বহুরূপী (গল্প) সুবোধ ঘোষ MCQ, সংক্ষিপ্ত, অতি সংক্ষিপ্ত এবং রচনাধর্মী প্রশ্ন ও উত্তর
বহুবিকল্পভিত্তিক প্রশ্নোত্তর | মাধ্যমিক বাংলা – বহুরূপী (গল্প) সুবোধ ঘোষ প্রশ্ন ও উত্তর
- জগদীশবাবুর বাড়িতে আগত সন্ন্যাসীর বয়স আনুমানিক—
(A) একশো বছর
(B) হাজার বছরের বেশি
(C) পাঁচশো বছর
(D) দু’হাজার বছর
Ans: (B) হাজার বছরের বেশি
- “ খুব হয়েছে হরি , এই বার সরে পড়ো । অন্যদিকে যাও । ” একথা বলেছে–
(A) ভবতোষ
(B) কাশীনাথ
(C) অনাদি
(D) জনৈক বাসযাত্রী
Ans: (B) কাশীনাথ
- বাইজির ছদ্মবেশে হরিদার রোজগার সবচেয়ে বেশি হয়েছিল—
(A) বারো টাকা আট আনা
(B) আট টাকা দশ আনা
(C) দশ টাকা সাত আনা
(D) মাত্র পাঁচ টাকা
Ans: (B) আট টাকা দশ আনা
- সন্ন্যাসীকে বিদায় দেওয়ার সময় জগদীশবাবু দিয়েছিলেন—
(A) কাঠের খড়ম
(B) সোনার আংটি
(C) ধর্মগ্রন্থ
(D) একশো টাকার নোট
Ans: (D) একশো টাকার নোট
- সপ্তাহে হরিদা বহুরূপী সেজে বাইরে যান—
(A) এক দিন
(B) দু’দিন
(C) চার দিন
(D) পাঁচ দিন
Ans: (A) এক দিন
- বিরাগীর মতে ‘ ধন জন যৌবন ’ হলো—
(A) মিথ্যা
(B) অনর্থের মূল
(C) বঞ্চনা
(D) সুখের উৎস
Ans: (C) বঞ্চনা
- “ এসব ভাষা কী হরিদার মুখের ভাষা হতে পারে ? ” বক্তা হলেন-
(A) ভবতোষ
(B) অনাদি
(C) শিবতোষ
(D) কাশীনাথ
Ans: (B) অনাদি
- জগদীশবাবুর বাড়িতে সন্ন্যাসী ছিলেন—
(A) পাঁচ দিন
(B) সাত দিন
(C) আট দিন
(D) নয় দিন
Ans: (B) সাত দিন
- হরিদার ঘরে আড্ডা দিত—
(A) পাঁচ জন
(B) চার জন
(C) তিন জন
(D) ছয় জন
Ans: (B) চার জন
- দোকানদার হেসে ফেলে — ‘ হরির কাণ্ড ‘ – দোকানদার হরির যে সাজ দেখে হেসে ফেলেছিল সেটি হলো—
(A) পাগলের সাজ
(B) পুলিশের সাজ
(C) রূপসি বাইজির সাজ
(D) বাউলের সাজ
Ans: (C) রূপসি বাইজির সাজ
- “ এটা কী কাণ্ড করলেন , হরিদা ? ” বক্তা হলেন—
(A) ভবতোষ
(B) অনাদি
(C) পরিতোষ
(D) অতীন
Ans: (B) অনাদি
- বিরাগীর ঝোলার ভিতর যে বইটি ছিল সেটি হলো –
(A) রামায়ণ
(B) গীতা
(C) মহাভারত
(D) উপনিষদ
Ans: (B) গীতা
- বহুরূপী গল্পে হরিদাকে প্রথম যে সাজে দেখা যায় তা হলো –
(A) পাগল
(B) পুলিশ
(C) বাইজি
(D) কাবুলিওয়ালা
Ans: (A) পাগল
- হিমালয়ের গুহাবাসী সন্ন্যাসী সারাবছর শুধু একটা –
(A) আপেল
(B) লবঙ্গ
(C) দারচিনি
(D) হরীতকী খান
Ans: (D) হরীতকী খান
- “ না না , হরিদা নয় , হতেই পারে না । ” উক্তিটি করেছেন –
(A) ভবতোষ
(B) অনাদি
(C) সুবোধ
(D) জগদীশ
Ans: (A) ভবতোষ
অতিসংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর | মাধ্যমিক বাংলা – বহুরূপী (গল্প) সুবোধ ঘোষ প্রশ্ন ও উত্তর
- “ চমকে উঠলেন জগদীশবাবু ” – জগদীশবাবুর চমকে ওঠার কারণ কী ?
Ans: ‘ বহুরূপী ’ গল্পে আদুড় গা , তার উপর একটি ধবধবে সাদা উত্তরীয় এবং ছোটো বহরের সাদা থান পরিহিত এক সন্ন্যাসীকে হঠাৎ দেখে জগদীশবাবু চমকে উঠলেন ।
- বিরাগীর মতে ‘ পরমসুখ ‘ কী ?
Ans: বিশিষ্ট গল্পকার সুবোধ ঘোষের ‘ বহুরূপী ‘ গল্পে বিরাগীর মতে , ‘ পরমসুখ ‘ হলো সমস্ত সুখের বন্ধন থেকে মুক্ত হওয়া ।
- কোন ধরনের কাজ হরিদার পছন্দ ছিল না ?
