মাধ্যমিক ভূগোল প্রশ্ন ও উত্তর-বায়ুর চাপবলয় ও বায়ু প্রবাহ-PART-2

 

 

মাধ্যমিক দশম শ্রেণীর ভূগোল প্রশ্ন ও উত্তর  

বায়ুর চাপবলয় ও বায়ু প্রবাহ (বায়ুমণ্ডল – দ্বিতীয় অধ্যায়)  

SOURCE-BHUGOLSHIKSHA.COM

মাধ্যমিক ভূগোল প্রশ্ন ও উত্তর

MCQ | বায়ুর চাপবলয় ও বায়ু প্রবাহ (বায়ুমণ্ডল – দ্বিতীয় অধ্যায়)  

  1. বায়ুর চাপ মাপার যন্ত্রের নাম –

(A) ব্যারোমিটার

(B) থার্মোমিটার

(C) অ্যানিমোমিটার

(D) হাইগ্রোমিটার

Ans: (A) ব্যারোমিটার

  1. ভূপৃষ্ঠে বায়ুচাপ বলয়ের সংখ্যা –

(A) ৫ টি

(B) ১ টি

(C) ৭ টি

(D) ৩ টি

Ans: (C) ৭ টি

  1. ৪০ ° দক্ষিণ অক্ষরেখাকে বলে – 

(A) গর্জনশীল চল্লিশা

(B) তীব্র চিৎকারকারী ষাট

(C) অশ্ব অক্ষাংশ

(D) ক্রোধোন্মত্ত পঞ্চাশ

Ans: (A) গর্জনশীল চল্লিশা

  1. কোন্‌টি নিয়তবায়ুর উদাহরণ ?

(A) মৌসুমি বায়ু 

(B) আয়ন বায়ু

(C) লু বায়ু

(D) জেট বায়ু

Ans: B) আয়ন বায়ু

  1. মেরুবৃত্তপ্রদেশীয় নিম্নচাপ বলয়ের অবস্থান কোন্ অক্ষরেখার মধ্যে ?

(A) ৬০ ° -৭o °

(B) ৮০ ° –৯০ °

(C) 0 ° -১০ °

(D) ২৫ ° – ৩৫ °

Ans: A) ৬০ ° -৭o °

  1. সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে প্রতি ১১০ মিটার উচ্চতা বৃদ্ধিতে বায়ুচাপ –

(A) ১ মিমি 

(B) ১ মিটার

(C) ১ সেমি

(D) ১ মিলিবার

Ans: (C) ১ সেমি

  1. স্থলবায়ু প্রবাহিত হয় –

(A) সকালে

(B) বিকালে

(C) দুপুরে

(D) রাত্রে

Ans: (D) রাত্রে

  1. সমুদ্রবায়ু প্রবাহিত হয় 

(A) দুপুরে

(B) সন্ধ্যায়

(C) রাত্রে

(D) ভোরে

Ans: (A) দুপুরে

  1. একপ্রকার সাময়িক বায়ুর উদাহরণ সাল বায়ু-

(A) ঘূর্ণবায়ু 

(B) আয়ন বায়ু 

(C) মিস্ট্রাল

(D) স্থল বায়ু

Ans: (D) স্থল বায়ু

  1. ভূপৃষ্ঠের স্বাভাবিক বায়ুচাপ হল –

(A) ৭৯০.০ এম বি

(B) ১০৩১.০ এম বি 

(C) ১০১৩.২ এম বি

(D) ১২৩১.০ এম বি

  1. পশ্চিমা বায়ু একপ্রকার-

(A) সাময়িক বায়ু

(B) নিয়ত বায়ু 

(C) স্থানীয় বায়ু

(D) আকস্মিক বায়ু

Ans: B) নিয়ত বায়ু

  1. উত্তর – পূর্ব আয়ন বায়ুর গতিবেগ ঘণ্টায় —

(A) ১৬ কিমি

(B) ১২ কিমি 

(C) ১৫ কিমি

(D) ১৭ কিমি

Ans: (A) ১৬ কিমি

  1. উত্তর গোলার্ধে পশ্চিমাবায়ু প্রবাহিত হয় কোন দিক থেকে ? 

(A) উত্তর – পশ্চিম

(B) দক্ষিণ – পশ্চিম

(C) উত্তর – পূর্ব

(D) দক্ষিণ – পূর্ব

Ans: (B) দক্ষিণ – পশ্চিম

  1. বাতাসের বেগ মাপার যন্ত্রের নাম –

(A) হাইগ্রোমিটার

(B) ব্যারোমিটার

(C) অ্যানিমোমিটার

(D) বাতপতাকা

Ans: (C) অ্যানিমোমিটার

  1. রাইন নদীর উপত্যকায় প্রবাহিত বায়ুর নাম –

(A) পম্পেরো

(B) বোয়া

(C) চিনুক

(D) ফন

Ans: (A) পম্পেরো

  1. যে নিয়তবায়ুর গতিপথে পৃথিবীর বড়ো বড়ো উষ্ণ মরুভূমির সৃষ্টি হয়েছে সেটি হল – 

(A) আয়ন বায়ু

(B) মেরু বায়ু 

(C) পশ্চিমা বায়ু

(D) মৌসুমি বায়ু

Ans: (A) আয়ন বায়ু

  1. অশ্ব অক্ষাংশ দেখা যায় –

(A) ০ ° -১০ ° উত্তর ও দক্ষিণ

(B) ২৫ ° –৩৫ ° উত্তর

(C) ৮০ ° – ৯০ ° দক্ষিণ

(D) ৬০ ° – ৭০ ° উত্তর অক্ষাংশে

Ans: (B) ২৫ ° –৩৫ ° উত্তর

  1. ঘূর্ণবাত একপ্রকার কি স্থানীয় বায়ুপ্রবাহ –

(A) আকস্মিক বায়ুপ্রবাহ

(B) নিয়ত বায়ুপ্রবাহ

(C) সাময়িক বায়ুপ্রবাহ

(D) স্থানীয় বায়ুপ্রবাহ

Ans: (A) আকস্মিক বায়ুপ্রবাহ

  1. উচ্চতা পরিবর্তনের সঙ্গে চাপের পরিবর্তন পরিমাপ করা যায়— 

(A) ফর্টিন ব্যারোমিটার

(B) অল্টিমিটার

(C) অ্যানিরয়েড ব্যারোমিটার

(D) ব্যারোগ্রাম

Ans: (B) অল্টিমিটার

  1. ITCZ সৃষ্টি হয়েছে –

(A) নিরক্ষীয় নিম্নচাপ বলয়ে

(B) ক্রান্তীয় উচ্চচাপ বলয়ে

(C) মেরুবৃত্তীয় নিম্নচাপ বলয়ে

(D) মেরু উচ্চচাপ বলয়ে

Ans: (A) নিরক্ষীয় নিম্নচাপ বলয়ে

  1. বায়ুচাপ মাপার একক হল – 

(A) ° F

(B) ° C

(C) মিলিবার

(D) মিলিমিটার 

Ans: (C) মিলিবার

  1. & Insolation হল –

(A) প্রত্যাগমনকারী সৌররশ্মি

(B) বিকিরিত কার্যকারী সৌররশ্মি

(C) ক্ষুদ্র সৌররশ্মি

(D) আগত সৌররশ্মি

Ans: (D) আগত সৌররশ্মি

  1. বায়ুর গতির দিক মাপা হয় কোন যন্ত্রের সাহায্যে ?

(A) অ্যানিমোমিটার

(B) হাইগ্রোমিটার

(C) ব্যারোমিটার

(D) বাতপতাকা

Ans: (D) বাতপতাকা

  1. বায়ুর চাপ নিম্নলিখিত কার সমান ?

(A) ১ ডাইন

(B) ১ মিমি

(C) ১ সেমি

(D) ১ গ্রাম

Ans: (A) ১ ডাইন

  1. বায়ুচাপের দ্রুত পরিবর্তন যে যন্ত্রে ধরা পড়ে তাকে বলে –

(A) অল্টিমিটার

(B) অ্যানিরয়েড ব্যারোমিটার

(C) ব্যারোগ্রাম

(D) সাইক্লোমিটার 

Ans: (C) ব্যারোগ্রাম

  1. ভারতে শীতকালে মৌসুমি বায়ু কোন্ দিক থেকে প্রবাহিত হয় ?

(A) উত্তর – পূর্ব

(B) দক্ষিণ – পূর্ব

(C) দক্ষিণ – পশ্চিম

(D) উত্তর – পশ্চিম

Ans: (A) উত্তর – পূর্ব

  1. ১০,০০০ মিটার উচ্চতায় বায়ুর চাপ হয় প্রায় –

(A) ৪৪ এম বি 

(B) ১০১৩.২ এম

(C) ৮৪৩.৯ এমবি

(D) ৬৯৭৫ এম বি

Ans: (C) ৮৪৩.৯ এমবি

  1. ডোলড্রামস কোন্ অঞ্চলে সৃষ্টি হয় ?

(A) নিরক্ষীয় অঞ্চলে

(B) কর্কটীয় অঞ্চলে

(C) সুমেরুবৃত্ত অঞ্চলে

(D) কুমেরু অঞ্চলে

Ans: (A) নিরক্ষীয় অঞ্চলে

  1. কোন্ স্থানটিতে উচ্চচাপ বলয় অবস্থান করছে ? 

(A) সুমেরুবৃত্ত 

(B) নিরক্ষীয়

(C) কুমেরুবৃত্ত

(D) সুমেরু

Ans: (C) কুমেরুবৃত্ত

  1. বায়ুচাপের ঢাল বাড়লে বায়ুর কিরূপ পরিবর্তন ঘটে ? 

(A) গতিবেগ কমে

(B) গতিবেগ বাড়ে

(C) গতিবেগ একই থাকে

(D) কোনোকিছুই ঘটে না

Ans: (B) গতিবেগ বাড়ে

  1. কোন্ সূত্রের প্রভাবে বায়ু উত্তর গোলার্ধে ডান দিকে এবং দক্ষিণ গোলার্ধে বাম দিকে বাঁকে –

(A) বিউফোর্ট

(B) টরিসেলি

(C) বাইস ব্যালট

(D) ফেরেল 

Ans: (D) ফেরেল

  1. কোন্ বলের প্রভাবে বায়ুর দিকবিক্ষেপ ঘটে ?

(A) ডবসন

(B) কোরিওলিস

(C) অভিকর্ষজ

(D) বিউফোর্ট

Ans: (B) কোরিওলিস

  1. কোন্ স্থানে কোরিওলিস বলের প্রভাব সর্বাধিক ?

(A) নিরক্ষীয়

(B) কর্কটীয়

(C) মেরুবৃত্ত

(D) মেরু

Ans: (D) মেরু

  1. কোন্ বায়ু প্রবাহিত অঞ্চলে ক্রান্তীয় মরুভূমি সৃষ্টি হয়েছে ?

(A) আয়ন বায়ু

(B) পশ্চিমা বায়ু

(C) প্রত্যায়ন বায়ু

(D) মেরু বায়ু 

Ans: (A) আয়ন বায়ু

  1. ক্রান্তীয় অঞ্চলে মহাদেশের কোন দিকে মরুভূমিগুলি অবস্থান করছে ?

