মাধ্যমিক বংশগতি এবং কয়েকটি সাধারণ জিনগত রোগ-PART-5

মাধ্যমিক বংশগতি এবং কয়েকটি সাধারণ জিনগত রোগ

 

সঠিক উত্তর নির্বাচন করো। (MCQ)

[প্রতিটি প্রশ্নের প্রশ্নমান 1]

1। থ্যালাসেমিয়া রোগটি যে প্রোটিনের অস্বাভাবিকতার ফলে সৃষ্টি হয়, তা হল –
ক) ফাইব্রিন খ) গ্লোবিন গ) ফ্ল্যাভিন ঘ) থাইমিন

উত্তর-থ্যালাসেমিয়া রোগটি যে প্রোটিনের অস্বাভাবিকতার ফলে সৃষ্টি হয়, তা হল –খ) গ্লোবিন।

2। মানুষের যে ক্রোমোজোমে α গ্লোবিন জিন থাকে, তা হল –
ক) ১১ নং খ) ১২ নং গ) ১৪ নং ঘ) ১৬ নং

উত্তর- মানুষের যে ক্রোমোজোমে α গ্লোবিন জিন থাকে, তা হল –ঘ) ১৬ নং।

3। নীচের যেটি সেক্স ক্রোমোজোম বাহিত বংশগত রোগ নয়, সেটি হল –
ক) অ্যানিমিয়া খ) স্কার্ভি গ) থ্যালাসেমিয়া ঘ) সবকটি ঠিক

উত্তর- যেটি সেক্স ক্রোমোজোম বাহিত বংশগত রোগ নয়, সেটি হল – ঘ) সবকটি ঠিক।

4। কোন রোগটি অটোজোমাল জিন দ্বারা সৃষ্ট নয়?
ক) সিক্‌ল সেল অ্যানিমিয়া খ) হিমোফিলিয়া গ) থ্যালাসেমিয়া ঘ) অ্যালবিনিজম

উত্তর- খ) হিমোফিলিয়া -রোগটি অটোজোমাল জিন দ্বারা সৃষ্ট নয়।

5। হিমোফিলিয়ায় যে প্লাজমা প্রোটিনটি তৈরি হয় না সেটি হল –
ক) অ্যালবুমিন খ) গ্লোবিউলিন গ) ফাইব্রিন ঘ) কাইটিন

উত্তর-হিমোফিলিয়ায় যে প্লাজমা প্রোটিনটি তৈরি হয় না সেটি হল -গ) ফাইব্রিন।

6। প্লাজমা থ্রম্বোপ্লাস্টিন অ্যান্টিসিডেন্ট হল –
ক) ফ্যাক্টর VII খ) ফ্যাক্টর VIII গ) ফ্যাক্টর XI ঘ) ফ্যাক্টর X

উত্তর- প্লাজমা থ্রম্বোপ্লাস্টিন অ্যান্টিসিডেন্ট হল –গ) ফ্যাক্টর XI.

7। হিমোফিলিয়ার বাহক মাতা ও স্বাভাবিক পিতার সঙ্গে কন্যাসন্তান হিমোফিলিয়ায় আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা হল –
ক) ৭৫% খ) ৫০% গ) ১০০% ঘ) ০%

উত্তর-হিমোফিলিয়ার বাহক মাতা ও স্বাভাবিক পিতার সঙ্গে কন্যাসন্তান হিমোফিলিয়ায় আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা হল – ঘ) ০%।

8। হিমোফিলিয়া আক্রান্ত পুরুষ ও বাহক মহিলার সন্তানরা হবে –
ক) সকলেই হিমোফিলিক খ) ৫০% হিমোফিলিক
গ) 33.3% অংশ হিমোফিলিক ঘ) ২৫% অংশ হিমোফিলিক

উত্তর- হিমোফিলিয়া আক্রান্ত পুরুষ ও বাহক মহিলার সন্তানরা হবে –খ) ৫০% হিমোফিলিক।

9। বর্ণান্ধতা রোগে আক্রান্ত ব্যক্তি সাধারণত যে বর্ণগুলি দেখতে পায় না বা শণাক্ত করতে পারে না, তা হল –
ক) বেগুনি – হলদে খ) আকাশি – নীল গ) লাল – সবুজ ঘ) কমলা – হলদে
উত্তর-বর্ণান্ধতা রোগে আক্রান্ত ব্যক্তি সাধারণত যে বর্ণগুলি দেখতে পায় না বা সণাক্ত করতে পারে না, তা হল –গ) লাল – সবুজ।

10। সবুজ বর্ণান্ধতাকে কী বলা হয়?
ক) প্রোটানোপিয়া খ) ডিউটেরানোপিয়া গ) ট্রাইটানোপিয়া ঘ) কোনোটিই নয়

