কারণ : সংস্কৃত – ইন্ প্রত্যয়ান্ত শব্দ কর্তৃকারকের একবচনে দীর্ঘ – ই কারন্ত হয় এবং বাংলায় সেইরূপেই ব্যবহৃত হয়।
● কালীদাস—
সঠিক বানান : বানানটি ঠিক আছে।
● মন্ত্রিপনা—
সঠিক বানান : মন্ত্ৰীপনা
কারণ : সংস্কৃত – ইন্ প্রত্যয়ান্ত শব্দের সঙ্গে যদি তৎসম প্রত্যয় যুক্ত হয় তাহলে তা যুক্ত হবে বাংলা রূপের সঙ্গে।
● বয়োসন্ধি—
সঠিক বানান : বয়ঃসন্ধি
কারণ : বিসর্গ সন্ধির ক্ষেত্রে প্রথম শব্দের শেষের বিসর্গটি সন্ধিবদ্ধ [বয়ঃ+সন্ধি=বয়ঃসন্ধি ] হলেও যদি অবিকৃত থাকে, তবে বাংলা বানানে সেই বিসর্গটি থাকবে।
● অংক—
সঠিক বানান : অঙ্ক
কারণ : যেখানে শব্দে ‘ম্’ সন্ধির সৃষ্টি হয়নি সেখানে ‘ং’ বদলে ‘ ভ্’ ব্যবহার করা যুক্তি সঙ্গত।
● প্ৰিয়ম্বদা—
সঠিক বানান : প্রিয়ংবদা
কারণ: এখানে ‘স্’ এর পরে অন্তঃস্থ ‘ব’ রয়েছে তাই বাংলায় সঠিক বানানে (ং) যুক্ত হয়েছে।
● বৰ্জ্জন—
সঠিক বানান : বৰ্জন
কারণ: রেফ্ -এর পরবর্তী ব্যঞ্জনের দ্বিত্ব ঘটবে না।
● মহার্ঘভাতা—
সঠিক বানান : মহার্ঘ্যভাতা।
কারণ: এখানে রেফ – এর পরবর্তী ব্যঞ্জনের দ্বিত্ব ঘটেনি, তাই ‘ য ‘ ফলা যুক্ত হবে।
● মানিক্য—
সঠিক বানান : মাণিক্য
কারণ: সকল তৎসম শব্দের ক্ষেত্রে ‘ণ ‘ যুক্ত হয়। এখানে দেওয়া শব্দটি তৎসম শব্দ, তাই সঠিক বানানে ‘ন’-এর জায়গায় ‘ণ’ হবে।
● প্রার্থনা—
সঠিক বানান : বানানটি এখানে সঠিক আছে।
কারণ : ঋ, র, ষ – এর পর স্বরবর্ণ, ক বৰ্গ, প বর্গ, য, ব, হ এবং ং ছাড়া অন্য বর্ণের ব্যবধানে থাকলে ‘ন’ হয়।
● দণ্ড—
সঠিক বানান : বানানটি সঠিক আছে।
কারণ : ট, ড, ঢ -এর আগে ‘ন’ থাকলে সেটা ‘ণ’ হয়ে যায়।
● মধ্যাহ্ণ—
সঠিক বানান : বানানটি শুদ্ধ
কারণ : পূর্ব ও অপর শব্দের পরবর্তী ‘অহ্ন ‘ শব্দের ‘ন’ হয়ে যায় ‘ণ’।
● নারায়ন—
সঠিক বানান : নারায়ণ।
কারণ : পর, পার, উত্তর, চন্দ্রা, ও নার শব্দের পরবর্তী আয়ন শব্দের ‘ন’ হয়ে যায় ‘ণ’।
● ধূলিষাৎ—
সঠিক বানান : ধূলিসাৎ।
কারণ: অ /আ ভিন্ন স্বরবর্ণ এবং ক্, র্ -এর পরবর্তী বিভক্তি ও প্রত্যয়ের ‘ স ‘ হয় ‘ষ’। কিন্তু ‘সাৎ’ প্রত্যয়ের স > ষ হয় না।
● অভিশেক—
সঠিক বানান : অভিষেক।
কারণ: ‘অভি ‘ উপসর্গের পর ‘ষ’ হয়।
● ষোরশ—
সঠিক বানান : ষোড়শ।
কারণ : ষট্ + দশ সন্ধি করলে ষোড়শ হয়। তাই ষোড়শ বানানটি সঠিক হবে।
● পুরষ্কার—
সঠিক বানান : পুরস্কার।
কারণ: অ, আ -এর পরে বিসর্গ (ঃ) থাকলে (পুরঃ + কার = পুরস্কার ) এবং তার সঙ্গে ক্, খ্, প্, ফ্ থাকলে বিসর্গ (ঃ) ‘স’-এ রূপান্তরিত হয়।
● জাম্মানী—
সঠিক বানান : জার্মানী।
কারণ : রেফ -এর পর ব্যঞ্জন বর্ণের দ্বিত্ব হয় না।
● ধূলো—
সঠিক বানান : ধুলো।
কারণ : তৎসম শব্দে ‘উ’ কার ব্যবহার করা যায়।
● পাখী—
সঠিক বানান : পাখি।
কারণ : প্রায় সকল তৎসম শব্দে দীর্ঘ – ই – এর পরিবর্তে হ্রস্ব -ই ব্যবহার হয় ।
২। নীচের বাক্যগুলিতে কোন শব্দের বানান কেন অশুদ্ধ, নির্ণয় করো :
২.১ তুমি কি দেশের এই দূর্দিনে চুপ করে বসে থাকবে ?
