kamaleshforeducation.in ওয়বসাইটে আপনাকে স্বাগতম্
আজ আসন্ন মাধ্যমিক পরীক্ষার জন্য
Kamaleshforeducation.in -এর তরফ থেকে নিয়ে আসা হয়েছে মাধ্যমিক ইতিহাস সাজেশান । অক্লান্ত পরিশ্রম এবং অভিজ্ঞতা দিয়ে তৈরি করার এর ফলে প্রশ্নগুলি মাধ্যমিকের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ ।মাধ্যমিক পরীক্ষার ইতিহাস প্রস্তুতিতে অনেকটাই সাহায্য করবে এই প্রশ্ন উত্তর।
Madhymik exam suggestions 2025
Madhyamik History Suggestion
১.নতুন সামাজিক ইতিহাস বলতে কী বোঝ ?
উ:- বিংশ শতাব্দীর ছয়ের দশকে ইংল্যান্ডে যে নতুন ধারার ইতিহাসচর্চা শুরু হয় তা ‘ নতুন সামাজিক ইতিহাস ‘ নামে পরিচিত । নতুন সামাজিক ইতিহাসের মৌলিকত্ব হল— ( ১ ) ইতিহাসচর্চায় সমাজের সবস্তরের মানুষের সামগ্রিক জীবনধারাকে সর্বাধিক গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে । ( ২ ) এই ইতিহাস কেবলমাত্র রাজরাজড়া নয় , সমাজের সাধারণ বা নিম্নবর্গীয় মানুষের দৈনন্দিন জীবন , তাদের আর্থসামাজিক সম্পর্ক নিয়ে চর্চা করে , যার সাথে যুক্ত হয় বিভিন্ন ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক ক্ষেত্র যেমন — খাদ্যাভ্যাস , পােশাক পরিচ্ছদ , ক্রীড়া , সাহিত্য , সংগীত প্রভৃতি ।
২.সরকার ‘সোমপ্রকাশ’ পত্রিকার প্রকাশনা বন্ধ করে দেন কেন ?
উ:- দ্বারকানাথ বিদ্যাভূষণ সম্পাদিত সােমপ্রকাশ পত্রিকা ছিল বাংলা ভাষায় প্রকাশিত প্রথম রাজনৈতিক পত্রিকা | এই পত্রিকা কাবুলে ব্রিটিশনীতির সমালােচনা করায় পত্রিকাটি রাজরােষে পড়ে । ১৮৭৮ খ্রিস্টাব্দের ভার্নাকুলার প্রেস অ্যাক্টে এই পত্রিকার কর্তৃপক্ষকে রাজদ্রোহের অপরােধে মুচলেকা ও জরিমানা দিতে বলা হলেও সম্পাদক তা অস্বীকার করলে ব্রিটিশ সরকার পত্রিকাটির প্রকাশনা বন্ধ করে দেয় ।
৩.কোন পরিস্থিতিতে ইংরেজি শিক্ষার প্রসার ঘটে ?
উ:- অষ্টাদশ শতকের গােড়ার দিকে ভারতে ব্রিটিশ বাণিজ্য , স্কুল কলেজ , অফিস – আদালত প্রভৃতির যথেষ্ট প্রসার ঘটলে এইসব প্রতিষ্ঠানে ইংরেজি ভাষা জানা প্রচুর কর্মচারীর প্রয়ােজন দেখা দেয় । শহুরে মধ্যবিত্ত সরকারি চাকুরি লাভের আশায় ইংরেজি শেখার প্রতি আগ্রহ দেখায় । এই পরিস্থিতিতে ভারতে ইংরেজি শিক্ষার প্রসার ঘটে ।
৪. হুতোম প্যাঁচার নক্সার বিষয়বস্তু কি ছিল ?
উ:- কালীপ্রসন্ন সিংহের সর্বাধিক উল্লেখযােগ্য সাহিত্যকীর্তি হুতােম প্যাঁচার নক্সা’র বিষয়বস্তু ছিল— ( ১ ) তৎকালীন কলকাতার ধনী ও মধ্যবিত্ত বাবু সমাজের উজ্জ্বলতা , সামাজিক অবক্ষয় ও ভন্ডামি । ( ২ ) তৎকালীন কলকাতার পাশাপার্বণ , রীতিনীতি , সভাসমিতি প্রভৃতি ।
৫. অকল্যান্ড মিনিট কি ?
উ:- ১৮৩৫ খ্রিস্টাব্দে মেকলে মিনিট অনুযায়ী ভারতে সরকারিভাবে পাশ্চাত্য শিক্ষা তথা ইংরেজি শিক্ষার প্রসারের নীতি গ্রহণ করা হলেও প্রাচ্যবাদীরা এর তীব্র প্রতিবাদ জানান | ১৮৩৯ খ্রিস্টাব্দে গভর্নর জেনারেল লর্ড অকল্যান্ড এই বিরােধ দূর করতে যে প্রস্তাব দেন তা অকল্যান্ড মিনিট নামে পরিচিত । এতে বলা হয়— ( ১ ) প্রাচ্যবাদী ও পাশ্চাত্যবাদীদের মধ্যে একটা সমন্বয়ের চেষ্টা করা হয় । ( ২ ) ইংরেজি শিক্ষাব্যবস্থার প্রসারের পাশাপাশি দেশীয় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলির জন্য বছরে ৩১,০০০ টাকার বেশি অনুদান বরাদ্দ করা হয় । ( ৩ ) দুই মাধ্যমেই ( ইংরেজি ও দেশীয় ) শিক্ষাদানের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় ।
৬. ব্রাহ্মসমাজ বিভাজনের কারন কি ছিল ?
উ:-ভারতবর্ষীয় ব্রাহ্মসমাজ বিভাজনের দুটি কারণ হল— ( ১ ) কেশবচন্দ্র সেনের খ্রিস্টধর্ম প্রীতি , হিন্দু পৌত্তলিকতা ও আচার – অনুষ্ঠানে আসক্তি ছিল । ( ২ ) কেশবচন্দ্র স্বয়ং ব্রায়সমাজের নিয়ম ভেঙে নিজের ১৪ বছরের নাবালিকা কন্যার সাথে কোচবিহারের মহারাজার বিবাহ দেন ৷
৭. ব্রিটিশ শাসিত ভারতে ঔপনিবেশিক অরণ্য আইনের উদ্দেশ্য কী ছিল?
উ:- ব্রিটিশ শাসিত ভারতে ঔপনিবেশিক অরণ্য আইনের উদ্দেশ্য ছিল : ( ১ ) ভারতের বিপুল বনজসম্পদ ঔপনিবেশিক স্বার্থে ব্যবহার করা । ( যেমন — কোম্পানির জন্য জাহাজ নির্মাণ , রেললাইনের স্লিপার তৈরি ) । ( ২ ) ভারতীয় অরণ্য অঞ্চলগুলি থেকে অরণ্যবাসী জাতিগােষ্ঠীগুলিকে সুকৌশলে বিচ্ছিন্ন করা ও সরকারের আধিপত্য কায়েম করা ।
৮. দামিন-ই-কোহ কী ?
উ:-অষ্টাদশ শতকের শেষভাগ থেকে সাঁওতালরা কোম্পানির কর্মচারীদের অত্যাচারে কটক , ধলভূম , মানভূম , পালামৌ , হাজারিবাগ , ছােটোনাগপুর প্রভৃতি অঞ্চল ছেড়ে রাজমহল পাহাড়ের পাদদেশে ভাগলপুর ও বীরভূম এলাকায় বসতি গড়ে তােলে | সাঁওতালি ভাষায় পাহাড়ের প্রান্তদেশ বা অঞ্চলকে বলা হয় দামিন-ই – কোহ ।
৯.মহাবিদ্রোহের দুটি গুরুত্ব লেখ ?
উ:-১৮৫৭ খ্রিস্টাব্দে মহাবিদ্রোহের দুটি গুরুত্ব— ( ১ ) ব্রিটিশ পার্লামেট ‘ উন্নততর ভারতশাসন আইন ১৮৫৮ ‘ পাস করে যার মাধ্যমে ভারতে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির শাসনের অবসান ঘটে । ( ২ ) মহারানি ভিক্টোরিয়ার ওপর ভারতের শাসনভার ন্যস্ত করা হয় ।
Madhymik exam suggestions 2025👍👍👍:
১০.ভারতসভা রাজনৈতিক কর্মসূচি কী ছিল?
উ:-ভারতসভা রাজনৈতিক কর্মসূচি ছিল— ( ১ ) জনমত গঠন করা ( ২ ) রাজনৈতিক স্বার্থে ভারতের বিভিন্ন অঞ্চলের অধিবাসীদের ঐক্যবদ্ধ করা । ( ৩ ) হিন্দু ও মুসলিম সম্প্রদায়ের মধ্যে সাম্প্রদায়িক প্রীতি স্থাপন করা । ( 8 ) সাধারণ ভারতবাসীকে রাজনৈতিক গণ আন্দোলনে শামিল করা ।
১১.বন্দেমাতরম কীভাবে জাতীয়তাবাদী ভাবধারাকে উদ্দীপ্ত করেছিল ?
