MCQ | আয় আরো বেঁধে বেঁধে থাকি (কবিতা) শঙ্খ ঘোষ
– মাধ্যমিক বাংলা সাজেশন | Madhyamik Bengali Suggestion :
- ‘ আমাদের পথ নেই আর ।’— ‘ পথ ‘ শব্দটি কবিতায় ব্যবহৃত হয়েছে – (A) দু – বার (B) একবার(C) চারবার (D) তিনবার
Answer : (A) দু – বার
- আমাদের কী নেই বলে কবির মত প্রকাশ ?(A) ভূগোল (B) ইতিহাস (C) বাংলা (D) জীবন
Answer : (D) জীবন
- “ আমাদের চোখমুখ ঢাকা ।’— ‘ চোখমুখ ‘ অর্থে কবি বলেছেন (A) মুখোশাবৃত (B) সময়াবৃত (C) অলংকারাবৃত(D) সমাজাবৃত
Answer : (A) মুখোশাবৃত
- আমরা ভিখারি কত মাসে বলে কবির মত ।(A) পাঁচ মাস (B) ছ – মাস (C) আট মাস ।(D) বারো মাস
Answer : (D) বারো মাস
- ‘ আয় আরো বেঁধে বেঁধে থাকি ‘ কবিতাটি কবির কোন্ কাব্যগ্রন্থের অন্তর্গত -(A) ‘ নিহিত পাতাল ছায়া ‘(B) ‘ পাঁজরে দাঁড়ের শব্দ(C) ‘ দিনগুলি রাতগুলি ‘ (D) ‘ জলই পাষাণ হয়ে আছে
Answer : (D) ‘ জলই পাষাণ হয়ে আছে
- ‘ আয় আরো বেঁধে বেঁধে থাকি ‘ কবিতাটির কবি হলেন – (A) জীবনানন্দ দাশ (B) শঙ্খ ঘোষ (C) নীরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী (D) বিষ্ণু দে
Answer : (B) শঙ্খ ঘোষ
- কবি শঙ্খ ঘোষের প্রথম প্রকাশিত কাব্যগ্রন্থটি হল – (A) দিনগুলি রাতগুলি (B) নিহিত পাতাল ছায়া (C) মুখ ঢেকে যায় বিজ্ঞাপনে (D) বাবরের প্রার্থনা
Answer : (A) দিনগুলি রাতগুলি
- শঙ্খ ঘোষ রচিত একটি প্রবন্ধ গ্রন্থ হল—(A) মুখ ঢেকে যায় বিজ্ঞাপনে (B) অল্প বয়সে (C) কালের মাত্রা ও রবীন্দ্র নাটক (D) সুপুরিবনের সারি
Answer : (C) কালের মাত্রা ও রবীন্দ্র নাটক
- শঙ্খ ঘোষের ছদ্মনাম কী ছিল ? (A) যাযাবর (B) মৌমাছি (C) নীললোহিত (D) কুত্তক
Answer : (D) কুত্তক
- ‘ কুত্তক ‘ ছদ্মনামে লেখা শঙ্খ ঘোষের রচনাগুলির নাম হল – (A) শব্দ নিয়ে খেলা ও কথা নিয়ে খেলা (B) দিনগুলি রাতগুলি , বাবরের প্রার্থনা (C) ছন্দময় জীবন , ভিন্ন রুচির অধিকার (D) এই শহরের রাখাল , ছন্দের বারান্দা
Answer : (A) শব্দ নিয়ে খেলা ও কথা নিয়ে খেলা
- ‘ আয় আরো বেঁধে বেঁধে থাকি ‘ কথাটি কবিতায় ব্যবহৃত হয় – (A) এক বার (B) দু – বার (C) তিন বার (D) চার বার
Answer : (B) দু – বার
- ‘ আয় আরো বেঁধে বেঁধে থাকি ‘ বাক্যটির অর্থ – (A) দৃঢ় বন্ধনে আবদ্ধ হয়ে থাকা (B) ছাড়া ছাড়া থাকা (C) বন্ধন মুক্ত থাকা (D) ঢিলেঢালা থাকা
Answer : (A) দৃঢ় বন্ধনে আবদ্ধ হয়ে থাকা
- ‘ আয় আরো বেঁধে বেঁধে থাকি ‘ কবিতাটির দ্বিতীয় পঙ্ক্তি – (A) আমাদের ডানপাশে ধ্বস (B) আমাদের বাঁয়ে গিরিখাদ(C) আমাদের মাথায় বোমারু (D) আমাদের ঘর গেছে উড়ে
Answer : (B) আমাদের বাঁয়ে গিরিখাদ
- ‘ আমাদের বাঁয়ে গিরিখাদ ‘ ‘ গিরিখাদ ‘ শব্দটির আক্ষরিক অর্থ -(A) স্থানচ্যুতি (B) অদৃশ্য হওয়া (C) চূড়া (D) পর্বত গহ্বর
Answer : (D) পর্বত গহ্বর
- আমাদের মাথায় ______ ।(A) বোমারু (B) গিরিখাদ(C) চূড়া (D) পর্বত গহ্বর
Answer : (A) বোমারু
- কবিতায় উল্লিখিত হিমানীর বাঁধ রয়েছে – (A) হাতে হাতে (B) পায়ে পায়ে (C) মাথায় মাথায় (D) শিরায় শিরায়
Answer : (B) পায়ে পায়ে
- পায়ে পায়ে হিমানীর বাঁধ ।’ — ‘ হিমানী ‘ শব্দের আক্ষরিক অর্থ – (A) কাজল (B) আগুন (C) তুষার (D) পর্বত
Answer : (C) তুষার
- কবিতায় কবি কাদের শবদেহের উল্লেখ করেছেন ? (A) বুড়োদের (B) শিশুদের (C) যুবকদের (D) বৃদ্ধাদের সময়ের
Answer : (B) শিশুদের
আয় আরো বেঁধে বেঁধে থাকি (কবিতা) শঙ্খ ঘোষ
অভিসংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর | আয় আরো বেঁধে বেঁধে থাকি (কবিতা) শঙ্খ ঘোষ – মাধ্যমিক বাংলা সাজেশন | Madhyamik Bengali Suggestion :
- ‘ আমাদের কথা কে বা জানে ‘ বলার কারণ কী ?
Answer : এই ব্যক্তিসর্বস্ব বিচ্ছিন্নতার যুগে , সাধারণ মানুষের সামান্য প্রয়োজনীয়তার কথায় যেন কেউ দৃপাত করে না । সেজন্যই কবি এ কথা বলেছেন ।
- ‘ তবু তো কজন আছি বাকি বলার কারণ কী ?
Answer : ‘ আয় আরো বেঁধে বেঁধে থাকি ’ কবিতা অনুসারে এই রাজনৈতিক , সামাজিক অবক্ষয়ের যুগেও কিছু মানুষ এখনও মানবতায় বিশ্বাস হারায়নি । সেই শুভবুদ্ধিসম্পন্ন মানুষগুলোকে নিয়েই কবি জোটবাঁধার কথা বলেছেন । ‘
- আয় আরো হাতে হাত রেখে— এই পঙ্ক্তিটির অন্তর্নিহিত অর্থ লেখো ।
Answer : সাম্রাজ্যবাদী শক্তির আস্ফালনে মানুষ আজ ঘরছাড়া , পথহারা , ইতিহাস – বিকৃত চিরভিখারিতে পরিণত । প্রত্যয়ী কবি এই ধ্বংসের মাঝেও বিবেকবান ও শুভবুদ্ধিসম্পন্ন মানুষকে সংঘবদ্ধ করার উদ্দেশ্যে প্রশ্নোদ্ধৃত উক্তিটি করেছেন ।
- ‘ আমাদের পথ নেই আর ‘ — কবির এরকম বলার কারণ কী ?