অশুদ্ধ বানান : দূর্দিনে
কারণ : ‘দূর্দিনে’ পদটির সন্ধি বিচ্ছেদ করলে হয় দুঃ + দিনে। তাই সঠিক বানান হবে দুর্দিনে।
সঠিক বানান : দুর্দিনে।
২.২ আষাড়ের কোন ভেজা পথে এল আমার দুর্দান্ত শ্রাবন।
অশুদ্ধ বানান : আষাড় ও শ্রাবন
কারণ : ‘আষাঢ়’ শব্দটি একটি সংস্কৃত শব্দ আর এটি বাংলায় তৎসম শব্দরূপে আছে। তাই সংস্কৃতে থাকা বানানটিই এখানে গ্রহণযোগ্য হবে। তাই শুদ্ধ বানানটি হবে আষাঢ়। আর ঋ, র, ষ – এর পর স্বরবর্ণ আছে এবং ন – এর আগে প বর্গের (প, ফ, ব, ভ, ম ) ধ্বনি আছে তাই ‘ন ‘- এর বদলে ‘ণ’ হবে। এখানে সঠিক বানানটি হবে শ্রাবণ।
সঠিক বানান : আষাঢ় ও শ্রাবণ।
২.৩ অপরাহ্নে পণ্ডিতমশাই সংস্কৃতের ক্লাশ নেবেন।
অশুদ্ধ বানান: অপরাহ্ন ও ক্লাশ
কারণ : পূর্ব ও অপর শব্দের পরবর্তী ‘ অহ্ন’ শব্দের ‘ন’>’ণ’ হয়ে যায়। কোনো ইংরেজি শব্দ থাকলে তার ‘s’-এর ক্ষেত্রে বাংলায় ‘স’ লেখা হয়। এখানে ইংরাজিতে বানানটি class তাই বাংলা ‘ক্লাস বানানটি সঠিক।
সঠিক বানান : অপরাহ্ণ ও ক্লাস।
২.৪ শিশু শশি নাহি আর, অন্ধকার নিরাকার।
অশুদ্ধ বানান : শশি
কারণ : সংস্কৃত – ইন প্রত্যয়ান্ত শব্দ –
কর্তৃকারকের একবচনে ‘দীর্ঘ -ই ‘ যুক্ত হয়। তাই সঠিক বানান হল শশী।
সঠিক বানান : শশী।
২.৫ কি কাণ্ড! অবনী বস্তুতঃ কোনো সহযোগীতাই করেনি।
অশুদ্ধ বানান : কি ও সহযোগীতা
কারণ : এখানে কি প্রশ্নের উত্তর হ্যাঁ / না দিয়ে শেষ হয়নি, তাই সঠিক বানান ‘ কী ‘ হবে।
সংস্কৃত ইন্ প্রত্যয়ান্ত শব্দের একবচনে দীর্ঘ – ই যুক্ত হয় (যথা : প্রতিযোগিন্> প্ৰতিযোগী) তবে এই শব্দগুলি যদি সমাসবদ্ধ হয় বা প্রত্যয় যুক্ত হয় তখন দীর্ঘ -ই -এর বদলে হ্রস্ব ই কার হয়। তাই সঠিক বানান প্রতিযোগিতা।
সঠিক বানান : কী ও প্রতিযোগিতা।
৩। নীচের অনুচ্ছেদগুলি থেকে অশুদ্ধ বানানের শব্দগুলি চিহ্নিত ও সংশোধন করে লেখো:
©kamaleshforeducation.in(2023)