ভারতের ভূ প্রাকৃতিক বিভাগ (ভারত – পঞ্চম অধ্যায়)

 

 

Table of Contents

ভারতের ভূ প্রাকৃতিক বিভাগ (ভারত – পঞ্চম অধ্যায়)  

মাধ্যমিক ভূগোল প্রশ্ন ও উত্তর | Madhyamik Geography   Question and Answer :

MCQ | ভারতের ভূ প্রাকৃতিক বিভাগ (ভারত – পঞ্চম অধ্যায়)  

  1. হিমালয় হল একটি— 

(A) নবীন ভঙ্গিল পর্বত

(B) প্রাচীন ভঙ্গিল পর্বত

(C) সঞ্চয়জাত পর্বত

(D) স্তূপ পর্বত

Ans: (A) নবীন ভঙ্গিল পর্বত

  1. ভারতের উচ্চতম শৃঙ্গ হল –

(A) নন্দা দেবী

(B) মাউন্ট এভারেস্ট

(C) কাঞ্চনজঙ্ঘা

(D) K2 

Ans: (D) K2

  1. নিম্নলিখিত কোন্ হিমালয় ‘ ট্রান্স হিমালয় ‘ নামে পরিচিত ? 

(A) জাস্কর পর্বতশ্রেণি

(B) পিরপাঞ্জাল পর্বতশ্রেণি

(C) কারাকোরাম পর্বতশ্রেণি

(D) লাভাক পর্বতশ্রেণি

Ans: (C) কারাকোরাম পর্বতশ্রেণি

  1. হিমালয় পর্বতের বিস্তার পূর্ব – পশ্চিমে হল প্রায় –

(A) ২৪০০ কিমি

(B) ২৬০০ কিমি

(C) ২৫০০ কিমি

(D) ২৭০০ কিমি

Ans: (D) ২৭০০ কিমি

  1. হিমালয় পর্বতের ২ য় উচ্চতম শৃঙ্গ হল – 

(A) মাউন্ট এভারেস্ট

(B) কাঞ্চনজঙ্ঘা

(C) গডউইন অস্টিন

(D) নাঙ্গা পর্বত 

Ans: (B) কাঞ্চনজঙ্ঘা

  1. সিয়াচেন হিমবাহ – এর অবস্থান হল যুক্ত করেছে ? 

(A) জোজিলা 

(B) হিমাচল প্রদেশে

(C) জম্মু ও কাশ্মীরে

(D) পাকিস্তানে

Ans: C) জম্মু ও কাশ্মীরে

  1. তিব্বতে ৭ ভারতে অবস্থিত হিমালয় পর্বতের সর্বোচ্চ শৃঙ্গ হল –

(A) মাউন্ট এভারেস্ট 

(B) কাঞ্চনজঙ্ঘা 

(C) কামেট

(D) অন্নপূর্ণা

Ans: (B) কাঞ্চনজঙ্ঘা

  1. মাউন্ট এভারেস্ট কোথায় অবস্থিত ?

(A) চিন 

(B) ভারত

(C) নেপাল

(D) ভুটান 

Ans: (C) নেপাল

  1. কোন্ গিরিপথ লাদাখের রাজধানী লেহ কাশ্মীরের সঙ্গে যুক্ত করেছে – 

(A) জোজিলা

(B) পিরপাঞ্জাল

(C) বুলন্দপীর

(D) জওহর

Ans: (A) জোজিলা

  1. কারেওয়া মৃত্তিকা দেখা যায়— 

(A) দুন উপত্যকা

(B) ভাবর অঞ্চলে

(C) কাশ্মীর উপত্যকায়

(D) তরাই অঞ্চলে

Ans: (C) কাশ্মীর উপত্যকায় 

[ আরোও দেখুন: Madhyamik Geography Suggestion 2023 Click here ]

  1. চমু কুলু উপত্যকা কোন্ রাজ্যে অবস্থিত ?

(A) জম্মু ও কাশ্মীর

(B) উত্তরাঞ্চল

(C) হিমাচল প্রদেশ

(D) সিকিম

Ans: (C) হিমাচল প্রদেশ

  1. কোটি ভারতের উচ্চতম সড়ক সেতু ?

(A) লিপু লেক

(B) খারদুংলা

(C) লেপু লেক

(D) নাথুলা

Ans: (B) খারদুংলা

  1. ভারতের দ্বিতীয় উচ্চতম গিরিপথ হল –

(A) জোজিলা

(B) থাংলা

(C) চাংলা

(D) বানিহাল পাস

Ans: (B) থাংলা

  1. উচ্চ গঙ্গা সমভূমির নবীন পলিমাটি গঠিত অঞ্চলকে বলে –

(A) ভাঙ্গার 

(B) ভাবর

(C) খাদার

(D) তরাই

Ans: (C) খাদার

  1. রাজস্থানের শুষ্ক হ্রদকে বলে –

(A) রণ

(B) ব্রয়ান

(C) তাল

(D) ধান্দ 

Ans: (D) ধান্দ

  1. চিড কারাকোরাম পর্বতশ্রেণি কোন্ রাজ্যে অবস্থিত ? 

(A) জম্মু ও কাশ্মীর

(B) হিমাচল প্রদেশ

(C) উত্তরাখণ্ড

(D) সিকিম

Ans: A) জম্মু ও কাশ্মীর

  1. মেঘালয়ের সর্বোচ্চ শৃঙ্গ হল – 

(A) মাউন্ট আবু

(B) শিলং

(C) খাসি

(D) গারো 

Ans: (B) শিলং

  1. নিম্নলিখিত কোন পাহাড়ের সাতটি শ্রেণি রয়েছে ? 

(A) বিন্ধ্য পর্বত

(B) আরাবল্লী পর্বতশ্রেণি 

(C) নীলগিরি পর্বত 

(D) সাতপুরা পর্বত

Ans: (D) সাতপুরা পর্বত

  1. সিয়াচেন হিমবাহ কোন্ পর্বতে অবস্থিত ?

(A) লাডাক

(B) কারাকোরাম

(C) পিরপাঞ্জাল

(D) হিমালয়

Ans: (B) কারাকোরাম

  1. নক্‌রেক্ কোন্ পাহাড়ের উচ্চতম শৃঙ্গ ?

(A) গারো পাহাড়

(B) জয়ন্তিয়া পাহাড়

(C) খাসি পাহাড়

(D) লাডাক

Ans: A) গারো পাহাড়

  1. হিমালয়ের পূর্বসীমা কোথায় পর্যন্ত বিস্তৃত ? 

(A) নাঙ্গা পর্বত 

(B) কাঞ্চনজঙ্ঘা 

(C) নামচাবারোয়া 

(D) শিবালিক

Ans: (C) নামচাবারোয়া মেঘালয়

  1. পঞ্ঞ নদের দেশ বলা হয় কোন্ রাজ্যকে ?

(A) অন্ধ্রপ্রদেশ

(B) পাঞ্জাব

(C) জম্মু ও কাশ্মীর

(D) উত্তরাখণ্ড 

Ans: (B) পাঞ্জাব

  1. গারো, জয়ন্তিয়া , মিকির প্রভৃতি পাহাড়ে ঘেরা মালভূমি হল –

(A) তিব্বত 

(B) ভাঙ্গার 

(C) মেঘালয়

(D) ছোটোনাগপুর 

Ans: (C) মেঘালয়

  1. নাগা দেখা যায় কোন্ রাজ্যে ? 

(A) অরুণাচল প্রদেশ

(B) নাগাল্যান্ড

(C) মিজোরাম

(D) মণিপুর 

Ans: (B) নাগাল্যান্ড

  1. কোন্ গিরিপথ মুম্বাই ও পুণের মধ্যে অবস্থিত ?

(A) পালঘাট

(B) ভোরঘাট

(C) থলঘাট

(D) হলদিঘাট

Ans: (B) ভোরঘাট

  1. উচ্চগঙ্গা সমভূমির নবীন পলিমাটি গঠিত অঞ্চলকে বলে— 

(A) ভাবর

(B) ভুর

(C) ভাঙ্গার

(D) খাদার 

Ans: (D) খাদার

  1. থর মরুভূমির পশ্চিমে বৃক্ষহীন শুষ্ক অঞ্চলকে বলে—

(A) মরুস্থলী

(B) বাগার

(C) হামাদা

(D) রোহি

Ans: (A) মরুস্থলী

  1. ভাঙ্গার অঞ্চল পাঞ্জাবে কী নামে পরিচিত ?

(A) ধায়া

(B) বেট

(C) ধান্দ 

(D) খাদার

Ans: (A) ধায়া

  1. আরাবল্লীর পশ্চিম অংশের প্লাবন অঞ্চল কী নামে পরিচিত –

(A) বাগার

(B) হামাদা

(C) রোহি 

(D) তরাই

Ans: (C) রোহি

  1. বিন্ধ পর্বত কী জাতীয় পর্বত –

(A) ক্ষয়জাত পর্বত

(B) ভঙ্গিল পর্বত

(C) সঞ্চয় জাত পর্বত 

(D) স্তূপ পর্বত

Ans: (D) স্তূপ পর্বত

  1. আর্মাকোন্ডা কোন্ পর্বতের উচ্চতম শৃঙ্গ ?

(A) পশ্চিমঘাট

(B) আরাবল্লি

(C) পূর্বঘাট

(D) শিবালিক

Ans: (C) পূর্বঘাট

  1. কোন্‌টি পশ্চিমঘাটের সর্বোচ্চ শৃঙ্গ ?

(A) সালহের

(B) কলসুবাই

(C) ভাভুলমালা

(D) কুন্দ্রেমুখ

Ans: C) ভাভুলমালা

  1. ধুঁয়াধর জলপ্রপাত কোন্ উপত্যকায় অবস্থিত ?

(A) তাপ্তি

(B) নর্মদা

(C) কুলু

(D) মানালি

Ans: (B) নর্মদা

  1. গেরসোপ্পা জলপ্রপাত কোন্ নদী থেকে উৎপন্ন হয়েছে ? 

(A) নর্মদা 

(B) সবরমতী

(C) সরাবতী

(D) তাপ্তি 

Ans: (C) সরাবতী

  1. মালাবার উপকূলের দীর্ঘতম কয়াল কোন্‌টি ? 

(A) অষ্টমুদি

(B) কায়মকুলম

(C) ভেম্বানাদ

(D) পুশমীকোটা 

Ans: (C) ভেম্বানাদ

  1. ভারতের মরুভূমির বেশিরভাগ অংশ কোন্ রাজ্যে অবস্থিত ?

(A) গুজরাট

(B) পাঞ্জাব

(C) রাজস্থান 

(D) ওড়িশা 

Ans: (C) রাজস্থান 

  1. রাজস্থানের শুষ্ক হ্রদকে বলে –

(A) হামাদা

(B) ধান্দ

(C) রণ

(D) বাগার

Ans: (B) ধান্দ

  1. মালাবার উপকূল অবস্থিত –

(A) কেরল রাজ্যে

(B) তামিলনাড়ু রাজ্যে

(C) মহারাষ্ট্রে রাজ্যে

(D) কেরলে রাজ্যে 

Ans: (D) কেরলে রাজ্যে

  1. ভারতের পূর্ব উপকূলের বৃহত্তম হ্রদের নাম কী ?

(A) চিন্তা 

(B) পুলিকট

(C) কোলেরু

(D) ভেম্বানাদ

Ans: (C) কোলেরু

  1. দক্ষিণ ভারতের সর্বোচ্চ শৃঙ্গ কোনটি ? 

(A) ভাতুলমালা

(B) আনাইমুদি

(C) নীলগিরি

(D) দোদাবেতা

Ans: (B) আনাইমুদি

  1. কোন্ পর্বত ‘ বসুন্ধরা ধবলশীর্ষ ‘ নামে পরিচিত ?

(A) মাউন্ট এভারেস্ট শৃঙ্গ

(B) হিমাদ্রি হিমালয়

(C) পামির

(D) কারাকোরাম

Ans: (D) কারাকোরাম

  1. কর্ণাটক মালভূমির ঢেউ খেলানো ভূভাগকে বলে—

(A) মালনদ

(B) ময়দান

(C) ডেকেনট্র্যাপ

(D) কোনোটিই নয়

Ans: (A) মালনদ

  1. আন্দামান ও নিকোবরের সর্বোচ্চ শৃঙ্গ হল –

(A) ব্যারেন

(B) গিরনার

(C) নারকোল্ডাম

(D) স্যাডেল পিক

Ans: (D) স্যাডেল পিক

  1. হিমালয়ের সর্ব উত্তরের গিরিশ্রেণির নাম কী ?

(A) হিমাদ্রি হিমালয়

(B) শিবালিক হিমালয়

(C) হিমাচল হিমালয়

(D) টেথিস হিমালয়

Ans: (D) টেথিস হিমালয়

  1. আরাবল্লীর সর্বোচ্চ শৃঙ্গ হল –

(A) রাজমহল

(B) বিহারীনাথ

(C) গুরুশিখর

(D) মাউন্ট আবু

Ans: (C) গুরুশিখর

  1. ছোটোনাগপুরের সর্বোচ্চ পাহাড় হল –

(A) পরেশনাথ

(B) মহাবালেশ্বর

(C) বিহারীনাথ

(D) রাজমহল

Ans: (A) পরেশনাথ

  1. শিবালিক হিমালয়ের অপর নাম হল –

(A) ট্রান্স হিমালয়

(B) অব হিমালয় 

(C) মলয়াদ্রি

(D) সহ্যাদ্রি 

Ans: (B) অব হিমালয়

  1. নীলগিরি ও পশ্চিমঘাট পর্বতের ফাঁক কী নামে পরিচিত ?

(A) পালঘাট

(B) ভোরঘাট

(C) হালঘাট

(D) কোনোটাই নয়

Ans: (A) পালঘাট

  1. কর্ণাটক মালভূমির ঢেউখেলানো ভূভাগ কী নামে পরিচিত ?

(A) মালনাদ

(B) ময়দান

(C) ডেকেনট্র্যাপ 

(D) ব্যাডল্যান্ড

Ans: (A) মালনাদ

  1. পপ্রণালী কোন্ দুই দেশের মাঝে আবস্থিত ?

(A) ভারত ও শ্রীলঙ্কা

(B) ভারত ও মায়ানমার

(C) মিনিকয় ও লাক্ষাদ্বীপ 

(D) আন্দামান ও নিকোবর 

Ans: (A) ভারত ও শ্রীলঙ্কা

অতিসংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর | ভারতের ভূ প্রাকৃতিক বিভাগ (ভারত – পঞ্চম অধ্যায়) মাধ্যমিক ভূগোল প্রশ্ন ও উত্তর | Madhyamik Geography Bharater Bhu Prakitik Vibhag Question and Answer : 

  1. হিমালয় পর্বতের উৎপত্তি কোন্ গ্রন্থি থেকে ? 

Ans: ভারতের উঃ পঃ – এর পামির গ্রন্থি থেকে ।

  1. ভারতের সর্বোচ্চ মালভূমি কোনটি ?

Ans: লাভাক মালভূমি । উত্তর G উত্তর | 

  1. লাডাক পর্বতশ্রেণির উত্তরে কোন পর্বতশ্রেণি অবস্থিত । 

Ans: কারাকোরাম পর্বত । 

  1. ভারতের উচ্চতম শৃঙ্গের নাম কী ?

Ans: গডউইন অস্টিন ( K2 ) উচ্চতা –৮৬১১ মি .। 

  1. কারাকোরাম পর্বতের দুটি পর্বতশৃঙ্গের নাম লেখো ।

Ans: K2 ও হিডেনপিক ।

  1. ভারতের দীর্ঘতম হিমবাহ কোন্‌টি ?

Ans: সিয়াচেন ( ৭৬ কিমি ) । 

  1. কারাকোরাম পর্বতের কয়েকটি উল্লেখযোগ্য হিমবাহের নাম লেখো ।

Ans: সিয়াচেন , বল্টারো । 

  1. হিমাদ্রি হিমালয়ের দুটি উল্লেখযোগ্য শৃঙ্গের নাম লেখো ।

Ans: কাঞ্চনজঙ্ঘা , মাকালু । 

  1. পিরপাঞ্জাল ও উচ্চ হিমালয়ের মধ্যে কোন্ উপত্যক অবস্থিত ?

Ans: কাশ্মীর উপত্যকা ।

  1. কোন্ মৃত্তিকা জাফরান চাষের জন্য উপযুক্ত ?

Ans: কারেওয়া মৃত্তিকা ।

  1. কাশ্মীর উপত্যকার দুটি উল্লেখযোগ্য হ্রদের নাম লেখো । 

Ans: উলার ও ডাল হ্রদ ।

  1. কাশ্মীর হিমালয়ে অবস্থিত দুটি গিরিপথের নাম লেখো । 

Ans: বানিহাল বা জওহর , জোজিলা ।

  1. কুমায়ূন হিমালয়ে অবস্থিত হিমবাহসৃষ্ট হ্রদগুলিকে কী বলে । 

Ans: তাল ।

  1. কুমায়ুন হিমালয়ের দুটি উল্লেখযোগ্য হ্রদ বা – এর নাম লেখো ।

Ans: সাততাল , নৈনিতাল ।

  1. দার্জিলিং হিমালয়ের সর্বোচ্চ শৃঙ্গ কোনটি ?

Ans: সান্দাকফু ।

  1. সিকিম ও ভুটান সীমান্তে কোন্ উপত্যকা দেখা যায় ?

Ans: চুম্বি উপত্যকা ।

  1. অরুণাচল হিমালয়ের সর্বোচ্চ শৃঙ্গ কোনটি ?

Ans: কাংটো ।

  1. পূর্ব হিমালয়ের দুটি গিরিপথের নাম লেখো ।

Ans: নাথুলা , জেলেপলা ।

  1. পূর্ব হিমালয়ের প্রধান দুটি গিরিশৃঙ্গ কী কী ?

Ans: কাঞ্চনজঙ্ঘা ও কাংটো ।

  1. সিন্ধু নদের যে – কোনো দুই উপনদীর নাম লেখো । 

Ans: বিপাশা , শতদ্রু , চন্দ্রভাগা , ইরাবতী ।

  1. সিন্ধু সমভূমির উত্তরাংশের ক্ষয়প্রাপ্ত অঞ্চলকে কী বলে ?

Ans: খোশ । 

  1. ভারতের বৃহত্তম নদীদ্বীপ কোন্‌টি ?

Ans: মাজুলী নদীদ্বীপ । 

  1. ভারতের মরুভূমির বেশিরভাগ অংশ কোন্ রাজ্যে অবস্থিত ?

Ans: রাজস্থান ।

  1. দক্ষিণের মালভূমি অঞ্চলটি কোন্ কোন্ শিলায় গঠিত ? 

Ans: গ্রানাইট ও নিস্ ।

  1. ভারতের প্রাচীনতম ভঙ্গিল পর্বত কোনটি ?

Ans: আরাবল্লি পর্বত ।

  1. ভারতে অবস্থিত একটি হোর্স্ট জাতীয় স্তূপ পর্বতের নাম লেখো । 

Ans: সাতপুরা পর্বত ।

  1. পশ্চিমঘাট পর্বতে অবস্থিত দুটি গিরিপথের নাম লেখো । 

Ans: থলঘাট ও ভোরঘাট ।

  1. দক্ষিণ ভারতের সর্বোচ্চ শৃঙ্গ কোন্‌টি ?

Ans: আনাইমুদি ( ২৬৯৫ মি . ) ।

  1. দক্ষিণের লাভা মালভূমি প্রধানত কী নামে পরিচিত ?

Ans: ডেকানট্র্যাপ ।

  1. ডেকানট্র্যাপ – এ কোন্ ধরনের মৃত্তিকা দেখা যায় ?

Ans: রেগুর বা কৃয় মৃত্তিকা ( Black Soil )

  1. পূর্বঘাট পর্বতের সর্বোচ্চ শৃঙ্গ কোনটি ?

Ans: হিন্দাগাড়া ।

  1. নীলগিরি পর্বতের সর্বোচ্চ শৃঙ্গ কোনটি ?

Ans: দোদাবেতা ।

  1. পশ্চিমঘাট পর্বতের সর্বোচ্চ শৃঙ্গ কোন্‌টি ?

Ans: ভাভুলমালা ।

  1. ‘ মালনাদ ‘ কথাটির অর্থ কী ?

Ans: উঁচুনীচু ভূভাগ ।

  1. ভারতের মরুভূমি অঞ্চলে অবস্থিত সবচেয়ে বড়ো হ্রদ কোন্‌টি ?

Ans: সম্বর হ্রদ । 

  1. ভারতের মরুভূমি অঞ্চলের একমাত্র বড়ো নদী কোনটি ? 

Ans: লুনি নদী ।

  1. ভারতীয় মরুভূমির চলমান বালিয়াড়িকে কী বলে ? 

Ans: থ্রিয়ান ।

  1. মরু অঞ্চলের শুষ্ক হ্রদগুলি রাজস্থানে কী নামে পরিচিত ?

Ans: ধান্দ ।

  1. মরু অঞ্চলের নীচু স্থানে জল জমে যে হ্রদের সৃষ্টি হয় তাকে কী বলে ?

Ans: রণ বা রান ।

  1. কচ্ছ শব্দের অর্থ কী ?

Ans: জলাময় দেশ ।

  1. ওড়িশার উপকূলে অবস্থিত একটি উপহ্রদের নাম লেখো ।

Ans: চিল্কা হ্রদ ।

  1. পুলিকট হ্রদ ভারতের কোন্ উপকূলে দেখা যায় ?

Ans: অন্ধ্ৰ উপকূলে । 

সংক্ষিপ্ত ব্যাখ্যাধর্মী প্রশ্নোত্তর | ভারতের ভূ প্রাকৃতিক বিভাগ (ভারত – পঞ্চম অধ্যায়) মাধ্যমিক ভূগোল প্রশ্ন ও উত্তর | Madhyamik Geography Bharater Bhu Prakitik Vibhag Question and Answer : 

  1. বঙ্গোপসাগরে অবস্থিত দুটি আগ্নেয়গিরির নাম লেখো । 

Ans: ব্যারেন ও নারকোন্ডাম দুটি বঙ্গোপসাগরের আগ্নেয় দ্বীপ ।

  1. হিমাচল হিমালয়ে অবস্থিত উপত্যকাগুলি কী কী ?

Ans: হিমাচল হিমালয়ে অবস্থিত উপত্যকাগুলি হল ( i ) পিরপাঞ্জাল ও জাস্কর পর্বতের মাঝে কাশ্মীর উপত্যকা ( ii ) হিমাচল প্রদেশের কুলু উপত্যকা ( পিরপানজাল ও ধওলাধরের > মধ্যে অবস্থিত ) । ( iii ) শিবালিক ও ধওলাধরের মধ্যে কাংড়া উপত্যকা ( হিমাচল প্রদেশ ) । ( iv ) নাগটিব্বা ও ধওলাধরের মধ্যে শতদ্রু উপত্যকা । ( v ) উচ্চ হিমালয় ও জাস্করের মধ্যে স্পিটি উপত্যকা । এবং ( vi ) পিরপাঞ্জাল ও উচ্চ হিমালয়ের মধ্যে লাহুল উপত্যকা । 

  1. কাশ্মীর উপত্যকা কাকে বলে ?

Ans: জম্মু কাশ্মীরে পিরপাঞ্জাল ও উচ্চ হিমালয়ের মাঝে হ্রদ ভরাট হয়ে সৃষ্ট উপত্যকা হল কাশ্মীর উপত্যকা । প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের জন্য এটি ‘ ভূস্বর্গ ‘ নামে পরিচিত ।

  1. দুন উপত্যকা কাকে বলে ?

Ans: উত্তরাখণ্ডে শিবালিক ও হিমাচল হিমালয়ের মাঝে যে গঠনগত উপত্যকা রয়েছে তা হল ন উপত্যকা । যেমন দেরাদুন ( বৃহত্তম ) , চৌখাম্বা । জানো কি আকসাই চিন : জম্মু ও কাশ্মীর রাজ্যের উত্তর – পূর্ব ভাগের নাম আকসাই চিন , যা প্রকৃতপক্ষে একটি পর্বতবেষ্টিত উচ্চ মালভূমি । এখানকার গড় উচ্চতা ৪৫০০ মিটার । এখানে কতকগুলি হ্রদ রয়েছে , যার মধ্যে লিংজি টাং একটি লবণাক্ত হ্রদ ।

  1. তাল কী ? উদাহরণ দাও ।

Ans: কুমায়ুন হিমালয়ে হিমবাহ ক্ষয়কার্যের মাধ্যমে সৃষ্ট অবনমিত অংশগুলিতে জল জমে যে হ্রদের সৃষ্টি হয় । সেই হ্রদগুলিকে স্থানীয় ভাষায় তাল বলে । যেমন — সাততাল , ভীমতাল , নৈনিতাল ।

  1. কাশ্মীর হিমালয়ের দুটি লবণাক্ত হ্রদের নাম লেখো ।

Ans: কাশ্মীর হিমালয়ের দুটি লবণাক্ত হ্রদ হল— সল্টলেক ও প্যাংগং ।

  1. পূর্ব হিমালয়ের দুটি উল্লেখযোগ্য গিরিশৃঙ্গের ও দুটি গিরিপথের নাম লেখো ।

Ans: পূর্ব হিমালয়ের দুটি উল্লেখযোগ্য গিরিশৃঙ্গ হল কাঞ্চনজঙ্ঘা ও কাংটো । পূর্ব হিমালয়ের দুটি গিরিপথ হল- নাথুলা ও জেলেপ – লা ।

  1. পূর্বাচল বলতে কী বোঝ ? বা ভারতের কোন অঞ্চল পূর্বাচল নামে পরিচিত ?

Ans: উত্তর – পূর্ব ভারতের পার্বত্য অংশে মেঘালয় মালভূমিকে বাদ দিয়ে নাগাল্যান্ড , মণিপুর , ত্রিপুরা এবং অরুণাচল প্রদেশ ও অসমের কিছু অংশে যে পার্বত্য অঞ্চল আছে তাকে বলে পূর্বাচল বা পূর্বাঞ্চল ।

  1. পশ্চিম হিমালয়ের একটি ও পূর্ব হিমালয়ের একটি করে গিরিপথের নাম লেখো ।

Ans: পশ্চিম হিমালয়ের একটি গিরিপথের নাম জোজিলা পাস ( এটি শ্রীনগর ও লে – এর মধ্যে সংযোগ রক্ষা করেছে ) পূর্ব হিমালয় ের একটি গিরিপথের নাম হল নাথুলা পাস ( এটি তিব্বতের চুম্বি উপত্যকার সঙ্গে সিকিমের সংযোগ রক্ষা করেছে ।

  1. ধ্রিয়ন কাকে বলে ?

Ans: এককথায় ভারতীয় ( থর ) মরুভূমির অঞ্চলের চলমান বালিয়াড়িকে থ্রিয়ান বলে ।

  1. রণ বা রাণ কাকে বলে ?

Ans: গুজরাট রাজ্যের উত্তরে এবং কচ্ছ উপদ্বীপের উত্তর ও পূর্বাংশের অগভীর জলাভূমি রণ বা রাগ নামে পরিচিত । এর উত্তরের অংশ ‘ বৃহৎ রণ ‘ ও পূর্বের অংশ ‘ ক্ষুদ্র রণ ‘ নামে পরিচিত ।

  1. ধান্দ কাকে বলে ?

Ans: থর মরুভূমির লবণাক্ত জলের অস্থায়ী হ্রদ হল ধান্দ । বছরের বেশিরভাগ সময় এগুলি শুষ্ক থাকে ।

  1. ‘ মরুস্থলী ‘ কথার অর্থ কী ? এইপ্রকার নামকরণের কারণ কী ?

Ans: ‘ মরু ’ শব্দের অর্থ ‘ মৃত ’ এবং ‘ স্থলী ’ শব্দের অর্থ হল ‘ দেশ ’ অর্থাৎ ‘ মৃতের দেশ । রাজস্থান মরুভূমির পশ্চিমে শুষ্ক , সূক্ষ্ম , উদ্ভিদহীন ধু – ধু মরুপ্রান্তর হল মরুস্থলী । মরুস্থলী হল প্রকৃত মরুভূমি ।

  1. পাঞ্জাব সমভূমি বা সিন্ধু সমভূমি কীভাবে গঠিত হয়েছে এবং এর আয়তন কত ?

Ans: পশ্চিমে পাঞ্জাব , হরিয়ানা ও রাজস্থানের সামান্য অংশ নিয়ে এটি গঠিত । সিন্ধুনদের উপনদী শতদ্রু , বিপাশা , চন্দ্রভাগা , ইরাবতী ও ঝিলাম নদীর মিলিত সঞ্জয়কার্যের ফলে এই সমভূমি গঠিত হয়েছে । এই জন্য একে ‘ পঞ্চনদের দেশ ’ বলে ।

  1. দোয়াব কাকে বলে ?

Ans: সঞ্জয়কার্যের ফলে সৃষ্ট দুটি নদীর মধ্যবর্তী সমভূমি অঞ্চল দোয়ার নামে পরিচিত ( দো = দুই এবং আব = জল ) । যেমন — উচ্চগঙ্গা সমভূমির গঙ্গা ও যমুনার মধ্যবর্তী সমভূমি ভারতের বৃহত্তম দোয়াব ।

  1. ‘ ধায়া ’ ও ‘ খোশ ’ কাকে বলে ?

Ans: পশ্চিমের সমভূমি অঞ্চলে অবস্থিত নদীর প্লাবনভূমিকে এই অঞ্চলে ‘ ধায়া ‘ বলে । এবং পাঞ্জাবের সমভূমি অঞ্চলের উত্তরে ক্ষয়প্রাপ্ত অঞ্চলকে ‘ খোশ ‘ বলা হয় ।

  1. ‘ খাদার ’ কাকে বলে ?

Ans: উচ্চগঙ্গা সমভূমির নদী তীরবর্তী যে – সমস্ত অঞ্চল নবীন পলিমাটি দিয়ে গঠিত , সেই সমস্ত অঞ্চলকে খাদার বলে । এটি উর্বর সমভূমি ।

  1. ‘ ভাঙ্গার ‘ কাকে বলে ? 

Ans: উচ্চগঙ্গা সমভূমির নদীর অববাহিকা থেকে দূরবর্তী দ্র প্রাচীন পলিমাটি দিয়ে | গঠিত অঞ্চলকে ভাঙ্গার বলে । এই অঞ্চলটি প্রাচীন পলিমাটি দিয়ে গঠিত বলে সামান্য উঁচু সমতলভূমি । এই অংশে বন্যার প্রকোপ | কম তাই এই অঞ্চল কৃষির পক্ষে অনুপযোগী । পাঞ্জাবে এই অঞ্চল ‘ ধায়া ‘ নামে পরিচিত ।

  1. ‘ ভাবর ‘ কাকে বলে ?

Ans: পশ্চিমে সিন্ধু থেকে পূর্বে তিস্তা পর্যন্ত শিবালিকের পাদদেশ বরাবর নুড়ি , পেবেল দ্বারা গঠিত অনুর্বর ভূমি ‘ ভাবর ‘ ? নামে পরিচিত । এর গড় বিস্তার ৮-১৬ কিমি । বালি ও পাথরের নুড়ি দ্বারা গঠিত এই অঞ্চলের মৃত্তিকা হল ছিদ্রযুক্ত । এই কারণে । হিমালয় পর্বত থেকে উৎপন্ন ছোটো ছোটো নদীগুলি এই অঞ্চলে প্রবাহিত হয়ে আসার পর ভূগর্ভস্থ হয়ে ফল্গুধারার সৃষ্টি হয়েছে । কৃষিকাজের পক্ষে এই অঞ্চল অনুপযুক্ত ।

  1. তরাই বলতে কী বোঝ ?

Ans: ভাবর অঞ্চলের দক্ষিণ প্রান্তে ভূগর্ভস্থ নদীগুলি যেখানে আত্মপ্রকাশ করেছে , সেখানকার ১৫ থেকে ৩০ কিমি প্রশস্ত স্যাঁতসেঁতে জলাভূমিকে সাধারণভাবে তরাই বলা হয় । প্রধানত বালি ও পলি দ্বারা গঠিত তাই এই অঞ্চল কৃষিকাজের পক্ষে মোটামুটি উপযুক্ত ।

  1. ভুর বলতে কী বোঝ ?

Ans: সমভূমি অঞ্চলের পশ্চিমে মাঝে মাঝে যে ছোটো ছোটো বালিয়াড়ি দেখতে পাওয়া যায় , তাকে ভুর ‘ বলে । 

  1. তরাই ও ডুয়ার্স অঞ্চল বলতে কী বোঝ ?

Ans: পূর্ব হিমালয়ের পার্বত্যভূমি থেকে নির্গত মহানন্দা , তিস্তা , জলঢাকা , তোর্সা , রায়ডাক প্রভৃতি নদীগুলির পলি , বালি । ও নুড়ি সঞ্চয়ের ফলে হিমালয়ের পাদদেশের সংকীর্ণ নিম্নভূমিতে দার্জিলিং জেলার শিলিগুড়ি মহকুমায় এবং জলপাইগুড়ি জেলায় এই সমভূমি অঞ্চলটি গড়ে উঠেছে । এই অঞ্চলের গড় উচ্চতা ১০০ মিটার । t তিস্তা নদীর ডানতীরস্থ সমভূমিকে তরাই অঞ্চল বলে এবং তিস্তা নদীর বামতীরস্থ সমভূমিকে ডুয়ার্স অঞ্চল বলে । তরাই একটি ফরাসি শব্দ যার অর্থ ‘ স্যাঁতসেঁতে ।

  1. ছোটোনাগপুর অঞ্চল বলতে কী বোঝ ?

Ans: সমগ্র ঝাড়খণ্ড রাজ্য ও পশ্চিমবঙ্গের পশ্চিমাে অংশবিশেষ নিয়ে গঠিত ব্যবচ্ছিন্ন মালভূমি হল মালভূমি । এটি ভারতের খনিজভাণ্ডার ।

  1. ময়দান ও মালনাদ কী ?

 অথবা , কর্ণাটক মালভূমির দুটি ভূপ্রাকৃতিক অংশের নাম লেখো ।

Ans: কর্ণাটক মালভূমির পশ্চিমে উঁচুনীচু ঢেউখেলানো ভূমি হল মালনাদ এবং পূর্বের প্রায় সমতল ভূমি হল ময়দান । 

  1. পূর্বঘাট ও পশ্চিমঘাট পর্বতমালার সর্বোচ্চ শৃদ্ধের নাম লেখো ।

Ans: পূর্বঘাট পর্বতমালার সর্বোচ্চ শৃঙ্গ হল – হিন্দাগড়া এবং পশ্চিমঘাট পর্বতমালার সর্বোচ্চ শৃঙ্গ হল — ভাতুলমালা । 

  1. পূর্ব অপেক্ষা পশ্চিম উপকূল ভগ্ন কেন ? 

Ans: ভারতের পশ্চিম উপকূল গঠিত হয়েছে ভূ আন্দোলনের প্রভাবে পশ্চিমঘাট পর্বতের পশ্চিম অংশ নিমজ্জিত হয়ে , তাই এই উপকূল অত্যন্ত ভগ্ন । কিন্তু পূর্ব উপকূল গঠিত হয়েছে সঞ্জয়কার্যের মাধ্যমে । এই কারণেই পূর্ব উপকূল , পশ্চিম উপকূলের মতো অতটা ভগ্ন নয় ।

  1. পশ্চিম উপকূল বরাবর অসংখ্য স্বাভাবিক পোতাশ্রয়যুক্ত বন্দর গড়ে উঠেছে কেন ?

