অসুখী একজন

 

 

 

 

অসুখী একজন (কবিতা) পাবলো নেরুদা – মাধ্যমিক দশম শ্রেণীর বাংলা প্রশ্ন ও উত্তর |

West Bengal Madhyamik Class 10th Bengali Asukhi Ekjon Question and Answer 

MCQ | অসুখী একজন (কবিতা) পাবলো নেরুদা – মাধ্যমিক বাংলা প্রশ্ন ও উত্তর | Madhyamik Bengali Asukhi Ekjon Question and Answer :

  1. ‘ অসুখী একজন ‘ কবিতাটির কবি হলেন – 

(A) মানেজ 

(B) রোকে ডালটন 

(C) লেওজেল রুগমা 

(D) পাবলো নেরুদ

Ans: (D) পাবলো নেরুদ

  1. ‘ অসুখী একজন ‘ কবিতাটির তরজমা করেন – 

(A) মানবেন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায় 

(B) নবারুণ ভট্টাচার্য 

(C) উৎপলকুমার বসু 

(D) শুভাশিষ ঘোষ 

Ans: (B) নবারুণ ভট্টাচার্য

  1. ‘ অসুখী একজন ‘ কবিতাটি অনুবাদকের কোন্ কাব্যগ্রন্থের অন্তর্গত ? 

(A) এই মৃত্যু উপত্যকা আমার দেশ নয় 

(B) পৃথিবীর শেষ কমিউনিস্ট 

(C) বিদেশি ফুলে রক্তের ছিটে 

(D) ফ্যাতাড়ুর কুম্ভীপাক

Ans: (C) বিদেশি ফুলে রক্তের ছিটে

  1. পাবলো নেরুদা নোবেল পুরস্কার পান—

(A) স্প্যানিশ সাহিত্যের রূপকার হিসেবে

(B) সোভিয়েত – স্প্যানিশ সাহিত্যের রূপকার হিসেবে 

(C) ইংরেজি – স্প্যানিশ সাহিত্যের রূপকার হিসেবে 

(D) জার্মান – স্প্যানিশ সাহিত্যের রূপকার হিসেবে

Ans: (A) স্প্যানিশ সাহিত্যের রূপকার হিসেবে

  1. পাবলো নেরুদা ছিলেন –

(A) চিলিয়ান কবি ও রাজনীতিবিদ

(B) ইউরোপিয়ান কবি ও রাজনীতিবিদ

(C) রাশিয়ান কবি ও ভাস্কর্য শিল্পী

(D) জার্মান কবি ও চিত্রকর 

Ans: (A) চিলিয়ান কবি ও রাজনীতিবিদ

  1. ‘ অসুখী একজন ‘ কবিতাটি পাবলো নেরুদার কোন্ কাব্যগ্রন্থের অন্তর্গত ? 

(A) The Captain’s Verse

(B) The Yellow Heart 

(C) Still Another Day 

(D) Extravagaria

  1. অপেক্ষায় দাঁড় করিয়ে রাখা হয়েছিল – 

(A) দরজায় 

(B) ছাদে 

(C) বারান্দায় 

(D) রাস্তায় 

Ans: (A) দরজায় 

  1. পাবলো নেরুদার প্রকৃত নাম হল –

(A) নেফতালি রিকার্দো রেয়েস বাসোয়ালতো 

(B) রিকার্দো বাসওআলতো 

(C) রেয়েন্স রিকার্দো নেকতালি বাসোয়ালতো 

(D) পল ভেরলেইন নেরুদা

Ans: (A) নেফতালি রিকার্দো রেয়েস বাসোয়ালতো

  1. ‘ সে জানত না ‘ –’সে ‘ হল – 

(A) পরাজিত সৈনিক 

(B) কবিতার কথক

(C) কবির ভালোবাসার জন

(D) কবির মা

Ans: (C) কবির ভালোবাসার জন

  1. ‘ অসুখী একজন ‘ কবিতায় একটা কী চলে গেল বলতে কবি কোন্ জন্তুর উল্লেখ করেছেন ? 

(A) মানুষ 

(B) কুকুর 

(C) হরিণ ।

(D) বিড়াল

Ans: (B) কুকুর

 

  1. ‘ সে জানত না’— সে কী জানত না ? 

(A) কথক ফিরে আসবে 

(B) কথক আর কখনও ফিরে আসবে না 

(C) কথক কখন আসবে 

(D) কথক শীঘ্রই ফিরে আসবে

Ans: (B) কথক আর কখনও ফিরে আসবে না

  1. ‘ অসুখী একজন ‘ কবিতায় কবি ক – টি সপ্তাহ কেটে যাওয়ার উল্লেখ করেছেন ? 

(A) একটি

(B) চারটি 

(C) দুটি

(D) তিনটি

Ans: (A) একটি

  1. ‘ অসুখী একজন ’ কবিতায় কে হেঁটে চলে গেল ? 

(A) গল্পের কথক 

(B) একজন সৈনিক

(C) একটি কুকুর

(D) গির্জার এক নান

Ans: (D) গির্জার এক নান

  1. ‘ অসুখী একজন ‘ কবিতায় কবি পরিত্যক্ত রাস্তায় কী জন্মানোর কথা বলেছেন ?

(A) ঘাস 

(B) তরুলতা 

(C) গাছ 

(D) শস্য

Ans: (A) ঘাস

  1. ‘ অসুখী একজন ’ কবিতায় একটার – পর – একটা বছর কীভাবে নেমে এল বলে কবি মনে করেছেন ?

(A) পাথরের মতো 

(B) জলের মতো

(C) ফুলের মতো 

(D) গানের মতো

Ans: (A) পাথরের মতো

  1. বৃষ্টি কী ধুয়ে দিয়েছিল ?

(A) রাস্তার ধুলো

(B) রক্তের দাগ

(C) কথকের পায়ের দাগ

(D) কাঠকয়লার দাগ

Ans: (C) কথকের পায়ের দাগ 

  1. ‘ তারপর যুদ্ধ এল’- ‘ যুদ্ধ এল ‘ – র অর্থ—

(A) যুদ্ধ শেষ হল 

(B) যুদ্ধ শুরু হল 

(C) যুদ্ধ হবে এমন

(D) যুদ্ধ চলাকালীন অবস্থায়

Ans: (C) যুদ্ধ হবে এমন

  1. ‘ তারপর যুদ্ধ এল –

(A) রক্তের সমুদ্রের মতো । ‘ 

(B) আগ্নেয়পাহাড়ের মতো

(C) পাহাড়ের আগুনের মতো

(D) রক্তের এক আগ্নেয়পাহাড়ের মতো

Ans: (D) রক্তের এক আগ্নেয়পাহাড়ের মতো

মতো । ‘

  1. ‘রক্তের এক _____ মত ।’ 

(A) ধসের 

(B) গিরিখাতের

(C) আগ্নেয়পাহাড়ের 

(D) গিরিখাতের

Ans: (C) আগ্নেয়পাহাড়ের

  1. ‘ অসুখী একজন ‘ কবিতায় শিশু আর বাড়িরা –

(A) খুন হল 

(B) হারিয়ে গেল 

(C) বেঁচে রইল 

(D) জেগে রইল ।

Ans: (A) খুন হল 

  1. ‘ অসুখী একজন ‘ কবিতায় সব ধ্বংস হলেও অপেক্ষমান সেই মেয়েটির কী হল না ?

(A) অসুখ হল না

(B) মৃত্যু হল না

(C) খুন হল না 

(D) জ্বলে গেল না

Ans: (B) মৃত্যু হল না

  1. ‘ অসুখী একজন ‘ কবিতায় কীসে সমস্ত সমতল ধ্বংস হল ?

(A) ভূমিকম্পে

(B) ধসে

(C) আগুনে

(D) বন্যায়

Ans: (C) আগুনে

  1. ‘ অসুখী একজন ‘ কবিতায় দেবতাদের চেহারা ছিল – 

(A) শান্ত – হলুদ 

(B) লাল – নীল 

(C) অশান্ত – নীল

(D) ধীর – হলুদ

Ans: (A) শান্ত – হলুদ

  1. ‘ অসুখী একজন ‘ কবিতায় শান্ত – হলুদ দেবতারা কত বছর ধ্যানে ডুবে ছিল ?

(A) একশো 

(B) দু – হাজার 

(C) পাঁচশো 

(D) হাজার

Ans: (D) হাজার

  1. ‘ অসুখী একজন ‘ কবিতায় শান্ত – হলুদ দেবতারা কীভাবে মন্দির থেকে উলটে পড়ল ?

(A) টুকরো টুকরো হয়ে 

(B) গুঁড়োগুঁড়ো হয়ে 

(C) অর্ধেক হয়ে 

(D) ভেঙে ভেঙে 

Ans: (A) টুকরো টুকরো হয়ে

  1. তারা আর স্বপ্ন দেখতে পারল না । কারা স্বপ্ন দেখতে পারল না ?

(A) দেবতারা 

(B) শয়তানরা

(C) মানুষেরা

(D) যক্ষরা

Ans: (A) দেবতারা

  1. ‘ অসুখী একজন ‘ কবিতায় কে মিষ্টি বাড়ির বারান্দার ঝুলন্ত বিছানায় ঘুমিয়েছিল ?

(A) মেয়েটি 

(B) বন্ধুটি 

(C) কবি 

(D) ভাইটি 

Ans: (A) মেয়েটি

  1. ‘ অসুখী একজন ‘ কবি বারান্দার যে – বিছানাটিতে কবিতায় ঘুমিয়েছিলেন , সেটি ছিল – 

(A) জ্বলন্ত 

(B) উড়ন্ত 

(C) বাড়ন্ত

(D) ঝুলন্ত

Ans: (D) ঝুলন্ত

  1. ‘ অসুখী একজন ‘ কবিতায় কবির ঝুলন্ত বিছানার ধারের গাছটি ছিল – 

(A) গোলাপি 

(B) নীল 

(C) হলুদ 

(D) সবুজ

Ans: (A) গোলাপি

  1. ‘ অসুখী একজন ‘ কবিতায় ছড়ানো করতলের মতো পাতা ছিল— 

(A) চিমনির 

(B) মশারির 

(C) বিছানার

(D) বসার ঘরের

Ans: (D) বসার ঘরের

  1. ‘ অসুখী একজন ‘ কবিতায় কবির সেই মিষ্টি বাড়ির জলতরঙ্গটি কোন্ সময়ের ? 

(A) প্রাচীন কালের

(B) আধুনিক সময়ের 

(C) বিংশ শতকের

(D) মধ্যযুগীয় সময়ের

Ans: (A) প্রাচীন কালের

  1. ‘ সব _____ হয়ে গেল , জ্বলে গেল আগুনে । ‘

(A) চূর্ণ 

(B) বিচূর্ণ 

(C) শক্ত 

(D) চুরমার

Ans: (A) চূর্ণ

  1. ‘ অসুখী একজন ’ কবিতায় যেখানে শহর ছিল সেখানে ছড়িয়ে রইল – 

(A) কাঠকয়লা 

(B) সাপ 

(C) কয়লা 

(D) আগুন

Ans: (A) কাঠকয়লা

  1. ‘ দোমড়ানো লোহা , মৃত মূর্তির বীভৎস / মাথা

(A) রুপোর 

(B) সোনার 

(C) মাটির 

(D) পাথরের

Ans: (D) পাথরের

  1. ‘ অসুখী একজন ‘ কবিতায় শহর ধ্বংসের সঙ্গে সঙ্গে রক্তের দাগের রং হয়েছিল— 

(A) কালো 

(B) হলুদ 

(C) লাল 

(D) সবুজ

Ans: (A) কালো

  1. ‘ অসুখী একজন ‘ কবিতায় সেই মেয়েটি যার জন্য অপেক্ষারত , সে হল –

(A) কবি 

(B) ডাকপিয়োন 

(C) তুমি 

(D) তোমরা

Ans: (A) কবি

==========================================================

অসুখী একজন কবিতার আরো প্রশ্নোত্তর-PART-2

অসুখী একজন কবিতার আরো প্রশ্নোত্তর-PART-3

==============================================================

সঠিক উত্তর নির্বাচন করো (MCQ)

[প্রতিটি প্রশ্নের প্রশ্নমান ১]

১। ‘তারপর যুদ্ধ এল’ –
(ক) পাহাড়ের আগুনের মতো (খ) রক্তের সমুদ্রের মতো (গ) আগ্নেয় পাহাড়ের মতো (ঘ) রক্তের এক আগ্নেয় পাহাড়ের মতো
উত্তর – তারপর যুদ্ধ এল (ঘ) রক্তের এক আগ্নেয় পাহাড়ের মতো।

২। ‘যেখানে ছিল শহর / সেখানে ছড়িয়ে রইল’ – কি ছড়িয়ে রইল?
(ক) পায়ের দাগ (খ) কাঠকয়লা (গ) গোলাপি গাছ (ঘ) প্রাচীন জলতরঙ্গ [মাধ্যমিক ২০১৯]
উত্তর – ‘যেখানে ছিল শহর / সেখানে ছড়িয়ে রইল (খ) কাঠকয়লা।

৩। ‘তারা আর স্বপ্ন দেখাতে পারল না’ – কারা আর স্বপ্ন দেখাতে পারলো না?
(ক) সেই মেয়েটি (খ) গির্জার নান (গ) কবিতার কথক (ঘ) শান্ত হলুদ দেবতারা [মাধ্যমিক’২০২০]
উত্তর – (ঘ) শান্ত হলুদ দেবতারা আর স্বপ্ন দেখাতে পারল না।

৪। ‘ডুবে ছিল ধ্যানে’ – কত দিনের ধ্যানে ডুবে ছিল?
(ক) একযুগ (খ) শতবর্ষ (গ) হাজার বছর (ঘ) যুগের পর যুগ ধরে
উত্তর – (গ) হাজার বছর ধরে ‘ডুবে ছিল ধ্যানে’।

৫। দেবতাদের চিহ্নিত করতে কি বিশেষণ ব্যবহার করা হয়েছে?

(ক) শান্ত সবুজ (খ) শান্ত হলুদ (গ) শান্ত করুন (ঘ) শান্ত সাদা
উত্তর – দেবতাদের (খ) শান্ত হলুদ বলা হয়েছে।

৬। বৃষ্টিতে ধুয়ে দিল আমার পায়ের দাগ / ঘাস জন্মালো –
(ক) মাঠে (খ) রাস্তায় (গ) উঠোনে (ঘ) গ্রামে
উত্তর – ঘাস জন্মালো (খ) রাস্তায়।

==========================================================

অসুখী একজন কবিতার আরো প্রশ্নোত্তর-PART-2

অসুখী একজন কবিতার আরো প্রশ্নোত্তর-PART-3

==============================================================

অতিসংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর | অসুখী একজন (কবিতা) পাবলো নেরুদা – মাধ্যমিক বাংলা প্রশ্ন ও উত্তর | Madhyamik Bengali Asukhi Ekjon Question and Answer : 

  1. ‘ আমি তাকে ছেড়ে দিলাম — ‘ আমি ’ কে ? 

Ans: নবারুণ ভট্টাচার্য অনূদিত পাবলো নেরুদা রচিত ‘ অসুখী একজন ’ কবিতায় ‘ আমি ‘ বলতে স্বয়ং কবি নিজেকে তথা কবিতার কথককে বুঝিয়েছেন । 

  1. কবির অপেক্ষায় কে দাঁড়িয়েছিল ?

Ans: ‘ অসুখী একজন ‘ কবিতায় কবি যেদিন নিজ বাসভূমি ছেড়ে চলে যান , সেদিন তাঁর প্রিয় নারীটি দরজায় অপেক্ষায় দাঁড়িয়েছিল । 

  1. কথকের অপেক্ষায় কে , কোথায় দাঁড়িয়েছিল ?

Ans: প্রখ্যাত চিলিয়ান কবি পাবলো নেরুদার ‘ অসুখী একজন ’ কবিতায় কথকের অপেক্ষায় তার প্রিয়তমা গভীর প্রত্যাশা নিয়ে দরজায় দাঁড়িয়েছিল ।

  1. অসুখী একজন ’ কবিতায় কথক অপেক্ষারতাকে ছেড়ে কোথায় চলে গেলেন ? 

Ans: পাবলো নেরুদার ‘ অসুখী একজন ’ কবিতায় কথক দরজায় অপেক্ষারতা প্রিয়জনকে দাঁড় করিয়ে রেখে বৃহত্তর স্বার্থে দূর থেকে দূরে কোনো স্থানে চলে গেলেন ।

  1. ‘ অসুখী একজন ’ কবিতায় কে ফিরে আসার কথা জানত না ?

Ans: পাবলো নেরুদার ‘ অসুখী একজন ’ কবিতায় দরজায় অপেক্ষারতা কথকের প্রিয়তমা সেই নারীটি জানত না যে , তার মনের মানুষ আর কখনও ফিরে আসবে না ।

  1. ‘ অসুখী একজন ’ কবিতায় কবির / কথকের চলে যাওয়া সত্ত্বেও সমাজজীবনের নিজের গতিতে চলার কী কী অনুষঙ্গ কবিতায় উল্লিখিত আছে ?

Ans: নেরুদার ‘ অসুখী একজন ’ কবিতায় কথকের চলে যাওয়া সত্ত্বেও সমাজজীবনের আপন গতিতে বয়ে চলার অনুষঙ্গগুলি হল — ‘ একটি কুকুর চলে গেল , হেঁটে গেল গির্জার এক নান ‘ ।

  1. ‘ অসুখী একজন ’ কবিতায় কবির পায়ের দাগ কীসে ধুয়ে গিয়েছিল ?

Ans: নেরুদার ‘ অসুখী একজন ’ কবিতায় কবির পায়ের দাগ বৃষ্টিতে ধুয়ে গিয়েছিল । স্মৃতির মলিনতা অর্থে উপমাটি ব্যবহৃত হয়েছে ।

  1. ‘ অসুখী একজন ‘ কবিতায় কবি পরিত্যক্ত রাস্তায় কী জন্মানোর কথা বলেছেন ? 

Ans: ‘ অসুখী একজন ‘ কবিতায় পরিত্যক্ত রাস্তায় কবি ‘ ঘাস ’ জন্মানোর কথা বলেছেন । সময়ের সঙ্গে স্মৃতির ফিকে হয়ে যাওয়া বোঝাতেই শব্দগুলি ব্যবহার করা হয়েছে । ২. নেমে এল তার মাথার ওপর । 

  1. কার মাথার ওপর কী নেমে আসার কথা বলা হয়েছে ?

Ans: পাবলো নেরুদার ‘ অসুখী একজন ‘ কবিতায় কথকের জন্য অপেক্ষা করতে থাকা তার প্রিয়তমার মাথার ওপর পাথরের মতো ভারী একটার পর একটা বছর নেমে এল । 

  1. ‘ অসুখী একজন ‘ কবিতায় কবি ‘ পাথরের মতো ” বলতে কী বোঝাতে চেয়েছেন ?

Ans: পাবলো নেরুদা তাঁর ‘ অসুখী একজন ‘ কবিতায় কথকের জন্য তাঁর প্রেমিকার অন্তহীন অপেক্ষা আর দুঃসহ বেদনাকে পাথরের গুরুভারের সঙ্গে তুলনা করেছেন ।

  1. তারপর যুদ্ধ এল — কোন কবিতার লাইন ? ‘ যুদ্ধ এল – এর অর্থ কী ?

Ans: তারপর যুদ্ধ এল ’ — এটি ‘ অসুখী একজন ‘ কবিতার পক্তি । এখানে ‘ যুদ্ধ এল ‘ বলতে বোঝানো হয়েছে , কথকের দেশে যুদ্ধ শুরু হল । আর মানুষ , শহর ও জনপদ সব জ্বলেপুড়ে ছারখার হয়ে গেল ।

  1. ‘ অসুখী একজন কবিতায় যুদ্ধের ছবিটি কীভাবে ফুটে উঠেছে ?

Ans: ‘ অসুখী একজন ‘ কবিতায় কবির ভাষায় যুদ্ধ এসেছে — ‘ রক্তের এক আগ্নেয়পাহাড়ের মতো । অর্থাৎ ফুটে উঠেছে ধ্বংস ও মৃত্যুর রক্তাক্ত ভয়াবহতার ছবি । 

  1. শিশু আর বাড়িরা খুন হলো।- ‘ শিশু আর বাড়িরা খুন হয়েছিল কেন ?

Ans: উত্তর ‘ অসুখী একজন ‘ কবিতায় কবি যুদ্ধে , শিশু ও বাড়িদের খুন বা হওয়ার কথা বলেছেন । শিশুরাও এই যুদ্ধের হাত থেকে রেহাই পায় না , ধূলিসাৎ হয় মানুষের আশ্রয় ।

  1. ‘ অসুখী একজন ‘ কবিতায় উল্লিখিত যুদ্ধে অপেক্ষাতুরা মেয়েটির কী হল ?

Ans: ‘ অসুখী একজন ‘ কবিতায় উল্লিখিত ভয়াবহ যুদ্ধের বিধ্বংসী মত্ততা  ে অতিক্রম করে শুধু আশ্চর্যজনকভাবে বেঁচে রইল , সেই অপেক্ষাতুরা মেয়েটি ।

  1. ‘ অসুখী একজন ‘ কবিতায় যুদ্ধে সমতলের কী অবস্থা হয়েছিল ?

Ans: ‘ অসুখী একজন ‘ কবিতায় যুদ্ধের ধ্বংসাত্মক ছায়া সমস্ত সমতলে । আগুনের লেলিহান শিখার মতো ছড়িয়ে পড়ে সব কিছুকে জ্বালিয়ে – পুড়িয়ে ছারখার করল । 

  1. অসুখী একজন কবিতায় কবি দেবতাদের চেহারার কী বর্ণনা দিয়েছেন ?

Ans: ‘ অসুখী একজন ‘ কবিতায় কবি ‘ শান্ত – হলুদ ‘ দেবতাদের চেহারার ছবি এঁকেছেন । এখানে ‘ শাস্ত – হলুদ ‘ শব্দবন্ধটি যেন নিষ্ক্রিয় প্রাচীনতার ইঙ্গিত বহন করে আনে । 

  1. ‘ অসুখী একজন কবিতায় দেবতারা হাজার বছর ধরে কী করছিল বলে উল্লেখ পাওয়া যায় ?

Ans: ‘ অসুখী একজন ‘ কবিতায় শাস্ত – হলুদ দেবতারা হাজার বছর ধরে ধ্যানে ডুবে ছিল বলে কবি উল্লেখ করেছেন , যা দেবত্বের নির্বিকার নিষ্ক্রিয় রূপটিকেই ফুটিয়ে তুলেছে ।

  1. ‘ অসুখী একজন কবিতায় দেবতারা কোথা থেকে টুকরো টুকরো হয়ে উলটে পড়েছিল ?

Ans: ‘ অসুখী একজন ‘ কবিতায় যুদ্ধের অভিঘাতে হাজার বছর ধরে ধ্যানে ডুবে থাকা দেবতারা মন্দির থেকে টুকরো টুকরো হয়ে উলটে পড়েছিল ।

  1. ‘ তারা আর স্বপ্ন দেখতে পারল না।- ‘ তারা ‘ বলতে কাদের কথা বলা হয়েছে ?

Ans: ‘ অসুখী একজন ‘ কবিতা থেকে গৃহীত ‘ তারা আর স্বপ্ন দেখতে পারল না ‘ পঙ্ক্তিতে ‘ ‘ তারা ‘ বলতে শান্ত – হলুদ দেবতাদের কথা বলা হয়েছে ।

  1. ‘ অসুখী একজন ‘ কবিতায় কবির বাড়িটি কেমন ছিল ?

Ans: ‘ অসুখী একজন ‘ কবিতায় কবির বাড়িটি ছিল মধুর স্মৃতি ও স্বপ্নবিজড়িত । অর্থাৎ বাড়িটি সম্পর্কে এখানে শৈশব – কৈশোরের আকর্ষণজনিত আবেগ ও আবেশ প্রকাশিত হয়েছে ।

  1. ‘ অসুখী একজন ‘ কবিতায় কবির ঝুলন্ত বিছানাটি কোথায় অবস্থিত ছিল ? 

Ans: ‘ অসুখী একজন ‘ কবিতায় কবির মধুর স্মৃতিবিজড়িত মিষ্টি বাড়িতে ঝুলন্ত বিছানাটি বারান্দায় অবস্থিত ছিল ।

  1. ‘ অসুখী একজন ‘ কবিতায় কবির স্বপ্নবিজড়িত বাড়ির পরিবেশটি কেমন ছিল ?

Ans: ‘ অসুখী একজন ‘ কবিতায় কবির স্মৃতিবিজড়িত বাড়িটিতে গোলাপি গাছ , ছড়ানো করতলের মতো পাতা চিমনি ও প্রাচীন জলতরঙ্গ যেন এক সাবেকি ইমারতের স্নিগ্ধ পূর্ণতাকে ফুটিয়ে তোলে ।

  1. ‘ অসুখী একজন কবিতায় যুদ্ধে কবির বাড়ির অবস্থা কী হয়েছিল ?

Ans: ‘ অসুখী একজন ‘ কবিতায় , যুদ্ধে কবির স্বপ্ন ও স্মৃতিবিজড়িত বাড়িটি ভেঙে , গুঁড়িয়ে , আগুনে পুড়ে ছারখার হয়ে গিয়েছিল ।

  1. ‘ অসুখী একজন ‘ কবিতায় কবির বাড়িটি ছাড়াও আর কী ধ্বংসের উল্লেখ পাওয়া যায় ?

Ans: ‘ অসুখী একজন ‘ কবিতায় কবির বাড়িটি ছাড়াও সম্পূর্ণ শহরটি ধ্বংসের উল্লেখ পাওয়া যায় ।

  1. ‘ অসুখী একজন ’ কবিতায় যেখানে শহর ছিল সেখানে যুদ্ধের ফলে কী কী ছড়িয়ে রইল ?

Ans: ‘ অসুখী একজন ‘ কবিতায় যেখানে শহর ছিল , সেখানে যুদ্ধের পর ছড়িয়ে রইল কাঠকয়লা , দোমড়ানো লোহা , মৃত পাথরের মূর্তির বীভৎস মাথা আর পোড়া শুকনো রক্তের কালো দাগ ।

  1. ‘ অসুখী একজন ‘ কবিতায় যেখানে শহর ছিল সেখানে । যুদ্ধের ফলে কী কী ছড়িয়ে রইল । 

Ans: ‘ অসুখী একজন ‘ কবিতায় বিপর্যয় ও বিধ্বংসের বিকৃত রূপ , বহু ক্ষয়ক্ষতি ও মৃত্যু বোঝাতে কবি এই চিত্রকল্পের প্রয়োগ ঘটিয়েছেন । যুদ্ধের বীভৎসভায় যেন রক্তও তার স্বাভাবিক রূপ হারিয়েছে ।

  1. ‘ আর সেই মেয়েটি আমার অপেক্ষায় / – ‘ আর ’ শব্দটি ব্যবহারের কারণ কী ?

Ans: পাবলো নেরুদার ‘ অসুখী একজন ‘ কবিতায় যুদ্ধ – দাঙ্গা – হিংসার আগুন পেরিয়ে কথকের প্রিয়তমার ভালোবাসা ও চিরন্তন অপেক্ষাকে বোঝাতেই শেষ পঙ্ক্তিতে ‘ আর ‘ শব্দটির ব্যবহার হয়েছে । 

  1. ‘ রক্তের একটা কালো দাগ । কোথায় রক্তের একটা কালো দাগ দেখা গিয়েছিল ? 

Ans: যুদ্ধের ফলে ধ্বংসপ্রাপ্ত শহরে কাঠকয়লা , দোমড়ানো লোহা , মৃত পাথরের মূর্তির বীভৎস মাথার সঙ্গে রক্তের কালো দাগ দেখা গিয়েছিল । 

  1. সমস্ত সমতলে ধরে গেল আগুন – কেন এমন হয়েছিল ?

Ans: ‘ অসুখী একজন ‘ কবিতা অনুসারে আগ্নেয়পাহাড়ের মতো ভয়াবহ যুদ্ধ আসার ফলে সমস্ত সমতলে আগুন ধরে গিয়েছিল ।

  1. ‘ বৃষ্টিতে ধুয়ে দিল আমার পায়ের দাগ — পায়ের দাগ ধুয়ে দেওয়া বলতে কী বোঝ ?

Ans: নেরুদার ‘ অসুখী একজন ’ কবিতায় বৃষ্টিতে পায়ের দাগ ধুয়ে যাওয়া বলতে স্ববাসভূমিতে কথকের স্মৃতি ক্রমশ ফিকে ও মলিন হয়ে আসার কথা বলা হয়েছে । 

  1. ‘ সব চূর্ণ হয়ে গেল , —কী কী চূর্ণ হয়ে গেল ? 

Ans: ‘ অসুখী একজন ‘ কবিতায় কবির মিষ্টি বাড়ি , বারান্দার ঝুলন্ত বিছানা , গোলাপি গাছ , ছড়ানো করতলের মতো পাতা চিমনি আর প্রাচীন জলতরঙ্গ যুদ্ধে এইসব চূর্ণ হয়ে আগুনে জ্বলে গিয়েছিল । 

  1. ‘ সেখানে ছড়িয়ে রইল — কী ছড়িয়ে ছিল । 

Ans: নেরুদার ‘ অসুখী একজন ‘ কবিতানুসারে ধ্বংসপ্রাপ্ত শহরে ছড়িয়ে ছিল কাঠকয়লা , দোমড়ানো লোহা , মৃত পাথরের মূর্তির বীভৎস মাথা আর রক্তের একটা কালো দাগ ।

  1. ‘ হেঁটে গেল গির্জার এক নান- ‘ নান ‘ কাদের বলা হয় ? 

Ans: গির্জায় বসবাসকারী খ্রিস্টান সন্ন্যাসিনীদের ‘ নান ‘ বলা হয় ।

  1. ‘ অসুখী একজন ‘ কবিতাটির অনুবাদক কে ? 

Ans: ‘ অসুখী একজন ‘ কবিতাটির অনুবাদক নবারুণ ভট্টাচার্য ।

  1. ‘ অসুখী একজন ‘ কবিতায় যুদ্ধের ছবিটি কীভাবে ফুটে উঠেছে ।

Ans: কবি পাবলো নেরুদা ‘ অসুখী একজন ‘ কবিতায় যুদ্ধের ভয়াবহতাকে রক্তের এক আগ্নেয়পাহাড়ের সঙ্গে তুলনা করেছেন ।

  1. ” সেই মেয়েটির মৃত্যু হলো না । – কোন্ মেয়েটির ?

Ans: নেরুদার ‘ অসুখী একজন ‘ কবিতায় কবির জন্য তাঁর স্ববাসভূমিতে অপেক্ষারতা মেয়েটির ভয়াবহ যুদ্ধেও মৃত্যু হল না ।

  1. ‘ সেই মিষ্টি বাড়ি , সেই বারান্দা — সেই বারান্দাটির পরিচয় দাও ।

Ans: ‘ অসুখী একজন ‘ কবিতায় কবির মিষ্টি বাড়ির বারান্দাটিতে ছিল একটি ঝুলন্ত বিছানা ; যেখানে তিনি একদা ঘুমিয়েছিলেন ।

  1. ‘ সব চূর্ণ হয়ে গেল’— কী কারণে সব চূর্ণ হয়ে গেল ? Ans: 31. নং প্রশ্নের উত্তর দ্যাখো ।
  2. ‘ তারপর যুদ্ধ এল — যুদ্ধ আসার ফল কী হয়েছিল ?

Ans: নং প্রশ্নের উত্তর দ্যাখো ।

  1. ‘ তারপর যুদ্ধ এল — যুদ্ধ এল কীসের মতো ? 

Ans: নেরুদার ‘ অসুখী একজন ‘ কবিতা অনুসারে ‘ রক্তের এক আগ্নেয়পাহাড়ের মতো ‘ যুদ্ধ এসেছিল । অর্থাৎ এখানে যাবতীয় ধ্বংস ও বিনাশের প্রতীক হয়ে ওঠে রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ । 

  1. ‘অসুখী একজন কবিতায় কবি অপেক্ষারতাকে ছেড়ে কোথায় চলে গেলেন ? 

Ans: ‘ অসুখী একজন ‘ কবিতায় কবি অপেক্ষারতাকে ছেড়ে চিরদিনের জন্য বহুদুরের কোনো এক অজ্ঞাত স্থানে চলে গেলেন ।

  1. ‘ সেই মেয়েটির  মৃত্যু হলো না । -কেন মেয়েটির মৃত্যু হল না ?

Ans: ‘ অসুখী একজন ‘ কবিতায় যুদ্ধ , মৃত্যু ও হিংসা যেন মেয়েটিকে স্পর্শ করতে পারে না । কারণ ভালোবাসা অবিনাশী । তাই সে নিজস্ব ধারায় সময় থেকে সময়ান্তর অতিক্রম করেও অমলিন থাকে ।

==========================================================

অসুখী একজন কবিতার আরো প্রশ্নোত্তর-PART-2

অসুখী একজন কবিতার আরো প্রশ্নোত্তর-PART-3

==============================================================

অতিসংক্ষিপ্ত প্রশ্ন (VSAQ)

[প্রতিটি প্রশ্নের প্রশ্নমান ১]

১। ‘শিশু আর বাড়িরা খুন হলো’ – ‘শিশু আর বাড়িরা’ খুন হয়েছেন কেন? [মাধ্যমিক’১৭]
উত্তর – যুদ্ধের করালগ্রাসে শিশু আর বাড়িরা ধ্বংস বা খুন হয়েছে।

২। ‘অসুখী একজন’ কবিতাটি কে বাংলায় তরজমা করেছেন? [মাধ্যমিক’২০]
উত্তর – ‘অসুখী একজন’ কবিতাটির বাংলা তরজমা করেছেন শ্রী নবারুণ ভট্টাচার্য।

৩। ‘ঘাস জন্মালো রাস্তায়’ – এ চিত্রকল্পের দ্বারা কবি কি বোঝেতে চেয়েছেন?

উত্তর – ‘ঘাস জন্মালো রাস্তায়’ বলতে কবি অনেকটা সময় অতিবাহিত হয়ে যাওয়ার কথা বুঝিয়েছেন।

৪। ‘শিশু আর বাড়িরা খুন হলো’ – ‘বাড়িরা’ কিভাবে খুন হলো?
উত্তর – এখানে ‘খুন’ বলতে ধ্বংসের বলা হয়েছে, যুদ্ধের ভয়াবহতায় শহরের ঘর – বাড়ি ধ্বংস বা খুন হয়েছে।

৫। শান্ত হলুদ দেবতারা কত বছর ধ্যানে ডুবে ছিল?

উত্তর – শান্ত হলুদ দেবতারা হাজার বছর ধ্যানে ডুবে ছিল।

৬। ‘তারা আর স্বপ্ন দেখাতে পারলো না’ – কারা কাকে স্বপ্ন দেখাতে পারলো না?
উত্তর – মানুষের উপাস্য দেবতারা, তারা আর স্বপ্ন দেখাতে পারলো না।

==========================================================

অসুখী একজন কবিতার আরো প্রশ্নোত্তর-PART-2

অসুখী একজন কবিতার আরো প্রশ্নোত্তর-PART-3

==============================================================

সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর | অসুখী একজন (কবিতা) পাবলো নেরুদা – মাধ্যমিক বাংলা প্রশ্ন ও উত্তর | Madhyamik Bengali Asukhi Ekjon Question and Answer  : 

  1. ‘ আমি তাকে ছেড়ে দিলাম’- কবি কাকে ছেড়ে দিলেন । তাকে তিনি কীভাবে রেখে এসেছিলেন ?

Ans: পাবলো নেরুদার ‘ অসুখী একজন ‘ কবিতা থেকে গৃহীত অংশে কথক তাঁর প্রিয় নারীকে অপেক্ষায় রেখে নিজ বাসভূমি ছেড়ে দূরে চলে গিয়েছিলেন । 

  স্বদেশ ছেড়ে দূর থেকে দূরতর কোনো স্থানে চলে যাওয়ার সময় তিনি দরজায় তাঁর অপেক্ষায় দাঁড় করিয়ে রেখে যান কোনো এক প্রিয়জনকে । যদিও সে জানত না যে , কবি আর কখনও ফিরে আসবে না । এইভাবেই কবি এক চিরকালীন বিদায় মুহূর্তের ছবি এঁকেছেন ।

  1. ‘ বৃষ্টিতে ধুয়ে দিল আমার পায়ের দাগ / ঘাস জন্মালো রাস্তায়’— উদ্ধৃতাংশটির তাৎপর্য ব্যাখ্যা করো ।

Ans: উদ্ধৃতাংশের তাৎপর্য উত্তর উদ্ধৃতিটি পাবলো নেরুদার ‘ অসুখী একজন ’ কবিতা থেকে গৃহীত । কথক তাঁর প্রিয়তমাকে অপেক্ষমান রেখে জীবন ও জীবিকার তাগিদে বহুদুরে পাড়ি দেন । থমকে যায় মেয়েটির জীবন কিন্তু সময় থেমে থাকে না । তাই কথকের চলে যাওয়াতে জীবনের স্বাভাবিক গতি ব্যাহত হয় না । সপ্তাহ – বছর কেটে যায় । প্রাকৃতিক নিয়মেই কথকের চলার পথের পদচিহ্ন মুছে যায় । তাতে ঘাস জন্মায় । কিন্তু কবির চলে যাওয়ার মুহূর্তটি তার প্রিয়তমার হৃদয়ে অন্তহীন অপেক্ষার মুহূর্ত হয়ে রয়ে যায় । 

  1. পাথরের মতো পর পর পাথরের মতো , বছরগুলো বছরগুলোকে পাথরের মতো বলা হয়েছে কেন ?

Ans: বছরগুলো পাথরের মতো- কারণ উত্তর / জীবন ও জীবিকার জন্য বাসভূমি ছেড়ে দূরে চলে যাওয়া তাঁর মানুষটি যে ফিরে আসবেন না এ কথা তার প্রেমিকার অজানা ছিল । কিন্তু জীবন এতে থেমে থাকেনি । বৃষ্টিতে কবির পায়ের দাগ মুছে তাতে ঘাস জন্মায় । নিরন্তর অপেক্ষা চলতেই থাকে । দীর্ঘ প্রতীক্ষারতা নারীর জীবনে তার প্রিয়তমের অনুপস্থিতির বছরগুলো যেন পাথরের বোঝা হয়ে তার মাথার ওপর নেমে আসে । এখানে ‘ পর পর ‘ বলতে বিচ্ছেদ বেদনার গভীরতা বোঝানো হয়েছে ।

  1. যুদ্ধকে ‘ রক্তের এক আগ্নেয়পাহাড় ‘ বলা হয়েছে কেনো ? 

Ans: উদ্ধৃত প্রসঙ্গটি কবি পাবলো নেরুদা রচিত ‘ অসুখী একজন ‘ কবিতা থেকে গৃহীত । 

 আগ্নেয় পাহাড় কারণ কবিতায় যুদ্ধকে কবি আগ্নেয়পাহাড়ের সঙ্গে তুলনা করেছে । আগ্নেয়পাহাড় চারপাশে ছড়িয়ে দেয় জ্বলন্ত লাভা । আর সেই আগুনে ছাই হয় জীবনের যাবতীয় চিহ্ন । ঠিক তেমনই যুদ্ধের ফলে মানুষের মনে জমে থাকা হিংসা – দ্বেষ আর ঘৃণা লাভার মতো ছিটকে ওঠে । অপমৃত্যু ঘটে মানবতার । এই মৃত্যুময় ধ্বংসলীলার নারকীয় রূপটিকে ফুটিয়ে তুলতেই কবি যুদ্ধকে , রক্তের এক আগ্নেয়পাহাড় ‘ বলেছেন ।

  1. ” সেই মেয়েটির মৃত্যু হলো না । কোন মেয়েটির কেন মৃত্যু হল না ?

Ans: পাবলো নেরুদার ‘ অসুখী একজন ‘ কবিতার কথকের জন্য অপেক্ষারতা যে মেয়েটির উল্লেখ পাওয়া যায় , তার কথা বলা হয়েছে । মেয়েটির পরিচয় মেয়েটি জানত না যে , তার প্রিয়তম আর ফিরে আসবে না । জীবন আপন ছন্দে চলল , ক্রমে সপ্তাহ – বছর অতিক্রান্ত হল । কবির পদচিহ্ন বৃষ্টিতে ধুয়ে গেল , তবু অপেক্ষা চলল । এরপর যুদ্ধের গ্রাসে নগর , দেবালয় চূর্ণবিচূর্ণ হল এবং মৃত্যু হল শিশুসহ অজস্র মানুষের । শুধু অপেক্ষমান মেয়েটির মৃত্যু হল না কারণ ভালোবাসা অমর , চিরন্তন ও শাশ্বত ।

  1. ‘ শান্ত হলুদ দেবতারা’- দেবতাদের ‘ শান্ত হলুদ বলা হয়েছে কেন ? তাদের কী পরিণতি হয়েছিল ? 

Ans: দেবতারা ‘ শান্ত হলুদ কেন উত্তর / ‘ অসুখী একজন ‘ কবিতায় কবি চলে যাওয়ার পর একসময় যুদ্ধ বাধল । সেই যুদ্ধের বীভৎসতায় নগরসভ্যতা , কবির স্বপ্নের বাড়ি – ঘর সব চূর্ণ হয়ে গেল , এমনকি ধ্বংস হল দেবতাদের মন্দিরও । হাজার হাজার বছরের যে – দেবতারা মানুষের মনে বিশ্বাস জাগিয়ে এসেছেন , যুদ্ধ তাদেরও আসনচ্যুত করল । প্রাচীন দেবতাদের নিষ্ক্রিয়তা ও জীর্ণতাকে বোঝাতে হলুদ ও শান্ত বলা হয়েছে । যুদ্ধের আগুনে নগর পুড়লে দেবালয়ও বাদ যায় না । মানুষের মনে দেবতারা যে – বিশ্বাস বোধের জন্ম দিয়েছিল , তা পরিণতি ধ্বংস হল । 

  1. তারা আর স্বপ্ন দেখতে পারল না ।’- উদ্ধৃতাংশটির তাৎপর্য বিশ্লেষণ করো । 

Ans: উদ্ধৃত অংশটি পাবলো নেরুদার কবিতা ‘ অসুখী একজন ‘ থেকে গৃহীত । 

 এখানে কবি বিনাশ ও ধ্বংসের কলরোলে দৈবীমহিমার অসারতার প্রতি কটাক্ষপাত করেছেন । মানবতার অপচয় প্রাণহানি কিংবা চূড়ান্ত বীভৎসতার সময় কোনো দৈব – মাহাত্ম্য প্রতিরোধ গড়ে তুলতে পারে না । উদ্ধৃতাংশের তাৎপর্য মানুষের মতোই একইরকমভাবে যুদ্ধ -তাণ্ডবের ভয়াবহতায় তারাও নিরাশ্রয় , অস্তিত্বহীন এবং চূর্ণবিচূর্ণ হয় । তাই এককথায় দৈব ক্ষমতার ফানুস চুরমার হয়ে যাওয়ায় তাদের যেন মানুষকে স্বপ্ন দেখানোর ক্ষমতা লোপ পায় । আলোচ্য অংশে কবির এই ভাবনাই প্রকাশ পেয়েছে ।

  1. প্রাচীন জলতরঙ্গ / সব চূর্ণ হয়ে গেল , ‘ — উদ্ধৃতাংশে কবি কী বুঝিয়েছেন ? 

প্রশ্নোস্তৃত অংশে কবি বুঝিয়েছেন ত্তর প্রশ্নোদ্ভূত অংশটি , পাবলো নেরুদার ‘ অসুখী একজন ’ কবিতা থেকে গৃহীত । আগ্নেয়পাহাড়ের মতো রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের লেলিহান আগুন সমতলকেও গ্রাস করেছিল । কবির শৈশবের স্মৃতিবিজড়িত মিষ্টি বাড়িটিও যুদ্ধের নির্মম আঘাতে ধ্বংস হয়েছিল । তার বারান্দার ঝুলন্ত বিছানা , গোলাপি গাছ , ছড়ানো করতলের মতো পাতা , চিমনি ও প্রিয় প্রাচীন জলতরঙ্গ এইসব চূর্ণ হল , সম্পূর্ণ ভস্ম হল আগুনে । অর্থাৎ কবির আশ্রয় ও অস্তিত্বের একমাত্র প্রতীকচিহ্নটিও যুদ্ধের নিষ্ঠুর ধ্বংসলীলায় নিশ্চিহ্ন হয়েছিল । 

9.‘ সেখানে ছড়িয়ে রইল কাঠকয়লা’— বলতে কবি প্রশ্নোদৃত অংশে কৰি বুঝিয়েছেন কী বুঝিয়েছেন ?

Ans: পাবলো নেরুদার ‘ অসুখী একজন ’ কবিতাটিতে কোনো এক অজ্ঞাত কারণে কবি প্রিয়তমা , ঘরবাড়ি , এমনকি তাঁর প্রিয় শহরও ছেড়ে চলে যেতে বাধ্য হন । এরপরে একদিন আসে বীভৎস যুদ্ধ । যার করাল গ্রাসে কবির ঘরবাড়ি , দেবালয় সমস্ত কিছু চূর্ণ হয়ে আগুনে জ্বলে যায় । শহরটিও বাদ যায় না । এক সময়ের সুন্দর শহরে ছড়িয়ে থাকে কাঠকয়লা , দোমড়ানো লোহা , মৃত পাথরের মূর্তির বীভৎস মাথা আর রক্তের দাগ । আসলে শহরের বিধ্বংসী রূপটি তুলে ধরতেই উদ্ধৃতিটি ব্যবহৃত হয়েছে । 

  1. ‘ আর সেই মেয়েটি আমার অপেক্ষায় । মেয়েটি কে ? সে অপেক্ষা করে কেন ? 

Ans: পাবলো নেরুদার ‘ অসুখী একজন ‘ কবিতায় ‘ সেই মেয়েটি ’ হল কথকের প্রিয়তমা , যাকে রেখে কবি বহুদূরে চলে গিয়েছিলেন । কবি যে আর ফিরে আসবেন না এ কথা তার প্রিয়তমা জানত না । তার অপেক্ষার বোঝা গভীর থেকে গভীরতর হলেও সে ভেঙে পড়েনি । এই মেয়েটিকে ধ্বংস যেন স্পর্শ করতে পারে না ; মৃত্যু – যুদ্ধ – হিংসা , দাঙ্গার স্পর্শ পেরিয়েও তাই সে অমলিন থাকে । কারণ ভালোবাসার কখনও মৃত্যু হয় না । সেসময় থেকে সময়ান্তরে অপেক্ষা করে বয়ে চলে নিজস্ব ধারায় ।

  1. তারা তো স্বপ্ন দেখতে পারল না । তারা কারা ? কেন তারা স্বপ্ন দেখতে পারল না ?

Ans: পাবলো নেরুদার ‘ অসুখী একজন ‘ কবিতা থেকে নেওয়া তাদের পরিচয় । উদ্ধৃতাংশে ‘ তারা ‘ বলতে শান্ত হলুদ দেবতাদের কথা বলা হয়েছে । 

 – দ্বিতীয় অংশের জন্য  প্রশ্নের দ্বিতীয় অনুচ্ছেদটি দ্যাখো । 

  1. শান্ত হলুদ দেবতারা / যারা হাজার বছর ধরে ডুবেছিল খ্যানে কোন কবিতার অংশ ? শান্ত হলুদ দেবতাদের হাজার বছর ধরে ডুবে থাকার অর্থটি বুঝিয়ে দাও । 

Ans: প্রশ্নে উদ্ধৃত পঙ্ক্তিটি পাবলো নেরুদার ‘ অসুখী একজন ’ কবিতার অংশ । প্রশ্নোবৃত অংশের অর্থ → এখানে ঈশ্বর বা দেবতা এক জীর্ণ বিশ্বাসের প্রতীক হিসেবে চিহ্নিত । তাদের নিষ্ক্রিয় প্রাচীনতা কবি ‘ শান্ত হলুদ ‘ শব্দবন্ধের মাধ্যমে ফুটিয়ে তুলেছেন । আর দেবতাদের হাজার বছর ধরে ধ্যানে ডুবে থাকার মধ্যে তিনি দৈব – মহিমার ভূমিকাহীন অসারতার ভাবটিকে ফুটিয়ে তুলেছেন । আসলে এই ক্রিয়াহীন , নিশ্চল ও ধ্যানস্থ অবস্থা আমাদের টের পাইয়ে দেয় ; মানবজীবনের উত্থানপতনের সঙ্গে দেবত্বের কোনো সম্পর্ক নেই । 

  1. ‘ সে জানত না’— কী জানত না ? না – জানা বিষয়টি বিশ্লেষণ করো । 

Ans: নেরুদার ‘ অসুখী একজন ’ কবিতায় অপেক্ষাতুরা মেয়েটির এ কথা জানা ছিল না যে , কবি আর কখনও স্ববাসভূমিতে ফিরে আসবেন না । পাঠ্য কবিতাটি শুরু হয় এক বিদায়দৃশ্যকে অবলম্বন করে । বাড়ির দরজায় প্রিয়তমাকে ফেলে রেখে কবি চলে যান বহুদুরের অজ্ঞাত কোনো স্থানে । এই যাত্রার কারণ কবিতায় উল্লিখিত হয় না । কিন্তু এটা স্পষ্ট হয়ে ফুটে ওঠে তিনি তাঁর ভালোবাসার নারী , প্রিয় না – জানা বিষয়টি ঘরবাড়ি এবং পছন্দের শহরটিকে ছেড়ে চলে যেতে বাধ্য হন । এই সমস্ত কিছুর সঙ্গে চিরবিচ্ছেদের এ ঘটনা কবিকে পীড়িত ও বিচলিত করে । অথচ মেয়েটি তা বুঝতে পারে না । মেয়েটির জীবনে প্রিয়তমের জন্য অন্তহীয় অপেক্ষার পালা এভাবেই নীরবে নেমে আসে ।

  1. কমন উল্টে পড়ল মন্দির থেকে টুকরো টুকরো হয়ে মন্দির থেকে কী উলটে পড়ল ? কী কারণে উলটে পড়েছিল ? 

Ans: পাবলো নেরুদার ‘ অসুখী একজন ‘ কবিতা অনুসারে মন্দির থেকে শান্ত হলুদ দেবতারা উলটে পড়েছিল । 

  আগ্নেয়পাহাড়ের মতো ভয়াবহ যুদ্ধ সমতলে ছড়িয়ে পড়েছিল । সেই যুদ্ধের লেলিহান শিখায় ধ্বংস হয়েছিল মন্দির ও বিগ্রহ । কবির ভাষায় ‘ শান্ত হলুদ ’ দেবতাদের দেবালয় টুকরো টুকরো হয়ে উলটে পড়ে । অর্থাৎ যুদ্ধের রক্তক্ষয়ী স্পর্শে মানুষের অন্তরমনের হাজার বছরের জীর্ণ বিশ্বাস টাল খায় । যুদ্ধ যেন দেবত্বের ধ্যানস্থ – নিষ্ক্রিয় অবস্থাকেও ভেঙে চুরমার করে । 

==========================================================

অসুখী একজন কবিতার আরো প্রশ্নোত্তর-PART-2

অসুখী একজন কবিতার আরো প্রশ্নোত্তর-PART-3

==============================================================

সংক্ষিপ্ত উত্তর ভিত্তিক প্রশ্ন (SAQ)

[প্রতিটি প্রশ্নের প্রশ্নমান ৩]

১। ‘সব চূর্ণ হয়ে গেল, জ্বলে গেল আগুনে’। কোন কোন জিনিসের কথা বলা হয়েছে? এই পরিণতির কারণ কি? ১+২
উত্তর – আলোচ্য উক্তিটি-তে কবির ফেলে আসা প্রিয় বাড়ি,বারান্দা, ঝুলন্ত বিছানা, গোলাপি গাছ, চিমনি,প্রাচীন জলতরঙ্গ এইসব জিনিসের কথা বলা হয়েছে।
এই কবিতাটিতে কবির বিপ্লবী রূপের প্রকাশ ঘটেছে যেখানে কবি তার বাসস্থান ছেড়ে চলে যাচ্ছেন যুদ্ধে। ক্রমে সেই যুদ্ধে ধ্বংস হয়ে যায় কবির প্রিয় সকল বস্তু, যা তিনি ছেড়ে এসেছেন। তাই ধ্বংসাত্মক এই পরিণতির একমাত্র কারণ যুদ্ধ।

২। ‘সে জানত না আমি আর কখনো ফিরে আসব না’- ‘সে’ কে? আমি আর কখনো ফিরে আসব না বলার কারণ কি? (১+২)
উত্তর – আলোচ্য উক্তিটি তে সে বলতে এখানে বলা হয়েছে কবির প্রিয়তমা বা প্রিয়জনকে।
এই কবিতায় কবি দেশের জন্য বিপ্লবী হয়েছেন এবং বাড়ি ছেড়েছেন। কিন্তু কবি তার প্রিয়তমাকে তার ফিরে না আসার কথা জানাননি কারণ কবি তার ভবিষ্যৎ পরিণতির ব্যাপারে অবগত ছিলেন না। দেশকে স্বাধীনতা ও শোষণ থেকে মুক্ত করার জন্য কবি নিজের জীবন সমর্পন করেছেন। এইজন্যই কবি কবিতায় না ফিরে আসার কথা বলেছেন।

৩। ‘সব চূর্ণ হয়ে গেল, জ্বলে গেল আগুনে’- কবিতা অনুসরণে পরিস্থিতি বিবরণ দাও। (৩)
উত্তর -আলোচ্য উক্তিটি কবি পাবলো নেরুদার লেখা কবিতার অংশ। সেখানে কবি যুদ্ধে চলে যান। তারপরেই যুদ্ধের সেই নির্ঘণ্ট আসে শহরে হত্যালীলা শুরু হয়, যা থেকে শিশুরাও নিস্তার পায়না। চারিদিকে আগুন লেগে যায় সেই আগুনেই পুড়ে যায় মানুষের ঈশ্বরের প্রতি বিশ্বাস এবং খন্ড-বিখন্ড হয় দেবতার মূর্তি। ধ্বংসস্তুপে পরিণত হয় কবির সেই ফেলে আসা সুন্দর বাড়ি, ঝুলন্ত বিছানা, প্রিয় গোলাপ গাছ ও প্রাচীন জলতরঙ্গ সহ সবকিছু।

৪। ‘শান্ত হলুদ দেবতারা’- দেবতাদের শান্ত হলুদ বলা হয়েছে কেন? তাঁদের কি পরিণতি হয়েছিল? ২+১
উত্তর -আলোচ্য উক্তিটি কবি পাবলো নেরুদার লেখা অসুখী একজন কবিতার অংশ। এই কবিতায় মন্দিরের দেবতারা দীর্ঘকাল ধরে একই ভাবে পূজিত হচ্ছেন, প্রাচীনত্ব বোঝাতে হলুদ এবং দেবতার স্থবিরতা বোঝাতে শান্ত শব্দবন্ধ ব্যবহার করা হয়েছে।যুদ্ধের আবহে যখন চারিদিকে আগুন ধরে গেল সেই যুদ্ধানলের শিকার হয়ে হাজার বছর ধরে ধ্যানমগ্ন অবস্থায় থাকা মন্দিরের দেবতারা খণ্ড -বিখন্ড হয়ে ছিটকে পড়েছিল মন্দির থেকে।

৫। যুদ্ধকে ‘রক্তের এক আগ্নেয় পাহাড়ের মতো’ বলা হয়েছে কেন?
উত্তর -প্রশ্নে উল্লিখিত লাইনটি কবি পাবলো নেরুদার লেখা অসুখী একজন কবিতা থেকে নেওয়া হয়েছে।
আমরা জানি আগ্নেয় পাহাড় থেকে লাভা নির্গমন হয়, সেই লাভায় ভস্মীভূত হয় সবকিছু। কবি যুদ্ধকে রক্তের আগ্নেয় পাহাড়ের সাথে তুলনা করেছেন, কারণ যুদ্ধ আগ্নেয় পাহাড়ের মতই ধ্বংসাত্মক। লাভা যেমন সব কিছুকে ভস্মীভূত করে দেয়, ঠিক একই ভাবে যুদ্ধ গ্রাস করে সভ্যতাকে, বলি হয় অসংখ্য প্রাণ। লাভা স্রোতের মত চারিদিকে বয়ে যায় রক্তের বন্যা।

==========================================================

অসুখী একজন কবিতার আরো প্রশ্নোত্তর-PART-2

অসুখী একজন কবিতার আরো প্রশ্নোত্তর-PART-3

==============================================================

রচনাধর্মী প্রশ্নোত্তর | অসুখী একজন (কবিতা) পাবলো নেরুদা – মাধ্যমিক বাংলা প্রশ্ন ও উত্তর | Madhyamik Bengali Asukhi Ekjon Question and Answer

1. ‘ আর সেই মেয়েটি আমার অপেক্ষায়।— অপেক্ষমান এই নারার মধ্যে দিয়ে কবি মানবীয় ভালোবাসার যে – অনির্বাণ রূপটিকে ফুটিয়ে তুলেছেন , তা পাঠ্য কবিতা অবলম্বনে আলোচনা করো । 

অথবা , যুদ্ধের নেতিবাচক ভাবের পাশাপাশি যে – মানবিক আবেদন ‘ অসুখী একজন ’ কবিতায় প্রকাশিত হয়েছে আলোচনা করো । 

Ans: পাবলো নেরুদা তাঁর ‘ অসুখী একজন ’ কবিতার অপেক্ষমান নারীর মধ্যে ভালোবাসার অনির্বাণ রূপটি ফুটিয়ে তুলেছেন । কথক তার প্রিয় নারীকে রেখে চলে যান বহুদূরে । সে জানত না যে , তার প্রিয়তম আর ফিরে আসবে না । সময় চলমান , জীবনও তার সঙ্গে চলমান । সপ্তাহ – বছর কেটে যায় । কথকের পদচিহ্ন ধুয়ে গিয়ে তার ওপর ঘাস জন্মায় । তবুও সে নারীর অপেক্ষা থামে না । এইভাবে অপেক্ষার প্রহর গুনতে গুনতে মুহূর্তগুলো একটার – পর – একটা পাথরের মতো ভারী হয়ে নেমে আসে মেয়েটির মাথার ওপর । 

 অপেক্ষমান নারীর প্রতীক্ষা অনির্বাণ রূপ – যুদ্ধ ও যুদ্ধের আগুন ছড়িয়ে পড়ল সে – শহরে । সে – আগুনের করাল গ্রাসের হাত থেকে বাদ গেল না শিশু কিংবা দেবতারাও । শান্ত হলুদ দেবতারা তাদের মন্দির থেকে টুকরো টুকরো হয়ে ভেঙে পড়ে । কবির স্বপ্নের বাড়ি – ঘর সব চূর্ণ হয়ে যায় , পুড়ে যায় আগুনে । যেখানে শহর ছিল সেখানে চারদিকে ছড়িয়ে রইল কাঠকয়লা , দোমড়ানো লোহা , পাথরের মূর্তির বীভৎস মাথা আর রক্তের একটা কালো দাগ । কিন্তু এতসবের মধ্যেও কবির প্রিয়তমা বেঁচে রইল কারণ প্রেম শাশ্বত , তার মৃত্যু নেই । এই প্রেম মানুষকে মরতে মরতে বাঁচতে শেখায় । এই ধ্বংসের মধ্যেও বেঁচে থাকে মেয়েটির অনির্বাণ ভালোবাসা , বেঁচে থাকে ভালোবাসার মানুষের জন্য তার প্রতীক্ষা ।

2. ‘ তারপর যুদ্ধ এল ‘ — পাঠ্য কবিতায় কবি যুদ্ধের যে – আশ্চর্য করুণ ও মর্মস্পর্শী ছবি এঁকেছেন , তা নিজের ভাষায় আলোচনা করো । 

অথবা , শিশু আর বাড়িরা খুন হলো ।’— এই আশ্চর্য – সংহত ছবিটির মধ্যে যুদ্ধের পৈশাচিক বর্বরতা কীভাবে প্রকাশিত হয়েছে তা কবিতা অবলম্বনে লেখো । 

Ans: চিলিয়ান কবি পাবলো নেরুদা জীবনযুদ্ধের একজন লড়াকু সৈনিক । চোখের সামনে ঘটে যাওয়া দুই বিশ্বযুদ্ধ প্রত্যক্ষ করেছেন তিনি । তাই পাঠ্য কবিতায় তিনি যুদ্ধের যে – করুণ ও মর্মস্পর্শী ছবি এঁকেছেন তা অত্যন্ত বাস্তবোচিত । ‘ অসুখী একজন ‘ কবিতাটি আসলে যুদ্ধের প্রেক্ষাপটে এক শাশ্বত ভালোবাসার গল্প । কবি যুদ্ধের বীভৎসতার মাঝে প্রেম যে অনির্বাণ তা দেখাতে গিয়ে খণ্ড খণ্ড যুদ্ধের চিত্র তুলে ধরেছেন । কবি তাঁর প্রিয়তমাকে অপেক্ষায় রেখে দূরে চলে যাওয়ার পর একদিন ভয়াবহ বীভৎসতা নিয়ে যুদ্ধ নেমে এল । মানুষ আশ্রয়হীন হল । নৃশংসতার হাত থেকে রেহাই পেল না শিশুরাও । দাবানলের মতো যুদ্ধের আগুন সমতলে ছড়িয়ে পড়ল । ধ্বংস হল দেবালয় আর তার ভেতরের দেবতারা । তাদের দেবত্ব নষ্ট হল । মানুষকে তারা স্বপ্ন দেখাতে ব্যর্থ হল । কবির সেই মিষ্টি বাড়ির ঝুলন্ত বিছানা , গোলাপি গাছ , প্রাচীন জলতরঙ্গ সব চূর্ণ ও ভস্ম হল যুদ্ধের আগুনে । ঠিক একইভাবে শহরটাও পুড়ে গেল । বীভৎসতার চিহ্ন নিয়ে ছড়িয়ে – ছিটিয়ে পড়ে রইল কাঠকয়লা , দোমড়ানো লোহা , পাথরের মূর্তির বীভৎস মাথা আর রক্তের একটা কালো দাগ । শুধু সেই ধ্বংসস্তূপে বেঁচে থাকল মেয়েটির অপেক্ষা ও অবিচল ভালোবাসা ।

3. ” আমি তাকে ছেড়ে দিলাম কোন কবিতার অংশ ? ‘ আমি ‘ কে ? তাঁর ‘ ছেড়ে আসার তাৎপর্য ব্যাখ্যা করো । 

Ans: চিলিয়ান কবি পাবলো নেরুদার ‘ অসুখী একজন ‘ কবিতা থেকে উদ্ধৃত অংশটি গৃহীত । তাৎপর্য । → পাঠ্য কবিতায় ‘ আমি ‘ বলতে কবিকে বোঝানো হয়েছে । কবি এখানে কথকের ভূমিকায় স্মৃতিচারণার মাধ্যমে বর্তমানে এসে উপস্থিত হয়েছেন । কবির ব্যক্তিজীবনের ছায়া পড়েছে কবিতাটিতে । কখনও কর্মসূত্রে কখনও – বা রাজনৈতিক কারণে তাঁকে জীবনে বহুবার স্বদেশভূমি ছেড়ে আত্মগোপন করতে , কিংবা নির্বাসিত হতে হয়েছে । সেই ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতার যন্ত্রণা ও অনুভূতি পাঠ্য কবিতার কাব্যগুণে একটা সর্বজনীন রূপ পেয়েছে । কবি জীবিকা কিংবা জীবনের তাগিদে স্বদেশভূমি ত্যাগ করে প্রিয়তমাকে অপেক্ষায় রেখে বহুদুরে চলে যান । কবি যে ফিরে আসবেন না তা অপেক্ষারতা প্রিয়তমার জানা ছিল না । কবি দেশত্যাগ করা সত্ত্বেও প্রিয়তমার জীবন আপন গতিতেই চলে । এভাবেই সপ্তাহ থেকে বছর কেটে যায় । কবির পদচিহ্ন বৃষ্টিতে ধুয়ে যায় , সেখানে ঘাস জন্মায় । বিচ্ছেদের বছরগুলো একটার পর একটা পাথরের মতো মাথায় নেমে আসে । এরপর যুদ্ধ শুরু হয় , ধ্বংস হয় ঘরবাড়ি , মৃত্যু হয় শিশুদেরও । ক্রমে ধ্বংসের সেই আগুনে দেবালয় , কবির স্বপ্নের বাড়ি এবং শহর সব কিছু ছারখার হয়ে যায় । তবু এই ধ্বংসস্তূপের মধ্যে বেঁচে থাকে মেয়েটির ভালোবাসা । তার অপেক্ষা , চিরন্তন ভালোবাসা অবিনাশী যা ধ্বংসস্তূপে আলোর মতো মানবহৃদয়ের বিশুদ্ধতাকে জ্বালিয়ে রাখে । 

4. যেখানে ছিল শহর’— ‘ যেখানে ‘ শব্দটি প্রয়োগ করার কারণ কা ? শহরটির কী হয়েছিল ?

Ans: উদ্ধৃতিটি পাবলো নেরুদার ‘ অসুখী একজন ’ কবিতার অংশ । কথক বা কবির বাসভূমি যে শহরে , এক্ষেত্রে সেখানকার কথা বলা হয়েছে । এই শহরটি কবি বা কথকের কাছে স্মৃতিবিজড়িত , কারণ এখানেই তিনি তার প্রিয় নারীটিকে অপেক্ষমান রেখে বহুদুরে পাড়ি দিয়েছিলেন । কবির এই বাসভূমি , প্রিয় মুখের সান্নিধ্যে , প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে , স্নিগ্ধতায় ও লাবণ্যে পরিপূর্ণ ছিল । তখনও যুদ্ধের আঘাত এই শহরকে স্পর্শ করতে পারেনি বোঝাতেই কবি ‘ যেখানে ‘ শব্দটি প্রয়োগ করেছেন । 

 যুদ্ধের ভয়ংকর নিষ্ঠুরতায় কবির শহর ধ্বংসের মুখোমুখি গিয়ে দাঁড়ায় । যুদ্ধের আঘাতে সমস্ত সমতলজুড়ে আগুন লাগল । দেবালয়ও তার হাত থেকে রক্ষা পেল না । মানুষের মধ্যেকার যে – দেবত্বের যুদ্ধ পরবর্তী মিথ ছিল তা ধ্বংস হয়ে গেল । সেইসঙ্গে নিশ্চিহ্ন হল কবির মধুর স্মৃতিবিজড়িত সেই স্বপ্নের বাড়িটিও । কবির বারান্দায় যেখানে ঝুলন্ত বিছানায় তিনি ঘুমিয়েছিলেন , তার প্রিয় গোলাপি গাছ , ছড়ানো করতলের মতো পাতা চিমনি ও প্রিয় জলতরঙ্গ সবই ধ্বংস হল যুদ্ধের আগুনে । গোটা শহরটাই পুড়ে গেল । সেখানে ছড়িয়ে – ছিটিয়ে পড়ে রইল কাঠকয়লা , দোমড়ানো লোহা , মৃত পাথরের বীভৎস মাথা ও রক্তের একটা কালো দাগ । কবির প্রিয় শহরের প্রতিচ্ছবি , যুদ্ধের বীভৎসতা— মানুষের লোভ , হিংসা এবং বর্বরতাকে স্পষ্ট করে তুলেছে , যা পাঠককে স্তম্ভিত করেছে ।

5. পাঠ্য কবিতাটি অতৃপ্ত মানবহৃদয়ের একান্ত আতির ‘ অসুখী একজন কবিতা অবলম্বনে আলোচনা করো । 

অথবা , ‘ অসুখী একজন কবিতায় বিশ্বশান্তির বার্তা নিহিত —– আলোচনা করো । 

অথবা , ‘ অসুখী একজন ‘ কবিতাটিকে যুদ্ধবিরোধী কবিতা বলা যায় । কিনা – বিশ্লেষণ করো । 

Ans: পাবলো নেরুদার কবিতা ‘ অসুখী একজন’— এই বাঞ্ছনাময় নামকরণ থেকেই বোঝা যায় যে , কবিতাটি অতৃপ্ত কোনো বাসনার প্রতিচ্ছবি । অনেক সময় কবি – সাহিত্যিকের ব্যক্তিগত জীবনের প্রতিচ্ছবি যা সর্বজনের ভাবনার সঙ্গে মিলে যায় তা সাহিত্যে প্রতিফলিত হয় । আমাদের পাঠ্য কবিতাটিতেও তা ঘটেছে এ বিষয়ে কোনো সন্দেহ নেই । 

 প্রিয় বিচ্ছেদ – অতৃপ্ত হৃদয়াতি কবিতার কথক অর্থাৎ কবি চরম অতৃপ্তি নিয়ে কোনো এক অজ্ঞাত কারণে দেশ ছাড়তে বাধ্য হন । কিন্তু তাঁর প্রিয় নারী তাঁর অপেক্ষায় থাকে , কেন – না সে জানে না যে , তার প্রিয়তম আর ফিরে আসবে না । কবিতার শেষ পর্যন্ত এই অপেক্ষাকেই আমরা দেখেছি । সময় অতিক্রান্ত হয় , আবছা হয় স্মৃতি , অপেক্ষার বছরগুলো ভারী হয় । প্রাণঘাতী যুদ্ধের বীভৎসতা তাকে পরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন করে । দেবালয় , শহর সব কিছু ধ্বংস হওয়া সত্ত্বেও অতৃপ্ত হৃদয়ে সেই মেয়েটি অপেক্ষার আলোকশিখা দু – হাত দিয়ে আড়াল করে দাঁড়িয়ে থাকে । অন্যদিকে কবিও অতৃপ্ত বাসনা নিয়ে ফিরে আসতে চান তাঁর প্রতীক্ষমান ভালোবাসার কাছে । সব কিছু ধ্বংসের মাঝেও কবির হৃদয়ে অপেক্ষারতা নারীটির মৃত্যু নেই । চিরায়ত অতৃপ্ত মানবাৰ্তিই এই নারী । কবির অতৃপ্ত মন তার কাছে বার বার ফিরে যেতে চায় বলেই তিনি বলে ওঠেন , ‘ আর সেই মেয়েটি আমার অপেক্ষায় ‘ । স্পষ্টতই কবিতাটিতে কবি যুদ্ধবিরোধী মনোভাব নিয়ে বিশ্বশান্তির বার্তা প্রেরণ করেছেন পাঠকের কাছে ।

6. আর সেই মেয়েটি আমার অপেক্ষায় । পাঠ্য ‘ অসুখী একজন ’ কবিতা অবলম্বনে উদ্ধৃতাংশটির তাৎপর্য আলোচনা করো । 

অথবা , ‘ আর সেই মেয়েটি আমার অপেক্ষায় ।’— অপেক্ষারত সেই মেয়েটির মধ্য দিয়ে কবি স্বদেশপ্রেম তথা মানবপ্রেমের যে – শাশ্বত রূপ তুলে ধরেছেন , তা আলোচনা করো । 

অথবা , অপেক্ষারত প্রিয়জনের কাছে ফিরতে না – পারার যে – বেদনা ‘ অসুখী একজন কবিতায় ব্যক্ত হয়েছে আলোচনা করো । 

Ans: কবি পাবলো নেরুদার ‘ অসুখী একজন ‘ কবিতায় মানবমনের এক চিরন্তন সত্য প্রকাশ পেয়েছে । কবি যেন কোনো এক নারীকে তাঁরই অপেক্ষায় দাঁড় করিয়ে দূরে চলে যান । সেই অপেক্ষারতা যদিও জানত না যে , কবি আর কখনও ফিরবেন না । 

 কবিতার আরম্ভের বিচ্ছেদদৃশ্যে লুকিয়ে থাকে দুজন নরনারীর চিরকালীন প্রত্যাশা ও অপেক্ষার বীজ । যদিও জীবন তার উদ্ধৃতাংশের তাৎপর্য নিজের গতিতে চলতে থাকে । টুকরো টুকরো প্রাত্যহিকতায় সপ্তাহ আর বছর কেটে যায় । বৃষ্টিতে কবির পদচিহ্ন ধুয়ে , ‘ ঘাস জন্মালো রাস্তায় ’ । কবির অস্তিত্ব অনেকের মন থেকেই একটু একুট করে মুছে যেতে থাকে । কিন্তু পাথরের মতো ভারী , গভীর ও দীর্ঘস্থায়ী যন্ত্রণায় সেই অপেক্ষারতা নারীর দিন কাটে । এরপর আসে যুদ্ধ । সমতলে আগুন ধরায় । ধ্বংস হয় মানুষের স্বপ্নের আশ্রয় । রক্ষা পায় না শিশুরাও । এতদিনকার রক্ষণশীলতার প্রতীক মন্দির আর মন্দিরের দেবমূর্তিগুলো ধূলিসাৎ হয় । কবির মিষ্টি বাড়িটিও ধ্বংস হয় । যুদ্ধের আগুনে ভস্মীভূত হয় সমস্ত শহর । যত্রতত্র ছড়িয়ে থাকে কাঠকয়লা , দোমড়ানো লোহা , মৃত পাথরের মূর্তির বীভৎস মাথা ও রক্তের শুকনো কালো দাগ । শুধু এই যুদ্ধের বীভৎসতা ছুঁতে পারে না কবির সেই প্রিয় অপেক্ষারতার ভালোবাসাকে । ধ্বংস ও বিনাশের হাজার লেলিহান শিখা তাকে কোনোমতেই ধ্বংস করতে পারে না । সময়ান্তরে প্রবহমান মানবহৃদয়ের যন্ত্রণা , আকুতি ও আর্তিই সেই মেয়েটির মধ্য দিয়ে ফুটে ওঠে , অনুভূতির অবিনাশী প্রকাশ হিসেবে ।

7. ‘ অসুখী একজন ‘ কবিতাটির নামকরণের সার্থকতা বিচার করো । ‘ 

Ans: নামকরণের সার্থকতা ‘ অংশটি দ্যাখো ।

শিশু আর বাড়িরা খুন হলো । 

8. শিশু ’ আর ‘ বাড়িরা ’ কীভাবে খুন হল ? ‘ খুন ’ শব্দটি ব্যবহারের সার্থকতা বিচার করো ।

Ans: আলোচ্য পঙ্ক্তিটি পাবলো নেরুদার লেখা ‘ অসুখী একজন ’ কবিতাটি থেকে গৃহীত । ভয়াবহ এক যুদ্ধে কথকের শহরের শিশু আর গৃহস্থ মানুষেরা খুন হল । কবিতায় ‘ বাড়িরা ‘ বলতে বাড়ির মানুষদের বোঝানো হয়েছে । 

 খুন শব্দ ব্যবহারের সার্থকতা কথক তাঁর প্রিয়তমাকে অপেক্ষায় রেখে দূরে চলে যাওয়ার পর বছর কেটে গেল । একসময় শুরু হল ভয়ানক যুদ্ধ । যুদ্ধের আগুনে পুড়ে ছারখার হয়ে গেল কথকের প্রিয় শহর । ভেঙে পড়ল মন্দির আর মন্দিরের ভেতরের দেবমূর্তি । এমনকি সেই যুদ্ধের হিংস্রতা থেকে রক্ষা পেল না নিরপরাধ শিশুরাও । শহরের বাড়িগুলোও ধ্বংস হল একে একে । এখানে কবি ‘ বাড়িরা ‘ শব্দটি প্রয়োগের মাধ্যমে ঘরবাড়ির মতো জড়পদার্থেও প্রাণের সঞ্চার করেছেন । শিশুদের মতো বাড়িও যে মানুষের পরম আদরের , মমতার সেটা বোঝাতেই কবি ‘ বাড়িরা ’ শব্দটি ব্যবহার করেছেন । যুদ্ধজনিত কারণে মৃত্যুকে সাধারণভাবে ‘ খুন ‘ বলা হয় না । কিন্তু এখানে কবি ইচ্ছাকৃত ভাবেই ‘ খুন ’ শব্দটি ব্যবহার করেছেন । কিছু যুদ্ধবাজ মানুষ স্বার্থসিদ্ধির উদ্দেশ্যে যুদ্ধ বাধায় । কিন্তু তার মাশুল গুনতে হয় দেশের অগণিত সাধারণ মানুষকে । সেই ভয়ানক ধ্বংসলীলায় মানুষ হারায় তার পরিবার , প্রিয়জন , এমনকি শেষ আশ্রয়টুকুও । যুদ্ধের এই ভয়ংকর পরিণতিকে ফুটিয়ে তুলতে কবি এই কবিতায় ‘ খুন ‘ শব্দটি যথাযথভাবে ব্যবহার করেছেন । 

9. তারপর যুদ্ধ এল— ‘ তারপর ’ বলতে কোন সময়ের প্রতি ইঙ্গিত করা হয়েছে ? যুদ্ধের পরিণতির কী হয়েছিল ।

Ans: কবি পাবলো নেরুদার ‘ অসুখী একজন ‘ কবিতায় কবিতার কথক প্রিয়তমাকে নিজ বাসভূমিতে ফেলে রেখে দেশ ছাড়তে বাধ্য হন । অথচ জীবন তার নিজস্ব ছন্দে চলতে থাকে । কিন্তু প্রিয় নারীটির অপেক্ষার যন্ত্রণা ক্রমশ দীর্ঘ থেকে দীর্ঘতর হয় । বছরের পর বছর কাটে । এমন সময় আসে যুদ্ধ । ঘটনা পরস্পরার এই ক্রমটিকে ফুটিয়ে তুলতেই এখানে কবি ‘ তারপর ‘ শব্দটি ব্যবহার করেছেন । 

যুদ্ধের ভয়াবহ বীভৎসতায় মানুষ আশ্রয়হীন হল । নৃশংসতার হাত থেকে রেহাই পেল না শিশুরাও । দাবানলের মতো যুদ্ধের আগুন সমতলে যুদ্ধের পরিণতি ছড়িয়ে পড়ল । ধ্বংস হল দেবালয় আর তার ভেতরের দেবতারা । তাদের দেবত্ব নষ্ট হল । মানুষকে তারা স্বপ্ন দেখাতে ব্যর্থ হল । কবির সেই মিষ্টি বাড়ির ঝুলন্ত বিছানা , গোলাপি গাছ , প্রাচীন জলতরঙ্গ সব চূর্ণ ও ভস্ম হল যুদ্ধের আগুনে । ঠিক একইভাবে শহরটাও পুড়ে গেল । বীভৎসতার চিহ্ন নিয়ে ছড়িয়ে – ছিটিয়ে পড়ে রইল কাঠকয়লা , দোমড়ানো লোহা , পাথরের মূর্তির বীভৎস মাথা আর রক্তের একটা কালো দাগ । শুধু সেই ধ্বংসস্তূপে বেঁচে থাকল মেয়েটির অপেক্ষা ও অভিল ভালোবাসা । 

10. গছে আর সেই মেয়েটি আমার অপেক্ষায় ! — ‘ অসুধী একজন ‘ কবিতার মেয়েটি কে ? মেয়েটির অপেক্ষার প্রেক্ষাপট বর্ণনা করো ।

Ans: 6. নং প্রশ্নের উত্তর দ্যাখো । 

11. ‘অসুখী একজন — কবিতায় কাকে অসুখী বলা হয়েছে ? তার অসুখী হওয়ার নেপথ্যে কোন্ কারণ রয়েছে ?