উ:-বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় রচিত ‘ আনন্দমঠ ‘ উপন্যাসের অন্তর্গত ‘ বন্দেমাতরম ‘ গানটি পরাধীন জাতির কাছে কার্যত জাতীয় সংগীতে পরিণত হয় । ১৯০৫ খ্রিস্টব্দে বঙ্গভঙ্গ – বিরােধী আন্দোলন চলাকালীন যুব সম্প্রদায়ের মধ্যে ‘ বন্দেমাতরম্ ‘ গানটি ব্যাপক জনপ্রিয়তা লাভ করে ৷ বন্দেমাতরম্ ধ্বনি দিয়ে বিপ্লবীরা হাসিমুখে ফঁসির মঞ্চে শহিদ হন । ১৯০৭ খ্রিস্টাব্দে মাদাম ভিকাজি কামা ভারতের প্রথম জাতীয় পতাকার যে নকশা তৈরি করেন তাতে দেবনাগরী অক্ষরে ‘ বন্দেমাতরম্ ‘ লেখা ছিল ।
১২. ভারতমাতা চিত্রের তাৎপর্য লেখো ।
উ:-১৯০৫ খ্রিস্টাব্দে স্বদেশি আন্দোলনের প্রেক্ষাপটে অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুরের আঁকা ‘ ভারতমাতা ’ চিত্রটি যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ । গৈরিক বস্ত্র পরিহিতা এই মাতৃমূর্তির চার হাতের একেকটিতে ধরা আছে — পুস্তক , ধানের গােছা শ্বেতবস্ত্র ও রুদ্রাক্ষের মালা — অর্থাৎ মা তার সন্তানদের অন্ন , বস্ত্র , শিক্ষা ও দীক্ষা দান করছেন । ভারতমাতার শান্ত রূপটি সাধারণ দেশবাসীর মনে ভারতমাতাকে মূর্ত করে তােলে । ছবিটি এতই জনপ্রিয়তা লাভ করে যে তখন লােকের ঘরে ঘরে এই ছবিটি দেখা যেত , পাড়ার মিছিলে , সভাসমিতিতে এই ছবির ব্যবহার লক্ষ করা যায় ।
১৩.বাংলায় ছাপাখানার বিকাশের সঙ্গে গণশিক্ষার প্রসার কীভাবে ঘটেছিল?
উ:-বাংলায় ছাপাখানার বিকাশের সঙ্গে গণশিক্ষার প্রসার ঘটেছিল । হাতে লেখা বই সংখ্যায় কম ও দামে বেশি হওয়ার জন্য তা সাধারণ মানুষ কিনতে পারত না । কিন্তু বাংলায় ছাপাখানার প্রসার ঘটলে বইগুলি সহজলভ্য হওয়ায় তা শিক্ষাবিস্তারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেয় । পাশ্চাত্য শিক্ষার প্রসারের ফলে যে স্কুল , কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় গড়ে উঠেছিল সেগুলিতে পাঠ্যপুস্তকের বিরাট চাহিদা পূরণ করেছিল ছাপাখানার প্রসার । তা ছাড়া পাঠ্যপুস্তক ছাড়াও অন্যান্য পত্রপত্রিকা , পঞ্জিকা প্রভৃতিও বাঙালি সমাজে যথেষ্ট সমাদৃত হয়েছিল ।
১৪.বটতলা প্রকাশনা কী ?
১৮৪০-১৮৭০ খ্রিস্টাব্দের মধ্যে কলকাতার চিৎপুর চোরবাগান , শােভাবাজার , জোড়াসাঁকো ও দর্জিপাড়া প্রভৃতি অঞ্চল জুড়ে যেসব প্রকাশনা বলত তা চলতি ভাষায় ‘ বটতলা প্রকাশনা ’ বা ‘ বটতলা সাহিত্য ‘ নামে পরিচিত । চিৎপুর ও জোড়াসাঁকো সংলগ্ন এলাকায় একটি বিশাল বটগাছের নিকটবর্তী অঞ্চুলে এই পুস্তক মুদ্রণ ও প্রকাশনা শিল্প গড়ে ওঠে যার থেকেই এই নামের উৎপত্তি । অতি সাধারণ অর্ধশিক্ষিত মানুষের রুচি অনুযায়ী চাহিদা মেটাতে বিচিত্র বিষয় , বিভিন্ন ধর্মকথা , পাঁচালি ও অশ্লীল শব্দযুক্ত আদি রসাত্মক বাংলা বই ছাপা হত । বটতলা প্রকাশনার বিখ্যাত প্রকাশক ছিলেন বিশ্বম্ভর দেব ও ভবানীচরণ বন্দ্যোপাধ্যায় ।
১৫.জাতীয় শিক্ষা পরিষদ গঠিত হওয়ার কারণ কী ছিল ?
উ:- জাতীয় শিক্ষা পরিষদ গঠিত হওয়ার কারণগুলি হল— ( ১ ) ঔপনিবেশিক শিক্ষার বিরুদ্ধে এর বিকল্প হিসেবে স্বদেশি শিক্ষার প্রসার ঘটানাে । ( ২ ) জাতীয় আদর্শ অনুসারে সাহিত্য , বিজ্ঞান ও কারিগরি শিক্ষা দান করা । ( ৩ ) মাতৃভাষার মাধ্যমে শিক্ষার প্রসার । ( 8 ) নৈতিক শিক্ষা দান করা ।
১৬. ঔপনিবেশিক শিক্ষাব্যবস্থার দুটি দিক কি ছিল ?
উ:- ঔপনিবেশিক শিক্ষাব্যবস্থার দুটি দিক হল— ( ১ ) এটি ছিল প্রাণহীন , যান্ত্রিক ও কেরানি তৈরির শিক্ষাব্যবস্থা । ( ২ ) এই শিক্ষাব্যবস্থায় মাতৃভাষা ও দেশীয় সংস্কৃতির চর্চা অবহেলিত হত ৷
১৭. চলচ্চিত্রের ইতিহাস চর্চা করা হয় কেন ?
উ:- চলচ্চিত্রে জাতীয়তাবাদী ভাবনা থেকে আধুনিক সমাজজীবনের বিভিন্ন আঙ্গিক তুলে ধরা হয় । ঐতিহাসিক ঘটনা থেকে শুরু করে সমাজের নানা সমস্যার কথা চলচ্চিত্রে উঠে এসেছে । স্বভাবতই চলচ্চিত্রের ইতিহাসচর্চা হয়ে উঠেছে প্রাণবন্ত ।
১৮. জীবনের ঝরাপাতা গ্রন্থটি ইতিহাস চর্চার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ কেন ?
উ:- ব্রিটিশ ভারতে অর্থনৈতিক শােষণের স্বরূপ , নীলচাষি থেকে চা বাগানের কুলির ওপর ব্রিটিশের অত্যাচার , রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডের পাশাপাশি ঠাকুরবাড়ির সাংস্কৃতিক চর্চা , শিশু সদস্যদের একসঙ্গে বাড়তে থাকা , ঈশ্বরভাবনাসহ বিভিন্ন সামাজিক বিধান সম্পর্কে নানা নির্দেশনায় কীভাবে ঠাকুরবাড়ির শিশুরা অভ্যস্ত হয়ে উঠত , সেইসব তথ্যেও এই আত্মজীবনী সমৃদ্ধ । এইসব তথ্য সামাজিক ইতিহাসচর্চার ক্ষেত্রে বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ উপাদান ।
১৯. ডিরোডিও কেন অ্যাকাডেমিক অ্যাসােসিয়েশন ’ প্রতিষ্ঠা করেন?
উ:- ছাত্রদের মধ্যে স্বাধীন চিন্তাধারা ও যুক্তিবাদের বিকাশ ঘটানাের জন্য ডিরােজিও ‘ অ্যাকাডেমিক অ্যাসােসিয়েশন ’ প্রতিষ্ঠা করেন ১৮২৭ খ্রিস্টাব্দে । এখানে ডিরােজিও ও তাঁর ছাত্ররা , অস্পৃশ্যতা , জাতিভেদপ্রথা , সতীদ > Madhymik exam suggestions 2025👍👍👍: াহপ্রথা , মূর্তিপূজা প্রভৃতি কুসংস্কারের বিরুদ্ধে নিজেদের মতামত ব্যক্ত করতেন ।
২০. হুগলি মহসিন কলেজ কে প্রতিষ্ঠা করেন?
উ:- হাজি মহম্মদ মহসিনের সহায়তায় এবং শিক্ষানুরাগী মেটকাফের উদ্যোগে চুঁচুড়ায় ১৮৩৬ খ্রিস্টাব্দে একটি কলেজ প্রতিষ্ঠিত হয় , যা বর্তমানে হুগলি মহসিন কলেজ নামে পরিচিত ।
২১.শ্রী রামকৃষ্ণ পরমহংস স্মরণীয় কেন ?
উ:-শ্রীরামকৃষ্ণের মধ্যে তথাকথিত আধুনিক শিক্ষা , পাণ্ডিত্য , ঐশ্বর্য — কোনাে কিছুই ছিল না , কিন্তু তিনি যে সহজসরল ভাষা ও উপমার সাহায্যে ধর্মীয় মতাদর্শ প্রচার করতেন , তা শিক্ষিত অশিক্ষিত বাঙালিসমাজকে প্রবলভাবে আকৃষ্ট করে ।
২২. নবজাগরণের অবদান কি ছিল ?
উ:- সতীদাহপ্রথার অবসান , বিধবাবিবাহের প্রবর্তন , পাশ্চাত্য শিক্ষার বিস্তার , বাংলা ভাষা ও সাহিত্যের অগ্রগতি , বিভিন্ন সভাসমিতি প্রতিষ্ঠা , সংবাদপত্র প্রভৃতি বাংলা নবজাগরণের অন্যতম অবদান |
২৩. পাগলাপন্থী বিদ্রোহ বলতে কী বোঝ ?
উ:- করিম শাহের মৃত্যুর পর ( ১৮১৩ খ্রি . ) তাঁর পুত্র টিপু শাহ বা টিপু পাগলের নেতৃত্বে পাগলাপী গারাে জনগণ জমিদার , মহাজন ও ইংরেজ শােষণ আর অত্যাচারের বিরুদ্ধে সশস্ত্র আন্দোলনে শামিল হয় । এই আন্দোলন ‘ পাগলাপন্থী বিদ্রোহ নামে পরিচিত ।
২৪. পাবনা বিদ্রোহ কেন হয় ?
উ:- পাবনা অঞ্চলে ১৮৫৯ খ্রিস্টাব্দের দশম আইনে কৃষকদের জমির মালিকানা ও পাট্টা দেওয়ার কথা থাকলেও জমিদাররা আইন ফাঁকি দিয়ে জমি থেকে কৃষকদের উচ্ছেদ করতে এবং ক্রমাগত খাজনা বৃদ্ধি করতে থাকে । জমির মাপের কারচুপি করেও জমির খাজনা বাড়ানাে হয় এবং নতুন নতুন উপকর বসানাে হয় । কৃষকদের মিথ্যা মামলায় জড়িয়ে হয়রানি করা হয় । এর ফলে পাবনার কৃষকরা ১৮৭০ খ্রিস্টাব্দে বিদ্রোহের পথে পা বাড়ায় ।
২৫. কারা কেন ১৮৫৭ খ্রিস্টাব্দের বিদ্রোহকে জাতীয় বিদ্রোহ বলেছেন ?
