সুপ্রিম কোর্টের অর্ডারে 2016 সালের টিচিং নন /টিচিং স্টাফদের চাকরি বাতিলের পর মধ্যশিক্ষা পর্ষদ সুপ্রীম কোর্টের কাছে আবেদন করল যাতে সুপ্রিম কোর্ট উক্ত জাজমেন্ট এর পরিপ্রেক্ষিতে প্রয়োজনীয় ডিরেকশন (Clarification) দেয় ও স্টুডেন্টদের স্বার্থে উক্ত জাজমেন্ট এর প্রয়োজনীয় পরিমার্জন সাধন করে। আসুন দেখা যাক কী আছে সেই আবেদনে —
——————————————————————————————
এই আবেদনে —-
১) বোর্ড জানাচ্ছে যে চাকরি বাতিলের ফলে উদ্ভূত পরিস্থিতিতে সুপ্রীম কোর্টের নির্দেশ মতো সৃষ্টি হওয়া শূন্যপদগুলি ফ্রেশ সিলেকশন এর মাধ্যমে পূরণের জন্য যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। এই প্রসঙ্গে স্কুল এডুকেশন ডিপার্টমেন্ট এর চিঠি ( মেমো 238 SE ( Law) , dated– 03/04/2025 ) যা এসএস সি কে দেওয়া হয়েছে সেটার কথা উল্লেখিত হয়েছে। এই চিঠিতে স্কুল এডুকেশন ডিপার্টমেন্ট এসএসসি কে নির্দেশ দিয়েছে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ মতো নতুন করে সিলেকশন প্রসেস শুরু করার জন্য।
২) ছাত্র ছাত্রীদের স্বার্থে মধ্যশিক্ষা পর্ষদ কোর্টের কাছে আবেদন করছে যাতে এই পারমিশন পাওয়া যায় যে Untainted কর্মীরা এই শিক্ষাবর্ষটা পুরোটা বা যতদিন না পর্যন্ত ফ্রেশ অ্যাপয়েন্টমেন্ট হয় ততদিন ( দুটির মধ্যে যেটা আগে হবে) পর্যন্ত অস্থায়ীভাবে বিভিন্ন স্কুলে কাজ চালিয়ে যেতে পারেন। এর জন্য কোর্ট যেন প্রয়োজনীয় নির্দেশনা প্রদান করে বা উক্ত অর্ডারের প্রয়োজনীয় পরিমার্জন সাধন করে । তবে এখানে বলে দেওয়া হয়েছে এই ভাবে কাজ চালিয়ে যাওয়ার জন্য স্থায়ী চাকরির মতো সাম্য দাবি করতে পারবেন না কোনো কর্মী।
৩) এরপর মধ্যশিক্ষা পর্ষদ বলেছে এই চাকরি বাতিলের ফলে কী কী সমস্যায় পড়তে চলেছে আমাদের রাজ্যের স্কুল শিক্ষা ব্যবস্থা। বলা হয়েছে রাজ্যের নরমাল সেকশান এর 11.35% টিচার বাদ হয়ে যাবে এই রায়ের ফলে। ওদিকে বেশির ভাগ স্কুল চলছে সিঙ্গেল সাবজেক্ট টিচার দিয়ে।
৪) এরপর বিভিন্ন স্কুলে টিচার সংখ্যা কমে যাওয়ার ফলে কী রকম সমস্যায় পড়তে চলেছে তার বেশ কয়েকটি উদাহরণ দেওয়া হয়। যেমন ধুলিয়ান বালিকা বিদ্যালয়ের 27 জন টিচারের মধ্যে 25 জন বাদ হয়ে যাবে এই রায়ের পর। সেখানে স্টুডেন্ট টিচার অনুপাত দাঁড়াবে 963:1 এটাতে ভীষণ ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে রাজ্যের ছাত্র ছাত্রীরা।