(A) উত্তর

(B) পূর্ব

(C) পশ্চিম

(D) দক্ষিণ 

Ans: (C) পশ্চিম

  1. স্থলবায়ুর বেগ সর্বাধিক হয় কোন সময়ে ?

(A) ভোরবেলা

(B) বিকালবেলা

(C) দুপুরবেলা

(D) সন্ধ্যাবেলা

Ans: A) ভোরবেলা

  1. সমুদ্রবায়ু ও স্থলবায়ুর বৃহৎ সংস্করণ কোন্ বায়ু ?

(A) পশ্চিমা বায়ু

(B) আয়ন বায়ু

(C) মৌসুমি বায়ু

(D) মেরু বায়ু

Ans: (C) মৌসুমি বায়ু

  1. কোন্‌টি ক্যাটাবেটিক বায়ুর উদাহরণ ?

(A) সিরোক্কো

(B) খামসিন 

(C) মিস্ট্রাল

(D) ফন

Ans: (C) মিস্ট্রাল

  1. বায়ুচাপের তারতম্যে কোন্‌টির প্রভাব সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ ?

(A) উচ্চতা 

(B) পৃথিবীর আবর্তন

(C) জলীয় বাষ্প

(D) উষ্ণতা

Ans: (D) উষ্ণতা

  1. কোন্ বায়ুকে সাহসিক পশ্চিমাবায়ু বলা হয় –

(A) উত্তর – পূর্ব আয়ন বায়ু

(B) দক্ষিণ – পূর্ব আয়ন বায়ু

(C) দক্ষিণ – পশ্চিম পশ্চিমা বায়ু

(D) উত্তর – পশ্চিম পশ্চিমা বায়ু

Ans: (D) উত্তর – পশ্চিম পশ্চিমা বায়ু

SOURCE-BHUGOLSHIKSHA.COM

মাধ্যমিক ভূগোল প্রশ্ন ও উত্তর

  বায়ুর চাপবলয় ও বায়ু প্রবাহ (বায়ুমণ্ডল – দ্বিতীয় অধ্যায়)  

অতিসংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর 

 

  1. কোন্ যন্ত্রের সাহায্যে বায়ুচাপের পরিবর্তন মাপা যায় ? 

Ans: ব্যারোগ্রাম ।

  1. দীর্ঘকায় উচ্চচাপ অঞ্চলকে কী বলে ?

Ans: Trough .

  1. কোন্ বায়ুকে ‘ সমুদ্রবায়ু ও স্পলবায়ুর বৃহৎ সংস্করণ বলা ।

Ans: মৌসুমি বায়ু ।

  1. কর্কটীয় ও মকরীয় উচ্চচাপ বলয় থেকে মেরুবৃত্তপ্রদেশীয় নিম্নচাপ বলয়ের দিকে যে নিয়ত বায়ু প্রবাহিত হয় তাকে । কী বলে ?

Ans: পশ্চিমা বায়ু । 

  1. দিনের কোন সময়ে সমুদ্রবায়ু সর্বাধিক বেগে প্রবাহিত হয় ?

Ans: দুপুরবেলায় । 

  1. উত্তর আমেরিকায় প্রবাহিত একটি উষ্ণ ও শুষ্ক স্থানীয় বায়ুর নাম লেখো ।

Ans: চিনুক । 

  1. কোন্ মাসে ভারতে লু প্রবাহিত হয় ?

Ans: বৈশাখ – জ্যৈষ্ঠ ( মে – জুন ) । 

  1. জাপান ও চিনসাগরে সৃষ্ট বিধ্বংসী ঘূর্ণিঝড় – এর নাম লেখো ।

Ans: টাইফুন । 

  1. কোন্ স্থানীয় বায়ুকে ‘ স্নো – ইটার ’ বা ‘ তুষার ভক্ষক ‘ বলে ?

Ans: চিনুক ।

  1. ‘ ঘূর্ণিবাতের চক্ষু ‘ কোন ধরনের ঘূর্ণবাতে সৃষ্টি হয় ? 

Ans: ক্রান্তীয় ঘূর্ণিবাত ।

  1. কোন দুই মাসে বায়ুচাপের সর্বাধিক পার্থক্য পরিলক্ষিত হয় ।

Ans: জানুয়ারি ও জুলাই মাসে ।

  1. ক্লান্তীয় উচ্চচাপ বলয়ের অবস্থান উল্লেখ করো ।

Ans: উভয় গোলার্ধে ২৫ ° -৩৫ ° অক্ষাংশের মধ্যে ।

  1. পৃথিবীর আবর্তনের প্রভাবে প্রবাহিত বায়ুর ওপর যে শক্তি কাজ করে তাকে কী বলে ?

Ans: কোরিওলিস বল ।

  1. কার নামানুসারে ফেরেলের সুত্রের নামকরণ করা হয় ?

Ans: বিজ্ঞানী উইলিয়াম ফেরেল ।

  1. সমুদ্রপৃষ্ঠে গড় বায়ুচাপ কত ?

Ans: ১০১৩.২৫ মিলিবার । 

  1. দুটি ক্রান্তীয় মরুভূমির নাম লেখো ।

Ans: আফ্রিকার সাহারা ও উত্তর আমেরিকার সোনেরান । 

  1. দুটি ক্যাটাবেটিক বায়ুর উদাহরণ দাও ।

Ans: বোরা ও মিস্টাল ।

  1. সিরোক্কো বায়ু কোথায় প্রবাহিত হয় ?

Ans: সাহারা মরুভূমিতে ।

  1. সিরোক্কো মিশরে কী নামে পরিচিত ?

Ans: খামসিন ।

  1. উত্তর – পূর্ব ভারতে উষ্ণ গরম বাতাস কী নামে পরিচিত ?

Ans: লু ।

  1. পম্পাস তৃণভূমির উপর দিয়ে বাহিত শীতল বাতাসটির নাম কী ?

Ans: পম্পেরো ।

  1. বায়ুর দিক নির্ণয় কোন যন্ত্রে নির্ধারণ করা হয় ?

Ans: বাতপতাকা ।

  1. বায়ুচাপ কোন্ এককে মাপা হয় ?

Ans: মিলিবার ।

  1. কোন্ বায়ুর কারণে সুইটজারল্যান্ডকে জলবায়ুগত মরুদ্যান বলা হয় ?

Ans: ফন ।

  1. ক্রান্তীয় ঘূর্ণিঝড় ক্যারিবিয়ান সাগরে কী নামে পরিচিত ?

Ans: হ্যারিকেন ।

  1. টুইস্টার কোন্ বায়ুর অপর নাম ?

Ans: টর্নেডো ।

  1. কোন প্রকার ঘূর্ণবাতে চক্ষু সৃষ্টি হয় ?

Ans: ক্রান্তীয় ঘূর্ণবাত ।

  1. গ্রীষ্মকালে থর মরুভূমির উপর দিয়ে বাহিত গরম হাওয়ার নাম কী ?

Ans: লু । 

SOURCE-BHUGOLSHIKSHA.COM

মাধ্যমিক ভূগোল প্রশ্ন ও উত্তর

  বায়ুর চাপবলয় ও বায়ু প্রবাহ (বায়ুমণ্ডল – দ্বিতীয় অধ্যায়)  

সংক্ষিপ্ত উত্তরভিত্তিক প্রশ্নোত্তর   

  1. বায়ুচাপ ( Wind pressure ) কী ?

Ans: পৃথিবীর মাধ্যাকর্ষণে বায়ুমণ্ডলের গ্যাসীয় অণুগুলির অবিরাম সংঘর্ষে সমুদ্রপৃষ্ঠে প্রতি একক স্থানের ওপর যে বল প্রয়োগ করে তা হল বায়ুচাপ ।

  1. মিলিবার কী ?

Ans: মিলিবার হল বায়ুচাপ মাপার একক । এক মিলিবার এমন একটি শক্তি , যা প্রতি বর্গসেমিতে ১০০০ ডাইন চাপ দেয় । সমুদ্রপৃষ্ঠের গড় বায়ুচাপ হল ১০১৩.২৫ মিলিবার ।

  1. বায়ুচাপের ঢাল কাকে বলে ?

Ans: সমচাপ রেখার সাথে সমকোণে উচ্চচাপ থেকে নিম্নচাপের দিকে নির্দিষ্ট দূরত্বে বায়ুচাপের যে পার্থক্য ঘটে , তাকেই বায়ুচাপের ঢাল বলা হয় । এর অপর নাম হল বায়ুচাপের অনুভূমিক অবক্রম হার ( Horizontal Pressure Gradient ) 

  1. এটি মিলিবার / কিমি হারে প্রকাশ করা হয় । সর্মচাপ ( Isobar ) রেখা কী ?

Ans: কোনো নির্দিষ্ট সময়ে ভূপৃষ্ঠের সমচাপ যুক্ত স্থানগুলিকে মানচিত্রে যে রেখা দ্বারা যোগ করা হয় , তা হল সমচাপ রেখা ।

  1. নিরক্ষীয় শান্তবলয় বা ডোলড্রামস্ কী ?

Ans: নিরক্ষীয় অঞ্চলের উষ্ণ – আর্দ্র বায়ু হালকা বলে সর্বদা এই ঊর্ধ্বগামী ( বায়ুস্রোত ) । ভূপৃষ্ঠের সমান্তরালে এখানে কোনো বায়ুপ্রবাহ ঘটে না বলে শান্ত থাকে , যা জাহাজ চলাচলের অসুবিধা ঘটাত । তাই নাবিকগণ এর নাম দেন ‘ ডোলড্রামস ‘ । এটিকে ‘ নিরক্ষীয় অক্ষ’ও ( Equatorial trough ) বলা হয় ।

  1. বায়ুচাপ কক্ষ কাকে বলে ?

Ans: সমুদ্রের ওপর বায়ুচাপ বলয়গুলি যতটা স্পষ্ট , মহাদেশের ওপর ততটা নয় । মহাদেশের প্রাকৃতিক বৈচিত্র্য বেশি বলে বলয়গুলি ভেঙে ছোটো ছোটো কোশ আকারে অবস্থান করে । এগুলিকেই বায়ুচাপ কক্ষ বলা হয় । স্থলভাগের বিস্তার যেখানে বেশি কক্ষের সংখ্যাও সেখানে বেশি । 

  1. বায়ুপ্রবাহ ( Winds ) কাকে বলে ?

Ans: ভূপৃষ্ঠের উপর দিয়ে সমান্তরালভাবে উচ্চচাপ অঞ্চল থেকে নিম্নচাপ অঞ্চলের দিকে বায়ু চলাচলকে বায়ুপ্রবাহ বলে । টেওয়ার্থার মতে , ‘ বায়ু হল প্রাকৃতিক শক্তি যা ভূপৃষ্ঠের বায়ুচাপের সমতা রক্ষা করছে । 

  1. বায়ুপ্রবাহ ও বায়ুস্রোতের মধ্যে তফাৎ কী ?