উ:- ঐতিহাসিক আড্রাম , ডাফ , রবার্টসন , টোরি দলের নেতা ডিজরেলি , সমাজতন্ত্রবাদী কাল মার্কস প্রমুখ ১৮৫৭ খ্রিস্টাব্দের বিদ্রোহকে জাতীয় বিদ্রোহ বলেছেন , কেননা বিহার ও উত্তরপ্রদেশের সাধারণ লােকজন জমিদার শ্রেণি ব্রিটিশবিরােধী এই আন্দোলনে সক্রিয় হয়ে উঠেছিল ।
২৬. হিন্দু মেলার উপহার কবিতাটি কোথায় রবীন্দ্রনাথ নিজে আবৃত্তি করেন ?
উ:-১৮৭৫ খ্রিস্টাব্দের বার্ষিক সভাতে ১৪ বছর রয়সি রবীন্দ্রনাথ নিজের লেখা ‘ হিন্দুমেলার উপহার ‘ কবিতাটি আবৃত্তি করেন ।
২৭.জমিদার সভার লক্ষ্য কী ছিল?
উ:- ( ১ ) বাংলা , বিহার , উড়িষ্যার জমিদারদের স্বার্থ রক্ষা করা , ( ২ ) ব্রিটিশ আমলাতন্ত্রকে জমিদারদের স্বপক্ষে আনা , ( ৩ ) ভারতের সর্বত্র চিরস্থায়ী বন্দোবস্তের প্রসার ঘটানাে , ( ৪ ) পুলিশ , বিচার ও রাজস্ব বিভাগের সংস্কার সাধন প্রভৃতি জমিদার সভার লক্ষ্য ছিল ।
২৮. ইন্ডিয়ান লিগ কে কবে প্রতিষ্ঠা করেন ?
উ:- অমৃতবাজার পত্রিকার সম্পাদক শিশির কুমার ঘােষ ও হেমন্তকুমার ঘােষ ১৮৭৫ খ্রিস্টাব্দে ইন্ডিয়ান লিগ নামে একটি রাজনৈতিক সমিতি প্রতিষ্ঠা করেন । কিন্তু নেতৃবৃন্দের মতবিরােধের ফলে কিছুদিনের মধ্যেই এর অস্তিত্ব লােপ পায় ।
২৯. রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর শিক্ষা কে কীভাবে দেখেছেন?
উ:- রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের মতে , “ শিক্ষা হল বাহিরের প্রকৃতি ও অন্তঃপ্রকৃতির মধ্যে সমন্বয়সাধন । এককথায় পরিপূর্ণ মানবসত্তাকে লালন করে দেহ , মন ও আত্মার সমন্বয়সাধনের মাধ্যমে নিজেকে জাতির উপযােগী ও কল্যাণকামী সদস্য হিসেবে গড়ে তােলার নামই শিক্ষা ।
৩০. রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর কাদের কৃষি বিদ্যা শেখার জন্য বিদেশে পাঠান ?
উ:- সে যুগে ধনী বাঙালি পরিবারের একমাত্র লক্ষ্য ছিল তাদের সন্তানদের আইসিএস বা ব্যারিস্টার বানানাে । কিন্তু রবীন্দ্রনাথ নিজ পুত্র রথীন্দ্রনাথ ঠাকুর , বন্ধুপুত্র সন্তোষচন্দ্র মজুমদার ও জামাতা নগেন্দ্রনাথ গাঙ্গুলিকে কৃষিবিদ্যা শিখতে ১৯০৬ ১৯০৭ খ্রি . নাগাদ বিদেশে পাঠান ।
৩১.ছাপাখানা ব্যাবসার দ্রুত প্রসার ঘটে কেন ?
উ:- প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষাব্যবস্থা প্রসারিত হওয়ার পর ছাপাখানা ব্যাবসার দ্রুত প্রসার ঘটে । স্কুল ও কলেজ প্রতিষ্ঠা এবং স্ত্রী শিক্ষার প্রসার ঘটলে শিক্ষার্থীর সংখ্যা বিপুল পরিমাণে বাড়তে থাকে | ফলে শিক্ষার্থীদের প্রয়ােজনীয় বইপত্র ছাপতে বহু মুদ্রণব্যবসায়ী সক্রিয় হয়ে ওঠেন ।
৩২.ক্যালকাটা স্কুল বুক সােসাইটি কেন প্রতিষ্ঠিত হয় ?
উ:- ১৮১৭ খ্রিস্টাব্দে স্কুল পাঠ্যবই ছাপিয়ে কম খরচে বিনামূল্যে ছাত্রছাত্রীদের হাতে তুলে দেওয়ার উদ্দেশ্যে ক্যালকাটা স্কুল বুক সােসাইটি প্রতিষ্ঠিত হয় ।
৩৩. নতুন সামাজিক ইতিহাস বলতে কী বোঝ ?
উ:- বিংশ শতাব্দীর ছয়ের দশক থেকে ফ্রান্সের অ্যানা পত্রিকা গােষ্ঠীর ( ইতিহাসবিদদের ) উদ্যোগে সমাজের সাধারণ মানুষের জীবনজীবিকা ও কর্মকাণ্ড নিয়ে যে ইতিহাসচর্চা শুরু হয় , তাকেই বলে নতুন সামাজিক ইতিহাস । মার্ক ব্লখ , লুসিয়েন ফেবর , ফার্নান্দ ব্ৰদেল , লাদুরি প্রমুখ ঐতিহাসিক নতুন সামাজিক ইতিহাসচর্চার সঙ্গে যুক্ত ।
Madhymik exam suggestions 2025👍👍👍
৩৪.ব্রিটিশ পার্লামেন্টে পাস হওয়া ১৮১৩খ্রিস্টাব্দের সনদ আইন ভারতের শিক্ষাক্ষেত্র কতটা গুরুত্বপূর্ণ ছিল ?
উ:- ব্রিটিশ পার্লামেন্টে পাস হওয়া ১৮১৩ খ্রিস্টাব্দের সনদ আইন ভারতের শিক্ষাক্ষেত্র বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ ছিল । যেমন— ( ১ ) এই সনদ আইনে প্রথম ভারতীয়দের শিক্ষার জন্য বার্ষিক একলক্ষ টাকা ব্যয়ের নির্দেশ দেওয়া হয় । ( ২ ) ভারতীয়দের শিক্ষার অর্থাৎ জনশিক্ষার দায়িত্ব গ্রহণ করে কোম্পানি সরকার । দেরিতে হলেও কোম্পানির সরকারকে জনশিক্ষার দায়িত্ব নিতে হয় । বরাদ্দ টাকা পাওয়ার জন্য শিক্ষাক্ষেত্রে প্রাচ্য – পাশ্চাত্য বিষয়ক দ্বন্দ্বের সূচনা হয় ।
৩৫. উডের নির্দেশনামা কি ?
উ:- চার্লস উড ছিলেন ইংরেজ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির বাের্ড অফ কন্ট্রোলের সভাপতি । তিনি ভারতে পাশ্চাত্য শিক্ষা ও উচ্চশিক্ষারবিস্তারকল্পে ১৮৫৪ খ্রিস্টাব্দে শিক্ষা সংক্রান্ত বিষয়ে যে সুপারিশ করেছিলেন , তাকে উডের নির্দেশনামা বলা হয় । এই নির্দেশনামাকে ভারতে পাশ্চাত্য শিক্ষাবিস্তারের ম্যাগনাকার্টা বলা হয় । সুপারিশ : ( ১ ) একটি স্বতন্ত্র শিক্ষা দপ্তর প্রতিষ্ঠা করা , ( ২ ) কলকাতা , বােম্বাই ও মাদ্রাজ প্রেসিডেন্সিতে একটি করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করা , ( ৩ ) শিক্ষক – শিক্ষণের ব্যবস্থা করা , ( ৪ ) মেধাবৃত্তি দান করা প্রভৃতি ।
৩৬. মধুসূদন গুপ্ত স্মরণীর কেন ?
উ:- ভারতের আধুনিক চিকিৎসাবিদ্যার ইতিহাসে মধুসূদন গুপ্ত একটি স্মরণীর ব্যক্তিত্ব ( ১৮০০-১৮৫৬ খ্রি . ) । তিনি ছিলেন প্রথম ভারতীয় , যিনি সামাজিক কুসংস্কার লঙ্ঘন করে ১৮৩৬ খ্রিস্টাব্দের ২৮ অক্টোবর রাজকৃষ্ণ দে , উমাচরণ শেঠ , নবীনচন্দ্র মিত্র প্রমুখের সহযােগিতায় কলকাতা মেডিক্যাল কলেজের অ্যানাটমির ছাত্র হিসেবে শব ব্যবচ্ছেদ করে সাহসিকতার পরিচয় দেন । ১৮৪০ খ্রিস্টাব্দে তিনি ডাক্তারি পাস করেন । ১৮৪৫ খ্রিস্টাব্দে মেডিক্যাল কলেজের হিন্দুস্থানি ক্লাসের সুপারিন্টেন্ডন্টে নিযুক্ত হন । তিনি লন্ডন ফার্মাকোপিয়া ও ‘ অ্যানাটমি ’ গ্রন্থ দুটি বাংলায় অনুবাদ করেন এবং ‘ অ্যানাটমিস্ট ভ্যাডে মেকাম ‘ গ্রন্থটি সংস্কৃতে অনুবাদ করেন ।
৩৭.নব্য বেদান্তবাদ কী ?