Ans: ভূ – আন্দোলনের প্রভাবে গঠিত হওয়ায় পশ্চিম উপকূল ভগ্ন ও গভীর । গভীর ও ভগ্ন উপকূল থাকার জন্যেই । এখানে অসংখ্য স্বাভাবিক পোতাশ্রয়যুক্ত বন্দর গড়ে উঠেছে ।

  1. ভারতের পূর্ব উপকূলের সমভূমি অঞ্চলের বৈশিষ্ট লেখো ।

Ans: পূর্ব উপকূলের স মভূমির গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্যগুলি হল ( i ) ভারতের পূর্বপ্রান্ত বঙ্গোপসাগরের উপকূলে অবস্থিত । ( ii ) এই সমভূমি অঞ্চলটি পশ্চিম উপকূলের সমভূমির তুলনায় বেশি চওড়া ও সমতল । ( iii ) পূর্ব উপকূলের সমভূমিতে অনেকগুলো হ্রদ আছে , এর মধ্যে ওড়িশা উপকূলের চিন্তা ক কোলেরু এবং অস্ত্র উপকূলের পুলিকট হ্রদ উল্লেখযোগ্য ।

  1. আন্দামান – নিকোবর দ্বীপপুঞ্জ ও লাক্ষা দ্বীপপুঞ্জে রাজধানীর নাম কী ?

Ans: আন্দামান – নিকোবর দ্বীপপুঞ্জের রাজধানী – পোড ব্লেয়ার । লাক্ষা দ্বীপপুঞ্জের রাজধানী – কাভারাত্তি ।

  1. লাক্ষা দ্বীপপুঞ্জের উৎপত্তি কীভাবে হয়েছে ?

Ans: প্রবাল কীট বা প্রবাল দ্বারা গঠিত অনেকগুলি ছোড়ে | ছোটো দ্বীপ নিয়ে এই লাক্ষা দ্বীপ গঠিত হয়েছে । আরব সাগরে ২৫ টি ক্ষুদ্র দ্বীপ মিলিত হয়ে এই লাক্ষা দ্বীপ নাম দেওয়া হয়েছে হয়েছে । দ্বীপ গুলির উচ্চতা কোথাও ৫ মি. এর বেশি নয় ।

ব্যাখ্যামূলক উত্তরধর্মী প্রশ্নোত্তর | ভারতের ভূ প্রাকৃতিক বিভাগ (ভারত – পঞ্চম অধ্যায়) মাধ্যমিক ভূগোল প্রশ্ন ও উত্তর | Madhyamik Geography Bharater Bhu Prakitik Vibhag Question and Answer : 

  1. মেঘালয় মালভূমি বলতে কী বোঝ ?

Ans: মেঘালয় প্রদেশে অবস্থিত গারো , খাসি , জয়ন্তিয়া , ও মিকির পাহাড়ি অঞ্চল নিয়ে এই মেঘালয় মালভূমিটি গঠিত হয়েছে । এটি আসলে দাক্ষিণাত্য মালভূমির বিচ্ছিন্ন অংশ । ক্রমাগত ভূ – আন্দোলন ও চ্যুতির ফলে ছোটোনাগপুর ও মেঘালয় মালভূমি দুটি পরস্পর থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে দূরে সরে যায় । এই মালভূমির গড় উচ্চতা ৬০০-১৬০০মি .। গারো , খাসি ও জয়ন্তিয়া এই অঞ্চলের তিনটি ক্ষয়জাত পাহাড় । SU মেঘালয় মালভূমির পশ্চিমে অবস্থিত গারো পাহাড়ের সর্বোচ্চ শৃঙ্গ হল নকরেক ( ১৪১২ মি . ) মেঘালয় মালভূমির উত্তরে বিস্তৃত রয়েছে শিলং পাহাড় । শিলং শৃঙ্গ ( ১৯৬১ মি . ) হল শিলং পাহাড় তথা মেঘালয় মালভূমির সর্বোচ্চ শৃঙ্গ ।

  1. কারাকোরাম পর্বতশ্রেণি কাকে বলে ?

Ans: কাশ্মীরের লাডােক পর্বতশ্রেণির উত্তর দিকে প্রায় ৪০০ কিলোমিটার অঞ্চল জুড়ে কারাকোরাম পর্বতশ্রেণি অবস্থান করছে । এই পর্বতশ্রেণির দৈর্ঘ্য মাত্র ৪০০ কিলোমিটার হলেও এই পর্বতশ্রেণিতে অনেকগুলো সুউচ্চ পর্বতশ্রেণি ও বিশাল হিমবাহ আছে । কারাকোরাম পর্বতশ্রেণির পশ্চিম অংশে অবস্থিত গডউইন অস্টিন বা K2 ( ৮৬১১ মি . ) , শৃঙ্গটি হল কারাকোরাম তথা ভারতের সর্বোচ্চ পর্বতশৃঙ্গ এবং পৃথিবীর দ্বিতীয় উচ্চতম পর্বতশৃঙ্গ । কারাকোরাম পর্বতের অন্যান্য উল্লেখযোগ্য পর্বতশৃঙ্গ হল — হিডন পিক্‌ ( ৮০৬৮ মি . ) , ব্রড পিক্‌ ( ৮০৪৭ মি . ) ও গ্যাসের ব্লুম ।। ( ৮০৩৫ মি . ) । এইসব শৃঙ্গগুলি সারাবছর ধরেই তুষারে আবৃত থাকে বলে কারাকোরাম পর্বতকে বসুধা বা ধবলশীর্ষ বলে । কারাকোরাম পর্বতের উল্লেখযোগ্য হিমবাহ হল – সিয়াচেন হিমবাহ ( দৈর্ঘ্য ৭৬ কিমি . ) । এটি ভারতের দীর্ঘতম হিমবাহ , এ ছাড়া রয়েছে — বালটোরা , রিমো ইত্যাদি । 

  1. লোটাক পর্বতশ্রেণি সম্পর্কে লেখো ।

Ans: কারাকোরাম ও কাশ্মীর হিমালয় পর্বতশ্রেণির মধ্যবর্তী স্থানে ৩৫০ কিমি দীর্ঘ লাভাক পর্বতশ্রেণি অবস্থান করছে । হিমালয় পর্বতশ্রেণির সৃষ্টির সময় টেথিস সাগরের সঞ্জিত পলিরাশি থেকেই লাডাক পর্বতশ্রেণির সৃষ্টি হয়েছে । লাডাক পর্বতশ্রেণির ৯ টি শৃঙ্গের উচ্চতা ৬০০০ মিটারেরও বেশি । এই অঞ্চলের লাডাক মালভূমিটি হল ভারতের সর্বোচ্চ মালভূমি । এই অঞ্চলটি অত্যন্ত শুষ্ক ও দুর্গম ।

  1. ছোটোনাগপুর মালভূমি কী ?

Ans: রাঁচী মালভূমি , হাজারিবাগ মালভূমি , কোডারমা মালভূমি , বাঘেলখণ্ড মালভূমি এবং রাজমহল পাহাড় নিয়ে গঠিত মালভূমিকে ছোটোনাগপুরের মালভূমি বলা হয় । এই মালভূমির গড় উচ্চতা ৪০০-১০০০ মিটার । পশ্চিমদিকে এই মালভূমির উচ্চতা অপেক্ষাকৃত বেশি । ছোটোনাগপুরের মালভূমি পূর্বদিকে ক্রমাগত ক্ষয়প্রাপ্ত হয়ে সমপ্রায়ভূমিতে পরিণত হয়েছে । পূর্বের এই সমপ্ৰায়ভূমিতে অনেক ছোটো ছোটো টিলা দেখা যায় । ছোটোনাগপুর মালভূমির পূর্ব – পশ্চিমে বিস্তৃত দামোদর গ্রস্ত উপত্যকার দক্ষিণে মানভূম , রাঁচী , পালামৌ নেতারহাট অঞ্চল এবং উত্তরে সাঁওতাল পরগনা ও হাজারিবাগ মালভূমি অবস্থিত । মালভূমিগুলির প্রান্তদেশ হঠাৎ খাড়াভাবে নেমে যাওয়ায় অনেকগুলি জলপ্রপাতের সৃষ্টি হয়েছে । এর মধ্যে হ , জোনা , দশম ও রাজরাগ্রা জলপ্রপাত উল্লেখযোগ্য । 

  1. ডেকেনট্যাপ সম্পর্কে লেখে ।

Ans: ভূবিজ্ঞানীদের মতে , আজ থেকে প্রায় ১৩-১৪ কোটি বছর আগে ভূগর্ভের গুরুমণ্ডল বা ম্যান্টল অঞ্চল থেকে অভি উত্তপ্ত তরল নাভাস্রোতে কোনো রকম বিস্ফোরণ ছাড়াই ভূগর্ভের অসংখ্য ফাটল পথে বাইরে বেরিয়ে এসে ভারতের দাক্ষিণাত্য মালভূমির উত্তর – পশ্চিমভাগের প্রায় ৫ লক্ষ কিলোমিটার অঞ্চলকে লাভায় ঢেকে ফেলেছিল , কালক্রমে যা জমাট বেঁধে দাক্ষিণাত্য মালভূমি গঠন করেছে । এটি পৃথিবীর সুপ্রাচীন ভূখণ্ড গণ্ডোয়ানাল্যান্ডের অন্তর্গত । ভারতের দাক্ষিণাত্যের এই লাভা মালভূমি অঞ্চলটি ডেকানট্র্যাপ নামে পরিচিত । এই বিস্তীর্ণ মালভূমির উপরের অংশ টেবিলের মতো সমতল এবং পরবর্তীকালে বৃষ্টি , বায়ু প্রভৃতি প্রাকৃতিক শক্তির দ্বারা ক্ষয়িত লাভা স্তরের পার্শ্বদেশ সিঁড়ির মতো ধাপে ধাপে নীচে নেমে গেছে । এই বিশেষ আকৃতির জন্যই দাক্ষিণাত্য মালভূমির উত্তর পশ্চিম অংশকে ডেকানট্র্যাপ বলে । ডেকান- অর্থাৎ দাক্ষিণাত্য ও ট্র্যাপ = সিঁড়ি ] । তরল লাভা জমাট বেঁধে তৈরি হয়েছে বলে এই অঞ্চলটি সাধারণভাবে সমতল এবং পর্বতের চূড়া বা মাথাগুলি চ্যাপটা । সমগ্র মালভূমিটি পশ্চিম থেকে পূর্বদিকে ধাপে ধাপে নেমে গেছে । দীর্ঘকাল ধরে এখানকার কালো ব্যাসল্ট শিলা ক্ষয় হয়ে বিস্তীর্ণ অঞ্চল জুড়ে কালো মাটি বা কৃয় মৃত্তিকা সৃষ্টি হয়েছে ।

  1. বিন্ধ্য পর্বত কী ?

Ans: মধ্যভারতের উচ্চভূমি অঞ্চলের একেবারে দক্ষিণ সীমায় অবস্থিত সুপ্রাচীন বিন্ধ্য পর্বতটি ভূপ্রকৃতিগত ভাবে পাললিক শিলায় ( বেলেপাথর ) গঠিত । এটি হল একটি স্তূপ পর্বত । পশ্চিম থেকে পূর্বে প্রসারিত এই পর্বতটি প্রায় ১০৫০ কিমি দীর্ঘ ও গড়ে প্রায় ৩০০ মি . উঁচু । এই পর্বতের বেলেপাথর ও চুনাপাথর দ্বারা গঠি পূর্বাংশ কাইমুর নামে পরিচিত । বিন্ধ্য পর্বতের উত্তর – পূর্বাংশে শোন – এর গ্রন্থ উপত্যকা থেকে কাইমুর পাহাড় খাড়াভাবে উ গেছে । বিশ্ব্য পর্বতের ওপরটা সমতল এবং ধারগুলো ক্ষয় পেয়ে সিঁড়ির মতো হয়ে গেছে । ভারতের মরুভূমি সৃষ্টির কারণ কী ? ★ M উত্তর ভারতের পশ্চিমে রাজস্থানের পশ্চিম প্রান্তে রয়েছে থর মরুভূমি । এই অঞ্চল সমভূমি হলেও জলবায়ুগত কারণে এই অঞ্চল মরুভূমিতে পরিণত হয়েছে । কারণগুলি হল : ( i ) মৌসুমি বায়ুর বঙ্গোপসাগরীয় শাখা গঙ্গাসমভূমি অতিক্রম করে রাজস্থানের পশ্চিমপ্রান্তে পৌঁছায় তখন এই বায়ুর মধ্যে জঙ্গীয় বাষ্পের পরিমাণ খুব কমে যায় , তাই বৃষ্টি কম হয় । ( ii ) সৌসুমি বায়ুর আরবসাগরীয় শাখা যখন গুজরাট অতিক্রম করে এখানে পৌঁছায় তখনও বায়ুর মধ্যে জলীয় বাষ্পের পরিমাণ কম বঙ্গে বৃষ্টির পরিমাণ কম । ( iii ) এখানে উন্নতা বেশি বলে জলীয় বাষ্প ঘনীভূত হওয়ার সম্ভাবনাও কম এবং অধিক উন্নতায় বাবুর ঊর্ধ্বগমন ঘটে । ( iv ) এই অঞ্চলে বায়ুকে বাধা দেওয়ার মতো কোনো উচ্চভূমি বা পর্বতের অবস্থান নেই । ( v ) সম্মিলিত এই কারণগুলির জন্যই রাজস্থানে বার্ষিক গড় বৃষ্টির পরিমাণ খুবই কম ( ২৫ সেমি . এর কম ) , তাই এই অঞ্চল ধীরে ধীরে মরুভূমিতে পরিণত হয়েছে ।

  1. কয়াল বলতে কী বোঝ ?

Ans: কেরালার মালাবার উপকূল বারংবার উত্থান ও নিমজ্জনের ফলে গঠিত হয়েছে । বারবার উত্থান ও নিমজ্জনের কারণে উপকূল বরাবর সৃষ্টি হয়েছে অসংখ্য জলাভূমি বা উপদ্বুদ এই উপহ্রদগুলিকেই স্থানীয় ভাষায় কয়াল বলা হয় । ভেষানাদ , অষ্টমুদি , ভেলায়নি প্রভৃতি বিখ্যাত কয়াল । কয়ালগুলির মধ্যে ভেম্বনাদ বৃহত্তম । এই কয়ালগুলি যোগাযোগ ব্যবস্থার মাধ্যম হিসেবে কাজ করে । ভেম্বানাদ কয়াল ।

  1. আরাবল্লী পর্বত কী ?

Ans: আরাবল্লী ভারতের প্রাচীনতম ভঙ্গিল পর্বত । মধ্য ভারতের উচ্চভূমির উত্তর – পশ্চিম প্রান্তে অবস্থিত প্রাচীন ভঙ্গিল পর্বত আরাবল্লী দিল্লি থেকে গুজরাটের পালানপুর ( আমেদাবাদের কাছে ) উত্তর – পূর্ব থেকে দক্ষিণ – পশ্চিমে ৮০০ কিমি জুড়ে বিস্তৃত । নগ্নীভবন ক্রিয়ার কারণে আরাবল্লি বর্তমানে ক্ষয়জাত পর্বত বা পাহাড়রূপে অবস্থান করছে । আরাবল্লি পর্বতের গড় উচ্চতা ৬০০-৯০০ মি .। আরাবল্লীর সর্বোচ্চ শৃঙ্গ আবু পাহাড়ের কাছাকাছি অবস্থিত গুরুশিখর ( ১৭৭২ মি . ) ।

  1. মালাবার উপকূল সমভূমি সম্পর্কে লেখো ।

Ans: কর্ণাটক রাজ্যের দক্ষিণ প্রান্তবর্তী ম্যাঙ্গালোর থেকে কেরল উপকুল হয়ে তামিলনাড়ু রাজ্যের কন্যাকুমারিকা পর্যন্ত প্রসারিত উপকূলবর্তী সমভূমি মালাবার উপকূল সমভূমি নামে পরিচিত । এই সমভূমির দৈর্ঘ্য ৫০০ কিমি । অন্যান্য উপকূলের তুলনায় অনেক বেশি চওড়া হওয়ায় মালাবার উপকূলে অসংখ্য বালিয়াড়ি , জলাভূমি , হ্রদ , উপহ্রদ বা লেগুন প্রভৃতি দেখতে পাওয়া যায় । এই উপহ্রদগুলি কেরলে ‘ কয়াল ‘ নামে পরিচিত । ভেম্বানাদ কয়াল হল এখানকার বৃহত্তম কয়াল ( প্রায় ৪০ কিমি ) । ক্রমাগত ভূ – আলোড়নের ফলে এই উপকূল বারবার উত্থান ও নিমজ্জন ঘটেছে । এইসব ঘটনার চিহ্ন হিসেবে এখানে অসংখ্য উপহ্রদ বা জলাভূমি বা ‘ ব্যাকওয়াটার্স ‘ দেখা যায় , যারা ‘ কেরালা ব্যাকওয়ার্টাস নামে পরিচিত । কেরল রাজ্যের জল পরিবহণ ব্যবস্থায় কয়ালগুলি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা গ্রহণ করেছে ।

  1. আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জ বা বঙ্গোপসাগরীয় দ্বীপপুঞ্জ বলতে কী বোঝ ? 

Ans: ভারতের মূল ভূখণ্ড থেকে দূরে বঙ্গোপসাগরে ২৬৫ টি ছোটো – বড়ো দ্বীপ নিয়ে গঠিত আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জ । এই দ্বীপপুঞ্জ হল একপ্রকার দ্বীপীয় বৃত্তচাপ ( Island arc ) অর্থাৎ ধনুক আকারে সমুদ্রে নিমজ্জিত পর্বত যা মায়ানমারের আরাকান – ইয়োমা পর্বতের অভিক্ষিপ্তাংশ । এই দ্বীপপুঞ্জের অধিকাংশ উচ্চভূমির অন্তর্গত । উত্তর আন্দামানের স্যাডেল পিক ( ৭৩৭ মি . ) সমগ্র আন্দামানের সর্বেচ্চ অংশ । দক্ষিণ আন্দামানের মাউন্ট হ্যারিয়েট উল্লেখযোগ্য শৃঙ্খ ব্যারেন ও নারকোন্ডাম এখানকার দুটি বিখ্যাত আগ্নেয়গিরি ।

  1. আরবসাগরীয় দ্বীপপুঞ্জ সম্পর্কে লেখো ।

Ans: ৪ ° উত্তর অক্ষাংশ থেকে ১২ ° উত্তর অক্ষাংশের মধ্যে কেরল উপকূল থেকে প্রায় ৩২৪ কিমি দুরে ২৫ টি ছোটো ছোটো দ্বীপ নিয়ে লাক্ষা , আমিনদিভি ও মিনিকয় দ্বীপপুঞ্জ গঠিত । এই দ্বীপপুঞ্জের সরকারি নাম রাখা হয়েছে লাক্ষাদ্বীপ । লাক্ষা আমিনদিভি ও মিনিকয় দ্বীপপুঞ্জের মোট আয়তন ৩২ বর্গকিমি মাত্র । মিনিকয় দ্বীপটি হল এই দ্বীপপুঞ্জের সবচেয়ে বড়ো দ্বীপ , এর আয়তন ৪.৫০ বর্গকিমি । ভূতত্ত্ববিদদের মতে , যুগ যুগ ধরে , আরবসাগরের প্রবাল কীটদের মৃত দেহাবশেষ স্তরে স্তরে সঞ্চিত হয়ে এই দ্বীপপুঞ্জের সৃষ্টি হয়েছে । এই দ্বীপপুঞ্জের দ্বীপগুলিতে পাহাড় – পর্বত ও নদনদী নেই । দ্বীপগুলির তটভূমির কাছে প্রবাল প্রাচীর দেখা যায় । উর্বর বলে কৃষিকাজে উন্নত হওয়ায় এখানকার জনঘনত্ব বেশ বেশি । এর সর্বদক্ষিণের দ্বীপ হল মিনিকয় দ্বীপ ।

  1. ভারতের বৃহৎ সমভূমির উৎপত্তি হয় কীভাবে ?

Ans: উত্তর ভারতের বৃহৎ সমভূমি অঞ্চলটি উত্তরের পার্বত্য অঞ্চল এবং দক্ষিণের উপদ্বীপীয় মালভূমির মধ্যবর্তী স্থানে অবস্থিত । এই সমভূমির সৃষ্টির কারণ সম্পর্কে ভূবিজ্ঞানীরা অনুমান করেন যে — বহু যুগ আগে , বর্তমানে যেখানে উত্তরের সমভূমি অঞ্চল অবস্থিত সেখানে একটি স্রোণী ( Trough ) ছিল । টার্সিয়ারী যুগে হিমালয় পর্বতের উত্থানকালে ভূ – আলোড়নের ফলে প্রাচীন গন্ডোয়ানাল্যান্ডের উত্তর অংশ নীচু হয়ে অর্ধচন্দ্রাকারে বসে গিয়ে এই স্রোণী বা পরিখার সৃষ্টি হয় । পরবর্তীকালে হিমালয় পর্বত থেকে উৎপন্ন নদীগুলি দ্বারা যুগ যুগ ধরে ক্রমাগত পলি সঞ্চয়ের ফলে ওই নিম্নভূমি অঞ্চলটি ভরাট হয়ে উত্তর ভারতের বৃহৎ সমভূমির উৎপত্তি হয়েছে ।

  1. পূর্ব উপকূলের তুলনায় পশ্চিম উপকূলের সমভূমি সংকীর্ণ কেন ?

Ans: ভারতের পশ্চিম উপকূলীয় অংশের উৎপত্তি ঘটেছে ভূআন্দোলনের প্রভাবে পশ্চিমঘাটের পশ্চিম অংশ বসে গিয়ে । এই অংশে যাবতীয় পলি সঞ্জয় ঘটেছে সমুদ্রতরঙ্গের কার্যে । নদীর সঞ্চয়কার্য প্রায় হয়ই না । উচ্চ ও খাড়া ঢালের উপকূল হওয়ায় সঞ্চয়ের পরিমাণও কম । তাই পশ্চিম উপকূলীয় সমভূমি সংকীর্ণ , গড় বিস্তার ৬৫ কিমি । অপরদিকে , ভারতের পূর্ব উপকল মৃদুঢালে সমুদ্রের সাথে মিলিত হয়েছে । পূর্বঘাট পর্বত উপকূল থেকে বেশ দূরে অবস্থান করায় ভূমির ঢাল কম । সমুদ্রতরঙ্গের কার্যের সঙ্গে সঙ্গে এখানে প্রচুর পরিমাণে নদীবাহিত পলির সঞ্চয় ঘটে । এই উপকূলে নদীগুলির মোহানায় গঠিত হয়েছে বদ্বীপ । অধিক পলিসঞ্চয়ের কারণেই পূর্ব উপকূলীয় সমভূমি বিস্তৃত , গড় বিস্তার ৮০-১০০ কিমি ।

  1. প্রবাল কী ? প্রবাল দ্বীপ কীভাবে গঠিত হয় ?

Ans: প্রবাল হল একপ্রকার ছোটো সামুদ্রিক কীট । সাধারণত ক্রান্তীয় ও উপক্রান্তীয় অঞ্চলের সমুদ্রের ৬০ মিটার গভীরতায় প্রবাল জন্মায় । এদের দেহে ক্যালশিয়াম কার্বনেটের শক্ত আবরণ থাকে । কোটি কোটি প্রবাল কীটের দেহাবশেষ জমাট বেঁধে প্রবাল দ্বীপ গঠিত হয় । আরবসাগরের ২৫ টি ছোটো বড়ো দ্বীপ নিয়ে গঠিত লাক্ষাদ্বীপ প্রবাল দ্বীপের উদাহরণ । 

  1. কোঙ্কন উপকূল সম্পর্কে যা জান লেখো ।

Ans: কোঙ্কন উপকুল সমভূমি পশ্চিমঘাট পর্বতের পশ্চিম দিকে আরব সাগরের উপকূল বরাবর বিস্তৃত এবং উত্তরে দমন থেকে দক্ষিণে গোয়া পর্যন্ত প্রসারিত প্রায় ৫৩০ কিলোমিটার দীর্ঘ সমভূমিকে কোঙ্কন উপকূল সমভূমি বলা হয় । এই অংশ সংকীর্ণ ও ভগ্ন । এই অঞ্চলের সমুদ্র উপকূলে কাদাভর্তি জলাভূমি এবং বালুকাময় তটভূমি ছাড়াও কোথাও কোথাও সামুদ্রিক চড়া এবং লাভাগঠিত পাহাড় দেখা যায় । বৈতরণী , অম্বা ও উলহাস নদী প্রবাহিত হয়ে কোঙ্কন উপকূলের সমুদ্রে খাঁড়ি সৃষ্টি করেছে । ভারতের প্রবেশদ্বার মুম্বাই ও হাইটেক বন্দর জওহরলাল নেহরু । বন্দর এখানেই অবস্থিত ।

  1. সমভূমি অঞ্চলের মৃত্তিকা ও স্থানীয় ভূমিরূপের নামগুলি সংক্ষেপে লেখো ।

Ans: সমভূমি অঞ্চলে মৃত্তিকা ও স্থানীয় ভূমিরূপ : হিমালয়ের পাদদেশের সংকীর্ণ অঞ্চলে বালি ও পাথর মিশ্রিত ভাবর মৃত্তিকা , খাদার , বেট ও ভাঙ্গর মৃত্তিকা দেখতে পাওয়া যায় । ভূমিরূপ ও মৃত্তিকার বৈশিষ্ট্যগুলি হল— ( ১ ) ভাবর : হিমালয়ের পাদদেশের মৃদু ঢালসম্পন্ন পলি সঞ্জিত যে ভূমিরূপ রয়েছে , তাকে ভাবর বলে । ( ২ ) তরাহ : ভাবর অঞ্চলের দক্ষিণে নদী সৃষ্ট জলাভূমিকে তরাই বলে । ( ৩ ) খাদার ও বেট : গাঙ্গেয় সমভূমির নবীন পলিমাটিযুক্ত অঞ্চলকে উত্তরপ্রদেশে খাদার ও পাঞ্জাবে বেট বলে । ( ৪ ) ভাঙ্গর : নদী অববাহিকার দূরবর্তী প্রাচীন পলিযুক্ত অঞ্চলকে ভাঙ্গার বলে । ( ৫ ) ভুর সমভূমির পশ্চিমদিকে যে ছোটো ছোটো বালিয়াড়ি দেখা যায় তাকে ভুর বলে ।

  1. কচ্ছের রণ – এর ভৌগোলিক অবস্থান ও ভূমিরূপ সম্পর্কে লেখো ।

Ans: গুজরাটের উত্তরে কচ্ছ উপদ্বীপকে ঘিরে প্রায় ২১৫০০ বর্গকিমি ক্ষেত্রফল বিশিষ্ট যে লবণাক্ত জলাভূমি রয়েছে তা কচ্ছের রণ নামে পরিচিত ( ‘ কচ্ছ ‘ শব্দের অর্থ ‘ জলময় দেশ ) । কচ্ছের রণের দুটি অংশ ( i ) উত্তরে ‘ বৃহৎ কচ্ছের রণ ’ এবং ( ii ) দক্ষিণ – পূর্বে ‘ ক্ষুদ্র রণ ‘ । কচ্ছের রণ সমুদ্রপৃষ্ঠের সামান্য উচ্চে অবস্থিত । তবে কোনো কোনো অংশ সমুদ্রতলের সামান্য নীচে অবস্থানের কারণে বর্ষায় প্রবল জোয়ারে সমুদ্রের জল ঢুকে পড়ে , তাই ভূমি লবণাক্ত । কচ্ছের রণ লুনি , বানস প্রভৃতি নদী দ্বারা বিধৌত এবং নদীগুলি বর্ষাকাতে এখানে প্রচুর সূক্ষ্ম পলির সঞ্চয় ঘটায় , তাই তুমি তিন থেকে চারমাস লবণাক্ত ও কর্দমময় । বছরের বাকি সময় ভূমি শুষ্ক , উদ্ভিদ বিজ এবং মরুভূমির মতো অবস্থার সৃষ্টি হয় । তবে মাঝে মাঝে এখানে জলাভূমির মধ্যে ঘাস ও আগাছাপূর্ণ টিলা ও উচ্চভূমি চোখে পড়ে । এই অংশই হল পৃথিবীর একমাত্র বন্য গাধা সংরক্ষণাগার ( Wild Ass Sanctuary ) । 

  1. মেঘালয় মালভূমি , দাক্ষিণাত্য মালভূমির বিচ্ছিন্ন অংশ – আলোচনা করো । 

Ans: প্রাচীন কালে মেঘালয় মালভূমি ও ছোটোনাগপুর মালভূমি একটিই ভূপ্রাকৃতিক অংশ ছিল । ভূতাত্ত্বিক যুগে ভূআন্দোলনে এর মধ্যবর্তী অংশ অবনমিত হয় । যার মধ্য দিয়ে পরবর্তীকালে গঙ্গা ও ব্রহ্মপুত্র প্রবাহিত হয় । এই নদী ও তাদের উপনদীসমূহ অবনমিত অংশ পলি দ্বারা ভরাট করে সৃষ্টি করে সমভূমি এবং মেঘালয় মালভূমি বিচ্ছিন্ন আকারে অবস্থান করে ।

  1. ডেকানট্র্যাপ ‘ বলতে কী বোঝ ?

Ans: মহারাষ্ট্রের লাভা মালভূমি অঞ্চলটি ডেকানট্র্যাপ নামে পরিচিত । এই অঞ্চলটি পৃথিবীর সুপ্রাচীন ভূখণ্ড গন্ডোয়ানাল্যান্ডের অন্তর্গত একটি মালভূমি । আজ থেকে প্রায় ৬-৭ কোটি বছর আগে ভূত্বকের প্রশস্ত ফাটলপথে ভূগর্ভস্থ লাভা নিঃসৃত হয়ে এই অঞ্চলটিকে স্তরে স্তরে চাদরের মতো ঢেকে দেয় , এইভাবেই । ডেকানট্র্যাপ অঞ্চলটির সৃষ্টি হয়েছিল । পরবর্তীকালে বৃষ্টি , বাং প্রভৃতি প্রাকৃতিক শক্তির দ্বারা ক্ষয়প্রাপ্ত হয়ে লাভান্তরের পার্শ্বদেশে সিঁড়ির মতো ধাপে ধাপে উপর থেকে নীচে নেমে গেছে । এইজন্য এই লাভায় ঢাকা মালভূমি অঞ্চলটিকে ডেকানট্র্যাপ বলে । ডেকানটাপ শব্দের সুইডিস অর্থ ‘ সিড়ি ’ বা ‘ ধাপ ‘ ।  

রচনাধর্মী প্রশ্নোত্তর | ভারতের ভূ প্রাকৃতিক বিভাগ (ভারত – পঞ্চম অধ্যায়) মাধ্যমিক ভূগোল প্রশ্ন ও উত্তর | Madhyamik Geography Bharater Bhu Prakitik Vibhag Question and Answer : 

1. চিত্রসহ হিমালয় পর্বতমালা সৃষ্টির কারণ সংক্ষেপে আলোচনা করো ।

Ans: উৎপত্তি উত্তর : ভারতের উত্তরে অবস্থিত হিমালয় পর্বত হল প্রকৃতপক্ষে এক নবীন ভঙ্গিল পর্বত । এই পর্বতের বা সৃষ্টির কারণকে প্রধানত ২ ভাবে ব্যাখ্যা করা হয় । যেমন- ( i ) মহীখাত বা জিওসিনক্লাইন তত্ত্ব এবং ( ii ) পাতগাঠনিক বা প্লেট টেকটনিক ( i ) মহীখাত বা জিওসিনক্লাইন তত্ত্ব ।

(i) Geocyncline Theory ) : মহীখাত তত্ত্বের প্রবক্তা হলেন বিজ্ঞানী কোবার । এই তত্ত্ব অনুসারে বর্তমান যে অঞ্চলটিতে হিমালয় পর্বতমালা অবস্থান করছে , সেখানে আজ থেকে প্রায় বারো কোটি বছর আগে টার্সিয়ারি যুগে টেথিস সাগর নামে এক বিস্তীর্ণ অগভীর জলাভূমি ছিল , ভূতাত্ত্বিক ভাষায় যার নাম মহীখাত । কালক্রমে এই মহীখাতটির উত্তর ( আঙ্গারাল্যান্ড ) ও দক্ষিণ ( গন্ডোয়ানাল্যান্ড ) পার্শ্বস্থ প্রাচীন মালভূমি দুটি থেকে ক্ষয়প্রাপ্ত পলিরাশি নদনদী বাহিত হয়ে মহীখাতটিকে প্রায় ভরাট করে ফেলেছিল । যেহেতু , টেথিস মহীখাতটি ছিল ভূত্বকের একটি দুর্বল স্থান , সেহেতু এই পলিরাশি একসময় ভূ – স্তরে নিম্নমুখী চাপের সৃষ্টি করে । এই চাপের ফলে টেথিস মহীখাতের তলদেশ ক্রমশ বসে যেতে থাকে , এর ফলে প্রবল ভূআন্দোলনের সৃষ্টি হয় । এই ভূআন্দোলনের ফলে গন্ডোয়ানাল্যান্ডের তলদেশের ভারতীয় পাত এবং আঙ্গারাল্যান্ডের তলদেশের এশিয়া পাত গতিশীল হয়ে পড়ে । ভারতীয় পাতের গতিবেগ অপেক্ষাকৃত বেশি হওয়ায় তা এশিয়া পাতের দক্ষিণ দিকে প্রবল আঘাত করে , যার ফলে মালভূমি দুটি পরস্পরের দিকে ধীরে ধীরে অগ্রসর হয় । সংঘটিত পার্শ্বচাপে টেথিস সমুদ্রের সঞ্চিত পলিতে ভাঁজ পড়তে থাকে । পরবর্তীকালে , এইসব ভাঁজগুলি দৃঢ় সংঘবদ্ধ ও উঁচু হয়ে বর্তমান হিমালয়ের রূপ পরিগ্রহ করেছে । হিমালয়ের শিলাস্তরে যে – সমস্ত জলজ জীবাশ্ম পাওয়া গেছে তাদের বৈজ্ঞানিক বিশ্লেষণের মাধ্যমেই এই সিদ্ধান্তে উপনীত হওয়া সম্ভব হয়েছে । 

( ii ) পাতগাঠনিক বা প্লেট টেকটনিক তত্ত্ব ( Plate Tectonic Theory ) : পর্বতের গঠন সম্পর্কিত সর্বাধুনিক তত্ত্ব হল এই পাতগাঠনিক তত্ত্ব । উইলসন , মর্গান , পিচো প্রভৃতি ও ব্যক্তিগণ হলেন এই ধারণার প্রবক্তা । এই তত্ত্ব অনুসারে বলা হয় স যে , ভূত্বক — সাতটি বড়ো , কুড়িটি মাঝারি ও অসংখ্য ছোটো ছোটো হ পাত দ্বারা গঠিত । এই পাতগুলি তরল অ্যাথেনেস্ফিয়ারের ওপর ম গতিশীল অবস্থায় ভাসছে । এই তত্ত্বে বলা হয় যে , বর্তমানে যেখানে হিমালয় পর্বত অবস্থিত করছে সেই স্থানটি ভারতের উপদ্বীপীয় ও ইউরেশিয়া নামক দুটি মহাদেশীয় পাতের সংযোগস্থল । পরস্পরের দিকে অগ্রসরগামী এই পাত দুটির মধ্যে ভারতীয় পাত বেশি গতিশীল ও ভারী হওয়ায় , ধীরগামী ও হালকা ইউরোপীয় পাতের সঙ্গে সংঘর্ষে লিপ্ত হয় এবং ভারতীয় পাতটি ভূগর্ভে প্রবেশ করে । এর ফলে এই দুই পাতের মধ্যবর্তী স্থানে অবস্থিত পলিসঞ্ঝিত টেথিস মহীখাতের পলিরাশিতে প্রবল চাপ পড়ে । ফলে ভাঁজের সৃষ্টি হয়ে হিমালয় পর্বতের উত্থান হয় । 