Answer : ‘ আয় আরো বেঁধে বেঁধে থাকি ‘ কবিতায় কবি লক্ষ আজকের পৃথিবীতে সাধারণ মানুষের অসহায়তা । শাসকের আগ্রাসন— সাম্রাজ্যবাদ – মৌলবাদ – সমাজ – রাজনৈতিক অবক্ষয় ও হানাদারি শত্রুর স্বেচ্ছাচারে মানুষের স্বাভাবিক বেঁচে থাকার অধিকারটুকুও এখন বিপন্ন ।
পরিস্থিতির এই প্রতিকূলতাকে কবি উদ্ধৃতাংশটির মধ্য দিয়ে ফুটিয়ে তুলেছেন ।
- ‘ আমাদের পথ নেই আর আমাদের বলতে কাদের কথা বলা হয়েছে ?
Answer : ‘ আয় আরো বেঁধে বেঁধে থাকি ‘ কবিতায় কবিকণ্ঠে ধ্বনিত হয়েছে সাধারণ মানুষের কণ্ঠস্বর । তাই ‘ আমাদের ’ বলতে তিনি এ পৃথিবীর সমস্ত নিরন্ন , খেটে খাওয়া ও নিরাপত্তাহীন অসহায় মানুষকেই বুঝিয়েছেন ।
- ‘ আমাদের শিশুদের শব / ছড়ানো রয়েছে ?
Answer : আজকের পৃথিবীতে যুদ্ধ – দাঙ্গা ও হিংসার উন্মত্ততায় শিশুদেরও রেহাই নেই । নিয়মিত দূরে কিংবা কাছেই ঘটে চলা এমন শিশুঘাতী সন্ত্রাসের খবরে আমরা শিউরে উঠি । উদ্ধৃতাংশে কবি এ কথাই বলতে চেয়েছেন ।
- ‘ আয় আরো বেঁধে বেঁধে থাকি কবিতা অনুসারে আমাদের ইতিহাসের পরিচয় দাও ।
Answer : পৃথিবীর সামগ্রিক ইতিহাসই আসলে ক্ষমতাবানদের ইতিহাস । অসহায় ও দুর্বল সাধারণ মানুষের কথা তাই তথাকথিত সভ্যতার আয়নায় ফুটে ওঠে না । তারা ইতিহাসহীন অথবা বিকৃত ইতিহাসের আড়ালে থাকার দৈন্যে বিস্মৃত ও নিরুত্তর ।
- ‘ আমাদের শিশুদের শব ‘ কোথায় ছড়ানো রয়েছে ?
Answer : ‘ আয় আরো বেঁধে বেঁধে থাকি ‘ কবিতা অনুসারে আমাদের শিশুদের শব কাছে ও দুরে ছড়ানো রয়েছে । অর্থাৎ আজকের সমগ্র পৃথিবী জুড়েই শিশুরা হিংসাশ্রয়ী যুদ্ধ আর সন্ত্রাসের বলি ।
- আমাদের ডান পাশে , বাঁয়ে , মাথায় ও পায়ে যা আছে তা ‘ আয় আরো বেঁধে বেঁধে থাকি কবিতা অনুসারে লেখো ।
Answer : আয় আরো বেঁধে বেঁধে থাকি ‘ কবিতা অনুসারে আমাদের ডান পাশে ধস এবং বাঁয়ে গিরিখাদ , আর মাথার উপরে বোমারু ও পায়ে হিমানীর বাঁধ ।
- ‘ পৃথিবী হয়তো গেছে মরে — এমন বলার কারণ কী ?
Answer : শাসনের ষড়যন্ত্রে , সমাজ – রাজনৈতিক অস্থিরতা ও অবক্ষয়ে হতভাগ্য সাধারণ মানুষের জীবনে বেঁচে থাকার অর্থটাই হারিয়ে গেছে । মানবতার এই ঘোর দুর্দিনে প্রাণধারণের যে – দৈন্য ফুটে ওঠে , তা মানবজীবনের দিশাহীন অর্থহীনতার প্রকাশ ছাড়া আর কিছুই নয় ।
- ‘ আয় আরো বেঁধে বেঁধে থাকি ‘ কবিতাটি কোন মূল কাব্যগ্রন্থ থেকে নেওয়া হয়েছে ?
Answer : ‘ আয় আরো বেঁধে বেঁধে থাকি ‘ কবিতাটি কবি শঙ্খ ঘোষের ‘ জলই পাষাণ হয়ে আছে ‘ নামক মূল কাব্যগ্রন্থ থেকে নেওয়া হয়েছে ।
- ‘ আমাদের মাথায় বোমারু’- ‘ বোমারু ‘ শব্দটির অর্থ কী ?
Answer : ‘ বোমারু ‘ শব্দটির আভিধানিক অর্থ হল , যা থেকে বোমা নিক্ষেপ করা হয় ।
- ‘ আমাদের পথ নেই আর- তাহলে আমাদের করণীয় কী ?
Answer : এই সমাজ – রাজনৈতিক পচন ও পতনের মাঝে , সমস্ত শুভবুদ্ধিসম্পন্ন মানুষের সংঘবন্ধতাই হল তার মুক্তির একমাত্র পথ ।
- ‘ আমাদের ’ বলতে কবি কাদের বুঝিয়েছেন ?
Answer : কবি শঙ্খ ঘোষ তাঁর কবিতায় ‘ আমাদের ’ বলতে দেশকালের সীমা অতিক্রম করে সাম্রাজ্যবাদী ও হানাদারি শত্রুর হাতে আক্রান্ত সাধারণ মানুষদের বুঝিয়েছেন ।
- ‘ ডান পাশে ধ্বস ’ ও ‘ বাঁয়ে গিরিখাদ ’ বলতে আসলে কবি কী বুঝিয়েছেন ?
Answer : আয় আরো বেঁধে বেঁধে থাকি ‘ কবিতায় ‘ ডান পাশে ধ্বস ’ ও ‘ বাঁয়ে গিরিখাদ ‘ বলতে কবি আসলে মানুষের পদে পদে বিপদ এবং পতনের আশঙ্কার কথা ব্যক্ত করেছেন ।
- ‘ আমাদের ডান পাশে ধ্বস ’ –‘ধ্বস ‘ শব্দটির আক্ষরিক অর্থ কী ?
Answer : ‘ ধ্বস ‘ শব্দটির আক্ষরিক অর্থ খসে পড়া । পাঠ্য কবিতায় সাধারণ মানুষের চলার প্রতি পদে পদে বিপদের সম্ভাবনাকে ফুটিয়ে তুলতে শব্দটি ব্যবহৃত হয়েছে ।
- ‘ আমাদের বাঁয়ে গিরিখাদ ’ – ‘ গিরিখাদ ‘ শব্দটির আক্ষরিক অর্থ লেখো ।
Answer : ‘ গিরিখাদ ’ হল দুই পর্বতের মাঝে সৃষ্ট গভীর খাদ । পাহাড়ি পথের বিপদসংকুলতার মতোই বর্তমান বিশ্বে মানুষের জীবনে ছড়িয়ে থাকা প্রতিকূলতাকে বোঝাতে শব্দটি ব্যবহৃত হে ব্যবহৃত হয়েছে ।
- ‘ আমাদের মাথায় বোমারু ‘ বলতে কী বলা হয়েছে ?