উত্তর-সবুজ বর্ণান্ধতাকে- খ) ডিউটেরানোপিয়া বলা হয়।

একটি বাক্যে উত্তর দাও। (VSAQ)

[প্রতিটি প্রশ্নের প্রশ্নমান 1]

1। লাল রং বর্ণান্ধতাকে কি বলে?
উত্তর- লাল রং বর্ণান্ধতাকে বলে প্রোটোনোপিয়া।

2। বিসাদৃশ্য শব্দটি বেছে নিয়ে লেখো – বর্ণান্ধতা, হিমোফিলিয়া, মায়োপিয়া, থ্যালাসেমিয়া।
উত্তর- বিসাদৃশ্য শব্দটি হল মায়োপিয়া, কারণ বাকি তিনটে রোগ জিনগত।

3। ক্রিস্টমাস রোগীদের রক্তে তঞ্চনকারী কোন ফ্যাক্টরটি অনুপস্থিত থাকে?
উত্তর- ক্রিস্টমাস রোগীদের রক্তে তঞ্চনকারী IX ফ্যাক্টরটি অনুপস্থিত থাকে।

4। ক্রিস-ক্রস উত্তরাধিকার দেখায় কোন প্রকার জিনগুলি?
উত্তর- ক্রিস-ক্রস উত্তরাধিকার X লিংকড জিনগুলি।

5। একজন বর্ণান্ধ পুত্র এবং একজন স্বাভাবিক কন্যার জিনোটাইপ কি হবে?
উত্তর- একজন বর্ণান্ধ পুত্রের জিনোটাইপ- XCY

6| থ্যালাসেমিয়া রোগে মানবদেহের কোন তিনটি অঙ্গ ক্ষতিগ্রস্ত হয়?
উত্তর – থ্যালাসেমিয়া রোগে মানবদেহের যে তিনটি অঙ্গ ক্ষতিগ্রস্ত হয়, সেগুলি হল – হৃৎপিণ্ড, যকৃত ও প্লিহা।

7| থ্যালাসেমিয়ার জন্য দায়ী জিন মানুষের কোন ধরনের ক্রোমোজোম বহন করে?
উত্তর – থ্যালাসেমিয়ার জন্য দায়ী জিন মানুষের অটোজোম বহন করে।

8| বর্ণান্ধতার জন্য দায়ী জিনটির একটি বৈশিষ্ট্য লেখ।
উত্তর – বর্ণান্ধতার জন্য দায়ী জিনটির একটি বৈশিষ্ট্য হল – X ক্রোমোজোমাল প্রচ্ছন্নধর্মী।

9| মানুষের জনগোষ্ঠীতে প্রকাশিত হয় এমন দুটি জিনগত রোগের নাম লেখ।
উত্তর – মানুষের জনগোষ্ঠীতে প্রকাশিত হয় এমন দুটি জিনগত রোগের নাম হল – থ্যালাসেমিয়া ও বর্ণান্ধতা।

10| হিমোগ্লোবিনের গ্লোবিন প্রোটিনে কয়টি পলিপেপটাইড শৃঙ্খল বর্তমান?  
উত্তর – হিমোগ্লোবিনের গ্লোবিন প্রোটিনে চারটি পলিপেপটাইড শৃঙ্খল যথা – দুটি α ও দুটি β শৃঙ্খল বর্তমান।

সংক্ষিপ্ত উত্তরভিত্তিক প্রশ্ন (SAQ)

[প্রতিটি প্রশ্নের প্রশ্নমান 2/3]

1। একজন থ্যালাসেমিয়া আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা রোধে জেনেটিক কাউন্সেলিং এর সময় তুমি কোন কোন বিষয়ে খোঁজ নেবে?
উত্তর- ক) পারিবারিক ইতিহাসে থ্যালসেমিয়া কখনও দেখা গিয়েছিল কিনা তা পর্যালোচনা করা।
খ) যদি পরিবারের কেউ থ্যালাসেমিয়া আক্রান্ত হয়ে থাকে, তাহলে সেই থ্যালাসেমিয়া কি ধরনের ছিল (তীব্রতা) তা আলোচনা করতে হবে।
গ) যদি এই পরিবারে কোন ব্যক্তি থ্যালাসেমিয়ার বাহক হয় তবে বৈবাহিক সম্পর্ক স্থাপনকালে যে পরিবারে বৈবাহিক সম্পর্ক স্থাপিত হতে চলেছে সেই পরিবারে পারিবারিক ইতিহাসে কখনও কোনো ব্যক্তির থ্যালাসেমিয়া হয়েছিল কিনা তা জানতে হবে এবং পরবর্তীকালে ওই পরিবারে কখনও কারোর থ্যালাসেমিয়া হয়েছিল কিনা সেটাও জানতে হবে।
ঘ) যার সঙ্গে বৈবাহিক সম্পর্ক স্থাপিত হতে চলেছে সেই ব্যক্তির থ্যালাসেমিয়া টেস্ট করা অত্যন্ত জরুরী। কারণ পাত্র এবং পাত্রী উভয়ই যদি থ্যালাসেমিক হন তবে 25% সন্তান থ্যালাসেমিয়ায় আক্রান্ত হতে পারে কিন্তু একজন স্বাভাবিক ব্যক্তি ও একজন থ্যালাসেমিয়া বাহকের মধ্যে বিবাহ সম্পর্ক হয়, তাহলে উৎপন্ন সন্তানরা কেউই থ্যালাসেমিয়া আক্রান্ত হবে না কিন্তু 50% বাহক হতে পারে।

