁধের ছোট্ট পকেটে শোভা পায় । কেউ কেউ আবার তা চুলেও ধারণ করেন । ট্রামে – বাসে ভিড়ের পরিণামে মহিলাযাত্রীর খোঁপাতেও কলম আটকে যায় । অর্থাৎ কলম আজ অত্যন্ত সস্তা , সহজলভ্য এবং সর্বজনভোগ্য । তাই কলমের কোনো মূল্য বা দাম না থাকায় পকেটমারেরাও আর কলমকে নিয়ে হাতসাফাইয়ের খেলা দেখায় না । কলমের অস্পৃশ্য হয়ে ওঠার এই কারণের কথাই লেখক বলেছেন । 

16. ‘ এত বছর পরে সেই কলম যখন হাতছাড়া হওয়ার উপক্রম , তখন মনে কষ্ট হয় বইকী ! – লেখক যেসব কলমের কথা বলেছেন তার পরিচয় দাও । এই প্রসঙ্গে কালি তৈরির ঘরোয়া পদ্ধতিটি বর্ণনা করো ।

Ans: হারিয়ে যাওয়া কালি কলম ‘ প্রবন্ধ অনুসারে লেখক তাঁর ছোটোবেলায় প্রথম লেখালেখি প্রসঙ্গে বাঁশের কঞ্চির কলমের কথা বলেন । সরু বাঁশের কঞ্চি কেটে মুখটি ছুঁচোলো করে , কলমের পরিচয় সাবধানে চিরে দিতে হত । যাতে একসঙ্গে কালি গড়িয়ে না পড়ে যায় । এ ছাড়াও তিনি খাগের কলম এবং পালকের কলম বা কুইলের কথাও বলেছেন । 

  1. নং প্রশ্নের উত্তরের দ্বিতীয় অংশটি দ্যাখো ।

17. এক কালে বাংলায় তাকে বলা হতো ঝরনা কলম —তাকে বলতে কী বোঝানো হয়েছে ? ঝরনা কলমের ইতিহাস সংক্ষেপে লেখো ।

Ans: 5. নং প্রশ্নের উত্তর দ্যাখো । 

18. ‘ আশ্চর্য , সবই আজ অবলুপ্তির পথে । — কোন্ জিনিস আজ অবলপ্তির পথে । এই অবলুপ্তির কারণ কী ? এ বিষয়ে লেখকের মতামত কী । 

Ans: হারিয়ে যাওয়া কলম ‘ রচনায় লেখক শ্রীপান্থ , আধুনিকতার কালপ্রবাহে ক্রমশ অবলুপ্ত হতে চলা কলমের কথা উপরিউক্ত উদ্ধৃতাংশে বলতে চেয়েছেন । B [ ] নবীন বল – পের্ন দোয়াত , কালি , নিবের কলমের স্থান দখল করেছে অনেক আগেই । বিজ্ঞানের ক্রমোন্নতির সোপান ধরে কম্পিউটারের কল্যাণে নবীন বল – পেনও তার মহিমা হারাতে বসেছে । অবলুপ্তির কারণ এযুগের নবীন লেখকেরা গোড়া থেকেই কম্পিউটারে লিখতে অভ্যস্ত হয়ে পড়েছেন । কালপ্রবাহে কলমের অবলুপ্তিতে লেখক বিস্ময় প্রকাশ করেছেন , আশ্চর্য হয়েছেন । কলম ছাড়া লেখালেখির কথা কিছুকাল আগেও মানুষ ভাবতে পারেনি । কলম আর লেখকের সম্পর্ক অবিচ্ছেদ্য , আলাদা করার কথা মানুষের মনেও আসত না । কম্পিউটারের কল্যাণে লেখকের মতামত কলমের অবলুপ্তিতে লেখক বিপন্ন বোধ করছেন । তিনি মনে করছেন , কম্পিউটার যেন তাদের জাদুঘরে পাঠাবে বলে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হয়েছে । বাঁশের কলম , খাগের কলম ছেড়ে বল – পেনে আত্মসমর্পণ করেও লেখক আজ বিপন্ন বোধ করেছেন । ‘ যদি হাতের লেখা মুছে যায় চিরকালের জন্য ‘ — এই হতাশাব্যঞ্জক চিন্তায় তিনি বিচলিত হয়ে উঠেছেন । কম্পিউটারের বিশ্বব্যাপী প্রভাবে সর্বপ্রকার কলমের অবলুপ্তির কথা ভেবেই লেখক একইসঙ্গে আশ্চর্য ও আতঙ্কিত হয়েছেন ।

19. ‘ হারিয়ে যাওয়া কালি কলম ‘ রচনাটির নামকরণের সার্থকতা বিচার করো । 

Ans: ‘ নামকরণের সার্থকতা ‘ অংশটি দ্যাখো । 

20. ‘ দ্বিতীয় মহাযুদ্ধের বেশ কয়েক বছর পরের ঘটনা’ দ্বিতীয় মহাযুদ্ধ কী ? তার বেশ কয়েক বছর পরের ঘটনাটি কী ছিল ? 

Ans: ১৯৩৯ খ্রিস্টাব্দের ১ সেপ্টেম্বর হিটলারের জার্মানির পোল্যান্ড আক্রমণের মধ্য দিয়ে দ্বিতীয় মহাযুদ্ধের আরম্ভ হয় । প্রায় ২১৪৯ দিন ধরে চলে ১৯৪৫ খ্রিস্টাব্দের ২ সেপ্টেম্বর জাপানের দ্বিতীয় মহাযুদ্ধ আত্মসমর্পণের মাধ্যমে এই মহাযুদ্ধের সমাপ্তি ঘটে । পৃথিবীর বহু দেশ প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষভাবে সেইসময় দুটি শপ্তিশিবিরে ভাগ হয়ে যায় । এর একটি হল — ইংল্যান্ড , ফ্রান্স , রাশিয়া ও আমেরিকাকে নিয়ে মিত্রশক্তি এবং জার্মান , ইটালি ও জাপানকে নিয়ে গড়ে ওঠে অক্ষশক্তি এ যুদ্ধ প্রথম মহাযুদ্ধের চেয়ে অনেক বেশি সর্বাত্মক আর ধ্বংসাত্মক হওয়ায় যুদ্ধের শেষে ক্ষতিগ্রস্ত বিভিন্ন দেশে নেমে এসেছিল শ্মশানের 

  1. নং প্রশ্নের উত্তরের দ্বিতীয় অংশটি দ্যাখো । 

21. ‘ হারিয়ে যাওয়া কালি কলম ‘ প্রবন্ধে কোন্ কোন্ লেখক ও কবির নাম এসেছে প্রসঙ্গসহ আলোচনা করো । 

Ans: প্রাবন্ধিক শ্রীপান্থ কলমের ঐতিহাসিক বিবর্তন বর্ণনাকালে কলমের সঙ্গে নানাভাবে জড়িয়ে থাকা বিখ্যাত ব্যক্তিদের প্রসঙ্গও আলোচনা করেছেন । প্রথমেই এসেছে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের কথা । কারণ ফাউন্টেন পেনের ঝরনা কলম নামটি সম্ভবত তাঁরই দেওয়া । এরপর লেখক ফাউন্টেন পেন জমানোর গল্প বলতে গিয়ে ঔপন্যাসিক শৈলজানন্দ মুখোপাধ্যায়ের নাম উল্লেখ করেছেন । শৈলজানন্দের ফাউন্টেন পেনের সংগ্রহ ছিল ঈর্ষণীয় । প্রায় ডজন দুয়েক মহার্ঘ কলমের মধ্যে তাঁর কাছে প্রবন্ধে বর্ণিত লেখক পার্কার কলমই ছিল বেশ কয়েকরকম । শৈলজানন্দই ও কবিদের প্রসঙ্গে প্রাবন্ধিককে বলেছিলেন এই কলম জমানোর নেশা তিনি পেয়েছেন শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের কাছ থেকে । আসলে কথাশিল্পী শরৎচন্দ্রেরও দামি ফাউন্টেন পেন সংগ্রহের নেশা ছিল । শ্রীপান্থ সোনার দোয়াত – কলম যে সত্যিই হয় ; তা চাক্ষুষ করেছিলেন চিত্রশিল্পী ও সংগ্রাহক সুভো ঠাকুরের কাছে । এভাবেই কলমের বিভিন্ন দিক নিয়ে আলোচনাকালে আধুনিক যন্ত্রযুগ এবং টাইপরাইটার ও কম্পিউটার – এর ক্রমবর্ধমান প্রসার প্রসঙ্গে তিনি অন্নদাশঙ্কর রায় আর সুভাষ মুখোপাধ্যায়ের কথা বলেন । সেইসঙ্গে মনে করিয়ে দেন লিপিশিল্পী হিসেবে সত্যজিৎ রায়ের পারদর্শিতার কথা । তিনিই শেষপর্যন্ত নিবের কলমের মানমর্যাদা বাঁচিয়ে রেখেছিলেন । এ ছাড়া বিশ্ববন্দিত চিত্রশিল্পী রবীন্দ্রনাথের সূচনা যে – কলম নিয়ে পাণ্ডুলিপির খাতায় অক্ষর কাটাকুটি করতে গিয়ে , তাও আমাদের জানাতে ভোলেন না । রচনাটির শেষে শ্রীপান্থ জানান যে , কলমকে কেবল একবার খুনির ভূমিকায় দেখা গেছে । স্বনামধন্য লেখক ত্রৈলোক্যনাথ মুখোপাধ্যায়ের অসাবধানতাবশত নিজের হাতের কলম বুকে ফুটে গিয়ে মৃত্যু হয়েছিল ।

হারিয়ে যাওয়া কালি কলম (প্রবন্ধ) নিখিল সরকার 

অতিসংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর | হারিয়ে যাওয়া কালি কলম (প্রবন্ধ) নিখিল সরকার – মাধ্যমিক বাংলা সাজেশন |   

  1. মনে মনে সেই ফরাসি কবির মতো বলেছি — ফরাসি কবি কী বলেছিলেন ? 

Answer : ফরাসি কবি বলেছিলেন— ‘ তুমি সবল , আমি দুর্বল । তুমি সাহসী , আমি ভীরু । তবু যদি তুমি আমাকে হত্যা করতে চাও , আচ্ছা , তবে তা – ই হোক । ধরে নাও আমি মৃত ।

  1. ‘ সেই আঘাতেরই পরিণতি নাকি তাঁর মৃত্যু । -কোন্ আঘাতের পরিণতির কথা বলা হয়েছে ।

Answer : বাংলা সাহিত্যে ‘ কঙ্কাবতী ’ ও ‘ ডমরুধর ’ – এর স্রষ্টা ত্রৈলোক্যনাথ মুখোপাধ্যায় নিজের হাতের কলম অসাবধানতাবশত বুকে বিঁধে মারা যান । সেই ঘটনার কথা বলা হয়েছে ।

  1. ‘ দোয়াত যে কত রকমের হতে পারে প্রবন্ধে কত রকমের দোয়াতের কথা বলা হয়েছে ?

Answer : হারিয়ে যাওয়া কালি কমল ‘ প্রবন্ধে লেখক মাটির , কাচের , কাট – গ্লাসের , পোর্সেলিনের , শ্বেতপাথরের , জেডের , পিতলের , ব্রোঞ্জের , ভেড়ার শিংয়ের ও সোনার তৈরি দোয়াতের কথা বলেছেন ।

  1. লেখক শ্রীপান্থ ছোটোবেলায় কীসে ‘ হোম – টাস্ক ’ করতেন ? 

Answer : লেখক শ্রীপান্থ ছোটোবেলায় কলাপাতা কেটে কাগজের মতো সাইজ করে নিয়ে তাতে ‘ হোম – টাস্ক ‘ করতেন । ‘ খাগের কলম দেখা যায় একমাত্র সরস্বতী পুজোর 

  1. সময়’- কেন এমন বলা হয়েছে ?

Answer : এখনকার স্কুলের ছেলেমেয়েরা কলমে লেখে । শহর কিংবা গ্রাম কোথাও আর বাঁশের কঞ্চির কলমের কোনো ব্যবহার নেই । তাই সরস্বতী পুজোর সময়েই একমাত্র খাগের কলম দেখা যায় ।

  1. ফাউন্টেন পেনের আবিষ্কারক কে ?

Answer : ফাউন্টেন পেনের আবিষ্কারক হলেন লুইস অ্যাডসন ওয়াটারম্যান । ‘ নামটা রবীন্দ্রনাথের দেওয়াও হতে পারে 

  1. রবীন্দ্রনাথের দেওয়া নামটি কী ?

Answer : রবীন্দ্রনাথের দেওয়া ফাউন্টেন পেনের নামটি হল ঝরনা কলম । 

  1. দুজন সাহিত্যিকের নাম করো যাঁদের নেশা ছিল ফাউন্টেন পেন সংগ্রহ করা ।  

Answer : শৈলজানন্দ মুখোপাধ্যায় এবং শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় হলেন সেই দুজন সাহিত্যিক , যাঁদের নেশা ছিল ফাউন্টেন পেন সংগ্রহ করা ।

  1. লেখক ছোটোবেলায় কেমন করে কলম তৈরি করতেন ?

Answer : ‘ হারিয়ে যাওয়া কালি কলম ‘ প্রবন্ধ অনুসারে লেখকেরা রোগা বাঁশের কঞ্চি কেটে কলম তৈরি করতেন । আর কলম শুধু ছুঁচোলো হত না , তার মুখটাও চিরে দিতে হত । 

  1. ‘ দার্শনিক তাকেই বলি’— কাকে প্রাবন্ধিক দার্শনিক বলেন ? 

Answer : হারিয়ে যাওয়া কালি কলম ‘ প্রবন্ধে প্রাবন্ধিক ; যিনি কানে কলম খুঁজে রেখে তা সারাদুনিয়ায় কলম খুঁজে বেড়ান , তাকেই দার্শনিক আখ্যা দিয়েছেন । 

  1. … দু’একটা পাশ দিতে পারলেই বুড়ো বুড়িরা আশীর্বাদ করতেন— কী বলে আশীর্বাদ করতেন ? 

Answer : ‘ হারিয়ে যাওয়া কালি কলম ‘ রচনা অনুসারে দু – একটা পাস দিতে পারলেই বুড়োবুড়িরা আশীর্বাদ করে বলতেন , বেঁচে থাকো বাছা তোমার সোনার দোয়াত – কলম হোক ।

  1. ‘ আমি যেখানে কাজ করি— লেখক কোথায় কাজ করতেন ? 

Answer : হারিয়ে যাওয়া কালি কলম ‘ রচনার লেখক একটি লেখালেখির অফিস তথা সংবাদপত্রের অফিসে সাংবাদিকতার কাজ করতেন ।

  1. ‘ ভাবি , আচ্ছা , আমি যদি যিশু খ্রিস্টের আগে জন্মাতাম তাহলে কী হত বলে লেখক মনে করেন ?

Answer : ‘ হারিয়ে যাওয়া কালি কলম ‘ প্রবন্ধে লেখক মনে করেন তিনি জিশু খ্রিস্টের আগে জন্মালে হয়তো নলখাগড়া ভেঙে ভোঁতা করে তুলি বানিয়ে কিংবা বন থেকে হাড় কুড়িয়ে কলম তৈরি করে , মিশরীয় বা ফিনিসীয়দের মতো লিখতেন । 

  1. ‘ মোগল দরবারে একদিন তাদের কত না খাতির , কত না সম্মান এখানে তাঁদের বলতে কাদের বোঝানো হয়েছে ?

Answer : ‘ হারিয়ে যাওয়া কালি কলম ‘ প্রবন্ধ অনুসারে , এখানে ‘ তাঁদের ’ বলতে ‘ ক্যালিগ্রাফিস্ট ‘ বা লিপিকুশলী ওস্তাদ কলমবাজদের কথা বলা হয়েছে ।

  1. ‘ যার পোশাকি নাম স্টাইলাস’— ‘ স্টাইলাস ‘ বলতে কী বোঝানো হয়েছে ? 

Answer : রোম সাম্রাজ্যের অধীশ্বর জুলিয়াস সিজার যে – ব্রোঞ্জের শলাকা বা কলম ব্যবহার করতেন , তার পোশাকি নাম ছিল ‘ স্টাইলাস ‘ ।

  1. ‘ কুইল ড্রাইভারস ‘ কাদের বলা হত ?

Answer : ‘ হারিয়ে যাওয়া কালি কলম ’ প্রবন্ধ অনুসারে , পালকের কলমকে ইংরেজিতে বলা হয় ‘ কুইল ‘ । লর্ড কার্জন বাঙালি সাংবাদিকদের গরম গরম ইংরেজি দেখে তাঁদের ‘ বাবু কুইল ড্রাইভারস ‘ আখ্যা দিয়েছিলেন ।

  1. কালি তৈরির উৎকৃষ্ট পদ্ধতি সম্পর্কে প্রাচীনদের বলা ছড়া বা প্রচলিত প্রবাদটি উল্লেখ করো । অথবা , ‘ প্রাচীনেরা বলতেন — প্রাচীনেরা কী বলতেন ? 

Answer : হারিয়ে যাওয়া কালি কলম ‘ প্রবন্ধে উল্লিখিত প্রাচীনদের বলা ছড়াটি হল , “ তিল ত্রিফলা সিমুল ছালা / ছাগ দুগ্ধে করি মেলা / লৌহপাত্রে লৌহায় ঘসি / ছিঁড়ে পত্র না ছাড়ে মসি । 

  1. ‘ যন্ত্রযুগ সকলের দাবি মেটাতেই তৈরি / — কী ধরনের দাবির কথা বলা হয়েছে ?

