বিড়াল গল্পের সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর

 

WBCHSE Semester Exam Pattern: প্রথম ও তৃতীয় সেমিস্টার এর প্রশ্নের ধরণ কেমন হবে? জানিয়ে দিল শিক্ষা সংসদ - wbexamguider.com

 

বিড়াল প্রবন্ধের মূল প্রতিপাদ্য বিষয় কী

একদিন কমলাকান্ত নেশায় বুঁদ হয়ে ওয়াটারলু যুদ্ধ নিয়ে ভাবছিলেন। এমন সময় একটা বিড়াল এসে কমলাকান্তের জন্য রাখা দুধটুকু খেয়ে ফেলে। ঘটনাটা বোঝার পর তিনি লাঠি দিয়ে বিড়ালটিকে মারতে উদ্যত হন। তখন কমলাকান্ত ও বিড়ালটির মধ্যে কাল্পনিক কথোপকথন চলতে থাকে। বিড়ালের “সোশিয়ালিস্টিক’, ‘সুবিচারিক’, ‘সুতার্কিক’ কথা শুনে বিষ্মিত ও যুক্তিতে পর্যুদস্ত কমলাকান্তের মনে পড়ে আত্মরক্ষামূলক শ্লেষাত্মক বাণী- “বিজ্ঞ লোকের মতে এই যে, যখন বিচারে পরাস্ত হইবেন, তখন গম্ভীরভাবে উপদেশ প্রদান করিবে”-এবং তিনি সে রকম কৌশলের আশ্রয় নেন। সাম্যবাদবিমুখ, ইংরেজশাসিত ভারতবর্ষে একজন সরকারী কর্মকর্তা হয়েও, বঙ্কিমচন্দ্র একটা বিড়ালের মুখ দিয়ে শাসক-শোষিত, ধনী-দরিদ্র, সাধু চোরের অধিকার বিষয়ক সংগ্রামের কথা কী শ্লেষাত্মক, যুক্তিনিষ্ঠ ও সাবলীল ভাষায় উপস্থাপন করেছেন তা এ প্রবন্ধে পাঠ করে উপলদ্ধি করা যায়।

বিড়ালের কণ্ঠে পৃথিবীর সকল বঞ্চিত, নিস্পেষিত, দলিতের ক্ষোভ-প্রতিবাদ-মর্মবেদনা যুক্তিগ্রাহ্য সাম্যতাত্তি¡ক সৌকর্যে উচ্চারিত হতে থাকে, “আমি চোর বটে, কিন্তু আমি কি সাধ করিয়া চোর হইয়াছি? খাইতে পারলে কে চোর হয়? দেখ, যাঁহারা বড় সাধু, চোরের নামে শিহরিয়া ওঠেন, তাঁহারা অনেকে চোর অপেক্ষাও অধার্মিক।’ মাছের কাটা, পাতের ভাত- যা দিয়ে ইচ্ছে করলেই বিড়ালের ক্ষিধে দূর করা যায়,লোকজন তা না করে সেই উচ্ছিষ্ট খাবার নর্দমায় ফেলে দেয়,—যে ক্ষুধার্ত নয়, তাকেই বেশি করে খাওয়াতে চায়, ক্ষুধাকাতর শ্রীহীনদের প্রতি ফিরেও তাকায় না, এমন ঘোরতর অভিযোগ আনে বিড়ালটি।

‘বিড়াল’ প্রবন্ধটি বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের বিখ্যাত একটি রচনা। একাদশ শ্রেণির পাঠ্যবই বাংলা প্রথম পত্রে রচনাটি সংযোজন করা হয়েছে। বিড়াল প্রবন্ধের মূল প্রতিপাদ্য বিষয় কী তা জানা শিক্ষার্থীদের জন্য খুবই জরুরি। এই ব্লগ থেকে আজ আমরা বিড়াল গল্পের সারাংশ বা বিষয়বস্তু সম্পর্কে জানবো।

বিড়াল প্রবন্ধের বিষয়বস্তু

‘বিড়াল’ বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের বিখ্যাত রম্যব্যঙ্গ রচনা সংকলন ‘কমলাকান্তের দপ্তর’-এর অন্তর্গত। বাংলা সাহিত্যে এক ধরনের হাস্যরসাত্মক রঙ্গব্যঙ্গমূলক রচনার ভিতর দিয়ে তিনি পরিহাসের মাধ্যমে সমকালীন সমাজ, ধর্ম, সভ্যতা এবং সাহিত্য- সংস্কৃতির নানা ত্রুটি-বিচ্যুতি ও সীমাবদ্ধতার তীব্র সমালোচনা করেছেন।

‘বিড়াল’ প্রবন্ধটি মূলত নকশা জাতীয় ব্যঙ্গ রচনা। এতে লেখক একটি ক্ষুধার্ত বিড়াল আফিংখোর কমলাকান্তের জন্য রেখে দেওয়া দুধ চুরি করে খেয়ে ফেলার ঘটনাকে কেন্দ্র করে ধনী-দরিদ্রের বৈষম্য এবং সমাজের নানা অসংগতিকে উক্ত প্রবন্ধের মাধ্যমে তুলে ধরেছেন।

দুর্বলের প্রতি সবলের অত্যাচার, ধনীর ধনে গরিবের অধিকার, ক্ষুধার্ত অবস্থায় মানুষের আচরণ ইত্যাদি বিভিন্ন বিষয়ে পক্ষে-বিপক্ষে তর্ক-বিতর্ক উপস্থাপন করে লেখক সাম্যবাদী দৃষ্টিভঙ্গি ও ন্যায়বিচারের পক্ষে গল্পের মাধ্যমে তাঁর সমর্থন জানিয়েছেন।

