।।আয়ের উৎস সন্ধানে।।

 

।।আয়ের উৎস সন্ধানে।।

💰একজন সরকারী কর্মচারী কি তার চাকরির বেতন ছাড়া আর অন্য কোনো উপায়ে কি কিছু আয় করতে পারেন?

দেখা যাক, নিয়ম কানুন কি আছে এই ব্যাপারে। সকলেই কমবেশি জানেন যে

🔶West Bengal Services (Duties, Rights and Obligations of the Government Employee) Rules 1980 এর 5(10) এবং 5(11) অনুযায়ী একজন সরকারী কর্মচারী সরকারের আগাম অনুমতি ছাড়া অন্য কোনো চাকরি, প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে কোনো ব্যবসা করা অথবা ব্যবসা পরিচালনা করতে পারবেন না।
🔶ওই নিয়মেরই 5(9) ধারা অনুসারে একজন সরকারী কর্মচারী তার নিয়োগকর্তার আগাম অনুমতি ছাড়া নামমাত্র মূল্যের কোনো উপহার ছাড়া অন্য কোনো ধরনের উপহার গ্রহণ করতে পারবেন না। নামমাত্র মূল্য বলতে কত টাকা সেই বিষয়ে কোনো নির্দেশিকা নেই। তবে কোনো ধর্মীয় বা সামাজিক প্রথার মাধ্যমে পাওয়া উপহার এই নিয়মের আওতায় আসবে না।
🔶আবার 5(2) ধারা অনুসারে একজন সরকারী কর্মচারী তার নিয়োগকর্তার আগাম অনুমতি ছাড়া কোনো স্থাবর বা অস্থাবর সম্পত্তি অর্জন করতে পারবেন না ক্রয় বা দানের মাধ্যমে।
এবার অন্যদিকটা দেখা যাক।
♂️West Bengal Services (Duties, Rights and Obligations of the Government Employee) Rules 1980 এর 4(4) এবং 4(5) অনুযায়ী একজন সরকারী কর্মচারী কর্তৃপক্ষকে আগাম জানিয়ে (অনুমতি নয়) রেডিও টেলিভিশনের অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করতে পারেন শর্তসাপেক্ষে। শর্ত হচ্ছে যে সেই সমস্ত অনুষ্ঠান যেন কোনো সাম্প্রদায়িক বা সংকীর্ণ চিন্তাধারাকে প্ররোচিত না করে এবং দেশের একতা ও অখণ্ডতার বিরোধী না হয়।
♂️ওই একই শর্তসাপেক্ষে একজন সরকারী কর্মচারী কোনো সংবাদপত্র অথবা পত্রপত্রিকায় সাহিত্য বা বিজ্ঞান বিষয়ক লেখা অথবা কোনো চিঠিপত্র লিখতে পারেন।
তাহলে দেখা যাচ্ছে যে উপরে উল্লিখিত সুযোগ সুবিধা কাজে লাগিয়ে একজন সরকারী কর্মচারীর সামনে কিছু আয় করার রাস্তা থাকছে।
অর্থাৎ এই সমস্ত কাজের বিনিময়ে তিনি fee বা remuneration নিতে পারেন।
এবার দেখা যাক, fee বা remuneration নেওয়ার ক্ষেত্রে কি কি নিয়ম আছে।
✅একজন সরকারী কর্মচারী উপযুক্ত কর্তৃপক্ষের অনুমোদন নিয়ে কোনো ব্যক্তি, সংস্থার হয়ে কোনো পরিষেবা প্রদান করে fee বা remuneration গ্রহন করতে পারেন।
তবে অনুমোদনকারী কর্তৃপক্ষ লিখিত ভাবে নিশ্চিতকরন করবেন যে এর ফলে ওই কর্মচারীর সরকারী কাজের কোনো ক্ষতি হবে না।
✅যদি সরকারী কাজের সময়কে ব্যবহার করে কোনো পরিষেবার মাধ্যমে fee বা remuneration পেয়ে থাকেন তাহলে সেই সম্পূর্ণ অর্থ সরকারের কোষাগারে জমা দিতে হবে যদি না অনুমোদনকারী কর্তৃপক্ষ বিশেষ কারন উল্লেখ করে সেই অর্থের সম্পূর্ণ বা একটা অংশ ওই কর্মচারীকে প্রদান করেন।