Ans: পাবলো নেরুদার ‘ অসুখী একজন ’ কবিতায় প্রিয়তমের জন্য অসুখী কে ? অপেক্ষারতা মেয়েটিকে অসুখী বলা হয়েছে । আবার ফিরে আসতে উৎসুক কবি – হৃদয়ও এক্ষেত্রে একইভাবে অসুখী । 

 একদিন কবি স্বদেশ ত্যাগ করতে বাধ্য হন । তাঁর এই নিষ্ক্রমণ চিরদিনের জন্য । অথচ অপেক্ষমান প্রিয়তমার এ সত্য জানা নেই । যদিও জীবন নিজস্ব ছন্দে বয়ে চলে । দৈনন্দিনতার গতি কবির স্মৃতিকে ক্রমশ ফিকে অসুখী হওয়ার কারণ করে তোলে । বছর গড়ায় । কিন্তু ভালোবাসার মেয়েটির কাছে এই অন্তহীন অপেক্ষা গভীর ও ভারী পাথরের আঘাতের মতোই শ্বাসরুদ্ধকারী হয়ে ওঠে । এরপর যুদ্ধের | বীভৎসতা সমস্ত সমতলকে গ্রাস করে । ভেঙে চূর্ণবিচূর্ণ হয় দেবতা ও দেবালয় । ধ্বংসের লেলিহান আগুনে ক্রমে জ্বলে পুড়ে ছারখার হয়ে যায় । কবির প্রিয় বাড়ি , বারান্দার ঝুলন্ত বিছানা , গোলাপি গাছ , করতলের মতো পাতা চিমনি , প্রাচীন জলতরঙ্গ— এই সব কিছু । মানুষ তার আশ্রয় হারায় । যুদ্ধের নৃশংসতায় শিশুরাও খুন হয় । শহরের বদলে সেখানে ছড়িয়ে থাকে কাঠকয়লা , দোমড়ানো লোহা , পাথরের মূর্তির বীভৎস মাথা আর রক্তের | কালো দাগ । শুধু অপেক্ষারতা সেই মেয়েটিকে কোনো বিনাশ স্পর্শ করতে পারে না । সমূহ ধ্বংস আর বর্বরতার মধ্যেও অসুখী মেয়েটি তার ভালোবাসার আর্তি ও আকুতিকে অনির্বাণ দীপশিখার মতো জ্বালিয়ে রাখে ।

==========================================================

অসুখী একজন কবিতার আরো প্রশ্নোত্তর-PART-2

অসুখী একজন কবিতার আরো প্রশ্নোত্তর-PART-3

==============================================================

রচনাধর্মী প্রশ্ন (LA)

[প্রতিটি প্রশ্নের প্রশ্নমান ৫]

১। যেখানে ছিল শহর / সেখানে ছড়িয়ে রইল কাঠকয়লা।– অসুখি একজন কবিতা অবলম্বনে শহরের এই পরিণতি কীভাবে হল লেখো।
উত্তর – আলোচ্য উক্তিটি কবি পাবলো নেরুদার লেখা ও নবারুণ ভট্টাচার্য-তর্জমিত অসুখী একজন থেকে নেওয়া হয়েছে। কবিতায় কবি তার প্রিয়জনকে অপেক্ষায় রেখে, তার প্রিয় শহর ছেড়ে অনেক দূরে যুদ্ধে চলে যান। বছরের পর বছর অতিবাহিত হয় কিন্তু কবির আর ঘরে ফেরা হয় না । এরপর যুদ্ধ আসে রক্তের আগ্নেয় পাহাড়ের রূপে। সেই যুদ্ধে মর্মান্তিকভাবে প্রাণ যায় মানুষের, ধ্বংস হয় শহর – সভ্যতা। কবি তাঁর বর্ণনায় বলছেন –

“যেখানে ছিল শহর
সেখানে চিড়িয়ে রইল কাঠকয়লা…..”

শুধু তাই নয়, মানুষের বিশ্বাসের প্রতীক মন্দির থেকে দেবতার মূর্তি খন্ড খন্ড হয়ে খসে পড়ে অর্থাৎ মানুষের ঈশ্বরের প্রতি বিশ্বাসও আগুনে পুড়ে নষ্ট হয়ে যায়। কবির সেই ফেলে আসা সুন্দর মুহূর্তগুলি, স্মৃতির স্থানগুলি ও জিনিসপত্র ধ্বংসস্তুপে পরিণত হয়। যা ছিল সাজানো শহর তা পরিণত হয় কাঠ কয়লার ধ্বংসস্তুপে। চারিদিকে আর কিছু অবশিষ্ট থাকে না, শুধু ধ্বংসের প্রমাণ হিসাবে থেকে যায় রক্তের কালো দাগ। যেখানে আগে মানুষের সমাগম ছিল সেখানে এখন রক্তাক্ত হয়ে পড়ে থাকে শুধু নিথর শবদেহ ।

২। অসুখী একজন কবিতায় কাকে অসুখী বলা হয়েছে? তার অসুখী হওয়ার নেপথ্যে কোন কারণ রয়েছে? (১+৪)
উত্তর – অসুখী একজন কবিতায় কবির প্রিয়তমা-কে বা ‘সেই মেয়েটিকে’ অসুখী বলা হয়েছে, যাকে কবি যুদ্ধের আগে অপেক্ষারত অবস্থায় রেখে এসেছিলেন।
বিখ্যাত কবি পাবলো নেরুদার লেখা “Extravagaria ” গ্রন্থের ‘La Desdichada’ কবিতাটি ‘অসুখী একজন’ নামে অনুবাদ করেন নবারুণ ভট্টাচার্য । কবি এখানে অপেক্ষারত মেয়েটিকে একটি প্রতীক হিসাবে ব্যবহার করেছেন। এই কবিতায় কবি একজন বিপ্লবী, তিনি দেশের জন্য প্রিয় শহর – প্রিয় মানুষ, প্রিয় স্মৃতি ছেড়ে যুদ্ধে চলে যাচ্ছেন। কবি জানেন না যে তিনি আর তাঁর প্রিয় শহর, মানুষ এবং স্মৃতির কাছে ফিরে আসতে পারবেন কিনা। কারণ এরপর যুদ্ধ আসবে, যুদ্ধের বিভীষিকাময় গ্রাসে ধ্বংস হবে শহর – সভ্যতা। প্রাণ যাবে অসংখ্য শিশু – বৃদ্ধ মানুষের। ধ্বংসস্তূপের চারিপাশে পড়ে থাকবে কাঠ – কয়লার শহর, মৃত-দেহস্তূপ, ভেঙে-যাওয়া দেবতার মূর্তির ধ্বংসাবশেষ আর শুকিয়ে যাওয়া রক্তের-কালোদাগ। কিন্তু চারপাশের এই পরিস্থিতির মাঝেও আশার প্রতিরুপ ‘সেই মেয়েটি’ অসুখী হৃদয়ে দীর্ঘ সময়ের ধরে অপেক্ষা করেন কথকের ফিরে আসার জন্য।

 

৩। ‘শিশু আর বাড়িরা খুন হলো’। এই আশ্চর্য সংহত ছবিটির মধ্যে যুদ্ধের পৈশাচিক বর্বরতা কীভাবে প্রকাশিত হয়েছে তা কবিতা অবলম্বনে লেখো।
উত্তর – বিখ্যাত কবি পাবলো নেরুদার লেখা “Extravagaria ” গ্রন্থের ‘La Desdichada’ কবিতাটি ‘অসুখী একজন’ নামে অনুবাদ করেন নবারুণ ভট্টাচার্য। এই কবিতা থেকেই আলোচ্য বিষয়েটি নেওয়া হয়েছে। এই কবিতায় কথকের চোখে ধরা দিয়েছে এক মর্মান্তিক ঘটনা-যুদ্ধ । কবির ভাষায় যুদ্ধ হল রক্তের এক আগ্নেয় পাহাড়ের মতো যা শুধু ধ্বংস করে, কেড়ে নেয় অসংখ্য প্রাণ। এই যুদ্ধের কারণেই কত সাধারণ মানুষকে প্রাণ হারাতে হয় ঠিক যেমন কবি লিখেছেন এই কবিতায়…

‘শিশু আর বাড়িরা খুন হল’

এই যুদ্ধে শুধু বিপ্লবীরাই মৃত্যু বরণ করেন না, তাদের সাথে সাধারণ মানুষকেও খুন হতে হয়, চারিদিকে শুধুমাত্র চলতে থাকে হত্যালীলা। এই যুদ্ধ এমনই নৃশংস-বর্বর যা কাউকেই ছাড়ে না। সেই যুদ্ধে ধ্বংস হয়ে যায় কবির প্রিয় বাড়ি, বারান্দায় ঝুলন্ত বিছানা,প্রিয় গোলাপ গাছ ও প্রাচীন জলতরঙ্গ। এছাড়া যুদ্ধে ধবংস হয় শহর, মন্দির । মানুষের বিশ্বাস ভেঙ্গে দেবতারা টুকরো হয়ে ছিটকে পড়ে মন্দিরের বাইরে। দোমড়ানো লোহা ও কাঠকয়লার মাঝে শুধুই ফুটে ওঠে রক্তের কালো দাগ।

=========================

©kamaleshforeducation.in(2023)

 

অদল বদল

 

অদল বদল (গল্প) পান্নালাল প্যাটেল – মাধ্যমিক দশম শ্রেণীর বাংলা প্রশ্ন ও উত্তর  

MCQ | অদল বদল (গল্প) পান্নালাল প্যাটেল – মাধ্যমিক বাংলা প্রশ্ন ও উত্তর 

  1. ‘ হোলির দিনের পড়ন্ত বিকেল । – হোলি যে – ঋতুতে হয় , তা হল –

(A) বসন্ত 

(B) শীত

(C) হেমন্ত 

(D) শরৎ

Ans: (A) বসন্ত

  1. ‘ গড়ন্ত ‘ শব্দের অর্থ হল –

(A) পড়াশোনা করছে এমন 

(B) পতনোন্মুখ 

(C) শেষ হয়ে আসছে এমন

(D) পরিত্যক্ত

Ans: (C) শেষ হয়ে আসছে এমন

  1. পান্নালাল প্যাটেল ছিলেন –

(A) বাংলা ভাষার লেখক 

(B) হিন্দি ভাষার লেখক

(C) গুজরাটি ভাষার লেখক 

(D) মারাঠি ভাষার লেখক

Ans: C) গুজরাটি ভাষার লেখক

  1. নিম গাছের নীচে গাঁয়ের একদল ছেলে জড়ো হয়ে যা খেলছিল , তা হল –

(A) ফুটবল 

(B) ধুলো ছোড়াছুড়ি 

(C) ছোঁয়াছুঁয়ি

(D) দড়ি টানাটানি

Ans: (B) ধুলো ছোড়াছুড়ি

  1. ‘ অদল বদল ‘ যে – দুই বন্ধুর গল্প , তাদের নাম হল –

(A) অমৃত ও ইরফান 

(B) অমিত ও ইরফান 

(C) অমৃত ও ইসাব

(D) অমিত ও ইসাব 

Ans: (C) অমৃত ও ইসাব

  1. অমৃত ও ইসাবের কাছে নতুন যে – জিনিসটি ছিল , তা হল— 

(A) জামা 

(B) প্যান্ট 

(C) বই 

(D) বল 

Ans: (A) জামা

  1. অমৃত ও ইসাবের জামা যে যে দিক থেকে একরকম ছিল— 

(A) রং , ছাপা ও ঝুল

(B) রং , মাপ , কাপড় 

(C) মাপ , ঝুল ও কাপড় 

(D) ছাপা , ঝুল ও কাপড় 

Ans: (B) রং , মাপ , কাপড়

  1. অমৃত ও ইসাব পড়ত –

(A) একই স্কুলে একই ক্লাসে 

(B) একই স্কুলে আলাদা ক্লাসে 

(C) আলাদা স্কুলে একই ক্লাসে

(D) আলাদা স্কুলে আলাদা ক্লাসে

Ans: A) একই স্কুলে একই ক্লাসে

  1. দুজনের বাবা পেশায় ছিলেন – 

(A) তাঁতি

(B) শিক্ষক

(C) কুমোর

(D) চাষি

Ans: D) চাষি

  1. অমৃতের বাড়িতে ছিলেন –

(A) শুধু বাবা 

(B) বাবা – মা ও তিন ভাই 

(C) বাবা ও মা 

(D) বাবা ও ভাই 

Ans: (B) বাবা – মা ও তিন ভাই

[ আরোও দেখুন:- Madhyamik Bengali Suggestion 2023 Click here ]

  1. ইসাবের বাড়িতে ছিলেন – 

(A) শুধু বাবা 

(B) বাবা – মা ও তিনভাই 

(C) বাবা ও মা 

(D) বাবা ও ভাই 

Ans: (A) শুধু বাবা

  1. দুজনের একরকম পোশাক দেখে অমৃত ও ইসাবকে বলা হয়েছিল— 

(A) গান করতে 

(B) নাচ করতে 

(C) কুস্তি করতে

(D) খেলা করতে 

Ans: (C) কুস্তি করতে

  1. _____ পাবার জন্য তুমি কী কাণ্ডটাই না করেছিলে । ‘

(A) বই 

(B) নতুন জামা 

(C) পুরস্কার

(D) প্রশংসা 

Ans: (B) নতুন জামা

  1. অমৃত তার বাবা – মা – কে জ্বালিয়েছিল –

(A) খেলার জন্য 

(B) নতুন জামার জন্য

(C) পড়াশোনা না করার জন্য

(D) স্কুলে যাবে না বলে

Ans: (B) নতুন জামার জন্য

  1. নতুন জামা পাওয়াটা অমৃত ও ইসাবের পক্ষে কঠিন ছিল । কারণ –

(A) তাদের বাবারা ছিলেন রাগি 

(B) তাদের জামার প্রয়োজন ছিল না

(C) তখন কোনো উৎসব ছিল না 

(D) তারা ছিল গরিব 

Ans: (D) তারা ছিল গরিব

  1. শোনামাত্র অমৃত ফতোয়া জারি করে দিল , — ‘ ফতোয়া ‘ শব্দের অর্থ হল –

(A) প্রতিবাদ 

(B) চিৎকার

(C) দাবি

(D) রায়

Ans: (D) রায়

  1. তাহলে তোমার কপালে কী আছে মনে রেখো ।’— এখানে কপালে আছে বলতে বলা হয়েছে –

(A) ভাগ্যরেখা 

(B) তিলক 

(C) প্রশংসা

(D) প্রহার

Ans: (D) প্রহার

  1. ইসাবের জামা ছিঁড়ে গিয়েছিল , কারণ— 

(A) তাকে খেতে কাজ করতে হত 

(B) তাকে একই জামা রোজ পরতে হত 

(C) সে যত্ন নিতে জানত না 

(D) তার জামা পুরোনো হয়ে গিয়েছিল

Ans: (A) তাকে খেতে কাজ করতে হত

  1. ‘ ও মরিয়া হয়ে বলল , ‘ ‘ ও ‘ হল –

(A) অমৃত 

(B) ইসাব

(C) অমৃতের মা

(D) ইসাবের বাবা

Ans: (A) অমৃত

  1. অমৃত যেখানে লুকিয়ে ছিল , সেই স্থানটি হল – 

(A) অমৃতের স্কুল 

(B) ইসাবের বাড়ি 

(C) ইসাবের বাবার গোয়ালঘর

(D) বাড়ির পাশের গলি

Ans: (C) ইসাবের বাবার গোয়ালঘর

  1. ” এরপর উনি গিয়ে ইসাবের বাবার গোয়ালঘর থেকে লুকিয়ে থাকা অমৃতকে বাড়ি নিয়ে এলেন ।’— উনি বলতে বোঝানো হয়েছে – 

(A) ইসাবের মা 

(B) অমৃতের বাবা 

(C) ইসাবের বাবা 

(D) অমৃতের মা 

Ans: (D) অমৃতের মা

  1. অমৃত একেবারেই গররাজি ছিল – 

(A) জামা ছিঁড়তে

(B) স্কুলে যেতে 

(C) ইসাবের সঙ্গে কুস্তি লড়তে 

(D) মার খেতে 

Ans: C) ইসাবের সঙ্গে কুস্তি লড়তে

  1. ছেলেছোকরার দঙ্গল অমৃতকে কুস্তির উদ্দেশ্যে নিয়ে গেল –

(A) শান বাঁধানো ফুটপাথে 

(B) ইসাবের বাবার গোয়ালঘরে

(C) খোলা মাঠে 

(D) দুই বাড়ির মাঝখানে 

Ans: (C) খোলা মাঠে

  1. যে – ছেলেটি অমৃতকে কুস্তি লড়তে ডেকেছিল , তার নাম 

(A) ইসাব 

(B) কালিয়া 

(C) হাসান 

(D) বাহালি

Ans: (B) কালিয়া

  1. ইসাবের মেজাজ চড়ে গেল ।’— কারণ –

(A) ইসাব অমৃতকে খুব ভালোবাসত 

(B) ইসাব কালিয়াকে পছন্দ করত না 

(C) ইসাব অমৃতকে ঈর্ষা করত 

(D) অমৃতের জামাটা বেশি সুন্দর ছিল

Ans: (A) ইসাব অমৃতকে খুব ভালোবাসত

  1. সবাই যে যেদিকে পারে পালিয়ে গেল ‘ – কারণ –

(A) ইসাব তাদের মারবে 

(B) অমৃত তাদের মারবে

(C) কালিয়া তাদের মারবে 

(D) কালিয়ার বাবা  – মা তাদের মারবে

Ans: (D) কালিয়ার বাবা  – মা তাদের মারবে

  1. ইসাবের জামার যতটা কাপড় ছিঁড়ে গিয়েছিল— 

(A) তিন ইঞ্চি 

(B) চার ইঞ্চি 

(C) ছ – ইঞ্জি 

(D) পাঁচ ইঞ্চি 

Ans: (C) ছ – ইঞ্জি

  1. ‘ ওরা ভয়ে কাঠ হয়ে গেল । ওদের ভয় পাওয়ার কারণ –

(A) জামা ছিঁড়ে যাওয়া

(B) শাস্তি পাওয়া 

(C) বাবার হাতে মার খাওয়া

(D) সবকটিই

Ans: C) বাবার হাতে মার খাওয়া

  1. এমন সময়ে শুনতে পেল’ –

(A) অমৃতের বাবা ইসাবকে ডাকছেন

(B) ইসাবের বাবা অমৃতকে ডাকছেন

(C) অমৃতের বাবা অমৃতকে ডাকছেন

(D) ইসাবের বাবা ইসাবকে ডাকছেন 

Ans: (D) ইসাবের বাবা ইসাবকে ডাকছেন

===============================================================================

অদল বদল অধ্যায় থেকে আরোও প্রশ্ন ও উত্তর দেখুন :   CLICK  HERE

================================================================================

বহু বিকল্প প্রশ্ন গুলোর উত্তর দাও :

১.১ পান্নালাল প্যাটেল কোন ভাষার লেখক?

(ক) ইংরেজি

(খ) হিন্দি

(গ) গুজরাটি

(ঘ) বাংলা

উত্তর : (গ) গুজরাটি

১.২ “সবদিক থেকেই একরকম।” – কিসের কথা বলা হয়েছে –

(ক) দুই বন্ধু চালচলন

(খ) দুই বন্ধুর চালচলন, কথাবার্তা

(গ) জামার রং, মাপ, কাপড়

(ঘ) উভয় বিদ্যা বুদ্ধি

উত্তর : (গ) জামার রং, মাপ, কাপড়

১.৩ “দুই বন্ধুতে মিলে শানবাঁধানো ফুটপাতে এসে বসতে…।” – দুই বন্ধু হল –

(ক) কৃষাণ ও ইসাব

(খ) কৃশানু ও ইসাব

(গ) অমৃত ও ইসাব

(ঘ) অমৃত ও বিমল

উত্তর : (গ) অমৃত ও ইসাব

১.৪ “অমৃতের এত জোর দিয়ে বলার কারণ ছিল।” – কারণটা হলো –

(ক) অমৃতরা খুব গরিব

(খ) অমৃত খুব সাহসী

(গ) জামার নোংরা করার ব্যাপারে মায়ের সাবধানবাণী

(ঘ) অমৃতের শরীর ভালো ছিল না

উত্তর : (গ) জামার নোংরা করার ব্যাপারে মায়ের সাবধানবাণী

১.৫ “এসো আমরা কুস্তি লড়ি।” – কথাটি বলেছিল –

(ক) ইসাব

(খ) অমৃত

(গ) কালিয়া

(ঘ) বুধিয়া

উত্তর : (গ) কালিয়া

১.৬ “হঠাৎ অমৃতের মাথায় একটা বুদ্ধি খেলে গেল” – বুদ্ধিটা কি ছিল?

(ক) কালিয়া সঙ্গে কুস্তি লড়ার

(খ) স্কুলে না গিয়ে জামা আদায় করার

(গ) ইসাবের বাবার গোয়াল ঘরে লুকিয়ে থাকা

(ঘ) জামা অদল বদল করা

উত্তর : (ঘ) জামা অদল বদল করা

১.৭ “কিছুটা যেতেই অমৃতের নজরে এলো…।” – কি নজরে এসেছিল?

(ক) তার বাবা আসছিল

(খ) তার মা আসছিলো

(গ) হিসাবের জামার পকেট ও 6 ইঞ্চি পরিমাণ কাপড় ছিড়ে গেছে

(ঘ) কালিয়া তার দলবল নিয়ে তাদের দিকে আসছে

উত্তর : (গ) হিসাবের জামার পকেট ও 6 ইঞ্চি পরিমাণ কাপড় ছিড়ে গেছে

১.৮ “তোরা অদল-বদল করেছিস, হুম।”-বক্তা কথাটি কী উদ্দেশ্যে বলেছিল?

(ক) তাদের সঙ্গে মজা করার জন্য

(খ) তাদের সচেতন করে দেওয়ার জন্য

(গ) তাদের শাস্তি দেওয়ার জন্য

(ঘ) তাদের আনন্দকে মাটি করে দেওয়ার জন্য

উত্তর: (ঘ) তাদের আনন্দকে মাটি করে দেওয়ার জন্য

১.৯ ইসাবের বাবা অমৃতের মা-কে ডাকে –

(ক) বৌদি বলে

(খ) বাহালি বৌদি বলে

(গ) মাসি বলে

(ঘ) কাকিমা বলে

উত্তর: (খ) বাহালি বৌদি বলে

১.১০ “ও আমাকে শিখিয়েছে, খাঁটি জিনিস কাকে বলে।”- ‘ও’কে?

(ক) অমৃতের মা

(খ) অমৃত

(গ) ইসাব

(ঘ) কালিয়া

উত্তর: (খ) অমৃত

===============================================================================

অদল বদল অধ্যায় থেকে আরোও প্রশ্ন ও উত্তর দেখুন :   CLICK  HERE

================================================================================

MCQ | অদল বদল (গল্প) পান্নালাল প্যাটেল – মাধ্যমিক বাংলা সাজেশন | Madhyamik Bengali Suggestion :

  1. নতুন জামা পাওয়াটা অমৃত ও ইসাবের পক্ষে কঠিন ছিল । কারণ -(A) তাদের বাবারা ছিলেন রাগি (B) তাদের জামার প্রয়োজন ছিল না(C) তখন কোনো উৎসব ছিল না (D) তারা ছিল গরিব 

Answer: (D) তারা ছিল গরিব

  1. শোনামাত্র অমৃত ফতোয়া জারি করে দিল , — ‘ ফতোয়া ‘ শব্দের অর্থ হল -(A) প্রতিবাদ (B) চিৎকার(C) দাবি(D) রায়

Answer: (D) রায়

  1. তাহলে তোমার কপালে কী আছে মনে রেখো ।’— এখানে কপালে আছে বলতে বলা হয়েছে -(A) ভাগ্যরেখা (B) তিলক (C) প্রশংসা(D) প্রহার

Answer: (D) প্রহার

  1. ইসাবের জামা ছিঁড়ে গিয়েছিল , কারণ— (A) তাকে খেতে কাজ করতে হত (B) তাকে একই জামা রোজ পরতে হত (C) সে যত্ন নিতে জানত না (D) তার জামা পুরোনো হয়ে গিয়েছিল

Answer: (A) তাকে খেতে কাজ করতে হত

  1. অমৃত যেখানে লুকিয়ে ছিল , সেই স্থানটি হল – (A) অমৃতের স্কুল (B) ইসাবের বাড়ি (C) ইসাবের বাবার গোয়ালঘর(D) বাড়ির পাশের গলি

Answer: (C) ইসাবের বাবার গোয়ালঘর

  1. ” এরপর উনি গিয়ে ইসাবের বাবার গোয়ালঘর থেকে লুকিয়ে থাকা অমৃতকে বাড়ি নিয়ে এলেন ।’— উনি বলতে বোঝানো হয়েছে – (A) ইসাবের মা (B) অমৃতের বাবা (C) ইসাবের বাবা (D) অমৃতের মা 

Answer: (D) অমৃতের মা

  1. অমৃত একেবারেই গররাজি ছিল – (A) জামা ছিঁড়তে(B) স্কুলে যেতে (C) ইসাবের সঙ্গে কুস্তি লড়তে (D) মার খেতে 

Answer: C) ইসাবের সঙ্গে কুস্তি লড়তে

  1. ছেলেছোকরার দঙ্গল অমৃতকে কুস্তির উদ্দেশ্যে নিয়ে গেল -(A) শান বাঁধানো ফুটপাথে (B) ইসাবের বাবার গোয়ালঘরে(C) খোলা মাঠে (D) দুই বাড়ির মাঝখানে 

Answer: (C) খোলা মাঠে

  1. যে – ছেলেটি অমৃতকে কুস্তি লড়তে ডেকেছিল , তার নাম (A) ইসাব (B) কালিয়া (C) হাসান (D) বাহালি

Answer: (B) কালিয়া

  1. ইসাবের মেজাজ চড়ে গেল ।’— কারণ -(A) ইসাব অমৃতকে খুব ভালোবাসত (B) ইসাব কালিয়াকে পছন্দ করত না (C) ইসাব অমৃতকে ঈর্ষা করত (D) অমৃতের জামাটা বেশি সুন্দর ছিল

Answer: (A) ইসাব অমৃতকে খুব ভালোবাসত

  1. সবাই যে যেদিকে পারে পালিয়ে গেল ‘ – কারণ -(A) ইসাব তাদের মারবে (B) অমৃত তাদের মারবে(C) কালিয়া তাদের মারবে (D) কালিয়ার বাবা  – মা তাদের মারবে

Answer: (D) কালিয়ার বাবা  – মা তাদের মারবে

  1. ইসাবের জামার যতটা কাপড় ছিঁড়ে গিয়েছিল— (A) তিন ইঞ্চি (B) চার ইঞ্চি (C) ছ – ইঞ্জি (D) পাঁচ ইঞ্চি 

Answer: (C) ছ – ইঞ্জি

  1. ‘ ওরা ভয়ে কাঠ হয়ে গেল । ওদের ভয় পাওয়ার কারণ -(A) জামা ছিঁড়ে যাওয়া(B) শাস্তি পাওয়া (C) বাবার হাতে মার খাওয়া(D) সবকটিই

Answer: C) বাবার হাতে মার খাওয়া

  1. এমন সময়ে শুনতে পেল’ -(A) অমৃতের বাবা ইসাবকে ডাকছেন(B) ইসাবের বাবা অমৃতকে ডাকছেন(C) অমৃতের বাবা অমৃতকে ডাকছেন(D) ইসাবের বাবা ইসাবকে ডাকছেন 

Answer: (D) ইসাবের বাবা ইসাবকে ডাকছেন

  1. ‘ হোলির দিনের পড়ন্ত বিকেল । – হোলি যে – ঋতুতে হয় , তা হল -(A) বসন্ত (B) শীত(C) হেমন্ত (D) শরৎ

Answer: (A) বসন্ত

  1. ‘ গড়ন্ত ‘ শব্দের অর্থ হল -(A) পড়াশোনা করছে এমন (B) পতনোন্মুখ (C) শেষ হয়ে আসছে এমন(D) পরিত্যক্ত

Answer: (C) শেষ হয়ে আসছে এমন

  1. পান্নালাল প্যাটেল ছিলেন -(A) বাংলা ভাষার লেখক (B) হিন্দি ভাষার লেখক(C) গুজরাটি ভাষার লেখক (D) মারাঠি ভাষার লেখক

Answer: C) গুজরাটি ভাষার লেখক

  1. নিম গাছের নীচে গাঁয়ের একদল ছেলে জড়ো হয়ে যা খেলছিল , তা হল -(A) ফুটবল (B) ধুলো ছোড়াছুড়ি (C) ছোঁয়াছুঁয়ি(D) দড়ি টানাটানি

Answer: (B) ধুলো ছোড়াছুড়ি

  1. ‘ অদল বদল ‘ যে – দুই বন্ধুর গল্প , তাদের নাম হল -(A) অমৃত ও ইরফান (B) অমিত ও ইরফান (C) অমৃত ও ইসাব(D) অমিত ও ইসাব 

Answer: (C) অমৃত ও ইসাব

  1. অমৃত ও ইসাবের কাছে নতুন যে – জিনিসটি ছিল , তা হল— (A) জামা (B) প্যান্ট (C) বই (D) বল 

Answer: (A) জামা

  1. অমৃত ও ইসাবের জামা যে যে দিক থেকে একরকম ছিল— (A) রং , ছাপা ও ঝুল(B) রং , মাপ , কাপড় (C) মাপ , ঝুল ও কাপড় (D) ছাপা , ঝুল ও কাপড় 

Answer: (B) রং , মাপ , কাপড়

  1. অমৃত ও ইসাব পড়ত -(A) একই স্কুলে একই ক্লাসে (B) একই স্কুলে আলাদা ক্লাসে (C) আলাদা স্কুলে একই ক্লাসে(D) আলাদা স্কুলে আলাদা ক্লাসে

Answer: A) একই স্কুলে একই ক্লাসে

  1. দুজনের বাবা পেশায় ছিলেন – (A) তাঁতি(B) শিক্ষক(C) কুমোর(D) চাষি

Answer: D) চাষি

  1. অমৃতের বাড়িতে ছিলেন -(A) শুধু বাবা (B) বাবা – মা ও তিন ভাই (C) বাবা ও মা (D) বাবা ও ভাই 

Answer: (B) বাবা – মা ও তিন ভাই

  1. ইসাবের বাড়িতে ছিলেন – (A) শুধু বাবা (B) বাবা – মা ও তিনভাই (C) বাবা ও মা (D) বাবা ও ভাই 

Answer: (A) শুধু বাবা

  1. দুজনের একরকম পোশাক দেখে অমৃত ও ইসাবকে বলা হয়েছিল— (A) গান করতে (B) নাচ করতে (C) কুস্তি করতে(D) খেলা করতে 

Answer: (C) কুস্তি করতে

  1. _____ পাবার জন্য তুমি কী কাণ্ডটাই না করেছিলে । ‘(A) বই (B) নতুন জামা (C) পুরস্কার(D) প্রশংসা 

Answer: (B) নতুন জামা

  1. অমৃত তার বাবা – মা – কে জ্বালিয়েছিল -(A) খেলার জন্য (B) নতুন জামার জন্য(C) পড়াশোনা না করার জন্য(D) স্কুলে যাবে না বলে

Answer: (B) নতুন জামার জন্য

  1. ‘ ও মরিয়া হয়ে বলল , ‘ ‘ ও ‘ হল -(A) অমৃত (B) ইসাব(C) অমৃতের মা(D) ইসাবের বাবা

Answer: (A) অমৃত

===============================================================================

অদল বদল অধ্যায় থেকে আরোও প্রশ্ন ও উত্তর দেখুন :   CLICK  HERE

================================================================================

অতিসংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর | অদল বদল (গল্প) পান্নালাল প্যাটেল – মাধ্যমিক বাংলা প্রশ্ন ও উত্তর 

  1. ‘ বলতে গেলে ছেলে দুটোর সবই একরকম , তফাত শুধু এই যে , —তফাতটা কী ?

Ans: পান্নালাল প্যাটেলের ‘ অদল বদল ‘ গল্পের ছেলে দুটো হল ইসাব আর অমৃত । অভিন্নহৃদয় এই দুই বন্ধুর তফাত এই যে , অমৃতের বাবা – মা আর তিন ভাই ছিল , ইসাবের শুধু বাবা ছিল ।

  1. ‘ তোরা দুজনে কুস্তি কর তো , ‘ — এ কথা বলার কারণ কী ? 

Ans: অমৃত ও ইসাবের একইরকম জামা দেখে একটি ছেলে তারা শক্তির দিক থেকেও এক কিনা তা দেখতে তাদের কুস্তি করতে বলে ।

  1. ‘ তাহলে মা আমাকে ঠ্যাঙ্গাবে । – মা কেন ঠ্যাঙাবে বলে অমৃত মনে করেছিল ? 

Ans: টাকাপয়সার অভাব সত্ত্বেও অমৃতের জেদাজেদিতে জামাটি কেনা হয়েছিল , তাই সেটি ছিঁড়লে বা ময়লা করলে তার মা তাকে মারবে সেটাই স্বাভাবিক ।

  1. ‘ ওর মা সাবধান করে দিয়েছিলেন , কার মা , কী থেকে সাবধান করে দিয়েছিলেন ? 

Ans: অমৃতের জেদের কারণে তার মা তাকে নতুন জামা কিনে দিলেও সেটি ছিঁড়লে বা ময়লা করলে তার ভাগ্যে যে কষ্ট আছে সে বিষয়ে সাবধান করেছিলেন ।

  1. ‘ অমৃত ফতোয়া জারি করে দিল , ‘ — অমৃত কী ফতোয়া জারি করেছিল ? 

Ans: নতুন জামার জন্য বাবা – মাকে রাজি করাতে না পেরে অমৃত ফতোয়া জারি করেছিল যে , ঠিক ইসাবের মতো জামা না পেলে সে আর স্কুলে যাবে না । 

  1. ‘ মা ওকে অনেক বুঝিয়েছিল , ‘ — মা অমৃতকে কী বুঝিয়েছিলেন ?

Ans: অমৃত ইসাবের মতো জামা চাওয়ায় মা তাকে বুঝিয়েছিলেন যে , ইসাব খেতে কাজ করায় তার জামা ছিঁড়ে গেছে ; কিন্তু অমৃতের জামা প্রায় নতুনই আছে ।

  1. ‘ অমৃত এতেও পিছপা হতে রাজি নয়।- ‘ এতেও বলতে কী বোঝানো হয়েছে ?

Ans: ইসাবের মতো জামা পাওয়ার জন্য অমৃত বাবার হাতে মার খেতেও রাজি । ‘ এতেও ’ বলতে উক্ত প্রসঙ্গকে বোঝানো হয়েছে । 

  1. ‘ কিন্তু অত সহজে হাল ছাড়ার পাত্রও সে নয় । -অমৃতের হাল না ছাড়ার কী প্রমাণ দিয়েছেন লেখক ?

Ans: অমৃত জানত জামা কেনার ব্যাপারে বাবা নয় মায়ের রাজি হওয়াটাই আসল । তাই সে স্কুলে যাওয়া , খাওয়া বন্ধ করে রাত্রে বাড়ি পর্যন্ত ফিরতে রাজি হল না ।

  1. শেষপর্যন্ত অমৃতের মা কী করলেন ?

Ans: শেষমেশ অমৃতের মা অমৃতের জেদের কাছে হার স্বীকার করে নতুন জামার জন্য অমৃতের বাবাকে রাজি করান ও অমৃতকে ইসাবদের গোয়ালঘর থেকে উদ্ধার করেন ।

  1. ‘ আমি কুস্তি লড়তে চাই না , ‘ — এ কথা বলার কারণ কী ছিল ?

Ans: ‘ অদল বদল ‘ গল্প অনুসারে কুস্তি লড়লে অমৃতের নতুন জামা নষ্ট হয়ে যেত । তা ছাড়া ইসাব ছিল তার ঘনিষ্ঠ বন্ধু । তাই সে কুস্তি লড়তে চায়নি ।

  1. ‘ ছেলের দল আনন্দে চেঁচিয়ে উঠল , আনন্দের কী কারণ ঘটেছিল ?

Ans: ‘ অদল বদল ‘ গল্প অনুসারে অমৃত ও ইসাব নিজেদের মধ্যে কুস্তি লড়তে রাজি না – হওয়ায় , কালিয়া জোর করে অমৃতকে খোলা মাঠের মধ্যে নিয়ে গিয়ে ছুড়ে ফেলে দেয় । এতে কালিয়ার জিত হয়েছে ভেবে ছেলেদের আনন্দ হয়েছিল ।

  1. ‘ এসো , আমরা কুস্তি লড়ি । – কে , কাকে বলেছিল ?

Ans: পান্নালাল প্যাটেলের ‘ অদল বদল ‘ গল্পে কুস্তি লড়তে অনিচ্ছুক অমৃতকে কালিয়া বলেছিল প্রশ্নোদ্ধৃত কথাটি । 

  1. ‘ কুস্তি শুরু হয়ে গেল । — কুস্তির ফলাফল কী হয়েছিল ?

Ans: কালিয়া অমৃতকে আছাড় মারায় ইসাব রেগে গিয়ে কালিয়াকে কুস্তি র আহ্বান জানায় । কুস্তি শুরু হতেই ইসাব কালিয়াকে ল্যাং মেরে মাটিতে ফেলে দেয় ।

  1. ‘ ওরা ভয়ে কাঠ হয়ে গেল । -ওরা কেন ভয় পেল ?  

Ans: কালিয়ার সঙ্গে কুস্তি লড়তে গিয়ে ইসাবের নতুন জামার পকেট ছিঁড়ে গিয়েছিল । জামা ছেঁড়ার জন্য বাড়িতে বকুনি খাওয়ার ভয়ে অমৃত ও ইসাবের এই অবস্থা হয় ।

  1. ‘ ওদের তখন বুকের ধুকপুকুনি বন্ধ হবার জোগাড় —কী কারণে ওদের এই অবস্থা হয়েছিল ?

Ans: অমৃতকে বাঁচাতে কালিয়ার সঙ্গে লড়াই করে ইসাব বাবার কষ্ট করে কিনে দেওয়া জামাটা ছিঁড়ে ফেলে । সেই সময় ইসাবের বাবার ডাকে তাদের এই অবস্থা হয়েছিল । 

  1. ‘ হঠাৎ অমৃতের মাথায় একটা বুদ্ধি খেলে গেল , – বুদ্ধিটি কী ছিল ? 

Ans: ইসাবের জামা ছেঁড়ার ব্যাপারটা যাতে কেউ বুঝতে না পারে সেঞ্জনা নিজের অক্ষত জামাটা ইসাবের সঙ্গে বদলে নেওয়ার বুদ্ধি খেলে যায় অমৃতের মাথায় ।

  1. ‘ কিন্তু আমাকে বাঁচানোর জন্য তো আমার মা আছে ? -অমৃতের এই কথার মধ্য দিয়ে তার কোন মানসিকতা প্রকাশিত হয়েছে ? 

Ans: অমৃতের কথাগুলির মধ্যে দিয়ে একদিকে মা – হারা বন্ধু ইসাবের প্রতি সহমর্মিতা , অপর দিকে নিজের মা – র প্রতি অগাধ আস্থার ছবি ফুটে উঠেছে ।

  1. ‘ ইসাবের মনে পড়ল , ইসাবের কী মনে পড়ল ?

Ans: ইসাবের মনে পড়ল যে , সে দেখেছে অমৃতের বাবা অমৃতকে মারতে গেলেই তার মা তাকে আড়াল করেন ।

  1. ‘ ভয়ে অমৃতের বুক ঢিপঢিপ করছিল । অমৃতের ভয় পাওয়ার কারণ কী ?

Ans: ইসাবকে বাঁচাতে গিয়ে নিজের ভালো জামার পরিবর্তে ইসাবের ছেঁড়া জামা গায়ে পরে অমৃত ভয় পায় মা থাকা সত্ত্বেও সে কি বাবার হাত থেকে রেহাই পাবে ?

  1. অমৃতের মা ছেঁড়া জামা দেখে কী করেছিলেন ?

Ans: হোলিতে বাচ্চাদের ধস্তাধস্তি স্বাভাবিক , তাই ছেঁড়া জামা দেখে অমৃতের মা ভুরু কোঁচকালেও কিছু না বলে হুঁচসুতো দিয়ে জামাটি রিফু করে দিয়েছিলেন ।

  1. ‘ এই আশঙ্কা করে তারা চলে যেতে চাইল – তারা কী আশঙ্কা করেছিল ? 

Ans: অমৃত আর ইসাব জামা অদলবদল করার সময় একটা ছেলে । তা দেখে ফেলে । ছেলেটা যদি সকলকে ঘটনাটা বলে দেয় — এই আশঙ্কা করেই তারা চলে যেতে চেয়েছিল ।

  1. ‘ ওঁর শান্ত গলা শুনে ওদের চিন্তা হল , ‘ — বিষয়টি প্রশ্ন পরিস্ফুট করো । 

Ans: কড়া ধাতের মানুষ ইসাবের বাবার আদুরে ডাক শুনে ইসাব আর অমৃত সেটাকে ভালোবাসার অভিনয় বলে মনে করেছিল ।

  1. ‘ উনি দশ বছরের অমৃতকে জড়িয়ে ধরলেন ! —কেন উদ্দিষ্ট ব্যক্তি এমন করেছিলেন ?

Ans: ইসাবকে বাবার হাতের মার খাওয়া থেকে বাঁচানোর তাগিদে অমৃত , ইসাবের জামা বদলে দেয় । আড়াল থেকে তা দেখে ইসাবের বাবা অমৃতকে জড়িয়ে ধরেন ।

  1. ‘ ও আমাকে শিখিয়েছে , খাঁটি জিনিস কাকে বলে ‘ খাঁটি জিনিস ’ বলতে কী বোঝানো হয়েছে ?

Ans: ‘ অদল বদল ‘ গঙ্গে ইসাবের বাবা ‘ খাঁটি জিনিস ‘ বলতে অমৃতের অকৃত্রিম বন্ধুপ্রীতির প্রতি ইঙ্গিত করেছেন ।

  1. এবার অবশ্য ইসাব ও অমৃত অম্লস্তুত বোধ করল না . – কেন তারা অপ্রস্তুত বোধ করল ?

Ans: জামাবদলের ঘটনায় অমৃত ও ইসাব অভিভাবকদের ভর্ৎসনার ভয়ে প্রথমটায় অপ্রস্তুত হলেও পরে বাবা – মায়েদের কাছে এ কাজের প্রশংসা পেয়ে তাদের ওই অপ্রস্তুত ভাব কেটে গিয়েছিল । 

  1. ‘ উনি ঘোষণা করলেন , ‘ – কে , কী ঘোষণা করেছিলেন ?

Ans: অমৃত ও ইসাবের আমাবদলের সৌহার্দ্যপূর্ণ ঘটনার কথা গ্রামপ্রধানের কানে গেলে তিনি খুশি হয়ে অমৃতকে ‘ অদল ‘ আর ইসারকে ‘ বদল ‘ বলে ডাকার কথা ঘোষণা করেন ।

  1. কালিয়া জিতেছে , অমৃত হেরে গেছে , কী মজা , কী মজা । এ কথা কে ? কোথায় বলেছে ? 

Ans: পান্নালাল প্যাটেলের ‘ অদল বদল ‘ গল্প অনুসারে কালিয়া যখন খোলা মাঠের মধ্যে জোর করে অমৃতকে ছুড়ে ফেলে দিয়েছিল , তখন ছেলের দল আনন্দে চেঁচিয়ে উঠে উপরে উদ্ধৃত কথাগুলি বলেছিল । 

  1. ‘ কালিয়া … মাটিতে পড়ে গিয়ে ট্যাচাতে লাগল । —কী কারণে চ্যাঁচাতে লাগল ?

Ans: ‘ অদল বদল ‘ গল্পে দেখা যায় বন্ধু অমৃতকে কালিয়ার হাতে হেরে যেতে দেখে ইসাব রেগে গিয়েছিল । সে তখন কালিয়াকে ধরে ল্যাং মেরে ফেলে দেয় । ব্যাঙের মতো হাত – পা ছড়িয়ে মাটিতে পড়ে গিয়ে কালিয়া চ্যাঁচাতে শুরু করেছিল ।

  1. ‘ গল্প শুনে তাঁদেরও বুক ভরে গেল — কোন্ গল্প শুনে বুক ভরে গিয়েছিল ?

Ans: পান্নালাল প্যাটেলের ‘ অদল বদল ’ গল্প অনুসারে , ইসাবের বাবা পাঠানের মুখ থেকে অমৃত ও ইসাবের পারস্পরিক ভালোবাসার গল্প শুনে পাড়াপড়শি সকলের বুক ভরে গিয়েছিল । 

  1. কোন্ ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে অমৃত ও ইসাব জামা অদলবদলের সিদ্ধান্ত নিয়েছিল । 

Ans: পান্নালাল প্যাটেলের ‘ অদল বদল ‘ গল্প অনুসারে কুস্তির ফলে ইসাবের জামার পকেট ও ছ – ইঞ্চি পরিমাণ কাপড় ছিঁড়ে যাওয়ায় , ইসাবকে বাবার হাত থেকে বাঁচাতে ওরা দুজনে জামা অদলবদলের সিদ্ধান্ত নিয়েছিল ।

  1. ‘ ইসাব অমৃতের দিকে তাকাল- ইসাবের অমৃতের দিকে তাকানোর কারণ কী ?

Ans: ‘ অদল বদল ‘ গল্পে দেখা যায় , হোলির দিন অমৃত ও ইসাব দুই বন্ধু সব দিক থেকে একইরকম জামা পরে ফুটপাতে এসে বসায় , ছেলেদের দলের একজন দুজনকে কুস্তি লড়তে বলে । এই কথা শুনে ইসাব অমৃতের দিকে তাকিয়েছিলেন ।

===============================================================================

অদল বদল অধ্যায় থেকে আরোও প্রশ্ন ও উত্তর দেখুন :   CLICK  HERE

================================================================================

অতিসংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর | অদল বদল (গল্প) পান্নালাল প্যাটেল – মাধ্যমিক বাংলা সাজেশন | Madhyamik Bengali Suggestion : 

  1. ‘ হঠাৎ অমৃতের মাথায় একটা বুদ্ধি খেলে গেল , – বুদ্ধিটি কী ছিল ? 

Answer: ইসাবের জামা ছেঁড়ার ব্যাপারটা যাতে কেউ বুঝতে না পারে সেঞ্জনা নিজের অক্ষত জামাটা ইসাবের সঙ্গে বদলে নেওয়ার বুদ্ধি খেলে যায় অমৃতের মাথায় ।

  1. ‘ কিন্তু আমাকে বাঁচানোর জন্য তো আমার মা আছে ? -অমৃতের এই কথার মধ্য দিয়ে তার কোন মানসিকতা প্রকাশিত হয়েছে ? 

Answer: অমৃতের কথাগুলির মধ্যে দিয়ে একদিকে মা – হারা বন্ধু ইসাবের প্রতি সহমর্মিতা , অপর দিকে নিজের মা – র প্রতি অগাধ আস্থার ছবি ফুটে উঠেছে ।

  1. ‘ ইসাবের মনে পড়ল , ইসাবের কী মনে পড়ল ?

Answer: ইসাবের মনে পড়ল যে , সে দেখেছে অমৃতের বাবা অমৃতকে মারতে গেলেই তার মা তাকে আড়াল করেন ।

  1. ‘ ভয়ে অমৃতের বুক ঢিপঢিপ করছিল । অমৃতের ভয় পাওয়ার কারণ কী ?

Answer: ইসাবকে বাঁচাতে গিয়ে নিজের ভালো জামার পরিবর্তে ইসাবের ছেঁড়া জামা গায়ে পরে অমৃত ভয় পায় মা থাকা সত্ত্বেও সে কি বাবার হাত থেকে রেহাই পাবে ?

  1. অমৃতের মা ছেঁড়া জামা দেখে কী করেছিলেন ?

Answer: হোলিতে বাচ্চাদের ধস্তাধস্তি স্বাভাবিক , তাই ছেঁড়া জামা দেখে অমৃতের মা ভুরু কোঁচকালেও কিছু না বলে হুঁচসুতো দিয়ে জামাটি রিফু করে দিয়েছিলেন ।

  1. ‘ এই আশঙ্কা করে তারা চলে যেতে চাইল – তারা কী আশঙ্কা করেছিল ? 

Answer: অমৃত আর ইসাব জামা অদলবদল করার সময় একটা ছেলে । তা দেখে ফেলে । ছেলেটা যদি সকলকে ঘটনাটা বলে দেয় — এই আশঙ্কা করেই তারা চলে যেতে চেয়েছিল ।

  1. ‘ ওঁর শান্ত গলা শুনে ওদের চিন্তা হল , ‘ — বিষয়টি প্রশ্ন পরিস্ফুট করো । 

Answer: কড়া ধাতের মানুষ ইসাবের বাবার আদুরে ডাক শুনে ইসাব আর অমৃত সেটাকে ভালোবাসার অভিনয় বলে মনে করেছিল ।

  1. ‘ উনি দশ বছরের অমৃতকে জড়িয়ে ধরলেন ! —কেন উদ্দিষ্ট ব্যক্তি এমন করেছিলেন ?

Answer: ইসাবকে বাবার হাতের মার খাওয়া থেকে বাঁচানোর তাগিদে অমৃত , ইসাবের জামা বদলে দেয় । আড়াল থেকে তা দেখে ইসাবের বাবা অমৃতকে জড়িয়ে ধরেন ।

  1. ‘ ও আমাকে শিখিয়েছে , খাঁটি জিনিস কাকে বলে ‘ খাঁটি জিনিস ’ বলতে কী বোঝানো হয়েছে ?

Answer: ‘ অদল বদল ‘ গঙ্গে ইসাবের বাবা ‘ খাঁটি জিনিস ‘ বলতে অমৃতের অকৃত্রিম বন্ধুপ্রীতির প্রতি ইঙ্গিত করেছেন ।

  1. এবার অবশ্য ইসাব ও অমৃত অম্লস্তুত বোধ করল না . – কেন তারা অপ্রস্তুত বোধ করল ?

Answer: জামাবদলের ঘটনায় অমৃত ও ইসাব অভিভাবকদের ভর্ৎসনার ভয়ে প্রথমটায় অপ্রস্তুত হলেও পরে বাবা – মায়েদের কাছে এ কাজের প্রশংসা পেয়ে তাদের ওই অপ্রস্তুত ভাব কেটে গিয়েছিল । 

  1. ‘ উনি ঘোষণা করলেন , ‘ – কে , কী ঘোষণা করেছিলেন ?

Answer: অমৃত ও ইসাবের আমাবদলের সৌহার্দ্যপূর্ণ ঘটনার কথা গ্রামপ্রধানের কানে গেলে তিনি খুশি হয়ে অমৃতকে ‘ অদল ‘ আর ইসারকে ‘ বদল ‘ বলে ডাকার কথা ঘোষণা করেন ।

  1. কালিয়া জিতেছে , অমৃত হেরে গেছে , কী মজা , কী মজা । এ কথা কে ? কোথায় বলেছে ? 

Answer: পান্নালাল প্যাটেলের ‘ অদল বদল ‘ গল্প অনুসারে কালিয়া যখন খোলা মাঠের মধ্যে জোর করে অমৃতকে ছুড়ে ফেলে দিয়েছিল , তখন ছেলের দল আনন্দে চেঁচিয়ে উঠে উপরে উদ্ধৃত কথাগুলি বলেছিল । 

  1. ‘ কালিয়া … মাটিতে পড়ে গিয়ে ট্যাচাতে লাগল । —কী কারণে চ্যাঁচাতে লাগল ?

Answer: ‘ অদল বদল ‘ গল্পে দেখা যায় বন্ধু অমৃতকে কালিয়ার হাতে হেরে যেতে দেখে ইসাব রেগে গিয়েছিল । সে তখন কালিয়াকে ধরে ল্যাং মেরে ফেলে দেয় । ব্যাঙের মতো হাত – পা ছড়িয়ে মাটিতে পড়ে গিয়ে কালিয়া চ্যাঁচাতে শুরু করেছিল ।

  1. ‘ গল্প শুনে তাঁদেরও বুক ভরে গেল — কোন্ গল্প শুনে বুক ভরে গিয়েছিল ?

Answer: পান্নালাল প্যাটেলের ‘ অদল বদল ’ গল্প অনুসারে , ইসাবের বাবা পাঠানের মুখ থেকে অমৃত ও ইসাবের পারস্পরিক ভালোবাসার গল্প শুনে পাড়াপড়শি সকলের বুক ভরে গিয়েছিল । 

  1. কোন্ ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে অমৃত ও ইসাব জামা অদলবদলের সিদ্ধান্ত নিয়েছিল । 

Answer: পান্নালাল প্যাটেলের ‘ অদল বদল ‘ গল্প অনুসারে কুস্তির ফলে ইসাবের জামার পকেট ও ছ – ইঞ্চি পরিমাণ কাপড় ছিঁড়ে যাওয়ায় , ইসাবকে বাবার হাত থেকে বাঁচাতে ওরা দুজনে জামা অদলবদলের সিদ্ধান্ত নিয়েছিল ।

  1. ‘ ইসাব অমৃতের দিকে তাকাল- ইসাবের অমৃতের দিকে তাকানোর কারণ কী ?

Answer: ‘ অদল বদল ‘ গল্পে দেখা যায় , হোলির দিন অমৃত ও ইসাব দুই বন্ধু সব দিক থেকে একইরকম জামা পরে ফুটপাতে এসে বসায় , ছেলেদের দলের একজন দুজনকে কুস্তি লড়তে বলে । এই কথা শুনে ইসাব অমৃতের দিকে তাকিয়েছিলেন ।

  1. ‘ বলতে গেলে ছেলে দুটোর সবই একরকম , তফাত শুধু এই যে , —তফাতটা কী ?

Answer: পান্নালাল প্যাটেলের ‘ অদল বদল ‘ গল্পের ছেলে দুটো হল ইসাব আর অমৃত । অভিন্নহৃদয় এই দুই বন্ধুর তফাত এই যে , অমৃতের বাবা – মা আর তিন ভাই ছিল , ইসাবের শুধু বাবা ছিল ।

  1. ‘ তোরা দুজনে কুস্তি কর তো , ‘ — এ কথা বলার কারণ কী ? 

Answer: অমৃত ও ইসাবের একইরকম জামা দেখে একটি ছেলে তারা শক্তির দিক থেকেও এক কিনা তা দেখতে তাদের কুস্তি করতে বলে ।

  1. ‘ তাহলে মা আমাকে ঠ্যাঙ্গাবে । – মা কেন ঠ্যাঙাবে বলে অমৃত মনে করেছিল ? 

Answer: টাকাপয়সার অভাব সত্ত্বেও অমৃতের জেদাজেদিতে জামাটি কেনা হয়েছিল , তাই সেটি ছিঁড়লে বা ময়লা করলে তার মা তাকে মারবে সেটাই স্বাভাবিক ।

  1. ‘ ওর মা সাবধান করে দিয়েছিলেন , কার মা , কী থেকে সাবধান করে দিয়েছিলেন ? 

Answer: অমৃতের জেদের কারণে তার মা তাকে নতুন জামা কিনে দিলেও সেটি ছিঁড়লে বা ময়লা করলে তার ভাগ্যে যে কষ্ট আছে সে বিষয়ে সাবধান করেছিলেন ।

  1. ‘ অমৃত ফতোয়া জারি করে দিল , ‘ — অমৃত কী ফতোয়া জারি করেছিল ? 

Answer: নতুন জামার জন্য বাবা – মাকে রাজি করাতে না পেরে অমৃত ফতোয়া জারি করেছিল যে , ঠিক ইসাবের মতো জামা না পেলে সে আর স্কুলে যাবে না । 

  1. ‘ মা ওকে অনেক বুঝিয়েছিল , ‘ — মা অমৃতকে কী বুঝিয়েছিলেন ?

Answer: অমৃত ইসাবের মতো জামা চাওয়ায় মা তাকে বুঝিয়েছিলেন যে , ইসাব খেতে কাজ করায় তার জামা ছিঁড়ে গেছে ; কিন্তু অমৃতের জামা প্রায় নতুনই আছে ।

  1. ‘ অমৃত এতেও পিছপা হতে রাজি নয়।- ‘ এতেও বলতে কী বোঝানো হয়েছে ?

Answer: ইসাবের মতো জামা পাওয়ার জন্য অমৃত বাবার হাতে মার খেতেও রাজি । ‘ এতেও ’ বলতে উক্ত প্রসঙ্গকে বোঝানো হয়েছে । 

  1. ‘ কিন্তু অত সহজে হাল ছাড়ার পাত্রও সে নয় । -অমৃতের হাল না ছাড়ার কী প্রমাণ দিয়েছেন লেখক ?

Answer: অমৃত জানত জামা কেনার ব্যাপারে বাবা নয় মায়ের রাজি হওয়াটাই আসল । তাই সে স্কুলে যাওয়া , খাওয়া বন্ধ করে রাত্রে বাড়ি পর্যন্ত ফিরতে রাজি হল না ।

  1. শেষপর্যন্ত অমৃতের মা কী করলেন ?

Answer: শেষমেশ অমৃতের মা অমৃতের জেদের কাছে হার স্বীকার করে নতুন জামার জন্য অমৃতের বাবাকে রাজি করান ও অমৃতকে ইসাবদের গোয়ালঘর থেকে উদ্ধার করেন ।

  1. ‘ আমি কুস্তি লড়তে চাই না , ‘ — এ কথা বলার কারণ কী ছিল ?

Answer: ‘ অদল বদল ‘ গল্প অনুসারে কুস্তি লড়লে অমৃতের নতুন জামা নষ্ট হয়ে যেত । তা ছাড়া ইসাব ছিল তার ঘনিষ্ঠ বন্ধু । তাই সে কুস্তি লড়তে চায়নি ।

  1. ‘ ছেলের দল আনন্দে চেঁচিয়ে উঠল , আনন্দের কী কারণ ঘটেছিল ?

Answer: ‘ অদল বদল ‘ গল্প অনুসারে অমৃত ও ইসাব নিজেদের মধ্যে কুস্তি লড়তে রাজি না – হওয়ায় , কালিয়া জোর করে অমৃতকে খোলা মাঠের মধ্যে নিয়ে গিয়ে ছুড়ে ফেলে দেয় । এতে কালিয়ার জিত হয়েছে ভেবে ছেলেদের আনন্দ হয়েছিল ।

  1. ‘ এসো , আমরা কুস্তি লড়ি । – কে , কাকে বলেছিল ?

Answer: পান্নালাল প্যাটেলের ‘ অদল বদল ‘ গল্পে কুস্তি লড়তে অনিচ্ছুক অমৃতকে কালিয়া বলেছিল প্রশ্নোদ্ধৃত কথাটি । 

  1. ‘ কুস্তি শুরু হয়ে গেল । — কুস্তির ফলাফল কী হয়েছিল ?

Answer: কালিয়া অমৃতকে আছাড় মারায় ইসাব রেগে গিয়ে কালিয়াকে কুস্তি র আহ্বান জানায় । কুস্তি শুরু হতেই ইসাব কালিয়াকে ল্যাং মেরে মাটিতে ফেলে দেয় ।

  1. ‘ ওরা ভয়ে কাঠ হয়ে গেল । -ওরা কেন ভয় পেল ?  

Answer: কালিয়ার সঙ্গে কুস্তি লড়তে গিয়ে ইসাবের নতুন জামার পকেট ছিঁড়ে গিয়েছিল । জামা ছেঁড়ার জন্য বাড়িতে বকুনি খাওয়ার ভয়ে অমৃত ও ইসাবের এই অবস্থা হয় ।

  1. ‘ ওদের তখন বুকের ধুকপুকুনি বন্ধ হবার জোগাড় —কী কারণে ওদের এই অবস্থা হয়েছিল ?

Answer: অমৃতকে বাঁচাতে কালিয়ার সঙ্গে লড়াই করে ইসাব বাবার কষ্ট করে কিনে দেওয়া জামাটা ছিঁড়ে ফেলে । সেই সময় ইসাবের বাবার ডাকে তাদের এই অবস্থা হয়েছিল ।

===============================================================================

অদল বদল অধ্যায় থেকে আরোও প্রশ্ন ও উত্তর দেখুন :   CLICK  HERE

================================================================================

অতিসংক্ষিপ্ত উত্তরধর্মী প্রশ্নোত্তর (কমবেশি ২০ শব্দে)

.১ “সব দিক থেকেই একরকম।”-কি সব দিক থেকে এক রকম?

উত্তর: ইসাব আর অমৃতের গায়ের জামার রং, মাপ ও কাপড় সব দিক থেকেই একরকম।

২.২ “বলতে গেলে ছেলে দুটোর  সবই একরকম, তফাৎ শুধু এই যে…”- তফাতটা কি?

উত্তর: অমৃতের পরিবারে বাবা-মা আর তিন ভাই ছিল আর ইসাবের ছিল শুধু বাবা।

২.৩ “তাহলে মা আমাকে ঠ্যাঙ্গাবে ।”-অমৃতের এই কথা মনে হওয়ার কারণ কি?

উত্তর : জামা ময়লা করলে বা ছিঁড়লে যে ঠ্যাঙানি খেতে হবে সে-বিষয়ে অমৃতের সন্দেহ ছিল না।

২.৪ “অমৃত এতেও  পিছপা হতে রাজি নয়।”- ‘এতেও’ বলতে কী বোঝানো হয়েছে?

উত্তর: নতুন জামা নেওয়ার ব্যাপারে বাবার হাতে অমৃতের মার খাওয়ার কথা বোঝানো হয়েছে।

২.৫ “আমি কুস্তি লড়তে চাই না,”-কে, কেন কুস্তি লরতে রাজি হয়নি?

উত্তর: অমৃত কুস্তি লড়তে রাজি হয়নি দুটি কারণে-প্রথমত,তার নতুন জামা নষ্ট হয়ে যেতে এবং দ্বিতীয়ত, ইসাব ছিল তার ঘনিষ্ঠ বন্ধু।

২.৬ “ইসাবের মেজাজ চড়ে গেল।” – ইসাবের মেজাজ চড়ে যাওয়ার কারণ কী?

উত্তরঃ কালিয়া অমৃতকে কুস্তির নামে মাটিতে ছুড়ে ফেলে দিয়েছিল, তাই দেখে ইসাবের মেজাজ চড়ে গিয়েছিল।

 

২.৭ “ব্যাপারটা ঘোরালো হয়ে পড়েছে” – কোন্‌ ব্যাপারকে ‘ঘোরালো’ বলা হয়েছে?

 

উত্তরঃ অমৃতের মার খাওয়ার বদলা নিতে ইসাব কালিয়াকে মাটিতে ফেলে দিলে ব্যাপারটা ঘোরালো হয়ে যায়।

২.৮ “এমন সময় শুনতে পেল ইসাবের বাবা ইসাবকে ডাকছেন।” – কখন তারা ইসাবের বাবার ডাক শুনতে পেয়েছিল?

উত্তরঃ ইসাব ও অমৃত যখন ভয়ে জামার কতটা, কি ছিঁড়েছে তা পরীক্ষা করছিল, এমন সময় তারা ইসাবের বাবার ডাক শুনতে পেল।

২.৯ “আমার সঙ্গে আয়” – কে, কাকে আসতে বলেছিল?

উত্তরঃ তারা দুজনে পরস্পর জামা অদলবদল করবে বলে অমৃত ইসাবের তার সঙ্গে আসতে বলেছিল।

২.১০ “উনি ভুরু কুঁচকোলেন।” – কে, কেন ভুরু কুঁচক্রছিলেন?

উত্তরঃ অমৃতের মা অমৃতের ছেঁড়া জামা দেখে ভুরু কুঁচকেছিল।

২.১১ “তারা ভয়ে বাড়ির দিকে ছুটে পালাতে লাগল।” – কারা, কেন ছুটে পালাচ্ছিল?

উত্তরঃ ইসাব ও অমৃত আশঙ্কা করেছিল যে, তাদের দুজনের বাবা জামা অদলবদল করার ব্যাপারটা জেনে যাবেন।

২.১২ “ও আমাকে শিখিয়েছে, খঁটি জিনিস কাকে বলে।” – বক্তা ‘খাঁটি জিনিস’ বলতে কী বোঝায় চেয়েছেন?

উত্তরঃ অমৃতের অকৃত্রিম বন্ধুপ্রীতিকে ‘খাঁটি জিনিস’ বলে উল্লেখ করেছেন। 

===============================================================================

অদল বদল অধ্যায় থেকে আরোও প্রশ্ন ও উত্তর দেখুন :   CLICK  HERE

================================================================================

ব্যাখ্যামূলক সংক্ষিপ্ত উত্তরধর্মী প্রশ্নোত্তর (কমবেশি ২০ শব্দে)

৩.১ “বলতে গেলে ছেলেদুটোর সবই একরকম, তফাত শুধু এই যে….।”- ছেলে দুটি কে কে? তাদের মিল ও অমিল উল্লেখ করো।

উত্তরঃ পান্নালাল প্যাটেলের লেখা অদল বদল গল্প থেকে সংকলিত উদ্ধৃতাংশে ছেলে দুটি হল বন্ধু ইসাব আর আমৃত।

     ইসাব ও অমৃতের মধ্যে মিল হল – তাদের জামার রং, মাপ ও কাপড় একই। তারা একই স্কুলে, একই ক্লাসে পড়ে। রাস্তার মোড়ে তাদের বাড়ি দুটিও মুখোমুখি। দুজনেরই বাবা পেশায় চাষি এবং জমিও তাদের প্রায় সমান সমান। দুজনেই সাময়িক বিপদ-আপদে সুদে টাকা ধার নিতে হয়। তবে পার্থক্য হল – অমৃতের পরিবারে বাবা-মা আর নিব ভাই রয়েছে, কিন্তু ইসাবের আছে শুধু তার বাবা।

৩.২ “অমৃতের অত জোর দিয়ে বলার কারণ ছিল।” -অমৃত জোর দিয়ে কী বলেছিল? তার জোর দিয়ে কী ছিল?

উত্তরঃ পান্নালাল প্যাটেল রচিত অদল বদল গল্পে অমৃত জোর দিয়ে বলেছিল, সে কুস্তি লড়তে চায় না। কারণ কুস্তি লড়লে তার মা তাকে মারবে।

     অমৃত অনেক কষ্ট, অনেক সাধ্যসাধনা করে বাবার কাছ থেকে ইসাবের মতো নতুন জামা পেয়েছিল। বাড়ি থেকে বেরোবার সময় তার মা তাকে সাবধান করে দিয়েছিলেন যে, সে যদি নতুন জামাটি ময়লা করে অথবা ছিঁড়ে ফেলে তাহলে তার কপালে অশেষ দুঃখ আছে। এই কারণেই অমৃত জোর দিয়ে তার অনীহা জ্ঞাপন করেছিল।

৩.৩ “অমৃত সত্যি তার বাবা-মাকে খুব জ্বালিয়েছিল।”-অমৃতের এরূপ আচারণের কারণ ব্যাখ্যা করো।

উত্তরঃ পান্নালাল প্যাটেলের লেখা অদল বদল গল্পের অন্যতম চরিত্র অমৃত ও ইসাবের বন্ধুত্ব ছিল গভীর। দুই বন্ধুর রুচিগত ও মানসিকতার মিলও ছিল চোখে পড়ার মতো। সেই কারণে ইসাব নতুন জামা কিনলে অমৃতও বায়না জুড়েছিল, তারও ওই একই রকম, একই রঙের নতুন জামা চাই। অমৃতের মা ছেলের এই আবদারকে প্রশ্রয় দিতে রাজি ছিলেন না, কিন্তু ইসাবের মতো জামা কেনার ইচ্ছে অমৃতকে এতটাই তাড়িত করেছিল যে, সে কোনো কথা শুনতে রাজি ছিল না। এই কারণেই অমৃত তার বাবা-মাকে খুব জ্বালিয়েছিল।

৩.৪ “অমৃত এতেও পিছপা হতে রাজি নয়।”-অমৃত কখন, কেন পিছপা হতে রাজি হয়নি?

উত্তরঃ পান্নালাল প্যাটেল রচিত অদল বদল গল্পে অমৃত তার বন্ধু ইসাবের মতো নতুন জামা নেবে বলে মায়ের কাছে বায়না জুরেছিল। কিন্তু অমৃতের মা ছেলেকে অকারণে নতুন জামা কিনে দিতে রাজি ছিলেন না এবং নানাভাবে তাকে বিরত করার চেষ্টা করছিলেন। শেষে বাধ্য হয়েই তিনি বলেছিলেন, ইসাব নতুন জামা পাওয়ার জন্য বাবার হাতে মার খেয়েছিল, তাই সে-ও কি একইভাবে মার খেতে প্রস্তুত? অমৃত তখন জামা কিনতে অত্যন্ত উদ্‌গ্রীব ছিল বলে মায়ের এই প্রস্তাবেও সে সায় দিয়েছিল।

৩.৫ “তামাশা করে হলেও এখন ব্যাপারটা ঘোরালো হয়ে পড়েছে”-কোন ব্যাপার, কীভাবে ‘ঘোরালো’ হয়ে পড়েছিল?

উত্তরঃ প্রশ্নোদ্ধৃত অংশটি পান্নালাল প্যাটেলের লেখা অদল বদল গল্প থেকে গৃহীত।

      আলোচ্য গল্পে হোলির দিন পড়ন্ত বিকেল বেলা নতুন জামাকাপড় পরে অমৃত ও ইসাব বাইরে বেরোলে কিছু ছেলে তাদের পরস্পরকে কুস্তি লড়তে নির্দেশ দেয়। কিন্তু তারা সেই নির্দেশ অমান্য করলে কালিয়া নামের একটি ছেলে অমৃতকে খোলা মাঠে এনে মাটিতে ছুড়ে ফেলে দেয়। বন্ধুর এরূপ অসহায়তা দেখে ইসাব চুপ করে না থেকে কালিয়াকে কুস্তি লড়তে বলে এবং লড়াইয়ের শুরুতে তাকে ল্যাং মারতেই কালিয়া হাত-পা ছড়িয়ে মাটিতে পড়ে গিয়ে চ্যাঁচাতে থাকে। এইভাবে তামাশা বা মজার ছলে কুস্তিপর্বটি আরম্ভ হলেও ধীরে ধীরে তা জটিল বা ঘোরালো আকার ধারণ করেছিল।

৩.৬ “ও আমাকে শিখিয়েছে, খাঁটি জিনিস কাকে বলে।”- ‘ও’ কে? উদ্দিষ্ট ব্যক্তি ‘খাঁটি জিনিস’ বলতে কী বুঝিয়েছেন?

উত্তরঃ আলোচ্য উদ্ধৃতাংশটি পান্নালাল প্যটেলের লেখা অদল বদল গল্প থেকে নেওয়া হয়েছে। এখানে ‘ও’ বলতে ইসাবের অভিন্নহৃদয় বন্ধু অমৃতের কথা বোঝানো হয়েছে।

     কুস্তি খেলতে গিয়ে ইসাবের নতুন জামাটি ছিঁড়ে গেলে বাড়ি ফিরে বাবার কাছে মার খেতে হবে সেই ভয়ে ইসাব কাঠ হয়ে যায়। এই সময় অমৃত তার গায়ের জামা, যা ইসাবের জামার মতোই দেখতে, সেটি ইসাবকে দিয়ে নিজে সেই ছেঁড়া জামাটি পড়তে চায়। ইসাবের বাবা সমস্ত কিছু আড়ালে থেকে দেখবার পর রেগে না-গিয়ে অমৃতের সহৃদয় ও সহানুভূতিশীল সত্তার পরিচয় লাভ করে মুগ্ধ হন। অমৃতের এই নির্ভেজাল বন্ধুত্ব পরোপকারী, দয়ালু মনোবৃত্তিকেই তিনি আলোচ্য প্রসঙ্গে খাঁটি জিনিস বলে উল্লেখ করেছেন।

৩.৭ “আজ থেকে আমরা অমৃতকে অদল আর ইসাবকে বদল বলে ডাকব।”-উক্তিটির তাৎপর্য সংক্ষেপে বুঝিয়ে দাও।

উত্তরঃ অমৃত গভীর বন্ধুপ্রীতি এবং সহানুভূতির পরিচয় দিয়ে ইসাবকে তার বাবার মায়ের হাত থেকে বাঁচানোর জন্য ইসাবের ছেঁড়া জামাটি নিজের গায়ে চড়িয়ে তার বদলে ইসাবকে নিজের নতুন ও অক্ষত জামাটি পড়তে দিয়েছিল। সমস্ত রকম সংকীর্ণ ধর্মীয় ভেদাভেদের ঊর্ধ্বে উঠে অমৃতের এই আচরণ সকলের কাছে দৃষ্টান্ত হয়ে উঠেছিল। তাই এই খবরটি সারা পাড়া ঘুরে গ্রাম প্রধানের কানে গেলে তিনি অমৃত ও ইসাবের নিবিড় বন্ধুত্বকে এক অর্থে সম্মান জানাতে উক্ত ঘোষণাটি করেছিলেন। আসলে অমৃত ও ইসাবের আচরণের মধ্যে যে অসাম্প্রদায়িক, সংবেদনশীল ও বন্ধুত্বপূর্ণ মানবিক ধর্ম ফুটে উঠেছিল তাকেই তিনি দৃষ্টান্তস্বরূপ প্রতিষ্ঠা করতে এমন পদক্ষেপ নিয়েছিলেন

===============================================================================

অদল বদল অধ্যায় থেকে আরোও প্রশ্ন ও উত্তর দেখুন :   CLICK  HERE

================================================================================

রচনাধর্মী প্রশ্নোত্তর | অদল বদল (গল্প) পান্নালাল প্যাটেল – মাধ্যমিক বাংলা প্রশ্ন ও উত্তর  

1. ‘ হাত ধরাধরি করে অমৃত ও ইসাব ওদের কাছে এল ।— ‘ ওদের ’ বলতে কাদের কথা বোঝানো হয়েছে ? অমৃত ও ইসাবের পরিচয় দাও ।

Ans: পান্নালাল প্যাটেল রচিত ‘ অদল বদল ‘ গল্পে ‘ ওদের বলতে গ্রামের ছেলের দলকে বোঝানো হয়েছে । গল্পের মূল চরিত্র অমৃত ও ইসাবকে ঘিরে যে ঘটনাপ্রবাহ আবর্তিত হয়েছে , তাতে অনুঘটকের কাজ করেছে এই ছেলের দল । 

  → আলোচ্য গল্পে অমৃত ও ইসাব দুজনে অভিন্নহৃদয় বন্ধু । তারা উভয়েই দরিদ্র চাষি পরিবারের সন্তান । অভাবের কারণে তাদের পিতাদের ছোটোখাটো প্রয়োজনেও মহাজনের কাছে হাত পাততে হয় । ইসাব ও অমৃত একই স্কুলে , একই ক্লাসে পড়ে । রাস্তার মোড়ে দুটি মুখোমুখি বাড়িতে তাদের অমৃত ও ইসাবের বাস । অমৃতের বাড়িতে রয়েছেন বাবা – মা ও তিন ভাই এবং ইসাবের বাবা ছাড়া আর কেউই নেই । অমৃত ও ইসাবের এই নিখাদ বন্ধুত্বে আন্তরিক গভীরতা ছিল । তাই অমৃতের মার খাওয়ার আশঙ্কা থাকলেও কালিয়ার হাত থেকে অমৃতকে বাঁচাতে ইসাব ঝাঁপিয়ে পড়েছিল । আবার নতুন জামা ছিঁড়ে যাওয়ার অপরাধে বাবার হাতে মার খাওয়া থেকে ইসাবকে বাঁচাতে অমৃত তার নতুন জামাটি ইসাবকে পরতে দেয় । সে জামা নেওয়ার আগে ইসার জেনে নিতে চায় , ছেঁড়া জামা পরার জন্য অমৃতকে বকুনি খেতে হবে কিনা ।

2. ‘ অমৃতের অত জোর দিয়ে বলার কারণ ছিল।— অমৃত কাকে , কী বলেছিল ? অমৃতের অত জোর দিয়ে বলার কী কারণ ছিল ?

Ans: পান্নালাল প্যাটেলের ‘ অদল বদল ’ গল্পটিতে অভিন্নহৃদয় দুই বন্ধু অমৃত আর ইসাব হোলির দিন একই রং , মাপ ও কাপড়ের তৈরি জামা পরে রাস্তায় বেরোলে তাদের দেখে গ্রামের অমৃত কাকে , কী ছেলেরা কিছুটা ঈর্ষান্বিত হয়ে পড়ে । একই রকম বলেছিল জামার মতো তাদের শারীরিক শক্তি একই রকম কিনা পরীক্ষার জন্য তারা দুজনকে কুস্তি লড়ার প্রস্তাব দেয় । অমৃত ইসাবের দিকে তাকিয়ে দৃঢ় স্বরে তাদের বলে , ‘ না , তাহলে মা আমাকে ঠ্যাঙ্গাবে । ‘ খুব সাধারণ দরিদ্র চাষি পরিবারের ছেলে অমৃত আর ইসাব । তাদের বাবারা যতটুকু আয় করেন তা দিয়ে তারা সংসার চালাতে হিমসিম খান । এমন পরিবারে উৎসব উপলক্ষ্যে নতুন জামা চাওয়া অমৃতের জোর দিয়ে মানে উৎপাত ছাড়া আর কিছুই নয় । এসব সত্ত্বেও বলার কারণ ইসাবের বাবা ইসাবকে নতুন জামা বানিয়ে দেন । ইসাবের জামা দেখে অমৃতও নতুন জামার আবদার করে মা – র কাছে । মা তাকে বোঝালেও নাছোড় অমৃতকে শেষপর্যন্ত তার মা – বাবাকে নতুন জামা দিতেই হয় । বহু কষ্টের এই জামা যাতে নষ্ট না হয় , সে ব্যাপারে অমৃতের মা – র কঠোর নির্দেশ ছিল । একদিকে বন্ধুত্ব ও অন্যদিকে মা – র কঠোর নির্দেশ , এই দুই কারণেই গ্রামের ছেলেদের কুস্তি লড়ার প্রস্তাব অমৃত জোরের সঙ্গে ফিরিয়ে দেয় ।

3. ‘ ছেলের দল আনন্দে চেঁচিয়ে উঠল , -ছেলের দলের আনন্দের কারণ ব্যাখ্যা করো । এই আনন্দ স্থায়ী হয়েছিল কি ?

 অথবা , ‘ তামাশা করে হলেও এখন ব্যাপারটা ঘোরালো হয়ে পড়েছে — তামাশা করে হওয়া ঘটনাটি ব্যস্ত করো । ব্যাপারটা ‘ ঘোরালো হয়ে পড়ল কেন ?

Ans: পান্নালাল প্যাটেলের ‘ অদল বদল ‘ গঙ্গে হোলির দিন ভিন্ন সম্প্রদায়ের অভিন্ন হৃদয়ের অধিকারী দুই বন্ধু অমৃত আর ইসাব একই রঙের , একই মাপের নতুন জামা পরে বেরোয় । গ্রামের দুষ্টু ছেলেরা তা দেখে মজা পায় এবং তাদের শারীরিক শক্তিও একই রকম কিনা জানার জন্য অমৃতকে কুস্তি লড়ার প্রস্তাব দেয় । একদিকে বন্ধুত্ব আর অন্যদিকে মা – র জামা ময়লা বা নষ্ট না হওয়ার কঠোর নির্দেশ — এই দুই কারণে অমৃত কুস্তি লড়ার প্রস্তাব ফিরিয়ে দেয় । কিন্তু নাছোড় ছেলের দল তাকে জোর করে মাঠে নিয়ে যায় । সেখানে কালিয়া তাকে জোর করে মাটিতে ফেলে দেয় । অমৃত যে কালিয়ার কাছে হেরে গেছে এই দেখে ছেলের দল আনন্দ করতে থাকে । 

  ছেলের দলের এই আনন্দ বেশিক্ষণ স্থায়ী হয়নি । কারণ প্রিয় বন্ধু অমৃতের দুর্দশা দেখে ইসাব চুপ থাকতে পারেনি । সে কালিয়াকে ল্যাং মেরে মাটিতে ফেলে দেয় । কালিয়া কাঁদতে থাকে । মুহূর্তের মধ্যে ছেলের দল – সহ ইসাব , অমৃতও সে স্থান ত্যাগ করে কালিয়ার মা – বাবার ভয়ে । এভাবেই ব্যাপারটি ঘোরালো হয়ে ওঠে ।

4. ‘ ইসাবের বাবা ছেঁড়া শার্ট দেখা মাত্র ওর চামড়া তুলে নেবে । — বিষয়টি স্পষ্ট করো । এই পরিণতি থেকে রক্ষা পেতে তারা কোন্ পথ অবলম্বন করেছিল ?