বিড়ালকে প্রহার করার জন্য উদ্যত হয়ে কমলাকান্ত নিজেই দুর্বল ক্ষুধার্ত বিড়ালের পক্ষ অবলম্বন করে যুক্তিতর্ক দাঁড় করিয়েছেন। লেখক একথা বুঝাতে চান যে, খাবার মাত্রই ক্ষুধার্তের অধিকার আছে। তা ধনীর কি দরিদ্রের সেটা বিবেচ্য কোনো বিষয় নয়।

যদি ধনীর হয় তবে তা স্বেচ্ছায় না দিলে ক্ষুধার্ত তা যেকোনো উপায়ে সংগ্রহ করবে, প্রয়োজনে চুরি করে খাবে, তাতে বিশেষ কোনো দোষ নেই বিড়ালের এই যুক্তিকে শেষ পর্যন্ত কমলাকান্ত অস্বীকার করতে পারেনি।

  •  

বিড়াল তাকে স্পষ্ট করে জানিয়ে দেয় যে, এ সংসারে ক্ষীর, সর, দুগ্ধ, দধি, মৎস্য, মাংস সবকিছুতেই তাদের অধিকার আছে। আর এ কথার মাধ্যমে পৃথিবীজুড়ে যত ধন-সম্পদ আছে তাতে দরিদ্র মানুষের অধিকারের বিষয়টি স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। বিড়াল সাধ করে চোর হয়নি। তার প্রশ্ন হলো, খেতে পেলে কে চোর হয়? বড় বড় সাধু চোর অপেক্ষা যে অধার্মিক সেই বিষয়ে বিড়াল তার যুক্তি তুলে ধরেছে।

বিড়ালের স্পষ্ট উচ্চারণ- অধর্ম চোরের নয়, চোরে যে চুরি করে সে অধর্ম কৃপণ ধনীর। কমলাকান্ত নিজেই নিজের মনে বিড়ালের পক্ষে এবং নিজের পক্ষে যুক্তি দিয়েছে। বিড়ালের কথাগুলো সোশিয়ালিস্টিক, সমাজ বিশৃঙ্খলার মূল। এভাবে তর্ক-বিতর্কের মাধ্যমে দুই পক্ষের মধ্যে সমন্বয় সাধনের প্রধান অন্তরায়গুলো আমাদের সামনে তুলে ধরার প্রয়াস পেয়েছেন লেখক বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়।

তিনি সমাজে নিম্নশ্রেণির উপর উচ্চশ্রেণির অন্যায়, অত্যাচার, অবিচার ও দোষ চাপানোর বিষয়টিকে ব্যঙ্গ করেছেন ‘বিড়াল’ রচনায়। এই রচনায় বিড়াল নিম্নশ্রেণির দরিদ্র ভুখা মানুষের প্রতিনিধি আর কমলাকান্ত যতক্ষণ পর্যন্ত ধনীর ধনবৃদ্ধির পক্ষে যুক্তি দেখায় ততক্ষণ পর্যন্ত সে মনুষ্য সমাজের অন্যায়কারী ধনী চরিত্রের প্রতিনিধি হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে।

‘বিড়াল’ রচনায় লেখক ‘কেহ মরে বিল ছেঁচে, কেহ খায় কই’, ‘তেলা মাথায় তেল দেওয়া’ প্রভৃতি প্রবাদ বাক্য ব্যবহার করে শ্রমিকরা কীভাবে ফল ভোগ থেকে বঞ্চিত হয় সেই দিকে ইঙ্গিত করেছেন। মূলত জগৎসংসারে নীতির দোহাই দিয়ে, অন্যায়-প্রতিকারের বিধান দিয়ে মানুষের কল্যাণ সাধন সম্ভব নয়।

এক্ষেত্রে ধনী-দরিদ্রের বৈষম্যের অবসান করে আমাদের সবাইকেই মানবকল্যাণে আত্মনিবেদন করতে হবে। এই বিশেষ আবেদনই মূলত ‘বিড়াল’ রচনায় হাস্যরসের মাধ্যমে প্রকাশ পেয়েছে।

বিড়াল গল্পের নামকরণ:

রচনার মূল চরিত্র হলো ‘বিড়াল’। আর তাই রচনার মূল চরিত্রের উপর ভিত্তি করেই প্রবন্ধটির নামকরণ করা হয়েছে।  বঙ্কিমচন্দ্রের এ রচনাটি প্রতীকধর্মী নকশাজাতীয় রম্যরচনা ‘কমলাকান্তের দপ্তর’-এর অন্তর্গত। বিড়ালের প্রতীকে লেখক এখানে নিম্নশ্রেণির গরিব মানুষের ‘অভাবে স্বভাব নষ্ট’ এ বিষয়টি ব্যাখ্যা করেছেন।

এখানে হাস্যরসের মধ্য দিয়ে চোরের চুরি করার মূল কারণ, এবং তা সমাধানের জন্য পক্ষে-বিপক্ষে যুক্তি দেখানো হয়েছে। আফিমের নেশায় বুঁদ হয়ে কমলাকান্ত যখন ওয়াটার্লর যুদ্ধে ব্যূহ রচনায় ব্যস্ত তখন তার জন্য রাখা দুধ বিড়ালে খেয়ে ফেলে। বিড়ালের এই কাজটি সংগত কি না তা নিয়েই এই রচনার মূল কাহিনি।