2। একজন হিমোফিলিক পুরুষ স্বাভাবিক মহিলাকে বিবাহ করলো। তাদের একটি পুত্রসন্তান হলো। এই পুত্রসন্তানের হিমোফিলিক হওয়ার সম্ভাবনা কতটা তা বিশ্লেষণ করো।
উত্তর- হিমোফিলিয়া হল X ক্রোমোজোম বাহিত প্রচ্ছন্ন জিনঘটিত রোগ। পুত্র সন্তানের ক্ষেত্রে অটোজোমের সঙ্গে একটি X ক্রোমোজোম ও একটি Y ক্রোমোজোম থাকে। যার মধ্যে X ক্রোমোজোমটি মাতার কাছ থেকে লাভ করে এবং Y ক্রোমোজোমটি পিতার কাছ থেকে লাভ করে। এখানে মাতা স্বাভাবিক হওয়ায় পুত্র মাতার কাছ থেকে X ক্রোমোজোমটি লাভ করে, তাই পুত্রের হিমোফিলিক হওয়ার সম্ভাবনা নেই অর্থাৎ হিমোফিলিক হওয়ার সম্ভাবনা 0%।

3। থ্যালাসেমিয়া রোগ সৃষ্টির ক্ষেত্রে জিনগত পটভূমিকা কি?
উত্তর- থ্যালাসেমিয়া একটি অটোজোমাল প্রচ্ছন্ন জিনঘটিত রোগ। হিমগ্লোবিনে দুটি আলফা গ্লোবিন শৃঙ্খল ও দুটি বিটা গ্লোবিন শৃঙ্খল থাকে। আলফা গ্লোবিন শৃঙ্খলের গঠন নির্ধারিত হয় ১৬নং সমসংস্থ ক্রোমোজোম জোড়ায় অবস্থিত চারটি জিনের উপর। যদি একটি বা দুটি জিনের গঠনগত ত্রুটি হয়, তবে আলফা থ্যালাসেমিয়া মাইনর দেখা গেলেও ততটা ভয়াবহ নয় কিন্তু তিনটি জিনের গঠনগত ত্রুটি থাকলে তখন থ্যালাসেমি রোগী আলফা থ্যালাসেমিয়া মেজরে পরিণত হন।
বিটা গ্লোবিন শৃঙ্খলের গঠন নির্ধারিত হয় ১১নং সমসংস্থ ক্রোমোজোম জোড়ায় অবস্থিত দুটি জিনের উপর। একটি জিনের গঠনগত ত্রুটির জন্য বিটা থ্যালাসেমিয়া মাইনর দেখা যায় ও দুটি জিনের গঠনগত ত্রুটির জন্য বিটা থ্যালাসেমিয়া মেজর দেখা যায়।

 

4। থ্যালাসেমিয়া রোগে বার বার রক্ত পরিবর্তনের জন্য কি কি উপসর্গ দেখা যায়?
উত্তর- ক) বার বার রক্ত পরিবর্তনের জন্য লোহিত রক্তকণিকা গুলি ভেঙে যাওয়ার ফলে প্লীহা আয়তনে বৃদ্ধি পায় যাকে স্প্লিনোমেগালিক বলে।
খ) বার বার রক্ত দিতে হয় তার ফলে রক্তে হিমোগ্লোবিনের হিম অংশ দেহে সঞ্চিত হতে থাকে হিমোসিডারিন হিসাবে। যার ফলে হৃৎপিণ্ড তার ছন্দবন্ধতা হারায়।