Answer : যুদ্ধবাজ সাম্রাজ্যবাদী শক্তি যেমন বোমারু বিমান থেকে অতর্কিতে আক্রমণ চালায় , তেমনই আচমকা আক্রমণে মানুষের জীবন আজ বিপন্ন । কবিতায় সেই বিপন্নতার কথাই বলা হয়েছে ।
- ‘ পায়ে পায়ে হিমানীর বাঁধ’— ‘ পায়ে পায়ে ‘ বলতে কবিতায় কী বোঝানো হয়েছে ?
Answer : পাঠ্য কবিতায় ‘ পায়ে পায়ে ‘ বলতে মানুষের প্রতি পদক্ষেপকে বোঝানো হয়েছে । মানুষের চলার পথে নানান প্রতিকূলতা প্রতি মুহূর্তে বরফের দেয়ালের মতোই বাধা হয়ে দাঁড়ায় । ‘ হিমানীর বাঁধ ’ সেই বাধার প্রতীক ।
- ‘ আমাদের পথ নেই কোনো ” বলার কারণ কী ?
Answer : ‘ আয় আরো বেঁধে বেঁধে থাকি ‘ কবিতা অনুসারে বর্তমান পৃথিবীতে মানুষ বড়ো অসহায় ও নিরুপায় । প্রতিনিয়ত তার চলার পথের প্রতিকূলতা এবং দিশাহীনতাকে ফুটিয়ে তুলতেই কবি এমন মন্তব্য করেছেন ।
- ‘ আয় আরো বেঁধে বেঁধে থাকি কবিতায় আমাদের ঘর উড়ে গেছে , কথাটি কেন বলা হয়েছে ?
Answer : বর্তমান বিশ্বে যুদ্ধ , দাঙ্গা ও রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে প্রতিনিয়ত বহু মানুষ আশ্রয়হীন হয়ে পড়েছে । সে – কথা বোঝাতেই কৰি মন্তব্যটি করেছেন ।
- ‘ আমাদের শিশুদের শব / ছড়ানো রয়েছে কাছে দুরে । বলার অর্থ কী ?
Answer : যুদ্ধ , দাঙ্গা ও রাজনৈতিক সন্ত্রাসকবলিত আজকের দুনিয়ায় হিংস্রতার হাত থেকে রেহাই পায়নি শিশুরাও । তারই ভয়াবহতা বোঝাতে এই উক্তি ।
- আমাদের শিশুদের শব পড়ে থাকার মধ্যে দিয়ে কোন্ বিষয়টি ধরা পড়েছে ?
Answer : বিশ্বজুড়ে যুদ্ধ , দাঙ্গা ও রাজনৈতিক অস্থিরতার বলি হচ্ছে আগামী প্রজন্মও । তাই কবির আশঙ্কা— তবে কি এভাবেই শেষ হয়ে যাবে মানবসমাজ !
- ‘ আমরাও তবে এইভাবে / এ – মুহূর্তে মরে যাব না কি ? ‘ — এ কথা বলার অর্থ কী ?
Answer : চারদিকের প্রতিকূলতা , হানাদারি শত্রুর আক্রমণে গৃহহারা মানুষ চোখের সামনে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের মৃত্যু দেখে নিজের বেঁচে থাকাতেও সংশয় প্রকাশ করে ও হতাশাগ্রস্ত হয়ে পড়ে । এমন পরিস্থিতি থেকেই সাধারণ মানুষের প্রতিভূ কবির এই উক্তি ।
- ‘ আয় আরো বেঁধে বেঁধে থাকি । বলার কারণ কী ?
Answer : বিশ্বব্যাপী প্রতিকূলতার মাঝে চারদিকে হতাশার ছবি স্পষ্ট হলেও কবির বিশ্বাস পারস্পরিক সাহচর্য ও ঐক্যের জোরেই সমস্ত কিছু জয় করা সম্ভব । তাই কবি একতা আর সংঘবদ্ধতার কথা বলেছেন ।
- ‘ আমাদের ইতিহাস নেই’— এ কথা বলা হয়েছে কেন ?
Answer : এ কবিতায় কবি সাধারণ মানুষের প্রতিনিধি । আর সাধারণ মানুষ কোনোদিনই ইতিহাসে স্থান পায় না । তাদের ইতিহাস জনসমক্ষে প্রতিফলিত হয় না । তাই এমন উক্তি ।
- ‘ আমাদের চোখমুখ ঢাকা ‘ — ‘ চোখমুখ ঢাকা ’ – র কারণ কী ?
Answer : পৃথিবীর সমস্ত ইতিহাসই ক্ষমতাবানের ইতিহাস । দুর্বল , বিপন্ন মানুষের ইতিহাস কখনোই সভ্যতার দর্পণে প্রতিফলিত হয় না । প্রকৃত সত্য জেনেও সাধারণ মানুষ অন্ধ , আসল অবস্থা বুঝেও তারা বোবা । তাই তাদের ‘ চোখমুখ ঢাকা ‘ ।
- ‘ আমরা ভিখারি বারোমাস বলার কারণ কী ?
Answer : সাম্রাজ্যবাদী শক্তির শোষণে নিপীড়িত , বর্ণিত ও হতভাগ্য জনগণ আজ আশ্রয় ও জীবিকা হারিয়ে চিরভিখারিতে পরিণত হয়েছে । সেইসঙ্গে প্রতিকূলতা ও যুগযন্ত্রণায় ভীরু – দুর্বল সাধারণ মানুষের সামগ্রিক দৈন্যও আজ বড়ো প্রকট । তাই কবি এ কথা বলেছেন ।
- ‘ পৃথিবী হয়তো বেঁচে আছে / পৃথিবী হয়তো গেছে মরে বলার অন্তর্নিহিত কারণ কী ?
Answer : পারিপার্শ্বিক প্রতিকূলতার মাঝে পীড়িত , ঘরহারা ও ইতিহাসে ঠাই না – পাওয়া মানুষগুলির কাছে বেঁচে থাকার অর্থটাই হারিয়ে গেছে । তাই পৃথিবীর বেঁচে থাকা বা না থাকায় তাদের কিছু যায় আসে না ।
সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর | আয় আরো বেঁধে বেঁধে থাকি (কবিতা) শঙ্খ ঘোষ – মাধ্যমিক বাংলা সাজেশন | Madhyamik Bengali Suggestion :
- আমরা ভিখারি বারোমাস ‘ বলতে কবি কী ‘ আমরা ভিখারি বারোমাস – অন্তর্নিহিত অর্থ বুঝিয়েছেন ?
Answer : উদ্ধৃতিটি শঙ্খ ঘোষের ‘ আয় আরো বেঁধে বেঁধে থাকি ‘ কবিতার অংশ বিশেষ । আমরা ভিখারি বারোমাস বলতে কবি মানুষের মানসিক দৈন্যের কথা বলেছেন । কবির মতে নানান প্রতিকূলতা ও যুগযন্ত্রণার ক্ষত নিয়ে মানুষ বেঁচে আছে । সে পথহারা , তার মানসিক দৃঢ়তা শিথিল হয়ে পড়েছে । তার প্রকৃত ইতিহাসের সঠিক প্রতিফলন হয়নি জেনেও সে নিশ্চুপ ও বহির্বিশ্ব থেকে বিচ্ছিন্ন । এভাবে আপাতদুর্বল ও ভীরু সাধারণ মানুষের অবহেলিত মানসিক দৈন্যের কথা বলতে গিয়ে কবি এমন মন্তব্য করেছেন ।
- পৃথিবী হয়তো গেছে মরে- এমন সংশয়ের কারণ কী ? সংশয়ের কারণ কী ?