Ans: পান্নালাল প্যাটেলের ‘ অদল বদল ’ গল্পের দুই কেন্দ্রীয় চরিত্র অমৃত ও ইসাব দরিদ্র কৃষক পরিবারের সন্তান । তাদের বাবাদের দারিদ্র্য এতটাই যে হোলি উপলক্ষ্যে ছেলেদের নতুন জামা তৈরির জন্যও মহাজনদের কাছে তাদের হাত পাততে হয়েছে । এমন পরিবারের ছেলেরা যদি নতুন জামা ছিঁড়ে ফেলে তবে সেটা যে ক্ষমাহীন অপরাধের মধ্যে পড়ে তা বলার অপেক্ষা রাখে না । নতুন জামা পরে অমৃত ও ইসাব দুই বন্ধু রাস্তায় বের হলে একদল দুষ্টু ছেলের মাথায় মতলব আসে তাদের শক্তি পরীক্ষার । তারা অমৃত ও ইসাবকে কুস্তি লড়ার প্রস্তাব দেয় । অমৃত এতে রাজি না হওয়ায় তারা তাকে রাস্তায় ফেলে আনন্দ করতে থাকে । বন্ধুর হেনস্থা দেখে ইসাব প্রতিশোধ নিতে মারামারিতে জড়িয়ে পড়ে । তার নতুন জামা ছিঁড়ে যায় । কষ্টের টাকায় কেনা জামা ছিঁড়ে ফেলায় ইসাবকে যে বাবার হাতে মার খেতে হবে সেই আশঙ্কার কথাই এখানে বলা হয়েছে । 

   এই পরিণতি থেকে বাঁচতে বুদ্ধি করে দুই বাড়ির মাঝে এক নির্জন স্থানে অমৃত তার অক্ষত জামাটি ইসাবের গায়ে তুলে দেয় আর তার ছেঁড়া জামাটা নিজে পরে নেয় ।

5. ‘ ও আমাকে শিখিয়েছে , খাঁটি জিনিস কাকে বলে ? ‘ খাঁটি জিনিস ‘ বলতে কী বোঝানো হয়েছে ? তা কে , কাকে , কীভাবে শিখিয়েছে ?

Ans: পান্নালাল প্যাটেলের ‘ অদল বদল ‘ গল্পে উদ্ধৃত অংশটির বন্ধা হলেন ইসাবের বাবা পাঠান । এক্ষেত্রে যে – দুটি খাঁটি জিনিসের কথা বলা হয়েছে তার মধ্যে একটি হল মায়ের স্নেহ ও ভালোবাসা যা পিতার কাছে সর্বদা মেলে না । আর অন্যটি হল নিখাদ বন্ধুত্ব যেটি অভিন্নহৃদয়ের দুই বন্ধু অমৃত ও ইসাবের মধ্যে দেখা গিয়েছিল ।

   আলোচ্য গল্পে দশ বছরের বালক অমৃত তার অভিন্নহৃদয়ের বন্ধু ইসাবের বাবা পাঠানকে এ কথা বুঝিয়েছিল যে , খাঁটি জিনিস বলতে কী বোঝায় । অমৃত ও ইসাবের বন্ধুত্বের শিকড় যে কত গভীর তা বোঝা যায় । তখন , যখন অমৃত কালিয়ার হাতে মার খেয়ে পড়ে গেলে ইসাব ক্রুদ্ধ হয়ে ওঠে এবং অমৃতকে বাঁচাতে গিয়ে মারপিটে জড়িয়ে পড়ে সে তার জামা ছিঁড়ে ফেলে । অমৃত ইসাবকে বাঁচাতে তার ভালো জামাটা ইসাবকে দিয়ে দেয় । ইসাব প্রশ্ন তোলে অমৃতকেও তো মার খেতে হতে পারে । অমৃত তখন জানায় তাকে রক্ষার জন্য তার মা আছেন কিন্তু ইসাবের তো মা নেই । আড়াল থেকে শোনা অমৃতের কথাগুলো ইসাবের বাবাকে ভাবিয়ে তুলেছিল । তিনি বুঝেছিলেন মাতৃহারা সন্তানের পিতাকে শুধু পিতা নয় মা – ও হয়ে উঠতে হবে । এ ছাড়া দুই বন্ধুর বন্ধুত্বের গভীরতা ইসাবের বাবার মনের পরিবর্তন এনে দিয়েছেন । 

6. ‘ অদল বদল ’ গল্পে অমৃত চরিত্রটি বিশ্লেষণ করো । 

Ans: ‘ অদল বদল ‘ গল্পের অন্যতম কেন্দ্রীয় চরিত্র অমৃত । গল্পের শুরুতে গরিব ঘরের এই ছেলেটিকে জেদি , একগুঁয়ে ও অবুঝ প্রকৃতির মনে হয় । যেভাবে নতুন জামা পাওয়ার জন্য বাড়িতে সে উৎপীড়ন চালিয়েছে তা দেখে পাঠকের খারাপ লাগতেই পারে , কিন্তু যেহেতু সে ছেলেমানুষ তাই চরিত্রটি অস্বাভাবিক লাগেনি বরং খুব চেনাই লেগেছে ।

   বাবা – মাকে মানসিকভাবে উৎপীড়ন করে সে যে জামা আদায় করে তা কিন্তু বন্ধু ইসাবের জামা দেখেই । কিন্তু গল্প যত এগিয়েছে পাঠকের কাছে ধীরে ধীরে অমৃতের স্বরূপ উন্মোচিত হয়েছে । অমৃতকে নতুন করে পাই , যখন কালিয়ার সঙ্গে তার হয়ে লড়াই করতে গিয়ে ইসাবের জামা ছিঁড়ে গেলে বাবার বন্ধুবৎসল হাতের মার খাওয়া থেকে বাঁচাতে ইসাবকে নিজের জামাটি সে দিয়ে দেয় । অমৃত বুঝেছিল বাবার হাত থেকে তাকে বাঁচানোর জন্য তার মা আছে কিন্তু ইসাবের কেউ নেই । অমৃতের চরিত্রে সহানুভূতিশীল মাতৃভক্তি , বন্ধুপ্রীতি ও ঔদার্যের পরিচয় পাওয়া যায় ।

  গল্পের মুখ্য উপজীব্য যে বন্ধুত্ব তা প্রতিষ্ঠাতে অমৃতের ভূমিকা যথেষ্ট । সে শুধু জামা অদলবদল ঘটায়নি সমগ্র সমাজের মানসিকতার বদল ঘটিয়েছিল ।

7. ইসাবের বাবার চরিত্রটি আলোচনা করো ।

Ans: পান্নালাল প্যাটেলের ‘ অদল বদল ‘ গল্পে ইসাবের বাবা হাসান পাঠান একটি গুরুত্বপূর্ণ পার্শ্বচরিত্রের ভূমিকা পালন করেছেন । ইসাবের বাবা একজন দরিদ্র চাষি । কারণে – অকারণে মহাজনের কাছে হাত পাততে হয় তাঁকে । অভাব তাঁর নিত্যসঙ্গী হলেও হোলি উৎসব । উপলক্ষ্যে পুত্র ইসাবকে নতুন জামা তৈরি করে দেওয়ার মধ্যে , এক স্নেহশীল পিতা হিসেবেই তাঁকে দেখা যায় । বিপত্নীক হাসান নিজেকে সর্বদা ঠিক রাখতে না পেরে মাঝে মাঝে ছেলেকে শাসন করেছেন , তবে তা অন্তর থেকে নয় । অভাবের সংসারে তিনি ছেলেকে খেতে কাজ করাতেও বাধ্য হয়েছেন । 

  ইসাবের বাবার সংবেদনশীল মনের পরিচয় পাওয়া যায় , ছোট্ট অমৃতের সংবেদনশীল কথা … কিন্তু আমাকে বাঁচানোর জন্য তো আমার মা আছে ’ , শোনার পর উপলব্ধি করেন যে , মা – হারা ছেলের বাবাকে মা – বাবার দ্বৈত ভূমিকা পালন করতে হয় । 

  তিনি আবেগে আপ্লুত হয়ে অমৃতের মায়ের কাছ থেকে অমৃতকেই চেয়ে বসেন । তার মন এতটাই পুলকিত হয়েছিল যে , অমৃতের কথা তিনি সকলকে বলতে থাকেন । এক্ষেত্রে তার মধ্যে একটা শিশুসুলভ আবেগ লক্ষ করা যায় । আবেগপ্রবণ ও শিশুসুলভ উদার পিতৃহদা ও অসাম্প্রদায়িক মন আসলে তিনি একাধারে যেমন উদার পিতৃহৃদয়ের অধিকারী তেমনই তাঁর মধ্যে রয়েছে একটি অসাম্প্রদায়িক মন । তাই ছোট্ট দুটি ছেলের মধ্যে জামা অদলবদলের ঘটনা দেখে তিনি অতিসহজেই অমৃতের হৃদয়ের মাতৃভক্তি , বন্ধুপ্রীতি ও অকৃত্রিম ভালোবাসার মতো ‘ খাঁটি জিনিস ’ – টিকে চিনে নিয়েছেন । তাঁর প্রশংসার ফলেই অদলবদলের ঘটনা গোটা গ্রামে ছড়িয়ে পড়েছে । তিনি নিজেও স্বার্থহীন ও অসাম্প্রদায়িক তাই ছোট্ট অমৃতের কাছ থেকে ভালোবাসা ও উদারতার শিক্ষা নিয়ে নিজেকে বদলে ফেলে , তিনি নিজেও একটি মহৎ চরিত্র হয়ে উঠেছেন ।

8. অমৃতের মায়ের চরিত্রটি আলোচনা করো । 

Ans: ‘ অদল বদল ‘ গল্পের একমাত্র নারীচরিত্র হলেন অমৃতের মা । একদিকে দরিদ্র পরিবারের টানাটানি , অন্যদিকে বিবেচক অমৃত – সহ চার সন্তানের অভাব – অভিযোগ – আবদার সামলানোর অভ্যেস এ দুই – ই তাঁর রয়েছে । 

  অমৃত নতুন জামার জন্য গোঁ ধরায় প্রথমে তিনি তাকে বুঝিয়ে সুঝিয়ে নিরস্ত করতে চান । এমনকি ভর্ৎসনা ও প্রহারের ভয়ও দেখান । এতেও কাজ না হলে তিনি অমৃতকে কায়দা করে বাবার কাছে পাঠাতে চান । তিনি জানতেন , যে আবদার আদর ও শাসনের সাম্য রক্ষাকারী অমৃত তার কাছে করছে , তা সে তার বাবার কাছে করতে পারবে না । এতেও সফল না হলে এবং অমৃত নানাভাবে তাঁদের মানসিক উৎপীড়ন করতে থাকলে , আবার তিনিই অমৃতের বাবাকে জামার জন্য রাজি করান । তাঁর দায়িত্ববোধ , আদর ও শাসনের সমতা তাঁর পুত্র অমৃতকেও , তাঁর উপর নির্ভরশীল করে তোলে । অমৃত জানত , মা যতই শাসন করুন না কেন , দিনের শেষে তিনিই নির্ভরযোগ্য তার একমাত্র আশ্রয় । এই মাতৃমূর্তি চিরন্তনী । তাঁর কোনো নাম প্রয়োজন ছিল না , যদিও ইসাবের বাবাকে শোনা যায় তাঁকে ‘ বাহালি বৌদি ‘ বলে ডাকতে । মোটের ওপর ভালোবাসা ও মমতা দিয়ে গড়া এক স্বয়ংসম্পূর্ণ মা হয়ে উঠেছে অমৃতের মায়ের চরিত্রটি । 

9. ‘ অদল বদল ‘ গল্পের নামকরণ কতখানি সার্থক হয়েছে , তা আলোচনা করো ।

Ans: নামকরণের সার্থকতা ‘ অংশটি দ্যাখো ।

10. ‘ অমৃত সত্যি তার বাবা – মাকে খুব জ্বালিয়েছিল । —অমৃত কাভাবে বাবা – মাকে জ্বালাতন করেছিল ? অবশেষে অমৃতের মা কী করেছিলেন ?

Ans: অমৃতের বাবা – মাকে জ্বালাতন উত্তর অমৃত আর ইসাব – দুজন খুব ভালো বন্ধুর গল্প পান্নালাল প্যাটেলের ‘ অদল বদল ‘ গল্পটি । পরস্পরের বন্ধুত্ব যেমন গাঢ় তেমনই পোশাক – পরিচ্ছদ হেতু পরস্পরের রেষারেষি বেশ প্রবল । দুজনের বাবাই খেত মজুর । খেতে কাজ করতে গিয়ে ইসাবের জামা ছিঁড়ে যাওয়ার তার বাবা তাকে নতুন জামা কিনে দিলে তার দেখাদেখি অমৃতেরও নতুন জামা কেনার জন্য বাবা – মার কাছে জেদ করে । ফতোয়া জারি করে নতুন জামা কিনে না দিলে সে স্কুলে যাবে না । তার যে নতুন জামা নেই তা বোঝাতে নিজের জামার আবিষ্কার করে কোনো ছোটো একটা ছেঁড়া জায়গা , যাতে আঙুল ঢুকিয়ে সেই জায়গাকে আরও ছিড়ে দেয় । মা অনেকভাবে অমৃতকে বোঝানোর চেষ্টা করেও ব্যর্থ হন , সে খাওয়াদাওয়া ছেড়ে দেয় , রাতে বাড়ি ফিরতেও চায় না ; ইসাবদের গোয়ালে লুকিয়ে থাকে । এভাবেই অমৃত তার বাবা – মাকে জ্বালাতন করত । 

  অমৃতের মা অমৃতকে তার এই জেদের জন্য বেকায়দায় ফেলতে কৌশলে নতুন জামা কেনার ব্যাপারে তার বাবার কাছে বলতে বলেন । এও বলেন , ইসাবকে জামা কিনে দেওয়ার আগে তার বাবা তাকে খুব মেরেছিল । এক্ষেত্রে অবশ্য অমৃত মার খেতেও রাজি হয়ে যায় । অমৃতের মা জানতেন , অমৃত বাবার মুখের উপর কথা বলবে না , আর অমৃত জানত মা যদি জামা কেনার ব্যাপারে না – বলেন , তবে তার বাবার রাজি হওয়ার সম্ভাবনা খুবই কম । অবশেষে অমৃতের মা হাল ছেড়ে দিয়ে অমৃতের বাবাকে রাজি করিয়েছিলেন তাকে জামা কিনে দেওয়ার জন্য ।

11. ‘ অদল বদল ‘ গল্পে অতিসাধারণ একটি কাহিনির আশ্রয় নিয়ে লেখক যে – সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির প্রতি আমাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করাতে চেয়েছেন বুঝিয়ে দাও ।

Ans: পান্নালাল প্যাটেলের ‘ অদল বদল ‘ গল্পটি গড়ে উঠেছে অমৃত আর ইসাবের বন্ধুত্বকে কেন্দ্র করে । অমৃত ও ইসাব দুই বন্ধু । তারা একই স্কুলে একই শ্রেণিতে পড়ে । মুখোমুখি বাড়িতে থাকে । দুজনই অভাবী চাষির বাড়ির ছেলে । ইসাবের বাবা ছেলের জামা ছিঁড়ে যাওয়ায় সুদখোরের কাছ থেকে টাকা ধার নিয়ে অনেক বাছাবাছি করে , ইসারকে একটি জামা তৈরি করে দেয় । সেই দেখে অমৃতও জেদ ধরে তারও নতুন জামা চাই । সে অনেক কাঠখড় পুড়িয়ে বাবা – মায়ের কাছ থেকে ঠিক একইরকম একটি জামা আদায় করে । দুই বন্ধু হোলির দিন বিকেলে নতুন জামা গায়ে দিয়ে বেরোয় । কিন্তু দুষ্টু ছেলেদের একটি দল পেছনে লাগে । কালিয়া বলে একটি ছেলে অমৃতকে ধরে মাঠের মধ্যে ছুড়ে ফেলে দেয় । এর প্রতিবাদে ইসাব তাকে ল্যাং মারে । তবে ধস্তাধস্তিতে ইসাবের নতুন জামাটি ছিঁড়ে যায় । দুজনেই জামা ছেঁড়ার কারণে বাড়ি ফিরতে ভয় পায় । তখন অমৃত নিজের অক্ষত জামাটি ইসাবকে দিয়ে , সে তার ছেঁড়া জামাটি পরে । কারণ অমৃতকে বাবার হাত থেকে মা বাঁচালেও মাতৃহীন ইসাবকে বাঁচানোর কেউ ছিল না । ছোট্ট ছেলেদুটির এই কাণ্ড ইসাবের বাবা হাসান দেখে ফেলে । ভালোবাসা আর বন্ধুত্বের এমন আশ্চর্য নিদর্শন দেখে তার অবাক লাগে । ক্রমে হাসানের মুখ থেকে পাড়া – প্রতিবেশী হয়ে এ ঘটনার কথা গোটা গ্রামে ছড়িয়ে পড়ে । মুগ্ধ গ্রাম – প্রধান দুজনের নাম দেন অদল বদল । বিশ্বাস – স্বার্থ – শূন্যতা ও ভালোবাসা যে ধর্ম – সম্প্রদায়ের সংকীর্ণ ভেদাভেদের ঊর্ধ্বে , এই গল্পে তাই প্রমাণ করে । গল্পকার অমৃত ও ইসাবের পারস্পরিক সম্পর্ক এবং নির্ভরতার মাধ্যমে বুঝিয়ে দেন ; মানুষের মানবিকতার সম্বন্ধ সাম্প্রদায়িক বিভাজনের অনেক ঊর্ধ্বে প্রতিষ্ঠিত ।

===============================================================================

অদল বদল অধ্যায় থেকে আরোও প্রশ্ন ও উত্তর দেখুন :   CLICK  HERE

================================================================================

রচনাধর্মী প্রশ্নোত্তর | অদল বদল (গল্প) পান্নালাল প্যাটেল – মাধ্যমিক বাংলা সাজেশন | Madhyamik Bengali Suggestion : 

1. ‘ অদল বদল ’ গল্পে অমৃত চরিত্রটি বিশ্লেষণ করো । 

Answer: ‘ অদল বদল ‘ গল্পের অন্যতম কেন্দ্রীয় চরিত্র অমৃত । গল্পের শুরুতে গরিব ঘরের এই ছেলেটিকে জেদি , একগুঁয়ে ও অবুঝ প্রকৃতির মনে হয় । যেভাবে নতুন জামা পাওয়ার জন্য বাড়িতে সে উৎপীড়ন চালিয়েছে তা দেখে পাঠকের খারাপ লাগতেই পারে , কিন্তু যেহেতু সে ছেলেমানুষ তাই চরিত্রটি অস্বাভাবিক লাগেনি বরং খুব চেনাই লেগেছে ।

   বাবা – মাকে মানসিকভাবে উৎপীড়ন করে সে যে জামা আদায় করে তা কিন্তু বন্ধু ইসাবের জামা দেখেই । কিন্তু গল্প যত এগিয়েছে পাঠকের কাছে ধীরে ধীরে অমৃতের স্বরূপ উন্মোচিত হয়েছে । অমৃতকে নতুন করে পাই , যখন কালিয়ার সঙ্গে তার হয়ে লড়াই করতে গিয়ে ইসাবের জামা ছিঁড়ে গেলে বাবার বন্ধুবৎসল হাতের মার খাওয়া থেকে বাঁচাতে ইসাবকে নিজের জামাটি সে দিয়ে দেয় । অমৃত বুঝেছিল বাবার হাত থেকে তাকে বাঁচানোর জন্য তার মা আছে কিন্তু ইসাবের কেউ নেই । অমৃতের চরিত্রে সহানুভূতিশীল মাতৃভক্তি , বন্ধুপ্রীতি ও ঔদার্যের পরিচয় পাওয়া যায় ।

  গল্পের মুখ্য উপজীব্য যে বন্ধুত্ব তা প্রতিষ্ঠাতে অমৃতের ভূমিকা যথেষ্ট । সে শুধু জামা অদলবদল ঘটায়নি সমগ্র সমাজের মানসিকতার বদল ঘটিয়েছিল ।

2. ইসাবের বাবার চরিত্রটি আলোচনা করো ।

Answer: পান্নালাল প্যাটেলের ‘ অদল বদল ‘ গল্পে ইসাবের বাবা হাসান পাঠান একটি গুরুত্বপূর্ণ পার্শ্বচরিত্রের ভূমিকা পালন করেছেন । ইসাবের বাবা একজন দরিদ্র চাষি । কারণে – অকারণে মহাজনের কাছে হাত পাততে হয় তাঁকে । অভাব তাঁর নিত্যসঙ্গী হলেও হোলি উৎসব । উপলক্ষ্যে পুত্র ইসাবকে নতুন জামা তৈরি করে দেওয়ার মধ্যে , এক স্নেহশীল পিতা হিসেবেই তাঁকে দেখা যায় । বিপত্নীক হাসান নিজেকে সর্বদা ঠিক রাখতে না পেরে মাঝে মাঝে ছেলেকে শাসন করেছেন , তবে তা অন্তর থেকে নয় । অভাবের সংসারে তিনি ছেলেকে খেতে কাজ করাতেও বাধ্য হয়েছেন । 

  ইসাবের বাবার সংবেদনশীল মনের পরিচয় পাওয়া যায় , ছোট্ট অমৃতের সংবেদনশীল কথা … কিন্তু আমাকে বাঁচানোর জন্য তো আমার মা আছে ’ , শোনার পর উপলব্ধি করেন যে , মা – হারা ছেলের বাবাকে মা – বাবার দ্বৈত ভূমিকা পালন করতে হয় । 

  তিনি আবেগে আপ্লুত হয়ে অমৃতের মায়ের কাছ থেকে অমৃতকেই চেয়ে বসেন । তার মন এতটাই পুলকিত হয়েছিল যে , অমৃতের কথা তিনি সকলকে বলতে থাকেন । এক্ষেত্রে তার মধ্যে একটা শিশুসুলভ আবেগ লক্ষ করা যায় । আবেগপ্রবণ ও শিশুসুলভ উদার পিতৃহদা ও অসাম্প্রদায়িক মন আসলে তিনি একাধারে যেমন উদার পিতৃহৃদয়ের অধিকারী তেমনই তাঁর মধ্যে রয়েছে একটি অসাম্প্রদায়িক মন । তাই ছোট্ট দুটি ছেলের মধ্যে জামা অদলবদলের ঘটনা দেখে তিনি অতিসহজেই অমৃতের হৃদয়ের মাতৃভক্তি , বন্ধুপ্রীতি ও অকৃত্রিম ভালোবাসার মতো ‘ খাঁটি জিনিস ’ – টিকে চিনে নিয়েছেন । তাঁর প্রশংসার ফলেই অদলবদলের ঘটনা গোটা গ্রামে ছড়িয়ে পড়েছে । তিনি নিজেও স্বার্থহীন ও অসাম্প্রদায়িক তাই ছোট্ট অমৃতের কাছ থেকে ভালোবাসা ও উদারতার শিক্ষা নিয়ে নিজেকে বদলে ফেলে , তিনি নিজেও একটি মহৎ চরিত্র হয়ে উঠেছেন ।

3. অমৃতের মায়ের চরিত্রটি আলোচনা করো । 

Answer: ‘ অদল বদল ‘ গল্পের একমাত্র নারীচরিত্র হলেন অমৃতের মা । একদিকে দরিদ্র পরিবারের টানাটানি , অন্যদিকে বিবেচক অমৃত – সহ চার সন্তানের অভাব – অভিযোগ – আবদার সামলানোর অভ্যেস এ দুই – ই তাঁর রয়েছে । 

  অমৃত নতুন জামার জন্য গোঁ ধরায় প্রথমে তিনি তাকে বুঝিয়ে সুঝিয়ে নিরস্ত করতে চান । এমনকি ভর্ৎসনা ও প্রহারের ভয়ও দেখান । এতেও কাজ না হলে তিনি অমৃতকে কায়দা করে বাবার কাছে পাঠাতে চান । তিনি জানতেন , যে আবদার আদর ও শাসনের সাম্য রক্ষাকারী অমৃত তার কাছে করছে , তা সে তার বাবার কাছে করতে পারবে না । এতেও সফল না হলে এবং অমৃত নানাভাবে তাঁদের মানসিক উৎপীড়ন করতে থাকলে , আবার তিনিই অমৃতের বাবাকে জামার জন্য রাজি করান । তাঁর দায়িত্ববোধ , আদর ও শাসনের সমতা তাঁর পুত্র অমৃতকেও , তাঁর উপর নির্ভরশীল করে তোলে । অমৃত জানত , মা যতই শাসন করুন না কেন , দিনের শেষে তিনিই নির্ভরযোগ্য তার একমাত্র আশ্রয় । এই মাতৃমূর্তি চিরন্তনী । তাঁর কোনো নাম প্রয়োজন ছিল না , যদিও ইসাবের বাবাকে শোনা যায় তাঁকে ‘ বাহালি বৌদি ‘ বলে ডাকতে । মোটের ওপর ভালোবাসা ও মমতা দিয়ে গড়া এক স্বয়ংসম্পূর্ণ মা হয়ে উঠেছে অমৃতের মায়ের চরিত্রটি । 

 

4. ‘ অমৃত সত্যি তার বাবা – মাকে খুব জ্বালিয়েছিল । —অমৃত কাভাবে বাবা – মাকে জ্বালাতন করেছিল ? অবশেষে অমৃতের মা কী করেছিলেন ?

 

Answer: অমৃতের বাবা – মাকে জ্বালাতন উত্তর অমৃত আর ইসাব – দুজন খুব ভালো বন্ধুর গল্প পান্নালাল প্যাটেলের ‘ অদল বদল ‘ গল্পটি । পরস্পরের বন্ধুত্ব যেমন গাঢ় তেমনই পোশাক – পরিচ্ছদ হেতু পরস্পরের রেষারেষি বেশ প্রবল । দুজনের বাবাই খেত মজুর । খেতে কাজ করতে গিয়ে ইসাবের জামা ছিঁড়ে যাওয়ার তার বাবা তাকে নতুন জামা কিনে দিলে তার দেখাদেখি অমৃতেরও নতুন জামা কেনার জন্য বাবা – মার কাছে জেদ করে । ফতোয়া জারি করে নতুন জামা কিনে না দিলে সে স্কুলে যাবে না । তার যে নতুন জামা নেই তা বোঝাতে নিজের জামার আবিষ্কার করে কোনো ছোটো একটা ছেঁড়া জায়গা , যাতে আঙুল ঢুকিয়ে সেই জায়গাকে আরও ছিড়ে দেয় । মা অনেকভাবে অমৃতকে বোঝানোর চেষ্টা করেও ব্যর্থ হন , সে খাওয়াদাওয়া ছেড়ে দেয় , রাতে বাড়ি ফিরতেও চায় না ; ইসাবদের গোয়ালে লুকিয়ে থাকে । এভাবেই অমৃত তার বাবা – মাকে জ্বালাতন করত । 

  অমৃতের মা অমৃতকে তার এই জেদের জন্য বেকায়দায় ফেলতে কৌশলে নতুন জামা কেনার ব্যাপারে তার বাবার কাছে বলতে বলেন । এও বলেন , ইসাবকে জামা কিনে দেওয়ার আগে তার বাবা তাকে খুব মেরেছিল । এক্ষেত্রে অবশ্য অমৃত মার খেতেও রাজি হয়ে যায় । অমৃতের মা জানতেন , অমৃত বাবার মুখের উপর কথা বলবে না , আর অমৃত জানত মা যদি জামা কেনার ব্যাপারে না – বলেন , তবে তার বাবার রাজি হওয়ার সম্ভাবনা খুবই কম । অবশেষে অমৃতের মা হাল ছেড়ে দিয়ে অমৃতের বাবাকে রাজি করিয়েছিলেন তাকে জামা কিনে দেওয়ার জন্য ।

5. ‘ অদল বদল ‘ গল্পে অতিসাধারণ একটি কাহিনির আশ্রয় নিয়ে লেখক যে – সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির প্রতি আমাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করাতে চেয়েছেন বুঝিয়ে দাও ।

Answer: পান্নালাল প্যাটেলের ‘ অদল বদল ‘ গল্পটি গড়ে উঠেছে অমৃত আর ইসাবের বন্ধুত্বকে কেন্দ্র করে । অমৃত ও ইসাব দুই বন্ধু । তারা একই স্কুলে একই শ্রেণিতে পড়ে । মুখোমুখি বাড়িতে থাকে । দুজনই অভাবী চাষির বাড়ির ছেলে । ইসাবের বাবা ছেলের জামা ছিঁড়ে যাওয়ায় সুদখোরের কাছ থেকে টাকা ধার নিয়ে অনেক বাছাবাছি করে , ইসারকে একটি জামা তৈরি করে দেয় । সেই দেখে অমৃতও জেদ ধরে তারও নতুন জামা চাই । সে অনেক কাঠখড় পুড়িয়ে বাবা – মায়ের কাছ থেকে ঠিক একইরকম একটি জামা আদায় করে । দুই বন্ধু হোলির দিন বিকেলে নতুন জামা গায়ে দিয়ে বেরোয় । কিন্তু দুষ্টু ছেলেদের একটি দল পেছনে লাগে । কালিয়া বলে একটি ছেলে অমৃতকে ধরে মাঠের মধ্যে ছুড়ে ফেলে দেয় । এর প্রতিবাদে ইসাব তাকে ল্যাং মারে । তবে ধস্তাধস্তিতে ইসাবের নতুন জামাটি ছিঁড়ে যায় । দুজনেই জামা ছেঁড়ার কারণে বাড়ি ফিরতে ভয় পায় । তখন অমৃত নিজের অক্ষত জামাটি ইসাবকে দিয়ে , সে তার ছেঁড়া জামাটি পরে । কারণ অমৃতকে বাবার হাত থেকে মা বাঁচালেও মাতৃহীন ইসাবকে বাঁচানোর কেউ ছিল না । ছোট্ট ছেলেদুটির এই কাণ্ড ইসাবের বাবা হাসান দেখে ফেলে । ভালোবাসা আর বন্ধুত্বের এমন আশ্চর্য নিদর্শন দেখে তার অবাক লাগে । ক্রমে হাসানের মুখ থেকে পাড়া – প্রতিবেশী হয়ে এ ঘটনার কথা গোটা গ্রামে ছড়িয়ে পড়ে । মুগ্ধ গ্রাম – প্রধান দুজনের নাম দেন অদল বদল । বিশ্বাস – স্বার্থ – শূন্যতা ও ভালোবাসা যে ধর্ম – সম্প্রদায়ের সংকীর্ণ ভেদাভেদের ঊর্ধ্বে , এই গল্পে তাই প্রমাণ করে । গল্পকার অমৃত ও ইসাবের পারস্পরিক সম্পর্ক এবং নির্ভরতার মাধ্যমে বুঝিয়ে দেন ; মানুষের মানবিকতার সম্বন্ধ সাম্প্রদায়িক বিভাজনের অনেক ঊর্ধ্বে প্রতিষ্ঠিত ।

6. ‘ হাত ধরাধরি করে অমৃত ও ইসাব ওদের কাছে এল ।— ‘ ওদের ’ বলতে কাদের কথা বোঝানো হয়েছে ? অমৃত ও ইসাবের পরিচয় দাও ।

Answer: পান্নালাল প্যাটেল রচিত ‘ অদল বদল ‘ গল্পে ‘ ওদের বলতে গ্রামের ছেলের দলকে বোঝানো হয়েছে । গল্পের মূল চরিত্র অমৃত ও ইসাবকে ঘিরে যে ঘটনাপ্রবাহ আবর্তিত হয়েছে , তাতে অনুঘটকের কাজ করেছে এই ছেলের দল । 

  → আলোচ্য গল্পে অমৃত ও ইসাব দুজনে অভিন্নহৃদয় বন্ধু । তারা উভয়েই দরিদ্র চাষি পরিবারের সন্তান । অভাবের কারণে তাদের পিতাদের ছোটোখাটো প্রয়োজনেও মহাজনের কাছে হাত পাততে হয় । ইসাব ও অমৃত একই স্কুলে , একই ক্লাসে পড়ে । রাস্তার মোড়ে দুটি মুখোমুখি বাড়িতে তাদের অমৃত ও ইসাবের বাস । অমৃতের বাড়িতে রয়েছেন বাবা – মা ও তিন ভাই এবং ইসাবের বাবা ছাড়া আর কেউই নেই । অমৃত ও ইসাবের এই নিখাদ বন্ধুত্বে আন্তরিক গভীরতা ছিল । তাই অমৃতের মার খাওয়ার আশঙ্কা থাকলেও কালিয়ার হাত থেকে অমৃতকে বাঁচাতে ইসাব ঝাঁপিয়ে পড়েছিল । আবার নতুন জামা ছিঁড়ে যাওয়ার অপরাধে বাবার হাতে মার খাওয়া থেকে ইসাবকে বাঁচাতে অমৃত তার নতুন জামাটি ইসাবকে পরতে দেয় । সে জামা নেওয়ার আগে ইসার জেনে নিতে চায় , ছেঁড়া জামা পরার জন্য অমৃতকে বকুনি খেতে হবে কিনা ।

7. ‘ অমৃতের অত জোর দিয়ে বলার কারণ ছিল।— অমৃত কাকে , কী বলেছিল ? অমৃতের অত জোর দিয়ে বলার কী কারণ ছিল ?

Answer: পান্নালাল প্যাটেলের ‘ অদল বদল ’ গল্পটিতে অভিন্নহৃদয় দুই বন্ধু অমৃত আর ইসাব হোলির দিন একই রং , মাপ ও কাপড়ের তৈরি জামা পরে রাস্তায় বেরোলে তাদের দেখে গ্রামের অমৃত কাকে , কী ছেলেরা কিছুটা ঈর্ষান্বিত হয়ে পড়ে । একই রকম বলেছিল জামার মতো তাদের শারীরিক শক্তি একই রকম কিনা পরীক্ষার জন্য তারা দুজনকে কুস্তি লড়ার প্রস্তাব দেয় । অমৃত ইসাবের দিকে তাকিয়ে দৃঢ় স্বরে তাদের বলে , ‘ না , তাহলে মা আমাকে ঠ্যাঙ্গাবে । ‘ খুব সাধারণ দরিদ্র চাষি পরিবারের ছেলে অমৃত আর ইসাব । তাদের বাবারা যতটুকু আয় করেন তা দিয়ে তারা সংসার চালাতে হিমসিম খান । এমন পরিবারে উৎসব উপলক্ষ্যে নতুন জামা চাওয়া অমৃতের জোর দিয়ে মানে উৎপাত ছাড়া আর কিছুই নয় । এসব সত্ত্বেও বলার কারণ ইসাবের বাবা ইসাবকে নতুন জামা বানিয়ে দেন । ইসাবের জামা দেখে অমৃতও নতুন জামার আবদার করে মা – র কাছে । মা তাকে বোঝালেও নাছোড় অমৃতকে শেষপর্যন্ত তার মা – বাবাকে নতুন জামা দিতেই হয় । বহু কষ্টের এই জামা যাতে নষ্ট না হয় , সে ব্যাপারে অমৃতের মা – র কঠোর নির্দেশ ছিল । একদিকে বন্ধুত্ব ও অন্যদিকে মা – র কঠোর নির্দেশ , এই দুই কারণেই গ্রামের ছেলেদের কুস্তি লড়ার প্রস্তাব অমৃত জোরের সঙ্গে ফিরিয়ে দেয় ।

8. ‘ ছেলের দল আনন্দে চেঁচিয়ে উঠল , -ছেলের দলের আনন্দের কারণ ব্যাখ্যা করো । এই আনন্দ স্থায়ী হয়েছিল কি ?

 অথবা , ‘ তামাশা করে হলেও এখন ব্যাপারটা ঘোরালো হয়ে পড়েছে — তামাশা করে হওয়া ঘটনাটি ব্যস্ত করো । ব্যাপারটা ‘ ঘোরালো হয়ে পড়ল কেন ?

Answer: পান্নালাল প্যাটেলের ‘ অদল বদল ‘ গঙ্গে হোলির দিন ভিন্ন সম্প্রদায়ের অভিন্ন হৃদয়ের অধিকারী দুই বন্ধু অমৃত আর ইসাব একই রঙের , একই মাপের নতুন জামা পরে বেরোয় । গ্রামের দুষ্টু ছেলেরা তা দেখে মজা পায় এবং তাদের শারীরিক শক্তিও একই রকম কিনা জানার জন্য অমৃতকে কুস্তি লড়ার প্রস্তাব দেয় । একদিকে বন্ধুত্ব আর অন্যদিকে মা – র জামা ময়লা বা নষ্ট না হওয়ার কঠোর নির্দেশ — এই দুই কারণে অমৃত কুস্তি লড়ার প্রস্তাব ফিরিয়ে দেয় । কিন্তু নাছোড় ছেলের দল তাকে জোর করে মাঠে নিয়ে যায় । সেখানে কালিয়া তাকে জোর করে মাটিতে ফেলে দেয় । অমৃত যে কালিয়ার কাছে হেরে গেছে এই দেখে ছেলের দল আনন্দ করতে থাকে । 

  ছেলের দলের এই আনন্দ বেশিক্ষণ স্থায়ী হয়নি । কারণ প্রিয় বন্ধু অমৃতের দুর্দশা দেখে ইসাব চুপ থাকতে পারেনি । সে কালিয়াকে ল্যাং মেরে মাটিতে ফেলে দেয় । কালিয়া কাঁদতে থাকে । মুহূর্তের মধ্যে ছেলের দল – সহ ইসাব , অমৃতও সে স্থান ত্যাগ করে কালিয়ার মা – বাবার ভয়ে । এভাবেই ব্যাপারটি ঘোরালো হয়ে ওঠে ।

9. ‘ ইসাবের বাবা ছেঁড়া শার্ট দেখা মাত্র ওর চামড়া তুলে নেবে । — বিষয়টি স্পষ্ট করো । এই পরিণতি থেকে রক্ষা পেতে তারা কোন্ পথ অবলম্বন করেছিল ?

Answer: পান্নালাল প্যাটেলের ‘ অদল বদল ’ গল্পের দুই কেন্দ্রীয় চরিত্র অমৃত ও ইসাব দরিদ্র কৃষক পরিবারের সন্তান । তাদের বাবাদের দারিদ্র্য এতটাই যে হোলি উপলক্ষ্যে ছেলেদের নতুন জামা তৈরির জন্যও মহাজনদের কাছে তাদের হাত পাততে হয়েছে । এমন পরিবারের ছেলেরা যদি নতুন জামা ছিঁড়ে ফেলে তবে সেটা যে ক্ষমাহীন অপরাধের মধ্যে পড়ে তা বলার অপেক্ষা রাখে না । নতুন জামা পরে অমৃত ও ইসাব দুই বন্ধু রাস্তায় বের হলে একদল দুষ্টু ছেলের মাথায় মতলব আসে তাদের শক্তি পরীক্ষার । তারা অমৃত ও ইসাবকে কুস্তি লড়ার প্রস্তাব দেয় । অমৃত এতে রাজি না হওয়ায় তারা তাকে রাস্তায় ফেলে আনন্দ করতে থাকে । বন্ধুর হেনস্থা দেখে ইসাব প্রতিশোধ নিতে মারামারিতে জড়িয়ে পড়ে । তার নতুন জামা ছিঁড়ে যায় । কষ্টের টাকায় কেনা জামা ছিঁড়ে ফেলায় ইসাবকে যে বাবার হাতে মার খেতে হবে সেই আশঙ্কার কথাই এখানে বলা হয়েছে । 

   এই পরিণতি থেকে বাঁচতে বুদ্ধি করে দুই বাড়ির মাঝে এক নির্জন স্থানে অমৃত তার অক্ষত জামাটি ইসাবের গায়ে তুলে দেয় আর তার ছেঁড়া জামাটা নিজে পরে নেয় ।

10. ‘ ও আমাকে শিখিয়েছে , খাঁটি জিনিস কাকে বলে ? ‘ খাঁটি জিনিস ‘ বলতে কী বোঝানো হয়েছে ? তা কে , কাকে , কীভাবে শিখিয়েছে ?

Answer: পান্নালাল প্যাটেলের ‘ অদল বদল ‘ গল্পে উদ্ধৃত অংশটির বন্ধা হলেন ইসাবের বাবা পাঠান । এক্ষেত্রে যে – দুটি খাঁটি জিনিসের কথা বলা হয়েছে তার মধ্যে একটি হল মায়ের স্নেহ ও ভালোবাসা যা পিতার কাছে সর্বদা মেলে না । আর অন্যটি হল নিখাদ বন্ধুত্ব যেটি অভিন্নহৃদয়ের দুই বন্ধু অমৃত ও ইসাবের মধ্যে দেখা গিয়েছিল ।

   আলোচ্য গল্পে দশ বছরের বালক অমৃত তার অভিন্নহৃদয়ের বন্ধু ইসাবের বাবা পাঠানকে এ কথা বুঝিয়েছিল যে , খাঁটি জিনিস বলতে কী বোঝায় । অমৃত ও ইসাবের বন্ধুত্বের শিকড় যে কত গভীর তা বোঝা যায় । তখন , যখন অমৃত কালিয়ার হাতে মার খেয়ে পড়ে গেলে ইসাব ক্রুদ্ধ হয়ে ওঠে এবং অমৃতকে বাঁচাতে গিয়ে মারপিটে জড়িয়ে পড়ে সে তার জামা ছিঁড়ে ফেলে । অমৃত ইসাবকে বাঁচাতে তার ভালো জামাটা ইসাবকে দিয়ে দেয় । ইসাব প্রশ্ন তোলে অমৃতকেও তো মার খেতে হতে পারে । অমৃত তখন জানায় তাকে রক্ষার জন্য তার মা আছেন কিন্তু ইসাবের তো মা নেই । আড়াল থেকে শোনা অমৃতের কথাগুলো ইসাবের বাবাকে ভাবিয়ে তুলেছিল । তিনি বুঝেছিলেন মাতৃহারা সন্তানের পিতাকে শুধু পিতা নয় মা – ও হয়ে উঠতে হবে । এ ছাড়া দুই বন্ধুর বন্ধুত্বের গভীরতা ইসাবের বাবার মনের পরিবর্তন এনে দিয়েছেন । 

===============================================================================

অদল বদল অধ্যায় থেকে আরোও প্রশ্ন ও উত্তর দেখুন :   CLICK  HERE

================================================================================

রচনাধর্মী প্রশ্নোত্তর (কমবেশি ১৫০ শব্দে ) 

প্রশ্নঃ ‘হাত ধরাধরি করে অমৃত ও ইসাব ওদের কাছে এল।’ – ‘ওদের’ বলতে কাদের কথা বোঝানো হয়েছে? অমৃত ও ইসাবের পরিচয় দাও।

উত্তরঃ পান্নালাল প্যাটেল রচিত ‘অদল বদল’ গল্পে ‘ওদের’ বলতে গ্রামের ছেলের দলকে বোঝানো হয়েছে। গল্পের মূল চরিত্র অমৃত ও ইসাবকে ঘিরে যে ঘটনাপ্রবাহ আবর্তিত হয়েছে, তাতে অনুঘটকের কাজ করেছে এই ছেলের দল। 

       আলোচ্য গল্পে অমৃত ও ইসাব দুজনে অভিন্নহৃদয় বন্ধু। তারা উভয়েই দরিদ্র চাষি পরিবারের সন্তান। অভাবের কারণে তাদের পিতাদের ছোটোখাটো প্রয়োজনেও মহাজনের কাছে হাত পাততে হয়। ইসাব ও অমৃত একই স্কুলে, একই ক্লাসে পড়ে। রাস্তার মোড়ে দুটি মুখোমুখি বাড়িতে তাদের অমৃত ও ইসাবের বাস। অমৃতের বাড়িতে রয়েছেন বাবা – মা ও তিন ভাই এবং ইসাবের বাবা ছাড়া আর কেউই নেই। অমৃত ও ইসাবের এই নিখাদ বন্ধুত্বে আন্তরিক গভীরতা ছিল। তাই অমৃতের মার খাওয়ার আশঙ্কা থাকলেও কালিয়ার হাত থেকে অমৃতকে বাঁচাতে ইসাব ঝাঁপিয়ে পড়েছিল। আবার নতুন জামা ছিঁড়ে যাওয়ার অপরাধে বাবার হাতে মার খাওয়া থেকে ইসাবকে বাঁচাতে অমৃত তার নতুন জামাটি ইসাবকে পরতে দেয়। সে জামা নেওয়ার আগে ইসার জেনে নিতে চায়, ছেঁড়া জামা পরার জন্য অমৃতকে বকুনি খেতে হবে কিনা।

প্রশ্নঃ অমৃতের মায়ের চরিত্রটি আলোচনা করো। 

উত্তরঃ ‘অদল বদল’ গল্পের একমাত্র নারীচরিত্র হলেন অমৃতের মা। একদিকে দরিদ্র পরিবারের টানাটানি, অন্যদিকে বিবেচক অমৃতসহ চার সন্তানের অভাব–অভিযোগ–আবদার সামলানোর অভ্যেস এ দুই–ই তাঁর রয়েছে। 

      অমৃত নতুন জামার জন্য গোঁ ধরায় প্রথমে তিনি তাকে বুঝিয়ে সুঝিয়ে নিরস্ত করতে চান। এমনকি ভর্ৎসনা ও প্রহারের ভয়ও দেখান। এতেও কাজ না হলে তিনি অমৃতকে কায়দা করে বাবার কাছে পাঠাতে চান। তিনি জানতেন, যে আবদার আদর ও শাসনের সাম্য রক্ষাকারী অমৃত তার কাছে করছে, তা সে তার বাবার কাছে করতে পারবে না। এতেও সফল না হলে এবং অমৃত নানাভাবে তাঁদের মানসিক উৎপীড়ন করতে থাকলে, আবার তিনিই অমৃতের বাবাকে জামার জন্য রাজি করান। তাঁর দায়িত্ববোধ, আদর ও শাসনের সমতা তাঁর পুত্র অমৃতকেও, তাঁর উপর নির্ভরশীল করে তোলে। অমৃত জানত, মা যতই শাসন করুন না কেন, দিনের শেষে তিনিই নির্ভরযোগ্য তার একমাত্র আশ্রয়। এই মাতৃমূর্তি চিরন্তনী। তাঁর কোনো নাম প্রয়োজন ছিল না, যদিও ইসাবের বাবাকে শোনা যায় তাঁকে ‘বাহালি বৌদি’ বলে ডাকতে। মোটের ওপর ভালোবাসা ও মমতা দিয়ে গড়া এক স্বয়ংসম্পূর্ণ মা হয়ে উঠেছে অমৃতের মায়ের চরিত্রটি। 

প্রশ্নঃ ‘অমৃতের অত জোর দিয়ে বলার কারণ ছিল।’ – অমৃত কাকে, কী বলেছিল? অমৃতের অত জোর দিয়ে বলার কী কারণ ছিল?

উত্তরঃ পান্নালাল প্যাটেলের ‘অদল বদল’ গল্পটিতে অভিন্নহৃদয় দুই বন্ধু অমৃত আর ইসাব হোলির দিন একই রং, মাপ ও কাপড়ের তৈরি জামা পরে রাস্তায় বেরোলে তাদের দেখে গ্রামের অমৃত কাকে, কী ছেলেরা কিছুটা ঈর্ষান্বিত হয়ে পড়ে। একই রকম বলেছিল জামার মতো তাদের শারীরিক শক্তি একই রকম কিনা পরীক্ষার জন্য তারা দুজনকে কুস্তি লড়ার প্রস্তাব দেয়। অমৃত ইসাবের দিকে তাকিয়ে দৃঢ় স্বরে তাদের বলে, ‘না, তাহলে মা আমাকে ঠ্যাঙ্গাবে।’ খুব সাধারণ দরিদ্র চাষি পরিবারের ছেলে অমৃত আর ইসাব। তাদের বাবারা যতটুকু আয় করেন তা দিয়ে তারা সংসার চালাতে হিমসিম খান। এমন পরিবারে উৎসব উপলক্ষ্যে নতুন জামা চাওয়া অমৃতের জোর দিয়ে মানে উৎপাত ছাড়া আর কিছুই নয়। এসব সত্ত্বেও বলার কারণ ইসাবের বাবা ইসাবকে নতুন জামা বানিয়ে দেন। ইসাবের জামা দেখে অমৃতও নতুন জামার আবদার করে মার কাছে। মা তাকে বোঝালেও নাছোড় অমৃতকে শেষপর্যন্ত তার মা–বাবাকে নতুন জামা দিতেই হয়। বহু কষ্টের এই জামা যাতে নষ্ট না হয়, সে ব্যাপারে অমৃতের মার কঠোর নির্দেশ ছিল। একদিকে বন্ধুত্ব ও অন্যদিকে মার কঠোর নির্দেশ, এই দুই কারণেই গ্রামের ছেলেদের কুস্তি লড়ার প্রস্তাব অমৃত জোরের সঙ্গে ফিরিয়ে দেয়।

প্রশ্নঃ ‘অদল বদল’ গল্পে অমৃত চরিত্রটি বিশ্লেষণ করো। 

উত্তরঃ ‘অদল বদল’ গল্পের অন্যতম কেন্দ্রীয় চরিত্র অমৃত। গল্পের শুরুতে গরিব ঘরের এই ছেলেটিকে জেদি, একগুঁয়ে ও অবুঝ প্রকৃতির মনে হয়। যেভাবে নতুন জামা পাওয়ার জন্য বাড়িতে সে উৎপীড়ন চালিয়েছে তা দেখে পাঠকের খারাপ লাগতেই পারে, কিন্তু যেহেতু সে ছেলেমানুষ তাই চরিত্রটি অস্বাভাবিক লাগেনি বরং খুব চেনাই লেগেছে।

   বাবা – মাকে মানসিকভাবে উৎপীড়ন করে সে যে জামা আদায় করে তা কিন্তু বন্ধু ইসাবের জামা দেখেই। কিন্তু গল্প যত এগিয়েছে পাঠকের কাছে ধীরে ধীরে অমৃতের স্বরূপ উন্মোচিত হয়েছে। অমৃতকে নতুন করে পাই, যখন কালিয়ার সঙ্গে তার হয়ে লড়াই করতে গিয়ে ইসাবের জামা ছিঁড়ে গেলে বাবার বন্ধুবৎসল হাতের মার খাওয়া থেকে বাঁচাতে ইসাবকে নিজের জামাটি সে দিয়ে দেয়। অমৃত বুঝেছিল বাবার হাত থেকে তাকে বাঁচানোর জন্য তার মা আছে কিন্তু ইসাবের কেউ নেই। অমৃতের চরিত্রে সহানুভূতিশীল মাতৃভক্তি, বন্ধুপ্রীতি ও ঔদার্যের পরিচয় পাওয়া যায়।

      গল্পের মুখ্য উপজীব্য যে বন্ধুত্ব তা প্রতিষ্ঠাতে অমৃতের ভূমিকা যথেষ্ট। সে শুধু জামা অদলবদল ঘটায়নি সমগ্র সমাজের মানসিকতার বদল ঘটিয়েছিল।

প্রশ্নঃ ‘ইসাবের বাবা ছেঁড়া শার্ট দেখা মাত্র ওর চামড়া তুলে নেবে।’ – বিষয়টি আলোচনা করো। এই পরিণতি থেকে রক্ষা পেতে তারা কোন্ পথ অবলম্বন করেছিল?

উত্তরঃ পান্নালাল প্যাটেলের ‘অদল বদল’ গল্পের দুই কেন্দ্রীয় চরিত্র অমৃত ও ইসাব দরিদ্র কৃষক পরিবারের সন্তান। তাদের বাবাদের দারিদ্র্য এতটাই যে হোলি উপলক্ষ্যে ছেলেদের নতুন জামা তৈরির জন্যও মহাজনদের কাছে তাদের হাত পাততে হয়েছে। এমন পরিবারের ছেলেরা যদি নতুন জামা ছিঁড়ে ফেলে তবে সেটা যে ক্ষমাহীন অপরাধের মধ্যে পড়ে তা বলার অপেক্ষা রাখে না। নতুন জামা পরে অমৃত ও ইসাব দুই বন্ধু রাস্তায় বের হলে একদল দুষ্টু ছেলের মাথায় মতলব আসে তাদের শক্তি পরীক্ষার। তারা অমৃত ও ইসাবকে কুস্তি লড়ার প্রস্তাব দেয়। অমৃত এতে রাজি না হওয়ায় তারা তাকে রাস্তায় ফেলে আনন্দ করতে থাকে। বন্ধুর হেনস্থা দেখে ইসাব প্রতিশোধ নিতে মারামারিতে জড়িয়ে পড়ে। তার নতুন জামা ছিঁড়ে যায়। কষ্টের টাকায় কেনা জামা ছিঁড়ে ফেলায় ইসাবকে যে বাবার হাতে মার খেতে হবে সেই আশঙ্কার কথাই এখানে বলা হয়েছে। 

   এই পরিণতি থেকে বাঁচতে বুদ্ধি করে দুই বাড়ির মাঝে এক নির্জন স্থানে অমৃত তার অক্ষত জামাটি ইসাবের গায়ে তুলে দেয় আর তার ছেঁড়া জামাটা নিজে পরে নেয়।

প্রশ্নঃ ইসাবের বাবার চরিত্রটি আলোচনা করো।

উত্তরঃ পান্নালাল প্যাটেলের ‘অদল বদল’ গল্পে ইসাবের বাবা হাসান পাঠান একটি গুরুত্বপূর্ণ পার্শ্বচরিত্রের ভূমিকা পালন করেছেন। ইসাবের বাবা একজন দরিদ্র চাষি। কারণে–অকারণে মহাজনের কাছে হাত পাততে হয় তাঁকে। অভাব তাঁর নিত্যসঙ্গী হলেও হোলি উৎসব। উপলক্ষ্যে পুত্র ইসাবকে নতুন জামা তৈরি করে দেওয়ার মধ্যে, এক স্নেহশীল পিতা হিসেবেই তাঁকে দেখা যায়। বিপত্নীক হাসান নিজেকে সর্বদা ঠিক রাখতে না পেরে মাঝে মাঝে ছেলেকে শাসন করেছেন, তবে তা অন্তর থেকে নয়। অভাবের সংসারে তিনি ছেলেকে খেতে কাজ করাতেও বাধ্য হয়েছেন। 

      ইসাবের বাবার সংবেদনশীল মনের পরিচয় পাওয়া যায়, ছোট্ট অমৃতের সংবেদনশীল কথা। ‘কিন্তু আমাকে বাঁচানোর জন্য তো আমার মা আছে’, শোনার পর উপলব্ধি করেন যে, মা – হারা ছেলের বাবাকে মা – বাবার দ্বৈত ভূমিকা পালন করতে হয়। 

      তিনি আবেগে আপ্লুত হয়ে অমৃতের মায়ের কাছ থেকে অমৃতকেই চেয়ে বসেন। তার মন এতটাই পুলকিত হয়েছিল যে, অমৃতের কথা তিনি সকলকে বলতে থাকেন। এক্ষেত্রে তার মধ্যে একটা শিশুসুলভ আবেগ লক্ষ করা যায়। আবেগপ্রবণ ও শিশুসুলভ উদার পিতৃহদা ও অসাম্প্রদায়িক মন আসলে তিনি একাধারে যেমন উদার পিতৃহৃদয়ের অধিকারী তেমনই তাঁর মধ্যে রয়েছে একটি অসাম্প্রদায়িক মন। তাই ছোট্ট দুটি ছেলের মধ্যে জামা অদলবদলের ঘটনা দেখে তিনি অতিসহজেই অমৃতের হৃদয়ের মাতৃভক্তি, বন্ধুপ্রীতি ও অকৃত্রিম ভালোবাসার মতো ‘খাঁটি জিনিস’–টিকে চিনে নিয়েছেন। তাঁর প্রশংসার ফলেই অদলবদলের ঘটনা গোটা গ্রামে ছড়িয়ে পড়েছে। তিনি নিজেও স্বার্থহীন ও অসাম্প্রদায়িক তাই ছোট্ট অমৃতের কাছ থেকে ভালোবাসা ও উদারতার শিক্ষা নিয়ে নিজেকে বদলে ফেলে, তিনি নিজেও একটি মহৎ চরিত্র হয়ে উঠেছেন।

প্রশ্নঃ ‘তামাশা করে হলেও এখন ব্যাপারটা ঘোরালো হয়ে পড়েছে’ – তামাশা করে হওয়া ঘটনাটি ব্যস্ত করো। ব্যাপারটা ঘোরালো হয়ে পড়ল কেন?

উত্তরঃ পান্নালাল প্যাটেলের ‘অদল বদল’ গঙ্গে হোলির দিন ভিন্ন সম্প্রদায়ের অভিন্ন হৃদয়ের অধিকারী দুই বন্ধু অমৃত আর ইসাব একই রঙের, একই মাপের নতুন জামা পরে বেরোয়। গ্রামের দুষ্টু ছেলেরা তা দেখে মজা পায় এবং তাদের শারীরিক শক্তিও একই রকম কিনা জানার জন্য অমৃতকে কুস্তি লড়ার প্রস্তাব দেয়। একদিকে বন্ধুত্ব আর অন্যদিকে মার জামা ময়লা বা নষ্ট না হওয়ার কঠোর নির্দেশ — এই দুই কারণে অমৃত কুস্তি লড়ার প্রস্তাব ফিরিয়ে দেয়। কিন্তু নাছোড় ছেলের দল তাকে জোর করে মাঠে নিয়ে যায়। সেখানে কালিয়া তাকে জোর করে মাটিতে ফেলে দেয়। অমৃত যে কালিয়ার কাছে হেরে গেছে এই দেখে ছেলের দল আনন্দ করতে থাকে। 

      ছেলের দলের এই আনন্দ বেশিক্ষণ স্থায়ী হয়নি। কারণ প্রিয় বন্ধু অমৃতের দুর্দশা দেখে ইসাব চুপ থাকতে পারেনি। সে কালিয়াকে ল্যাং মেরে মাটিতে ফেলে দেয়। কালিয়া কাঁদতে থাকে। মুহূর্তের মধ্যে ছেলের দলসহ ইসাব, অমৃতও সে স্থান ত্যাগ করে কালিয়ার মা – বাবার ভয়ে। এভাবেই ব্যাপারটি ঘোরালো হয়ে ওঠে।

অদল বদল অধ্যায় থেকে আরোও প্রশ্ন ও উত্তর দেখুন :   CLICK  HERE

©kamaleshforeducation.in(2023)

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

নদীর বিদ্রোহ

 

 

 

নদীর বিদ্রোহ (গল্প) মানিক বন্দ্যোপাধ্যায় – মাধ্যমিক দশম শ্রেণীর বাংলা প্রশ্ন ও উত্তর  

MCQ | নদীর বিদ্রোহ (গল্প) মানিক বন্দোপধ্যায় – মাধ্যমিক বাংলা প্রশ্ন ও উত্তর  

  1. যে – প্যাসেঞ্জার ট্রেনটিকে নদেরচাঁদ রওনা করিয়ে — দিয়েছিল , তার সময় ছিল –

(A) চারটে পঁয়তাল্লিশ

(B) পাঁচটা কুড়ি 

(C) চারটে আটচল্লিশ

(D) পাঁচটা আটচল্লিশ

Ans: (A) চারটে পঁয়তাল্লিশ

  1. নদেরচাঁদ যাকে ডেকে বলল ‘ আমি চললাম হে , সে হল তার – 

(A) সহকর্মী

(B) নতুন সহকারী 

(C) দারোয়ান চারটে 

(D) স্ত্রী

Ans: (B) নতুন সহকারী

  1. পঁয়তাল্লিশের যে ট্রেনটিকে নদেরচাদ রওনা করিয়ে দিয়েছিল , সেটি ছিল— 

(A) মেল ট্রেন

(B) প্যাসেঞ্জার ট্রেন

(C) মালগাড়ি

(D) টয় ট্রেন 

Ans: (B) প্যাসেঞ্জার ট্রেন

  1. স্টেশন থেকে নদীর উপরকার ব্রিজের দূরত্ব হল

(A) পাঁচ মাইল 

(B) তিন কিলোমিটার 

(C) পাঁচশো মিটার

(D) এক মাইল

Ans: (D) এক মাইল

  1. অবিরত বৃষ্টি হয়েছিল –

(A) পাঁচ দিন ধরে 

(B) দু – দিন ধরে 

(C) তিন দিন ধরে 

(D) সাত দিন ধরে 

Ans: (A) পাঁচ দিন ধরে

  1. যখন বৃষ্টি থামল , তখন – 

(A) দুপুর 

(B) বিকেল 

(C) রাত্রি 

(D) ভোর 

Ans: (B) বিকেল

  1. নদেরচাঁদ নদীকে দেখেনি— 

(A) তিন দিন 

(B) পাঁচ দিন 

(C) সাত দিন

(D) এক দিন 

Ans: (B) পাঁচ দিন

  1. নদেরচাদের ঔৎসুক্য ছিল –

(A) ছেলেমানুষের মতো

(B) পুরুষদের মতো 

(C) মহিলাদের মতো

(D) বুড়োমানুষের মতো

Ans: (A) ছেলেমানুষের মতো

  1. নদেরচাঁদ বাঁচবে না –

(A) ব্রিজ থেকে সরে না – গেলে 

(B) বউকে না – দেখতে পেলে 

(C) নদীকে না দেখলে

(D) নদীর সঙ্গে না খেললে 

Ans: (C) নদীকে না দেখলে

  1. দু – দিকে জলে ডুবে গিয়েছিল—  

(A) রাস্তা 

(B) ধানখেত 

(C) মাঠঘাট

(D) বাড়িঘর

Ans: (C) মাঠঘাট

[ আরোও দেখুন:- Madhyamik Bengali Suggestion 2023 Click here ]

  1. নদেরচাঁদ হেঁটে যাচ্ছিল— 

(A) রেলের উঁচু বাঁধ দিয়ে

(B) পাকা রাস্তা দিয়ে

(C) নদীর পাড় দিয়ে

(D) রেলব্রিজ দিয়ে

Ans: (A) রেলের উঁচু বাঁধ দিয়ে

  1. নদেরচাঁদ কল্পনা করার চেষ্টা করতে লাগল –

(A) আকাশ – ভাঙা বৃষ্টি

(B) নদীর বর্ষণ – পুষ্ট মূর্তি

(C) পঙ্কিল জলস্রোত

(D) মেঘাচ্ছন্ন আকাশ

Ans: (B) নদীর বর্ষণ – পুষ্ট মূর্তি

  1. নদেরচাঁদ ছিল একজন –

(A) ট্রেনের চালক 

(B) লাইটম্যান 

(C) স্টেশনমাস্টার

(D) মাস্টারমশাই 

Ans: (C) স্টেশনমাস্টার

  1. নদেরচাদের বয়স হল –

(A) বাইশ বছর

(B) আটাশ বছর 

(C) ত্রিশ বছর

(D) চল্লিশ বছর

Ans: (C) ত্রিশ বছর

  1. নদীর জন্য নদেরচাদের মায়াকে অস্বাভাবিক বলার কারণ হল –

(A) প্রাপ্তবয়স্কদের মধ্যে এই স্বভাব প্রায় দেখা যায় না 

(B) নদী প্রকৃতির একটি সাধারণ অঙ্গ

(C) নদীর প্রতি এত মায়া পাগলামির লক্ষণ

(D) উপরের সবকটিই 

Ans: (A) প্রাপ্তবয়স্কদের মধ্যে এই স্বভাব প্রায় দেখা যায় না

  1. নদীর প্রতি নিজের পাগলামিতে নদেরচাদের— 

(A) ভয় হয় 

(B) দুঃখ হয় 

(C) আনন্দ হয় 

(D) গর্ব হয় 

Ans: (C) আনন্দ হয়

  1. নদীকে ভালোবাসার কৈফিয়ত হিসেবে নদেরচাঁদ যে কারণ দেখায় , সেটি হল—

(A) সে কোনোদিন নদী দেখেনি 

(B) নদীটি খুব সুন্দর 

(C) নদী থেকে সে মাছ ধরে

(D) নদীর ধারে তার জন্ম 

Ans: (D) নদীর ধারে তার জন্ম

  1. শৈশবে , কৈশোরে ও প্রথম যৌবনে মানুষ –

(A) ভালোমন্দের হিসেব করে না 

(B) বড়ো – ছোটোর হিসেব করে না 

(C) সাদা – কালোর হিসেব করে না

(D) ন্যায় – অন্যায়ের হিসেব করে না

Ans: (B) বড়ো – ছোটোর হিসেব করে না

  1. দেশের ক্ষীণস্রোতা নির্জীব নদীটিকে নদেরচাঁদ যার মতো মমতা করত –

(A) গর্ভধারিণী মায়ের মতো

(B) চিরদুঃখী বোনের মতো 

(C) অসুস্থ দুর্বল আত্মীয়ার মতো

(D) দারিদ্র্যাজর্জরিত বন্ধুর মতো

Ans: (C) অসুস্থ দুর্বল আত্মীয়ার মতো

  1. যে – বছরে নদীর ক্ষীণ স্রোতধারা শুকিয়ে যাওয়ার উপক্রম হয়েছিল , সেই বছরটি ছিল –

(A) অতিবৃষ্টির বছর

(B) অনাবৃষ্টির বছর

(C) দুর্ভিক্ষের বছর

(D) বন্যার বছর

Ans: (B) অনাবৃষ্টির বছর

  1. দুরারোগ্য ব্যাধিতে ভুগতে ভুগতে পরমারীয়া মরে যাওয়ার উপক্রম করলে মানুষ কাঁদে –

(A) তাকে বাঁচাতে না পারার অসহায়তায়

(B) চিকিৎসা ভালোভাবে না – হওয়ার জন্য

(C) ঈশ্বরের কাছে তার জীবন প্রার্থনা করে

(D) তার চিকিৎসায় প্রচুর অর্থব্যয় হওয়ার জন্য

Ans: (A) তাকে বাঁচাতে না পারার অসহায়তায়

  1. নদেরচাদের সঙ্গে নদীর যে সম্পর্ক ছিল , তাকে বলা হয় –

(A) প্রেম 

(B) সখ্য 

(C) শত্রুতা

(D) প্রতিদ্বন্দ্বিতা

Ans: (B) সখ্য

  1. নদেরচাঁদ স্তম্ভিত হয়ে গেল , কারণ –

(A) নদীর জল শুকিয়ে গেছে

(B) নদী বর্ষার জলে পরিপুষ্ট হয়ে গেছে

(C) নদী যেন খেপে গেছে

(D) নদী অপরূপ রূপ ধারণ করেছে

Ans: (C) নদী যেন খেপে গেছে

  1. নদীর চাঞ্চল্য ছিল ____ প্রকাশ । ‘

(A) বর্ষণ – পুষ্ট মূর্তির 

(B) পরিপূর্ণতার আনন্দের

(C) উন্মত্ততার

(D) নূতন সজ্জিত শক্তির

Ans: (B) পরিপূর্ণতার আনন্দের

  1. নদীর জল ছিল –

(A) স্বচ্ছ

(B) পরিষ্কার

(C) ফেনিল 

(D) পঙ্কিল

Ans: (D) পঙ্কিল

  1. এতক্ষণ নদেরচাঁদ যে – নদীর কথা ভাবছিল , তা –

(A) বিস্তীর্ণ খরস্রোতা 

(B) ফেনোচ্ছ্বাসিত স্রোতস্বিনী

(C) উন্মত্তা আবর্তসংকুল

(D) সংকীর্ণ ক্ষীণস্রোতা

Ans: (D) সংকীর্ণ ক্ষীণস্রোতা

  1. নদেরচাদ স্টেশনমাস্টারের চাকরি করছে –

(A) চার বছর

(B) দু – বছর

(C) পাঁচ বছর

(D) এক বছর

Ans: (A) চার বছর

  1. নদেরচাদের চার বছরের চেনা নদীর মূর্তিকে আরও বেশি ভয়ংকর ও অপরিচিত মনে হওয়ার কারণ –

(A) সে বহুদিন হল নদীর ধারে আসেনি

(B) সে একটি সংকীর্ণ ক্ষীণস্রোতা নদীর কথা ভাবছিল

(C) প্রবল বৃষ্টিতে নদীর এই চেহারা হয়েছে 

(D) নদীতে বাঁধ দেওয়া হয়েছে 

Ans: (B) সে একটি সংকীর্ণ ক্ষীণস্রোতা নদীর কথা ভাবছিল

  1. ব্রিজের ধারকস্তম্ভের উপাদানগুলি হল –

(A) পাথর ও বালি 

(B) ইট , সুরকি ও সিমেন্ট

(C) মাটি ও পাথর

(D) ইট , পাথর ও মাটি

Ans: (B) ইট , সুরকি ও সিমেন্ট

  1. নদেরচাদ রোজ নদীকে দেখে –

(A) নদীর পাড়ে বসে 

(B) স্টেশানে বসে

(C) বাঁধের ওপর বসে

(D) ব্রিজের ধারকস্তম্ভের শেষপ্রান্তে বসে

Ans: (D) ব্রিজের ধারকস্তম্ভের শেষপ্রান্তে বসে

  1. নদীর স্রোত ফেনিল আবর্ত রচনা করে –

(A) ধারকস্তম্ভে বাধা পাওয়ায়

(B) জল বেড়ে যাওয়ায়

(C) বাঁধ নির্মাণ করায়

(D) মুশলধারায় বৃষ্টির কারণে

Ans: (A) ধারকস্তম্ভে বাধা পাওয়ায়

  1. এত উঁচুতে জল উঠে এসেছে যে , মনে হয় ইচ্ছা করলেই বুঝি— 

(A) ঝাঁপ দেওয়া যায় 

(B) হাত বাড়িয়ে স্পর্শ করা যায়

(C) স্নান করা যায়

(D) পান করা যায়

Ans: (B) হাত বাড়িয়ে স্পর্শ করা যায়

  1. নদেরটাদের ভারি আমোদ বোধ হইতে লাগিল । কারণ— 

(A) বৃষ্টিতে ভিজে

(B) বউকে চিঠি লিখে

(C) নদীর স্ফীতরূপ দেখে

(D) মাঠঘাট ডুবে যেতে দেখে 

Ans: (C) নদীর স্ফীতরূপ দেখে

  1. নদেরচাঁদ পকেট থেকে যা বের করে স্রোতের মধ্যে ছুড়ে দিল , তা হল –

(A) পুরোনো চিঠি 

(B) ঢাকা 

(C) পয়সা

(D) কাগজের টুকরো

Ans: (A) পুরোনো চিঠি

  1. ‘ জলপ্রবাহকে আজ তাহার জীবন্ত মনে হইতেছিল , –

(A) প্রবল বর্ষণের জন্য

(B) ভয়ংকরতার জন্য

(C) বিরহবেদনার জন্য

(D) উন্মত্ততার জন্য

Ans: (D) উন্মত্ততার জন্য

  1. বউকে পাঁচ পাতার চিঠি লিখতে নদেরচাদের সময় লেগেছিল –

(A) পাঁচ দিন

(B) সাত দিন 

(C) এক দিন

(D) দু – দিন 

Ans: (D) দু – দিন

  1. বউকে নদেরচাঁদ যে – চিঠি লিখেছিল , তার পৃষ্ঠাসংখ্যা –

(A) পাঁচ 

(B) তিন 

(C) এক 

(D) দু

Ans: (A) পাঁচ

  1. নদেরচাদের বউকে লেখা চিঠির বিষয়বস্তু ছিল— 

(A) বিরহবেদনা 

(B) আনন্দোচ্ছ্বাস 

(C) শোকবার্তা 

(D) সাংসারিক পরামর্শ 

Ans: (A) বিরহবেদনা

  1. ঘণ্টা বিশ্রাম করিয়া মেঘের যেন নূতন শক্তি সঞ্চিত হইয়াছে ‘ ।

(A) পাঁচেক 

(B) তিনেক 

(C) দুয়েক 

(D) খানেক

Ans: (B) তিনেক

  1. রপর নামিল বৃষ্টি ।’— বৃষ্টি পড়েছিল –

(A) টিপটিপ করে

(B) অঝোরে 

(C) মুশলধারায় 

(D) ঝমঝম করে

Ans: (C) মুশলধারায়

  1. নদেরচাঁদ বসিয়া বসিয়া ভিজিতে লাগিল , উঠিল না । কারণ— 

(A) সে বৃষ্টিতে ভিজতে ভালোবাসত

(B) তার উঠতে ইচ্ছে করছিল না 

(C) এটা তার ছেলেমানুষি 

(D) সে নদীর শব্দ শুনছিল

Ans: (D) সে নদীর শব্দ শুনছিল

  1. ‘ নদেরচাঁদের মন হইতে ছেলেমানুষি আমোদ মিলাইয়া গেল ।’— কারণ –

(A) বৃষ্টিতে চারদিক আবছা হয়ে গেল 

(B) তার মনে ভয় উপস্থিত হল 

(C) তার ফিরতে দেরি হয়ে যাচ্ছিল 

(D) তার বউয়ের জন্য মনখারাপ করছিল 

Ans: (B) তার মনে ভয় উপস্থিত হল

  1. ‘ এই ভীষণ – মধুর শব্দ ‘ বলতে এককথায় যা বোঝানো যেতে পারে , তা হল –

(A) ভয়ংকর – সুন্দর 

(B) হিংস্ৰ – বিষাক্ত 

(C) অবশ – অবসন্ন 

(D) ব্যথা – বেদনাময় 

Ans: (A) ভয়ংকর – সুন্দর

  1. ব্রিজের উপর দিয়ে ট্রেন চলে যাওয়ার শব্দে ঘুম ভেঙে যাওয়ার মতো একটা বেদনাবোধ হল নদেরচাঁদের । কারণ— 

(A) সেই শব্দ তাকে নৈসর্গিক নিস্তব্ধতা থেকে বাস্তবে ফিরিয়ে এনেছিল 

(B) সে মন দিয়ে নদীর উন্মত্ততা দেখছিল

(C) সে তার জীবনের শূন্যতাকে অনুভব করছিল 

(D) সে ঘুমিয়ে পড়েছিল

Ans: (A) সেই শব্দ তাকে নৈসর্গিক নিস্তব্ধতা থেকে বাস্তবে ফিরিয়ে এনেছিল

  1. ‘ বড়ো ভয় করিতে লাগিল নদেরচাদের । ‘ – ভয়ের কারণ ছিল— 

(A) অন্ধকার 

(B) বৃষ্টি 

(C) নদীর প্রতিহিংসা 

(D) নদীর স্ফীতি

Ans: (C) নদীর প্রতিহিংসা

  1. নদেরচাদের উন্মত্ত নদীর কয়েক হাত উঁচুতে বসে থাকা উচিত হয়নি মনে হল , কারণ –

(A) বজ্রপাতে সে মারা যেতে পারত 

(B) ব্রিজ ভেঙে পড়তে পারত 

(C) সে পড়ে যেতে পারত 

(D) সে নদীর প্রতিহিংসার শিকার হতে পারত

Ans: (D) সে নদীর প্রতিহিংসার শিকার হতে পারত

  1. নদীর বিদ্রোহের কারণ ছিল— 

(A) অতিরিক্ত বর্ষণ 

(B) অনাবৃষ্টি 

(C) বন্দিদশা থেকে মুক্তি 

(D) ক্ষীণস্রোত

Ans: (C) বন্দিদশা থেকে মুক্তি

  1. ‘ পারিলেও মানুষ মানুষ কি তাকে তাকে রেহাই দিবে ? – যার কথা বলা হয়েছে , তা হল –

(A) বাঁধ 

(B) নদী

(C) ব্রিজ

(D) নদেরচাঁদ

Ans: (B) নদী

  1. নদেরচাঁদ গর্ব অনুভব করত— 

(A) নতুন রং করা ব্রিজটির জন্য 

(B) নদীটির জন্য

(C) রেলের বাঁধটির জন্য

(D) স্টেশনটির জন্য 

Ans: (A) নতুন রং করা ব্রিজটির জন্য

  1. নদেরচাদের মৃত্যু হয়েছিল— 

(A) জলে ডুবে 

(B) ট্রেনের তলায় 

(C) মোটর দুর্ঘটনায় 

(D) ব্রিজ ভেঙে 

Ans: (B) ট্রেনের তলায়

  1. নদীকে বন্দি বলার কারণ –

(A) নদীটি দুই তীরের মধ্যে সীমাবদ্ধ বলে

(B) নদীটি শীর্ণকায় ও ক্ষীণস্রোতা বলে 

(C) মানুষ বাঁধ ও ব্রিজ তৈরি করে তার গতি রুদ্ধ করেছে বলে 

(D) নদীটি ছোটো বলে 

Ans: (C) মানুষ বাঁধ ও ব্রিজ তৈরি করে তার গতি রুদ্ধ করেছে বলে

  1. যে – ট্রেনটি নদেরচাঁদকে পিষে দিয়েছিল , সেটি ছিল— 

(A) ৩ নং আপ প্যাসেঞ্জার 

(B) ৫ নং ডাউন প্যাসেঞ্জার 

(C) ১০ নং আপ প্যাসেঞ্জার

(D) ৭ নং ডাউন প্যাসেঞ্জার

Ans: (D) ৭ নং ডাউন প্যাসেঞ্জার

===============================================================

নদীর বিদ্রোহ অধ্যায় থেকে আরোও প্রশ্ন ও উত্তর দেখুন

================================================================

  নিচের বহু বিকল্প ভিত্তিক প্রশ্নগুলির উত্তর দাও :

১.১ “আর বৃষ্টি হবে না, কি বল?” – কথাটি কে বলেছিল?

(ক) নতুন সহকারি

(খ) নদের চাঁদ

(গ) রেলের কর্মাধ্যক্ষ

(ঘ) রেলের টিকিট পরীক্ষক

উত্তর : (খ) নদেরচাঁদ

১.২ নদের চাঁদ লাইন ধরে যে দিকে হাঁটতে শুরু করেছিল তা হল –

(ক) স্টেশনের দিকে

(খ) বাড়ির দিকে

(গ) নদীর উপরের ব্রীজের দিকে

(ঘ) পরবর্তী স্টেশনের দিকে

উত্তর : (গ) নদীর উপরের ব্রীজের দিকে

১.৩ “ছেলে মানুষের মতো ঔৎসুক্য বোধ করিতে লাগিল” – এখানে কার সম্পর্কে এরকম কথা বলা হয়েছে?

(ক) ট্রেনের খালাসী

(খ) নদের চাঁদ

(গ) ট্রেনের চালক

(ঘ) নতুন সহকারি

উত্তর : (খ) নদের চাঁদ

১.৪ “এমন ভাবে পাগলা হওয়া কি তার সাজে?” – কিসের জন্য নদের চাঁদ পাগলা হয়েছিল?

(ক) অবিরত বৃষ্টির জন্য

(খ) নদীর জন্য

(গ) নদীর কথা মানুষকে জানানোর জন্য

(ঘ) নিজের পত্নীর জন্য

উত্তর : (খ) নদীর জন্য

১.৫ নদের চাঁদ প্রায় কেঁদে ফেলেছিল, কারণ –

(ক) নদীর ঢেউয়ের প্রভাবে ব্রিজ ভেঙে যাচ্ছিল

(খ) নদীতে বন্যা দেখা দিয়েছিল

(গ) তার প্রিয় নদীটি শুকিয়ে যাচ্ছিল

(ঘ) নদীতে ঢেউ উঠেছিল

উত্তর : (গ) তার প্রিয় নদীটি শুকিয়ে যাচ্ছিল

১.৬ নদের চাঁদ ব্রিজের মাঝামাঝি কোথায় এসে বসেছিল?

(ক) একটি কাঠের গুঁড়ির ওপর

(খ) একটি থামের উপর

(গ) ধারকস্তম্ভের শেষ প্রান্তে

(ঘ) একটি ইটের উপর

উত্তর : (গ) ধারক স্তম্ভের শেষ প্রান্তে

১.৭ “নদের চাঁদের ভারী আমোধ বোধ হইতে লাগিল” – এর কারণ কি ছিল?