Ans: কোনো অফিসের কাজ কিংবা কোনো দোকানের বিক্রিওয়ালার কাজ হরিদার পছন্দ ছিল না ।
- “ হরিদার জীবন এইরকম বহুরূপের খেলা দেখিয়েই একরকম চলে যাচ্ছে ” —কীরকম খেলা দেখিয়ে হরিদার জীবন চলে যাচ্ছে ?
Ans: ‘ বহুরূপী ‘ গল্পে বিভিন্ন সময়ে পাগল , বাইজি , পুলিশ , বাউল , কাপালিক , ফিরিঙ্গি কেরামিন সাহেবের ছদ্মবেশ ধারণ করে খেলা দেখিয়েই হরিদার জীবন চলে যাচ্ছে ।
- তীর্থযাত্রা সম্পর্কে বিরাগীর অভিমত কী ?
Ans: তীর্থযাত্রা সম্পর্কে বিরাগীর অভিমত হলো তার বুকের ভেতরেই যেহেতু সব তীর্থ , তাই ভ্রমণ করে দেখবার আর কোনো দরকার পড়ে না ।
- “ ছিল একদিন , সেটা পূর্বজন্মের কথা ” –বক্তা ছিল একদিন বলতে কী বুঝিয়েছেন ?
Ans: বক্তা হরিদা উদ্ধৃতাংশে রাগ নামক রিপুর কথা উল্লেখ করেছেন ।
- “ নইলে আমি শান্তি পাব না ” বক্তা কী না হলে শান্তি পাবেন না ?
Ans: জগদীশবাবুর বাড়িতে আগত জনৈক বিরাগী সন্ন্যাসী বস্তুা জগদীশবাবুকে কিছু উপদেশ না শুনিয়ে গেলে তিনি শাস্তি পাবেন না ।
- ” সন্ন্যাসী হাসলেন আর চলে গেলেন ” – সন্ন্যাসীর হাসির কারণ কী ?
Ans: সন্ন্যাসীকে তার বাড়ি থেকে বিদায় দেবার সময় জগদীশবাবু একশো টাকার একটা নোট জোর করে তাঁর ঝোলার ভেতর ফেলে দিয়েছিলেন । এতেই সন্ন্যাসী হাসলেন আর চলে গেলেন ।
- “ কী অদ্ভুত কথা বললেন হরিদা । ” হরিদার কোন কথাকে অদ্ভুত বলে মনে হয়েছিল ?
Ans: একজন বিরাগী সন্ন্যাসী হয়ে টাকা স্পর্শ করলে ঢং নষ্ট হয়ে যাবে ।
- ” আক্ষেপ করেন হরিদা ” – হরিদার আক্ষেপের কারণ কী ?
Ans: বিরাগী সন্ন্যাসী জগদীশবাবুর বাড়ি থেকে চলে যাওয়ায় হরিদা আক্ষেপ করেন ।
ব্যাখ্যাভিত্তিক সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর | মাধ্যমিক বাংলা – বহুরূপী (গল্প) সুবোধ ঘোষ প্রশ্ন ও উত্তর
- “ গল্প শুনে খুব গম্ভীর হয়ে গেলেন হরিদা ” – হরিদা কে ছিলেন ? কোন গল্প শুনে হরিদা গম্ভীর হয়ে গিয়েছিলেন ?
Ans: লেখক সুবোধ ঘোষের লেখা ‘ বহুরূপী ‘ নামক গল্পের কেন্দ্রীয় পেশাদার বহুরূপী চরিত্র ছিলেন হরিদা ।
লেখক সহ অন্য বন্ধুরা হরিদাকে জানিয়েছিলেন যে , সাতদিন ধরে এক সন্ন্যাসী এসে জগদীশবাবুর বাড়িতে ছিলেন । খুব উঁচুদরের সন্ন্যাসী , হিমালয়ের গুহাতে থাকেন । সারাবছর শুধু একটি ‘ হরীতকী ‘ খান , এছাড়া আর কিছুই খান না । সন্ন্যাসীর বয়স হাজার বছরের বেশি বলে মনে করা হয় । সন্ন্যাসী কাউকেই পদধূলি দেন না । জগদীশবায়ু একজোড়া কাঠের খড়মে সোনার বোল লাগিয়ে সন্ন্যাসীর পায়ে ধরলে বাধ্য হয়ে সন্ন্যাসী পা এগিয়ে দিলেন । এই নতুন খড়ম পরার ফাঁকেই জগদীশবাবু সন্ন্যাসীর পায়ের ধুলো নিয়েছিলেন ।
- “এবার মারি তো হাতি , লুঠি তো ভাঙার ” –বক্তা কে ? তিনি কোন উদ্দেশ্যে এ কথা বলেছেন ?
Ans: প্রখ্যাত লেখক সুবোধ ঘোষের ‘ বহুরূপী ‘ গল্প থেকে গৃহীত উদ্ধৃতাংশের বক্তা হলেন বহুরূপী হরিদা ।
‘ বহুরূপী ’ সেজে হরিদা যে উপার্জন করতেন তা ছিল অত্যন্ত সামান্য । আর তাই যখন জগদীশবাবুর বাড়িতে আগত সন্ন্যাসীর খাতির – যত্নের কথা শোনের তখন সিদ্ধান্ত নেন সেখানেই বহুরূপী সেজে গিয়ে মোটা কিছু আদায় করে নেবেন । পুরোদিনটা ঘুরে বেড়িয়েও তার উপার্জন হয় সামান্যই । এজন্য কাঙালের মতো বকশিশ নেওয়া থেকে নিজেকে দূরে সরিয়ে রেখে একেবারে এমন উপার্জন করবেন যাতে তার সারাবছর চলে যায় – এই উদ্দেশ্যেই তিনি প্রশ্নোধৃত কথাটি বলেছেন ।
- “ তাতে যে আমার ঢং নষ্ট হয়ে যায় । ” বক্তা কে ? ‘ ঢং ’ বলতে কী বোঝানো হয়েছে ? কীসে ঢং নষ্ট হয়ে যাবে ?