Answer : ‘ হারিয়ে যাওয়া কালি কলম ‘ প্রবন্ধ অনুসারে এক ফাউন্টেন পেন কোম্পানির বিজ্ঞাপনে ছিল গায়ক , স্টেনোগ্রাফার , লেখক প্রভৃতি বিভিন্ন পেশার মানুষদের জন্য তাদের সাতশো রকম নিবের বন্দোবস্ত রয়েছে । অর্থাৎ যন্ত্রযুগ সকলের চাহিদা পুরণের জন্যই প্রস্তুত এ কথাই লেখক বলেছেন । 

  1. ক্যালিগ্রাফিস্ট কাদের বলে ?

Answer : হারিয়ে যাওয়া কালি কলম ’ প্রবন্ধ অনুসারে মধ্যযুগে এবং তার পরবর্তীকালে যাঁরা ছিলেন ওস্তাদ কলমবাজ বা লিপিকুশলী , যে সমস্ত লিপিকরদের লেখা পুথি দেখলে চোখ জুড়িয়ে যায় , তাদের বলা হত ক্যালিগ্রাফিস্ট ।

  1. ‘ বাংলায় একটা কথা চালু ছিল— কথাটি কী ? 

Answer : পাঠ্য রচনা অনুসারে চালু কথাটি হল , ‘ কালি নেই , কলম নেই , বলে আমি মুনশি । 

  1. ‘ তখন মনে কষ্ট হয় বই কী ! — কখন মনে কষ্ট হয় ? 

Answer : ‘ হারিয়ে যাওয়া কালি কলম ‘ রচনা অনুসারে লেখকদের প্রথম লেখালেখির সূত্রপাত ঘটেছিল বাঁশের কলম , মাটির দোয়াত , ঘরে তৈরি কালি আর কলাপাতায় । কিন্তু পরে সে – সমস্তই কালের নিয়মে হাতছাড়া হওয়ার উপক্রম হলে তার মনে এমন অনুভূতি হয়েছিল । 

  1. ‘ এই দেখো । নিব ঠিক আছে । কোন্ ঘটনায় বক্তা এরুপ বলেছিলেন ? 

Answer : ‘ হারিয়ে যাওয়া কালি কলম ’ রচনা অনুসারে এক দোকানি লেখককে একটি জাপানি পাইলট কলম দেখিয়ে আচমকা খাপ সরিয়ে সেটি ছুড়ে দিয়েছিলেন টেবিলের এক পাশে দাঁড় করানো একটি কাঠের বোর্ডের ওপর । তারপর অক্ষত কলমটি বোর্ড থেকে খুলে নিয়ে তিনি আলোচ্য মন্তব্যটি করেছিলেন । 

  1. কোন্ প্রধান কবি বা লেখক টাইপরাইটারে লিখতেন ?

Answer : ‘ হারিয়ে যাওয়া কালি কলম ‘ রচনা অনুসারে লেখক অন্নদাশঙ্কর রায় টাইপরাইটারে লিখতেন ।

  1. ‘ কঙ্কাবতী ‘ এবং ‘ ডমরুধর ’ উপন্যাস দুটির লেখক কে বা কারা ? 

Answer : ‘ কঙ্কাবতী ‘ এবং ‘ ডমরুধর ‘ উপন্যাস দুটিরই লেখক হলেন ত্রৈলোক্যনাথ মুখোপাধ্যায় । 

  1. ‘ ওর কাছে ক ’ অক্ষর গোমাংস –’ক ‘ অক্ষর গোমাংস কথার অর্থ কী ?

Answer : ‘ হারিয়ে যাওয়া কালি কলম ‘ প্রবন্ধ অনুসারে ‘ ক’অক্ষর গোমাংস ‘ বলতে অক্ষরজ্ঞানহীন মানুষকে বোঝানো হয় । যার অর্থ গোরুকে অক্ষর খাওয়ালে পাপ কিংবা অমঙ্গল হয় ।

  1. পকেটমাররা এখন আর কলম নিয়ে হাত সাফাইয়ের খেলা দেখায় না কেন ?

Answer : ‘ হারিয়ে যাওয়া কালি কলম ‘ প্রবন্ধের লেখক শ্রীপান্থর মতে কলম এখন এতই সস্তা এবং সর্বভোগ্য হয়ে গেছে যে , পকেটমাররাও আর তা নিয়ে হাত সাফাইয়ের খেলা দেখায় না ।

  1. ‘ রিজার্ভার পেন ‘ কী ? 

Answer : হারিয়ে যাওয়া কালি কলম ‘ রচনা অনুসারে আদিতে ফাউন্টেন পেনের নাম ছিল ‘ রিজার্ভার পেন ‘ । লুই ওয়াটারম্যান তাকেই অনেক উন্নত করে ফাউন্টেন পেন তৈরি করেন । 

  1. ‘ কিন্তু সেসব ফাঁকি মাত্র।- তাৎপর্য লেখো । 

Answer : পালক কলম অর্থাৎ কুইল এবং দোয়াত কলমের পরিবর্তে অফিসে ছদ্মবেশী বল – পেন সাজানো থাকে , যাকে লেখক বলেছেন ‘ ফাকি মাত্র ’ ।

  1. ‘ আমি যদি হতাম স্বয়ং জুলিয়াস সিজার – তাহলে কী হত ?

Answer : লেখক শ্রীপান্থ কল্পনা করেছেন তিনি জুলিয়াস সিজার হলে শ্রেষ্ঠ কারিগরেরা তাঁর হাতে বড়োজোর একটা স্টাইলাস নামের ব্রোঞ্জের শলাকা তুলে দিত , এর বেশি কিছু নয় ।

  1. ‘ আমরা এতকিছু আয়োজন কোথায় পাব ? – ‘ এতকিছু আয়োজন ‘ বলতে কী বোঝানো হয়েছে ? 

Answer : ভালো কালি তৈরি করতে তিল , ত্রিফলা ও শিমুলের । ছাগলের দুধে ফেলে লোহার পাত্রে রেখে , আর একটি লোহার খুক্তি দিয়ে ঘষে কালি বানাতে হত । এখানে এই আয়োজনের কথাই বলা হয়েছে । 

  1. ‘ ফাউন্টেন পেনের এক বিপদ — বিপদটি কী ? 

Answer : ‘ হারিয়ে যাওয়া কালি কলম ‘ রচনা অনুসারে ফাউন্টেন পেনের এক বিপদ হল তা লেখককে নেশাগ্রস্ত করে । লেখক পয়সাওয়ালা হলে তাঁকে দামি কলম সংগ্রহের নেশায় পেয়ে বসে । 

  1. ‘ এত বছর পরে সেই কলম যখন হাতছাড়া হওয়ার উপক্রম— কলম হাতছাড়া হওয়ার উপক্রম কেন ? 

Answer : শ্রীপান্থের মতে ফাউন্টেন , বল – পেন কিংবা ডট – পেনের বহুল প্রচলনের ফলে বাঁশের কলম আজ হাতছাড়া হওয়ার উপক্রম ।

  1. ‘ হারিয়ে যাওয়া কালি কলম প্রবন্ধের লেখক শ্রীপান্থের আসল নাম কী ?

Answer : ‘ হারিয়ে যাওয়া কালি কলম ’ প্রবন্ধের লেখক শ্রীপাস্থের আসল নাম নিখিল সরকার । 

  1. লেখে তিনজন ? – এই তিন জন কে কে ?

Answer : ‘ হারিয়ে যাওয়া কালি কলম ‘ প্রবন্ধে বর্ণিত বাংলা প্রবাদ অনুযায়ী এই তিন জন হল- কালি , কলম আর মন । 

  1. লেখক যেখানে কাজ করেন সেটা কীসের অফিস ?

Answer : ‘ হারিয়ে যাওয়া কালি কলম ‘ প্রবন্ধের লেখক শ্রীপান্থ যেখানে কাজ করেন , সেটা লেখালেখির অফিস । 

  1. ‘ কিন্তু আমি ছাড়া কারও হাতে কলম নেই / –কেন ?  

Answer : লেখক শ্রীপান্থ কাজ করতেন একটি সংবাদপত্র অফিসে । সেখানে একমাত্র তিনিই কলমে লিখতেন , বাকি সকলেই লিখতেন কম্পিউটারে । তাই কারও হাতে কলম থাকত না । 

  1. লেখকরা মাঝে মাঝে লেখা থামিয়ে পর্দার দিকে তাকাচ্ছেন কেন ?

Answer : লেখকরা ইতিমধ্যে যা লিখেছেন , তা পর্দায় ফুটে উঠেছে । সেগুলি পড়ার জন্যই তারা মাঝে মাঝে পর্দার দিকে তাকাচ্ছেন ।

  1. কারা , কীভাবে লেখকের লেখাকে ছাপার জন্য তৈরি করে দেন ? 

Answer : লেখকের সহকর্মীরা তাঁকে ভালোবেসে তাঁর লেখা কম্পিউটারে টাইপ করে ছাপার জন্য তৈরি করে দেন ।

  1. একদিন যদি কোনও কারণে কলম নিয়ে যেতে ভুলে যাই তবেই বিপদ । — কী ধরনের বিপদের কথা বলা হয়েছে ?

Answer : লেখক শ্রীপাস্থের অফিসে তিনি ছাড়া সকলেই কম্পিউটারে লিখতেন । কলম নিতে ভুলে গেলে কলম পাওয়া ভার ছিল । আর পেলেও তাতে তিনি লিখে সুখ পেতেন না । 

  1. ‘ দায়সারা ভাবে কোনও মতে সেদিনকার মতো কাজ সারতে হয় । বক্তার এমন মন্তব্যের কারণ কী ?

Answer : লেখক অফিসে কলম নিয়ে না – এলে সেদিন তাঁর লেখায় ব্যাঘাত ঘটত । চেষ্টা করে যদিও বা ভোঁতামুখ একখানি কলম জুটত , তাতে লিখে সুখ পেতেন না । লেখক কাজটি তখন দায়সারাভাবে সারতেন ।

  1. ‘ কালগুণে বুঝি বা আজ আমরাও তা – ই’— বক্তব্যটি প্রশ্ন পরিস্ফুট করো ।

Answer : লেখকের লেখালেখির অফিস , অথচ কলম নেই । তাই ‘ কালি নেই , কলম নেই , বলে আমি মুনশি ‘ প্রবাদটির মাধ্যমে তিনি বলতে চেয়েছেন আমরাও যেন তা অনুসরণ করছি ।

  1. ‘ বড়োরা শিখিয়ে দিয়েছিলেন , ‘ — বড়োরা কী শিখিয়ে দিয়েছিলেন ?

Answer : লেখকরা ছোটোবেলায় বাঁশের কঞ্চি দিয়ে কলম বানাতেন । বড়োরা তখন কলমের মুখটা সরু করার সঙ্গে সঙ্গে চিরে দেওয়ার কথাও শিখিয়ে দিতেন , কালি যাতে চুইয়ে পড়ে ।

  1. ‘ আর সেগুলি বান্ডিল করে নিয়ে যেতাম স্কুলে ।— ‘ সেগুলি বলতে কীসের কথা বলা হয়েছে ?

Answer : লেখকরা ছোটোবেলায় কলাপাতাকে কাগজের মতো করে কেটে তাতে স্কুলের কাজ করতেন । মাস্টারমশাইকে দেখানোর জন্য সেগুলি বান্ডিল করে নিয়ে যাওয়ার কথা বলা হয়েছে । 

  1. গোরু খেয়ে নিলে অমঙ্গল / – গোরু কী খেয়ে নিলে অমঙ্গল এবং সেই অমঙ্গল এড়ানোর জন্য কী করা হত ।

Answer : যে – কলাপাতায় লেখকরা ছোটোবেলায় হোমটাস্ক করতেন , সেগুলি বাইরে ফেললে যদি গোরু খেয়ে নেয় , তবে অমঙ্গল হতে পারে । অমঙ্গল এড়াতে সেগুলো পুকুরে ফেলে দেওয়া হত ।

  1. ‘ আমরা কালিও তৈরি করতাম নিজেরাই কালি তৈরির পদ্ধতিটি কীরুপ ছিল ? 

অথবা , লেখকেরা কীভাবে সহজ পদ্ধতিতে কালি তৈরি করতেন ?

Answer : কড়াইয়ের ভুসো কালি জলে গুলে তাতে হরীতকী ঘষে বা আতপ চাল পোড়া মিশিয়ে , সবশেষে খুস্তিকে লাল করে পুড়িয়ে সেই জলে ছাঁকা দিয়ে কালি তৈরি হত । 

  1. ‘ দোয়াত মানে মাটির দোয়াত ।— ‘ দোয়াত ‘ বলতে কী বোঝায় ?

Answer : ‘ দোয়াত ’ হল কালি রাখার পাত্র । ছোটোবেলায় কালি তৈরির পর ন্যাকড়ায় হেঁকে লেখকরা মাটির দোয়াতে ঢেলে রাখতেন । দোয়াত মাটি ছাড়াও কাচ ও অন্যান্য ধাতুর হত । 

  1. প্রাচীনদের কালি তৈরি প্রসঙ্গে অভিমত কী ছিল ? 

Answer : প্রাচীনেরা তিল , ত্রিফলা আর শিমুল ছাল ছাগলের দুধে ফেলে লোহার পাত্রে রেখে অন্য একটি লোহার খুন্তি দিয়ে উপকরণগুলি ঘষে কালি বানাতেন ।

  1. লেখক ভারতে না – জন্মে যদি প্রাচীন মিশরে জন্মাতেন । তবে কী করতেন ?

Answer : লেখক যদি ভারতে না – জন্মে প্রাচীন মিশরে জন্মাতেন তবে , নীলনদের তীর থেকে নলখাগড়া ভেঙে সেটাকে ভোঁতা করে তুলি কিংবা ছুঁচোলো করে কলম বানাতেন ।

  1. ‘ কলম সেদিন খুনিও হতে পারে বইকি ।’— বক্তব্যটি স্পষ্ট করো ।

Answer : খ্রিস্টের জন্মের আগে রোমের অধীশ্বর জুলিয়াস সিজার ব্রোঞ্চের কলম বা স্টাইলাস দিয়ে কাসকাকে আঘাত করেছিলেন । সে – কথাই এখানে বলা হয়েছে ।

  1. ‘ পালকের কলমও আর চোখে পড়ে না । ‘ –’হারিয়ে যাওয়া কালি কলম ‘ প্রবন্ধ থেকে পালকের কলম সম্পর্কে কী জানা যায় ? অথবা , কুইল কী ?

Answer : পালকের কলমের ইংরেজি নাম ‘ কুইল ’ । কার্জন বাঙালি সাংবাদিকদের ইংরেজি দেখে নাম দেন ‘ বাবু কুইল ড্রাইভারস ‘ । এখন এই ‘ কুইল ‘ কেবল পুরোনো দিনের ছবিতেই দেখা যায় ।

  1. ‘ যন্ত্রটা এক ধরনের পেনসিল সার্পনারের মতো । —কোন যন্ত্রের কথা বলা হয়েছে ?

Answer : পালককে কেটে কলম বানানোর জন্য সাহেবরা একটা ছোটো যন্ত্র বের করেছিলেন । যার মধ্যে পালক ঢুকিয়ে চাপ দিলেই তৈরি হয়ে যেত কলম , সেই কথাই বলা হয়েছে । 

  1. কলম বিক্রি পেশা সম্পর্কে হারিয়ে যাওয়া কালি কলম ‘ প্রবন্ধে লেখক কী বলেছেন ?

Answer : শ্রীপান্থ তাঁর প্রবন্ধে কলম বিক্রির পেশা সম্পর্কে এক বিদেশি সাংবাদিকের কথার প্রতিধ্বনি করে বলেছেন যে , ‘ চৌরঙ্গির ফুটপাতের প্রতি তিনজন বিক্রেতার একজন হলেন কলম বিক্রেতা ।

  1. “ ও দিদি , আপনার খোঁপায় কলম । প্রসঙ্গটি বুঝিয়ে দাও ।

Answer : অনেক সময় ভিড় ট্রামে – বাসে যাতায়াত করতে গিয়ে কারও বুক পকেটে রাখা পেন আটকে যায় কোনো মহিলা যাত্রীর খোঁপায় । সেই প্রসঙ্গেই বক্তার এমন সরস মন্তব্য । 

  1. ‘ কলম তাদের কাছে অস্পৃশ্য । — কেন ?

Answer : বর্তমানে ডট – পেন বা বল – পেনের রমরমার যুগে কলম অত্যন্ত সত্তা ও সর্বভোগ্য হয়ে পড়েছে । পকেটমারদের কাছে তাই হাতসাফাইয়ের বস্তু হিসেবে কলম অস্পৃশ্য ।

  1. ‘ আবার তিনি ছুটলেন কালির সন্ধানে । — কে , কেন কালির সন্ধানে ছুটেছিলেন ?

Answer : ফাউন্টেন পেনের আবিষ্কর্তা লুইস অ্যাডসন ওয়াটারম্যান একজন ব্যবসায়ীর সঙ্গে চুক্তিপত্র সই করার সময় দোয়াত উলটে সব কালি পড়ে যায় । তখন তিনি কালির সন্ধানে ছোটেন ।

  1. ‘ জন্ম নিল ফাউন্টেন পেন। — ফাউন্টেন পেনের জন্মবৃত্তান্তটি উল্লেখ করো ।

Answer : লুইস অ্যাডসন ওয়াটারম্যান একবার এক চুক্তিপত্র সই করার সময় দোয়াত উলটে যাওয়ায় চুক্তি বাতিল হয়ে যায় । এরই বিহিত করতে তিনি ফাউন্টেন পেন আবিষ্কার করেন । 

  1. লেখক কোথা থেকে তাঁর জীবনের প্রথম ফাউন্টেন পেনটি কিনেছিলেন ?