উ:- স্বামী বিবেকানন্দের ধর্মীয় দর্শনের একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক হল নব্যবেদান্তবাদ । রামকৃষ্ণের একান্ত অনুগত শিষ্য স্বামী বিবেকানন্দ রামকৃষ্ণ মঠ ও মিশন প্রতিষ্ঠার পর বিভিন্ন ধর্মীয় দর্শন পাঠ করে যে নতুন ধর্মীয় চিন্তাধারার প্রকাশ ঘটান তাকে নব্যবেদান্ত বলা হয় । অদ্বৈতবাদে বিশ্বাসী বিবেকানন্দ বলেন , “ বনের বেদান্তকে ঘরে আনতে হবে । তাঁর মতে , সর্বত্রই ব্রহ্মের উপস্থিতি রয়েছে । আপামর মানুষের সেবা করাই হল ব্রহ্মেসেবা করা ।
৩৮.ডায়াট্রিক ব্রান্ডিস কে ছিলেন?
উ:- ডায়াট্রিক ব্রান্ডিস ছিলেন জার্মানির বনাঞ্চল বিশারদ । ব্রিটিশ শাসনাধীন ভারতবর্ষে তিনি ইনস্পেক্টর – জেনারেল হিসেবে নিযুক্তহন । তাঁর প্রচেষ্টায় এখানে ১৮৬৪ খ্রিস্টাব্দে ভারতীয় অরণ্য বিভাগ গঠিত হয় । ব্রান্ডিস এদেশে অরণ্যচ্ছেদন ও পশুচারণ । নিয়ন্ত্রণ এবং অরণ্যের ওপর সরকার হস্তক্ষেপের প্রয়ােজনীয়তা অনুভব করেন । বনাঞ্চলগুলির ওপর ব্রিটিশ আধিপত্য বিস্তারের উদ্দেশ্যে ব্রিটিশ সরকার কর্তৃক ১৮৬৫ খ্রিস্টাব্দে ভারতীয় অরণ্য আইন পাস এবং তার সংগঠন ও প্রয়ােগে ব্রান্ডিসের ভূমিকা ছিল উল্লেখযােগ্য ।
৩৯.পাইকান জমি কি ?
উ:-চুয়াড়রা কৃষিকাজ ও পশুশিকারের পাশাপাশি বাঁকুড়া জেলার দক্ষিণ – পশ্চিম অঞ্চল , মেদিনীপুর জেলার উত্তর – পশ্চিম অঞ্চল ও মানভূমের পূর্বাঞ্ছলের জমিদারদের অধীনে পাইক বা নিরাপত্তারক্ষীর কাজ করত । জমিদাররা চুয়াড়দের নগদ অর্থে বেতনের পরিবর্তে যে খাস জমি ভােগ করতে দিত , তাকেই বলা হয় পাইকান জমি । এই জমি ছিল নিষ্কর কিন্তু কোম্পানি এই নিষ্কর জমির ওপর রাজস্ব ধার্য করলে এবং পাইকরা জমি কেড়ে নিলে পাইকরা বিদ্রোহী হয়ে ওঠে ।
৪০. দেশীয় ভাষা সংবাদপত্র আইন কি ?
উ:- ব্রিটিশবিরােধী ভারতীয় জাতীয়তাবাদী আন্দোলনের সমর্থক দেশীয় ভাষায় প্রকাশিত সংবাদপত্রের কণ্ঠরােধের উদ্দেশ্য লর্ড লিটন ১৮৭৮ খ্রিস্টাব্দে এক আইন পাস করেন । এই আইনে বলা হয় দেশীয় ভাষায় প্রকাশিত কোনাে সংবাদপত্র ব্রিটিশবিরােধী কোনাে সংবাদ পরিবেশন করলে সেই সংবাদপত্র বাজেয়াপ্ত করে তার প্রকাশক , সম্পাদক ও লেখককে সরকার শাস্তি দিতে পারবে | এটিই দেশীয় ভাষা সংবাদপত্র আইন নামে খ্যাত ।
৪১.ইলবার্ট বিল কি ?
উ:- ভারতীয় বিচারব্যবস্থায় জাতিভেদমূলক বৈষম্য দূর করার উদ্দেশ্যে ভারতীয় ও ইউরােপীয় বিচারকদের সমান ক্ষমতা ও মর্যাদা দিয়ে গভর্নর – জেনারেল লর্ড রিপনের আইনসচিব স্যার সি পি ইলবার্ট ১৮৮৩ খ্রিস্টাব্দে এক যে আইনের খসড়া তৈরি করেন । এটিই ইলবার্ট বিল নামে খ্যাত ।
৪২.রানি লক্ষ্মীবাঈ স্মরণীয় কেন ?
উ:- রানি লক্ষ্মীবাঈ ছিলেন আঁসির রাজা গঙ্গাধর রাওয়ের বিধবা পত্নী । তিনি ব্রিটিশ শাসনের বিরুদ্ধে সিপাহি বিদ্রোহে নেতৃত্ব দেন । মধ্যভারতে তাঁর নেতৃত্বে সিপাহিরা বিদ্রোহ করে ৷ অসীম সাহস ও বীরত্বের সঙ্গে ইংরেজদের বিরুদ > Madhymik exam suggestions 2025👍👍👍: ্ধে যুদ্ধে তিনি আহত হন ও পরে যুদ্ধক্ষেত্রেই প্রাণ বিসর্জন দেন । এজন্যই তিনি ইতিহাসে স্মরণীয় হয়ে আছেন ।
৪৩. সিপাহী বিদ্রোহের প্রত্যক্ষ কারন কি ?
উ:- এনফিল্ড রাইফেল এমন এক ধরনের বন্দুক যার কার্তুজ বা টোটার আবরণী দাঁত দিয়ে ছিড়ে বন্দুকে পুরতে হত । এই টোটায় গােরু ও শূকরের চর্বি মেশানাে আছে , এমন গুজবে হিন্দু ও মুসলমান সিপাহিরা ধর্মচ্যুত হওয়ার ভয়ে এই টোটা ব্যবহারে অসম্মত হয় । এর ফলে সিপাহিরা ক্ষুদ্ধ হয়ে ওঠে এবং সিপাহি বিদ্রোহের সূচনা হয় ।
৪৪. চার্লস উইলকিনস কে ছিলেন?
উ:- চার্লস উইলকিনস ছিলেন ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির একজন পদস্থ কর্মচারী এবং এদেশে ছাপাখানার প্রতিষ্ঠাতা । তিনি ১৭৭৮ খ্রিস্টাব্দে ঘুগলি জেলার চুচুঁড়ায় প্রথম ছাপাখানা প্রতিষ্ঠা করেন । তিনি সর্বপ্রথম বাংলা অক্ষরের টাইপ বা নকশা তৈরি করেন | তার তৈরি করা অক্ষরে ন্যাথানিয়েল ব্রাসি হ্যালহেড রচিত ‘ এ গ্রামার অব দ্য বেঙ্গল ল্যাঙ্গুয়েজ ‘ ( ১৭৭৮-৭৯ খ্রি . ) গ্রন্থটি ছাপা হয় ।
৪৫. লাইনােটাইপের আবিষ্কার কে ?
উ:- মুদ্রণজগতে লাইনােটাইপের আবিষ্কার এক উল্লেখযােগ্য ঘটনা । এটি হল উন্নত বাংলা অক্ষরের আধুনিকতম সংস্করণ | রাজশেখর বসুর পরামর্শে আনন্দবাজার প্রকাশনার সঙ্গে যুক্ত সুরেশচন্দ্র মজুমদার এই লাইনােটাইপের উদ্ভাবন ঘটান ।
৪৬. বটতলার প্রকাশনা কি ?
উ:- উনিশ শতকে ১৮৪০-১৮৭০ খ্রিস্টাব্দ সময়কালে কলকাতার চোরবাগান , শােভাবাজার , দর্জিপাড়া , জোড়াসাঁকো প্রভৃতি থানজুড়ে যেসব প্রকাশনা চলত , তা বটতলার প্রকাশনা নামে পরিচিত | সস্তায় বিচিত্র বিষয় ও বিচিত্র রকমের বই ছাপাই ছিলএর বৈশিষ্ট্য । বটতলা , সাহিত্যের শ্রেষ্ঠ নিদর্শন হল — নববাবু বিলাস , করুণানিধান বিলাস , কলকাতা রঙ্গালয় , চণ্ডীমঙ্গল , অন্নদামঙ্গল প্রভৃতি । তৎকালীন বাংলার সামাজিক ইতিহাস রচনার ক্ষেত্রে বটতলা সাহিত্য এক অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ উপাদান |
৪৭. শ্রীনিকেতন কেন প্রতিষ্ঠিত হয় ?
উ:- রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর শুধুমাত্র মাতৃভাষায় শিক্ষাদান বা উপনিষদের জ্ঞানকেই চরম বলে বিবেচনা করেননি । তিনি চেয়েছিলেন শিক্ষার্থী প্রকৃতির মধ্যে বেড়ে উঠুক । ওই উদ্দেশ্যকে সামনে রেখে তিনি শ্রীনিকেতনে পল্লি উন্নয়নের জন্য কৃষি , পশুপালন , কুটিরশিল্প , সমবায় , স্বাস্থ্য প্রভৃতি কর্মসূচিকে বাস্তবায়িত করতে শ্রীনিকেতন প্রতিষ্ঠানটি প্রতিষ্ঠা করেছিলেন ।
৪৮.নিম্নবর্গীয় ইতিহাসচর্চা বলতে কী বোঝ ?
বিংশ শতাব্দীর শেষদিকে ভারত – সহ দক্ষিণ এশিয়ায় বিভিন্ন গবেষকের উদ্যোগে জাতি , ধর্ম ও বর্ণ নির্বিশেষে নিম্নবর্গের সাধারণ মানুষকে নিয়ে যে ইতিহাসচর্চা শুরু হয় , তাকেই বলা হয় নিম্নবর্গীয় ইতিহাসচর্চা বা সাব – অল্টার্ন স্টাডিজ ৷ রণজিৎ গুহ , পার্থ চট্টোপাধ্যায় , জ্ঞানেন্দ্র পান্ডে , গৌতম ভদ্র প্রমুখ ইতিহাসবিদ এই ধরনের ইতিহাসচর্চার সঙ্গে যুক্ত ।
৪৯.’Letters from a father to his daughter’ এর বিষয়বস্তু কি ছিল ?