নিজের জন্য রাখা দুধ বিড়াল এসে খেয়ে ফেলেছে, সেই ক্ষোভে কমলাকান্ত শাস্তি দিতে চায়। মারতে গিয়েও কমলাকান্ত পারেনি। কারণ দুধে তার যে অধিকার, বিড়ালেরও তাই। কেননা দুধ মঙ্গলা গাভীর, খাওয়ার জন্যই সেখানে রাখা ছিল। যার ক্ষুধা আছে, নিশ্চয় তারই প্রয়োজন, আর সে খেলেই হলো।

তাছাড়া বিড়ালের ক্ষুধা-তৃষ্ণা নিবারণের অধিকার সম্পর্কে কমলাকান্ত সচেতন। কিন্তু বিড়াল যদি সেই অধিকারে দুধ খেয়ে থাকে তাহলে সমাজের দৃষ্টিতে তা চুরি। কারণ সে কাউকে জানিয়ে দুধ খায়নি। অথচ ক্ষুধার্ত বলে সে ক্ষুধা নিবারণের দিকটিই বিবেচনা করেছে; চুরি, অন্যায় অপরাধের দিক বিবেচনা করেনি।

লেখক এখানে ক্ষুধায় অনু পায় না বলে গরিবের অন্যায়ভাবে ক্ষুধা নিবারণের দিকটি বুঝাতে চেয়েছেন। বিড়াল এখানে অভাবী মানুষের প্রতীক। ধনীরা তাকে খাদ্য দিলে তো সে আর চুরি করত না। তারা যে খাদ্য নষ্ট করে বা ফেলে দেয় তা যদি তারা বিড়ালের মতো ক্ষুধার্ত অভাবীদের দিয়ে দিত তাহলে তাদের কখনই চুরি করতে হতো না। অথচ তারা তা দেয় না, উল্টো চুরি করতে বাধ্য হলে শাস্তি দেয়।

এ কারণে বিড়াল যুক্তি দেখায় যে, চোর দোষী হলে কৃপণ ধনী তারচেয়ে বেশি দোষী। সেক্ষেত্রে কৃপণ ধনীরও কার্পণ্যের দন্ড হওয়া উচিত বলে সে মনে করে। কিন্তু তারা তা না করে কীভাবে তেলা মাথা তেল ঢালে, অর্থাৎ যাদের খাদ্যে অভাব নেই তাদের জন্য ভোজের আয়োজন করে।

এখানে অসাম্য ও অমানবিক দিকটি ‘বিড়াল’ রচনায় কমলাকান্তকে দেখিয়ে দেয়। কারণ কমলাকান্ত ধনীদের প্রতীক; আফিমখোর হলেও সত্যবাদী। চোর কেন চুরি করে সেটা তারা অনুভব করতে চায় না। ধনীর জন্য আয়োজিত খাদ্যের উচ্ছিষ্টটুকু দরিদ্রদের দিলেই তারা বেঁচে যায়।

এ কারণে বিড়াল প্রস্তাব দেয়- “যে বিচারক চোরকে সাজা দিবেন, তিনি আগে তিন দিবস উপবাস করিবেন। তাহাতে যদি তাঁহার চুরি করিয়া খাইতে ইচ্ছা না করে, তবে তিনি স্বচ্ছন্দে চোরকে ফাঁসি দিবেন।” এ যুক্তির পর কমলাকান্ত বিজ্ঞের মতো তাকে ধর্মোপদেশ দেয় এবং ছানার সমান ‘ভাগ দেওয়ার লোভ দেখায়।

কিন্তু কথায় না ভুলে সে নিজের যুক্তির মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকে। রচনার প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত বিড়ালের দুধ চুরির অপরাধ খণ্ডনের বিষয়ের প্রাধান্য থাকায় এর নামকরণ ‘বিড়াল’ যথার্থ হয়েছে।

নামকরণের সার্থকতা:

‘বিড়াল’ রচনার মূল চরিত্র ‘বিড়াল’। তাকে কেন্দ্র করেই রচনার মূল বিষয়টি সাজানো হয়েছে। গল্পে ‘বিড়াল’ হলো নিম্নশ্রেণির অভাবী মানুষের প্রতীক যারা ক্ষুধা নিবারণের জন্য চুরি করতে বাধ্য হয়। হাস্যরসের মধ্য দিয়ে বিড়াল আত্মপক্ষ সমর্থন করে এতে তার যুক্তি তুলে ধরেছে।

‘বিড়াল’ মারাত্মক ক্ষুধার জ্বালায় অন্য কোনো উপায় না পেয়ে চুরি করতে বাধ্য হয়। আর তাকে চোর বানিয়েছে কৃপণ ধনীরা। তারা তাকে কোনো রকম সাহায্য করে না। অথচ তেলা মাথায় তেল দেয়, দরিদ্রদের দিকে তাকায় না। কাজেই চোরের শাস্তি হলে, কৃপণ ধনীদেরও শাস্তি হওয়া উচিত।

কমলাকান্ত তাকে নীতি কথা শুনিয়ে পাশ থেকে দূরে থাকতে উপদেশ দিয়েছে। বিড়াল তাকে উল্টো শুনিয়েছে, যে বিচারক চোরের বিচার করবেন তাকে তিন দিন উপবাস থেকে তারপর রায় দিতে হবে। এসব দিক বিবেচনায় রচনার নামকরণ ‘বিড়াল’ সার্থক হয়েছে।

সারাংশ

‘বিড়াল’ প্রবন্ধটি বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের বিখ্যাত এবং চমৎকার একটি রচনা। বিড়াল গল্পের সারাংশ বা মূল বিষয়বস্তু হলো – কৃপণ ধনীর কার্পণ্য ও দুর্বল ক্ষুধার্ত মানুষের অধিকার। ক্ষুধার্ত মানুষ যদি ক্ষুধা নিবারণের জন্য চুরি করে, আর চুরি করার অপরাধে যদি সমাজে তাকে চুরির শাস্তি পেতে হয় তবে কৃপণ ধনীকে প্রথমেই শাস্তি পাওয়া উচিত।

 বিড়াল প্রবন্ধ MCQ

বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের সাহিত্যচর্চার শুরু হয় কীসের মাধ্যমে?