(ক) ইচ্ছে করলেই হাত বাড়িয়ে নদীর জল স্পর্শ করতে পারবে বলে

(খ) নদীর পাড়ে বসতে পেরেছে বলে

(গ) নদীকে দেখতে পাচ্ছে বলে

(ঘ) ব্রিজের উপর বসতে পেরেছে বলে

উত্তর : (ক) ইচ্ছে করলেই হাত বাড়িয়ে নদীর জল স্পর্শ করতে পারবে বলে

১.৮ নদের চাঁদ নদীর স্রোতে ভাসিয়ে দিয়েছিল একটি –

(ক) বইয়ের পৃষ্ঠা

(খ) শুকনো পাতা

(গ) খাতার পৃষ্ঠা

(ঘ) একটি পুরনো চিঠি

উত্তর : (ঘ) একটি পুরনো চিঠি

১.৯ একটা বেদনাদায়ক চেতনা কিছুক্ষণের জন্য নদের চাঁদকে কি করেছিল?

(ক) রোমাঞ্চিত

(খ) দিশেহারা

(গ) আচ্ছন্ন

(ঘ) উন্মাদ

উত্তর : (খ) দিশেহারা

১.১০ “নদীর বিদ্রোহের কারণ সে বুঝিতে পারিয়াছে।” – নদীর বিদ্রোহের কারণ কি?

(ক) অনাবৃষ্টি

(খ) লোহা ইট কাঠ কংক্রিট এর বন্ধন

(গ) বর্ষাকাল

(ঘ) অতিরিক্ত বৃষ্টি

উত্তর : (খ) লোহা ইট কাঠ কংক্রিট এর বন্ধন

===============================================================

নদীর বিদ্রোহ অধ্যায় থেকে আরোও প্রশ্ন ও উত্তর দেখুন

================================================================

MCQ | নদীর বিদ্রোহ (গল্প) মানিক বন্দোপধ্যায় – মাধ্যমিক বাংলা সাজেশন | Madhyamik Bengali Suggestion :

  1. নদেরচাদ স্টেশনমাস্টারের চাকরি করছে -(A) চার বছর(B) দু – বছর(C) পাঁচ বছর(D) এক বছর

Answer: (A) চার বছর

  1. নদেরচাদের চার বছরের চেনা নদীর মূর্তিকে আরও বেশি ভয়ংকর ও অপরিচিত মনে হওয়ার কারণ -(A) সে বহুদিন হল নদীর ধারে আসেনি(B) সে একটি সংকীর্ণ ক্ষীণস্রোতা নদীর কথা ভাবছিল(C) প্রবল বৃষ্টিতে নদীর এই চেহারা হয়েছে (D) নদীতে বাঁধ দেওয়া হয়েছে

Answer: (B) সে একটি সংকীর্ণ ক্ষীণস্রোতা নদীর কথা ভাবছিল

  1. ব্রিজের ধারকস্তম্ভের উপাদানগুলি হল -(A) পাথর ও বালি (B) ইট , সুরকি ও সিমেন্ট(C) মাটি ও পাথর(D) ইট , পাথর ও মাটি

Answer: (B) ইট , সুরকি ও সিমেন্ট

  1. নদেরচাদ রোজ নদীকে দেখে -(A) নদীর পাড়ে বসে (B) স্টেশানে বসে(C) বাঁধের ওপর বসে(D) ব্রিজের ধারকস্তম্ভের শেষপ্রান্তে বসে

Answer: (D) ব্রিজের ধারকস্তম্ভের শেষপ্রান্তে বসে

  1. নদীর স্রোত ফেনিল আবর্ত রচনা করে -(A) ধারকস্তম্ভে বাধা পাওয়ায়(B) জল বেড়ে যাওয়ায়(C) বাঁধ নির্মাণ করায়(D) মুশলধারায় বৃষ্টির কারণে

Answer: (A) ধারকস্তম্ভে বাধা পাওয়ায়

  1. এত উঁচুতে জল উঠে এসেছে যে , মনে হয় ইচ্ছা করলেই বুঝি— (A) ঝাঁপ দেওয়া যায় (B) হাত বাড়িয়ে স্পর্শ করা যায়(C) স্নান করা যায়(D) পান করা যায়

Answer: (B) হাত বাড়িয়ে স্পর্শ করা যায়

  1. নদেরটাদের ভারি আমোদ বোধ হইতে লাগিল । কারণ— (A) বৃষ্টিতে ভিজে(B) বউকে চিঠি লিখে(C) নদীর স্ফীতরূপ দেখে(D) মাঠঘাট ডুবে যেতে দেখে

Answer: (C) নদীর স্ফীতরূপ দেখে

  1. নদেরচাঁদ পকেট থেকে যা বের করে স্রোতের মধ্যে ছুড়ে দিল , তা হল -(A) পুরোনো চিঠি (B) ঢাকা (C) পয়সা(D) কাগজের টুকরো

Answer: (A) পুরোনো চিঠি

  1. ‘ জলপ্রবাহকে আজ তাহার জীবন্ত মনে হইতেছিল , -(A) প্রবল বর্ষণের জন্য(B) ভয়ংকরতার জন্য(C) বিরহবেদনার জন্য(D) উন্মত্ততার জন্য

Answer: (D) উন্মত্ততার জন্য

  1. বউকে পাঁচ পাতার চিঠি লিখতে নদেরচাদের সময় লেগেছিল -(A) পাঁচ দিন(B) সাত দিন (C) এক দিন(D) দু – দিন

Answer: (D) দু – দিন

  1. বউকে নদেরচাঁদ যে – চিঠি লিখেছিল , তার পৃষ্ঠাসংখ্যা -(A) পাঁচ (B) তিন (C) এক (D) দু

Answer: (A) পাঁচ

  1. নদেরচাদের বউকে লেখা চিঠির বিষয়বস্তু ছিল— (A) বিরহবেদনা (B) আনন্দোচ্ছ্বাস (C) শোকবার্তা (D) সাংসারিক পরামর্শ

Answer: (A) বিরহবেদনা

  1. ঘণ্টা বিশ্রাম করিয়া মেঘের যেন নূতন শক্তি সঞ্চিত হইয়াছে ‘ ।(A) পাঁচেক (B) তিনেক (C) দুয়েক (D) খানেক

Answer: (B) তিনেক

  1. রপর নামিল বৃষ্টি ।’— বৃষ্টি পড়েছিল -(A) টিপটিপ করে(B) অঝোরে (C) মুশলধারায় (D) ঝমঝম করে

Answer: (C) মুশলধারায়

  1. নদেরচাঁদ বসিয়া বসিয়া ভিজিতে লাগিল , উঠিল না । কারণ— (A) সে বৃষ্টিতে ভিজতে ভালোবাসত(B) তার উঠতে ইচ্ছে করছিল না (C) এটা তার ছেলেমানুষি (D) সে নদীর শব্দ শুনছিল

Answer: (D) সে নদীর শব্দ শুনছিল

  1. ‘ নদেরচাঁদের মন হইতে ছেলেমানুষি আমোদ মিলাইয়া গেল ।’— কারণ -(A) বৃষ্টিতে চারদিক আবছা হয়ে গেল (B) তার মনে ভয় উপস্থিত হল (C) তার ফিরতে দেরি হয়ে যাচ্ছিল (D) তার বউয়ের জন্য মনখারাপ করছিল

Answer: (B) তার মনে ভয় উপস্থিত হল

  1. ‘ এই ভীষণ – মধুর শব্দ ‘ বলতে এককথায় যা বোঝানো যেতে পারে , তা হল -(A) ভয়ংকর – সুন্দর (B) হিংস্ৰ – বিষাক্ত (C) অবশ – অবসন্ন (D) ব্যথা – বেদনাময়

Answer: (A) ভয়ংকর – সুন্দর

  1. ব্রিজের উপর দিয়ে ট্রেন চলে যাওয়ার শব্দে ঘুম ভেঙে যাওয়ার মতো একটা বেদনাবোধ হল নদেরচাঁদের । কারণ— (A) সেই শব্দ তাকে নৈসর্গিক নিস্তব্ধতা থেকে বাস্তবে ফিরিয়ে এনেছিল (B) সে মন দিয়ে নদীর উন্মত্ততা দেখছিল(C) সে তার জীবনের শূন্যতাকে অনুভব করছিল (D) সে ঘুমিয়ে পড়েছিল

Answer: (A) সেই শব্দ তাকে নৈসর্গিক নিস্তব্ধতা থেকে বাস্তবে ফিরিয়ে এনেছিল

  1. ‘ বড়ো ভয় করিতে লাগিল নদেরচাদের । ‘ – ভয়ের কারণ ছিল— (A) অন্ধকার (B) বৃষ্টি (C) নদীর প্রতিহিংসা (D) নদীর স্ফীতি

Answer: (C) নদীর প্রতিহিংসা

  1. নদেরচাদের উন্মত্ত নদীর কয়েক হাত উঁচুতে বসে থাকা উচিত হয়নি মনে হল , কারণ -(A) বজ্রপাতে সে মারা যেতে পারত (B) ব্রিজ ভেঙে পড়তে পারত (C) সে পড়ে যেতে পারত (D) সে নদীর প্রতিহিংসার শিকার হতে পারত

Answer: (D) সে নদীর প্রতিহিংসার শিকার হতে পারত

  1. নদীর বিদ্রোহের কারণ ছিল— (A) অতিরিক্ত বর্ষণ (B) অনাবৃষ্টি (C) বন্দিদশা থেকে মুক্তি (D) ক্ষীণস্রোত

Answer: (C) বন্দিদশা থেকে মুক্তি

  1. ‘ পারিলেও মানুষ মানুষ কি তাকে তাকে রেহাই দিবে ? – যার কথা বলা হয়েছে , তা হল -(A) বাঁধ (B) নদী(C) ব্রিজ(D) নদেরচাঁদ

Answer: (B) নদী

  1. নদেরচাঁদ গর্ব অনুভব করত— (A) নতুন রং করা ব্রিজটির জন্য (B) নদীটির জন্য(C) রেলের বাঁধটির জন্য(D) স্টেশনটির জন্য

Answer: (A) নতুন রং করা ব্রিজটির জন্য

  1. নদেরচাদের মৃত্যু হয়েছিল— (A) জলে ডুবে (B) ট্রেনের তলায় (C) মোটর দুর্ঘটনায় (D) ব্রিজ ভেঙে

Answer: (B) ট্রেনের তলায়

  1. নদীকে বন্দি বলার কারণ -(A) নদীটি দুই তীরের মধ্যে সীমাবদ্ধ বলে(B) নদীটি শীর্ণকায় ও ক্ষীণস্রোতা বলে (C) মানুষ বাঁধ ও ব্রিজ তৈরি করে তার গতি রুদ্ধ করেছে বলে (D) নদীটি ছোটো বলে

Answer: (C) মানুষ বাঁধ ও ব্রিজ তৈরি করে তার গতি রুদ্ধ করেছে বলে

  1. যে – ট্রেনটি নদেরচাঁদকে পিষে দিয়েছিল , সেটি ছিল— (A) ৩ নং আপ প্যাসেঞ্জার (B) ৫ নং ডাউন প্যাসেঞ্জার (C) ১০ নং আপ প্যাসেঞ্জার(D) ৭ নং ডাউন প্যাসেঞ্জার

Answer: (D) ৭ নং ডাউন প্যাসেঞ্জার

  1. যে – প্যাসেঞ্জার ট্রেনটিকে নদেরচাঁদ রওনা করিয়ে — দিয়েছিল , তার সময় ছিল -(A) চারটে পঁয়তাল্লিশ(B) পাঁচটা কুড়ি (C) চারটে আটচল্লিশ(D) পাঁচটা আটচল্লিশ

Answer: (A) চারটে পঁয়তাল্লিশ

  1. নদেরচাঁদ যাকে ডেকে বলল ‘ আমি চললাম হে , সে হল তার – (A) সহকর্মী(B) নতুন সহকারী (C) দারোয়ান চারটে (D) স্ত্রী

Answer: (B) নতুন সহকারী

  1. পঁয়তাল্লিশের যে ট্রেনটিকে নদেরচাদ রওনা করিয়ে দিয়েছিল , সেটি ছিল— (A) মেল ট্রেন(B) প্যাসেঞ্জার ট্রেন(C) মালগাড়ি(D) টয় ট্রেন

Answer: (B) প্যাসেঞ্জার ট্রেন

  1. স্টেশন থেকে নদীর উপরকার ব্রিজের দূরত্ব হল(A) পাঁচ মাইল (B) তিন কিলোমিটার (C) পাঁচশো মিটার(D) এক মাইল

Answer: (D) এক মাইল

  1. অবিরত বৃষ্টি হয়েছিল -(A) পাঁচ দিন ধরে (B) দু – দিন ধরে (C) তিন দিন ধরে (D) সাত দিন ধরে

Answer: (A) পাঁচ দিন ধরে

  1. যখন বৃষ্টি থামল , তখন – (A) দুপুর (B) বিকেল (C) রাত্রি (D) ভোর

Answer: (B) বিকেল

  1. নদেরচাঁদ নদীকে দেখেনি— (A) তিন দিন (B) পাঁচ দিন (C) সাত দিন(D) এক দিন

Answer: (B) পাঁচ দিন

  1. নদেরচাদের ঔৎসুক্য ছিল -(A) ছেলেমানুষের মতো(B) পুরুষদের মতো (C) মহিলাদের মতো(D) বুড়োমানুষের মতো

Answer: (A) ছেলেমানুষের মতো

  1. নদেরচাঁদ বাঁচবে না -(A) ব্রিজ থেকে সরে না – গেলে (B) বউকে না – দেখতে পেলে (C) নদীকে না দেখলে(D) নদীর সঙ্গে না খেললে

Answer: (C) নদীকে না দেখলে

  1. দু – দিকে জলে ডুবে গিয়েছিল—  (A) রাস্তা (B) ধানখেত (C) মাঠঘাট(D) বাড়িঘর

Answer: (C) মাঠঘাট

  1. নদেরচাঁদ হেঁটে যাচ্ছিল— (A) রেলের উঁচু বাঁধ দিয়ে(B) পাকা রাস্তা দিয়ে(C) নদীর পাড় দিয়ে(D) রেলব্রিজ দিয়ে

Answer: (A) রেলের উঁচু বাঁধ দিয়ে

  1. নদেরচাঁদ কল্পনা করার চেষ্টা করতে লাগল -(A) আকাশ – ভাঙা বৃষ্টি(B) নদীর বর্ষণ – পুষ্ট মূর্তি(C) পঙ্কিল জলস্রোত(D) মেঘাচ্ছন্ন আকাশ

Answer: (B) নদীর বর্ষণ – পুষ্ট মূর্তি

  1. নদেরচাঁদ ছিল একজন -(A) ট্রেনের চালক (B) লাইটম্যান (C) স্টেশনমাস্টার(D) মাস্টারমশাই

Answer: (C) স্টেশনমাস্টার

  1. নদেরচাদের বয়স হল -(A) বাইশ বছর(B) আটাশ বছর (C) ত্রিশ বছর(D) চল্লিশ বছর

Answer: (C) ত্রিশ বছর

  1. নদীর জন্য নদেরচাদের মায়াকে অস্বাভাবিক বলার কারণ হল -(A) প্রাপ্তবয়স্কদের মধ্যে এই স্বভাব প্রায় দেখা যায় না (B) নদী প্রকৃতির একটি সাধারণ অঙ্গ(C) নদীর প্রতি এত মায়া পাগলামির লক্ষণ(D) উপরের সবকটিই

Answer: (A) প্রাপ্তবয়স্কদের মধ্যে এই স্বভাব প্রায় দেখা যায় না

  1. নদীর প্রতি নিজের পাগলামিতে নদেরচাদের— (A) ভয় হয় (B) দুঃখ হয় (C) আনন্দ হয় (D) গর্ব হয়

Answer: (C) আনন্দ হয়

  1. নদীকে ভালোবাসার কৈফিয়ত হিসেবে নদেরচাঁদ যে কারণ দেখায় , সেটি হল—(A) সে কোনোদিন নদী দেখেনি (B) নদীটি খুব সুন্দর (C) নদী থেকে সে মাছ ধরে(D) নদীর ধারে তার জন্ম

Answer: (D) নদীর ধারে তার জন্ম

  1. শৈশবে , কৈশোরে ও প্রথম যৌবনে মানুষ -(A) ভালোমন্দের হিসেব করে না (B) বড়ো – ছোটোর হিসেব করে না (C) সাদা – কালোর হিসেব করে না(D) ন্যায় – অন্যায়ের হিসেব করে না

Answer: (B) বড়ো – ছোটোর হিসেব করে না

  1. দেশের ক্ষীণস্রোতা নির্জীব নদীটিকে নদেরচাঁদ যার মতো মমতা করত -(A) গর্ভধারিণী মায়ের মতো(B) চিরদুঃখী বোনের মতো (C) অসুস্থ দুর্বল আত্মীয়ার মতো(D) দারিদ্র্যাজর্জরিত বন্ধুর মতো

Answer: (C) অসুস্থ দুর্বল আত্মীয়ার মতো

  1. যে – বছরে নদীর ক্ষীণ স্রোতধারা শুকিয়ে যাওয়ার উপক্রম হয়েছিল , সেই বছরটি ছিল -(A) অতিবৃষ্টির বছর(B) অনাবৃষ্টির বছর(C) দুর্ভিক্ষের বছর(D) বন্যার বছর

Answer: (B) অনাবৃষ্টির বছর

  1. দুরারোগ্য ব্যাধিতে ভুগতে ভুগতে পরমারীয়া মরে যাওয়ার উপক্রম করলে মানুষ কাঁদে -(A) তাকে বাঁচাতে না পারার অসহায়তায়(B) চিকিৎসা ভালোভাবে না – হওয়ার জন্য(C) ঈশ্বরের কাছে তার জীবন প্রার্থনা করে(D) তার চিকিৎসায় প্রচুর অর্থব্যয় হওয়ার জন্য

Answer: (A) তাকে বাঁচাতে না পারার অসহায়তায়

  1. নদেরচাদের সঙ্গে নদীর যে সম্পর্ক ছিল , তাকে বলা হয় -(A) প্রেম (B) সখ্য (C) শত্রুতা(D) প্রতিদ্বন্দ্বিতা

Answer: (B) সখ্য

  1. নদেরচাঁদ স্তম্ভিত হয়ে গেল , কারণ -(A) নদীর জল শুকিয়ে গেছে(B) নদী বর্ষার জলে পরিপুষ্ট হয়ে গেছে(C) নদী যেন খেপে গেছে(D) নদী অপরূপ রূপ ধারণ করেছে

Answer: (C) নদী যেন খেপে গেছে

  1. নদীর চাঞ্চল্য ছিল ____ প্রকাশ । ‘(A) বর্ষণ – পুষ্ট মূর্তির (B) পরিপূর্ণতার আনন্দের(C) উন্মত্ততার(D) নূতন সজ্জিত শক্তির

Answer: (B) পরিপূর্ণতার আনন্দের

  1. নদীর জল ছিল -(A) স্বচ্ছ(B) পরিষ্কার(C) ফেনিল (D) পঙ্কিল

Answer: (D) পঙ্কিল

  1. এতক্ষণ নদেরচাঁদ যে – নদীর কথা ভাবছিল , তা -(A) বিস্তীর্ণ খরস্রোতা (B) ফেনোচ্ছ্বাসিত স্রোতস্বিনী(C) উন্মত্তা আবর্তসংকুল(D) সংকীর্ণ ক্ষীণস্রোতা

Answer: (D) সংকীর্ণ ক্ষীণস্রোতা

===============================================================

নদীর বিদ্রোহ অধ্যায় থেকে আরোও প্রশ্ন ও উত্তর দেখুন

================================================================

(২) নিচের অতিসংক্ষিপ্ত প্রশ্নগুলির উত্তর দাও :

২.১ “আমি চললাম হে!” – কে, কাকে একথা বলেছেন?

উত্তর : নদের চাঁদ তার সহকারীকে একথা বলেছিল।

২.২ স্টেশন থেকে নদীর উপর ব্রিজের দূরত্ব কত?

উত্তর : এক মাইল

২.৩ নদের চাঁদ কত দিন নদীকে দেখা হয়ে ওঠেনি?

উত্তর : পাঁচ দিন

২.৪ “না দেখিলে সে বাঁচিবে না।” – কে, কি না দেখলে বাঁচবে না?

উত্তর : নদীকে না দেখলে নদের চাঁদ বাঁচবেনা।

২.৫ ” সে প্রায় কাঁদিয়া ফেলিয়াছিল।” – কে এবং কি কারণে কেঁদে ফেলেছিল?

উত্তর : ছোট বেলায় একবার অনাবৃষ্টিতে নদীর জল শুকিয়ে যাওয়ায় নদের চাঁদ প্রায় কেঁদে ফেলেছিল।

২.৬ “আজ যেন সেই নদী ক্ষেপিয়া গিয়াছি” – নদীর ক্ষেপে যাওয়ার কারন কি?

উত্তর : পাঁচদিন অনবরত বৃষ্টির জলে নদী ফুলে-ফেঁপে উঠেছিল যা নদীর ক্ষেপে যাওয়ার সঙ্গে তুলনা করা যায়।

২.৭ “আজও সে সেই খানে গিয়া বসিল।” – কে এবং কোথায় গিয়ে বসলো?

উত্তর : রেল স্টেশন থেকে প্রায় এক মাইল দূরে একটি ব্রীজের মাঝামাঝি স্থানে একটা ধারক স্তম্ভের শেষ প্রান্তে।

২.৮ “লোভটা সামলাইতে পারিল না” – এখানে কোন লোভের কথা বলা হয়েছে?

উত্তর : নদীর জলের সঙ্গে খেলা করার লোভকে নদের চাঁদ সামলাতে পারেনি।

২.৯ নদের চাঁদ কত বছর স্টেশনমাস্টারের দায়িত্ব পালন করেছে?

উত্তর : চার বছর

২.১০ কোন ট্রেনটি নদের চাঁদ কে পিষে দিয়ে চলে যায়?

উত্তর : সাত নম্বর ডাউন প্যাসেঞ্জার

===============================================================

নদীর বিদ্রোহ অধ্যায় থেকে আরোও প্রশ্ন ও উত্তর দেখুন

================================================================

 সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর | নদীর বিদ্রোহ (গল্প) মানিক বন্দোপধ্যায় – মাধ্যমিক বাংলা প্রশ্ন ও উত্তর | Madhyamik Bengali Nodir Bidroho Question and Answer : 

  1. ‘ আমি চললাম হে ! – কে , কাকে এ কথা বলেছে ?

Ans: মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘ নদীর বিদ্রোহ ’ গল্পের স্টেশনমাস্টার নদেরচাঁদ চারটে পঁয়তাল্লিশের প্যাসেঞ্জার ট্রেনটি রওনা করিয়ে , তার সহকারীকে কর্তব্যভার বোঝানোর সময় তাকে এ কথা বলেছে ।

  1. ‘ আজ্ঞে হ্যাঁ ।’— কে , কোন্ প্রসঙ্গে এই কথাটি বলেছিল ? 

Ans: ‘ নদীর বিদ্রোহ ’ গল্পে স্টেশনমাস্টার নদেরচাঁদ চারটে পঁয়তাল্লিশের প্যাসেঞ্জার ট্রেনটিকে পাস করিয়ে নতুন সহকারীকে তার দায়িত্ব বুঝিয়ে চলে যাবার কথা জানায় । উত্তরে সহকারী সম্মতিসূচক উক্তিটি করে । 

  1. আজ্ঞে  না । বস্তুার এই কথাটি বলার প্রসঙ্গ প্রশ্ন । উল্লেখ করো । 

Ans: নদেরচাদ বিকেলের প্যাসেঞ্জার ট্রেনটিকে পাস করিয়ে , দায়িত্ব বুঝিয়ে দিয়ে বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা হওয়ার সময় সহকারীকে বৃষ্টির সম্ভাবনা আছে কিনা জিজ্ঞাসা করলে সহকারী উদ্ধৃত উক্তিটি করেন । 

  1. ‘ পাঁচ দিন নদীকে দেখা হয় নাই । — এই উদ্ধৃতির মধ্য দিয়ে নদেরটাদের যে আন্তরিক আকুতি ফুটে উঠেছে , তার পরিচয় দাও ।

Ans: নদেরচাদের ছোটো থেকেই নদীর প্রতি বড়ো টান । পাঁচ দিন অবিশ্রান্ত বৃষ্টির জন্য সে নদীর কাছে যেতে পারেনি । তাই বৃষ্টি থামতেই নদীকে দেখার জন্য সে উৎসুক হয়ে উঠল । 

  1. ‘ নদের চাঁদ ছেলেমানুষের মতো ঔৎসুক্য বোধ করিতে লাগিল ।’— ‘ ছেলেমানুষের মতো ‘ বলার কারণ কী ?

Ans: ‘ নদীর বিদ্রোহ ‘ গল্পে অবিশ্রান্ত বৃষ্টির কারণে নদীকে দেখতে না পেয়ে নদেরচাদের মধ্যে যে আকুলতা সৃষ্টি হয়েছিল , তা সাধারণত কোনো প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের মধ্যে দেখা যায় না । এই আগ্রহ বা ঔৎসুক্যবোধকেই ‘ ছেলেমানুষের মতো ‘ বলা হয়েছে ।

  1. ‘ কিছুক্ষণ নদীকে না দেখিলে সে বাঁচিবে না । কথা বলার কারণ কী ?

Ans: এ কথার মধ্য দিয়ে নদেরচাদের সঙ্গে নদীর গভীর বন্ধুত্বকে বোঝানো হয়েছে । একটানা পাঁচ দিন বৃষ্টির পরে নদীকে দেখার জন্য তার মধ্যেকার আকুলতাকে প্রকাশ করছে এই উদ্ধৃতি ।

  1. ‘ তা হোক।— কী হওয়ার কথা বলা হয়েছে ? 

Ans: ‘ তা হোক ’ শব্দটির সাহায্যে বৃষ্টির পূর্বাভাসকে উপেক্ষা করাকে বোঝানো হয়েছে । পাঁচ দিন অবিশ্রান্ত বর্ষণের শেষে নদীকে দেখার সুযোগ নদেরচাঁদ কোনো মতেই হাতছাড়া করতে চায় না ।

  1. ‘ রেলের উঁচু বাঁধ ধরিয়া হাঁটিতে হাঁটিতে … –হাঁটতে হাঁটতে নদেরচাঁদ কী ভাবছিল ? 

Ans: পাঁচ দিন অবিশ্রান্ত বৃষ্টির ফলে নদেরচাঁদের নদী দেখা হয়নি । বৃষ্টি থামলে নদীকে দেখতে যাওয়ার সময় দু – দিকের মাঠঘাট দেখে সে বর্ষণ – পুষ্ট নদীর পরিপূর্ণ রূপের কথা ভাবছিল ।

  1. ” ত্রিশ বছর বয়সে নদীর জন্য নদেরচাঁদের এত বেশি মায়া একটু অস্বাভাবিক / —এ কথা বলার কারণ কী ছিল ? 

Ans: ‘ নদীর বিদ্রোহে ‘ নদেরচাদের নদীকে নিয়ে বাড়াবাড়ি রকমের ঔৎসুক্যবোধ অনেকটা ছেলেমানুষের মতো । ত্রিশ বছর বয়সে নদীকে নিয়ে নদেরচাদের এতটা মায়া একটু অস্বাভাবিকই লাগে । 

  1. ‘ কেবল বয়সের জন্য নয় , বয়স ছাড়া আর কোন কোন কারণ উল্লেখ করা হয়েছে ? 

Ans: নদেরচাঁদ একজন স্টেশনমাস্টার । মেল , প্যাসেঞ্জার , মালগাড়ির গতি নিয়ন্ত্রণ করা তার কাজ । যন্ত্রের গতি নির্ধারণ যার কাজ , তার এতটা আবেগপ্রবণ হওয়াটা খুব স্বাভাবিক লক্ষণ নয় ।

  1. ‘ নিজের এই পাগলামিতে যেন আনন্দই উপভোগ করে । কোন পাগলামির কথা বলা হয়েছে ।

Ans: নদেরচাঁদের নদী সম্পর্কে একটা শিশুসুলভ উন্মাদনা ছিল । নদীর সামান্য অদর্শনে সে অধৈর্য হত । অন্যের কাছে এটা পাগলামি মনে হলেও , সে নিজে এই পাগলামিতে আনন্দ পেত ।

  1. ‘ নিজেকে কেবল বুঝাইতে পারে না । নিজেকে কী বোঝাতে পারে না নদেরচাঁদ ?

Ans: প্রাপ্তবয়স্ক নদেরচাদ ট্রেন চলাচল নিয়ন্ত্রণের মতো গুরুত্বপূর্ণ কাজের সঙ্গে যুক্ত । তার নদীকে দেখার মতো শিশুসুলভ ঔৎসুক্য সাজে না – এ কথা সে মনকে বোঝাতে পারে না ।

  1. ‘ অস্বাভাবিক হোক –কোন্ বিষয়কে অস্বাভাবিক বলা হয়েছে ?

Ans: নদেরচাদ স্টেশনমাস্টারের মতো গুরুত্বপূর্ণ পদে আসীন ছিল । বর্ষণপুষ্ট নদীকে একটানা পাঁচ দিন না দেখার জন্য তার মধ্যে যে শিশুসুলভ উন্মত্ততা দেখা দিয়েছিল সেটাই অস্বাভাবিক ।

  1. দীকে ভালোবাসার পিছনে নদেরচাদের কী কৈফিয়ত ছিল ?

Ans: নদেরচাদের নদীর প্রতি আকর্ষণ , শিশুসুলভ পাগলামি হলেও এর পিছনে তার একটি নিজস্ব যুক্তি ছিল । কারণ তার জন্ম ও বেড়ে ওঠা নদীর ধারেই । তাই তার নদীর প্রতি এই ভালোবাসা আবাল্য ।

  1. কিন্তু শৈশবে , কৈশোরে , আর প্রথম যৌবনে বড়োছোটোর হিসাব কে করে ? ‘ — উল্লিখিত সময়ে বড়ো ছোটোর হিসাব না করার কারণ কী ? 

Ans: শৈশব , কৈশোর ও প্রথম যৌবনে মানুষ বুদ্ধি – বিবেচনার পরিবর্তে ব্যক্তিমনের আবেগ – আকাঙ্ক্ষাকে অনেক বেশি গুরুত্ব দেয় । তাই তার কাছে তখন ছোটো – বড়ো , ভালোমন্দের চেয়ে বেশি মূল্যবান নিজের ভালোলাগা । 

  1. সে প্রায় কাঁদিয়া ফেলিয়াছিল ; — তার কেঁদে ফেলার কারণ কী ?

Ans: ‘ নদীর বিদ্রোহ ’ গল্পের নায়ক নদেরচাদের ছোটোবেলা থেকেই গ্রামের পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া নদীটির সঙ্গে ভারি বন্ধুত্ব । একবার অনাবৃষ্টিতে নদীর জলস্রোত প্রায় শুকিয়ে যেতে বসায় সে কেঁদে ফেলেছিল ।

  1. ‘ অসুস্থ দুর্বল আত্মীয়ার মতোই তার মমতা পাইয়াছিল।— কাকে , কেন ‘ অসুস্থ দুর্বল আত্মীয়া ‘ বলা হয়েছে ?

Ans: নদেরচাঁদ যে – নদীর ধারে জন্মেছে , বড়ো হয়েছে , যাকে ভালোবেসেছে , সেই নদীটি বর্ষণপুষ্ট নদীর মতো বড়ো ছিল না । ক্ষীণস্রোতা নদীটি নদেরচাদের কাছে ছিল অসুস্থ , দুর্বল আত্মীয়ার মতো ।

  1. ‘ নদীটি অসুস্থ দুর্বল আত্মীয়ার মতোই তার মমতা পাইয়াছিল । নদীটির এই মমতা পাওয়ার কারণ কী ?

Ans: নদেরচাদের আবাল্যের সঙ্গী নদীটির স্রোতধারা ছিল অতি ক্ষীণ । তাই অসুস্থ , দুর্বল আত্মীয়ের প্রতি মানুষের যেমন সহানুভূতি ও মমতা থাকে , নদেরচাদের ও নদীটির প্রতি তাই ছিল ।

  1. সেই ক্ষীণস্রোতা নির্জীব নদীটি — কোন নদীর কথা বলা হয়েছে ?

Ans: আলোচা উদ্ধৃতিটিতে নদেরচাদের দেশের সরু , ক্ষীণস্রোতা নদীটির সম্পর্কে এ কথা বলা হয়েছে । আবাল্যের সঙ্গী এই নদীটিকে সে নিজের অসুস্থ ও দুর্বল আত্মীয়ার মতো গণ্য করত ।

  1. ‘ মানুষ যেমন কাঁদে কে , কেন কেঁদেছিল ?

Ans: পরমাত্মীয়কে দুরারোগ্য রোগে মারা যেতে দেখলে মানুষ যেমন কাঁদে , নদেরচাঁদও অনাবৃষ্টিতে তার গ্রামের ক্ষীণস্রোতা নদীটিকে শুকিয়ে যেতে দেখে তেমনি কেঁদে ফেলেছিল ।

  1. ‘ চিরদিন নদীকে সে ভালোবাসিয়াছে । নদীকে ভালোবাসার মধ্য দিয়ে নদেরচাঁদের চরিত্রের কোন দিকটি প্রকাশিত ?

Ans: ত্রিশ বছর বয়সি নদেরচাদের নদীর প্রতি তীব্র ভালোবাসা অস্বাভাবিক হলেও নদেরচাঁদ প্রকৃতিপ্রেমী ও আবেগপ্রবণ । তাই সংবেদনশীল শিল্পী চরিত্রদের মতোই সে নদীকে ভালোবেসেছে ।

  1. ‘ একটা কৈফিয়ত নদেরচাঁদ দিতে পারে ।’— কৈফিয়ত দেওয়ার প্রয়োজন কী ছিল ?

Ans: নদীর প্রতি নদেরচাঁদের তীব্র আকর্ষণ বাস্তববাদী মানুষের মনে প্রশ্ন জাগাতে পারে । তাই একটা কৈফিয়ত দেওয়া যে প্রয়োজন , তা সে অনুভব করে ।

  1. নদেরচাদ স্তম্ভিত হইয়া গেল । — নদেরচাঁদ কেন স্তম্ভিত হয়ে গেল ?

Ans: পাঁচ দিন অবিশ্রান্ত বৃষ্টির পরে নদীর ধারে গিয়ে আপাতশাস্ত নদীর উন্মত্ত রূপ দেখে নদেরচাঁদ স্তম্ভিত হয়ে গিয়েছিল ।

  1. ‘ প্রথমবার নদীর দিকে দৃষ্টিপাত করিয়াই … —‘প্রথমবার ’ বলতে কী বোঝানো হয়েছে ?

Ans: ‘ নদীর বিদ্রোহ ‘ গল্প অনুসারে , ‘ প্রথমবার ‘ বলতে পাঁচ দিন মুশলধারে বৃষ্টির পর নদেরচাঁদ প্রথম যখন নদীকে দেখে ও তার উন্মত্ততা অনুভব করে , সে কথাই বোঝানো হয়েছে ।

  1. ‘ নদীর পঙ্কিল জলস্রোতে সে চাঞ্চল্য দেখিয়া গিয়াছে’— এই চাঞ্চল্যের স্বরূপ কী ছিল ?

Ans: নদেরচাঁদ বর্ষণপুষ্ট নদীর পঙ্কিল জলস্রোতের চাঞ্চল্য দেখেই বুঝেছিল সারাবছরের ক্ষীণস্রোতা নদীটির বর্ষার জলে পরিপূর্ণতার কাহিনি যেন তার চাঞ্চল্যের মধ্য দিয়ে প্রকাশিত হচ্ছিল ।

  1. ‘ কিন্তু সে চাঞ্চল্য যেন ছিল পরিপূর্ণতার আনন্দের প্রকাশ।— কোন্ পরিপূর্ণতার কথা বলা হয়েছে ?

Ans: নদীর পরিপূর্ণতা তার জলরাশির উচ্ছলতায় । নদেরচাদ বর্ষার জলে পুষ্ট নদীর যে চাঞ্চল্য লক্ষ করেছিল , সেই পরিপূর্ণতার কথা এক্ষেত্রে বলা হয়েছে ।

  1. ” আজ যেন সেই নদী খেপিয়ে গিয়াছে , কোন্ নদীর কথা বলা হয়েছে ? 

Ans: ‘ নদীর বিদ্রোহ ‘ গল্পের নায়ক নদেরচাদের কর্মস্থল থেকে মাইলখানেক দুরে তার প্রিয় নদীটি অবস্থিত ছিল । এখানে সেই নদীটির কথা বলা হয়েছে ।

  1. ‘ আজ যেন সেই নদী খেপিয়া গিয়াছে— ‘ আজ ‘ বলতে কোন দিনের কথা বলা হয়েছে ?

Ans: ‘ নদীর বিদ্রোহ ‘ গল্পে ‘ আজ ‘ বলতে পাঁচদিনের অঝোরধারায় বৃষ্টির পর যেদিন নদেরচাঁদ প্রথম নদীকে দেখতে গিয়েছিল , সেই দিনটির কথা বলা হয়েছে ।

  1. “ আজ যেন সেই নদী খেপিয়া গিয়াছে , — নদীর খেপে যাওয়ার কারণ কী ?

Ans: ‘ নদীর বিদ্রোহ ‘ গল্পে সারাবছর জলাভাবে ভুগতে থাকা ক্ষীণস্রোতা নদীটি একটানা পাঁচদিনের বৃষ্টিতে ফুলেফেঁপে উঠেছিল । এটাই নদীর খেপে যাওয়ার কারণ ।

  1. ‘ নদেরচাদ একটি সংকীর্ণ ক্ষীণস্রোতা নদীর কথা ভাবিতেছিল ।’— কোন্ নদীর কথা বলা হয়েছে ?

Ans: নদেরচাঁদ তার কর্মস্থলের অনতিদূরে চার বছর ধরে একটি ক্ষীণস্রোতা নদীকে দেখে আসছে । টানা পাঁচ দিনের বৃষ্টিতে সেই নদী ফুলেফেঁপে উঠলেও দাঁড়িয়ে সে সেই ক্ষীণস্রোতা নদীটির কথাই ভাবছিল ।

  1. “ তার চার বছরের চেনা এই নদীর মূর্তিকে তাই  যেন আরও বেশি ভয়ংকর , আরও বেশি অপরিচিত মনে হইল।— তাৎপর্য বিশ্লেষণ করো ।

Ans: নদেরচাদের কর্মক্ষেত্রের পাশ দিয়ে প্রবাহিত ক্ষীণস্রোতা নদীটিকে সে প্রতিদিন দেখত । পাঁচ দিন অবিশ্রান্ত বর্ষণে সে নদীর জল ফুলেফেঁপে ভয়ংকর রূপ ধারণ করলে চার বছরের চেনা নদীটিকে নদেরচাদের অচেনা লাগে ।

  1. ‘ সে প্রতিদিন নদীকে দেখে । – ‘ সে ’ কে ? সে কোন্ নদীকে কেন দ্যাখে ?

Ans: ‘ সে ’ হল মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘ নদীর বিদ্রোহ ‘ গল্পের কেন্দ্রীয় চরিত্র নদেরচাঁদ । ” নদেরচাঁদ তার কর্মক্ষেত্র থেকে মাইলখানেক দূরের নদীটিকে প্রতিদিন দেখত । কারণ এমনই এক নদীর ধারে তার শৈশব কেটেছিল ।

  1. ‘ আজও সে সেইখানে গিয়া বসিল / – কে , কোথায় প্রশ্ন গিয়ে বসল ।

Ans: স্টেশনমাস্টার নদেরচাঁদের তার কাজের অবসরে কর্মক্ষেত্র থেকে মাইলখানেক দূরে নদীর উপরকার ব্রিজের মাঝামাঝি ধারকস্তম্ভের শেষ প্রান্তে এসে বসল ।

  1. ধারকস্তত্ত্বের শেষপ্রান্তে বসিয়া সে প্রতিদিন নদীকে দেখে তার প্রতিদিন নদীকে দেখার কারণ কী ?

Ans: নদেরচাদের নদীর সঙ্গে সখ্য ছোটোবেলার , তার গ্রামে থাকাকালীন । কর্মস্থলে এসেও সে তা ভুলতে পারেনি । তাই নদীকে সে প্রতিদিন না দেখে থাকতে পারত না ।

  1. ‘ আজও সে সেইখানে গিয়া বসিল ‘ আজও বলার কারণ কী ?

Ans: নদীর প্রতি অমোঘ আকর্ষণে নদেরচাঁদ প্রতিদিন নদীকে দেখতে যেত । পাঁচ দিন অবিশ্রান্ত বৃষ্টিতে তাতে ছেদ পড়ে । ষষ্ঠ দিনে বৃষ্টি কমলে সে আবার সেই একই জায়গায় গিয়ে বসে । ‘ আজ ‘ বলতে উক্ত দিনটিকে বোঝানো হয়েছে । 

  1. মনে হয় ইচ্ছা করিলে ‘ — কোন ইচ্ছার কথা বলা হয়েছে ?

Ans: বৃষ্টি শেষে নদীর ধারকস্তম্ভে বসে নদেরচাদ নদীকে দেখছিল । নদীর জলরাশি মাঝেমধ্যে ফুলেফেঁপে উঠছিল । সেই ফুলেফেঁপে ওঠা জলরাশিকে স্পর্শ করার ইচ্ছার কথা বলা হয়েছে ।

  1. ‘ এত উঁচুতে জল উঠিয়া আসয়িাছে যে … ! – জল উঁচুতে উঠে এসেছে কেন ?

Ans: ক্ষীণস্রোতা নদীর উপর নির্মিত ব্রিজের ধারকস্তম্ভগুলিতে বর্ষার সময় নদীর স্রোত বাধা পায় এবং ফেনিল আবর্ত রচনা করে । তাই জল উঁচুতে উঠে আসে ।

38  ‘ নদেরচাদের ভারী আমোদ বোধ হইতে লাগিল । -নদেরচাঁদের আমোদ বোধ হওয়ার কারণ কী ?

Ans: ‘ নদীর বিদ্রোহ ‘ গল্প অনুসারে ব্রিজের ধারকস্তম্ভে বসে নদেরচাঁদ বারবার স্তম্ভের গায়ে আঘাত খেয়ে বর্ষণপুষ্ট নদীর ফুলে ওঠা জল ছুঁতে চেষ্টা করছিল । এতেই সে আমোদিত হয়ে উঠেছিল ।

  1. ” সে স্রোতের মধ্যে ছুড়িয়া দিল ।’— ‘ সে ‘ কে ? সে স্রোতের মধ্যে কী ছুড়ে দিল ?

Ans: ‘ সে ‘ হল ‘ নদীর বিদ্রোহ ‘ গল্পের স্টেশনমাস্টার নদেরচাঁদ । 

  চিরপরিচিত ক্ষীণকায় নদীকে বর্ষার জলে ফুলেফেঁপে উঠতে দেখে উৎফুল্ল নদেরচাঁদ পুরোনো চিঠি সেই উন্মত্ত স্রোতের মধ্যে ছুড়ে দিয়েছিল ।

  1. ‘ চোখের পলকে কোথায় যে অদৃশ্য হইয়া গেল চিঠিখানি ! – চিঠির কথা বলা হয়েছে ? 

Ans: বর্ষণপুষ্ট জলে ক্ষীণস্রোতা নদীর উন্মত্ততা লক্ষ করে নদেরচাদ তার প্রিয়ার চিঠি স্রোতের মধ্যে ফেলে দেয় । এখানে সেই চিঠির কথাই বলা হয়েছে ।

  1. ‘ উন্মত্ততার জন্যই জলপ্রবাহকে আজ তাহার জীবন্ত মনে হইতেছিল , — এই উম্মত্ততার পরিচয় দাও ।

Ans: ‘ নদীর বিদ্রোহ ‘ গঙ্গে নদেরচাঁদ শীর্ণকায় যে – নদীকে দেখে অভ্যস্ত ছিল তা বর্ষণপুষ্ট হয়ে প্রতিনিয়ত উম্মত্ত জলপ্রবাহের আবর্ত রচনা করায় সেই জলরাশিকে জীবন্ত বলে মনে হয়েছিল ।

  1. ‘ তার সঙ্গে খেলায় যোগ দিয়া কোন খেলার কথা বলা হয়েছে ?

Ans: একটানা বর্ষায় ফুলেফেঁপে ওঠা নদীর উম্মত্ত জলরাশিতে পুরোনো চিঠি খেলার ছলে ছিঁড়ে ছিঁড়ে ফেলেছিল নদেরচাঁদ । এখানে সেই খেলার কথা বলা হয়েছে ।

  1. ‘ চিঠি পকেটেই ছিল / – কোন চিঠির কথা বলা হয়েছে ? 

Ans: বর্ষার সঙ্গে বিরহের সুর মিলিয়ে বাড়ি থেকে বহুদুরে কর্তব্যরত স্টেশনমাস্টার নদেরচাঁদ তার বউকে পাঁচ পাতার একটি চিঠি লিখেছিল । এখানে সেই চিঠির কথাই বলা হয়েছে ।

  1. একটু মমতা বোধ করিল বটে , ‘ — কী বিষয়ে মমতা বোধ করার কথা বলা হয়েছে ?

Ans: উন্মত্ত নদীর জলে , স্ত্রীকে লেখা বিরহ – বেদনাপূর্ণ চিঠির এক – একখানি পাতা ছিঁড়ে দুমড়ে – মুচড়ে ফেলে দেওয়ার সময় নদেরচাদ স্ত্রীর প্রতি মমতাবোধ করেছিল ।

  1. ‘ লোভটা সে সামলাইতে পারিল না , ‘ — কোন্ লোভের কথা বলা হয়েছ ?

Ans: এখানে ‘ লোভ ’ বলতে উন্মত্ত নদীর সঙ্গে নদেরচাদের খেলার লোভের কথা বলা হয়েছে । সেই লোভের বশবর্তী হয়ে নদেরচাঁদ স্ত্রীকে লেখা চিঠির পাতাগুলো একের পর এক নদীতে ছুড়ে ফেলেছিল ।

  1. ‘ উঠল না— কে , কোথা থেকে উঠল না ?

Ans: ‘ নদীর বিদ্রোহ ‘ গল্পে স্ফীতকায় জলরাশির সঙ্গে খেলতে খেলতে আত্মহারা নদেরচাঁদ প্রবল বৃষ্টিতে ভিজতে থাকলেও এক অজানা আত্মিক টানে নদীর ধার ছেড়ে উঠল না ।

  1. ‘ নদেরচাদের মন হইতে ছেলেমানুষি আমোদ মিলাইয়া গেল , ‘ — নদেরচাদের মন থেকে আমোদ মিলিয়ে গেল কেন ? 

Ans: ব্রিজের ধারকস্তম্ভের ওপর বসে উত্তাল নদী থেকে উঠে আসা শব্দের সঙ্গে বৃষ্টির শব্দ মিশে তৈরি হওয়া শব্দ শুনতে শুনতে নদেরচাদের মন থেকে ছেলেমানুষি আমোদ মিলিয়ে গিয়েছিল । 

  1. ‘ তারপর সে অতিকষ্টে উঠিয়া দাঁড়াইল ।’— ‘ তারপর বলতে কী বোঝানো হয়েছে ?

Ans: নদী আর বৃষ্টির শব্দ মিলেমিশে নদেরচাঁদকে আচ্ছন্ন করে দিয়েছিল । এমন সময় ব্রিজের ওপর দিয়ে সশব্দে একটা ট্রেন চলে যায় । উদ্ধৃতাংশে ‘ তারপর ‘ বলতে এর পরকেই বুঝিয়েছে । 

  1. ‘ বড়ো ভয় করিতে লাগিল নদেরচাদের / – নদের চাঁদ ভয় পেল কেন ?

Ans: বর্ষার জলে উদ্বৃত্ত নদীর রোষে – ক্ষোভে ফুঁসে ওঠা রূপ দেখে দিশেহারা নদেরচাদের ভয় হয়েছিল নদীর আর্তনাদি জলরাশি যেন গোটা ব্রিজটিকে ভাসিয়ে নিয়ে যাবে ।

  1. ‘ তাহার উচিত হয় নাই।- তার কী করা উচিত হয়নি ?

Ans: ‘ নদীর বিদ্রোহ ‘ গল্পের কেন্দ্রীয় চরিত্র নদের চাঁদের ক্ষোভে উন্মত্ত নদীর আর্তনাদি জলরাশির কয়েক হাত উঁচুতে ধারকস্তম্ভের ওপর এমন নিশ্চিন্ত মনে বসে থাকা উচিত হয়নি । 

===============================================================

নদীর বিদ্রোহ অধ্যায় থেকে আরোও প্রশ্ন ও উত্তর দেখুন

================================================================

সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর | নদীর বিদ্রোহ (গল্প) মানিক বন্দোপধ্যায় – মাধ্যমিক বাংলা সাজেশন | Madhyamik Bengali Suggestion :

  1. ‘ কিন্তু সে চাঞ্চল্য যেন ছিল পরিপূর্ণতার আনন্দের প্রকাশ।— কোন্ পরিপূর্ণতার কথা বলা হয়েছে ?

Answer: নদীর পরিপূর্ণতা তার জলরাশির উচ্ছলতায় । নদেরচাদ বর্ষার জলে পুষ্ট নদীর যে চাঞ্চল্য লক্ষ করেছিল , সেই পরিপূর্ণতার কথা এক্ষেত্রে বলা হয়েছে ।

  1. ” আজ যেন সেই নদী খেপিয়ে গিয়াছে , কোন্ নদীর কথা বলা হয়েছে ? 

Answer: ‘ নদীর বিদ্রোহ ‘ গল্পের নায়ক নদেরচাদের কর্মস্থল থেকে মাইলখানেক দুরে তার প্রিয় নদীটি অবস্থিত ছিল । এখানে সেই নদীটির কথা বলা হয়েছে ।

  1. ‘ আজ যেন সেই নদী খেপিয়া গিয়াছে— ‘ আজ ‘ বলতে কোন দিনের কথা বলা হয়েছে ?

Answer: ‘ নদীর বিদ্রোহ ‘ গল্পে ‘ আজ ‘ বলতে পাঁচদিনের অঝোরধারায় বৃষ্টির পর যেদিন নদেরচাঁদ প্রথম নদীকে দেখতে গিয়েছিল , সেই দিনটির কথা বলা হয়েছে ।

  1. “ আজ যেন সেই নদী খেপিয়া গিয়াছে , — নদীর খেপে যাওয়ার কারণ কী ?

Answer: ‘ নদীর বিদ্রোহ ‘ গল্পে সারাবছর জলাভাবে ভুগতে থাকা ক্ষীণস্রোতা নদীটি একটানা পাঁচদিনের বৃষ্টিতে ফুলেফেঁপে উঠেছিল । এটাই নদীর খেপে যাওয়ার কারণ ।

  1. ‘ নদেরচাদ একটি সংকীর্ণ ক্ষীণস্রোতা নদীর কথা ভাবিতেছিল ।’— কোন্ নদীর কথা বলা হয়েছে ?

Answer: নদেরচাঁদ তার কর্মস্থলের অনতিদূরে চার বছর ধরে একটি ক্ষীণস্রোতা নদীকে দেখে আসছে । টানা পাঁচ দিনের বৃষ্টিতে সেই নদী ফুলেফেঁপে উঠলেও দাঁড়িয়ে সে সেই ক্ষীণস্রোতা নদীটির কথাই ভাবছিল ।

  1. “ তার চার বছরের চেনা এই নদীর মূর্তিকে তাই  যেন আরও বেশি ভয়ংকর , আরও বেশি অপরিচিত মনে হইল।— তাৎপর্য বিশ্লেষণ করো ।

Answer: নদেরচাদের কর্মক্ষেত্রের পাশ দিয়ে প্রবাহিত ক্ষীণস্রোতা নদীটিকে সে প্রতিদিন দেখত । পাঁচ দিন অবিশ্রান্ত বর্ষণে সে নদীর জল ফুলেফেঁপে ভয়ংকর রূপ ধারণ করলে চার বছরের চেনা নদীটিকে নদেরচাদের অচেনা লাগে ।

  1. ‘ সে প্রতিদিন নদীকে দেখে । – ‘ সে ’ কে ? সে কোন্ নদীকে কেন দ্যাখে ?

Answer: ‘ সে ’ হল মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘ নদীর বিদ্রোহ ‘ গল্পের কেন্দ্রীয় চরিত্র নদেরচাঁদ । ” নদেরচাঁদ তার কর্মক্ষেত্র থেকে মাইলখানেক দূরের নদীটিকে প্রতিদিন দেখত । কারণ এমনই এক নদীর ধারে তার শৈশব কেটেছিল ।

  1. ‘ আজও সে সেইখানে গিয়া বসিল / – কে , কোথায় প্রশ্ন গিয়ে বসল ।

Answer: স্টেশনমাস্টার নদেরচাঁদের তার কাজের অবসরে কর্মক্ষেত্র থেকে মাইলখানেক দূরে নদীর উপরকার ব্রিজের মাঝামাঝি ধারকস্তম্ভের শেষ প্রান্তে এসে বসল ।

  1. ধারকস্তত্ত্বের শেষপ্রান্তে বসিয়া সে প্রতিদিন নদীকে দেখে তার প্রতিদিন নদীকে দেখার কারণ কী ?

Answer: নদেরচাদের নদীর সঙ্গে সখ্য ছোটোবেলার , তার গ্রামে থাকাকালীন । কর্মস্থলে এসেও সে তা ভুলতে পারেনি । তাই নদীকে সে প্রতিদিন না দেখে থাকতে পারত না ।

  1. ‘ আজও সে সেইখানে গিয়া বসিল ‘ আজও বলার কারণ কী ?

Answer: নদীর প্রতি অমোঘ আকর্ষণে নদেরচাঁদ প্রতিদিন নদীকে দেখতে যেত । পাঁচ দিন অবিশ্রান্ত বৃষ্টিতে তাতে ছেদ পড়ে । ষষ্ঠ দিনে বৃষ্টি কমলে সে আবার সেই একই জায়গায় গিয়ে বসে । ‘ আজ ‘ বলতে উক্ত দিনটিকে বোঝানো হয়েছে ।

  1. মনে হয় ইচ্ছা করিলে ‘ — কোন ইচ্ছার কথা বলা হয়েছে ?

Answer: বৃষ্টি শেষে নদীর ধারকস্তম্ভে বসে নদেরচাদ নদীকে দেখছিল । নদীর জলরাশি মাঝেমধ্যে ফুলেফেঁপে উঠছিল । সেই ফুলেফেঁপে ওঠা জলরাশিকে স্পর্শ করার ইচ্ছার কথা বলা হয়েছে ।

  1. ‘ এত উঁচুতে জল উঠিয়া আসয়িাছে যে … ! – জল উঁচুতে উঠে এসেছে কেন ?

Answer: ক্ষীণস্রোতা নদীর উপর নির্মিত ব্রিজের ধারকস্তম্ভগুলিতে বর্ষার সময় নদীর স্রোত বাধা পায় এবং ফেনিল আবর্ত রচনা করে । তাই জল উঁচুতে উঠে আসে ।

13  ‘ নদেরচাদের ভারী আমোদ বোধ হইতে লাগিল । -নদেরচাঁদের আমোদ বোধ হওয়ার কারণ কী ?

Answer: ‘ নদীর বিদ্রোহ ‘ গল্প অনুসারে ব্রিজের ধারকস্তম্ভে বসে নদেরচাঁদ বারবার স্তম্ভের গায়ে আঘাত খেয়ে বর্ষণপুষ্ট নদীর ফুলে ওঠা জল ছুঁতে চেষ্টা করছিল । এতেই সে আমোদিত হয়ে উঠেছিল ।

  1. ” সে স্রোতের মধ্যে ছুড়িয়া দিল ।’— ‘ সে ‘ কে ? সে স্রোতের মধ্যে কী ছুড়ে দিল ?

Answer: ‘ সে ‘ হল ‘ নদীর বিদ্রোহ ‘ গল্পের স্টেশনমাস্টার নদেরচাঁদ ।

চিরপরিচিত ক্ষীণকায় নদীকে বর্ষার জলে ফুলেফেঁপে উঠতে দেখে উৎফুল্ল নদেরচাঁদ পুরোনো চিঠি সেই উন্মত্ত স্রোতের মধ্যে ছুড়ে দিয়েছিল ।

  1. ‘ চোখের পলকে কোথায় যে অদৃশ্য হইয়া গেল চিঠিখানি ! – চিঠির কথা বলা হয়েছে ? 

Answer: বর্ষণপুষ্ট জলে ক্ষীণস্রোতা নদীর উন্মত্ততা লক্ষ করে নদেরচাদ তার প্রিয়ার চিঠি স্রোতের মধ্যে ফেলে দেয় । এখানে সেই চিঠির কথাই বলা হয়েছে ।

  1. ‘ উন্মত্ততার জন্যই জলপ্রবাহকে আজ তাহার জীবন্ত মনে হইতেছিল , — এই উম্মত্ততার পরিচয় দাও ।

Answer: ‘ নদীর বিদ্রোহ ‘ গঙ্গে নদেরচাঁদ শীর্ণকায় যে – নদীকে দেখে অভ্যস্ত ছিল তা বর্ষণপুষ্ট হয়ে প্রতিনিয়ত উম্মত্ত জলপ্রবাহের আবর্ত রচনা করায় সেই জলরাশিকে জীবন্ত বলে মনে হয়েছিল ।

  1. ‘ তার সঙ্গে খেলায় যোগ দিয়া কোন খেলার কথা বলা হয়েছে ?

Answer: একটানা বর্ষায় ফুলেফেঁপে ওঠা নদীর উম্মত্ত জলরাশিতে পুরোনো চিঠি খেলার ছলে ছিঁড়ে ছিঁড়ে ফেলেছিল নদেরচাঁদ । এখানে সেই খেলার কথা বলা হয়েছে ।

  1. ‘ চিঠি পকেটেই ছিল / – কোন চিঠির কথা বলা হয়েছে ? 

Answer: বর্ষার সঙ্গে বিরহের সুর মিলিয়ে বাড়ি থেকে বহুদুরে কর্তব্যরত স্টেশনমাস্টার নদেরচাঁদ তার বউকে পাঁচ পাতার একটি চিঠি লিখেছিল । এখানে সেই চিঠির কথাই বলা হয়েছে ।

  1. একটু মমতা বোধ করিল বটে , ‘ — কী বিষয়ে মমতা বোধ করার কথা বলা হয়েছে ?

Answer: উন্মত্ত নদীর জলে , স্ত্রীকে লেখা বিরহ – বেদনাপূর্ণ চিঠির এক – একখানি পাতা ছিঁড়ে দুমড়ে – মুচড়ে ফেলে দেওয়ার সময় নদেরচাদ স্ত্রীর প্রতি মমতাবোধ করেছিল ।

  1. ‘ লোভটা সে সামলাইতে পারিল না , ‘ — কোন্ লোভের কথা বলা হয়েছ ?

Answer: এখানে ‘ লোভ ’ বলতে উন্মত্ত নদীর সঙ্গে নদেরচাদের খেলার লোভের কথা বলা হয়েছে । সেই লোভের বশবর্তী হয়ে নদেরচাঁদ স্ত্রীকে লেখা চিঠির পাতাগুলো একের পর এক নদীতে ছুড়ে ফেলেছিল ।

  1. ‘ উঠল না— কে , কোথা থেকে উঠল না ?

Answer: ‘ নদীর বিদ্রোহ ‘ গল্পে স্ফীতকায় জলরাশির সঙ্গে খেলতে খেলতে আত্মহারা নদেরচাঁদ প্রবল বৃষ্টিতে ভিজতে থাকলেও এক অজানা আত্মিক টানে নদীর ধার ছেড়ে উঠল না ।

  1. ‘ নদেরচাদের মন হইতে ছেলেমানুষি আমোদ মিলাইয়া গেল , ‘ — নদেরচাদের মন থেকে আমোদ মিলিয়ে গেল কেন ? 

Answer: ব্রিজের ধারকস্তম্ভের ওপর বসে উত্তাল নদী থেকে উঠে আসা শব্দের সঙ্গে বৃষ্টির শব্দ মিশে তৈরি হওয়া শব্দ শুনতে শুনতে নদেরচাদের মন থেকে ছেলেমানুষি আমোদ মিলিয়ে গিয়েছিল ।

  1. ‘ তারপর সে অতিকষ্টে উঠিয়া দাঁড়াইল ।’— ‘ তারপর বলতে কী বোঝানো হয়েছে ?

Answer: নদী আর বৃষ্টির শব্দ মিলেমিশে নদেরচাঁদকে আচ্ছন্ন করে দিয়েছিল । এমন সময় ব্রিজের ওপর দিয়ে সশব্দে একটা ট্রেন চলে যায় । উদ্ধৃতাংশে ‘ তারপর ‘ বলতে এর পরকেই বুঝিয়েছে ।

  1. ‘ বড়ো ভয় করিতে লাগিল নদেরচাদের / – নদের চাঁদ ভয় পেল কেন ?

Answer: বর্ষার জলে উদ্বৃত্ত নদীর রোষে – ক্ষোভে ফুঁসে ওঠা রূপ দেখে দিশেহারা নদেরচাদের ভয় হয়েছিল নদীর আর্তনাদি জলরাশি যেন গোটা ব্রিজটিকে ভাসিয়ে নিয়ে যাবে ।

  1. ‘ তাহার উচিত হয় নাই।- তার কী করা উচিত হয়নি ?

Answer: ‘ নদীর বিদ্রোহ ‘ গল্পের কেন্দ্রীয় চরিত্র নদের চাঁদের ক্ষোভে উন্মত্ত নদীর আর্তনাদি জলরাশির কয়েক হাত উঁচুতে ধারকস্তম্ভের ওপর এমন নিশ্চিন্ত মনে বসে থাকা উচিত হয়নি ।

  1. ‘ আমি চললাম হে ! – কে , কাকে এ কথা বলেছে ?

Answer: মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘ নদীর বিদ্রোহ ’ গল্পের স্টেশনমাস্টার নদেরচাঁদ চারটে পঁয়তাল্লিশের প্যাসেঞ্জার ট্রেনটি রওনা করিয়ে , তার সহকারীকে কর্তব্যভার বোঝানোর সময় তাকে এ কথা বলেছে ।

  1. ‘ আজ্ঞে হ্যাঁ ।’— কে , কোন্ প্রসঙ্গে এই কথাটি বলেছিল ? 

Answer: ‘ নদীর বিদ্রোহ ’ গল্পে স্টেশনমাস্টার নদেরচাঁদ চারটে পঁয়তাল্লিশের প্যাসেঞ্জার ট্রেনটিকে পাস করিয়ে নতুন সহকারীকে তার দায়িত্ব বুঝিয়ে চলে যাবার কথা জানায় । উত্তরে সহকারী সম্মতিসূচক উক্তিটি করে ।

  1. আজ্ঞে  না । বস্তুার এই কথাটি বলার প্রসঙ্গ প্রশ্ন । উল্লেখ করো । 

Answer: নদেরচাদ বিকেলের প্যাসেঞ্জার ট্রেনটিকে পাস করিয়ে , দায়িত্ব বুঝিয়ে দিয়ে বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা হওয়ার সময় সহকারীকে বৃষ্টির সম্ভাবনা আছে কিনা জিজ্ঞাসা করলে সহকারী উদ্ধৃত উক্তিটি করেন ।

  1. ‘ পাঁচ দিন নদীকে দেখা হয় নাই । — এই উদ্ধৃতির মধ্য দিয়ে নদেরটাদের যে আন্তরিক আকুতি ফুটে উঠেছে , তার পরিচয় দাও ।

Answer: নদেরচাদের ছোটো থেকেই নদীর প্রতি বড়ো টান । পাঁচ দিন অবিশ্রান্ত বৃষ্টির জন্য সে নদীর কাছে যেতে পারেনি । তাই বৃষ্টি থামতেই নদীকে দেখার জন্য সে উৎসুক হয়ে উঠল ।

  1. ‘ নদের চাঁদ ছেলেমানুষের মতো ঔৎসুক্য বোধ করিতে লাগিল ।’— ‘ ছেলেমানুষের মতো ‘ বলার কারণ কী ?

Answer: ‘ নদীর বিদ্রোহ ‘ গল্পে অবিশ্রান্ত বৃষ্টির কারণে নদীকে দেখতে না পেয়ে নদেরচাদের মধ্যে যে আকুলতা সৃষ্টি হয়েছিল , তা সাধারণত কোনো প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের মধ্যে দেখা যায় না । এই আগ্রহ বা ঔৎসুক্যবোধকেই ‘ ছেলেমানুষের মতো ‘ বলা হয়েছে ।

  1. ‘ কিছুক্ষণ নদীকে না দেখিলে সে বাঁচিবে না । কথা বলার কারণ কী ?

Answer: এ কথার মধ্য দিয়ে নদেরচাদের সঙ্গে নদীর গভীর বন্ধুত্বকে বোঝানো হয়েছে । একটানা পাঁচ দিন বৃষ্টির পরে নদীকে দেখার জন্য তার মধ্যেকার আকুলতাকে প্রকাশ করছে এই উদ্ধৃতি ।

  1. ‘ তা হোক।— কী হওয়ার কথা বলা হয়েছে ? 

Answer: ‘ তা হোক ’ শব্দটির সাহায্যে বৃষ্টির পূর্বাভাসকে উপেক্ষা করাকে বোঝানো হয়েছে । পাঁচ দিন অবিশ্রান্ত বর্ষণের শেষে নদীকে দেখার সুযোগ নদেরচাঁদ কোনো মতেই হাতছাড়া করতে চায় না ।

  1. ‘ রেলের উঁচু বাঁধ ধরিয়া হাঁটিতে হাঁটিতে … –হাঁটতে হাঁটতে নদেরচাঁদ কী ভাবছিল ? 

Answer: পাঁচ দিন অবিশ্রান্ত বৃষ্টির ফলে নদেরচাঁদের নদী দেখা হয়নি । বৃষ্টি থামলে নদীকে দেখতে যাওয়ার সময় দু – দিকের মাঠঘাট দেখে সে বর্ষণ – পুষ্ট নদীর পরিপূর্ণ রূপের কথা ভাবছিল ।

  1. ” ত্রিশ বছর বয়সে নদীর জন্য নদেরচাঁদের এত বেশি মায়া একটু অস্বাভাবিক / —এ কথা বলার কারণ কী ছিল ? 

Answer: ‘ নদীর বিদ্রোহে ‘ নদেরচাদের নদীকে নিয়ে বাড়াবাড়ি রকমের ঔৎসুক্যবোধ অনেকটা ছেলেমানুষের মতো । ত্রিশ বছর বয়সে নদীকে নিয়ে নদেরচাদের এতটা মায়া একটু অস্বাভাবিকই লাগে ।

  1. ‘ কেবল বয়সের জন্য নয় , বয়স ছাড়া আর কোন কোন কারণ উল্লেখ করা হয়েছে ? 

Answer: নদেরচাঁদ একজন স্টেশনমাস্টার । মেল , প্যাসেঞ্জার , মালগাড়ির গতি নিয়ন্ত্রণ করা তার কাজ । যন্ত্রের গতি নির্ধারণ যার কাজ , তার এতটা আবেগপ্রবণ হওয়াটা খুব স্বাভাবিক লক্ষণ নয় ।

  1. ‘ নিজের এই পাগলামিতে যেন আনন্দই উপভোগ করে । কোন পাগলামির কথা বলা হয়েছে ।

Answer: নদেরচাঁদের নদী সম্পর্কে একটা শিশুসুলভ উন্মাদনা ছিল । নদীর সামান্য অদর্শনে সে অধৈর্য হত । অন্যের কাছে এটা পাগলামি মনে হলেও , সে নিজে এই পাগলামিতে আনন্দ পেত ।

  1. ‘ নিজেকে কেবল বুঝাইতে পারে না । নিজেকে কী বোঝাতে পারে না নদেরচাঁদ ?

Answer: প্রাপ্তবয়স্ক নদেরচাদ ট্রেন চলাচল নিয়ন্ত্রণের মতো গুরুত্বপূর্ণ কাজের সঙ্গে যুক্ত । তার নদীকে দেখার মতো শিশুসুলভ ঔৎসুক্য সাজে না – এ কথা সে মনকে বোঝাতে পারে না ।

  1. ‘ অস্বাভাবিক হোক –কোন্ বিষয়কে অস্বাভাবিক বলা হয়েছে ?

Answer: নদেরচাদ স্টেশনমাস্টারের মতো গুরুত্বপূর্ণ পদে আসীন ছিল । বর্ষণপুষ্ট নদীকে একটানা পাঁচ দিন না দেখার জন্য তার মধ্যে যে শিশুসুলভ উন্মত্ততা দেখা দিয়েছিল সেটাই অস্বাভাবিক ।

  1. দীকে ভালোবাসার পিছনে নদেরচাদের কী কৈফিয়ত ছিল ?

Answer: নদেরচাদের নদীর প্রতি আকর্ষণ , শিশুসুলভ পাগলামি হলেও এর পিছনে তার একটি নিজস্ব যুক্তি ছিল । কারণ তার জন্ম ও বেড়ে ওঠা নদীর ধারেই । তাই তার নদীর প্রতি এই ভালোবাসা আবাল্য ।

  1. কিন্তু শৈশবে , কৈশোরে , আর প্রথম যৌবনে বড়োছোটোর হিসাব কে করে ? ‘ — উল্লিখিত সময়ে বড়ো ছোটোর হিসাব না করার কারণ কী ? 

Answer: শৈশব , কৈশোর ও প্রথম যৌবনে মানুষ বুদ্ধি – বিবেচনার পরিবর্তে ব্যক্তিমনের আবেগ – আকাঙ্ক্ষাকে অনেক বেশি গুরুত্ব দেয় । তাই তার কাছে তখন ছোটো – বড়ো , ভালোমন্দের চেয়ে বেশি মূল্যবান নিজের ভালোলাগা ।

  1. সে প্রায় কাঁদিয়া ফেলিয়াছিল ; — তার কেঁদে ফেলার কারণ কী ?

Answer: ‘ নদীর বিদ্রোহ ’ গল্পের নায়ক নদেরচাদের ছোটোবেলা থেকেই গ্রামের পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া নদীটির সঙ্গে ভারি বন্ধুত্ব । একবার অনাবৃষ্টিতে নদীর জলস্রোত প্রায় শুকিয়ে যেতে বসায় সে কেঁদে ফেলেছিল ।

  1. ‘ অসুস্থ দুর্বল আত্মীয়ার মতোই তার মমতা পাইয়াছিল।— কাকে , কেন ‘ অসুস্থ দুর্বল আত্মীয়া ‘ বলা হয়েছে ?

Answer: নদেরচাঁদ যে – নদীর ধারে জন্মেছে , বড়ো হয়েছে , যাকে ভালোবেসেছে , সেই নদীটি বর্ষণপুষ্ট নদীর মতো বড়ো ছিল না । ক্ষীণস্রোতা নদীটি নদেরচাদের কাছে ছিল অসুস্থ , দুর্বল আত্মীয়ার মতো ।

  1. ‘ নদীটি অসুস্থ দুর্বল আত্মীয়ার মতোই তার মমতা পাইয়াছিল । নদীটির এই মমতা পাওয়ার কারণ কী ?

Answer: নদেরচাদের আবাল্যের সঙ্গী নদীটির স্রোতধারা ছিল অতি ক্ষীণ । তাই অসুস্থ , দুর্বল আত্মীয়ের প্রতি মানুষের যেমন সহানুভূতি ও মমতা থাকে , নদেরচাদের ও নদীটির প্রতি তাই ছিল ।

  1. সেই ক্ষীণস্রোতা নির্জীব নদীটি — কোন নদীর কথা বলা হয়েছে ?

Answer: আলোচা উদ্ধৃতিটিতে নদেরচাদের দেশের সরু , ক্ষীণস্রোতা নদীটির সম্পর্কে এ কথা বলা হয়েছে । আবাল্যের সঙ্গী এই নদীটিকে সে নিজের অসুস্থ ও দুর্বল আত্মীয়ার মতো গণ্য করত ।

  1. ‘ মানুষ যেমন কাঁদে কে , কেন কেঁদেছিল ?

Answer: পরমাত্মীয়কে দুরারোগ্য রোগে মারা যেতে দেখলে মানুষ যেমন কাঁদে , নদেরচাঁদও অনাবৃষ্টিতে তার গ্রামের ক্ষীণস্রোতা নদীটিকে শুকিয়ে যেতে দেখে তেমনি কেঁদে ফেলেছিল ।

  1. ‘ চিরদিন নদীকে সে ভালোবাসিয়াছে । নদীকে ভালোবাসার মধ্য দিয়ে নদেরচাঁদের চরিত্রের কোন দিকটি প্রকাশিত ?

Answer: ত্রিশ বছর বয়সি নদেরচাদের নদীর প্রতি তীব্র ভালোবাসা অস্বাভাবিক হলেও নদেরচাঁদ প্রকৃতিপ্রেমী ও আবেগপ্রবণ । তাই সংবেদনশীল শিল্পী চরিত্রদের মতোই সে নদীকে ভালোবেসেছে ।

  1. ‘ একটা কৈফিয়ত নদেরচাঁদ দিতে পারে ।’— কৈফিয়ত দেওয়ার প্রয়োজন কী ছিল ?

Answer: নদীর প্রতি নদেরচাঁদের তীব্র আকর্ষণ বাস্তববাদী মানুষের মনে প্রশ্ন জাগাতে পারে । তাই একটা কৈফিয়ত দেওয়া যে প্রয়োজন , তা সে অনুভব করে ।

  1. নদেরচাদ স্তম্ভিত হইয়া গেল । — নদেরচাঁদ কেন স্তম্ভিত হয়ে গেল ?

Answer: পাঁচ দিন অবিশ্রান্ত বৃষ্টির পরে নদীর ধারে গিয়ে আপাতশাস্ত নদীর উন্মত্ত রূপ দেখে নদেরচাঁদ স্তম্ভিত হয়ে গিয়েছিল ।

  1. ‘ প্রথমবার নদীর দিকে দৃষ্টিপাত করিয়াই … —‘প্রথমবার ’ বলতে কী বোঝানো হয়েছে ?

Answer: ‘ নদীর বিদ্রোহ ‘ গল্প অনুসারে , ‘ প্রথমবার ‘ বলতে পাঁচ দিন মুশলধারে বৃষ্টির পর নদেরচাঁদ প্রথম যখন নদীকে দেখে ও তার উন্মত্ততা অনুভব করে , সে কথাই বোঝানো হয়েছে ।

  1. ‘ নদীর পঙ্কিল জলস্রোতে সে চাঞ্চল্য দেখিয়া গিয়াছে’— এই চাঞ্চল্যের স্বরূপ কী ছিল ?

Answer: নদেরচাঁদ বর্ষণপুষ্ট নদীর পঙ্কিল জলস্রোতের চাঞ্চল্য দেখেই বুঝেছিল সারাবছরের ক্ষীণস্রোতা নদীটির বর্ষার জলে পরিপূর্ণতার কাহিনি যেন তার চাঞ্চল্যের মধ্য দিয়ে প্রকাশিত হচ্ছিল ।

===============================================================

নদীর বিদ্রোহ অধ্যায় থেকে আরোও প্রশ্ন ও উত্তর দেখুন

================================================================

সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর | নদীর বিদ্রোহ (গল্প) মানিক বন্দোপধ্যায় – মাধ্যমিক বাংলা প্রশ্ন ও উত্তর | Madhyamik Bengali Nodir Bidroho Question and Answer : 

  1. গল্পটির নাম ‘ নদীর বিদ্রোহ ‘ হওয়ার পিছনে যুক্তি কী বলে তোমার মনে হয় ?

Ans: মানিক বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁর ‘ নদীর বিদ্রোহ ‘ গল্পে প্রকৃতির প্রতিশোধের কাহিনি শুনিয়েছেন । সভ্যতার অগ্রগতিকে ত্বরান্বিত করতে গিয়ে মানুষ প্রকৃতিকে কাঠগড়ায় তুলেছে । প্রকৃতির স্বাধীনতা খর্ব করে নিজের সুযোগসুবিধা বৃদ্ধি করতে সে গাছ কেটেছে , নদীতে বাঁধ দিয়ে তার স্বাভাবিক গতি রুদ্ধ করেছে , বাতাসে মিশিয়েছে বিষ । গল্পে নদেরচাঁদ হয়ে উঠেছে মানবসভ্যতার প্রতীক , আর নদী প্রকৃতির প্রতিভূ । তাই ‘ নদীর বিদ্রোহ ’ আসলে হয়ে উঠেছে প্রকৃতির প্রতিবাদের কাহিনি । 

  1. …. ট্রেনটিকে রওনা করাইয়া দিয়া …– কোন্ ট্রেনটির কথা বলা হয়েছে ? ট্রেনটিকে রওনা করানোর পর কী ঘটল ?

Ans: ‘ নদীর বিদ্রোহ ’ গল্প থেকে উদ্ধৃত অংশে চারটে পঁয়তাল্লিশ মিনিটের প্যাসেঞ্জার ট্রেনটির কথা বলা হয়েছে । ট্রেন রওনা হওয়ার পরবর্তী ঘটনা ট্রেনটিকে রওনা করানোর পর স্টেশনমাস্টার নদেরচাঁদ তার নতুন সহকারীকে নিজের প্রস্থান করার কথা জানায় । তারপর আর হয়তো বৃষ্টি হবে না , এই অনুমান ব্যক্ত করে সহকারীর সমর্থন প্রত্যাশা করে । সহকারীও সহমত ব্যক্ত করলে সে নদীর দিকে রওনা হয়ে যায় । 

  1. ‘ আজ্ঞে হ্যাঁ ‘ ও ‘ আজ্ঞে না ” এই দুই সংক্ষিপ্ত বক্তরা থেকে নদেরচাদের সহকারীর চরিত্র সম্পর্কে কী ধারণা করা যায় , তা সংক্ষেপে লেখো ।

Ans: মানিক বন্দ্যোপাধ্যায় রচিত ‘ নদীর বিদ্রোহ ‘ গল্পটির প্রধান ও প্রায় একমাত্র চরিত্র হল নদেরচাঁদ । সে ছাড়া আর একটি যে অতিসংক্ষিপ্ত মানবচরিত্র এই গল্পে দেখা যায় , সে হল তার নদেরচাদের সহকারী চরিত্র সহকারী । লেখকের বিবৃতি থেকেই জানা যায় সহকারী নতুন নিযুক্ত । সে খুব সাধারণ অধস্তন কর্মচারীর মতোই তার ঊর্ধ্বতন পদাধিকারীর প্রতি আনুগত্য প্রদর্শন করে তার বক্তব্যে সহমত জ্ঞাপন করেছে ।

  1. ব্রিজের দিকে হাঁটিতে লাগিল । — কোন্ ব্রিজের কথা বলা হয়েছে ? সেই ব্যক্তি ব্রিজের দিকে হাঁটতে লাগল কেন ?

Ans: ‘ নদীর বিদ্রোহ ‘ গল্প থেকে উদ্ধৃত অংশে নদেরচাঁদ যে – স্টেশনের ব্রিজের স্টেশনমাস্টার , সেখান থেকে এক মাইল দূরে নদীর ওপরে নতুন তৈরি ব্রিজটির কথা বলা হয়েছে । ব্রিজের দিকে হাঁটার কারণ

   নদেরচাঁদ ছিল প্রকৃতিপ্রেমিক । বিশেষত নদীর প্রতি তার ছিল অপরিসীম আকর্ষণ । সে প্রায় রোজই নদীর পাশে বসে সময় কাটায় । বিগত পাঁচদিন ধরে মুশলধারায় বৃষ্টির জন্য সে নদীকে দেখতে যেতে পারেনি । তাই কিছুক্ষণের জন্য বৃষ্টি থামতেই সে নদীকে দেখার উদ্দেশ্যে রওনা হয় ।

  1. ‘ নদের চাঁদ ছেলেমানুষের মতো ঔৎসুক্য বোধ করিতে লাগিল ।— ‘ ছেলেমানুষের মতো বলার কারণ কী ? নদেরচাদের ঔৎসুক্য হয়েছিল কেন ?