উ:- ‘ Letters from a father to his daughter ‘ গ্রন্থটির চিঠিগুলি জওহরলাল নেহরু লিখেছিলেন তাঁর কন্যা ইন্দিরাকে ( ১৯২৮ ৩০ খ্রি . ) । পৃথিবীতে প্রথম প্রাণের আবির্ভাব , প্রাণীর উৎপত্তি , মানুষের আবির্ভাব , আদিম মানুষের প্রকৃতি , ভাষার বিকাশ , ধর্ম , শ্রেণিবিভাজন , কৃষিকার্যের বিকাশ , রাজতন্ত্রের বিকাশ , বিভিন্ন সভ্যতার আবির্ভাব , প্রাচীন পৃথিবীর শহর , ভাষা , নগর , বর্ণমালা , তথা সংখ্যার সূত্রপাত ইত্যাদি বিভিন্ন বিষয় , বিশ্বপ্রকৃতি প্রভৃতি সম্পর্কে ছােট্ট ইন্দিরাকে অবহিত করাই ছিল চিঠিগুলির মূল উদ্দেশ্য ।
৫০.মেকলে মিনিট কি ?
উ:- টমাস ব্যাবিংটন মেকলে ছিলেন গভর্নর – জেনারেল লর্ড উইলিয়াম বেন্টিঙ্কের আইনসচিব ও জেনারেল কমিটি অব পাবলিক ইন্সট্রাকশন বা জনশিক্ষা কমিটির সভাপতি । ভারতে ইংরেজ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির স্বার্থরক্ষা , প্রাচ্য সভ্যতা ও শিক্ষাব্যবস্থাকে দুর্নীতিমুক্ত করা এবং বৈজ্ঞানিক চেতনার বিস্তারকল্পে মেকলে ১৮৩৫ খ্রিস্টাব্দের ২ ফেব্রুয়ারি গভর্নর – জেনারেল লর্ড উইলিয়াম বেন্টিঙ্কের কাছে ভারতে পাশ্চাত্য শিক্ষার , বিশেষত ইংরেজি শিক্ষার প্রসারের পক্ষে যে মিনিট বা প্রস্তাব পেশ করেন , তাকেই মেকলে মিনিট বলা হয় ।
৫১. জনশিক্ষা কমিটি বা জেনারেল কমিটি অব পাবলিক ইন্সট্রাকশন কেন গঠিত হয় ?
উ:- লর্ড হেস্টিংসের আমলে ১৮২৩ খ্রিস্টাব্দে বাংলা প্রদেশের শিক্ষাব্যবস্থার প্রসার ও উন্নয়নের উদ্দেশ্যে জনশিক্ষা কমিটি বা জেনারেল কমিটি অব পাবলিক ইন্সট্রাকশন গঠিত হয় । এ ছাড়া এই কমিটির উদ্দেশ্য ছিল — ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি শাসিত তৎকালীন ভারতে প্রচলিত শিক্ষাব্যবস্থা সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহ করা এবং শিক্ষার প্রসার ও গুণগত মানােন্নয়নের জন্য কী কী করা উচিত , সে বিষয়ে সুপারিশ করা ৷
৫২.তিন আইন কি ?
উ:- ব্রাহ্মসমাজের আন্দোলনের প্রভাবে প্রভাবিত হয়ে ব্রিটিশ সরকার ১৮৭২ খ্রিস্টাব্দে ‘ তিন আইন পাস করে । এই আইনের দ্বারা ( ১ ) বাল্যবিবাহ নিষিদ্ধ করা হয় , ( ২ ) বহুবিবাহ নিষিদ্ধ করা হয় এবং ( ৩ ) অসবর্ণ বিবাহ আইনসিদ্ধ করা হয় । কেশবচন্দ্র সেনের প্রচেষ্টায় এই তিন আইন পাস হয় ।
৫৩.বাংলায় নারীশিক্ষা বিস্তারে রাজা রাধাকান্তদেবের ভূমিকা উল্লেখ করো ?
উ:- বাংলায় নারীশিক্ষা বিস্তারে রাজা রাধাকান্তদেবের ভূমিকা বিশেষ উল্লেখযােগ্য । যেমন— ( ১ ) সংস্কৃত পণ্ডিত হয়েও তিনি জাতির নৈতিক চরিত্র ও সামাজিক সুখসুবিধা বৃদ্ধির জন্য নারীদের মধ্যে শিক্ষাবিস্তারের উদ্দেশ্যে ক্যালকাটা ফিমেল জুভেনাইল সােসাইটির প্রতিষ্ঠায় সাহায্য করেন ( ১৮১৯ খ্রি . ) । ( ২ ) ক্যালকাটা স্কুল বুক সােসাইটির অবৈতনিক সম্পাদকরূপে তাঁর বাড়িতে ক্যালকাটা স্কুল সােসাইটির অধীনস্থ স্কুলের ছাত্রীদের পরীক্ষাদানের সুযােগ করে দেন । ( ৩ ) স্ত্রীশিক্ষা প্রসারের সমর্থনে রাধাকান্ত দেব গৌরমােহন বিদ্যালংকারকে স্ত্রীশিক্ষা বিধায়ক ’ ( ১৮২২ খ্রি . ) পুস্তিকটি রচনার জন্য অনুরােধ করেন ও তাকে সাহায্য করেন ।
৫৪.বিদ্রোহ বলতে কী বােঝায় ?
উ:- বিদ্রোহ বলতে বােঝায় নিজেদের স্বার্থে কোনাে নির্দিষ্ট অঙ্কুলের কিছু মানুষের নির্দিষ্ট কিছু দাবি আদায় বা প্রচলিত ব্যবস্থার বিরুদ্ধে ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ ।
৫৫. অভ্যুত্থান বলতে কি বােঝায়?
উ:- অভ্যুত্থান বলতে বােঝায় প্রচলিত শাসনব্যবস্থা বা শাসকশক্তির অপশাসনের বিরুদ্ধে সামরিক ক্ষোভ – বিক্ষোভের ভিত্তিতে একজন ব্যক্তি বা জনগণের সংগঠিত সংগ্রাম ।
৫৬.ওয়াহাবি আন্দোলনের প্রকৃত অর্থ কী ছিল ?
উ:- ওয়াহাবি আন্দোলনের প্রকৃত অর্থ ‘ নবজাগরণ ‘ হলেও ভারতে এই আন্দোলনের প্রতিষ্ঠাতা সৈয়দ আহম্মদ এর নাম দেন তরিকা ই – মহম্মদিয়া বা মহম্মদের পথ । তরিকাই – মহম্মদিয়া ছিল প্রকৃতপক্ষে ইসলামের এক সংস্কার আন্দোলন বাংলা দেশে তিতুমিরের নেতৃত্বে এই আন্দোলন পরিচালিত হয় ।
৫৭. নাট্যাভিনয় নিয়ন্ত্রণ আইন কি ?
উ:- ব্রিটিশ সরকারবিরােধী ভারতের জাতীয়তাবাদী আন্দোলনে দেশীয় ভাষায় মথ নাটকের কণ্ঠরােধের উদ্দেশ্যে ১৮৭৬ খ্রিস্টাব্দে লর্ড নর্থব্রুক এক আইন পাস করে বলেন যে , পুলিশের আগাম অনুমতি ছাড়া কোনাে দেশীয় নাটক মঞ্চস্থ করা যাবে না এবং নাটকের প্রতিলিপি নাটক মঞ্চস্থের আগে পুলিশের কাছে জমা রাখা বাধ্যতামূলক । এটিই ‘ নাট্যাভিনয় নিয়ন্ত্রণ আইন ‘ নামে খ্যাত ।
৫৮. মঙ্গল পান্ডে কে ছিলেন?
উ:- মঙ্গল পান্ডে ছিলেন ব্যারাকপুর সেনানিবাসের ৩৪ নং নেটিভ ইনফ্যান্ট্রির একজন সিপাহি । তিনিই প্রথম ইংরেজ সরকার প্রবর্তিত এনফিল্ড রাইফেল ব্যবহার করতে অসম্মতি জানান এবং ১৮৫৭ খ্রিস্টাব্দের ২৯ মার্চ ব্যারাকপুর সেনা ছাউনিতে বিদ্রোহের সূচনা করেন । সরকার মঙ্গল পান্ডেকে গ্রেপ্তার করে । বিচারে তার ফাসি হয় ।
৫৯.শ্বেতবিদ্রোহ কি ?
উ:- গভর্নর – জেনারেল লর্ড রিপনের আইনসচিব সি পি ইলবার্ট বিচারব্যবস্থায় বৈষম্য দূর করতে যে খসড়া বিল রচনা করেন , তার বিরুদ্ধে ইংরেজ তথা ইউরােপীয়রা প্রবল প্রতিবাদ আন্দোলন শুরু করে । তাদের আন্দোলনের ফলে লর্ড রিপন বিলটি পরিবর্তন করতে বাধ্য হন । ইলবার্ট বিলের বিরুদ্ধে ইংরেজদের এই আন্দোলন শ্বেতবিদ্রোহ বা ‘ White mutiny নামে পরিচিত ।
৬০.গগনেন্দ্রনাথ ঠাকুর কীভাবে ঔপনিবেশিক সমাজের সমালোচনা করেছিলেন ?
উ:- কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ভ্রাতুস্পুত্ৰ গগনেন্দ্রনাথ ঠাকুর বিংশ শতাব্দীর প্রথমার্ধে তার অঙ্কিত রাজনৈতিক ও সামাজিকসমস্যামূলক ব্যঙ্গচিত্রগুলির মাধ্যমে ঔপনিবেশিক সমাজব্যবস্থার সমালােচনা করেছিলেন । শুধুমাত্র রাজনৈতিক বা সামাজিক কুসংস্কার নয় , ধর্মীয় গোঁড়ামি , জাতপাত , উচ্চবিত্ত ও নিম্নবিত্ত মানুষের দ্বিচারিতা , কলকাতার ‘ বাবু ‘ সম্প্রদায়ের বিলাসিতা , ব্রিটিশ সেনাদের নিপীড়ন ইত্যাদি বহুবিধ বিষয়ের উপর গগনেন্দ্রনাথ চিত্রাঙ্কন করে সমাজ সচেতনতার প্রসার ঘটান ।
৬১.পঞ্চানন কর্মকার কী ছিলেন?