5। X ক্রোমোজোম বাহিত একটি প্রচ্ছন্ন জিনঘটিত রোগের নাম ও একটি লক্ষণ লেখ।
উত্তর- X ক্রোমোজোম বাহিত একটি প্রচ্ছন্ন জিনঘটিত রোগের নাম হল বর্ণান্ধতা।
এটির লক্ষণ হল এই রোগে রোগীরা লাল, সবুজ, নীল বর্ণ চিনতে পারে না, তারা সেই রঙগুলিকে অন্য রঙ বা ফ্যাকাসে দেখে।

6। একজন শিক্ষার্থীরা খবরের কাগজে থ্যালাসেমিয়া নিয়ে একটি নিয়ে একটি প্রবন্ধ পড়ল এবং একজন থ্যালাসেমিয়া আক্রান্ত ব্যক্তির পরিণতি জেনে ভীত হলেন। জনগোষ্ঠী থেকে এই রোগ দূর করার জন্য কি কি উদেগ নিতে পারে তা লেখ।

উত্তর- ক) জনগণকে থ্যালাসেমিয়া রোগ সম্বন্ধে সচেতন ও সতর্ক করবে। পারিবারিক ইতিহাস সম্পর্কে জানতে হবে।
খ) থ্যালাসেমিয়া রোগের লক্ষণ নিয়ে আলোচনা করবে এবং দেখতে হবে তাদের পরিবারে এই লক্ষণ কারোর আছে কিনা।
গ) প্যাথলজিক্যাল টেস্ট করে নিশ্চিত হওয়ার কথা বলতে হবে।
ঘ) ছোট ছোট পথ নাটিকার মাধ্যমে জনগোষ্ঠীকে জানাতে হবে।

 7। থ্যালাসেমিয়াকে কেন মাইক্রোসাইটিক অ্যানিমিয়া বলা হয়?

উত্তর- মাইক্রো কথার অর্থ হল ক্ষুদ্র এবং সাইটিক কথার অর্থ হল সেল। যখন স্বাভাবিক লোহিত কণিকার আকারের থেকে উৎপন্ন লোহিতকণিকার আকার ক্ষুদ্র হয় >৬০ মাইক্রোমিটার হয়, তখন এই ধরনের লোহিতকণিকাকে মাইক্রোসাইটিক বলা হয়। হিমোগ্লোবিনের পরিমাণও এক্ষেত্রে কমে যায়। এক্ষেত্রে অ্যানিমিয়া দেখা যায়। থ্যালাসেমিয়ার ক্ষেত্রে জিনগত ত্রুটির কারণে ত্রুটিপূর্ণ গ্লোবিন শৃঙ্খল উৎপন্ন হওয়ায় স্বাভাবিকের থেকে হিমোগ্লোবিনে RBC কমে যায়। তার কারণে লোহিতকণিকার আকার ক্ষুদ্র হয় তাই থ্যালাসেমিয়াকে মাইক্রোসাইটিক অ্যানিমিয়া বলা হয়।

8। কখন কন্যা সন্তান হিমোফিলিয়া রোগে আক্রান্ত হবে?
উত্তর- হিমোফিলিয়া হল X ক্রোমোজোম বাহিত প্রচ্ছন্ন জিনঘটিত রোগ। কন্যা সন্তানের ক্ষেত্রে অটোজোমের সঙ্গে আরও দুটি X ক্রোমোজোম থাকে। যার মধ্যে একটি X ক্রোমোজোম মাতার কাছ থেকে লাভ করে এবং আর একটি X ক্রোমোজোম পিতার কাছ থেকে লাভ করে। যখন পিতা ও মাতা উভয়ই হিমোফিলিক হলে, তখন কন্যা সন্তান হিমোফিলিয়া রোগে আক্রান্ত হবে।
আবার পিতা হিমোফিলিক এবং মাতা হিমোফিলিয়া রোগের বাহক হলে যখন কন্যা সন্তানরা মায়ের থেকে হিমোফিলিয়া যুক্ত X ক্রোমোজোমটি লাভ করবে, তখনও কন্যা সন্তান হিমোফিলিয়া রোগে আক্রান্ত হবে।

 
দীর্ঘভিত্তিক প্রশ্ন উত্তর (LA)

[প্রতিটি প্রশ্নের প্রশ্নমান ৫]

1। একজন স্বাভাবিক পুরুষ ও হিমোফিলিয়া বাহক স্ত্রীর সন্তানরা কেউই হিমোলিফিক নয় কারণ কি চেকারবোর্ডের সাহায্যে দেখাও।
উত্তর- একজন স্বাভাবিক পুরুষ ও হিমোফিলিয়া বাহক স্ত্রীর সন্তানরা কেউই হিমোলিফিক নয় কারণ কন্যাসন্তানরা কেউই হিমোলিফিক হবে না তারা বাহক হলেও হতে পারে। পুত্র সন্তানদের ক্ষেত্রে 50% স্বাভাবিক এবং 50% হিমোফিলিক হওয়ার সম্ভাবনা থাকে কিন্তু কোনো পুত্র সন্তান যদি মায়ের হিমোফিলিক বাহক Xজিনটি না পেয়ে থাকে তাহলে কেউই হিমোফিলিক হবে না।

