নারী ও শিশুবিকাশমন্ত্রক

 
আন্তর্জাতিক নারী দিবস ২০২৫

মহিলাদের ক্ষমতায়নের মধ্য দিয়ে বিশ্বের ক্ষমতা বৃদ্ধি

প্রকাশিত: 06 MAR 2025 9:39AM by PIB Kolkata
নতুন দিল্লি, ৬ মার্চ ২০২৫

সূচনা

বিশ্বজুড়ে ৮ মার্চ আন্তর্জাতিক নারী দিবস উদযাপিত হয়। এই দিন জাতীয়, সম্প্রদায়গত, ভাষা, সংস্কৃতি, অর্থনীতি অথবা রাজনীতির গন্ডি পেরিয়ে সর্বস্তরের মহিলাদের নিজ নিজ সাফল্যের জন্য স্বীকৃতি দেওয়া হয়। এবছরের আন্তর্জাতিক নারী দিবসের মূল ভাবনা “প্রত্যেক মহিলা এবং শিশুকন্যার জন্য অধিকার, সমতা ও ক্ষমতায়ন”। এবারের মূল ভাবনার মধ্য দিয়ে সকলের জন্য সমান অধিকার, ক্ষমতা এবং সুযোগের আহ্বান জানানো হয়েছে, যাতে অদূর ভবিষ্যতে কেউই বঞ্চিত না হয়। কেন্দ্র এই লক্ষ্যে আগামী প্রজন্মের ক্ষমতায়ন নিশ্চিত করতে উদ্যোগী হয়েছে। এই পরিবর্তনের যাত্রাপথে বিশেষত যুবতী এবং নাবালিকাদের ক্ষমতায়নের মধ্য দিয়ে তাদের অধিকারকে স্বীকৃতি দেওয়া হচ্ছে।

বেজিং ঘোষণা এবং প্ল্যাটফর্ম ফর অ্যাকশনের এবছর ৩০তম বার্ষিকী। বিশ্বজুড়ে মহিলাদের এবং বালিকাদের অধিকারকে নিশ্চিত করতে এই ঘোষণা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। এর মাধ্যমে মহিলাদের অধিকার আইনি স্বীকৃতি পেয়েছে, তাদের কর্মক্ষেত্রে প্রবেশ সহজ হয়েছে। বিভিন্ন সামাজিক বিধি-নিষেধে পরিবর্তন আনা সম্ভব হয়েছে।

ভারতে মহিলাদের ক্ষমতায়ন এবং লিঙ্গ সাম্যের জন্য নানাবিধি নীতি, প্রকল্প এবং আইনি ব্যবস্থাপনা কার্যকর হয়েছে। সরকার এই লক্ষ্যে নানা ধরনের উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। দেশ এখন মহিলাদের উন্নয়নের পরিবর্তে মহিলাদের নেতৃত্বে উন্নয়নে অগ্রাধিকার দিচ্ছে। এর ফলে, দেশের প্রগতিতে সকলের সমান অংশগ্রহণ নিশ্চিত হয়েছে। ভারতের আর্থসামাজিক ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় পরিবর্তন আনতে মহিলারা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছেন। তাঁরা শিক্ষা, স্বাস্থ্য, ডিজিটাল অন্তর্ভুক্তি এবং নেতৃত্বদানের ক্ষেত্রে সব ধরনের বাধা-বিপত্তিকে সরিয়ে দিচ্ছে।

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী আন্তর্জাতিক নারী দিবসের প্রাক্কালে ৩ মার্চ নমো অ্যাপ ওপেন ফোরামে ভারতের মহিলাদের অনুপ্রেরণামূলক বিভিন্ন সাফল্য সকলের সঙ্গে ভাগ করে নিয়েছেন। তিনি সমাজের বিভিন্ন ক্ষেত্রের মহিলাদের নানা সাফল্যের প্রশংসা করেন। ৮ মার্চ তাঁর সামাজিক মাধ্যমের অ্যাকাউন্টে প্রধানমন্ত্রী কয়েকজন মহিলাকে নির্বাচন করেছেন, যাঁরা তাঁদের অভিজ্ঞতার কথা সেখানে বিস্তারিত ভাবে জানাবেন। এর মধ্য দিয়ে সংশ্লিষ্ট মহিলাদের ক্ষমতায়ন ও সাফল্যের বিষয়ে বিস্তারিত ভাবে জানা যাবে। অন্য মহিলারাও সামাজিক মাধ্যমে এই বিষয়গুলি সম্পর্কে জানতে পেরে অনুপ্রাণিত হবেন।

সংবিধান এবং আইনি ব্যবস্থাপনা

ভারতীয় সংবিধান তার প্রস্তাবনা, মৌলিক অধিকার এবং রাষ্ট্রের বিভিন্ন নীতির মাধ্যমে লিঙ্গ সাম্য নিশ্চিত করেছে। সংবিধানের ১৪ নম্বর অনুচ্ছেদ অনুসারে আইনের চোখে সকলের সমানাধিকারের কথা বলা হয়েছে। অন্যদিকে, ১৫ নম্বর অনুচ্ছেদে লিঙ্গ ভিত্তিক বৈষম্যের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের উল্লেখ রয়েছে। মহিলাদের মর্যাদা হানি হয়, এধরনের যে কোন নিয়ম বাতিল করতে সংবিধানের ৫১ নম্বর ধারার ক-এর ঙ অনুচ্ছেদে বলা আছে। জীবনযাপন, বেতন সহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে সমানাধিকার এবং মাতৃত্বকালীন বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধার কথা ৩৯ এবং ৪২ নম্বর ধারায় উল্লেখ রয়েছে। ভারত নারী অধিকার সংক্রান্ত বিভিন্ন আন্তর্জাতিক চুক্তিতেও স্বাক্ষর করেছে।

