Right of Children to Free and Compulsory Education Act, 2009
(শিশুদের বিনামূল্যে এবং বাধ্যতামূলক শিক্ষার অধিকার আইন বা শিক্ষার অধিকার আইন, ২০০৯)
10 THFEBRUARY,2025
আর টিই (RTE) র পূর্ণাঙ্গ রূপটি হল রাইট টু ফ্রি এন্ড কম্পালসরি এডুকেশন অ্যাক্ট (শিশুদের জন্য বাধ্যতামূলক শিক্ষার অধিকার আইন, ২০০৯)। এই আইনটি ১লা এপ্রিল ২০১০ থেকে জম্মু ও কাশ্মীর ছাড়া ভারতের সমস্ত রাজ্যে ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে চালু করা হয়েছে। ভারতের সংসদ অনুসৃত এই বিশেষ আইনটি শিক্ষাক্ষেত্রে ৬ থেকে ১৪ বছর বয়সের মধ্যে থাকা সকল শিশুরই মৌলিক অধিকার হিসেবে পরিগণিত। এই আইনের নিয়মানুসারে ছয় থেকে চৌদ্দ বছরের মধ্যে থাকা শিশুরা বিনা-মূল্যে শিক্ষা লাভের অধিকারের আওতায় পড়ে যা ৮৬তম সংবিধান সংশোধনী আইন অনুযায়ী সংবিধানের ২১ক অনুচ্ছেদে বর্ণিত আছে। ভারতের সংবিধানে এই বিধানটি ভারতবর্ষের শিশুদের আরও অধিক পরিমাণে কর্মসংস্থানমুখী, স্বাবলম্বী এবং আত্মনির্ভরশীল হয়ে ওঠার ক্ষমতা প্রদান করে থাকে।
শিক্ষার অধিকার আইনের প্রণয়নে ভারতবর্ষ
(India in enactment of RTE Act, 2009)
শিক্ষা হল প্রতিটি শিশুর মৌলিক অধিকার। সেই নীতি মেনে এবং এক সঠিক শিক্ষার পরিকাঠামো গড়ে তোলার জন্য ১৩৫ টি দেশের মধ্যে অন্যতম হয়ে ওঠে ভারত। ২০০৯ সালের ২৬ শে আগস্ট শিক্ষা সংক্রান্ত এই বিলটি পাশ করা হয়, আর এই আইনটি কার্যকর হয় ২০১০ সালের ১ লা এপ্রিল থেকে।
বর্তমান আইনে স্বাধীনতার সময় ভারতীয় সংবিধানের খসড়া তৈরির ইতিহাস রয়েছে তবে এটি আরও সুনির্দিষ্টভাবে ২০০২ সালের সংবিধান সংশোধনীর জন্য যা ভারতীয় সংবিধানের 21A অনুচ্ছেদকে শিক্ষাকে একটি মৌলিক অধিকার হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করে। তবে, এটির বাস্তবায়নের পদ্ধতি বর্ণনা করার জন্য একটি আইনের প্রয়োজনীয়তা নির্দিষ্ট করে যা একটি পৃথক শিক্ষা বিলের খসড়া প্রণয়নের প্রয়োজন ছিল। এটি ভারতীয় সংবিধানের ৮৬ তম সংশোধনী।
২০০৫ সালে বিলটির একটি খসড়া তৈরি করা হয়েছিল যাতে প্রাইভেট স্কুলে সুবিধা বঞ্চিত শিশুদের জন্য ২৫% সংরক্ষণের বাধ্যতামূলক বিধানের কারণে যথেষ্ট বিতর্কের সৃষ্টি করেছিল। সেন্ট্রাল অ্যাডভাইজরি বোর্ড অফ এডুকেশনের (CABE) সাব-কমিটি যে খসড়া বিলটি তৈরি করেছিল তাতে এই বিধানটিকে গণতান্ত্রিক ও সমতাভিত্তিক সমাজ গঠনের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ পূর্ব-শর্ত হিসাবে ধরা হয়েছে। ভারতীয় আইন কমিশন প্রাথমিকভাবে বেসরকারি স্কুলগুলিতে সুবিধা বঞ্চিত শিক্ষার্থীদের জন্য ৫০% সংরক্ষণের প্রস্তাব করেছিল।
