================================================================================================================
***সুন্দর গল্পে উপদেশ***
================================================================================================================
,♨️আজকের অনুপ্রেরণামূলক গল্প♨️***
!! পুরাতন শকুনের উপদেশ!!*
~~~~~ ~~~~
একবার একদল শকুন উড়তে উড়তে একটা দ্বীপে পৌঁছল। দ্বীপটি সমুদ্রের মাঝখানে অবস্থিত ছিল। সেখানে প্রচুর মাছ, ব্যাঙ এবং সামুদ্রিক প্রাণী ছিল। তাই সেখানে শকুনদের খাবার ও পানীয়ের কোনো অভাব ছিল না। সবচেয়ে ভালো ব্যাপার ছিল শকুন শিকার করার মতো কোনো বন্য প্রাণী ছিল না। সেখানে শকুনরা খুব খুশি ছিল। এমন আরামদায়ক জীবন সে আগে কখনো দেখেনি।
ওই পালের বেশিরভাগ শকুন ছিল তরুণ। তারা ভাবতে শুরু করে যে, এখন তাদের সারাজীবন এই দ্বীপেই থাকতে হবে। এখান থেকে কোথাও যাবেন না, কারণ এমন আরামদায়ক জীবন আর কোথাও পাবেন না। তবে তাদের মধ্যে একটি বৃদ্ধ শকুনও ছিল। ছোট শকুন দেখলেই চিন্তিত হয়ে পড়েন। তিনি ভাবলেন এখানকার আরামদায়ক জীবন এই তরুণ শকুনের ওপর কী প্রভাব ফেলবে? তারা কি বাস্তব জীবনের মানে বুঝতে পারবে? এখানে তাদের জন্য কোনো চ্যালেঞ্জ নেই। এমতাবস্থায়, যখনই তাদের পথে সমস্যা আসে, তখন তারা কীভাবে তা মোকাবেলা করবে?
অনেক ভাবনার পর একদিন বুড়ো শকুন সব শকুনের সভা ডাকলো। উদ্বেগ প্রকাশ করে তিনি সকলের উদ্দেশে বলেন, “অনেক দিন হয়ে গেল আমরা এই দ্বীপে বসবাস করছি। আমার মতে, এখন আমাদের সেই বনে ফিরে যাওয়া উচিত যেখান থেকে আমরা এসেছি। এখানে আমরা চ্যালেঞ্জ ছাড়াই জীবন যাপন করছি। এমন পরিস্থিতিতে আমরা কখনই সমস্যার জন্য প্রস্তুত হব না।”
তার কথা শুনেও যুবক শকুন তাকে উপেক্ষা করে। বয়স বাড়ার কারণে বুড়ো শকুনটি খোলসা হয়ে গেছে বলে তাদের মনে হলো। সেজন্যই তিনি এমন ফালতু কথা বলছেন। তিনি দ্বীপের আরামদায়ক জীবন ত্যাগ করতে অস্বীকার করেন।
বুড়ো শকুন তাদের বোঝানোর চেষ্টা করলো, “তোমরা সবাই সেদিকে মনোযোগ দিচ্ছ না যে, আরামে অভ্যস্ত হয়ে গেছো, উড়তেও ভুলে গেছো। এমন পরিস্থিতিতে আপনি কী করবেন? আমার কথা শোন, আমার সাথে আয়।” কিন্তু বুড়ো শকুনের কথা কেউ শোনেনি। বৃদ্ধ শকুন একাই সেখান থেকে চলে গেল। কয়েক মাস কেটে গেল। একদিন বুড়ো শকুন দ্বীপে যাওয়া শকুনদের খোঁজ খবর নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিল এবং উড়তে উড়তে সেই দ্বীপে পৌঁছে গেল।
দ্বীপে পৌঁছে দেখলেন সেখানকার দৃশ্য বদলে গেছে। যেদিকে তাকাই, সেখানে শকুনের মৃতদেহ পড়ে আছে। অনেক শকুন রক্তাক্ত ও আহত অবস্থায় পড়ে ছিল। বিস্মিত বৃদ্ধ শকুন আহত শকুনকে জিজ্ঞেস করল, “কি হয়েছে? আপনারা এই অবস্থায় কিভাবে এলেন?”
আহত শকুন বলল, “তুমি চলে যাওয়ার পর এই দ্বীপে আমরা খুব সুখের জীবন যাপন করছিলাম। কিন্তু একদিন এখানে একটা জাহাজ এল। সেই জাহাজ থেকে এখানে চিতাবাঘ ছেড়ে দেওয়া হয়েছিল। শুরুতে ওই চিতাগুলো আমাদের কিছুই করেনি। কিন্তু কিছুদিন পর তারা বুঝতে পারল আমরা উড়তে ভুলে গেছি। আমাদের নখ এবং নখ এতটাই দুর্বল হয়ে পড়েছে যে আমরা কাউকে আক্রমণ করতে পারি না বা আত্মরক্ষা করতে পারি না, তাই তারা একে একে আমাদের মারতে শুরু করে। তাদের কারণেই আমাদের এই অবস্থা। সম্ভবত আমরা আপনার অবাধ্যতার জন্য পুরস্কৃত হয়েছি।“
*শিক্ষা:-*