Ans: চঞ্চলমতি শিশুদের ধৈর্য খুবই কম । খুব অঙ্গেই তাদের ” ছেলেমানুষের মতো ধৈর্যচ্যুতি ঘটে । নদেরচাঁদও একটানা পাঁচ দিন অবিশ্রান্ত বর্ষণের ফলে নদীকে দেখতে না পেয়ে অধৈর্য হয়ে পড়ে । বয়সের তুলনায় তার এই অধৈর্যকে লেখক ছেলেমানুষির সঙ্গে তুলনা করেছেন । → শৈশব থেকেই নদীর সঙ্গে নদেরচাঁদের সখ্য । তাঁর কর্মস্থলের নদেরচাদের কাছাকাছি নদীটিকে প্রতিদিন দেখতে যেত । পাঁচ দিন অবিশ্রান্ত বর্ষণে যেতে না পারায় নদীটির চেহারা ঔৎসকোর কারণ কেমন হয়েছে তা দেখার জন্য সে উৎসুক হয়েছিল । 

  1. ‘ তা হোক ।’— ‘ তা হোক ‘ বলতে কী বোঝানো হয়েছে ? উক্তিটির মধ্যে বক্তার যে মনোভাব প্রকাশ পেয়েছে , তা নিজের ভাষায় লেখো ।

Ans: আকাশ মেঘাচ্ছন্ন এবং যে – কোনো মুহূর্তে বৃষ্টি নামার সম্ভাবনা থাকা সত্ত্বেও শুধুমাত্র নদীর প্রতি অমোঘ আকর্ষণের জন্য নদেরচাদকে নদী দেখতে যেতেই ব — এই ভাবনাটি বোঝাতেই ‘ তা হোক ’ শব্দটি ব্যবহৃত হয়েছে ।

  উক্তিটির মধ্যে দিয়ে নদেরচাঁদের একগুঁয়েমি ও ছেলেমানুষি প্রকাশ পেয়েছে । পাঁচ দিনের একটানা বর্ষণে তার নদী বক্তার প্রকাশিত দর্শনে সাময়িক ছেদ পড়লেও বৃষ্টি থামার সঙ্গে মনোভাব সঙ্গে তার নদী দেখার বাসনা তীব্র আকার ধারণ করে ।

  1. ” কিছুক্ষণ নদীকে না দেখিলে সে বাঁচিবে না । কার না বাঁচার কথা বলা হয়েছে ? নদীকে না দেখলে সে বাঁচবে না কেন ?

Ans: মানিক বন্দ্যোপাধ্যায় রচিত ‘ নদীর বিদ্রোহ ‘ গল্পের মুখ্য চরিত্র যার না – বাচার নদেরচাদ নদীকে না দেখলে বাঁচবে না বলা হয়েছে । নদেরচাঁদ জন্ম থেকেই নদীর পাশে বড়ো হয়েছে । নদী তার জীবনে শ্বাসপ্রশ্বাসের মতোই মূল্যবান । নদীকে ছেড়ে সে কখনও থাকেনি । এমনকি , বরাতজোরে তার কর্মক্ষেত্রে সে নদীকে পাশে পেয়েছে । তাই নদীর প্রতি তার আকর্ষণ যেন পাগলামিতে পরিণত হয়েছে । এই কারণে নদীকে না দেখলে সে বাঁচবে না ।

  1. না জানি নদীকে আজ কী অপরূপ রূপ দিয়াছে ? – এই উক্তি থেকে বক্তার কোন মনোভাবের পরিচয় পাও ? কে নদীকে অপরূপ রূপ দিয়েছে ? 

Ans: বক্তার মনোভাবের পরিচয় উত্তর আলোচ্য উক্তিটি থেকে ‘ নদীর বিদ্রোহ ‘ গল্পের মুখ্যচরিত্র নদেরচাদের নদীর প্রতি মুগ্ধতা ও ভালোবাসা ব্যক্ত হয়েছে । আজন্ম নদীর পাশে মানুষ হওয়া নদেরচাঁদ নদীর প্রতিটি ওঠাপড়া , প্রতিটি পরিবর্তন দেখে আনন্দ পেত । বর্ষার প্রবল জলধারা তার বিশীর্ণা ক্ষীণকায়া নদীকে যে কী অপরুপ রূপ দিয়েছে , তা দেখার জন্য সে পাগলপারা হয়ে উঠেছিল । পাঁচ দিনব্যাপী প্রবল বৃষ্টিপাত নদীকে পরিপুষ্ট করে তাকে অপরূপ রূপ দিয়েছিল ।

  1. ‘ রেলের উঁচু বাঁধ ধরিয়া হাঁটিতে হাঁটিতে দু – পাশে চাহিয়া চাহিয়া নদেরচাদ নদীর বর্ষণপুষ্ট মূর্তি কল্পনা করিবার চেষ্টা করিতে লাগিল । – দু – পাশে চেয়ে চেয়ে নদেরচাঁদ কী দেখছিল ? সে নদীর বর্ষণপুষ্ট মূর্তি কেন কল্পনা করার চেষ্টা করছিল ?

Ans: মানিক বন্দ্যোপাধ্যায় রচিত ‘ নদীর বিদ্রোহ ’ গল্পে রেলের উঁচু বাঁধের দু – পাশের মাঠঘাট অতিবৃষ্টিতে জলে পূর্ণ হয়ে গিয়েছিল । নদেরচাঁদ তা দেখতে দেখতেই নদেরচাদ যা দেখেছিল । যাচ্ছিল । নদীর বর্ষণপুষ্ট মূর্তি কল্পনার কারণ → নদীর প্রতি নদেরচাদের ছিল অপরিসীম আকর্ষণ । পাঁচদিনের টানা বৃষ্টির জন্য সে নদীকে দেখতে যেতে পারেনি । তাই সে নদীকে দেখার জন্য উন্মত্তপ্রায় হয়ে উঠেছিল । পাঁচদিনের অতিবৃষ্টি তার প্রতিদিনের চেনা ক্ষীণকায়া নদীটিকে কী মূর্তি দান করেছে , সে কথাই সে কল্পনা করছিল ।

  1. ‘ ত্রিশ বছর বয়সে নদীর জন্য নদেরচাদের এত বেশি মায়া একটু অস্বাভাবিক ।’— ‘ এত বেশি মায়া ’ বলার কারণ কী ? সেই মায়াকে অস্বাভাবিক বলা হয়েছে কেন ?

Ans: নদেরচাঁদ নদীকে না দেখে একদিনও থাকতে পারত না । নদী ‘ এত বেশি মায়া’ বলার কারণ দেখার নেশা তার যেন পাগলামিতে পরিণত হয়েছিল । তাই তার এই পাগলামিকে ‘ এত বেশি মায়া ‘ বলা হয়েছে । 

   ‘ নদীর বিদ্রোহ ‘ গল্পানুসারে , ত্রিশ বছর বয়সের যে – কোনো ব্যক্তি দৈহিক ও মানসিকভাবে যথেষ্ট প্রাপ্তবয়স্ক ও প্রাপ্তমনস্ক । প্রশ্নোবৃত মায়া অস্বাভাবিক কেন নদীর জন্য নদেরচাদের শিশুসুলভ আকুতি তার বয়সের মানুষের মধ্যে সাধারণত দেখা যায় না । তাই এই কথা বলা হয়েছে ।

  1. ‘ ছোটো হোক , তুচ্ছ হোক , ‘ ‘ ছোটো ‘ ও ‘ তুচ্ছ কাকে বলা হয়েছে ? কোন প্রসঙ্গে এই কথা বলা হয়েছে ?

Ans: নদীর বিদ্রোহ ‘ গল্পের মুখ্যচরিত্র নদেরচাঁদ যে অখ্যাত , অনামা স্টেশনের স্টেশনমাস্টার , সেই স্টেশনটি সম্পর্কে ‘ ছোটো ’ ও ‘ তুচ্ছ ‘ বিশেষণ দুটি ব্যবহার করা ‘ ছোটো ‘ ও ‘ তুচ্ছ ‘ হয়েছে । প্রসঙ্গের উল্লেখ → নদেরচাঁদ যথেষ্ট প্রাপ্তবয়স্ক হওয়া সত্ত্বেও নদীর প্রতি তার আকর্ষণ ছিল লাগামছাড়া । নদীকে নিয়ে তার শিশুসুলভ আচরণ প্রসঙ্গে লেখক বলেছেন যে স্টেশন যত ছোটোই হোক স্টেশনমাস্টারের মতো গুরুত্বপূর্ণ পদে আসীন নদেরচাঁদের নদীকে নিয়ে এই পাগলামি সাজে না । এই প্রসঙ্গে আলোচ্য উদ্ধৃতিটি ব্যবহৃত হয়েছে ।

  1. সেও তো তাহাদেরই একজন , ‘ — ‘ সে ‘ কে ? তাকে কাদের একজন বলা হয়েছে ? 

Ans: সে ’ বলতে এখানে মানিক বন্দ্যোপাধ্যায় রচিত ‘ নদীর বিদ্রোহ গল্পের ত্রিশ বছর বয়সি স্টেশনমাস্টার নদেরচাদকে ‘ সে ‘ কে বোঝানো হয়েছে । প্রশ্নোত ব্যক্তি কাদের একজন [ ] নদেরচাদ একটি স্টেশনের স্টেশনমাস্টার ছিল । স্টেশনমাস্টারের দায়িত্ব অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ । কারণ দিনরাত সব মেল , প্যাসেঞ্জার ট্রেন ও মালগাড়ির আসা – যাওয়া নিয়ন্ত্রণের দায়িত্ব যাদের হাতে , তাদেরই একজন হলেন স্টেশনমাস্টার । কাজেই এই দায়িত্বপ্রাপ্ত নদেরচাঁদের নদী নিয়ে পাগলামি মানায় না বলে লেখক জানিয়েছেন ।

  1. নদেরচাদ সব বোঝে , নিজেকে কেবল বুঝাইতে পারে না । –নদেরচাঁদ কী বোঝে ?

Ans: নদীর বিদ্রোহ ‘ গল্পের কেন্দ্রীয় চরিত্র নদেরচাঁদের বয়স ত্রিশ । সে একটি দায়িত্বপূর্ণ পদে কর্মরত । এইরকম অবস্থায় নদীর প্রতি তার এই বাড়াবাড়ি রকমের ভালোবাসা যে তাকে মানায় না তা সে বোঝে ।

  নদেরচাঁদের জন্ম , বেড়ে ওঠা ও ভালোবাসা সব কিছুই নদীকে ঘিরে । নদীকে নিয়ে সে এক ভাবের জগতে বাস করত । নদীর প্রতি এত বেশি মায়া অস্বাভাবিক জেনেও ; নদীর অদর্শনে সে অতৃপ্ত থাকত । তার পক্ষে এমন ঔৎসুক্য ঠিক নয় এ কথা টের পেলেও সে নিজেকে বোঝাতে পারত না । বরং নিজের এই পাগলামিতে সে এক অনাবিল আনন্দ উপভোগ করত ।

  1. ‘ নিজের এই পাগলামিতে যেন আনন্দই উপভোগ করে । — নদেরচাদের মনের এই আনন্দের স্বরূপ পরিস্ফুট করো ।

Ans: গ্রামবাংলার ছেলে নদেরচাদের জন্ম , শৈশব , বেড়ে ওঠা , আশা – আকাঙ্ক্ষা সবই নদীকে কেন্দ্র করে । নদীর সঙ্গে তার আত্মিক সম্পর্ক । নদীর ক্ষীণধারা দেখে বর্ষণপষ্ট স্ফীতকায় নদী তার মনে পুলক জাগায় । নদীর প্রতি এইরূপ প্রেম তার যে সাজে না এ কথা সে বুঝলেও তার মনকে বোঝাতে পারে না । কোথাও যেন নিজের এই পাগলামিতে সে আনন্দ উপভোগ করে ।

  1. ‘ নদীকে এভাবে ভালোবাসিবার একটা কৈফিয়ত নদেরচাদ দিতে পারে ।’— কৈফিয়তটি কী ? কৈফিয়ত দেওয়ার প্রয়োজন হয়েছিল কেন ?

Ans: নদীর বিদ্রোহ ‘ গল্পের কেন্দ্রীয় চরিত্র নদেরচাদের জন্ম , বেড়ে ওঠা— সবই নদীকে ঘিরে । তার দেশের যে শীর্ণকায় ক্ষীণস্রোতা নদীটিকে কৈফিয়তটি বাঁ সে বড়ো ভালোবাসত । সেইজন্য কর্মক্ষেত্রের নদীসহ যে কোনো নদীর প্রতিই তার অস্বাভাবিক মায়া ছিল । নদীকে এমন পাগলের মতো ভালোবাসার জন্য সে এমন কৈফিয়তই দিয়েছিল ।

  রেল নিয়ন্ত্রণের মতো দায়িত্বপূর্ণ কাজে যুক্ত একজন প্রাপ্তবয়স্কের নদীকে নিয়ে এমন পাগলামো সকলে স্বাভাবিকভাবে নেবে না তাই নদেরচাদ নিজেই কৈফিয়ত দিয়েছিল ।

  1. নদেরচাঁদের দেশের নদী ও কর্মক্ষেত্রের নদীটির মধ্যে একটি তুলনামূলক আলোচনা করো ।

Ans: নদেরচাঁদ তার দেশের যে – নদীটির পাশে জন্ম নিয়েছে ও বেড়ে উঠেছে , সেই নদীটি অতি ক্ষীণকায়া । অসুস্থ দুর্বল আত্মীয়ার মতো নদেরচাঁদ তাকে ভালোবাসত । একবার অনাবৃষ্টির সময় সেই নদীর ক্ষীণস্রোত প্রায় শুকিয়ে যেতে দেখে নদেরচাঁদ কেঁদে ফেলেছিল । অন্যদিকে , তার কর্মক্ষেত্র থেকে এক মাইল দূরে যে – নদীটিকে দেখতে নদেরচাঁদ বারবার ছুটে যেত , সেই নদীটি ছিল কর্মক্ষেত্রের নদী তুলনায় বড়ো । বর্ষায় জল পেয়ে সেই নদী ফুলেফেঁপে উঠে দু – কূল ভাসিয়ে দিত ।

  1. ‘ ব্রিজের কাছাকাছি আসিয়া প্রথমবার নদীর দিকে দৃষ্টিপাত করিয়াই নদেরচাঁদ স্তম্ভিত হইয়া গেল ।’- কোন্ ব্রিজের কথা বলা হয়েছে ? সেখানে এসে নদেরচাঁদ কী দেখে স্তম্ভিত হয়ে গেল ?

Ans: মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘ নদীর বিদ্রোহ ‘ গল্পের মুখ্য চরিত্র গল্পে উদ্ধৃত ব্রিজের পরিচয় । নদেরচাদ যে অখ্যাত স্টেশনের স্টেশনমাস্টার ছিল সেখান থেকে মাইলখানেক দূরে নদীর ওপর যে – নতুন ব্রিজটি তৈরি হয়েছিল এখানে তার কথা বলা হয়েছে । নদেরচাদের স্তম্ভিত ( একটানা পাঁচদিন বৃষ্টির পর নদেরচাদ নদীটিকে দেখে স্তম্ভিত হয়ে যায় । ক – দিন আগে সে নদীর পঙ্কিল জলের যে উল্লাস ও চঞ্চলতা দেখে গিয়েছিল আজ অতিবৃষ্টির পর তা যেন পরিণত হয়ে ভয়ংকরভাবে ফুঁসছে । 

  1. ‘ আজ যেন সেই নদী খেপিয়া গিয়াছে পূর্ব রূপ ও পরবর্তী রূপ বর্ণনা করো ।

Ans: একটানা পাঁচদিন পর নদীর দিকে প্রথমবার দৃপা করে নদীর পূর্ব প ও পরবর্তী রূপ নদেরচাঁদ স্তম্ভিত হয়ে গেল । বর্ষার জল পেয়ে উচ্ছ্বসিত নদীর পঙ্কিল জলে সে যে উল্লাস ও চঞ্চলতা দেখে গিয়েছিল , একটানা বৃষ্টির পর সেই উল্লাস ও চঞ্চলতা যেন পরিণত হয়েছে ফুঁসতে থাকা ভয়ংকরতায় । আগের চঞ্চলতায় ছিল পরিপূর্ণতার উল্লাস ; কিন্তু এখন নদী যেন খেপে উঠেছে । গাঢ় কালো পৰিকূল জল ফুলেফেঁপে তরঙ্গায়িত হয়ে ছুটে চলেছে ।

  1. কিন্তু সে চাঞ্চলা যেন ছিল পরিপূর্ণতার আনলের প্রকাশ । –কোন চাঞ্চল্যের কথা বলা হয়েছে ? ‘ পরিপূর্ণতার আনন্দ ‘ বলতে কী বোঝানো হয়েছে ?

Ans: পাঁচদিন অবিশ্রান্ত বৃষ্টি হওয়ার আগে নদেরচাঁদ তার প্রিয় নদীটিকে বর্ষার জলে পরিপুষ্ট আর পাঁচটা সাধারণ নদীর মতো পরিপূর্ণতার আনন্দে চঞ্চল হয়ে উঠতে দেখেছিল । এখানে সেই চাঞ্চল্যের কথা বলা হয়েছে । 

   সারাবছরই নদীগুলি জলাভাবে অপুষ্ট থাকে । তাদের মধ্যেকার পূর্ণতার আনন্দ যেন অধরা থাকে । কিন্তু বর্ষার নব জলধারায় পুষ্ট হয়ে তাদের মধ্যে আসে পরিপূর্ণতার আনন্দ । তাদের প্রবাহে আসে উল্লাস , চলায় আসে ছন্দ , এসব কিছুকেই পরিপূর্ণতার আনন্দ বলা হয়েছে ।

  1. তার চার বছরের চেনা এই নদীর মূর্তিকে তাই যেন আরও বেশি ভয়ংকর , আরও বেশি অপরিচিত মনে হইল / -চার বছরের চেনা ‘ বলার কারণ কী ? আরও বেশি ভয়ংকর , আরও বেশি অপরিচিত মনে হল কেন ?

Ans: চার বছর হল নদেরচাঁদ স্টেশনমাস্টারের দায়িত্বভার গ্রহণ ” চার বছরের চেনা ” করে এই অঞ্চলে এসেছে । তাই নদীটির সঙ্গে তার বলার কারণ চার বছরের চেনা । → নদেরচাদ তার কর্মস্থলের অনতিদূরে অবস্থিত বর্ষার জলে পৃষ্ট নদীটিতে পাঁচদিন আগে পঙ্কিল জলস্রোতে যে – চাঞ্চল্য দেখে গিয়েছিল তাতে ছিল পরিপূর্ণতার আনন্দ । কিন্তু পাঁচদিন আরও বেশি অপরিচিত অবিশ্রান্ত বৃষ্টির পর সে চেনা নদীর রূপই প্রত্যক্ষ করবে ভেবেছিল , কিন্তু নদেরচাঁদ দেখল নদী আরও বেশি ভয়ংকর , আরও বেশি ভয়ংকর ও অপরিচিত হয়ে উঠেছে ।

  1. ‘ আজও সে সেইখানে গিয়া বসিল । — সে কোথায় গিয়ে বসল ? তার সেখানে বসার কারণ কী ছিল ?

Ans: ‘ নদীর বিদ্রোহ ‘ গল্প অনুসারে নদেরচাঁদ যে – স্টেশনের স্টেশনমাস্টার ছিল , তার এক মাইল দূরে নদীর ওপরে একটি নতুন রং করা ব্রিজ ছিল । সেই ব্রিজের মাঝামাঝি ইট , সুরকি আর সিমেন্ট গাঁথা ধারকস্তঙের কিনারায় বসে সে রোজ নদীকে দেখত । সেদিনও নদেরচাঁদ সেইখানেই গিয়ে বসল । ব্রিজের ধারকস্তম্ভের কিনারায় বসে নদীকে দেখলে নদীবক্ষের ওপর থেকে নদীর বিস্তারসহ সামগ্রিক রূপটাই দর্শকের চোখে ধরা পড়ে । তাই নদেরচাঁদ সেখানে বসত ।

===============================================================

নদীর বিদ্রোহ অধ্যায় থেকে আরোও প্রশ্ন ও উত্তর দেখুন

================================================================

সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর | নদীর বিদ্রোহ (গল্প) মানিক বন্দোপধ্যায় – মাধ্যমিক বাংলা সাজেশন | Madhyamik Bengali Suggestion : 

  1. সেও তো তাহাদেরই একজন , ‘ — ‘ সে ‘ কে ? তাকে কাদের একজন বলা হয়েছে ? 

Answer: সে ’ বলতে এখানে মানিক বন্দ্যোপাধ্যায় রচিত ‘ নদীর বিদ্রোহ গল্পের ত্রিশ বছর বয়সি স্টেশনমাস্টার নদেরচাদকে ‘ সে ‘ কে বোঝানো হয়েছে । প্রশ্নোত ব্যক্তি কাদের একজন [ ] নদেরচাদ একটি স্টেশনের স্টেশনমাস্টার ছিল । স্টেশনমাস্টারের দায়িত্ব অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ । কারণ দিনরাত সব মেল , প্যাসেঞ্জার ট্রেন ও মালগাড়ির আসা – যাওয়া নিয়ন্ত্রণের দায়িত্ব যাদের হাতে , তাদেরই একজন হলেন স্টেশনমাস্টার । কাজেই এই দায়িত্বপ্রাপ্ত নদেরচাঁদের নদী নিয়ে পাগলামি মানায় না বলে লেখক জানিয়েছেন ।

  1. নদেরচাদ সব বোঝে , নিজেকে কেবল বুঝাইতে পারে না । –নদেরচাঁদ কী বোঝে ?

Answer: নদীর বিদ্রোহ ‘ গল্পের কেন্দ্রীয় চরিত্র নদেরচাঁদের বয়স ত্রিশ । সে একটি দায়িত্বপূর্ণ পদে কর্মরত । এইরকম অবস্থায় নদীর প্রতি তার এই বাড়াবাড়ি রকমের ভালোবাসা যে তাকে মানায় না তা সে বোঝে ।

  নদেরচাঁদের জন্ম , বেড়ে ওঠা ও ভালোবাসা সব কিছুই নদীকে ঘিরে । নদীকে নিয়ে সে এক ভাবের জগতে বাস করত । নদীর প্রতি এত বেশি মায়া অস্বাভাবিক জেনেও ; নদীর অদর্শনে সে অতৃপ্ত থাকত । তার পক্ষে এমন ঔৎসুক্য ঠিক নয় এ কথা টের পেলেও সে নিজেকে বোঝাতে পারত না । বরং নিজের এই পাগলামিতে সে এক অনাবিল আনন্দ উপভোগ করত ।

  1. ‘ নিজের এই পাগলামিতে যেন আনন্দই উপভোগ করে । — নদেরচাদের মনের এই আনন্দের স্বরূপ পরিস্ফুট করো ।

Answer: গ্রামবাংলার ছেলে নদেরচাদের জন্ম , শৈশব , বেড়ে ওঠা , আশা – আকাঙ্ক্ষা সবই নদীকে কেন্দ্র করে । নদীর সঙ্গে তার আত্মিক সম্পর্ক । নদীর ক্ষীণধারা দেখে বর্ষণপষ্ট স্ফীতকায় নদী তার মনে পুলক জাগায় । নদীর প্রতি এইরূপ প্রেম তার যে সাজে না এ কথা সে বুঝলেও তার মনকে বোঝাতে পারে না । কোথাও যেন নিজের এই পাগলামিতে সে আনন্দ উপভোগ করে ।

  1. ‘ নদীকে এভাবে ভালোবাসিবার একটা কৈফিয়ত নদেরচাদ দিতে পারে ।’— কৈফিয়তটি কী ? কৈফিয়ত দেওয়ার প্রয়োজন হয়েছিল কেন ?

Answer: নদীর বিদ্রোহ ‘ গল্পের কেন্দ্রীয় চরিত্র নদেরচাদের জন্ম , বেড়ে ওঠা— সবই নদীকে ঘিরে । তার দেশের যে শীর্ণকায় ক্ষীণস্রোতা নদীটিকে কৈফিয়তটি বাঁ সে বড়ো ভালোবাসত । সেইজন্য কর্মক্ষেত্রের নদীসহ যে কোনো নদীর প্রতিই তার অস্বাভাবিক মায়া ছিল । নদীকে এমন পাগলের মতো ভালোবাসার জন্য সে এমন কৈফিয়তই দিয়েছিল ।

  রেল নিয়ন্ত্রণের মতো দায়িত্বপূর্ণ কাজে যুক্ত একজন প্রাপ্তবয়স্কের নদীকে নিয়ে এমন পাগলামো সকলে স্বাভাবিকভাবে নেবে না তাই নদেরচাদ নিজেই কৈফিয়ত দিয়েছিল ।

  1. নদেরচাঁদের দেশের নদী ও কর্মক্ষেত্রের নদীটির মধ্যে একটি তুলনামূলক আলোচনা করো ।

Answer: নদেরচাঁদ তার দেশের যে – নদীটির পাশে জন্ম নিয়েছে ও বেড়ে উঠেছে , সেই নদীটি অতি ক্ষীণকায়া । অসুস্থ দুর্বল আত্মীয়ার মতো নদেরচাঁদ তাকে ভালোবাসত । একবার অনাবৃষ্টির সময় সেই নদীর ক্ষীণস্রোত প্রায় শুকিয়ে যেতে দেখে নদেরচাঁদ কেঁদে ফেলেছিল । অন্যদিকে , তার কর্মক্ষেত্র থেকে এক মাইল দূরে যে – নদীটিকে দেখতে নদেরচাঁদ বারবার ছুটে যেত , সেই নদীটি ছিল কর্মক্ষেত্রের নদী তুলনায় বড়ো । বর্ষায় জল পেয়ে সেই নদী ফুলেফেঁপে উঠে দু – কূল ভাসিয়ে দিত ।

  1. ‘ ব্রিজের কাছাকাছি আসিয়া প্রথমবার নদীর দিকে দৃষ্টিপাত করিয়াই নদেরচাঁদ স্তম্ভিত হইয়া গেল ।’- কোন্ ব্রিজের কথা বলা হয়েছে ? সেখানে এসে নদেরচাঁদ কী দেখে স্তম্ভিত হয়ে গেল ?

Answer: মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘ নদীর বিদ্রোহ ‘ গল্পের মুখ্য চরিত্র গল্পে উদ্ধৃত ব্রিজের পরিচয় । নদেরচাদ যে অখ্যাত স্টেশনের স্টেশনমাস্টার ছিল সেখান থেকে মাইলখানেক দূরে নদীর ওপর যে – নতুন ব্রিজটি তৈরি হয়েছিল এখানে তার কথা বলা হয়েছে । নদেরচাদের স্তম্ভিত ( একটানা পাঁচদিন বৃষ্টির পর নদেরচাদ নদীটিকে দেখে স্তম্ভিত হয়ে যায় । ক – দিন আগে সে নদীর পঙ্কিল জলের যে উল্লাস ও চঞ্চলতা দেখে গিয়েছিল আজ অতিবৃষ্টির পর তা যেন পরিণত হয়ে ভয়ংকরভাবে ফুঁসছে । 

  1. ‘ আজ যেন সেই নদী খেপিয়া গিয়াছে পূর্ব রূপ ও পরবর্তী রূপ বর্ণনা করো ।

Answer: একটানা পাঁচদিন পর নদীর দিকে প্রথমবার দৃপা করে নদীর পূর্ব প ও পরবর্তী রূপ নদেরচাঁদ স্তম্ভিত হয়ে গেল । বর্ষার জল পেয়ে উচ্ছ্বসিত নদীর পঙ্কিল জলে সে যে উল্লাস ও চঞ্চলতা দেখে গিয়েছিল , একটানা বৃষ্টির পর সেই উল্লাস ও চঞ্চলতা যেন পরিণত হয়েছে ফুঁসতে থাকা ভয়ংকরতায় । আগের চঞ্চলতায় ছিল পরিপূর্ণতার উল্লাস ; কিন্তু এখন নদী যেন খেপে উঠেছে । গাঢ় কালো পৰিকূল জল ফুলেফেঁপে তরঙ্গায়িত হয়ে ছুটে চলেছে ।

  1. কিন্তু সে চাঞ্চলা যেন ছিল পরিপূর্ণতার আনলের প্রকাশ । –কোন চাঞ্চল্যের কথা বলা হয়েছে ? ‘ পরিপূর্ণতার আনন্দ ‘ বলতে কী বোঝানো হয়েছে ?

Answer: পাঁচদিন অবিশ্রান্ত বৃষ্টি হওয়ার আগে নদেরচাঁদ তার প্রিয় নদীটিকে বর্ষার জলে পরিপুষ্ট আর পাঁচটা সাধারণ নদীর মতো পরিপূর্ণতার আনন্দে চঞ্চল হয়ে উঠতে দেখেছিল । এখানে সেই চাঞ্চল্যের কথা বলা হয়েছে । 

   সারাবছরই নদীগুলি জলাভাবে অপুষ্ট থাকে । তাদের মধ্যেকার পূর্ণতার আনন্দ যেন অধরা থাকে । কিন্তু বর্ষার নব জলধারায় পুষ্ট হয়ে তাদের মধ্যে আসে পরিপূর্ণতার আনন্দ । তাদের প্রবাহে আসে উল্লাস , চলায় আসে ছন্দ , এসব কিছুকেই পরিপূর্ণতার আনন্দ বলা হয়েছে ।

  1. তার চার বছরের চেনা এই নদীর মূর্তিকে তাই যেন আরও বেশি ভয়ংকর , আরও বেশি অপরিচিত মনে হইল / -চার বছরের চেনা ‘ বলার কারণ কী ? আরও বেশি ভয়ংকর , আরও বেশি অপরিচিত মনে হল কেন ?

Answer: চার বছর হল নদেরচাঁদ স্টেশনমাস্টারের দায়িত্বভার গ্রহণ ” চার বছরের চেনা ” করে এই অঞ্চলে এসেছে । তাই নদীটির সঙ্গে তার বলার কারণ চার বছরের চেনা । → নদেরচাদ তার কর্মস্থলের অনতিদূরে অবস্থিত বর্ষার জলে পৃষ্ট নদীটিতে পাঁচদিন আগে পঙ্কিল জলস্রোতে যে – চাঞ্চল্য দেখে গিয়েছিল তাতে ছিল পরিপূর্ণতার আনন্দ । কিন্তু পাঁচদিন আরও বেশি অপরিচিত অবিশ্রান্ত বৃষ্টির পর সে চেনা নদীর রূপই প্রত্যক্ষ করবে ভেবেছিল , কিন্তু নদেরচাঁদ দেখল নদী আরও বেশি ভয়ংকর , আরও বেশি ভয়ংকর ও অপরিচিত হয়ে উঠেছে ।

  1. ‘ আজও সে সেইখানে গিয়া বসিল । — সে কোথায় গিয়ে বসল ? তার সেখানে বসার কারণ কী ছিল ?

Answer: ‘ নদীর বিদ্রোহ ‘ গল্প অনুসারে নদেরচাঁদ যে – স্টেশনের স্টেশনমাস্টার ছিল , তার এক মাইল দূরে নদীর ওপরে একটি নতুন রং করা ব্রিজ ছিল । সেই ব্রিজের মাঝামাঝি ইট , সুরকি আর সিমেন্ট গাঁথা ধারকস্তঙের কিনারায় বসে সে রোজ নদীকে দেখত । সেদিনও নদেরচাঁদ সেইখানেই গিয়ে বসল । ব্রিজের ধারকস্তম্ভের কিনারায় বসে নদীকে দেখলে নদীবক্ষের ওপর থেকে নদীর বিস্তারসহ সামগ্রিক রূপটাই দর্শকের চোখে ধরা পড়ে । তাই নদেরচাঁদ সেখানে বসত ।

  1. গল্পটির নাম ‘ নদীর বিদ্রোহ ‘ হওয়ার পিছনে যুক্তি কী বলে তোমার মনে হয় ?

Answer: মানিক বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁর ‘ নদীর বিদ্রোহ ‘ গল্পে প্রকৃতির প্রতিশোধের কাহিনি শুনিয়েছেন । সভ্যতার অগ্রগতিকে ত্বরান্বিত করতে গিয়ে মানুষ প্রকৃতিকে কাঠগড়ায় তুলেছে । প্রকৃতির স্বাধীনতা খর্ব করে নিজের সুযোগসুবিধা বৃদ্ধি করতে সে গাছ কেটেছে , নদীতে বাঁধ দিয়ে তার স্বাভাবিক গতি রুদ্ধ করেছে , বাতাসে মিশিয়েছে বিষ । গল্পে নদেরচাঁদ হয়ে উঠেছে মানবসভ্যতার প্রতীক , আর নদী প্রকৃতির প্রতিভূ । তাই ‘ নদীর বিদ্রোহ ’ আসলে হয়ে উঠেছে প্রকৃতির প্রতিবাদের কাহিনি । 

  1. …. ট্রেনটিকে রওনা করাইয়া দিয়া …– কোন্ ট্রেনটির কথা বলা হয়েছে ? ট্রেনটিকে রওনা করানোর পর কী ঘটল ?

Answer: ‘ নদীর বিদ্রোহ ’ গল্প থেকে উদ্ধৃত অংশে চারটে পঁয়তাল্লিশ মিনিটের প্যাসেঞ্জার ট্রেনটির কথা বলা হয়েছে । ট্রেন রওনা হওয়ার পরবর্তী ঘটনা ট্রেনটিকে রওনা করানোর পর স্টেশনমাস্টার নদেরচাঁদ তার নতুন সহকারীকে নিজের প্রস্থান করার কথা জানায় । তারপর আর হয়তো বৃষ্টি হবে না , এই অনুমান ব্যক্ত করে সহকারীর সমর্থন প্রত্যাশা করে । সহকারীও সহমত ব্যক্ত করলে সে নদীর দিকে রওনা হয়ে যায় । 

  1. ‘ আজ্ঞে হ্যাঁ ‘ ও ‘ আজ্ঞে না ” এই দুই সংক্ষিপ্ত বক্তরা থেকে নদেরচাদের সহকারীর চরিত্র সম্পর্কে কী ধারণা করা যায় , তা সংক্ষেপে লেখো ।

Answer: মানিক বন্দ্যোপাধ্যায় রচিত ‘ নদীর বিদ্রোহ ‘ গল্পটির প্রধান ও প্রায় একমাত্র চরিত্র হল নদেরচাঁদ । সে ছাড়া আর একটি যে অতিসংক্ষিপ্ত মানবচরিত্র এই গল্পে দেখা যায় , সে হল তার নদেরচাদের সহকারী চরিত্র সহকারী । লেখকের বিবৃতি থেকেই জানা যায় সহকারী নতুন নিযুক্ত । সে খুব সাধারণ অধস্তন কর্মচারীর মতোই তার ঊর্ধ্বতন পদাধিকারীর প্রতি আনুগত্য প্রদর্শন করে তার বক্তব্যে সহমত জ্ঞাপন করেছে ।

  1. ব্রিজের দিকে হাঁটিতে লাগিল । — কোন্ ব্রিজের কথা বলা হয়েছে ? সেই ব্যক্তি ব্রিজের দিকে হাঁটতে লাগল কেন ?

Answer: ‘ নদীর বিদ্রোহ ‘ গল্প থেকে উদ্ধৃত অংশে নদেরচাঁদ যে – স্টেশনের ব্রিজের স্টেশনমাস্টার , সেখান থেকে এক মাইল দূরে নদীর ওপরে নতুন তৈরি ব্রিজটির কথা বলা হয়েছে । ব্রিজের দিকে হাঁটার কারণ

   নদেরচাঁদ ছিল প্রকৃতিপ্রেমিক । বিশেষত নদীর প্রতি তার ছিল অপরিসীম আকর্ষণ । সে প্রায় রোজই নদীর পাশে বসে সময় কাটায় । বিগত পাঁচদিন ধরে মুশলধারায় বৃষ্টির জন্য সে নদীকে দেখতে যেতে পারেনি । তাই কিছুক্ষণের জন্য বৃষ্টি থামতেই সে নদীকে দেখার উদ্দেশ্যে রওনা হয় ।

  1. ‘ নদের চাঁদ ছেলেমানুষের মতো ঔৎসুক্য বোধ করিতে লাগিল ।— ‘ ছেলেমানুষের মতো বলার কারণ কী ? নদেরচাদের ঔৎসুক্য হয়েছিল কেন ?

Answer: চঞ্চলমতি শিশুদের ধৈর্য খুবই কম । খুব অঙ্গেই তাদের ” ছেলেমানুষের মতো ধৈর্যচ্যুতি ঘটে । নদেরচাঁদও একটানা পাঁচ দিন অবিশ্রান্ত বর্ষণের ফলে নদীকে দেখতে না পেয়ে অধৈর্য হয়ে পড়ে । বয়সের তুলনায় তার এই অধৈর্যকে লেখক ছেলেমানুষির সঙ্গে তুলনা করেছেন । → শৈশব থেকেই নদীর সঙ্গে নদেরচাঁদের সখ্য । তাঁর কর্মস্থলের নদেরচাদের কাছাকাছি নদীটিকে প্রতিদিন দেখতে যেত । পাঁচ দিন অবিশ্রান্ত বর্ষণে যেতে না পারায় নদীটির চেহারা ঔৎসকোর কারণ কেমন হয়েছে তা দেখার জন্য সে উৎসুক হয়েছিল । 

  1. ‘ তা হোক ।’— ‘ তা হোক ‘ বলতে কী বোঝানো হয়েছে ? উক্তিটির মধ্যে বক্তার যে মনোভাব প্রকাশ পেয়েছে , তা নিজের ভাষায় লেখো ।

Answer: আকাশ মেঘাচ্ছন্ন এবং যে – কোনো মুহূর্তে বৃষ্টি নামার সম্ভাবনা থাকা সত্ত্বেও শুধুমাত্র নদীর প্রতি অমোঘ আকর্ষণের জন্য নদেরচাদকে নদী দেখতে যেতেই ব — এই ভাবনাটি বোঝাতেই ‘ তা হোক ’ শব্দটি ব্যবহৃত হয়েছে ।

  উক্তিটির মধ্যে দিয়ে নদেরচাঁদের একগুঁয়েমি ও ছেলেমানুষি প্রকাশ পেয়েছে । পাঁচ দিনের একটানা বর্ষণে তার নদী বক্তার প্রকাশিত দর্শনে সাময়িক ছেদ পড়লেও বৃষ্টি থামার সঙ্গে মনোভাব সঙ্গে তার নদী দেখার বাসনা তীব্র আকার ধারণ করে ।

  1. ” কিছুক্ষণ নদীকে না দেখিলে সে বাঁচিবে না । কার না বাঁচার কথা বলা হয়েছে ? নদীকে না দেখলে সে বাঁচবে না কেন ?

Answer: মানিক বন্দ্যোপাধ্যায় রচিত ‘ নদীর বিদ্রোহ ‘ গল্পের মুখ্য চরিত্র যার না – বাচার নদেরচাদ নদীকে না দেখলে বাঁচবে না বলা হয়েছে । নদেরচাঁদ জন্ম থেকেই নদীর পাশে বড়ো হয়েছে । নদী তার জীবনে শ্বাসপ্রশ্বাসের মতোই মূল্যবান । নদীকে ছেড়ে সে কখনও থাকেনি । এমনকি , বরাতজোরে তার কর্মক্ষেত্রে সে নদীকে পাশে পেয়েছে । তাই নদীর প্রতি তার আকর্ষণ যেন পাগলামিতে পরিণত হয়েছে । এই কারণে নদীকে না দেখলে সে বাঁচবে না ।

  1. না জানি নদীকে আজ কী অপরূপ রূপ দিয়াছে ? – এই উক্তি থেকে বক্তার কোন মনোভাবের পরিচয় পাও ? কে নদীকে অপরূপ রূপ দিয়েছে ? 

Answer: বক্তার মনোভাবের পরিচয় উত্তর আলোচ্য উক্তিটি থেকে ‘ নদীর বিদ্রোহ ‘ গল্পের মুখ্যচরিত্র নদেরচাদের নদীর প্রতি মুগ্ধতা ও ভালোবাসা ব্যক্ত হয়েছে । আজন্ম নদীর পাশে মানুষ হওয়া নদেরচাঁদ নদীর প্রতিটি ওঠাপড়া , প্রতিটি পরিবর্তন দেখে আনন্দ পেত । বর্ষার প্রবল জলধারা তার বিশীর্ণা ক্ষীণকায়া নদীকে যে কী অপরুপ রূপ দিয়েছে , তা দেখার জন্য সে পাগলপারা হয়ে উঠেছিল । পাঁচ দিনব্যাপী প্রবল বৃষ্টিপাত নদীকে পরিপুষ্ট করে তাকে অপরূপ রূপ দিয়েছিল ।

  1. ‘ রেলের উঁচু বাঁধ ধরিয়া হাঁটিতে হাঁটিতে দু – পাশে চাহিয়া চাহিয়া নদেরচাদ নদীর বর্ষণপুষ্ট মূর্তি কল্পনা করিবার চেষ্টা করিতে লাগিল । – দু – পাশে চেয়ে চেয়ে নদেরচাঁদ কী দেখছিল ? সে নদীর বর্ষণপুষ্ট মূর্তি কেন কল্পনা করার চেষ্টা করছিল ?

Answer: মানিক বন্দ্যোপাধ্যায় রচিত ‘ নদীর বিদ্রোহ ’ গল্পে রেলের উঁচু বাঁধের দু – পাশের মাঠঘাট অতিবৃষ্টিতে জলে পূর্ণ হয়ে গিয়েছিল । নদেরচাঁদ তা দেখতে দেখতেই নদেরচাদ যা দেখেছিল । যাচ্ছিল । নদীর বর্ষণপুষ্ট মূর্তি কল্পনার কারণ → নদীর প্রতি নদেরচাদের ছিল অপরিসীম আকর্ষণ । পাঁচদিনের টানা বৃষ্টির জন্য সে নদীকে দেখতে যেতে পারেনি । তাই সে নদীকে দেখার জন্য উন্মত্তপ্রায় হয়ে উঠেছিল । পাঁচদিনের অতিবৃষ্টি তার প্রতিদিনের চেনা ক্ষীণকায়া নদীটিকে কী মূর্তি দান করেছে , সে কথাই সে কল্পনা করছিল ।

  1. ‘ ত্রিশ বছর বয়সে নদীর জন্য নদেরচাদের এত বেশি মায়া একটু অস্বাভাবিক ।’— ‘ এত বেশি মায়া ’ বলার কারণ কী ? সেই মায়াকে অস্বাভাবিক বলা হয়েছে কেন ?

Answer: নদেরচাঁদ নদীকে না দেখে একদিনও থাকতে পারত না । নদী ‘ এত বেশি মায়া’ বলার কারণ দেখার নেশা তার যেন পাগলামিতে পরিণত হয়েছিল । তাই তার এই পাগলামিকে ‘ এত বেশি মায়া ‘ বলা হয়েছে । 

   ‘ নদীর বিদ্রোহ ‘ গল্পানুসারে , ত্রিশ বছর বয়সের যে – কোনো ব্যক্তি দৈহিক ও মানসিকভাবে যথেষ্ট প্রাপ্তবয়স্ক ও প্রাপ্তমনস্ক । প্রশ্নোবৃত মায়া অস্বাভাবিক কেন নদীর জন্য নদেরচাদের শিশুসুলভ আকুতি তার বয়সের মানুষের মধ্যে সাধারণত দেখা যায় না । তাই এই কথা বলা হয়েছে ।

  1. ‘ ছোটো হোক , তুচ্ছ হোক , ‘ ‘ ছোটো ‘ ও ‘ তুচ্ছ কাকে বলা হয়েছে ? কোন প্রসঙ্গে এই কথা বলা হয়েছে ?

Answer: নদীর বিদ্রোহ ‘ গল্পের মুখ্যচরিত্র নদেরচাঁদ যে অখ্যাত , অনামা স্টেশনের স্টেশনমাস্টার , সেই স্টেশনটি সম্পর্কে ‘ ছোটো ’ ও ‘ তুচ্ছ ‘ বিশেষণ দুটি ব্যবহার করা ‘ ছোটো ‘ ও ‘ তুচ্ছ ‘ হয়েছে । প্রসঙ্গের উল্লেখ → নদেরচাঁদ যথেষ্ট প্রাপ্তবয়স্ক হওয়া সত্ত্বেও নদীর প্রতি তার আকর্ষণ ছিল লাগামছাড়া । নদীকে নিয়ে তার শিশুসুলভ আচরণ প্রসঙ্গে লেখক বলেছেন যে স্টেশন যত ছোটোই হোক স্টেশনমাস্টারের মতো গুরুত্বপূর্ণ পদে আসীন নদেরচাঁদের নদীকে নিয়ে এই পাগলামি সাজে না । এই প্রসঙ্গে আলোচ্য উদ্ধৃতিটি ব্যবহৃত হয়েছে

===============================================================

নদীর বিদ্রোহ অধ্যায় থেকে আরোও প্রশ্ন ও উত্তর দেখুন

================================================================

নিচের সংক্ষিপ্ত ব্যাখ্যা মূলক প্রশ্ন গুলোর উত্তর দাও :

প্রশ্নঃ “ট্রেনটিকে রওনা করাইয়া দিয়া” – কোন্ ট্রেনটির কথা বলা হয়েছে? ট্রেনটিকে রওনা করানোর পর কী ঘটল?

উত্তরঃ ‘নদীর বিদ্রোহ’ গল্প থেকে উদ্ধৃত অংশে চারটে পঁয়তাল্লিশ মিনিটের প্যাসেঞ্জার ট্রেনটির কথা বলা হয়েছে। ট্রেন রওনা হওয়ার পরবর্তী ঘটনা ট্রেনটিকে রওনা করানোর পর স্টেশনমাস্টার নদেরচাঁদ তার নতুন সহকারীকে নিজের প্রস্থান করার কথা জানায়। তারপর আর হয়তো বৃষ্টি হবে না, এই অনুমান ব্যক্ত করে সহকারীর সমর্থন প্রত্যাশা করে। সহকারীও সহমত ব্যক্ত করলে সে নদীর দিকে রওনা হয়ে যায়।

প্রশ্নঃ ‘নদীকে এভাবে ভালোবাসিবার একটা কৈফিয়ত নদেরচাদ দিতে পারে।’ – কৈফিয়তটি কী? কৈফিয়ত দেওয়ার প্রয়োজন হয়েছিল কেন?

উত্তরঃ ‘নদীর বিদ্রোহ’ গল্পের কেন্দ্রীয় চরিত্র নদেরচাদের জন্ম, বেড়ে ওঠা সবই নদীকে ঘিরে। তার দেশের যে শীর্ণকায় ক্ষীণস্রোতা নদীটিকে কৈফিয়তটি বা সে বড়ো ভালোবাসত। সেইজন্য কর্মক্ষেত্রের নদীসহ যে কোনো নদীর প্রতিই তার অস্বাভাবিক মায়া ছিল। নদীকে এমন পাগলের মতো ভালোবাসার জন্য সে এমন কৈফিয়তই দিয়েছিল।

রেল নিয়ন্ত্রণের মতো দায়িত্বপূর্ণ কাজে যুক্ত একজন প্রাপ্তবয়স্কের নদীকে নিয়ে এমন পাগলামো সকলে স্বাভাবিকভাবে নেবে না তাই নদেরচাদ নিজেই কৈফিয়ত দিয়েছিল ।

প্রশ্নঃ ‘ব্রিজের দিকে হাঁটিতে লাগিল।’ — কোন্ ব্রিজের কথা বলা হয়েছে? সেই ব্যক্তি ব্রিজের দিকে হাঁটতে লাগল কেন?

উত্তরঃ ‘নদীর বিদ্রোহ’ গল্প থেকে উদ্ধৃত অংশে নদেরচাঁদ যে স্টেশনের ব্রিজের স্টেশনমাস্টার, সেখান থেকে এক মাইল দূরে নদীর ওপরে নতুন তৈরি ব্রিজটির কথা বলা হয়েছে।

নদেরচাঁদ ছিল প্রকৃতিপ্রেমিক। বিশেষত নদীর প্রতি তার ছিল অপরিসীম আকর্ষণ। সে প্রায় রোজই নদীর পাশে বসে সময় কাটায়। বিগত পাঁচদিন ধরে মুশলধারায় বৃষ্টির জন্য সে নদীকে দেখতে যেতে পারেনি। তাই কিছুক্ষণের জন্য বৃষ্টি থামতেই সে নদীকে দেখার উদ্দেশ্যে রওনা হয়।

প্রশ্নঃ ‘ব্রিজের কাছাকাছি আসিয়া প্রথমবার নদীর দিকে দৃষ্টিপাত করিয়াই নদেরচাঁদ স্তম্ভিত হইয়া গেল।’ – কোন্ ব্রিজের কথা বলা হয়েছে? সেখানে এসে নদেরচাঁদ কী দেখে স্তম্ভিত হয়ে গেল?

উত্তরঃ মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘নদীর বিদ্রোহ’ গল্পের মুখ্য চরিত্র গল্পে উদ্ধৃত ব্রিজের পরিচয়। নদেরচাদ যে অখ্যাত স্টেশনের স্টেশনমাস্টার ছিল সেখান থেকে মাইলখানেক দূরে নদীর ওপর যে নতুন ব্রিজটি তৈরি হয়েছিল এখানে তার কথা বলা হয়েছে। নদেরচাদের স্তম্ভিত একটানা পাঁচদিন বৃষ্টির পর নদেরচাদ নদীটিকে দেখে স্তম্ভিত হয়ে যায়। কয় দিন আগে সে নদীর পঙ্কিল জলের যে উল্লাস ও চঞ্চলতা দেখে গিয়েছিল আজ অতিবৃষ্টির পর তা যেন পরিণত হয়ে ভয়ংকরভাবে ফুঁসছে।

প্রশ্নঃ ‘নদের চাঁদ ছেলেমানুষের মতো ঔৎসুক্য বোধ করিতে লাগিল।’ – ‘ছেলেমানুষের মতো বলার কারণ কী? নদেরচাদের ঔৎসুক্য হয়েছিল কেন?

উত্তরঃ চঞ্চলমতি শিশুদের ধৈর্য খুবই কম। ছেলেমানুষের মতো ধৈর্যচ্যুতি ঘটে। নদেরচাঁদও একটানা পাঁচ দিন অবিশ্রান্ত বর্ষণের ফলে নদীকে দেখতে না পেয়ে অধৈর্য হয়ে পড়ে। বয়সের তুলনায় তার এই অধৈর্যকে লেখক ছেলেমানুষির সঙ্গে তুলনা করেছেন।

শৈশব থেকেই নদীর সঙ্গে নদেরচাঁদের সখ্য। তাঁর কর্মস্থলের নদেরচাদের কাছাকাছি নদীটিকে প্রতিদিন দেখতে যেত। পাঁচ দিন অবিশ্রান্ত বর্ষণে যেতে না পারায় নদীটির চেহারা ঔৎসকোর কারণ কেমন হয়েছে তা দেখার জন্য সে উৎসুক হয়েছিল।

প্রশ্নঃ ‘আজ যেন সেই নদী খেপিয়া গিয়াছে’ – তার পূর্বরূপ ও পরবর্তী রূপ বর্ণনা করো।

উত্তরঃ একটানা পাঁচদিন পর নদীর দিকে প্রথমবার দৃপা করে নদীর পূর্ব ও পরবর্তী রূপ নদেরচাঁদ স্তম্ভিত হয়ে গেল। বর্ষার জল পেয়ে উচ্ছ্বসিত নদীর পঙ্কিল জলে সে যে উল্লাস ও চঞ্চলতা দেখে গিয়েছিল, একটানা বৃষ্টির পর সেই উল্লাস ও চঞ্চলতা যেন পরিণত হয়েছে ফুঁসতে থাকা ভয়ংকরতায়। আগের চঞ্চলতায় ছিল পরিপূর্ণতার উল্লাস; কিন্তু এখন নদী যেন খেপে উঠেছে। গাঢ় কালো পৰিকূল জল ফুলেফেঁপে তরঙ্গায়িত হয়ে ছুটে চলেছে।

প্রশ্নঃ ‘কিছুক্ষণ নদীকে না দেখিলে সে বাঁচিবে না।’ – কার না বাঁচার কথা বলা হয়েছে? নদীকে না দেখলে সে বাঁচবে না কেন?

উত্তরঃ মানিক বন্দ্যোপাধ্যায় রচিত ‘নদীর বিদ্রোহ’ গল্পের মুখ্য চরিত্র যার না বাচার নদেরচাদ নদীকে না দেখলে বাঁচবে না বলা হয়েছে। নদেরচাঁদ জন্ম থেকেই নদীর পাশে বড়ো হয়েছে। নদী তার জীবনে শ্বাসপ্রশ্বাসের মতোই মূল্যবান। নদীকে ছেড়ে সে কখনও থাকেনি। এমনকি, বরাতজোরে তার কর্মক্ষেত্রে সে নদীকে পাশে পেয়েছে। তাই নদীর প্রতি তার আকর্ষণ যেন পাগলামিতে পরিণত হয়েছে। এই কারণে নদীকে না দেখলে সে বাঁচবে না।

প্রশ্নঃ ‘তার চার বছরের চেনা এই নদীর মূর্তিকে তাই যেন আরও বেশি ভয়ংকর, আরও বেশি অপরিচিত মনে হইল’ – চার বছরের চেনা ‘বলার কারণ কী? আরও বেশি ভয়ংকর, আরও বেশি অপরিচিত মনে হল কেন?

উত্তরঃ চার বছর হল নদেরচাঁদ স্টেশনমাস্টারের দায়িত্বভার গ্রহণ ‘চার বছরের চেনা’ করে এই অঞ্চলে এসেছে। তাই নদীটির সঙ্গে তার বলার কারণ চার বছরের চেনা।

নদেরচাদ তার কর্মস্থলের অনতিদূরে অবস্থিত বর্ষার জলে পৃষ্ট নদীটিতে পাঁচদিন আগে পঙ্কিল জলস্রোতে যে চাঞ্চল্য দেখে গিয়েছিল তাতে ছিল পরিপূর্ণতার আনন্দ। কিন্তু পাঁচদিন আরও বেশি অপরিচিত অবিশ্রান্ত বৃষ্টির পর সে চেনা নদীর রূপই প্রত্যক্ষ করবে ভেবেছিল, কিন্তু নদেরচাঁদ দেখল নদী আরও বেশি ভয়ংকর, আরও বেশি ভয়ংকর ও অপরিচিত হয়ে উঠেছে।

প্রশ্নঃ ‘রেলের উঁচু বাঁধ ধরিয়া হাঁটিতে হাঁটিতে দু–পাশে চাহিয়া চাহিয়া নদেরচাদ নদীর বর্ষণপুষ্ট মূর্তি কল্পনা করিবার চেষ্টা করিতে লাগিল।’ – দু–পাশে চেয়ে চেয়ে নদেরচাঁদ কী দেখছিল? সে নদীর বর্ষণপুষ্ট মূর্তি কেন কল্পনা করার চেষ্টা করছিল?

উত্তরঃ মানিক বন্দ্যোপাধ্যায় রচিত ‘নদীর বিদ্রোহ’ গল্পে রেলের উঁচু বাঁধের দু–পাশের মাঠঘাট অতিবৃষ্টিতে জলে পূর্ণ হয়ে গিয়েছিল। নদেরচাঁদ তা দেখতে দেখতেই নদেরচাদ যা দেখেছিল।

নদীর প্রতি নদেরচাদের ছিল অপরিসীম আকর্ষণ। পাঁচদিনের টানা বৃষ্টির জন্য সে নদীকে দেখতে যেতে পারেনি। তাই সে নদীকে দেখার জন্য উন্মত্তপ্রায় হয়ে উঠেছিল। পাঁচদিনের অতিবৃষ্টি তার প্রতিদিনের চেনা ক্ষীণকায়া নদীটিকে কী মূর্তি দান করেছে, সে কথাই সে কল্পনা করছিল।

প্রশ্নঃ ‘আজও সে সেইখানে গিয়া বসিল।’ – সে কোথায় গিয়ে বসল? তার সেখানে বসার কারণ কী ছিল?

উত্তরঃ ‘নদীর বিদ্রোহ’ গল্প অনুসারে নদেরচাঁদ যে–স্টেশনের স্টেশনমাস্টার ছিল, তার এক মাইল দূরে নদীর ওপরে একটি নতুন রং করা ব্রিজ ছিল। সেই ব্রিজের মাঝামাঝি ইট, সুরকি আর সিমেন্ট গাঁথা ধারকস্তঙের কিনারায় বসে সে রোজ নদীকে দেখত। সেদিনও নদেরচাঁদ সেইখানেই গিয়ে বসল। ব্রিজের ধারকস্তম্ভের কিনারায় বসে নদীকে দেখলে নদীবক্ষের ওপর থেকে নদীর বিস্তারসহ সামগ্রিক রূপটাই দর্শকের চোখে ধরা পড়ে। তাই নদেরচাঁদ সেখানে বসত।

প্রশ্নঃ ‘নিজের এই পাগলামিতে যেন আনন্দই উপভোগ করে।’ – নদেরচাদের মনের এই আনন্দের স্বরূপ পরিস্ফুট করো।

উত্তরঃ গ্রামবাংলার ছেলে নদেরচাদের জন্ম, শৈশব, বেড়ে ওঠা, আশা–আকাঙ্ক্ষা সবই নদীকে কেন্দ্র করে। নদীর সঙ্গে তার আত্মিক সম্পর্ক। নদীর ক্ষীণধারা দেখে বর্ষণপষ্ট স্ফীতকায় নদী তার মনে পুলক জাগায়। নদীর প্রতি এইরূপ প্রেম তার যে সাজে না একথা সে বুঝলেও তার মনকে বোঝাতে পারে না। কোথাও যেন নিজের এই পাগলামিতে সে আনন্দ উপভোগ করে।

প্রশ্নঃ ‘কিন্তু সে চাঞ্চলা যেন ছিল পরিপূর্ণতার আনলের প্রকাশ।’ – কোন চাঞ্চল্যের কথা বলা হয়েছে? ‘পরিপূর্ণতার আনন্দ’ বলতে কী বোঝানো হয়েছে?

উত্তরঃ পাঁচদিন অবিশ্রান্ত বৃষ্টি হওয়ার আগে নদেরচাঁদ তার প্রিয় নদীটিকে বর্ষার জলে পরিপুষ্ট আর পাঁচটা সাধারণ নদীর মতো পরিপূর্ণতার আনন্দে চঞ্চল হয়ে উঠতে দেখেছিল। এখানে সেই চাঞ্চল্যের কথা বলা হয়েছে।

সারাবছরই নদীগুলি জলাভাবে অপুষ্ট থাকে। তাদের মধ্যেকার পূর্ণতার আনন্দ যেন অধরা থাকে। কিন্তু বর্ষার নব জলধারায় পুষ্ট হয়ে তাদের মধ্যে আসে পরিপূর্ণতার আনন্দ। তাদের প্রবাহে আসে উল্লাস, চলায় আসে ছন্দ, এসব কিছুকেই পরিপূর্ণতার আনন্দ বলা হয়েছে।

===============================================================

নদীর বিদ্রোহ অধ্যায় থেকে আরোও প্রশ্ন ও উত্তর দেখুন

================================================================

রচনাধর্মী প্রশ্নোত্তর | নদীর বিদ্রোহ (গল্প) মানিক বন্দোপধ্যায় – মাধ্যমিক বাংলা প্রশ্ন ও উত্তর | Madhyamik Bengali Nodir Bidroho Question and Answer : 

1. ‘ নদীর বিদ্রোহ ‘ গল্পের শুরুতে সংক্ষিপ্ত উপস্থিতি থেকে নদেরচাঁদের নতুন সহকারীর চরিত্র সম্পর্কে কী ধারণা পাওয়া যায় ?

Ans: মানিক বন্দ্যোপাধ্যায় রচিত ‘ নদীর বিদ্রোহ ‘ গল্পে একমাত্র নদেরচাঁদ ছাড়া আর যে – চরিত্রটিকে পাই , সে হল তার নবনিযুক্ত সহকর্মী । এই সহকর্মীটির মুখে দুটি মাত্র সম্মতিজ্ঞাপক বাক্যাংশ আমরা শুনতে পাই । চারটে পঁয়তাল্লিশের ট্রেনটিকে রওনা করিয়ে নদেরচাঁদ যখন তার নতুন সহকর্মীকে নিজের চলে যাওয়ার কথা জানায় , তখন সে মেঘাচ্ছন্ন আকাশের দিকে একবার তাকিয়ে সংক্ষিপ্ত জবাব দেয় , ‘ আজ্ঞে হ্যাঁ । ‘ নবনিযুক্ত কর্মীর মেঘাচ্ছন্ন আকাশের দিকে অসহায় দৃষ্টিতে তাকানো বুঝিয়ে দেয় যে , বাড়ি ফেরার তাড়া তারও আছে । কিন্তু নদেরচাঁদ তার থেকে উচ্চ পদাধিকারী এবং নতুন চাকরি— এই দুটি কারণে সে বাড়ি ফেরার কথা মুখে আনতে পারেনি । দ্বিতীয়বার নদেরচাঁদ আর হয়তো বৃষ্টি হবে না এই অনুমান ব্যক্ত করে তার সমর্থন প্রত্যাশা করলে , সে বাইরের দিকে একবার তাকিয়ে সম্মতি জানায় । ঊর্ধ্বতন পদাধিকারী ব্যক্তিকে খুশি করাই হয়তো তার উদ্দেশ্য ছিল । কর্তৃপক্ষের হ্যাঁ – তে হ্যাঁ , না – তে না বলাটাও হয়তো তার চাকরির অঙ্গ বলেই সে ধরে নিয়েছিল । তাই মোটের ওপর নবনিযুক্ত সহকর্মী ব্যক্তিটিকে মানুষ হিসেবে নির্বিরোধী ও মুখচোরা ধরনের বলেই মনে হয় । 

2. পাঁচ দিন একটানা বৃষ্টিতে নদীকে দেখতে না – পেয়ে উতলা নদেরচাঁদের নদীকে দেখতে যাওয়ার পথে কেমন মনোভাব ছিল ব্যক্ত করো ।

Ans: মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘ নদীর বিদ্রোহ ’ গল্পের কেন্দ্রীয় চরিত্র নদেরচাদের নদীর সঙ্গে ভীষণ বন্ধুত্ব বলেই , নদীর সামান্য অদর্শনেই সে অস্থির হয়ে উঠত । কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ পদে কর্মরত ও বয়সজনিত কারণে , তার এহেন আচরণ ছেলেমানুষির পর্যায়ে পড়ে , এ কথাও সে স্বীকার করত । পাঁচ দিন অবিশ্রান্ত বৃষ্টির জন্য নদীর সঙ্গে তার সাক্ষাৎ হয়নি , তাই নদীকে দর্শনের জন্য সে উদ্গ্রীব ছিল । সে – কারণেই বিকেলে বৃষ্টি থামতেই সে নদীর উদ্দেশ্যে রওনা হয়েছিল । যাওয়ার সময় তার মনে নানান ভাবের উদয় হয় । পাঁচ দিনের অবিশ্রান্ত বর্ষায় নদী কোন্ অপরূপ সাজে সেজেছে তা দেখার জন্য সে উদ্গ্রীব হয়ে উঠেছিল । রেলের বাঁধ দিয়ে হাঁটতে হাঁটতে নদেরচাঁদ দু – দিকের জলে ভরা মাঠঘাট দেখে , বর্ষণপুষ্ট নদীটির রূপ মনে মনে কল্পনা করার চেষ্টা করল । নদীকে নিয়ে এই পাগলামিতে তার একটু আনন্দই হয়েছিল । নদীর তীরে বড়ো হয়ে ওঠা নদেরচাঁদ নদীর প্রতি তার এই ভালোবাসার কৈফিয়তও তৈরি রাখত । কারণ সে জানত , তার এই আচরণ সকলে স্বাভাবিকভাবে নেবে না । নদীকে দেখতে যাওয়ার পথে সবসময় তার মনে এইসব চিন্তাভাবনাগুলোই ঘুরপাক খাচ্ছিল ।

3. নদেরচাদের চরিত্রটি আলোচনা করো ।

Ans: নদীর বিদ্রোহ ‘ গল্পটি নদীপ্রেমিক নদেরচাদের তীব্র আবেগ ও আকুলতাকে ঘিরেই গড়ে উঠেছে । গল্পের নিয়ন্ত্রক বা কেন্দ্রীয় চরিত্র যে সে . এবিষয়ে কোনো সন্দেহ নেই । 

  নদেরচাঁদের চরিত্রের যে – দিকটি সবচেয়ে প্রকট , তা হল নদীর প্রতি তার তীব্র আকর্ষণ । নদীর ধারে বড়ো হয়ে ওঠার দরুন নদীর প্রতি তার টান থাকা স্বাভাবিক । তার গ্রামের ক্ষীণকায়া মীর প্রতি তীব্র নদীটিকে সে ভালোবাসত এক অসুস্থ আত্মীয়ার আকর্ষণ মতোই । এমনকী তার কর্মস্থলের কাছের নদীটিকে প্রতিদিন না – দেখেও সে থাকতে পারত না । নদীর প্রতি তার এই টান যে অস্বাভাবিক , তা বুঝলেও এই পাগলামিটা সে উপভোগ করত । আকোপ্রবণতা অস্থিরতা নদেরচাদের নদীর প্রতি ভালোবাসা , বর্ষায় স্ত্রীর বিরহে কাতর হয়ে ওঠা— এগুলি আবেগপ্রবণতার লক্ষণ । আবার বিরহে কাতর হয়ে স্ত্রীকে লেখা চিঠি খেলার ছলে নদীর স্রোতে ভাসিয়ে দেয় নদেরচাঁদ । এ থেকে বোঝা যায় , তার মধ্যে কাজ করে চলে এক অস্থিরতা । তাই অবিশ্রান্ত বৃষ্টিতে পাঁচদিন নদীর কাছে যেতে না পেরে ছটফট করে সে । নদীই যেন নিঃসঙ্গ নদেরচাঁদের প্রেয়সীতে রূপান্তরিত হয় । 

    সংবেদনশীলতা নদেরচাঁদ নদীর ভাষা বুঝত । নদীর ভয়ংকরী রূপ দেখে সে বুঝতে পেরেছিল , সভ্যতার নামে প্রকৃতিকে পদানত করলে শেষপর্যন্ত তা ধ্বংসই ডেকে আনবে । তার এই উপলব্ধি প্রকৃতির প্রতি ভালোবাসা ও সংবেদনশীলতারই পরিচয় । তাই সে যে ব্রিজ নিয়ে গর্ব করেছিল , তার প্রয়োজনীয়তা বিষয়েই সংশয় প্রকাশ করে । নদেরচাঁদ যতই আবেগপ্রবণ হোক , নদীর প্রতি তার যতই টান থাকুক , তা কিন্তু কখনোই তার কর্তব্য পালনের পথে বাধা হয়ে দাঁড়ায় না । স্টেশনমাস্টার হিসেবে সে তার দায়িত্ববোধ দায়িত্ব যথাযথভাবেই পালন করে । এইসব মিলিয়ে নদেরচাঁদ একটি ব্যতিক্রমী চরিত্র হিসেবেই উপস্থাপিত হয়েছে । গল্পের শেষে তার নিয়তি – নির্দিষ্ট মৃত্যু যেন মানুষের নিজের তৈরি যন্ত্রসভ্যতার হাতে অসহায় ও করুণ পরিণতির এক আশ্চর্য ভাষ্য হয়ে ওঠে ।

4. ত্রিশ বছর বয়সে নদীর জন্য নদেরচাঁদের এত বেশি মায়া একটু অস্বাভাবিক । ‘ – মায়াকে ‘ অস্বাভাবিক ‘ বলা হয়েছে কেন ? এই অস্বাভাবিকত্বের পিছনে নদেরচাঁদ কী কৈফিয়ত পেশ করত ।

Ans: নদীর বিদ্রোহ ‘ গল্পের নায়ক নদেরচাদের নদীর প্রতি অতিরিক্ত মায়াকে ‘ অস্বাভাবিক ‘ উন্মাদনা ছিল । একটা দিনও সে নদী – অদর্শনে থাকতে পারত না । টানা পাঁচ দিন অবিশ্রান্ত বৃষ্টির জন্য নদীর সঙ্গে সাক্ষাৎ না – হওয়ায় সে প্রায় পাগল বলার কারণ হয়ে যায় । ত্রিশ বছর বয়সি নদেরচাঁদের এই আচরণ সাধারণ মানুষের ” কাছে ছেলেমানুষি বলে মনে হত । তা ছাড়া তার মতো একজন গুরুত্বপূর্ণ পদাধিকারী ও প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তির এমন আচরণ মোটেই স্বাভাবিক নয় বলেই , এ কথা বলা হয়েছে ।

  নদীর প্রতি নদেরচাদের আকর্ষণ ও উন্মত্ততা যে অস্বাভাবিক তা নদেরচাঁদ নিজেও জানত । নিজের এই অস্বাভাবিকতা নিয়ে তার কোনো দুর্ভাবনা ছিল না , বরং সে তা নিয়ে আনন্দই অস্বাভাবিকত্বের উপভোগ করত । আর এই অস্বাভাবিক আচরণের কৈফিয়ত দেওয়ার তাগিদ সে নিজে থেকেই অনুভব করেছিল । কৈফিয়ত হিসেবে সে নিজের নদীর ধারে ও জন্মানো ও বেড়ে ওঠার কথা জানিয়েছে । নদীর সঙ্গে তার আন্তরিকতার কথাও সে বলেছে যে নদীটিকে ঘিরে সে বড়ো হয়েছে সেটি শীর্ণকায় হলেও নদেরচাঁদ অসুস্থ আত্মীয়ার মতো তাকে ভালোবেসেছে এবং মৃত্যুপথযাত্রী আত্মীয়ার জন্য কষ্ট পাওয়ার মতো অনাবৃষ্টিতে প্রায় শুকিয়ে যাওয়া নদীটিকে দেখে ব্যথিত হয়েছে । পরবর্তীকালে কর্মক্ষেত্রের পাশে নদীর উপস্থিতি তাকে আনন্দিত করেছিল । 

5. নিজের এই পাগলামিতে যেন আনন্দই উপভোগ করে । কার পাগলামির কথা বলা হয়েছে ? গল্প অনুসরণে উদ্দিষ্ট ব্যক্তির পাগলামির পরিচয় দাও । 

Ans: উদ্ধৃত অংশে মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের লেখা ‘ নদীর বিদ্রোহ ‘ পাগলামি করা ব্যক্তির পরিচয় গল্পে কেন্দ্রীয় চরিত্র নদেরচাদের নদীর জন্য পাগলামির কথা বলা হয়েছে ।

   গ্রামবাংলার এক নদীর ধারে নদেরচাদের জন্ম এবং বড়ো হয়ে ওঠা । তাই ছোটোবেলা থেকেই নদী তার বন্ধু । এমনকি কর্মসূত্রে সে যে জায়গায় আসে সেখানেও একটি নদী রয়েছে । ফলে খুব সহজেই সেই নদীও অল্পদিনের মধ্যেই নদেরচাঁদের আপন হয়ে ওঠে । নদীটিকে একটি দিনের জন্যও না – দেখে সে থাকতে পারে না । গ্রীষ্মকালে শুকনো , শীর্ণ ও ক্ষীণকায়া নদীর জন্য সে বেদনা অনুভব করে । আবার বর্ষার জল পেয়ে নদী ফুলেফেঁপে উঠলে নদেরচাঁদের মনেও যেন খুশির জোয়ার আসে । নদীর কাছে সে উজাড় করে দেয় মনের যত কথা । নদী ও নদেরচাঁদ যেন পরস্পরের সুখ – দুঃখের অংশীদার । নদীকে বাঁধ দিয়ে বাঁধলে কষ্ট হয় নদেরচাঁদের । খেলার ছলে নিজের স্ত্রীকে লেখা চিঠির পাতাগুলো সে অনায়াসে ছুড়ে দিতে পারে নদীর জলের জটিল আবর্তে । নদীর প্রতি তার এই টান যে স্বাভাবিক নয় , তা সে বুঝতে পারে , কিন্তু নিজেকে সংযত করতে পারে না , বরং উপভোগ করে নিজের এই পাগলামিকে ।

6. প্রথমবার নদীর দিকে দৃষ্টিপাত করিয়াই নদেরচাঁদ স্তম্ভিত হইয়া গেল । — প্রথমবার নদীর দিকে দৃষ্টিপাত করে নদেরচাঁদ কী দেখেছিল ? নদেরচাদের স্তম্ভিত হয়ে যাওয়ার কারণ কী ?

Ans: মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘ নদীর বিদ্রোহ ‘ গল্পে পাঁচ দিন অবিশ্রান্ত বৃষ্টির পর নদীকে দেখার কথা বলতে গিয়ে লেখক ‘ প্রথমবার ’ শব্দটি ব্যবহার করেছেন । একটানা বৃষ্টির জন্য পাঁচ দিন নদীর সঙ্গে নদেরচাঁদের দেখা হয়নি । বৃষ্টি সাময়িকভাবে থামতে , সে উন্মত্তের মতো নদীকে দেখতে ছোটে । বর্ষার শুরুতে যে – শীর্ণ নদীকে নদেরচাঁদ কল্লোলিত হয়ে উঠতে দেখেছিল , অতিবর্ষণের পর তার রূপটি কেমন দাঁড়িয়েছে তা দেখবার জন্য সে উৎসুক হয়ে পড়ে । কিন্তু নদীর ধারে গিয়ে সে স্তম্ভিত হয়ে যায় । পাঁচদিনের অতিবর্ষণে নদী এক ভয়ংকর রূপ ধারণ করেছিল । নদীর জলস্ফীতি ব্রিজের ধারকস্তম্ভে আঘাত পেয়ে আবর্ত রচনা করে ফেনায়িত হয়ে অনেকটা ওপরে উঠে আসছিল । নদীর এই উন্মত্ত রুপ তাকে অবাক করেছিল ।

   নদেরচাঁদ প্রথমবার নদীর বর্ষণপুস্টরূপ দেখে অবাক হয়ে গিয়েছিল । পাঁচদিন আগেও বর্ষার জলে পরিপুষ্ট নদীর জলস্রোতে যে চাঞ্চল্য সে দেখে গিয়েছিল , সে চাঞ্চল্য ছিল পরিপূর্ণতার । আজ সেই নদী খেপে গিয়ে গাঢ় পঙ্কিল জল ফুলেফেঁপে ফেনায়িত হয়ে ছুটে চলেছে । তাই তার চার বছরের চেনা নদীর মূর্তিকে নদেরচাদের যেন আরও বেশি ভয়ংকর , আরও বেশি অপরিচিত বলে মনে হয় ।

7. আজও সে সেইখানে গিয়া বসিল / – কোথায় গিয়ে বসার কথা বলা হয়েছে ? সেখানে বসে নদেরচাঁদ নদীর কোন রূপ দর্শন করেছিল ?

Ans: মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘ নদীর বিদ্রোহ ’ গল্পের নায়ক নদেরচাঁদ বসার স্থানের সম্পর্কে প্রতিদিন নদীর ওপর নির্মিত ব্রিজের মাঝামাঝি ইট , সুরকি আর সিমেন্টের গাঁথা ধারকস্তত্ত্বের শেষপ্রান্তে বসে নদীকে প্রত্যক্ষ করত । সেদিনও সে সেখানেই গিয়ে বসেছিল । 

  পাঁচ দিন অবিশ্রান্ত বৃষ্টির জন্য নদেরচাদের নদীদর্শন সাময়িক স্থাগিত থাকলেও , মনে মনে সে নদীকে দেখার জন্য উদ্গ্রীব হয়ে উঠেছিল । তাই বৃষ্টি বন্ধ হতেই সে উদ্গ্রীব হয়ে তার নদী দেখার নির্দিষ্ট জায়গায় গিয়ে সেখানে বসে নদেরচাদের দর্শন করা নদীর রূপ পৌঁছেছিল । কিন্তু নদী যেন আজ খেপে গিয়েছে । তার গাঢ় পঙ্কিল জল ফুলেফেঁপে উচ্ছ্বসিত হয়ে ছুটে চলেছে । নদেরচাঁদ তার ক্ষীণস্রোত নদীটির কথা ভাবছিল । তাই তার চার বছরের চেনা নদীটি আরও বেশি ভয়ংকর ও অপরিচিত মনে হল । ব্রিজের মাঝামাঝি ধারকস্তম্ভের ওপর বসে সে দেখল নদীর স্রোত সেই ধারকস্তম্ভে বাধা পেয়ে ফেনিল আবর্ত রচনা করে উপরের দিকে উঠে আসছে । দেখে মনে হয় যেন হাত বাড়িয়ে জলকে স্পর্শ করা যাবে । নদেরচাদের ভারী আমোদ হল । নদীর সঙ্গে খেলার লোভে সে পকেট থেকে স্ত্রীকে লেখা চিঠি বের করে ভাসিয়ে দিতে থাকে । কিন্তু পুনরায় মুশলধারে বৃষ্টি নামায় তার এই উল্লাস আতঙ্কে পরিণত হয় ।

8. নদেরচাদের ভারী আমোদ বোধ হইতে লাগিল । এবং ‘ নদেরচাদের মন হইতে ছেলেমানুষি আমোদ মিলাইয়া গেল । —মাত্র একটি অনুচ্ছেদের ব্যবধানে লেখকের এই দু – রকম বিবৃতির পিছনে যৌক্তিকতা ব্যাখ্যা করো ।

Ans: ‘ নদীর বিদ্রোহ ‘ গল্পে নদেরচাদ নদীকে না – দেখে একটি দিনও থাকতে পারে না । পাঁচ দিন অবিশ্রান্ত বৃষ্টির পর তাই সে নদীকে দেখার জন্য বেরিয়ে পড়ে । ব্রিজের কাছে এসে নদীকে দেখে সে স্তম্ভিত হয়ে যায় । বৃষ্টির পর নদী যেন খেপে গেছে । নদেরচাদ এতক্ষণ ক্ষীণস্রোতা নদীর কথা ভাবছিল , তাই চেনা নদীটির মূর্তি তার আরও বেশি ভয়ংকর ও অপরিচিত লাগছিল । প্রতিদিনের অভ্যাসমতো সে ধারবস্তত্ত্বের শেষ প্রান্তে বসে নদীকে দেখল । নদীর স্রোত সেই স্তস্তে আঘাত পেয়ে আবর্তাকারে ফেনায়িত হয়ে উপরের দিকে উঠে আসছে । তার মনে হল ইচ্ছা করলেই স্পর্শ করা যাবে । আমোদিত নদেরচাদ খেলার ছলে স্ত্রীকে লেখা চিঠি স্রোতের মধ্যে ছুঁড়ে ছুঁড়ে ফেলছিল । ঘণ্টা তিনেক পর আবার আকাশ ভেঙে বৃষ্টি নামল । সেই বৃষ্টির শব্দ আর নদীর জলের গর্জন মিলেমিশে তাকে আতঙ্কিত ও অবসন্ন করে তুলল , ক্রমে তার ছেলেমানুষি উধাও হয়ে গেল । তার মনে হল নদী যে – কোনো সময় ব্রিজ ও বাঁধ ভেঙে নিজেকে মুক্ত করতে পারে । প্রকৃতির স্বাভাবিকতাকে নষ্ট করে মানবসভ্যতার যান্ত্রিক উন্নয়নকে নদী যেন ধ্বংস করতে চায় । সময়ের পরিবর্তনে পরিস্থিতির বদলের সম্ভাবনাকে সমর্থন করে ; লেখক স্বল্প ব্যবধানে উক্তি দুটি করতে বাধ্য হয়েছেন ।

9. ‘ এই ভীষণ মধুর শব্দ শুনিতে শুনিতে সর্বাঙ্গ অবশ , অবসন্ন হইয়া আসিতেছে । — উক্ত শব্দকে ‘ ভীষণ মথুর ‘ এই বৈপরীত্যসূচক বিশেষণে বিশেষিত করার কারণ কী ? এই শব্দ শোনার সঙ্গে সর্বাঙ্গ অবশ , অবসন্ন হয়ে আসার সম্পর্ক কী ?