বিলটি ২ রা জুলাই ২০০৯ মন্ত্রিসভা দ্বারা অনুমোদিত হয়। রাজ্যসভা ২০ জুলাই ২০০৯-এ বিল পাস করে এবং ৪ আগস্ট ২০০৯-এ লোকসভা। এটি রাষ্ট্রপতির সম্মতি লাভ করে এবং ২৬ শে আগস্ট ২০০৯ তারিখে আইন হিসাবে অবহিত হয়। শিশুদের বিনামূল্যে এবং বাধ্যতামূলক শিক্ষার অধিকার আইন হিসাবে. আইনটি ১ লা এপ্রিল ২০১০ থেকে জম্মু ও কাশ্মীর রাজ্য ব্যতীত সমগ্র ভারতে কার্যকর হয়েছিল।’ এই আইনটি ২০১৯ সালে ভারতের একটি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে পুনর্গঠনের পরে জম্মু ও কাশ্মীরে কার্যকর হয়েছে। ৭ই মে ২০১৪, ভারতের সুপ্রিম কোর্ট রায় দেয় যে শিক্ষার অধিকার আইন সংখ্যালঘু প্রতিষ্ঠানের জন্য প্রযোজ্য নয়।
শিক্ষার অধিকার আইনের মূল বৈশিষ্ট্যগুলি
(Key Features of RTE or Right to Education Act, 2009)
এই আইন অনুযায়ী-
৬ বছর থেকে ১৪ বছর বয়সের সমস্ত শিশু প্রথম শ্রেণি থেকে শুরু করে অষ্টম শ্রেটি পর্যন্ত বিনামূল্যে বিদ্যালয়ের শিক্ষা বা বনিয়াদি শিক্ষা পাওয়ার পূর্ণ অধিকারী। এ ক্ষেত্রে কোনো শিশুর কাছ থেকে কোনো অর্থ কেউ দাবি করতে পারবেন না, যা দিতে না পারায় শিশুটির বুনিয়াদি শিক্ষা বন্ধ হয়ে যেতে পারে।
অন্যান্য আর পাঁচজন শিশুর মতোই শারীরিক ও মানসিকভাবে প্রতিবন্ধী শিশুরাও সমভাবে বিনামূল্যে বুনিয়াদি শিক্ষা লাভ করতে পারবে।
শিশুটির পরিবারের কাছ থেকে বিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য ক্যাপিটেশন ফি অর্থাৎ বিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য অনুদান গ্রহণ করা যাবে না। এটি শাস্তিযোগ্য অপরাধ হিসেবে গণ্য হয়ে থাকে।
• কোনো শিশুর বনিয়াদি শিক্ষা সম্পূর্ণ না হলে তাকে ফেল করানো, বিদ্যালয় থেকে বহিষ্কার করা বা কোনো বোর্ডের পরীক্ষায় পাস করতে বাধ্য করা যাবে না।
• যদি ৬ বছরের বেশি বয়সের কোনো শিশুর কোনো কারণবশত বুনিয়াদি শিক্ষা সম্পন্ন না হয়ে থাকে, তা হলে তাকে তার বয়সের উপযোগী শ্রেণিতে ভর্তি করাতে হবে আর যি নাচানো শিশুকে তার বয়স অনুযায়ী কোনো শ্রেণিতে ভর্তি করে দেওয়া হয়, তা হলে সে যাতে অন্যদের সঙ্গে একই মানে পৌঁছোতে পারে, সে জন্য নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত তাকে বিশেষ প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। প্রত্যেকটি শিশু যারা বুনিয়াদি শিক্ষা পাওয়ার লক্ষ্যে বিদ্যালয়ে ভর্তি হয়েছে তারা বুনিয়াদি শিক্ষা সম্পূর্ণ হওয়া পর্যন্ত বিনামূল্যে শিক্ষা পাবে, এমনকি তাদের বরস যদি ১৪ বছর পেরিয়েও যায় তা হলেও সেই সুযোগ থেকে তারা বঞ্চিত হবে না।
• শিক্ষার এই আইন অনুযায়ী কোনো বিদ্যালয়ে কোনো শিশুকেই শারীরিক ভাবে শান্তি দেওয়া যাবে না অথবা তার ওপর মানসিক অত্যাচার করা চলবে না।