সুতরাং দেখা যাচ্ছে যে পুত্ররা কেউই মায়ের হিমোফিলিক জিনটি পায়নি, তাই সবাই স্বাভাবিক সন্তান হয়েছে।

============================================================================================================

সঠিক উত্তর নির্বাচন করো। (MCQ)

[প্রতিটি প্রশ্নের প্রশ্নমান 1]

1। জীবদেহের প্রধান জেনেটিক পদার্থ হল –
ক) DNA খ) RNA গ) উভয়ই ঘ) DNA অথবা RNA

উত্তর- জীবদেহের প্রধান জেনেটিক পদার্থ হল – ক) DNA

2। জিনের গঠনগত স্থায়ী পরিবর্তনকে বলে –
ক) অ্যালিল খ) অভিব্যক্তি গ) অভিযোজন ঘ) পরিব্যক্তি

উত্তর- জিনের গঠনগত স্থায়ী পরিবর্তনকে বলে – ঘ) পরিব্যক্তি।

3। মটরফুলে স্বপরাগ যোগ ঘটা সম্ভব, কারণ ফুলটি –
ক) পুংলিঙ্গ খ) স্ত্রীলিঙ্গ গ) একলিঙ্গ ঘ) উভলিঙ্গ

উত্তর- মটর ফুলে স্বপরাগ যোগ ঘটা সম্ভব, কারণ ফুলটি – ঘ) উভলিঙ্গ।

4। Tt জিনোটাইপকে কীভাবে প্রকাশ করা যায়?
ক) বিশুদ্ধ লম্বা খ) সংকর লম্বা গ) বিশুদ্ধ বেঁটে ঘ) কোনোটিই নয়

উত্তর- Tt জিনোটাইপকে খ) সংকর লম্বা ভাবে প্রকাশ করা যায়।

5। খর্ব মটর গাছ সব সময়ই হয় –
ক) হোমোজাইগাস খ) হেটেরোজাইগাস গ) সংকর দীর্ঘ ঘ) কোনোটিই নয়

উত্তর- খর্ব মটর গাছ সব সময়ই – ক) হোমোজাইগাস হয়।

6। একটি খাঁটি সাদা (প্রচ্ছন্ন) ফুলের মটর গাছের সঙ্গে একটি খাঁটি বেগুনি (প্রকট) ফুলের মটর গাছের সংকরায়ন ঘটানো হল। এক্ষেত্রে প্রথম অপত্য বংশে প্রাপ্ত ফুলের বৈশিষ্ট্য হবে –
ক) 100% সাদা খ) সমস্তই বেগুনি গ) 50% সাদা এবং 50% বেগুনি ঘ) 75% বেগুনি এবং 25% সাদা

উত্তর- একটি খাঁটি সাদা (প্রচ্ছন্ন) ফুলের মটর গাছের সঙ্গে একটি খাঁটি বেগুনি (প্রকট) ফুলের মটর গাছের সংকরায়ন ঘটানো হল। এক্ষেত্রে প্রথম অপত্য বংশে প্রাপ্ত ফুলের বৈশিষ্ট্য হবে – খ) সমস্তই বেগুনি।

7। মেন্ডেলের একসংকর জননের F2 জনুতে প্রাপ্ত 1 : 2 : 1 অনুপাতটি হল –
ক) ফিনোটাইপিক খ) জিনোটাইপিক গ) হোমোজাইগোটিক ঘ) হেটেরোজাইগোটিক

উত্তর- মেন্ডেলের একসংকর জননের F2 জনুতে প্রাপ্ত 1 : 2 : 1 অনুপাতটি হল – খ) জিনোটাইপিক।

8। দুটি সংকর কালো গিনিপিগের মধ্যে সংকরায়ন ঘটানো হলে প্রথম অপত্য জনুতে কতগুলি সংকর কালো গিনিপিগ হবে?
ক) 25% খ) 100% গ) 75% ঘ) 50%

উত্তর- দুটি সংকর কালো গিনিপিগের মধ্যে সংকরায়ন ঘটানো হলে প্রথম অপত্য জনুতে ঘ) 50% সংকর কালো গিনিপিগ হবে।