Ans: কথাসাহিত্যিক সুবোধ ঘোষের লেখা ‘ বহুরূপী ‘ গল্পে আলোচ্য কথাগুলি গল্পের কেন্দ্রীয় চরিত্র হরিদা আলোচ্য উক্তিটির বক্তা ।
গল্পে ‘ ঢং ‘ বলতে ‘ বহুরূপী ‘ সেজে হরিদা যে অভিনয় করতেন সেটাই বোঝানো হয়েছে ।
হরিদা বিরাগী সেজে জগদীশবাবুর বাড়িতে উপস্থিত হন বেশ কিছু উপার্জনের আশা নিয়ে । হরিদাকে প্রকৃত বিরাগী মনে করে জগদীশবাবু তাকে আতিথ্য গ্রহণের জন্য অনুরোধ করেন । হরিদা আতিথ্য প্রত্যাখ্যান করলে জগদীশবাবু হরিদাকে তীর্থ ভ্রমণের জন্য একশো এক টাকা প্রণামি দিতে চান । এই অর্থ গ্রহণ করলে হরিদার বহুরুপী পেশা নষ্ট হয়ে যাবে , তাই তিনি প্রকৃত সন্ন্যাসীর মতো এই অর্থ প্রত্যাখ্যান করেন ।
- “ আজ তোমাদের একটা জবর খেলা দেখাব । ” “ জবর খেলাটি সংক্ষেপে লেখো ।
অথবা , “ আজ তোমাদের একটা জবর খেলা দেখাব । ” কথাটি কে , কাকে বলেছিলেন ? বক্তা কোন জবর খেলা দেখিয়েছিলেন ?
Ans: কথাসাহিত্যিক সুবোধ ঘোষের ‘ বহুরূপী ‘ গল্পে আলোচ্য কথাগুলি গল্পের কেন্দ্রীয় চরিত্র হরিদা কথক ও তার বন্ধুদের উদ্দেশে বলেছিলেন ।
বহুরূপী সেজে টাকা রোজগার করাই ছিল হরিদার নেশা এবং পেশা । তাই সন্ন্যাসীর গল্প শুনে তাদের একটি জবর খেলা দেখাবার আগ্রহ প্রকাশ করেন হরিদা । হরিদা একটা সাদা উত্তরীয় কাধে , ছোটো বহরের একটি থান পরে , একটি ঝোলা নিয়ে রীতিমতো বিরাগী সেজে জগদীশবাবুর বাড়িতে যান । জগদীশবাবু হরিদার চেহারা দেখে ও কথাবার্তা শুনে মুগ্ধ হন । হরিদাকে তিনি আতিথ্য গ্রহণের জন্য অনুরোধ করেন এবং তীর্থ ভ্রমণের জন্য প্রণামি হিসাবে একশো এক টাকা দিতে চান । কিন্তু হরিদা খাঁটি সন্ন্যাসীর মতো এই দেখিয়েছিলেন । অর্থ প্রত্যাখ্যান করে বেরিয়ে আসেন । এরকম ছদ্মবেশ ধারণ করেই হরিদা জবর খেলা দেখিয়েছিলেন।
- “ ঠিক দুপুরবেলাতে একটা আতঙ্কের হল্লা বেজে উঠেছিল ” – কোথায় হল্লা বেজে উঠেছিল ? ‘ আতঙ্কের হল্লা ‘ বেজে ওঠার কারণ কী ?
Ans:গল্পকার সুবোধ ঘোষের ‘ বহুরূপী ‘ গল্পে ‘ আতক্ষের হল্লা ‘ বেজে উঠেছিল ঠিক একদিন দুপুরবেলা চকের বাসস্ট্যান্ডের কাছে।
একদিন দুপুরবেলাতে চকের বাসস্ট্যান্ডের কাছে । হঠাৎ – ই এক উন্মাদ পাগলের আবির্ভাব ঘটে । সেই বন্ধপাগলের মুখ থেকে লালা ঝরে পড়ছিল । তার চোখ দু’টে ছিল কটকটে লাল । আর কোমরে ছেঁড়া কম্বল ও গলায় ঝুলছিল টিনের কৌটার একট মালা । সেই বদ্ধপাগলটা আবার— “ একটা থান ইট হাতে তুলে নিয়ে বাসের উপরে বসা যাত্রীদের দিকে তেড়ে যাচ্ছিল । ” আর এসব দেখেই বাসের যাত্রীরা চেঁচিয়ে ওঠায় ‘ আতঙ্কের হল্লা ’ বেজে উঠেছিল ।
- “ এটা আমার প্রাণের অনুরোধ । ” অনুরোধটি কী ছিল ? এই অনুরোধের প্রতিক্রিয়ায় কী উত্তর শোনা গিয়েছিল ?
Ans: গল্পকার সুবোধ ঘোষের ‘ বহুরূপী ‘ গল্পে ধর্মভীরু জগদীশবাবুর ‘ প্রাণের অনুরোধ’ ছিল বিরাগীজি যেন তাঁর কাছে কয়েকটা দিন থাকেন ।
এই অনুরোধের প্রতিক্রিয়ায় বিরাগীজি বলেন যে বাইরে খোলা আকাশ ও ধরিত্রীর মাটিতে স্থান থাকতে তিনি কেন জগদীশবাবুর মতো একজন বিষয়ীর দালানবাড়ির ঘরে আশ্রয় নেবেন ।
- “ তবে কিছু উপদেশ দিয়ে যান ” –বক্তা কে ? তিনি কী উপদেশ দিতে বলেন ?