Ans: ভূপৃষ্ঠের সঙ্গে সমান্তরালে বায়ুচলাচলকে বায়ুপ্রবাহ বলে বায়ু উল্লম্বভাবে অর্থাৎ উপর থেকে নীচে বা নীচ থেকে উপরে চলাচল করলে তাকে বলা হয় বায়ুস্রোত ।

  1. ফেরেল সূত্র কী ?

Ans: পৃথিবীর আবর্তনের ফলে সৃষ্ট কোরিওলিস বলের প্রভাবে বায়ু উচ্চচাপ থেকে নিম্নচাপের দিকে প্রবাহিত হওয়ার সময় উত্তর গোলার্ধে ডান দিকে এবং দক্ষিণ গোলার্ধে বামদিকে বেঁকে প্রবাহিত হয় । বিজ্ঞানী ফেরেল – এর নামানুসারে ইহা ফেরেলসূত্র নামে পরিচিত ।

  1. বাইস ব্যালট সূত্র কাকে বলে ?

Ans: ১৯৫৭ খ্রিস্টাব্দে ডাচ্ আবহবিদ্ বাইস ব্যালট , বায়ুচাপের তারতম্য ও বায়ুপ্রবাহের মধ্যে একটি সম্পর্ক নির্ধারণ করেন । তাঁর মতে উত্তর গোলার্ধে বায়ুপ্রবাহের দিকে পিছন করে দাঁড়ালে ডানদিকে উচ্চচাপ এবং বামদিকে নিম্নচাপ থাকে । দক্ষিণ গোলার্ধে – এর ঠিক বিপরীত অবস্থা হয় । একেই বলে বাইস ব্যালট সূত্র ।

  1. নিয়ত বায়ু ( Planetary wind ) কাকে বলে ?

Ans; স্থায়ী বায়ুচাপ বলয়গুলির ওপর ভিত্তি করে যে বায়ুপ্রবাহসমূহ সারাবছর ধরে নিয়মিতভাবে নির্দিষ্ট পথে , নির্দিষ্ট গতিতে ভূপৃষ্ঠের সমান্তরালে প্রবাহিত হয় , তাদেরকেই নিয়ত বায়ুপ্রবাহ বলে ।

  1. নিয়ত বায়ু ক – প্রকার ও কী কী ?

Ans: নিয়ত বায়ু হল তিন প্রকারের । যথা- ( i ) আয়ন বায়ু , ( ii ) পশ্চিমা বায়ু এবং ( iii ) মেরু বায়ু 

  1. আয়ন বায়ুর অপর নাম বাণিজ্য বায়ু কেন ?

Ans: আয়ন বায়ু একটি নির্দিষ্ট পথ বরাবর প্রবাহিত হয় । পালতোলা জাহাজের যুগে এই বায়ুর পথ ধরে বাণিজ্য হত বলে এর অপর নাম ‘ বাণিজ্য বায়ু । 

  1. ITCZ কী ? 

Ans: ইনটার ট্রপিক্যাল কনভার্জেন্স জোন ( Inter tropical convergence zone ) নিরক্ষীয় অঞ্চলে উত্তর – পূর্ব ও দক্ষিণ – পূর্ব আয়ন বায়ু পরস্পর মিলিত হয়ে ঊর্ধ্বমুখী হয় । তাই এই অঞ্চল হল ITCZ ।

  1. নিরক্ষীয় শাস্তবলয় বা ডোলড্রামস্ কাকে বলে ?  

Ans: নিরক্ষীয় অঞ্চলে সূর্যের লম্ব কিরণে বাতাস হালকা ও উন্ন হয়ে সারাবছর উপরের বায়ুস্তরে ঊর্ধ্বাগমন করে । এই বায়ুর কোনো পার্শ্বপ্রবাহ থাকে না তাই , ৫ ° -১০ ° উত্তর ও দক্ষিণ অক্ষরেখার অঞ্চল শাস্ত থাকে । একে বলে নিরক্ষীয় শান্তবলয় বা ডোলড্রামস্ ।

  1. গর্জনশীল চল্লিশা ( Roaring Forties ) বলতে কী বোঝ ?

Ans: দক্ষিণ গোলার্ধে স্থলভাগ অপেক্ষা সমুদ্রের বিস্তার বেশি হওয়ায় পশ্চিমা বায়ু বাধাহীনভাবে প্রবলবেগে গর্জন করে প্রবাহিত হয় । প্রবল বায়ুপ্রবাহের কারণেই ৪০ ° দক্ষিণ অক্ষরেখা ‘ গর্জনশীল চল্লিশা ‘ নামে পরিচিত । 

  1. পশ্চিমা বায়ু ও প্রত্যয়ন বায়ুর মধ্যে পার্থক্য লেখো । 

Ans: কর্কটীয় ও মকরীয় উচ্চচাপ বলয়দ্বয় থেকে নিরক্ষীয় নিম্নচাপ বলয়ের দিকে উভয় গোলার্ধে ভূপৃষ্ঠের সমান্তরালে যে নিয়ত বায়ু প্রবাহিত হয় তাকে পশ্চিমা বায়ু বলে । অপরপক্ষে , নিরক্ষীয় অঞ্চলের ঊর্ধ্বমুখী বায়ু পৃথিবীর আবর্তনজনিত কারণে বিক্ষিপ্ত হয়ে কর্কটক্রান্তি ও মকরক্রান্তি উচ্চচাপ বলয় বরাবর নেমে আসে । একেই প্রত্যয়ন বায়ু বলে ।

  1. সাময়িক বায়ুর শ্রেণিগুলির নাম লেখো । 

Ans: সাময়িক বায়ু হল তিন প্রকার । যথা— ( i ) সমুদ্র বায়ু ও স্থলবায়ু , ( ii ) মৌসুমি বায়ু এবং ( iii ) পার্বত্য ও উপত্যকা বায়ু ।

  1. স্থলবায়ুর থেকে সমুদ্র বায়ুর বেগ বেশি কেন ?

Ans: সমুদ্র বায়ু দিনের বেলা প্রবাহিত হয় । সূর্যের তাপে দিনের বেলা স্থলভাগের উষ্ণতা  বাড়ে । ফলে সমুদ্র ও স্থলভাগের মধ্যে বায়ুচাপের ঢাল বেশি হয় । তাই সমুদ্র বায়ুর গতিবেগও বাড়ে । রাত্রে স্থলভাগ ধীরে ধীরে শীতল হয় বলে সমুদ্র ও স্থলভাগের মধ্যে বায়ুচাপের ঢাল কম হয় । ফলে স্থল বায়ু ধীরে ধীরে প্রবাহিত হয় ।

  1. পার্বত্য বায়ু ও ক্যাটাবেটিক বায়ুর মূল পার্থক্য কী ?

Ans: পার্বত্য বায়ু পর্বতের উপরি অংশ থেকে দ্রুত তাপ বিকিরণে শীতল ও ভারী হয়ে পর্বতের ঢাল বরাবর নীচে নেমে আসে ও উপত্যকায় অবস্থান করে । অপর দিকে , ক্যাটাবেটিক বায়ু বিস্তীর্ণ অঞ্চলজুড়ে দীর্ঘ সময় ধরে প্রবাহিত হয় ।

  1. দুটি বিখ্যাত ক্যাটাবেটিক বায়ুর নাম লেখো ।

Ans: দুটি বিখ্যাত ক্যাটাবেটিক বায়ু হল বোরা ও মিস্টাল । 

  1. স্থানীয় বায়ুর ( Local wind ) সংজ্ঞা দাও ।

Ans: স্থানীয়ভাবে বায়ুচাপের তারতম্য ঘটলে যে বায়ুপ্রবাহ ঘটে তাকে স্থানীয় বায়ু বলে । এর প্রবাহ স্থানীয়ভাবেই হয় । যেমন — লু , বোরা , মিস্টাল ইত্যাদি ।

  1. জলবায়ুগত মরুদ্যান ( Climatic Oasis ) কাকে বলে ?

Ans: ইউরোপের আঙ্কস পর্বতের উত্তর ঢালে প্রবাহিত বায়ুপ্রবাহের ফলে সুইটজারল্যান্ডে শীতকালের আবহাওয়া মনোরম থাকে বলে , সুইটজারল্যান্ডকে জলবায়ুগত মরূদ্যান বলে ।  

SOURCE-BHUGOLSHIKSHA.COM

মাধ্যমিক ভূগোল প্রশ্ন ও উত্তর

  বায়ুর চাপবলয় ও বায়ু প্রবাহ (বায়ুমণ্ডল – দ্বিতীয় অধ্যায়) 

সংক্ষিপ্ত ব্যাখ্যাধর্মী প্রশ্নোত্তর  

  1. বায়ুচাপের বৈশিষ্ট্য লেখো । অথবা , বায়ুচাপের গুরুত্ব লেখো ।

Ans: বায়ুচাপের বৈশিষ্ট্যগুলি হল : ( i ) বায়ুচাপের তারতম্যের কারণেই বায়ুপ্রবাহ হয় । ( ii ) বায়ুচাপের পরিবর্তনে আবহাওয়ার পরিবর্তন ঘটে । ( iii ) গভীর নিম্নচাপ ও উচ্চচাপ দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার সৃষ্টি করে — ঝড় , বৃষ্টি , তুষারঝড় হয় । ( iv ) আবহাওয়া মানচিত্রে বায়ুচাপের বণ্টন ও প্রকৃতি দেখে আবহাওয়ার পূর্বাভাস দেওয়া সম্ভব হয় । 

  1. উষ্ণতার সাথে বায়ুচাপের সম্পর্ক কী ? 