Ans: পাঁচ দিন অবিশ্রান্ত বৃষ্টির পর অভ্যাসবশত নদেরচাঁদ নদীর রূপ দেখতে যায় । ধারকস্তম্ভের শেষ প্রান্তে বসে নদীর রূপ দেখে সে বেশ ‘ ভীষ মধুর ’ – বৈপরীত্যসূচক ডিও বিশোষণ , আমোদিত বোধ করে । আবার আকাশ ভেঙে বৃষ্টি নামে । সেই বৃষ্টির শব্দ আর নদীর জলের গর্জন মিলেমিশে তাকে বিবশ করে । নদীর উন্মত্ততা ও বৃষ্টির প্রাবল্য তার মনে আতঙ্কের সঞ্চার করে । ভয়ংকর জলতরঙ্গের চাপা গর্জন আর বৃষ্টির শব্দ মিলেমিশে যে – ঐক্যতান সৃষ্টি করেছিল , তা শ্রুতিমধুর হলেও ভয়ংকর এই শব্দের অভিঘাত নদেরচাঁদকে বিবশ ও আতঙ্কিত করে তুলেছিল । শব্দের এই দ্বিমুখী ক্রিয়ার জন্যই ‘ ভীষণ মধুর ‘ বিশেষণটি ব্যবহৃত হয়েছে । শুনে সর্বাঙ্গ অবশ , অবসন্ন হয়েছে → ভয় মানুষকে অতিসক্রিয় বা নিষ্ক্রিয় করে দেয় । সক্রিয়তা তাকে বিপদস্থল থেকে দূরে সরিয়ে নিয়ে যায় আর নিষ্ক্রিয়তা তাকে সেখানেই আতঙ্কের গভীরে নিমজ্জিত করে । নদীর ধ্বংসাত্মক ভয়াবহতা , তার রুষ্ট গর্জন ও বৃষ্টির প্রাবল্য সব কিছু মিলিয়ে যে – ভয় নদেরচাঁদের মধ্যে সৃষ্টি হয়েছিল , তা তাকে বিবশ ও অবসন্ন করে তুলেছিল । সে পরিস্থিতির প্রতিকূলতা উপলব্ধি করেও তাই সেখান থেকে উঠে যেতে পারেনি । কেন – না তার মানসিক ও শারীরিক জোর সে মুহূর্তে ছিল না ।

10. ‘ দুদিন ধরিয়া বাহিরের অবিশ্রান্ত বর্ষণের সঙ্গে সুর মিলাইয়া নদেরচাদ বউকে প্রাণপণে একখানা পাঁচপৃষ্ঠাব্যাপী বিরহ – বেদনাপূর্ণ চিঠি লিখিয়াছে , ‘ ’ –‘অবিশ্রান্ত বর্ষণের সঙ্গে সুর মিলাইয়া ‘ – র অর্থ কী ? চিঠির পরিণতি যা হয়েছিল , তার পিছনের কারণটি ব্যাখ্যা করো ।

Ans: যুগে যুগে বর্ষার আবহের সঙ্গে ভালোবাসার সম্পর্ক স্বীকৃত । এই ব্যাকুলতার আভাস মেলে কালিদাস , রবীন্দ্রনাথ কিংবা বৈষুব ‘ অবিভ্রান্ত বর্ষণের সঙ্গে সুর মিলাইয়া পদকর্তাদের লেখা কাব্যের ছত্রে ছত্রে । মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘ নদীর বিদ্রোহ ‘ গল্পের নায়ক নদের চাঁদ দীর্ঘদিন কর্মসূত্রে ঘরছাড়া হওয়ার কারণে স্ত্রী বিচ্ছিন্ন । তাই পাঁচ দিন ধরে একটানা বৃষ্টি তার বিরহব্যথাকে আরও প্রবল করে তুলেছিল । বৃষ্টির সুরের কোমলতা মাখিয়ে সে স্ত্রীকে পাঁচ পৃষ্ঠার একটি চিঠি লিখেছিল । চিঠির পরিণতির পিছনে প্রকৃত কারণ বহু যত্নে ও আবেগে স্ত্রীকে লেখা চিঠি নদেরচাঁদ ছিঁড়ে ছিঁড়ে নদীর ফেনিল জলস্রোতে ভাসিয়ে দিয়েছিল । এর কারণ এই নয় যে , সে চিঠিটি স্ত্রীর হাতে পৌঁছে দিতে উৎসাহী ছিল না । বরং এর কারণটি ছিল অত্যন্ত শিশুসুলভ । সে ভয়ংকরী নদীর উত্তাল জলরাশির সঙ্গে খেলায় মেতেছিল । খেলার অন্য কোনো সরঞ্জাম না – পেয়ে নদেরচাঁদ পকেট থেকে চিঠিটি বের করে ছিঁড়ে নদীর জলে ভাসাতে থাকে । নদী কীভাবে দ্রুততার সঙ্গে চিঠিগুলি ভাসিয়ে নিয়ে যায় , তাই দেখাই তার উদ্দেশ্য ছিল । এসবের পিছনেই ছিল নদেরচাঁদের নদী সম্পর্কে অস্বাভাবিক পাগলামি । মানুষের কাছে তার প্রিয়জন সবচেয়ে আপন । কিন্তু নদেরচাঁদের আচরণ বুঝিয়ে দেয় যে , তার কাছে নদীর চেয়ে বেশি আপনজন আর কেউ নেই । এখানে নদী আসলে তার প্রেয়সীতে রূপান্তরিত হয় ।

12. ‘ একটা বেদনাদায়ক চেতনা কিছুক্ষণের জন্য নদেরচাদকে দিশেহারা করিয়া রাখিল , তারপর সে অতিকষ্টে উঠিয়া দাঁড়াইল।— নদেরচাদ দিশেহারা হয়ে পড়েছিল কেন ? তার উঠে দাঁড়াতে কষ্ট হওয়ার কারণ কী ছিল ?

Ans: পাঁচ দিন অবিশ্রান্ত বৃষ্টির পর নদীর রূপ দেখে নদেরচাঁদ প্রথমে আমোদিত হলেও , অল্পক্ষণ পরেই তার মন থেকে ছেলেমানুষি উধাও হয়ে গিয়েছিল । আবার বৃষ্টি শুরু হওয়ায় স্রোতপূর্ণ নদীর শব্দ ও বৃষ্টির আওয়াজ মিলেমিশে এমন একটা শব্দের সৃষ্টি করল , যা শুনে সে আতঙ্কিত ও আচ্ছন্ন হয়ে পড়ল । সেখান থেকে উঠে যাওয়ার ক্ষমতাটুকুও সে হারিয়ে ফেলল । প্রকৃতির রোষের কাছে মানুষ অসেরচাদের দিশেহারা যে কতটা অসহায় তার একটা ভীতিময় অনুভূতি হয়ে পড়ার কারণ নদেরচাদের চেতনা ও অবচেতন মনের মধ্যেকার ফারাক ঘুচিয়ে দিল । এমন সময় একটা ট্রেন চলে যাওয়ার আকস্মিক শব্দের মতন বেদনাদায়ক আঘাতে তার ঘোর ভাঙে । কিছুক্ষণের জন্য তার ভারাক্রান্ত মন তাকে দিশেহারা করে তোলে ।

   → মানুষ যখন আতঙ্কিত হয় তখন তার মধ্যে দু – ধরনের প্রতিক্রিয়া দেখা যায় । হয় সে অতিসক্রিয় হয়ে ঘটনাস্থল থেকে পালায় , নয় সে স্থির ও কিংকর্তব্যবিমূঢ় হয়ে পড়ে । এক্ষেত্রে নদীর গর্জন এবং বৃষ্টির শব্দ তার মনে যে – প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করছিল , তাতে সে হতভম্ব আর অবসন্ন হয়ে পড়েছিল । এইজন্য নদেরচাদ ব্রিজের ওপর থেকে উঠে যেতে চাইলেও তার শরীর – মন তাতে সংগত করতে পারেনি । কিন্তু ট্রেন চলে যাওয়ার মতো কোনো একটি প্রচণ্ড শব্দে যখন তার সংবিৎ ফিরল , তখন সে অতিকষ্টে উঠে দাঁড়াল ।

13. বড়ো ভয় করিতে লাগিল নদেরচাদের । -নদেরচাদের ভয়ের স্বরূপ আলোচনা করো । 

Ans: ‘ নদীর বিদ্রোহ ‘ গল্পে আমরা দেখি , নদীবক্ষে নির্মিত যে – ব্রিজের ধারকস্তম্ভের প্রান্তে বসে নদেরচাদ ভয়ংকরী নদী জলরাশির উন্মাদনা লক্ষ করছিল , তার মাত্র কয়েক হাত নীচেই ছিল বিপুল বিস্ফারিত জলরাশি । এরপর প্রবল বৃষ্টি নামলে নদীর জল ও বৃষ্টিপাতের শব্দ মিলেমিশে যে চাপা গর্জন সৃষ্টি করে , তা নদেরচাদকে আতঙ্কে অবশ করে তোলে ।

   নদেরচাঁদ এক অদ্ভূত অবসন্নতা আর বিবশতায় আক্রান্ত হয়ে পড়ে । তার মন জানত , সেখান থেকে উঠে চলে যাওয়াই যথাযথ সিদ্ধান্ত । কিন্তু তার শরীর যেন কিছুতেই সায় দিচ্ছিল না । তার এই আতঙ্কের উৎস ছিল সংবেদনশীল মন , সে বুঝে গিয়েছিল নদীর এই ভয়াবহতার কারণ হল , মানবসভ্যতার বিরুদ্ধে প্রকৃতির যুদ্ধঘোষণা । মানুষ যুগ যুগ ধরে প্রকৃতিকে বশ মানাতে গিয়ে এভাবেই নিজের বিপদ ডেকে এনেছে । প্রকৃতিপ্রেমিক নদেরচাঁদ নদীর এই বিদ্রোহ অনুভব করেছিল । সে বুঝেছিল , এই ক্ষিপ্ত নদী প্রতিশোধ নিতে বাঁধ ও ব্রিজ ভেঙে নিজের পথ পরিষ্কার করে নেবে । আর সেই বিক্ষুব্ধ নদীর সামনে মানবসভ্যতার একমাত্র প্রতিনিধিরূপে নদেরচাঁদ সন্ত্রস্ত আর আতঙ্কিত বোধ করে ।

14. ‘ নদীর বিদ্রোহের কারণ সে বুঝিতে পারিয়াছে । —নদীর বিদ্রোহের কারণ কী ছিল ? ‘ সে ’ কীভাবে তা বুঝতে পেরেছিল ?

Ans: ‘ নদীর বিদ্রোহ ‘ গল্পে আমরা দেখি ছোটোবেলা থেকেই নদেরচাদের সমস্ত কিছু নদীকে ঘিরেই গড়ে উঠেছে । নদীর ভাষা সে বুঝবে এটাই স্বাভাবিক । বর্ষণপুষ্ট উত্তাল নদীকে সে ক্ষিপ্ত ও বিক্ষুব্ধ বলে চিনতে পেরেছিল । মানুষের তৈরি বাঁধ এবং ব্রিজ নদীকে শীর্ণকায় করে তোলায় নদী যে তাতে ক্ষুব্ধ , নদীর বিদ্রোহের , কারণ নদেরচাঁদ তার সংবেদনশীল মন দিয়ে তা উপলব্ধি করেছিল । মানুষের প্রযুক্তির কাছে অবদমিত প্রকৃতি যেন নদীর মাধ্যমে প্রতিশোধ নিতে চাইছে । নদেরচাঁদ বুঝেছিল , প্রকৃতির প্রতি মানুষের অবিচারই মানবসভ্যতাকে একদিন ধ্বংসের মুখে ঠেলে দেবে । 

  নদেরচাঁদ সংবেদনশীল মানুষ । নদীকে নিয়ে তার কৌতূহল পাগলামির পর্যায়ের হলেও নদীকে নিয়ে তার অন্তর্দৃষ্টি তাকে অনন্যপূর্ব সিদ্ধান্তে উপনীত করে । প্রযুক্তি ও বিজ্ঞানের বলে বলীয়ান নদেরচাদ যেভাবে দাম্ভিক মানুষ প্রকৃতিকে বশে আনতে নদীর বুকে ব্রিজ বানিয়েছে , বাঁধ বেঁধেছে । এই অন্যায়ের প্রতিবাদ যেন ধ্বনিত হয় নদীর গর্জনে , সব কিছুকে ভেঙে ফেলার চেষ্টায় । নদীর এই কাজকে যেন সমর্থন করে চলে প্রকৃতির বৃষ্টি , মেঘ ও অন্ধকার । প্রকৃতির এইসব আয়োজনের দিকে লক্ষ রেখে নদীর বিদ্রোহকে নদেরচাঁদ অন্তরাত্মা দিয়ে অনুভব করেছে ।

15. ‘ নদীর বিদ্রোহ ‘ গল্পের শেষে নদেরচাদের পরিণতি কীভাবে প্রতীকায়িত হয়েছে , গল্পটি পড়ে তোমার উপলব্ধি থেকে ব্যক্ত করো । 

অথবা , মানুষের প্রয়োজন ও প্রকৃতির ভারসাম্য রক্ষার প্রয়োজনীয়তা ‘ নদীর বিদ্রোহ ‘ গল্পে কীভাবে উপস্থাপিত হয়েছে লেখো ।

Ans: মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘ নদীর বিদ্রোহ ’ গল্পটি মনস্তাত্ত্বিক আঙ্গিকে লেখা । গল্পটি আধুনিক মানুষের পরিবেশচেতনার ইঙ্গিতবাহী । মানুষ নগরায়ণের জন্য দ্রুত বন কেটে মরুভূমিতে আহ্বান জানাচ্ছে , বাতাসে মেশাচ্ছে বিব । নদীর বুকে বাঁধ বেঁধে , ব্রিজ গড়ে সে বিদীর্ণ করছে নদীবক্ষ মানুষ বুঝতে পারছে না প্রকৃতি ও পরিবেশকে ধ্বংস করে যে মৃত্যুফাদ সে রচনা করছে সেখান থেকে তার বেরিয়ে আসা মুশকিল ।

   যন্ত্রনির্ভর মানবসভ্যতা বনাম প্রকৃতির প্রতিনিধি – মনস্তাত্ত্বিক গল্পটির দুটি প্রতিপক্ষ- একদিকে নদেরচাঁদ , যে যন্ত্রনির্ভর মানবসভ্যতার প্রতিনিধি ; অন্যদিকে নদী , যে কিনা প্রকৃতির প্রতিনিধি । গল্পে নদেরটাদের নদীপ্রীতি আসলে সমানুভূতির নয় সহানুভূতির । নদীর খেপে ওঠার মধ্যে নদেরচাঁদ প্রত্যক্ষ করেছিল বন্দিনি নদীর মুক্তির আকাঙ্ক্ষা । আর এটাই তাকে আতঙ্কিত করে তোলে । তাই সে প্রতিহিংসার হাত থেকে বাঁচতে পালাতে চেয়েছে । কিন্তু মানুষের তৈরি প্রযুক্তির জন্য নদেরচাঁদ এতদিন যে – গর্ব প্রকাশ করে এসেছে , সেই প্রযুক্তিরই ফসল ট্রেনের ঢাকার তার প্রাণ যায় । এ যেন আধুনিক সভ্যতার প্রতি এক সতর্কর্তা- নিজের তৈরি ফাঁদে মানুষ যেভাবে নিজেকে জড়িয়ে ফেলছে , তাতে একদিন তার ধ্বংস অনিবার্য । আসলে গল্পে অসহায় নদেরচাদের মৃত্যু সভ্যতার সর্বনাশা পরিণামকেই চিহ্নিত করেছে । প্রকৃতি ও মানুষের সহাবস্থান , প্রকৃতির স্বাভাবিক সাবলীলতা বজায় রেখে উন্নয়ন এবং পরিবেশ আর প্রকৃতির সঙ্গে মিতালি স্থাপন করেই সভ্যতার সত্যিকারের উন্নতি সম্ভব । তাই বৈজ্ঞানিক প্রযুক্তির যে – রূপে প্রকৃতি তার সামঞ্জস্য ফিরে পাবে ও মানুষ নিজেও অগ্রগতির সুবিধা ভোগ করবে , সেই প্রকৃতি – বান্ধব প্রযুক্তিই হল সভ্যতাকে রক্ষা করার একমাত্র পথ ।

16. ‘ নদীকে এভাবে ভালোবাসিবার একটা কৈফিয়ত নদেরচাদ দিতে পারে । নদেরচাঁদ কে ? নদীকে ভালোবাসার কী কৈফিয়ত সে দিয়েছিল ? নদীকে খুব ভালোবাসার পরিণতি কী হয়েছিল ?

Ans: অংশের জন্য 15 নং প্রশ্নের উত্তরের প্রথম অংশ দ্যাখো ।

পাঁচ দিনের অবিশ্রান্ত বর্ষণের ফলে , নদেরচাদের নদীর সঙ্গে দেখা হয়নি । পঞ্চম দিন বিকেলে বৃষ্টির ক্ষণিক বিরতি পেতেই সে বেরিয়ে পড়ে । নদীকে খুব কিন্তু ব্রিজের কাছাকাছি এসে নদীর দিকে দৃষ্টিপাত ভালোবাসার পরিণতি করেই সে স্তম্ভিত হয়ে যায় । উত্তাল ভয়ংকর এই নদীকে তার যেন অচেনা মনে হয় । অভ্যাসমতো ধারকস্তম্ভের শেষপ্রান্তে সে বসে । ক্রমে আবার বৃষ্টি শুরু হয় । নদীস্রোত আর বৃষ্টির মিলিত শব্দে তার ভয় হয় । মনে হয় বন্দিনি নদী আজ বিদ্রোহিনী হয়ে উঠেছে । খ্যাপা নদী ব্রিজকেও বুঝি ভাসিয়ে নিয়ে যাবে । সে অন্ধকারে রেললাইন দিয়ে হেঁটে স্টেশনের দিকে ফিরে চলে । কিন্তু স্টেশনের পৌঁছোনোর আগেই তাকে ৭ নং ডাউন প্যাসেঞ্জার ট্রেনটি পিষে দিয়ে চলে যায় । এভাবেই প্রাণ দিয়ে নদীকে ভালোবাসার মূল্য চুকোয় নদেরচাঁদ । 

===============================================================

নদীর বিদ্রোহ অধ্যায় থেকে আরোও প্রশ্ন ও উত্তর দেখুন

================================================================

 নিচের রচনাধর্মী প্রশ্নগুলির উত্তর দাও :

প্রশ্নঃ ‘নদীকে এভাবে ভালোবাসিবার একটা কৈফিয়ত নদেরচাদ দিতে পারে।’ – নদেরচাঁদ কে? নদীকে ভালোবাসার কী কৈফিয়ত সে দিয়েছিল? নদীকে খুব ভালোবাসার পরিণতি কী হয়েছিল?

উত্তরঃ মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘নদীর বিদ্রোহ’ গল্পটি মনস্তাত্ত্বিক আঙ্গিকে লেখা। গল্পটি আধুনিক মানুষের পরিবেশচেতনার ইঙ্গিতবাহী। মানুষ নগরায়ণের জন্য দ্রুত বন কেটে মরুভূমিতে আহ্বান জানাচ্ছে, বাতাসে মেশাচ্ছে বিব। নদীর বুকে বাঁধ বেঁধে, ব্রিজ গড়ে সে বিদীর্ণ করছে নদীবক্ষ মানুষ বুঝতে পারছে না প্রকৃতি ও পরিবেশকে ধ্বংস করে যে মৃত্যুফাদ সে রচনা করছে সেখান থেকে তার বেরিয়ে আসা মুশকিল।

পাঁচ দিনের অবিশ্রান্ত বর্ষণের ফলে, নদেরচাদের নদীর সঙ্গে দেখা হয়নি। পঞ্চম দিন বিকেলে বৃষ্টির ক্ষণিক বিরতি পেতেই সে বেরিয়ে পড়ে। নদীকে খুব কিন্তু ব্রিজের কাছাকাছি এসে নদীর দিকে দৃষ্টিপাত ভালোবাসার পরিণতি করেই সে স্তম্ভিত হয়ে যায়। উত্তাল ভয়ংকর এই নদীকে তার যেন অচেনা মনে হয়। অভ্যাসমতো ধারকস্তম্ভের শেষপ্রান্তে সে বসে। ক্রমে আবার বৃষ্টি শুরু হয়। নদীস্রোত আর বৃষ্টির মিলিত শব্দে তার ভয় হয়। মনে হয় বন্দিনি নদী আজ বিদ্রোহিনী হয়ে উঠেছে। খ্যাপা নদী ব্রিজকেও বুঝি ভাসিয়ে নিয়ে যাবে। সে অন্ধকারে রেললাইন দিয়ে হেঁটে স্টেশনের দিকে ফিরে চলে। কিন্তু স্টেশনের পৌঁছোনোর আগেই তাকে ৭ নং ডাউন প্যাসেঞ্জার ট্রেনটি পিষে দিয়ে চলে যায়। এভাবেই প্রাণ দিয়ে নদীকে ভালোবাসার মূল্য চুকোয় নদেরচাঁদ।

প্রশ্নঃ ‘নদেরচাদের ভারী আমোদ বোধ হইতে লাগিল।’ এবং ‘নদেরচাদের মন হইতে ছেলেমানুষি আমোদ মিলাইয়া গেল।’ – মাত্র একটি অনুচ্ছেদের ব্যবধানে লেখকের এই দু–রকম বিবৃতির পিছনে যৌক্তিকতা ব্যাখ্যা করো।

উত্তরঃ ‘নদীর বিদ্রোহ’ গল্পে নদেরচাদ নদীকে না দেখে একটি দিনও থাকতে পারে না। পাঁচ দিন অবিশ্রান্ত বৃষ্টির পর তাই সে নদীকে দেখার জন্য বেরিয়ে পড়ে। ব্রিজের কাছে এসে নদীকে দেখে সে স্তম্ভিত হয়ে যায়। বৃষ্টির পর নদী যেন খেপে গেছে। নদেরচাদ এতক্ষণ ক্ষীণস্রোতা নদীর কথা ভাবছিল, তাই চেনা নদীটির মূর্তি তার আরও বেশি ভয়ংকর ও অপরিচিত লাগছিল। প্রতিদিনের অভ্যাসমতো সে ধারবস্তত্ত্বের শেষ প্রান্তে বসে নদীকে দেখল। নদীর স্রোত সেই স্তস্তে আঘাত পেয়ে আবর্তাকারে ফেনায়িত হয়ে উপরের দিকে উঠে আসছে। তার মনে হল ইচ্ছা করলেই স্পর্শ করা যাবে। আমোদিত নদেরচাদ খেলার ছলে স্ত্রীকে লেখা চিঠি স্রোতের মধ্যে ছুঁড়ে ছুঁড়ে ফেলছিল। ঘণ্টা তিনেক পর আবার আকাশ ভেঙে বৃষ্টি নামল। সেই বৃষ্টির শব্দ আর নদীর জলের গর্জন মিলেমিশে তাকে আতঙ্কিত ও অবসন্ন করে তুলল, ক্রমে তার ছেলেমানুষি উধাও হয়ে গেল। তার মনে হল নদী যে কোনো সময় ব্রিজ ও বাঁধ ভেঙে নিজেকে মুক্ত করতে পারে। প্রকৃতির স্বাভাবিকতাকে নষ্ট করে মানবসভ্যতার যান্ত্রিক উন্নয়নকে নদী যেন ধ্বংস করতে চায়। সময়ের পরিবর্তনে পরিস্থিতির বদলের সম্ভাবনাকে সমর্থন করে; লেখক স্বল্প ব্যবধানে উক্তি দুটি করতে বাধ্য হয়েছেন।

প্রশ্নঃ ‘নদীর বিদ্রোহের কারণ সে বুঝিতে পারিয়াছে।’ – নদীর বিদ্রোহের কারণ কী ছিল? ‘সে’ কীভাবে তা বুঝতে পেরেছিল?

উত্তরঃ ‘নদীর বিদ্রোহ’ গল্পে আমরা দেখি ছোটোবেলা থেকেই নদেরচাদের সমস্ত কিছু নদীকে ঘিরেই গড়ে উঠেছে। নদীর ভাষা সে বুঝবে এটাই স্বাভাবিক। বর্ষণপুষ্ট উত্তাল নদীকে সে ক্ষিপ্ত ও বিক্ষুব্ধ বলে চিনতে পেরেছিল। মানুষের তৈরি বাঁধ এবং ব্রিজ নদীকে শীর্ণকায় করে তোলায় নদী যে তাতে ক্ষুব্ধ, নদীর বিদ্রোহের, কারণ নদেরচাঁদ তার সংবেদনশীল মন দিয়ে তা উপলব্ধি করেছিল। মানুষের প্রযুক্তির কাছে অবদমিত প্রকৃতি যেন নদীর মাধ্যমে প্রতিশোধ নিতে চাইছে। নদেরচাঁদ বুঝেছিল, প্রকৃতির প্রতি মানুষের অবিচারই মানবসভ্যতাকে একদিন ধ্বংসের মুখে ঠেলে দেবে।

নদেরচাঁদ সংবেদনশীল মানুষ। নদীকে নিয়ে তার কৌতূহল পাগলামির পর্যায়ের হলেও নদীকে নিয়ে তার অন্তর্দৃষ্টি তাকে অনন্যপূর্ব সিদ্ধান্তে উপনীত করে। প্রযুক্তি ও বিজ্ঞানের বলে বলীয়ান নদেরচাদ যেভাবে দাম্ভিক মানুষ প্রকৃতিকে বশে আনতে নদীর বুকে ব্রিজ বানিয়েছে, বাঁধ বেঁধেছে। এই অন্যায়ের প্রতিবাদ যেন ধ্বনিত হয় নদীর গর্জনে, সব কিছুকে ভেঙে ফেলার চেষ্টায়। নদীর এই কাজকে যেন সমর্থন করে চলে প্রকৃতির বৃষ্টি, মেঘ ও অন্ধকার। প্রকৃতির এইসব আয়োজনের দিকে লক্ষ রেখে নদীর বিদ্রোহকে নদেরচাঁদ অন্তরাত্মা দিয়ে অনুভব করেছে।

প্রশ্নঃ ‘প্রথমবার নদীর দিকে দৃষ্টিপাত করিয়াই নদেরচাঁদ স্তম্ভিত হইয়া গেল।’ – প্রথমবার নদীর দিকে দৃষ্টিপাত করে নদেরচাঁদ কী দেখেছিল? নদেরচাঁদের স্তম্ভিত হয়ে যাওয়ার কারণ কী?

উত্তরঃ মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘নদীর বিদ্রোহ’ গল্পে পাঁচ দিন অবিশ্রান্ত বৃষ্টির পর নদীকে দেখার কথা বলতে গিয়ে লেখক ‘প্রথমবার’ শব্দটি ব্যবহার করেছেন। একটানা বৃষ্টির জন্য পাঁচ দিন নদীর সঙ্গে নদেরচাঁদের দেখা হয়নি। বৃষ্টি সাময়িকভাবে থামতে, সে উন্মত্তের মতো নদীকে দেখতে ছোটে। বর্ষার শুরুতে যে শীর্ণ নদীকে নদেরচাঁদ কল্লোলিত হয়ে উঠতে দেখেছিল, অতিবর্ষণের পর তার রূপটি কেমন দাঁড়িয়েছে তা দেখবার জন্য সে উৎসুক হয়ে পড়ে। কিন্তু নদীর ধারে গিয়ে সে স্তম্ভিত হয়ে যায়। পাঁচদিনের অতিবর্ষণে নদী এক ভয়ংকর রূপ ধারণ করেছিল। নদীর জলস্ফীতি ব্রিজের ধারকস্তম্ভে আঘাত পেয়ে আবর্ত রচনা করে ফেনায়িত হয়ে অনেকটা ওপরে উঠে আসছিল । নদীর এই উন্মত্ত রুপ তাকে অবাক করেছিল।

নদেরচাঁদ প্রথমবার নদীর বর্ষণপুস্টরূপ দেখে অবাক হয়ে গিয়েছিল। পাঁচদিন আগেও বর্ষার জলে পরিপুষ্ট নদীর জলস্রোতে যে চাঞ্চল্য সে দেখে গিয়েছিল, সে চাঞ্চল্য ছিল পরিপূর্ণতার। আজ সেই নদী খেপে গিয়ে গাঢ় পঙ্কিল জল ফুলেফেঁপে ফেনায়িত হয়ে ছুটে চলেছে। তাই তার চার বছরের চেনা নদীর মূর্তিকে নদেরচাদের যেন আরও বেশি ভয়ংকর, আরও বেশি অপরিচিত বলে মনে হয়।

প্রশ্নঃ ‘বড়ো ভয় করিতে লাগিল নদেরচাদের।’ – নদেরচাঁদের ভয়ের স্বরূপ আলোচনা করো।

উত্তরঃ ‘নদীর বিদ্রোহ’ গল্পে আমরা দেখি, নদীবক্ষে নির্মিত যে ব্রিজের ধারকস্তম্ভের প্রান্তে বসে নদেরচাদ ভয়ংকরী নদী জলরাশির উন্মাদনা লক্ষ করছিল, তার মাত্র কয়েক হাত নীচেই ছিল বিপুল বিস্ফারিত জলরাশি। এরপর প্রবল বৃষ্টি নামলে নদীর জল ও বৃষ্টিপাতের শব্দ মিলেমিশে যে চাপা গর্জন সৃষ্টি করে, তা নদেরচাদকে আতঙ্কে অবশ করে তোলে।

নদেরচাঁদ এক অদ্ভূত অবসন্নতা আর বিবশতায় আক্রান্ত হয়ে পড়ে। তার মন জানত, সেখান থেকে উঠে চলে যাওয়াই যথাযথ সিদ্ধান্ত। কিন্তু তার শরীর যেন কিছুতেই সায় দিচ্ছিল না। তার এই আতঙ্কের উৎস ছিল সংবেদনশীল মন, সে বুঝে গিয়েছিল নদীর এই ভয়াবহতার কারণ হল, মানবসভ্যতার বিরুদ্ধে প্রকৃতির যুদ্ধঘোষণা। মানুষ যুগ যুগ ধরে প্রকৃতিকে বশ মানাতে গিয়ে এভাবেই নিজের বিপদ ডেকে এনেছে। প্রকৃতিপ্রেমিক নদেরচাঁদ নদীর এই বিদ্রোহ অনুভব করেছিল। সে বুঝেছিল, এই ক্ষিপ্ত নদী প্রতিশোধ নিতে বাঁধ ও ব্রিজ ভেঙে নিজের পথ পরিষ্কার করে নেবে। আর সেই বিক্ষুব্ধ নদীর সামনে মানবসভ্যতার একমাত্র প্রতিনিধিরূপে নদেরচাঁদ সন্ত্রস্ত আর আতঙ্কিত বোধ করে।

প্রশ্নঃ ‘ত্রিশ বছর বয়সে নদীর জন্য নদেরচাঁদের এত বেশি মায়া একটু অস্বাভাবিক।’ – মায়াকে ‘অস্বাভাবিক’ বলা হয়েছে কেন? এই অস্বাভাবিকত্বের পিছনে নদেরচাঁদ কী কৈফিয়ত পেশ করত।

উত্তরঃ ‘নদীর বিদ্রোহ’ গল্পের নায়ক নদেরচাদের নদীর প্রতি অতিরিক্ত মায়াকে ‘অস্বাভাবিক’ উন্মাদনা ছিল। একটা দিনও সে নদী অদর্শনে থাকতে পারত না। টানা পাঁচ দিন অবিশ্রান্ত বৃষ্টির জন্য নদীর সঙ্গে সাক্ষাৎ না হওয়ায় সে প্রায় পাগল বলার কারণ হয়ে যায়। ত্রিশ বছর বয়সি নদেরচাঁদের এই আচরণ সাধারণ মানুষের কাছে ছেলেমানুষি বলে মনে হত। তা ছাড়া তার মতো একজন গুরুত্বপূর্ণ পদাধিকারী ও প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তির এমন আচরণ মোটেই স্বাভাবিক নয় বলেই, একথা বলা হয়েছে।

নদীর প্রতি নদেরচাদের আকর্ষণ ও উন্মত্ততা যে অস্বাভাবিক তা নদেরচাঁদ নিজেও জানত। নিজের এই অস্বাভাবিকতা নিয়ে তার কোনো দুর্ভাবনা ছিল না, বরং সে তা নিয়ে আনন্দই অস্বাভাবিকত্বের উপভোগ করত। আর এই অস্বাভাবিক আচরণের কৈফিয়ত দেওয়ার তাগিদ সে নিজে থেকেই অনুভব করেছিল। কৈফিয়ত হিসেবে সে নিজের নদীর ধারে ও জন্মানো ও বেড়ে ওঠার কথা জানিয়েছে। নদীর সঙ্গে তার আন্তরিকতার কথাও সে বলেছে যে নদীটিকে ঘিরে সে বড়ো হয়েছে সেটি শীর্ণকায় হলেও নদেরচাঁদ অসুস্থ আত্মীয়ার মতো তাকে ভালোবেসেছে এবং মৃত্যুপথযাত্রী আত্মীয়ার জন্য কষ্ট পাওয়ার মতো অনাবৃষ্টিতে প্রায় শুকিয়ে যাওয়া নদীটিকে দেখে ব্যথিত হয়েছে। পরবর্তীকালে কর্মক্ষেত্রের পাশে নদীর উপস্থিতি তাকে আনন্দিত করেছিল।

প্রশ্নঃ ‘একটা বেদনাদায়ক চেতনা কিছুক্ষণের জন্য নদেরচাদকে দিশেহারা করিয়া রাখিল, তারপর সে অতিকষ্টে উঠিয়া দাঁড়াইল।’ – নদেরচাদ দিশেহারা হয়ে পড়েছিল কেন? তার উঠে দাঁড়াতে কষ্ট হওয়ার কারণ কী ছিল?

উত্তরঃ পাঁচ দিন অবিশ্রান্ত বৃষ্টির পর নদীর রূপ দেখে নদেরচাঁদ প্রথমে আমোদিত হলেও, অল্পক্ষণ পরেই তার মন থেকে ছেলেমানুষি উধাও হয়ে গিয়েছিল। আবার বৃষ্টি শুরু হওয়ায় স্রোতপূর্ণ নদীর শব্দ ও বৃষ্টির আওয়াজ মিলেমিশে এমন একটা শব্দের সৃষ্টি করল, যা শুনে সে আতঙ্কিত ও আচ্ছন্ন হয়ে পড়ল। সেখান থেকে উঠে যাওয়ার ক্ষমতাটুকুও সে হারিয়ে ফেলল। প্রকৃতির রোষের কাছে মানুষ অসেরচাদের দিশেহারা যে কতটা অসহায় তার একটা ভীতিময় অনুভূতি হয়ে পড়ার কারণ নদেরচাদের চেতনা ও অবচেতন মনের মধ্যেকার ফারাক ঘুচিয়ে দিল। এমন সময় একটা ট্রেন চলে যাওয়ার আকস্মিক শব্দের মতন বেদনাদায়ক আঘাতে তার ঘোর ভাঙে। কিছুক্ষণের জন্য তার ভারাক্রান্ত মন তাকে দিশেহারা করে তোলে।

মানুষ যখন আতঙ্কিত হয় তখন তার মধ্যে দু–ধরনের প্রতিক্রিয়া দেখা যায়। হয় সে অতিসক্রিয় হয়ে ঘটনাস্থল থেকে পালায়, নয় সে স্থির ও কিংকর্তব্যবিমূঢ় হয়ে পড়ে। এক্ষেত্রে নদীর গর্জন এবং বৃষ্টির শব্দ তার মনে যে প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করছিল, তাতে সে হতভম্ব আর অবসন্ন হয়ে পড়েছিল। এইজন্য নদেরচাদ ব্রিজের ওপর থেকে উঠে যেতে চাইলেও তার শরীর মন তাতে সংগত করতে পারেনি। কিন্তু ট্রেন চলে যাওয়ার মতো কোনো একটি প্রচণ্ড শব্দে যখন তার সংবিৎ ফিরল, তখন সে অতিকষ্টে উঠে দাঁড়াল।

প্রশ্নঃ ‘দুদিন ধরিয়া বাহিরের অবিশ্রান্ত বর্ষণের সঙ্গে সুর মিলাইয়া নদেরচাদ বউকে প্রাণপণে একখানা পাঁচপৃষ্ঠাব্যাপী বিরহ–বেদনাপূর্ণ চিঠি লিখিয়াছে,’ – ‘অবিশ্রান্ত বর্ষণের সঙ্গে সুর মিলাইয়া’–র অর্থ কী? চিঠির পরিণতি যা হয়েছিল, তার পিছনের কারণটি ব্যাখ্যা করো।

উত্তরঃ যুগে যুগে বর্ষার আবহের সঙ্গে ভালোবাসার সম্পর্ক স্বীকৃত। এই ব্যাকুলতার আভাস মেলে কালিদাস, রবীন্দ্রনাথ কিংবা বৈষুব ‘অবিভ্রান্ত বর্ষণের সঙ্গে সুর মিলাইয়া পদকর্তাদের লেখা কাব্যের ছত্রে ছত্রে।’ মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘নদীর বিদ্রোহ’ গল্পের নায়ক নদের চাঁদ দীর্ঘদিন কর্মসূত্রে ঘরছাড়া হওয়ার কারণে স্ত্রী বিচ্ছিন্ন। তাই পাঁচ দিন ধরে একটানা বৃষ্টি তার বিরহব্যথাকে আরও প্রবল করে তুলেছিল। বৃষ্টির সুরের কোমলতা মাখিয়ে সে স্ত্রীকে পাঁচ পৃষ্ঠার একটি চিঠি লিখেছিল। চিঠির পরিণতির পিছনে প্রকৃত কারণ বহু যত্নে ও আবেগে স্ত্রীকে লেখা চিঠি নদেরচাঁদ ছিঁড়ে ছিঁড়ে নদীর ফেনিল জলস্রোতে ভাসিয়ে দিয়েছিল। এর কারণ এই নয় যে, সে চিঠিটি স্ত্রীর হাতে পৌঁছে দিতে উৎসাহী ছিল না। বরং এর কারণটি ছিল অত্যন্ত শিশুসুলভ। সে ভয়ংকরী নদীর উত্তাল জলরাশির সঙ্গে খেলায় মেতেছিল। খেলার অন্য কোনো সরঞ্জাম না–পেয়ে নদেরচাঁদ পকেট থেকে চিঠিটি বের করে ছিঁড়ে নদীর জলে ভাসাতে থাকে। নদী কীভাবে দ্রুততার সঙ্গে চিঠিগুলি ভাসিয়ে নিয়ে যায়, তাই দেখাই তার উদ্দেশ্য ছিল। এসবের পিছনেই ছিল নদেরচাঁদের নদী সম্পর্কে অস্বাভাবিক পাগলামি। মানুষের কাছে তার প্রিয়জন সবচেয়ে আপন। কিন্তু নদেরচাঁদের আচরণ বুঝিয়ে দেয় যে, তার কাছে নদীর চেয়ে বেশি আপনজন আর কেউ নেই। এখানে নদী আসলে তার প্রেয়সীতে রূপান্তরিত হয়।

প্রশ্নঃ নদেরচাদের চরিত্রটি আলোচনা করো।

উত্তরঃ ‘নদীর বিদ্রোহ’ গল্পটি নদীপ্রেমিক নদেরচাদের তীব্র আবেগ ও আকুলতাকে ঘিরেই গড়ে উঠেছে। গল্পের নিয়ন্ত্রক বা কেন্দ্রীয় চরিত্র যে সে এবিষয়ে কোনো সন্দেহ নেই।

নদেরচাঁদের চরিত্রের যে–দিকটি সবচেয়ে প্রকট, তা হল নদীর প্রতি তার তীব্র আকর্ষণ। নদীর ধারে বড়ো হয়ে ওঠার দরুন নদীর প্রতি তার টান থাকা স্বাভাবিক। তার গ্রামের ক্ষীণকায়া মীর প্রতি তীব্র নদীটিকে সে ভালোবাসত এক অসুস্থ আত্মীয়ার আকর্ষণ মতোই। এমনকী তার কর্মস্থলের কাছের নদীটিকে প্রতিদিন না–দেখেও সে থাকতে পারত না। নদীর প্রতি তার এই টান যে অস্বাভাবিক, তা বুঝলেও এই পাগলামিটা সে উপভোগ করত। আকোপ্রবণতা অস্থিরতা নদেরচাদের নদীর প্রতি ভালোবাসা, বর্ষায় স্ত্রীর বিরহে কাতর হয়ে ওঠা এগুলি আবেগপ্রবণতার লক্ষণ। আবার বিরহে কাতর হয়ে স্ত্রীকে লেখা চিঠি খেলার ছলে নদীর স্রোতে ভাসিয়ে দেয় নদেরচাঁদ। এ থেকে বোঝা যায়, তার মধ্যে কাজ করে চলে এক অস্থিরতা। তাই অবিশ্রান্ত বৃষ্টিতে পাঁচদিন নদীর কাছে যেতে না পেরে ছটফট করে সে। নদীই যেন নিঃসঙ্গ নদেরচাঁদের প্রেয়সীতে রূপান্তরিত হয়।

সংবেদনশীলতা নদেরচাঁদ নদীর ভাষা বুঝত। নদীর ভয়ংকরী রূপ দেখে সে বুঝতে পেরেছিল, সভ্যতার নামে প্রকৃতিকে পদানত করলে শেষপর্যন্ত তা ধ্বংসই ডেকে আনবে। তার এই উপলব্ধি প্রকৃতির প্রতি ভালোবাসা ও সংবেদনশীলতারই পরিচয়। তাই সে যে ব্রিজ নিয়ে গর্ব করেছিল, তার প্রয়োজনীয়তা বিষয়েই সংশয় প্রকাশ করে। নদেরচাঁদ যতই আবেগপ্রবণ হোক, নদীর প্রতি তার যতই টান থাকুক, তা কিন্তু কখনোই তার কর্তব্য পালনের পথে বাধা হয়ে দাঁড়ায় না। স্টেশনমাস্টার হিসেবে সে তার দায়িত্ববোধ দায়িত্ব যথাযথভাবেই পালন করে। এইসব মিলিয়ে নদেরচাঁদ একটি ব্যতিক্রমী চরিত্র হিসেবেই উপস্থাপিত হয়েছে। গল্পের শেষে তার নিয়তি–নির্দিষ্ট মৃত্যু যেন মানুষের নিজের তৈরি যন্ত্রসভ্যতার হাতে অসহায় ও করুণ পরিণতির এক আশ্চর্য ভাষ্য হয়ে ওঠে।

প্রশ্নঃ ‘এই ভীষণ মধুর শব্দ শুনিতে শুনিতে সর্বাঙ্গ অবশ, অবসন্ন হইয়া আসিতেছে। – উক্ত শব্দকে ‘ভীষণ মথুর’ এই বৈপরীত্যসূচক বিশেষণে বিশেষিত করার কারণ কী? এই শব্দ শোনার সঙ্গে সর্বাঙ্গ অবশ, অবসন্ন হয়ে আসার সম্পর্ক কী?

উত্তরঃ পাঁচ দিন অবিশ্রান্ত বৃষ্টির পর অভ্যাসবশত নদেরচাঁদ নদীর রূপ দেখতে যায়। ধারকস্তম্ভের শেষ প্রান্তে বসে নদীর রূপ দেখে সে বেশ ‘ভীষ মধুর’ – বৈপরীত্যসূচক ডিও বিশোষণ, আমোদিত বোধ করে। আবার আকাশ ভেঙে বৃষ্টি নামে। সেই বৃষ্টির শব্দ আর নদীর জলের গর্জন মিলেমিশে তাকে বিবশ করে। নদীর উন্মত্ততা ও বৃষ্টির প্রাবল্য তার মনে আতঙ্কের সঞ্চার করে। ভয়ংকর জলতরঙ্গের চাপা গর্জন আর বৃষ্টির শব্দ মিলেমিশে যে–ঐক্যতান সৃষ্টি করেছিল, তা শ্রুতিমধুর হলেও ভয়ংকর এই শব্দের অভিঘাত নদেরচাঁদকে বিবশ ও আতঙ্কিত করে তুলেছিল। শব্দের এই দ্বিমুখী ক্রিয়ার জন্যই ‘ভীষণ মধুর’ বিশেষণটি ব্যবহৃত হয়েছে।

ভয় মানুষকে অতিসক্রিয় বা নিষ্ক্রিয় করে দেয়। সক্রিয়তা তাকে বিপদস্থল থেকে দূরে সরিয়ে নিয়ে যায় আর নিষ্ক্রিয়তা তাকে সেখানেই আতঙ্কের গভীরে নিমজ্জিত করে। নদীর ধ্বংসাত্মক ভয়াবহতা, তার রুষ্ট গর্জন ও বৃষ্টির প্রাবল্য সব কিছু মিলিয়ে যে–ভয় নদেরচাঁদের মধ্যে সৃষ্টি হয়েছিল, তা তাকে বিবশ ও অবসন্ন করে তুলেছিল। সে পরিস্থিতির প্রতিকূলতা উপলব্ধি করেও তাই সেখান থেকে উঠে যেতে পারেনি। কেন না তার মানসিক ও শারীরিক জোর সে মুহূর্তে ছিল না।

===============================================================

নদীর বিদ্রোহ অধ্যায় থেকে আরোও প্রশ্ন ও উত্তর দেখুন

================================================================

©kamaleshforeducation.in(2023)

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

পথের দাবী

 

 

পথের দাবী (গল্প) শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় – মাধ্যমিক দশম শ্রেণীর বাংলা প্রশ্ন ও উত্তর 

MCQ | পথের দাবী (গল্প) শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় – মাধ্যমিক বাংলা প্রশ্ন ও উত্তর  

  1. পুলিশস্টেশনে যারা মোটঘাট নিয়ে বসেছিল , তারা জাতিতে ছিল –

(A) বমি

(B) বাঙালি

(C) ইংরেজ 

(D) হিন্দিভাষী

Ans: (B) বাঙালি

  1. পুলিশস্টেশনে মোটঘাট নিয়ে বসে থাকা বাঙালির সংখ্যা হল— 

(A) আট জন

(B) ছ জন 

(C) পাঁচ জন 

(D) সাত জন

Ans: (B) ছ জন

  1. জগদীশবাবু পুলিশস্টেশনে বসে থাকা বাঙালিদের যেসব জিনিস খুলে দেখছিলেন , তা হল –

(A) টিনের তোরঙ্গ

(B) ছোটো – বড়ো পুঁটলি

(C) টিনের তোরঙ্গ ও বিছানাপত্র

(D) ঘটিনের তোরঙ্গ ও ছোটো – বড়ো পুঁটলি

Ans: (D) ঘটিনের তোরঙ্গ ও ছোটো – বড়ো পুঁটলি

  1. যে – লোকটির প্রতি পুলিশের অত্যন্ত সন্দেহ ছিল , তাকে আটকে রাখা হয়েছে—

(A) একটি ঘরে

(B) গারদে

(C) খাঁচায়

(D) দড়ির বাঁধনে

Ans: (A) একটি ঘরে

  1. জগদীশবাবু পেশায় ছিলেন –

(A) তেলের কারখানার মিস্ত্রি 

(B) পুলিশ 

(C) ডাক্তার 

(D) পিয়াদা

Ans: (B) পুলিশ

  1. পুলিশ যাঁর খোঁজে তল্লাশি করছিল , তিনি ছিলেন একজন—

(A) রাজদ্রোহী 

(B) দেশদ্রোহী 

(C) খুনি জন 

(D) অপরাধী

Ans: (A) রাজদ্রোহী

  1. পুলিশস্টেশনে বসে থাকা বাঙালিরা কাজ করত –

(A) বর্মা অয়েল কোম্পানিতে 

(B) বর্মা পুলিশে 

(C) ভামো শহরে

(D) ম্যানডালে

Ans: (A) বর্মা অয়েল কোম্পানিতে

  1. বর্মা অয়েল কোম্পানি অবস্থিত ছিল –

(A) উত্তর ব্রহ্মদেশে 

(B) মিক্‌থিলায়

(C) ভামো শহরে

(D) রেঙ্গুনে

Ans: (A) উত্তর ব্রহ্মদেশে

  1. পোলিটিক্যাল সাসপেক্টের নাম ছিল –

(A) গিরীশ মহাপাত্র

(B) নিমাইবাবু 

(C) সব্যসাচী মল্লিক 

(D) রামদাস তলওয়ারকর

Ans: (C) সব্যসাচী মল্লিক

  1. গিরীশ মহাপাত্রের বয়স হল – 

(A) পঞ্চাশ – বাহান্ন বছর 

(B) কুড়ি – পঁচিশ বছর 

(C) ত্রিশ – বত্রিশ বছর 

(D) ষাট – সত্তর বছর 

Ans: (C) ত্রিশ – বত্রিশ বছর

 

  1. গিরীশ মহাপাত্রের চেহারার মধ্যে সবচেয়ে আকর্ষণীয় ছিল –

(A) তার কথা বলার কায়দা 

(B) তার উজ্জ্বল চোখ 

(C) তার হাসি 

(D) তার ফরসা রং 

Ans: (B) তার উজ্জ্বল চোখ

  1. গিরীশ মহাপাত্রের চোখ দুটি ছিল – 

(A) ধূর্ততায় ভরা

(B) উদাস ও স্নিগ্ধ

(C) নিষ্প্রভ ও বিষণ্ণ 

(D) গভীর জলাশয়ের মতো

Ans: (D) গভীর জলাশয়ের মতো

  1. গিরীশ মহাপাত্রের চেহারা ও পোশাক পরিচ্ছদ ছিল—

(A) পরিপাটি ও সাফসুতরো 

(B) নোংরা ও বিরক্তিকর 

(C) সাদাসিধে

(D) অদ্ভুত ও হাস্যকর

Ans: (D) অদ্ভুত ও হাস্যকর

  1. গিরীশ মহাপাত্রের চুলে যে – গন্ধ ছিল , তার কারণ ছিল— 

(A) গঞ্জিকা 

(B) প্রসাধনী

(C) বহুদিন স্নান না করা

(D) নেবুর তেল

Ans: (D) নেবুর তেল

  1. গিরীশ মহাপাত্রের ট্যাকে পাওয়া গিয়েছিল –

(A) দুটি টাকা ও গণ্ ডা – ছয়েক পয়সা

(B) দুটি টাকা ও গণ্ডা – চারেক পয়সা 

(C) এটি একটি টাকা ও গণ্ডা – ছয়েক পয়সা 

(D) একটি টাকা ও গণ্ডা – চারেক পয়সা

Ans: (C) এটি একটি টাকা ও গণ্ডা – ছয়েক পয়সা

  1. ‘ দয়ার সাগর ! পরকে সেজে দি , নিজে খাইনে ।’— বস্তুা হলেন –

(A) নিমাইবাবু

(B) জগদীশবাবু

(C) অপূর্ব 

(D) গিরীশ মহাপাত্র

Ans: (A) নিমাইবাবু

  1. ‘ বুড়োমানুষের কথাটা শুনো ।’- ‘ বুড়ো মানুষটি হলেন – 

(A) জগদীশবাবু 

(B) অপূর্ব 

(C) গিরীশ মহাপাত্র

(D) নিমাইবাবু

Ans: (C) গিরীশ মহাপাত্র

  1. মহাপাত্রের সঙ্গে তার যেসব মালপত্র ছিল , তা হল –

(A) ভাঙা টিনের তোরা ও চাটাই জড়ানো ময়লা বিছানা 

(B) ভাঙা টিনের তোরা ও ছোটো – বড়ো পুঁটলি 

(C) টিনের তোরা ও একটি কাপড়ের ব্যাগ

(D) একটি কাপড়ের ব্যাগ ও চাটাই জড়ানো ময়লা বিছানা

Ans: (A) ভাঙা টিনের তোরা ও চাটাই জড়ানো ময়লা বিছানা

  1. অপূর্বর অন্যমনস্কতা যে লক্ষ করেছিল , সে হল –

(A) গিরীশ মহাপাত্র 

(B) রামদাস তলওয়ারকর

(C) তেওয়ারি

(D) নিমাইবাবু

Ans: (B) রামদাস তলওয়ারকর

  1. এতবড়ো কার্যকুশলা মেয়ে আর যে কেহ আছে মনে হয় না হে তলওয়ারকর । কার্যকুশলা মেয়েটি হল –

(A) তলওয়ারকরের স্ত্রী 

(B) অপূর্বর স্ত্রী 

(C) উপরতলার বাসিন্দা ক্রিশ্চান মেয়েটি 

(D) অপূর্বর বোন

Ans: (C) উপরতলার বাসিন্দা ক্রিশ্চান মেয়েটি

  1. তেওয়ারি বর্মা নাচ দেখতে যে স্থানে গিয়েছিল , তার নাম –

(A) ফয়া 

(B) শোএবো

(C) মিথিলা

(D) এনাভাং

Ans: (A) ফয়া

  1. সব্যসাচী মল্লিক পেশায় ছিল— 

(A) ডাক্তার 

(B) পুলিশ

(C) কেরানি

(D) শিক্ষক

Ans: (D) ডাক্তার

  1. গিরীশ মহাপাত্রের জামার রং ছিল – 

(A) গেরুয়া 

(B) রামধনু

(C) সাদা

(D) নীল

Ans: (B) রামধনু

  1. অথচ , গভর্নমেন্টের কত টাকাই না এরা বুনো হাঁসের পিছনে ছুটোছুটি করে অপব্যয় করলে ।’— ‘ বুনো হাঁসের পিছনে ছুটোছুটি বলতে বোঝানো হয়েছে –

(A) শিকার করা 

(B) অসম্ভব কল্পনা করা

(C) শারীরিক কারণে দৌড়োনো

(D) অপ্রাপ্য বস্তুর চাহিদা

Ans: (D) অপ্রাপ্য বস্তুর চাহিদা

  1. ‘ এমনি তাদের অভ্যাস হয়ে গেছে । যা অভ্যাস হওয়ার কথা বলা হয়েছে , তা হল –

(A) সময়মতো খাওয়া

(B) পুলিশের মার খাওয়া

(C) অপমানিত হওয়া

(D) বিশৃঙ্খলা

Ans: (C) অপমানিত হওয়া

  1. বড়োসাহেব অপূর্বকে পাঠিয়েছিলেন— 

(A) ভামো – তে

(B) ম্যানডালে

(C) উত্তর ব্রহ্মদেশে

(D) রেঙ্গুনে

Ans: (A) ভামো – তে

  1. অপূর্ব ও তলওয়ারকরের সঙ্গে ভামো – তে যারা গিয়েছিল , তারা হল –

(A) আরদালি ও পেয়াদা

(B) তেওয়ারি ও পেয়াদা

(C) তেওয়ারি ও আরদালি

(D) পেয়াদা ও বড়োসাহেব

Ans: (B) তেওয়ারি ও পেয়াদা

  1. যে – দেশটিকে ম্লেচ্ছদেশ বলা হয়েছে , সেটি হল –

(A) ভারতবর্ষ বর্মা

(B) পাকিস্তান 

(C) ইংল্যান্ড  

(D) বর্মা

Ans: (D) বর্মা

  1. ‘ তোমার চিন্তা নেই ঠাকুর ।’— ‘ ঠাকুর ‘ বলতে যাকে বোঝানো হয়েছে , তার নাম –

(A) তেওয়ারি 

(B) তলওয়ারকর 

(C) নিমাইবাবু

(D) গিরীশ মহাপাত্র

Ans: (A) তেওয়ারি

  1. ‘ আশ্চয্যি নেহি হ্যায় বাবুসাহেব ।’— ‘ বাবুসাহেব টি হলেন –

(A) সব্যসাচী মল্লিক

(B) অপূর্ব 

(C) বড়োবাবু 

(D) তলওয়ারকর

Ans: (D) তলওয়ারকর

  1. ‘ পথের দাবী ’ কাহিনিটি যে – উপন্যাসের অংশ বিশেষ , তা হল –

(A) অরক্ষণীয়া 

(B) পথের দাবী

(C) সব্যসাচী

(D) পল্লীসমাজ

Ans: (B) পথের দাবী

  1. ‘ কাকাবাবু , এ লোকটিকে আপনি কোনো কথা জিজ্ঞেস না করেই ছেড়ে দিন …’- এক্ষেত্রে অপূর্বর ‘ কাকাবাবু ’ কে ?

(A) জগদীশবাবু

(B) গিরিশ মহাপাত্র 

(C) নিমাইবাবু 

(D) রামদাস তলওয়ারকর

Ans: (C) নিমাইবাবু

  1. ‘ গভর্নমেন্টের কত টাকাই না এরা বুনো হাঁসের পিছনে ছুটোছুটি করে অপব্যয় করলে ! ’ — ‘ বুনোহাঁস ‘ বলতে কী বোঝানো হয়েছে ?

(A) জংলি হাঁসদের 

(B) চোর – ডাকাতদের

(C) বিদ্রোহীদের

(D) ইংরেজ কর্মচারীদের

Ans: (B) চোর – ডাকাতদের

  1. কোথা থেকে গিরীশের দুই বন্ধুর আসার কথা ছিল ?

(A) বর্মা থেকে

(B) ভামো থেকে

(C) রেঙ্গুন থেকে

(D) এনাঞ্ঝাং থেকে

Ans: (D) এনাঞ্ঝাং থেকে

  1. তুমি তো ইউরোপিয়ান নও ! ‘ — কথাটি অপূর্বকে কে বলেছিলেন ?

(A) রেঙ্গুনের সাব – ইনস্পেক্টর 

(B) বর্মা সাব – ইনস্পেক্টর 

(C) বড়োসাহেব 

(D) বর্মার জেলাশাসক

Ans: (C) বড়োসাহেব

  1. “ গিরীশ মহাপাত্রের সাথে অপূর্বর পুনরায় কোথায় দেখা হয়েছিল ? 

(A) পুলিশ – স্টেশনে 

(B) রেলস্টেশনে

(C) জাহাজঘাটায় 

(D) বিমানবন্দরে

Ans: (B) রেলস্টেশনে

(১) বহু বিকল্প উত্তর ভিত্তিক প্রশ্নোত্তর :

১.১ ব্রিটিশ সরকার শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের উপন্যাস টি বাজেয়াপ্ত করে, সেটি হল – 

(ক) শ্রীকান্ত

(খ) পথের দাবী

(গ) চরিত্রহীন

(ঘ) গৃহদাহ

উত্তর : (খ) পথের দাবী

১.২ তেলের খনির কারখানার শ্রমিকরা চাকরির উদ্দেশ্যে কোথায় গিয়েছিল?

(ক) রেঙ্গুন 

(খ) ডিগবয়

(গ) আমেদাবাদ

(ঘ) মায়ানমার

উত্তর: (ক) রেঙ্গুন

১.৩ পোলিটিক্যাল সাসপেক্ট সব্যসাচী মল্লিক কে হাজির 

(ক) পুলিশ অফিসারের সামনেকরা হয় –

(খ) নিমাই বাবুর সামনে

(গ) অপূর্বর সামনে

(ঘ) জগদীশবাবুর সামনে

উত্তর: (খ) নিমাইবাবুর সামনে

১.৪ মুগ্ধ হয়ে গিরীশ মহাপাত্রের দৃষ্টির দিকে তাকিয়ে ছিল –

(ক) অপূর্ব

(খ) পুলিশ অফিসার

(গ) নিমাইবাবু

(ঘ) জগদীশবাবু

উত্তর: (ক) অপূর্ব

১.৫ “… বাবুটির স্বাস্থ্য গেছে, কিন্তু শখ ষোল আনা বজায় আছে তা স্বীকার করতে হবে।” – কথাটি বলেছে –

(ক) নিমাই বাবু

(খ) জগদীশবাবু

(গ) অপূর্ব

(ঘ) রামদাস

উত্তর: (ক) নিমাই বাবু

১.৬ “কাকাবাবু, এই লোকটিকে আপনি কোন কথা জিজ্ঞেস না করে ছেড়ে দিন…” -অপূর্ব কাকে ‘কাকাবাবু’ বলে সম্বোধন করেছেন?

(ক) রামদাসকে

(খ) জগদীশবাবুকে

(গ) নিমাইবাবুকে

(ঘ) তেত্তয়ারিকে

উত্তর: (গ) নিমাইবাবুকে

১.৭ “আর যাই হোক, যাকে খুঁজছেন তার কালচারের কথাটা একবার ভেবে দেখুন।” – বক্তা হলেন –

(ক) অপূর্ব

(খ) পুলিশ অফিসার

(গ) নিমাইবাবু

(ঘ) জগদীশবাবু

উত্তর: (ক) অপূর্ব

১.৮ “পথে কুড়িয়ে পেলাম…” – বক্তা পথে কি কুড়িয়ে পেয়েছিলেন?

(ক) দেশলাই বাক্স

(খ) জ্যামিতি বক্স

(গ) দুইশো টাকা

(ঘ) গাঁজার কলকে

উত্তর (ঘ) গাঁজার কলকে

১.৯ “বুড়ো মানুষের কথাটা শুনো।” – ‘বুড়ো মানুষ’ বলতে কাকে বোঝানো হয়েছে?

(ক) জগদীশবাবুকে

(খ) নিমাইবাবুকে

(গ) রামদাসকে

(ঘ) গিরিশ মহাপাত্রকে

উত্তর (খ) নিমাইবাবুকে

১.১০ “দয়ার সাগর! পরকে সেজে দি, নিজে খাইনে।” – উক্তিটির বক্তা হলেন –

(ক) গিরিশ মহাপাত্র

(খ) নিমাইবাবু

(গ) অপূর্ব

(ঘ) জগদীশবাবু

উত্তর (ঘ) জগদীশবাবু

১.১১ “আচ্ছা, তুমি এখন যেতে পারো মহাপাত্র।” – কথাটি কে বলেছেন?

(ক) জগদীশবাবু

(খ) নিমাইবাবু

(গ) পুলিশ অফিসার

(ঘ) অপূর্ব

উত্তর (খ) নিমাইবাবু

১.১২ “কিন্তু এই জানোয়ারটাকে ওয়াজ করবার দরকার নেই বড়বাবু।” – কথাটি কে বলেছেন?

(ক) গিরিশ মহাপাত্র

(খ) অপূর্ব

(গ) রামদাস

(ঘ) জগদীশবাবু

উত্তর (ঘ) জগদীশবাবু

১.১৩ “কোন এক অদৃশ্য অপরিজ্ঞতা রাজবিদ্রোহী চিন্তাতেই ধ্যানস্থ হয়ে রইল।” – এখানে রাজদ্রোহী কে?

(ক) সব্যসাচী মল্লিক

(খ) গিরিশ মল্লিক

(গ) গিরিশ মহাপাত্র

(ঘ) সব্যসাচী দেব

উত্তর (ক) সব্যসাচী মল্লিক

১.১৪ “তাহার পোশাক-পরিচ্ছদের বাহার মনে পড়িয়া হঠাৎ হাসির ছটায় যেন দম আটকাইবার উপক্রম হল।” – এখানে যার কথা বলা হয়েছে তিনি হলেন –

(ক) একজন বিপ্লবী

(খ) জেল ফেরত আসামি

(গ) গিরিশ মহাপাত্র

(ঘ) জেল পলাতক বিপ্লবী

উত্তর (গ) গিরিশ মহাপাত্র

১.১৫ “বাবাই একদিন এঁর চাকরি করে দিয়েছিলেন।” – এঁর বলতে এখানে কাকে বোঝানো হয়েছে?

(ক) রামদাসকে

(খ) নিমাইবাবুকে

(গ) জগদীশবাবুকে

(ঘ) সব্যসাচী মল্লিককে

উত্তর : (খ) নিমাইবাবুকে

১.১৬ “বলিতে বলিতে কণ্ঠস্বর তাহার তীক্ষ্ণ এবং চোখের দৃষ্টি প্রখর হইয়া উঠিল” – এখানে কার কথা বলা হয়েছে?

(ক) জৈনিক দেশ প্রেমিক

(খ) তলওয়ারকর

(গ) অপূর্ব

(ঘ) রামদাস

উত্তর : (গ) অপূর্ব

১.১৭ “কার লাঞ্ছনা এই কালো চামড়ার নিচে কম জ্বলে না” – এখানে কোন লাঞ্ছনার কথা বলা হয়েছে?

(ক) ফিরিঙ্গি ছেলেদের অপূর্বকে লাথি মেরে প্ল্যাটফর্ম থেকে বের করে দেওয়া

(খ) ট্রেনে অপূর্ব প্রতি পুলিসের অত্যাচার

(গ) বিপ্লবীদের ওপর পুলিশের অত্যাচার

(ঘ) ঘরে চুরি যাওয়ার কথা সাহেবের লাঞ্ছনা

উত্তর : (ক) ফিরিঙ্গি ছেলেদের অপূর্বকে লাথি মেরে প্ল্যাটফর্ম থেকে বের করে দেওয়া

১.১৮ “আমার অবর্তমানে সমস্ত বাড়ি তো তোমার” – কথাটি বলেছেন –

(ক) হেড কেরানি

(খ) ছোট সাহেব

(গ) মালিক

(ঘ) বড় সাহেব

উত্তর (ঘ) বড় সাহেব

১.১৯ “বামুনের ছেলে, বাংলা লেখাপড়া, শাস্তর-টাস্তর সবই কিছু কিছু শিখে ছিলাম” – উক্তিটির বক্তা হলেন – 

(ক) গিরিশ মহাপাত্র

(খ) অপূর্ব

(গ) নিমাইবাবু

(ঘ) রামদাস

উত্তর : (ক) গিরিশ মহাপাত্র

১.২০ “সে হাত বাড়াইয়া বন্ধুর করমর্দন করিলো।” – এখানে বন্ধুটি কে?

(ক) জগদীশবাবু

(খ) অপূর্ব

(গ) গিরিশ মহাপাত্র

(ঘ) নিমাইবাবু

উত্তর : (খ) অপূর্ব

১.২১ “ইচ্ছা করিলে আমি তোমাকে টানিয়া নিচে নামাইতে পারে” – কথাটি কে বলেছেন?

(ক) গিরিশ মহাপাত্র

(খ) বমা সাব-ইন্সপেক্টর

(গ) এক পুলিশ

(ঘ) অপূর্ব

উত্তর : (খ) বমা সাব-ইন্সপেক্টর

অতিসংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর | পথের দাবী (গল্প) শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় – মাধ্যমিক বাংলা প্রশ্ন ও উত্তর  

    1. ‘ পুলিশ স্টেশনে প্রবেশ করিয়া দেখা গেল – কী দেখা গেল ? 

    Ans: শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় রচিত ‘ পথের দাবী ‘ পাঠ্যাংশের আলোচ্য অংশে দেখা গেল , পুলিশস্টেশনের সামনের হলঘরে জনা ছয়েক বাঙালি বসে আছে আর পুলিশ তাদের মালপত্র তল্লাশি করছে । 

    2.‘ তাহাকে আর একটা ঘরে আটকাইয়া রাখা হইয়াছে । — কাকে আটকে রাখার কথা বলা হয়েছে ?

    Ans: ‘ পথের দাবী ‘ পাঠ্যাংশে গিরীশ মহাপাত্রর ছদ্মবেশীধারী রাজবিদ্রোহী সব্যসাচী মল্লিককে আটকে রাখার কথা বলা হয়েছে । বর্মা পুলিশ এই সন্দেহভাজনকে জিজ্ঞাসার জন্য আটক করেছিলেন ।

Ans: ‘ পথের দাবী ‘ পাঠ্যাংশে গিরীশ মহাপাত্রর ছদ্মবেশীধারী রাজবিদ্রোহী সব্যসাচী মল্লিককে আটকে রাখার কথা বলা হয়েছে । বর্মা পুলিশ এই সন্দেহভাজনকে জিজ্ঞাসার জন্য আটক করেছিলেন ।

  1. ‘ লোকটি কাশিতে কাশিতে আসিল । — লোকটির পরিচয় দাও । 

Ans: ‘ পথের দাবী ’ – তে লোকটি বলতে গিরীশ মহাপাত্রের ছদ্মবেশধারী রাজবিদ্রোহী সব্যসাচীর কথা বলা হয়েছে । সন্দেহবশত পুলিশ তাঁকে আটক করলেও পরে আচার – আচরণ ও বেশভূষা দেখে পুলিশ গিরীশকে ছেড়ে দেয় ।

  1. ‘ সহসা আশঙ্কা হয় , ‘ — কোন্ আশঙ্কার কথা বলা হয়েছে ?

Ans: শরৎচন্দ্রের ‘ পথের দাবী ‘ পাঠ্যাংশে রোগা চেহারার গিরীশ মহাপাত্র সামান্য কাশির পরিশ্রমে এতটাই হাঁপাতে থাকে যে , মনে হয় । মৃত্যু অবশ্যম্ভাবী । সেই মৃত্যু আশঙ্কার কথা বলা হয়েছে । 

  1. ‘ ভয় হয় এখানে খেলা চলিবে না , ‘ — উক্তিটি পরিস্ফুট করো । 

Ans: ‘ পথের দাবী ‘ রচনাংশে সব্যসাচী বিচিত্র পোশাকের ও অসুস্থতার আড়ালে নিজেকে লুকিয়ে রাখলেও তার বুদ্ধিদীপ্ত চোখ দুটিকে সে লুকোতে পারেনি । সে চোখের সামনে কপটতার চেয়ে সরে দাঁড়ানো ভালো ।

  1. ‘ কেবল এই জন্যই যেন সে আজও বাঁচিয়া আছে ।— ‘ এই জন্যই ’ বলার কারণ কী ?

Ans: ভগ্নস্বাস্থ্য গিরিশ মহাপাত্রকে দেখে মনে হত তার মৃত্যু আসন্ন । কিন্তু তার দৃষ্টির গভীরে এমন প্রাণশক্তি লুকিয়ে ছিল , যাকে মৃত্যুও ভয় পেত ।

  1. ‘ কী বল অপূর্ব । অপূর্বর কাছে কোন কথার সমর্থন আশা করা হয়েছে ?

Ans: ‘ পথের দাবী ‘ পাঠ্যাংশে নিমাইবাবু ভগ্নস্বাস্থ্য গিরীশ মহাপাত্রর বাহারি পোশাকের প্রতি অপূর্বর দৃষ্টি আকর্ষণ করে বাঙ্গার্থে যে – কথা বলেছিলেন তারই সমর্থনের কথা বলা হয়েছে । 

  1. তার আমি জামিন হতে পারি — কে , কীসের জামিন হতে চেয়েছে ?

Ans: নিমাইবাবু জিজ্ঞাসাবাদের জন্য গিরিশ মহাপাত্রকে আটক করলেও তার বেশভুষা ও আচরণ দেখে অপূর্বর ধারণা হয় সে সব্যসাচী নয় । তাই অপূর্ব উক্ত বিষয়ে জামিন হতে চায় ।

  1. ‘ নিমাইবাবু চুপ করিয়া রহিলেন । —নিমাইবাবুর চুপ করে থাকার কারণ কী ? 

Ans: গিরীশ মহাপাত্র যে রাজদ্রোহী সব্যসাচী নয় , অপূর্বর এই আশ্বাসে নিমাইবাবু আস্থা রাখলেও সব্যসাচীর প্রখর বুদ্ধি সম্পর্কেও তিনি ওয়াকিবহাল । তাই নিশ্চিত না হয়ে তিনি চুপ থেকেছেন ।

  1. ‘ দেখি তোমার ট্যাকে এবং পকেটে কী আছে ? ‘ গিরীশ মহাপাত্রের ট্যাকে ও পকেটে কী কী পাওয়া গিয়েছিল ?

Ans: গিরীশ মহাপাত্রের ট্যাক থেকে পাওয়া যায় একটি টাকা ও গণ্ডার ছয়েক পয়সা । পকেট থেকে পাওয়া যায় একটা লোহার কম্পাস ও ফুটরুল । এ ছাড়া বিড়ি – দেশলাই ও গাঁজার কলকেও পাওয়া যায় ।

  1. ‘ দেখো জগদীশ , কিরুপ সদাশয় ব্যক্তি ইনি । ব্যক্তিটিকে সদাশয় বলা হয়েছে কেন ?

Ans: নিমাইবাবু গিরীশ মহাপাত্রকে তল্লাশির সময় তার পকেটে গাঁজার কলকে পান । সে – সম্পর্কে প্রশ্ন করলে সে জানায় কলকেটি নিজের চেয়ে অপরের প্রয়োজনাথেই তার পকেটে । তাই নিমাইবাবুর এই উক্তি । 

  1. ‘ বুড়োমানুষের কথাটা শুনো।— বুড়ো মানুষ কোন্ কথা বলেছিলেন ?

Ans: শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় রচিত ‘ পথের দাবী ‘ পাঠ্যাংশে আলোচ্য অংশে বুড়ো মানুষ অর্থাৎ প্রৌঢ় নিমাইবাবু , গিরীশ মহাপাত্রকে তার স্বাস্থ্যের কথা মনে রেখে গাঁজা না খাওয়ার পরামর্শ দিয়েছিলেন ।

  1. ‘ বড়োবাবু হাসিতে লাগিলেন । বড়োবাবুর হাসার কারণ কী ছিল ?

Ans: গিরিশ মহাপাত্রের উৎকট নেবুর তেলের গন্ধে থানাসুদ্ধ সব লোকের মাথা ধরিয়ে দেওয়ায় জগদীশবাবু তাকে ছেড়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় । এটাই বড়োবাবুর হাসির কারণ ।

  1. ‘ অপূর্ব রাজি হইয়াছিল । কোন প্রসঙ্গে এ কথা বলা হয়েছে ? 

Ans: ‘ পথের দাবী ‘ পাঠ্যাংশে অপূর্বর সহকর্মী তলওয়ারকরের স্ত্রীর অনুরোধ ছিল বাড়ির কেউ না আসা পর্যন্ত অপূর্বকে তার হাতে তৈরি মিষ্টান্নে জলযোগ সম্পন্ন করতে হবে । সে – কথায় অপূর্ব রাজি হয়েছিল ।

  1. ‘ তা ছাড়া এত বড়ো বন্ধু।— ‘ বন্ধু ’ বলতে কার কথা বলা হয়েছে ?

Ans: ‘ পথের দাবী ‘ পাঠ্যাংশে ‘ বন্ধু ‘ বলতে অপূর্বের ঘরের উপরের তলায় বসবাসকারিণী ক্রিশ্চান মহিলার কথা বলা হয়েছে । তিনি অপূর্বর টাকাপয়সা ছাড়া বাকি জিনিস চোরের হাত থেকে রক্ষা করেছিলেন ।

  1. ইত্যবসরে এই ব্যাপার । কোন ব্যাপারের কথা বলা হয়েছে ?

Ans: ‘ পথের দাবী ‘ রচনাংশে অপূর্বর সহকর্মী তেওয়ারি , বর্মা নাচ দেখতে ফয়ায় যাওয়ার অবসরে তাদের বাড়িতে চুরি হয়ে গিয়েছিল । এই ব্যাপারের কথাই এখানে বলা হয়েছে । 

  1. ‘ তিনি আমার আত্মীয় , আমার পিতার বন্ধু।— ‘ তিনি ‘ প্রশ্ন বলতে যাঁর কথা বলা হয়েছে , তাঁর পরিচয় দাও

Ans: উদ্ধৃতাংশে ‘ তিনি ‘ বলতে থানার বড়োবাবু নিমাইবাবুকে বোঝানো হয়েছে । তিনি অপূর্বর বাবার বন্ধু তাই তার পিতৃস্থানীয় । নিমাইবাবুর চাকরির পিছনে অপূর্বর বাবার অবদান ছিল ।

  1. ‘ তিনি ঢের বেশি আমার আপনার।- কোন্ প্রসঙ্গে এই উক্তিটি করা হয়েছে ?

Ans: এক্ষেত্রে ‘ তিনি ‘ হলেন বিপ্লবী সব্যসাচী মল্লিক । ইংরেজ পুলিশ নিমাইবাবু অপূর্বর আত্মীয়স্থানীয় হলেও দেশপ্রেমিক সব্যসাচীকে দেশভক্ত অপূর্বর বেশি আপন বলে মনে হয়েছে ।

  1. ‘ বাবুজি , এসব কথা বলার দুঃখ আছে।— কোন্ সব কথা বললে দুঃখ হতে পারে বলা হয়েছে ?

Ans: উদ্ধৃতিটির বক্তা অপূর্বর সহকর্মী তলওয়ারকার । দুঃখ ঘটার মতো কথাগুলি হল ইংরেজ পুলিশ নিমাইবাবু অপূর্বর আত্মীয় হলেও স্বাধীনতাযুদ্ধে আত্মনিয়োগকারী সব্যসাচীই তার বেশি আপন ।

  1. ‘ কই এ ঘটনা তো আমাকে বলেননি / — কোন্‌ ঘটনা ?

Ans: ‘ ঘটনাটি ’ হল ‘ পথের দাবী ‘ – র কেন্দ্রীয় চরিত্র অপূর্বর বিনা দোষে ফিরিঙ্গি যুবকদের হাতে মার খাওয়া । এই অন্যায়ের প্রতিবাদ করতে গিয়ে ভাগ্যে জুটেছিল একরাশ লাঞ্ছনা ।

  1. ‘ মনে হলে দুঃখে লজ্জায় ঘৃণায় নিজেই যেন মাটির সঙ্গে মিশিয়ে যাই।— কোন কথা মনে করে অপূর্বের এই মনোবেদনা ?

Ans: অপূর্ব বিনাদোষে ফিরিঙ্গি যুবকদের হাতে মার খাওয়া সত্ত্বেও উপস্থিত ভারতীয়রা অভ্যেসবশত এর কোনো প্রতিবাদ করেনি । এই কথা মনে করেই অপূর্বর এই মনোকষ্ট ।

  1. ‘ আমার ইচ্ছা তুমি একবার সবগুলো দেখে আস / —কী দেখে আসার কথা হয়েছে ? 

Ans: ‘ পথের দাবী ‘ পাঠ্যাংশে অপূর্বর বড়োবাবু তাদের ভামো , ম্যান্ডালে , শোএবো , মিথিলা এবং প্রোমে – এর অফিসগুলির বিশৃঙ্খলা ও গোলযোগের কথা বলেছেন । সেগুলি অপূর্বকে দেখে আসার কথা বলেছেন ।

  1. ‘ এই সেই গিরীশ মহাপাত্র / — ‘ এই সেই ‘ বলার কারণ কী ?

Ans: অপূর্ব গিরীশ মহাপাত্রকে দু – বার দেখেছিল । প্রথমবার থানায় আর দ্বিতীয়বার রেলওয়ে স্টেশনে । অপূর্বর বর্ণনা অনুযায়ী রামদাস সহজেই তাকে চিনে নেয় ও এমন মন্তব্য করে ।

  1. কিন্তু তোমার বাপু একটা ভুল হয়েছে , কার ,, কোন ভুল হয়েছিল ?

Ans: অপূর্বকে প্রথমবার পুলিশ থানায় দেখে গিরীশ মহাপাত্র তাকে পুলিশের লোক ভাবে । দ্বিতীয়বার রেলস্টেশনে তাদের দেখা হলে , অপূর্ব তার ভুল ভাঙাবার জন্য তাকে এই কথা বলে ।

  1. কিন্তু এই হাসিতে তলওয়ারকর যোগ দিল না । তলওয়ারকর হাসিতে যোগ দিল না কেন ?

Ans: রেলস্টেশনে গিরীশ মহাপাত্রকে এক ঝলক দেখেই তলওয়ারকর তাকে পুলিশের সন্দেহভাজন বিপ্লবী সব্যসাচী মল্লিক বলে সন্দেহ করেছিল । তাই অপূর্বর হাসির কথায় সে যোগ দিতে পারেনি ।

  1. ‘ ইহা যে কত বড়ো ভ্রম তাহা কয়েকটা স্টেশন পরেই সে অনুভব করিল ।’— ‘ ভ্রম’টি বলা হয়েছে ? 

Ans: ভামো যাত্রাকালে ট্রেনে প্রথম শ্রেণির টিকিট থাকায় অপূর্ব রাত্রের ঘুমটা ভালোই হবে ভাবলেও পুলিশি তদন্ত ও ভারতীয় বলে তাকে অসম্মানিত হতে হয় । তার ধারণা ‘ ভ্রমে ‘ পরিণত হয় ।

  1. গিরিশ মহাপাত্রের গায়ে কোন ধরনের পোশাক ছিল ?