Ans: লেখক সুবোধ ঘোষ রচিত ‘ বহুরূপী ‘ গল্পে উল্লিখিত অংশটির বক্তা হলেন জগদীশবাবু । বিরাগী তাঁকে উপদেশ দিয়েছিলেন — ধন – জন – যৌবন কিছুই নয় । ওসব হলো সুন্দর সুন্দর এক এক – একটি বঞ্চনা । মন – প্রাণের সব আকাঙ্ক্ষা নিয়ে শুধু সেই একজনের আপন হতে চেষ্টা করতে হবে যাকে পেলে এই সৃষ্টির সব ঐশ্বর্য পাওয়া হয়ে যায় ।
- ” সে ভয়ানক দুর্লভ জিনিস ‘ — এখানে ‘ দুর্লভ জিনিস ‘ বলতে কী বোঝানো হয়েছে ? তাকে দুর্লভ বলা হয়েছে কেন ?
Ans: কথাসাহিত্যিক সুবোধ ঘোষের ‘ বহুরূপী ‘ গল্প থেকে উদ্ধৃত অংশটিতে দুর্লভ জিনিস ‘ বলতে সন্ন্যাসীর পায়ের ধুলোকে বোঝানো হয়েছে ।
জগদীশবাবুর বাড়িতে সাতদিন ধরে এক সন্ন্যাসী ছিলেন । তিনি ছিলেন খুব উঁচু দরের । কারণ তিনি হিমালয়ের গুহাতে থাকতেন এবং সারাবছরে শুধু একটি হরতুর্কি খেতেন । অনেকের মতে সন্ন্যাসীর বয়স হাজার বছরের বেশি । তাই এই সন্ন্যাসীর পায়ের ধুলো নেওয়াকে দুর্লভ বলা হয়েছে ।
- ” তবে কিছু উপদেশ দিয়ে যান ” -ৰস্তা কে ? তিনি কী উপদেশ দিতে বলেন ?
Ans: লেখক সুবোধ ঘোষ রচিত ‘ বহুরূপী ‘ গল্পে উল্লিখিত অংশটির বস্তা হলেন জগদীশবাবু । বিরাগী তাকে উপদেশ দিয়েছিলেন — ধন – জন – যৌবন কিছুই নয় । ওসব হলো সুন্দর সুন্দর এক এক – একটি বঞ্চনা । মন – প্রাণের সব আকাঙ্ক্ষা নিয়ে শুধু সেই একজনের আপন হতে চেষ্টা করতে হবে যাকে পেলে এই সৃষ্টির সব ঐশ্বর্য পাওয়া হয়ে যায়।
- “ সে ভয়ানক দুর্লভ জিনিস ” -এখানে ‘ দুর্লভ জিনিস ‘ বলতে কী বোঝানো হয়েছে ? তাকে দুর্লভ বলা হয়েছে কেন ?
Ans: কথাসাহিত্যিক সুবোধ ঘোষের ‘ বহুরূপী ‘ গল্প থেকে উদ্ধৃত অংশটিতে ‘ দুর্লভ ‘ জিনিস ‘ বলতে সন্ন্যাসীর পায়ের ধুলোকে বোঝানো হয়েছে ।
জগদীশবাবুর বাড়িতে সাতদিন ধরে এক সন্ন্যাসী ছিলেন । তিনি ছিলেন খুব উঁচু দরের । কারণ তিনি হিমালয়ের গুহাতে থাকতেন এবং সারাবছরে শুধু একটি হরতুকি খেতেন । অনেকের মতে সন্ন্যাসীর বয়স হাজার বছরের বেশি । তাই এই সন্ন্যাসীর পায়ের ধূলো নেওয়াকে দুর্লভ বলা হয়েছে ।
রচনাধর্মী প্রশ্নোত্তর | মাধ্যমিক বাংলা – বহুরূপী (গল্প) সুবোধ ঘোষ প্রশ্ন ও উত্তর
- “ এই শহরের জীবনে মাঝে মাঝে বেশ চমৎকার ঘটনা সৃষ্টি করেন বহুরূপী হরিদা । ” যে চমৎকার ঘটনাগুলি হরিদা ঘটিয়েছিলেন তার উল্লেখ করো ।
Ans: বাংলা সাহিত্যের অন্যতম শ্রেষ্ঠ লেখক সুবোধ ঘোষের ‘ বহুরূপী ‘ গল্পে হরিদা বহুরূপীর বেশে শহরের জীবনে মাঝে মাঝেই বিভিন্ন ঘটনা ঘটাতেন । বাঁধাধরা জীবন পছন্দ নয় বলেই হরিদা বহুরূপীর জীবনকে বেছে নিয়েছিলেন ।
একদিন হরিদা উন্মাদ পাগলের সাজে চকের বাসস্ট্যান্ডে আতঙ্কের হল্লা তুলেছিলেন । তাঁর মুখ থেকে লালা ঝরে পড়ছিল , দু’চোখ ছিল কটকটে লাল । কোমরে তাঁর ছেঁড়া কম্বল জড়ানো , গলায় টিনের কৌটার মালা আর হাতে একটা থান ইট তুলে নিয়ে তিনি যাত্রীদের দিকে মাঝে মাঝে তেড়ে যাচ্ছিলেন ।