• কেন্দ্রীয় বিদ্যালয়, নবোদয় বিদ্যালয় ও সৈনিক বিদ্যালয় ব্যতিরেকে সরকার কর্তৃব স্থাপিত ও পরিচালিত সমস্ত বিদ্যালয়ে ৬ থেকে ১৪ বছর বয়সের সমস্ত শিশুরা বিনামূল্যে বুনিয়াদি শিক্ষা লাভ করতে পারবে।
• সরকারি সাহায্যপ্রাপ্ত যে বিদ্যালয়গুলি আছে তারা তাদের প্রাপ্ত সরকারি সাহায্যের পরিমাণের অনুপাতে মোট ছাত্রসংখ্যার ২৫ শতাংশকে বিনামূল্যে বুনিয়াদি শিক্ষা দিতে বাধ্য থাকবে। সরকার থেকে প্রাপ্ত সাহায্যের পরিমাণ যাই হোক না কেন, ঐ সমস্ত বিদ্যালয়গুলি উপরিউক্ত নির্দিষ্ট সংখ্যক ছাত্রছাত্রীদের বিনামূল্যে বুনিয়াদি শিক্ষা দিতে বাধ্য।
• বেসরকারি বিদ্যালয়ের ক্ষেত্রেও কিছু বাধ্যতামূলক আইন জারি আছে যেমন, যেসব বেসরকারি বিদ্যালয় কোনোরকম সরকারি সাহায্য পায় না, তারা প্রত্যেক বছর প্রতি শ্রেণিতে মোট যে পরিমাণ ছাত্রছাত্রী ভর্তি করবে, তার মধ্যে ন্যূনতম ২৫ শতাংশ ছাত্রছাত্রী ভর্তি নেবে সমাজের দুর্বলতর বা পিছিয়ে পড়া শ্রেণি থেকে এবং ঐ ছাত্রছাত্রীদের অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত স্কুল কর্তৃপক্ষ ছাত্রছাত্রীদের কাছ থেকে কোনো মূল্য না নিয়েই শিক্ষা দেবে। উল্লিখিত ২৫ শতাংশ ছাত্রছাত্রীর সকলকে উক্ত বিদ্যালয়ের প্রতিবেশি এলাকার অন্তর্ভুক্ত হতে হবে। সেই ক্ষেত্রে সরকার যে পরিমাণ অর্থ সরকারি বিদ্যালয়গুলোকে দিয়ে থাকে ঠিক সেই পরিমাণ অর্থ দুর্বলতর এবং পিছিয়ে পড়া শ্রেণি থেকে আসা প্রতিটি ছাত্রছাত্রী, যারা ঐ বেসরকারি বিদ্যালয়ে বুনিয়াদি শিক্ষা লাভ করবে তাদেরকেও প্রতি বছর প্রদান করবে।
• শিক্ষাক্ষেত্রে এই আইন চালু হবার তিন বছরের মধ্যে রাজ্য অথবা স্থানীয় সরকার প্রতিটি জনবসতির এক কিলোমিটারের মধ্যে একটি করে প্রাথমিক বিদ্যালয় ও তিন কিলোমিটারের মধ্যে একটি করে উচ্চ প্রাথমিক বিদ্যালয় স্থাপন করবে যদি সেই এলাকায় তা স্থাপন করা হয়ে না থেকে থাকে। এই দূরত্বের মধ্যে যদি কোনো বিদ্যালয় না থাকে, তাহলে ছাত্রছাত্রীদের যাতায়াতের জন্য বিনা ব্যয়ে পরিবহণের ব্যবস্থা করা হবে, না হলে বিদ্যালয়ের কাছাকাছি তাদের বাসস্থানের ব্যবস্থা করতে হবে।
• নির্দিষ্ট দূরত্বের মধ্যে রাজ্য সরকার প্রতিটি এলাকায় বিদ্যালয়ের ব্যবস্থা করবে এবং তার সাথে প্রতিটি বিদ্যালয়ে প্রয়োজনীয় পরিকাঠামো, শিক্ষক-শিক্ষিকা এবং পড়াশুনো-সামগ্রীর উপযুক্ত ব্যবস্থা করবে। এ ছাড়াও শিক্ষক শিক্ষিকাদের প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করবে এবং তার সমস্ত ভার নেবে রাজ্য সরকার।