Answer : কবি শঙ্খ ঘোষ তাঁর ‘ আয় আরো বেঁধে বেঁধে থাকি ‘ কবিতায় এমন সংশয়পূর্ণ উক্তিটি করেছেন । উপনিষদের কথার রেশ টেনে বলা যায় মানুষ তার মানবতার পক্ষে চলমান , তাই জীবনে থেমে থাকা মৃত্যুরই সমান । আজকের যুদ্ধ ও দাঙ্গাবিধ্বস্ত পৃথিবীতে মানুষ দিশেহারা , তার হাত – পা বাঁধা । গৃহহীন , ইতিহাস – বিস্মৃত এই নিরন্ন মানুষগুলি নিজের ভাবী প্রজন্মকে রক্ষা করতে ব্যর্থ । জীবনের অর্থহীনতায় বেঁচে থাকার আশা সে হারিয়েছে । তাই সমস্ত পৃথিবীটা তার কাছে জীবস্মৃত বলে মনে হয়েছে ।
- ‘ তবু তো কজন আছি বাকি – কবি এই উক্তিটির সাহায্যে কী বোঝাতে চেয়েছেন ?
Answer : কবি শঙ্খ ঘোষের ‘ আয় আরো বেঁধে বেঁধে থাকি ‘ কবিতায় উদ্ধৃত উক্তিটি যেন ‘ বরিষ ধরা মাঝে শান্তির বাণী ‘ । কবির মতে , সাম্রাজ্যবাদী ও স্বার্থান্বেষী একদল মানুষ নানান প্রতিকূলতা সৃষ্টি করে সাধারণ মানুষের চলার পথ রুদ্ধ করে দিতে চাইছে । সামাজিক , উদ্ভিটির মূল অর্থ অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক জীবনে তারা নানানভাবে বিপন্ন । তাদের অতীত অস্পষ্ট , অসম্পূর্ণতায় অন্ধকার । আর বর্তমান এবং ভবিষ্যৎও সাম্রাজ্যবাদী শাসকের চক্রান্তে দুর্বিষহ । এরকম প্রতিকূল অবস্থার মাঝে বিবেকবান যে কয়েকজনের অস্তিত্ব আছে , কবি তাদের নিয়ে প্রতিরোধের আশায় এমন উক্তি করেছেন ।
- ‘ আয় আরো হাতে হাত রেখে হাতে হাত রাখা বলতে কী বোঝায় ? এক্ষেত্রে আরো ‘ শব্দটির প্রয়োগের তাৎপর্য লেখো ।
Answer : শঙ্খ ঘোষ তাঁর ‘ আয় আরো বেঁধে বেঁধে থাকি ‘ কবিতায় হাতে হাত রাখা বলতে মানুষের সংঘবদ্ধতাকে বুঝিয়েছেন । ‘ আরো ‘ – এর তাৎপর্য → বিচ্ছিন্নতা , আগ্রাসন , হিংসা , অসহিহ্রুতার বিরুদ্ধে কবি সাহিত্যিকদের লড়াই চিরকালের । তারা চায় শাস্তি , যা সমাজের বৃহত্তর অংশের চাওয়া । সাম্রাজ্যবাদী আগ্রাসন ও অশুভ শক্তির প্রভাবে সাধারণ মানুষ আজ বিপন্ন । তবু এত প্রতিকূলতার মাঝেও তাদের মধ্যে যতটুকু প্রতিরোধের ক্ষমতা আছে সেটুকু একত্রিত করার জন্য কবি ‘ আরো ‘ শব্দটি ব্যবহার করেছেন ।
- ‘ আমরা ফিরেছি দোরে দোরে’- ‘ আমরা কারা ? কেন এই অবস্থা ?
Answer : কবি শঙ্খ ঘোষের ‘ আয় আরো বেঁধে বেঁধে থাকি ‘ কবিতায় ‘ আমরা ‘ বলতে অসহায় ও বিপন্ন সাধারণ মানুষকে বোঝানো হয়েছে । আজ সমগ্র পৃথিবীর বুকে নেমে এসেছে এক গভীর আঁধার । হিংসা যুদ্ধ – রক্তক্ষয় – বিভেদ ও বিচ্ছিন্নতার আঘাতে মানুষ এখন ক্ষতবিক্ষত । তার চলার পথে ডাইনে – বাঁয়ে – উপরে কিংবা নীচে সর্বত্রই কেন এই অবস্থা প্রতিকূলতা আর অতর্কিতে প্রাণহানির আশঙ্কা । শাসকের চক্রান্তে , স্বার্থান্বেষী ক্ষমতাবানের মদতে সমাজ – রাজনৈতিক অবক্ষয় এক চরম রূপ নিয়েছে । ফলে নরঘাতী হানাহানির শিকার হচ্ছে শিশুরাও । হতভাগ্য , নিরাপত্তাহীন ও দিশাহীন মানুষের এই নিরুপায় দুর্দশার ছবিটি ফুটে উঠেছে প্রশ্নোত পঙক্তিটিতে ।
- আমাদের শিশুদের শব’— ‘ শিশুদের শব ’ বলতে বক্তা কী বুঝিয়েছেন ? ‘ শব ‘ শব্দটির অর্থ কী ?
Answer : কবি শঙ্খ ঘোষের ‘ আয় আরো বেঁধে বেঁধে থাকি ? কবিতা থেকে প্রশ্নোদ্ভূত অংশটি নেওয়া । হিংসায় উন্মত্ত এ পৃথিবীতে কোমল – নিষ্পাপ ‘ শিশুদের শব শিশুরাও আজ রক্তক্ষয়ী সন্ত্রাসের শিকার । যুদ্ধ – দাঙ্গা ও অতর্কিত হানার আঘাতে নিমেষে ছিন্নভিন্ন হয় । যে – কোনো সদ্যোজাতের দেহ । কাছে – দূরে ছড়িয়ে থাকা শিশুর এই শবদেহের মধ্যে সমগ্র পৃথিবীজুড়ে ঘটে – চলা শিশুঘাতী নারকীয়তার অমানুষী চিহ্ন ফুটে ওঠে । কবি এ কথাই বোঝাতে চেয়েছেন । → শর ‘ শব্দটির আভিধানিক অর্থ হল শবদেহ ।
- ‘ আমাদের কথা কে – বা জানে’— ‘ আমরা ’ কারা ? তাদের কথা কেন কেউ জানে না ?