  আজ থেকে প্রায় ১২ কোটি বছর আগে টার্সিয়ারি যুগে হিমালয় পর্বতের উত্থান পর্ব শুরু হলেও পর পর তিনটি ভূআন্দোলনের মাধ্যমে হিমালয়ের উত্থান পর্ব সম্পূর্ণ হয় এবং বহুযুগ ধরে তা চলে । প্রথম ভূআন্দোলনের ( ১২ থেকে ৭ কোটি বছর আগে ) ফলে টেথিস হিমাদ্রি হিমালয় , দ্বিতীয় ভূ – আন্দোলনের ( ২.৫ থেকে ৩ কোটি বছর আগে ) ফলে হিমাচল বা মধ্য হিমালয় এবং তৃতীয় বা সর্বশেষ ভূআন্দোলনের ফলে ( যা আজ থেকে ২০ লক্ষ বছর আগে ) বহিঃহিমালয় বা শিবালিক পর্বতমালার সৃষ্টি হয় । তবে বলা হয় যে , হিমালয়ের গঠন প্রক্রিয়া এখনও সমাপ্ত হয়নি । যেহেতু , ভারতীয় পাতটি এখনও প্রতিবছর প্রায় ৫.৪ সেমি করে উত্তরদিকে এগিয়ে চলছে , সেহেতু , হিমালয়ের পাতগাঠনিক প্রক্রিয়া সক্রিয় থাকায় হিমালয়ের উত্থান এখনও ঘটে চলেছে ।

2. ভারতের ভূ – প্রাকৃতিক বিভাগগুলির শ্রেণিবিভাগ করো এবং চিত্রের মাধ্যমে দেখাও । যে – কোনো একটি ভাগের সংক্ষিপ্ত বর্ণনা দাও ।

Ans: ভূপ্রকৃতিগত বৈচিত্র্য অনুসারে ভারতকে পাঁচটি ভাগে ভাগ করা যায় । যথা : ( i ) উত্তরের পার্বত্য অঞ্চল ; ( ii ) উত্তর ভারতের সমভূমি অঞ্চল ; ( iii ) উপদ্বীপীয় মালভূমি অঞ্চল ; ( iv ) উপকূলের সমভূমি অঞ্চল এবং ( v ) দ্বীপ অঞ্চল । প্রশ্ন G প্রস্থ বরাবর হিমালয় পর্বতের ভূপ্রকৃতির বর্ণনা দাও । উত্তর : ভূপ্রকৃতিগত পার্থক্য অনুসারে প্রস্থ বরাবর হিমালয় পর্বতকে উত্তর থেকে দক্ষিণে চারটি শ্রেণিতে ভাগ করা যায় , যথা : 

( ১ ) টেথিস হিমালয় , ( ২ ) হিমাদ্রি হিমালয় , ( ৩ ) হিমাচল হিমালয় এবং ( ৪ ) শিবালিক হিমালয় । 

( ১ ) টেথিস হিমালয় : ১২ কোটি বছর আগে হিমালয়ে প্রথমবার ভূআলোড়নের সময় টেথিস হিমালয়ের উত্থান শুরু হয় যা প্রায় ৭ কোটি বছর আগে পর্যন্ত চলতে থাকে । হিমালয়ের চারটি পর্বতশ্রেণির মধ্যে সবচেয়ে উত্তরে টেথিস হিমালয়ের অবস্থান । টেথিস হিমালয়ের অধিকাংশ স্থানই তিব্বতে অবস্থিত , তাই এই অংশের নাম রাখা হয়েছে টেথিস হিমালয় বা তিব্বত হিমালয় । এ ছাড়া , জম্মু কাশ্মীরের উত্তর অংশ ও হিমাচল প্রদেশের সামান্য অংশ টেথিস হিমালয়ের অন্তর্গত । টেথিস হিমালয়ের গড় উচ্চতা হল ৩০০০ মিটার , তবে কোথাও কোথাও এর উচ্চতা ৪৫০০-৫০০০ মি .। ভারতে টেথিস হিমালয়ের দৈর্ঘ্য প্রায় ১০০০ কিমি এবং প্রস্থ ৫০ কিমি থেকে ২২৫ কিমি । টেথিস অংশের উল্লেখযোগ্য পর্বতশ্রেণিগুলি হল — জাস্কর , লাডাক , কারাকোরাম , কৈলাস ইত্যাদি । কারাকোরাম পর্বতশ্রেণির গডউইন অস্টিন বা K2 ( ৮৬১১ মি . ) হল ভারতের উচ্চতম এবং বিশ্বের দ্বিতীয় উচ্চতম পর্বতশৃঙ্গ । এ ছাড়া অন্যান্য উল্লেখযোগ্য পর্বতশৃঙ্গগুলি হল – গ্যাসেরব্রুম I গাসেরৱুম II , ব্রডপিক । এখানকার উল্লেখযোগ্য গিরিপথগুলি হল— কারাকোরাম , বুন্দেলপীর , জোজিলা ইত্যাদি । 

( ২ ) হিমাদ্রি হিমালয় : আজ থেকে প্রায় ১২ কোটি বছর থেকে ৭ কোটি বছর আগে টেথিস হিমালয়ের উত্থানের সাথে সাথেই হিমাদ্রি হিমালয়ের সৃষ্টি হয় । হিমাচল হিমালয়ের উত্তরে এবং টেথিস হিমালয়ের দক্ষিণে হিমালয় পার্বত্য অঞ্চলের সবচেয়ে উঁচু এই পর্বতশ্রেণিটি অবস্থিত । এই পর্বতশ্রেণি পশ্চিমে নাঙ্গা পর্বত থেকে পূর্বে নামচাবারওয়া শৃঙ্খ পর্যন্ত বিস্তৃত । হিমাদ্রি হিমালয়ের গড় উচ্চতা ৬২০০ মি .। হিমালয়ের উচ্চতম শৃঙ্গগুলি হিমাদ্রিতেই অবস্থিত , যথা পৃথিবীর সর্বোচ্চ শৃঙ্গ মাডন্ট এভারেস্ট ( ৮৮৫০ মি . ) , তৃতীয় উচ্চতম শৃঙ্গ কাঞ্চনজঙ্ঘা ( ৮৫৯৮ মি . ) , মাকালু , ধবলগিরি , অন্নপূর্ণা , নন্দাদেবী , কেদারনাথ , কামেট , নাঙ্গা পর্বত , বদ্রীনাথ , ত্রিশূল ইত্যাদি । হিমাদ্রি হিমালয় সারাবছর তুষারাবৃত থাকে বলে এর অপর নাম হল হিমগিরি । হিমাদ্রি হিমালয়ের উল্লেখযোগ্য গিরিপথগুলি হল — বুর্জিলা , জোজিলা , বারা – লাচা – লা , সিপকিলা , নিতি পাস , লিপু লেক , নাথুলা , জেলেপলা ইত্যাদি । হিমাদ্রি হিমালয়ের প্রধান হিমবাহগুলি হল— গঙ্গোত্রী , যমুনোত্রী , মিলাম ইত্যাদি । পর্বতশ্রেণিটি উত্তর – পূর্বে নামচাবারওয়ার কাছে ও উত্তর পশ্চিমে নাঙ্গা পর্বতের কাছে চুলের কাঁটার ন্যায় বেঁকে গেছে । 

( ৩ ) হিমাচল হিমালয় প্রায় ২.৫ থেকে ৩ কোটি বছর আগে হিমালয় অঞ্চলে দ্বিতীয়বার প্রবল ভূআলোড়নের সময় হিমাচল হিমালয়ের সৃষ্টি হয় । শিবালিকের উত্তরে এবং হিমাদ্রির দক্ষিণে ৬০-৯০ কিমি চওড়া পর্বতশ্রেণিটি হিমাচল হিমালয় বা মধ্য হিমালয় নামে পরিচিত । হিমাচল হিমালয়ের গড় উচ্চতা ৩৫০০-৪৫০০ মিটার , এদের মধ্যে পিরপাঞ্জাল উচ্চতম । হিমাচল হিমালয়ের উল্লেখযোগ্য পর্বতশ্রেণিগুলি হল — পিরপাঞ্জাল , ধওলাধর , নাগটিব্বা , মুসৌরি প্রভৃতি । এটি প্রাচীন রূপান্তরিত শিলায় গঠিত এবং এটি ক্রমশ উত্তরে ঢালু হয়ে হিমাদ্রিতে মিশেছে । পিরপানজাল পার্বত্য অংশে বেশ কয়েকটি উপত্যকা রয়েছে , যেমন— জম্মু ও কাশ্মীর রাজ্যের অন্তর্গত পিরপাঞ্জাল ও উচ্চ হিমালয়ের মধ্যবর্তী কাশ্মীর উপত্যকা ( ১৩৫ কিমি দীর্ঘ ও ৪০ কিমি . চওড়া ) পিরপাঞ্জাল ও ধওলাধরের মধ্যে অবস্থিত হিমাচল প্রদেশের কুলু উপত্যকা , শিবালিক ও ধওলাধরের মধ্যে কাংড়া উপত্যকা ; এ ছাড়াও রয়েছে শতদ্রু উপত্যকা , লাহুল ও স্পিটি উপত্যকা ইত্যাদি । হিমাচল হিমালয়ের উল্লেখযোগ্য গিরিপথগুলি হল— বানিহাল , পিরপাঞ্জাল , বিদিল , সোলারগর ইত্যাদি । পিরপাঞ্চাল পর্বতশ্রেণির মধ্য দিয়ে কৃষাণগঙ্গা , ঝিলাম ( বিতস্তা ) ও চন্দ্রভাগা নদী প্রবাহিত হয়েছে । 

( ৪ ) শিবালিক হিমালয় : আজ থেকে প্রায় ২০ লক্ষ থেকে ২ কোটি বছর আগে হিমালয়ে প্রবল ভূআলোড়নের সময়ে শিবালিক হিমালয়ের সৃষ্টি হয় । এটি হিমালয়ের সর্বদক্ষিণের পর্বতশ্রেণি যা হিমাচল হিমালয়ের সমান্তরালভাবে প্রায় ২৫০০ কিমি . অঞ্চলে অবিচ্ছিন্নভাবে বিস্তৃত রয়েছে । এর উচ্চতা প্রায় ৬০০-১৫০০ মিটার এবং প্রস্থ ১০-১৫ কিমি । শিবালিক – এর উত্তর অংশ ক্রমশ ঢালু হয়ে বিভিন্ন উপত্যকায় পরিণত হয়েছে । শিবালিকের দক্ষিণ ঢাল ও উত্তর ঢাল গড়ানো । হিমাচল হিমালয় ও শিবালিক পর্বতশ্রেণির মধ্যবর্তী নীচু উপত্যকা উত্তরাঞ্চল রাজ্য দুন নামে পরিচিত । যেমন — দেরাদুন , কোটা , চৌখাম্বা , পাটলি প্রভৃতি । দেরাদুন হল ভারতের বৃহত্তম দুন উপত্যকা । 

জেনে রাখো : হিমালয়ের সিনটেক্সিয়াল বাঁক ( The Syntaxial Bends of the Himalayas ) : হিমালয় পর্বত পূর্ব ও পশ্চিমে যে হঠাৎই শেষ হয়ে গিয়ে দক্ষিণ অভিমুখে ছুঁচোলো বাঁক করেছে , একেই বলা হয় হিমালয়ের সিনটেক্সিয়াল বাঁক । পশ্চিমে সিনটেক্সিয়াল বাঁকটি সিন্ধু নদে এক গভীর গিরিখাত সৃষ্টি করেছে ও পূর্ব সিনটেক্সিয়াল বাঁকটি পূর্ব থেকে দক্ষিণে চুলের কাঁটার মতো বাঁক সৃষ্টি করেছে ।

3. দৈর্ঘ্য বরাবর হিমালয় পর্বতের ভূপ্রকৃতি ব্যাখ্যা করো । 

Ans: দৈর্ঘ্য বরাবর হিমালয় পর্বতের ভূপ্রকৃতি : পশ্চিম থেকে পূর্ব দিকে , আঞ্চলিক বৈশিষ্ট্য অনুসারে পূর্ব হিমালয় পার্বত্য অঞ্চলকে প্রধানত ৩ ভাগে ভাগ করা যায় । যথা ( i ) পশ্চিম হিমালয় , ( ii ) মধ্য হিমালয় ( নেপালে অবস্থিত ) এবং ( iii ) পূর্ব হিমালয় । 

( i ) পশ্চিম হিমালয় : এই হিমালয় পশ্চিমে নাঙ্গা পর্বত থেকে , পূর্বে নেপালের পশ্চিম সীমানায় অবস্থিত কালি নদী পর্যন্ত বিস্তৃত । জম্মু – কাশ্মীর , পাঞ্জাব , হিমাচল প্রদেশ ও উত্তরাঞ্চল এই হিমালয় – এর অন্তর্গত । এই পশ্চিম হিমালয়কে প্রধানত ৩ ভাগে ভাগ করা যায় । যথা : ( ক ) কাশ্মীর হিমালয় ; ( খ ) পাঞ্জাব ও হিমাচল হিমালয় এবং ( গ ) কুমায়ুন হিমালয় । 

( ক ) কাশ্মীর হিমালয় : জম্মু কাশ্মীরের প্রায় ৩.৫ লক্ষ বর্গ কিমি স্থান জুড়ে অবস্থান করছে এই কাশ্মীর হিমালয় । এখানে দক্ষিণ থেকে উত্তরে পরপর পাঁচটি পর্বতশ্রেণি দেখা যায় । পর্যায়ক্রমে দক্ষিণ থেকে উত্তরে রয়েছে – ( i ) শিবালিকের জম্মু ও পুঞ্জ পাহাড় , ( ii ) পিরপাঞ্জাল , ( iii ) জাস্কর পর্বত , ( iv ) লাডাক ও ( v ) কারাকোরাম পর্বতশ্রেণি । উচ্চ হিমালয় ও পিরপাঞ্জালের মাঝে রয়েছে কাশ্মীর উপত্যকা । এই অংশে অবস্থিত লাডাক মালভূমি , ভারতের উচ্চতম মালভূমি । • এখানকার হিমবাহ : কারাকোরাম পর্বতের সিয়াচেন ( ভারতের বৃহত্তম হিমবাহ , ৭৫ কিমি দৈর্ঘ্য ) , ফেডচেঙ্কো ( ৭৪ কিমি ) , হিসপার , বিয়াফো , বলটারো ইত্যাদি । হ্রদ : ডাল ও উলার হ্রদ । গিরিপথ : বানিহাল বা জওহর , পিরপাঞ্জাল । 

( খ ) পাঞ্জাব ও হিমাচল হিমালয় : পাঞ্জাব ও হিমাচল প্রদেশে প্রায় ৬৪ হাজার বর্গকিমি স্থান জুড়ে এই হিমালয় অবস্থিত । এই হিমালয়ের গড় উচ্চতা ৩৫০০-৪৫০০ মিটার ও এটি ৬০-৮০ কিমি চওড়া । ধওলাধর , নাগটিব্বা , মুসৌরি এখানকার প্রধান শৈলশিরা । 

( গ ) কুমায়ূন হিমালয় : উত্তরাঞ্চল – এর প্রায় ৪৬০০০ বর্গ কিমি স্থান জুড়ে অবস্থান করছে কুমায়ুন হিমালয় । কুমায়ুনের দক্ষিণ অংশের গড় উচ্চতা ৬০০ মি . কিন্তু উত্তর অংশের গড় উচ্চতা হল ৬০০০ মিটারের বেশি । হায়িকা , এখানকার প্রধান পর্বতশ্রেণি শিবালিক , হিমাচল , হিমাদ্রি । শিবালিক ও হিমাচলের মধ্যে দুন উপত্যকা অবস্থিত । • এখানে যেসকল হিমবাহ সৃষ্ট হ্রদ দেখা যায় তা ‘ তাল ‘ নামে । পরিচিত । যেমন — নৈনিতাল , ভীমতাল , সাততাল , পুনাতাল । এখানকার উল্লেখযোগ্য পর্বতশৃঙ্গ হল — নন্দাদেবী , চৌখাম্বা , কামেট , ত্রিশূল । এখানকার হিমবাহ দুটি হল — গঙ্গোত্রী ও যমুনোত্রী • এখানকার কুলু ও কাংড়া উপত্যকা বিখ্যাত । 

( ii ) পূর্ব হিমালয় : পশ্চিমে সিঙ্গালিলা পর্বতশ্রেণি থেকে পূর্ব নামচাবারওয়া পর্যন্ত বিস্তৃত হিমালয়ের এই অংশকে মোটামুটি তিন ভাগে ভাগ করা যায় । যথা : ( ক ) সিকিম ও দার্জিলিং হিমালয় ( খ ) ভুটান হিমালয় এবং ( গ ) অরুণাচল হিমালয় । 

( ক ) সিকিম ও দার্জিলিং হিমালয় : এই পর্বতমালা পশ্চিমবঙ্গ ও সিকিম রাজ্যে অবস্থিত । এখানকার উল্লেখযোগ্য পর্বতশ্রেণি হল — কাঞ্চনজঙ্ঘা ( ৮৫১৮ | মি . ভারতের দ্বিতীয় উচ্চতম ও পৃথিবীর তৃতীয় উচ্চতম ) , সান্দাকফু ( ৩৬৩০ মি . পশ্চিমবঙ্গের সর্বোচ্চ শৃঙ্গ ) , ফালুট , সবরগ্রাম ইত্যাদি । • এখানকার উল্লেখযোগ্য গিরিপথ নাথুলা , বুমলা , জেলেপলা ইত্যাদি । প্রধান হিমবাহ জেমু , তালুং , পৌহুনরী । 

( খ ) ভুটান হিমালয় : এটি ভুটানে অবস্থিত । 

( গ ) অরুণাচল হিমালয় : এটি অসম ও অরুণাচলে অবস্থিত । এখানের পর্বতশ্রেণি হল হিমাদ্রি , হিমাচল , শিবালিক এবং কাংটো হল এখানের সর্বোচ্চ শৃঙ্গ । বুমলা এখানকার উল্লেখযোগ্য গিরিপথ । 

4. পশ্চিম হিমালয়ের ভূপ্রকৃতির সংক্ষিপ্ত বর্ণনা দাও ।

Ans: পশ্চিম হিমালয় পশ্চিমে নাঙ্গা পর্বত থেকে পূর্বে নেপাল সীমান্তে অবস্থিত কালি নদী পর্যন্ত বিস্তৃত । আঞ্চলিক বৈশিষ্ট্য অনুসারে পশ্চিম হিমালয়কে মোটামুটি তিনটি ভাগে ভাগ করা যায় , যথা : ( ১ ) কাশ্মীর হিমালয় , ( ২ ) হিমাচল হিমালয় ও ( ৩ ) কুমায়ুন হিমালয় । 

( ১ ) কাশ্মীর হিমালয় : জম্মু ও কাশ্মীর রাজ্যের প্রায় ৩,৫০,০০০ বর্গকিমি স্থান জুড়ে কাশ্মীর হিমালয় অবস্থিত । পাঞ্জাবের সমভূমি থেকে ক্রমশ উঁচু হয়ে এখানকার শিবালিক পর্বতমালা উত্তরে হিমাচলের উল্লেখযোগ্য পর্বতশ্রেণি পিরপাঞ্জাল – এ মিশেছে । শিবালিকের গড় উচ্চতা প্রায় ৩,০০০ মিটার । এই অঞ্চলের দক্ষিণ থেকে উত্তরে পর পর পাঁচটি পর্বতশ্রেণি পশ্চিম থেকে পূর্ব দিকে বিস্তৃত হয়েছে , এরা হল : ( i ) শিবালিক পর্বতের জম্মু ও পুঞ্জ পাহাড় , ( ii ) পিরপাঞ্জাল , ( iii ) জাস্কার , ( iv ) লাডাক এবং সবশেষে 11 1 ভারতের ভূ ( v ) কারাকোরাম পর্বত । পিরপাঞ্জাল ও উচ্চ হিমালয়ের মধ্যে রয়েছে ভূস্বর্গ কাশ্মীর উপত্যকা । শ্রীনগরের দক্ষিণে প্রায় ১০০ কিলোমিটার বিস্তৃত পিরপাঞ্জাল পর্বতশ্রেণি ( ৩,৫০০-৫০০ মি ) কাশ্মীর উপত্যকাকে ভারতের অন্যান্য অংশ থেকে বিচ্ছিন্ন করেছে । কেবলমাত্র বানিহাল বা জওহর ( উচ্চতা ২,৮৩২ মি . ) , পিরপান্জাল ( ৩,৪৯৪ মি ) ও বুলন্দপির ( ৪ , ২০০ মি . ) প্রভৃতি গিরিপথগুলি দিয়ে নিসর্গ সৌন্দর্যের জন্য পৃথিবীবিখ্যাত কাশ্মীর উপত্যকায় প্রবেশ করা যায় । কাশ্মীর উপত্যকা দৈর্ঘ্যে প্রায় ১৫০ কি.মি. এবং প্রস্থে প্রায় ৫০ কি.মি. বিস্তৃত । ভূ – বিজ্ঞানীদের মতে , প্রাচীন কোনো হ্রদ ভরাট হয়ে এই উপত্যকার সৃষ্টি হয়েছে । ডাল , উলার প্রভৃতি হ্রদগুলি এই প্রাচীন স্মৃতি আজও বহন করছে । 

( ২ ) হিমাচল হিমালয় : হিমাচল বা পাঞ্জাব হিমালয় পাঞ্জাব ও ও হিমাচল প্রদেশের প্রায় ৫৬,০০০ বর্গ কিলোমিটার স্থান জুড়ে অবস্থিত । দক্ষিণ থেকে উত্তরে এই অঞ্চলটির উচ্চতা ৬০০ মিটার থেকে ৬,০০০ মিটার । সর্বদক্ষিণে অবস্থিত শিবালিকের গড় উচ্চতা ৬০০-৭০০ মিটার । শিবালিকের উত্তরে রয়েছে ধওলাধর ও নাগটিব্বা পর্বতশ্রেণি । এর উচ্চতা ৩,৫০০-৪ , ৫০০ মি .। এদের উত্তরে রয়েছে পিরপাঞ্জাল ও জাস্কর পর্বতশ্রেণি । এদের শৃঙ্গগুলি প্রায়ই তুষারাবৃত থাকে । শিবালিক ও ধওলাধরের মধ্যে কাংড়া , নাগটিব্বা ও ধাওলাধরের মধ্যে শতদ্রু , পিরপাঞ্জাল ও ধওলাধরের মধ্যে কুলু , উচ্চ হিমালয় ও জাস্করের মধ্যে স্পিটি এবং পিরপাঞ্জাল ও উচ্চ – হিমালয়ের মধ্যে লাহুল উপত্যকা অবস্থিত । এ – সমস্ত উপত্যকাগুলির প্রাকৃতিক দৃশ্য মনোরম । পিরপাঞ্চাল – এর মধ্যবর্তী | রোটাং গিরিপথ দিয়ে লাহুল উপত্যকায় প্রবেশ করা যায় । 

( ৩ ) কুমায়ূন হিমালয় : প্রায় ৪৬,০০০ বর্গকিমি বিস্তৃত কুমায়ুন হিমালয় পুরোপুরিভাবে নবগঠিত উত্তরাখণ্ড রাজ্যের অন্তর্গত । শিবালিক , হিমাচল ও হিমাদ্রি এই তিনটি পর্বতশ্রেণি এখানে দেখতে পাওয়া যায় । সর্বদক্ষিণে অবস্থিত শিবালিক পর্বতশ্রেণি প্রায় ১,০০০ মিটার উঁচু । শিবালিক পর্বতশ্রেণি উত্তর দিকে ক্রমশ ঢালু হয়ে দুন উপত্যকায় মিশেছে । দুন উপত্যকাগুলি শিবালিক ও হিমালয়ের মধ্যবর্তী অংশে সমান্তরালভাবে বিস্তৃত । ৩৫ কিমি দীর্ঘ ও ২৫ কিমি বিস্তৃত দেরাদুন উপত্যকাটি সর্ববৃহৎ । দুন উপত্যকাগুলির উত্তরে রয়েছে হিমাচল পর্বতশ্রেণি , এর গড় উচ্চতা ১,৬০০ মিটার । এখানকার মুসৌরি পর্বতশ্রেণিতে মুসৌরি শৈলনগরী অবস্থিত । কুমায়ুন হিমালয়ের উচ্চ অংশে অনেকগুলি হ্রদ বা তাল আছে । এদের মধ্যে নৈনিতাল , ভীমতাল , সাততাল , পুনাতাল প্রভৃতি বিখ্যাত । এই অঞ্চলে ‘ তাল ‘ বলতে হ্রদকে বোঝায় । হিমাচল হিমালয়ের উত্তরে হিমাদ্রি হিমালয় অবস্থিত । এর গড় উচ্চতা ৬,০০০ মিটারের বেশি । হিমাদ্রির উঁচু শৃঙ্গগুলির মধ্যে নন্দাদেবী ( ৭,৮১৭ মি . ) , কামেট ( ৭,৭৫৬ মি . ) , চৌখাম্বা ( ৭,১৩৮ মি . ) , ত্রিশূল ( ৭ , ১২০ মি . ) , দুনগিরি ( ৭,০৬৬ মি . ) , কেদারনাথ ( ৬,৯৪০ মি . ) নন্দাকোট ( ৬,৮৬১ মি . ) , গঙ্গোত্রী ( ৬,৬১৪ মি . ) , প্রভৃতি বিখ্যাত । এই শৃঙ্গগুলি প্রায়ই বরফাবৃত থাকে । এখানকার গঙ্গোত্রী ও যমুনেত্রী হিমবাহ থেকে যথাক্রমে গঙ্গা ও যমুনা নদীর উৎপত্তি হয়েছে । 

5. পূর্ব হিমালয়ের ভূপ্রকৃতির বর্ণনা দাও ।

Ans: পশ্চিমে নেপালের সীমানায় অবস্থিত সিঙ্গালিলা পর্বতশ্রেণি থেকে পূর্বে অরুণাচল প্রদেশের নামচাবারওয়া পর্যন্ত বিস্তৃত হিমালয়ের অংশকে পূর্ব হিমালয় বলা হয় । গড়ে ১৫০০ মিটার উচ্চতাযুক্ত এই হিমালয় সমগ্র সিকিম , ভুটান , পশ্চিমবঙ্গের দার্জিলিং জেলা ও প্রায় সমগ্র অরুণাচল প্রদেশজুড়ে বিস্তৃত । আঞ্চলিক বৈশিষ্ট্য অনুসারে এই পূর্ব হিমালয়কে ৩ ভাগে যায় । যথা- ( ১ ) সিকিম – দার্জিলিং হিমালয় , ( ২ ) ভুটান হিমালয় ( ভুটানে অবস্থিত ) , ( ৩ ) অরুণাচল হিমালয় । 

( ১ ) সিকিম – দার্জিলিং হিমালয় : সিকিমের পশ্চিমদিকে অবস্থিত সিঙ্গালিলা পর্বতশ্রেণি থেকে পূর্বদিকে ডানকিয়া পর্বতশ্রেণি পর্যন্ত বিস্তৃত এই সিকিম দার্জিলিং হিমালয় । ভাগ করা • এখানকার উল্লেখযোগ্য পর্বতশৃঙ্গ হল — কাঞ্চনজঙ্ঘা ( ৮৫৯৮ মি . ভারতের দ্বিতীয় উচ্চতম ও পৃথিবীর তৃতীয় উচ্চতম শৃঙ্গ ) , সান্দাক্ফ ( ৩৬৩০ মি . ) পশ্চিমবঙ্গের সর্বোচ্চ শৃঙ্গ ) , ফালুট ( ৩৫৯৬ মি . ) , সবরগ্রাম ( ৩৫৪৩ মি . ) । • এখানকার উল্লেখযোগ্য গিরিপথগুলি হল — নাথুলা , বুমলা , জেলেপলা ইত্যাদি । নাথুলা ও জেলেপলা গিরিপথের সাহায্যে তিব্বতের চুম্বি উপত্যকার সঙ্গে যোগাযোগ করা যায় ।

 দার্জিলিং হিমালয়ের “ মিরিক ” ও সিকিম হিমালয়ের “ ছাঙ্গু ” হল এখানের দুটি বিখ্যাত হ্রদ । • এখানের প্রধান হিমবাহ — জেমু , তালুং , পৌহুনরী । প্রশ্ন | ১৩ | দাক্ষিণাত্য মালভূমির চিত্রসহ বর্ণনা দাও । উত্তর : দাক্ষিণাত্য মালভূমি : অবস্থান : নর্মদা নদীর দক্ষিণে সাতপুরা , মহাকাল পর্বত থেকে দক্ষিণে কন্যাকুমারিকা অন্তরীপ পর্যন্ত এবং পূর্বে পূর্বঘাট পর্বত থেকে পশ্চিমে পশ্চিমঘাট পর্বত পর্যন্ত যে ত্রিভুজাকার ভূ – খণ্ড দেখা যায় , তাকেই বলে দাক্ষিণাত্য মালভূমি । এর বিস্তার উত্তর – দক্ষিণে প্রায় ১৭০০ কিমি .। শ্রেণিবিভাগ : ভূ – প্রকৃতিগত পার্থক্য অনুসারে দাক্ষিণাত্য মালভূমিকে দুই ভাগে ভাগ করা যায় । যথা : ( ক ) দাক্ষিণাত্য মালভূমির পার্বত্য অংশ এবং ( খ ) দাক্ষিণাত্য মালভূমির মূল অংশ । ( ক ) দাক্ষিণাত্য মালভূমির পার্বত্য অংশ : i ) পশ্চিমঘাট পর্বতমালা : * অবস্থান : পশ্চিমে আরব সাগরের উপকূল বরাবর উত্তর – দক্ষিণে এই সহ্যাদ্রি পর্বতমালা অবিচ্ছিন্নভাবে বিস্তৃত । * দৈর্ঘ্য : উত্তর – দক্ষিণে দৈর্ঘ্য ১৬০০ কিমি । * বৈশিষ্ট্য : পশ্চিমে এই পাহাড় খাড়াভাবে ওপরে উঠে । গেছে ও পূর্বে এটি সিঁড়ির মতো ধাপে ধাপে নেমে গেছে । * পর্বতশৃঙ্গ : কলসুবাই ( ১৬৪৬ মি . ) , সালহের ( ১৫৭৬ মি . ) , মহাবালেশ্বর , হরিশচন্দ্র গড় । * সর্বোচ্চ শৃঙ্গ : ভাভুলমালা ( ২৩৩৯ মি . ) * গিরিপথ : নাসিকের নিকটবর্তী থালঘাট গ্যাপ ও পুণের নিকটবর্তী ভোরঘাট গ্যাপ উল্লেখযোগ্য । ii ) পূর্বঘাট পর্বতমালা : * অবস্থান : পূর্বে বঙ্গোপসাগর উপকূল বরাবর উত্তর দক্ষিণে এই মলয়াদ্রি পর্বত বিস্তৃত । * বৈশিষ্ট্য : এটি কতকগুলি বিচ্ছিন্ন পর্বতের সমষ্টি । এটি একটি ক্ষয়জাত পর্বত । * পর্বত / পর্বতশৃঙ্গ : মহেন্দ্রগিরি শৃঙ্গ ( ১৫০২ মি . ) , আনাইমালাই পর্বত , সেভরয় , জাভাদি , ভেলিকোডা ইত্যাদি পর্বত । * সর্বোচ্চ শৃঙ্গ : আর্মাকোন্ডা ( ১৬৮০ মি . ) * নদনদী : গোদাবরী , কৃয়া , পেন্নার নদী এই পর্বতের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হয়ে বঙ্গোপসাগরে পড়েছে । iii ) উত্তরের পর্বতমালা : E * অবস্থান : দাক্ষিণাত্য মালভূমির উত্তরপ্রান্তে এই পর্বতমালা ও অবস্থিত । * পর্বত : মালভূমির উত্তর সীমায় সাতপুরা ( ধূপগড় সর্বোচ্চ শৃঙ্গ ১৩৫০ মি . ) , সাতপুরার উত্তরে মহাদেব ( 1 ( পাঁচমারি সর্বোচ্চ শৃঙ্গ ১০৫০ মি . ) ও সাতপুরার উত্তর – পূর্বে মহাকাল পর্বতগুলি অবস্থিত । ( অমরকণ্টক সর্বোচ্চ শৃঙ্গ ১০৫৭ মি . ) * বৈশিষ্ট্য : ৩ টি পর্বতই বেশ প্রাচীন । তাই ক্ষয়প্রাপ্ত হয়ে উচ্চতা হ্রাস পেয়েছে । সাতপুরা হল একটি স্তূপ পর্বত । iv ) দক্ষিণের পর্বতমালা : * অবস্থান : পূর্বঘাট ও পশ্চিমঘাট পর্বত দুটি দক্ষিণদিকে নীলগিরি পর্বতগ্রন্থিতে মিলিত হয়ে এই পর্বত উৎপন্ন হয়েছে । * পর্বত : আন্নামালাই পর্বত ( সর্বোচ্চ শৃঙ্গ আনাইমুদি ২৬৯৫ । মি . ) আনাইমুদি দাক্ষিণাত্য মালভূমির সর্বোচ্চ শৃঙ্গ , পালনি পর্বত ও কার্ডামম পর্বত । * গিরিপথ : নীলগিরি পর্বতে অবস্থিত পালঘাট গ্যাপ । ( খ ) দাক্ষিণাত্য মালভূমির মূল অংশ : দাক্ষিণাত্য মালভূমির অংশকে ৩ ভাগে ভাগ করা যায় । ( i ) মহারাষ্ট্র মালভূমি , ( ii ) কর্ণাটক মালভূমি ও ( iii ) তেলে খান মালভূমি । 1 ) মহারাষ্ট্র মালভূমি : মহারাষ্ট্রে অবস্থিত লাভা দ্বারা গঠিত এই মালভূমিতে সিঁড়ির মতো ধাপ দেখা যায় বলে একে ডেকানটা , বলে । ব্যাসল্ট শিলায় গঠিত বলে মৃত্তিকা কৃষ্ণবর্ণের । ধাপগুলির মাথা চ্যাপটা ও সমতল ও পার্শ্বদেশ বেশ খাড়া । ii ) কর্ণাটক মালভূমি : ডেকানট্র্যাপ – এর দক্ষিণে কর্ণাটক রাজে এই মালভূমি অবস্থিত । এই ব্যবচ্ছিন্ন মালভূমির গড় উচ্চতা ৬০০-৯০০মি . , ও মৃত্তিকা হল লাল । * মালনাদ : এই মালভূমির পশ্চিম অংশের ৩২০ কিমি দীর্ঘ ও প্রায় ৩৫ কিমি প্রশস্ত উঁচুনীচু ঢেউ খেলানো অঞ্চল হ মালনাদ । * ময়দান : পূর্বদিকের কম ঢেউখেলানো ও সমপ্রায়ভূমিকে বলে ময়দান । এই দুই অঞ্চল গ্রানাইট ও নাইস শিলায় গঠিত । iii ) তেলেঙ্গানা মালভূমি : অন্ধ্রপ্রদেশ রাজ্যের অন্তর্গত তেলেঙ্গানা মালভূমি অঞ্চলটি গ্রানাইট ও নাইস শিলায় গঠিত ।। এটি একটি সমপ্রায় ভূমি । গড় উচ্চতা ৫০০-৬০০ মি .। সাতমাল হল এখানকার উল্লেখযোগ্য পাহাড় ।