৫) বর্তমানে সামগ্রিক ভাবে রাজ্যের স্টুডেন্ট টিচার অনুপাত হলো 52:1 এই অ্যাপয়েন্টমেন্ট ক্যান্সেল এর পর সেটা দাঁড়াবে 58:1। অথচ আরএমএসএ এর নিয়ম অনুযায়ী অনুপাত হওয়া উচিত 30:1
৬) বিভিন্ন ভাবে ছাত্র ছাত্রীদের পড়াশোনার ক্ষতি হবে। বোর্ড এক্সাম এর প্রস্তুতি বাধাপ্রাপ্ত হবে। বিশেষ করে গণিত, বিজ্ঞান, ভাষা বিষয়ের পড়াশোনার ক্ষতি হবে।
৭) থেকে যাওয়া টিচিং স্টাফদের উপর কাজের চাপ মারাত্মক বেড়ে যাবে। ক্লাস সাইজ বড় করতে হবে।
৮) বোর্ড এক্সাম গুলির খাতা দেখার সঙ্গে যুক্ত প্রায় 7000 এক্সামিনার বাদ হয়ে গেছেন। ফলে বোর্ডের রেজাল্ট আউট দেরি হয়ে যাবে। ক্লাস XII এর পর এন্ট্রান্স পরীক্ষাগুলোতে বসার ক্ষেত্রে ছাত্র ছাত্রীরা সমস্যায় পড়তে পারে।
৯) নন টিচিং স্টাফদের চাকরি বাতিলের ফলে স্কুলের বিভিন্ন ADMINISTRATIVE কাজ বাধাপ্রাপ্ত হবে। এর ফলে বাকিদের উপর কাজের বোঝা বাড়বে।
১০) এরপর অন্তর্বর্তী সময়ে এর আগেও কী ভাবে বিভিন্ন এপয়েন্টমেন্ট গুলি বজায় ছিল তার উদাহরণ দেওয়া হয়েছে ।
১১) এবার পরিষ্কার প্রার্থনা — ক ) অনুমতি দেওয়া হোক যাতে Untainted কর্মীরা এই শিক্ষাবর্ষের শেষ পর্যন্ত বা নতুন এপয়েন্টমেন্ট এর কাজ শেষ হওয়া পর্যন্ত ( দুটির মধ্যে যেটা আগে হবে ) তাদের কাজ চালিয়ে যেতে পারে। এখানে কিন্তু সার্ভিস কন্টিনিউ করার কথা বলছে। কোনো টেম্পোরারি শব্দ ব্যবহার করেনি।
খ) যদি কোর্ট মনে করে তাহলে অন্য কিছু অর্ডার জারি করুক ।
১২) এরপর বোর্ডের পক্ষ থেকে সমস্ত তথ্যের সত্যতা নিয়ে একটা affidavit জমা দেওয়া হয়েছে।
১৩) এরপর Annexure A1 এ দেওয়া হয় চাকরি বাতিল সংক্রান্ত সুপ্রিম কোর্টের অর্ডার এর কপি। Annexure A2 তে দেওয়া হয় স্কুল এডুকেশন ডিপার্টমেন্ট এসএসসি কে নতুন নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু করার জন্য যে চিঠি দিয়েছে তার কপি। Annexure A3 তে দেওয়া হয় গ্রূপ সি আর গ্রূপ ডি কর্মীদের নিয়োগ বাতিলের ফলে বিভিন্ন স্কুলে কী রকম কর্মী সংকট হবে তার কয়েকটি উদাহরণ। Annexure A4 ও A5 তে দেওয়া হয় সুপ্রিম কোর্টের জাজমেন্টের কপি যেগুলিতে অন্তর্বর্তী সময়ে চাকরি বহাল রাখা হয়েছিল।
এই আবেদন সুপ্রিম কোর্টে জমা পড়েছে। এখন দেখা যাক এই ক্ষেত্রে সুপ্রিম কোর্ট কোনো ব্যবস্থা নেয় কি না।
SOURCE-SMR