Answer : কবি শঙ্খ ঘোষের ‘ আয় আরো বেঁধে বেঁধে থাকি কবিতা অনুসারে আমরা হল এ পৃথিবীর অগণিত অসহায় খেটে খাওয়া সাধারণ মানুষ ।
এ পৃথিবীর ইতিহাস আসলে ক্ষমতাবান শাসকের ইতিহাস । শাসকেরা প্রতিনিয়ত তার গতিপ্রকৃতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করে । তাদের মদতে বিভিন্ন স্বার্থান্বেষী গোষ্ঠী নিজেদের সংকীর্ণ স্বার্থ চরিতার্থ কেন কেউ আমাদের করার জন্য সমাজ রাজনৈতিক অস্থিরতার জন্ম জানে না দেয় , যার বলি হয় সাধারণ মানুষ । তাদের সুখ – দুঃখ – শান্তি স্বস্তির পরোয়া কেউ করে না । দুর্বল ও অসহায় আমজনতার কথা তাই কখনও সভ্যতার আয়নায় ধরা দেয় না । তাদের জন্য জোটে উপেক্ষা , অবহেলা ও বিস্মৃতি । কবি এই ঐতিহাসিক সত্যকেই তুলে ধরেছেন ।
- ‘ আয় আরো বেঁধে বেঁধে থাকি কবিতায় বর্তমান পারিপার্শ্বিক অবস্থা প্রসঙ্গে কবির মতামত তোমার নিজের ভাষায় ব্যাখ্যা করো ।
Answer : শঙ্খ ঘোষ তাঁর ‘ আয় আরো বেঁধে বেঁধে থাকি ‘ কবিতায় প্রায় ক্ষয়ে যাওয়া সমাজে এখনও যাদের মধ্যে মনুষ্যত্বের অবশেষটুকু আছে তাদের সংঘবদ্ধ হওয়ার ডাক দিয়েছেন । সাম্রাজ্যবাদী , শক্তিধর দেশগুলি কবির মতামত নিজেদের স্বার্থ রক্ষার্থে পৃথিবীকে করে তুলেছে অস্থির । মানুষের চলার পথে ডাইনে – বাঁয়ে বিপদ অপেক্ষা করে রয়েছে । মাথার উপর বোমারু বিমানের মতোই হানা দিচ্ছে মৃত্যু , পদে পদে রয়েছে প্রতিকূলতা । তবু কবি আশাবাদী স্বপ্ন দেখান । তাই কবি পথহারা অসহায় মানুষগুলোকে এক হতে বলেছেন ।
- ‘ আমাদের ঘর উড়ে যাওয়া ‘ বলতে কী বোঝানো হয়েছে ?
অথবা , ‘ আমাদের ঘর গেছে উড়ে’— উদ্ধৃতাংশটির তাৎপর্য ব্যাখ্যা করো ।
Answer : কবি শঙ্খ ঘোষের ‘ আয় আরো বেঁধে বেঁধে থাকি ’ কবিতায় উদ্ধৃত প্রসঙ্গটি পাই । আজকের এই অবক্ষয়ের যুগে সাধারণ মানুষকে উদ্ধৃতাংশের তাৎপর্য নানা প্রতিকূলতার মধ্যে দিয়ে পথ চলতে হচ্ছে । চারদিকে দাঙ্গা , যুদ্ধ আর ধ্বংসের তাণ্ডব মানুষকে গৃহহীন করেছে । হিংসায় উন্মত্ত , যুদ্ধবিধ্বস্ত এই পৃথিবীতে মানুষকে আশ্রয় নিতে হচ্ছে উদ্বাস্তু শিবিরে । মানুষের এই নিরাশ্রয় , নিরাপত্তাহীনতার দিকটিতেই কবি ইঙ্গিত করেছেন ।
- ‘ আমাদের পথ নেই কোনো’— ‘ পথ ’ বলতে কবি কী বুঝিয়েছেন ? কবির এমন আশঙ্কার কারণ ব্যাখ্যা করো ।
Answer : উদ্ধৃতিটি শঙ্খ ঘোষের ‘ আয় আরো বেঁধে বেঁধে থাকি ‘ কবিতার ‘ পথ ‘ – মূল অর্থ অংশ । এখানে ‘ পথ ’ বলতে এই অবক্ষয়ের যুগে আদর্শহীনতা ও অনিশ্চয়তার অন্ধকার থেকে বেরিয়ে নতুনভাবে বাঁচার উপায় বা দিশাকে বোঝানো হয়েছে । আশঙ্কার কারণ বিশ্বজুড়ে যুদ্ধ , দাঙ্গা , রাজনৈতিক ও সামাজিক অস্থিরতা মানুষকে দিশেহারা করে তুলেছে । মানুষ আজ সন্ত্রাস আর বঞ্চনার শিকার । জীবনধারণের প্রতি পদে প্রতিবন্ধকতা তার অস্তিত্বকে বিপন্ন করে তুলেছে । তাই কবির আশঙ্কা এই অন্ধকারের আবর্ত থেকে বেরিয়ে এসে , মানুষের সুষ্ঠু জীবনযাপনের আর বুঝি কোনো উপায় নেই ।
- ‘ আমাদের শিশুদের শব / ছড়ানো রয়েছে কাছে দূরে । উদ্ধতাংশটির তাৎপর্য লেখো ।
Answer : উদ্ধৃতিটি কবি শঙ্খ ঘোষের ‘ আয় আরো বেঁধে বেঁধে থাকি কবিতার অংশ বিশেষ । যুদ্ধবিধ্বস্ত বর্তমান বিশ্বে আমাদের চারপাশ আজ উদ্ধৃতাংশের তাৎপর্য বিপৎসংকুল । সাম্রাজ্যবাদী আগ্রাসন ; শাসকের মদতপুষ্ট স্বার্থান্বেষী গোষ্ঠীর রক্তক্ষয়ী হানাহানি থেকে শিশুরাও বাদ যায়নি । ‘ কাছে দুরে ‘ গোটা পৃথিবীজুড়েই এখন সদ্যোজাতরাও হিংসাশ্রয়ী যুদ্ধ ও সন্ত্রাসের বলি । কবির আক্ষেপ আমরা এমন এক পৃথিবীতে বাস করি যেখানে শিশুদেরও কোনো নিরাপত্তা নেই । আমরা আমাদের ভবিষ্যৎকে সুরক্ষা দিতে অক্ষম । এই অক্ষমতা মানবতার পক্ষেও গভীর অবমাননার , তাই অত্যন্ত বেদনার ।
- আমরাও তবে এইভাবে / এ – মুহূর্তে মরে যাব না কি – এ শঙ্কার হেতু কী ?
Answer : কবি শঙ্খ ঘোষের লেখা ‘ আয় আরো বেঁধে বেঁধে থাকি ‘ কবিতা থেকে প্রশ্নোবৃত অংশটি গৃহীত । এখানে কবির এমন শঙ্কার কারণটি অত্যন্ত মর্মগ্রাহী । যেখানে আমরা আমাদের শিশুদের অস্তিত্ব রক্ষায় অপারগ , যেখানে প্রাণঘাতী হানাহানির অনায়াস শিকার হচ্ছে আমাদের শিশুরা ; সেখানে নিজেদের অস্তিত্বের প্রশ্নটিও অবান্তর ও অর্থহীন হয়ে ওঠে । কারণ কবি কেবল বেঁচে থাকার জন্যই বেঁচে থাকাকে ঘৃণা করেন । তাই এহেন নারকীয় প্রবলের কাছে নতিস্বীকার এক সংবেদনশীল মানুষের কাছে অত্যন্ত যন্ত্রণা ও অপমানের বিষয় । পাঠ্য উদ্ধৃতাংশে সেই হতাশা ও অনুশোচনারই প্রকাশ ঘটেছে ।
- ‘ আয় আরো বেঁধে বেঁধে থাকি ।’— এ আমন্ত্রণ কেন ?
আমন্ত্রণ কেন ?