উ:- পঞ্চানন কর্মকার ছিলেন দুগলি জেলার ত্রিবেণীর একজন সুদক্ষ স্বর্ণশিল্পী । তাঁর প্রকৃত নাম ছিল পঞ্চানন মল্লিক । চার্লস উইলকিসের সহযােগী এই পঞ্চানন কর্মকার মুদ্রণের জন্য উন্নতমানের বাংলা অক্ষরের টাইপ তৈরি করেন । পরবর্তীকালে তিনি শ্রীরামপুরে চলে আসেন । তার কন্যা ও জামাতা পরবর্তীকালে মুদ্রাকর হিসেবে ইতিহাসে সুপরিচিত হন ।
৬২.বিজ্ঞানী সি ভি রমন বিখ্যাত কেন ?
উ:- বিজ্ঞানী সি ভি রমন ( চন্দ্রশেখর ভেঙ্কটরমন ) ১৯২৮ খ্রিস্টাব্দে ইন্ডিয়ান অ্যাসােসিয়েশন ফর দ্য কান্টিভেশন অব সায়েন্স বা IACS- এর গবেষণাগারে ‘ রমন এফেক্ট ‘ আবিষ্কার করেন । এ জন্য তিনি ১৯৩০ খ্রিস্টাব্দে পদার্থবিদ্যায় নােবেল পুরস্কার পেয়েছিলেন । এই কারণে তিনি গবেষণা জগতে স্মরণীয় হয়ে আছেন ।
৬৩. জাইলােগ্রাফি কি ?
উ:- খ্রিস্টীয় অষ্টম শতকে চিনে কাঠ বা পাথরের ব্লকের দ্বারা মুদ্রণের কৌশল আবিষ্কৃত হয় । ব্লকের দ্বারা এই মুদ্রণ পদ্ধতি ‘ জাইলােগ্রাফি ’ নামে পরিচিত ।
৬৪.ঔপনিবেশিক সরকার কেন ইংরেজি শিক্ষা বিস্তার করতে চেয়েছিল ?
উ:- ঔপনিবেশিক সরকার চেয়েছিল , দেশশাসনের প্রয়ােজনে একটি ইংরেজি শিক্ষিত সম্প্রদায় সৃষ্টি করতে | এই সম্প্রদায় কোম্পানির কর্মচারীর অভাব পূরণের সঙ্গে সঙ্গে কোম্পানির শাসনের অন্ধ সমর্থকও হবে — এটিই ছিল সরকারের অভিসন্ধি | এই সময় অর্থাৎ উনবিংশ শতকের শিক্ষাব্যবস্থা ছিল শুধুমাত্র পুথিগত শিক্ষা ।
৬৫. নব্য স্থাপত্যরীতি বলতে কী বোঝ ?
উ:- উনবিংশ শতাব্দীর সূচনায় এদেশে যে স্থাপত্যরীতির সূচনা হয় তা নব্য স্থাপত্যরীতি নামে পরিচিত ।
৬৬.শিল্পচর্চার ইতিহাস বলতে কী বোঝ ?
উ:- শিল্পচর্চার ইতিহাস বলতে চারুশিল্প ও কারুশিল্পের ইতিহাসকে বােঝায় । এর মাধ্যমে স্থাপত্য , ভাস্কর্য , চিত্রশিল্প , দৃশ্যশিল্প , নাচ , গান , অভিনয় , ছবি আঁকা , ফোটোগ্রাফি ইত্যাদি বােঝায় ।
৬৭.ডিরােজিও কর্মচ্যুত কেন হন?
উ:- শাসক – বিরােধী সংগঠন সংগঠিত করার জন্য ডিরােজিও কর্মচ্যুত হন ।
৬৮.বাংলার নারীশিক্ষার বিস্তারে রাজা রাধাকান্ত দেবের ভূমিকা উল্লেখ করো ।
উ:- বাংলার নারীশিক্ষার বিস্তারে রাজা রাধাকান্ত দেবের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল । তিনি নারীশিক্ষার বিস্তারের জন্য ১৮১৯ খ্রি . ক্যালকাটা জুভেনাইল সােসাইটি প্রতিষ্ঠায় সাহায্য করেন । ক্যালকাটা স্কুল সােসাইটির অধীনস্থ স্কুলের ছাত্রীদের নিজের বাড়িতে পরীক্ষা গ্রহণের ব্যবস্থা করেন । তার অনুরােধে ১৮২২ খ্রি . গৌরমােহন বিদ্যালঙ্কার রচনা করেন স্ত্রীশিক্ষা বিধায়ক ’ নামক পুস্তিকা
৬৯. ডেভিড হেয়ার কেন স্মরণীয় ?
উ:- ডেভিড হেয়ার ছিলেন স্কটল্যান্ডের একজন ঘড়ি প্রস্তুতকারক , তিনি তার উপার্জিত অর্থ ভারতে এসে পাশ্চাত্য শিক্ষার জন্য ব্যয় করেন । স্কুল বুক সােসাইটি ( ১৮১৭ খ্রি . ) ও পটলডাঙা অ্যাকাডেমি ( ১৮১৮ খ্রি . ) প্রতিষ্ঠা তার উল্লেখযােগ্য কীর্তি । হিন্দু কলেজ প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রেও তার ভূমিকা ছিল ।
৭০. তিন আইন কি ?
উ:- ১৮৭২ খ্রি . এই আইন বা তিন আইন পাস হয় । এর মাধ্যমে বাল্যবিবাহ ও বহুবিবাহ রােধ এবং বিধবাবিবাহকে আইনসিদ্ধ করা হয় ।
৭১.তিতুমিরের বিদ্রোহ কীভাবে দমন করা হয়?
উ:- পুঁড়ার জমিদার কৃষ্ণদেব রায় তিতুমিরের জনপ্রিয়তায় শঙ্কিত হয়ে পড়েন । তিনি তিতুমিরের আন্দোলন দমন করার জন্য দাড়ির ওপর আড়াই টাকা জরিমানা ধার্য করেন । এ ছাড়া নানারকম কর আরােপ করেন । তিতুমিরের নির্দেশে তার অনুগামীরা পুঁড়া গ্রাম আক্রমণ করলে জমিদার সরকারি সাহায্য প্রার্থনা করেন । অবশেষে সরকারি হস্তক্ষেপে তিতুমিরের বিদ্রোহ দমন করা হয় ।
৭২.বিপ্লব বলতে কী বোঝ ?
উ:- কোনাে প্রচলিত ব্যবস্থার দ্রুত , ব্যাপক ও আমূল পরিবর্তন হল বিপ্লব । কোনাে প্রচলিত ব্যবস্থার পরিবর্তনের দাবিতে বিরােধী জনগােষ্ঠীর আন্দোলন হল বিদ্রোহ |
৭৩.মহারানির ঘােষণাপত্রের মূল উদ্দেশ্য কী ছিল?
উ:- মহারানির ঘােষণাপত্রের মূল উদ্দেশ্য ছিল— ( ১ ) ভারতীয় জনগণকে , বিশেষত রাজন্যবর্গকে নিরাপত্তা ও অধিকার রক্ষার আশ্বাস । দানের । মাধ্যমে । তাদের আনুগত্য লাভ করা । ( ২ ) ভারতের মতাে এক বিশাল সাম্রাজ্যের শাসনভার কোম্পানির হাতে না রেখে ইংরেজ সরকারের প্রত্যক্ষ শাসনাধীনে আনা | তাই এর মাধ্যমে কোম্পানির শাসনের অবসান ঘটানাে হয় ।
৭৪. হিন্দু মেলা কেন প্রতিষ্ঠিত হয় ?
উ:- ১৮৬৭ খ্রি . নবগােপাল মিত্র ও রাজনারায়ণ বসু হিন্দুমেলা প্রতিষ্ঠা করেন | এর অপর নাম ছিল জাতীয় মেলা বা চৈত্রমেলা । উদ্দেশ্য : ( ১ ) জাতীয় জীবনের সকল দিককে সঞ্জীবিত করা । ( ২ ) স্বদেশপ্রেম , দেশাত্মবােধ , জাতীয়তাবােধ ও ঐক্যবােধ জাগ্রত করা । ( ৩ ) পাশ্চাত্য সভ্যতা – সংস্কৃতির প্রসার প্রতিরােধ করা । ( ৪ ) হিন্দুদের আর্থিক স্বাধীনতা প্রতিষ্ঠা প্রভৃতি ছিল এর উদ্দেশ্য । ত্রুটি : হিন্দুমেলা হিন্দুধর্মকে প্রাধান্য দেওয়ায় শিক্ষিত বাঙালি তা সমর্থন করেনি ৷ ক্রমে তার গুরুত্ব হারিয়ে যেতে থাকে | গুরুত্ব : ‘ হিন্দুমেলা ’ কথাটির মাধ্যমে একে সাম্প্রদায়িক সভা মনে করলেও , বাস্তবে এখানে নানা ধর্মাবলম্বী মানুষের সমাবেশ ঘটেছে ।
৭৫.ব্যঙ্গচিত্র কেন গুরুত্বপূর্ণ ?
উ:-ব্যঙ্গচিত্র এক অনন্য শিল্পচিত্র মাধ্যম । এর সাহায্যে কোনাে জটিল বিষয়কে খুব সহজভাবে মানুষের সামনে তুলে দেওয়া যায় । হাস্যরস পরিবেশনও এই শিল্পের অন্যতম বৈশিষ্ট্য ।
৭৭.পুনা সার্বজনিক সভার দুটি উদ্দেশ্য লেখ ?
উ:- পুনা সার্বজনিক সভার দুটি উদ্দেশ্য হল — নানা সরকার – বিরােধী পদক্ষেপ গ্রহণ এবং আমলাতান্ত্রিকতা ।
৭৮. নন্দলাল বসু কে ছিলেন?
উ:-নন্দলাল বসু ছিলেন প্রখ্যাত আধুনিক চিত্রশিল্পীদের অন্যতম । তিনি তার ভারতীয় শৈলী ’ – তে ছবি আঁকার জন্য বিখ্যাত । তিনি অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ছাত্র ছিলেন ১৯২২ খ্রি . শান্তিনিকেতনে কলাভবনের অধ্যক্ষ হন | তার চিত্রগুলি জাতীয় ও আন্তর্জাতিক স্তরে প্রশংসিত হয়েছে |
৭৯.বটতলা সাহিত্য কি ?