Answer : লেখক শ্রীপান্থ দ্বিতীয় মহাযুদ্ধের বেশ কয়েক বছর পরে কলকাতার কলেজ স্ট্রিটের এক নামি দোকান থেকে তাঁর জীবনের প্রথম ফাউন্টেন পেনটি কিনেছিলেন ।

  1. পেনের নিব ঠিক আছে কিনা তা দোকানদার কীভাবে লেখককে দেখিয়েছিলেন ? 

Answer : দোকানদার টেবিলের একপাশে দাঁড় করানো একটা কাঠের বোর্ডের ওপর কলমটা ছুড়ে দিলেন । তারপর সেটা খুলে নিয়ে লেখককে । দেখালেন যে , নিবটা অক্ষত আছে । 

  1. এই নেশা পেয়েছি আমি শরৎদার কাছ থেকে । – কোন্ নেশার কথা বলা হয়েছে ? 

Answer : ‘ হারিয়ে যাওয়া কালি কলম ‘ প্রবন্ধে প্রবন্ধকার শ্রীপাখ শৈলজানন্দের ফাউন্টেন পেন সংগ্রহের নেশার কথা বলেছেন । তাঁর সংগ্রহে মূল্যবান কলম ছিল প্রায় দু – ডজন ।

  1. লেখক হাই স্কুলে পড়ার সময় কী ধরনের কালি ব্যবহার করতেন ? 

Answer : হাই স্কুলে পড়ার সময় লেখক লাল , নীল কালির ট্যাবলেট দিয়ে কালি বানাতেন । এ ছাড়া দোয়াতে আর বোতলে তৈরি কালিও পাওয়া যেত । 

  1. ‘ অবাক হয়ে সেদিন মনে মনে ভাবছিলাম / – লেখক কী ভাবছিলেন ?

Answer : সুভো ঠাকুরের বিখ্যাত দোয়াত সংগ্রহ দেখে লেখক শ্রীপাদ ভেবেছিলেন যে , শেকসপিয়র থেকে শুরু করে আমাদের শরত্চন্দ্র পর্যন্ত সাহিত্য ও ইতিহাসের বিখ্যাত চরিত্ররা সেইসব দোয়াত ব্যবহার করেই অমর সব রচনা লিখে গেছেন । 

  1. ‘ যন্ত্রযুগ সকলের দাবি মেটাতেই তৈরি । — কী ধরনের দাবির কথা বলা হয়েছে ? 

Answer : ফাউন্টেন পেনের বিজ্ঞাপনে ব্যক্তিবিশেষের চাহিদা ও পছন্দের কথা প্রসঙ্গে শ্রীপান্থের এই উক্তি । কোম্পানি বিভিন্ন শ্রেণির লেখকদের জন্য সাতশো রকমের নিব ও ধনীদের জন্য সোনায় গড়া হিরে বসানো কলমও তৈরি করেছিল ।

  1. ‘ কিন্তু ইতিহাসে ঠাই কিন্তু তার পাকা।— কার , কেন ইতিহাসে ঠাঁই পাকা ?

Answer : কম্পিউটারের যুগে কলমের সুদিনের অবসান হয়েছে । তবু ইতিহাসে কলমের স্থান পাকা । মোগল – সহ বিশ্বের সব দরবারেই লিপিকুশলীরা বিশেষভাবে সম্মানিত হয়ে এসেছেন এই কলম দিয়ে লিখেই । 

  1. শ্রীপান্থের লেখা ‘ হারিয়ে যাওয়া কালি কলম ‘ প্রবন্ধটি থেকে আঠেরো শতকের লিপিকরদের পারিশ্রমিক সম্পর্কে কী জানতে পারা যায় ? 

Answer : অষ্টাদশ শতকে একজন লিপিকর চারখণ্ড রামায়ণ কপি করে পেয়েছিলেন নগদ সাত টাকা , কিছু কাপড় আর মিঠাই । 

  1. ‘ সম্ভবত শেষ পর্যন্ত নিবের কলমের মানমর্যাদা বাঁচিয়ে রেখেছিলেন একমাত্র সত্যজিৎ রায় । ‘ –এ কথার যৌক্তিকতা কতখানি ?

Answer : সত্যজিৎ রায়ের লিপিশিল্পের প্রতি আকর্ষণ সর্বজনবিদিত । তাঁর হস্তলিপির কুশলতা তাঁর অন্যান্য শিল্পকর্মের সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত । তাই তিনিই কেবল নিবের কলমের মানমর্যাদা বাঁচিয়ে রেখেছিলেন ।

MCQ প্রশ্নোত্তর | হারিয়ে যাওয়া কালি কলম (প্রবন্ধ) নিখিল সরকার – মাধ্যমিক বাংলা সাজেশন |  

  1. কাচের দোয়াতে কালির বদলে থাকে -(A) জল (B) রং (C) মধু (D) দুধ

Answer : (D) দুধ

  1. কুইল হল – (A) খাগের কলম(B) খাগড়ার কলম(C) পালকের কলম(D) কঞ্চির কলম

Answer : (C) পালকের কলম

  1. ‘ বাবু কুইল ড্রাইভারস ‘ কথাটি কাদের বলা হত ?(A) গরম গরম ইংরেজি বলা বাঙালি সাংবাদিকদের (B) সরল হিন্দি ভাষায় কথা বলা সাংবাদিকদের (C) ভাঙা ভাঙা হিন্দিভাষী সাংবাদিকদের (D) সাবলীল বাংলাভাষী সাংবাদিকদের

Answer : (A) গরম গরম ইংরেজি বলা বাঙালি সাংবাদিকদের

  1. ‘ বাবু কুইল ড্রাইভারস ‘ কথাটি বলেছেন—(A) লর্ড বেন্টিঙ্ক (B) লর্ড কার্জন(C) উইলিয়াম কেরি(D) হেস্টিংস

Answer : (B) লর্ড কার্জন

  1. পালকের কলম এখন দেখতে পাওয়া যায়(A) পত্রিকার অফিসে (B) সরস্বতী পুজোর সময় (C) বিশ্বকর্মা পুজোর সময়(D) পুরোনো দিনের তৈলচিত্র ফোটোগ্রাফে

Answer : (D) পুরোনো দিনের তৈলচিত্র ফোটোগ্রাফে

  1. কার ছবিতে সামনে দোয়াতে গোঁজা পালকের কলম দেখা যায় ?(A) দেবী সরস্বতীর (B) রবীন্দ্রনাথের(C) উইলিয়াম জোন্স কিংবা কেরি সাহেবের (D) বিদ্যাসাগরের

Answer : (C) উইলিয়াম জোন্স কিংবা কেরি সাহেবের

  1. লেখকের মতে তিনিই হলেন দার্শনিক , যিনি – (A) দর্শনের অধ্যাপক (B) কানে কলম গুঁজে দুনিয়া খোঁজেন(C) চোখে চশমা এঁটে বই পড়েন(D) ভাবের জগতে থাকেন

Answer : (B) কানে কলম গুঁজে দুনিয়া খোঁজেন

  1. লেখক ছেলেবেলায় কাকে পায়ের মোজায় কলম রাখতে দেখেছিলেন ?(A) মন্ত্রীমশাইকে (B) দারোগাবাবুকে (C) মাস্টারমশাইকে(D) পণ্ডিতমশাইকে

Answer : (B) দারোগাবাবুকে

  1. কোনো কোনো অতি আধুনিক ছেলে কোথায় কলম রাখে ?(A) বুক পকেটে (B) পাঞ্জাবির পকেটে (C) কাঁধের ছোট্ট পকেটে (D) পায়ের মোজায় 

Answer : (C) কাঁধের ছোট্ট পকেটে

  1. ‘ কায়স্থ ‘ আর ‘ রাজপুত ‘ – কে চেনা যায় যথাক্রমে -(A) কলম ও গায়ের রঙে (B) কলম ও গোঁফে(C) আভিজাত্য ও গোঁফে(D) দেশপ্রেম ও সত্যবাদিতায়

Answer : (B) কলম ও গোঁফে

  1. কালির অক্ষর নাইকো পেটে , চন্ডী পড়েন -(A) কালীঘাটে (B) বাবুঘাটে (C) গঙ্গাঘাটে (D) খেয়াঘাটে

Answer : (A) কালীঘাটে

  1. দেশে সবাই সাক্ষর না হলেও কলম এখন – (A) অস্পৃশ্য (B) সর্বজনীন (C) দুর্লভ (D) মহার্ঘ

Answer : (B) সর্বজনীন

  1. কলমের দুনিয়ায় সত্যিকারের বিপ্লব ঘটায় -(A) ব্রোঞ্জের শলাকা(B) বল – পেন(C) ফাউন্টেন পেন(D) কুইল বা পালকের পেন

Answer : (C) ফাউন্টেন পেন

  1. ফাউন্টেন পেনের বাংলা নাম ‘ ঝরনা কলম ‘ দেন – (A) বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়(B) রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর(C) শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়(D) ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর 
  2. ফাউন্টেন পেনের স্রষ্টা— (A) রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর (B) লুইস অ্যাডসন(C) পিটার পার্কার(D) লুইস অ্যাডসন ওয়াটারম্যান 

Answer : (D) লুইস অ্যাডসন ওয়াটারম্যান

  1. লেখক প্রথম যে – ফাউন্টেন পেনটি কিনেছিলেন , তার নাম হল (A) শেফার্ড (B) পার্কার (C) ওয়াটারম্যান (D) জাপানি পাইলট

Answer : (D) জাপানি পাইলট

  1. লেখক তাঁর প্রথম ফাউন্টেন পেনটি কবে নাগাদ কেনেন ? (A) প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পর(B) দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর (C) ভারতের স্বাধীনতার পর (D) ভারত ছাড়ো আন্দোলনের সময়

Answer : (B) দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর

  1. বিখ্যাত লেখক শৈলজানন্দের ফাউন্টেন পেনের সংগ্রহ ছিল -(A) ডজন খানেক (B) হাফ ডজন(C) ডজন দুয়েক(D) ডজন তিনেক

Answer : (C) ডজন দুয়েক

  1. শৈলজানন্দ ফাউন্টেন পেন সংগ্রহের নেশা পেয়েছিলেন (A) শরৎচন্দ্রের থেকে (B) রবীন্দ্রনাথের থেকে(C) অবনীন্দ্রনাথের থেকে(D) তারাশঙ্করের থেকে

Answer : (A) শরৎচন্দ্রের থেকে

  1. আদিতে ফাউন্টেন পেনের নাম ছিল – (A) ঝরনা কলম (B) রিজার্ভার পেন (C) ওয়াটারম্যান (D) শেফার্ড

Answer : (B) রিজার্ভার পেন

  1. উন্নতমানের ফাউন্টেন পেনের নির্মাতা কে ছিলেন ? (A) ওয়াটারম্যান (B) লুইস ওয়াল্টার(C) অ্যান্ডারসন (D) জন স্টিভেনসন

Answer : (C) অ্যান্ডারসন

  1. লেখক কঞ্চির কলমকে ছুটি দেন – (A) শহরে হাই স্কুলে ভরতির পর (B) কলেজে ওঠার পর(C) এমএ পরীক্ষার সময়(D) চাকরিতে ঢোকার পর

Answer : (A) শহরে হাই স্কুলে ভরতির পর

  1. বিদেশে উন্নত ধরনের টেকসই নিব তৈরি হত -(A) বাঁশ বা কঞ্চি কেটে (B) পালক কেটে (C) গোরুর শিং বা কচ্ছপের খোল কেটে (D) প্ল্যাটিনাম কেটে

Answer : (C) গোরুর শিং বা কচ্ছপের খোল কেটে

  1. প্রথম দিকে লেখা শুকনো করা হত -(A) ব্লটিং পেপার দিয়ে (B) শুকনো বালি দিয়ে (C) চক দিয়ে (D) কাপড়ের টুকরো দিয়ে

Answer : (B) শুকনো বালি দিয়ে

  1. প্রথম দিকে শুকনো বালি দিয়ে কালি শুকনো করলেও পরের দিকে তা করা হত -(A) ব্লটিং পেপার দিয়ে (B) চক দিয়ে(C) শুকনো কাপড় দিয়ে (D) কোনোটিই নয়

Answer : (A) ব্লটিং পেপার দিয়ে

  1. সোনার দোয়াত কলমের সত্যতা লেখক জেনেছিলেন -(A) অবনীন্দ্রনাথের দোয়াত সংগ্রহ থেকে (B) শৈলজানন্দের কাছ থেকে(C) সুভো ঠাকুরের দোয়াত সংগ্রহ দেখে(D) শরৎচন্দ্রের কলম সংগ্রহ থেকে 

Answer : (C) সুভো ঠাকুরের দোয়াত সংগ্রহ দেখে

  1. ফাউন্টেন পেনের পর বাজারে এল -(A) খাগের কলম (B) কঞ্চির কলম (C) পালকের কলম (D) বল – পেন

Answer : (D) বল – পেন

  1. কম্পিউটার কাদের জাদুঘরে পাঠাবে বলে প্রতিজ্ঞা করেছে ? (A) ফাউন্টেন পেনকে (B) খাগের কলমকে (C) বল – পেনকে (D) সব কলমকে

Answer : (D) সব কলমকে

  1. যারা ওস্তাদ কলমবাজ তাদের বলা হত – (A) স্টেনোগ্রাফার (B) ক্যালিগ্রাফিস্ট (C) টাইপিস্ট (D) জার্নালিস্ট

Answer : (B) ক্যালিগ্রাফিস্ট

  1. ‘ হারিয়ে যাওয়া কালি কলম ‘ রচনায় লেখকের বয়স কত বলে ধারণা করা হয়েছে – (A) চল্লিশ – পঞ্চাশ (B) পঞ্চাশ – ষাট (C) পঁয়তাল্লিশ – পঞ্চাশ (D) ষাট – সত্তর

Answer : (B) পঞ্চাশ – ষাট

  1. উনিশ শতকে বত্রিশ হাজার অক্ষর লেখানোর পারিশ্রমিক ছিল – (A) আটআনা (B) ষোলোআনা (C) বারোআনা (D) চারআনা 

Answer : (C) বারোআনা

  1. কলমের শক্তিকে কীসের শক্তির সঙ্গে তুলনা করা হয়ে থাকে ? (A) বক্তব্যের (B) বন্দুকের (C) তলোয়ারের (D) কামানের

Answer : (C) তলোয়ারের

  1. ‘ অনেক ধরে ধরে টাইপরাইটারে লিখে গেছেন মাত্র একজন । তিনি হলেন – (A) সত্যজিৎ রায়(B) অন্নদাশঙ্কর রায় (C) রাজশেখর বসু(D) সুবোধ ঘোষ

Answer : (B) অন্নদাশঙ্কর রায়

  1. ‘ শ্রীপান্থ ‘ ছদ্মনামে লিখেছেন -(A) সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়(B) সমরেশ বসু(C) বলাইচাঁদ মুখোপাধ্যায়(D) নিখিল সরকার

Answer : (D) নিখিল সরকার

  1. নীচের কোন্ বইটি শ্রীপাস্থের নয় — (A) আজব দুনিয়া (B) মিছিলনগরী(C) আজবনগরী (D) আনন্দনগরী

Answer : (C) আজবনগরী

  1. লেখক যে – অফিসে কাজ করতেন , সেটি হল -(A) সরকারি অফিস (B) পত্রিকা অফিস (C) সওদাগরি অফিস (D) বেসরকারি অফিস

Answer : (B) পত্রিকা অফিস

  1. লেখকের অফিসে সবাই -(A) ফাঁকিবাজ (B) লেখক (C) ইঞ্জিনিয়ার(D) গম্ভীর 

Answer : (B) লেখক

  1. লেখকের হাতে ছাড়া আর কারও হাতে কী নেই ? (A) সময় (B) ঘড়ি (C) কাজ (D) কলম 

Answer : (D) কলম

  1. লেখক ছাড়া তাঁর অফিসের আর সকলের সামনেই রয়েছে -(A) ক্যালকুলেটর (B) কম্পিউটার (C) টাইপরাইটার (D) টেলিফোন 

Answer : (B) কম্পিউটার

  1. লেখকের লেখাকে ভালোবেসে ছাপার জন্য তৈরি করে দেন – (A) তাঁর অধস্তন কর্মচারী (B) তাঁর বন্ধু(C) তাঁর সহকর্মীরা (D) তাঁর সহকারী 

Answer : (C) তাঁর সহকর্মীরা

  1. একদিন কোনো কারণে অফিসে কী নিয়ে যেতে ভুলে গেলে বিপদ ? (A) চাবি (B) কলম (C) চশমা (D) ঘড়ি 

Answer : (B) কলম

  1. কীসে লিখে লেখকের সুখ নেই ?(A) কম্পিউটারে (B) টাইপরাইটারে(C) গলা – শুকনো ভোঁতা – মুখ কলমে(D) ফাউন্টেন পেন – এ 

Answer : (C) গলা – শুকনো ভোঁতা – মুখ কলমে

  1. বাংলা প্রবাদটি হল — কালি নেই , কলম নেই , বলে আমি -(A) কলমচি (B) মুনশি (C) লেখক(D) মন 

Answer : (D) মন

  1. লেখক ছোটোবেলায় থাকতেন—(A) গ্রামে (B) শহরে (C) মফস্সলে (D) বিদেশে 

Answer : (A) গ্রামে

  1. লেখক জন্মেছেন ‘ হারিয়ে যাওয়া কালি কলম ‘ প্রবন্ধরচনার— (A) ২০ – ২৫ বছর আগে (B) ৩০ বছর আগে(C) ৫০–৬০ বছর আগে(D) ৭৫ বছর আগে 