6. মধ্য ও পূর্ব ভারতের মালভূমি ও উচ্চভূমি সম্পর্কে যা জান সংক্ষেপে লেখো ।

Ans: অবস্থান : উত্তরে গঙ্গা সমভূমি , দক্ষিণে দাক্ষিণাত মালভূমি , উত্তর – পশ্চিমে আরাবল্লি পর্বত , পূর্বে রাজমহল পাহাড় ও পূর্বঘাট পর্বত ও পশ্চিমে পশ্চিমঘাট পর্বত – এর মধ্যবর্তী অংশে এই মালভূমি অঞ্চলটি অবস্থিত । 

উৎপত্তি : এটি পৃথিবীর প্রাচীনতম ভূখণ্ড গন্ডোয়ানাল্যান্ডের অংশবিশেষ , যা অতি প্রাচীন আগ্নেয় ( গ্রানাইট ) ও রূপান্তরিত ( নাইস ) শিলা দ্বারা গঠিত । 

শ্রেণিবিভাগ : মধ্য ও পূর্ব ভারতের মালভূমি ও উচ্চভূমি অঞ্চলকে প্রধানত দু – ভাগে ভাগ করা যায় । যথা : ( ১ ) মধ্য ভারতের উচ্চভূমি এবং ২ ) পূর্ব ভারতের উচ্চভূমি ও মালভূমি । 

( ১ ) মধ্য ভারতের উচ্চভূমি : আদিকাল থেকে বিশ্বা পর্যন্ত বিভিন্ন ধরনের কঠিন ও নরম শিলায় এখানকার ভূ গঠিত হয়েছে । নরম শিলাস্তর বেশি ক্ষয় পেয়ে মালভূমির আকাম নিয়েছে এবং কঠিন শিলা অপেক্ষাকৃত কম ক্ষয় পেয়ে ছোটো ছোটো পাহাড়ে পরিণত হয়েছে । সমগ্র অঞ্চলটির গড় উচ্চতা ১০০-৬০০ মিটার এবং দক্ষিণ থেকে উত্তর ও উত্তর – পূর্ব দিকে । ক্রমশ ঢালু হয়ে গেছে । সমগ্র অঞ্চলটিকে প্রধানত কয়েকটি ভাগে ভাগ করা হয় । যথা : ( ক ) আরাবল্লি পর্বতশ্রেণি : এটি ভারতের প্রাচীনতম পর্বত এবং পৃথিবীর প্রাচীনতম ভঙ্গিল পর্বতসমূহের মধ্যে অন্যতম । এই পর্বতটি দিল্লি থেকে আমেদাবাদ পর্যন্ত উত্তর – পশ্চিমে ৮০০ কিমি দৈর্ঘ্যে বিস্তৃত । ক্ষয় পেতে পেতে বর্তমানে এটি একটি ক্ষয়জাত পর্বতে পরিণত হয়েছে । এর গড় উচ্চতা ৪০০-৬০০ মি .। এর সর্বোচ্চ শৃঙ্গ হল গুরুশিখর ( ১৭৭২ মি . ) এবং অপর একটি উল্লেখযোগ্য শৃঙ্গ হল মাউন্ট আবু । ( খ ) মারওয়ার উচ্চভূমি : এটি আরাবল্লি পর্বতের পূর্বদিকে অবস্থিত । একে পূর্ব রাজস্থান উচ্চভূমিও বলে । ( গ ) বুন্দেলখণ্ড মালভূমি : এই মালভূমিটি যমুনা নদীর দক্ষিণে অবস্থিত । গ্রানাইট ও নাইস শিলায় গঠিত এই মালভূমি বর্তমানে ক্ষয়প্রাপ্ত হয়ে সমপ্রায় ভূমিতে পরিণত হয়েছে । ( ঘ ) বিন্ধ্য পর্বত : নর্মদা নদীর উত্তরে অবস্থিত এই স্তূপ পর্বতটি প্রায় ১০৫০ কিমি দীর্ঘ । চুনাপাথর ও বেলেপাথর জাতীয় পাললিক শিলায় এটি গঠিত । এর সর্বোচ্চ শৃঙ্গ হল মানপুর ( ৮৮১ মি . ) । ( ঙ ) রেওয়া মালভূমি : বিন্ধ্য পর্বতের পূর্ব দিকে অবস্থিত । লাভা গঠিত রেওয়া মালভূমি অঞ্চলটির ভূপ্রকৃতি হল তরঙ্গায়িত । ( চ ) মালব মালভূমি : বিন্ধ্য ও আরাবল্লি পর্বতের মধ্যবর্তী স্থানে এটি অবস্থিত । প্রধানত লাভা দ্বারা গঠিত বলে এর ভূমির প্রকৃতি উঁচুনীচু ও তরঙ্গায়িত । গড় উচ্চতা ৫০০-৬০০ মিটার । ( ছ ) নর্মদা উপত্যকা : বিন্ধ্য পর্বতের দক্ষিণে অবস্থিত এই উপত্যকা ভূপ্রকৃতিগত ভাবে একটি গ্রস্ত উপত্যকা । 

( ২ ) পূর্ব ভারতের উচ্চভূমি ও মালভূমি : মধ্য ভারতের মালভূমি অঞ্চলটি পূর্বদিকে প্রসারিত হয়ে এই অঞ্চলটি গঠন করে । পূর্বে কাইমুর থেকে পশ্চিমে বাঘেলখণ্ড মালভূমি ও উত্তরে ছোটোনাগপুর মালভূমি থেকে দক্ষিণে দণ্ডকারণ্য পর্যন্ত প্রসারিত । এই সমগ্র অঞ্চলটি প্রধানত চার ভাগে বিভক্ত । যথা— ( ক ) ছোটোনাগপুর মালভূমি : এই ছোটোনাগপুর মালভূমিটি বাঘেলখণ্ড মালভূমির পূর্ব দিকে অবস্থিত । এটি আর্কিয়ান যুগের গ্রানাইট ও নাইস শিলায় গঠিত , যার গড় উচ্চতা হল ৭০০ মি .। এটি প্রধানত রাঁচী মালভূমি , হাজারিবাগ মালভূমি ও কোডারমা মালভূমি দ্বারা গঠিত । ‘ প্যাট অঞ্চল ‘ ( ১১৪২ মি . ) এখানকার সর্বোচ্চ অংশ । ( খ ) বাঘেলখণ্ড মালভূমি : এই মালভূমিটি শোন নদীর দক্ষিণে অবস্থিত । এর গড় উচ্চতা ৪০০-৬০০ মিটার । এটি গ্রানাইট ও প্রাচীন পাললিক শিলায় গঠিত । ( গ ) মহানদী অববাহিকা : এটি মহানদীর তীরবর্তী অববাহিকা , যার গড় উচ্চতা হল ২০০ মি .। এই অঞ্চল প্লেট ও চুনাপাথর দিয়ে গঠিত । ( ঘ ) গড়জাত পাহাড় ও দণ্ডকারণ্য মহানদীর পূর্বাংশে ওড়িশার উচ্চভূমিকে গড়জাত পাহাড় বলে । ছত্তিশগড় সমভূমির দক্ষিণে দণ্ডকারণ্য অঞ্চল অবস্থিত । এই অঞ্চলের বোনাই , কেওনঝড় ও সিমলিপাল পাহাড়গুলি উল্লেখযোগ্য ।

8. ভারতের উপকূলীয় সমভূমির সংক্ষিপ্ত বিবরণ দাও । অথবা , ভারতের পূর্ব উপকূলের সমভূমির পরিচয় দাও । অথবা , ভারতের পশ্চিম উপকূলের সমভূমির পরিচয় দাও । 

Ans: ত্রিভুজাকৃতি দাক্ষিণাত্যের মালভূমি অঞ্চলের পূর্ব প্রান্তে বঙ্গোপসাগর এবং পশ্চিম প্রান্তে আরব সাগরের উপকূল বরাবর সংকীর্ণ সমভূমিকে ভারতের উপকূলীয় সমভূমি অঞ্চল বলা হয় , যা ( 1 ) পশ্চিম উপকূলীয় সমভূমি এবং ( 2 ) পূর্ব উপকূলীয় সমভূমি— এই দুই অংশে বিভক্ত ।

 ( ক ) পশ্চিম উপকূলীয় সমভূমি : ভারতের দক্ষিণ – পশ্চিম প্রান্তে আরব সাগরের উপকূল বরাবর বিস্তৃত প্রায় ১,৬০০ কিমি দীর্ঘ এই অঞ্চলটি উত্তরে কচ্ছের রণ অঞ্চল থেকে দক্ষিণে কন্যাকুমারী পর্যন্ত বিস্তৃত । পূর্ব উপকূলের সমভূমির তুলনায় এই সমভূমি অঞ্চলটি বেশ সংকীর্ণ ও বন্ধুর । 

ভূ – প্রাকৃতিক বিভাগ : ভূপ্রকৃতির তারতম্য অনুসারে পশ্চিম উপকূলীয় সমভূমিকে ৬ ভাগে ভাগ করা যায় , যথা : ( ১ ) কচ্ছের রণ , ( ২ ) কচ্ছ উপদ্বীপ , ( ৩ ) কাথিয়াবাড় উপদ্বীপ , ( ৪ ) গুজরাট সমভূমি , ( ৫ ) কোঙ্কন উপকূলীয় সমভূমি , ( ৬ ) কর্ণাটক উপকূলীয় সমভূমি এবং ( ৭ ) মালাবার উপকূলীয় সমভূমি । 

( ১ ) কচ্ছের রণ : গুজরাট রাজ্যের উত্তরে এবং কচ্ছ উপদ্বীপের উত্তর ও পূর্বাংশে ৭৩,৬০০ বর্গকিলোমিটার বিস্তৃত অগভীর জলাভূমি রণ নামে পরিচিত । উত্তরের অংশ বৃহৎ রণ ও দক্ষিণের অংশ ক্ষুদ্র রণ নামে পরিচিত । বর্ষাকালে এই অঞ্চল সমুদ্র এবং লুনি , বানস প্রভৃতি নদনদীর দ্বারা প্লাবিত হয় । গ্রীষ্মকালে এই অঞ্চল সম্পূর্ণ শুষ্ক , উদ্ভিদহীন ও সাদা লবণে আচ্ছাদিত বালুকাময় প্রান্তরে ( সমভূমি অঞ্চলে ) রূপান্তরিত হয় । 

( ২ ) কচ্ছ উপদ্বীপ : রণের দক্ষিণে কচ্ছ উপদ্বীপ অবস্থিত । ‘ কচ্ছ ‘ শব্দের অর্থ ‘ জলময় দেশ ‘ । তিন দিকে জলবেষ্টিত কচ্ছ উপদ্বীপের উত্তর ও দক্ষিণে সমুদ্র সংলগ্ন অংশে পলিগঠিত সমভূমি এবং মধ্যভাগে ৩১৫-৩৮৫ মিটার উঁচু বেলেপাথরের পাহাড় দেখা যায় । 

( ৩ ) কাথিয়াবাড় উপদ্বীপ : কচ্ছ উপদ্বীপের কিছুটা দক্ষিণে অবস্থিত এবং তিনদিকে জলবেষ্টিত ( আরব সাগর , কচ্ছ উপসাগর ও কাম্বে উপসাগর ) কাথিয়াবাড় উপদ্বীপ অঞ্চলটি সৌরাষ্ট্র নামেও পরিচিত । গিরণার হল এই অঞ্চলের একটি উল্লেখযোগ্য পাহাড় । গিরণার পাহাড়ের গোরখনাথ শৃঙ্খটি হল সৌরাষ্ট্রের সর্বোচ্চ অংশ ( উচ্চতা ১,১১৭ মিটার ) । 

( ৪ ) গুজরাট সমভূমি : গুজরাট সমভূমি অঞ্চলটি উত্তরে কাথিয়াবাড় উপদ্বীপের দক্ষিণ প্রান্ত থেকে দক্ষিণে মহারাষ্ট্রের উত্তর সীমানা পর্যন্ত বিস্তৃত । পশ্চিম উপকূলের সংকীর্ণ সমভূমিটি এই অঞ্চলে কিছুটা চওড়া হয়ে গিয়েছে । কচ্ছ উপসাগর ও কাম্বে উপসাগর নামে আরব সাগরের দুটি প্রসারিত অংশ এই অঞ্চলের দু’পাশ দিয়ে ভারতের মূল ভূখণ্ডের কিছুটা ভিতরে ঢুকে গিয়েছে । 

( ৫ ) কোঙ্কন উপকূলীয় সমভূমি : প্রায় ৫০০ কিমি দীর্ঘ এই সমভূমি অঞ্চলটি গুজরাট সমভূমির দক্ষিণ প্রান্ত থেকে গোয়া পর্যন্ত বিস্তৃত । 

( ৬ ) কর্ণাটক উপকূলীয় সমভূমি : প্রায় ২২৫ কিমি দীর্ঘ এই সমভূমি অঞ্চলটি গোয়া থেকে ম্যাঙ্গালোর প্রান্ত থেকে গোয়া পর্যন্ত বিস্তৃত । 

( ৭ ) মালাবার উপকূলীয় সমভূমি প্রায় ৫০০ কিমি দীর্ঘ এই সমভূমি ম্যাঙ্গালোর থেকে কন্যাকুমারী পর্যন্ত বিস্তৃত । অসংখ্য ছোটো – বড়ো হ্রদ এবং উপহ্রদ ( লেগুন ) বা কয়ালের উপস্থিতি হল । মালাবার উপকূলের ভূপ্রকৃতির উল্লেখযোগ্য বৈশিষ্ট্য । ( খ ) পূর্ব উপকূলীয় সমভূমি : বঙ্গোপসাগরের উপকূলভাগে ভারতের ওড়িশা , অন্ধ্রপ্রদেশ ও তামিলনাড়ু রাজ্যের পূর্ব প্রান্তে অবস্থিত পূর্ব উপকূলের সমভূমি অঞ্চলটি উত্তরে ওড়িশা থেকে দক্ষিণে তামিলনাড়ু রাজ্যের দক্ষিণ প্রান্ত পর্যন্ত প্রায় ১,৫০০ কিলোমিটার দীর্ঘ অঞ্চল জুড়ে অবস্থান করছে । এই সমভূমির গড় বিস্তার বেশি ১০০ কিমি । বিশেষত মহানদী , গোদাবরী , কৃষ্ণা ও কাবেরী বদ্বীপ অঞ্চলে এই উপকূলভূমি পূর্ব – পশ্চিমে বহুদূর বিস্তৃত হয়েছে । পূর্ব উপকূলীয় সমভূমি অঞ্চলটি প্রধানত দু’ভাগে বিভক্ত , যথা : 

( ১ ) উত্তর সরকার উপকূল এবং ( ২ ) করমণ্ডল উপকূল ।

 ( ১ ) উত্তর সরকার উপকূল : ওড়িশা সুবর্ণরেখা নদীর মোহানা থেকে অন্ধ্রপ্রদেশের কৃয়া নদীর বদ্বীপের পূর্বভাগ পর্যন্ত বিস্তৃত উপকূল ভাগকে উত্তর সরকার উপকূল বলা হয় । উত্তর সরকার উপকূলটি ( i ) ওড়িশা উপকূল ( ii ) অন্ধ্ৰ উপকূল এই দু’টি অংশে বিভক্ত । ( i ) ওড়িশা ( উৎকল ) উপকূল : উত্তর সরকার উপকূলের উত্তরভাগ অবস্থিত উপকুল বা ওড়িশা উপকূলীয় অংশটি প্রধানত মহান বৈতরণী এবং ব্রাহ্মণী নদী তিনটির বদ্বীপ নিয়ে গঠিত হয়েছে । ওড়িশ উপকূলকে মহানদী বদ্বীপ অঞ্চলও বলা হয় । প্রধানত পলিগঠিত নিম্নভূমি , জলাভূমি এবং ছোটো ছোটো বালিয়াড়ি নিয়ে ওড়িশ উপকূল অঞ্চলটি গঠিত । ভারতের বৃহত্তম উপহ্রদ চিল্কা এই অ্যা অবস্থিত । সমুদ্রের সঙ্গে ( বঙ্গোপসাগর ) যুক্ত থাকায় চিন্তার জ লবণাক্ত । জানো কি ? চিল্কা এশিয়ার বৃহত্তম লবণাক্ত হ্রদ । ১১০০ বর্গকিছি । ক্ষেত্রফল বিশিষ্ট চিল্কা ওড়িশার ৩ টি জেলা জুড়ে অবস্থান করছে , যথা — পুরী , খুরদা , গঞ্জাম জেলা । জৈববৈচিত্র্যে ভরপুর ও আর্থসামাজিক গুরুত্বের জন্য চিন্তা লেগুন ‘ রামসার সাইটের ‘ মর্যাদা পেয়েছে । 

( ii ) অন্ধ্ৰ উপকূল : উৎকল উপকুলের পশ্চিমে অবস্থিত অনু উপকূল অঞ্চলটি চিল্কা উপহ্রদ থেকে কৃয়া নদীর মোহানা পর্যন্ত বিস্তৃত । এই অঞ্চলটি প্রাচীন শিলা গঠিত উচ্চভূমি এবং কুমৃত্তিক গঠিত সমভূমি অঞ্চল নিয়ে গঠিত হয়েছে । অন্ধ্র উপকূলের কয় ও গোদাবরী নদীর বদ্বীপ অঞ্চলে মোহানা থেকে পশ্চিম দিয়ে । স্থলভাগের মধ্য দিয়ে বহুদূর পর্যন্ত ( ২৮০ কিলোমিটার ) প্রসারিত হয়েছে । গোদাবরী ও কৃয়া বদ্বীপের মধ্যে কোলেরু হ্রদ অবস্থিত । 

( ২ ) করমণ্ডল উপকূল : কৃয়া বদ্বীপের দক্ষিণ প্রান্ত থেকে কন্যাকুমারী পর্যন্ত বিস্তৃত উপকূলভাগকে করমণ্ডল উপকূল বলে । এ ছাড়া , পুলিকট উপহ্রদ থেকে কন্যাকুমারী পর্যন্ত বিস্তৃত উপকূলকে তামিলনাড়ু উপকূলও বলা হয় । এই অংশের কাবেরী বদ্বীপ দক্ষিণ ভারতের শস্যভাণ্ডার । করমণ্ডল উপকূলের দক্ষিণাংশের মান্নার উপসাগর ও পকপ্রণালী অবস্থিত ।

9. ভারতের ভূ – প্রাকৃতিক বিভাগসমূহের গুরুত্ব লেখো । 

Ans: ভারতের ভূ – প্রাকৃতিক বিভাগসমূহের গুরুত্ব হল নিম্নরূপ – 

( ১ ) উত্তরের পার্বত্য অঞ্চলের গুরুত্ব : 

( i ) জলবায়ুর ওপর প্রভাব : উত্তরে হিমালয় পর্বতে অবস্থানের জন্য উত্তরের শীতল সাইবেরীয় বাতাস ভারতে প্রবে করতে পারে না বলে তীব্র শীতের হাত থেকে রক্ষা পাওয়া যায় । 

( ii ) মৌসুমি বৃষ্টিপাত : দক্ষিণ পশ্চিম মৌসুমি বায়ু হিমালয়ে বাধা পেয়ে উত্তর – পূর্ব ও উত্তর ভারতে প্রচুর শৈলোৎক্ষেপ বৃষ্টিপাত ঘটায় । 

( iii ) প্রতিরক্ষা হিমালয় পর্বত ভারতের উত্তর সীমান্তে দুর্ভে প্রাচীরের মতো দণ্ডায়মান থেকে বহিঃশত্রুর আক্রমণ থেকে দেশকে রক্ষা করছে । 

( iv ) নদীর উৎসস্থল হিমালয়ের বিভিন্ন হিমবাহগুলি হয় উত্তর ভারতের প্রধান নদীগুলোর উৎস ( যেমন — গঙ্গা , সি ব্রহ্মপুত্র ইত্যাদি ) । 

( v ) সমভূমির সৃষ্টি : ভারতের সিন্ধু , গঙ্গা , ব্রহ্মপুত্র প্রভৃ নদীগুলি হিমালয় পর্বত থেকে প্রচুর পরিমাণে পলি বয়ে এনে উক্ত ও পূর্ব ভারতের বিশাল সমভূমি অঞ্চলের সৃষ্টি করেছে । 

( vi ) জলবিদ্যুৎ উৎপাদন : হিমালয়ের বরফগলা জলে পুষ্ট খরস্রোতা পার্বত্য নদীগুলি জলবিদ্যুৎ উৎপাদনে সাহায্য করে । 

( vii ) বনজসম্পদ হিমালয় পর্বতের চিরহরিৎ ও সরলবর্গীয় গাছের কাঠ আসবাবপত্র ও কাগজ উৎপাদনে কাজে লাগে । 

( viii ) কৃষিকাজ হিমালয় পার্বত্য অঞ্চলের ঢালে সিঙ্কোনা , আপেল , চা , কমলালেবু , এলাচ প্রভৃতি চাষ করা হয় । 

( ix ) ওষুধ প্রস্তুত : হিমালয়ে নানা প্রকার ভেষজ উদ্ভিদ পাওয়া যায় । 

( x ) পর্যটন ও তীর্থকেন্দ্র : অপূর্ব নিসর্গ দৃশ্যসমূহের অধিকারী হিমালয় সারা পৃথিবীর ভ্রমণ পিপাসুদের কেন্দ্রস্থল হয়ে ওঠায় এই অঞ্চলে প্রচুর পর্যটন কেন্দ্র এবং তীর্থস্থান গড়ে উঠেছে । 

( xi ) পশুপালন : হিমালয়ের পার্বত্য ঢালে প্রচুর ভেড়া , ছাগল , গরু , প্রতিপালন করা হয় । 

( xii ) বৈদেশিক মুদ্রা : এই পার্বত্য অঞ্চলের কাঠ , চা , এলাচ ও পর্যটন থেকে ভারত প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করে । 

( xiii ) হিমালয় পর্বতের অধিবাসীরা অত্যন্ত সৎ , পরিশ্রমী ও কষ্টসহিঙ্কু । 

( xiv ) সাংস্কৃতিক গুরুত্ব : হিমাদ্রি হিমালয় যে দুর্জয় ব্যবধানের প্রাচীর গড়ে তুলেছে , তার ফলে ভারতবর্ষ বহির্জগৎ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে ভারতবর্ষ নিজস্ব সভ্যতা ও সংস্কৃতি গড়ে তোলার সুযোগ পেয়েছে । 

( ২ ) উত্তরের সমভূমি অঞ্চলের গুরুত্ব : 

( i ) এটি ভারতের সবচেয়ে উর্বর স্থান । 

( ii ) এখানে বিভিন্ন নদী বাহিত পলি জমে যে উর্বর জমি গঠন করেছে তাতে প্রচুর চাষবাস করা যায় । এখানে ধান , গম , জোয়ার , বাজরা , তৈলবীজ ও প্রচুর ফলেরও চাষ হয় । তাই এই অঞ্চলকে ‘ ভারতের শস্যভাণ্ডার ‘ বলে । 

( iii ) এই অঞ্চলটি রেলপথ , সড়কপথ ও নদীবাহিত জলপথ দ্বারা পরিবহণযোগ্য হওয়ায় ব্যাবসাবাণিজ্যে সুবিধা হয় । 

( iv ) এখানে বহু পর্যটন কেন্দ্র ও তীর্থক্ষেত্র রয়েছে । 

( v ) এই সমভূমি অঞ্চলের জনসংখ্যা , অন্যান্য অঞ্চলের তুলনায় অনেক বেশি । 

( vi ) এখানে বিভিন্ন জাতি ও বিভিন্ন ধর্মের , সভ্যতা সংস্কৃতির মানুষ দেখা যায় । 

( vii ) যোগাযোগের সুবিধা ‘ কৃষিজ কাঁচামালের সহজলভ্যতা ‘ , সুলভ শ্রমিক ইত্যাদি নানা কারণে এখানে প্রচুর শিল্পও গড়ে উঠেছে । যেমন — পাট শিল্প , চিনি শিল্প ইত্যাদি ।

====================================================================================

ভারতের ভূ প্রাকৃতিক বিভাগ (ভারত – পঞ্চম অধ্যায়)

অতিসংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর | ভারতের ভূ প্রাকৃতিক বিভাগ (ভারত – পঞ্চম অধ্যায়) – মাধ্যমিক ভূগোল সাজেশন | Madhyamik Geography Suggestion : 

  1. ভারতের বৃহত্তম নদীদ্বীপ কোন্‌টি ?

Answer : মাজুলী নদীদ্বীপ । 

  1. ভারতের মরুভূমির বেশিরভাগ অংশ কোন্ রাজ্যে অবস্থিত ?

Answer : রাজস্থান ।

  1. দক্ষিণের মালভূমি অঞ্চলটি কোন্ কোন্ শিলায় গঠিত ? 

Answer : গ্রানাইট ও নিস্ ।

  1. ভারতের প্রাচীনতম ভঙ্গিল পর্বত কোনটি ?

Answer : আরাবল্লি পর্বত ।

  1. ভারতে অবস্থিত একটি হোর্স্ট জাতীয় স্তূপ পর্বতের নাম লেখো । 

Answer : সাতপুরা পর্বত ।

  1. পশ্চিমঘাট পর্বতে অবস্থিত দুটি গিরিপথের নাম লেখো । 

Answer : থলঘাট ও ভোরঘাট ।

  1. দক্ষিণ ভারতের সর্বোচ্চ শৃঙ্গ কোন্‌টি ?

Answer : আনাইমুদি ( ২৬৯৫ মি . ) ।

  1. দক্ষিণের লাভা মালভূমি প্রধানত কী নামে পরিচিত ?

Answer : ডেকানট্র্যাপ ।

  1. ডেকানট্র্যাপ – এ কোন্ ধরনের মৃত্তিকা দেখা যায় ?

Answer : রেগুর বা কৃয় মৃত্তিকা ( Black Soil )

  1. পূর্বঘাট পর্বতের সর্বোচ্চ শৃঙ্গ কোনটি ?

Answer : হিন্দাগাড়া ।

  1. নীলগিরি পর্বতের সর্বোচ্চ শৃঙ্গ কোনটি ?

Answer : দোদাবেতা ।

  1. পশ্চিমঘাট পর্বতের সর্বোচ্চ শৃঙ্গ কোন্‌টি ?

Answer : ভাভুলমালা ।

  1. ‘ মালনাদ ‘ কথাটির অর্থ কী ?

Answer : উঁচুনীচু ভূভাগ ।

  1. ভারতের মরুভূমি অঞ্চলে অবস্থিত সবচেয়ে বড়ো হ্রদ কোন্‌টি ?

Answer : সম্বর হ্রদ । 

  1. ভারতের মরুভূমি অঞ্চলের একমাত্র বড়ো নদী কোনটি ? 

Answer : লুনি নদী ।

  1. ভারতীয় মরুভূমির চলমান বালিয়াড়িকে কী বলে ? 

Answer : থ্রিয়ান ।

  1. মরু অঞ্চলের শুষ্ক হ্রদগুলি রাজস্থানে কী নামে পরিচিত ?

Answer : ধান্দ ।

  1. মরু অঞ্চলের নীচু স্থানে জল জমে যে হ্রদের সৃষ্টি হয় তাকে কী বলে ?

Answer : রণ বা রান ।

  1. কচ্ছ শব্দের অর্থ কী ?

Answer : জলাময় দেশ ।

  1. ওড়িশার উপকূলে অবস্থিত একটি উপহ্রদের নাম লেখো ।

Answer : চিল্কা হ্রদ ।

  1. পুলিকট হ্রদ ভারতের কোন্ উপকূলে দেখা যায় ?

Answer : অন্ধ্ৰ উপকূলে ।

  1. হিমালয় পর্বতের উৎপত্তি কোন্ গ্রন্থি থেকে ? 

Answer : ভারতের উঃ পঃ – এর পামির গ্রন্থি থেকে ।

  1. ভারতের সর্বোচ্চ মালভূমি কোনটি ?

Answer : লাভাক মালভূমি । উত্তর G উত্তর | 

  1. লাডাক পর্বতশ্রেণির উত্তরে কোন পর্বতশ্রেণি অবস্থিত । 

Answer : কারাকোরাম পর্বত । 

  1. ভারতের উচ্চতম শৃঙ্গের নাম কী ?

Answer : গডউইন অস্টিন ( K2 ) উচ্চতা –৮৬১১ মি .। 

  1. কারাকোরাম পর্বতের দুটি পর্বতশৃঙ্গের নাম লেখো ।

Answer : K2 ও হিডেনপিক ।

  1. ভারতের দীর্ঘতম হিমবাহ কোন্‌টি ?

Answer : সিয়াচেন ( ৭৬ কিমি ) । 

  1. কারাকোরাম পর্বতের কয়েকটি উল্লেখযোগ্য হিমবাহের নাম লেখো ।

Answer : সিয়াচেন , বল্টারো । 

  1. হিমাদ্রি হিমালয়ের দুটি উল্লেখযোগ্য শৃঙ্গের নাম লেখো ।

Answer : কাঞ্চনজঙ্ঘা , মাকালু । 

  1. পিরপাঞ্জাল ও উচ্চ হিমালয়ের মধ্যে কোন্ উপত্যক অবস্থিত ?

Answer : কাশ্মীর উপত্যকা ।

  1. কোন্ মৃত্তিকা জাফরান চাষের জন্য উপযুক্ত ?

Answer : কারেওয়া মৃত্তিকা ।

  1. কাশ্মীর উপত্যকার দুটি উল্লেখযোগ্য হ্রদের নাম লেখো । 

Answer : উলার ও ডাল হ্রদ ।

  1. কাশ্মীর হিমালয়ে অবস্থিত দুটি গিরিপথের নাম লেখো । 

Answer : বানিহাল বা জওহর , জোজিলা ।

  1. কুমায়ূন হিমালয়ে অবস্থিত হিমবাহসৃষ্ট হ্রদগুলিকে কী বলে । 

Answer : তাল ।

  1. কুমায়ুন হিমালয়ের দুটি উল্লেখযোগ্য হ্রদ বা – এর নাম লেখো ।

Answer : সাততাল , নৈনিতাল ।

  1. দার্জিলিং হিমালয়ের সর্বোচ্চ শৃঙ্গ কোনটি ?

Answer : সান্দাকফু ।

  1. সিকিম ও ভুটান সীমান্তে কোন্ উপত্যকা দেখা যায় ?

Answer : চুম্বি উপত্যকা ।

  1. অরুণাচল হিমালয়ের সর্বোচ্চ শৃঙ্গ কোনটি ?

Answer : কাংটো ।

  1. পূর্ব হিমালয়ের দুটি গিরিপথের নাম লেখো ।

Answer : নাথুলা , জেলেপলা ।

  1. পূর্ব হিমালয়ের প্রধান দুটি গিরিশৃঙ্গ কী কী ?

Answer : কাঞ্চনজঙ্ঘা ও কাংটো ।

  1. সিন্ধু নদের যে – কোনো দুই উপনদীর নাম লেখো । 

Answer : বিপাশা , শতদ্রু , চন্দ্রভাগা , ইরাবতী ।

  1. সিন্ধু সমভূমির উত্তরাংশের ক্ষয়প্রাপ্ত অঞ্চলকে কী বলে ?