A. উপন্যাস
B. প্রবন্ধ
C. কবিতা
D. ছােটগল্প

উত্তর : C. কবিতা

মার্জারের মতে, তিনদিন উপবাস করলে বিচারক কী করবেন?

A. ন্যায় বিচার করবেন
B. চুরি করে খেতে চাইবেন
C. চোরের কষ্ট বুঝবেন
D. চোরের প্রতি সদয় হবেন

উত্তর : B. চুরি করে খেতে চাইবেন

‘বিড়াল” রচনায় বিড়ালের চামড়ার রং কেমন?

A. বাদামী
B. কালাে
C. সাদা
D. মিশ্র

উত্তর : B. কালাে

কমলাকান্ত নেশার ঘােরে নিজেকে কী ভেবেছিলেন?

A. মার্জার
B. ওয়েলিংটন।
C. নেপােলিয়ন
D. ডিউক

উত্তর : C. নেপােলিয়ন

অপরিমিত লােভ ভালাে নহে-উক্তিটি কার?

A. ডিউকের
B. প্রসন্নের
C. মার্জার
D. কমলাকান্তের

উত্তর : C. মার্জার

কমলাকান্ত রচনাটি কয় অংশে বিভক্ত?

A. ১ অংশ
B. ৩ অংশ
C. ২ অংশ
D. 8 অংশ

উত্তর : B. ৩ অংশ

ওয়াটারলু যুদ্ধ কত খ্রিস্টাব্দে সংঘটিত হয়?

A. ১৮১৩
B. ১৮১৫
C. ১৮১৭
D. ১৮১৯

উত্তর : B. ১৮১৫

নেপােলিয়ন বােনাপার্ট কত সালে জন্মগ্রহণ করেন?

A. ১৭৬৯
B. ১৭৭০
C. ১৭৭১
D. ১৮১৯

উত্তর : A. ১৭৬৯

চক্ষু চাহিয়া ভালাে করিয়া দেখিলাম যে, ওয়েলিংটন নহে। একটি ক্ষুদ্র মার্জার। এখানে মার্জার আসলে কী?

A. ইঁদুর
B. বিড়াল
C. টিকটিকি
D. পতঙ্গবিশেষ

উত্তর : B. বিড়াল

দুধ খেয়ে ফেলার পর কমলাকান্ত বিড়ালের ওপর রাগ করতে পারেনি কেন?

A. দুধের ওপর বিড়ালের অধিকার আছে বলে
B. বিড়ালটি জ্ঞান বুদ্ধিহীন প্রাণী বলে
C. দুধের মালিক কমলাকান্ত নিজে নয় বলে
D. কমলাকান্ত শান্ত, ন্দ্র, নমনীয় মানুষ বলে

উত্তর : A. দুধের ওপর বিড়ালের অধিকার আছে বলে

বিড়াল প্রবন্ধ প্রশ্ন উত্তর

বিড়াল কি ধরনের রচনা

উত্তর : বিড়াল রসাত্মক ও ব্যঙ্গাত্মক ধরনের রচনা ।

বিড়াল প্রবন্ধের মূল বক্তব্য?

উত্তর: ধনী-দরিদ্রের বৈষম্য দূর করা ।

বিড়াল গল্পের লেখকের নাম কী?

উত্তর: বিড়াল গল্পের লেখকের নাম হচ্ছে বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়।

বিড়াল গল্পে দেয়ালের উপর ছায়া কিসের মতোন নাচতেছিল?

উত্তর: বিড়াল গল্পে দেয়ালের উপর ছায়া প্রেতের মতোন নাচতেছিল।

বিড়াল গল্পে কোন যুদ্ধে ইঙ্গিত রয়েছে?

উত্তর: বিড়াল গল্পে ওয়াটারলু’র যুদ্ধের ইঙ্গিত রয়েছে।

বঙ্কিমচন্দ্রের প্রথম উপন্যাস কোনটি?

উত্তর: বঙ্কিমচন্দ্রের প্রথম উপন্যাস হচ্ছে ‘দুর্গেশনন্দিনী’।

বিড়াল গল্পে দুধ খাওয়ার পরে ‘মেও’ শব্দের মাধ্যমে বিড়ালের কোন ধরনের অভিপ্রায় প্রকাশ পেয়েছে?

উত্তর: বিড়াল গল্পে দুধ খাওয়ার পরে ‘মেও’ শব্দের মাধ্যমে বিড়ালের ‘মন বোঝার অভিপ্রায়’ প্রকাশ পেয়েছে।

বিড়াল গল্পে, দুধ খেয়ে ফেললেও কমলাকান্ত কেন মার্জারের উপর রাগ করতে পারেনি?

উত্তর: বিড়াল গল্পে, দুধ খেয়ে ফেললেও কমলাকান্ত মার্জারের উপর রাগ করতে পারেনি কারণ সেখানে মার্জার বা বিড়ালের অধিকারের প্রশ্ন রয়েছে।

কমলাকান্ত বিড়াল লাঠি তুলে মারতে গেলে বিড়াল তুলল, বিড়ালের এরূপ আচরণে কি প্রকাশ পেয়েছে?

উত্তর: কমলাকান্ত বিড়াল লাঠি তুলে মারতে গেলে বিড়াল তুলল, বিড়ালের এরূপ আচরণে বিড়ালের ‘নির্বিকারত্ব’ প্রকাশ পেয়েছে।

বিড়াল গল্পে মার্জার দুধ খেয়ে ফেললেও কমলাকান্ত কেন দেখতে পায়নি?