✅fee বা remuneration যদি মাসিক ভিত্তিতে recurring হয় তাহলে তার পরিমাণ উক্ত কর্মচারীর মূল বেতনের 20% এর থেকে বেশি হবে না এবং সর্বোচ্চ 6 মাসের জন্য fee বা remuneration গ্রহনের অনুমতি দেওয়া যাবে। এই অর্থ থেকে কোনো অংশ সরকারকে জমা দিতে হবে না।
✅fee বা remuneration যদি এককালীন হয় তাহলে তার পরিমাণ উক্ত কর্মচারীর সেই আর্থিক বছরের মোট মূল বেতনের 20% অপেক্ষা বেশি হবে না এই অর্থ থেকে কোনো অংশ সরকারকে জমা দিতে হবে না।
✅কোনো কাজের মাধ্যমে fee বা remuneration গ্রহনের বিষয় থাকলে অবশ্যই সেই কাজের জন্য উপযুক্ত কর্তৃপক্ষের আগাম অনুমোদন থাকতে হবে এবং fee বা remuneration গ্রহনের জন্যও আলাদা করে অনুমোদন থাকতে হবে।
✅Fee বা Remuneration এর আর্থিক মূল‌্য কাজের সাপেক্ষে (যে কাজের জন্য fee নিচ্ছেন) যথোপযুক্ত সম্মানজনক হতে হবে।
✅500 টাকা পর্যন্ত Fee বা Remuneration নেওয়ার জন্য অনুমতি দিতে পারেন Head of the Department. তার বেশি পরিমাণ হলে কে অনুমতি দেবেন সেই বিষয়ে কিছু বলা নেই। কাজেই ধরে নেওয়া যেতে পারে যে সেইসব ক্ষেত্রে অনুমতি দেবে অর্থ দপ্তর।
✅এই ধরনের কাজের অনুমতি নেওয়ার সময় কর্তৃপক্ষ লিখিত ভাবে জানাবেন যে WBSR Part-I এর Rule-15 কে গুরুত্ব দেবেন যেখানে বলা হয়েছে একজন সরকারী কর্মচারী যে কাজের জন্য বেতন পেয়ে থাকেন, কেবলমাত্র সেই কাজের জন্যই সর্বদা উপলব্ধ থাকবেন এবং সেই কাজের বিনিময়ে নির্ধারিত বেতন ছাড়া আর কোনো অর্থ নিতে পারবেন না।
❓এখন একটা প্রশ্ন প্রায়ই শোনা যায় যে YouTube এ কোনো video blog (Vlog) করার মাধ্যমে কি কিছু রোজগার করা সম্ভব?
🅰️উত্তর – যখন WBSR এ Fee বা Remuneration সংক্রান্ত নিয়ম প্রকাশিত হয় তখন YouTube channel এর ধারণা ছিল না। পরবর্তী সময়েও কোনো ধরনের সামাজিক মাধ্যম নিয়ে কোনো ধরনের আদেশনামা প্রকাশিত হয়নি।
এমনিতে আমরা অনেকেই বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যমে কমবেশি সক্রিয়। সরকারী কর্মচারী হিসেবে আপাততঃ এখনও পর্যন্ত এই ব্যাপারে কোনো বিধিনিষেধ নেই।
সুতরাং Fee বা Remuneration সংক্রান্ত নিয়ম মেনে YouTube থেকে অর্থ রোজগারের ক্ষেত্রেও কোনো বাধা থাকা উচিত নয়। তবে অন্যান্য ক্ষেত্রের মতো এক্ষেত্রেও উপযুক্ত ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের অনুমতি প্রয়োজন অবশ্যই।
এছাড়াও সম্প্রচারের বিষয়বস্তু নিয়েও সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে, যেন সেটা প্রচলিত নিয়ম ও আইনের পরিপন্থী না হয়।
 

©kamaleshforeducation.in(2023)

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!