Answer : খোশ । 

MCQ | ভারতের ভূ প্রাকৃতিক বিভাগ (ভারত – পঞ্চম অধ্যায়) – মাধ্যমিক ভূগোল সাজেশন | Madhyamik Geography Suggestion :

  1. উচ্চগঙ্গা সমভূমির নবীন পলিমাটি গঠিত অঞ্চলকে বলে— (A) ভাবর(B) ভুর(C) ভাঙ্গার

(D) খাদার 

Answer : (D) খাদার

  1. থর মরুভূমির পশ্চিমে বৃক্ষহীন শুষ্ক অঞ্চলকে বলে—(A) মরুস্থলী(B) বাগার(C) হামাদা

(D) রোহি

Answer : (A) মরুস্থলী

  1. ভাঙ্গার অঞ্চল পাঞ্জাবে কী নামে পরিচিত ?(A) ধায়া(B) বেট(C) ধান্দ 

(D) খাদার

Answer : (A) ধায়া

  1. আরাবল্লীর পশ্চিম অংশের প্লাবন অঞ্চল কী নামে পরিচিত -(A) বাগার(B) হামাদা(C) রোহি 

(D) তরাই

Answer : (C) রোহি

  1. বিন্ধ পর্বত কী জাতীয় পর্বত -(A) ক্ষয়জাত পর্বত(B) ভঙ্গিল পর্বত(C) সঞ্চয় জাত পর্বত 

(D) স্তূপ পর্বত

Answer : (D) স্তূপ পর্বত

  1. আর্মাকোন্ডা কোন্ পর্বতের উচ্চতম শৃঙ্গ ?(A) পশ্চিমঘাট(B) আরাবল্লি(C) পূর্বঘাট

(D) শিবালিক

Answer : (C) পূর্বঘাট

  1. কোন্‌টি পশ্চিমঘাটের সর্বোচ্চ শৃঙ্গ ?(A) সালহের(B) কলসুবাই(C) ভাভুলমালা

(D) কুন্দ্রেমুখ

Answer : C) ভাভুলমালা

  1. ধুঁয়াধর জলপ্রপাত কোন্ উপত্যকায় অবস্থিত ?(A) তাপ্তি(B) নর্মদা(C) কুলু

(D) মানালি

Answer : (B) নর্মদা

  1. গেরসোপ্পা জলপ্রপাত কোন্ নদী থেকে উৎপন্ন হয়েছে ? (A) নর্মদা (B) সবরমতী(C) সরাবতী

(D) তাপ্তি 

Answer : (C) সরাবতী

  1. মালাবার উপকূলের দীর্ঘতম কয়াল কোন্‌টি ? (A) অষ্টমুদি(B) কায়মকুলম(C) ভেম্বানাদ

(D) পুশমীকোটা 

Answer : (C) ভেম্বানাদ

  1. ভারতের মরুভূমির বেশিরভাগ অংশ কোন্ রাজ্যে অবস্থিত ?(A) গুজরাট(B) পাঞ্জাব(C) রাজস্থান 

(D) ওড়িশা 

Answer : (C) রাজস্থান 

  1. রাজস্থানের শুষ্ক হ্রদকে বলে -(A) হামাদা(B) ধান্দ(C) রণ

(D) বাগার

Answer : (B) ধান্দ

  1. মালাবার উপকূল অবস্থিত -(A) কেরল রাজ্যে(B) তামিলনাড়ু রাজ্যে(C) মহারাষ্ট্রে রাজ্যে

(D) কেরলে রাজ্যে 

Answer : (D) কেরলে রাজ্যে

  1. ভারতের পূর্ব উপকূলের বৃহত্তম হ্রদের নাম কী ?(A) চিন্তা (B) পুলিকট(C) কোলেরু

(D) ভেম্বানাদ

Answer : (C) কোলেরু

  1. দক্ষিণ ভারতের সর্বোচ্চ শৃঙ্গ কোনটি ? (A) ভাতুলমালা(B) আনাইমুদি(C) নীলগিরি

(D) দোদাবেতা

Answer : (B) আনাইমুদি

  1. কোন্ পর্বত ‘ বসুন্ধরা ধবলশীর্ষ ‘ নামে পরিচিত ?(A) মাউন্ট এভারেস্ট শৃঙ্গ(B) হিমাদ্রি হিমালয়(C) পামির

(D) কারাকোরাম

Answer : (D) কারাকোরাম

  1. কর্ণাটক মালভূমির ঢেউ খেলানো ভূভাগকে বলে—(A) মালনদ(B) ময়দান(C) ডেকেনট্র্যাপ

(D) কোনোটিই নয়

Answer : (A) মালনদ

  1. আন্দামান ও নিকোবরের সর্বোচ্চ শৃঙ্গ হল -(A) ব্যারেন(B) গিরনার(C) নারকোল্ডাম

(D) স্যাডেল পিক

Answer : (D) স্যাডেল পিক

  1. হিমালয়ের সর্ব উত্তরের গিরিশ্রেণির নাম কী ?(A) হিমাদ্রি হিমালয়(B) শিবালিক হিমালয়(C) হিমাচল হিমালয়

(D) টেথিস হিমালয়

Answer : (D) টেথিস হিমালয়

  1. আরাবল্লীর সর্বোচ্চ শৃঙ্গ হল -(A) রাজমহল(B) বিহারীনাথ(C) গুরুশিখর

(D) মাউন্ট আবু

Answer : (C) গুরুশিখর

  1. ছোটোনাগপুরের সর্বোচ্চ পাহাড় হল -(A) পরেশনাথ(B) মহাবালেশ্বর(C) বিহারীনাথ

(D) রাজমহল

Answer : (A) পরেশনাথ

  1. শিবালিক হিমালয়ের অপর নাম হল -(A) ট্রান্স হিমালয়(B) অব হিমালয় (C) মলয়াদ্রি

(D) সহ্যাদ্রি 

Answer : (B) অব হিমালয়

  1. নীলগিরি ও পশ্চিমঘাট পর্বতের ফাঁক কী নামে পরিচিত ?(A) পালঘাট(B) ভোরঘাট(C) হালঘাট

(D) কোনোটাই নয়

Answer : (A) পালঘাট

  1. কর্ণাটক মালভূমির ঢেউখেলানো ভূভাগ কী নামে পরিচিত ?(A) মালনাদ(B) ময়দান(C) ডেকেনট্র্যাপ 

(D) ব্যাডল্যান্ড

Answer : (A) মালনাদ

  1. পপ্রণালী কোন্ দুই দেশের মাঝে আবস্থিত ?(A) ভারত ও শ্রীলঙ্কা(B) ভারত ও মায়ানমার(C) মিনিকয় ও লাক্ষাদ্বীপ 

(D) আন্দামান ও নিকোবর 

Answer : (A) ভারত ও শ্রীলঙ্কা

  1. হিমালয় হল একটি— (A) নবীন ভঙ্গিল পর্বত(B) প্রাচীন ভঙ্গিল পর্বত(C) সঞ্চয়জাত পর্বত

(D) স্তূপ পর্বত

Answer : (A) নবীন ভঙ্গিল পর্বত

  1. ভারতের উচ্চতম শৃঙ্গ হল -(A) নন্দা দেবী(B) মাউন্ট এভারেস্ট(C) কাঞ্চনজঙ্ঘা

(D) K2 

Answer : (D) K2

  1. নিম্নলিখিত কোন্ হিমালয় ‘ ট্রান্স হিমালয় ‘ নামে পরিচিত ? (A) জাস্কর পর্বতশ্রেণি(B) পিরপাঞ্জাল পর্বতশ্রেণি(C) কারাকোরাম পর্বতশ্রেণি

(D) লাভাক পর্বতশ্রেণি

Answer : (C) কারাকোরাম পর্বতশ্রেণি

  1. হিমালয় পর্বতের বিস্তার পূর্ব – পশ্চিমে হল প্রায় -(A) ২৪০০ কিমি(B) ২৬০০ কিমি(C) ২৫০০ কিমি

(D) ২৭০০ কিমি

Answer : (D) ২৭০০ কিমি

  1. হিমালয় পর্বতের ২ য় উচ্চতম শৃঙ্গ হল – (A) মাউন্ট এভারেস্ট(B) কাঞ্চনজঙ্ঘা(C) গডউইন অস্টিন

(D) নাঙ্গা পর্বত 

Answer : (B) কাঞ্চনজঙ্ঘা

  1. সিয়াচেন হিমবাহ – এর অবস্থান হল যুক্ত করেছে ? (A) জোজিলা (B) হিমাচল প্রদেশে(C) জম্মু ও কাশ্মীরে

(D) পাকিস্তানে

Answer : C) জম্মু ও কাশ্মীরে

  1. তিব্বতে ৭ ভারতে অবস্থিত হিমালয় পর্বতের সর্বোচ্চ শৃঙ্গ হল -(A) মাউন্ট এভারেস্ট (B) কাঞ্চনজঙ্ঘা (C) কামেট

(D) অন্নপূর্ণা

Answer : (B) কাঞ্চনজঙ্ঘা

  1. মাউন্ট এভারেস্ট কোথায় অবস্থিত ?(A) চিন (B) ভারত(C) নেপাল

(D) ভুটান 

Answer : (C) নেপাল

  1. কোন্ গিরিপথ লাদাখের রাজধানী লেহ কাশ্মীরের সঙ্গে যুক্ত করেছে – (A) জোজিলা(B) পিরপাঞ্জাল(C) বুলন্দপীর

(D) জওহর

Answer : (A) জোজিলা

  1. কারেওয়া মৃত্তিকা দেখা যায়— (A) দুন উপত্যকা(B) ভাবর অঞ্চলে(C) কাশ্মীর উপত্যকায়

(D) তরাই অঞ্চলে

Answer : (C) কাশ্মীর উপত্যকায় 

  1. চমু কুলু উপত্যকা কোন্ রাজ্যে অবস্থিত ?(A) জম্মু ও কাশ্মীর(B) উত্তরাঞ্চল(C) হিমাচল প্রদেশ

(D) সিকিম

Answer : (C) হিমাচল প্রদেশ

  1. কোটি ভারতের উচ্চতম সড়ক সেতু ?(A) লিপু লেক(B) খারদুংলা(C) লেপু লেক

(D) নাথুলা

Answer : (B) খারদুংলা

  1. ভারতের দ্বিতীয় উচ্চতম গিরিপথ হল -(A) জোজিলা(B) থাংলা(C) চাংলা

(D) বানিহাল পাস

Answer : (B) থাংলা

  1. উচ্চ গঙ্গা সমভূমির নবীন পলিমাটি গঠিত অঞ্চলকে বলে -(A) ভাঙ্গার (B) ভাবর(C) খাদার

(D) তরাই

Answer : (C) খাদার

  1. রাজস্থানের শুষ্ক হ্রদকে বলে -(A) রণ(B) ব্রয়ান(C) তাল

(D) ধান্দ 

Answer : (D) ধান্দ

  1. চিড কারাকোরাম পর্বতশ্রেণি কোন্ রাজ্যে অবস্থিত ? (A) জম্মু ও কাশ্মীর(B) হিমাচল প্রদেশ(C) উত্তরাখণ্ড

(D) সিকিম

Answer : A) জম্মু ও কাশ্মীর

  1. মেঘালয়ের সর্বোচ্চ শৃঙ্গ হল – (A) মাউন্ট আবু(B) শিলং(C) খাসি

(D) গারো 

Answer : (B) শিলং

  1. নিম্নলিখিত কোন পাহাড়ের সাতটি শ্রেণি রয়েছে ? (A) বিন্ধ্য পর্বত(B) আরাবল্লী পর্বতশ্রেণি (C) নীলগিরি পর্বত 

(D) সাতপুরা পর্বত

Answer : (D) সাতপুরা পর্বত

  1. সিয়াচেন হিমবাহ কোন্ পর্বতে অবস্থিত ?(A) লাডাক(B) কারাকোরাম(C) পিরপাঞ্জাল

(D) হিমালয়

Answer : (B) কারাকোরাম

  1. নক্‌রেক্ কোন্ পাহাড়ের উচ্চতম শৃঙ্গ ?(A) গারো পাহাড়(B) জয়ন্তিয়া পাহাড়(C) খাসি পাহাড়

(D) লাডাক

Answer : A) গারো পাহাড়

  1. হিমালয়ের পূর্বসীমা কোথায় পর্যন্ত বিস্তৃত ? (A) নাঙ্গা পর্বত (B) কাঞ্চনজঙ্ঘা (C) নামচাবারোয়া 

(D) শিবালিক

Answer : (C) নামচাবারোয়া মেঘালয়

  1. পঞ্ঞ নদের দেশ বলা হয় কোন্ রাজ্যকে ?(A) অন্ধ্রপ্রদেশ(B) পাঞ্জাব(C) জম্মু ও কাশ্মীর

(D) উত্তরাখণ্ড 

Answer : (B) পাঞ্জাব

  1. গারো, জয়ন্তিয়া , মিকির প্রভৃতি পাহাড়ে ঘেরা মালভূমি হল -(A) তিব্বত (B) ভাঙ্গার (C) মেঘালয়

(D) ছোটোনাগপুর 

Answer : (C) মেঘালয়

  1. নাগা দেখা যায় কোন্ রাজ্যে ? (A) অরুণাচল প্রদেশ(B) নাগাল্যান্ড(C) মিজোরাম

(D) মণিপুর 

Answer : (B) নাগাল্যান্ড

  1. কোন্ গিরিপথ মুম্বাই ও পুণের মধ্যে অবস্থিত ?(A) পালঘাট(B) ভোরঘাট(C) থলঘাট

(D) হলদিঘাট

Answer : (B) ভোরঘাট

সংক্ষিপ্ত ব্যাখ্যাধর্মী প্রশ্নোত্তর | ভারতের ভূ প্রাকৃতিক বিভাগ (ভারত – পঞ্চম অধ্যায়) – মাধ্যমিক ভূগোল সাজেশন | Madhyamik Geography Suggestion : 

  1. বঙ্গোপসাগরে অবস্থিত দুটি আগ্নেয়গিরির নাম লেখো । 

Answer : ব্যারেন ও নারকোন্ডাম দুটি বঙ্গোপসাগরের আগ্নেয় দ্বীপ ।

  1. হিমাচল হিমালয়ে অবস্থিত উপত্যকাগুলি কী কী ?

Answer : হিমাচল হিমালয়ে অবস্থিত উপত্যকাগুলি হল ( i ) পিরপাঞ্জাল ও জাস্কর পর্বতের মাঝে কাশ্মীর উপত্যকা ( ii ) হিমাচল প্রদেশের কুলু উপত্যকা ( পিরপানজাল ও ধওলাধরের > মধ্যে অবস্থিত ) । ( iii ) শিবালিক ও ধওলাধরের মধ্যে কাংড়া উপত্যকা ( হিমাচল প্রদেশ ) । ( iv ) নাগটিব্বা ও ধওলাধরের মধ্যে শতদ্রু উপত্যকা । ( v ) উচ্চ হিমালয় ও জাস্করের মধ্যে স্পিটি উপত্যকা । এবং ( vi ) পিরপাঞ্জাল ও উচ্চ হিমালয়ের মধ্যে লাহুল উপত্যকা । 

  1. কাশ্মীর উপত্যকা কাকে বলে ?

Answer : জম্মু কাশ্মীরে পিরপাঞ্জাল ও উচ্চ হিমালয়ের মাঝে হ্রদ ভরাট হয়ে সৃষ্ট উপত্যকা হল কাশ্মীর উপত্যকা । প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের জন্য এটি ‘ ভূস্বর্গ ‘ নামে পরিচিত ।

  1. দুন উপত্যকা কাকে বলে ?

Answer : উত্তরাখণ্ডে শিবালিক ও হিমাচল হিমালয়ের মাঝে যে গঠনগত উপত্যকা রয়েছে তা হল ন উপত্যকা । যেমন দেরাদুন ( বৃহত্তম ) , চৌখাম্বা । জানো কি আকসাই চিন : জম্মু ও কাশ্মীর রাজ্যের উত্তর – পূর্ব ভাগের নাম আকসাই চিন , যা প্রকৃতপক্ষে একটি পর্বতবেষ্টিত উচ্চ মালভূমি । এখানকার গড় উচ্চতা ৪৫০০ মিটার । এখানে কতকগুলি হ্রদ রয়েছে , যার মধ্যে লিংজি টাং একটি লবণাক্ত হ্রদ ।

  1. তাল কী ? উদাহরণ দাও ।

Answer : কুমায়ুন হিমালয়ে হিমবাহ ক্ষয়কার্যের মাধ্যমে সৃষ্ট অবনমিত অংশগুলিতে জল জমে যে হ্রদের সৃষ্টি হয় । সেই হ্রদগুলিকে স্থানীয় ভাষায় তাল বলে । যেমন — সাততাল , ভীমতাল , নৈনিতাল ।

  1. কাশ্মীর হিমালয়ের দুটি লবণাক্ত হ্রদের নাম লেখো ।

Answer : কাশ্মীর হিমালয়ের দুটি লবণাক্ত হ্রদ হল— সল্টলেক ও প্যাংগং ।

  1. পূর্ব হিমালয়ের দুটি উল্লেখযোগ্য গিরিশৃঙ্গের ও দুটি গিরিপথের নাম লেখো ।

Answer : পূর্ব হিমালয়ের দুটি উল্লেখযোগ্য গিরিশৃঙ্গ হল কাঞ্চনজঙ্ঘা ও কাংটো । পূর্ব হিমালয়ের দুটি গিরিপথ হল- নাথুলা ও জেলেপ – লা ।

  1. পূর্বাচল বলতে কী বোঝ ? বা ভারতের কোন অঞ্চল পূর্বাচল নামে পরিচিত ?

Answer : উত্তর – পূর্ব ভারতের পার্বত্য অংশে মেঘালয় মালভূমিকে বাদ দিয়ে নাগাল্যান্ড , মণিপুর , ত্রিপুরা এবং অরুণাচল প্রদেশ ও অসমের কিছু অংশে যে পার্বত্য অঞ্চল আছে তাকে বলে পূর্বাচল বা পূর্বাঞ্চল ।

  1. পশ্চিম হিমালয়ের একটি ও পূর্ব হিমালয়ের একটি করে গিরিপথের নাম লেখো ।

Answer : পশ্চিম হিমালয়ের একটি গিরিপথের নাম জোজিলা পাস ( এটি শ্রীনগর ও লে – এর মধ্যে সংযোগ রক্ষা করেছে ) পূর্ব হিমালয় ের একটি গিরিপথের নাম হল নাথুলা পাস ( এটি তিব্বতের চুম্বি উপত্যকার সঙ্গে সিকিমের সংযোগ রক্ষা করেছে ।

  1. ধ্রিয়ন কাকে বলে ?

Answer : এককথায় ভারতীয় ( থর ) মরুভূমির অঞ্চলের চলমান বালিয়াড়িকে থ্রিয়ান বলে ।

  1. রণ বা রাণ কাকে বলে ?

Answer : গুজরাট রাজ্যের উত্তরে এবং কচ্ছ উপদ্বীপের উত্তর ও পূর্বাংশের অগভীর জলাভূমি রণ বা রাগ নামে পরিচিত । এর উত্তরের অংশ ‘ বৃহৎ রণ ‘ ও পূর্বের অংশ ‘ ক্ষুদ্র রণ ‘ নামে পরিচিত ।

  1. ধান্দ কাকে বলে ?

Answer : থর মরুভূমির লবণাক্ত জলের অস্থায়ী হ্রদ হল ধান্দ । বছরের বেশিরভাগ সময় এগুলি শুষ্ক থাকে ।

  1. ‘ মরুস্থলী ‘ কথার অর্থ কী ? এইপ্রকার নামকরণের কারণ কী ?

Answer : ‘ মরু ’ শব্দের অর্থ ‘ মৃত ’ এবং ‘ স্থলী ’ শব্দের অর্থ হল ‘ দেশ ’ অর্থাৎ ‘ মৃতের দেশ । রাজস্থান মরুভূমির পশ্চিমে শুষ্ক , সূক্ষ্ম , উদ্ভিদহীন ধু – ধু মরুপ্রান্তর হল মরুস্থলী । মরুস্থলী হল প্রকৃত মরুভূমি ।

  1. পাঞ্জাব সমভূমি বা সিন্ধু সমভূমি কীভাবে গঠিত হয়েছে এবং এর আয়তন কত ?

Answer : পশ্চিমে পাঞ্জাব , হরিয়ানা ও রাজস্থানের সামান্য অংশ নিয়ে এটি গঠিত । সিন্ধুনদের উপনদী শতদ্রু , বিপাশা , চন্দ্রভাগা , ইরাবতী ও ঝিলাম নদীর মিলিত সঞ্জয়কার্যের ফলে এই সমভূমি গঠিত হয়েছে । এই জন্য একে ‘ পঞ্চনদের দেশ ’ বলে ।

  1. দোয়াব কাকে বলে ?

Answer : সঞ্জয়কার্যের ফলে সৃষ্ট দুটি নদীর মধ্যবর্তী সমভূমি অঞ্চল দোয়ার নামে পরিচিত ( দো = দুই এবং আব = জল ) । যেমন — উচ্চগঙ্গা সমভূমির গঙ্গা ও যমুনার মধ্যবর্তী সমভূমি ভারতের বৃহত্তম দোয়াব ।

  1. ‘ ধায়া ’ ও ‘ খোশ ’ কাকে বলে ?

Answer : পশ্চিমের সমভূমি অঞ্চলে অবস্থিত নদীর প্লাবনভূমিকে এই অঞ্চলে ‘ ধায়া ‘ বলে । এবং পাঞ্জাবের সমভূমি অঞ্চলের উত্তরে ক্ষয়প্রাপ্ত অঞ্চলকে ‘ খোশ ‘ বলা হয় ।

  1. ‘ খাদার ’ কাকে বলে ?

Answer : উচ্চগঙ্গা সমভূমির নদী তীরবর্তী যে – সমস্ত অঞ্চল নবীন পলিমাটি দিয়ে গঠিত , সেই সমস্ত অঞ্চলকে খাদার বলে । এটি উর্বর সমভূমি ।

  1. ‘ ভাঙ্গার ‘ কাকে বলে ? 

Answer : উচ্চগঙ্গা সমভূমির নদীর অববাহিকা থেকে দূরবর্তী দ্র প্রাচীন পলিমাটি দিয়ে | গঠিত অঞ্চলকে ভাঙ্গার বলে । এই অঞ্চলটি প্রাচীন পলিমাটি দিয়ে গঠিত বলে সামান্য উঁচু সমতলভূমি । এই অংশে বন্যার প্রকোপ | কম তাই এই অঞ্চল কৃষির পক্ষে অনুপযোগী । পাঞ্জাবে এই অঞ্চল ‘ ধায়া ‘ নামে পরিচিত ।

  1. ‘ ভাবর ‘ কাকে বলে ?

Answer : পশ্চিমে সিন্ধু থেকে পূর্বে তিস্তা পর্যন্ত শিবালিকের পাদদেশ বরাবর নুড়ি , পেবেল দ্বারা গঠিত অনুর্বর ভূমি ‘ ভাবর ‘ ? নামে পরিচিত । এর গড় বিস্তার ৮-১৬ কিমি । বালি ও পাথরের নুড়ি দ্বারা গঠিত এই অঞ্চলের মৃত্তিকা হল ছিদ্রযুক্ত । এই কারণে । হিমালয় পর্বত থেকে উৎপন্ন ছোটো ছোটো নদীগুলি এই অঞ্চলে প্রবাহিত হয়ে আসার পর ভূগর্ভস্থ হয়ে ফল্গুধারার সৃষ্টি হয়েছে । কৃষিকাজের পক্ষে এই অঞ্চল অনুপযুক্ত ।

  1. তরাই বলতে কী বোঝ ?

Answer : ভাবর অঞ্চলের দক্ষিণ প্রান্তে ভূগর্ভস্থ নদীগুলি যেখানে আত্মপ্রকাশ করেছে , সেখানকার ১৫ থেকে ৩০ কিমি প্রশস্ত স্যাঁতসেঁতে জলাভূমিকে সাধারণভাবে তরাই বলা হয় । প্রধানত বালি ও পলি দ্বারা গঠিত তাই এই অঞ্চল কৃষিকাজের পক্ষে মোটামুটি উপযুক্ত ।

  1. ভুর বলতে কী বোঝ ?

Answer : সমভূমি অঞ্চলের পশ্চিমে মাঝে মাঝে যে ছোটো ছোটো বালিয়াড়ি দেখতে পাওয়া যায় , তাকে ভুর ‘ বলে । 

  1. তরাই ও ডুয়ার্স অঞ্চল বলতে কী বোঝ ?

Answer : পূর্ব হিমালয়ের পার্বত্যভূমি থেকে নির্গত মহানন্দা , তিস্তা , জলঢাকা , তোর্সা , রায়ডাক প্রভৃতি নদীগুলির পলি , বালি । ও নুড়ি সঞ্চয়ের ফলে হিমালয়ের পাদদেশের সংকীর্ণ নিম্নভূমিতে দার্জিলিং জেলার শিলিগুড়ি মহকুমায় এবং জলপাইগুড়ি জেলায় এই সমভূমি অঞ্চলটি গড়ে উঠেছে । এই অঞ্চলের গড় উচ্চতা ১০০ মিটার । t তিস্তা নদীর ডানতীরস্থ সমভূমিকে তরাই অঞ্চল বলে এবং তিস্তা নদীর বামতীরস্থ সমভূমিকে ডুয়ার্স অঞ্চল বলে । তরাই একটি ফরাসি শব্দ যার অর্থ ‘ স্যাঁতসেঁতে ।

  1. ছোটোনাগপুর অঞ্চল বলতে কী বোঝ ?

Answer : সমগ্র ঝাড়খণ্ড রাজ্য ও পশ্চিমবঙ্গের পশ্চিমাে অংশবিশেষ নিয়ে গঠিত ব্যবচ্ছিন্ন মালভূমি হল মালভূমি । এটি ভারতের খনিজভাণ্ডার ।

  1. ময়দান ও মালনাদ কী ?

 অথবা , কর্ণাটক মালভূমির দুটি ভূপ্রাকৃতিক অংশের নাম লেখো ।

Answer : কর্ণাটক মালভূমির পশ্চিমে উঁচুনীচু ঢেউখেলানো ভূমি হল মালনাদ এবং পূর্বের প্রায় সমতল ভূমি হল ময়দান । 

  1. পূর্বঘাট ও পশ্চিমঘাট পর্বতমালার সর্বোচ্চ শৃদ্ধের নাম লেখো ।

Answer : পূর্বঘাট পর্বতমালার সর্বোচ্চ শৃঙ্গ হল – হিন্দাগড়া এবং পশ্চিমঘাট পর্বতমালার সর্বোচ্চ শৃঙ্গ হল — ভাতুলমালা । 

  1. পূর্ব অপেক্ষা পশ্চিম উপকূল ভগ্ন কেন ? 

Answer : ভারতের পশ্চিম উপকূল গঠিত হয়েছে ভূ আন্দোলনের প্রভাবে পশ্চিমঘাট পর্বতের পশ্চিম অংশ নিমজ্জিত হয়ে , তাই এই উপকূল অত্যন্ত ভগ্ন । কিন্তু পূর্ব উপকূল গঠিত হয়েছে সঞ্জয়কার্যের মাধ্যমে । এই কারণেই পূর্ব উপকূল , পশ্চিম উপকূলের মতো অতটা ভগ্ন নয় ।

  1. পশ্চিম উপকূল বরাবর অসংখ্য স্বাভাবিক পোতাশ্রয়যুক্ত বন্দর গড়ে উঠেছে কেন ?

Answer : ভূ – আন্দোলনের প্রভাবে গঠিত হওয়ায় পশ্চিম উপকূল ভগ্ন ও গভীর । গভীর ও ভগ্ন উপকূল থাকার জন্যেই । এখানে অসংখ্য স্বাভাবিক পোতাশ্রয়যুক্ত বন্দর গড়ে উঠেছে ।

  1. ভারতের পূর্ব উপকূলের সমভূমি অঞ্চলের বৈশিষ্ট লেখো ।

Answer : পূর্ব উপকূলের স মভূমির গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্যগুলি হল ( i ) ভারতের পূর্বপ্রান্ত বঙ্গোপসাগরের উপকূলে অবস্থিত । ( ii ) এই সমভূমি অঞ্চলটি পশ্চিম উপকূলের সমভূমির তুলনায় বেশি চওড়া ও সমতল । ( iii ) পূর্ব উপকূলের সমভূমিতে অনেকগুলো হ্রদ আছে , এর মধ্যে ওড়িশা উপকূলের চিন্তা ক কোলেরু এবং অস্ত্র উপকূলের পুলিকট হ্রদ উল্লেখযোগ্য ।

  1. আন্দামান – নিকোবর দ্বীপপুঞ্জ ও লাক্ষা দ্বীপপুঞ্জে রাজধানীর নাম কী ?

Answer : আন্দামান – নিকোবর দ্বীপপুঞ্জের রাজধানী – পোড ব্লেয়ার । লাক্ষা দ্বীপপুঞ্জের রাজধানী – কাভারাত্তি ।

  1. লাক্ষা দ্বীপপুঞ্জের উৎপত্তি কীভাবে হয়েছে ?

Answer : প্রবাল কীট বা প্রবাল দ্বারা গঠিত অনেকগুলি ছোড়ে | ছোটো দ্বীপ নিয়ে এই লাক্ষা দ্বীপ গঠিত হয়েছে । আরব সাগরে ২৫ টি ক্ষুদ্র দ্বীপ মিলিত হয়ে এই লাক্ষা দ্বীপ নাম দেওয়া হয়েছে হয়েছে । দ্বীপ গুলির উচ্চতা কোথাও ৫ মি. এর বেশি নয় ।

ব্যাখ্যামূলক উত্তরধর্মী প্রশ্নোত্তর | ভারতের ভূ প্রাকৃতিক বিভাগ (ভারত – পঞ্চম অধ্যায়) – মাধ্যমিক ভূগোল সাজেশন | Madhyamik Geography Suggestion : 

  1. আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জ বা বঙ্গোপসাগরীয় দ্বীপপুঞ্জ বলতে কী বোঝ ? 

Answer : ভারতের মূল ভূখণ্ড থেকে দূরে বঙ্গোপসাগরে ২৬৫ টি ছোটো – বড়ো দ্বীপ নিয়ে গঠিত আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জ । এই দ্বীপপুঞ্জ হল একপ্রকার দ্বীপীয় বৃত্তচাপ ( Island arc ) অর্থাৎ ধনুক আকারে সমুদ্রে নিমজ্জিত পর্বত যা মায়ানমারের আরাকান – ইয়োমা পর্বতের অভিক্ষিপ্তাংশ । এই দ্বীপপুঞ্জের অধিকাংশ উচ্চভূমির অন্তর্গত । উত্তর আন্দামানের স্যাডেল পিক ( ৭৩৭ মি . ) সমগ্র আন্দামানের সর্বেচ্চ অংশ । দক্ষিণ আন্দামানের মাউন্ট হ্যারিয়েট উল্লেখযোগ্য শৃঙ্খ ব্যারেন ও নারকোন্ডাম এখানকার দুটি বিখ্যাত আগ্নেয়গিরি ।

  1. আরবসাগরীয় দ্বীপপুঞ্জ সম্পর্কে লেখো ।

Answer : ৪ ° উত্তর অক্ষাংশ থেকে ১২ ° উত্তর অক্ষাংশের মধ্যে কেরল উপকূল থেকে প্রায় ৩২৪ কিমি দুরে ২৫ টি ছোটো ছোটো দ্বীপ নিয়ে লাক্ষা , আমিনদিভি ও মিনিকয় দ্বীপপুঞ্জ গঠিত । এই দ্বীপপুঞ্জের সরকারি নাম রাখা হয়েছে লাক্ষাদ্বীপ । লাক্ষা আমিনদিভি ও মিনিকয় দ্বীপপুঞ্জের মোট আয়তন ৩২ বর্গকিমি মাত্র । মিনিকয় দ্বীপটি হল এই দ্বীপপুঞ্জের সবচেয়ে বড়ো দ্বীপ , এর আয়তন ৪.৫০ বর্গকিমি । ভূতত্ত্ববিদদের মতে , যুগ যুগ ধরে , আরবসাগরের প্রবাল কীটদের মৃত দেহাবশেষ স্তরে স্তরে সঞ্চিত হয়ে এই দ্বীপপুঞ্জের সৃষ্টি হয়েছে । এই দ্বীপপুঞ্জের দ্বীপগুলিতে পাহাড় – পর্বত ও নদনদী নেই । দ্বীপগুলির তটভূমির কাছে প্রবাল প্রাচীর দেখা যায় । উর্বর বলে কৃষিকাজে উন্নত হওয়ায় এখানকার জনঘনত্ব বেশ বেশি । এর সর্বদক্ষিণের দ্বীপ হল মিনিকয় দ্বীপ ।

  1. ভারতের বৃহৎ সমভূমির উৎপত্তি হয় কীভাবে ?

Answer : উত্তর ভারতের বৃহৎ সমভূমি অঞ্চলটি উত্তরের পার্বত্য অঞ্চল এবং দক্ষিণের উপদ্বীপীয় মালভূমির মধ্যবর্তী স্থানে অবস্থিত । এই সমভূমির সৃষ্টির কারণ সম্পর্কে ভূবিজ্ঞানীরা অনুমান করেন যে — বহু যুগ আগে , বর্তমানে যেখানে উত্তরের সমভূমি অঞ্চল অবস্থিত সেখানে একটি স্রোণী ( Trough ) ছিল । টার্সিয়ারী যুগে হিমালয় পর্বতের উত্থানকালে ভূ – আলোড়নের ফলে প্রাচীন গন্ডোয়ানাল্যান্ডের উত্তর অংশ নীচু হয়ে অর্ধচন্দ্রাকারে বসে গিয়ে এই স্রোণী বা পরিখার সৃষ্টি হয় । পরবর্তীকালে হিমালয় পর্বত থেকে উৎপন্ন নদীগুলি দ্বারা যুগ যুগ ধরে ক্রমাগত পলি সঞ্চয়ের ফলে ওই নিম্নভূমি অঞ্চলটি ভরাট হয়ে উত্তর ভারতের বৃহৎ সমভূমির উৎপত্তি হয়েছে ।

  1. পূর্ব উপকূলের তুলনায় পশ্চিম উপকূলের সমভূমি সংকীর্ণ কেন ?

Answer : ভারতের পশ্চিম উপকূলীয় অংশের উৎপত্তি ঘটেছে ভূআন্দোলনের প্রভাবে পশ্চিমঘাটের পশ্চিম অংশ বসে গিয়ে । এই অংশে যাবতীয় পলি সঞ্জয় ঘটেছে সমুদ্রতরঙ্গের কার্যে । নদীর সঞ্চয়কার্য প্রায় হয়ই না । উচ্চ ও খাড়া ঢালের উপকূল হওয়ায় সঞ্চয়ের পরিমাণও কম । তাই পশ্চিম উপকূলীয় সমভূমি সংকীর্ণ , গড় বিস্তার ৬৫ কিমি । অপরদিকে , ভারতের পূর্ব উপকল মৃদুঢালে সমুদ্রের সাথে মিলিত হয়েছে । পূর্বঘাট পর্বত উপকূল থেকে বেশ দূরে অবস্থান করায় ভূমির ঢাল কম । সমুদ্রতরঙ্গের কার্যের সঙ্গে সঙ্গে এখানে প্রচুর পরিমাণে নদীবাহিত পলির সঞ্চয় ঘটে । এই উপকূলে নদীগুলির মোহানায় গঠিত হয়েছে বদ্বীপ । অধিক পলিসঞ্চয়ের কারণেই পূর্ব উপকূলীয় সমভূমি বিস্তৃত , গড় বিস্তার ৮০-১০০ কিমি ।

  1. প্রবাল কী ? প্রবাল দ্বীপ কীভাবে গঠিত হয় ?