অথবা , ‘ উষ্ণতা বাড়লে বায়ুচাপ কমে এবং উষ্ণতা কমলে বায়ুচাপ বাড়ে ? —উদাহরণসহ ব্যাখ্যা করো ।

Ans: বায়ুর উষ্ণতার সঙ্গে বায়ুচাপের সম্পর্ক অত্যন্ত গভীর কিন্তু বিপরীতমুখী অর্থাৎ উষ্ণতা বাড়লে বায়ুর চাপ কমে ও উষ্ণতা  কমলে বায়ুর চাপ বাড়ে । কোনো স্থানে উষ্ণতা  বাড়লে বায়ু হালকা হয়ে উপরে উঠে । যায় , বায়ুর ঘনত্ব কমে , ফলে নিম্নচাপের সৃষ্টি হয় । সারাবছর ধরে অধিক উষ্ণতার জন্যই নিরক্ষীয় অঞ্চল বরাবর নিম্নচাপ বলয়ের সৃষ্টি হয়েছে । অধিক উষ্ণতার কারণেই গ্রীষ্মকালে ভারতের উত্তর পশ্চিমে নিম্নচাপ কেন্দ্রের সৃষ্টি হয় । আবার কোনো স্থানে উষ্ণতা কমলে বায়ুর ঘনত্ব বাড়ে , বায়ু শীতল ও ভারী হয় এবং প্রাকৃতিক কারণেই শীতল ও ভারী বায়ু উচ্চচাপ যুক্ত হয় । সারাবছর উষ্ণতা অত্যন্ত কম থাকে বলেই কোরিওলিস বল সর্বাধিক হওয়া সত্ত্বেও দুই মেরু অঞ্চলে উচ্চচাপ বলয়ের সৃষ্টি হয়েছে । উষ্ণতা  কম থাকে বলেই শীতকালে আমাদের এখানে বায়ুরচাপ বেশি হয় ।

  1. সমচাপ রেখার বৈশিষ্ট্যগুলি লেখো ।

Ans: সমচাপ রেখার বৈশিষ্ট্যগুলি হল – ( i ) পৃথিবীপৃষ্ঠের বিভিন্ন স্থানে বায়ুচাপের বিভিন্নতার জন্য আলাদা আলাদা সমচাপ রেখা আঁকা হয়ে থাকে । ( ii ) সমচাপ রেখাগুলি সাধারণত বিভিন্ন অক্ষরেখার সঙ্গে সমান্তরালভাবে পূর্ব – পশ্চিমে অবস্থান করে । ( iii ) সমচাপ রেখাগুলি নিজেদের থেকে দূরে দূরে অবস্থান করলে আবহাওয়া শান্ত থাকে এবং কাছাকাছি অবস্থান করলে বায়ুপ্রবাহের গতি প্রবল হয় । ( iv ) সমচাপ রেখাগুলি নিজেদের কাছাকাছি চক্রাকারে অবস্থান করলে ঝড়বৃষ্টির সম্ভাবনা থাকে । ( v ) সমচাপ রেখা চক্রাকার হলে তাকে কোশ ( Air pressure cell ) বলে । ( vi ) নিম্নচাপযুক্ত অঞ্চলকে বলে Trough এবং উচ্চচাপযুক্ত অঞ্চলকে বলে Ridge 

  1. বায়ুর চাপের ঢাল ( Pressure gradient ) বলতে কী বোঝ ? 

Ans: সমচাপ রেখার সাথে সমকোণে উচ্চচাপ থেকে নিম্নচাপের দিকে প্রতি একক দূরত্বে বায়ুচাপের যে পার্থক্য হয় তা হল বায়ুচাপের ঢাল বা চাপ ঢাল । বায়ুচাপের ঢাল নির্ভর করে দুটি স্থানের দূরত্ব এবং ওই দুটি স্থানের বায়ুচাপের পার্থক্যের ওপর । বায়ুচাপের ঢাল বেশি হলে বায়ুর গতিবেগ বাড়ে এবং কম হলে বায়ুর গতিবেগ কমে ।

  1. পৃথিবীর প্রধান প্রধান বায়ুচাপ বলয় ক – টি ও কী কী ?

Ans: উষ্ণতা  , বায়ুতে জলীয় বাষ্পের পরিমাণ , পৃথিবীর আবর্তন প্রভৃতির তারতম্যজনিত কারণে সাতটি ( ৭ টি ) স্থায়ী বায়ুচাপ বলয়ের উৎপত্তি ঘটেছে । এগুলি হল- ( i ) নিরক্ষীয় নিম্নচাপ বলয় , ( ii ) কটীয় উচ্চচাপ বলয় , ( iii ) মকরীয় উচ্চচাপ বলয় , ( iv ) সুমেরুবৃত্ত প্রদেশীয় নিম্নচাপ বলয় , ( v ) কৃমেরুবৃত্ত প্রদেশীয় নিম্নচাপ বলয় , ( vi ) সুমেরু উচ্চচাপ বলয় , ( vii ) কুমেরু উচ্চচাপ বলয় । 

  1. নিরক্ষীয় অঞ্চলে নিম্নচাপ বলয় সৃষ্টির কারণগুলি কী কী ?

Ans: নিরক্ষীয় অঞ্চলে নিম্নচাপ বলয় সৃষ্টির কারণগুলি হল— ( i ) সারাবছর লম্ব সূর্যরশ্মির কারণে গড় উষ্ণতা  সর্বদা বেশি । ( ii ) স্থলভাগ অপেক্ষা জলভাগের বিস্তার বেশি এবং উষ্ণতা  বেশি বলে আর্দ্রতাও সারাবছর খুব বেশি । ( iii ) পৃথিবীর আবর্তন বেগ বেশি বলে ঊর্ধ্বগামী উদ্বু – আর্দ্র হালকা বায়ু বিক্ষিপ্ত হয় ।

  1. সুমেরুবৃত্ত ও কুমেরুবৃত্ত প্রদেশে নিম্নচাপ বলয় সৃষ্টি হয়েছে কেন ?

Ans: সুমেরুবৃত্ত ও কুমেরুবৃত্ত প্রদেশে নিম্নচাপ বলয় সৃষ্টি হওয়ার কারণগুলি হল ( i ) ক্রান্তীয় অঞ্চল অপেক্ষা এখানে কোরিওলিস বল বেশি বলে বায়ুর গতিবিক্ষেপ ঘটে । ( ii ) মেরু অঞ্চল থেকে আগত শীতল বায়ুর সঙ্গে ক্রান্তীয় অঞ্চল থেকে আগত উদ্বু – আর্দ্র বায়ুর সংঘর্ষে বায়ু ঊর্ধ্বগামী হয় । ( iii ) উষ্ণ সমুদ্রস্রোত এই অঞ্চলে প্রচুর তাপ বয়ে নিয়ে আসে , যা এই অঞ্চলের উষ্ণতা  বাড়ায় ।

  1. কর্কটীয় ও মকরীয় অঞ্চল বরাবর উচ্চচাপ বলয় সৃষ্টির কারণগুলি লেখো ।

Ans: কর্কটীয় ও মকরীয় অঞ্চল বরাবর উচ্চচাপ বলয় সৃষ্টির কারণগুলি হল— ( i ) নিরক্ষীয় অঞ্চলের উর্ধ্বমুখী বায়ু পৃথিবীর আবর্তনের প্রভাবে উভয় গোলার্ধ বিক্ষিপ্ত হয়ে কর্কটীয় ও মকরীয় অঞ্চল বরাবর বায়ু স্রোতরূপে নেমে আসে । পলে বায়ুর পরিমাণ এখানে বাড়ে । ( ii ) মেরুবৃত্ত প্রদেশের বায়ু কোরিওলিস বলের প্রভাবে বিক্ষিপ্ত হয়ে এখানে এসে পৌঁছোয় । উল্লিখিত কারণে কর্কটীয় ও মকরীয় অঞ্চল বরাবর বায়ুর পরিমাণ বাড়ে বলেই এখানে উচ্চচাপ বলয় সৃষ্টি হয়েছে ।

  1. ‘ দুই মেরুতে কোরিওলিস বল বেশি অথচ উচ্চচাপ বলয় সৃষ্টি হয়েছে । ‘ কারণ ব্যাখ্যা করো ।

Ans: দুই মেরুতে কোরিওলিস বল সর্বাধিক । তাই এখানকার বায়ু বিক্ষিপ্ত হওয়ারই কথা । কিন্তু দুই মেরুতে উষ্ণতা সারাবছর খুবই | কম হওয়ায় এখানকার বায়ু শীতল , ভারী , শুষ্ক ও আধক ঘনতৃবুর । ফলে কোরিওলিস বল দুই মেরু অঞ্চলের বায়ুকে বিক্ষিপ্ত করছে । পারে না । অত্যধিক শীতল অবস্থা এখানে উচ্চচাপ সৃষ্টির মূল কারণ । তাই দুই মেরুতে কোরিওলিস বল অধিক হলেও উচ্চচাপ বলয়ের সৃষ্টি হয়েছে ।

  1. কর্কটীয় উচ্চচাপ বলয়কে অশ্ব অক্ষাংশ বলার কারণ কী ? বা , অশ্ব অক্ষাংশ কাকে বলে ?

Ans: গোলার্ধে কর্কটক্রান্তি রেখার নিকটবর্তী ২৫ ° –৩৫ ° উত্তর অক্ষাংশের মধ্যবর্তী কর্কটীয় উচ্চচাপ বলয়ের বায়ু নিম্নমুখী হওয়ায় এর কোনো পার্শ্বপ্রবাহ থাকে না । এই জন্য এই অঞ্চলকে ককটীয় শাস্তবলয় বলে । প্রাচীন কালে পালতোলা জাহাজগুলি কর্কটীয় শাস্তবলয়ে এলে গতিহীন হয়ে পড়ত । শোনা যায় , মধ্যপ্রাচ্য ও ইউরোপ থেকে উত্তর আমেরিকা ও পশ্চিম ভারতীয় দ্বীপপুঞ্জে ঘোড়াভর্তি জাহাজগুলি যাওয়ার সময় কর্কটীয় শাস্ত বলয় অতিকহ । করতে দীর্ঘ সময় লেগে যেত । তাই পানীয় জলের ব্যয়সংকোচের কারণে ঘোড়াগুলিকে সমুদ্রে ফেলে দেওয়া হত । এই ঘটনা থেকেই কর্কটীয় শান্তবলয়কে অশ্ব অক্ষাংশ আখ্যা দেওয়া হয় ।

  1. বায়ুচাপ বলয়গুলি সীমানা পরিবর্তন করে কেন ?

Ans: পৃথিবীর বায়ুচাপের তারতম্যের ক্ষেত্রে উষ্ণতা র প্রভাব সর্বাধিক । পৃথিবীর উষ্ণতার প্রধান উৎস হল সূর্য । সূর্যের উত্তরায়ণ ও দক্ষিণায়নের সঙ্গে সঙ্গে বিভিন্ন অক্ষাংশে সূর্যরশ্মির পতনকোদের তারতম্য হয় বলে উষ্ণতা র তারতম্য ঘটে । তাই চাপবলয়গুলি সূর্যের উত্তরায়ণ ও দক্ষিণায়নের সঙ্গে সঙ্গে সরতে থাকে ।

  1. বায়ুচাপ বলয়গুলির সীমানা পরিবর্তন জলবায়ুর ওপর কীরূপ প্রভাব ফেলে ? 

Ans: বায়ুচাপ বলয়গুলির সীমানা পরিবর্তনের ফলে পৃথিবীর বিভিন্ন অংশে বায়ুপ্রবাহ , বৃষ্টিপাত ও জলবায়ুর পরিবর্তন ঘটে । আবহবিদদের মতে গ্রীষ্মকালে নিরক্ষীয় নিম্নচাপ বলা স্থান পরিবর্তন করে ভারতের মাঝবরাবর মৌসুমি অক্ষরূপে ( Monsoon Trough ) অবস্থান করে বলেই মৌসুমি বায়ু ভারতে প্রবেশ করে । কর্কটীয় ও মকরীয় চাপবলয়ের সীমানা পরিবর্তনের জন্য ভূমধ্যসাগরীয় জলবায়ু অঞ্চলে শীতকালে পশ্চিমাবায়ু প্রবেশ । করে বৃষ্টিপাত ঘটায় । তাই এখানে গ্রীষ্মকাল শুষ্ক ও শীতকাল আর্দ্র হয় ।

  1. দক্ষিণের তুলনায় উত্তর গোলার্ধে বায়ুচাপ কক্ষের সংখ্যা বেশি হয় কেন ?