বাংলা মুদ্রণের ইতিহাসে বটতলা প্রকাশনা বলতে এমন এক প্রকাশনা বােঝায় , যার সূচনা হয়েছিল ১৮১৭ খ্রি . নাগাদ শােভাবাজারে । ক্রমে তা দরজিটোলা , কুমারটুলি , আহিরীটোলা , চোরবাগান , জোড়াসাঁকো প্রভৃতি অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়ে । > Madhymik exam suggestions 2025👍👍👍: এইসব ছাপাখানা থেকে ধর্ম , আইন , নীতিকথা , পাঁচালি , অনুবাদ সাহিত্য , আদিরসাত্মক , কুরুচিপূর্ণ ও অশ্লীল অভিধাযুক্ত বহু গ্রন্থ প্রকাশিত হত ৷ এগুলি বটতলা সাহিত্য নামে পরিচিত । এই সাহিত্যের উদাহরণ হল ‘ বিদ্যাসুন্দর ’ , ‘ চন্দ্রকান্ত ‘ প্রভৃতি গ্রন্থ ।
৮০.জাতীয় শিক্ষা পরিষদের উদ্দেশ্য কী ছিল?
উ:-জাতীয় শিক্ষা পরিষদের উদ্দেশ্য ছিল দেশীয় তথা ভারতীয় শিক্ষার প্রচলন , মূলত বঙ্গভঙ্গ বিরােধী আন্দোলনে যুক্ত ছাত্রছাত্রীদের জন্য এই শিক্ষার প্রচলন করা হয়েছিল ।
৮১. আধুনিক ভারত ইতিহাসের উপাদান গুলো কি কি ?
আধুনিক ভারত ইতিহাসের উপাদান গুলি হল –
১)সরকারি উপাদান :–সরকারি সরকারি , গােয়েন্দা সরকারি প্রতিবেদন চিঠিপত্র , ডায়েরি পুলিশের কর্মচারীদের ও কাগজপত্র প্রতিবেদন ,চিঠিপত্র ।
২) বেসরকারি উপাদান :-
ব্যক্তিগত আত্মজীবনী , ব্যক্তিগত সংবাদপত্র ও ডায়েরি ,স্মৃতিকথা ,চিঠিপত্র ,সাময়িকপত্র ।
৮২. ক্ৰমনিম্ন পরিশ্রুত নীতি কি ?
উ:- ভারতের সর্বস্তরের মানুষের মধ্যে শিক্ষার প্রসার না ঘটিয়ে কেবলমাত্র উচ্চবিত্ত মানুষের মধ্যে শিক্ষার প্রসার ঘটানাে এবং তারপর তাদের মাধ্যমে ভারতের সর্বস্তরের মানুষের মধ্যে শিক্ষার বিস্তার ঘটানাের নীতিই হল ‘ ফিলট্রেশন থিওরি ‘ বা ‘ ক্ৰমনিম্ন পরিশ্রুত নীতি ‘ । একদিকে সরকারের ব্যয়সংকোচ ঘটানাে ও অন্যদিকে পাশ্চাত্য শিক্ষার বিস্তার ঘটানােই ছিল এর উদ্দেশ্য । এর প্রবক্তা ছিলেন মেকলে ।
৮৩.জনশিক্ষা কমিটি কেন গঠিত হয়েছিল?
উ:- কোম্পানির পক্ষ থেকে ভারতে শিক্ষাবিস্তারের জন্য প্রচলিত শিক্ষাব্যবস্থা সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহ করা ও জনশিক্ষার নীতি নির্ধারণের জন্য ১৮২৩ খ্রিস্টাব্দে জনশিক্ষা কমিটি গঠিত হয়েছিল ।
৮৪.উডের নির্দেশনামা কি ?
উ:- ভারতের প্রাথমিক শিক্ষা থেকে উচ্চশিক্ষার মধ্যে সামঞ্জস্য রক্ষা ও শিক্ষা সংক্রান্ত সমস্যার সমাধান করার জন্য উনিশ শতকে চার্লস উডের নেতৃত্বে একটি শিক্ষা কমিশন গঠন করা হয় । এই কমিশনের সুপারিশগুলিকে ‘ উডের ডেসপ্যাচ বা উডের নির্দেশনামা বলা হয় । এর ভিত্তিতে সরকারি শিক্ষা বিভাগ গঠন করা হয় ।
৮৫. হিন্দু প্যাট্রিয়ট কবে কার উদ্যোগে প্রকাশিত হয় ?
উ:- ১৮৫৩ খ্রি . ৬ জানুয়ারি গিরিশচন্দ্র ঘােষের সম্পাদনায় প্রথম ‘ হিন্দু প্যাট্রিয়ট’ পত্রিকা প্রকাশিত হয় ।
৮৬.মুন্ডা বিদ্রোহের প্রধান লক্ষ্য কি ছিল ?
উ:- মুন্ডা বিদ্রোহের প্রধান লক্ষ্য ছিল— ( ১ ) বহিরাগত ইংরেজ , পাদরি , জমিদার , মহাজন ও ঠিকাদারদের সরিয়ে মুন্ডারাজ প্রতিষ্ঠা করা । ( ২ ) মুন্ডাদের নিজস্ব খুঁৎকাঠি প্রথা ফিরিয়ে আনা । ( ৩ ) মুন্ডা সমাজকে শােষণ ও অত্যাচারের হাত থেকে রক্ষা করা ।
৮৭.সাঁওতাল বিদ্রোহ কোথায় সংঘটিত হয়েছিল?
উ:- ভাগনাডিহি গ্রামে সিধু ও কানুর নেতৃত্বে সাঁওতাল বিদ্রোহ সংঘটিত হয়েছিল ।
৮৮.সিপাহি বিদ্রোহ ব্যর্থ হয়েছিল কেন ?
উ:- নানা কারণে সিপাহি বিদ্রোহ ব্যর্থ হয়েছিল । যেমন— ( ১ ) সুনির্দিষ্ট লক্ষ্য ও কর্মসূচির অভাব , ( ২ ) পারস্পরিক অবিশ্বাস ও সর্বভারতীয় নেতার অভাব , ( ৩ ) সরকার পক্ষের উন্নত যুদ্ধাস্ত্র ও আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার , ( ৪ ) ভারতীয় রাজা , শিক্ষিত মধ্যবিত্ত ও বণিকদের ভূমিকা প্রভৃতি ।
৮৯.ভারতে জাতীয়তাবােধের উন্মেষে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘ গােরা ’ উপন্যাসটি ভূমিকা কী ছিল ?
উ:- ভারতে জাতীয়তাবােধের উন্মেষে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘ গােরা ’ উপন্যাসটি বিশেষ ভূমিকা পালন করেছিল ৷ গােরা ভারতবর্ষের প্রকৃত রূপটি চিনতে পেরেছিল ৷ গােরা ভারতবর্ষের গ্রামসমাজকে ভালােবেসেছিল ৷ সে ধর্মীয় পরিচয় বাদ দিয়ে মানুষের মনুষ্যত্বের পরিচয়ে বিশ্বাসী ছিল । সে ঐতিহ্যের প্রতি বিশ্বাসী হয়ে দেশাত্মবােধের প্রচার করেছিল ।
৯০. কোন সংগঠন দেশজুড়ে সিভিল সার্ভিস ও অস্ত্র আইনের বিরুদ্ধে আন্দোলন চালায় ?
উ:- ভারত সভা সিভিল সার্ভিস ও অস্ত্র আইনের বিরুদ্ধে দেশজুড়ে আন্দোলন চালায় ।
৯১.শ্রীরামপুর ত্রয়ী কারা ?
উইলিয়াম কেরি , জোশুয়া মার্শম্যান এবং উইলিয়াম ওয়ার্ডকে ‘ শ্রীরামপুর ত্রয়ী ‘ বলা হয় ।
৯২.বসু বিজ্ঞান মন্দির প্রতিষ্ঠার উদ্দেশ্য কী ছিল?
উ:- বসু বিজ্ঞান মন্দির প্রতিষ্ঠার উদ্দেশ্য ছিল পদার্থবিজ্ঞান , রসায়নবিদ্যা , উদ্ভিদবিদ্যা , মাইক্রোবায়ােলজি , বায়ােকেমিস্ট্রি , বায়ােফিজিক্স , পরিবেশ বিজ্ঞান প্রভৃতি বিজ্ঞানের বিভিন্ন শাখায় বিশ্বমানের গবেষণার ব্যবস্থা করা ।
৯৩. ‘ বিদ্যাবণিক ‘কাকে বলে ?
উ:-বই প্রকাশ ও বই ব্যাবসার কারণে ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরকে ‘ বিদ্যাবণিক ‘ বলা হয় ।
৯৪. গঙ্গাকিশাের ভট্টাচার্য স্মরণীয় কেন ?
উ:- বাংলা ছাপাখানা ও প্রকাশনার ক্ষেত্রে গঙ্গাকিশাের ভট্টাচার্য একটি স্মরণীয় নাম । তিনিই ছিলেন প্রথম বাঙালি প্রকাশক ও পুস্তক বিক্রেতা | ১৮১৮ খ্রি . তিনি ‘ বাঙাল গেজেটি প্রেস ’ স্থাপন করেন । এখান থেকে বাঙ্গাল গেজেটি পত্রিকা ছাপা হয় । তিনি প্রথম সচিত্র বই ‘ অন্নদামঙ্গল ‘ প্রকাশ করেন ।
৯৫.প্রচলিত চারীদের দেশীয় ভাষায় শিক্ষাদানের প্রয়ােজন হওয়ায় বাংলায় মুদ্রিত পাঠ্যপুস্তকের প্রয়ােজন হলে মুদ্রণশিল্পেও গতি আসে । শুধুথেকে এই কলেজের পুস্তকের চাহিদা ছাপাখানাগুলিকেও উৎসাহিত করে ।
ইতিহাসচর্চা বলতে কী বোঝ ?