9। কোন বিজ্ঞানী প্রজনন পরীক্ষা ব্যবহার করে বংশগতির সূত্র আবিষ্কার করেন? – ক) স্ট্যানলি মিলার খ) জাঁ ব্যাপটিস্ট দ্য ল্যামার্ক গ) চার্লস ডারউইন ঘ) গ্রেগর জোহান মেন্ডেল
উত্তর- বিজ্ঞানী ঘ) গ্রেগর জোহান মেন্ডেল প্রজনন পরীক্ষা ব্যবহার করে বংশগতির সূত্র আবিষ্কার করে।

10। প্রদত্ত কোনটি প্রকট গুণ তা শনাক্ত করো – ক) বীজপত্রের বর্ণ – হলুদ খ) ফুলের বর্ণ – সাদা গ) বীজের আকার – কুঞ্চিত ঘ) কান্ডের দৈর্ঘ্য – বেঁটে
উত্তর- প্রকট গুণটি হল ক) বীজপত্রের বর্ণ – হলুদ।

11। একটি সংকর লম্বা (Tt) মটর গাছের সঙ্গে একটি বিশুদ্ধ লম্বা (TT) মটর গাছের সংকরায়ণ করা হলে F1 জনুতে লম্বা মটর গাছ পাওয়ার সম্ভাবনা – ক) 25% খ) 50% গ) 75% ঘ) 100%
উত্তর- একটি সংকর লম্বা (Tt) মটর গাছের সঙ্গে একটি বিশুদ্ধ লম্বা (TT) মটর গাছের সংকরায়ণ করা হলে F1 জনুতে লম্বা মটর গাছ পাওয়ার সম্ভাবনা – ঘ) 100%।

12। কোন দুটিকে মেন্ডেল প্রচ্ছন্ন বৈশিষ্ট্য হিসেবে নির্বাচন করেছিলেন, তা লেখ – ক) ফুলের বর্ণ – বেগুনী, ফুলের অবস্থান – কাক্ষিক খ) কাণ্ডের দৈর্ঘ্য – খর্ব, পরিণত বীজের আকার – কুঞ্চিত গ) পরিণত বীজের আকার – গোল, বীজের বর্ণ – হলুদ ঘ) ফুলের অবস্থান – কাক্ষিক, কাণ্ডের দৈর্ঘ্য – লম্বা
উত্তর- যে দুটিকে মেন্ডেল প্রচ্ছন্ন বৈশিষ্ট্য হিসেবে নির্বাচন করেছিলেন, তা হল – খ) কাণ্ডের দৈর্ঘ্য – খর্ব, পরিণত বীজের আকার – কুঞ্চিত।

13। কোন দুটিকে মেন্ডেল প্রকট বৈশিষ্ট্য হিসেবে নির্বাচন করেছিলেন, তা লেখ – ক) কাণ্ডের দৈর্ঘ্য – লম্বা, বীজের আকার – গোল খ) ফুলের অবস্থান – শীর্ষ, ফুলের বর্ণ – সাদা গ) বীজপত্রের বর্ণ – সবুজ, বীজের আকার – কুঞ্চিত ঘ) কাণ্ডের দৈর্ঘ্য – খর্ব, পরিণত বীজের আকার – কুঞ্চিত
উত্তর- যে দুটিকে মেন্ডেল প্রকট বৈশিষ্ট্য হিসেবে নির্বাচন করেছিলেন, তা হল – ক) কাণ্ডের দৈর্ঘ্য – লম্বা, বীজের আকার – গোল।

14। অসম্পূর্ণ প্রকটতার ক্ষেত্রে একসংকরায়ণ পরীক্ষায় F2 জনুতে ফিনোটাইপিক ও জিনোটাইপিক অনুপাত কি হতে পারে? – ক) 3:1 খ) 2:1:1 গ) 9:3:3:1 ঘ) 1:2:1
উত্তর- অসম্পূর্ণ প্রকটতার ক্ষেত্রে একসংকরায়ণ পরীক্ষায় F2 জনুতে ফিনোটাইপিক ও জিনোটাইপিক অনুপাত হল – ঘ) 1:2:1।

15। মানুষের ক্ষেত্রে সঠিক জোড়টি নির্বাচন করো – ক) ডিম্বাণুর স্বাভাবিক ক্রোমোজোম বিন্যাস – 22A + XX খ) ডিম্বাণুর স্বাভাবিক ক্রোমোজোম বিন্যাস – 22A + Y গ) ডিম্বাণুর স্বাভাবিক ক্রোমোজোম বিন্যাস – 22A + X ঘ) ডিম্বাণুর স্বাভাবিক ক্রোমোজোম বিন্যাস – 22A + XY
উত্তর- মানুষের ক্ষেত্রে সঠিক জোড়টি হল – গ) ডিম্বাণুর স্বাভাবিক ক্রোমোজোম বিন্যাস – 22A + X।