Answer : (D) ৭৫ বছর আগে

  1. লেখকরা ছোটোবেলায় কলম তৈরি করতেন -(A) পাখির পালক দিয়ে (B) নলখাগড়া দিয়ে (C) হাড় দিয়ে (D) রোগা বাঁশের কঞ্চি দিয়ে

Answer : (D) রোগা বাঁশের কঞ্চি দিয়ে

  1. কলমের কালি ধীরে ধীরে চুঁইয়ে পড়ার জন্য কী করণীয় ? (A) কলমের মুখটা চিরে দিতে হবে (B) কলমের মুখটা সাপ করতে হবে(C) কলমের মুখটা ঘষে নিতে হবে(D) কলমের মুখটা একটু ভোঁতা হতে হবে 

Answer : (A) কলমের মুখটা চিরে দিতে হবে

  1. লেখকরা হোমটাস্ক করতেন(A) শুকনো তালপাতায়(B) কলাপাতায়(C) পদ্মপাতায়(D) শালপাতায়

Answer : (B) কলাপাতায়

  1. অক্ষরজ্ঞানহীনকে লোকে বলে – (A) অশ্বের কীবা দিন কীবা রাত (B) ক অক্ষর গোমাংস (C) কুয়োর ব্যাং (D) চোখ থাকতেও অন্ধ

Answer : (B) ক অক্ষর গোমাংস 

  1. ছোটোবেলার কালি তৈরি করতে লেখকদের সাহায্য করতেন— (A) মা – পিসি – দিদিরা (B) বাবা – কাকা – দাদারা (C) স্কুলের মাস্টারমশাইরা(D) বন্ধুবান্ধবরা

Answer : (A) মা – পিসি – দিদিরা

  1. ত্রিফলা বলতে যে – তিনটি ফলকে বোঝায় , সেগুলি হল – (A) হরীতকী ,  সুপারি , এলাচ (B) হরীতকী , সুপারি , আমলকী(C) বহেড়া , হরীতকী , আমলকী (D) বহেড়া , সুপারি , আমলকী

Answer : (C) বহেড়া , হরীতকী , আমলকী

  1. ছোটোবেলায় লেখকদের বাড়িতে রান্না হত (A) গ্যাসে(B) স্টোভে(C) সৌর কুকারে(D) কাঠের উনুনে

Answer : (D) কাঠের উনুনে

  1. কাঠের উনুনে রান্নার ফলে কড়াইয়ের তলায় জমত—  (A) কালি (B) তেল (C) কাঠের গুঁড়ো (D) ছাই

Answer : (A) কালি

  1. কড়াইয়ের তলার কালি ঘষে তোলা হত -(A) কচু পাতা দিয়ে(B) শিউলি পাতা দিয়ে (C) লাউ পাতা দিয়ে(D) কুমড়ো পাতা দিয়ে

Answer : (C) লাউ পাতা দিয়ে

  1. ছোটোবেলায় লেখকদের লেখালেখির প্রথম উপকরণগুলি ছিল -(A) খাগের কলম , মাটির দোয়াত , ভূর্জপত্র , ভেষজ কালি (B) পালকের কলম , তুলট কাগজ , কাচের দোয়াত , ঘরে বানানো কালি(C) বাঁশের কলম , মাটির দোয়াত , কলাপাতা , ঘরে তৈরি কালি (D) স্লেট , পেনসিল

Answer : (C) বাঁশের কলম , মাটির দোয়াত , কলাপাতা , ঘরে তৈরি কালি 

  1. লেখক প্রাচীন মিশরে জন্মালে কী দিয়ে লিখতেন ?(A) বাঁশের কঞ্চি(B) নলখাগড়ার কলম(C) পালক (D) হাড়ের কলম

Answer : (B) নলখাগড়ার কলম

  1. লেখক প্রাচীন ফিনিসীয় হলে লেখার জন্য ব্যবহার করতেন—(A) পালক(B) স্টাইলাস(C) হাড়(D) নলখাগড়া

Answer : (A) পালক

  1. ‘ স্টাইলাস ‘ আসলে কী ?(A) প্ল্যাটিনাম শলাকা (B) লৌহ শলাকা(C) ব্রোঞ্জের শলাকা (D) তামার শলাকা

Answer : (C) ব্রোঞ্জের শলাকা

  1. সিজার কলম দিয়ে কাকে আঘাত করেছিলেন ?(A) রোমুলাসকে(B) কাসকাকে(C) হেনরিয়েটাকে(D) ডরোথিকে

Answer : (B) কাসকাকে

  1. চিনারা চিরকাল লিখে আসছে -(A) তুলিতে(B) ব্রোঞ্জের শলাকাতে(C) কুইলে(D) খাগড়ার কলমে

Answer : (A) তুলিতে

  1. জ্ঞানাঞ্জন শলাকা আসলে -(A) কাজল পরার কাঠিবিশেষ(B) কলম (C) পেনসিল (D) হাড় থেকে তৈরি পেনবিশেষ

Answer : (B) কলম

  1. খাগের কলম একমাত্র দেখা যায় – (A) নববর্ষের সময় (B) সরস্বতী পূজার সময় (C) পরীক্ষার সময়(D) সরস্বতী পুজোর সময় 

Answer : (B) সরস্বতী পূজার সময়

রচনাধর্মীয় প্রশ্নোত্তর | হারিয়ে যাওয়া কালি কলম (প্রবন্ধ) নিখিল সরকার – মাধ্যমিক বাংলা সাজেশন |   

1. ‘ ফলে আমার মতো আরও কেউ কেউ নিশ্চয় বিপন্ন বোধ করছেন । আমার মতো আরও কেউ কেউ বলতে কাদের কথা বলা হয়েছে । তাঁরা বিপন্ন বোধ করছেন কেন ?

Answer : আমার মতো আরও কেউ কেউ – কারা উত্তর হারিয়ে যাওয়া কালি কলম ‘ প্রবন্ধের রচয়িতা শ্রীপান্থ ‘ আমার মতো আরও কেউ কেউ বলতে তাঁর মতো কলমপ্রিয় মানুষের কথা বোঝাতে চেয়েছেন । বিশেষত সেইসব লেখক , যাঁরা কালি – কলমের বিশেষ ভক্ত , তাঁদের কাছে কম্পিউটারের রমরমা এক দুঃসংবাদ । কারণ এতে কালি – কলমের ব্যবহার ক্রমশ কমতে কমতে একসময় সম্পূর্ণ লুপ্ত হবে । 

  কম্পিউটারের আবিষ্কার মানুষকে বেগ দিলেও তার আবেগ কেড়ে নিয়েছে । হাতের লেখার মধ্যে যে – মর্মস্পর্শিতা থাকে , তা যান্ত্রিক হরফে খুঁজে পাওয়া যায় না । মানুষের দীর্ঘদিনের লেখার সাথি কালি – কলমকে ধীরে ধীরে অবলুপ্তির পথে ঠেলে দিচ্ছে এই কম্পিউটার । ফলে যেসব মানুষজন আজও কম্পিউটারের কি – বোর্ডের তুলনায় কালি – কলমকেই বেশি আপন মনে করেন , শ্রীপান্থের মতো সেইসব লোকজন বিপন্ন বোধ করছেন । এই বিপন্নতা কলমের সঙ্গে তার ভক্তের সম্পর্কচ্ছেদের বিপন্নতা । কলমের সঙ্গে মানুষের সম্পর্ক বহু পুরোনো । প্রাচীনকাল থেকে কলমের নানা বিবর্তনের সাক্ষী থেকেছে মানুষ । তার ভাব প্রকাশের হাতিয়ারের অবলুপ্তির আশঙ্কায় সন্দিহান প্রাবন্ধিক আন্তরিক বেদনাবোধ থেকে এমন মন্তব্য করেছেন ।

2. ‘ মোগল দরবারে একদিন তাঁদের কত না খাতির , কত না সম্মানি ‘ — ‘ তাদের বলতে কাদের কথা বলা হয়েছে ? তাঁদের খাতির ও সম্মানের পরিচয় দাও । 

Answer : হারিয়ে যাওয়া কালি কলম ‘ প্রবন্ধে উদ্ধৃত অংশে ‘ তাঁদের বলতে ওস্তাদ কলমবাজাদের বোঝানো হয়েছে । পারিভাষিক শব্দে এদের বলে ‘ ক্যালিগ্রাফিস্ট ‘ বা ‘ তাদের পরিচয় ‘ লিপিকুশলী ‘ । খাতির ও সম্মান → যাঁরা ওস্তাদ কলমবাজ , তাঁদের স্থান ইতিহাসে পাকা । মোগল দরবারে তাঁদের প্রচুর খাতির ও সম্মান ছিল । শুধু মোগল দরবার নয় , পৃথিবীর সর্বত্রই তাঁদের কদর ছিল । এমনকি বাংলা দেশেও রাজা – জমিদাররা লিপিকুশলীদের গুণের কদর করতেন । তাঁদের ভরণ – পোষণের ব্যবস্থাও করা হত । সাধারণ গৃহস্থেরাও এই লিপিকরদের ডেকে পুথি নকল করাতেন । আজও সেসব পুথি দেখলে চোখ জুড়িয়ে যায় । সংস্কৃতে যাকে বলে ‘ সমানি সমশীর্ষাণি ঘনানি বিরলানি চ ’ অর্থাৎ সব অক্ষর সমান , প্রতিটি ছত্র সুশৃঙ্খল ও পরিচ্ছন্ন । এইসব লিপিকরদের হস্তাক্ষর ছিল মুক্তোর মতো । অথচ এঁদের রোজগার ছিল সামান্যই । অষ্টাদশ শতকে এক লিপিকুশলী চারখণ্ড রামায়ণ কপি করে নগদ সাত টাকা , কিছু কাপড় আর মিঠাই সাম্মানিক হিসেবে পেয়েছিলেন অর্থাৎ সেসময়ে এদের উপার্জন কম হলেও গুণের সমাদর ছিল ।

3. ‘ কলমকে বলা হয় তলোয়ারের চেয়েও শক্তিধর । —বিষয়টি ব্যাখ্যা করো । এমন বলার কারণ কী বলে তোমার মনে হয় ?  

Answer : শ্রীপান্থ লিখিত ‘ হারিয়ে যাওয়া কালি কলম ‘ প্রবন্ধ থেকে উদ্ধৃত উক্তিটি একটি প্রবাদপ্রতিম বাক্য । প্রাবন্ধিক ঈষৎ ঠাট্টার হলে এটিকে আক্ষরিক অর্থে ব্যবহার করেছেন । তলোয়ারের চেয়ে বন্দুকের শক্তি বেশি । তাই ফাউন্টেন পেন যেন আভাসে – ইঙ্গিতে সে কথাই বলতে চায় । কারণ ফাউন্টেন পেনের বিভিন্ন অংশগুলিকে ‘ ব্যারেল , ‘ কার্টিজ ’ ইত্যাদি নামে ডাকা হয় । এই শব্দগুলির সঙ্গে গোলা – বন্দুকের যোগাযোগের কথা কে না জানে । তবে বারুদের সঙ্গে কলমের কোনো সম্পর্ক নেই । ইতিহাসে এমন অনেক লেখকের উল্লেখ পাওয়া যায় , যাঁদের লেখনীর ধার , তলোয়ারের চেয়েও বেশি । আর সেই ক্ষুরধার কলমকে হাতিয়ার করে তাঁরা অনেক কুর , মিথ্যেবাদী প্রতিপক্ষের সঙ্গে লড়াই চালিয়েছেন । উদ্ধৃত বক্তব্যের কারণ 

  এখানে কলমের শক্তির অন্তর্নিহিত অর্থ হল , মানুষের লিখন – দক্ষতা বা লেখনীর ক্ষমতা । বন্দুক বা তলোয়ারের মতো অস্ত্র প্রয়োগ করে মানুষকে হত বা আহত করা যায় , কিন্তু মানুষের চিন্তাশক্তি তথা লেখনীর শক্তি শত সহস্র মানুষের ভাবনা , আদর্শ কিংবা দর্শনকে কেবল প্রভাবিতই করে না , সম্পূর্ণ বদলেও দিতে পারে । আর লেখার এই প্রভাব বা প্রতিক্রিয়া যুগযুগান্তরব্যাপী স্থায়ী হয় । তাই কলমকে তলোয়ারের চেয়েও শক্তিধর বলে বিবেচনা করা হয় । বরং এক্ষেত্রে বলা চলে , কলমই সর্বশ্রেষ্ঠ অস্ত্র ।

4. ‘ সুতরাং , যখন দেখি এত পরিবর্তনের মধ্যে কেউ কলম আঁকড়ে পড়ে আছেন তখন বেশ ভালো লাগে’- কোন পরিবর্তনের কথা বলা হয়েছে । ‘ কলম আঁকড়ে পড়ে থাকা ‘ – র কয়েকটি নিদর্শন প্রবন্ধ অনুসারে লেখো । কোন পরিবর্তন ধরার বিবর্তন । 

Answer : প্রাবন্ধিক শ্রীপান্থ উদ্ধৃত অংশে কলমের প্রাচীন থেকে আধুনিক যুগে বিবর্তনের কথা বলেছেন । এই বিবর্তন আসলে কালি – কলম ছেড়ে কম্পিউটারের কি – বোর্ড আঁকড়ে ‘ কলম আঁকড়ে পড়ে থাকা – র নিদর্শন আধুনিক যুগে কম্পিউটারের ব্যবহার অপ্রতিরোধ্য হওয়া সত্ত্বেও এই যুগের সাহিত্যিকদের অধিকাংশই কলম ব্যবহারেই স্বচ্ছন্দ । অন্নদাশঙ্কর রায় ও সুভাষ মুখোপাধ্যায় টাইপরাইটার ব্যবহার করলেও , অন্যেরা প্রায় সকলেই কলমে লিখতেন । সত্যজিৎ রায় নিবের কলম ব্যবহার করেছেন । সারাজীবন । লিপিশিল্প ছিল তাঁর শখ । স্বয়ং রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরও যে চিত্রশিল্পী হিসেবে সম্মান লাভ করেছিলেন তারও সূত্রপাত তাঁর পাণ্ডুলিপিতে । তিনি অক্ষর কাটাকুটি করতে গিয়ে সৃষ্টি করেছিলেন ছন্দবদ্ধ সাদা – কালো চিত্রের । কম্পিউটারের আঁকা ছবি কতটা মানবিক , এই প্রশ্ন তোলেন প্রাবন্ধিক । এই যন্ত্রসভ্যতার যুগেও কলমের সঙ্গে লেখকের মানবিক বন্ধনটুকু সযত্নে রক্ষা করে চলেছেন যাঁরা , প্রাবন্ধিক তাঁদের দেখে আনন্দিত হন এবং আশ্বস্ত বোধ করেন । এই বিবর্তমান সভ্যতার মাঝে লেখকের সঙ্গে কলমের চিরকালীন অপরিবর্তনীয় ধ্রুব সম্পর্ককে আঁকড়ে ধরেই তিনি বেঁচে থাকতে চান ।

5. কালি – কলমের প্রতি ভালোবাসা ‘ হারিয়ে যাওয়া কালি কলম ‘ প্রবন্ধে কীভাবে ফুটে উঠেছে , তা আলোচনা করো ।

Answer : শ্রীপান্থের লেখা ‘ হারিয়ে যাওয়া কালি কলম ‘ প্রবন্ধে দোয়াত , কলম , কালি প্রভৃতি লেখার সরঞ্জামগুলিকে ঘিরে লেখকের মমতা , স্মৃতিমেদুরতা আর ভালোবাসা ফুটে উঠেছে । কলমের প্রতি ভালোবাসার প্রকাশ ছোটোবেলায় লেখক তাঁর গ্রামের বাড়িতে নিজের হাতেই কালি , কলম বানিয়ে নিতেন । বাঁশের কঞ্চি কেটে তৈরি হত কলম । রান্নার কড়াইয়ের নীচের ভুসো কালি লাউপাতা দিয়ে ঘষে জলে গুলে ফুটিয়ে কালি বানানো হত । ক্রমশ বাঁশের কলমের বদলে জায়গা করে নিল ফাউন্টেন পেন । সে – পেনের প্রেমে পড়ে গেলেন লেখক । এরপর বাজারে বল পয়েন্ট পেন এলেও সে – পেন লেখকের মনে ধরল না । যদিও সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে গিয়ে তার কাছেই আত্মসমর্পণ করতে হল তাঁকে । যন্ত্রসভ্যতার হাত ধরে এল কম্পিউটার । দিন ফুরোল কলমের । এখন সবাই কম্পিউটারেই লেখে । কিন্তু লেখক এবং তাঁর মতো কিছু মানুষ এখনও কলম ফেলে কম্পিউটারকে আপন করে নিতে পারেননি । তাই যন্ত্রের দাপটে কালি – কলমের এই হারিয়ে যাওয়ার যুগে লেখক বারবার আঁকড়ে ধরেছেন তাঁর ছেলেবেলার কলমের স্মৃতিকে । হারিয়ে যাওয়া সেইসব কালি – কলমের কথা ভেবে ভারাক্রান্ত হয়ে উঠেছে তাঁর মন ।

6. ‘ হারিয়ে যাওয়া কালি কলম ‘ প্রবন্ধে লেখক আধুনিক যন্ত্রযুগকে মেনে নিতে চাইছেন না — মন্তব্যটির যথার্থতা বিচার করো ।