উত্তর: বিড়াল গল্পে মার্জার দুধ খেয়ে ফেললেও কমলাকান্ত দেখতে পায়নি। কারণ তিনি তখন ‘ওয়াটারলুর মাঠে বূহ্য রচনায়’ ব্যস্ত ছিলেন।

বিড়াল প্রবন্ধে মেও শব্দটি কতবার ব্যবহৃত হয়েছে

উত্তর : ১৩ বার

কমলাকান্তের দপ্তর প্রশ্ন উত্তর

বিড়াল প্রবন্ধটি কোন গ্রন্থের অংশ?

উত্তর: বিড়াল প্রবন্ধটি হচ্ছে ‘কমলাকান্তের দপ্তর’ গ্রন্থের অংশ।

কমলাকান্তের দপ্তর গ্রন্থটি কী ধরনের রচনা?

উত্তর: কমলাকান্তের দপ্তর গ্রন্থটি হচ্ছে রসাত্মক ও ব্যঙ্গধর্মী একটি রচনা।

কমলাকান্ত কি হাতে ঝিমাইতেছিল?

উত্তর: কমলাকান্ত হুঁকা হাতে ঝিমাইতেছিল

কমলাকান্ত কোথায় বসে ঝিমাইতেছিল?

উত্তর: কমলাকান্ত চারপায়ীর ওপর বসে ঝিমাইতেছিল।

কমলাকান্ত কেন ঝিমাইতেছিল?

উত্তর: কমলাকান্ত নেপোলিয়ানের চিন্তায় পড়াতে ঝিমাইতেছিল।

কমলাকান্ত কোথায় ঝিমাইতেছিল?

উত্তর: কমলাকান্ত শয়নগৃহে ঝিমাইতেছিল।

হুঁকা হাতে কমলাকান্ত কাকে ডিউক ভাবছিলেন?

উত্তর: হুঁকা হাতে কমলাকান্ত ‘মার্জারকে’ ডিউক ভাবছিলেন।

কমলাকান্ত ওয়াটালুর যুদ্ধ নিয়ে কেন ভাবছিলেন?

উত্তর: কমলাকান্ত ‘নেশার ঘোরে ছিলেন বলে’ ওয়াটারলুর যুদ্ধ নিয়ে ভাবছিলেন।

কমলাকান্তের জবানবন্দী’ প্রথম কোন সংখ্যায় প্রকাশিত হয়?

উত্তর: ফাল্গুন সংখ্যায় ।

বিড়াল গল্পের সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর

বাবা, আমি ভুখা-ফাকা আছি আজ নিয়ে সাত দিন। তেড়িয়া হইয়া হাকিল মােল্লা ভালা হলাে দেখি লেঠা, ভুখা আছাে মর গাে ভাগাড় গিয়ে । নামাজ পড়িস বেটা? ভুখারি কহিল, ‘না বাবা’ মােল্লা হাকিল, তা হলে শালা, সােজা পথ দেখ । গােস্ত, রুটি দিয়া মসজিদে দিল তালা।

কার কথাগুলাে ভারি সােশিয়ালিস্টিক?

উত্তর: বিড়ালের কথাগুলাে ভারি সােশিয়ালিস্টিক।

‘তাহাদের রূপের ছটা দেখিয়ে অনেক মার্জার কবি হইয়া পড়ে।’ কেন?

উত্তর: বিত্তবানদের আশীর্বাদপুষ্ট মার্জারীর রূপের ছটা দেখে অনেক মার্জার কবি হয়ে পড়ে।

সমাজে বিত্তহীন শ্রেণি প্রতিনিয়ত বঞ্চিত হলেও ধনিক শ্রেণি তাদের দিকে দৃষ্টি দেয় না। কদাচিৎ এই শ্রেণির কারাে দিকে যদি ধনীদের অনুকম্পার দৃষ্টি পড়ে তবে সে শ্রেণিস্বার্থ ভুলে আপসের মাধ্যমে নাদুসনুদুস হয়ে ওঠে। তখন তার সৌন্দর্যে মুগ্ধ হয়ে সগােত্রের অনেকেই তার প্রতি দুর্বল হয়ে পড়ে এবং তার স্তুতি করে।

উদ্দীপকের মােল্লার সাথে ‘বিড়াল’ রচনার কমলাকান্তের বৈসাদৃশ্য তুলে ধরাে।

উত্তর: উদ্দীপকের মােল্লার মুসাফিরের প্রতি প্রদর্শিত মনােভাব ও আচরণের সাথে ‘বিড়াল’ রচনার কমলাকান্তের বৈসাদৃশ্য রয়েছে।

‘বিড়াল’ রচনায় কমলাকান্তের জন্য রাখা দুধ বিড়ালটি খেয়ে ফেলে। এতে কমলাকান্ত লাঠি দিয়ে বিড়ালটিকে মারতে উদ্যত হয়। তখন বিড়ালটি অধিকার সচেতন হয়ে যে বক্তব্য দেয় তা সমাজের শােষিত ও অধিকার বঞ্চিত শ্রেণিরই বক্তব্য এবং কমলাকান্তের সে বক্তব্যে দ্বিমত করার সুযােগ থাকে না।