উ:- সাধারণভাবে ইতিহাস হল মানবসভ্যতার ধারাবাহিক বিবর্তনের কাহিনি | বিশ শতকের আগে যে ইতিহাস রচিত হয় তাতে রাজাদের উত্থান – পতন , জয় – পরাজয় , প্রশাসনিক কাজকর্ম , রাজস্ব ব্যবস্থা , অভিজাতদের কথা , বিশিষ্ট ব্যক্তিদের কথা গুরুত্ব সহকারে আলােচিত হত । এই ধরনের ইতিহাসচর্চাকে প্রচলিত ইতিহাসচর্চা ’ বলা হয় ।
৯৬.ফোটোগ্রাফিচর্চার আধুনিকীকরণ কীভাবে ঘটে ?
উ:- ১৮৩৯ খ্রিস্টাব্দে আলেকজান্ডার ওয়ালকোট কর্তৃক ক্যামেরা আবিষ্কার হওয়ার পর থেকে ফোটোগ্রাফির সাহায্যে ছবি তােলা সহজ হয়ে ওঠে । ১৮৪৭ খ্রিস্টাব্দে ইংল্যান্ডে ‘ ক্যালােটাইপ সােসাইটি ‘ প্রতিষ্ঠার মধ্য দিয়ে এবং ১৮৫৩ খ্রিস্টাব্দের ‘ রয়্যাল ফোটোগ্রাফি সােসাইটি’ প্রতিষ্ঠার ফলে ফোটোগ্রাফিচর্চার আধুনিকীকরণ ঘটে ।
৯৭ .নবজাগরণ বলতে কী বোঝ ?
উ:-উনিশ শতকে পাশ্চাত্য শিক্ষা ও ভাবধারার প্রভাবে বাংলা দেশে চিন্তাধারার ক্ষেত্রে এক যুগান্তকারী ও সৃষ্টিশীল অধ্যায়ের সূচনা হয় । মধ্যযুগীয় অন্ধ সংস্কারের ফলে দেখা দেয় নতুন চেতনা , যুক্তিবাদ , স্বদেশপ্রেম | প্রাচ্য – পাশ্চাত্যের সমন্বয়ে এক নবযুগ সৃষ্টি হয় । ধর্ম , সমাজ , সংস্কৃতি , অর্থনীতি , রাজনীতি প্রভৃতি সমস্ত ক্ষেত্রে আসে পরিবর্তনের জোয়ার । এই যুগচেতনাই হল নবজাগরণ ।
৯৮.কালীপ্রসন্ন সিংহের ‘ হুতােম প্যাঁচার নক্সা ’ গ্রন্থে তৎকালীন সমাজের মানুষকে কয়টি ভাগে ভাগ করেন ?
উ:- কালীপ্রসন্ন সিংহের ‘ হুতােম প্যাঁচার নক্সা ’ গ্রন্থে তৎকালীন সমাজের মানুষকে তিনটি শ্রেণিতে বিভক্ত করা হয়েছে । যেমন— ( ১ ) ইংরেজি শিক্ষিত সাহেবি চালচলনের অন্ধ অনুকরণকারী শ্রেণি , ( ২ ) ইংরেজি – শিক্ষিত নব্যপন্থী এবং ( ৩ ) ইংরেজি না – জানা গোঁড়া হিন্দুসমাজ ।
৯৯.অ্যাডাম রিপাের্ট কী ?
উ:- বাংলা দেশের শিক্ষাসংক্রান্ত তথ্যসংগ্রহের কোনাে সরকারি উদ্যোগ না থাকলেও স্কটল্যান্ড – নিবাসী অ্যাডাম ব্যক্তিগত উদ্যোগেএকটি রিপাের্ট তৈরি করেন । এতে তৎকালীন শিক্ষাব্যবস্থার একটি চিত্র তুলে ধরা হয় । ১৮৩৫ খ্রিস্টাব্দের ১ জুলাই এই রিপাের্টটি গভর্নর – জেনারেল লর্ড উইলিয়াম বেন্টিঙ্কের সামনে তুলে ধরা হয় | এটি ‘ অ্যাডাম রিপাের্ট ‘ নামে পরিচিত ।
১০০.সমাজসংস্কারে নব্যবঙ্গদের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা কি ছিল?
উ:- সমাজসংস্কারে নব্যবঙ্গদের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল । যেমন— ( ১ ) এই গােষ্ঠী হিন্দুধর্মের পৌত্তলিকতা , অস্পৃশ্যতা , জাতিভেদ , সতীদাহ প্রভৃতি কুপ্রথার বিরুদ্ধে বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় প্রতিবাদে সােচ্চার হয় । ( ২ ) তাদের উদ্যোগে পাশ্চাত্যশিক্ষার প্রসার ঘটে । নারীশিক্ষা বিস্তারের পথ প্রশস্ত হয় । ( ৩ ) জুরির মাধ্যমে বিচার , সংবাদপত্রের স্বাধীনতা প্রভৃতি ক্ষেত্রে এই গােষ্ঠী সােচ্চার হয় । ( ৪ ) ভারতবাসীর মধ্যে যুক্তিবাদী ও মানবতাবাদী মানসিকতা সৃষ্টিতে ও র্যাডিক্যাল চিন্তাভাবনার প্রসারে এই দলের গুরুত্ব অনস্বীকার্য ।
১০১. অরণ্য আইন কি ?
উ:- ভারতে ইংরেজ শাসন প্রতিষ্ঠার পর সরকার ভারতের অরণ্য সম্পদের ওপর নিজ কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠার জন্য কতকগুলি আইন প্রণয়ন করেন । এগুলি ‘ অরণ্য আইন ‘ নামে পরিচিত । এগুলির মধ্যে ১৮৫৬ , ১৮৭৮ ও ১৯২৯ খ্রিস্টাব্দের আইন উল্লেখযােগ্য ।
১০২. ‘কেনারাম ’ ও ‘ বেচারাম’ কি ?
উ:- ‘কেনারাম ’ ও ‘ বেচারাম ‘ হল দুধরনের তারতম্যযুক্ত বাটখারা ৷ ‘ কেনারাম ‘ নামক বাটখারা দিয়ে সাঁওতাল – অধ্যুষিত অঞ্চলের বহিরাগত ব্যবসায়ীরা সাঁওতালদের কাছ থেকে বেশি ওজনের বাটখারা দিয়ে কৃষিপণ্য ক্রয় করে তাদের ঠকাত | আবার ‘ বেচারাম ’ নামক কম ওজনের বাটখারা দিয়ে তাদের বিভিন্ন দ্রব্য যেমন — চিনি , লবণ ইত্যাদি বিক্রি করা হত । এভাবে দু – দিক থেকেই অসহায় , দরিদ্র সাঁওতালদের ঠকানাে হত ।
১০৩.বেগম হজরতমহল কে ছিলেন?
উ:- বেগম হজরতমহল ছিলেন ১৮৫৭ খ্রিস্টাব্দে মহাবিদ্রোহের অযােধ্যার নেত্রী । তিনি তার নাবালক পুত্র বিরজিস কাদিরকে সিংহাসনে বসিয়ে নিজেই বিদ্রোহ পরিচালনা করেন | তার দেশপ্রেম , বীরত্ব , রণকৌশল তাকে চিরস্মরণীয় করে রেখেছে ।
১০৪.সভাসমিতির যুগ বলতে কী বোঝ ?
উ:- উনিশ শতকে ভারতের বিভিন্ন শহরে বহু সভাসমিতি গড়ে ওঠে । কলকাতায় গড়ে ওঠে ‘ বঙ্গ হিতকারী সভা ’ , ‘ বঙ্গভাষা প্রকাশিকা সভা ’ , ‘ ব্রিটিশ ইন্ডিয়া সােসাইটি ‘ , ‘ ইন্ডিয়ান লিগ ’ , ইন্ডিয়ান অ্যাসােসিয়েশন ’ , ‘ জাতীয় সম্মেলন ‘ প্রভৃতি । মাদ্রাজে গড়ে ওঠে ‘ মাদ্রাজ মহাজনসভা ‘ । এই কারণে ঐতিহাসিক অনিল শীল উনবিংশ শতাব্দীকে ‘ সভাসমিতির যুগ ‘ নামে অভিহিত করেন ।
১০৫.আধুনিক মুদ্রণযন্ত্র কে আবিষ্কার করেন?
উ:- ১৪৫৪ খ্রিস্টাব্দে জার্মানির গুটেনবার্গ আধুনিক মুদ্রণযন্ত্র আবিষ্কার করেন । তিনি মেইঞ্জ শহরে একটি ছাপাখানা স্থাপন করেন |
১০৬.বাংলা মুদ্রণশিল্পের উন্নতিতে ফোর্ট উইলিয়াম কলেজের অবদান উল্লেখ করো ।
উ:- বাংলা মুদ্রণশিল্পের উন্নতিতে ফোর্ট উইলিয়াম কলেজের অবদান বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ । প্রশাসনিক প্রয়ােজনে ইংরেজ কর
১০৭.উইলিয়াম ওয়ার্ড কে ছিলেন ?
উ:- উইলিয়াম ওয়ার্ড ছিলেন ব্যাপটিস্ট মিশনারি সােসাইটির সদস্য । ছাপাখানার কাজে তিনি বিশেষ অভিজ্ঞতাসম্পন্ন ব্যক্তি ছিলেন । তাঁরাই আন্তরিক প্রচেষ্টায় শ্রীরামপুরের ছাপাখানাটি বিশেষ গতি ও খ্যাতি লাভ করে ।
১০৮.গােলদীঘির গােলামখানা কাকে, কেন বলা হয় ?
উ:- ব্রিটিশ সরকার কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়কে ‘ গােলদীঘির গােলামখানা ‘ বলে ব্যঙ্গ করা হত । গােলদীঘির কাছে স্থাপিত এই বিশ্ববিদ্যালয়ে শুধুই ব্রিটিশ সরকারের কেরানি তৈরি হত । ব্রাহ্মবান্ধব উপাধ্যায় সেই কারণে একে ‘ গােলদীঘির গােলামখানা ‘ বলে বিদ্রুপ করেন ।