  ‘ হারিয়ে যাওয়া কালি কলম ‘ প্রবন্ধে লেখক শ্রীপান্থ কলমের উদ্ভব – বিবর্তন ও পরিণতির দীর্ঘ যাত্রাপথের এক মনোগ্রাহী বিবরণ লিপিবদ্ধ করেছেন । সুদূর অতীতে নীলনদের তীরে নলখাগড়া ভেঙে কলম বানানো থেকে ফিনিসীয়দের মতো হাড়কে কলম হিসেবে ব্যবহার কিংবা জুলিয়াস সিজারের স্টাইলাস নামের শলাকা , তাঁর কাল্পনিক পথ – পরিক্রমায় বাদ যায়নি কোনো কিছুই । এসবই হয়ে উঠেছে কলমের প্রতি লেখকের আন্তরিক ভালোবাসার প্রমাণ । তিনি পরমমমতায় নিজের ছোটোবেলার গ্রামের বাড়িতে কঞ্চি কেটে কলম এবং রান্নার কড়াইয়ের নীচের ভুসো কালি লাউপাতা দিয়ে ঘষে জলে গুলে ও ফুটিয়ে কালি তৈরির গল্প বলেছেন । প্রসঙ্গক্রমে এসেছে কঞ্চি , খাগ কিংবা পালকের কলমের সঙ্গে বিভিন্ন রকমের দোয়াতের প্রসঙ্গ । সে – সময়ে লেখালেখি যে ছোটোখাটো একটা অনুষ্ঠান ছিল , তা যেন আমাদের কাছে জীবন্ত হয়ে উঠেছে । এরপর আবিষ্কৃত হল ফাউন্টেন পেন ; লেখক তার প্রেমে পড়লেন । কলমের সঙ্গে এক চিরকালীন মানবিকতার সম্পর্কে আবদ্ধ হলেন । তারপর কালের নিয়মে হাজির হল কম্পিউটার । দিন ফুরোল কলমের । এখন সবাই অভ্যস্ত হয়ে উঠেছে কম্পিউটারের সঙ্গে । কিন্তু এত পরিবর্তনের মধ্যেও লেখক কলমকে আঁকড়ে ধরেই বেঁচে থাকতে চান । তাঁর সঙ্গে কলমের আশৈশব ভালোবাসা – দুর্বলতার সম্পর্ক । কলমের কাছে এক ভক্তের সমর্পণের সেই ছবিই রচনায় ফুটে ওঠে ; যে – যন্ত্রযুগকে অস্বীকার করে আজও কলমের স্বপ্ন – সম্ভাবনায় বিভোর হয়েই বাকি জীবনটা কাটিয়ে দিতে চায় । 

7. ‘ কলম তাদের কাছে আজ অস্পৃশ্য – কলম কাদের কাছে অস্পৃশ্য ? প্রবন্ধ অনুসারে অস্পৃশ্য হওয়ার কারণ লেখো ।

Answer : শ্রীপান্থর হারিয়ে যাওয়া কালি কলম ’ প্রবন্ধ অনুসারে এখন পকেটমারেরাও আর কলম নিয়ে হাতসাফাইয়ের কলম যাদের কাছে অস্পৃশ্য খেলা দেখায় না । সস্তা কলম আজ তাদের কাছেও নিতান্তই অস্পৃশ্য । অস্পৃশ্য হওয়ার কারণ

   লেখক পাঠ্য রচনায় কলমের সর্বজনীন হয়ে ওঠার বিবরণ দিয়েছেন । কঙি , খাগ কিংবা পালকের কলমকে সরিয়ে ক্রমে ফাউন্টেন পেন সকলের মন জয় করে নেয় । এরপর ডট – পেন কিংবা বল – পেন আসার পরে দেখা দেয় কলমের বিস্ফোরণ । একসময় বলা হত , ‘ কলমে কায়স্থ চিনি , গোঁফেতে রাজপুত । ‘ কিন্তু বর্তমানে কলম বা গোঁফ কোনোটাই আর বিশেষ কারও নয় । এক বিদেশি সাংবাদিকের মতে চৌরঙ্গি অঞ্চলের প্রতি তিনজন ফেরিওয়ালার একজনের পেশা কলম বিক্রি । ফলে সবাই সাক্ষর না – হলেও প্রত্যেকের পকেটে এখন কলম । অতিআধুনিক ছেলেদের কলম আবার বুক – পকেটে নয় ; কাঁধের ছোট্ট পকেটে শোভা পায় । কেউ কেউ আবার তা চুলেও ধারণ করেন । ট্রামে – বাসে ভিড়ের পরিণামে মহিলাযাত্রীর খোঁপাতেও কলম আটকে যায় । অর্থাৎ কলম আজ অত্যন্ত সস্তা , সহজলভ্য এবং সর্বজনভোগ্য । তাই কলমের কোনো মূল্য বা দাম না থাকায় পকেটমারেরাও আর কলমকে নিয়ে হাতসাফাইয়ের খেলা দেখায় না । কলমের অস্পৃশ্য হয়ে ওঠার এই কারণের কথাই লেখক বলেছেন । 

8. ‘ এত বছর পরে সেই কলম যখন হাতছাড়া হওয়ার উপক্রম , তখন মনে কষ্ট হয় বইকী ! – লেখক যেসব কলমের কথা বলেছেন তার পরিচয় দাও । এই প্রসঙ্গে কালি তৈরির ঘরোয়া পদ্ধতিটি বর্ণনা করো ।

Answer : হারিয়ে যাওয়া কালি কলম ‘ প্রবন্ধ অনুসারে লেখক তাঁর ছোটোবেলায় প্রথম লেখালেখি প্রসঙ্গে বাঁশের কঞ্চির কলমের কথা বলেন । সরু বাঁশের কঞ্চি কেটে মুখটি ছুঁচোলো করে , কলমের পরিচয় সাবধানে চিরে দিতে হত । যাতে একসঙ্গে কালি গড়িয়ে না পড়ে যায় । এ ছাড়াও তিনি খাগের কলম এবং পালকের কলম বা কুইলের কথাও বলেছেন । 

9. ‘ আশ্চর্য , সবই আজ অবলুপ্তির পথে । — কোন্ জিনিস আজ অবলপ্তির পথে । এই অবলুপ্তির কারণ কী ? এ বিষয়ে লেখকের মতামত কী । 

Answer : হারিয়ে যাওয়া কলম ‘ রচনায় লেখক শ্রীপান্থ , আধুনিকতার কালপ্রবাহে ক্রমশ অবলুপ্ত হতে চলা কলমের কথা উপরিউক্ত উদ্ধৃতাংশে বলতে চেয়েছেন । B [ ] নবীন বল – পের্ন দোয়াত , কালি , নিবের কলমের স্থান দখল করেছে অনেক আগেই । বিজ্ঞানের ক্রমোন্নতির সোপান ধরে কম্পিউটারের কল্যাণে নবীন বল – পেনও তার মহিমা হারাতে বসেছে । অবলুপ্তির কারণ এযুগের নবীন লেখকেরা গোড়া থেকেই কম্পিউটারে লিখতে অভ্যস্ত হয়ে পড়েছেন । কালপ্রবাহে কলমের অবলুপ্তিতে লেখক বিস্ময় প্রকাশ করেছেন , আশ্চর্য হয়েছেন । কলম ছাড়া লেখালেখির কথা কিছুকাল আগেও মানুষ ভাবতে পারেনি । কলম আর লেখকের সম্পর্ক অবিচ্ছেদ্য , আলাদা করার কথা মানুষের মনেও আসত না । কম্পিউটারের কল্যাণে লেখকের মতামত কলমের অবলুপ্তিতে লেখক বিপন্ন বোধ করছেন । তিনি মনে করছেন , কম্পিউটার যেন তাদের জাদুঘরে পাঠাবে বলে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হয়েছে । বাঁশের কলম , খাগের কলম ছেড়ে বল – পেনে আত্মসমর্পণ করেও লেখক আজ বিপন্ন বোধ করেছেন । ‘ যদি হাতের লেখা মুছে যায় চিরকালের জন্য ‘ — এই হতাশাব্যঞ্জক চিন্তায় তিনি বিচলিত হয়ে উঠেছেন । কম্পিউটারের বিশ্বব্যাপী প্রভাবে সর্বপ্রকার কলমের অবলুপ্তির কথা ভেবেই লেখক একইসঙ্গে আশ্চর্য ও আতঙ্কিত হয়েছেন ।

10. ‘ দ্বিতীয় মহাযুদ্ধের বেশ কয়েক বছর পরের ঘটনা’ দ্বিতীয় মহাযুদ্ধ কী ? তার বেশ কয়েক বছর পরের ঘটনাটি কী ছিল ? 

Answer : ১৯৩৯ খ্রিস্টাব্দের ১ সেপ্টেম্বর হিটলারের জার্মানির পোল্যান্ড আক্রমণের মধ্য দিয়ে দ্বিতীয় মহাযুদ্ধের আরম্ভ হয় । প্রায় ২১৪৯ দিন ধরে চলে ১৯৪৫ খ্রিস্টাব্দের ২ সেপ্টেম্বর জাপানের দ্বিতীয় মহাযুদ্ধ আত্মসমর্পণের মাধ্যমে এই মহাযুদ্ধের সমাপ্তি ঘটে । পৃথিবীর বহু দেশ প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষভাবে সেইসময় দুটি শপ্তিশিবিরে ভাগ হয়ে যায় । এর একটি হল — ইংল্যান্ড , ফ্রান্স , রাশিয়া ও আমেরিকাকে নিয়ে মিত্রশক্তি এবং জার্মান , ইটালি ও জাপানকে নিয়ে গড়ে ওঠে অক্ষশক্তি এ যুদ্ধ প্রথম মহাযুদ্ধের চেয়ে অনেক বেশি সর্বাত্মক আর ধ্বংসাত্মক হওয়ায় যুদ্ধের শেষে ক্ষতিগ্রস্ত বিভিন্ন দেশে নেমে এসেছিল শ্মশানের 

  1. নং প্রশ্নের উত্তরের দ্বিতীয় অংশটি দ্যাখো । 

11. ‘ হারিয়ে যাওয়া কালি কলম ‘ প্রবন্ধে কোন্ কোন্ লেখক ও কবির নাম এসেছে প্রসঙ্গসহ আলোচনা করো । 

Answer : প্রাবন্ধিক শ্রীপান্থ কলমের ঐতিহাসিক বিবর্তন বর্ণনাকালে কলমের সঙ্গে নানাভাবে জড়িয়ে থাকা বিখ্যাত ব্যক্তিদের প্রসঙ্গও আলোচনা করেছেন । প্রথমেই এসেছে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের কথা । কারণ ফাউন্টেন পেনের ঝরনা কলম নামটি সম্ভবত তাঁরই দেওয়া । এরপর লেখক ফাউন্টেন পেন জমানোর গল্প বলতে গিয়ে ঔপন্যাসিক শৈলজানন্দ মুখোপাধ্যায়ের নাম উল্লেখ করেছেন । শৈলজানন্দের ফাউন্টেন পেনের সংগ্রহ ছিল ঈর্ষণীয় । প্রায় ডজন দুয়েক মহার্ঘ কলমের মধ্যে তাঁর কাছে প্রবন্ধে বর্ণিত লেখক পার্কার কলমই ছিল বেশ কয়েকরকম । শৈলজানন্দই ও কবিদের প্রসঙ্গে প্রাবন্ধিককে বলেছিলেন এই কলম জমানোর নেশা তিনি পেয়েছেন শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের কাছ থেকে । আসলে কথাশিল্পী শরৎচন্দ্রেরও দামি ফাউন্টেন পেন সংগ্রহের নেশা ছিল । শ্রীপান্থ সোনার দোয়াত – কলম যে সত্যিই হয় ; তা চাক্ষুষ করেছিলেন চিত্রশিল্পী ও সংগ্রাহক সুভো ঠাকুরের কাছে । এভাবেই কলমের বিভিন্ন দিক নিয়ে আলোচনাকালে আধুনিক যন্ত্রযুগ এবং টাইপরাইটার ও কম্পিউটার – এর ক্রমবর্ধমান প্রসার প্রসঙ্গে তিনি অন্নদাশঙ্কর রায় আর সুভাষ মুখোপাধ্যায়ের কথা বলেন । সেইসঙ্গে মনে করিয়ে দেন লিপিশিল্পী হিসেবে সত্যজিৎ রায়ের পারদর্শিতার কথা । তিনিই শেষপর্যন্ত নিবের কলমের মানমর্যাদা বাঁচিয়ে রেখেছিলেন । এ ছাড়া বিশ্ববন্দিত চিত্রশিল্পী রবীন্দ্রনাথের সূচনা যে – কলম নিয়ে পাণ্ডুলিপির খাতায় অক্ষর কাটাকুটি করতে গিয়ে , তাও আমাদের জানাতে ভোলেন না । রচনাটির শেষে শ্রীপান্থ জানান যে , কলমকে কেবল একবার খুনির ভূমিকায় দেখা গেছে । স্বনামধন্য লেখক ত্রৈলোক্যনাথ মুখোপাধ্যায়ের অসাবধানতাবশত নিজের হাতের কলম বুকে ফুটে গিয়ে মৃত্যু হয়েছিল ।

12. ‘ কালগুণে বুঝিবা আজ আমরাও তা – ই ।— ‘ আমরা ‘ কারা ? বক্তব্যটির সাহায্যে লেখক কী বোঝাতে চেয়েছেন ?

Answer : প্রাবন্ধিক শ্রীপান্থের ‘ হারিয়ে যাওয়া কালি কলম ‘ প্রবন্ধে উদ্ধৃত ‘ আমরা ’ শব্দটি পাই । কালি – কলমে যাঁরা ছোটোবেলা থেকে লিখে এসেছেন । এখন তাঁরাই কম্পিউটারের কাছে আত্মসমর্পণ করেছেন । ‘ আমরা ‘ বলতে সেইসব আত্মসমর্পণকারী অগণিত মানুষকে বোঝানো হয়েছে । লেখক যা বলতে চেয়েছেন । | লেখক শ্রীপান্থ তাঁর প্রবন্ধ হারিয়ে যাওয়া কালি কলম – এ যা বলতে চেয়েছেন প্রবন্ধের নামকরণেই তা লুকিয়ে আছে । তিনি এই প্রবন্ধে কতগুলি প্রবাদের সাহায্যে বিষয়টিকে আলাদা একটা মাত্রা দিয়েছেন । লেখার জগতে যন্ত্র – নির্ভরতা বেড়ে যাওয়ায় ক্রমশ বিদায় নিচ্ছে কালি – কলম । বাংলায় একটা প্রবাদ আছে ‘ কালি – কলম – মন , লেখে তিনজন ” অর্থাৎ এই তিনের সামঞ্জস্যই সুন্দর লেখার মূল । বর্তমানে মন থাকলেও কালি – কলম প্রায় লুপ্ত । লেখক সংবাদপত্রের অফিসে কর্মরত । সেখানে তিনি ছাড়া প্রায় সকলেই । কম্পিউটারে লেখালেখির কাজটা করতেন । কোনো কারণে একদিন লেখক কলম না নিয়ে গেলে বিপদে পড়তেন । আর যদিও – বা খুঁজে পেতে কলম একটা জুটত তবে তাতে তিনি লিখে সুখ পেতেন না । সেদিন সব কাজ তিনি দায়সারাভাবে সারতেন । এই বাস্তব অভিজ্ঞতার কথা বলতে গিয়ে কালি নেই , কলম নেই , বলে আমি মুনশি ‘ প্রবাদটি তুলে ধরেছেন । আমরাও যে সময়ের পরিবর্তনে সেই দিকেই এগোচ্ছি অর্থাৎ কালি – কলম না থেকেও আমি লেখক সে – কথা বোঝাতেই উক্ত প্রসম্পটির অবতারণা করেছেন ।

13. ‘ আমরা কালিও তৈরি করতাম নিজেরাই / -কালি তৈরির পদ্ধতি সম্পর্কে যা জান লেখো ।

Answer : কালি – কলমের অতীত সম্পর্কে আলোচনা করতে গিয়ে লেখক শ্রীপান্থ বাঁশের কঞ্চির কলম তৈরির কথা বলেছেন । একইসঙ্গে সেই কঞ্চির কলম যে কালিতে ডুবিয়ে লেখা হত সেই কালি কীভাবে তৈরি করা হত তাও বলেছেন । লেখকরা নিজেরাই এই কালি তৈরি করলেও মা , পিসিদের সাহায্যও নিতেন । প্রবন্ধে লেখক কালি তৈরির যে দু – রকম পদ্ধতির কথা বলেছেন , তার মধ্যে প্রথমটি আয়োজন – নির্ভর ; সেইসব উপকরণ লেখকদের পক্ষে সংগ্রহ করা কঠিন ছিল । প্রাচীন এই পদ্ধতিতে তিল , ত্রিফলা ( হরীতকী , বহেড়া , আমলকী ) লোহার পাত্রে ছাগলের দুধে ভিজিয়ে রাখতে হত । তারপর একটি লোহার দণ্ড দিয়ে সেটি ভালো করে ঘষে নিতে হত । এই কালি এতটাই টেকসই হত যে , লেখার পাতা ছিঁড়লেও কালি উঠত না । 

  লেখকদের কালি তৈরির পদ্ধতিটি ছিল বেশ সহজ । বাড়িতে কাঠের উনুনে যে – কড়াইয়ে রান্না হত তার তলায় কালি জমত ; সেই কালি লাউপাতা দিয়ে ঘষে তুলে নিয়ে পাথরের বাটিতে রাখা জলে লেখকরা কালি তৈরি গুলে নেওয়া হত । কেউ কেউ এর মধ্যে হরীতকী যেভাবে করতেন ঘষতেন ও পোড়া আতপচাল গুঁড়িয়ে মেশাতেন । সবশেষে খুন্তিকে লাল করে পুড়িয়ে সেই জলে ডোবালে জল ফুটে উঠত । ঠান্ডা হলে ন্যাকড়ায় হেঁকে দোয়াতে ভরে নেওয়া হত ঘরে তৈরি এই কালি । 

14. ‘ ভাবি , আচ্ছা , আমি যদি জিশু খ্রিস্টের আগে জন্মাতাম ! ‘ — জিশু খ্রিস্ট কে ? লেখক তাঁর আগে জন্মালে কী হত বলে জিশু খ্রিস্ট কে ? 