Ans: ‘ পথের দাবী ‘ রচনাংশ অনুসারে গিরীশ মহাপাত্রের গায়ে ছিল জাপানি সিল্কের রামধনু রঙের চুড়িদার পাঞ্জাবি আর তার বুকপকেট থেকে একটি বাঘ – আঁকা রুমালের কিছুটা দেখা যাচ্ছিল । তবে কাঁধে উত্তরীয়ের কোনো বালাই ছিল না ।

  1. খানাতল্লাশির পর গিরীশ মহাপাত্রের কাছ থেকে কী কী পাওয়া গিয়েছিল ? 

Ans: ‘ পথের দাবী ‘ রচনাংশ অনুসারে খানাতল্লাশির পর গিরীশ মহাপাত্রের কাছ থেকে একটি টাকা , গণ্ডা – ছয়েক পয়সা , একটি লোহার কম্পাস , মাপ করার কাঠের ফুটরুল , কয়েকটি বিড়ি , একটি দেশলাই এবং একটি গাঁজার কলকে পাওয়া গিয়েছিল ।

  1. ‘ অপূর্ব মুগ্ধ হইয়া সেই দিকেই চাহিয়া ছিল— মুগ্ধ অপূর্ব কোন্ দিকে চেয়েছিল ?

Ans: শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের ‘ পথের দাবী ‘ রচনাংশ অনুসারে অপূর্ব মুগ্ধ হয়ে গিরীশ মহাপাত্রের অদ্ভুত দুটি চোখের দিকে চেয়েছিল ।

  1. সে যে বর্মায় এসেছে এ খবর সত্য- ‘ সে ‘ বলতে কার কথা বলা হয়েছে ?

Ans: ‘ পথের দাবী ‘ রচনাংশ থেকে উদ্ধৃত উদ্ভিটির বন্ধা বর্মা পুলিশের বড়োকর্তা নিমাইবাবু । তিনি এখানে ‘ সে ‘ বলতে রাজবিদ্রোহী বিপ্লবী সব্যসাচী মল্লিকের কথা বলেছেন ।

  1. থানায় আটক করা হ – জন বাঙালি রেঙ্গুনে এসেছিল কেন ?

Ans: ‘ পথের দাবী ‘ রচনাংশ অনুসারে থানায় আটক করা হ – জন বাঙালির প্রত্যেকেই উত্তর ব্রহ্মে বর্মা অয়েল কোম্পানির তেলের খনির কারখানার মিস্ত্রি । কিন্তু জল – হাওয়া সহ্য না হওয়ায় তারা অন্য কাজের খোঁজে রেঙ্গুনে চলে এসেছিল ।

  1. ‘ পরকে সেজে দি , নিজে খাইনে কখন এমন উক্তি করা হয়েছে ?

Ans: ‘ পথের দাবী ‘ রচনাংশ অনুসারে খানাতল্লাশির সময় গিরীশ মহাপাত্রের কাছে একটি গাঁজার কলকে পাওয়া যায় । গিরীশ জানায় যে , সে বন্ধুবান্ধবদের গাঁজা দিলেও নিজে খায় না । তার এ কথায় চটে গিয়ে জগদীশবাবু  উক্তিটি করেছিলেন ।

  1. ‘ জগদীশবাবু চটিয়া উঠিয়া কহিলেন— জগদীশবাবুর চটে ওঠার কারণ কী ছিল ?

Ans: ‘ পথের দাবী ‘ রচনাংশ অনুসারে গাঁজা খাওয়ার সমস্ত লক্ষণ গিরীশ মহাপাত্রের আচার – আচরণে বিদ্যমান থাকা সত্ত্বেও সে গাঁজা খাওয়ার কথা অস্বীকার করেছিল । এ জন্যেই জগদীশবাবু চটে গিয়েছিলেন ।

  1. কিন্তু শখ ষোলোআনাই বজায় আছে কোন্ প্রসঙ্গে বক্তা এমন উক্তি করেছেন ?

Ans: ‘ পথের দাবী ‘ রচনাংশ অনুসারে বর্মা পুলিশের বড়োকর্তা নিমাইবাবু পুলিশের চোখে সন্দেহভাজন হিসেবে ধৃত গিরীশ মহাপাত্রের বেশভূষার বাহার ও পরিপাট্য দেখে ; সহাস্যে অপূর্বর দৃষ্টি আকর্ষণ করে এমন মন্তব্য করেছিলেন ।

  1. ‘ তবে এ বস্তুটি পকেটে কেন ? ‘ — কোন্ বস্তুটি পকেটে ছিল ?

Ans: ‘ পথের দাবী ‘ রচনাংশ অনুসারে গিরীশ মহাপাত্রের পকেট থেকে পাওয়া গাঁজার কলকের কথা নিমাইবাবু বলেছেন ।

  1. ‘ আজ থেকে মাথায় তুলে নিলাম’— বস্তুা কী মাথায়  তুলে নিয়েছেন ?

Ans: ‘ পথের দাবী ‘ রচনাংশ অনুসারে অপূর্বর মতে শতসহস্র পরাধীন দেশবাসীকে অবর্ণনীয় অপমান – অত্যাচারের হাত থেকে যে দেশপ্রেমিক বিপ্লবীরা উদ্ধার করতে চায় , তাঁদের সে অন্তরের আপন বলেই মনে করে । তাঁদের আপনার বলে মনে করায় যে দুঃখই থাক তা অপূর্ব সহ্য করতে প্রস্তুত । এ দায়িত্বই সে মাথায় তুলে নিয়েছে । 

==============================================================

পথের দাবী অধ্যায় থেকে আরোও প্রশ্ন ও উত্তর দেখুন :

==============================================================

পথের দাবী (গল্প) শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় 

অতিসংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর | পথের দাবী (গল্প) শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় – মাধ্যমিক বাংলা সাজেশন | Madhyamik Bengali Suggestion :

  1. ইত্যবসরে এই ব্যাপার । কোন ব্যাপারের কথা বলা হয়েছে ?

Answer: ‘ পথের দাবী ‘ রচনাংশে অপূর্বর সহকর্মী তেওয়ারি , বর্মা নাচ দেখতে ফয়ায় যাওয়ার অবসরে তাদের বাড়িতে চুরি হয়ে গিয়েছিল । এই ব্যাপারের কথাই এখানে বলা হয়েছে । 

  1. ‘ তিনি আমার আত্মীয় , আমার পিতার বন্ধু।— ‘ তিনি ‘ প্রশ্ন বলতে যাঁর কথা বলা হয়েছে , তাঁর পরিচয় দাও ।

Answer: উদ্ধৃতাংশে ‘ তিনি ‘ বলতে থানার বড়োবাবু নিমাইবাবুকে বোঝানো হয়েছে । তিনি অপূর্বর বাবার বন্ধু তাই তার পিতৃস্থানীয় । নিমাইবাবুর চাকরির পিছনে অপূর্বর বাবার অবদান ছিল ।

  1. ‘ তিনি ঢের বেশি আমার আপনার।- কোন্ প্রসঙ্গে এই উক্তিটি করা হয়েছে ?

Answer: এক্ষেত্রে ‘ তিনি ‘ হলেন বিপ্লবী সব্যসাচী মল্লিক । ইংরেজ পুলিশ নিমাইবাবু অপূর্বর আত্মীয়স্থানীয় হলেও দেশপ্রেমিক সব্যসাচীকে দেশভক্ত অপূর্বর বেশি আপন বলে মনে হয়েছে ।

  1. ‘ বাবুজি , এসব কথা বলার দুঃখ আছে।— কোন্ সব কথা বললে দুঃখ হতে পারে বলা হয়েছে ?

Answer: উদ্ধৃতিটির বক্তা অপূর্বর সহকর্মী তলওয়ারকার । দুঃখ ঘটার মতো কথাগুলি হল ইংরেজ পুলিশ নিমাইবাবু অপূর্বর আত্মীয় হলেও স্বাধীনতাযুদ্ধে আত্মনিয়োগকারী সব্যসাচীই তার বেশি আপন ।

  1. ‘ কই এ ঘটনা তো আমাকে বলেননি / — কোন্‌ ঘটনা ?

Answer: ‘ ঘটনাটি ’ হল ‘ পথের দাবী ‘ – র কেন্দ্রীয় চরিত্র অপূর্বর বিনা দোষে ফিরিঙ্গি যুবকদের হাতে মার খাওয়া । এই অন্যায়ের প্রতিবাদ করতে গিয়ে ভাগ্যে জুটেছিল একরাশ লাঞ্ছনা ।

  1. ‘ মনে হলে দুঃখে লজ্জায় ঘৃণায় নিজেই যেন মাটির সঙ্গে মিশিয়ে যাই।— কোন কথা মনে করে অপূর্বের এই মনোবেদনা ?

Answer: অপূর্ব বিনাদোষে ফিরিঙ্গি যুবকদের হাতে মার খাওয়া সত্ত্বেও উপস্থিত ভারতীয়রা অভ্যেসবশত এর কোনো প্রতিবাদ করেনি । এই কথা মনে করেই অপূর্বর এই মনোকষ্ট ।

  1. ‘ আমার ইচ্ছা তুমি একবার সবগুলো দেখে আস / —কী দেখে আসার কথা হয়েছে ? 

Answer: ‘ পথের দাবী ‘ পাঠ্যাংশে অপূর্বর বড়োবাবু তাদের ভামো , ম্যান্ডালে , শোএবো , মিথিলা এবং প্রোমে – এর অফিসগুলির বিশৃঙ্খলা ও গোলযোগের কথা বলেছেন । সেগুলি অপূর্বকে দেখে আসার কথা বলেছেন ।

  1. ‘ এই সেই গিরীশ মহাপাত্র / — ‘ এই সেই ‘ বলার কারণ কী ?

Answer: অপূর্ব গিরীশ মহাপাত্রকে দু – বার দেখেছিল । প্রথমবার থানায় আর দ্বিতীয়বার রেলওয়ে স্টেশনে । অপূর্বর বর্ণনা অনুযায়ী রামদাস সহজেই তাকে চিনে নেয় ও এমন মন্তব্য করে ।

  1. কিন্তু তোমার বাপু একটা ভুল হয়েছে , কার ,, কোন ভুল হয়েছিল ?

Answer: অপূর্বকে প্রথমবার পুলিশ থানায় দেখে গিরীশ মহাপাত্র তাকে পুলিশের লোক ভাবে । দ্বিতীয়বার রেলস্টেশনে তাদের দেখা হলে , অপূর্ব তার ভুল ভাঙাবার জন্য তাকে এই কথা বলে ।

  1. কিন্তু এই হাসিতে তলওয়ারকর যোগ দিল না । তলওয়ারকর হাসিতে যোগ দিল না কেন ?

Answer: রেলস্টেশনে গিরীশ মহাপাত্রকে এক ঝলক দেখেই তলওয়ারকর তাকে পুলিশের সন্দেহভাজন বিপ্লবী সব্যসাচী মল্লিক বলে সন্দেহ করেছিল । তাই অপূর্বর হাসির কথায় সে যোগ দিতে পারেনি ।

  1. ‘ ইহা যে কত বড়ো ভ্রম তাহা কয়েকটা স্টেশন পরেই সে অনুভব করিল ।’— ‘ ভ্রম’টি বলা হয়েছে ? 

Answer: ভামো যাত্রাকালে ট্রেনে প্রথম শ্রেণির টিকিট থাকায় অপূর্ব রাত্রের ঘুমটা ভালোই হবে ভাবলেও পুলিশি তদন্ত ও ভারতীয় বলে তাকে অসম্মানিত হতে হয় । তার ধারণা ‘ ভ্রমে ‘ পরিণত হয় ।

  1. গিরিশ মহাপাত্রের গায়ে কোন ধরনের পোশাক ছিল ?

Answer: ‘ পথের দাবী ‘ রচনাংশ অনুসারে গিরীশ মহাপাত্রের গায়ে ছিল জাপানি সিল্কের রামধনু রঙের চুড়িদার পাঞ্জাবি আর তার বুকপকেট থেকে একটি বাঘ – আঁকা রুমালের কিছুটা দেখা যাচ্ছিল । তবে কাঁধে উত্তরীয়ের কোনো বালাই ছিল না ।

  1. খানাতল্লাশির পর গিরীশ মহাপাত্রের কাছ থেকে কী কী পাওয়া গিয়েছিল ? 

Answer: ‘ পথের দাবী ‘ রচনাংশ অনুসারে খানাতল্লাশির পর গিরীশ মহাপাত্রের কাছ থেকে একটি টাকা , গণ্ডা – ছয়েক পয়সা , একটি লোহার কম্পাস , মাপ করার কাঠের ফুটরুল , কয়েকটি বিড়ি , একটি দেশলাই এবং একটি গাঁজার কলকে পাওয়া গিয়েছিল ।

  1. ‘ অপূর্ব মুগ্ধ হইয়া সেই দিকেই চাহিয়া ছিল— মুগ্ধ অপূর্ব কোন্ দিকে চেয়েছিল ?

Answer: শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের ‘ পথের দাবী ‘ রচনাংশ অনুসারে অপূর্ব মুগ্ধ হয়ে গিরীশ মহাপাত্রের অদ্ভুত দুটি চোখের দিকে চেয়েছিল ।

  1. সে যে বর্মায় এসেছে এ খবর সত্য- ‘ সে ‘ বলতে কার কথা বলা হয়েছে ?

Answer: ‘ পথের দাবী ‘ রচনাংশ থেকে উদ্ধৃত উদ্ভিটির বন্ধা বর্মা পুলিশের বড়োকর্তা নিমাইবাবু । তিনি এখানে ‘ সে ‘ বলতে রাজবিদ্রোহী বিপ্লবী সব্যসাচী মল্লিকের কথা বলেছেন ।

  1. থানায় আটক করা হ – জন বাঙালি রেঙ্গুনে এসেছিল কেন ?

Answer: ‘ পথের দাবী ‘ রচনাংশ অনুসারে থানায় আটক করা হ – জন বাঙালির প্রত্যেকেই উত্তর ব্রহ্মে বর্মা অয়েল কোম্পানির তেলের খনির কারখানার মিস্ত্রি । কিন্তু জল – হাওয়া সহ্য না হওয়ায় তারা অন্য কাজের খোঁজে রেঙ্গুনে চলে এসেছিল ।

  1. ‘ পরকে সেজে দি , নিজে খাইনে কখন এমন উক্তি করা হয়েছে ?

Answer: ‘ পথের দাবী ‘ রচনাংশ অনুসারে খানাতল্লাশির সময় গিরীশ মহাপাত্রের কাছে একটি গাঁজার কলকে পাওয়া যায় । গিরীশ জানায় যে , সে বন্ধুবান্ধবদের গাঁজা দিলেও নিজে খায় না । তার এ কথায় চটে গিয়ে জগদীশবাবু প্রশ্নোত উক্তিটি করেছিলেন ।

  1. ‘ জগদীশবাবু চটিয়া উঠিয়া কহিলেন— জগদীশবাবুর চটে ওঠার কারণ কী ছিল ?

Answer: ‘ পথের দাবী ‘ রচনাংশ অনুসারে গাঁজা খাওয়ার সমস্ত লক্ষণ গিরীশ মহাপাত্রের আচার – আচরণে বিদ্যমান থাকা সত্ত্বেও সে গাঁজা খাওয়ার কথা অস্বীকার করেছিল । এ জন্যেই জগদীশবাবু চটে গিয়েছিলেন ।

  1. কিন্তু শখ ষোলোআনাই বজায় আছে কোন্ প্রসঙ্গে বক্তা এমন উক্তি করেছেন ?

Answer: ‘ পথের দাবী ‘ রচনাংশ অনুসারে বর্মা পুলিশের বড়োকর্তা নিমাইবাবু পুলিশের চোখে সন্দেহভাজন হিসেবে ধৃত গিরীশ মহাপাত্রের বেশভূষার বাহার ও পরিপাট্য দেখে ; সহাস্যে অপূর্বর দৃষ্টি আকর্ষণ করে এমন মন্তব্য করেছিলেন ।

  1. ‘ তবে এ বস্তুটি পকেটে কেন ? ‘ — কোন্ বস্তুটি পকেটে ছিল ?

Answer: ‘ পথের দাবী ‘ রচনাংশ অনুসারে গিরীশ মহাপাত্রের পকেট থেকে পাওয়া গাঁজার কলকের কথা নিমাইবাবু বলেছেন ।

  1. ‘ আজ থেকে মাথায় তুলে নিলাম’— বস্তুা কী মাথায়  তুলে নিয়েছেন ?

Answer: ‘ পথের দাবী ‘ রচনাংশ অনুসারে অপূর্বর মতে শতসহস্র পরাধীন দেশবাসীকে অবর্ণনীয় অপমান – অত্যাচারের হাত থেকে যে দেশপ্রেমিক বিপ্লবীরা উদ্ধার করতে চায় , তাঁদের সে অন্তরের আপন বলেই মনে করে । তাঁদের আপনার বলে মনে করায় যে দুঃখই থাক তা অপূর্ব সহ্য করতে প্রস্তুত । এ দায়িত্বই সে মাথায় তুলে নিয়েছে । 

  1. ‘ পুলিশ স্টেশনে প্রবেশ করিয়া দেখা গেল – কী দেখা গেল ? 

Answer: শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় রচিত ‘ পথের দাবী ‘ পাঠ্যাংশের আলোচ্য অংশে দেখা গেল , পুলিশস্টেশনের সামনের হলঘরে জনা ছয়েক বাঙালি বসে আছে আর পুলিশ তাদের মালপত্র তল্লাশি করছে । 

23.‘ তাহাকে আর একটা ঘরে আটকাইয়া রাখা হইয়াছে । — কাকে আটকে রাখার কথা বলা হয়েছে ?

Answer: ‘ পথের দাবী ‘ পাঠ্যাংশে গিরীশ মহাপাত্রর ছদ্মবেশীধারী রাজবিদ্রোহী সব্যসাচী মল্লিককে আটকে রাখার কথা বলা হয়েছে । বর্মা পুলিশ এই সন্দেহভাজনকে জিজ্ঞাসার জন্য আটক করেছিলেন ।

  1. ‘ লোকটি কাশিতে কাশিতে আসিল । — লোকটির পরিচয় দাও । 

Answer: ‘ পথের দাবী ’ – তে লোকটি বলতে গিরীশ মহাপাত্রের ছদ্মবেশধারী রাজবিদ্রোহী সব্যসাচীর কথা বলা হয়েছে । সন্দেহবশত পুলিশ তাঁকে আটক করলেও পরে আচার – আচরণ ও বেশভূষা দেখে পুলিশ গিরীশকে ছেড়ে দেয় ।

  1. ‘ সহসা আশঙ্কা হয় , ‘ — কোন্ আশঙ্কার কথা বলা হয়েছে ?

Answer: শরৎচন্দ্রের ‘ পথের দাবী ‘ পাঠ্যাংশে রোগা চেহারার গিরীশ মহাপাত্র সামান্য কাশির পরিশ্রমে এতটাই হাঁপাতে থাকে যে , মনে হয় । মৃত্যু অবশ্যম্ভাবী । সেই মৃত্যু আশঙ্কার কথা বলা হয়েছে । 

  1. ‘ ভয় হয় এখানে খেলা চলিবে না , ‘ — উক্তিটি পরিস্ফুট করো । 

Answer: ‘ পথের দাবী ‘ রচনাংশে সব্যসাচী বিচিত্র পোশাকের ও অসুস্থতার আড়ালে নিজেকে লুকিয়ে রাখলেও তার বুদ্ধিদীপ্ত চোখ দুটিকে সে লুকোতে পারেনি । সে চোখের সামনে কপটতার চেয়ে সরে দাঁড়ানো ভালো ।

  1. ‘ কেবল এই জন্যই যেন সে আজও বাঁচিয়া আছে ।— ‘ এই জন্যই ’ বলার কারণ কী ?

Answer: ভগ্নস্বাস্থ্য গিরিশ মহাপাত্রকে দেখে মনে হত তার মৃত্যু আসন্ন । কিন্তু তার দৃষ্টির গভীরে এমন প্রাণশক্তি লুকিয়ে ছিল , যাকে মৃত্যুও ভয় পেত ।

  1. ‘ কী বল অপূর্ব । অপূর্বর কাছে কোন কথার সমর্থন আশা করা হয়েছে ?

Answer: ‘ পথের দাবী ‘ পাঠ্যাংশে নিমাইবাবু ভগ্নস্বাস্থ্য গিরীশ মহাপাত্রর বাহারি পোশাকের প্রতি অপূর্বর দৃষ্টি আকর্ষণ করে বাঙ্গার্থে যে – কথা বলেছিলেন তারই সমর্থনের কথা বলা হয়েছে । 

  1. তার আমি জামিন হতে পারি — কে , কীসের জামিন হতে চেয়েছে ?

Answer: নিমাইবাবু জিজ্ঞাসাবাদের জন্য গিরিশ মহাপাত্রকে আটক করলেও তার বেশভুষা ও আচরণ দেখে অপূর্বর ধারণা হয় সে সব্যসাচী নয় । তাই অপূর্ব উক্ত বিষয়ে জামিন হতে চায় ।

  1. ‘ নিমাইবাবু চুপ করিয়া রহিলেন । —নিমাইবাবুর চুপ করে থাকার কারণ কী ? 

Answer: গিরীশ মহাপাত্র যে রাজদ্রোহী সব্যসাচী নয় , অপূর্বর এই আশ্বাসে নিমাইবাবু আস্থা রাখলেও সব্যসাচীর প্রখর বুদ্ধি সম্পর্কেও তিনি ওয়াকিবহাল । তাই নিশ্চিত না হয়ে তিনি চুপ থেকেছেন ।

  1. ‘ দেখি তোমার ট্যাকে এবং পকেটে কী আছে ? ‘ গিরীশ মহাপাত্রের ট্যাকে ও পকেটে কী কী পাওয়া গিয়েছিল ?

Answer: গিরীশ মহাপাত্রের ট্যাক থেকে পাওয়া যায় একটি টাকা ও গণ্ডার ছয়েক পয়সা । পকেট থেকে পাওয়া যায় একটা লোহার কম্পাস ও ফুটরুল । এ ছাড়া বিড়ি – দেশলাই ও গাঁজার কলকেও পাওয়া যায় ।

  1. ‘ দেখো জগদীশ , কিরুপ সদাশয় ব্যক্তি ইনি । ব্যক্তিটিকে সদাশয় বলা হয়েছে কেন ?

Answer: নিমাইবাবু গিরীশ মহাপাত্রকে তল্লাশির সময় তার পকেটে গাঁজার কলকে পান । সে – সম্পর্কে প্রশ্ন করলে সে জানায় কলকেটি নিজের চেয়ে অপরের প্রয়োজনাথেই তার পকেটে । তাই নিমাইবাবুর এই উক্তি । 

  1. ‘ বুড়োমানুষের কথাটা শুনো।— বুড়ো মানুষ কোন্ কথা বলেছিলেন ?

Answer: শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় রচিত ‘ পথের দাবী ‘ পাঠ্যাংশে আলোচ্য অংশে বুড়ো মানুষ অর্থাৎ প্রৌঢ় নিমাইবাবু , গিরীশ মহাপাত্রকে তার স্বাস্থ্যের কথা মনে রেখে গাঁজা না খাওয়ার পরামর্শ দিয়েছিলেন ।

  1. ‘ বড়োবাবু হাসিতে লাগিলেন । বড়োবাবুর হাসার কারণ কী ছিল ?

Answer: গিরিশ মহাপাত্রের উৎকট নেবুর তেলের গন্ধে থানাসুদ্ধ সব লোকের মাথা ধরিয়ে দেওয়ায় জগদীশবাবু তাকে ছেড়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় । এটাই বড়োবাবুর হাসির কারণ ।

  1. ‘ অপূর্ব রাজি হইয়াছিল । কোন প্রসঙ্গে এ কথা বলা হয়েছে ? 

Answer: ‘ পথের দাবী ‘ পাঠ্যাংশে অপূর্বর সহকর্মী তলওয়ারকরের স্ত্রীর অনুরোধ ছিল বাড়ির কেউ না আসা পর্যন্ত অপূর্বকে তার হাতে তৈরি মিষ্টান্নে জলযোগ সম্পন্ন করতে হবে । সে – কথায় অপূর্ব রাজি হয়েছিল ।

  1. ‘ তা ছাড়া এত বড়ো বন্ধু।— ‘ বন্ধু ’ বলতে কার কথা বলা হয়েছে ?

Answer: ‘ পথের দাবী ‘ পাঠ্যাংশে ‘ বন্ধু ‘ বলতে অপূর্বের ঘরের উপরের তলায় বসবাসকারিণী ক্রিশ্চান মহিলার কথা বলা হয়েছে । তিনি অপূর্বর টাকাপয়সা ছাড়া বাকি জিনিস চোরের হাত থেকে রক্ষা করেছিলেন

 

(২) অতি সংক্ষিপ্ত প্রশ্নগুলির উত্তর দাও :

২.১ “পুলিশ স্টেশনে প্রবেশ করিয়া দেখা গেল” – কি দেখা গেল?

উত্তর : পুলিশ স্টেশনে প্রবেশ করে দেখা গেল সামনের হলঘরে কয়েকজন বাঙালি বসে আছে এবং পুলিশ তাদের জিনিসপত্র তল্লাশি করছে।

২.২ “সম্মুখে হাজির করা হইল।” – কাকে এবং কার সামনে হাজির করা হলো?

উত্তর : গিরিশ মহাপাত্র ওরফে সব্যসাচী মল্লিককে পুলিশ অফিসার নিমাইবাবু সামনে হাজির করলেন।

২.৩ “এইটুকু কাশির পরিশ্রমেই সে হাঁপাইতে লাগিলো।” – এখানে কার কথা বলা হয়েছে?

উত্তর : এখানে গিরিশ মহাপাত্র ওরফে সব্যসাচী মল্লিকের কথা বলা হয়েছে।

২.৪ “মৃত্যু সেখানে প্রবেশ করতে সাহস করে না।” – মৃত্যু কোথায় প্রবেশ করতে সাহস করে না?

উত্তর : সব্যসাচী মল্লিক ওরফে গিরীশ মহাপাত্রের চোখের অতল তলে।

২.৫ “নিমাইবাবু চুপ করিয়া রহিলেন,” – নিমাইবাবু চুপ থাকাই অপূর্ব কি বলেছিলেন?

উত্তর : সন্দেহভাজন গিরিশ মহাপাত্র এবং সব্যসাচী মল্লিক এর সংস্কৃতিগত বৈপরীত্যের বিষয়টি তাকে বিবেচনা করতে অনুরোধ জানায়।

২.৬ “তবে এ বস্তুটি পকেটে কেন?’ এখানে কোন বস্তুটি কথা বলা হয়েছে?

উত্তর : গাঁজার কলকের কথা বলা হয়েছে যেটি গিরিশ মহাপাত্র রাস্তায় কুড়িয়ে পেয়েছিল বলে সে জানায়।

২.৭ “ক্ষণকাল মৌন থাকিয়া কহিলেন!” উদ্দিষ্ট ব্যক্তি কি বলেছিলেন?

উত্তর : ক্ষণকাল মৌন থেকে নিমাইবাবু গিরিশ মহাপাত্র কে তার গাজা খাওয়ার কথাটি স্বীকার করতে বলেছিলেন।

২.৮ “জগদীশবাবু চটিয়া উঠিয়া কহিলেন” – জগদীশবাবু রেগে উঠে কি বললে?

উত্তর : গিরিশ মহাপাত্র গাঁজা খান না জগদীশবাবু চটে ওঠে-তাকে দয়ার সাগর বলে ব্যঙ্গ করেন এবং মিথ্যাবাদী হিসেবে চিহ্নিত করেন।

২.৯ “জগদীশবাবু সম্মতি জানাইলে কহিলেন” – জগদীশবাবু সম্মতি জানালো কে এবং কি বললেন?

উত্তর : জগদীশবাবুর সম্মতিতে নিমাইবাবু করলেন এই শহরে আরো কিছুদিন নজর রাখা দরকার এবং বিশেষ করে নীল ট্রেনটার প্রতি একটু বেশি দৃষ্টি রাখা প্রয়োজন।

২.১০ “বড়বাবু হাসিতে লাগিলেন।” – বড়বাবুর হাসির কারণ কি ছিল?

উত্তর : জগদীশবাবু গিরীশ মহাপাত্রের অদ্ভুত পোশাক, আচরণ এবং বোকার মত মিথ্যা কথা বলার প্রবণতা দেখে তাকে ছেড়ে দেওয়ার কথা বললে বড়বাবু হাসতে থাকেন।

২.১১ “আজ বাড়ি থেকে কোনো চিঠি পেয়েছেন নাকি?” – কে কখন একথা বলেছিলেন?

উত্তর : অপূর্ব এর মধ্যে অন্যমনস্কতা দেখে রামদাস চিন্তিত মুখে তাকে এ প্রশ্নটি করেছিলেন।

২.১২ “অপূর্ব রাজি হইয়াছিল।” – অপূর্ব কিসে রাজি হয়েছিল?

উত্তর : অপূর্বের বাড়ি থেকে নিজেকেও না আসা পর্যন্ত প্রত্যেকদিন রামদাসের স্ত্রীর হাতে তৈরি মিষ্টান্ন খাবার ব্যাপারে রাজি হয়েছিল।

২.১৩ “এই অন্যায়ের প্রতিবাদ যখন করতে গেলাম” – অন্যায়ের প্রতিবাদ করতে গিয়ে কি হয়েছিল?

উত্তর : বিনা দোষে অপূর্বকে ফিরিঙ্গির ঝগড়াটা লাথি মেরে প্ল্যাটফর্ম থেকে বের করে দিয়েছিল।

২.১৪ “মনে হল দুঃখে লজ্জায় ঘৃণায় নিজেই যেন মাটির সঙ্গে মিশে যায়।” – অপূর্বের এরকম মনে হওয়ার কারণ কী ছিল?

উত্তর : বিনা দোষে ফিরিঙ্গীর ছেলেরা অপূর্বকে যখন লাথি মেরে প্ল্যাটফর্ম থেকে বের করে দিয়েছিল তখন ভারতীয়রা মুখ বুঝে সহ্য করায় তার এরকম মনে হয়েছিল।

২.১৫ আমারও তো তাই বিশ্বাস।” – বক্তার কোন বিশ্বাসের কথা এখানে বলা হয়েছে?

উত্তর : ধর্মপ্রাণ মানুষ গিরিশ মহাপাত্র অপূর্বকে বলেছিল যে ললাটের লিখন কখনো খন্ডানো যায় না। এই প্রসঙ্গে অপূর্ব গিরীশ মহাপাত্রের সমর্থনে উক্ত কথাটি বলেছিলেন।

==============================================================

পথের দাবী অধ্যায় থেকে আরোও প্রশ্ন ও উত্তর দেখুন :

==============================================================

সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর | পথের দাবী (গল্প) শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় – মাধ্যমিক বাংলা প্রশ্ন ও উত্তর  

  1. গিরীশ মহাপাত্রের চেহারার বর্ণনা দাও ।

Ans: শরৎচন্দ্রের ‘ পথের দাবী ’ – র মূল চরিত্র বিপ্লবী সব্যসাচী মল্লিক গিরীশ মহাপাত্রের ছদ্মবেশে বর্মা আসেন । পোলিটিক্যাল সাসপেক্ট হিসেবে গিরীশ মহাপাত্রের চেহারার বর্ণনা তাঁকে আটক করলেও বেশভূষা ও চেহারার বিভ্রান্তিতে পুলিশ তাঁকে ছেড়ে দেয় । বছর বত্রিশের সব্যসাচীর গায়ের ফরসা রং রোদে পুড়ে তামাটে হয়েছে । রোগা চেহারার মানুষটি সামান্য পরিশ্রমেই হাঁপাতে ও কাশতে থাকেন । দেখে আশঙ্কা হয় সংসারের মেয়াদ বুঝি তার ফুরিয়ে এসেছে । তাকে আলাদাভাবে চোখে পড়ে তার রোগা মুখের দুটি চোখের অদ্ভুত দৃষ্টির জন্য ।

  1. কেবল আশ্চর্য সেই রোগা মুখের অদ্ভুত দুটি চোখের দৃষ্টি ।’- কার চোখের কথা বলা হয়েছে ? চোখদুটির বর্ণনা দাও । 

Ans: চোখ দুটির বর্ণনা উত্তর উদ্ধৃতাংশে শরৎচন্দ্রের ‘ পথের দাবী ‘ – র কেন্দ্রীয় চরিত্র সব্যসাচী ওরফে গিরীশ মহাপাত্রের চোখের কথা বলা হয়েছে । 

  অদ্ভুত বেশভূষাধারী ও রুগ্‌ণ গিরীশ মহাপাত্রের চেহারার সবচেয়ে আকর্ষণীয় ছিল তার চোখ দুটি । সে – চোখ ছোটো কী বড়ো , টানা কী গোল , দীপ্ত কী প্রভাহীন সে – বিচার করতে যাওয়া বৃথা । অত্যন্ত গভীর জলাশয়ের মতো চোখ দুটিতে এমন কিছু আছে যেখানে কোনো খেলা চলবে না , যেখান থেকে সাবধানে দূরে দাঁড়ানোই শ্রেয় । আসলে গিরীশ মহাপাত্রের চোখ ছদ্মবেশের আড়ালে লুকিয়ে থাকা অসাধারণ সব্যসাচী মল্লিককেই প্রকাশ করে ।

  1. বার্বুটির স্বাস্থ্য গেছে , কিন্তু শখ ষোলোআনাই বজায় আছে তা স্বীকার করতে হবে ।’— ‘ বাবুটি ’ কে ? তার শখ যে বজায় আছে , তা কীভাবে বোঝা গেল ? 

Ans: শরৎচন্দ্রের ‘ পথের দাবী ‘ – র আলোচ্য অংশে নিমাইবাবুর কথায় ‘ বাবুটি ’ হল ছদ্মবেশী গিরীশ মহাপাত্র । → গিরীশ মহাপাত্রের মাথার বাহারি ছাঁট , চুলে সুগন্ধি তেল , পরনে রামধনু রঙের জাপানি সিল্কের পাঞ্জাবি ও বিলিতি মখমল পাড়ের সূক্ষ্ম কালো শাড়ি , পকেটে বাঘ আঁকা শখ বজায় থাকার লক্ষণ রুমাল , পায়ে হাঁটু পর্যন্ত লাল ফিতে দিয়ে বাঁধা সবুজ মোজা ও বার্নিশ করা পাম্প শু , হাতে হরিণের শিঙের হাতল দেওয়া বেতের ছড়ি তার শখ ‘ বজায়ের পরিচয় দেয় । 

  1. গিরীশ মহাপাত্রের চুলের পারিপাট্য কীরুপ ছিল , তা সংক্ষেপে লেখো ।

Ans: শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় রচিত ‘ পথের দাবী ‘ উপন্যাসের ছদ্মবেশী গিরীশ মহাপাত্রের চেহারার বর্ণনার সঙ্গে লেখক তাঁর চুলের পারিপাট্যের সুন্দর বর্ণনাও দিয়েছেন । তাঁর মাথার সামনের দিকের চুল বড়ো থাকলেও পিছনের দিকে তা প্রায় ছিল না বললেই হয় । তেল চুলের পরিপাট্য চুপচুপে চুলের মাঝখান দিয়ে সিঁথি কাটা । চুল থেকে নেবুর তেলের উগ্র অসহনীয় গন্ধ থানাসুদ্ধ লোকের এমন মাথা ধরিয়ে দিয়েছিল যে , জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করেও তাঁরা তাঁকে ছেড়ে দিতে বাধ্য হন ।

  1. ‘ এ লোকটিকে আপনি কোনো কথা জিজ্ঞেস না করেই ছেড়ে দিন , — ‘ লোকটি কে ? তাকে কোনো কথা জিজ্ঞেস না – করেই ছেড়ে দেওয়ার কথা বলা হয়েছে কেন ?

Ans: ‘ পথের দাবী ‘ – র উদ্ধৃত উক্তিটিতে ‘ লোকটি ‘ হল পুলিশস্টেশনে আটক সন্দেহভাজন গিরীশ মহাপাত্র ওরফে রাজদ্রোহী সব্যসাচী মল্লিক ।

   ‘ পথের দাবী ‘ – র অন্যতম কেন্দ্রীয় চরিত্র অপূর্ব যে সব্যসাচী মল্লিককে জানতেন তিনি ছিলেন বহু ভাষা ও বিষয়ে সুপণ্ডিত । লোকটিকে ছেড়ে বিজ্ঞান ও চিকিৎসাশাস্ত্রে পারদর্শী এবং বিদেশি ডিগ্রিপ্রাপ্ত এক ডাক্তার । কিন্তু সেই সব্যসাচী মল্লিক হিসেবে পুলিশ যাকে আটক করেছিল তার আচার – আচরণ কোনো কিছুই সব্যসাচীর সঙ্গে মেলে না । তাই অপূর্ব অনেকটা নিশ্চিত হয়েই এমন মন্তব্য করেছেন । 

  1. তবে এ বস্তুটি পকেটে কেন ? – কোন বস্তুর কথা বলা হয়েছে ? তা পকেটে থাকার সপক্ষে যে – যুক্তিটি দেওয়া হয়েছিল , তা কতখানি সন্তোষজনক ? 

Ans: শরৎচন্দ্রের ‘ পথের দাবী ‘ উপন্যাস থেকে গৃহীত উদ্ধৃতাংশে যে – বস্তুর কথা বলা হয়েছে তা হল একটি গাঁজার কলকে । 

  পুলিশস্টেশনে তল্লাশির সময় গিরীশ মহাপাত্রের পকেটে গাঁজার কলকেটি পাওয়া যায় । দারোগা নিমাইবাবু কলকেটির সম্পর্কে জানতে চাইলে মহাপাত্র জানায় সে গাঁজা খায় না , কিন্তু সপক্ষে যুক্তি পথে কুড়িয়ে পেয়ে সেটি বন্ধুদের প্রয়োজনার্থেই পকেটে রেখেছে । অভিজ্ঞ দারোগা নিমাইবাবুর কাছে এই বক্তব্য যুক্তিগ্রাহ্য লাগেনি । কেন – না গিরীশ মহাপাত্রের চেহারার মধ্যে গাঁজা সেবনের লক্ষণ স্পষ্ট ছিল । 

  1. ‘ বুড়োমানুষের কথাটা শুনো।— ‘ বুড়োমানুষ ‘ কে ? তাঁর কোন্ কথা শুনতে বলা হচ্ছে ?

Ans: ‘ পথের দাবী ‘ – র উদ্ধৃতাংশে ‘ বুড়োমানুষ ‘ বলতে দারোগা নিমাইবাবু নিজেকে বুঝিয়েছেন । যে – কথা শুনতে বলা হচ্ছে । গিরীশ মহাপাত্রের ছদ্মবেশে বিপ্লবী সব্যসাচী বর্মায় আসেন । সন্দেহভাজন হিসেবে পুলিশ তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করে । তল্লাশিতে তাঁর পকেটে গাঁজার কলকে পাওয়া গেলেও তিনি গাঁজা খাওয়ার কথা অস্বীকার করেন । দারোগা নিমাইবাবু তাঁর অভিজ্ঞতার জোরে মহাপাত্রের চেহারার মধ্যে গাঁজা খাওয়ার সুস্পষ্ট লক্ষণ প্রত্যক্ষ করেন । তাই ভগ্ন স্বাস্থ্যের মহাপাত্রকে নিমাইবাবু গাঁজা না খাওয়ার পরামর্শ দেন ।

  1. ‘ দয়ার সাগর ! পরকে সেজে দি , নিজে খাইনে । মিথ্যেবাদী কোথাকার ! -কার উদ্দেশ্যে এই উক্তি ? তাকে ‘ দয়ার সাগর ’ ও ‘ মিথ্যেবাদী ‘ বলার কারণ কী ?

Ans: আমাদের পাঠ্য শরৎচন্দ্রের ‘ পথের দাবী ‘ উপন্যাসের অংশবিশেষে পুলিশকর্মী জগদীশবাবু থানায় আটক যার উদ্দেশ্যে উক্তি সন্দেহভাজন গিরীশ মহাপাত্রের উদ্দেশ্যে উক্তিটি করেছেন ।

  ‘ থানায় গিরীশ মহাপাত্রের পকেট তল্লাশি করে গাঁজার কলকে পেয়ে নিমাইবাবু তাকে গাঁজা খাওয়ার বিষয়ে প্রশ্ন করেন । উত্তরে সে জানায় সে খায় না তবে বন্ধুদের তৈরি করে দেয় । এ কথা শুনে সেখানে উপস্থিত জগদীশবাবু তাকে ‘ দয়ার সাগর ‘ বলে বাচ্চা করেন এবং তার মধ্যে গাঁজা খাওয়ার সব লক্ষণ প্রকট থাকায় তাকে মিথ্যেবাদী বলেন ।

  1. ‘ সে যে বর্মায় এসেছে এখবর সত্য । – ‘ সে ’ বলতে কার কথা বলা হয়েছে । তার আসার খবরে পুলিশকর্মীরা কী কী করেছিলেন ।

Ans: শরৎচন্দ্রের ‘ পথের দাবী ‘ – র উদ্ধৃতাংশে ‘ সে ’ বলতে পোলিটিক্যাল সাসপেক্ট সব্যসাচী মল্লিকের কথা বলা হয়েছে । সরকারি পুলিশ বাহিনীর কাছে রাজদ্রোহী সব্যসাচী মল্লিকের বর্মায় আসার খবর পৌঁছোনো মাত্রেই তাঁরা তল্লাশির মাত্রাও বাড়িয়ে দেন । তারা পুলিশের তৎপরতা বর্মা এবং রেঙ্গুনে কর্মরত ও কাজের সন্ধানে আসা বাঙালিদের আটক করে তল্লাশি চালান । এমনকি উপরও বিশেষভাবে নজর দেওয়ার কথা বলা হয় ।

  1. অপূর্ব কিছু আশ্চর্য হইয়া কহিল , — অপূর্ব কেন আশ্চর্য হল ? তার আশ্চর্য হওয়ার প্রকৃত কারণটি কী ছিল ?

Ans: ‘ পথের দাবী ‘ – তে অপূর্বর সহকর্মী রামদাস তলওয়ারকর অপূর্বকে অন্যমনস্কভাবে বসে থাকতে দেখে সে বাড়ির চিঠি পেয়েছে কিনা এবং বাড়ির সবাই ভালো আছে কিনা — এমন প্রশ্ন করে বসে । হঠাৎ এমন প্রশ্ন শুনে অপূর্ব আশ্চর্য হয় । 

  রাজদ্রোহী সব্যসাচীর বর্মায় আসার খবর পেয়ে পুলিশ খানাতল্লাশি বাড়িয়েও তাকে ধরতে ব্যর্থ হন । সব্যসাচীর ধরা না – পড়া বা কোনো দুর্ঘটনা না ঘটার মতো সৌভাগ্যকে অপূর্বর অবিশ্বাস্য মনে হচ্ছিল । তাই দৈনন্দিন কাজের মাঝে অপূর্ব কোথাও যেন অন্যমনস্ক হয়ে পড়েছিল ।

  1. ‘ বাস্তবিক , এমন তৎপর , এত বড়ো কার্যকুশলা মেয়ে আর যে কেহ আছে মনে হয় না হে তলওয়ারকর।— মেয়েটি কে ? তাকে ‘ কার্যকুশলা ‘ বলার কারণ কী ?

Ans: আলোচ্য অংশে ‘ মেয়ে ‘ বলতে অপূর্বর বাড়ির উপরতলায় বসবাসকারী একজন ক্রিশ্চান মেয়েকে বোঝানো হয়েছে ।

  যেদিন অপূর্বের ঘরে চোর ঢুকেছিল , সেদিন এই মেয়েটির জন্যই তার টাকাপয়সা ছাড়া বাকি সব জিনিসপত্র চুরি থেকে রক্ষা পেয়েছিল । শুধু তাই নয় , মেয়েটি অপূর্বর সব ছড়ানো জিনিসপত্র গুছিয়ে দিয়ে , ফর্দ করে কী আছে আর কী কী চুরি গেছে তার নিখুঁত হিসাব পর্যন্ত তৈরি করে রাখে । মেয়েটির তৎপরতায় অপূর্ব মুগ্ধ হয়ে তাকে ‘ কার্যকুশলা ‘ বিশেষণে ভূষিত করে ।

  1. কিন্তু পুলিশের দল এমন কাণ্ড করলে , এমন তামাশা দেখালে যে ও – কথা আর মনেই হলো না ।— ‘ ও – কথা ’ বলতে কোন কথার উল্লেখ করা হয়েছে । পুলিশের দল কী কাণ্ড করেছিল ?

Ans: শরৎচন্দ্রের ‘ পথের দাবী ‘ উপন্যাস থেকে গৃহীত উদ্ধৃতাংশে ‘ ও – কথা ’ বলতে অপূর্বর ঘরের চুরির অভিযোগের কথা বলা হয়েছে । রাজদ্রোহী সব্যসাচীর বর্মায় আসার খবরে সরকারি পুলিশ বর্মা ও রেঙ্গুনে কর্মরত ও কর্মপ্রার্থী বাঙালিদের আটক করে তল্লাশি চালাতে শুরু পুলিশের দলের কাণ্ড করেন । এই সময় গিরীশ মহাপাত্ররূপী সব্যসাচী ধরা পড়লেও তাঁর অদ্ভুত পোশাক ও চেহারা দেখে খানিকটা তাচ্ছিল্যের সঙ্গেই পুলিশ তাকে ছেড়ে দেয় । একজন বিপ্লবীকে ধরতে পুলিশের কাণ্ডকারখানা দেখে অপূর্ব তার অভিযোগটি জানাতেই ভুলে গিয়েছিলেন ।

  1. ‘ তাহার উৎকট হাসির বেগ কোনোমতে আর একবার সংবরণ করিয়া শেষে কহিল , ‘ —তার হাসির উদ্রেকের কারণ কী ? সে শেষে কী বলল ? 

Ans: পাঠ্য ‘ পথের দাবী ‘ রচনাতে ‘ তাহার ’ বলতে অপূর্বর কথা বলা হয়েছে । বন্ধুর কাছে পুলিশস্টেশনে দেখা গিরীশ মহাপাত্রর অদ্ভুত আচার – আচরণ ও বেশভূষার বিবরণ দিতে গিয়ে হাসির উদ্রেকের কারণ তাঁর হাসির উদ্রেক হয়েছিল ।

  অপূর্ব কোনো মতে তাঁর হাসির বেগকে সংবরণ করে বন্ধু রামদাসকে জানালেন , প্রখর বুদ্ধিদীপ্ত পুলিশকে যেভাবে সে বোকা বনতে দেখেছে তা আর কেউ দেখেনি । অথচ এরাই সরকারের বহু টাকা অপব্যয় করে অসম্ভবের আশায় ছুটে মরছে ।

  1. তা ছাড়া আমার বড়ো লজ্জা এই যে …’- অপূর্বের লজ্জার কারণটি কী ছিল ? সেটি তার কাছে লজ্জার মনে হয়েছিল কেন ?

Ans: শরৎচন্দ্রের ‘ পথের দাবী ’ উপন্যাসের অন্যতম মুখ্য চরিত্র লজ্জার কারণ অপূর্বর লজ্জার কারণ বাংলা দেশের অত্যাচারী পুলিশবাহিনীর একজন বড়োকর্তা নিমাইবাবু তাঁর বাবার বন্ধু , তাঁর আত্মীয়সম । লজ্জা মনে হওয়ার কারণ [ ] ব্যাপারটা অপূর্বর কাছে লজ্জার মনে হয়েছিল কারণ এই নিমাইবাবু দেশের শত্রু ইংরেজদের দ্বারা পুলিশবাহিনীতে নিয়োজিত হয়েছিলেন । তিনি ইংরেজদের নুন খেয়ে প্রতিনিয়ত ভারতীয় বিপ্লবীদের ধরপাকড় ও অত্যাচার চালাতেন । ইংরেজের দাসত্বকারী এমন একজনকে আত্মীয় অপূর্বর লজ্জা হচ্ছিল ।

  1. ‘ আমি ভীরু , কিন্তু তাই বলে অবিচারে দণ্ডভোগ করার অপমান আমাকে কম বাজে না ‘ — বক্তা কাকে এ কথা বলেছিলেন ? কোন্ অবিচারের দণ্ডভোগ তাঁকে ব্যথিত করেছিল ?

Ans: শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের লেখা ‘ পথের দাবী ‘ রচনাংশের কেন্দ্রীয় চরিত্র অপূর্ব তার সহকর্মী রামদাস তলওয়ারকরকে এ কথা বলেছিলেন । ফিরিঙ্গি ছোঁড়ারা বিনাদোষে অপূর্বকে তার নিজের দেশে লাথি মেরে প্ল্যাটফর্ম থেকে বার করে দিয়েছিল । অপূর্ব এই অন্যায়ের প্রতিবাদ করলে ইংরেজ স্টেশনমাস্টার শুধুমাত্র ভারতীয় হওয়ার অপরাধে তাকে স্টেশন থেকে তাড়িয়ে দেয় । এই অকারণ লাঞ্ছনাই অপূর্বকে মনে মনে ব্যথিত করেছিল ।

  1. এমন তো নিত্যনিয়তই ঘটছে- কোন ঘটনার কথা বলা হয়েছে ?

Ans: ‘ পথের দাবী ‘ রচনাংশ অনুসারে উদ্ধৃতাংশে অপূর্বর জীবনের উদ্ধৃত অংশের ঘটনা এক অপমানজনক ঘটনার কথা বলা হয়েছে । অকারণে কয়েকজন ফিরিঙ্গি যুবক অপূর্বকে লাথি | মেরে রেলওয়ে প্ল্যাটফর্ম থেকে বের করে দিয়েছিল । এই অন্যায়ের প্রতিবাদ করতে গেলে সাহেব স্টেশনমাস্টার অপূর্বকে স্টেশন থেকে তাড়িয়ে দিয়েছিল । যদিও স্টেশনটি ছিল ভারতবর্ষেরই এবং সেখানে যদিও বহু ভারতীয় উপস্থিত ছিল , তবু অপমানিত হওয়া অভ্যাস হয়ে যাওয়ায় তারা এর কোনো প্রতিবাদ করেনি । এই ঘটনা পরাধীন ভারতের অত্যাচার ও অপমানের দৈনন্দিন চিত্র । 

  1. ‘ অতএব যাওয়াই স্থির হইল / – কোথায় যাওয়া স্থির হল ? কী কারণে সেখানে যাওয়া স্থির হয়েছিল ?

Ans: প্রশ্নে উদ্ধৃত অংশে বক্তা অপূর্ব কর্মসূত্রে তার ভামো , ম্যান্ডালে , শোএবো , মিক্‌থিলা ও প্রোম শহরে যাওয়া স্থির হওয়ার কথা বলেছে ।

  অপূর্বের বড়োসাহেব অপূর্বকে জানান যে , ভাষো – সহ তাদের ম্যান্ডালে , শোএবো , মিথিলা ও প্রোম শহরের অফিসে নানা ধরনের গোলযোগ ঘটছে । যেহেতু বড়োসাহেবের অবর্তমানে অপূর্বকেই সমস্ত ভার নিতে হবে , তাই সবকিছুর সঙ্গে তার পরিচয় থাকা উচিত । এইজন্য বড়োসাহেবের ইচ্ছা যে , অপূর্ব একবার সব অফিসে যাক ।

  1. ‘ অপূর্ব হঠাৎ চকিত হইয়া বলিয়া উঠিল , ওই যে ! — ‘ ওই যে ’ বলে কাকে দেখানো হল ? অপূর্বের চকিত হওয়ার কারণ কী ?

Ans: শরৎচন্দ্রের ‘ পথের দাবী ‘ উপন্যাস থেকে গৃহীত অংশে ‘ ওই “ ওই যে সম্বোধন যে ’ বলে বক্তা অপূর্ব তার সহকর্মীকে যাকে দেখিয়েছিলেন তিনি হলেন ছদ্মবেশী সব্যসাচী ওরফে গিরীশ মহাপাত্র । অপূর্ব তার ঘরে চুরির অভিযোগ জানাতে থানায় গিয়ে পোলিটিক্যাল সাসপেক্ট গিরীশ মহাপাত্রকে দেখেছিলেন । গিরীশের বেশভূষা অপূর্বর মনে হাসি জাগালেও তার একটা সন্দেহের কথা তিনি চকিত হওয়ার কারণ সহকর্মী রামদাসকে বলেছিলেন । সেই গিরীশকে সহসা স্টেশনে দেখতে পেয়ে অপুর্ব চকিত হয়ে উঠেছিলেন । ‘ আমাকে কিন্তু বাবু বুটমুট হয়রান করা

  1. উক্তি ? তাকে ঝুটমুট হয়রান করা হয়েছে বলার কারণ কী ?

Ans: উদ্ধৃত উক্তিটি শরৎচন্দ্রের ‘ পথের দাবী ‘ উপন্যাসের কেন্দ্রীয় চরিত্র ছদ্মবেশী গিরীশ মহাপাত্র ওরফে সব্যসাচী মল্লিকের । 

  সব্যসাচী মল্লিকের বর্মায় আসার খবর পেয়ে পুলিশ তাকে পাকড়াও করার জন্য বর্মা ও রেঙ্গুনের কর্মরত ও কর্মপ্রার্থী বাঙালিদের ওপর নজর রাখে । সেই কারণেই গিরীশ মহাপাত্রকে থানায় জেরা ও তল্লাশি করা হয় । কিন্তু তাঁর কাছে সন্দেহজনক কিছু না পেয়ে পুলিশ তাঁকে ছেড়ে দিতে বাধ্য হন । অপূর্ব সেই ঘটনার সাক্ষী ছিলেন । পরবর্তীকালে অপূর্বর সঙ্গে তাঁর দেখা হলে তিনি কথাগুলি বলেছিলেন ।

  1. ‘ বাবুজি , মায়নে আপকো তো জরুর কঁহা দেখা —কার উক্তি । উক্তিটির অন্তর্নিহিত অর্থ পরিস্ফুট করো ।

Ans: উদ্ধৃত উক্তিটি ‘ পথের দাবী ‘ উপন্যাসের অন্যতম চরিত্র অপূর্বর সহকর্মী রামদাস তলওয়ারকরের । অন্তর্নিহিত অর্থ . হিন্দিভাষী রামদাস রেলস্টেশনে প্রথমবার ছদ্মবেশী গিরীশ মহাপাত্রকে দেখে উক্তিটি করেছিলেন । উক্তিটির অর্থ হল , ‘ বাবুজি আমি আপনাকে অবশ্যই কোথাও দেখেছি । ইতিপূর্বে রামদাস হয়তো ছদ্মবেশী সব্যসাচীকে অথবা তার ছবি কোথাও দেখেছিলেন কিন্তু সঠিক ভাবে তা মনে করতে পারছিল না । তাই তিনি বার বার সন্দিগ্ধ দৃষ্টিতে গিরীশ মহাপাত্র বা সব্যসাচীকে দেখে , মনে করার একটা অসহায় চেষ্টা করছিল । 

  1. ‘ ইচ্ছা করিলে আমি তোমাকে টানিয়া নীচে নামাইতে পারি।– প্রসঙ্গ নির্দেশ করে উদ্ধৃতাংশের তাৎপর্য বিশ্লেষণ করো ।

Ans: শরৎচন্দ্রের ‘ পথের দাবী ‘ উপন্যাসে উদ্ধৃত উক্তিটি করেছে বর্মা পুলিশের সাব – ইনস্পেক্টর । বাঙালি যুবক অপূর্ব তার অফিসের বড়োসাহেবের নির্দেশে প্রথম শ্রেণির যাত্রী হিসেবে ভামো যাচ্ছিলেন । তল্লাশির নাম করে পুলিশ যখন বার বার ঘুমের ব্যাঘাত ঘটাচ্ছিলেন তখন প্রতিবাদ করায় পুলিশ তার প্রতি এমন উক্তি করেছিলেন । বর্মা পুলিশের এই ঔদ্ধত্যপূর্ণ উক্তিটি শুধু অপূর্বর উদ্দেশ্যে নয় এ যেন সমগ্র ভারতীয়র উদ্দেশ্যে করা । এ থেকে ইংরেজ শাসনে ভারতীয়দের সামাজিক অবস্থান ও নিজের দেশে পরবাসী হয়ে থাকার ছবি স্পষ্টরূপে প্রতীয়মান ।

  1. ‘ বাবাই একদিন এঁর চাকরি করে দিয়েছিলেন । বক্তা কে ? তাঁর বাবা কাকে , কী চাকরি করে দিয়েছিলেন ?

Ans: শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় – এর ‘ পথের দাবী ‘ রচনাংশের অন্তর্গত আলোচ্য উদ্ধৃতাংশের বক্তা হলেন অপূর্ব । নিমাইবাবু ছিলেন অপূর্বর বাবার বন্ধু । অপূর্বর বাবা এই নিমাইবাবুকে ইংরেজশাসিত ভারতবর্ষে পুলিশের চাকরি করে কাকে , কী চাকরি দিয়েছে । এখন ব্রিটিশ পুলিশের উচ্চপদস্থ কর্তা নিমাইবাবু দেশপ্রেমিকদের আটক করে ব্রিটিশের দাসত্ব করেন ।

  1. ‘ নিমাইবাবু চুপ করিয়া রহিলেন।- নিমাইবাবু কে ? তার চুপ করে থাকার কারণ ব্যাখ্যা করো ।

Ans: শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের ‘ পথের দাবী ’ রচনাংশে নিমাইবাবু হলেন পুলিশের বড়োকর্তা বা দারোগাবাবু । চুপ থাকার কারণ → পুলিশের প্রধান লক্ষ্য ছিল বিপ্লবী সব্যসাচী মল্লিককে গ্রেপ্তার করা । তিনি ছিলেন চিকিৎসাবিদ্যায় সুপণ্ডিত , বহুভাষাবিদ ও বিদেশি বিশ্ববিদ্যালয়ে ডিগ্রিপ্রাপ্ত এক অসামান্য ব্যক্তিত্ব । কিন্তু সব্যসাচী মল্লিক সন্দেহে আটক গিরীশ মহাপাত্রের বেশভূষা , আচার – আচরণ ও কালচার— এসব কোনো কিছুই সব্যসাচীর সঙ্গে মেলে না । তা দেখে থানায় উপস্থিত অপূর্ব আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে বলে ; এই ব্যক্তি যে সব্যসাচী মল্লিক নয় তার সে জামিন হতে পারে । অপূর্বর এ কথায় খানিক দ্বিধাগ্রস্ত নিমাইবাবু চুপ করে ছিলেন ।

  1. ‘ আজ্ঞে না মাইরি খাইনে । — কার উক্তি ? কী কারণে এমন উক্তি ?

Ans: শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের ‘ পথের দাবী ‘ রচনাংশ থেকে উদ্ধৃত উক্তিটির বক্তা সব্যসাচী মল্লিক সন্দেহে পুলিশস্টেশনে আটক , গিরীশ মহাপাত্র । খানাতল্লাশির সময় অন্যান্য আরও কয়েকটি জিনিসের সঙ্গে গিরীশের কাছ থেকে একটি গাঁজার কলকে পাওয়া যায় । থানার দারাগো নিমাইবাবুর প্রশ্নের উত্তরে ; সে গাঁজা খাওয়ার কথা অস্বীকার করে । কিন্তু নিমাইবাবুর অভিজ্ঞ চোখে মহাপাত্রের শরীরে গাঁজা খাওয়ার উত্তির কারণ বিভিন্ন লক্ষণ স্পষ্ট হয়ে ওঠে । তাই ভগ্ন – স্বাস্থ্যের গিরীশকে তিনি গাঁজা খেতে নিষেধ করেন । বয়স্ক নিমাইবাবুর এমন অনুরোধে মহাপাত্র পুনরায় গাঁজা খাওয়ার কথা অস্বীকার করে , প্রশ্নোদ্ধৃত মন্তব্যটি করেছিল । 

25.’ রামদাস চুপ করিয়া রহিল , কিন্তু তাহার দুই চোখ ছলছল করিয়া আসিল । – রামদাস কে ? তার এমন অবস্থা হয়েছিল কেন ?

Ans: শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের ‘ পথের দাবী ‘ রচনাংশ অনুসারে অপূর্বর রেঙ্গুনের অফিসের সহকর্মী ছিল রামদাস তলওয়ারকর । রামদাসের চোখ – মুখের অবস্থার পরিবর্তন অপূর্ব তাঁর জীবনের একটি বেদনাদায়ক ঘটনার কথা রামদাসকে বলে । একদিন অকারণে কয়েকজন ফিরিঙ্গি ছোঁড়া অপূর্বকে লাথি মেরে রেলওয়ে প্ল্যাটফর্মের বাইরে বের করে দেয় । অথচ এর প্রতিবাদ করতে যাওয়ায় সাহেব স্টেশনমাস্টারও তাকে তাড়িয়ে দেয় । ভারতের একটি রেলস্টেশনে আরেক ভারতীয় এমন অসহ্য অপমানে উপস্থিত কেউই এগিয়ে আসে না । এ ঘটনার কথা শুনে দুঃখে ও লজ্জায় এক অব্যক্ত অপমানে সহমর্মী রামদাসের দু – চোখ ছলছল করে উঠেছিল ।

  1. ‘ কিন্তু বুনো হাঁস ধরাই যে এদের কাজ ; ‘ — বক্তা কে ? তার এই বক্তব্যের কারণ বিশ্লেষণ করো ।

Ans: ‘ পথের দাবী ‘ রচনাংশ থেকে উদ্ধৃত উক্তিটির বক্তা অপূর্বর সহকর্মী রামদাস তলওয়ারকর ।

   অপূর্ব সহকর্মী ও বন্ধু রামদাসের কাছে পুলিশস্টেশনে ঘটা গিরীশ মহাপাত্রের বেশভূষা , আচার – আচরণের আদ্যোপান্ত বিবরণ তুলে ধরে । এ প্রসঙ্গে তথাকথিত বুদ্ধিদীপ্ত পুলিশকে যেভাবে সে বোকা বনতে দেখেছে ; তাও জানায় । অথচ এরাই সরকারের বহু টাকা এভাবেই ‘ বুনো হাঁস ‘ তথা বিপ্লবীদের ধরার পিছনে ছুটোছুটি করে অপব্যয় করছে । অপূর্বর এ কথায় রামদাস হেসে জানায় , চোর ধরার বদলে আসলে ‘ বুনো হাঁস ‘ ধরাই এখন পুলিশের মূল কাজ হয়ে দাঁড়িয়েছে ।

 

সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর | পথের দাবী (গল্প) শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় – মাধ্যমিক বাংলা সাজেশন | Madhyamik Bengali Suggestion :

  1. তা ছাড়া আমার বড়ো লজ্জা এই যে …’- অপূর্বের লজ্জার কারণটি কী ছিল ? সেটি তার কাছে লজ্জার মনে হয়েছিল কেন ?

Answer: শরৎচন্দ্রের ‘ পথের দাবী ’ উপন্যাসের অন্যতম মুখ্য চরিত্র লজ্জার কারণ অপূর্বর লজ্জার কারণ বাংলা দেশের অত্যাচারী পুলিশবাহিনীর একজন বড়োকর্তা নিমাইবাবু তাঁর বাবার বন্ধু , তাঁর আত্মীয়সম । লজ্জা মনে হওয়ার কারণ [ ] ব্যাপারটা অপূর্বর কাছে লজ্জার মনে হয়েছিল কারণ এই নিমাইবাবু দেশের শত্রু ইংরেজদের দ্বারা পুলিশবাহিনীতে নিয়োজিত হয়েছিলেন । তিনি ইংরেজদের নুন খেয়ে প্রতিনিয়ত ভারতীয় বিপ্লবীদের ধরপাকড় ও অত্যাচার চালাতেন । ইংরেজের দাসত্বকারী এমন একজনকে আত্মীয় অপূর্বর লজ্জা হচ্ছিল ।

  1. ‘ আমি ভীরু , কিন্তু তাই বলে অবিচারে দণ্ডভোগ করার অপমান আমাকে কম বাজে না ‘ — বক্তা কাকে এ কথা বলেছিলেন ? কোন্ অবিচারের দণ্ডভোগ তাঁকে ব্যথিত করেছিল ?

Answer: শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের লেখা ‘ পথের দাবী ‘ রচনাংশের কেন্দ্রীয় চরিত্র অপূর্ব তার সহকর্মী রামদাস তলওয়ারকরকে এ কথা বলেছিলেন । ফিরিঙ্গি ছোঁড়ারা বিনাদোষে অপূর্বকে তার নিজের দেশে লাথি মেরে প্ল্যাটফর্ম থেকে বার করে দিয়েছিল । অপূর্ব এই অন্যায়ের প্রতিবাদ করলে ইংরেজ স্টেশনমাস্টার শুধুমাত্র ভারতীয় হওয়ার অপরাধে তাকে স্টেশন থেকে তাড়িয়ে দেয় । এই অকারণ লাঞ্ছনাই অপূর্বকে মনে মনে ব্যথিত করেছিল ।

  1. এমন তো নিত্যনিয়তই ঘটছে- কোন ঘটনার কথা বলা হয়েছে ?

Answer: ‘ পথের দাবী ‘ রচনাংশ অনুসারে উদ্ধৃতাংশে অপূর্বর জীবনের উদ্ধৃত অংশের ঘটনা এক অপমানজনক ঘটনার কথা বলা হয়েছে । অকারণে কয়েকজন ফিরিঙ্গি যুবক অপূর্বকে লাথি | মেরে রেলওয়ে প্ল্যাটফর্ম থেকে বের করে দিয়েছিল । এই অন্যায়ের প্রতিবাদ করতে গেলে সাহেব স্টেশনমাস্টার অপূর্বকে স্টেশন থেকে তাড়িয়ে দিয়েছিল । যদিও স্টেশনটি ছিল ভারতবর্ষেরই এবং সেখানে যদিও বহু ভারতীয় উপস্থিত ছিল , তবু অপমানিত হওয়া অভ্যাস হয়ে যাওয়ায় তারা এর কোনো প্রতিবাদ করেনি । এই ঘটনা পরাধীন ভারতের অত্যাচার ও অপমানের দৈনন্দিন চিত্র । 

  1. ‘ অতএব যাওয়াই স্থির হইল / – কোথায় যাওয়া স্থির হল ? কী কারণে সেখানে যাওয়া স্থির হয়েছিল ?

Answer: প্রশ্নে উদ্ধৃত অংশে বক্তা অপূর্ব কর্মসূত্রে তার ভামো , ম্যান্ডালে , শোএবো , মিক্‌থিলা ও প্রোম শহরে যাওয়া স্থির হওয়ার কথা বলেছে ।

  অপূর্বের বড়োসাহেব অপূর্বকে জানান যে , ভাষো – সহ তাদের ম্যান্ডালে , শোএবো , মিথিলা ও প্রোম শহরের অফিসে নানা ধরনের গোলযোগ ঘটছে । যেহেতু বড়োসাহেবের অবর্তমানে অপূর্বকেই সমস্ত ভার নিতে হবে , তাই সবকিছুর সঙ্গে তার পরিচয় থাকা উচিত । এইজন্য বড়োসাহেবের ইচ্ছা যে , অপূর্ব একবার সব অফিসে যাক ।

  1. অপূর্ব হঠাৎ চকিত হইয়া বলিয়া উঠিল , ওই যে ! — ‘ ওই যে ’ বলে কাকে দেখানো হল ? অপূর্বের চকিত হওয়ার কারণ কী ?

Answer: শরৎচন্দ্রের ‘ পথের দাবী ‘ উপন্যাস থেকে গৃহীত অংশে ‘ ওই “ ওই যে সম্বোধন যে ’ বলে বক্তা অপূর্ব তার সহকর্মীকে যাকে দেখিয়েছিলেন তিনি হলেন ছদ্মবেশী সব্যসাচী ওরফে গিরীশ মহাপাত্র । অপূর্ব তার ঘরে চুরির অভিযোগ জানাতে থানায় গিয়ে পোলিটিক্যাল সাসপেক্ট গিরীশ মহাপাত্রকে দেখেছিলেন । গিরীশের বেশভূষা অপূর্বর মনে হাসি জাগালেও তার একটা সন্দেহের কথা তিনি চকিত হওয়ার কারণ সহকর্মী রামদাসকে বলেছিলেন । সেই গিরীশকে সহসা স্টেশনে দেখতে পেয়ে অপুর্ব চকিত হয়ে উঠেছিলেন । ‘ আমাকে কিন্তু বাবু বুটমুট হয়রান করা ।

  1. উক্তি ? তাকে ঝুটমুট হয়রান করা হয়েছে বলার কারণ কী ?

Answer: উদ্ধৃত উক্তিটি শরৎচন্দ্রের ‘ পথের দাবী ‘ উপন্যাসের কেন্দ্রীয় চরিত্র ছদ্মবেশী গিরীশ মহাপাত্র ওরফে সব্যসাচী মল্লিকের । 

  সব্যসাচী মল্লিকের বর্মায় আসার খবর পেয়ে পুলিশ তাকে পাকড়াও করার জন্য বর্মা ও রেঙ্গুনের কর্মরত ও কর্মপ্রার্থী বাঙালিদের ওপর নজর রাখে । সেই কারণেই গিরীশ মহাপাত্রকে থানায় জেরা ও তল্লাশি করা হয় । কিন্তু তাঁর কাছে সন্দেহজনক কিছু না পেয়ে পুলিশ তাঁকে ছেড়ে দিতে বাধ্য হন । অপূর্ব সেই ঘটনার সাক্ষী ছিলেন । পরবর্তীকালে অপূর্বর সঙ্গে তাঁর দেখা হলে তিনি কথাগুলি বলেছিলেন ।

  1. ‘ বাবুজি , মায়নে আপকো তো জরুর কঁহা দেখা —কার উক্তি । উক্তিটির অন্তর্নিহিত অর্থ পরিস্ফুট করো ।

Answer: উদ্ধৃত উক্তিটি ‘ পথের দাবী ‘ উপন্যাসের অন্যতম চরিত্র অপূর্বর সহকর্মী রামদাস তলওয়ারকরের । অন্তর্নিহিত অর্থ . হিন্দিভাষী রামদাস রেলস্টেশনে প্রথমবার ছদ্মবেশী গিরীশ মহাপাত্রকে দেখে উক্তিটি করেছিলেন । উক্তিটির অর্থ হল , ‘ বাবুজি আমি আপনাকে অবশ্যই কোথাও দেখেছি । ইতিপূর্বে রামদাস হয়তো ছদ্মবেশী সব্যসাচীকে অথবা তার ছবি কোথাও দেখেছিলেন কিন্তু সঠিক ভাবে তা মনে করতে পারছিল না । তাই তিনি বার বার সন্দিগ্ধ দৃষ্টিতে গিরীশ মহাপাত্র বা সব্যসাচীকে দেখে , মনে করার একটা অসহায় চেষ্টা করছিল । 

  1. ‘ ইচ্ছা করিলে আমি তোমাকে টানিয়া নীচে নামাইতে পারি।– প্রসঙ্গ নির্দেশ করে উদ্ধৃতাংশের তাৎপর্য বিশ্লেষণ করো ।

Answer: শরৎচন্দ্রের ‘ পথের দাবী ‘ উপন্যাসে উদ্ধৃত উক্তিটি করেছে বর্মা পুলিশের সাব – ইনস্পেক্টর । বাঙালি যুবক অপূর্ব তার অফিসের বড়োসাহেবের নির্দেশে প্রথম শ্রেণির যাত্রী হিসেবে ভামো যাচ্ছিলেন । তল্লাশির নাম করে পুলিশ যখন বার বার ঘুমের ব্যাঘাত ঘটাচ্ছিলেন তখন প্রতিবাদ করায় পুলিশ তার প্রতি এমন উক্তি করেছিলেন । বর্মা পুলিশের এই ঔদ্ধত্যপূর্ণ উক্তিটি শুধু অপূর্বর উদ্দেশ্যে নয় এ যেন সমগ্র ভারতীয়র উদ্দেশ্যে করা । এ থেকে ইংরেজ শাসনে ভারতীয়দের সামাজিক অবস্থান ও নিজের দেশে পরবাসী হয়ে থাকার ছবি স্পষ্টরূপে প্রতীয়মান ।

  1. বাবাই একদিন এঁর চাকরি করে দিয়েছিলেন । বক্তা কে ? তাঁর বাবা কাকে , কী চাকরি করে দিয়েছিলেন ?

Answer: শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় – এর ‘ পথের দাবী ‘ রচনাংশের অন্তর্গত আলোচ্য উদ্ধৃতাংশের বক্তা হলেন অপূর্ব । নিমাইবাবু ছিলেন অপূর্বর বাবার বন্ধু । অপূর্বর বাবা এই নিমাইবাবুকে ইংরেজশাসিত ভারতবর্ষে পুলিশের চাকরি করে কাকে , কী চাকরি দিয়েছে । এখন ব্রিটিশ পুলিশের উচ্চপদস্থ কর্তা নিমাইবাবু দেশপ্রেমিকদের আটক করে ব্রিটিশের দাসত্ব করেন ।

  1. ‘ নিমাইবাবু চুপ করিয়া রহিলেন।- নিমাইবাবু কে ? তার চুপ করে থাকার কারণ ব্যাখ্যা করো ।

Answer: শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের ‘ পথের দাবী ’ রচনাংশে নিমাইবাবু হলেন পুলিশের বড়োকর্তা বা দারোগাবাবু । চুপ থাকার কারণ → পুলিশের প্রধান লক্ষ্য ছিল বিপ্লবী সব্যসাচী মল্লিককে গ্রেপ্তার করা । তিনি ছিলেন চিকিৎসাবিদ্যায় সুপণ্ডিত , বহুভাষাবিদ ও বিদেশি বিশ্ববিদ্যালয়ে ডিগ্রিপ্রাপ্ত এক অসামান্য ব্যক্তিত্ব । কিন্তু সব্যসাচী মল্লিক সন্দেহে আটক গিরীশ মহাপাত্রের বেশভূষা , আচার – আচরণ ও কালচার— এসব কোনো কিছুই সব্যসাচীর সঙ্গে মেলে না । তা দেখে থানায় উপস্থিত অপূর্ব আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে বলে ; এই ব্যক্তি যে সব্যসাচী মল্লিক নয় তার সে জামিন হতে পারে । অপূর্বর এ কথায় খানিক দ্বিধাগ্রস্ত নিমাইবাবু চুপ করে ছিলেন ।

  1. আজ্ঞে না মাইরি খাইনে । — কার উক্তি ? কী কারণে এমন উক্তি ?

Answer: শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের ‘ পথের দাবী ‘ রচনাংশ থেকে উদ্ধৃত উক্তিটির বক্তা সব্যসাচী মল্লিক সন্দেহে পুলিশস্টেশনে আটক , গিরীশ মহাপাত্র । খানাতল্লাশির সময় অন্যান্য আরও কয়েকটি জিনিসের সঙ্গে গিরীশের কাছ থেকে একটি গাঁজার কলকে পাওয়া যায় । থানার দারাগো নিমাইবাবুর প্রশ্নের উত্তরে ; সে গাঁজা খাওয়ার কথা অস্বীকার করে । কিন্তু নিমাইবাবুর অভিজ্ঞ চোখে মহাপাত্রের শরীরে গাঁজা খাওয়ার উত্তির কারণ বিভিন্ন লক্ষণ স্পষ্ট হয়ে ওঠে । তাই ভগ্ন – স্বাস্থ্যের গিরীশকে তিনি গাঁজা খেতে নিষেধ করেন । বয়স্ক নিমাইবাবুর এমন অনুরোধে মহাপাত্র পুনরায় গাঁজা খাওয়ার কথা অস্বীকার করে , প্রশ্নোদ্ধৃত মন্তব্যটি করেছিল । 

12.’ রামদাস চুপ করিয়া রহিল , কিন্তু তাহার দুই চোখ ছলছল করিয়া আসিল । – রামদাস কে ? তার এমন অবস্থা হয়েছিল কেন ?

Answer: শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের ‘ পথের দাবী ‘ রচনাংশ অনুসারে অপূর্বর রেঙ্গুনের অফিসের সহকর্মী ছিল রামদাস তলওয়ারকর । রামদাসের চোখ – মুখের অবস্থার পরিবর্তন অপূর্ব তাঁর জীবনের একটি বেদনাদায়ক ঘটনার কথা রামদাসকে বলে । একদিন অকারণে কয়েকজন ফিরিঙ্গি ছোঁড়া অপূর্বকে লাথি মেরে রেলওয়ে প্ল্যাটফর্মের বাইরে বের করে দেয় । অথচ এর প্রতিবাদ করতে যাওয়ায় সাহেব স্টেশনমাস্টারও তাকে তাড়িয়ে দেয় । ভারতের একটি রেলস্টেশনে আরেক ভারতীয় এমন অসহ্য অপমানে উপস্থিত কেউই এগিয়ে আসে না । এ ঘটনার কথা শুনে দুঃখে ও লজ্জায় এক অব্যক্ত অপমানে সহমর্মী রামদাসের দু – চোখ ছলছল করে উঠেছিল ।

  1. ‘ কিন্তু বুনো হাঁস ধরাই যে এদের কাজ ; ‘ — বক্তা কে ? তার এই বক্তব্যের কারণ বিশ্লেষণ করো ।

Answer: ‘ পথের দাবী ‘ রচনাংশ থেকে উদ্ধৃত উক্তিটির বক্তা অপূর্বর সহকর্মী রামদাস তলওয়ারকর ।

   অপূর্ব সহকর্মী ও বন্ধু রামদাসের কাছে পুলিশস্টেশনে ঘটা গিরীশ মহাপাত্রের বেশভূষা , আচার – আচরণের আদ্যোপান্ত বিবরণ তুলে ধরে । এ প্রসঙ্গে তথাকথিত বুদ্ধিদীপ্ত পুলিশকে যেভাবে সে বোকা বনতে দেখেছে ; তাও জানায় । অথচ এরাই সরকারের বহু টাকা এভাবেই ‘ বুনো হাঁস ‘ তথা বিপ্লবীদের ধরার পিছনে ছুটোছুটি করে অপব্যয় করছে । অপূর্বর এ কথায় রামদাস হেসে জানায় , চোর ধরার বদলে আসলে ‘ বুনো হাঁস ‘ ধরাই এখন পুলিশের মূল কাজ হয়ে দাঁড়িয়েছে ।

  1. গিরীশ মহাপাত্রের চেহারার বর্ণনা দাও ।

Answer: শরৎচন্দ্রের ‘ পথের দাবী ’ – র মূল চরিত্র বিপ্লবী সব্যসাচী মল্লিক গিরীশ মহাপাত্রের ছদ্মবেশে বর্মা আসেন । পোলিটিক্যাল সাসপেক্ট হিসেবে গিরীশ মহাপাত্রের চেহারার বর্ণনা তাঁকে আটক করলেও বেশভূষা ও চেহারার বিভ্রান্তিতে পুলিশ তাঁকে ছেড়ে দেয় । বছর বত্রিশের সব্যসাচীর গায়ের ফরসা রং রোদে পুড়ে তামাটে হয়েছে । রোগা চেহারার মানুষটি সামান্য পরিশ্রমেই হাঁপাতে ও কাশতে থাকেন । দেখে আশঙ্কা হয় সংসারের মেয়াদ বুঝি তার ফুরিয়ে এসেছে । তাকে আলাদাভাবে চোখে পড়ে তার রোগা মুখের দুটি চোখের অদ্ভুত দৃষ্টির জন্য ।

  1. কেবল আশ্চর্য সেই রোগা মুখের অদ্ভুত দুটি চোখের দৃষ্টি ।’- কার চোখের কথা বলা হয়েছে ? চোখদুটির বর্ণনা দাও । 

Answer: চোখ দুটির বর্ণনা উত্তর উদ্ধৃতাংশে শরৎচন্দ্রের ‘ পথের দাবী ‘ – র কেন্দ্রীয় চরিত্র সব্যসাচী ওরফে গিরীশ মহাপাত্রের চোখের কথা বলা হয়েছে । 

  অদ্ভুত বেশভূষাধারী ও রুগ্‌ণ গিরীশ মহাপাত্রের চেহারার সবচেয়ে আকর্ষণীয় ছিল তার চোখ দুটি । সে – চোখ ছোটো কী বড়ো , টানা কী গোল , দীপ্ত কী প্রভাহীন সে – বিচার করতে যাওয়া বৃথা । অত্যন্ত গভীর জলাশয়ের মতো চোখ দুটিতে এমন কিছু আছে যেখানে কোনো খেলা চলবে না , যেখান থেকে সাবধানে দূরে দাঁড়ানোই শ্রেয় । আসলে গিরীশ মহাপাত্রের চোখ ছদ্মবেশের আড়ালে লুকিয়ে থাকা অসাধারণ সব্যসাচী মল্লিককেই প্রকাশ করে ।

  1. বার্বুটির স্বাস্থ্য গেছে , কিন্তু শখ ষোলোআনাই বজায় আছে তা স্বীকার করতে হবে ।’— ‘ বাবুটি ’ কে ? তার শখ যে বজায় আছে , তা কীভাবে বোঝা গেল ? 