আর এক কর্মব্যস্ত সন্ধ্যায়— ” হঠাৎ পথের উপর দিয়ে ঘুঙুরের মিষ্টি শব্দ রুমঝুম করে বেজে বেজে চলে যেতে থাকে । ” সবাই দেখে রূপসি বাইজি প্রায় নাচতে নাচতে রাস্তা দিয়ে চলে যাচ্ছে । রূপসি বাইজি মুচকি হেসে , চোখ টিপে তার ফুলসাজি দোকানদার দের দিকে এগিয়ে দেয় আর দোকানদারেরাও হাসিমুখে তাতে এক সিকি ফেলে দেয় । পরে এক দোকানদার চিনতে পারে যে এই বাইজি আসলে বহুরূপী হরিদা ।
এখানেই শেষ নয় । দয়ালবাবুর লিচু বাগানে নকল পুলিশের সাজে মাস্টারমশাইয়ের কাছ থেকে ঘুস ও প্রশংসা আদায় ছিল হরিদার বড়ো প্রাপ্তি ।
- “ হরিদার জীবনে সত্যিই একটা নাটকীয় বৈচিত্র্য আছে ” —উদ্ধৃতাংশটি কে থেকে নেওয়া হয়েছে ? বক্তার এরূপ উত্তির কারণ কী তা বিবৃত করো ।
Ans: উৎস : উদ্ধৃতাংশটি বাংলা সাহিত্যের বিশিষ্ট লেখক সুবোধ ঘোষের ‘ বহুরূপী ‘ গল্প থেকে নেওয়া হয়েছে ।
বক্তার এরূপ উত্তির কারণ : গল্পকথক অর্থাৎ লেখক তার কাছের মানুষ হরিদা সম্পর্কে খুবই সংবেদনশীল ছিলেন । হরিদার কাছে এসে তিনি বেশ কিছুটা সময়ও কাটান সঙ্গে অবশ্য আরও দুই সঙ্গী ভবতোষ ও অনাদি থাকেন । চায়ের আড্ডাটা বসে হরিদার ঘরেই ।
হরিদা কোনো নির্দিষ্ট কাজ করেন না । যদিও যোগ্যতা অনুযায়ী ইচ্ছে করলেই হরিদা অফিস বা কোনো দোকানে বিক্রিওয়ালার কাজ পেয়ে যেতেন । কিন্তু নির্দিষ্ট সময় বেরিয়ে নির্দিষ্ট কোনো কাজে হরিদার আপত্তি । অভাবের সংসারে হরিদার কোনো কোনো দিন হয়তো খাওয়াই হয় না । তার মধ্যেই হঠাৎ হঠাৎ বিচিত্র ছদ্মবেশে পথে বের হতেন হরিদা । কখনো বাসস্ট্যান্ডের কাছে উন্মাদের বেশে তাঁকে দেখা যেত , কখনো শহরের রাজপথে বাইজির বেশে ঘুঙুর বাজিয়ে চলে যেতেন । বহুরূপী সেজে হরিদা যে অনেক টাকা রোজগার করেন তাও নয় । কিন্তু এতেই হরিদা আনন্দ পান । কখনো বোচকা হাতে বুড়ো কাবুলিওয়ালা , কখনো হ্যাট – কোট – প্যান্টালুন পরা ফিরিঙ্গি কেরামিন সাহেবের রূপেও হরিদাকে দেখতে পাওয়া যায় ।
তাঁর বিচিত্র সব সাজ আর চরিত্রের সাথে তাল মিলিয়ে যথাযথ আচরণে মানুষ কখনো হাসত , প্রশংসা করত আবার কখনো বা বিরক্ত হতো । আর হরিদার যা সামান্য বকশিশ জুটত— “ তাতেই তাঁর ভাতের হাঁড়ির দাবি মিটিয়ে দিতে চেষ্টা করেন ” , কিন্তু এই দারিদ্র্যের মধ্যেও হরিদার জীবনের এই বহুরুপী সেজে পথে বের হওয়াকেই লেখ নাটকীয় বৈচিত্র্য বলেছেন ।
- জগদীশবাবুর বাড়িতে হরিদা বিরাগী সেজে যাওয়ার পর যে ঘটনা ঘটেছিল তা বর্ণনা করো ।
Ans: প্রখ্যাত সাহিত্যিক সুবোধ ঘোষের লেখা ‘ বহুরূপী ‘ গল্পে জগদীশবাবু হলেন বিত্তশালী মানুষ । জগদীশবাবুর বাড়িতে হিমালয়ের গুহা থেকে আগত এক সন্ন্যাসীর গল্প শুনে হরিদারও ইচ্ছা হয় বহুরুপী সেজে তার বাড়িতে গিয়ে মজা করে কিছু অর্থ উপার্জন করার । সেই কারণেই জগদীশবাবুর বাড়িতে তিনি বিরাগী সেজে হাজির হয়েছিলেন। হরিদার খালি খায়ে ছিল সাদা উত্তরীয় আর পরনে ছিল ছোটো বহরের একটি সাদা থান, গা ছিল ধুলো মাখা , মাথায় ফুরফুর করে উড়ছিল শুকনো সাদা চুল , হাতে ছিল একটি ঝোলা , আর তার ভিতরে ছিল শুধু একটা বই গীতা । তাঁর শীর্ণ শরীর দেখে মনে হচ্ছিল অশরীরী । জগদীশবাবুকে বিরাগী বলেন— “ আপনি