 Answer : জিশু খ্রিস্ট হলেন খ্রিস্টধর্মের অনুসারীদের উপাস্য ঈশ্বরপুত্র , যিনি প্রেম ও প্রশান্তির সপক্ষে দাঁড়িয়ে ক্রুশবিদ্ধ হয়েছিলেন । জিশু খ্রিস্টের জন্মের সময় থেকে ইংরেজি সাল বা খ্রিস্টাব্দের হিসাব করা হয় । শ্রীপান্থ ছদ্মনামের আড়ালে লেখক নিখিল সরকার কল্পনা করেছেন যে , জিশু খ্রিস্টের আগে জন্মালে তিনি হয়তো ভারতে নয় , জন্ম নিতেন প্রাচীন মিশরে । বাঙালি না হয়ে হতেন প্রাচীন সুমেরিয়ান বা ফিনিসিয়ান । হয়তো নীলনদের তীর থেকে নলখাগড়া ভেঙে লেখকের পূর্বে এনে তাকে ভোঁতা করে তুলি বানিয়ে লিখতেন । কিংবা ছুঁচোলো করে কলম তৈরি করতেন । ফিনিসীয় হলে হয়তো বন থেকে হাড়ের টুকরো কুড়িয়ে নিয়ে কলম বানাতেন । যদি তিনি রোমের অধীশ্বর স্বয়ং জুলিয়াস সিজার হতেন , তবে হয়তো স্টাইলাস নামক ব্রোঞ্জের শলাকাই হত তাঁর কলম । প্রাবন্দির এভাবেই কখনও সুমেরীয় বা ফিনিসীয় , আবার কখনও রোমান হিসেবে নিজেকে কল্পনা করে কলমের ঐতিহাসিক পূর্বসুরিদের সঙ্গে আমাদের পরিচয় করিয়েছেন । এর ফলে তিনি সুকৌশলে হাজার হাজার বছর ধরে । কলমের যাত্রাপথটিকে পাঠকের চোখের সামনে অনায়াসে ফুটিয়ে তুলতে পেরেছেন । 

15. ‘ হারিয়ে কালি কলম ‘ প্রবন্ধে যে নানা ধরনের কলমের বর্ণনা রয়েছে , তা সংক্ষেপে আলোচনা করো । 

Answer : হারিয়ে যাওয়া কালি কলম ‘ প্রবন্ধে লেখক শ্রীপাৰ্শ্ব নানা ধরনের কলমের কথা লিখেছেন । একসময় কলম তৈরি হত সরু বাঁশের কঞ্চি কেটে । তারও বহুকাল আগে , জিশু খ্রিস্টের জন্মের আগে হাড় , নলখাগড়া প্রভৃতি দিয়ে কলম বানানো হত । তারপরে এল স্টাইলাস বা ব্রোঞ্চের শলাকা দিয়ে তৈরি কলম । এ ছাড়া চিনারা চিরকালই তুলিতে লেখে । আবার সরস্বতী পুজোয় দেখা যায় খাগের কলম । একসময় পাখির পালকের মুখ সরু করে তৈরি হত কলম , যার নাম ছিল ‘ কুইল ‘ । আধুনিক যুগে সস্তা ও সহজলভ্য কলমকে বলে ডট – পেন বা বল – পেন । তবে কলমের দুনিয়ায় বিপ্লব এনেছিল ফাউন্টেন পেন বা ঝরনা কলম । একইসঙ্গে আভিজাত্য ও সাবলীলতাই ছিল এই ফাউন্টেন পেনের বিশেষত্ব । একসময় এই কলমের নাম ছিল রিজার্ভার পেন । এভাবে বিভিন্ন কলমের বৈচিত্র্যপূর্ণ বর্ণনা প্রসঙ্গো প্রাবন্ধিক মুনশিয়ানার সঙ্গে কলমের উন্মেষ , বিকাশ ও বিবর্তনের যাত্রাপথটিকেও ফুটিয়ে তুলেছেন ।

16. ‘ জন্ম নিল ফাউন্টেন পেন । — ফাউন্টেন পেনের স্রষ্টা কে ? বাংলায় কে এই পেনের নামকরণ করেছিলেন ? ফাউন্টেন পেনের জন্মবৃত্তান্তটি সংক্ষেপে লেখো ।

Answer : উদ্ধৃতাংশটি লেখক শ্রীপান্থের ‘ হারিয়ে যাওয়া কালি কলম নামক প্রবন্ধ থেকে গৃহীত । প্রবন্ধে ফাউন্টেন পেনের স্রষ্টা বলা হয়েছে লুইস অ্যাডসন ওয়াটারম্যানকে । বাংলায় এই পেনের নামকরণ করেছিলেন রবীন্দ্রনাথ । তিনি এই পেনের নাম দেন ঝরনা কলম । 

  পৃথিবীর প্রতিটি আবিষ্কারের পিছনেই থাকে নানান গল্প বা ঘটনা । তবে গল্প বা ঘটনা যাই থাক না কেন প্রয়োজনের তাগিদেই যে আবিষ্কার এ কথা সকলেই মানতে বাধ্য । লুইস অ্যাডসন ওয়াটারম্যানের ফাউন্টেন পেন আবিষ্কারের পিছনেও এমনই একটি বৃত্তান্ত রয়েছে । তিনি ছিলেন একজন ব্যবসায়ী । সেকালের অন্য ব্যবসায়ীদের মতো তিনিও দোয়াত – কলম নিয়ে কাজে বের হতেন । একবার তিনি এক ব্যবসায়ীর ফাউন্টেন পেনের সঙ্গে চুক্তিপত্র সই করতে গিয়েছিলেন । দলিল জন্মবৃত্তান্ত কিছুটা লেখা হয়েছে এমন সময় দোয়াত হঠাৎ উপুড় হয়ে পড়ে গেল কাগজে । আবার তিনি ছুটলেন কালির সন্ধানে । ফিরে এসে তিনি শোনেন , ইতিমধ্যে আর একজন ব্যবসায়ী সইসাবুদ করে চুক্তি পাকা করে ফেলেছেন । এই ঘটনার প্রেক্ষিতে বিমর্ষ ওয়াটারম্যান প্রতিজ্ঞা করেন যে , এর একটা বিহিত তাঁকে করতেই হবে । এরপরেই তাঁর নিরলস প্রচেষ্টায় জন্ম নিল ফাউন্টেন পেন । 

17. ‘ আমার মনে পড়ে প্রথম ফাউন্টেন কেনার কথা ।— ‘ আমার ‘ বলতে কার কথা বোঝানো হয়েছে ? তাঁর ফাউন্টেন কেনার ঘটনাটি সংক্ষেপে বিবৃত করো । 

Answer : শ্রীপাস্থের ‘ হারিয়ে যাওয়া কালি কলম ‘ প্রবন্ধে ‘ আমার ‘ বলতে এখানে স্বয়ং লেখককে বোঝানো হয়েছে । পেন কেনার অভিজ্ঞতা 

  লেখকের প্রথম ফাউন্টেন কেনার অভিজ্ঞতাটি তাঁর মনে রয়ে গেছে । সময়টা ছিল দ্বিতীয় মহাযুদ্ধের কয়েক বছর পর । লেখক কলেজ স্ট্রিটের এক নামি দোকানে ফাউন্টেন পেন কিনবেন বলে গিয়েছিলেন । কী পেন কিনবেন দোকানি এ কথা জানতে চাওয়ায় লেখক কিছুটা ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে যান । তারপর দোকানি তার স্বভাবসুলভ ভঙ্গিতে পার্কার , শেফার্ড , ওয়াটারম্যান , সোয়ান , পাইলট প্রভৃতি পেনের দামসহ নামগুলি মুখস্থ বলতে লাগলেন । ইতিমধ্যে দোকানদার তাঁর মুখের দিকে তাকিয়ে পকেটের অবস্থা আন্দাজ করে সস্তার এক পাইলট নিয়ে যাওয়ার কথা বলেন । জাপানি পাইলট কতটা টেকসই তা বোঝানোর জন্য দোকানি খাপ খুলে সার্কাসের ছুরির খেলা দেখানোর আদলে একটা কার্ডবোর্ডের ওপর সেটি ছুঁড়ে মারেন । তারপর পেনটি কার্ডবোর্ড থেকে খুলে লেখককে নিরটি যে অক্ষত আছে তা দেখালেন । এইভাবে সেদিন লেখক জাপানি পাইলটে মুগ্ধ হয়েছিলেন । দিনের শেষে একখানি জাদু পাইলট নিয়ে বাড়ি ফিরেছিলেন । নামিদামি ফাউন্টেনের ভিড়ে সেই জাপানি পাইলটকে লেখক অনেক দিন অবধি বাঁচিয়ে রেখেছিলেন ।

18. ‘ আমি ছিলাম কালি কলমের ভক্ত / -উদ্ধৃতিটির অর্থ বুঝিয়ে দাও । ফাউন্টেন পেনের নানা ধরনের নিবের বর্ণনা দাও ।

Answer : হারিয়ে যাওয়া কালি কলম ‘ প্রবন্ধের লেখক শ্রীপান্থ নিজের উদ্ধৃতিটির অর্থ ছেলেবেলার স্মৃতিচারণ করেছেন । তিনি ‘ কালি – কলম ‘ ভক্ত বলতে বোঝাতে চেয়েছেন দোয়াত ও নিবের কলমকে । একে তিনি ‘ কালি – খেকো কলম ’ বলে রসিকতাও করেছেন । এই কলমই তাঁর সবচেয়ে পছন্দ । 

  ফাউন্টেন পেনের শৌখিনতা ও আভিজাত্য ছিল উল্লেখযোগ্য । তাদের জন্য ছিল বিদেশি কালি । নিব এবং হ্যান্ডেলও ছিল নানা ধরনের । যেমন ছিল ছুঁচোলো মুখের নিব , তেমনই চওড়া মুখের ফাউন্টেনের নানা নিবও ছিল । বিদেশে গোরুর শিং বা কচ্ছপের খোল ধরনের নিব কেটে টেকসই ও উন্নতমানের নিব তৈরি হত । কখনো কখনো শিংয়ের নিবের মুখে বসানো হত হিরে । প্ল্যাটিনাম , সোনা ইত্যাদিতে মুড়ে তাকে আরও দামি আর মজবুত করা হত । পালকের কলম তাড়াতাড়ি ভোঁতা হয়ে যায় বলে ফাউন্টেন পেনের নিবকে মজবুত করতে এসব ব্যবস্থা গ্রহণ করা হত । এই প্রসঙ্গ আলোচনাকালে ‘ কালি – থেকো কলম ’ – এর প্রতি লেখকের ব্যক্তিগত ভালোবাসা ও দুর্বলতাটিও স্পষ্টরূপে ফুটে ওঠে । বিশেষত কলমপ্রিয় এক লেখকের বিভিন্ন ধরনের কলমের শৈল্পিক বিশেষত্ব ও সুষমার প্রতি আগ্রহ – আকর্ষণের দিকটিও এখানে প্রচ্ছন্ন থাকে না । কলমের সঙ্গে তার ভক্তের যে পরমমমতার সম্পর্ক , পাঠক যেন তার চিরকালীন সাক্ষী হয়ে ওঠে ।

19. দোয়াত যে কত রকমের হতে পারে , না দেখলে বিশ্বাস করা শম্ভু ।— ‘ হারিয়ে যাওয়া কালি কলম ‘ প্রবন্ধে লেখক শ্রীপাদ কালির দোয়াতের যে – বৈচিত্র্যোর কথা লিখেছেন , তা আলোচনা করো । 

Answer : হারিয়ে যাওয়া কালি কলম ‘ প্রবন্ধে প্রাবন্ধিক শ্রীপান্থ কালির দোয়াতের নানা বৈচিত্র্যের কথা জানিয়েছেন । দোয়াত নানারকমের হয় কাচের , কাটগ্লাসের , পোর্সেলিনের শ্বেতপাথরের , জেডের , পিতলের , ব্রোঞ্ঝের , ভেড়ার শিংয়ের , এমনকি সোনারও । একসময়ে মেধাবী ছেলেমেয়েরা পরীক্ষায় ভালোভাবে পাস করলে , গুরুজনরা ‘ সোনার দোয়াত কলম হোক ‘ বলে আশীর্বাদ করতেন । সোনার দোয়াত – কলম যে সত্যিই হত , প্রাবন্ধিক তা প্রত্যক্ষ করেছিলেন স্বনামধন্য সুভো ঠাকুরের ব্যক্তিগত দোয়াত সংগ্রহ দেখতে গিয়ে । তাঁর সংগ্রহের কোনো কোনো দোয়াতের সঙ্গে সাহিত্য ও ইতিহাসের নানা চরিত্রের যোগ পর্যন্ত ছিল । এই সমস্ত দোয়াত দেখে বিস্মিত প্রাবন্ধিকের মনে হয়েছিল শেকসপিয়র , দাস্তে , মিলটন , কালিদাস , ভবভূতি , কাশীরাম দাস , কৃত্তিবাস , রবীন্দ্রনাথ , বঙ্কিমচন্দ্র , শরৎচন্দ্র প্রমুখ দিপাল ব্যক্তি তাঁদের অমর সৃষ্টি রচনা করেছেন এমনই কোনো – না – কোনো দোয়াতের কালি দিয়ে । পৃথিবীর বিখ্যাত সমস্ত কাব্য – নাটকের জন্ম এ হেন সব দোয়াতের কালি থেকে ভেবে প্রাবন্ধিক রোমান্বিত হয়েছেন । 

(১) বহুবিকল্পভিত্তিক প্রশ্নগুলির উত্তর দাও :

১.১ “সবাই এখানে লেখক”। – ‘এখানে’ বলতে কোন স্থানের কথা বোঝানো হয়েছে?

(ক) বিদ্যালয়কে

(খ) পুস্তকালয়কে

(গ) সংবাদপত্রের আপিসকে

(ঘ) লেখকের বাড়িকে

উত্তর : (গ) সংবাদপত্রের আপিসকে

১.২ “কিন্তু আমি ছাড়া কারও হাতে কলম নেই”। – এখানে ‘আমি’ কে?

(ক) ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর

(খ) বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়

(গ) রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

(ঘ) শ্রীপান্থ

উত্তর : (ঘ) শ্রীপান্থ

১.৩ “আমরা কলম তৈরি করতাম” লেখক – কি দিয়ে কলম তৈরি করতেন?

(ক) রোগা বাঁশের কঞ্চি দিয়ে

(খ) শর দিয়ে

(গ) মোটা বাঁশের কঞ্চি দিয়ে

(ঘ) কলম তৈরি করার যন্ত্র দিয়ে

উত্তর : (ক) রোগা বাঁশের কঞ্চি দিয়ে

১.৪ “বাইরে ফেললে গরু খেয়ে নিলে অমঙ্গল”। – এখানে কিসের কথা বলা হয়েছে?

(ক) হোম টাস্ক করা শালপাতার

(খ) পুজোর প্রসাদের

(গ) হোম টাস্ক করা কলাপাতার

(ঘ) পুজোর ফুলের

উত্তর : (গ) হোম টাস্ক করা কলাপাতার

১.৫ “তিন ত্রিফলা সিমুল ছালা”। – এখানে ‘ত্রিফলা’ বলতে কী বোঝানো হয়েছে?

(ক) তিনটি ফলা

(খ) আমলকী, হরীতকী ও বয়ড়া

(গ) আম, জাম ও কাঁঠাল

(ঘ) তিন রকমের ফল

উত্তর : (খ) আমলকী, হরীতকী ও বয়ড়া

১.৬ “আমরা এত কিছু আয়োজন কোথায় পাব”। – কোন্ বিষয়ের জন্য এত আয়োজন এর কথা বলা হয়েছে?

(ক) পড়াশোনার

(খ) পিকনিকের

(গ) কালি তৈরির

(ঘ) পূজো আর্চার

উত্তর : (গ) কালি তৈরির

১.৭ “এত বছর পরে সেই কলম যখন হাতছাড়া হওয়ার উপক্রম তখন মনে কষ্ট হয় বইকী”! – এখানে কোন্ কলম হাত ছাড়ার কথা বলা হয়েছে?

(ক) খাগের কলম

(খ) বাঁশের কঞ্চির কলম

(গ) ঝরনা কলম

(ঘ) পার্কার কলম

উত্তর : (খ) বাঁশের কঞ্চির কলম

১.৮ “আমি যদি রোম সাম্রাজ্যের অধীশ্বর হতাম”, – এখানে লাইনের সঙ্গে কোন প্রসঙ্গটি মেলে?

(ক) আব্রাহাম লিঙ্কন

(খ) জুলিয়াস সিজার

(গ) বিসমার্ক

(ঘ) নেপোলিয়ন

উত্তর : (খ) জুলিয়াস সিজার

১.৯ “তার ইংরেজি নাম ‘কুইল’।” – এখানে কার ইংরেজি নাম কুইল?

