
পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকারী কর্মচারীদের অবসরকালীন আর্থিক সুবিধা – ২
গ্রাচ্যুইটি-আগেই বলেছি পুর্ন অবসরকালীন সুবিধা পাওয়ার জন্য ন্যুনতম ২০ বছর চাকুরীকাল হওয়া প্রয়োজন। তবে ১০ বছর চাকুরীকাল হলেও তিনি অবসরকালীন সুবিধা পাওয়ার জন্য যোগ্য হবেন।
সহজ ভাষায় ( অর্ডারে অপ্রয়োজনীয়ভাবে জটিল ভাষার ব্যবহার হয়েছে ) বলি ২০ বছর চাকুরীকাল হলে প্রতি ১ বছর চাকুরী পিছু তার শেষ বেতনের(emoluments-B.Pay +D.A) অর্ধেক পাবেন। অর্থাৎ প্রতি ২ বছর চাকুরী পিছু ১ মাসের বেতন পাবেন। অর্থাৎ ২০ বছর চাকুরীকাল হলে ১০ মাসের বেতন পাবেন। ২৯ বছর চাকুরীকাল হলে ১৪.৫ মাসের বেতন পাবেন। সর্বোচ্চ ৩৩ বছর চাকুরীকালের জন্য ১৬.৫ মাসের বেতন গ্রাচ্যুইটি হিসেবে পাবেন। ডেথ গ্রাচ্যুইটির ক্ষেত্রে পরিমান ডবল হবে। অর্থাৎ বছর পিছু একমাসের বেতন পাবেন। ২০ বছরের জন্য ২০ মাসের ও সর্বোচ্চ ৩৩ মাসের জন্য ৩৩ মাসের গ্রাচ্যুইটি পাবেন। গ্রাচ্যুইটি/ডেথ গ্রাচ্যুইটির সর্বোচ্চ পরিমান রোপা১৯ সংশোধীত হয়ে ৬ লাখ থেকে বেড়ে ১২ লাখ হয়েছে।এবার অর্ডারের জটিল গ্রাচ্যুইটি হিসেবের পদ্ধতি সহজ করে বলি:-
মোট চাকুরীকালের সময়কে প্রতি ছয়মাসকে এক ইউনিট ধরে মোট চাকুরীকাল হিসেব করে তাকে ২ দিয়ে ভাগ করে শেষ বেতনের অর্ধেকের সাথে গুন করতে হবে। একটু ঘুরিয়ে নাক দেখানোর মত ব্যপার আরকি। কারো চাকুরী কাল ২৬ বছর মানে প্রতি ছয়মাস হিসেবে ৫২ টি ছয়মাস। শেষ বেতন যদি হয় ৬০০০০ (বেসিক +ডি.এ) তাহলে গ্রাচ্যুইটির হিসেব হবে এরকম:-
৬০০০০/২ x ৫২/২=
৬০০০০x ৫২/৪= ৭,৮০০০০ টাকা
ডেথ গ্রাচ্যুইটির হিসেব হবে:-
৬০০০০x ৫২/২= ১২,০০০০০ টাকা(সর্বোচ্চ)।
২০ বছর চাকুরীর আগে কর্মচারী মারা গেলে ডেথ গ্রাচ্যুইটির পরিমান হবে:-
১ বছরের কম-২ মাসের বেতন
১-৫ বছরের কম- ৬ মাসের বেতন
৫-১১বছরের কম-১২ মাসের বেতন
১১-২০বছরের কম-২০মাসের বেতন
ভগ্নাংশের ক্ষেত্রে ৩ মাসের চকুরীকালকে একটি ৬ মাসের চাকুরীকাল ধরে নিতে হবে আর ২ মাসকে ইগনোর করতে হবে। অর্থাত ২৩ বছর ৩ মাস চাকুরীকালকে ধরতে হবে ২৩ বছর ৬ মাসের চাকুরীকাল বা ৪৭ টি ৬ মাসের চাকুরীকাল এবং ২৩ বছর ২ মাসের চাকুরীকালকে ধরতে হবে ২৩ বছরের চাকুরীকাল বা ৪৬ টি ৬ মাসের চাকুরীকাল। একই ভাবে ২৩ বছর ৮ মাসের চাকুরীকাল হবে ২৩ বছর ৬ মাসের চাকুরীকাল।
লিভ স্যলারী:- অবসরের সময় বা কর্মচারীর মৃত্যুকালে তাঁর পাওনা অর্জিত ছুটির(E.L) বিনিময়ে যে অর্থ পাওনা হয় তাই লিভ স্যলারী।সর্বোচ্চ ৩০০ দিনের অর্জিত ছুটির অর্থ পাওয়া যায়। অর্থাৎ ১০ মাসের বেতন। গ্রাচ্যুইটির হিসেবে যে বেতন তার সাথে শুধু মেডিকেল এলাওয়েন্স যুক্ত হবে এক্ষেত্রে বেতন হিসেব করতে। যদিও আমার অনুমান প্রায় ৯০ শতাংশ কর্মচারী এখন মেডেকেল এলাওয়েন্স পাননাW.B.H.S.যুক্ত হওয়ার কারনে।
হিসেব হবে এরকম:-
বেতন(বেসিক+ডি.এ+এম.এ) xমোট অব্যবহৃত অর্জিত ছুটি/৩০
GPF ফাইনাল পেমেন্ট:- কর্মচারী তাঁর জিপিএফে জমানো অর্থ অবসরের পর সুদসহ ফেরত পান। অবসরের ৩ মাস আগে বাধ্যতামুলক সাবস্ক্রিপশন বন্ধ হওয়ার পর ১০এ ফর্ম ফিলাপ করে এজিতে পাঠাতে হবে হিসেবের জন্য যাতে অবসরের সাথে সাথে টাকা পাওয়ার সুবিধা হয়। ১০এ ফর্ম এজিতে পাঠানোর আগে অবশ্যই জমা অর্থের ৯০ শতাংশ তুলে নিতে ভুলবেন না। কারন যদি ৯০ শতাংশ না তোলেন তাহলে অবসরের ৩ মাস আগে ১০এ ফরম এজিতে পাঠালেও তারা অবসরের পর ১০এ ফরম অফিসে ফেরত পাঠিয়ে নিশ্চিত হতে চাইবে আপনি ৯০ শতাংশ তুলেছেন কিনা যতই হেড অফ অফিস শংসাপত্র দিননা কেন আপনি ৯০ শতাংশ নেননি। কারন অাদেশনামা বলে আপনি অবসরের ১ বছরর মধ্যে যে কোনদিন আপনি আপনার জমা অর্থের ৯০ শতাংশ তুলতে পারেন। যদিও এই ভুল এড়ানোর জন্য একটা ব্যবস্থা করা আছে সেটা হল ৯০ শতাংশের বিলে ডিডিও কে একটি শংসাপত্র দিতে হয় এ মর্মে যে কর্মচারীর জিপিএফের ফাইনাল পেমেন্টের জন্য ১০এ ফরম এজিতে পাঠানো হয়নি। ৯০ শতাংশের বিলে এই শংসাপত্রটি দিতে ভুলবেননা। কারন ট্রেজারী তাহলে বিল ফেরত পাঠাবে।
SOURCE-SANDB