উদ্দীপকের মােল্লা অভুক্ত মুসাফিরকে খাবার না দিয়ে বঞ্চিত করে। তার মাঝে স্বার্থপরতা ও অন্যের প্রতি দয়ার অভাব লক্ষণীয়। মােল্লা মসজিদে যে গােস্ত বা দান-সদকা পায় গরিবের তাতে অধিকার রয়েছে। কিন্তু সাত দিন না খাওয়া মুসাফির মােল্লার কাছে খাবার চাইলে সে তাকে তাড়িয়ে দেয় এবং মসজিদে তালা দিয়ে গােস্ত-রুটি নিয়ে চলে যায়। মােল্লার এমন আচরণ ‘বিড়াল’ রচনার কমলাকান্তের বিপরীত। কমলাকান্তের দুধ খাওয়ার পর সে বিড়ালকে বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দেয় না। লাঠি নিয়ে তেড়ে এলেও বিড়ালের যুক্তিপূর্ণ কথা সে শােনে এবং অনুধাবন করে। উদ্দীপকের মােল্লার মতাে কমলাকান্ত বিড়ালের খাবারের অধিকার কেড়ে নেয় না এবং ঘরের দরজায় তালা দিয়ে চলে যায় না।

উদ্দীপকে ‘বিড়াল’ রচনার সমাজচিত্রের যে দিক আলােচিত হয়েছে তা বিশ্লেষণ করাে।

উত্তর: উদ্দীপকে ‘বিড়াল’ রচনার সমাজচিত্রে শােষিত-অধিকারবতি শ্রেণির মর্মবেদনার দিকটি উদ্ভাসিত হয়েছে।

‘বিড়াল’ রচনায় শােষিত, নির্যাতিত ও অধিকারবঞ্চিত সমাজের চিত্র ফুটে উঠেছে। বিড়ালের মধ্য দিয়ে সে অধিকারহারা মানুষের মনের বেদনা প্রকাশিত হয়েছে। গল্পে বিড়ালটি বতি মানুষের সার্থক প্রতিনিধি।

উদ্দীপকের সমাজচিত্রে উদ্ভাসিত হয়েছে দরিদ্র ও বঞ্চিত শ্রেণির বঞ্চনার চিত্র। সেখানে অভুক্ত মুসাফির সাত দিন ধরে না খেয়ে মসজিদের মােল্লার দ্বারস্থ হয়। কিন্তু মােল্লা যেন সমাজের শােষক শ্রেণির প্রতিনিধিত্ব করে। গােস্ত-রুটি থাকা সত্ত্বেও সে মসজিদে তালা দিয়ে চলে যায়। ফলে অভুক্ত মুসাফির তার অধিকার থেকে বঞ্চিত হয়।

‘বিড়াল’ রচনায় কমলাকান্ত বিড়ালটিকে দুধ খাওয়ার অপরাধে মারতে উদ্যত হয়। অথচ এই বিড়ালেরও খাবার পাওয়ার অধিকার রয়েছে। অন্য প্রাণীর মতাে সেও এই সমাজে বেঁচে থাকার অধিকার রাখে। কিন্তু তার মতাে তুচ্ছ প্রাণীর প্রতি উচ্চ শ্রেণির দারুণ অবহেলা। সমাজের এই উচ্চ শ্রেণি বা ধনবান ব্যক্তিরা অসহায় শ্রেণির প্রতি লক্ষ রাখে না বলে সমাজে অশান্তি ও বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হয়। বিড়ালের বক্তব্যে সমাজের এমন চিত্রই ফুটে উঠেছে। ‘বিড়াল’ রচনার এই সমাজচিত্র উদ্দীপকেও উদ্ভাসিত হয়েছে। সেখানেও অভুক্ত মুসাফিরকে তার ন্যায্য অধিকার না দিয়ে মােল্লা মসজিদে তালা দেয়।


সমাজতন্ত্রের মূল লক্ষ্য হলাে শ্রেণিহীন সমাজব্যবস্থা গড়ার মাধ্যমে সাম্যবাদ প্রতিষ্ঠা করা। সাম্যবাদী রাষ্ট্রে নাগরিকদের শ্রমের মাধ্যমে উৎপন্ন সম্পদ রাষ্ট্রের অধিকারে আসবে। গুটিকয়েক ব্যক্তির হাতে সম্পদ কুক্ষিগত থাকবে না। সমাজতান্ত্রিক রাষ্ট্রব্যবস্থা হলাে সাম্যবাদী রাষ্ট্রে পৌছানাের প্রথম ধাপ। সমাজতান্ত্রিক রাষ্ট্রব্যবস্থায় শ্রমিকদের স্বার্থ রক্ষিত হয়। প্রত্যেক মানুষ বাঁচার সমান অধিকার পায়। তাই শ্রমিক শ্রেণি আমরণ সমাজতন্ত্র প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে লিপ্ত।

বঙ্কিমচন্দ্রের পেশায় কী ছিলেন?

উত্তর:- বঙ্কিমচন্দ্র পেশায় ম্যাজিস্ট্রেট ছিলেন।

পরােপকারই পরম ধর্ম’– কথাটি বুঝিয়ে লেখাে।

উত্তর:- পরােপকারই পরম ধর্ম’ মানে হলাে একে অপরের উপকারের মধ্য দিয়েই সমাজে শান্তি প্রতিষ্ঠিত হয়।

‘বিড়াল’ রচনায় দেখা যায়, নিজের জন্যে রাখা দুধ বিড়াল পান করলে কমলাকান্ত বিড়ালকে মারতে গিয়েও পুনরায় শয্যায় ফিরে আসে। তখন বিড়াল কমলাকান্তকে বলে, “এই দুগ্ধটুকু পান করিয়া আমার পরম উপকার হইয়াছে। তােমার আহরিত দুৰ্থে এই পরােপকার সিদ্ধ হলাে— অতএব তুমি সেই পরম ধর্মের ফলভাগী। কারণ বিড়ালের মতে, পরােপকারই পরম ধর্ম। বস্তুত প্রশ্নোক্ত উক্তিটিতে মানবতাবাদী লেখকের নৈতিক দর্শন প্রকাশ পেয়েছে। এর দ্বারা তিনি বােঝাতে চেয়েছেন, অন্যের উপকারই শ্রেষ্ঠ ধর্ম।