Answer : প্রবাল হল একপ্রকার ছোটো সামুদ্রিক কীট । সাধারণত ক্রান্তীয় ও উপক্রান্তীয় অঞ্চলের সমুদ্রের ৬০ মিটার গভীরতায় প্রবাল জন্মায় । এদের দেহে ক্যালশিয়াম কার্বনেটের শক্ত আবরণ থাকে । কোটি কোটি প্রবাল কীটের দেহাবশেষ জমাট বেঁধে প্রবাল দ্বীপ গঠিত হয় । আরবসাগরের ২৫ টি ছোটো বড়ো দ্বীপ নিয়ে গঠিত লাক্ষাদ্বীপ প্রবাল দ্বীপের উদাহরণ । 

  1. কোঙ্কন উপকূল সম্পর্কে যা জান লেখো ।

Answer : কোঙ্কন উপকুল সমভূমি পশ্চিমঘাট পর্বতের পশ্চিম দিকে আরব সাগরের উপকূল বরাবর বিস্তৃত এবং উত্তরে দমন থেকে দক্ষিণে গোয়া পর্যন্ত প্রসারিত প্রায় ৫৩০ কিলোমিটার দীর্ঘ সমভূমিকে কোঙ্কন উপকূল সমভূমি বলা হয় । এই অংশ সংকীর্ণ ও ভগ্ন । এই অঞ্চলের সমুদ্র উপকূলে কাদাভর্তি জলাভূমি এবং বালুকাময় তটভূমি ছাড়াও কোথাও কোথাও সামুদ্রিক চড়া এবং লাভাগঠিত পাহাড় দেখা যায় । বৈতরণী , অম্বা ও উলহাস নদী প্রবাহিত হয়ে কোঙ্কন উপকূলের সমুদ্রে খাঁড়ি সৃষ্টি করেছে । ভারতের প্রবেশদ্বার মুম্বাই ও হাইটেক বন্দর জওহরলাল নেহরু । বন্দর এখানেই অবস্থিত ।

  1. সমভূমি অঞ্চলের মৃত্তিকা ও স্থানীয় ভূমিরূপের নামগুলি সংক্ষেপে লেখো ।

Answer : সমভূমি অঞ্চলে মৃত্তিকা ও স্থানীয় ভূমিরূপ : হিমালয়ের পাদদেশের সংকীর্ণ অঞ্চলে বালি ও পাথর মিশ্রিত ভাবর মৃত্তিকা , খাদার , বেট ও ভাঙ্গর মৃত্তিকা দেখতে পাওয়া যায় । ভূমিরূপ ও মৃত্তিকার বৈশিষ্ট্যগুলি হল— ( ১ ) ভাবর : হিমালয়ের পাদদেশের মৃদু ঢালসম্পন্ন পলি সঞ্জিত যে ভূমিরূপ রয়েছে , তাকে ভাবর বলে । ( ২ ) তরাহ : ভাবর অঞ্চলের দক্ষিণে নদী সৃষ্ট জলাভূমিকে তরাই বলে । ( ৩ ) খাদার ও বেট : গাঙ্গেয় সমভূমির নবীন পলিমাটিযুক্ত অঞ্চলকে উত্তরপ্রদেশে খাদার ও পাঞ্জাবে বেট বলে । ( ৪ ) ভাঙ্গর : নদী অববাহিকার দূরবর্তী প্রাচীন পলিযুক্ত অঞ্চলকে ভাঙ্গার বলে । ( ৫ ) ভুর সমভূমির পশ্চিমদিকে যে ছোটো ছোটো বালিয়াড়ি দেখা যায় তাকে ভুর বলে ।

  1. কচ্ছের রণ – এর ভৌগোলিক অবস্থান ও ভূমিরূপ সম্পর্কে লেখো ।

Answer : গুজরাটের উত্তরে কচ্ছ উপদ্বীপকে ঘিরে প্রায় ২১৫০০ বর্গকিমি ক্ষেত্রফল বিশিষ্ট যে লবণাক্ত জলাভূমি রয়েছে তা কচ্ছের রণ নামে পরিচিত ( ‘ কচ্ছ ‘ শব্দের অর্থ ‘ জলময় দেশ ) । কচ্ছের রণের দুটি অংশ ( i ) উত্তরে ‘ বৃহৎ কচ্ছের রণ ’ এবং ( ii ) দক্ষিণ – পূর্বে ‘ ক্ষুদ্র রণ ‘ । কচ্ছের রণ সমুদ্রপৃষ্ঠের সামান্য উচ্চে অবস্থিত । তবে কোনো কোনো অংশ সমুদ্রতলের সামান্য নীচে অবস্থানের কারণে বর্ষায় প্রবল জোয়ারে সমুদ্রের জল ঢুকে পড়ে , তাই ভূমি লবণাক্ত । কচ্ছের রণ লুনি , বানস প্রভৃতি নদী দ্বারা বিধৌত এবং নদীগুলি বর্ষাকাতে এখানে প্রচুর সূক্ষ্ম পলির সঞ্চয় ঘটায় , তাই তুমি তিন থেকে চারমাস লবণাক্ত ও কর্দমময় । বছরের বাকি সময় ভূমি শুষ্ক , উদ্ভিদ বিজ এবং মরুভূমির মতো অবস্থার সৃষ্টি হয় । তবে মাঝে মাঝে এখানে জলাভূমির মধ্যে ঘাস ও আগাছাপূর্ণ টিলা ও উচ্চভূমি চোখে পড়ে । এই অংশই হল পৃথিবীর একমাত্র বন্য গাধা সংরক্ষণাগার ( Wild Ass Sanctuary ) । 

  1. মেঘালয় মালভূমি , দাক্ষিণাত্য মালভূমির বিচ্ছিন্ন অংশ – আলোচনা করো । 

Answer : প্রাচীন কালে মেঘালয় মালভূমি ও ছোটোনাগপুর মালভূমি একটিই ভূপ্রাকৃতিক অংশ ছিল । ভূতাত্ত্বিক যুগে ভূআন্দোলনে এর মধ্যবর্তী অংশ অবনমিত হয় । যার মধ্য দিয়ে পরবর্তীকালে গঙ্গা ও ব্রহ্মপুত্র প্রবাহিত হয় । এই নদী ও তাদের উপনদীসমূহ অবনমিত অংশ পলি দ্বারা ভরাট করে সৃষ্টি করে সমভূমি এবং মেঘালয় মালভূমি বিচ্ছিন্ন আকারে অবস্থান করে ।

  1. ডেকানট্র্যাপ ‘ বলতে কী বোঝ ?

Answer : মহারাষ্ট্রের লাভা মালভূমি অঞ্চলটি ডেকানট্র্যাপ নামে পরিচিত । এই অঞ্চলটি পৃথিবীর সুপ্রাচীন ভূখণ্ড গন্ডোয়ানাল্যান্ডের অন্তর্গত একটি মালভূমি । আজ থেকে প্রায় ৬-৭ কোটি বছর আগে ভূত্বকের প্রশস্ত ফাটলপথে ভূগর্ভস্থ লাভা নিঃসৃত হয়ে এই অঞ্চলটিকে স্তরে স্তরে চাদরের মতো ঢেকে দেয় , এইভাবেই । ডেকানট্র্যাপ অঞ্চলটির সৃষ্টি হয়েছিল । পরবর্তীকালে বৃষ্টি , বাং প্রভৃতি প্রাকৃতিক শক্তির দ্বারা ক্ষয়প্রাপ্ত হয়ে লাভান্তরের পার্শ্বদেশে সিঁড়ির মতো ধাপে ধাপে উপর থেকে নীচে নেমে গেছে । এইজন্য এই লাভায় ঢাকা মালভূমি অঞ্চলটিকে ডেকানট্র্যাপ বলে । ডেকানটাপ শব্দের সুইডিস অর্থ ‘ সিড়ি ’ বা ‘ ধাপ ‘ ।

  1. মেঘালয় মালভূমি বলতে কী বোঝ ?

Answer : মেঘালয় প্রদেশে অবস্থিত গারো , খাসি , জয়ন্তিয়া , ও মিকির পাহাড়ি অঞ্চল নিয়ে এই মেঘালয় মালভূমিটি গঠিত হয়েছে । এটি আসলে দাক্ষিণাত্য মালভূমির বিচ্ছিন্ন অংশ । ক্রমাগত ভূ – আন্দোলন ও চ্যুতির ফলে ছোটোনাগপুর ও মেঘালয় মালভূমি দুটি পরস্পর থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে দূরে সরে যায় । এই মালভূমির গড় উচ্চতা ৬০০-১৬০০মি .। গারো , খাসি ও জয়ন্তিয়া এই অঞ্চলের তিনটি ক্ষয়জাত পাহাড় । SU মেঘালয় মালভূমির পশ্চিমে অবস্থিত গারো পাহাড়ের সর্বোচ্চ শৃঙ্গ হল নকরেক ( ১৪১২ মি . ) মেঘালয় মালভূমির উত্তরে বিস্তৃত রয়েছে শিলং পাহাড় । শিলং শৃঙ্গ ( ১৯৬১ মি . ) হল শিলং পাহাড় তথা মেঘালয় মালভূমির সর্বোচ্চ শৃঙ্গ ।

  1. কারাকোরাম পর্বতশ্রেণি কাকে বলে ?

Answer : কাশ্মীরের লাডােক পর্বতশ্রেণির উত্তর দিকে প্রায় ৪০০ কিলোমিটার অঞ্চল জুড়ে কারাকোরাম পর্বতশ্রেণি অবস্থান করছে । এই পর্বতশ্রেণির দৈর্ঘ্য মাত্র ৪০০ কিলোমিটার হলেও এই পর্বতশ্রেণিতে অনেকগুলো সুউচ্চ পর্বতশ্রেণি ও বিশাল হিমবাহ আছে । কারাকোরাম পর্বতশ্রেণির পশ্চিম অংশে অবস্থিত গডউইন অস্টিন বা K2 ( ৮৬১১ মি . ) , শৃঙ্গটি হল কারাকোরাম তথা ভারতের সর্বোচ্চ পর্বতশৃঙ্গ এবং পৃথিবীর দ্বিতীয় উচ্চতম পর্বতশৃঙ্গ । কারাকোরাম পর্বতের অন্যান্য উল্লেখযোগ্য পর্বতশৃঙ্গ হল — হিডন পিক্‌ ( ৮০৬৮ মি . ) , ব্রড পিক্‌ ( ৮০৪৭ মি . ) ও গ্যাসের ব্লুম ।। ( ৮০৩৫ মি . ) । এইসব শৃঙ্গগুলি সারাবছর ধরেই তুষারে আবৃত থাকে বলে কারাকোরাম পর্বতকে বসুধা বা ধবলশীর্ষ বলে । কারাকোরাম পর্বতের উল্লেখযোগ্য হিমবাহ হল – সিয়াচেন হিমবাহ ( দৈর্ঘ্য ৭৬ কিমি . ) । এটি ভারতের দীর্ঘতম হিমবাহ , এ ছাড়া রয়েছে — বালটোরা , রিমো ইত্যাদি । 

  1. লোটাক পর্বতশ্রেণি সম্পর্কে লেখো ।

Answer : কারাকোরাম ও কাশ্মীর হিমালয় পর্বতশ্রেণির মধ্যবর্তী স্থানে ৩৫০ কিমি দীর্ঘ লাভাক পর্বতশ্রেণি অবস্থান করছে । হিমালয় পর্বতশ্রেণির সৃষ্টির সময় টেথিস সাগরের সঞ্জিত পলিরাশি থেকেই লাডাক পর্বতশ্রেণির সৃষ্টি হয়েছে । লাডাক পর্বতশ্রেণির ৯ টি শৃঙ্গের উচ্চতা ৬০০০ মিটারেরও বেশি । এই অঞ্চলের লাডাক মালভূমিটি হল ভারতের সর্বোচ্চ মালভূমি । এই অঞ্চলটি অত্যন্ত শুষ্ক ও দুর্গম ।

  1. ছোটোনাগপুর মালভূমি কী ?

Answer : রাঁচী মালভূমি , হাজারিবাগ মালভূমি , কোডারমা মালভূমি , বাঘেলখণ্ড মালভূমি এবং রাজমহল পাহাড় নিয়ে গঠিত মালভূমিকে ছোটোনাগপুরের মালভূমি বলা হয় । এই মালভূমির গড় উচ্চতা ৪০০-১০০০ মিটার । পশ্চিমদিকে এই মালভূমির উচ্চতা অপেক্ষাকৃত বেশি । ছোটোনাগপুরের মালভূমি পূর্বদিকে ক্রমাগত ক্ষয়প্রাপ্ত হয়ে সমপ্রায়ভূমিতে পরিণত হয়েছে । পূর্বের এই সমপ্ৰায়ভূমিতে অনেক ছোটো ছোটো টিলা দেখা যায় । ছোটোনাগপুর মালভূমির পূর্ব – পশ্চিমে বিস্তৃত দামোদর গ্রস্ত উপত্যকার দক্ষিণে মানভূম , রাঁচী , পালামৌ নেতারহাট অঞ্চল এবং উত্তরে সাঁওতাল পরগনা ও হাজারিবাগ মালভূমি অবস্থিত । মালভূমিগুলির প্রান্তদেশ হঠাৎ খাড়াভাবে নেমে যাওয়ায় অনেকগুলি জলপ্রপাতের সৃষ্টি হয়েছে । এর মধ্যে হ , জোনা , দশম ও রাজরাগ্রা জলপ্রপাত উল্লেখযোগ্য । 

  1. ডেকেনট্যাপ সম্পর্কে লেখে ।

Answer : ভূবিজ্ঞানীদের মতে , আজ থেকে প্রায় ১৩-১৪ কোটি বছর আগে ভূগর্ভের গুরুমণ্ডল বা ম্যান্টল অঞ্চল থেকে অভি উত্তপ্ত তরল নাভাস্রোতে কোনো রকম বিস্ফোরণ ছাড়াই ভূগর্ভের অসংখ্য ফাটল পথে বাইরে বেরিয়ে এসে ভারতের দাক্ষিণাত্য মালভূমির উত্তর – পশ্চিমভাগের প্রায় ৫ লক্ষ কিলোমিটার অঞ্চলকে লাভায় ঢেকে ফেলেছিল , কালক্রমে যা জমাট বেঁধে দাক্ষিণাত্য মালভূমি গঠন করেছে । এটি পৃথিবীর সুপ্রাচীন ভূখণ্ড গণ্ডোয়ানাল্যান্ডের অন্তর্গত । ভারতের দাক্ষিণাত্যের এই লাভা মালভূমি অঞ্চলটি ডেকানট্র্যাপ নামে পরিচিত । এই বিস্তীর্ণ মালভূমির উপরের অংশ টেবিলের মতো সমতল এবং পরবর্তীকালে বৃষ্টি , বায়ু প্রভৃতি প্রাকৃতিক শক্তির দ্বারা ক্ষয়িত লাভা স্তরের পার্শ্বদেশ সিঁড়ির মতো ধাপে ধাপে নীচে নেমে গেছে । এই বিশেষ আকৃতির জন্যই দাক্ষিণাত্য মালভূমির উত্তর পশ্চিম অংশকে ডেকানট্র্যাপ বলে । ডেকান- অর্থাৎ দাক্ষিণাত্য ও ট্র্যাপ = সিঁড়ি ] । তরল লাভা জমাট বেঁধে তৈরি হয়েছে বলে এই অঞ্চলটি সাধারণভাবে সমতল এবং পর্বতের চূড়া বা মাথাগুলি চ্যাপটা । সমগ্র মালভূমিটি পশ্চিম থেকে পূর্বদিকে ধাপে ধাপে নেমে গেছে । দীর্ঘকাল ধরে এখানকার কালো ব্যাসল্ট শিলা ক্ষয় হয়ে বিস্তীর্ণ অঞ্চল জুড়ে কালো মাটি বা কৃয় মৃত্তিকা সৃষ্টি হয়েছে ।

  1. বিন্ধ্য পর্বত কী ?

Answer : মধ্যভারতের উচ্চভূমি অঞ্চলের একেবারে দক্ষিণ সীমায় অবস্থিত সুপ্রাচীন বিন্ধ্য পর্বতটি ভূপ্রকৃতিগত ভাবে পাললিক শিলায় ( বেলেপাথর ) গঠিত । এটি হল একটি স্তূপ পর্বত । পশ্চিম থেকে পূর্বে প্রসারিত এই পর্বতটি প্রায় ১০৫০ কিমি দীর্ঘ ও গড়ে প্রায় ৩০০ মি . উঁচু । এই পর্বতের বেলেপাথর ও চুনাপাথর দ্বারা গঠি পূর্বাংশ কাইমুর নামে পরিচিত । বিন্ধ্য পর্বতের উত্তর – পূর্বাংশে শোন – এর গ্রন্থ উপত্যকা থেকে কাইমুর পাহাড় খাড়াভাবে উ গেছে । বিশ্ব্য পর্বতের ওপরটা সমতল এবং ধারগুলো ক্ষয় পেয়ে সিঁড়ির মতো হয়ে গেছে । ভারতের মরুভূমি সৃষ্টির কারণ কী ? ★ M উত্তর ভারতের পশ্চিমে রাজস্থানের পশ্চিম প্রান্তে রয়েছে থর মরুভূমি । এই অঞ্চল সমভূমি হলেও জলবায়ুগত কারণে এই অঞ্চল মরুভূমিতে পরিণত হয়েছে । কারণগুলি হল : ( i ) মৌসুমি বায়ুর বঙ্গোপসাগরীয় শাখা গঙ্গাসমভূমি অতিক্রম করে রাজস্থানের পশ্চিমপ্রান্তে পৌঁছায় তখন এই বায়ুর মধ্যে জঙ্গীয় বাষ্পের পরিমাণ খুব কমে যায় , তাই বৃষ্টি কম হয় । ( ii ) সৌসুমি বায়ুর আরবসাগরীয় শাখা যখন গুজরাট অতিক্রম করে এখানে পৌঁছায় তখনও বায়ুর মধ্যে জলীয় বাষ্পের পরিমাণ কম বঙ্গে বৃষ্টির পরিমাণ কম । ( iii ) এখানে উন্নতা বেশি বলে জলীয় বাষ্প ঘনীভূত হওয়ার সম্ভাবনাও কম এবং অধিক উন্নতায় বাবুর ঊর্ধ্বগমন ঘটে । ( iv ) এই অঞ্চলে বায়ুকে বাধা দেওয়ার মতো কোনো উচ্চভূমি বা পর্বতের অবস্থান নেই । ( v ) সম্মিলিত এই কারণগুলির জন্যই রাজস্থানে বার্ষিক গড় বৃষ্টির পরিমাণ খুবই কম ( ২৫ সেমি . এর কম ) , তাই এই অঞ্চল ধীরে ধীরে মরুভূমিতে পরিণত হয়েছে ।

  1. কয়াল বলতে কী বোঝ ?

Answer : কেরালার মালাবার উপকূল বারংবার উত্থান ও নিমজ্জনের ফলে গঠিত হয়েছে । বারবার উত্থান ও নিমজ্জনের কারণে উপকূল বরাবর সৃষ্টি হয়েছে অসংখ্য জলাভূমি বা উপদ্বুদ এই উপহ্রদগুলিকেই স্থানীয় ভাষায় কয়াল বলা হয় । ভেষানাদ , অষ্টমুদি , ভেলায়নি প্রভৃতি বিখ্যাত কয়াল । কয়ালগুলির মধ্যে ভেম্বনাদ বৃহত্তম । এই কয়ালগুলি যোগাযোগ ব্যবস্থার মাধ্যম হিসেবে কাজ করে । ভেম্বানাদ কয়াল ।

  1. আরাবল্লী পর্বত কী ?

Answer : আরাবল্লী ভারতের প্রাচীনতম ভঙ্গিল পর্বত । মধ্য ভারতের উচ্চভূমির উত্তর – পশ্চিম প্রান্তে অবস্থিত প্রাচীন ভঙ্গিল পর্বত আরাবল্লী দিল্লি থেকে গুজরাটের পালানপুর ( আমেদাবাদের কাছে ) উত্তর – পূর্ব থেকে দক্ষিণ – পশ্চিমে ৮০০ কিমি জুড়ে বিস্তৃত । নগ্নীভবন ক্রিয়ার কারণে আরাবল্লি বর্তমানে ক্ষয়জাত পর্বত বা পাহাড়রূপে অবস্থান করছে । আরাবল্লি পর্বতের গড় উচ্চতা ৬০০-৯০০ মি .। আরাবল্লীর সর্বোচ্চ শৃঙ্গ আবু পাহাড়ের কাছাকাছি অবস্থিত গুরুশিখর ( ১৭৭২ মি . ) ।

  1. মালাবার উপকূল সমভূমি সম্পর্কে লেখো ।

Answer : কর্ণাটক রাজ্যের দক্ষিণ প্রান্তবর্তী ম্যাঙ্গালোর থেকে কেরল উপকুল হয়ে তামিলনাড়ু রাজ্যের কন্যাকুমারিকা পর্যন্ত প্রসারিত উপকূলবর্তী সমভূমি মালাবার উপকূল সমভূমি নামে পরিচিত । এই সমভূমির দৈর্ঘ্য ৫০০ কিমি । অন্যান্য উপকূলের তুলনায় অনেক বেশি চওড়া হওয়ায় মালাবার উপকূলে অসংখ্য বালিয়াড়ি , জলাভূমি , হ্রদ , উপহ্রদ বা লেগুন প্রভৃতি দেখতে পাওয়া যায় । এই উপহ্রদগুলি কেরলে ‘ কয়াল ‘ নামে পরিচিত । ভেম্বানাদ কয়াল হল এখানকার বৃহত্তম কয়াল ( প্রায় ৪০ কিমি ) । ক্রমাগত ভূ – আলোড়নের ফলে এই উপকূল বারবার উত্থান ও নিমজ্জন ঘটেছে । এইসব ঘটনার চিহ্ন হিসেবে এখানে অসংখ্য উপহ্রদ বা জলাভূমি বা ‘ ব্যাকওয়াটার্স ‘ দেখা যায় , যারা ‘ কেরালা ব্যাকওয়ার্টাস নামে পরিচিত । কেরল রাজ্যের জল পরিবহণ ব্যবস্থায় কয়ালগুলি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা গ্রহণ করেছে ।

রচনাধর্মী প্রশ্নোত্তর | ভারতের ভূ প্রাকৃতিক বিভাগ (ভারত – পঞ্চম অধ্যায়) – মাধ্যমিক ভূগোল সাজেশন | Madhyamik Geography Suggestion : 

1. পূর্ব হিমালয়ের ভূপ্রকৃতির বর্ণনা দাও ।

Answer : পশ্চিমে নেপালের সীমানায় অবস্থিত সিঙ্গালিলা পর্বতশ্রেণি থেকে পূর্বে অরুণাচল প্রদেশের নামচাবারওয়া পর্যন্ত বিস্তৃত হিমালয়ের অংশকে পূর্ব হিমালয় বলা হয় । গড়ে ১৫০০ মিটার উচ্চতাযুক্ত এই হিমালয় সমগ্র সিকিম , ভুটান , পশ্চিমবঙ্গের দার্জিলিং জেলা ও প্রায় সমগ্র অরুণাচল প্রদেশজুড়ে বিস্তৃত । আঞ্চলিক বৈশিষ্ট্য অনুসারে এই পূর্ব হিমালয়কে ৩ ভাগে যায় । যথা- ( ১ ) সিকিম – দার্জিলিং হিমালয় , ( ২ ) ভুটান হিমালয় ( ভুটানে অবস্থিত ) , ( ৩ ) অরুণাচল হিমালয় । 

( ১ ) সিকিম – দার্জিলিং হিমালয় : সিকিমের পশ্চিমদিকে অবস্থিত সিঙ্গালিলা পর্বতশ্রেণি থেকে পূর্বদিকে ডানকিয়া পর্বতশ্রেণি পর্যন্ত বিস্তৃত এই সিকিম দার্জিলিং হিমালয় । ভাগ করা • এখানকার উল্লেখযোগ্য পর্বতশৃঙ্গ হল — কাঞ্চনজঙ্ঘা ( ৮৫৯৮ মি . ভারতের দ্বিতীয় উচ্চতম ও পৃথিবীর তৃতীয় উচ্চতম শৃঙ্গ ) , সান্দাক্ফ ( ৩৬৩০ মি . ) পশ্চিমবঙ্গের সর্বোচ্চ শৃঙ্গ ) , ফালুট ( ৩৫৯৬ মি . ) , সবরগ্রাম ( ৩৫৪৩ মি . ) । • এখানকার উল্লেখযোগ্য গিরিপথগুলি হল — নাথুলা , বুমলা , জেলেপলা ইত্যাদি । নাথুলা ও জেলেপলা গিরিপথের সাহায্যে তিব্বতের চুম্বি উপত্যকার সঙ্গে যোগাযোগ করা যায় ।

 দার্জিলিং হিমালয়ের “ মিরিক ” ও সিকিম হিমালয়ের “ ছাঙ্গু ” হল এখানের দুটি বিখ্যাত হ্রদ । • এখানের প্রধান হিমবাহ — জেমু , তালুং , পৌহুনরী । প্রশ্ন | ১৩ | দাক্ষিণাত্য মালভূমির চিত্রসহ বর্ণনা দাও । উত্তর : দাক্ষিণাত্য মালভূমি : অবস্থান : নর্মদা নদীর দক্ষিণে সাতপুরা , মহাকাল পর্বত থেকে দক্ষিণে কন্যাকুমারিকা অন্তরীপ পর্যন্ত এবং পূর্বে পূর্বঘাট পর্বত থেকে পশ্চিমে পশ্চিমঘাট পর্বত পর্যন্ত যে ত্রিভুজাকার ভূ – খণ্ড দেখা যায় , তাকেই বলে দাক্ষিণাত্য মালভূমি । এর বিস্তার উত্তর – দক্ষিণে প্রায় ১৭০০ কিমি .। শ্রেণিবিভাগ : ভূ – প্রকৃতিগত পার্থক্য অনুসারে দাক্ষিণাত্য মালভূমিকে দুই ভাগে ভাগ করা যায় । যথা : ( ক ) দাক্ষিণাত্য মালভূমির পার্বত্য অংশ এবং ( খ ) দাক্ষিণাত্য মালভূমির মূল অংশ । ( ক ) দাক্ষিণাত্য মালভূমির পার্বত্য অংশ : i ) পশ্চিমঘাট পর্বতমালা : * অবস্থান : পশ্চিমে আরব সাগরের উপকূল বরাবর উত্তর – দক্ষিণে এই সহ্যাদ্রি পর্বতমালা অবিচ্ছিন্নভাবে বিস্তৃত । * দৈর্ঘ্য : উত্তর – দক্ষিণে দৈর্ঘ্য ১৬০০ কিমি । * বৈশিষ্ট্য : পশ্চিমে এই পাহাড় খাড়াভাবে ওপরে উঠে । গেছে ও পূর্বে এটি সিঁড়ির মতো ধাপে ধাপে নেমে গেছে । * পর্বতশৃঙ্গ : কলসুবাই ( ১৬৪৬ মি . ) , সালহের ( ১৫৭৬ মি . ) , মহাবালেশ্বর , হরিশচন্দ্র গড় । * সর্বোচ্চ শৃঙ্গ : ভাভুলমালা ( ২৩৩৯ মি . ) * গিরিপথ : নাসিকের নিকটবর্তী থালঘাট গ্যাপ ও পুণের নিকটবর্তী ভোরঘাট গ্যাপ উল্লেখযোগ্য । ii ) পূর্বঘাট পর্বতমালা : * অবস্থান : পূর্বে বঙ্গোপসাগর উপকূল বরাবর উত্তর দক্ষিণে এই মলয়াদ্রি পর্বত বিস্তৃত । * বৈশিষ্ট্য : এটি কতকগুলি বিচ্ছিন্ন পর্বতের সমষ্টি । এটি একটি ক্ষয়জাত পর্বত । * পর্বত / পর্বতশৃঙ্গ : মহেন্দ্রগিরি শৃঙ্গ ( ১৫০২ মি . ) , আনাইমালাই পর্বত , সেভরয় , জাভাদি , ভেলিকোডা ইত্যাদি পর্বত । * সর্বোচ্চ শৃঙ্গ : আর্মাকোন্ডা ( ১৬৮০ মি . ) * নদনদী : গোদাবরী , কৃয়া , পেন্নার নদী এই পর্বতের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হয়ে বঙ্গোপসাগরে পড়েছে । iii ) উত্তরের পর্বতমালা : E * অবস্থান : দাক্ষিণাত্য মালভূমির উত্তরপ্রান্তে এই পর্বতমালা ও অবস্থিত । * পর্বত : মালভূমির উত্তর সীমায় সাতপুরা ( ধূপগড় সর্বোচ্চ শৃঙ্গ ১৩৫০ মি . ) , সাতপুরার উত্তরে মহাদেব ( 1 ( পাঁচমারি সর্বোচ্চ শৃঙ্গ ১০৫০ মি . ) ও সাতপুরার উত্তর – পূর্বে মহাকাল পর্বতগুলি অবস্থিত । ( অমরকণ্টক সর্বোচ্চ শৃঙ্গ ১০৫৭ মি . ) * বৈশিষ্ট্য : ৩ টি পর্বতই বেশ প্রাচীন । তাই ক্ষয়প্রাপ্ত হয়ে উচ্চতা হ্রাস পেয়েছে । সাতপুরা হল একটি স্তূপ পর্বত । iv ) দক্ষিণের পর্বতমালা : * অবস্থান : পূর্বঘাট ও পশ্চিমঘাট পর্বত দুটি দক্ষিণদিকে নীলগিরি পর্বতগ্রন্থিতে মিলিত হয়ে এই পর্বত উৎপন্ন হয়েছে । * পর্বত : আন্নামালাই পর্বত ( সর্বোচ্চ শৃঙ্গ আনাইমুদি ২৬৯৫ । মি . ) আনাইমুদি দাক্ষিণাত্য মালভূমির সর্বোচ্চ শৃঙ্গ , পালনি পর্বত ও কার্ডামম পর্বত । * গিরিপথ : নীলগিরি পর্বতে অবস্থিত পালঘাট গ্যাপ । ( খ ) দাক্ষিণাত্য মালভূমির মূল অংশ : দাক্ষিণাত্য মালভূমির অংশকে ৩ ভাগে ভাগ করা যায় । ( i ) মহারাষ্ট্র মালভূমি , ( ii ) কর্ণাটক মালভূমি ও ( iii ) তেলে খান মালভূমি । 1 ) মহারাষ্ট্র মালভূমি : মহারাষ্ট্রে অবস্থিত লাভা দ্বারা গঠিত এই মালভূমিতে সিঁড়ির মতো ধাপ দেখা যায় বলে একে ডেকানটা , বলে । ব্যাসল্ট শিলায় গঠিত বলে মৃত্তিকা কৃষ্ণবর্ণের । ধাপগুলির মাথা চ্যাপটা ও সমতল ও পার্শ্বদেশ বেশ খাড়া । ii ) কর্ণাটক মালভূমি : ডেকানট্র্যাপ – এর দক্ষিণে কর্ণাটক রাজে এই মালভূমি অবস্থিত । এই ব্যবচ্ছিন্ন মালভূমির গড় উচ্চতা ৬০০-৯০০মি . , ও মৃত্তিকা হল লাল । * মালনাদ : এই মালভূমির পশ্চিম অংশের ৩২০ কিমি দীর্ঘ ও প্রায় ৩৫ কিমি প্রশস্ত উঁচুনীচু ঢেউ খেলানো অঞ্চল হ মালনাদ । * ময়দান : পূর্বদিকের কম ঢেউখেলানো ও সমপ্রায়ভূমিকে বলে ময়দান । এই দুই অঞ্চল গ্রানাইট ও নাইস শিলায় গঠিত । iii ) তেলেঙ্গানা মালভূমি : অন্ধ্রপ্রদেশ রাজ্যের অন্তর্গত তেলেঙ্গানা মালভূমি অঞ্চলটি গ্রানাইট ও নাইস শিলায় গঠিত ।। এটি একটি সমপ্রায় ভূমি । গড় উচ্চতা ৫০০-৬০০ মি .। সাতমাল হল এখানকার উল্লেখযোগ্য পাহাড় ।

2. মধ্য ও পূর্ব ভারতের মালভূমি ও উচ্চভূমি সম্পর্কে যা জান সংক্ষেপে লেখো ।

Answer : অবস্থান : উত্তরে গঙ্গা সমভূমি , দক্ষিণে দাক্ষিণাত মালভূমি , উত্তর – পশ্চিমে আরাবল্লি পর্বত , পূর্বে রাজমহল পাহাড় ও পূর্বঘাট পর্বত ও পশ্চিমে পশ্চিমঘাট পর্বত – এর মধ্যবর্তী অংশে এই মালভূমি অঞ্চলটি অবস্থিত । 

উৎপত্তি : এটি পৃথিবীর প্রাচীনতম ভূখণ্ড গন্ডোয়ানাল্যান্ডের অংশবিশেষ , যা অতি প্রাচীন আগ্নেয় ( গ্রানাইট ) ও রূপান্তরিত ( নাইস ) শিলা দ্বারা গঠিত । 

শ্রেণিবিভাগ : মধ্য ও পূর্ব ভারতের মালভূমি ও উচ্চভূমি অঞ্চলকে প্রধানত দু – ভাগে ভাগ করা যায় । যথা : ( ১ ) মধ্য ভারতের উচ্চভূমি এবং ২ ) পূর্ব ভারতের উচ্চভূমি ও মালভূমি । 

( ১ ) মধ্য ভারতের উচ্চভূমি : আদিকাল থেকে বিশ্বা পর্যন্ত বিভিন্ন ধরনের কঠিন ও নরম শিলায় এখানকার ভূ গঠিত হয়েছে । নরম শিলাস্তর বেশি ক্ষয় পেয়ে মালভূমির আকাম নিয়েছে এবং কঠিন শিলা অপেক্ষাকৃত কম ক্ষয় পেয়ে ছোটো ছোটো পাহাড়ে পরিণত হয়েছে । সমগ্র অঞ্চলটির গড় উচ্চতা ১০০-৬০০ মিটার এবং দক্ষিণ থেকে উত্তর ও উত্তর – পূর্ব দিকে । ক্রমশ ঢালু হয়ে গেছে । সমগ্র অঞ্চলটিকে প্রধানত কয়েকটি ভাগে ভাগ করা হয় । যথা : ( ক ) আরাবল্লি পর্বতশ্রেণি : এটি ভারতের প্রাচীনতম পর্বত এবং পৃথিবীর প্রাচীনতম ভঙ্গিল পর্বতসমূহের মধ্যে অন্যতম । এই পর্বতটি দিল্লি থেকে আমেদাবাদ পর্যন্ত উত্তর – পশ্চিমে ৮০০ কিমি দৈর্ঘ্যে বিস্তৃত । ক্ষয় পেতে পেতে বর্তমানে এটি একটি ক্ষয়জাত পর্বতে পরিণত হয়েছে । এর গড় উচ্চতা ৪০০-৬০০ মি .। এর সর্বোচ্চ শৃঙ্গ হল গুরুশিখর ( ১৭৭২ মি . ) এবং অপর একটি উল্লেখযোগ্য শৃঙ্গ হল মাউন্ট আবু । ( খ ) মারওয়ার উচ্চভূমি : এটি আরাবল্লি পর্বতের পূর্বদিকে অবস্থিত । একে পূর্ব রাজস্থান উচ্চভূমিও বলে । ( গ ) বুন্দেলখণ্ড মালভূমি : এই মালভূমিটি যমুনা নদীর দক্ষিণে অবস্থিত । গ্রানাইট ও নাইস শিলায় গঠিত এই মালভূমি বর্তমানে ক্ষয়প্রাপ্ত হয়ে সমপ্রায় ভূমিতে পরিণত হয়েছে । ( ঘ ) বিন্ধ্য পর্বত : নর্মদা নদীর উত্তরে অবস্থিত এই স্তূপ পর্বতটি প্রায় ১০৫০ কিমি দীর্ঘ । চুনাপাথর ও বেলেপাথর জাতীয় পাললিক শিলায় এটি গঠিত । এর সর্বোচ্চ শৃঙ্গ হল মানপুর ( ৮৮১ মি . ) । ( ঙ ) রেওয়া মালভূমি : বিন্ধ্য পর্বতের পূর্ব দিকে অবস্থিত । লাভা গঠিত রেওয়া মালভূমি অঞ্চলটির ভূপ্রকৃতি হল তরঙ্গায়িত । ( চ ) মালব মালভূমি : বিন্ধ্য ও আরাবল্লি পর্বতের মধ্যবর্তী স্থানে এটি অবস্থিত । প্রধানত লাভা দ্বারা গঠিত বলে এর ভূমির প্রকৃতি উঁচুনীচু ও তরঙ্গায়িত । গড় উচ্চতা ৫০০-৬০০ মিটার । ( ছ ) নর্মদা উপত্যকা : বিন্ধ্য পর্বতের দক্ষিণে অবস্থিত এই উপত্যকা ভূপ্রকৃতিগত ভাবে একটি গ্রস্ত উপত্যকা । 