বোধ হয় এগারো লক্ষ টাকার সম্পত্তির অহংকারে নিজেকে ভগবানের চেয়েও বড়ো বলে মনে করেন ।” এই কথা শুনে জগদীশবাবু সিঁড়ি ধরে নেমে এসে বিরাগীরূপী হরিদার কাছে ক্ষমাপ্রার্থনা করেন এবং তাঁকে রাগ করতে নিষেধ করেন । তখন আগতুক বিরাগী বলেন— “ আমি বিরাগী , রাগ নামে কোনো রিপু আমার নেই । ” এরপর জগদীশবাবু বিরাগীকে তাঁর বাড়িতে থাকার জন্য অনুরোধ করলে বিরাগী তাঁকে বলেন যে ধরিত্রীর মাটিতেই তাঁর স্থান , তাই তিনি এই দালান বাড়িতে থাকবেন না । খাওয়ার কথা বলা হলে বিরাগী বলেন যে তিনি কোনো কিছু স্পর্শ না করে শুধু এক গ্লাস ঠান্ডা জল খাবেন ।
বিরাগী জগদীশবাবুকে সবরকম মোহ থেকে মুক্ত হওয়ার কথা বলেন । তিনি বলেন — ধন জন যৌবন সবকিছুই হলো সুন্দর সুন্দর এক – একটি বঞ্ছনা যাকে পেলে সৃষ্টির সব ঐশ্বর্য পাওয়া যাবে । তার কাছাকাছি যাওয়ার উপদেশ দিয়ে বিরাগী চলে র গেলেন । তীর্থ ভ্রমণের জন্য জগদীশবাবু বিরাগীকে একশো এক টাকা দিতে চাইলে বিরাগী সেই টাকা না নিয়ে বলেন- “ আমার বুকের ভেতরেই যে সব তীর্থ ভ্রমণ করে দেখবার ততো কোনো দরকার হয় না । ” এরই সঙ্গে তিনি সোনাও অনায়াসে মাড়িয়ে যাওয়ার কথা র বলে জগদীশবাবুর বাড়ি থেকে চলে যান । এইসমস্ত দেখে জগদীশবাবু স্থির বিস্ময়ে দাঁড়িয়ে রইলেন ।
- ‘ বহুরূপী ‘ গদ্যাংশে ‘ হরিদা ‘ – র চরিত্র আলোচনা করো ।
Ans: প্রখ্যাত সাহিত্যিক সুবোধ ঘোষের লেখা ‘ বহুরূপী ‘ গল্পটির কাহিনি বিকাশলাভ করেছে হরিদার চরিত্রকে কেন্দ্র করে । অত্যন্ত গরিব মানুষ ছিলেন এই হরিদা । অভাব তাঁর নিত্যসঙ্গী হলেও কাজের মধ্যে দিয়েই তিনি মুক্তি ও স্বাধীনতার আনন্দ খুঁজে নিতে চান বলেই বহুরূপীর পেশা গ্রহণ করেছিলেন হরিদা ।
হরিদার চরিত্রের মধ্যে সামাজিকতার দিকটিও লক্ষণীয় । শহরের সবথেকে সরু গলিটার ভেতর হরিদার ছোট্ট ঘরটি ছিল কথক ও অন্য বন্ধুদের সকাল – সন্ধার আড্ডার ঘর । চা , চিনি , দুধ হরিদার বন্ধুরাই নিয়ে আসতেন আর হরিদা উনানের আচে জল ফুটিয়ে দিতেন ।
কখনো বাসস্ট্যান্ডের পাগল , কখনো রাজপথ দিয়ে হেঁটে যাওয়া বাইজি , কাপালিক , বাউল , বুড়ো কাবুলিওয়ালা , ফিরিঙ্গি কেরামিন সাহেব – এরকম অজস্র রূপে তাঁকে দেখা গেছে । শুধু সাজ নয় , চরিত্রের সাথে মানানসই ছিল তার আচরণ , কিন্তু দিন শেষে দারিদ্র্য্যই হয়েছে তাঁর সঙ্গী ।
হরিদার চরিত্রটি পরিণতির শীর্ষ ছুঁয়েছে কাহিনির শেষে । বিরাগীর বেশে তিনি জগদীশবাবুকে মুগ্ধ করলেও তাঁর আতিথ্য গ্রহণের অনুরোধ কিংবা প্রণামি হরিদা প্রত্যাখ্যান করেন । এভাবেই পেশাগত সততায় হরিদা অর্থলোভকে ত্যাগ করে বন্ধুদের বলেন— ” শত হোক , একজন বিরাগী সন্ন্যাসী হয়ে টাকাফাকা কী করে স্পর্শ করি বল ? তাতে যে আমার ঢং নষ্ট হয়ে যায় । ” এছাড়াও হরিদা বলেন – বকশিশ ছাড়া বহুরূপীর জীবন আর কিছু আশা করতে পারে না । হরিদার একথা দীর্ঘশ্বাসের মতো শোনালেও তা আসলে তাঁকে সততার আলোয় আলোকিত করে ।
- ” কী অদ্ভুত কথাই বললেন হরিদা ” কী প্রসঙ্গে হরিদা অদ্ভুত কথ বলেছিলেন ? কথাটি অদ্ভুত কেন ?