Ans: বায়ুর চাপ কক্ষের অবস্থান ও সংখ্যা নির্ভর করে । মহাদেশ ও মহাসাগরের অবস্থান ও বিস্তৃতির ওপর । দক্ষিণ গোলার্ধে মহাদেশ অপেক্ষা মহাসমুদ্রের বিস্তার বেশি হওয়ায় বায়ুচাপ বলয়গুলির বিস্তৃতি বেশি । কিন্তু উত্তর গোলার্ধে সমুদ্র অপেক্ষ মহাদেশের বিস্তার বেশি হওয়ায় চাপবলয়গুলি অধিকাংশ ক্ষেত্রে কক্ষের আকারে অবস্থান করে । তাই দক্ষিণ গোলার্ধের তুলনায় উত্তর গোলার্ধে বায়ুচাপ কক্ষের সংখ্যা বেশি ।

  1. ক্রান্তীয় অঞ্চলে মহাদেশের পশ্চিমে মরুভূমি সৃষ্টির কারণ কী ?

Ans: উভয় গোলার্ধের ক্রান্তীয়মণ্ডলে ( i ) মহাদেশের পশ্চিম দিক থেকে আয়ন বায়ু সমুদ্রের দিকে বয়ে যায় , ফলে বায়ুতে জলীয় বাষ্প থাকে না । ( ii ) এই বায়ু যতই নিরক্ষীয় অঞ্চলের দিকে বয়ে যায় উষ্ণতা  বাড়তে থাকে বলে জলীয় বাষ্প ধারণ ক্ষমতা বাড়তে থাকে । ( iii ) ক্রান্তীয় মণ্ডলের মরুভূমি অঞ্চলের ওপর উপক্রান্তীয় উচ্চচাপ বলয় অবস্থানের কারণে শুষ্ক বায়ুস্রোত উপর থেকে নীচে নেমে আসে । উল্লিখিত কারণগুলির প্রভাবে ক্রান্তীয়মণ্ডলে মহাদেশের পশ্চিমে দীর্ঘকাল বৃষ্টি না – হওয়ার কারণেই অঞ্চলগুলি মরুভূমিতে ( সাহারা , কালাহারি , সোনেরান , আটাকামা , অস্ট্রেলিয়া ) পরিণত হয়েছে ।

  1. উত্তরের থেকে দক্ষিণ গোলার্ধে আয়ন বায়ু ও পশ্চিমা বায়ুর বেগ বেশি হয় কেন ?

Ans: উত্তর গোলার্ধে সমুদ্র অপেক্ষা স্থলভাগের বিস্তার বেশি হওয়ায় উত্তর – পূর্ব আয়ন বায়ু ঘর্ষণজনিত বাধার কারণে কিছুটা ধীরে ( ১৬ কিমি / ঘণ্টা ) প্রবাহিত হয় । কিন্তু দক্ষিণ গোলার্ধে স্থলভাগের থেকে জলভাগের বিস্তার বেশি বলে দক্ষিণ – পূর্ব আয়ন বায়ু কিছুটা অধিক বেগে ( ২২ কিমি / ঘণ্টা ) প্রবাহিত হয় । দিকের সাথে সমকোণে কাজ করে , ( ii ) এর প্রভাবে বায়ুর বেগের কোনো হেরফের হয় না , ( iii ) বায়ুর বেগ যত বাড়ে , এই বলের প্রভাবে দিক্‌বিক্ষেপ তত বাড়ে । মনে রাখবে প্রবহমান ( বায়ু , সমুদ্রস্রোত ইত্যাদি ) বস্তুর ওপরই কেবল কোরিওলিস বল কাজ করে ।

  1. সাহসিক পশ্চিমা বায়ু বলতে কী বোঝ ?

Ans: উত্তর গোলার্ধে দক্ষিণপশ্চিম পশ্চিমা বায়ু প্রবাহিত অঞ্চলে মহাসাগরের তুলনায় মহাদেশের বিস্তার খুব বেশি হওয়ায় বায়ুর বেগ খুব কম । কিন্তু দক্ষিণ গোলার্ধে উত্তর – পশ্চিম পশ্চিমা D , বায়ু প্রবাহিত অঞ্চলে মহাদেশের তুলনায় মহাসাগরের বিস্তার খুব বেশি হওয়ায় পশ্চিমা বায়ু অতি প্রবল বেগে গর্জন করে প্রবাহিত হয় । তাই দক্ষিণ গোলার্ধে পশ্চিমা বায়ুকে সাহসিক পশ্চিমা বায়ু বলা হয় ।

  1. সমুদ্র বায়ু ( Sea breeze ) বলতে কী বোঝ ?

Ans: উপকূল অঞ্চলে দিনের বেলা সমুদ্র থেকে স্থলভাগের যে মৃদুমন্দ বাতাস বয় তা হল সমুদ্র বায়ু । সমুদ্র বায়ু উৎপত্তি : দিনের বেলা সূর্যের উত্তাপে প্রকৃতির নিয়মে সমুদ্র অপেক্ষা স্থলভাগ বেশি উত্তপ্ত হয় । ফলে স্থলভাগে সৃষ্ট হয় নিম্নচাপ এবং সমুদ্রে উচ্চচাপ । এইরূপ অবস্থায় চাপের সমতা ল রক্ষার জন্য বায়ু সমুদ্র থেকে স্থলভাগের দিকে বয়ে যায় । = • বৈশিষ্ট্য : ( ১ ) মোটামুটি সকাল ১০ টার পর থেকে বিকাল পর্যন্ত এই বায়ু বয় । ( ২ ) দুপুরে বায়ুচাপের ঢাল সর্বাধিক হয় বলে সমুদ্র বায়ুর বেগ দুপুরে সবচেয়ে বেশি ।

  1. স্থলবায়ু ( Land Breeze ) বলতে কী বোঝ ?

Ans: উপকূল অঞ্চলে রাতের বেলা স্থলভাগ থেকে সমুদ্রের দিকে যে মৃদুমন্দ বাতাস বয় তা হল স্থলবায়ু ।

  • উৎপত্তি ; সূর্যাস্তের পর পৃথিবীপৃষ্ঠ তাপ বিকিরণ করে শীতল হয় । প্রকৃতির নিয়মে সমুদ্র অপেক্ষা স্থলভাগ দ্রুত তাপ বিকিরণ করে । ফলে সন্ধ্যার পর এমন এক সময় আসে যখন স্থলভাগ অপেক্ষা সমুদ্র অধিক উষ্ণ হয় । এরূপ অবস্থায় স্থলভাগে বিরাজ করে উচ্চচাপ এবং সমুদ্রে নিম্নচাপ , ফলে স্থলভাগ থেকে বায়ু সমুদ্রের দিকে বয়ে যায় ।
  • বৈশিষ্ট্য : ( ১ ) সন্ধ্যার কিছু পর থেকে পরদিন সূর্যোদয়ের আগে পর্যন্ত রাত্রে এই বায়ু প্রবাহিত হয় । ( ২ ) ভোরবেলা সমুদ্র ও স্থলভাগের মধ্যে বায়ুচাপ ঢালের পার্থক্য সর্বাধিক বলে স্থলবায়ুর বেগ ভোরবেলা সবচেয়ে বেশি । ( ৩ ) স্থলভাগ থেকে প্রবাহিত এই মৃদু বাতাস শুষ্ক প্রকৃতির । 
  1. “ মৌসুমি বায়ু হল সমুদ্র বায়ু ও স্থলবায়ুর বৃহৎ সংস্করণ ‘ কারণ ব্যাখ্যা করো ।

Ans: মৌসুমি বায়ুর উৎপত্তি , গতিপ্রকৃতি ও বৈশিষ্ট্য সমুদ্র বায়ু ও স্থলবায়ুর মতোই । কিন্তু ইহার ব্যাপ্তি ও প্রবাহকাল স্থলবায়ু ও সমুদ্র বায়ু অপেক্ষা অধিক । গ্রীষ্মকালে প্রবল উষ্ণতায় স্থলভাগে যে গভীর নিম্নচাপের সৃষ্টি হয় , তার প্রভাবেই উচ্চচাপযুক্ত সমুদ্র থেকে জলীয় বাষ্পপূর্ণ বায়ু স্থলভাগে প্রবেশ করে । একেই মৌসুমি বায়ুর আগমন বা গ্রীষ্ম মৌসুমি বলে । আবার শীতকালে সূর্যের আপাত গতির কারণে সমুদ্রে উষ্ণতা  বেশি এবং স্থলভাগে উষ্ণতা কম হওয়ায় সমুদ্রে নিম্নচাপ ও স্থলভাগে উচ্চচাপ বিরাজ করে । এই সময় স্থলভাগ থেকে বায়ু সমুদ্রের দিকে বয়ে যায় । একেই মৌসুমি বায়ুর প্রত্যাগমন বা শীত মৌসুমি বলে । যেহেতু মৌসুমি বায়ুর উৎপত্তি ও গতিপ্রকৃতি সমুদ্র বায়ু ও স্থল বায়ুর মতোই তাই ট্রেওয়ার্থী , ফন্ প্রভৃতি আবহবিদগণের মতে ‘ মৌসুমি বায়ু হল স্থল বায়ু ও সমুদ্র বায়ুর বৃহৎ সংস্করণ ।

  1. ক্যাটাবেটিক ও অ্যানাবেটিক বায়ু কাকে বলে ?

Ans: রাত্রিবেলা পর্বতের উপরি অংশের বায়ু দ্রুত তাপ বিকিরণে শীতল ও ভারী হয়ে পড়ে বলে পর্বতের ঢাল বরাবর ভারী বায়ু নীচে নেমে উপত্যকায় অবস্থান করে । এটি হল পার্বত্য বায়ু । পার্বত্য বায়ু বিস্তৃর্ণ অঞ্চল ও দীর্ঘ সময় ধরে প্রবাহিত হলে তখন । তা ক্যাটাবেটিক বায়ু । বোরা , মিস্টাল প্রভৃতি হল ক্যাটাবেটিক বায়ুর উদাহরণ । দিনের বেলা সূর্যতাপে উপত্যকার নিম্নাংশ অপেক্ষা ঢালু অংশ ( mountain slope ) বেশি গরম হয় । ফলে উপত্যকায় নিম্নাংশের বায়ু পর্বতের ঢাল বরাবর উপরের দিকে ওঠে । এটি হল উপত্যকা বায়ু । একে অ্যানাৰেটিক বায়ুও বলা হয় । এই দুই বায়ু প্রবাহের কারণেই পার্বত্য অংশে উষ্ণতা র বৈপরীত্য দেখা যায় ।

  1. ঘূর্ণবাতের উৎপত্তি কেন ঘটে ?