( ২ ) পূর্ব ভারতের উচ্চভূমি ও মালভূমি : মধ্য ভারতের মালভূমি অঞ্চলটি পূর্বদিকে প্রসারিত হয়ে এই অঞ্চলটি গঠন করে । পূর্বে কাইমুর থেকে পশ্চিমে বাঘেলখণ্ড মালভূমি ও উত্তরে ছোটোনাগপুর মালভূমি থেকে দক্ষিণে দণ্ডকারণ্য পর্যন্ত প্রসারিত । এই সমগ্র অঞ্চলটি প্রধানত চার ভাগে বিভক্ত । যথা— ( ক ) ছোটোনাগপুর মালভূমি : এই ছোটোনাগপুর মালভূমিটি বাঘেলখণ্ড মালভূমির পূর্ব দিকে অবস্থিত । এটি আর্কিয়ান যুগের গ্রানাইট ও নাইস শিলায় গঠিত , যার গড় উচ্চতা হল ৭০০ মি .। এটি প্রধানত রাঁচী মালভূমি , হাজারিবাগ মালভূমি ও কোডারমা মালভূমি দ্বারা গঠিত । ‘ প্যাট অঞ্চল ‘ ( ১১৪২ মি . ) এখানকার সর্বোচ্চ অংশ । ( খ ) বাঘেলখণ্ড মালভূমি : এই মালভূমিটি শোন নদীর দক্ষিণে অবস্থিত । এর গড় উচ্চতা ৪০০-৬০০ মিটার । এটি গ্রানাইট ও প্রাচীন পাললিক শিলায় গঠিত । ( গ ) মহানদী অববাহিকা : এটি মহানদীর তীরবর্তী অববাহিকা , যার গড় উচ্চতা হল ২০০ মি .। এই অঞ্চল প্লেট ও চুনাপাথর দিয়ে গঠিত । ( ঘ ) গড়জাত পাহাড় ও দণ্ডকারণ্য মহানদীর পূর্বাংশে ওড়িশার উচ্চভূমিকে গড়জাত পাহাড় বলে । ছত্তিশগড় সমভূমির দক্ষিণে দণ্ডকারণ্য অঞ্চল অবস্থিত । এই অঞ্চলের বোনাই , কেওনঝড় ও সিমলিপাল পাহাড়গুলি উল্লেখযোগ্য ।

3. ভারতের উপকূলীয় সমভূমির সংক্ষিপ্ত বিবরণ দাও । অথবা , ভারতের পূর্ব উপকূলের সমভূমির পরিচয় দাও । অথবা , ভারতের পশ্চিম উপকূলের সমভূমির পরিচয় দাও । 

Answer : ত্রিভুজাকৃতি দাক্ষিণাত্যের মালভূমি অঞ্চলের পূর্ব প্রান্তে বঙ্গোপসাগর এবং পশ্চিম প্রান্তে আরব সাগরের উপকূল বরাবর সংকীর্ণ সমভূমিকে ভারতের উপকূলীয় সমভূমি অঞ্চল বলা হয় , যা ( 1 ) পশ্চিম উপকূলীয় সমভূমি এবং ( 2 ) পূর্ব উপকূলীয় সমভূমি— এই দুই অংশে বিভক্ত ।

 ( ক ) পশ্চিম উপকূলীয় সমভূমি : ভারতের দক্ষিণ – পশ্চিম প্রান্তে আরব সাগরের উপকূল বরাবর বিস্তৃত প্রায় ১,৬০০ কিমি দীর্ঘ এই অঞ্চলটি উত্তরে কচ্ছের রণ অঞ্চল থেকে দক্ষিণে কন্যাকুমারী পর্যন্ত বিস্তৃত । পূর্ব উপকূলের সমভূমির তুলনায় এই সমভূমি অঞ্চলটি বেশ সংকীর্ণ ও বন্ধুর । 

ভূ – প্রাকৃতিক বিভাগ : ভূপ্রকৃতির তারতম্য অনুসারে পশ্চিম উপকূলীয় সমভূমিকে ৬ ভাগে ভাগ করা যায় , যথা : ( ১ ) কচ্ছের রণ , ( ২ ) কচ্ছ উপদ্বীপ , ( ৩ ) কাথিয়াবাড় উপদ্বীপ , ( ৪ ) গুজরাট সমভূমি , ( ৫ ) কোঙ্কন উপকূলীয় সমভূমি , ( ৬ ) কর্ণাটক উপকূলীয় সমভূমি এবং ( ৭ ) মালাবার উপকূলীয় সমভূমি । 

( ১ ) কচ্ছের রণ : গুজরাট রাজ্যের উত্তরে এবং কচ্ছ উপদ্বীপের উত্তর ও পূর্বাংশে ৭৩,৬০০ বর্গকিলোমিটার বিস্তৃত অগভীর জলাভূমি রণ নামে পরিচিত । উত্তরের অংশ বৃহৎ রণ ও দক্ষিণের অংশ ক্ষুদ্র রণ নামে পরিচিত । বর্ষাকালে এই অঞ্চল সমুদ্র এবং লুনি , বানস প্রভৃতি নদনদীর দ্বারা প্লাবিত হয় । গ্রীষ্মকালে এই অঞ্চল সম্পূর্ণ শুষ্ক , উদ্ভিদহীন ও সাদা লবণে আচ্ছাদিত বালুকাময় প্রান্তরে ( সমভূমি অঞ্চলে ) রূপান্তরিত হয় । 

( ২ ) কচ্ছ উপদ্বীপ : রণের দক্ষিণে কচ্ছ উপদ্বীপ অবস্থিত । ‘ কচ্ছ ‘ শব্দের অর্থ ‘ জলময় দেশ ‘ । তিন দিকে জলবেষ্টিত কচ্ছ উপদ্বীপের উত্তর ও দক্ষিণে সমুদ্র সংলগ্ন অংশে পলিগঠিত সমভূমি এবং মধ্যভাগে ৩১৫-৩৮৫ মিটার উঁচু বেলেপাথরের পাহাড় দেখা যায় । 

( ৩ ) কাথিয়াবাড় উপদ্বীপ : কচ্ছ উপদ্বীপের কিছুটা দক্ষিণে অবস্থিত এবং তিনদিকে জলবেষ্টিত ( আরব সাগর , কচ্ছ উপসাগর ও কাম্বে উপসাগর ) কাথিয়াবাড় উপদ্বীপ অঞ্চলটি সৌরাষ্ট্র নামেও পরিচিত । গিরণার হল এই অঞ্চলের একটি উল্লেখযোগ্য পাহাড় । গিরণার পাহাড়ের গোরখনাথ শৃঙ্খটি হল সৌরাষ্ট্রের সর্বোচ্চ অংশ ( উচ্চতা ১,১১৭ মিটার ) । 

( ৪ ) গুজরাট সমভূমি : গুজরাট সমভূমি অঞ্চলটি উত্তরে কাথিয়াবাড় উপদ্বীপের দক্ষিণ প্রান্ত থেকে দক্ষিণে মহারাষ্ট্রের উত্তর সীমানা পর্যন্ত বিস্তৃত । পশ্চিম উপকূলের সংকীর্ণ সমভূমিটি এই অঞ্চলে কিছুটা চওড়া হয়ে গিয়েছে । কচ্ছ উপসাগর ও কাম্বে উপসাগর নামে আরব সাগরের দুটি প্রসারিত অংশ এই অঞ্চলের দু’পাশ দিয়ে ভারতের মূল ভূখণ্ডের কিছুটা ভিতরে ঢুকে গিয়েছে । 

( ৫ ) কোঙ্কন উপকূলীয় সমভূমি : প্রায় ৫০০ কিমি দীর্ঘ এই সমভূমি অঞ্চলটি গুজরাট সমভূমির দক্ষিণ প্রান্ত থেকে গোয়া পর্যন্ত বিস্তৃত । 

( ৬ ) কর্ণাটক উপকূলীয় সমভূমি : প্রায় ২২৫ কিমি দীর্ঘ এই সমভূমি অঞ্চলটি গোয়া থেকে ম্যাঙ্গালোর প্রান্ত থেকে গোয়া পর্যন্ত বিস্তৃত । 

( ৭ ) মালাবার উপকূলীয় সমভূমি প্রায় ৫০০ কিমি দীর্ঘ এই সমভূমি ম্যাঙ্গালোর থেকে কন্যাকুমারী পর্যন্ত বিস্তৃত । অসংখ্য ছোটো – বড়ো হ্রদ এবং উপহ্রদ ( লেগুন ) বা কয়ালের উপস্থিতি হল । মালাবার উপকূলের ভূপ্রকৃতির উল্লেখযোগ্য বৈশিষ্ট্য । ( খ ) পূর্ব উপকূলীয় সমভূমি : বঙ্গোপসাগরের উপকূলভাগে ভারতের ওড়িশা , অন্ধ্রপ্রদেশ ও তামিলনাড়ু রাজ্যের পূর্ব প্রান্তে অবস্থিত পূর্ব উপকূলের সমভূমি অঞ্চলটি উত্তরে ওড়িশা থেকে দক্ষিণে তামিলনাড়ু রাজ্যের দক্ষিণ প্রান্ত পর্যন্ত প্রায় ১,৫০০ কিলোমিটার দীর্ঘ অঞ্চল জুড়ে অবস্থান করছে । এই সমভূমির গড় বিস্তার বেশি ১০০ কিমি । বিশেষত মহানদী , গোদাবরী , কৃষ্ণা ও কাবেরী বদ্বীপ অঞ্চলে এই উপকূলভূমি পূর্ব – পশ্চিমে বহুদূর বিস্তৃত হয়েছে । পূর্ব উপকূলীয় সমভূমি অঞ্চলটি প্রধানত দু’ভাগে বিভক্ত , যথা : 

( ১ ) উত্তর সরকার উপকূল এবং ( ২ ) করমণ্ডল উপকূল ।

 ( ১ ) উত্তর সরকার উপকূল : ওড়িশা সুবর্ণরেখা নদীর মোহানা থেকে অন্ধ্রপ্রদেশের কৃয়া নদীর বদ্বীপের পূর্বভাগ পর্যন্ত বিস্তৃত উপকূল ভাগকে উত্তর সরকার উপকূল বলা হয় । উত্তর সরকার উপকূলটি ( i ) ওড়িশা উপকূল ( ii ) অন্ধ্ৰ উপকূল এই দু’টি অংশে বিভক্ত । ( i ) ওড়িশা ( উৎকল ) উপকূল : উত্তর সরকার উপকূলের উত্তরভাগ অবস্থিত উপকুল বা ওড়িশা উপকূলীয় অংশটি প্রধানত মহান বৈতরণী এবং ব্রাহ্মণী নদী তিনটির বদ্বীপ নিয়ে গঠিত হয়েছে । ওড়িশ উপকূলকে মহানদী বদ্বীপ অঞ্চলও বলা হয় । প্রধানত পলিগঠিত নিম্নভূমি , জলাভূমি এবং ছোটো ছোটো বালিয়াড়ি নিয়ে ওড়িশ উপকূল অঞ্চলটি গঠিত । ভারতের বৃহত্তম উপহ্রদ চিল্কা এই অ্যা অবস্থিত । সমুদ্রের সঙ্গে ( বঙ্গোপসাগর ) যুক্ত থাকায় চিন্তার জ লবণাক্ত । জানো কি ? চিল্কা এশিয়ার বৃহত্তম লবণাক্ত হ্রদ । ১১০০ বর্গকিছি । ক্ষেত্রফল বিশিষ্ট চিল্কা ওড়িশার ৩ টি জেলা জুড়ে অবস্থান করছে , যথা — পুরী , খুরদা , গঞ্জাম জেলা । জৈববৈচিত্র্যে ভরপুর ও আর্থসামাজিক গুরুত্বের জন্য চিন্তা লেগুন ‘ রামসার সাইটের ‘ মর্যাদা পেয়েছে । 

( ii ) অন্ধ্ৰ উপকূল : উৎকল উপকুলের পশ্চিমে অবস্থিত অনু উপকূল অঞ্চলটি চিল্কা উপহ্রদ থেকে কৃয়া নদীর মোহানা পর্যন্ত বিস্তৃত । এই অঞ্চলটি প্রাচীন শিলা গঠিত উচ্চভূমি এবং কুমৃত্তিক গঠিত সমভূমি অঞ্চল নিয়ে গঠিত হয়েছে । অন্ধ্র উপকূলের কয় ও গোদাবরী নদীর বদ্বীপ অঞ্চলে মোহানা থেকে পশ্চিম দিয়ে । স্থলভাগের মধ্য দিয়ে বহুদূর পর্যন্ত ( ২৮০ কিলোমিটার ) প্রসারিত হয়েছে । গোদাবরী ও কৃয়া বদ্বীপের মধ্যে কোলেরু হ্রদ অবস্থিত । 

( ২ ) করমণ্ডল উপকূল : কৃয়া বদ্বীপের দক্ষিণ প্রান্ত থেকে কন্যাকুমারী পর্যন্ত বিস্তৃত উপকূলভাগকে করমণ্ডল উপকূল বলে । এ ছাড়া , পুলিকট উপহ্রদ থেকে কন্যাকুমারী পর্যন্ত বিস্তৃত উপকূলকে তামিলনাড়ু উপকূলও বলা হয় । এই অংশের কাবেরী বদ্বীপ দক্ষিণ ভারতের শস্যভাণ্ডার । করমণ্ডল উপকূলের দক্ষিণাংশের মান্নার উপসাগর ও পকপ্রণালী অবস্থিত ।

4. ভারতের ভূ – প্রাকৃতিক বিভাগসমূহের গুরুত্ব লেখো । 

Answer : ভারতের ভূ – প্রাকৃতিক বিভাগসমূহের গুরুত্ব হল নিম্নরূপ – 

( ১ ) উত্তরের পার্বত্য অঞ্চলের গুরুত্ব : 

( i ) জলবায়ুর ওপর প্রভাব : উত্তরে হিমালয় পর্বতে অবস্থানের জন্য উত্তরের শীতল সাইবেরীয় বাতাস ভারতে প্রবে করতে পারে না বলে তীব্র শীতের হাত থেকে রক্ষা পাওয়া যায় । 

( ii ) মৌসুমি বৃষ্টিপাত : দক্ষিণ পশ্চিম মৌসুমি বায়ু হিমালয়ে বাধা পেয়ে উত্তর – পূর্ব ও উত্তর ভারতে প্রচুর শৈলোৎক্ষেপ বৃষ্টিপাত ঘটায় । 

( iii ) প্রতিরক্ষা হিমালয় পর্বত ভারতের উত্তর সীমান্তে দুর্ভে প্রাচীরের মতো দণ্ডায়মান থেকে বহিঃশত্রুর আক্রমণ থেকে দেশকে রক্ষা করছে । 

( iv ) নদীর উৎসস্থল হিমালয়ের বিভিন্ন হিমবাহগুলি হয় উত্তর ভারতের প্রধান নদীগুলোর উৎস ( যেমন — গঙ্গা , সি ব্রহ্মপুত্র ইত্যাদি ) । 

( v ) সমভূমির সৃষ্টি : ভারতের সিন্ধু , গঙ্গা , ব্রহ্মপুত্র প্রভৃ নদীগুলি হিমালয় পর্বত থেকে প্রচুর পরিমাণে পলি বয়ে এনে উক্ত ও পূর্ব ভারতের বিশাল সমভূমি অঞ্চলের সৃষ্টি করেছে । 

( vi ) জলবিদ্যুৎ উৎপাদন : হিমালয়ের বরফগলা জলে পুষ্ট খরস্রোতা পার্বত্য নদীগুলি জলবিদ্যুৎ উৎপাদনে সাহায্য করে । 

( vii ) বনজসম্পদ হিমালয় পর্বতের চিরহরিৎ ও সরলবর্গীয় গাছের কাঠ আসবাবপত্র ও কাগজ উৎপাদনে কাজে লাগে । 

( viii ) কৃষিকাজ হিমালয় পার্বত্য অঞ্চলের ঢালে সিঙ্কোনা , আপেল , চা , কমলালেবু , এলাচ প্রভৃতি চাষ করা হয় । 

( ix ) ওষুধ প্রস্তুত : হিমালয়ে নানা প্রকার ভেষজ উদ্ভিদ পাওয়া যায় । 

( x ) পর্যটন ও তীর্থকেন্দ্র : অপূর্ব নিসর্গ দৃশ্যসমূহের অধিকারী হিমালয় সারা পৃথিবীর ভ্রমণ পিপাসুদের কেন্দ্রস্থল হয়ে ওঠায় এই অঞ্চলে প্রচুর পর্যটন কেন্দ্র এবং তীর্থস্থান গড়ে উঠেছে । 

( xi ) পশুপালন : হিমালয়ের পার্বত্য ঢালে প্রচুর ভেড়া , ছাগল , গরু , প্রতিপালন করা হয় । 

( xii ) বৈদেশিক মুদ্রা : এই পার্বত্য অঞ্চলের কাঠ , চা , এলাচ ও পর্যটন থেকে ভারত প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করে । 

( xiii ) হিমালয় পর্বতের অধিবাসীরা অত্যন্ত সৎ , পরিশ্রমী ও কষ্টসহিঙ্কু । 

( xiv ) সাংস্কৃতিক গুরুত্ব : হিমাদ্রি হিমালয় যে দুর্জয় ব্যবধানের প্রাচীর গড়ে তুলেছে , তার ফলে ভারতবর্ষ বহির্জগৎ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে ভারতবর্ষ নিজস্ব সভ্যতা ও সংস্কৃতি গড়ে তোলার সুযোগ পেয়েছে । 

( ২ ) উত্তরের সমভূমি অঞ্চলের গুরুত্ব : 

( i ) এটি ভারতের সবচেয়ে উর্বর স্থান । 

( ii ) এখানে বিভিন্ন নদী বাহিত পলি জমে যে উর্বর জমি গঠন করেছে তাতে প্রচুর চাষবাস করা যায় । এখানে ধান , গম , জোয়ার , বাজরা , তৈলবীজ ও প্রচুর ফলেরও চাষ হয় । তাই এই অঞ্চলকে ‘ ভারতের শস্যভাণ্ডার ‘ বলে । 

( iii ) এই অঞ্চলটি রেলপথ , সড়কপথ ও নদীবাহিত জলপথ দ্বারা পরিবহণযোগ্য হওয়ায় ব্যাবসাবাণিজ্যে সুবিধা হয় । 

( iv ) এখানে বহু পর্যটন কেন্দ্র ও তীর্থক্ষেত্র রয়েছে । 

( v ) এই সমভূমি অঞ্চলের জনসংখ্যা , অন্যান্য অঞ্চলের তুলনায় অনেক বেশি । 

( vi ) এখানে বিভিন্ন জাতি ও বিভিন্ন ধর্মের , সভ্যতা সংস্কৃতির মানুষ দেখা যায় । 

( vii ) যোগাযোগের সুবিধা ‘ কৃষিজ কাঁচামালের সহজলভ্যতা ‘ , সুলভ শ্রমিক ইত্যাদি নানা কারণে এখানে প্রচুর শিল্পও গড়ে উঠেছে । যেমন — পাট শিল্প , চিনি শিল্প ইত্যাদি ।

5. চিত্রসহ হিমালয় পর্বতমালা সৃষ্টির কারণ সংক্ষেপে আলোচনা করো ।

Answer : উৎপত্তি উত্তর : ভারতের উত্তরে অবস্থিত হিমালয় পর্বত হল প্রকৃতপক্ষে এক নবীন ভঙ্গিল পর্বত । এই পর্বতের বা সৃষ্টির কারণকে প্রধানত ২ ভাবে ব্যাখ্যা করা হয় । যেমন- ( i ) মহীখাত বা জিওসিনক্লাইন তত্ত্ব এবং ( ii ) পাতগাঠনিক বা প্লেট টেকটনিক ( i ) মহীখাত বা জিওসিনক্লাইন তত্ত্ব ।

(i) Geocyncline Theory ) : মহীখাত তত্ত্বের প্রবক্তা হলেন বিজ্ঞানী কোবার । এই তত্ত্ব অনুসারে বর্তমান যে অঞ্চলটিতে হিমালয় পর্বতমালা অবস্থান করছে , সেখানে আজ থেকে প্রায় বারো কোটি বছর আগে টার্সিয়ারি যুগে টেথিস সাগর নামে এক বিস্তীর্ণ অগভীর জলাভূমি ছিল , ভূতাত্ত্বিক ভাষায় যার নাম মহীখাত । কালক্রমে এই মহীখাতটির উত্তর ( আঙ্গারাল্যান্ড ) ও দক্ষিণ ( গন্ডোয়ানাল্যান্ড ) পার্শ্বস্থ প্রাচীন মালভূমি দুটি থেকে ক্ষয়প্রাপ্ত পলিরাশি নদনদী বাহিত হয়ে মহীখাতটিকে প্রায় ভরাট করে ফেলেছিল । যেহেতু , টেথিস মহীখাতটি ছিল ভূত্বকের একটি দুর্বল স্থান , সেহেতু এই পলিরাশি একসময় ভূ – স্তরে নিম্নমুখী চাপের সৃষ্টি করে । এই চাপের ফলে টেথিস মহীখাতের তলদেশ ক্রমশ বসে যেতে থাকে , এর ফলে প্রবল ভূআন্দোলনের সৃষ্টি হয় । এই ভূআন্দোলনের ফলে গন্ডোয়ানাল্যান্ডের তলদেশের ভারতীয় পাত এবং আঙ্গারাল্যান্ডের তলদেশের এশিয়া পাত গতিশীল হয়ে পড়ে । ভারতীয় পাতের গতিবেগ অপেক্ষাকৃত বেশি হওয়ায় তা এশিয়া পাতের দক্ষিণ দিকে প্রবল আঘাত করে , যার ফলে মালভূমি দুটি পরস্পরের দিকে ধীরে ধীরে অগ্রসর হয় । সংঘটিত পার্শ্বচাপে টেথিস সমুদ্রের সঞ্চিত পলিতে ভাঁজ পড়তে থাকে । পরবর্তীকালে , এইসব ভাঁজগুলি দৃঢ় সংঘবদ্ধ ও উঁচু হয়ে বর্তমান হিমালয়ের রূপ পরিগ্রহ করেছে । হিমালয়ের শিলাস্তরে যে – সমস্ত জলজ জীবাশ্ম পাওয়া গেছে তাদের বৈজ্ঞানিক বিশ্লেষণের মাধ্যমেই এই সিদ্ধান্তে উপনীত হওয়া সম্ভব হয়েছে । 

( ii ) পাতগাঠনিক বা প্লেট টেকটনিক তত্ত্ব ( Plate Tectonic Theory ) : পর্বতের গঠন সম্পর্কিত সর্বাধুনিক তত্ত্ব হল এই পাতগাঠনিক তত্ত্ব । উইলসন , মর্গান , পিচো প্রভৃতি ও ব্যক্তিগণ হলেন এই ধারণার প্রবক্তা । এই তত্ত্ব অনুসারে বলা হয় স যে , ভূত্বক — সাতটি বড়ো , কুড়িটি মাঝারি ও অসংখ্য ছোটো ছোটো হ পাত দ্বারা গঠিত । এই পাতগুলি তরল অ্যাথেনেস্ফিয়ারের ওপর ম গতিশীল অবস্থায় ভাসছে । এই তত্ত্বে বলা হয় যে , বর্তমানে যেখানে হিমালয় পর্বত অবস্থিত করছে সেই স্থানটি ভারতের উপদ্বীপীয় ও ইউরেশিয়া নামক দুটি মহাদেশীয় পাতের সংযোগস্থল । পরস্পরের দিকে অগ্রসরগামী এই পাত দুটির মধ্যে ভারতীয় পাত বেশি গতিশীল ও ভারী হওয়ায় , ধীরগামী ও হালকা ইউরোপীয় পাতের সঙ্গে সংঘর্ষে লিপ্ত হয় এবং ভারতীয় পাতটি ভূগর্ভে প্রবেশ করে । এর ফলে এই দুই পাতের মধ্যবর্তী স্থানে অবস্থিত পলিসঞ্ঝিত টেথিস মহীখাতের পলিরাশিতে প্রবল চাপ পড়ে । ফলে ভাঁজের সৃষ্টি হয়ে হিমালয় পর্বতের উত্থান হয় । 

  আজ থেকে প্রায় ১২ কোটি বছর আগে টার্সিয়ারি যুগে হিমালয় পর্বতের উত্থান পর্ব শুরু হলেও পর পর তিনটি ভূআন্দোলনের মাধ্যমে হিমালয়ের উত্থান পর্ব সম্পূর্ণ হয় এবং বহুযুগ ধরে তা চলে । প্রথম ভূআন্দোলনের ( ১২ থেকে ৭ কোটি বছর আগে ) ফলে টেথিস হিমাদ্রি হিমালয় , দ্বিতীয় ভূ – আন্দোলনের ( ২.৫ থেকে ৩ কোটি বছর আগে ) ফলে হিমাচল বা মধ্য হিমালয় এবং তৃতীয় বা সর্বশেষ ভূআন্দোলনের ফলে ( যা আজ থেকে ২০ লক্ষ বছর আগে ) বহিঃহিমালয় বা শিবালিক পর্বতমালার সৃষ্টি হয় । তবে বলা হয় যে , হিমালয়ের গঠন প্রক্রিয়া এখনও সমাপ্ত হয়নি । যেহেতু , ভারতীয় পাতটি এখনও প্রতিবছর প্রায় ৫.৪ সেমি করে উত্তরদিকে এগিয়ে চলছে , সেহেতু , হিমালয়ের পাতগাঠনিক প্রক্রিয়া সক্রিয় থাকায় হিমালয়ের উত্থান এখনও ঘটে চলেছে ।

6. ভারতের ভূ – প্রাকৃতিক বিভাগগুলির শ্রেণিবিভাগ করো এবং চিত্রের মাধ্যমে দেখাও । যে – কোনো একটি ভাগের সংক্ষিপ্ত বর্ণনা দাও ।

Answer : ভূপ্রকৃতিগত বৈচিত্র্য অনুসারে ভারতকে পাঁচটি ভাগে ভাগ করা যায় । যথা : ( i ) উত্তরের পার্বত্য অঞ্চল ; ( ii ) উত্তর ভারতের সমভূমি অঞ্চল ; ( iii ) উপদ্বীপীয় মালভূমি অঞ্চল ; ( iv ) উপকূলের সমভূমি অঞ্চল এবং ( v ) দ্বীপ অঞ্চল । প্রশ্ন G প্রস্থ বরাবর হিমালয় পর্বতের ভূপ্রকৃতির বর্ণনা দাও । উত্তর : ভূপ্রকৃতিগত পার্থক্য অনুসারে প্রস্থ বরাবর হিমালয় পর্বতকে উত্তর থেকে দক্ষিণে চারটি শ্রেণিতে ভাগ করা যায় , যথা : 

( ১ ) টেথিস হিমালয় , ( ২ ) হিমাদ্রি হিমালয় , ( ৩ ) হিমাচল হিমালয় এবং ( ৪ ) শিবালিক হিমালয় । 

( ১ ) টেথিস হিমালয় : ১২ কোটি বছর আগে হিমালয়ে প্রথমবার ভূআলোড়নের সময় টেথিস হিমালয়ের উত্থান শুরু হয় যা প্রায় ৭ কোটি বছর আগে পর্যন্ত চলতে থাকে । হিমালয়ের চারটি পর্বতশ্রেণির মধ্যে সবচেয়ে উত্তরে টেথিস হিমালয়ের অবস্থান । টেথিস হিমালয়ের অধিকাংশ স্থানই তিব্বতে অবস্থিত , তাই এই অংশের নাম রাখা হয়েছে টেথিস হিমালয় বা তিব্বত হিমালয় । এ ছাড়া , জম্মু কাশ্মীরের উত্তর অংশ ও হিমাচল প্রদেশের সামান্য অংশ টেথিস হিমালয়ের অন্তর্গত । টেথিস হিমালয়ের গড় উচ্চতা হল ৩০০০ মিটার , তবে কোথাও কোথাও এর উচ্চতা ৪৫০০-৫০০০ মি .। ভারতে টেথিস হিমালয়ের দৈর্ঘ্য প্রায় ১০০০ কিমি এবং প্রস্থ ৫০ কিমি থেকে ২২৫ কিমি । টেথিস অংশের উল্লেখযোগ্য পর্বতশ্রেণিগুলি হল — জাস্কর , লাডাক , কারাকোরাম , কৈলাস ইত্যাদি । কারাকোরাম পর্বতশ্রেণির গডউইন অস্টিন বা K2 ( ৮৬১১ মি . ) হল ভারতের উচ্চতম এবং বিশ্বের দ্বিতীয় উচ্চতম পর্বতশৃঙ্গ । এ ছাড়া অন্যান্য উল্লেখযোগ্য পর্বতশৃঙ্গগুলি হল – গ্যাসেরব্রুম I গাসেরৱুম II , ব্রডপিক । এখানকার উল্লেখযোগ্য গিরিপথগুলি হল— কারাকোরাম , বুন্দেলপীর , জোজিলা ইত্যাদি । 

( ২ ) হিমাদ্রি হিমালয় : আজ থেকে প্রায় ১২ কোটি বছর থেকে ৭ কোটি বছর আগে টেথিস হিমালয়ের উত্থানের সাথে সাথেই হিমাদ্রি হিমালয়ের সৃষ্টি হয় । হিমাচল হিমালয়ের উত্তরে এবং টেথিস হিমালয়ের দক্ষিণে হিমালয় পার্বত্য অঞ্চলের সবচেয়ে উঁচু এই পর্বতশ্রেণিটি অবস্থিত । এই পর্বতশ্রেণি পশ্চিমে নাঙ্গা পর্বত থেকে পূর্বে নামচাবারওয়া শৃঙ্খ পর্যন্ত বিস্তৃত । হিমাদ্রি হিমালয়ের গড় উচ্চতা ৬২০০ মি .। হিমালয়ের উচ্চতম শৃঙ্গগুলি হিমাদ্রিতেই অবস্থিত , যথা পৃথিবীর সর্বোচ্চ শৃঙ্গ মাডন্ট এভারেস্ট ( ৮৮৫০ মি . ) , তৃতীয় উচ্চতম শৃঙ্গ কাঞ্চনজঙ্ঘা ( ৮৫৯৮ মি . ) , মাকালু , ধবলগিরি , অন্নপূর্ণা , নন্দাদেবী , কেদারনাথ , কামেট , নাঙ্গা পর্বত , বদ্রীনাথ , ত্রিশূল ইত্যাদি । হিমাদ্রি হিমালয় সারাবছর তুষারাবৃত থাকে বলে এর অপর নাম হল হিমগিরি । হিমাদ্রি হিমালয়ের উল্লেখযোগ্য গিরিপথগুলি হল — বুর্জিলা , জোজিলা , বারা – লাচা – লা , সিপকিলা , নিতি পাস , লিপু লেক , নাথুলা , জেলেপলা ইত্যাদি । হিমাদ্রি হিমালয়ের প্রধান হিমবাহগুলি হল— গঙ্গোত্রী , যমুনোত্রী , মিলাম ইত্যাদি । পর্বতশ্রেণিটি উত্তর – পূর্বে নামচাবারওয়ার কাছে ও উত্তর পশ্চিমে নাঙ্গা পর্বতের কাছে চুলের কাঁটার ন্যায় বেঁকে গেছে । 

( ৩ ) হিমাচল হিমালয় প্রায় ২.৫ থেকে ৩ কোটি বছর আগে হিমালয় অঞ্চলে দ্বিতীয়বার প্রবল ভূআলোড়নের সময় হিমাচল হিমালয়ের সৃষ্টি হয় । শিবালিকের উত্তরে এবং হিমাদ্রির দক্ষিণে ৬০-৯০ কিমি চওড়া পর্বতশ্রেণিটি হিমাচল হিমালয় বা মধ্য হিমালয় নামে পরিচিত । হিমাচল হিমালয়ের গড় উচ্চতা ৩৫০০-৪৫০০ মিটার , এদের মধ্যে পিরপাঞ্জাল উচ্চতম । হিমাচল হিমালয়ের উল্লেখযোগ্য পর্বতশ্রেণিগুলি হল — পিরপাঞ্জাল , ধওলাধর , নাগটিব্বা , মুসৌরি প্রভৃতি । এটি প্রাচীন রূপান্তরিত শিলায় গঠিত এবং এটি ক্রমশ উত্তরে ঢালু হয়ে হিমাদ্রিতে মিশেছে । পিরপানজাল পার্বত্য অংশে বেশ কয়েকটি উপত্যকা রয়েছে , যেমন— জম্মু ও কাশ্মীর রাজ্যের অন্তর্গত পিরপাঞ্জাল ও উচ্চ হিমালয়ের মধ্যবর্তী কাশ্মীর উপত্যকা ( ১৩৫ কিমি দীর্ঘ ও ৪০ কিমি . চওড়া ) পিরপাঞ্জাল ও ধওলাধরের মধ্যে অবস্থিত হিমাচল প্রদেশের কুলু উপত্যকা , শিবালিক ও ধওলাধরের মধ্যে কাংড়া উপত্যকা ; এ ছাড়াও রয়েছে শতদ্রু উপত্যকা , লাহুল ও স্পিটি উপত্যকা ইত্যাদি । হিমাচল হিমালয়ের উল্লেখযোগ্য গিরিপথগুলি হল— বানিহাল , পিরপাঞ্জাল , বিদিল , সোলারগর ইত্যাদি । পিরপাঞ্চাল পর্বতশ্রেণির মধ্য দিয়ে কৃষাণগঙ্গা , ঝিলাম ( বিতস্তা ) ও চন্দ্রভাগা নদী প্রবাহিত হয়েছে । 

( ৪ ) শিবালিক হিমালয় : আজ থেকে প্রায় ২০ লক্ষ থেকে ২ কোটি বছর আগে হিমালয়ে প্রবল ভূআলোড়নের সময়ে শিবালিক হিমালয়ের সৃষ্টি হয় । এটি হিমালয়ের সর্বদক্ষিণের পর্বতশ্রেণি যা হিমাচল হিমালয়ের সমান্তরালভাবে প্রায় ২৫০০ কিমি . অঞ্চলে অবিচ্ছিন্নভাবে বিস্তৃত রয়েছে । এর উচ্চতা প্রায় ৬০০-১৫০০ মিটার এবং প্রস্থ ১০-১৫ কিমি । শিবালিক – এর উত্তর অংশ ক্রমশ ঢালু হয়ে বিভিন্ন উপত্যকায় পরিণত হয়েছে । শিবালিকের দক্ষিণ ঢাল ও উত্তর ঢাল গড়ানো । হিমাচল হিমালয় ও শিবালিক পর্বতশ্রেণির মধ্যবর্তী নীচু উপত্যকা উত্তরাঞ্চল রাজ্য দুন নামে পরিচিত । যেমন — দেরাদুন , কোটা , চৌখাম্বা , পাটলি প্রভৃতি । দেরাদুন হল ভারতের বৃহত্তম দুন উপত্যকা । 

জেনে রাখো : হিমালয়ের সিনটেক্সিয়াল বাঁক ( The Syntaxial Bends of the Himalayas ) : হিমালয় পর্বত পূর্ব ও পশ্চিমে যে হঠাৎই শেষ হয়ে গিয়ে দক্ষিণ অভিমুখে ছুঁচোলো বাঁক করেছে , একেই বলা হয় হিমালয়ের সিনটেক্সিয়াল বাঁক । পশ্চিমে সিনটেক্সিয়াল বাঁকটি সিন্ধু নদে এক গভীর গিরিখাত সৃষ্টি করেছে ও পূর্ব সিনটেক্সিয়াল বাঁকটি পূর্ব থেকে দক্ষিণে চুলের কাঁটার মতো বাঁক সৃষ্টি করেছে ।

7. দৈর্ঘ্য বরাবর হিমালয় পর্বতের ভূপ্রকৃতি ব্যাখ্যা করো । 

Answer : দৈর্ঘ্য বরাবর হিমালয় পর্বতের ভূপ্রকৃতি : পশ্চিম থেকে পূর্ব দিকে , আঞ্চলিক বৈশিষ্ট্য অনুসারে পূর্ব হিমালয় পার্বত্য অঞ্চলকে প্রধানত ৩ ভাগে ভাগ করা যায় । যথা ( i ) পশ্চিম হিমালয় , ( ii ) মধ্য হিমালয় ( নেপালে অবস্থিত ) এবং ( iii ) পূর্ব হিমালয় । 