প্রদত্ত উদ্দীপকের সঙ্গে ‘বিড়াল’ প্রবন্ধের চেতনাগত সাদৃশ্য নিরূপণ করাে।

উত্তর:- প্রদত্ত উদ্দীপকের সঙ্গে ‘বিড়াল’ প্রবন্ধের সাম্যবাদী চেতনার সাদৃশ্য রয়েছে।

‘বিড়াল’ প্রবন্ধের লেখক একটা বিড়ালের মুখ দিয়ে শােষক-শােষিত, ধনী-দরিদ্র, সাধু-চোরের অধিকার বিষয়ক সংগ্রামের কথা বলে সাম্যবাদ প্রতিষ্ঠা করতে চেয়েছেন। বিড়ালের মুখ দিয়ে শ্লেষাত্মক, যুক্তিনিষ্ঠ ও সাবলীল ভাষায় সমাজতান্ত্রিক ব্যবস্থার কথা বলেছেন। প্রবন্ধটি মূলত সাম্যবাদের চেতনায় সমৃদ্ধ।

আলােচ্য উদ্দীপকে সমাজতন্ত্র ও সাম্যবাদের কথা বর্ণিত হয়েছে। সমাজতন্ত্রবাদ সমাজতান্ত্রিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করতে চায়। কারণ সমাজতান্ত্রিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা হলেই শ্রমিকদের স্বার্থ রক্ষিত হয়। আর শ্রমিকদের স্বার্থ রক্ষিত হওয়া এজন্য গুরুত্বপূর্ণ যে শ্রমিকদের শ্রমের মাধ্যমেই রাষ্ট্রের সম্পদ অর্জিত হয়। তাই উদ্দীপকের এ বক্তব্যই আলােচ্য প্রবন্ধে বিড়ালের ভাষায় ভিন্ন আঙ্গিকে উপস্থাপিত।

আলােচ্য প্রবন্ধে বিড়ালটি ক্ষুধাকাতর শ্রীহীনদের অধিকারের কথাই বলেছে। অর্থাৎ ‘বিড়াল’ প্রবন্ধ অধিকার বঞ্চিতদের কথা বলে সাম্যবাদ প্রতিষ্ঠা করতে চাইছে, আর সেই একই চেতনা উদ্দীপকেও উঠে এসেছে।

‘অধিকারহীনতাই বিড়ালকে দুঃসাহসী করে তুলেছে- ‘বিড়াল’ প্রবন্ধের আলােকে উক্তিটি বিশ্লেষণ করাে।

উত্তর:- উদ্দীপকে অধিকারবঞ্চিত শ্রমিক শ্রেণির অধিকার আদায়ে যে সংগ্রামের কথা রয়েছে ‘বিড়াল’ প্রবন্ধে বিড়ালটি অধিকার আদায়ে দুঃসাহসী হয়ে উঠেছে।

‘বিড়াল’ প্রবন্ধের বিড়ালটি কমলাকান্তের জন্য রাখা দুধটুকু খেয়ে ফেলে। এ কারণে কমলাকান্ত বিড়ালটিকে মারতে উদ্যত হয়। তখন বিড়ালটি বলে ওঠে, খেতে না পেয়েই সে চোর হয়েছে, সাধ করে নয়। এ বিষয় নিয়ে কমলাকান্তের সাথে তর্ক জুড়ে দেয় সে। উদ্দীপকে দেখতে পাই, শ্রমিকরা অধিকারবঞিত। তারাই রাষ্ট্রের সম্পদ বৃদ্ধি করছে। অথচ তাদের স্বার্থ রক্ষিত হচ্ছে না। সমাজতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হলে শ্রমিক শ্রেণির অধিকার প্রতিষ্ঠিত হবে। আর এ জন্যই শ্রমজীবী মানুষেরা পুজিপতি শ্রেণির বিরুদ্ধে সর্বদা সংগ্রামরত।

‘বিড়াল’ প্রবন্ধে বিড়ালটি সাম্যবাদবিমুখ শােষিত সমাজব্যবস্থাকে ধিক্কার জানিয়েছে। তার মতে, যে ক্ষুধার্ত নয় তাকেই সমাজ বেশি করে খাওয়াতে চায়। অথচ ক্ষুধাকাতর শ্রীহীনদের প্রতি ফিরেও তাকায় না। ফলে ক্ষুধাকাতররা ক্ষুধা নিবারণে অন্যায় করতেও দ্বিধাহীন হয়ে পড়ে। এই রকম দ্বিধাহীন হয়েই বিড়াল কমলাকান্তের দুধ খেয়ে ফেলে।

উদ্দীপকেও শ্রমিজীবী মানুষের সংগ্রামের মধ্যে তার কথারই প্রতিফলন দেখতে পাওয়া যায়। অতএব উদ্দীপক ও আলােচ্য গল্পের বিশ্লেষণে যথার্থই বলতে পারি, অধিকারহীনতাই বিড়ালকে দুঃসাহসী করে তুলেছে।

বিশ্বে চাহিদার চেয়ে বেশি খাদ্যশস্য উৎপন্ন হওয়া সত্ত্বেও প্রায় ১০০ কোটি মানুষ অনাহারে-অর্ধাহারে দিন কাটাচ্ছে। জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষিবিষয়ক সংস্থার (FAO) খাদ্য বিষয়ক এক প্রতিবেদনে বলা হয়, বিশ্বে যে পরিমাণ খাদ্য উৎপাদিত হয়, তার এক-তৃতীয়াংশ নষ্ট বা অপচয় হয়; যার পরিমাণ ১৩০ কোটি টনেরও অধিক। মাথাপিছু খাদ্য অপচয়ের শীর্ষে রয়েছে উত্তর আমেরিকা এবং ওশেনিয়া মহাদেশ। দ্বিতীয় স্থানে ইউরােপ আর তৃতীয় স্থানে রয়েছে এশিয়ার উন্নত দেশগুলাে।

‘বিড়াল’ রচনায় কাকে ‘সুতার্কিক’ বলে অভিহিত করা হয়েছে?