Ans: উৎস: প্রশ্নে উদ্ধৃত অংশটি সাহিত্যিক সুবোধ ঘোষের লেখা ‘ বহুরূপী ‘ নামক গল্প থেকে নেওয়া হয়েছে ।
হরিদার অদ্ভুত কথা বলার প্রসঙ্গ : বিরাগী সেজে জগদীশবাবুর বাড়িয়ে গিয়ে হরিদা সেখান থেকে পাওয়া প্রণামির একশো এক টাকা অবহেলায় প্রত্যাখান করে চলে আসেন । এই ঘটনা তাঁর বাড়িতে চায়ের আড্ডায় উপস্থিত কথক এবং তাঁর বন্ধুদের কাছে একটু বিস্ময়কর বলে মনে হয় । হরিদাকে তাঁরা বলেন— “ এটা কী কান্ড করলেন , হরিদা ? জগদীশবাবু তো অত টাকা সাধলেন , অথচ আপনি একেবারে খাঁটি সন্ন্যাসীর মতো সব তুচ্ছ করে সরে পড়লেন ? ” হরিদা উত্তরে জানান যে একজন বিরাগী সন্ন্যাসী হয়ে টাকা স্পর্শ করা তাঁর পক্ষে সম্ভব নয় । কারণ তাতে তাঁর ‘ ঢং ’ নষ্ট হয়ে যাবে — একথাকে কথকদের অদ্ভুত কথা বলে মনে হয় ।
কথাটি অদ্ভুত মনে হওয়ার কারণ: কথাটি অদ্ভুত বলে মনে হওয়ার কারণ প্রথমত , হরিদা ছিলেন একজন পেশাদার বহুরূপী । পেশার টানেই ও মনোরঞ্জনের জন্য তাঁর এই বহুরুপী সাজ । তাই তাঁর পক্ষে সন্ন্যাসীর বেশ ধারণ করে , সন্ন্যাসীর জীবন ভাবনায় ভাবিত হয়ে যাওয়াটা ছিল যথেষ্ট বিস্ময়কর । দ্বিতীয়ত , বহুরূপী হরিদার ছিল অভাবের জীবন । জগদীশবাবুর বাড়ি যাওয়ার আগেই হরিদা বলেছিলেন , “ এবার মারি তো হাতি , লুঠি তো ভাণ্ডার ” —তার সারাবছরের প্রয়োজনীয় অর্থ সন্ন্যাসী সেজে হাতিয়ে নেওয়াই ছিল লক্ষ্য ।
যে মানুষটার দু’বেলা ভাত জোটে না তিনি যখন সন্ন্যাসীর ‘ চং ‘ নষ্ট হয়ে যাওয়ার কথা বলেন তখন তা অদ্ভুত বলেই মনে হয় । কারণ এর ফলে সারাটা জীবন হরিদাকে শুধু অভাবের মধ্যে দিয়েই কাটাতে হবে ।
- “ খাঁটি মানুষ তো নয় , এই বহুরূপী জীবন এর বেশি কী আশা করতে পারে ” —বস্তা কে ? খাঁটি মানুষ নয় বলার তাৎপর্য কী ?
Ans: উৎস : প্রশ্নে উদ্ধৃত অংশটি লেখক সুবোধ ঘোষের লেখা ‘ বহুরূপী ’ শীর্ষক গল্প থেকে নেওয়া হয়েছে ।
বক্তা : বহুরুপী গল্পে প্রশ্নে উল্লিখিত অংশটির বক্তা হলেন বহুরূপী হরিদা ।
খাটি মানুষ নয় বলার তাৎপর্য : হরিদা পেশায় ছিলেন বহুরূপী । জীবিকার প্রয়োজনে কখনো পাগল , বাইজি , কখনো নকল পুলিশ এবং আরও অনেক কিছু সেজে তিনি উপার্জন করতেন । যদিও সে উপার্জন ছিল প্রয়োজনের তুলনায় অত্যন্ত সামান্য ।
এই হরিদা বিরাগী সেজে জগদীশবাবুর বাড়ি থেকে অনেক উপার্জনের আশা করেছিলেন । হরিদার ছদ্মবেশ বুঝতে না পারায় প্রণামি হিসেবে জগদীশবাবু অনেক টাকাই হরিদাকে দিতে চেয়েছিলেন । কিন্তু বহুরূপী হরিদা সন্ন্যাসীর ছদ্মবেশে নিজেকে এতটাই একাত্ম করে ফেলেছিলেন , উদাসীনভাবে প্রণামির অর্থ ফেলে চলে আসেন । কথক ও তাঁর সঙ্গীরা হরিদার এই আচরণ সমর্থন করতে পারেননি । তখন হরিদা জানান , “ শত হোক , একজন বিরাগী সন্ন্যাসী হয়ে টাকা ফাকা কী করে স্পর্শ করি বল ? তাতে যে আমার ঢং নষ্ট হয়ে যায় । এরপর হরিদা অবশ্য জানান বকশিশের জন্য তিনি অবশ্যই জগদীশবাবুর কাছে যাবেন । কারণ বহুরূপী হিসেবে মাত্র আট – দশ আনাকেই তিনি নিজের প্রাপ্য বলে মনে করেন । ‘ খাটি মানুষ ‘ অর্থাৎ যে নিজের জীবনাচরণ ও জীবনদর্শনকে সদভাবে অনুসরণ করেন তাঁর হয়তো অনেক পাওনা হতে পারে কিন্তু হরিদা নিজেকে বহুরূপী ভাবেন । পেশার আড়ালে তাঁর ভেতরের মানুষটা যে সমাজের কাছে হারিয়ে গিয়েছে – সেই বিষণ্ণতাই প্রকাশ পেয়েছে হরিদার উচ্চারণে ।