 

 

16। দ্বিসংকর জনন থেকে প্রাপ্ত মেন্ডেলের সূত্রটি হল –
ক) পৃথকীভবন সূত্র খ) অসম্পূর্ণ প্রকটতার সূত্র গ) প্রকটতার সূত্র ঘ) স্বাধীন বিন্যাস সূত্র

উত্তর- দ্বিসংকর জনন থেকে প্রাপ্ত মেন্ডেলের সূত্রটি হল – ঘ) স্বাধীন বিন্যাস সূত্র।

17। যে প্রক্রিয়ায় পিতামাতার চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য সন্তান- সন্ততিতে সঞ্চারিত হয়, তাকে বলে –
ক) অভিব্যক্তি খ) বংশগতি গ) অভিযোজন ঘ) জিনোম

উত্তর- যে প্রক্রিয়ায় পিতামাতার চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য সন্তান- সন্ততিতে সঞ্চারিত হয়, তাকে বলে – খ) বংশগতি।

একটি বাক্যে উত্তর দাও। (VSAQ)

[প্রতিটি প্রশ্নের প্রশ্নমান 1]

1। কন্যা সন্তান সৃষ্টিতে পিতার কোন প্রকার ক্রোমোজোম দরকার?
উত্তর- কন্যা সন্তান সৃষ্টিতে পিতার থেকে X ক্রোমোজোম দরকার।

2। একটি শুক্রাণু 22A + Y হলে ডিম্বাণুর সাথে নিষেকের পর ভ্রূণের লিঙ্গ কি হবে?
উত্তর- একটি শুক্রাণু 22A + Y হলে ডিম্বাণুর সাথে নিষেকের পর ভ্রূণের পুংলিঙ্গ হবে, কারণ ডিম্বাণু 22A + X হয়।

3। স্বাধীনবিন্যাস সূত্রটি প্রবর্তন করতে মেন্ডেল কি ধরনের পরীক্ষা করেছিলেন?
উত্তর- স্বাধীনবিন্যাস সূত্রটি প্রবর্তন করতে মেন্ডেল মটর গাছের দ্বিসংকর জনন পরীক্ষা করেছিলেন।

 

4। মাল্টিপল অ্যালিলের একটি উদাহরণ দাও।
উত্তর- মাল্টিপল অ্যালিলের একটি উদাহরণ হল- মানুষের ত্বকের বর্ণ বা ABO রক্তশ্রেণি।

5। মটর গাছের ফলের আকৃতির প্রকট বৈশিষ্ট্যটি লেখো।
উত্তর- মটর গাছের ফলের আকৃতির প্রকট বৈশিষ্ট্যটি হল গোলাকার ফল।

6। মিউটাজেন কি? উদাহরণ দাও।
উত্তর- ক্রোমোজোমাল মিউটশনের জন্য দায়ী পদার্থ হল মিউটাজেন। উদাহরণ- X-রশ্মি।

 

সংক্ষিপ্ত উত্তরভিত্তিক প্রশ্ন (SAQ)

[প্রতিটি প্রশ্নের প্রশ্নমান 2/3]

1। হোমোজাইগাস ও হেটারোজাইগাস বলতে কি বোঝো?
উত্তর-হোমো কথার অর্থ হল ‘সম’। যে জীবের দেহে কোন বৈশিষ্ট্য নিয়ন্ত্রনকারী জিনদুটি (যা সমসংস্থ ক্রোমোজোমের একই লোকাসে অবস্থিত) একই হয় তাকে হোমোজাইগাস জীব (AA) বলে।
যে জীবের ক্ষেত্রে কোন বৈশিষ্ট্যের জন্য জিনের দুটি ভিন্নরূপ (যা সমসংস্থ ক্রোমোজোমের একই লোকাসে অবস্থিত) উপস্থিত থাকে তাকে হেটারোজাইগাস জীব বলা হয় (Aa) বলে। ‘হেটারো’ কথার অর্থ ‘ভিন্ন’, তাই এই প্রকার জীবকে হেটারোজাইগাস জীব বা সংকর জীব বলে।

2। সকল টেস্ট ক্রসই ব্যাক ক্রস— ব্যাখ্যা করো।
উত্তর- ব্যাক ক্রস হল F1 জনুতে প্রাপ্ত অপত্যের সঙ্গে জনিতৃ জনু বিশুদ্ধ প্রকট অ্যালিল অথবা বিশুদ্ধ প্রচ্ছন্ন অ্যালিলের সঙ্গে সংকরায়ন ঘটানো।
টেস্ট ক্রস হল F1 জনুতে প্রাপ্ত অপত্যের সঙ্গে জনিতৃ জনু বিশুদ্ধ প্রচ্ছন্ন অ্যালিলের সঙ্গে সংকরায়ন ঘটানো। সুতরাং,সকল টেস্ট ক্রসই ব্যাক ক্রস।