মহিলাদের ক্ষমতায়নের জন্য সরকারের বিভিন্ন প্রকল্প

শিক্ষা

মহিলাদের ক্ষমতায়ন ও আর্থিক ভাবে সাবলম্বী হয়ে ওঠার ক্ষেত্রে শিক্ষার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। প্রাথমিক শিক্ষা থেকে উচ্চশিক্ষা পর্যন্ত শিক্ষার প্রতিটি ক্ষেত্রে মহিলারা যাতে সমান সুযোগ পান, তা নিশ্চিত করতে নানা উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। শিক্ষা ক্ষেত্রে মহিলাদের অংশগ্রহণ উল্লেখযোগ্যহারে বৃদ্ধি পেয়েছে। সাম্প্রতিক সময়কালে বিভিন্ন পাঠক্রমে পুরুষদের চেয়ে মহিলারা অধিক সংখ্যায় যুক্ত হচ্ছেন।

স্বাস্থ্য ও পুষ্টি

 

মহিলাদের কল্যাণের জন্য স্বাস্থ্য পরিষেবা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সংশ্লিষ্ট ক্ষেত্রে লিঙ্গভিত্তিক বৈষম্য দূর করতে সরকার বিভিন্ন নীতি প্রণয়ন করেছে। এর মধ্য দিয়ে মা ও শিশুর স্বাস্থ্য, পুষ্টি এবং মহিলাদের নানা ধরনের চিকিৎসা পরিষেবা নিশ্চিত হয়েছে।

আর্থিক ক্ষমতায়ন এবং অর্থনীতিতে অন্তর্ভুক্তিকরণ

আর্থিক উন্নতিতে কর্মক্ষেত্রে মহিলাদের অংশগ্রহণ চালিকা শক্তি হিসেবে কাজ করে। মহিলারা যাতে আর্থিক ভাবে সাবলম্বী হন, শিল্পোদ্যোগে এগিয়ে আসেন এবং সকলের সমান কাজের সুযোগ নিশ্চিত হয়, তার জন্য সরকার একগুচ্ছ প্রকল্প চালু করেছে।

ডিজিটাল এবং প্রযুক্তি ক্ষেত্রে ক্ষমতায়ন

ডিজিটাল যুগে মহিলাদের আর্থসামাজিক উন্নয়নে প্রযুক্তি ব্যবহারের সুযোগ এবং ডিজিটাল স্বাক্ষরতা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। মহিলারা যাতে ডিজিটাল বিপ্লবে সামিল হতে পারেন, তা নিশ্চিত করতে সরকার বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণ করেছে।

সুরক্ষা এবং নিরাপত্তা

 

ভারত সরকার মহিলাদের নিরাপত্তাকে অগ্রাধিকার দেয়। দেশে বিভিন্ন আইন এবং তহবিল ও ফাস্ট-ট্র্যাক আদালত গড়ে তোলা হয়েছে। এর ফলে মহিলাদের বিরুদ্ধে অপরাধ প্রবণতা হ্রাস পাচ্ছে।

উপসংহার

 

সুসংহত নীতি, বিভিন্ন প্রকল্প এবং আইনি পরিকাঠামোর মধ্য দিয়ে মহিলাদের ক্ষমতায়নের ক্ষেত্রে ভারত উল্লেখযোগ্য সাফল্য অর্জন করেছে। অর্থনৈতিক কর্মকান্ডে অংশগ্রহণ থেকে শুরু করে নিরাপত্তা, ডিজিটাল ব্যবস্থাপনায় অন্তর্ভুক্তি এবং শিক্ষা – সংশ্লিষ্ট প্রত্যেক ক্ষেত্রে সরকার মহিলাদের জীবনের মানোন্নয়ন ঘটাতে নানা উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। একটি সর্বাঙ্গীন লিঙ্গ সাম্য যুক্ত সমাজ গড়ে তুলতে আসুন আন্তর্জাতিক নারী দিবসে সকলে অঙ্গীকারবদ্ধ হই, যেখানে দেশ গঠনের কাজে মহিলারা মুখ্য ভূমিকা পালন করবেন। নীতি প্রণয়ন, সম্প্রদায়গত ক্ষেত্রে অংশীদারিত্ব এবং ডিজিটাল ব্যবস্থাপনায় অন্তর্ভুক্তির মতো সুস্থায়ী বিভিন্ন উদ্যোগই আগামীদিনে ভারতের উন্নয়নযাত্রায় নারীদের অংশগ্রহণকে নিশ্চিত করবে।

উল্লেখযোগ্য কিছু সূত্র –

Ministry of Women and Child Development
https://www.pmindia.gov.in/en/news_updates/pm-encourages-women-to-share-their-inspiring-life-journeys/
https://www.un.org/en/observances/womens-day/background
https://www.un.org/en/observances/womens-day

বিস্তারিত জানতে নিচের লিঙ্কেটি দেখুন –

https://static.pib.gov.in/WriteReadData/specificdocs/documents/2025/mar/doc202536513601.pdf

SC/CB/AS
(রিলিজ আইডি: 2108811)  

SOURCE-PIB

 ©kamaleshforeducation.in(2023)

error: Content is protected !!