( i ) পশ্চিম হিমালয় : এই হিমালয় পশ্চিমে নাঙ্গা পর্বত থেকে , পূর্বে নেপালের পশ্চিম সীমানায় অবস্থিত কালি নদী পর্যন্ত বিস্তৃত । জম্মু – কাশ্মীর , পাঞ্জাব , হিমাচল প্রদেশ ও উত্তরাঞ্চল এই হিমালয় – এর অন্তর্গত । এই পশ্চিম হিমালয়কে প্রধানত ৩ ভাগে ভাগ করা যায় । যথা : ( ক ) কাশ্মীর হিমালয় ; ( খ ) পাঞ্জাব ও হিমাচল হিমালয় এবং ( গ ) কুমায়ুন হিমালয় । 

( ক ) কাশ্মীর হিমালয় : জম্মু কাশ্মীরের প্রায় ৩.৫ লক্ষ বর্গ কিমি স্থান জুড়ে অবস্থান করছে এই কাশ্মীর হিমালয় । এখানে দক্ষিণ থেকে উত্তরে পরপর পাঁচটি পর্বতশ্রেণি দেখা যায় । পর্যায়ক্রমে দক্ষিণ থেকে উত্তরে রয়েছে – ( i ) শিবালিকের জম্মু ও পুঞ্জ পাহাড় , ( ii ) পিরপাঞ্জাল , ( iii ) জাস্কর পর্বত , ( iv ) লাডাক ও ( v ) কারাকোরাম পর্বতশ্রেণি । উচ্চ হিমালয় ও পিরপাঞ্জালের মাঝে রয়েছে কাশ্মীর উপত্যকা । এই অংশে অবস্থিত লাডাক মালভূমি , ভারতের উচ্চতম মালভূমি । • এখানকার হিমবাহ : কারাকোরাম পর্বতের সিয়াচেন ( ভারতের বৃহত্তম হিমবাহ , ৭৫ কিমি দৈর্ঘ্য ) , ফেডচেঙ্কো ( ৭৪ কিমি ) , হিসপার , বিয়াফো , বলটারো ইত্যাদি । হ্রদ : ডাল ও উলার হ্রদ । গিরিপথ : বানিহাল বা জওহর , পিরপাঞ্জাল । 

( খ ) পাঞ্জাব ও হিমাচল হিমালয় : পাঞ্জাব ও হিমাচল প্রদেশে প্রায় ৬৪ হাজার বর্গকিমি স্থান জুড়ে এই হিমালয় অবস্থিত । এই হিমালয়ের গড় উচ্চতা ৩৫০০-৪৫০০ মিটার ও এটি ৬০-৮০ কিমি চওড়া । ধওলাধর , নাগটিব্বা , মুসৌরি এখানকার প্রধান শৈলশিরা । 

( গ ) কুমায়ূন হিমালয় : উত্তরাঞ্চল – এর প্রায় ৪৬০০০ বর্গ কিমি স্থান জুড়ে অবস্থান করছে কুমায়ুন হিমালয় । কুমায়ুনের দক্ষিণ অংশের গড় উচ্চতা ৬০০ মি . কিন্তু উত্তর অংশের গড় উচ্চতা হল ৬০০০ মিটারের বেশি । হায়িকা , এখানকার প্রধান পর্বতশ্রেণি শিবালিক , হিমাচল , হিমাদ্রি । শিবালিক ও হিমাচলের মধ্যে দুন উপত্যকা অবস্থিত । • এখানে যেসকল হিমবাহ সৃষ্ট হ্রদ দেখা যায় তা ‘ তাল ‘ নামে । পরিচিত । যেমন — নৈনিতাল , ভীমতাল , সাততাল , পুনাতাল । এখানকার উল্লেখযোগ্য পর্বতশৃঙ্গ হল — নন্দাদেবী , চৌখাম্বা , কামেট , ত্রিশূল । এখানকার হিমবাহ দুটি হল — গঙ্গোত্রী ও যমুনোত্রী • এখানকার কুলু ও কাংড়া উপত্যকা বিখ্যাত । 

( ii ) পূর্ব হিমালয় : পশ্চিমে সিঙ্গালিলা পর্বতশ্রেণি থেকে পূর্ব নামচাবারওয়া পর্যন্ত বিস্তৃত হিমালয়ের এই অংশকে মোটামুটি তিন ভাগে ভাগ করা যায় । যথা : ( ক ) সিকিম ও দার্জিলিং হিমালয় ( খ ) ভুটান হিমালয় এবং ( গ ) অরুণাচল হিমালয় । 

( ক ) সিকিম ও দার্জিলিং হিমালয় : এই পর্বতমালা পশ্চিমবঙ্গ ও সিকিম রাজ্যে অবস্থিত । এখানকার উল্লেখযোগ্য পর্বতশ্রেণি হল — কাঞ্চনজঙ্ঘা ( ৮৫১৮ | মি . ভারতের দ্বিতীয় উচ্চতম ও পৃথিবীর তৃতীয় উচ্চতম ) , সান্দাকফু ( ৩৬৩০ মি . পশ্চিমবঙ্গের সর্বোচ্চ শৃঙ্গ ) , ফালুট , সবরগ্রাম ইত্যাদি । • এখানকার উল্লেখযোগ্য গিরিপথ নাথুলা , বুমলা , জেলেপলা ইত্যাদি । প্রধান হিমবাহ জেমু , তালুং , পৌহুনরী । 

( খ ) ভুটান হিমালয় : এটি ভুটানে অবস্থিত । 

( গ ) অরুণাচল হিমালয় : এটি অসম ও অরুণাচলে অবস্থিত । এখানের পর্বতশ্রেণি হল হিমাদ্রি , হিমাচল , শিবালিক এবং কাংটো হল এখানের সর্বোচ্চ শৃঙ্গ । বুমলা এখানকার উল্লেখযোগ্য গিরিপথ । 

8. পশ্চিম হিমালয়ের ভূপ্রকৃতির সংক্ষিপ্ত বর্ণনা দাও ।

Answer : পশ্চিম হিমালয় পশ্চিমে নাঙ্গা পর্বত থেকে পূর্বে নেপাল সীমান্তে অবস্থিত কালি নদী পর্যন্ত বিস্তৃত । আঞ্চলিক বৈশিষ্ট্য অনুসারে পশ্চিম হিমালয়কে মোটামুটি তিনটি ভাগে ভাগ করা যায় , যথা : ( ১ ) কাশ্মীর হিমালয় , ( ২ ) হিমাচল হিমালয় ও ( ৩ ) কুমায়ুন হিমালয় । 

( ১ ) কাশ্মীর হিমালয় : জম্মু ও কাশ্মীর রাজ্যের প্রায় ৩,৫০,০০০ বর্গকিমি স্থান জুড়ে কাশ্মীর হিমালয় অবস্থিত । পাঞ্জাবের সমভূমি থেকে ক্রমশ উঁচু হয়ে এখানকার শিবালিক পর্বতমালা উত্তরে হিমাচলের উল্লেখযোগ্য পর্বতশ্রেণি পিরপাঞ্জাল – এ মিশেছে । শিবালিকের গড় উচ্চতা প্রায় ৩,০০০ মিটার । এই অঞ্চলের দক্ষিণ থেকে উত্তরে পর পর পাঁচটি পর্বতশ্রেণি পশ্চিম থেকে পূর্ব দিকে বিস্তৃত হয়েছে , এরা হল : ( i ) শিবালিক পর্বতের জম্মু ও পুঞ্জ পাহাড় , ( ii ) পিরপাঞ্জাল , ( iii ) জাস্কার , ( iv ) লাডাক এবং সবশেষে 11 1 ভারতের ভূ ( v ) কারাকোরাম পর্বত । পিরপাঞ্জাল ও উচ্চ হিমালয়ের মধ্যে রয়েছে ভূস্বর্গ কাশ্মীর উপত্যকা । শ্রীনগরের দক্ষিণে প্রায় ১০০ কিলোমিটার বিস্তৃত পিরপাঞ্জাল পর্বতশ্রেণি ( ৩,৫০০-৫০০ মি ) কাশ্মীর উপত্যকাকে ভারতের অন্যান্য অংশ থেকে বিচ্ছিন্ন করেছে । কেবলমাত্র বানিহাল বা জওহর ( উচ্চতা ২,৮৩২ মি . ) , পিরপান্জাল ( ৩,৪৯৪ মি ) ও বুলন্দপির ( ৪ , ২০০ মি . ) প্রভৃতি গিরিপথগুলি দিয়ে নিসর্গ সৌন্দর্যের জন্য পৃথিবীবিখ্যাত কাশ্মীর উপত্যকায় প্রবেশ করা যায় । কাশ্মীর উপত্যকা দৈর্ঘ্যে প্রায় ১৫০ কি.মি. এবং প্রস্থে প্রায় ৫০ কি.মি. বিস্তৃত । ভূ – বিজ্ঞানীদের মতে , প্রাচীন কোনো হ্রদ ভরাট হয়ে এই উপত্যকার সৃষ্টি হয়েছে । ডাল , উলার প্রভৃতি হ্রদগুলি এই প্রাচীন স্মৃতি আজও বহন করছে । 

( ২ ) হিমাচল হিমালয় : হিমাচল বা পাঞ্জাব হিমালয় পাঞ্জাব ও ও হিমাচল প্রদেশের প্রায় ৫৬,০০০ বর্গ কিলোমিটার স্থান জুড়ে অবস্থিত । দক্ষিণ থেকে উত্তরে এই অঞ্চলটির উচ্চতা ৬০০ মিটার থেকে ৬,০০০ মিটার । সর্বদক্ষিণে অবস্থিত শিবালিকের গড় উচ্চতা ৬০০-৭০০ মিটার । শিবালিকের উত্তরে রয়েছে ধওলাধর ও নাগটিব্বা পর্বতশ্রেণি । এর উচ্চতা ৩,৫০০-৪ , ৫০০ মি .। এদের উত্তরে রয়েছে পিরপাঞ্জাল ও জাস্কর পর্বতশ্রেণি । এদের শৃঙ্গগুলি প্রায়ই তুষারাবৃত থাকে । শিবালিক ও ধওলাধরের মধ্যে কাংড়া , নাগটিব্বা ও ধাওলাধরের মধ্যে শতদ্রু , পিরপাঞ্জাল ও ধওলাধরের মধ্যে কুলু , উচ্চ হিমালয় ও জাস্করের মধ্যে স্পিটি এবং পিরপাঞ্জাল ও উচ্চ – হিমালয়ের মধ্যে লাহুল উপত্যকা অবস্থিত । এ – সমস্ত উপত্যকাগুলির প্রাকৃতিক দৃশ্য মনোরম । পিরপাঞ্চাল – এর মধ্যবর্তী | রোটাং গিরিপথ দিয়ে লাহুল উপত্যকায় প্রবেশ করা যায় । 

( ৩ ) কুমায়ূন হিমালয় : প্রায় ৪৬,০০০ বর্গকিমি বিস্তৃত কুমায়ুন হিমালয় পুরোপুরিভাবে নবগঠিত উত্তরাখণ্ড রাজ্যের অন্তর্গত । শিবালিক , হিমাচল ও হিমাদ্রি এই তিনটি পর্বতশ্রেণি এখানে দেখতে পাওয়া যায় । সর্বদক্ষিণে অবস্থিত শিবালিক পর্বতশ্রেণি প্রায় ১,০০০ মিটার উঁচু । শিবালিক পর্বতশ্রেণি উত্তর দিকে ক্রমশ ঢালু হয়ে দুন উপত্যকায় মিশেছে । দুন উপত্যকাগুলি শিবালিক ও হিমালয়ের মধ্যবর্তী অংশে সমান্তরালভাবে বিস্তৃত । ৩৫ কিমি দীর্ঘ ও ২৫ কিমি বিস্তৃত দেরাদুন উপত্যকাটি সর্ববৃহৎ । দুন উপত্যকাগুলির উত্তরে রয়েছে হিমাচল পর্বতশ্রেণি , এর গড় উচ্চতা ১,৬০০ মিটার । এখানকার মুসৌরি পর্বতশ্রেণিতে মুসৌরি শৈলনগরী অবস্থিত । কুমায়ুন হিমালয়ের উচ্চ অংশে অনেকগুলি হ্রদ বা তাল আছে । এদের মধ্যে নৈনিতাল , ভীমতাল , সাততাল , পুনাতাল প্রভৃতি বিখ্যাত । এই অঞ্চলে ‘ তাল ‘ বলতে হ্রদকে বোঝায় । হিমাচল হিমালয়ের উত্তরে হিমাদ্রি হিমালয় অবস্থিত । এর গড় উচ্চতা ৬,০০০ মিটারের বেশি । হিমাদ্রির উঁচু শৃঙ্গগুলির মধ্যে নন্দাদেবী ( ৭,৮১৭ মি . ) , কামেট ( ৭,৭৫৬ মি . ) , চৌখাম্বা ( ৭,১৩৮ মি . ) , ত্রিশূল ( ৭ , ১২০ মি . ) , দুনগিরি ( ৭,০৬৬ মি . ) , কেদারনাথ ( ৬,৯৪০ মি . ) নন্দাকোট ( ৬,৮৬১ মি . ) , গঙ্গোত্রী ( ৬,৬১৪ মি . ) , প্রভৃতি বিখ্যাত । এই শৃঙ্গগুলি প্রায়ই বরফাবৃত থাকে । এখানকার গঙ্গোত্রী ও যমুনেত্রী হিমবাহ থেকে যথাক্রমে গঙ্গা ও যমুনা নদীর উৎপত্তি হয়েছে । 

==============================================================

সঠিক উত্তর নির্বাচন করো (MCQ)

[প্রতিটি প্রশ্নের প্রশ্নমান ১]

১। শিবালিক হিমালয়ের পাদ দেশীয় অঞ্চলে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র শিলাখন্ড সঞ্চিত হয়ে যে সমভূমি গঠিত হয়েছে, তাকে বলে- [পর্ষদ নমুনা, মাধ্যমিক ১৮]
(ক) খাদার (খ) ভাঙ্গর (গ) ভাবর (ঘ) বেট

উত্তর- শিবালিক হিমালয়ের পাদ দেশীয় অঞ্চলে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র শিলাখন্ড সঞ্চিত হয়ে যে সমভূমি গঠিত হয়েছে, তাকে বলে (গ) ভাবর।

২। ভারতের সাতপুরা একটি-
(ক) ক্ষয়জাত পর্বত (খ) স্তূপ পর্বত (গ) ভঙ্গিল পর্বত (ঘ) আগ্নেয় পর্বত

উত্তর- ভারতের সাতপুরা একটি (খ) স্তূপ পর্বত।

৩। আন্দামানের সর্বোচ্চ শৃঙ্গ-
(ক) স্যাডল পিক (খ) ধূপগড় (গ) নিকোবর (ঘ) হ্যারিয়েট

উত্তর- আন্দামানের সর্বোচ্চ শৃঙ্গ (ক) স্যাডল পিক।

৪। গঙ্গা সমভূমির নতুন পলিমাটিযুক্ত অঞ্চলকে উত্তরপ্রদেশ-
(ক) বেট (খ) ভাবর (গ) তরাই (ঘ) খাদার

উত্তর- গঙ্গা সমভূমির নতুন পলিমাটিযুক্ত অঞ্চলকে উত্তরপ্রদেশ (ঘ) খাদার।

৫। ভারতের দক্ষিণতম পর্বত হল
(ক) নীলগিরি (খ) কার্ডামম (গ) আনাইমালাই (ঘ) পালনি

উত্তর- ভারতের দক্ষিণতম পর্বত হল (খ) কার্ডামম।

৬। সাতপুরা পর্বতের সর্বোচ্চ শৃঙ্গের নাম-
(ক) মহাবালেশ্বর (খ) দোদাবেতা (গ) ধূপগড় (ঘ) মহেন্দ্রগিরি

উত্তর- সাতপুরা পর্বতের সর্বোচ্চ শৃঙ্গের নাম (গ) ধূপগড়।

৭। ভারতের সর্বাপেক্ষা ভগ্ন উপকূলটি
(ক) মালাবার উপকূল (খ) ওড়িশা উপকূল (গ) কোঙ্কণ উপকূল (ঘ) করমন্ডল উপকূল

উত্তর- ভারতের সর্বাপেক্ষা ভগ্ন উপকূলটি (গ) কোঙ্কণ উপকূল।

৮। ভারতের উচ্চতম মালভূমিটি হল-
(ক) মেঘালয় (খ) পামির (গ) তিব্বত (ঘ) লাদাখ

উত্তর- ভারতের উচ্চতম মালভূমিটি হল (ঘ) লাদাখ।

৯। রাজস্থানের প্রস্তরময় মরুভূমির নাম-
(ক) হামাদা (খ) ধান্দ (গ) বাগার (ঘ) রোহি

উত্তর- রাজস্থানের প্রস্তরময় মরুভূমির নাম (ক) হামাদা।

১০। ভারতের প্রাচীনতম ভঙ্গিল পর্বতের নাম-
(ক) বিন্ধ্য (খ) নীলগিরি (গ) আরাবল্লি (ঘ) হিমালয়

উত্তর- ভারতের প্রাচীনতম ভঙ্গিল পর্বতের নাম (গ) আরাবল্লি।


আরো পড়ো → সংঘবদ্ধতার গোড়ার কথা – প্রশ্ন উত্তর

অতিসংক্ষিপ্ত প্রশ্ন (VSAQ)

[প্রতিটি প্রশ্নের প্রশ্নমান ১]

১। ভারতে অবস্থিত হিমালয়ের সর্বোচ্চ শৃঙ্গের নাম কি? [পর্ষদ নমুনা]
উত্তর- ভারতে অবস্থিত হিমালয়ের সর্বোচ্চ শৃঙ্গের নাম কাঞ্চনজঙ্ঘা।

২। ভারতের সর্বোচ্চ গিরিপথ কোনটি? [মাধ্যমিক ১৭]
উত্তর- ভারতের সর্বোচ্চ গিরিপথ গিয়ং লা।

৩। পশ্চিম ঘাট পর্বতের সর্বোচ্চ শৃঙ্গের নাম কি? [মাধ্যমিক ১৭, ১৯]
উত্তর- পশ্চিম ঘাট পর্বতের সর্বোচ্চ শৃঙ্গের নাম আনাইমুদি।

৪। পশ্চিমঘাট পর্বতমালার দক্ষিণতম গিরিপথটির নাম কি? [মাধ্যমিক ২০]
উত্তর- পশ্চিমঘাট পর্বতমালার দক্ষিণতম গিরিপথটির নাম পালঘাট।

৫। ভারতের উচ্চতম পর্বত শৃঙ্গের নাম কি?
উত্তর- ভারতের উচ্চতম পর্বত শৃঙ্গের নাম k2 বা গডউইন অস্টিন।

৬। মেঘালয়ের উচ্চতম অংশটির নাম কি?
উত্তর- মেঘালয়ের উচ্চতম অংশটির নাম শিলং।

৭। মালাবার উপকূলে হ্রদগুলি কি নামে পরিচিত?
উত্তর- মালাবার উপকূলে হ্রদগুলি কয়াল নামে পরিচিত।

৮। যমুনোত্রী হিমবাহটি কোন হিমালয়ে অবস্থিত?
উত্তর- যমুনোত্রী হিমবাহটি গাড়োয়াল হিমালয়ে অবস্থিত।

৯। আরাবল্লি পর্বতের সর্বোচ্চ শৃঙ্গের নাম কি?
উত্তর- আরাবল্লি পর্বতের সর্বোচ্চ শৃঙ্গের নাম গুরুশিখর।

১০। রাজস্থানের মরুভূমির পশ্চিমাংশ কি নামে পরিচিত?
উত্তর- রাজস্থানের মরুভূমির পশ্চিমাংশ মরুস্থহলী নামে পরিচিত।

 

সংক্ষিপ্ত উত্তর ভিত্তিক প্রশ্ন (SAQ)

[প্রতিটি প্রশ্নের প্রশ্নমান ২]

১। দুন উপত্যকা কাকে বলে? [পর্ষদ নমুনা]
উত্তর- কুমায়ুন হিমালয় অর্থাৎ হিমাচল হিমালয় ও শিবালিক হিমালয়ের মধ্যবর্তী অংশে যেসব সমপ্রায় মনোরম উপত্যাকা গড়ে উঠেছে তাদের দুন বলা হয়। যেমন- উত্তরাখণ্ডের দেরাদুন।

২। মরুস্থলী কথার অর্থ কি? এই নামকরণের কারণ কি? [মাধ্যমিক ১৪]
উত্তর- মরুস্থলী কথার অর্থ মৃতের দেশ। অর্থাৎ যেখানে প্রাণের কোনো অস্ত্বিত্ব নেই।ভারতের মরু শহর রাজস্থানে জনশুন্য উদ্ভিদহীন এইরুপ অঞ্চল দেখতে পাওয়া যায় বলে এইরুপ নামকরণ হয়েছে।

৩। কয়াল কি? [মাধ্যমিক ১৪]
উত্তর- মালাবার উপকূলে সমুদ্রের সাথে আংশিক যুক্ত যে সব ব্যাকওয়াটার্স বা উপহ্রদ দেখা যায় তাদের আঞ্চলিক ভাষায় কয়াল বলে। যেমন- ভেম্বনাবাদ, অষ্ঠমুদি।

৪। তাল কি? উদাহরণ দাও। [মাধ্যমিক ১৬]
উত্তর- হিমবাহের ক্ষয়কার্যের প্রভাবে কুমায়ুন হিমালয়ে অসংখ্য অবনমিত অঞ্চলে জল জমে যে হ্রদ সৃষ্টি হয়েছে, তাকে তাল বলে। যেমন- ভীম তাল, সাততাল প্রভৃতি।

৫। কর্ণাটক মালভূমির দুটি ভুপ্রাকৃতিক অংশের নাম লেখো। [মাধ্যমিক ১৬, ১৮]
উত্তর- কর্ণাটক মালভূমির দুটি ভুপ্রাকৃতিক অংশের নাম ক) ময়দান, খ) মালনাদ।

৬। মালনাদ কি?
অথবা, মালনাদ অঞ্চল কোথায় অবস্থিত? [মাধ্যমিক ১৯]

উত্তর- পশ্চিমভাগে পশ্চিমঘাট পর্বতের পাদদেশে উত্তর থেকে দক্ষিনে বিস্তারিত 320 কিলোমিটার লম্বা, পূর্বদিকে 35 কিলোমিটার চওড়া উঁচু-নিচু ঢেউখেলানো পাহাড়ময় ভূমিভাগটি মালনাদ নামে পরিচিত।

৭। কারেওয়া কি?
উত্তর- কাশ্মীর উপত্যাকায় হিমবাহের ক্ষয়জাত পদার্থ সঞ্চিত হয়ে যে ধাপযুক্ত ভূমিরূপ সৃষ্টি হয়েছে তাকে কারেওয়া বলে।

৮। তরাই বলতে কি বোঝো?
উত্তর- তরাই শব্দের অর্থ সিক্ত স্যাতস্যাতে ভূমি। শিবালিক হিমালয়ের পাদদেশে গঙ্গা ব্রমহপুত্র বাহিত নুড়ি, পাথরে গড়ে ওঠা সমভূমি অঞ্চলে বৃষ্টিপাতের আধিক্যের দরুণ ঐ অঞ্চল সর্বদাই সিক্ত থাকে, তাই একে তরাই বলে।

৯। হিমালয় পর্বতের দুটি গিরিপথের নাম লেখ।
উত্তর- হিমালয় পর্বতে অবস্থিত দুটি গিরিপথ রোটাং পাস, নাথুলা।

১০। ভাবর কি?
উত্তর- উত্তরের সমভূমি অঞ্চলে বিভিন্ন নদীবাহিত নুড়ি, পাথর প্রভৃতির সংমিশ্রণে যে অঞ্চল গড়ে উঠেছে তাকে ভাবর বলে। এই ভূমিরূপ সচ্ছিদ্র হবার দরুণ এই অঞ্চলে বহু নদী প্রবেশ করে ভূমিভাগের নীচে হারিয়ে যায়।

বিশ্লেষণধর্মী প্রশ্ন

[প্রতিটি প্রশ্নের প্রশ্নমান ৩]

১। পূর্ব হিমালয় ও পশ্চিম হিমালয়ের পার্থক্য লেখো।

২। ভাঙ্গর ও খাদারের মধ্যে পার্থক্য লেখো।

৩। মালনাদ ও ময়দানের পার্থক্য লেখো।

৪। ডেকান ট্র্যাপ বলতে কী বোঝ? অথবা, দাক্ষিণাত্যের লাভা মালভূমি সম্পর্কে যা জানো সংক্ষেপে লেখো।
উত্তর- এই মালভূমি বাসল্টজাতীয় লাভা দ্বারা গঠিত হয়েছে। এই মালভূমির পশ্চিম অংশে লাভা স্তরের ক্রমাগত সঞ্চয়ের ফলে সিঁড়ির ধাপের মত ভূমিরূপ সৃষ্টি করেছে। এই কারণে এই মালভূমিকে ডেকানট্রাপ বলা হয়। এই মালভূমিতে অযোধ্যা পাহাড় অবস্থিত।প্রায় ৬ থেকে ১৩ কোটি বছর আগে ভূ অভ্যন্তরস্থ ম্যাগমা ভূ পৃষ্টে বেড়িয়ে এসে সর্বত্র ছড়িয়ে পড়ে, কালক্রমে সেই তরল লাভা শীতল হয়ে জমে ব্যাসল্ট শিলায় পরিণত হয়। এবং এই দাক্ষিণাত্য মালভূমি সৃষ্টি করে।

এই মালভূমির কিছু বৈশিষ্ট্য রয়েছে সেগুলি হল-
ক) ব্যাসাল্ট শিলা দ্বারা নির্মিত হওয়ায় মৃত্তিকা কালো বর্ণের হয়।
খ) সমগ্র অঞ্চলটি পশ্চিম থেকে পূর্বে সিঁড়ির মতন ধাপে ধাপে নেমে গেছে।
গ) বিভিন্ন ক্ষয়কারী শক্তির ক্ষয়ের ফলে এই অঞ্চলের মালভূমি ব্যবচ্ছিন্ন প্রকৃতির।

৫। পশ্চিম উপকূলের সমভূমি ও পূর্ব উপকূলের সমভূমির মধ্যে পার্থক্য লেখো। [মাধ্যমিক ০৩, ০৭, ১৭]
অথবা, ভারতের পূর্ব ও পশ্চিম উপকূলীয় সমভূমির মধ্যে পার্থক্য নিরূপণ করো। [মডেল অ্যাকটিভিটি]

 

ব্যাখ্যামূলক প্রশ্ন (LA)

[প্রতিটি প্রশ্নের প্রশ্নমান ৫]

১। দৈর্ঘ্য বরাবর হিমালয়ের শ্রেণিবিভাগ করো এবং পশ্চিম হিমালয় ও পূর্ব হিমালয়ের ভূপ্রকৃতির সংক্ষিপ্ত বিবরণ দাও।
উত্তর- দৈর্ঘ্য বরাবর হিমালয় পর্বতমালাকে পশ্চিম থেকে পূর্বে তিনটি শ্রেণীতে ভাগ করা যায়।
ক.পশ্চিম হিমালয়,
খ. মধ্য হিমালয়,
গ. পূর্ব হিমালয়।

ক. পশ্চিম হিমালয়
পশ্চিম হিমালয় বলতে হিমালয় পর্বতের একেবারে পশ্চিমের বা বাম দিকের অংশকে বোঝায়। এই অংশটি পশ্চিমে সিন্ধু নদীর উপত্যকা থেকে পূর্বে কালি নদীর উপত্যকা পর্যন্ত বিস্তৃত হয়েছে। এই পর্বতমালা প্রায় 880 কিলোমিটার বিস্তৃত। এই হিমালয়কে তিনটি অংশে ভাগ করা যায়।

A. কাশ্মীর হিমালয়
জম্মু ও কাশ্মীর রাজ্য জুড়ে বিস্তৃত হিমালয়কে কাশ্মীর হিমালয় বলা হয়।কাশ্মীর হিমালয়ের অন্তর্গত পর্বতশ্রেণীগুলি হল কারাকোরাম, লাদাখ, জাস্কার, পিরপাঞ্জাল এবং সর্ব দক্ষিণে জম্মু ও পুঞ্চ পর্বতশ্রেণী। এই অঞ্চলের গড় উচ্চতা 3000 মিটার।এই অঞ্চলের সর্বোচ্চ শৃঙ্গটি হল K2 বা গডউইন অস্টিন যা কারাকোরাম পর্বতের সর্বোচ্চ শৃঙ্গ।পিরপাঞ্জাল ও উচ্চ হিমালয়ের মাঝে অবস্থিত কাশ্মীর উপত্যকা এই অঞ্চলে অবস্থিত।

B. পাঞ্জাব ও হিমাচল হিমালয়
পাঞ্জাব ও হিমাচল প্রদেশের হিমালয়ের যে অংশটি অবস্থিত তাকে পাঞ্জাব ও হিমাচল হিমালয় বলা হয়।এই অঞ্চলের প্রধান প্রধান পর্বতগুলি হল ধউলিধর, মুসৌরি, নাগটিব্বা।কুলু, কাংড়া, লাহুল, স্পিতি উপত্যকাগুলি এই অঞ্চলে অবস্থিত।

C. কুমায়ুন হিমালয়
পশ্চিমে শতদ্রু নদী এবং পূর্বে কালী নদীর মাঝে উত্তরাখণ্ডে অবস্থিত হিমালয়কে কুমায়ুন হিমালয় বলা হয়।নাগটিব্বা ও মুসৌরি হলো এখানকার প্রধান পর্বত। নন্দাদেবী (7,816 মিটার), কামেট (7,756 মিটার) ও ত্রিশূল হলো এই অঞ্চলের প্রধান পর্বত শৃঙ্গ।এখানকার উপত্যকাগুলি ‘দুন’ নামে পরিচিত। যেমন- দেরাদুন।এই অঞ্চলের হিমবাহ সৃষ্ট হ্রদ গুলি ‘তাল’ নামে পরিচিত। যেমন- নৈনিতাল, সাততাল, ভিমতাল।

খ. মধ্য হিমালয়
হিমালয়ের এই অংশটি নেপাল রাষ্ট্রের অন্তর্গত। এই অংশের প্রধান পর্বত শৃঙ্গ হল ধবলগিরি, অন্নপূর্ণা, গৌরীশংকর, মাউন্ট এভারেস্ট (8,848 মিটার) এবং মাকালু।

গ. পূর্ব হিমালয়
পূর্ব হিমালয় পশ্চিমবঙ্গের দার্জিলিং জেলা, সিকিম, অসম, অরুণাচল প্রদেশ বিস্তৃত হয়েছে। পশ্চিমে তিস্তা নদী উপত্যকা থেকে পূর্বে ব্রহ্মপুত্র নদীর উপত্যকা পর্যন্ত প্রায় 700 কিলোমিটার এই হিমালয় প্রসারিত হয়েছে।সিঙ্গালিলা শৈলশিরা দার্জিলিং ও নেপাল সীমান্তে অবস্থিত। আসাম এবং অরুণাচল প্রদেশের হিমালয়কে অরুণাচল হিমালয় নামেও অভিহিত করা হয়।নামচাবারোয়া (7,756 মিটার) এই অঞ্চলের সর্বোচ্চ শৃঙ্গ। এছাড়া কুলাকাংড়ি (7,838 মিটার) ও চামলহরী (7,326 মিটার) এখানকার উল্লেখযোগ্য শৃঙ্গগুলির মধ্যে অন্যতম।

২। ভারতের উপকূল সমভূমিকে কী কী ভাগে ভাগ করা যায়? যে – কোনো একটি বিভাগের ভূপ্রকৃতির সংক্ষিপ্ত পরিচয় দাও।

উত্তর- ভারতের উপকূলীয় সমভূমিকে দুটি ভাগে ভাগ করা যায়। যথা- 1. ভারতের পশ্চিম উপকূলীয় সমভূমি 2. ভারতের পূর্ব উপকূলীয় সমভূমি

গুজরাটের কচ্ছের রান থেকে দক্ষিণে কন্যাকুমারিকা অন্তরীপ পর্যন্ত পশ্চিম উপকূলীয় সমভূমি এবং পূর্ব উপকূলীয় সমভূমি পশ্চিমবঙ্গ উড়িষ্যা সীমান্তের সুবর্ণরেখা নদী থেকে কন্যাকুমারিকা পর্যন্ত বিস্তৃত হয়েছে।

1. পশ্চিম উপকূলীয় সমভূমি
এই সমভূমিকে প্রধানত ছটি ভাগে ভাগ করা যায়।

● কচ্ছ উপদ্বীপ
এই উপদ্বীপ সিন্ধু এবং লুনি নদী দ্বারা গঠিত। এছাড়া বিভিন্ন উপহ্রদ, উপকূলীয় বালিয়াড়ি এবং ছোট ছোট টিলা দ্বারা এই অঞ্চল গঠিত।
এই অঞ্চলের উত্তরে বৃহৎ রান এবং দক্ষিণ পূর্বে ক্ষুদ্র রান অবস্থিত।

● কাথিয়াবাড় উপদ্বীপ
এই উপদ্বীপটি কচ্ছ উপদ্বীপের দক্ষিণে অবস্থিত। এই অংশের মধ্যভাগে গির ও মান্ডব পর্বত অবস্থিত। গির পর্বতের মাউন্ট গিরনার (1,117 মিটার)এই অংশের সর্বোচ্চ শৃঙ্গ।

● গুজরাট সমভূমি
কচ্ছ কাথিয়াবাড় উপদ্বীপের পূর্ব দিকে অবস্থিত সমভূমিটি গুজরাট সমভূমি নামে পরিচিত। এই সমভূমিটি নর্মদা, তাপ্তি, মাহি ও সবরমতী নদীর পলি দ্বারা গঠিত।

● কোঙ্কন সমভূমি
গুজরাট সমভূমির দক্ষিণে দমন থেকে গোয়া পর্যন্ত বিস্তৃত প্রায় 500 কিলোমিটার দীর্ঘ এবং 50 থেকে 80 কিলোমিটার প্রস্থ বিশিষ্ট সমভূমিটির নাম হল কোঙ্কন সমভূমি।

● কর্ণাটক সমভূমি
কোঙ্কন সমভূমির দক্ষিণ গোয়া থেকে ম্যাঙ্গালোর পর্যন্ত প্রায় 225 কিলোমিটার দীর্ঘ এবং 30 থেকে 50 কিলোমিটার প্রস্থবিশিষ্ট সমভূমি কর্ণাটক সমভূমি নামে পরিচিত।

● কেরল সমভূমি বা মালাবার উপকূলের সমভূমি
ম্যাঙ্গালোর থেকে কন্যাকুমারিকা পর্যন্ত বিস্তৃত প্রায় 500 কিলোমিটার দীর্ঘ এবং 96 কিলোমিটার প্রস্থবিশিষ্ট উপকূলটি কেরল সমভূমি বা সমভূমি মালাবার উপকূলের সমভূমি নামে পরিচিত।
এই অঞ্চলের জলাভূমি ও হ্রদগুলি কয়াল নামে পরিচিত। এই অঞ্চলের ভেম্বানাদ (বৃহত্তম হ্রদ) এবং অষ্টমুদি কয়াল হল এই অঞ্চলের উল্লেখযোগ্য হ্রদ।

 ©kamaleshforeducation.in(2023)

 

 

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!