3। মেন্ডেলের দ্বি সংকর জনন পরীক্ষা থেকে প্রাপ্ত সূত্রটি লেখ।
উত্তর- মেন্ডেলের দ্বি সংকর জনন থেকে প্রাপ্ত সূত্রটি হল স্বাধীন সঞ্চারণ সূত্র।
সূত্রটি হল –
দুই বা ততোধিক বিপরীত বৈশিষ্ট্য যুক্ত জীবের সংকরায়নের ফলে বিপরীত বৈশিষ্ট্যগুলি জনিতৃ জনু থেকে অপত্য জনুতে সঞ্চারিত হবার সময়ে একত্রিত হলেও গ্যামেট গঠনকালে এরা যে শুধু পৃথক হয় তাই নয়, পরবর্তী জনুতে যাবার সময় প্রত্যেক বৈশিষ্ট্য স্বাধীন ভাবে যেকোন বিপরীত বৈশিষ্ট্যের সঙ্গে সম্ভাব্য সকল প্রকার সমন্বয়ে সঞ্চারিত হতে পারে।

4। নিম্নলিখিতগুলির ক্ষেত্রে কীরূপ ফলাফল দেখা যায়—
(i) একটি স্বাভাবিক মহিলা ও বর্ণান্ধ পুরুষের মধ্যে বিবাহ হলে।
(ii) স্বাভাবিক বর্ণান্ধতা বাহক মহিলার সঙ্গে স্বাভাবিক পুরুষের বিবাহ হলে।

উত্তর-(i) একটি স্বাভাবিক মহিলা ও বর্ণান্ধ পুরুষের মধ্যে বিবাহ হলে তাদের পুত্ররা সবাই স্বাভাবিক এবং কন্যারা সবাই বাহক হবে।
(ii) স্বাভাবিক বর্ণান্ধতা বাহক মহিলার সঙ্গে স্বাভাবিক পুরুষের বিবাহ হলে পুত্র সন্তানদের মধ্যে 50% পুত্র স্বাভাবিক এবং 50% বর্ণান্ধ পুত্র হওয়ার সম্ভাবনা এবং কন্যা সন্তানদের মধ্যে 50% স্বাভাবিক এবং 50% বর্ণান্ধ বাহক কন্যা হওয়ার সম্ভাবনা দেখা যায়।

5। গিনিপিগের ক্ষেত্রে দ্বিসংকরায়নের ফলে উৎপন্ন প্রদত্ত জিনোটাইপগুলির ফিনোটাইপ নির্ধারণ করো- (a) Bbrr (b) bbRr (c ) BbRR (d) BBrr
উত্তর- গিনিপিগের ক্ষেত্রে দ্বিসংকরায়নের ফলে উৎপন্ন প্রদত্ত জিনোটাইপগুলির ফিনোটাইপ হল –
(a) Bbrr – কালো ও মসৃণ রোমযুক্ত গিনিপিগ
(b) bbRr – সাদা ও কর্কশ রোমযুক্ত গিনিপিগ
(c ) BbRR – কালো ও কর্কশ রোমযুক্ত গিনিপিগ
(d) BBrr – কালো ও মসৃণ রোমযুক্ত গিনিপিগ

 

দীর্ঘভিত্তিক প্রশ্নউত্তর (LA)

[প্রতিটি প্রশ্নের প্রশ্নমান ৫]

1। কন্যা সন্তান জন্মানোর বিষয়ে পিতা ও মাতার ভূমিকা একটি ছকের মাধ্যমে উপস্থাপন করো। সহপ্রকটতা কাকে বলে? উদাহরণ দাও।
উত্তর-

দেখা যাচ্ছে কন্যা সন্তান মাতার কাছ থেকে একটি X ক্রোমোজোম ও পিতার কাছ থেকে আর একটি X ক্রোমোজোম লাভ করে। কন্যা সন্তান জন্মানোর বিষয়ে পিতা ও মাতা উভয়েরই ভূমিকা রয়েছে।
যখন কোনো সংকর জীবে দুটি বৈশিষ্ট্যই বাহ্যিকভাবে প্রকাশিত হয় অর্থাৎ দুটি বিপরীত বৈশিষ্ট্যই সমভাবে একই সঙ্গে প্রকাশিত হয়, তাকে সহপ্রকটতা বলে। উদাহরণ – মানুষের রক্তের MN ও ABO ব্লাড গ্রুপ।

 

 

©kamaleshforeducation.in(2023)

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!