(ক) পালকের কলমের

(খ) খাগের কলমের

(গ) হাড়ের কলমের

(ঘ) নলখাগড়ার কলমের

উত্তর : (ক) পালকের কলমের

১.১০ “উইলিয়াম জোন্স কিংবা কেরী সাহেবের স-মুনশি ছবিতে দেখা যায় যার সামনে …” – কি দেখা যায়?

(ক) দামি কলমদানি

(খ) তাদের নেশার সামগ্রী

(গ) নলখাগড়ার কলম

(ঘ) তাদের দোয়াতে গোঁজা পালকের কলম

উত্তর : (ঘ) আদির দোয়াতে গোঁজা পালকের কলম

১.১১ কলমের দুনিয়ায় সত্তিকারের বিপ্লব ঘটাই –

(ক) ফাউন্টেন পেন

(খ) ডট পেন

(গ) পালকের কলম

(ঘ) খাগের কলম

উত্তর : (ক) ফাউন্টেন পেন

১.১২ ফাউন্টেন পেন আবিষ্কার করেন –

(ক) জন হেনরি

(খ) লুইস এডসন ওয়াটারম্যান

(গ) জন ওয়াটারম্যান

(ঘ) জুলিয়াস সিজার

উত্তর :(খ) লুইস এডসন ওয়াটারম্যান

১.১৩ “আমি সেদিন সেই জাদু পাইলট নিয়েই ঘরে ফিরে ছিলাম”। – ‘জাদু পাইলট’ কি?

(ক) জাপানি ফাউন্টেন পেন

(খ) জাদুকর পাইলট

(গ) একটি ঘড়ির নাম

(ঘ) পাইলটের জাদু দেখানো

উত্তর : (ক) জাপানি ফাউন্টেন পেন

১.১৪ “এই নেশা পেয়েছি আমি শরৎদার কাছ থেকে”। – লেখক শরৎদার থেকে কিসের নেশা পেয়েছিলেন?

(ক) পার্কার পেন সংগ্রহের নেশা

(খ) ধূমপানের নেশা

(গ) ফাউন্টেন পেন সংগ্রহের নেশা

(ঘ) মদ্যপানের নেশা

উত্তর : (গ) ফাউন্টেন পেন সংগ্রহের নেশা

১.১৫ “সেসব গরুর শিং নয়তো কচ্ছপের খোল কেটে তৈরি”। – সেসব কি?

(ক) কলমের শিস

(খ) কলমের ঢাকনা

(গ) কলমের নিব

(ঘ) কলমের কালি

উত্তর : (গ) কলমের নিব

১.১৬ “কম্পিউটার তাদের জাদুঘরে পাঠাবে বলে যেন প্রতিজ্ঞা করেছে”। – ‘তাদের’ বলতে এখানে কাদের বোঝানো হয়েছে?

(ক) হাতের লেখার খাতা গুলিকে

(খ) ছাপানো বইগুলিকে

(গ) কাঠের পেন্সিল গুলিকে

(ঘ) কলম গুলিকে

উত্তর : (ঘ) কলম গুলিকে

১.১৭ ‘ক্যালিগ্রাফিস্ট’ – এর বাংলা হলো –

(ক) চিত্রকার

(খ) লেখক

(গ) দক্ষ খেলোয়াড়

(ঘ) লিপি কুশলী

উত্তর : (ঘ) লিপি কুশলী

১.১৮ “বারো আনায় বত্রিশ হাজার অক্ষর লেখানো যেত”। – কোন্ সময়ে এটি হতো?

(ক) সতেরো শতকে

(খ) আঠারো শতকে

(গ) উনিশ শতকে

(ঘ) বিশ শতকে

উত্তর : (গ) উনিশ শতকে

(২) অতিসংক্ষিপ্ত প্রশ্নগুলির উত্তর দাও :

২.১ “প্রতিটি বোতামে ছাপা রয়েছে একটি করে হরফ”। – এখানে কিসের বোতামের কথা বলা হয়েছে?

উত্তর : কম্পিউটার কিবোর্ড এর কথা বলা হয়েছে।

২.২ “তাই কেটে কাগজের মত সাইজ করে নিয়ে আমরা তাতে ‘হোম টাস্ক’ করতাম”। – হোম টাস্ক করার জন্য কি ব্যবহার করা হতো?

উত্তর : সাইজ মতো কলাপাতা কেটে।

২.৩ ‘ক’ অক্ষর গোমাংস বলতে কী বোঝানো হয়েছে?

উত্তর : অক্ষরজ্ঞানহীনতাকে বোঝানো হয়েছে।

২.৪ “লাউপাতা দিয়ে তা ঘষে তুলে একটা পাথরের বাটিতে রাখা জলে তা গুলে নিতে হতো”। – এখানে ‘তা’ বলতে কী বোঝানো হয়েছে?

উত্তর : উনানে রান্না করা হাঁড়ির কালিকে বোঝানো হয়েছে।

২.৫ সরস্বতী পুজোর সময় কোন্ কলম ব্যবহৃত হয়?

উত্তর : খাগের কলম।

২.৬ “কিন্তু সে সব ফাঁকি মাত্র”। – লেখক কোন্ বিষয়টিকে ইঙ্গিত করেছেন?

উত্তর : কোন কোন অফিসের টেবিলের ওপর সাজানো দোয়াত-কলম আসলে ছদ্মবেশী বলপেন।

২.৭ “জন্ম নিল ফাউন্টেন পেন”। – ফাউন্টেন পেন কিভাবে জন্ম হয়েছিল তা উল্লেখ করো।

উত্তর : একজন ব্যবসায়ীর সঙ্গে ওয়াটারম্যান যখন চুক্তিপত্রে সই করছিলেন, তখন তার দোয়াত উল্টে গিয়ে চুক্তিপত্র বাতিল হয়ে যায়। এরপর ওয়াটারম্যান দোয়াত কলমের বিকল্প হিসাবে ফাউন্টেন পেনের উদ্ভাবন করেন।

২.৮ ‘দ্বিতীয় মহাযুদ্ধের বেশ কয়েক বছর পরের ঘটনা”। – ঘটনাটি কি ছিল?

উত্তর : কলকাতার কলেজস্ট্রিট থেকে একটি নামী দোকান থেকে ফাউন্টেন পেনের অভিজ্ঞতার কথা এখানে বলা হয়েছে।

২.৯ “ফাউন্টেন পেনের এক বিপদ..”। – ‘বিপদ’ টি কী?

উত্তর : ফাউন্টেন পেনের লেখার সৌন্দর্যের নেশাগ্রস্ত হওয়ার বিপদ সেখানে বলা হয়েছে।

২.১০ “তবু যদি আমাকে হত্যা করতে চাও, আচ্ছা, তবে তা-ই হোক”। – লেখকের এরকম বলার কারণ কি?

উত্তর : বর্তমানে বাঁশের পেন এবং নিব পেন ছেড়ে অনিচ্ছা সত্ত্বেও লেখককে বল-পেনের সামনে আত্মসমর্পণ করতে হয়েছে। লেখক এই প্রসঙ্গেই উক্তিটি করেছিলেন।

(৩) রচনাধর্মী প্রশ্নগুলির উত্তর দাও :

প্রশ্নঃ ‘আমার মনে পড়ে প্রথম ফাউন্টেন কেনার কথা।’ – ‘আমার’ বলতে কার কথা বোঝানো হয়েছে? তাঁর ফাউন্টেন কেনার ঘটনাটি সংক্ষেপে বিবৃত করো।

উত্তরঃ শ্রীপাস্থের ‘হারিয়ে যাওয়া কালি কলম’ প্রবন্ধে ‘আমার’ বলতে এখানে স্বয়ং লেখককে বোঝানো হয়েছে।

     লেখকের প্রথম ফাউন্টেন কেনার অভিজ্ঞতাটি তাঁর মনে রয়ে গেছে। সময়টা ছিল দ্বিতীয় মহাযুদ্ধের কয়েক বছর পর। লেখক কলেজ স্ট্রিটের এক নামি দোকানে ফাউন্টেন পেন কিনবেন বলে গিয়েছিলেন। কী পেন কিনবেন দোকানি এ কথা জানতে চাওয়ায় লেখক কিছুটা ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে যান। তারপর দোকানি তার স্বভাবসুলভ ভঙ্গিতে পার্কার, শেফার্ড, ওয়াটারম্যান, সোয়ান, পাইলট প্রভৃতি পেনের দামসহ নামগুলি মুখস্থ বলতে লাগলেন। ইতিমধ্যে দোকানদার তাঁর মুখের দিকে তাকিয়ে পকেটের অবস্থা আন্দাজ করে সস্তার এক পাইলট নিয়ে যাওয়ার কথা বলেন। জাপানি পাইলট কতটা টেকসই তা বোঝানোর জন্য দোকানি খাপ খুলে সার্কাসের ছুরির খেলা দেখানোর আদলে একটা কার্ডবোর্ডের ওপর সেটি ছুঁড়ে মারেন। তারপর পেনটি কার্ডবোর্ড থেকে খুলে লেখককে নিরটি যে অক্ষত আছে তা দেখালেন। এইভাবে সেদিন লেখক জাপানি পাইলটে মুগ্ধ হয়েছিলেন। দিনের শেষে একখানি জাদু পাইলট নিয়ে বাড়ি ফিরেছিলেন। নামিদামি ফাউন্টেনের ভিড়ে সেই জাপানি পাইলটকে লেখক অনেক দিন অবধি বাঁচিয়ে রেখেছিলেন।

প্রশ্নঃ ‘কলম তাদের কাছে আজ অস্পৃশ্য’ – কলম কাদের কাছে অস্পৃশ্য? প্রবন্ধ অনুসারে অস্পৃশ্য হওয়ার কারণ লেখো।

উত্তরঃ শ্রীপান্থর ‘হারিয়ে যাওয়া কালি কলম’ প্রবন্ধ অনুসারে এখন পকেটমারেরাও আর কলম নিয়ে হাতসাফাইয়ের কলম যাদের কাছে অস্পৃশ্য খেলা দেখায় না। সস্তা কলম আজ তাদের কাছেও নিতান্তই অস্পৃশ্য।

     লেখক পাঠ্য রচনায় কলমের সর্বজনীন হয়ে ওঠার বিবরণ দিয়েছেন। কঙি, খাগ কিংবা পালকের কলমকে সরিয়ে ক্রমে ফাউন্টেন পেন সকলের মন জয় করে নেয়। এরপর ডট–পেন কিংবা বল–পেন আসার পরে দেখা দেয় কলমের বিস্ফোরণ। একসময় বলা হত, কলমে কায়স্থ চিনি, গোঁফেতে রাজপুত। কিন্তু বর্তমানে কলম বা গোঁফ কোনোটাই আর বিশেষ কারও নয়। এক বিদেশি সাংবাদিকের মতে চৌরঙ্গি অঞ্চলের প্রতি তিনজন ফেরিওয়ালার একজনের পেশা কলম বিক্রি। ফলে সবাই সাক্ষর না হলেও প্রত্যেকের পকেটে এখন কলম। অতিআধুনিক ছেলেদের কলম আবার বুক পকেটে নয়; কাঁধের ছোট্ট পকেটে শোভা পায়। কেউ কেউ আবার তা চুলেও ধারণ করেন। ট্রামে বাসে ভিড়ের পরিণামে মহিলাযাত্রীর খোঁপাতেও কলম আটকে যায়। অর্থাৎ কলম আজ অত্যন্ত সস্তা, সহজলভ্য এবং সর্বজনভোগ্য। তাই কলমের কোনো মূল্য বা দাম না থাকায় পকেটমারেরাও আর কলমকে নিয়ে হাতসাফাইয়ের খেলা দেখায় না। কলমের অস্পৃশ্য হয়ে ওঠার এই কারণের কথাই লেখক বলেছেন। 

প্রশ্নঃ ‘জন্ম নিল ফাউন্টেন পেন।’ – ফাউন্টেন পেনের স্রষ্টা কে? বাংলায় কে এই পেনের নামকরণ করেছিলেন? ফাউন্টেন পেনের জন্মবৃত্তান্তটি সংক্ষেপে লেখো।

উত্তরঃ উদ্ধৃতাংশটি লেখক শ্রীপান্থের ‘হারিয়ে যাওয়া কালি কলম’ নামক প্রবন্ধ থেকে গৃহীত। 

     প্রবন্ধে ফাউন্টেন পেনের স্রষ্টা বলা হয়েছে লুইস অ্যাডসন ওয়াটারম্যানকে। বাংলায় এই পেনের নামকরণ করেছিলেন রবীন্দ্রনাথ। তিনি এই পেনের নাম দেন ঝরনা কলম। 

     পৃথিবীর প্রতিটি আবিষ্কারের পিছনেই থাকে নানান গল্প বা ঘটনা। তবে গল্প বা ঘটনা যাই থাক না কেন প্রয়োজনের তাগিদেই যে আবিষ্কার একথা সকলেই মানতে বাধ্য। লুইস অ্যাডসন ওয়াটারম্যানের ফাউন্টেন পেন আবিষ্কারের পিছনেও এমনই একটি বৃত্তান্ত রয়েছে। তিনি ছিলেন একজন ব্যবসায়ী। সেকালের অন্য ব্যবসায়ীদের মতো তিনিও দোয়াত–কলম নিয়ে কাজে বের হতেন। একবার তিনি এক ব্যবসায়ীর ফাউন্টেন পেনের সঙ্গে চুক্তিপত্র সই করতে গিয়েছিলেন। দলিল জন্মবৃত্তান্ত কিছুটা লেখা হয়েছে এমন সময় দোয়াত হঠাৎ উপুড় হয়ে পড়ে গেল কাগজে। আবার তিনি ছুটলেন কালির সন্ধানে। ফিরে এসে তিনি শোনেন, ইতিমধ্যে আর একজন ব্যবসায়ী সইসাবুদ করে চুক্তি পাকা করে ফেলেছেন। এই ঘটনার প্রেক্ষিতে বিমর্ষ ওয়াটারম্যান প্রতিজ্ঞা করেন যে, এর একটা বিহিত তাঁকে করতেই হবে। এরপরেই তাঁর নিরলস প্রচেষ্টায় জন্ম নিল ফাউন্টেন পেন।

প্রশ্নঃ ‘আমি ছিলাম কালি কলমের ভক্ত।’ – উদ্ধৃতিটির অর্থ বুঝিয়ে দাও। ফাউন্টেন পেনের নানা ধরনের নিবের বর্ণনা দাও।

উত্তরঃ ‘হারিয়ে যাওয়া কালি কলম’ প্রবন্ধের লেখক শ্রীপান্থ নিজের উদ্ধৃতিটির অর্থ ছেলেবেলার স্মৃতিচারণ করেছেন। তিনি ‘কালি–কলম’ ভক্ত বলতে বোঝাতে চেয়েছেন দোয়াত ও নিবের কলমকে। একে তিনি ‘কালি–খেকো কলম’ বলে রসিকতাও করেছেন। 

     ফাউন্টেন পেনের শৌখিনতা ও আভিজাত্য ছিল উল্লেখযোগ্য। তাদের জন্য ছিল বিদেশি কালি। নিব এবং হ্যান্ডেলও ছিল নানা ধরনের। যেমন ছিল ছুঁচোলো মুখের নিব, তেমনই চওড়া মুখের ফাউন্টেনের নানা নিবও ছিল। বিদেশে গোরুর শিং বা কচ্ছপের খোল ধরনের নিব কেটে টেকসই ও উন্নতমানের নিব তৈরি হত। কখনো কখনো শিংয়ের নিবের মুখে বসানো হত হিরে। প্ল্যাটিনাম, সোনা ইত্যাদিতে মুড়ে তাকে আরও দামি আর মজবুত করা হত। পালকের কলম তাড়াতাড়ি ভোঁতা হয়ে যায় বলে ফাউন্টেন পেনের নিবকে মজবুত করতে এসব ব্যবস্থা গ্রহণ করা হত। এই প্রসঙ্গ আলোচনাকালে ‘কালি–থেকো কলম’–এর প্রতি লেখকের ব্যক্তিগত ভালোবাসা ও দুর্বলতাটিও স্পষ্টরূপে ফুটে ওঠে। বিশেষত কলমপ্রিয় এক লেখকের বিভিন্ন ধরনের কলমের শৈল্পিক বিশেষত্ব ও সুষমার প্রতি আগ্রহ–আকর্ষণের দিকটিও এখানে প্রচ্ছন্ন থাকে না। কলমের সঙ্গে তার ভক্তের যে পরমমমতার সম্পর্ক, পাঠক যেন তার চিরকালীন সাক্ষী হয়ে ওঠে।

প্রশ্নঃ ‘সবই আজ অবলুপ্তির পথে।’ – কোন্ জিনিস আজ অবলপ্তির পথে? এই অবলুপ্তির কারণ কী? এ বিষয়ে লেখকের মতামত কী?