Answer : ‘ আয় আরো বেঁধে বেঁধে থাকি ‘ কবিতায় এ আমন্ত্রণ বর্তমান যুদ্ধবিধ্বস্ত পৃথিবীর গৃহহীন , অসহায় , নিরন্ন সাধারণ মানুষদের প্রতি । আশাবাদী কবি তাদের নিয়ে ঐক্যের স্বপ্ন দেখেন , আর দেখেন নতুন পৃথিবীর স্বপ্ন । মানুষের চলার পথে ডাইনে , বাঁয়ে , উপর , নীচে প্রতিটি দিকেই প্রতিকূলতা । হানাদারি শত্রুর আক্রমণে মানুষ আজ গৃহহীন , বাদ যায়নি শিশুরাও । আমাদের নিজেদের অস্তিত্বও বিপন্ন । সমগ্র পৃথিবীটার যেন জীবস্মৃত অবস্থা । আর এইখানেই কবির দায়বদ্ধতা । তাই এরকম এক সংকট থেকে বেরিয়ে আসার জন্য কবি মানুষকে সংঘবদ্ধ হওয়ার ডাক দিয়েছেন ।
- ‘ আমাদের ইতিহাস নেই — কে , কেন এ কথা বলেছেন ? অথবা , ‘ এমনই ইতিহাস’— উদ্ধৃতাংশটির তাৎপর্য বিশ্লেষণ করো ।
Answer : উদ্ধৃত অংশটি কবি শঙ্খ ঘোষের লেখা ‘ আয় আরো বেঁধে বেঁধে থাকি ‘ কবিতার অন্তর্গত । দেশকালনির্বিশেষে কে বলেছেন সমগ্র পৃথিবীর আপামর জনসাধারণের প্রসঙ্গে কবি উদ্ধৃত অংশটি লিখেছেন ।
বর্তমানে এক ভয়ংকর প্রতিকূলতার মধ্যে দিয়ে আমরা চলেছি । কেন বলেছেন আমরা গৃহহারা , এমনকি ধ্বংসের হাত থেকে শিশুদের রক্ষা করতেও অপারগ । আমাদের বাঁচার আর পথ নেই । যুগে যুগে আমরা সাধারণ মানুষরা বঞ্চিত হয়েই চলেছি ।
আমাদের এই উপেক্ষা ও বঞ্চনার ইতিহাস কোথাও লেখা নেই । কারণ ইতিহাস নিয়ন্ত্রিত হয় ক্ষমতাবানদের দ্বারা । আসলে জীবন্মুত মানুষের অস্তিত্বটাই যেখানে তুচ্ছ , সেখানে চিরকাল অবজ্ঞা আর উপেক্ষাই তার প্রাপ্য । তাই সাধারণ মানুষ হয় ইতিহাসহীন , নয় অস্পষ্ট ইতিহাসের আড়ালে থাকা বিস্মৃত তাচ্ছিল্যের সামগ্রী ।
রচনাধর্মী প্রশ্নোত্তর | আয় আরো বেঁধে বেঁধে থাকি (কবিতা) শঙ্খ ঘোষ – মাধ্যমিক বাংলা সাজেশন | Madhyamik Bengali Suggestion :
1. আমাদের ইতিহাস নেই বলে ‘ কবি সংশয় প্রকাশ প্রশ্ন করেছেন কেন ?
অথবা , ‘ এমনই ইতিহাস বলার কারণ কী ?
অথবা , “ আমাদের ডানপাশে ধ্বস / আমাদের বাঁয়ে গিরিখাদ সমগ্র কবিতার পরিপ্রেক্ষিতে এই মন্তব্যের তাৎপর্য লেখো ।
Answer : উদ্ধৃত অংশটি কবি শঙ্খ ঘোষের ‘ আয় আরো বেঁধে বেঁধে সংশয়ার্কীর্ণ ইতিহাসের রূপ থাকি ‘ কবিতার অংশবিশেষ । সাম্রাজ্যবাদী আগ্রাসন ও সাম্প্রদায়িকতার বিষবাষ্পে আজকের পৃথিবী বিষাক্ত হয়ে উঠেছে । মানুষের অস্তিত্ব আজ বিপন্ন । এই সময়ে আমরা বিশেষ করে সাধারণ মানুষ এক ভয়ংকর দুঃসময়ের মধ্যে দিয়ে চলেছি । আমরা ডাইনে – বাঁয়ে বিপদকে রেখে , মাথার ওপর হানাদারি শত্রুকে উপেক্ষা করে , সামনের প্রতিকূল পথ ধরে এগিয়ে চলেছি । এ ছাড়া আমাদের সামনে আর কোনো পথ নেই । ভাবী প্রজন্মকে রক্ষা করতে আমরা ব্যর্থ । প্রতিক্ষণে হানাদারি মৃত্যুর ভয়ে আমরা ভীত । সাম্রাজ্যবাদী ও সুবিধাবাদী শক্তির কাছে আজ আমরা পর্যুদস্ত । কিন্তু আমাদের এই দুঃখের ইতিহাস অলিখিতই রয়ে যাবে চিরকাল । রানারের বেদনার মতো কালোরাত্রির খামে চিরকাল তা আবদ্ধ থেকে যাবে , এটাই কবির আক্ষেপ ।
বিশ্বাসের ভিত যেখানে আলগা হয়ে যায় , সেখানেই সংশয়ের সৃষ্টি হয় । কবি মনে করেন , সারাপৃথিবীর ইতিহাসে সাধারণ মানুষের কথা সঠিকভাবে প্রতিফলিত হয়নি । কারণ ইতিহাসকে কবির দৃষ্টিতে আমাদের ইতিহাস নিয়ন্ত্রণ করে শাসক ও সাম্রাজ্যবাদী শক্তি । আর সাধারণ মানুষের যদিও বা কোনো ইতিহাস থাকে তবে তা অস্পষ্ট , অর্ধসত্য এবং অসম্পূর্ণ । ক্ষমতাবান শাসকের দ্বারা নিয়ন্ত্রিত ইতিহাসে মানুষের অবস্থার যথার্থ প্রতিফলন ঘটে না । তাদের অসহায় বিপন্নতা কিংবা জীবন্মুত পরিস্থিতির খোঁজ , শাসকের ইতিহাসে অনুপস্থিত বলেই তথাকথিত বিকৃত ইতিহাস সম্পর্কে কবির এই সংশয় ।
2. ‘ আমরা ভিখারি বারোমাস’— ‘ আমরা ’ বলতে কাদের বোঝানো হয়েছে ? তারা নিজেদের সর্বদা ভিখারি বলে মনে করেছেন কেন ?