Ans: কোনো অল্পপরিসর স্থান যদি হঠাৎ বেশিমাত্রায় উত্তপ্ত হয় তবে সেই স্থান তখন নিম্নচাপের সৃষ্টি হওয়ার ফলে চারিদিকের অপেক্ষাকৃত শীতল ও উচ্চচাপের স্থানগুলো থেকে বায়ু প্রচণ্ড বেগে ওই নিম্নচাপ কেন্দ্রের দিকে ছুটে আসে এবং ঘুরতে ঘুরতে ওই নিম্নচাপের কেন্দ্রে প্রবেশ করে । এইভাবে ঘূর্ণবাতের সৃষ্টি হয় ।

  1. ঘূর্ণবাতের বৈশিষ্ট্যগুলি লেখো ।

Ans: ঘূর্ণবাতের বৈশিষ্ট্যগুলি হল : ( i ) এই বায়ুপ্রবাহ উত্তর গোলার্ধে ঘড়ির কাঁটার বিপরীতে অর্থাৎ বামাবর্তে এবং দক্ষিণ গোলার্ধে ঘড়ির কাঁটার দিকে অর্থাৎ দক্ষিণাবর্তে ঘুরে ঘুরে কেন্দ্রের দিকে অগ্রসর হয় । ( ii ) ঘূর্ণবাত স্বল্পস্থায়ী কিন্তু প্রবল গতিবেগ সম্পন্ন । ( ii ) ঘূর্ণবাতের সঙ্গে ঝড় , বৃষ্টি এবং বজ্রপাত হয় । ( iv ) ঘূর্ণবাত দ্রুত স্থান পরিবর্তন করে । ( v ) ক্রান্তীয় ঘূর্ণবাতের ধ্বংস ক্ষমতা অতি ভয়ংকর । ( vi ) সরল ক্রান্তীয় ঘূর্ণবাতে ‘ চক্ষু ’ সৃষ্টি হয় ।

  1. নাতিশীতোয় ঘূর্ণবাতের বৈশিষ্ট্য লেখো ।

Ans: নাতিশীতোয় ঘূর্ণবাতের বৈশিষ্ট্যগুলি হল ( i ) এই ঘূর্ণবাতের কেন্দ্রে থাকে নিম্নচাপ এবং বাইরে উচ্চচাপ । ( ii ) এর কেন্দ্র ও বাইরে চাপের পার্থক্য থাকে ১০-২০ মিলিবার । ( iii ) এর আকৃতি ও বিস্তৃতি খুব বেশি হয় । ( iv ) এই ঘূর্ণবাতের স্থায়িত্বকাল দীর্ঘ ও গতিবেগ কম হয় । ( v ) এর প্রভাবে একটানা বেশ কয়েকদিন ঝিরঝিরে বৃষ্টি ও তুষারপাত হয় । ( vi ) শীতকালে এই ঘূর্ণবাত বেশি দেখা যায় ।

  1. ক্রান্তীয় ঘূর্ণবাত ( Tropical Cyclone ) বলতে কী বোঝ ?

Ans: ক্রান্তীয় ঘূর্ণবাত কর্কটক্রান্তি ও মকরকান্তি রেখার মধ্যবর্তী অঞ্চল বরাবর সৃষ্ট ঘূর্ণবাতকে ক্রান্তীয় ঘূর্ণবাত বা উপমণ্ডলীয় ঘূর্ণবাত বলে । বিশেষত ৬ ° উত্তর অক্ষাংশ থেকে ২০ ° দক্ষিণ অক্ষাংশে এই ধরনের ঘূর্ণবাত দেখা যায় । সাধারণত অতিরিক্ত উষ্ণতার জন্য সমুদ্রের উপরের বায়ু শুষ্ক , আর্দ্র ও ঊর্ধ্বমুখী হয় , ফলে সেখানে নিম্নচাপের সৃষ্টি হয় এবং চারদিক থেকে প্রবল বেগে বায়ু ঘুরতে ঘুরতে নিম্নচাপের কেন্দ্রের দিকে ছুটে আসে । এই প্রবল গতিবেগসম্পন্ন কেন্দ্রমুখী ঘূর্ণায়মান ঊর্ধ্বমুখী বায়ুপ্রবাহকে ক্রান্তীয় ঘূর্ণবাত বলে । 

বৈশিষ্ট্য : ( i ) এই ঘূর্ণবাতে সমচাপরেখার আকৃতি গোলীয় প্রকৃতির । ( ii ) ঘূর্ণবাত সবল ও দুর্বল উভয় প্রকৃতির হয় । ( iii ) সবল ঘূর্ণবাতে প্রবল ঝড়বৃষ্টি এবং দুর্বল ঘূর্ণবাতে প্রবল বৃষ্টি হয় । ( iv ) সবল ঘূর্ণবাতে ‘ ঘূর্ণবাতের চক্ষু’সৃষ্টি হয় । ( v ) স্থলভাগ ও সমুদ্র উভয় অংশে এই ঘূর্ণবাতের উৎপত্তি ঘটলেও সমুদ্রের সংখ্যা অধিক । ( vi ) গ্রীষ্মের শেষে শরৎকালে এই প্রকার ঘূর্ণবাত বেশি সংখ্যায় সৃষ্টি হয় । 

জোন রাখে : কয়েকটি ক্রান্তীয় ঘূর্ণবাত : টাইফুন : এটি জাপান – চিন সাগরে সৃষ্ট এক ধরনের প্রবল বিধ্বংসী ঘূর্ণিঝড় । ও হ্যারিকেন : এটি হল পশ্চিম ভারতীয় দ্বীপপুঞ্জের নিকটবর্তী । ক্যারিবিয়ান সাগরে উদ্ভূত বিধ্বংসী ঘূর্ণিঝড় । ও টর্নেডো : ক্রান্তীয় মণ্ডলে ভূপৃষ্ঠের স্বল্প পরিসর স্থান থেকে ঊর্ধ্বাকাশে প্রসারিত কৃষ্ণকায় ফানেল আকৃতিবিশিষ্ট মেঘ যে সর্বাপেক্ষা বিধ্বংসী ঘূর্ণবাতের জন্ম দেয় , তাই হল টর্নেডো । এটি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মধ্য ও দক্ষিণ অংশে বেশি সংখ্যায় দেখা যায় । পূর্ব ভারতে মাঝে মাঝেই টর্নেডোর আবির্ভাব ঘটে । সাইক্লোন : ভারতমহাসাগর , আরব সাগর ও বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট ক্রান্তীয় | ঘূর্ণবাতকে সাইক্লোন বলে । 

SOURCE-BHUGOLSHIKSHA.COM

মাধ্যমিক ভূগোল প্রশ্ন ও উত্তর

  বায়ুর চাপবলয় ও বায়ু প্রবাহ (বায়ুমণ্ডল – দ্বিতীয় অধ্যায়) 

পার্থক্য নিরূপণ করো | বায়ুর চাপবলয় ও বায়ু প্রবাহ  

  1. আয়ন বায়ু ও পশ্চিমা বায়ুর পার্থক্য ।
ভিত্তি  অয়ন বায়ু পশ্চিমা বায়ু
প্রবাহের নাম কর্কটীয় ও মকরীয় উচ্চচাপ বলয় দুটি থেকে নিরক্ষীয় নিম্নচাপ বলয়ের দিকে এই বায়ু প্রবাহিত হয় । কর্কটীয় ও মকরীয় উচ্চচাপ বলয় দুটি থেকে নিরক্ষীয় নিম্নচাপ বলয়ের দিকে এই বায়ু প্রবাহিত হয় ।
নামকরণ নির্দিষ্ট পথে এই বায়ু প্রবাহিত হয় বলে (আয়ন শব্দের অর্থ পথ) ইহা আয়ন বায়ু নামে পরিচিত । পশ্চিম থেকে প্রবাহিত হয় বলে ইহা পশ্চিমা বায়ু পরিচিত ।
জলবায়ুর ওপর প্রভাব এর প্রভাবে ক্রান্তীয় অঞ্চলে মহাদেশের পূর্বে প্রবল বৃষ্টি হয়, কিন্তু পশ্চিম অংশ বৃষ্টিহীন থাকে । তাই মহাদেশের পশ্চিম অংশে বড়ো বড়ো মরুভূমির সৃষ্টি হয়েছে । এই বায়ুপ্রবাহে নাতিশীতোষ্ণ অঞ্চলে মহাদেশের পশ্চিমে বৃষ্টি হয় কিন্তু পূর্ব অংশ স্বল্প বৃষ্টিপাতযুক্ত বলে নাতিশীতোষ্ণ তৃণভূমির সৃষ্টি হয়েছে ।
  1. নিয়ত বায়ু ও সামরিক বায়ুর মধ্যে পার্থক্য ।
ভিত্তি নিয়ত বায়ু  সামরিক বায়ু
বিষয় ভূপৃষ্ঠের সামন্তরালে সারাবছর একই দিকে একই গতিবেগে প্রবাহিত হয় । বছরের একটি নির্দিষ্ট ঋতুতে বা দিনের বিশেষ সময়ে প্রবাহিত বায়ু হল সাময়িক বায়ু ।
উদাহরণ আয়ন বায়ু, পশ্চিমা বায়ু, সমুদ্র বায়ু । স্থলবায়ু, সমুদ্র বায়ু, মৌসুমি বায়ু হল সাময়িক বায়ু ।
কারণ পৃথিবীর সাতটি স্থায়ী বায়ুচাপ বলয় নিয়ত বায়ু হল নিয়ত বায়ু উৎপত্তির কারণ । বিশেষ ঋতুতে স্থলভাগে নিম্নচাপ ও সমুদ্রে উচ্চচাপ কিংবা এর বিপরীত অবস্থা সাময়িক বায়ুর ।
প্রভাব সারা পৃথিবী জুড়ে জলবায়ুর ওপর নিয়ত বায়ুর প্রভাব রয়েছে । ক্রান্তীয় মণ্ডলে মহাদেশের পশ্চিমে বেশি বৃষ্টি সবায়ুব্রবাহের কারণেই ঘটে । উর্ধাকাশের বায়ু সঞ্চলনে এই প্রভাব অতীব গুরুত্বপূর্ণ । উপকূল, সেই সঙ্গে বেশ কিছু নির্দিষ্ট অঞ্চলের জলবায়ুর ওপর এই বায়ুর প্রভাব রয়েছে । ঊর্ধাকাশের বায়ু সঞ্চালনের এর বায়ুর প্রভাব অতটা নেই ।

SOURCE-BHUGOLSHIKSHA.COM

মাধ্যমিক ভূগোল প্রশ্ন ও উত্তর

  বায়ুর চাপবলয় ও বায়ু প্রবাহ (বায়ুমণ্ডল – দ্বিতীয় অধ্যায়) 

রচনা ধর্মী প্রশ্নোত্তর  

1. বায়ুচাপের তারতম্যের কারণগুলি ব্যাখ্যা করো । 

Ans: বায়ুমণ্ডলের বিভিন্ন অংশে বায়ুর চাপ বিভিন্ন রকম হয় । বায়ুচাপের তারতম্যের এই কারণগুলি হল— 

 ( i ) উষ্ণতা  : বায়ুচাপের সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ নিয়ন্ত্রক হল উষ্ণতা  । বায়ুর উষ্ণতার সাথে বায়ুচাপের সম্পর্ক বিপরীতমুখী । 