• এই আইন লাগু হবার ছয় মাসের মধ্যে রাজ্য বা স্থানীয় সরকার সব কটি বিদ্যালয়ে ছাত্র শিক্ষক অনুপাত ৩০: ১ করবে যার অর্থ হল সমস্ত বিদ্যালয়ে ৩০ জন ছাত্রছাত্রী পিছু একজন করে শিক্ষক বা শিক্ষিকাকে উপস্থিত থাকতে হবে। এই আইন চালু হওয়ার ৫ বছরের মধ্যে সব শিক্ষককেই শিক্ষক প্রশিক্ষণ নিতে হবে। এটি রাজ্য বা জেলা বা ব্লকের গড় হিসাবে না করে প্রতিটি স্কুলের জন্য নির্দিষ্ট ছাত্র-শিক্ষক অনুপাত বজায় রাখা নিশ্চিত করে শিক্ষকদের যৌক্তিক মোতায়েনের ব্যবস্থা করে, এইভাবে নিশ্চিত করে যে শিক্ষক পোস্টিংয়ে কোনো শহর-গ্রামীণ ভারসাম্যহীনতা নেই। এটি দশবার্ষিক আদমশুমারি, স্থানীয় কর্তৃপক্ষের নির্বাচন, রাজ্য আইনসভা এবং সংসদ এবং দুর্যোগ ত্রাণ ব্যতীত অ-শিক্ষামূলক কাজের জন্য শিক্ষকদের মোতায়েন নিষিদ্ধ করার ব্যবস্থাও করে।
• শিক্ষকের জন্য প্রতি সপ্তাহে ন্যূনতম কাজের ঘন্টা বিষয়ক প্রস্তুতির সময় সহ ৪৫ ঘন্টা।
একটি শিক্ষাবর্ষে শিক্ষা সময়:
প্রথম থেকে পঞ্চম শ্রেণি – 800 ঘন্টা
ষষ্ঠ থেকে অষ্টম শ্রেণি – 1000 ঘন্টা
একটি শিক্ষাবর্ষে কর্মদিবস:
প্রথম থেকে পঞ্চম শ্রেণি – 200 দিন
ষষ্ঠ থেকে অষ্টম শ্রেণি – 220 দিন
• এই আইন প্রণয়ন এবং প্রয়োগের জন্য যে প্রয়োজনীয় অর্থের দরকার তা যৌথভাবে পাদন করবে কেন্দ্রীয় সরকার ও রাজ্য সরকার। এই দুই সরকার নিজেদের মধ্যে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেবে ও স্থির করবে যে মোট প্রয়োজনীয় অর্থের ঠিক কত অংশ কেন্দ্রীয় সরকার প্রদান করবে আর কত অংশ রাজ্য সরকার বিনিয়োগ করবে।
• প্রত্যেকটি সরকারি বিদ্যালয়কে ‘বিদ্যালয় পরিচালন কমিটি’ গঠন করতে হবে। এছাড়াও আইনে নির্দেশ করা আছে পরিচালন সমিতির সদস্যদের অন্তত অর্ধেক মহিলা সদস্য হবেন এবং অন্তত ৭৫ শতাংশ সদস্য হবেন ছাত্রছাত্রীদের অভিভাবকগণ।
• প্রতিটি বিদ্যালয়ে যে পরিচালনা কমিটি থাকবে তা বিদ্যালয়ের উন্নয়ন সম্পরে পরিকল্পনা তৈরি করবে এবং সেই উন্নয়ন পরিকল্পনার ভিত্তিতেই রাজ্য সরকার এবং স্থানীয় সরকার বিদ্যালয়ের উন্নয়নের অর্থ বরাদ্দ করবে।
প্রত্যেক শিক্ষক শিক্ষিকাদের নিয়মিত এবং সময়মতো বিদ্যালয়ে উপস্থিত থাকা বাঞ্ছনীয়। তাঁদের সময়মতো নির্দিষ্ট পাঠক্রম পড়ানো শেষ করাও একান্ত কর্তব্যের মধ্যে পড়ে। এ ছাড়াও ছাত্রছাত্রীদের বিদ্যালয়ে উপস্থিতি, শিক্ষায় উন্নতি এবং অন্যান্য প্রয়োজনীয় বিষয়ে অভিভাবকদের সঙ্গে নিয়মিত আলোচনা করতে হবে। কোনো শিক্ষক-শিক্ষিকা প্রাইভেট টিউশন বা ব্যক্তিগতভাবে ছাত্রছাত্রীদের অধ্যয়ন করাতে পারবেন না।
• যে শিশু বুনিয়াদি শিক্ষা সম্পন্ন করে থাকবেন তাকে শংসাপত্র দিতে হবে।
• প্রতিটি বিদ্যালয়কে অবশ্যম্ভাবীভাবে পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখতে হবে এবং ছেলে ও মেয়েদের জন্য পৃথক শৌচালয়ের ব্যবস্থা রাখা এক অবশ্য পালনীয় কর্তব্য।