- “ আজ তোমাদের একটা জবর খেলা দেখাব । ” “ জবর খেলা – টি সংক্ষেপে লেখো ।
অথবা , “ আজ তোমাদের একটা জবর খেলা দেখাব । ” কথাটি কে , কাকে বলেছিলেন ? বক্তা কোন জবর খেলা দেখিয়েছিলেন ।
Ans: কথাসাহিত্যিক সুবোধ ঘোষের ‘ বহুরূপী ‘ গল্পে আলোচ্য কথাগুলি গল্পের কেন্দ্রীয় চত্রিত্র হরিদা কথক ও তাঁর বন্ধুদের উদ্দেশ্যে বলেছিলেন । বহুরূপী সেজে টাকা রোজগার করাই ছিল হরিদার নেশ্য এবং পেশা । তাই সন্ন্যাসীর গল্প শুনে তাদের একটি জবর খেলা দেখাবার আগ্রহ প্রকাশ করেন হরিদা । হরিদা একটা সাদা উত্তরীয় কাঁধে , ছোটো বহরের একটি থান পরে , একটি ঝোলা নিয়ে রীতিমতো আর সেইজন্য বিরাগী সেজে জগদীশবাবুর বাড়িতে যান । জগদীশবাবু হরিদার চেহারা দেখে ও কথাবার্তা শুনে মুগ্ধ হন । হরিদাকে তিনি আতিথ্য গ্রহণের জন্য অনুরোধ করেন এবং তীর্থ ভ্রমণের জন্য প্রনামি হিসাবে একশো এক টাকা দিতে চান । কিন্তু হরিদা খাঁটি সন্ন্যাসীর মতো এই অর্থ প্রত্যাখ্যান কবে বেরিয়ে আসেন এরকম ছদ্মবেশ ধারণ করেই হরিদা জবর খেলা দেখিয়েছিলেন ।
- “ আমার অপরাধ হয়েছে । আপনি রাগ করবেন না । ” বস্তা কে ? সে কী অপরাধ করেছে বলে তার মনে হয়েছে ?
Ans: লেখক সুবোধ ঘোষের ‘ বহুরূপী ‘ গল্পে শহরের সম্পন্ন ব্যক্তি জগদীশবাবু উক্ত কথাটি বলেছেন ।
‘বহুরূপী ‘ গল্পে জগদীশবাবুর বাড়ির বারান্দার নীচে এসে দাঁড়ান একজন বিরাগী সন্ন্যাসী । জগদীশবাবু চেয়ার ছেড়ে উঠে দাঁড়িয়ে বারান্দা থেকেই সন্ন্যাসীকে আসুন বলে আমন্ত্রণ জানান । তখন সন্ন্যাসী তার আচরণের সমালোচনা করে বলেন – “ আপনি বোধ হয় এগারো লক্ষ টাকার সম্পত্তির অহংকারে নিজেকে ভগবানের চেয়েও বড়ো বলে মনে করেন । ” আর সন্ন্যাসীর এই মন্তব্য শুনে জগদীশবাবু নিজের আচরণকে ‘ অপরাধ ‘ বলে মনে করেছেন ।
- “ তেমনই অনায়াসে সোনাও মাড়িয়ে চলে যেতে পারি । ” — উক্তিটি কার ? কোন প্রসঙ্গে তাঁর এই মন্তব্য ? মন্তব্যের আলোকে বক্তার চরিত্রবৈশিষ্ট্য আলোচনা করো ।
Ans: ছদ্মবেশী সন্ন্যাসী হরিদা আলোচ্য উক্তিটি করেছে ।
হরিদা সন্ন্যাসী সেজে জগদীশবাবুর বাড়িতে উপস্থিত হলে তিনি সন্ন্যাসীকে তীর্থ ভ্রমণের জন্য একশো টাকা দিতে চান এবং সন্ন্যাসীর কাছে ব্যাকুল স্বরে শান্তি প্রার্থনা করেন । সন্ন্যাসী হরিদার কাছে পার্থিব টাকা অতি তুচ্ছ , এ প্রসঙ্গেই তার প্রশ্নোধৃত মন্তব্য ।
আলোচ্য উক্তিটিতে বক্তা হরিদার নির্লোভ মানসিকতা ফুটে উঠেছে । আর্থিক দিক থেকে হরিদা খুবই গরিব । অভাবের কারণে বেশিরভাগ সময়ই তার কপালে ভাত জোটেনি । ছদ্মবেশে হরিদা মানুষের মনোরঞ্জন করে দু – এক আনা উপার্জন করেছে . তাতে তার অন্নসংকুলান না হলেও কারো কাছে অভিযোগ করেনি । তাই দেখা যায় , তিনি সারা বছরের জন্য অর্থ সঞ্চয় করার উদ্দেশ্যে সন্ন্যাসীর রূপ ধরে জগদীশবাবুর বাড়িতে উপস্থিত হলে তিনি সন্ন্যাসীকে একশো টাকা দান হিসেবে দিয়েছেন । কিন্তু সন্ন্যাসী এই দান গ্রহণ করেনি , ফিরিয়ে দিয়েছেন পরিবর্তে ঠান্ডা জল চেয়েছে । আসলে নির্লোভ দরিদ্র হরিদা তার পেশাকে বিক্রি করতে চায়নি , সেই পেশার মধ্যেই সে মুক্তির স্বাদ গ্রহণ করতে চেয়েছে ।
বহুরূপী(গল্প) থেকে আরোও প্রশ্ন ও উত্তর দেখুন :
বহুরূপী গল্প থেকে সম্পূর্ণ প্রশ্ন উত্তর আলোচনা-PART-4
©kamaleshforeducation.in(2023)