উষ্ণতা বাড়লে বায়ুর ঘনত্ব কমে , প্রসারিত হয় এবং হালকা হয়ে উপরে ওঠে ফলে বায়ুচাপ কমে । আবার উষ্ণতা কমলে বায়ুর ঘনত্ব বাড়ে , সংকুচিত হয় এবং ভারী হয়ে নীচে অবস্থান করে বলে চাপ বাড়ে । 

( ii ) উচ্চতা : উচ্চতা বৃদ্ধিতে বায়ুর ওজন ও ঘনত্ব কমতে থাকে বলে বায়ুর চাপও কমে । মাধ্যাকর্ষণ শক্তির কারণে বায়ুকণাগুলির অধিকাংশ ভূপৃষ্ঠসংলগ্ন অঞ্চলে অবস্থান করে বলে বায়ুর ঘনত্ব বেশি এবং ওই বায়ু চাপ বেশি দেয় । ভূপৃষ্ঠে গড় ১০০০ মিটার উচ্চতা বৃদ্ধিতে ১২.৬ মিলিবার বায়ুচাপ কমে । তাই পর্বতের উপরে বায়ুচাপ কম , সমভূমিতে বেশি । 

( iii ) জলীয় বাষ্প : জলীয় বাষ্পপূর্ণ বায়ু সাধারণ বায়ুর থেকে হালকা এবং ঘনত্ব কম বলে প্রসারিত হয়ে ঊর্ধ্বমুখী হয় । ফলে বায়ুর চাপ কমে । তাই যে বায়ুতে জলীয় বাষ্প যত বেশি , সেই বায়ুর চাপও তত কম । শুষ্ক বায়ুর চাপ বেশি । 

( iv ) পৃথিবীর আবর্তন : পৃথিবীর আবর্তনের প্রভাবে যে কেন্দ্রবিমুখ শক্তির ( Centrifugal force ) সৃষ্টি হয় তার ফলে বায়ু বিক্ষিপ্ত হয় । বায়ু বিক্ষিপ্ত হলে বায়ুর ঘনত্ব কমে এবং সেই বায়ু চাপ কম দেয় । 

( v ) স্থলভাগ ও জলভাগের বণ্টন : প্রকৃতির নিয়মে জলভাগ অপেক্ষা স্থলভাগ যেমন তাড়াতাড়ি উত্তপ্ত হয় তেমনি তাড়াতাড়ি ঠান্ডাও হয় । উপকূল অঞ্চলে তাই দিনের বেলা স্থলভাগে বায়ুরচাপ কম এবং জলভাগে বায়ুচাপ বেশি হয় । রাত্রে ঠিক বিপরীত অবস্থা দেখা দেয় ।

2. পৃথিবীর প্রধান বায়ুচাপ বলয়গুলির অবস্থান ও উৎপত্তির কারণ লেখো ?

Ans: পৃথিবীতে মোট ৭ টি স্থায়ী বায়ুচাপ বলয় সৃষ্টি হয়েছে , এর মধ্যে ৩ টি নিম্নচাপ বলয় ও ৪ টি উচ্চচাপ বলয় ।

 ( i ) নিরক্ষীয় নিম্নচাপ বলয় : নিরক্ষরেখার উভয় পাশে গড়ে ৫ ° উত্তর –৫ ° দক্ষিণ অক্ষরেখার মধ্যে অবস্থিত নিম্নচাপ বলয়টি নিরক্ষীয় নিম্নচাপ বলয় নামে পরিচিত । এটি নিরক্ষীয় শান্তবলয় বা ডোলড্রামস নামে পরিচিত । 

কারণ : ( i ) এখানে সারাবছর লম্ব সূর্যরশ্মির কারণে উষ্ণতা  খুব বেশি , ( ii ) বায়ুতে আর্দ্রতা সারাবছরে খুব বেশি এবং ( iii ) আবর্তনবেগ বেশি বলে উষ্ণ আর্দ্র ঊর্ধ্বগামী বায়ু বিক্ষিপ্ত হয় । এই তিনটি কারণে এখানে নিম্নচাপ বলয় সৃষ্টি হয়েছে । ( ii ) কর্কটীয় ও মকরীয় উচ্চচাপ বলয় বা উপক্রান্তীয় উচ্চচাপ বলয় : উভয় গোলার্ধে গড়ে ২৫ ° –৩৫ ° অক্ষরেখার মধ্যে যে – দুটি চাপবলয় রয়েছে , তা হল উপক্রান্তীয় উচ্চচাপ বলয় । এটি অশা অক্ষাংশ নামে পরিচিত । 

কারণ : ( i ) নিরক্ষীয় অঞ্চলের ঊর্ধ্বগামী বায়ু আবর্তনের প্রভাবে শীতল ও ভারী হয়ে এখানে নেমে আসে । ( ii ) মেরুবৃত্ত প্রদেশের শীতল ও ভারী বায়ু , কোরিওলিস বলের প্রভাবে এখানে পৌঁছোয় । এই দুটি কারণে এখানে উচ্চচাপ বলয় সৃষ্টি হয়েছে । ( iii ) সুমেরু ও কুমেরুবৃত্ত প্রদেশীয় নিম্নচাপ বলয় : উত্তর গোলার্ধের ৬০০–৭০ ° অক্ষরেখার মধ্যে এই দুটি নিম্নচাপ বলয় অবস্থিত । 

কারণ : ( i ) মেরু অঞ্চল থেকে আগত শীতল বায়ুর সঙ্গে ক্রান্তীয় মণ্ডল থেকে আগত উষ্ণ বায়ুর সংঘর্ষে বায়ু ঊর্ধ্বগামী হয় । 

কারণ : ( ii ) অধিক কোরিওলিস বলের প্রভাবে বায়ুর গতিবিক্ষেপ ঘটে এবং কারণ : ( iii ) উষ্ণ সমুদ্রস্রোত এই অঞ্চলের উষ্ণতা  বাড়ায় — এই তিনটি কারণে এখানে নিম্নচাপ বলয় – এর সৃষ্টি হয়েছে । ( iv ) মেরুদেশীয় উচ্চচাপ বলয় : উভয় গোলার্ধে ৮০ ° মেরু পর্যন্ত চাপ বলয় দুটি অবস্থিত । কারণ : ( i ) প্রায় সারাবছর উষ্ণতা  হিমাঙ্কের নীচে থাকে বলে বায়ু সর্বদা অতি ঘনত্বযুক্ত শীতল ও ভারী । ( ii ) কোরিওলিস বল বেশি হলেও বায়ু খুবই শীতল বলে বিক্ষিপ্ত হতে পারে না ।

3. পৃথিবীর প্রধান বায়ুচাপ বলয়গুলির নাম লিখে প্রধান একপ্রকার বায়ুচাপ বলয়ের অবস্থান , উৎপত্তির কারণ ও বৈশিষ্ট্য উল্লেখ করো ।

Ans: পৃথিবীতে সৃষ্টি হয়েছে মোট ৭ টি স্থায়ী বায়ুচাপ বলয় , যার মধ্যে ৩ টি নিম্নচাপ বলয় ও ৪ টি উচ্চচাপ বলয় । 

( i ) নিরক্ষীয় নিম্নচাপ বলয় : ২ ও ৩ কর্কটীয় ও মকরীয় উচ্চচাপ বলয় । ৪ ও ৫ সুমেরুবৃত্ত ও কুমেরুবৃত্ত প্রদেশীয় নিম্নচাপ বলয় এবং ৬ ও ৭ সুমেরু ও কুমেরু উচ্চচাপ বলয় । অবস্থান : নিরক্ষরেখার উভয় পাশে গড়ে ৫ ° উত্তর –৫০ দক্ষিণ অক্ষরেখার মধ্যে এই চাপ বলয়টি অবস্থিত । 

উৎপত্তির কারণ : ( i ) প্রায় সারাবছর লম্ব সূর্যরশ্মির কারণে এখানে সারাবছর উষ্ণতা  খুব বেশি । ( ii ) এই অঞ্চলে স্থলভাগের তুলনায় সমুদ্রের বিস্তার বেশি এবং উষ্ণতা  অধিক বলে বাতাসে আর্দ্রতাও খুব বেশি । ( iii ) পৃথিবীর আবর্তন বেগ এখানে খুব বেশি বলে হালকা উন্ন – আর্দ্র ঊর্ধ্বগামী বায়ু বিক্ষিপ্ত হয় । এই তিনটি কারণেই নিরক্ষীয় অঞ্চলে নিম্নচাপ বলয়ের উৎপত্তি ঘটেছে । 

জলবায়ুগত বৈশিষ্ট্য : ( i ) এই অঞ্চলে বায়ু সর্বদা ঊর্ধ্বগামী ( বায়ুস্রোত ) । ভূপৃষ্ঠের সমান্তরালে বায়ুপ্রবাহ হয় না বলেই এই অঞ্চল সারাবছর শান্ত থাকে । তাই অঞ্চলটি নিরক্ষীয় শান্তবলয় বা ডোলড্রাম নামে পরিচিত । ( ii ) এই অঞ্চলটি উভয় গোলার্ধ থেকে আয়ন বায়ুদ্বয়কে পৃথক করে । তাই এই অঞ্চলটি ITCZ ( Inter Tropical Convergence Zone ) নামে পরিচিত ।

4. বায়ুপ্রবাহের কারণগুলি কী কী ?

Ans: বায়ুপ্রবাহের কারণগুলি হল : ( i ) বায়ুচাপের তারতম্য বা বায়ুচাপের ঢালের শক্তি বায়ুচাপের তারতম্যই বায়ুপ্রবাহের মূল কারণ । বায়ু সর্বদা উচ্চচাপ থেকে নিম্নচাপের দিকে বয়ে যায় । বায়ুর গতিবেগ নির্ধারিত হয় বায়ুচাপের ঢালের শক্তির ওপর । বায়ুচাপের ঢাল যত বাড়ে বায়ুর গতিবেগ তত বাড়ে । 

( ii ) পৃথিবীর আবর্তন ও কোরিওলিস বল : পৃথিবীর আবর্তনে সৃষ্ট বল হল কোরিওলিস বল । এই বলের প্রভাব নিরক্ষরেখায় শূন্য এবং মেরুতে সর্বাধিক । এই বলের প্রভাবে বায়ু উত্তর গোলার্ধে ডানদিকে এবং দক্ষিণ গোলার্ধে বাম দিকে বেঁকে প্রবাহিত হয় , যা ফেরেলের সূত্র ( বিজ্ঞানী উইলিয়াম ফেরেল – এর নামানুসারে ১৮৫৫ ) নামে পরিচিত । 

( iii ) বাইস ব্যালট সূত্র : ১৮৫৭ খ্রিস্টাব্দে ডাচ আবহবিদ বাইস ব্যালট বায়ুচাপের তারতম্য ও বায়ুপ্রবাহের মধ্যে একটি সম্পর্ক । নির্ধারণ করেন । তাঁর মতে উত্তর গোলার্ধে বায়ুপ্রবাহের দিকে পিছন করে দাঁড়ালে ডানদিকে উচ্চচাপ এবং বামদিকে নিম্নচাপ থাকে । দক্ষিণ গোলার্ধে এর ঠিক বিপরীত অবস্থা হয় । এটি হল বাইস ব্যালট সূত্র । 