• গুণমানসহ বুনিয়াদি শিক্ষার সমস্ত দিকে নজরদারি চালাতে বুনিয়াদি শিক্ষার জাতীয় কমিশন (ন্যাশনাল কমিশন ফর ইলিমেন্টারি এডুকেশন) তৈরি করা হবে।
• সবশেষে বলা যায় যে বাধ্যতামূলক বুনিয়াদি শিক্ষা প্রত্যেকটি শিশুর মৌলিক অধিকার, তাই এর সঠিক প্রয়োগ না হলে বা অপপ্রয়োগ হলে হাইকোর্ট বা সুপ্রিম কোর্টে সরাসরি জনস্বার্থ মামলা করা যেতে পারে।
• প্রতিটি পিতা-মাতা, অভিভাবক এই বয়সি ছেলেমেয়েদের বাধ্যতামূলকভাবে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পাঠাবে। যে অভিভাবকরা এই নিয়ম মানবেন না তারা শাস্তি পাবেন।
• সর্বশিক্ষা অভিযান কর্মসূচির মধ্য দিয়েই এটি বাস্তবায়িত হবে। শুধু সরকারি প্রতিষ্ঠান নয়, বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলিও এর বাস্তবায়নে সরকার নির্দেশিত ভূমিকা পালন করবে।
• সরকার প্রতিটি গৃহে সমীক্ষা করে দেখবে যে এই বয়সের (৬ থেকে ১৪ বছর) সব ছেলেমেয়ে বিদ্যালয়ে যাচ্ছে কিনা।
• এটি নিষিদ্ধ করে (ক) শারীরিক শাস্তি এবং মানসিক হয়রানি; (খ) শিশুদের ভর্তির জন্য স্ক্রীনিং পদ্ধতি; (গ) ক্যাপিটেশন ফি; (ঘ) শিক্ষকদের দ্বারা প্রাইভেট টিউশন এবং (ঙ) স্বীকৃতি ছাড়াই বিদ্যালয় পরিচালনা।
এটি সংবিধানে বর্ণিত মূল্যবোধের সাথে সামঞ্জস্য রেখে পাঠ্যক্রমের বিকাশের ব্যবস্থা করে এবং যা শিশুর সর্বাত্মক বিকাশ নিশ্চিত করবে, শিশুর জ্ঞান, সম্ভাবনা এবং প্রতিভাকে গড়ে তুলবে এবং শিশুকে ভয়, ট্রমা এবং উদ্বেগ মুক্ত করবে। শিশু বান্ধব এবং শিশু কেন্দ্রিক শিক্ষার একটি সিস্টেম।
শিক্ষার অধিকার আইনের আওতায় বিদ্যালয়ে ছাত্রছাত্রী ভর্তি হওয়ার যোগ্যতা
(Eligibility for admission under RTE Act)
শিক্ষার অধিকার আইনের আওতায় বিদ্যালয়ে ছাত্রছাত্রী ভর্তি হওয়ার জন্য যে যোগ্যতার প্রয়োজন আছে তা নিয়ে আলোচনা করা হল:
** বুনিয়াদি শিক্ষায় ভর্তি হওয়ার ক্ষেত্রে শিশুর বয়স তার জন্মের শংসাপত্র অনুযায়ী নির্ণিত হবে। এই শংসাপত্র জন্ম, মৃত্যু, বিবাহ নিবন্ধীকরণ আইন, ১৮৫৬ বা নির্দেশিত অন্য কোনো নথি দ্বারা প্রমাণিত হলেই হবে। শুধুমাত্র বয়সের শংসাপত্রের অভাবে কোনো শিশুর স্কুলে ভর্তি আটকানো যাবে না।
** যে সকল পরিবারের আয় বাৎসরিক সাড়ে তিন লক্ষ টাকা বা তার কম, তারা শিক্ষার অধিকার আইনের অধীনে সংরক্ষিত আসনগুলির জন্য আবেদন করতে পারেন।
** অনাথ শিশু বা বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিশু বা অধিবাসী শ্রমিকদের শিশু অথবা পথ শ্রমিকদের শিশুরা শিক্ষার অধিকার আইনের অধীনে ভর্তি হওয়ার জন্য যোগ্য বলে বিবেচিত।
SOURCE-PRIMARY TEACHERS MANUAL