Answer : কবি শঙ্খ ঘোষের ‘ আয় আরো বেঁধে বেঁধে থাকি ‘ কবিতা থেকে উদ্ধৃত অংশটি গৃহীত । এখানে ‘ আমরা ‘ বলতে বর্তমান বিশ্বে সাম্রাজ্যবাদী শক্তির আগ্রাসনে ও মৌলবাদী শক্তির অত্যাচারে জর্জরিত সাধারণ , শান্তিকামী ও শ্রমজীবী মানুষদের বোঝানো হয়েছে ।
এক্ষেত্রে ‘ আমরা ’ একটি বিশেষ শ্রেণিচরিত্র , দেশকালভেদে যারা সর্বদাই এক । সাধারণ , শ্রমজীবী এই মানুষগুলি সমাজের নীচের তলার মানুষ হিসেবে পরিচিত । এরা সভ্যতার ধারক ও বাহক । কিন্তু এরাই থাকে । সবচেয়ে অন্ধকারে । সমাজের তথাকথিত উচ্চবিত্তের দয়াদাক্ষিণ্যের ওপর নির্ভর করে এদের মরা বাঁচা । শাসকের ক্ষমতার বদল হলেও এদের দীনতার কোনো বদল হয় না । সাধারণ এই মানুষগুলি সর্বদাই বঞ্চিত থাকে তাদের ন্যায্য পাওনা থেকে । আবার সাম্রাজ্যবাদী ও মৌলবাদী শক্তি যখন নিজেদের স্বার্থসিদ্ধির জন্য বিশ্বময় উন্মাদনা সৃষ্টি করে , তখন সবার আগে এরাই আশ্রয়চ্যুত হয়ে পড়ে , টান পড়ে এদের রুটি – রুজিতে । এদের জীবনের ইতিহাস কোথাও লেখা হয় না । আর যদিও – বা হয় তবে তা ক্ষমতাবান ও সাম্রাজ্যবাদীদের হাতে বিকৃত হয়ে পরিবেশিত হয় । অথচ এই সমস্ত মানুষরা শুধুমাত্র অর্থনৈতিক বিচারে ভিখারি নয় , এরা সামাজিক দিক দিয়েও দীন , শাসকের অবজ্ঞা , উপেক্ষা ও অবহেলার পাত্র । তাই কবি এই সাধারণ মানুষদের জবানিতে বলেছেন , ‘ আমরা ভিখারি বারোমাস ।
3. ‘ আমাদের শিশুদের শব / ছড়ানো রয়েছে কাছে দূরে ! — কার , কোন্ কবিতার অংশ ? মূলগ্রন্থের নাম কী ? পাঠ্য কবিতা অনুসারে পড়ুক্তি দুটির তাৎপর্য আলোচনা করো ।
Answer : প্রশ্নে উদ্ভূত পঙ্ক্তিটি কবি শঙ্খ ঘোষের ‘ আয় আরো বেঁধে । বেঁধে থাকি কবিতা থেকে গৃহীত । শক্তি দুটির তাৎপর্য । এই কবিতাটি তাঁর ‘ জলই পাষাণ হয়ে আছে ‘ নামক কাব্যগ্রন্থের অন্তর্গত । । হিংসাশ্রয়ী সময়ের বিপন্নতায় আজ মানুষের চারপাশ বিপৎসংকুল । তাই রাষ্ট্রীয় বর্বরতার নগ্ন ভয়াবহতা থেকে শিশুরাও এখন আর বাদ যায় না । এইজন্য ‘ কাছে – দূরে ‘ অর্থাৎ যত্রতত্র নারকীয় হানাহানি কিংবা প্রাণঘাতী হিংসার বলি হিসেবে ছড়িয়ে থাকে শিশুর মৃতদেহ । এভাবেই ক্ষমতার দখলদার তথা শক্তিশালী প্রবল একদিকে নির্বিবাদে শিশুহত্যার মধ্য দিয়ে ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে যেমন ধ্বংস করে , অন্যদিকে তেমনি আপামর জনসাধারণের মনে এক ভয়াবহ আতঙ্ক তৈরি করতে সক্ষম হয় । শিশু তো দেশের ভবিষ্যৎ , তাই তার হত্যা হলে , ভবিষ্যৎশূন্য হয় দেশ । নতুন ভাবনার ধারক ও বাহকের পথ নিশ্চিহ্ন হয় চিরতরে । সুতরাং , যে – সমাজ ও রাষ্ট্র শিশুহত্যার চক্রান্ত করে , সে সম্পূর্ণ মনুষ্যত্ব – বিরোধী । অন্যদিকে , নিজেদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে রক্ষা করতে না পারা যেন আমাদেরই অক্ষমতা ও কলঙ্কের চিহ্ন । তাই কবি এই শিশুঘাতী মারণযজ্ঞের হাত থেকে মানবতায় উত্তরণের পথ খোঁজার চেষ্টা করেছেন ।
4. ‘ আমাদের ইতিহাস নেই— কাদের , কেন ইতিহাস নেই ? এই মন্তব্যের মধ্য দিয়ে সভ্যতার কোন্ কলঙ্কিত ইতিহাসকে বোঝাতে চাওয়া হয়েছে ?
Answer : কাদের কেন ইতিহাস নেই উত্তর / আয় আরো বেঁধে বেঁধে থাকি ‘ কবিতায় কবি সারাপৃথিবীর খেটে – খাওয়া সাধারণ শ্রমজীবী মানুষের ইতিহাসহীনতার প্রতি দিক্নির্দেশ করেছেন । আসলে এ বিশ্বের ইতিহাস লিপিবদ্ধ হয় । শাসক কিংবা সাম্রাজ্যবাদীর ইচ্ছা আর পরিকল্পনায় । তাই সেখানে উপেক্ষিত দুর্বলের বাস্তব অবস্থার যথার্থ প্রতিচ্ছবি কখনোই ফুটে ওঠে না । ক্ষমতাবানের দত্ত আর আস্ফালনে শিকড়হারা মানুষের সম্পূর্ণ বিস্মৃত দৈন্যদশাটি আমাদের ইতিহাস নেই এই শব্দবন্ধের মাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে ।
কলঙ্কিত ইতিহাসের পরিচয় বর্তমান সময়ে হিংসা ও রণরক্তে পর্যুদস্ত সাধারণ মানুষের দুরবস্থার কথা বলতে গিয়ে কবি ইতিহাসের প্রসঙ্গকে টেনে এনেছেন । কোনো দেশ কিংবা জাতির সমাজ , সভ্যতা ও সংস্কৃতির বিবর্তনের ধারাবাহিক ভাষ্য আর বিশ্লেষণকে কেন্দ্র করে গড়ে ওঠে মানুষের ইতিহাস । কিন্তু প্রথাগত ইতিহাস বা ক্ষমতাবানের পরিকল্পিত ইতিহাসে প্রাধান্য পায় শাসকের স্বার্থ । সেখানে বিকৃতি – বিভ্রান্তি ও মিথ্যা প্রচারে প্রকৃত ইতিহাস তার নিজস্বতা হারায় । সাধারণ মানুষ ক্রমশ ভুলে যেতে থাকে নিজের ঐতিহ্য – শিকড় – স্বপ্ন ও সংঘর্ষের ইতিবৃত্তকে । তারা দিশাহীন বিচ্ছিন্নতার স্রোতে ক্রমশ পথ হারায় । তাই কবি আমজনতার ইতিহাস থাকা না – থাকার সঙ্গে যখন ‘ এমনই ইতিহাস ‘ লেখেন তখন মানুষের বিভ্রান্তির দিকটিও স্পষ্ট হয়ে ওঠে । শাসকের উদ্দেশ্যপূরণ করে এমন চাপিয়ে দেওয়া মিথ্যা ইতিহাসের কলঙ্কিত রূপটিকেই তাই কবি এভাবে কটাক্ষ করেছেন ।
5. ‘ আয় আরো বেঁধে বেঁধে থাকি ‘ কবিতায় কবি শঙ্খ ঘোষ সময় ও সমকাল সম্পর্কে যা বলতে চেয়েছেন , তা আলোচনা করো ।
অথবা , ‘ আয় আরও বেঁধে বেঁধে থাকি কবিতায় যুগযন্ত্রণার যে – নির্মম ইতিহাস বর্ণিত হয়েছে , বর্ণনা করো ।
Answer : বর্তমান সমাজব্যবস্থা উত্তর শঙ্খ ঘোষের ‘ আয় আরো বেঁধে বেঁধে থাকি ‘ কবিতাটি আমাদের পাঠ্য বইয়ের চারপাশের পৃথিবী ‘ ভাবমূলের অন্তর্গত । বর্তমান সমাজের নৈতিক অবক্ষয় ও বিশৃঙ্খলা কবিকে পীড়িত করেছে । তাই মানুষের চলার পথের প্রতিকূলতা , অসহায়তা , সংশয় ও সম্ভাবনার ছবি কবি এই কবিতায় তুলে ধরেছেন । বর্তমান সময়ে মানুষের চলার পথ বিপৎসংকুল । তাদের চারপাশে মৃত্যুর হাতছানি , প্রতিপাদে বাধা আর প্রতিকূলতা । অবক্ষয়ের কার্য রূপ তার চলার সব পথ রুদ্ধ । তবু মানুষ এগিয়ে চলেছে । হানাদারি শত্রুর আঘাতে মানুষ নিরাশ্রয় হয়েছে । সে তার ভাবী প্রজন্মকে রক্ষা করতে গিয়ে হয়েছে ব্যর্থ । এখন সে নিজেও মৃত্যুভয়ে শঙ্কিত ও পথহারা । এমন পরিস্থিতিতে কবি ‘ বেঁধে বেঁধে ‘ অর্থাৎ শুভবুদ্ধিসম্পন্ন মানুষদের সংঘবদ্ধ হয়ে চলার কথা বলেছেন ।
কবির মতে , সাম্রাজ্যবাদী আর সুবিধাবাদী শক্তির কাছে আজ আমরা কোণঠাসা । আমাদের এই দুঃখযন্ত্রণার ইতিহাস হয়তো অলিখিতই রয়ে যাবে চিরকাল । অথবা যদি লেখা হয় তবে তা হবে অর্ধসত্য এবং অসম্পূর্ণতায় ভরা ।
সাধারণ শ্রমজীবী মানুষদের চিরকাল এভাবেই আশাবাদী কবির আহ্বান ক্ষমতাবানের প্রতিবন্ধকতার সঙ্গে যুঝে বেঁচে থাকতে হয় । পৃথিবীর এই জীবন্মুত পরিস্থিতিতে অন্যের দোরে দোরে পরমুখাপেক্ষী হয়ে না – ঘুরে , নৈরাশ্য ত্যাগ করে তাই আমাদেরই একত্রিত হতে হবে । কবির আহ্বান বিবেকবান মানুষের একতা ও সাহচর্যই হবে । তাদের প্রতিরোধের ভাষ্য ।
6. ‘ আমাদের পথ নেই কোনো ’ –‘আমরা ’ কারা এবং তাদের ‘ পথ ’ নেই কেন ? পথহারা মানুষগুলিকে কবি কোন্ পথের সন্ধান দিয়েছেন ?