উত্তরঃ ‘হারিয়ে যাওয়া কলম’ রচনায় লেখক শ্রীপান্থ, আধুনিকতার কালপ্রবাহে ক্রমশ অবলুপ্ত হতে চলা কলমের কথা উপরিউক্ত উদ্ধৃতাংশে বলতে চেয়েছেন। 

     নবীন বল পেন দোয়াত, কালি, নিবের কলমের স্থান দখল করেছে অনেক আগেই। বিজ্ঞানের ক্রমোন্নতির সোপান ধরে কম্পিউটারের কল্যাণে নবীন বল–পেনও তার মহিমা হারাতে বসেছে। অবলুপ্তির কারণ এযুগের নবীন লেখকেরা গোড়া থেকেই কম্পিউটারে লিখতে অভ্যস্ত হয়ে পড়েছেন। কালপ্রবাহে কলমের অবলুপ্তিতে লেখক বিস্ময় প্রকাশ করেছেন, আশ্চর্য হয়েছেন। কলম ছাড়া লেখালেখির কথা কিছুকাল আগেও মানুষ ভাবতে পারেনি। কলম আর লেখকের সম্পর্ক অবিচ্ছেদ্য, আলাদা করার কথা মানুষের মনেও আসত না। কম্পিউটারের কল্যাণে লেখকের মতামত কলমের অবলুপ্তিতে লেখক বিপন্ন বোধ করছেন। তিনি মনে করছেন, কম্পিউটার যেন তাদের জাদুঘরে পাঠাবে বলে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হয়েছে। বাঁশের কলম, খাগের কলম ছেড়ে বল পেনে আত্মসমর্পণ করেও লেখক আজ বিপন্ন বোধ করেছেন। ‘যদি হাতের লেখা মুছে যায় চিরকালের জন্য’ – এই হতাশাব্যঞ্জক চিন্তায় তিনি বিচলিত হয়ে উঠেছেন। কম্পিউটারের বিশ্বব্যাপী প্রভাবে সর্বপ্রকার কলমের অবলুপ্তির কথা ভেবেই লেখক একইসঙ্গে আশ্চর্য ও আতঙ্কিত হয়েছেন।

প্রশ্নঃ ‘দোয়াত যে কত রকমের হতে পারে, না দেখলে বিশ্বাস করা অসম্ভব।’ – ‘হারিয়ে যাওয়া কালি কলম’ প্রবন্ধে লেখক শ্রীপান্থ কালির দোয়াতের যে বৈচিত্র্যোর কথা লিখেছেন, তা আলোচনা করো।

উত্তরঃ ‘হারিয়ে যাওয়া কালি কলম’ প্রবন্ধে প্রাবন্ধিক শ্রীপান্থ কালির দোয়াতের নানা বৈচিত্র্যের কথা জানিয়েছেন। দোয়াত নানারকমের হয় কাচের, কাটগ্লাসের, পোর্সেলিনের শ্বেতপাথরের, জেডের, পিতলের, ব্রোঞ্ঝের, ভেড়ার শিংয়ের, এমনকি সোনারও। একসময়ে মেধাবী ছেলেমেয়েরা পরীক্ষায় ভালোভাবে পাস করলে, গুরুজনরা ‘সোনার দোয়াত কলম হোক’ বলে আশীর্বাদ করতেন। সোনার দোয়াত–কলম যে সত্যিই হত, প্রাবন্ধিক তা প্রত্যক্ষ করেছিলেন স্বনামধন্য সুভো ঠাকুরের ব্যক্তিগত দোয়াত সংগ্রহ দেখতে গিয়ে। তাঁর সংগ্রহের কোনো কোনো দোয়াতের সঙ্গে সাহিত্য ও ইতিহাসের নানা চরিত্রের যোগ পর্যন্ত ছিল। এই সমস্ত দোয়াত দেখে বিস্মিত প্রাবন্ধিকের মনে হয়েছিল শেকসপিয়র, দাস্তে, মিলটন, কালিদাস, ভবভূতি, কাশীরাম দাস, কৃত্তিবাস, রবীন্দ্রনাথ, বঙ্কিমচন্দ্র, শরৎচন্দ্র প্রমুখ দিপাল ব্যক্তি তাঁদের অমর সৃষ্টি রচনা করেছেন এমনই কোনো না কোনো দোয়াতের কালি দিয়ে। পৃথিবীর বিখ্যাত সমস্ত কাব্য নাটকের জন্ম এহেন সব দোয়াতের কালি থেকে ভেবে প্রাবন্ধিক রোমান্বিত হয়েছেন।

প্রশ্নঃ ‘ফলে আমার মতো আরও কেউ কেউ নিশ্চয় বিপন্ন বোধ করছেন।’ – ‘আমার মতো আরও কেউ কেউ’ বলতে কাদের কথা বলা হয়েছে? তাঁরা বিপন্ন বোধ করছেন কেন?

উত্তরঃ ‘হারিয়ে যাওয়া কালি কলম’ প্রবন্ধের রচয়িতা শ্রীপান্থ ‘আমার মতো আরও কেউ কেউ’ বলতে তাঁর মতো কলমপ্রিয় মানুষের কথা বোঝাতে চেয়েছেন। বিশেষত সেইসব লেখক, যাঁরা কালি–কলমের বিশেষ ভক্ত, তাঁদের কাছে কম্পিউটারের রমরমা এক দুঃসংবাদ। কারণ এতে কালি–কলমের ব্যবহার ক্রমশ কমতে কমতে একসময় সম্পূর্ণ লুপ্ত হবে। 

     কম্পিউটারের আবিষ্কার মানুষকে বেগ দিলেও তার আবেগ কেড়ে নিয়েছে। হাতের লেখার মধ্যে যে মর্মস্পর্শিতা থাকে, তা যান্ত্রিক হরফে খুঁজে পাওয়া যায় না। মানুষের দীর্ঘদিনের লেখার সাথি কালি কলমকে ধীরে ধীরে অবলুপ্তির পথে ঠেলে দিচ্ছে এই কম্পিউটার। ফলে যেসব মানুষজন আজও কম্পিউটারের কি বোর্ডের তুলনায় কালি–কলমকেই বেশি আপন মনে করেন, শ্রীপান্থের মতো সেইসব লোকজন বিপন্ন বোধ করছেন। এই বিপন্নতা কলমের সঙ্গে তার ভক্তের সম্পর্কচ্ছেদের বিপন্নতা। কলমের সঙ্গে মানুষের সম্পর্ক বহু পুরোনো। প্রাচীনকাল থেকে কলমের নানা বিবর্তনের সাক্ষী থেকেছে মানুষ। তার ভাব প্রকাশের হাতিয়ারের অবলুপ্তির আশঙ্কায় সন্দিহান প্রাবন্ধিক আন্তরিক বেদনাবোধ থেকে এমন মন্তব্য করেছেন।

প্রশ্নঃ  ‘ভাবি, আচ্ছা, আমি যদি জিশু খ্রিস্টের আগে জন্মাতাম!’ – জিশুখ্রিস্ট কে? লেখক তাঁর আগে জন্মালে কী হত?

উত্তরঃ জিশুখ্রিস্ট হলেন খ্রিস্টধর্মের অনুসারীদের উপাস্য ঈশ্বরপুত্র, যিনি প্রেম ও প্রশান্তির সপক্ষে দাঁড়িয়ে ক্রুশবিদ্ধ হয়েছিলেন। জিশু খ্রিস্টের জন্মের সময় থেকে ইংরেজি সাল বা খ্রিস্টাব্দের হিসাব করা হয়। শ্রীপান্থ ছদ্মনামের আড়ালে লেখক নিখিল সরকার কল্পনা করেছেন যে, জিশু খ্রিস্টের আগে জন্মালে তিনি হয়তো ভারতে নয়, জন্ম নিতেন প্রাচীন মিশরে। বাঙালি না হয়ে হতেন প্রাচীন সুমেরিয়ান বা ফিনিসিয়ান। হয়তো নীলনদের তীর থেকে নলখাগড়া ভেঙে লেখকের পূর্বে এনে তাকে ভোঁতা করে তুলি বানিয়ে লিখতেন। কিংবা ছুঁচোলো করে কলম তৈরি করতেন। ফিনিসীয় হলে হয়তো বন থেকে হাড়ের টুকরো কুড়িয়ে নিয়ে কলম বানাতেন। যদি তিনি রোমের অধীশ্বর স্বয়ং জুলিয়াস সিজার হতেন, তবে হয়তো স্টাইলাস নামক ব্রোঞ্জের শলাকাই হত তাঁর কলম। প্রাবন্দির এভাবেই কখনও সুমেরীয় বা ফিনিসীয়, আবার কখনও রোমান হিসেবে নিজেকে কল্পনা করে কলমের ঐতিহাসিক পূর্বসুরিদের সঙ্গে আমাদের পরিচয় করিয়েছেন। এর ফলে তিনি সুকৌশলে হাজার হাজার বছর ধরে। কলমের যাত্রাপথটিকে পাঠকের চোখের সামনে অনায়াসে ফুটিয়ে তুলতে পেরেছেন।

প্রশ্নঃ ‘আমরা কালিও তৈরি করতাম নিজেরাই।’ – কালি তৈরির পদ্ধতি সম্পর্কে যা জান লেখো।

উত্তরঃ কালি–কলমের অতীত সম্পর্কে আলোচনা করতে গিয়ে লেখক শ্রীপান্থ বাঁশের কঞ্চির কলম তৈরির কথা বলেছেন। একইসঙ্গে সেই কঞ্চির কলম যে কালিতে ডুবিয়ে লেখা হত সেই কালি কীভাবে তৈরি করা হত তাও বলেছেন। লেখকরা নিজেরাই এই কালি তৈরি করলেও মা, পিসিদের সাহায্যও নিতেন। প্রবন্ধে লেখক কালি তৈরির যে দুরকম পদ্ধতির কথা বলেছেন, তার মধ্যে প্রথমটি আয়োজন–নির্ভর; সেইসব উপকরণ লেখকদের পক্ষে সংগ্রহ করা কঠিন ছিল। প্রাচীন এই পদ্ধতিতে তিল, ত্রিফলা লোহার পাত্রে ছাগলের দুধে ভিজিয়ে রাখতে হত। তারপর একটি লোহার দণ্ড দিয়ে সেটি ভালো করে ঘষে নিতে হত। এই কালি এতটাই টেকসই হত যে, লেখার পাতা ছিঁড়লেও কালি উঠত না। 

     লেখকদের কালি তৈরির পদ্ধতিটি ছিল বেশ সহজ। বাড়িতে কাঠের উনুনে যে কড়াইয়ে রান্না হত তার তলায় কালি জমত; সেই কালি লাউপাতা দিয়ে ঘষে তুলে নিয়ে পাথরের বাটিতে রাখা জলে লেখকরা কালি তৈরি গুলে নেওয়া হত। কেউ কেউ এর মধ্যে হরীতকী যেভাবে করতেন ঘষতেন ও পোড়া আতপচাল গুঁড়িয়ে মেশাতেন। সবশেষে খুন্তিকে লাল করে পুড়িয়ে সেই জলে ডোবালে জল ফুটে উঠত। ঠান্ডা হলে ন্যাকড়ায় হেঁকে দোয়াতে ভরে নেওয়া হত ঘরে তৈরি এই কালি।

প্রশ্নঃ ‘মোগল দরবারে একদিন তাঁদের কত না খাতির, কত না সম্মান’ – ‘তাদের বলতে কাদের কথা বলা হয়েছে? তাঁদের খাতির ও সম্মানের পরিচয় দাও।

উত্তরঃ ‘হারিয়ে যাওয়া কালি কলম’ প্রবন্ধে উদ্ধৃত অংশে ‘তাঁদের’ বলতে ওস্তাদ কলমবাজাদের বোঝানো হয়েছে। পারিভাষিক শব্দে এদের বলে ‘ক্যালিগ্রাফিস্ট’ বা  তাদের পরিচয় ‘লিপিকুশলী’। 

      যাঁরা ওস্তাদ কলমবাজ, তাঁদের স্থান ইতিহাসে পাকা। মোগল দরবারে তাঁদের প্রচুর খাতির ও সম্মান ছিল। শুধু মোগল দরবার নয়, পৃথিবীর সর্বত্রই তাঁদের কদর ছিল। এমনকি বাংলা দেশেও রাজা–জমিদাররা লিপিকুশলীদের গুণের কদর করতেন। তাঁদের ভরণ–পোষণের ব্যবস্থাও করা হত। সাধারণ গৃহস্থেরাও এই লিপিকরদের ডেকে পুথি নকল করাতেন। আজও সেসব পুথি দেখলে চোখ জুড়িয়ে যায়। সংস্কৃতে যাকে বলে ‘সমানি সমশীর্ষাণি ঘনানি বিরলানি চ’ অর্থাৎ সব অক্ষর সমান, প্রতিটি ছত্র সুশৃঙ্খল ও পরিচ্ছন্ন। এইসব লিপিকরদের হস্তাক্ষর ছিল মুক্তোর মতো। অথচ এঁদের রোজগার ছিল সামান্যই। অষ্টাদশ শতকে এক লিপিকুশলী চারখণ্ড রামায়ণ কপি করে নগদ সাত টাকা, কিছু কাপড় আর মিঠাই সাম্মানিক হিসেবে পেয়েছিলেন অর্থাৎ সেসময়ে এদের উপার্জন কম হলেও গুণের সমাদর ছিল।

প্রশ্নঃ ‘কালগুণে বুঝিবা আজ আমরাও তাই।’ – ‘আমরা’ কারা? বক্তব্যটির সাহায্যে লেখক কী বোঝাতে চেয়েছেন?

উত্তরঃ প্রাবন্ধিক শ্রীপান্থের ‘হারিয়ে যাওয়া কালি কলম’ প্রবন্ধে উদ্ধৃত ‘আমরা’ শব্দটি পাই কালি কলমে যাঁরা ছোটোবেলা থেকে লিখে এসেছেন। এখন তাঁরাই কম্পিউটারের কাছে আত্মসমর্পণ করেছেন। ‘আমরা’ বলতে সেইসব আত্মসমর্পণকারী অগণিত মানুষকে বোঝানো হয়েছে লেখক যা বলতে চেয়েছেন। 

     লেখক শ্রীপান্থ তাঁর প্রবন্ধ হারিয়ে যাওয়া কালি কলমে যা বলতে চেয়েছেন প্রবন্ধের নামকরণেই তা লুকিয়ে আছে। তিনি এই প্রবন্ধে কতগুলি প্রবাদের সাহায্যে বিষয়টিকে আলাদা একটা মাত্রা দিয়েছেন। লেখার জগতে যন্ত্র নির্ভরতা বেড়ে যাওয়ায় ক্রমশ বিদায় নিচ্ছে কালি কলম। বাংলায় একটা প্রবাদ আছে ‘কালি-কলম-মন লেখে তিনজন’ অর্থাৎ এই তিনের সামঞ্জস্যই সুন্দর লেখার মূল। বর্তমানে মন থাকলেও কালি–কলম প্রায় লুপ্ত। লেখক সংবাদপত্রের অফিসে কর্মরত। সেখানে তিনি ছাড়া প্রায় সকলেই কম্পিউটারে লেখালেখির কাজটা করতেন। কোনো কারণে একদিন লেখক কলম না নিয়ে গেলে বিপদে পড়তেন। আর যদিও বা খুঁজে পেতে কলম একটা জুটত তবে তাতে তিনি লিখে সুখ পেতেন না। সেদিন সব কাজ তিনি দায়সারাভাবে সারতেন। এই বাস্তব অভিজ্ঞতার কথা বলতে গিয়ে ‘কালি নেই, কলম নেই, বলে আমি মুনশি’ প্রবাদটি তুলে ধরেছেন। আমরাও যে সময়ের পরিবর্তনে সেই দিকেই এগোচ্ছি অর্থাৎ কালি–কলম না থেকেও আমি লেখক সে কথা বোঝাতেই উক্ত প্রসম্পটির অবতারণা করেছেন।

প্রশ্নঃ ‘কলমকে বলা হয় তলোয়ারের চেয়েও শক্তিধর।’ – বিষয়টি ব্যাখ্যা করো। এমন বলার কারণ কী বলে তোমার মনে হয়?  

উত্তরঃ শ্রীপান্থ লিখিত ‘হারিয়ে যাওয়া কালি কলম’ প্রবন্ধ থেকে উদ্ধৃত উক্তিটি একটি প্রবাদপ্রতিম বাক্য। প্রাবন্ধিক ঈষৎ ঠাট্টার হলে এটিকে আক্ষরিক অর্থে ব্যবহার করেছেন। তলোয়ারের চেয়ে বন্দুকের শক্তি বেশি। তাই ফাউন্টেন পেন যেন আভাসে–ইঙ্গিতে সে কথাই বলতে চায়। কারণ ফাউন্টেন পেনের বিভিন্ন অংশগুলিকে ব্যারেল, কার্টিজ ইত্যাদি নামে ডাকা হয়। এই শব্দগুলির সঙ্গে গোলা–বন্দুকের যোগাযোগের কথা কে না জানে। তবে বারুদের সঙ্গে কলমের কোনো সম্পর্ক নেই। ইতিহাসে এমন অনেক লেখকের উল্লেখ পাওয়া যায়, যাঁদের লেখনীর ধার, তলোয়ারের চেয়েও বেশি। আর সেই ক্ষুরধার কলমকে হাতিয়ার করে তাঁরা অনেক কুর, মিথ্যেবাদী প্রতিপক্ষের সঙ্গে লড়াই চালিয়েছেন।

    এখানে কলমের শক্তির অন্তর্নিহিত অর্থ হল, মানুষের লিখন–দক্ষতা বা লেখনীর ক্ষমতা। বন্দুক বা তলোয়ারের মতো অস্ত্র প্রয়োগ করে মানুষকে হত বা আহত করা যায়, কিন্তু মানুষের চিন্তাশক্তি তথা লেখনীর শক্তি শত সহস্র মানুষের ভাবনা, আদর্শ কিংবা দর্শনকে কেবল প্রভাবিতই করে না, সম্পূর্ণ বদলেও দিতে পারে। আর লেখার এই প্রভাব বা প্রতিক্রিয়া যুগযুগান্তরব্যাপী স্থায়ী হয়। তাই কলমকে তলোয়ারের চেয়েও শক্তিধর বলে বিবেচনা করা হয়। বরং এক্ষেত্রে বলা চলে, কলমই সর্বশ্রেষ্ঠ অস্ত্র।

 

©kamaleshforeducation.in(2023)

 

 

 

 

 

 

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!