উত্তর:- ‘বিড়াল’ রচনার বিড়ালকে ‘সুতার্কিক’ বলে অভিহিত করা হয়েছে।

‘আমি তােমার ধর্মের সহায়’- ব্যাখ্যা করাে।

উত্তর:- পরােপকার যেহেতু ধর্মের মূল তাই কমলাকান্তের জন্য রাখা দুধ খেয়ে বিড়ালটি তাঁর ধর্মের সহায় হয়েছে—এটি বােঝাতেই বিড়াল কমলাকান্তকে কথাটি বলেছে।

পরােপকারই পরম ধর্ম। কমলাকান্তের জন্য রাখা দুধ পান করে। বিড়ালের অনেক উপকার হয়েছে। সে নিজ দায়িত্বে দুধ পান করেছে বলেই কমলাকান্ত সেই পরম ধর্মের ফলাভােগী হলেন। এজন্য বিড়াল কমলাকান্তকে উদ্দেশ্য করে প্রশ্নোক্ত কথাটি বলেছে।

উদ্দীপকটি ‘বিড়াল’ রচনার কোন বিষয়টিকে পরিস্ফুট করে? ব্যাখ্যা করাে।

উত্তর:- ‘বিড়াল’ রচনার কৃপণ ধনাঢ্য ব্যক্তিদের খাদ্য অপচয় ও ক্ষুধার্ত নিরন্ন মানুষের প্রতি অবহেলার বিষয়টি ব্যাখ্যা করাে

“উদ্দীপকে ‘বিড়াল’ রচনার আংশিক বক্তব্য প্রতিফলিত হয়েছে।” বাক্যটির তাৎপর্য বিশ্লেষণ করাে।

৩ নম্বর প্রশ্নের উত্তর

 

উত্তর:- ‘বিড়াল’ রচনার সামগ্রিকতা বিশ্লেষণ করাে।

বিড়াল প্রবন্ধের উক্তি, বিড়াল সম্পর্কিত গুরুত্বপূর্ণ লাইন

  • আমাদের কালো চামড়া দেখিয়া ঘৃণা করিও না।
  • খাইতে দাও নহিলে চুরি করিব।
  • অনাহারে মরিয়া যাইবার জন্য এ পৃথিবীতে কেহ আসে নাই।”
  • সমাজের ধনবৃদ্ধির অর্থ ধনীর ধন বৃদ্ধি।
  • সামাজিক ধনবৃদ্ধি ব্যতীত সমাজের উন্নতি নাই।
  • আমি যদি নেপোলিয়ন হইতাম, তবে ওয়াটারলু জিতিতে পারিতাম কি না।
  • ওয়েলিংটন হঠাৎ বিড়ালত্ব প্রাপ্ত হইয়া, আমার নিকট আফিং ভিক্ষা করিতে আসিয়াছে।
  • আমি তখন ওয়াটারলু মাঠে ব্যূহ-রচনায় ব্যস্ত, অত দেখি নাই।
  • কেহ মরে বিল ছেঁচে, কেহ খায় কই।
  • দুধ মঙ্গলার, দুহিয়াছে প্রসন্ন।
  • মনুষ্যকুলে কুলাঙ্গার স্বরূপ পরিচিত হইবে, ইহা বাঞ্ছনীয় নহে।
  • অনেক অনুসন্ধানে এক ভগ্ন যষ্টি আবিষ্কৃত করিয়া সগর্বে মার্জারীর প্রতি ধাবমান হইলাম।
  • এ সংসারের ক্ষীর, সর, দুগ্ধ, দধি, মৎস্য, মাংস সকলই তোমরা খাইবে, আমরা কিছু পাইব না কেন?
  • আমরা খাইলেই তোমরা কেন শাস্ত্রানুসারে ঠেঙ্গা লাঠি লইয়া মারিতে আইস, তাহা আমি বহু অনুসন্ধানে পাইলাম না।
  • বিজ্ঞ চতুষ্পদের কাছে শিক্ষালাভ ব্যতীত তোমাদের জ্ঞানোন্নতির উপায়ান্তর দেখি না।
  • আমি তোমার ধর্ম সঞ্চয়ের মূলীভূত কারণ।
  • আমি চোর বটে, কিন্তু আমি কি সাধ করিয়া চোর হইয়াছি?
  • অধর্ম চোরের নহে- চোরে যে চুরি করে, সে অধর্ম কৃপণ ধনীর।
  • চোর দোষী বটে, কিন্তু কৃপণ ধনী তদপেক্ষা শত গুণে দোষী।
  • তেলা মাথায় তেল দেওয়া মনুষ্যজাতির রোগ দরিদ্রের ক্ষুধা কেহ বুঝে না।

বিড়াল কি ধরনের রচনা
উত্তর : বিড়াল রসাত্মক ও ব্যঙ্গাত্মক ধরনের রচনা ।

©kamaleshforeducation.in(2023)

 

 

 

 

 

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!