( iv ) ঘর্ষণের প্রভাব : ভূপৃষ্ঠের সাথে বায়ুর সংঘর্ষে বায়ু ধীর গতিসম্পন্ন হয় । উচ্চতা যত বাড়ে বাধা তত কমে বলে বায়ুর বেগ বাড়ে । সংঘর্ষজনিত কারণেই স্থলভাগ অপেক্ষা সমুদ্রে বায়ুর বেগ বেশি ।

5. বিভিন্ন প্রকার নিয়ত বায়ুর গতিপ্রকৃতির ব্যাখ্যা দাও ।

Ans: পৃথিবীতে ৭ টি স্থায়ী বায়ুচাপ বলয়ের ওপর ভিত্তি করে তিনপ্রকার নিয়ত বায়ু প্রবাহিত হয়— ( ক ) আয়ন বায়ু , ( খ ) পশ্চিমা বায়ু , ( গ ) মেরু বায়ু । 

( ক ) আয়ন বায়ু : কর্কটীয় ও মকরীয় উচ্চচাপ বলয়দ্বয় থেকে নিরক্ষীয় নিম্নচাপ বলয়ের দিকে উভয় গোলার্ধে যে বায়ু প্রবাহিত হয় তা হল আয়ন বায়ু । ফেরেল – এর সূত্রানুসারে উত্তর গোলার্ধে ডান দিকে এবং দক্ষিণ গোলার্ধে বাম দিকে বেঁকে যথাক্রমে উত্তর – পূর্ব আয়ন বায়ু ও দক্ষিণ – পূর্ব আয়ন বায়ু রূপে বয়ে যায় ।

 গতিবেগ : উত্তর গোলার্ধে এই বায়ুর বেগ ১৬ কিমি / ঘণ্টা এবং দক্ষিণ গোলার্ধে ২২ কিমি / ঘণ্টা । 

জলবায়ুর ওপর প্রভাব : ( i ) এই বায়ুর প্রভাবে ক্রান্তীয় মণ্ডলে মহাদেশের পূর্বে প্রবল বৃষ্টি হয় এবং পশ্চিম অংশ বৃষ্টিহীন থাকে বলে মরুভূমির সৃষ্টি হয়েছে । ( ii ) নিরক্ষীয় অঞ্চলে এই বায়ুদ্বয় মিলিত ও ঊর্ধ্বমুখী হয়ে প্রবল বৃষ্টি ঘটায় । 

( খ ) পশ্চিমা বায়ু : কর্কটীয় ও মকরীয় উচ্চচাপ বলয়দ্বয় থেকে মেরুবৃত্ত প্রদেশীয় উচ্চচাপ বলয়দ্বয়ের দিকে উভয় গোলার্ধে যে বায়ু বয়ে যায় তা হল পশ্চিমা বায়ু । ফেরেল – এর সূত্রানুসারে এই বায়ু বেঁকে উত্তর গোলার্ধে দক্ষিণ – পশ্চিম । পশ্চিমা বায়ু এবং দক্ষিণ গোলার্ধে উত্তর – পশ্চিম পশ্চিমা বায়ু রূে প্রবাহিত হয় । 

গতিবেগ : উত্তর গোলার্ধে এই বায়ু ধীরে এবং দক্ষিণ গোলাসে প্রবল বেগে বয় । তাই দক্ষিণ গোলার্ধে এই বায়ুকে সাহসী পশ্চিম বায়ু বলা হয় । জলবায়ুর ওপর প্রভাব : ( i ) এই বায়ুপ্রবাহে উপক্রান্তীয় মণ্ডল মহাদেশের পশ্চিমে বৃষ্টি ও তুষারপাত ঘটে । ( ii ) ভূমধ্যসাগরীয় জলবায়ু অঞ্চলে শীতকালে এই বায়ু প্রবেশ করে বৃষ্টিপাত ঘটায় 

( গ ) মেরু বায়ু দুই মেরুদেশীয় উচ্চচাপ বলয়ঙ্গয় থেকে মেরুবৃত্ত প্রদেশীয় নিম্নচাপ বলয়দ্বয়ের দিকে প্রবাহিত বায়ু হল মের বায়ু । এই বায়ু ফেরেল – এর সূত্রানুসারে উত্তর গোলার্ধে উত্তর পূর্ব এবং দক্ষিণ গোলার্ধে দক্ষিণ – পূর্ব মেরু বায়ুরূপে প্রবাহিত হয় । গতিবেগ : উত্তর গোলার্ধের তুলনায় দক্ষিণ গোলার্ধে এই বায়ুর বেগ বেশি । 

জলবায়ুর ওপর প্রভাব : ( i ) মেরু থেকে আগত অত্যন্ত শীত এই বায়ুর প্রভাবে শীতকালে কানাডা , সাইবেরিয়ায় শৈত্যপ্রবাহের কবলে পড়ে । ( ii ) দক্ষিণ গোলার্ধে এই বায়ুর সাথে উন্ন – আর্দ্র সমুদ্র বায়ুর সংঘর্ষে ঘূর্ণবাতের উৎপত্তি ঘটে ।

6. নিয়ত বায়ুর শ্রেণিবিভাগ করে প্রধান একপ্রকার নিয়ত বায়ুপ্রবাহের , গতিবেগ ও জলবায়ুর ওপর এর প্রভাব ব্যাখ্যা করো ।

Ans: স্থায়ী ৭ টি বায়ুচাপ – এর ওপর ভিত্তি করে ভূপৃষ্ঠের সমান্তরালে নিয়মিতভাবে সারাবছরে প্রবাহিত বায়ু হল নিয়ন্ত বায়ু । 

এটি তিনপ্রকার- ( i ) আয়ন বায়ু ( ii ) পশ্চিমা বায়ু ( iii ) মেরু বায়ু । নিম্নে আয়ন বায়ু সম্পর্কে আলোচনা করা হল । আয়ন বায়ুর প্রভাব ( i ) আয়ন বায়ু : কর্কটীয় ও মকরীয় উচ্চচাপ বলয়দ্বয় থেকে নিরক্ষীয় নিম্নচাপ বলয়ের দিকে নির্দিষ্ট পথে ( আয়ন শব্দের অর্থ ‘ পথ ‘ ) প্রবাহিত বায়ু হল আয়ন বায়ু । পালতোলা জাহাজের যুগে এই বায়ুর পথ ধরে বাণিজ্য হত বলে এর অপর নাম ‘ বাণিজ্য বায়ু ‘ । উভয় গোলার্ধে এই বায়ু ৫ ° – ৩৫ ° অক্ষরেখার মধ্যে বাহিত হয় ।

 প্রবাহের দিক : ফেরেল – এর সূত্রানুসারে এই বায়ু উত্তর গোলার্ধে ডানদিকে এবং দক্ষিণ গোলার্ধে বামদিকে বেঁকে যথাক্রমে উত্তর – পূর্ব আয়ন বায়ু ও দক্ষিণ – পূর্ব আয়ন বায়ু রূপে প্রবাহিত হয় । 

গতিবেগ : উত্তর গোলার্ধে এই বায়ুর গড় বেগ ১৬ কিমি / ঘণ্টা কিন্তু দক্ষিণ গোলার্ধে ২২ কিমি / ঘণ্টা । 

জলবায়ুর ওপর প্রভাব : ( i ) এই বায়ুপ্রবাহের কারণেই ক্রান্তীয় মণ্ডলে মহাদেশের পূর্বদিকে প্রবল বৃষ্টি হয় ।

( ii ) পশ্চিম অংশে অনাবৃষ্টি থাকে বলে ৫ টি বড়ো বড়ো মরুভূমি ( সাহারা , কালাহারি , সোনেরান , আটাকামা , অস্ট্রেলিয়া ) সৃষ্টি হয়েছে ।

( iii ) নিরক্ষীয় অঞ্চল হল 

7. আনুচাপ বলয়ের সঙ্গে নিয়ত বায়ুর সম্পর্ক ব্যাখ্যা করো ।

Ans: ভূপৃষ্ঠে স্থায়ী বায়ুচাপ বলয়গুলির ওপর নির্ভর করে সারাবছর ধরে যে বায়ু ভূপৃষ্ঠের সমান্তরালে প্রবাহিত হয় , তাকেই নিয়ত বায়ু বলে । সাতটি স্থায়ী বায়ুচাপ বলয়ের ওপর ভিত্তি করে উভয় গোলার্ধে তিনপ্রকার নিয়ত বায়ু প্রবাহিত হয়— 

( i ) আয়ন বায়ু : কর্কটীয় ও মকরীয় উচ্চচাপ বলয়দ্বয় থেকে নিরক্ষীয় নিম্নচাপ বলয়ের দিকে যে দুটি বায়ু সারাবছর ভূপৃষ্ঠের সমান্তরালে প্রবাহিত হয় , তাকে আয়ন বায়ু বলে । এই বায়ু ‘ বাণিজ্য বায়ু ’ নামেও পরিচিত । ফেরেল – এর সূত্রানুসারে এই বায়ু উত্তর গোলার্ধে ডান দিকে ও দক্ষিণ গোলার্ধে বাম দিকে বেঁকে গিয়ে যথাক্রমে উত্তর পূর্ব ও দক্ষিণ পূর্ব আয়ন বায়ু নামে প্রবাহিত হয় । 

( ii ) পশ্চিমা বায়ু : কর্কটীয় ও মকরীয় উচ্চচাপ বলয়দ্বয় থেকে দুই মেরুবৃত্ত প্রদেশীয় নিম্নচাপ বলয়ের দিকে যে বায়ু সারাবছর প্রবাহিত হয় , তাকেই পশ্চিমা বায়ু বলে । ফেরেল সূত্রানুসারে এই বায়ুদ্বয় উত্তর গোলার্ধে ডানদিকে ও দক্ষিণ গোলার্ধে বাম দিকে বেঁকে গিয়ে যথাক্রমে দক্ষিণ – পশ্চিম পশ্চিমা বায়ু এবং উত্তর – পশ্চিম পশ্চিমা বায়ু রূপে প্রবাহিত হয় । 

( iii ) মেরু বায়ু : সুমেরু ও কুমেরু দেশীয় উচ্চচাপ বলয়দ্বয় । থেকে দুই মেরুবৃত্ত প্রদেশীয় নিম্নচাপ বলয়দ্বয়ের দিকে যে দুটি বায়ু সারাবছর প্রবাহিত হয় তাকেই মেরু বায়ু বলে । ফেরেল – এর সূত্রানুসারে এই বায়ুদ্বয় বেঁকে গিয়ে উত্তর গোলার্ধে উত্তর – পূর্ব মেরু বায়ু এবং দক্ষিণ গোলার্ধে দক্ষিণ – পূর্ব মেরু বায়ু নামে প্রবাহিত হয় ।

SOURCE-BHUGOLSHIKSHA.COM

 

©kamaleshforeducation.in(2023)

 

 

 

error: Content is protected !!