Answer : স্বাধীনতা – পরবর্তী যুগের অন্যতম সমাজসচেতন কবি শঙ্খ ঘোষের ‘ আয় আরো বেঁধে বেঁধে থাকি ‘ কবিতায় ‘ আমরা ‘ কোনো সীমাবদ্ধ এলাকার জনসমষ্টি নয় । তিনি ‘ আমরা ‘ বলতে ‘ আমরা কারা আজকের যুদ্ধবিধ্বস্ত পৃথিবীতে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত , নিপীড়িত , শ্রমজীবী ও শান্তিপ্রিয় সাধারণ মানুষদের বুঝিয়েছেন । ‘ পথ ’ বলতে এখানে কবি সাধারণ মানুষের জীবনের চলার পথের কথা বলেছেন । সুস্থ সমাজ ও সুন্দর পৃথিবীই পারে মানুষের চলার পথকে মসৃণ করতে । কিন্তু আজকের পৃথিবী সাম্রাজ্যবাদী শক্তির আগ্রাসনে ভীত – সন্ত্রস্ত । সাধারণ শান্তিকামী মানুষ বিপন্ন ও অসহায় । গৃহহারা এইসব মানুষ তাদের ভাবী প্রজন্মকে বাঁচাতে ব্যর্থ । তাদের নিজেদের অস্তিত্বও আজ সংকটের মুখে । তাই তাদের মনে হয়েছে তারা পথহারা । কবির দেওয়া পথের সন্ধান কবি – সাহিত্যিকরা মানুষকে কোনোদিন নিরাশার অন্ধকারে হারিয়ে যেতে দেন না । কবি শঙ্খ ঘোষও এর ব্যতিক্রম নন । আঘাতে আঘাতে জর্জরিত মানুষ একদিন না একদিন প্রত্যাঘাতের পথ বেছে নেয় । এটাই চিরকালের নিয়ম । কবিও পথহারা মানুষগুলিকে প্রত্যাঘাত হানার জন্য উদ্বুদ্ধ করেছেন । তিনি তাদের ‘ আরো বেঁধে বেঁধে থাকার অর্থাৎ ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন । কবির মতে , যে কজন আছি , তারা সকলে সংঘবদ বিশ্বাসে একজোট হলে আমাদের সামনে অবশ্যই নতুন পথ খুলে যাবে ।
7. ‘ আয় আরো বেঁধে বেঁধে থাকি — বেঁধে বেঁধে থাকা বলতে কবি কী বুঝিয়েছেন এবং কাদের এভাবে থাকতে বলেছেন ? কবি বেঁধে বেঁধে থাকার প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দিয়েছেন কেন ?
অথবা , ‘ তবু তো কজন আছি বাকি / আয় আরো হাতে হাত রেখে / আয় আরো বেঁধে বেঁধে থাকি- কবিতাটির মধ্যে কবি যে – মূল বক্তব্য তুলে ধরতে চেয়েছেন , তার সংক্ষিপ্ত পরিচয় দাও । উদ্ধৃতাংশটির প্রেক্ষিতে কবি – মানসিকতার পরিচয় দাও ।
Answer : ” বেঁধে বেঁধে থাকা -কবির দৃষ্টিভঙ্গি উত্তর শঙ্খ ঘোষের ‘ আয় আরো বেঁধে বেঁধে থাকি ’ কবিতায় ‘ বেঁধে বেঁধে ’ থাকি বলতে কবি সংঘবদ্ধভাবে বেঁচে থাকাকে বোঝাতে চেয়েছেন । বর্তমান বিশ্ব ক্ষমতাবান শাসক , সাম্রাজ্যবাদী শক্তি ও মৌলবাদীদের যৌথ ষড়যন্ত্রে বিধ্বস্ত । মানুষ আজ বিপন্ন । প্রতি পদে পদে তার বিপদ । তার মাথার উপর ছাদ নেই । তারা তাদের ভাবী প্রজন্মকে রক্ষা করতে অক্ষম । এমনকি তারা নিজেরাই প্রতি মুহূর্তে প্রাণসংশয়ের ভয়ে ভীত । তাই এভাবে ক্রমাগত শোষিত মানুষগুলিকে কবি প্রত্যাঘাতের পথে এগোতে বলেছেন । এই প্রত্যাঘাতের পথ হল সংঘবদ্ধতা । কবি পৃথিবীর অংসখ্য শ্রমজীবী , শান্তিকামী সাধারণ মানুষদের ‘ বেঁধে বেঁধে ’ অর্থাৎ একত্রিত হয়ে এ সমস্ত প্রতিকূলতার বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে বলেছেন । বেঁধে বেঁধে থাকার প্রয়োজনীয়তা → বন্য জীবজন্তুর হাত থেকে নিজেদের রক্ষার্থে আদিম অরণ্যচারী মানুষের মনেও একদিন সংঘবদ্ধভাবে বাস করার ভাবনা জেগেছিল । এইভাবেই গড়ে উঠেছিল পরিবার , পাড়া , গ্রাম , প্রদেশ ও রাষ্ট্র । সৃষ্টি হয়েছিল নতুন নতুন সভ্যতা । আজ বন্য জন্তুর ভয়ে নয় ; সাম্রাজ্যবাদী , ক্ষমতাবান ও মৌলবাদী শক্তি তাদের নৃশংসতায় সাধারণ মানুষের সামনে অস্তিত্বের সংকট সৃষ্টি করেছে । এই সংকট থেকে রক্ষা পেতে , ভাবী প্রজন্মের কাছে এক সুন্দর পৃথিবী রেখে যেতে হলে প্রয়োজন মানুষের সংঘবন্ধতা । সুস্থ – শান্তিকামী ও বিবেকমান মানুষের ঐক্যবদ্ধ অঙ্গীকারেই একমাত্র এ সভ্যতার সংকটমোচন সম্ভব । কবি এ কথাই বলেছেন ।
=====================================