Answer: শরৎচন্দ্রের ‘ পথের দাবী ‘ – র আলোচ্য অংশে নিমাইবাবুর কথায় ‘ বাবুটি ’ হল ছদ্মবেশী গিরীশ মহাপাত্র । → গিরীশ মহাপাত্রের মাথার বাহারি ছাঁট , চুলে সুগন্ধি তেল , পরনে রামধনু রঙের জাপানি সিল্কের পাঞ্জাবি ও বিলিতি মখমল পাড়ের সূক্ষ্ম কালো শাড়ি , পকেটে বাঘ আঁকা শখ বজায় থাকার লক্ষণ রুমাল , পায়ে হাঁটু পর্যন্ত লাল ফিতে দিয়ে বাঁধা সবুজ মোজা ও বার্নিশ করা পাম্প শু , হাতে হরিণের শিঙের হাতল দেওয়া বেতের ছড়ি তার শখ ‘ বজায়ের পরিচয় দেয় । 

  1. গিরীশ মহাপাত্রের চুলের পারিপাট্য কীরুপ ছিল , তা সংক্ষেপে লেখো ।

Answer: শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় রচিত ‘ পথের দাবী ‘ উপন্যাসের ছদ্মবেশী গিরীশ মহাপাত্রের চেহারার বর্ণনার সঙ্গে লেখক তাঁর চুলের পারিপাট্যের সুন্দর বর্ণনাও দিয়েছেন । তাঁর মাথার সামনের দিকের চুল বড়ো থাকলেও পিছনের দিকে তা প্রায় ছিল না বললেই হয় । তেল চুলের পরিপাট্য চুপচুপে চুলের মাঝখান দিয়ে সিঁথি কাটা । চুল থেকে নেবুর তেলের উগ্র অসহনীয় গন্ধ থানাসুদ্ধ লোকের এমন মাথা ধরিয়ে দিয়েছিল যে , জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করেও তাঁরা তাঁকে ছেড়ে দিতে বাধ্য হন ।

  1. ‘ এ লোকটিকে আপনি কোনো কথা জিজ্ঞেস না করেই ছেড়ে দিন , — ‘ লোকটি কে ? তাকে কোনো কথা জিজ্ঞেস না – করেই ছেড়ে দেওয়ার কথা বলা হয়েছে কেন ?

Answer: ‘ পথের দাবী ‘ – র উদ্ধৃত উক্তিটিতে ‘ লোকটি ‘ হল পুলিশস্টেশনে আটক সন্দেহভাজন গিরীশ মহাপাত্র ওরফে রাজদ্রোহী সব্যসাচী মল্লিক ।

   ‘ পথের দাবী ‘ – র অন্যতম কেন্দ্রীয় চরিত্র অপূর্ব যে সব্যসাচী মল্লিককে জানতেন তিনি ছিলেন বহু ভাষা ও বিষয়ে সুপণ্ডিত । লোকটিকে ছেড়ে বিজ্ঞান ও চিকিৎসাশাস্ত্রে পারদর্শী এবং বিদেশি ডিগ্রিপ্রাপ্ত এক ডাক্তার । কিন্তু সেই সব্যসাচী মল্লিক হিসেবে পুলিশ যাকে আটক করেছিল তার আচার – আচরণ কোনো কিছুই সব্যসাচীর সঙ্গে মেলে না । তাই অপূর্ব অনেকটা নিশ্চিত হয়েই এমন মন্তব্য করেছেন । 

  1. তবে এ বস্তুটি পকেটে কেন ? – কোন বস্তুর কথা বলা হয়েছে ? তা পকেটে থাকার সপক্ষে যে – যুক্তিটি দেওয়া হয়েছিল , তা কতখানি সন্তোষজনক ? 

Answer: শরৎচন্দ্রের ‘ পথের দাবী ‘ উপন্যাস থেকে গৃহীত উদ্ধৃতাংশে যে – বস্তুর কথা বলা হয়েছে তা হল একটি গাঁজার কলকে । 

  পুলিশস্টেশনে তল্লাশির সময় গিরীশ মহাপাত্রের পকেটে গাঁজার কলকেটি পাওয়া যায় । দারোগা নিমাইবাবু কলকেটির সম্পর্কে জানতে চাইলে মহাপাত্র জানায় সে গাঁজা খায় না , কিন্তু সপক্ষে যুক্তি পথে কুড়িয়ে পেয়ে সেটি বন্ধুদের প্রয়োজনার্থেই পকেটে রেখেছে । অভিজ্ঞ দারোগা নিমাইবাবুর কাছে এই বক্তব্য যুক্তিগ্রাহ্য লাগেনি । কেন – না গিরীশ মহাপাত্রের চেহারার মধ্যে গাঁজা সেবনের লক্ষণ স্পষ্ট ছিল । 

  1. ‘ বুড়োমানুষের কথাটা শুনো।— ‘ বুড়োমানুষ ‘ কে ? তাঁর কোন্ কথা শুনতে বলা হচ্ছে ?

Answer: ‘ পথের দাবী ‘ – র উদ্ধৃতাংশে ‘ বুড়োমানুষ ‘ বলতে দারোগা নিমাইবাবু নিজেকে বুঝিয়েছেন । যে – কথা শুনতে বলা হচ্ছে । গিরীশ মহাপাত্রের ছদ্মবেশে বিপ্লবী সব্যসাচী বর্মায় আসেন । সন্দেহভাজন হিসেবে পুলিশ তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করে । তল্লাশিতে তাঁর পকেটে গাঁজার কলকে পাওয়া গেলেও তিনি গাঁজা খাওয়ার কথা অস্বীকার করেন । দারোগা নিমাইবাবু তাঁর অভিজ্ঞতার জোরে মহাপাত্রের চেহারার মধ্যে গাঁজা খাওয়ার সুস্পষ্ট লক্ষণ প্রত্যক্ষ করেন । তাই ভগ্ন স্বাস্থ্যের মহাপাত্রকে নিমাইবাবু গাঁজা না খাওয়ার পরামর্শ দেন ।

  1. দয়ার সাগর ! পরকে সেজে দি , নিজে খাইনে । মিথ্যেবাদী কোথাকার ! -কার উদ্দেশ্যে এই উক্তি ? তাকে ‘ দয়ার সাগর ’ ও ‘ মিথ্যেবাদী ‘ বলার কারণ কী ?

Answer: আমাদের পাঠ্য শরৎচন্দ্রের ‘ পথের দাবী ‘ উপন্যাসের অংশবিশেষে পুলিশকর্মী জগদীশবাবু থানায় আটক যার উদ্দেশ্যে উক্তি সন্দেহভাজন গিরীশ মহাপাত্রের উদ্দেশ্যে উক্তিটি করেছেন ।

  ‘ থানায় গিরীশ মহাপাত্রের পকেট তল্লাশি করে গাঁজার কলকে পেয়ে নিমাইবাবু তাকে গাঁজা খাওয়ার বিষয়ে প্রশ্ন করেন । উত্তরে সে জানায় সে খায় না তবে বন্ধুদের তৈরি করে দেয় । এ কথা শুনে সেখানে উপস্থিত জগদীশবাবু তাকে ‘ দয়ার সাগর ‘ বলে বাচ্চা করেন এবং তার মধ্যে গাঁজা খাওয়ার সব লক্ষণ প্রকট থাকায় তাকে মিথ্যেবাদী বলেন ।

  1. ‘ সে যে বর্মায় এসেছে এখবর সত্য । – ‘ সে ’ বলতে কার কথা বলা হয়েছে । তার আসার খবরে পুলিশকর্মীরা কী কী করেছিলেন ।

Answer: শরৎচন্দ্রের ‘ পথের দাবী ‘ – র উদ্ধৃতাংশে ‘ সে ’ বলতে পোলিটিক্যাল সাসপেক্ট সব্যসাচী মল্লিকের কথা বলা হয়েছে । সরকারি পুলিশ বাহিনীর কাছে রাজদ্রোহী সব্যসাচী মল্লিকের বর্মায় আসার খবর পৌঁছোনো মাত্রেই তাঁরা তল্লাশির মাত্রাও বাড়িয়ে দেন । তারা পুলিশের তৎপরতা বর্মা এবং রেঙ্গুনে কর্মরত ও কাজের সন্ধানে আসা বাঙালিদের আটক করে তল্লাশি চালান । এমনকি উপরও বিশেষভাবে নজর দেওয়ার কথা বলা হয় ।

  1. অপূর্ব কিছু আশ্চর্য হইয়া কহিল , — অপূর্ব কেন আশ্চর্য হল ? তার আশ্চর্য হওয়ার প্রকৃত কারণটি কী ছিল ?

Answer: ‘ পথের দাবী ‘ – তে অপূর্বর সহকর্মী রামদাস তলওয়ারকর অপূর্বকে অন্যমনস্কভাবে বসে থাকতে দেখে সে বাড়ির চিঠি পেয়েছে কিনা এবং বাড়ির সবাই ভালো আছে কিনা — এমন প্রশ্ন করে বসে । হঠাৎ এমন প্রশ্ন শুনে অপূর্ব আশ্চর্য হয় । 

  রাজদ্রোহী সব্যসাচীর বর্মায় আসার খবর পেয়ে পুলিশ খানাতল্লাশি বাড়িয়েও তাকে ধরতে ব্যর্থ হন । সব্যসাচীর ধরা না – পড়া বা কোনো দুর্ঘটনা না ঘটার মতো সৌভাগ্যকে অপূর্বর অবিশ্বাস্য মনে হচ্ছিল । তাই দৈনন্দিন কাজের মাঝে অপূর্ব কোথাও যেন অন্যমনস্ক হয়ে পড়েছিল ।

  1. ‘ বাস্তবিক , এমন তৎপর , এত বড়ো কার্যকুশলা মেয়ে আর যে কেহ আছে মনে হয় না হে তলওয়ারকর।— মেয়েটি কে ? তাকে ‘ কার্যকুশলা ‘ বলার কারণ কী ?

Answer: আলোচ্য অংশে ‘ মেয়ে ‘ বলতে অপূর্বর বাড়ির উপরতলায় বসবাসকারী একজন ক্রিশ্চান মেয়েকে বোঝানো হয়েছে ।

  যেদিন অপূর্বের ঘরে চোর ঢুকেছিল , সেদিন এই মেয়েটির জন্যই তার টাকাপয়সা ছাড়া বাকি সব জিনিসপত্র চুরি থেকে রক্ষা পেয়েছিল । শুধু তাই নয় , মেয়েটি অপূর্বর সব ছড়ানো জিনিসপত্র গুছিয়ে দিয়ে , ফর্দ করে কী আছে আর কী কী চুরি গেছে তার নিখুঁত হিসাব পর্যন্ত তৈরি করে রাখে । মেয়েটির তৎপরতায় অপূর্ব মুগ্ধ হয়ে তাকে ‘ কার্যকুশলা ‘ বিশেষণে ভূষিত করে ।

  1. কিন্তু পুলিশের দল এমন কাণ্ড করলে , এমন তামাশা দেখালে যে ও – কথা আর মনেই হলো না ।— ‘ ও – কথা ’ বলতে কোন কথার উল্লেখ করা হয়েছে । পুলিশের দল কী কাণ্ড করেছিল ?

Answer: শরৎচন্দ্রের ‘ পথের দাবী ‘ উপন্যাস থেকে গৃহীত উদ্ধৃতাংশে ‘ ও – কথা ’ বলতে অপূর্বর ঘরের চুরির অভিযোগের কথা বলা হয়েছে । রাজদ্রোহী সব্যসাচীর বর্মায় আসার খবরে সরকারি পুলিশ বর্মা ও রেঙ্গুনে কর্মরত ও কর্মপ্রার্থী বাঙালিদের আটক করে তল্লাশি চালাতে শুরু পুলিশের দলের কাণ্ড করেন । এই সময় গিরীশ মহাপাত্ররূপী সব্যসাচী ধরা পড়লেও তাঁর অদ্ভুত পোশাক ও চেহারা দেখে খানিকটা তাচ্ছিল্যের সঙ্গেই পুলিশ তাকে ছেড়ে দেয় । একজন বিপ্লবীকে ধরতে পুলিশের কাণ্ডকারখানা দেখে অপূর্ব তার অভিযোগটি জানাতেই ভুলে গিয়েছিলেন ।

  1. ‘ তাহার উৎকট হাসির বেগ কোনোমতে আর একবার সংবরণ করিয়া শেষে কহিল , ‘ —তার হাসির উদ্রেকের কারণ কী ? সে শেষে কী বলল ? 

Answer: পাঠ্য ‘ পথের দাবী ‘ রচনাতে ‘ তাহার ’ বলতে অপূর্বর কথা বলা হয়েছে । বন্ধুর কাছে পুলিশস্টেশনে দেখা গিরীশ মহাপাত্রর অদ্ভুত আচার – আচরণ ও বেশভূষার বিবরণ দিতে গিয়ে হাসির উদ্রেকের কারণ তাঁর হাসির উদ্রেক হয়েছিল ।

  অপূর্ব কোনো মতে তাঁর হাসির বেগকে সংবরণ করে বন্ধু রামদাসকে জানালেন , প্রখর বুদ্ধিদীপ্ত পুলিশকে যেভাবে সে বোকা বনতে দেখেছে তা আর কেউ দেখেনি । অথচ এরাই সরকারের বহু টাকা অপব্যয় করে অসম্ভবের আশায় ছুটে মরছে ।

(৩) ব্যাখ্যা ভিত্তিক সংক্ষিপ্ত প্রশ্নগুলির উত্তর দাও :

প্রশ্নঃ ‘বাবুটির স্বাস্থ্য গেছে, কিন্তু শখ ষোলোআনাই বজায় আছে তা স্বীকার করতে হবে।’ – ‘বাবুটি’ কে? তার শখ যে বজায় আছে, তা কীভাবে বোঝা গেল? 

উত্তরঃ শরৎচন্দ্রের ‘পথের দাবী’ গল্পের আলোচ্য অংশে নিমাইবাবুর কথায় ‘বাবুটি’ হল ছদ্মবেশী গিরীশ মহাপাত্র।

      গিরীশ মহাপাত্রের মাথার বাহারি ছাঁট, চুলে সুগন্ধি তেল, পরনে রামধনু রঙের জাপানি সিল্কের পাঞ্জাবি ও বিলিতি মখমল পাড়ের সূক্ষ্ম কালো শাড়ি, পকেটে বাঘ আঁকা শখ বজায় থাকার লক্ষণ রুমাল, পায়ে হাঁটু পর্যন্ত লাল ফিতে দিয়ে বাঁধা সবুজ মোজা ও বার্নিশ করা পাম্প শু, হাতে হরিণের শিঙের হাতল দেওয়া বেতের ছড়ি তার শখ বজায়ের পরিচয় দেয়। 

প্রশ্নঃ গিরীশ মহাপাত্রের চেহারার বর্ণনা দাও।

উত্তরঃ শরৎচন্দ্রের ‘পথের দাবী’ গল্পের মূল চরিত্র বিপ্লবী সব্যসাচী মল্লিক গিরীশ মহাপাত্রের ছদ্মবেশে বর্মা আসেন। পোলিটিক্যাল সাসপেক্ট হিসেবে গিরীশ মহাপাত্রের চেহারার বর্ণনা তাঁকে আটক করলেও বেশভূষা ও চেহারার বিভ্রান্তিতে পুলিশ তাঁকে ছেড়ে দেয়। বছর বত্রিশের সব্যসাচীর গায়ের ফরসা রং রোদে পুড়ে তামাটে হয়েছে। রোগা চেহারার মানুষটি সামান্য পরিশ্রমেই হাঁপাতে ও কাশতে থাকেন। দেখে আশঙ্কা হয় সংসারের মেয়াদ বুঝি তার ফুরিয়ে এসেছে। তাকে আলাদাভাবে চোখে পড়ে তার রোগা মুখের দুটি চোখের অদ্ভুত দৃষ্টির জন্য।

প্রশ্নঃ ‘তবে এ বস্তুটি পকেটে কেন?’ – কোন বস্তুর কথা বলা হয়েছে? তা পকেটে থাকার সপক্ষে যে যুক্তিটি দেওয়া হয়েছিল, তা কতখানি সন্তোষজনক? 

উত্তরঃ শরৎচন্দ্রের ‘পথের দাবী’ উপন্যাস থেকে গৃহীত উদ্ধৃতাংশে যে বস্তুর কথা বলা হয়েছে তা হল একটি গাঁজার কলকে। 

     পুলিশস্টেশনে তল্লাশির সময় গিরীশ মহাপাত্রের পকেটে গাঁজার কলকেটি পাওয়া যায়। দারোগা নিমাইবাবু কলকেটির সম্পর্কে জানতে চাইলে মহাপাত্র জানায় সে গাঁজা খায় না, কিন্তু সপক্ষে যুক্তি পথে কুড়িয়ে পেয়ে সেটি বন্ধুদের প্রয়োজনার্থেই পকেটে রেখেছে। অভিজ্ঞ দারোগা নিমাইবাবুর কাছে এই বক্তব্য যুক্তিগ্রাহ্য লাগেনি। কেন না গিরীশ মহাপাত্রের চেহারার মধ্যে গাঁজা সেবনের লক্ষণ স্পষ্ট ছিল। 

প্রশ্নঃ ‘বুড়োমানুষের কথাটা শুনো।’ – ‘বুড়োমানুষ’ কে? তাঁর কোন্ কথা শুনতে বলা হচ্ছে?

উত্তরঃ ‘পথের দাবী গল্পের উদ্ধৃতাংশে ‘বুড়োমানুষ’ বলতে দারোগা নিমাইবাবু নিজেকে বুঝিয়েছেন। যে কথা শুনতে বলা হচ্ছে । গিরীশ মহাপাত্রের ছদ্মবেশে বিপ্লবী সব্যসাচী বর্মায় আসেন। সন্দেহভাজন হিসেবে পুলিশ তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করে। তল্লাশিতে তাঁর পকেটে গাঁজার কলকে পাওয়া গেলেও তিনি গাঁজা খাওয়ার কথা অস্বীকার করেন। দারোগা নিমাইবাবু তাঁর অভিজ্ঞতার জোরে মহাপাত্রের চেহারার মধ্যে গাঁজা খাওয়ার সুস্পষ্ট লক্ষণ প্রত্যক্ষ করেন। তাই ভগ্ন স্বাস্থ্যের মহাপাত্রকে নিমাইবাবু গাঁজা না খাওয়ার পরামর্শ দেন।

প্রশ্নঃ ‘অপূর্ব কিছু আশ্চর্য হইয়া কহিল’ – অপূর্ব কেন আশ্চর্য হল? তার আশ্চর্য হওয়ার প্রকৃত কারণটি কী ছিল?

উত্তরঃ ‘পথের দাবী’ গল্পে অপূর্বর সহকর্মী রামদাস তলওয়ারকর অপূর্বকে অন্যমনস্কভাবে বসে থাকতে দেখে সে বাড়ির চিঠি পেয়েছে কিনা এবং বাড়ির সবাই ভালো আছে কিনা – এমন প্রশ্ন করে বসে। হঠাৎ এমন প্রশ্ন শুনে অপূর্ব আশ্চর্য হয়।

      রাজদ্রোহী সব্যসাচীর বর্মায় আসার খবর পেয়ে পুলিশ খানাতল্লাশি বাড়িয়েও তাকে ধরতে ব্যর্থ হন। সব্যসাচীর ধরা না পড়া বা কোনো দুর্ঘটনা না ঘটার মতো সৌভাগ্যকে অপূর্বর অবিশ্বাস্য মনে হচ্ছিল। তাই দৈনন্দিন কাজের মাঝে অপূর্ব কোথাও যেন অন্যমনস্ক হয়ে পড়েছিল।

প্রশ্নঃ ‘তা ছাড়া আমার বড়ো লজ্জা এই যে’ – অপূর্বের লজ্জার কারণটি কী ছিল? সেটি তার কাছে লজ্জার মনে হয়েছিল কেন?

উত্তরঃ শরৎচন্দ্রের ‘পথের দাবী’ উপন্যাসের অন্যতম মুখ্য চরিত্র লজ্জার কারণ অপূর্বর লজ্জার কারণ বাংলা দেশের অত্যাচারী পুলিশবাহিনীর একজন বড়োকর্তা নিমাইবাবু তাঁর বাবার বন্ধু, তাঁর আত্মীয়সম। লজ্জা মনে হওয়ার কারণ ব্যাপারটা অপূর্বর কাছে লজ্জার মনে হয়েছিল কারণ এই নিমাইবাবু দেশের শত্রু ইংরেজদের দ্বারা পুলিশবাহিনীতে নিয়োজিত হয়েছিলেন। তিনি ইংরেজদের নুন খেয়ে প্রতিনিয়ত ভারতীয় বিপ্লবীদের ধরপাকড় ও অত্যাচার চালাতেন। ইংরেজের দাসত্বকারী এমন একজনকে আত্মীয় অপূর্বর লজ্জা হচ্ছিল।

প্রশ্নঃ ‘অপূর্ব হঠাৎ চকিত হইয়া বলিয়া উঠিল, ওই যে!’ – ‘ওই যে’ বলে কাকে দেখানো হল ? অপূর্বের চকিত হওয়ার কারণ কী?

উত্তরঃ শরৎচন্দ্রের ‘পথের দাবী’ উপন্যাস থেকে গৃহীত অংশে ‘ওই যে’ বলে বক্তা অপূর্ব তার সহকর্মীকে যাকে দেখিয়েছিলেন তিনি হলেন ছদ্মবেশী সব্যসাচী ওরফে গিরীশ মহাপাত্র। অপূর্ব তার ঘরে চুরির অভিযোগ জানাতে থানায় গিয়ে পোলিটিক্যাল সাসপেক্ট গিরীশ মহাপাত্রকে দেখেছিলেন। গিরীশের বেশভূষা অপূর্বর মনে হাসি জাগালেও তার একটা সন্দেহের কথা তিনি চকিত হওয়ার কারণ সহকর্মী রামদাসকে বলেছিলেন। সেই গিরীশকে সহসা স্টেশনে দেখতে পেয়ে অপুর্ব চকিত হয়ে উঠেছিলেন ।

প্রশ্নঃ ‘বাবুজি, মায়নে আপকো তো জরুর কঁহা দেখা’ – কার উক্তি। উক্তিটির অন্তর্নিহিত অর্থ পরিস্ফুট করো।

উত্তরঃ উদ্ধৃত উক্তিটি ‘পথের দাবী’ উপন্যাসের অন্যতম চরিত্র অপূর্বর সহকর্মী রামদাস তলওয়ারকরের। অন্তর্নিহিত অর্থ হিন্দিভাষী রামদাস রেলস্টেশনে প্রথমবার ছদ্মবেশী গিরীশ মহাপাত্রকে দেখে উক্তিটি করেছিলেন। উক্তিটির অর্থ হল, ‘বাবুজি আমি আপনাকে অবশ্যই কোথাও দেখেছি।’ ইতিপূর্বে রামদাস হয়তো ছদ্মবেশী সব্যসাচীকে অথবা তার ছবি কোথাও দেখেছিলেন কিন্তু সঠিক ভাবে তা মনে করতে পারছিল না। তাই তিনি বার বার সন্দিগ্ধ দৃষ্টিতে গিরীশ মহাপাত্র বা সব্যসাচীকে দেখে, মনে করার একটা অসহায় চেষ্টা করছিল। 

প্রশ্নঃ ‘নিমাইবাবু চুপ করিয়া রহিলেন।’ – নিমাইবাবু কে? তার চুপ করে থাকার কারণ ব্যাখ্যা করো।

উত্তরঃ শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের ‘পথের দাবী’ রচনাংশে নিমাইবাবু হলেন পুলিশের বড়োকর্তা বা দারোগাবাবু।

     পুলিশের প্রধান লক্ষ্য ছিল বিপ্লবী সব্যসাচী মল্লিককে গ্রেপ্তার করা। তিনি ছিলেন চিকিৎসাবিদ্যায় সুপণ্ডিত, বহুভাষাবিদ ও বিদেশি বিশ্ববিদ্যালয়ে ডিগ্রিপ্রাপ্ত এক অসামান্য ব্যক্তিত্ব। কিন্তু সব্যসাচী মল্লিক সন্দেহে আটক গিরীশ মহাপাত্রের বেশভূষা, আচার–আচরণ ও কালচার – এসব কোনো কিছুই সব্যসাচীর সঙ্গে মেলে না। তা দেখে থানায় উপস্থিত অপূর্ব আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে বলে; এই ব্যক্তি যে সব্যসাচী মল্লিক নয় তার সে জামিন হতে পারে। অপূর্বর এ কথায় খানিক দ্বিধাগ্রস্ত নিমাইবাবু চুপ করে ছিলেন।

প্রশ্নঃ ‘কিন্তু বুনো হাঁস ধরাই যে এদের কাজ’ – বক্তা কে? তার এই বক্তব্যের কারণ বিশ্লেষণ করো।

উত্তরঃ ‘পথের দাবী’ রচনাংশ থেকে উদ্ধৃত উক্তিটির বক্তা অপূর্বর সহকর্মী রামদাস তলওয়ারকর।

     অপূর্ব সহকর্মী ও বন্ধু রামদাসের কাছে পুলিশস্টেশনে ঘটা গিরীশ মহাপাত্রের বেশভূষা, আচার–আচরণের আদ্যোপান্ত বিবরণ তুলে ধরে। এ প্রসঙ্গে তথাকথিত বুদ্ধিদীপ্ত পুলিশকে যেভাবে সে বোকা বনতে দেখেছে তাও জানায়। অথচ এরাই সরকারের বহু টাকা এভাবেই ‘বুনো হাঁস’ তথা বিপ্লবীদের ধরার পিছনে ছুটোছুটি করে অপব্যয় করছে। অপূর্বর এ কথায় রামদাস হেসে জানায়, চোর ধরার বদলে আসলে ‘বুনো হাঁস’ ধরাই এখন পুলিশের মূল কাজ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

প্রশ্নঃ ‘কেবল আশ্চর্য সেই রোগা মুখের অদ্ভুত দুটি চোখের দৃষ্টি।’ – কার চোখের কথা বলা হয়েছে? চোখদুটির বর্ণনা দাও। 

উত্তরঃ চোখ দুটির বর্ণনা উত্তর উদ্ধৃতাংশে শরৎচন্দ্রের ‘পথের দাবী’ গল্পের কেন্দ্রীয় চরিত্র সব্যসাচী ওরফে গিরীশ মহাপাত্রের চোখের কথা বলা হয়েছে। 

     অদ্ভুত বেশভূষাধারী ও রুগ্‌ণ গিরীশ মহাপাত্রের চেহারার সবচেয়ে আকর্ষণীয় ছিল তার চোখ দুটি। সে – চোখ ছোটো কী বড়ো, টানা কী গোল, দীপ্ত কী প্রভাহীন সে – বিচার করতে যাওয়া বৃথা। অত্যন্ত গভীর জলাশয়ের মতো চোখ দুটিতে এমন কিছু আছে যেখানে কোনো খেলা চলবে না, যেখান থেকে সাবধানে দূরে দাঁড়ানোই শ্রেয়। আসলে গিরীশ মহাপাত্রের চোখ ছদ্মবেশের আড়ালে লুকিয়ে থাকা অসাধারণ সব্যসাচী মল্লিককেই প্রকাশ করে।

প্রশ্নঃ ‘দয়ার সাগর! পরকে সেজে দি, নিজে খাইনে। মিথ্যেবাদী কোথাকার!’ – কার উদ্দেশ্যে এই উক্তি? তাকে ‘দয়ার সাগর’ ও ‘মিথ্যেবাদী’ বলার কারণ কী?

উত্তরঃ আমাদের পাঠ্য শরৎচন্দ্রের ‘পথের দাবী’ উপন্যাসের অংশবিশেষে পুলিশকর্মী জগদীশবাবু থানায় আটক যার উদ্দেশ্যে উক্তি সন্দেহভাজন গিরীশ মহাপাত্রের উদ্দেশ্যে উক্তিটি করেছেন।

      থানায় গিরীশ মহাপাত্রের পকেট তল্লাশি করে গাঁজার কলকে পেয়ে নিমাইবাবু তাকে গাঁজা খাওয়ার বিষয়ে প্রশ্ন করেন। উত্তরে সে জানায় সে খায় না তবে বন্ধুদের তৈরি করে দেয়। একথা শুনে সেখানে উপস্থিত জগদীশবাবু তাকে ‘দয়ার সাগর’ বলে বাচ্চা করেন এবং তার মধ্যে গাঁজা খাওয়ার সব লক্ষণ প্রকট থাকায় তাকে মিথ্যেবাদী বলেন।

প্রশ্নঃ ‘ইচ্ছা করিলে আমি তোমাকে টানিয়া নীচে নামাইতে পারি।’ – প্রসঙ্গ নির্দেশ করে উদ্ধৃতাংশের তাৎপর্য বিশ্লেষণ করো।

উত্তরঃ শরৎচন্দ্রের ‘পথের দাবী’ উপন্যাসে উদ্ধৃত উক্তিটি করেছে বর্মা পুলিশের সাব–ইনস্পেক্টর। বাঙালি যুবক অপূর্ব তার অফিসের বড়োসাহেবের নির্দেশে প্রথম শ্রেণির যাত্রী হিসেবে ভামো যাচ্ছিলেন। তল্লাশির নাম করে পুলিশ যখন বার বার ঘুমের ব্যাঘাত ঘটাচ্ছিলেন তখন প্রতিবাদ করায় পুলিশ তার প্রতি এমন উক্তি করেছিলেন। বর্মা পুলিশের এই ঔদ্ধত্যপূর্ণ উক্তিটি শুধু অপূর্বর উদ্দেশ্যে নয় এ যেন সমগ্র ভারতীয়র উদ্দেশ্যে করা। এ থেকে ইংরেজ শাসনে ভারতীয়দের সামাজিক অবস্থান ও নিজের দেশে পরবাসী হয়ে থাকার ছবি স্পষ্টরূপে প্রতীয়মান।

==============================================================

পথের দাবী অধ্যায় থেকে আরোও প্রশ্ন ও উত্তর দেখুন :

==============================================================

রচনাধর্মী প্রশ্নোত্তর | পথের দাবী (গল্প) শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় – মাধ্যমিক বাংলা প্রশ্ন ও উত্তর 

1. “ পোলিটিক্যাল সাসপেক্ট সব্যসাচী মল্লিককে নিমাইবাবুর সম্মুখে হাজির করা হইল ।’— ‘ পথের দাবী ‘ পাঠ্যাংশে = সব্যসাচী মল্লিক সম্পর্কে কী জানা যায় ? তাকে জিজ্ঞাসাবাদের সময় কী পরিস্থিতি তৈরি হয় ?

Ans: আলোচ্য অংশটি শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের লেখা ‘ পথের দাবী ’ রচনাংশ থেকে গৃহীত । পাঠ্যাংশটি থেকে জানা যায় , পোলিটিক্যাল সাসপেক্ট সব্যসাচী মল্লিক বিজ্ঞান ও চিকিৎসাশাস্ত্রে অসাধারণ পারদর্শী , ডাক্তারিতে বিলিতি ডিগ্রিধারী এক রাজদ্রোহী ।

   সব্যসাচী মল্লিক সন্দেহে যাকে নিমাইবাবুর সামনে হাজির করা হল সে নিজের পরিচয় দিল গিরীশ মহাপাত্র বলে । রুগ্ণ চেহারার বছর ত্রিশ – বত্রিশের লোকটির সাজপোশাক ভারি অদ্ভুত । কিন্তু তার দৃষ্টি ছিল অন্তর্ভেদী । সে তেলের খনিতেই কাজ করত । বর্মা থেকেই সে রেঙ্গুনে এসেছে । তার কাছ থেকে উদ্ধার করা জিনিসপত্রের মধ্যে ছিল লোহার কম্পাস , কাঠের ফুটবুল , একটা টাকা , কিছু বিড়ি , একটা দেশলাই আর একটা গাঁজার কলকে । নিমাইবাবু তাকে গাঁজার কলকে প্রসঙ্গে জিজ্ঞেস করলে সে জানায় , কলকেটা সে পথে কুড়িয়ে পেয়ে রেখে দিয়েছে । সে নিজে গাঁজা খায় না বটে , তবে প্রয়োজনে অন্যকে বানিয়ে দেয় । কিন্তু তার কথায় কেউই বিশ্বাস করে না । বরং গিরীশ মহাপাত্রের চেহারা , সাজপোশাক আচার – আচরণ ও কথাবার্তা থেকে থানায় উপস্থিত সকলেই এ ব্যাপারে নিশ্চিত হয় যে , এই ব্যক্তি কোনোভাবেই সব্যসাচী মল্লিক হতে পারেন না । তাই তাকে নিয়ে খানিক হাসিতামাশার পর তাকে ছেড়ে দেওয়া হয় । 

2. গিরীশ মহাপাত্রের চেহারা ও পোশাক – আশাকের বিস্তারিত বিবরণ দাও । 

Ans: শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের ‘ পথের দাবী ‘ রচনাংশের কেন্দ্রীয় চরিত্র সব্যসাচী মল্লিকের ছদ্মবেশী রূপই হল গিরীশ মহাপাত্র । ছদ্মবেশী সব্যসাচী এই উপন্যাসে যেন সম্পূর্ণ একটি আলাদা চরিত্ররূপে আমাদের কাছে ধরা দেয় । পুলিশস্টেশনের মধ্যে কাশতে কাশতে তার আবির্ভাব । রোদে পুড়ে তার গায়ের অত্যন্ত ফরসা রং প্রায় তামাটে হয়ে গেছে । বয়স ত্রিশ – বত্রিশের মধ্যে হলেও , অত্যধিক বুগণতার জন্য তাকে দেখে মনে হয় যেন আয়ুর শেষ প্রান্তে এসে দাঁড়িয়েছে । তবে এমন শারীরিক গড়ন ও চেহারার মধ্যেও উল্লেখযোগ্য তার রোগা মুখের অদ্ভুত দুটি চোখের দৃষ্টি । 

আসলে মহাপাত্ররূপী সব্যসাচী সব কিছু লুকোলেও , অতলস্পর্শী চোখ দুটিকে তার পক্ষে লুকোনো সম্ভব ছিল না । পোশাক – আশাক তার মাথার সামনের চুল লম্বা । যদিও ঘাড় ও কানের কাছে প্রায় নেই । তার চেরা সিঁথি করা তেল জবজবে মাথা থেকে উগ্র নেবুর তেলের গন্ধ চারদিকে ছড়িয়ে পড়ে । গিরীশের পরনে ছিল জাপানি সিল্কের রামধনু রঙের চুড়িদার পাঞ্জাবি , যার বুকপকেট থেকে বাঘ – আঁকা একটা রুমালের কিছুটা দেখা যাচ্ছিল । যদিও তার কাঁধে উত্তরীয়ের কোনো বালাই ছিল না । সে পরনে বিলাতি মিলের কালো মকমলের সূক্ষ্ম শাড়ি পরেছিল । তার পায়ে ছিল লাল ফিতে বাঁধা সবুজ ফুল মোজা ও তলায় আগাগোড়া নাল বাঁধানো বার্নিশ করা পাম্প শু । আর তার হাতে ধরা একগাছি হরিণের শিং দিয়ে হাতল বাঁধানো বেতের ছড়ি । তবে এত শখশৌখিনতা – পরিপাট্য এসবই জাহাজযাত্রার ধকলে নোংরা ও মলিন এবং তার শরীরে গাঁজা খাওয়ার লক্ষণ আর ক্লান্তির ছাপ বেশ স্পষ্টভাবে প্রতিভাত হচ্ছিল ।

3. ‘ কই এ ঘটনা তো আমাকে বলেননি । — কোন্ ঘটনার প্রশ্ন । কথা বলা হয়েছে ? এ ঘটনা বক্তাকে না বলার কারণ কী ছিল ?

Ans: শরৎচন্দ্রের ‘ পথের দাবী ‘ উপন্যাসের অংশবিশেষ থেকে গৃহীত উদ্ধৃতিটির বক্তা হল অপূর্বর সহকর্মী রামদাস তলওয়ারকর । ঘটনাটি হল , উদ্দিষ্ট ঘটনার ৮ উপন্যাসের অন্যতম চরিত্র অপূর্ব ফিরিঙ্গি যুবকদের পরিচয় হাতে কোনো এক প্ল্যাটফর্মে অপমানিত ও শারীরিকভাবে নিগৃহীত হন । সেই অন্যায়ের প্রতিবাদ করেন অপূর্ব । কিন্তু তিনি ভারতীয় বলে স্টেশনমাস্টার তাঁকে অপমান করে তাড়িয়ে দেন । 

  অপূর্ব তার অপমানের কাহিনি তার সহকর্মী রামদাসকে আগে বলেনি । এই জন্য রামদাস অভিমানের সঙ্গে অভিযোগ জানালে অপূর্ব বলে যে , নিজস্ব অপমান ব্যক্ত করা সহজ নয় । বিশেষত যেখানে শুধু নিজে নয় , সমগ্র জাতি জড়িত , তা প্রকাশ করা আরও বেশি অপমানের । ফিরিঙ্গি যুবকদের অপমান অপূর্বর কাছে বেদনার ছিল । কিন্তু তার চেয়ে বেশি বেদনার ছিল সেদিন ঘটনাস্থলে উপস্থিত ভারতীয়রা তার সেই অপমানকে মেনে নিয়েছিল । এই ঘটনায় শোষিত , পীড়িত , অসম্মানে অভ্যস্ত এক পরাধীন জাতির পঙ্গু ও ক্লীব ছবিটি ফুটে ওঠে । যে – ছবি তরুণ দেশপ্রেমিক অপূর্বর কাছে গভীর যন্ত্রণা ও লজ্জার । পিতৃবন্ধু দারাগো নিমাইবাবুর চেয়ে বিপ্লবী সব্যসাচী মল্লিক কেন তার কাছে বেশি আপন তা বোঝাতে গিয়েই অপূর্ব মনের মধ্যে লুকোনো বেদনাদায়ক অভিজ্ঞতার কথাগুলো বলে ফেলে ।

4. ‘ পথের দাবী ‘ উপন্যাসের যে – অংশ তোমাদের পাঠ্য , তা অনুসারে অপূর্ব চরিত্রটি আলোচনা করো ।

Ans: শরৎচন্দ্রের ‘ পথের দাবী ‘ রচনাংশের মুখ্য চরিত্র অপূর্ব একজন সৎ – শিক্ষিত – আদর্শবাদী ও সংবেদনশীল যুবক । চাকরির সন্ধানে তার বর্মায় আসা । পাঠ্যাংশে অপূর্বর চরিত্রের দুটি প্রধান বৈশিষ্ট্য দেখতে পাওয়া যায়— 

দেশপ্রেমিক : অপূর্ব পরাধীন ভারতের এক তরুণ দেশপ্রেমিক । সব্যসাচীর প্রতি সে আন্তরিকভাবে শ্রদ্ধাশীল । গিরীশ মহাপাত্রকে প্রথম দর্শনে সে হাসি সামলাতে না পারলেও বিপ্লবী সব্যসাচী মল্লিকের বর্মায় আগমন ও পুলিশি সতর্কতা সত্ত্বেও তার ধরা না পড়া অপূর্বকে বিচলিত করে তোলে । গিরীশ মহাপাত্রের প্রতি অপূর্বর সন্দেহ যত বেড়েছে সব্যসাচীর প্রতি শ্রদ্ধা । তত প্রগাঢ় হয়েছে । সহকর্মী রামদাসের কাছে তার সরল স্বীকারোক্তি ইংরেজ ভৃত্য আত্মীয়ের চেয়ে অনাত্মীয় দেশপ্রেমিক সব্যসাচী তার বেশি আপনার । দেশের অপমান ভুক্তভোগী অপূর্বর বুকে বেঁধে । শরৎচন্দ্র সেই বাঙালি বিপ্লবী তরুণদের আদর্শে অপূর্বকে গড়ে তুলেছেন যাদের ধমনিতে পরাধীনতার ও দাসত্বের যন্ত্রণা থেকে মুক্তির আকাঙ্ক্ষা শোণিতের মতো প্রবাহিত । তাই সব্যসাচীর মতো রাজদ্রোহীরা অপূর্বদের আদর্শ নায়ক । এদের মধ্যেই তরুণ বিপ্লবীরা নিজেদের খুঁজে পেতেন । 

গুরুজনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল : বিপ্লবী সব্যসাচীর দৃঢ়তা ব্যক্তিত্বকে অপূর্ব শ্রদ্ধা করলেও প্রকাশ্যে রাজদ্রোহিতার সাহস তার ছিল না । সেই কারণে ইংরেজ বিদ্বেষী অপূর্ব তার পিতার বন্ধু নিমাইবাবু ইংরেজ কর্মচারী জেনেও তার প্রতি শ্রদ্ধাশীল ছিল । 

এভাবেই ‘ পথের দাবী ‘ উপন্যাসের কথক অপূর্ব পরাধীন ভারতের শিক্ষিত তরুণদের এক সার্থক টাইপ চরিত্ররূপে প্রতিভাত হয়েছে ।

5. ‘ পথের দাবী ‘ উপন্যাস থেকে গৃহীত পাঠ্য অংশে অপূর্বর রেলযাত্রার যে – বিবরণ দেওয়া হয়েছে , তা নিজের ভাষায় লেখো ।

Ans: শরৎচন্দ্রের ‘ পথের দাবী ‘ – র অন্যতম চরিত্র অপূর্ব বড়োসাহেবের নির্দেশে অফিসের কাজে ও রেঙ্গুনে ভালো না লাগার কারণে এক বিকেলে আর্দালি ও হিন্দুস্থানি ব্রাহ্মণ পেয়াদা নিয়ে ভামোগামী ট্রেনে চড়ে বসে । তাকে স্টেশনে ছাড়তে আসে তার সহকর্মী রামদাস । গাড়ি ছাড়ার পাঁচ মিনিট আগে হঠাৎ সেখানে উদয় হয় পুলিশস্টেশনে দেখা গিরীশ মহাপাত্র । মহাপাত্রের সঙ্গে আলাপচারিতা শেষ না হতে হতেই অপূর্বর ট্রেন ছেড়ে দেয় । প্রথম শ্রেণির যাত্রী বলে তার কামরায় কেউ ছিল না । অপূর্ব সন্ধ্যাহিক সম্পন্ন করে স্পর্শদোষহীন খাবার খেয়ে শোবার উদ্যোগ নেয় । সে ব্যাঘাতহীন ঘুমের কথা ভাবলেও কয়েকটা স্টেশনের পরই তার ঘুমে ব্যাঘাত ঘটে । সারারাত্রিতে অন্তত তিনবার পুলিশের লোক এসে তার নামঠিকানা লিখে নিয়ে যায় । অবশেষে অপূর্ব বিরক্ত হয়ে প্রতিবাদ করায় বর্মার সাব – ইনস্পেক্টর রুঢ়ভাবে বলেন , যেহেতু সে ইউরোপীয় নয় তাই তারা ইচ্ছে করলেই তাকে ট্রেন থেকে টেনে নামিয়ে দিতে পারে । প্রথম শ্রেণির যাত্রীর পরিচয় দিয়ে নিজের অধিকার রক্ষার কথা বলেও কোনো লাভ হয়নি । পরাধীন দেশের মানুষের দুর্দশা ও লাঞ্ছনার ছবি এভাবেই অপূর্বর ট্রেন যাত্রার ঘটনা থেকে স্পষ্ট হয়ে ওঠে ।

6. ‘ বাবুটির স্বাস্থ্য গেছে , কিন্তু শখ ষোলোআনাই বজায় আছে- বাবুটি কে ? তার সাজসজ্জার পরিচয় দাও ।

Ans: শরৎচন্দ্রের ‘ পথের দাবী ‘ উপন্যাস থেকে গৃহীত উদ্ধৃতিটির বাবুটির পরিচয় বস্তুা হলেন পরাধীন ভারতে ব্রিটিশ অধীনস্থ এক বাঙালি পুলিশকর্তা নিমাইবাবু । তিনি পোলিটিক্যাল সাসপেক্ট হিসেবে চিহ্নিত ছদ্মবেশী গিরীশ মহাপাত্র সম্পর্কে এমন মন্তব্য করেছেন । 

  বছর ত্রিশ – বত্রিশের ছদ্মবেশী গিরীশ মহাপাত্রের ফরসা রং রোদে পুড়ে তামাটে হয়ে গেছে । রোগা চেহারার মানুষটি যখন কাশতে কাশতে থানায় প্রবেশ করল তখন তার দেহের সামগ্রিক অবস্থা দেখে মনে হচ্ছিল সেটি দ্রুত বেগে ক্ষয়প্রাপ্ত হচ্ছে । কিন্তু তার রোগা মুখের দুটি চোখের দৃষ্টি ভারি অদ্ভুত । জলাশয়ের মতো গভীর সে চোখের সঙ্গে খেলা চলবে না । দূরে থাকতে হবে । সেই ক্ষীণ চোখের অতলে কোথাও যেন প্রাণশক্তি লুকিয়ে আছে , আর সে জন্যই সে বেঁচে আছে । গিরীশ মহাপাত্র যে অত্যন্ত শৌখিন মানুষ তা তার বেশভূষাতেই প্রমাণিত । চুলে বাহারি ছাঁট । তাতে সুগন্ধি নেবু তেল । গায়ে জাপানি সিল্কের রামধনু রঙের চুড়িদার পাঞ্জাবি । পকেটে বাঘ – আঁকা রুমাল । পরনে বিলেতি মখমল পাড়ের কালো শাড়ি । হাঁটু পর্যন্ত মোজা লাল রিবন দিয়ে বাঁধা এবং পায়ে নাল লাগানো বার্নিশ করা পাম্প । হাতে হরিণের শিং দিয়ে বাঁধানো বেতের শৌখিন ছড়ি । এসব দেখেই নিমাইবাবু রসিকতার হলে কথাগুলি বলেছিলেন ।

7. রামদাস তলওয়ারকর চরিত্রটি বিশ্লেষণ করো ।

Ans: শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় রচিত ‘ পথের দাবী ‘ উপন্যাসের একটি পার্শ্বচরিত্র হল রামদাস তলওয়ারকর । অপূর্বর সহকর্মী তলওয়ারকর খুব গুরুত্বপূর্ণ চরিত্র না হয়েও যথেষ্ট গুরুদায়িত্ব পালন করেছে । তাকে অবলম্বন করেই পাঠ্য অংশে অপূর্ব নিজের ভাবনাচিন্তা ব্যক্ত করেছে । রামদাস তলওয়ারকর সহকর্মীর চেয়েও অনেক বেশি সহমর্মী ও বন্ধু । ছদ্মবেশী সব্যসাচীকে দেখে আনমনা অপূর্বের বাড়ির পরিস্থিতি কুশল কিনা , তা সে জানার চেষ্টা করেছে । তার স্ত্রী প্রতিদিন অপুর্বর জলযোগ সরবরাহ করেছে । তলওয়ারকর অপূর্বর সমস্ত কথা মনোযোগ দিয়ে শুনেছে তা সে অপূর্বর ঘরে চুরি ও উপরতলার ক্রিশ্চান মেয়ের দ্বারা সম্পদ রক্ষার গল্পই হোক বা ইংরেজ কর্তৃক অপূর্বর অপমানের কাহিনিই হোক । রেঙ্গুন পুলিশস্টেশনে দেখা অদ্ভূত দর্শন গিরীশ মহাপাত্রের বর্ণনা দিতে গিয়ে তার সঙ্গে প্রচণ্ড হাসিতে ফেটে পড়েছে অপূর্ব । কিন্তু সঙ্গ দিতে গিয়ে তলওয়ারকর কখনোই অপূর্বর ছায়াতে পরিণত হয়নি । অপূর্বকে ট্রেনে তুলতে গিয়ে গিরীশ মহাপাত্রকে দেখে তার মনে সন্দেহ জেগেছে । প্রখর বুদ্ধিমান ছদ্মবেশী বিপ্লবী সব্যসাচীও তার মন থেকে সন্দেহ দূর করতে পারেনি । রামদাস মনে মনে গিরীশের প্রকৃত পরিচয় হাতড়ে বেড়িয়েছে । এভাবেই বুদ্ধিতে , বন্ধুত্বে , সাহচর্যে এবং সমবেদনায় রামদাস স্বল্প পরিসরেও তার স্বাতন্ত্র্য রক্ষা করে । 

8. ‘ নিমাইবাবু ‘ – র চরিত্রটি আলোচনা করো ।

Ans: অপরাজেয় কথাশিল্পী শরত্চন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের লেখা কালজয়ী রাজনৈতিক উপন্যাস ‘ পথের দাবী ‘ থেকে গৃহীত দশম শ্রেণির পাঠ্য অংশে ‘ নিমাইবাবু ‘ সম্পর্কে যা জানা যায় , তা হল — নিমাইবাবু হলেন কাহিনির কেন্দ্রীয় চরিত্র অপূর্বর পিতৃবন্ধু , সেই সূত্রে আত্মীয় । অপূর্বর পিতা কোনো একসময়ে তাঁকে চাকরিতে ঢুকিয়েছিলেন । এই সূত্রে যে সম্বন্ধ স্থাপিত হয়েছে , তা দু – পক্ষই বহন করে নিয়ে চলেছে । রেঙ্গুনের পুলিশস্টেশনে বাংলা পুলিশের দারোগা নিমাইবাবুকে ছদ্মবেশী বিপ্লবী সব্যসাচী ওরফে গিরীশ মহাপাত্রকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে দেখা যায় । তবে অভিজ্ঞ ও বর্ষীয়ান নিমাইবাবুও সব্যসাচীকে চিনতে ভুল করে ফেলেন । তাকে সাধারণ গঞ্জিকাসেবক বলে ছেড়েও দেন । তবে তাঁর স্নেহপ্রবণ মন বোঝা যায় , যখন গিরীশ মহাপাত্ররুপী সব্যসাচীর রুগ্‌ণ দেহ দেখে তিনি কোমল স্বরে তাকে গাঁজা না খাওয়ার পরামর্শ দেন এবং বলেন ‘ বুড়োমানুষের কথাটা শুনো । এক্ষেত্রে এক প্রৌঢ় স্নেহশীল পিতার প্রতিচ্ছবি নিমাইবাবুর মধ্যে ফুটে ওঠে ।

9. পাঠ্যাংশটির ‘ পথের দাবী ‘ নামকরণ কতদূর সংগত আলোচনা করো ।

Ans: ‘ নামকরণের সার্থকতা ‘ অংশটি দ্যাখো ।

10. ‘ অপূর্ব তাহার পরিচ্ছদের প্রতি দৃষ্টিপাত করিয়া মুখ ফিরাইয়া হাসি গোপন করিল— ‘ তাহার ‘ বলতে কার কথা বোঝানো হয়েছে ? তার পরিচ্ছদের প্রতি দৃষ্টিপাত করে হাসি গোপন করার কারণ কী ?

Ans: শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের ‘ পথের দাবী ‘ রচনাংশ অনুসারে , প্রশ্নোধৃত অংশে ‘ তাহার ’ বলতে গিরীশ মহাপাত্রের কথা বোঝানো হয়েছে । 

  রেঙ্গুন পুলিশস্টেশনে বিপ্লবী সব্যসাচী মল্লিক সন্দেহে গিরীশ মহাপাত্রকে আটক করা হয় । সে কাশতে কাশতে থানার দারাগো নিমাইবাবুর সামনে এসে হাজির হয় । সেখানে অপূর্বও হাজির ছিল । লোকটির রোদে পোড়া তামাটে রং— অকাল বার্ধক্যের হাঁপানি অতিক্রম করে তার দৃষ্টি নিবন্ধ পরিচ্ছদের প্রতি হয় অতলশায়ী চোখ – দুটিতে । আচমকা নিমাইবাবুর দৃষ্টিপাত করে হাসি কথায় অপূর্বর সম্বিৎ ফেরে । সে গিরীশের বেশভূ গোপনের কারণ যা ও পরিচ্ছদের প্রতি দৃষ্টিপাত করে । তার মাথার সামনের চুল লম্বা । যদিও ঘাড় ও কানের কাছে প্রায় নেই । তার চেরা সিঁথি করা তেল জবজবে মাথা থেকে উগ্র নেবুর তেলের গন্ধ চারদিকে ছড়িয়ে পড়ে । গিরীশের পরনে ছিল জাপানি সিল্কের রামধনু রঙের চুড়িদার পাঞ্জাবি , যার বুকপকেট থেকে বাঘ – আঁকা একটা রুমালের কিছুটা দেখা যাচ্ছিল । যদিও তার কাঁধে উত্তরীয়ের কোনো বালাই ছিল না । সে পরনে বিলাতি মিলের কালো মখমলের সূক্ষ্ম শাড়ি পরেছিল । তবে পায়ে ছিল লাল ফিতে বাঁধা সবুজ ফুল মোজা ও তলায় আগাগোড়া নাল বাঁধানো বার্নিশ করা পাম্প শু । আর তার হাতে ধরা একগাছি হরিণের শিং দিয়ে হাতল বাঁধানো বেতের ছড়ি । এই কিম্ভুৎ আর বিচিত্র সাজসজ্জার কারণেই গিরীশ মহাপাত্রকে দেখে অপূর্ব হাসি গোপন করেছিল ।

11. ‘ এমন তো নিত্য নিয়তই ঘটছে । এখানে কোন ঘটনার কথা বলা হয়েছে ?

Ans: শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের ‘ পথের দাবী ‘ রচনার কেন্দ্রীয় চরিত্র অপূর্ব । সে বন্ধু ও সহকর্মী রামদাস তলওয়ারকর – এর কাছে রেঙ্গুন পুলিশস্টেশনে ঘটা একটি ঘটনার বিবরণ দিতে গিয়ে ; দেশ ও দেশপ্রেমিক বিপ্লবীদের প্রতি নিজের অন্তরের ভালোবাসার কথা স্বীকার করে । মাতৃভূমির স্বাধীনতা কিংবা মুক্তির সংগ্রামে যাঁরা প্রাণপণ সচেষ্ট , তাদের ‘ আপনার নয় ’ বলবার সাধ্য অপূর্বর নেই । কারণ অন্যায় অবিচারের শাস্তিভোগ করার যন্ত্রণা তাকেও সহ্য করতে হয়েছে । এ প্রসঙ্গে একটি বেদনাদায়ক ঘটনার কথা সে বলে । একদিন কয়েকজন ফিরিঙ্গি ছোঁড়ার হাতে অপূর্বকে বিনা কারণে মানসিক ও শারীরিকভাবে নিগৃহীত হতে হয় । এর প্রতিবাদে সাহেব স্টেশনমাস্টারের কাছে গেলে , সেখানেও তার কপালে জোটে অপমান এবং লাঞ্ছনা । তবে অপূর্বর কাছে এর চেয়েও বেদনাবহ ছিল ঘটনাস্থলে উপস্থিত ভারতীয়দের নীরবতার অভ্যেস । এমন পরিস্থিতিতে অভ্যস্ত এক অসহায় দুর্বল ও ক্লীব জাতির দাসত্বের ছবি , তাকে দুঃখে – লজ্জায় এবং ঘৃণায় হতবাক করে দিয়েছিল । এক শিক্ষিত দেশপ্রেমিক তরুণের কাছে ব্যক্তিগত নয় যেখানে সমগ্র জাতির অপমান জড়িত ; তাকে ভাষায় প্রকাশ করা অনেক বেশি লজ্জা ও অসম্মানের । অথচ এমন অন্যায় লাঞ্ছনার ঘটনা প্রতিনিয়তই প্রতিকারহীনভাবে ঘটে চলেছে । এ কথাই অপূর্বর কণ্ঠে ধ্বনিত হয়েছে ।

12. ‘ অপূর্ব হঠাৎ চকিত হইয়া বলিয়া উঠিল , ওই যে । —প্রসঙ্গ কী ? চকিত হয়ে উদ্দিষ্ট ব্যক্তির সঙ্গে যে – কথাবার্তা হয়েছিল । তা আলোচনা করো ।

Ans: শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের ‘ পথের দাবী ‘ রচনাংশ অনুসারে , অপূর্বকে অফিসের কাজে রেঙ্গুন থেকে ভামোয় রওনা হতে হয় । বড়োসাহেবের নির্দেশ পেয়ে সে পরদিন বিকেলে ভামোর উদ্দেশে ট্রেনে চেপে বসে । ট্রেন ছাড়তে যখন মিনিট পাঁচেক বাকি তখন সে আচমকা গিরীশ মহাপাত্রকে প্ল্যাটফর্মে দেখতে পায় । এর আগে গিরীশকে সে পুলিশস্টেশনে সব্যসাচী মল্লিক সন্দেহে আটক অবস্থায় দেখেছিল । অদ্ভুত বেশভূষার গিরীশ মহাপাত্রের সঙ্গে এই নিয়ে অপূর্বর দ্বিতীয়বার দেখা হয় । 

    অপূর্ব এবং গিরীশ মহাপাত্র পরস্পরের সঙ্গে কুশল বিনিময় করে । অপূর্ব জানায় , সে ভামোর পথে চলেছে আর গিরীশ এনাঞ্ঝাং থেকে আগত দুই বন্ধুর সঙ্গে দেখা করার উদ্দেশ্যে নিয়ে এসেছে । এই সময়েই গিরীশ জানায় পুলিশ তার মতো সাধারণ ধর্মভীরু মানুষকে অনর্থক হয়রান করছে । সে কোনোরকম কুকর্মের সঙ্গে জড়িত নয় । তখন প্রত্যুত্তরে অপূর্ব জানায় , সে কোনোভাবেই পুলিশের লোক নয় ঘটনাচক্রে কেবল ওখানে উপস্থিত ছিল । এমন পরিস্থিতিতে রামদাস গিরীশকে কোথাও দেখার কথা বললে , গিরীশ আশ্চর্য হয় না । শুধু বারবার অনুরোধ করতে থাকে যে , তার ওপর যেন কেউ মিথ্যে সন্দেহ না রাখে । কারণ সে ব্রাহ্মণ বংশীয় , লেখাপড়া – শাস্ত্রজ্ঞান— কিছুটা সেও জানে । কপালের দোষে আজ তার এই অবস্থা । কিন্তু অপূর্বর মতো বড়োমানুষদের বিষনজরে পড়লে আর হয়তো একটা চাকরিও জুটবে না । এইসব বলতে বলতেই গিরীশ পুনরায় ‘ নমস্কার ‘ – ‘ রাম রাম ‘ ইত্যাদি জানিয়ে কাশির বেগ সামলিয়ে বিদায় নিয়েছিল ।

13. ‘ কিন্তু এই জানোয়ারটাকে ওয়াচ করবার দরকার নেই বড়োবাবু ।— ‘ জানোয়ারটা ‘ বলতে কাকে ইঙ্গিত করা হয়েছে ? তাকে ওয়াচ করার দরকার নেই কেন ? 

Ans: শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের ‘ পথের দাবী ‘ রচনাংশ থেকে উদ্ধৃত উক্তিটিতে ‘ জানোয়ারটা ’ বলতে পুলিশস্টেশনে আটক গিরীশ মহাপাত্রকে বলা হয়েছে । বক্তা পুলিশের কর্মচারী জগদীশবাবু । 

   বিপ্লবী সব্যসাচী মল্লিক সন্দেহে পুলিশ গিরীশ মহাপাত্রকে আটক করে । কিন্তু তার রোদে পড়া তামাটে রং , হাঁফ ধরা কাশির দমক ও অকাল বার্ধক্যের ভগ্ন – স্বাস্থ্য দেখে পুলিশের সন্দেহ হয় । বিশেষত তার বেশভূষার বাহার আর পরিপাট্য দেখে পুলিশ নিশ্চিত হয় এই ব্যক্তিটি সব্যসাচী নয় । কারণ বিদেশি বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিগ্রিপ্রাপ্ত চিকিৎসকের সঙ্গে সন্দেহভাজন ; কারখানার মিস্ত্রি গিরীশের কোনো মিল থাকাই সম্ভব নয় । খানাতল্লাশির সময় তার ট্যাঁক ও পকেট থেকে বিভিন্ন মামুলি সামগ্রীর সঙ্গে একটি গাঁজার কলকেও পাওয়া যায় । গিরীশ গাঁজা খাওয়ার কথা বারবার অস্বীকার করলেও , গাঁজা খাওয়ার সমস্ত লক্ষণই তার বিদ্যমান দেখে পুলিশ নিঃসংশয় হয় । নিমাইবাবু মহাপাত্রকে ছেড়ে দিলেও , এ শহরে নজর রাখার কথা বলেন । কারণ বর্মায় সব্যসাচী এসেছে । এ খবর নির্ভুল । এ কথায় জগদীশবাবু বলেন , তবে গিরীশ মহাপাত্রকে রাখার কোনো প্রয়োজন নেই ।

==============================================================

পথের দাবী অধ্যায় থেকে আরোও প্রশ্ন ও উত্তর দেখুন :

==============================================================

রচনাধর্মী প্রশ্নোত্তর | পথের দাবী (গল্প) শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় – মাধ্যমিক বাংলা সাজেশন | Madhyamik Bengali Suggestion :

1. রামদাস তলওয়ারকর চরিত্রটি বিশ্লেষণ করো ।

Answer: শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় রচিত ‘ পথের দাবী ‘ উপন্যাসের একটি পার্শ্বচরিত্র হল রামদাস তলওয়ারকর । অপূর্বর সহকর্মী তলওয়ারকর খুব গুরুত্বপূর্ণ চরিত্র না হয়েও যথেষ্ট গুরুদায়িত্ব পালন করেছে । তাকে অবলম্বন করেই পাঠ্য অংশে অপূর্ব নিজের ভাবনাচিন্তা ব্যক্ত করেছে । রামদাস তলওয়ারকর সহকর্মীর চেয়েও অনেক বেশি সহমর্মী ও বন্ধু । ছদ্মবেশী সব্যসাচীকে দেখে আনমনা অপূর্বের বাড়ির পরিস্থিতি কুশল কিনা , তা সে জানার চেষ্টা করেছে । তার স্ত্রী প্রতিদিন অপুর্বর জলযোগ সরবরাহ করেছে । তলওয়ারকর অপূর্বর সমস্ত কথা মনোযোগ দিয়ে শুনেছে তা সে অপূর্বর ঘরে চুরি ও উপরতলার ক্রিশ্চান মেয়ের দ্বারা সম্পদ রক্ষার গল্পই হোক বা ইংরেজ কর্তৃক অপূর্বর অপমানের কাহিনিই হোক । রেঙ্গুন পুলিশস্টেশনে দেখা অদ্ভূত দর্শন গিরীশ মহাপাত্রের বর্ণনা দিতে গিয়ে তার সঙ্গে প্রচণ্ড হাসিতে ফেটে পড়েছে অপূর্ব । কিন্তু সঙ্গ দিতে গিয়ে তলওয়ারকর কখনোই অপূর্বর ছায়াতে পরিণত হয়নি । অপূর্বকে ট্রেনে তুলতে গিয়ে গিরীশ মহাপাত্রকে দেখে তার মনে সন্দেহ জেগেছে । প্রখর বুদ্ধিমান ছদ্মবেশী বিপ্লবী সব্যসাচীও তার মন থেকে সন্দেহ দূর করতে পারেনি । রামদাস মনে মনে গিরীশের প্রকৃত পরিচয় হাতড়ে বেড়িয়েছে । এভাবেই বুদ্ধিতে , বন্ধুত্বে , সাহচর্যে এবং সমবেদনায় রামদাস স্বল্প পরিসরেও তার স্বাতন্ত্র্য রক্ষা করে । 

2. ‘ নিমাইবাবু ‘ – র চরিত্রটি আলোচনা করো ।

Answer: অপরাজেয় কথাশিল্পী শরত্চন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের লেখা কালজয়ী রাজনৈতিক উপন্যাস ‘ পথের দাবী ‘ থেকে গৃহীত দশম শ্রেণির পাঠ্য অংশে ‘ নিমাইবাবু ‘ সম্পর্কে যা জানা যায় , তা হল — নিমাইবাবু হলেন কাহিনির কেন্দ্রীয় চরিত্র অপূর্বর পিতৃবন্ধু , সেই সূত্রে আত্মীয় । অপূর্বর পিতা কোনো একসময়ে তাঁকে চাকরিতে ঢুকিয়েছিলেন । এই সূত্রে যে সম্বন্ধ স্থাপিত হয়েছে , তা দু – পক্ষই বহন করে নিয়ে চলেছে । রেঙ্গুনের পুলিশস্টেশনে বাংলা পুলিশের দারোগা নিমাইবাবুকে ছদ্মবেশী বিপ্লবী সব্যসাচী ওরফে গিরীশ মহাপাত্রকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে দেখা যায় । তবে অভিজ্ঞ ও বর্ষীয়ান নিমাইবাবুও সব্যসাচীকে চিনতে ভুল করে ফেলেন । তাকে সাধারণ গঞ্জিকাসেবক বলে ছেড়েও দেন । তবে তাঁর স্নেহপ্রবণ মন বোঝা যায় , যখন গিরীশ মহাপাত্ররুপী সব্যসাচীর রুগ্‌ণ দেহ দেখে তিনি কোমল স্বরে তাকে গাঁজা না খাওয়ার পরামর্শ দেন এবং বলেন ‘ বুড়োমানুষের কথাটা শুনো । এক্ষেত্রে এক প্রৌঢ় স্নেহশীল পিতার প্রতিচ্ছবি নিমাইবাবুর মধ্যে ফুটে ওঠে ।

3. পাঠ্যাংশটির ‘ পথের দাবী ‘ নামকরণ কতদূর সংগত আলোচনা করো ।

Answer: ‘ নামকরণের সার্থকতা ‘ অংশটি দেখ ।

4. ‘ অপূর্ব তাহার পরিচ্ছদের প্রতি দৃষ্টিপাত করিয়া মুখ ফিরাইয়া হাসি গোপন করিল— ‘ তাহার ‘ বলতে কার কথা বোঝানো হয়েছে ? তার পরিচ্ছদের প্রতি দৃষ্টিপাত করে হাসি গোপন করার কারণ কী ?

Answer: শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের ‘ পথের দাবী ‘ রচনাংশ অনুসারে , প্রশ্নোধৃত অংশে ‘ তাহার ’ বলতে গিরীশ মহাপাত্রের কথা বোঝানো হয়েছে । 

  রেঙ্গুন পুলিশস্টেশনে বিপ্লবী সব্যসাচী মল্লিক সন্দেহে গিরীশ মহাপাত্রকে আটক করা হয় । সে কাশতে কাশতে থানার দারাগো নিমাইবাবুর সামনে এসে হাজির হয় । সেখানে অপূর্বও হাজির ছিল । লোকটির রোদে পোড়া তামাটে রং— অকাল বার্ধক্যের হাঁপানি অতিক্রম করে তার দৃষ্টি নিবন্ধ পরিচ্ছদের প্রতি হয় অতলশায়ী চোখ – দুটিতে । আচমকা নিমাইবাবুর দৃষ্টিপাত করে হাসি কথায় অপূর্বর সম্বিৎ ফেরে । সে গিরীশের বেশভূ গোপনের কারণ যা ও পরিচ্ছদের প্রতি দৃষ্টিপাত করে । তার মাথার সামনের চুল লম্বা । যদিও ঘাড় ও কানের কাছে প্রায় নেই । তার চেরা সিঁথি করা তেল জবজবে মাথা থেকে উগ্র নেবুর তেলের গন্ধ চারদিকে ছড়িয়ে পড়ে । গিরীশের পরনে ছিল জাপানি সিল্কের রামধনু রঙের চুড়িদার পাঞ্জাবি , যার বুকপকেট থেকে বাঘ – আঁকা একটা রুমালের কিছুটা দেখা যাচ্ছিল । যদিও তার কাঁধে উত্তরীয়ের কোনো বালাই ছিল না । সে পরনে বিলাতি মিলের কালো মখমলের সূক্ষ্ম শাড়ি পরেছিল । তবে পায়ে ছিল লাল ফিতে বাঁধা সবুজ ফুল মোজা ও তলায় আগাগোড়া নাল বাঁধানো বার্নিশ করা পাম্প শু । আর তার হাতে ধরা একগাছি হরিণের শিং দিয়ে হাতল বাঁধানো বেতের ছড়ি । এই কিম্ভুৎ আর বিচিত্র সাজসজ্জার কারণেই গিরীশ মহাপাত্রকে দেখে অপূর্ব হাসি গোপন করেছিল ।

5. ‘ এমন তো নিত্য নিয়তই ঘটছে । এখানে কোন ঘটনার কথা বলা হয়েছে ?

Answer: শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের ‘ পথের দাবী ‘ রচনার কেন্দ্রীয় চরিত্র অপূর্ব । সে বন্ধু ও সহকর্মী রামদাস তলওয়ারকর – এর কাছে রেঙ্গুন পুলিশস্টেশনে ঘটা একটি ঘটনার বিবরণ দিতে গিয়ে ; দেশ ও দেশপ্রেমিক বিপ্লবীদের প্রতি নিজের অন্তরের ভালোবাসার কথা স্বীকার করে । মাতৃভূমির স্বাধীনতা কিংবা মুক্তির সংগ্রামে যাঁরা প্রাণপণ সচেষ্ট , তাদের ‘ আপনার নয় ’ বলবার সাধ্য অপূর্বর নেই । কারণ অন্যায় অবিচারের শাস্তিভোগ করার যন্ত্রণা তাকেও সহ্য করতে হয়েছে । এ প্রসঙ্গে একটি বেদনাদায়ক ঘটনার কথা সে বলে । একদিন কয়েকজন ফিরিঙ্গি ছোঁড়ার হাতে অপূর্বকে বিনা কারণে মানসিক ও শারীরিকভাবে নিগৃহীত হতে হয় । এর প্রতিবাদে সাহেব স্টেশনমাস্টারের কাছে গেলে , সেখানেও তার কপালে জোটে অপমান এবং লাঞ্ছনা । তবে অপূর্বর কাছে এর চেয়েও বেদনাবহ ছিল ঘটনাস্থলে উপস্থিত ভারতীয়দের নীরবতার অভ্যেস । এমন পরিস্থিতিতে অভ্যস্ত এক অসহায় দুর্বল ও ক্লীব জাতির দাসত্বের ছবি , তাকে দুঃখে – লজ্জায় এবং ঘৃণায় হতবাক করে দিয়েছিল । এক শিক্ষিত দেশপ্রেমিক তরুণের কাছে ব্যক্তিগত নয় যেখানে সমগ্র জাতির অপমান জড়িত ; তাকে ভাষায় প্রকাশ করা অনেক বেশি লজ্জা ও অসম্মানের । অথচ এমন অন্যায় লাঞ্ছনার ঘটনা প্রতিনিয়তই প্রতিকারহীনভাবে ঘটে চলেছে । এ কথাই অপূর্বর কণ্ঠে ধ্বনিত হয়েছে ।

6. ‘ অপূর্ব হঠাৎ চকিত হইয়া বলিয়া উঠিল , ওই যে । —প্রসঙ্গ কী ? চকিত হয়ে উদ্দিষ্ট ব্যক্তির সঙ্গে যে – কথাবার্তা হয়েছিল । তা আলোচনা করো ।

Answer: শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের ‘ পথের দাবী ‘ রচনাংশ অনুসারে , অপূর্বকে অফিসের কাজে রেঙ্গুন থেকে ভামোয় রওনা হতে হয় । বড়োসাহেবের নির্দেশ পেয়ে সে পরদিন বিকেলে ভামোর উদ্দেশে ট্রেনে চেপে বসে । ট্রেন ছাড়তে যখন মিনিট পাঁচেক বাকি তখন সে আচমকা গিরীশ মহাপাত্রকে প্ল্যাটফর্মে দেখতে পায় । এর আগে গিরীশকে সে পুলিশস্টেশনে সব্যসাচী মল্লিক সন্দেহে আটক অবস্থায় দেখেছিল । অদ্ভুত বেশভূষার গিরীশ মহাপাত্রের সঙ্গে এই নিয়ে অপূর্বর দ্বিতীয়বার দেখা হয় । 

    অপূর্ব এবং গিরীশ মহাপাত্র পরস্পরের সঙ্গে কুশল বিনিময় করে । অপূর্ব জানায় , সে ভামোর পথে চলেছে আর গিরীশ এনাঞ্ঝাং থেকে আগত দুই বন্ধুর সঙ্গে দেখা করার উদ্দেশ্যে নিয়ে এসেছে । এই সময়েই গিরীশ জানায় পুলিশ তার মতো সাধারণ ধর্মভীরু মানুষকে অনর্থক হয়রান করছে । সে কোনোরকম কুকর্মের সঙ্গে জড়িত নয় । তখন প্রত্যুত্তরে অপূর্ব জানায় , সে কোনোভাবেই পুলিশের লোক নয় ঘটনাচক্রে কেবল ওখানে উপস্থিত ছিল । এমন পরিস্থিতিতে রামদাস গিরীশকে কোথাও দেখার কথা বললে , গিরীশ আশ্চর্য হয় না । শুধু বারবার অনুরোধ করতে থাকে যে , তার ওপর যেন কেউ মিথ্যে সন্দেহ না রাখে । কারণ সে ব্রাহ্মণ বংশীয় , লেখাপড়া – শাস্ত্রজ্ঞান— কিছুটা সেও জানে । কপালের দোষে আজ তার এই অবস্থা । কিন্তু অপূর্বর মতো বড়োমানুষদের বিষনজরে পড়লে আর হয়তো একটা চাকরিও জুটবে না । এইসব বলতে বলতেই গিরীশ পুনরায় ‘ নমস্কার ‘ – ‘ রাম রাম ‘ ইত্যাদি জানিয়ে কাশির বেগ সামলিয়ে বিদায় নিয়েছিল ।

7. ‘ কিন্তু এই জানোয়ারটাকে ওয়াচ করবার দরকার নেই বড়োবাবু ।— ‘ জানোয়ারটা ‘ বলতে কাকে ইঙ্গিত করা হয়েছে ? তাকে ওয়াচ করার দরকার নেই কেন ? 

Answer: শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের ‘ পথের দাবী ‘ রচনাংশ থেকে উদ্ধৃত উক্তিটিতে ‘ জানোয়ারটা ’ বলতে পুলিশস্টেশনে আটক গিরীশ মহাপাত্রকে বলা হয়েছে । বক্তা পুলিশের কর্মচারী জগদীশবাবু । 

   বিপ্লবী সব্যসাচী মল্লিক সন্দেহে পুলিশ গিরীশ মহাপাত্রকে আটক করে । কিন্তু তার রোদে পড়া তামাটে রং , হাঁফ ধরা কাশির দমক ও অকাল বার্ধক্যের ভগ্ন – স্বাস্থ্য দেখে পুলিশের সন্দেহ হয় । বিশেষত তার বেশভূষার বাহার আর পরিপাট্য দেখে পুলিশ নিশ্চিত হয় এই ব্যক্তিটি সব্যসাচী নয় । কারণ বিদেশি বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিগ্রিপ্রাপ্ত চিকিৎসকের সঙ্গে সন্দেহভাজন ; কারখানার মিস্ত্রি গিরীশের কোনো মিল থাকাই সম্ভব নয় । খানাতল্লাশির সময় তার ট্যাঁক ও পকেট থেকে বিভিন্ন মামুলি সামগ্রীর সঙ্গে একটি গাঁজার কলকেও পাওয়া যায় । গিরীশ গাঁজা খাওয়ার কথা বারবার অস্বীকার করলেও , গাঁজা খাওয়ার সমস্ত লক্ষণই তার বিদ্যমান দেখে পুলিশ নিঃসংশয় হয় । নিমাইবাবু মহাপাত্রকে ছেড়ে দিলেও , এ শহরে নজর রাখার কথা বলেন । কারণ বর্মায় সব্যসাচী এসেছে । এ খবর নির্ভুল । এ কথায় জগদীশবাবু বলেন , তবে গিরীশ মহাপাত্রকে রাখার কোনো প্রয়োজন নেই ।

8. “ পোলিটিক্যাল সাসপেক্ট সব্যসাচী মল্লিককে নিমাইবাবুর সম্মুখে হাজির করা হইল ।’— ‘ পথের দাবী ‘ পাঠ্যাংশে = সব্যসাচী মল্লিক সম্পর্কে কী জানা যায় ? তাকে জিজ্ঞাসাবাদের সময় কী পরিস্থিতি তৈরি হয় ?

Answer: আলোচ্য অংশটি শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের লেখা ‘ পথের দাবী ’ রচনাংশ থেকে গৃহীত । পাঠ্যাংশটি থেকে জানা যায় , পোলিটিক্যাল সাসপেক্ট সব্যসাচী মল্লিক বিজ্ঞান ও চিকিৎসাশাস্ত্রে অসাধারণ পারদর্শী , ডাক্তারিতে বিলিতি ডিগ্রিধারী এক রাজদ্রোহী ।

   সব্যসাচী মল্লিক সন্দেহে যাকে নিমাইবাবুর সামনে হাজির করা হল সে নিজের পরিচয় দিল গিরীশ মহাপাত্র বলে । রুগ্ণ চেহারার বছর ত্রিশ – বত্রিশের লোকটির সাজপোশাক ভারি অদ্ভুত । কিন্তু তার দৃষ্টি ছিল অন্তর্ভেদী । সে তেলের খনিতেই কাজ করত । বর্মা থেকেই সে রেঙ্গুনে এসেছে । তার কাছ থেকে উদ্ধার করা জিনিসপত্রের মধ্যে ছিল লোহার কম্পাস , কাঠের ফুটবুল , একটা টাকা , কিছু বিড়ি , একটা দেশলাই আর একটা গাঁজার কলকে । নিমাইবাবু তাকে গাঁজার কলকে প্রসঙ্গে জিজ্ঞেস করলে সে জানায় , কলকেটা সে পথে কুড়িয়ে পেয়ে রেখে দিয়েছে । সে নিজে গাঁজা খায় না বটে , তবে প্রয়োজনে অন্যকে বানিয়ে দেয় । কিন্তু তার কথায় কেউই বিশ্বাস করে না । বরং গিরীশ মহাপাত্রের চেহারা , সাজপোশাক আচার – আচরণ ও কথাবার্তা থেকে থানায় উপস্থিত সকলেই এ ব্যাপারে নিশ্চিত হয় যে , এই ব্যক্তি কোনোভাবেই সব্যসাচী মল্লিক হতে পারেন না । তাই তাকে নিয়ে খানিক হাসিতামাশার পর তাকে ছেড়ে দেওয়া হয় । 

9. গিরীশ মহাপাত্রের চেহারা ও পোশাক – আশাকের বিস্তারিত বিবরণ দাও । 

Answer: শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের ‘ পথের দাবী ‘ রচনাংশের কেন্দ্রীয় চরিত্র সব্যসাচী মল্লিকের ছদ্মবেশী রূপই হল গিরীশ মহাপাত্র । ছদ্মবেশী সব্যসাচী এই উপন্যাসে যেন সম্পূর্ণ একটি আলাদা চরিত্ররূপে আমাদের কাছে ধরা দেয় । পুলিশস্টেশনের মধ্যে কাশতে কাশতে তার আবির্ভাব । রোদে পুড়ে তার গায়ের অত্যন্ত ফরসা রং প্রায় তামাটে হয়ে গেছে । বয়স ত্রিশ – বত্রিশের মধ্যে হলেও , অত্যধিক বুগণতার জন্য তাকে দেখে মনে হয় যেন আয়ুর শেষ প্রান্তে এসে দাঁড়িয়েছে । তবে এমন শারীরিক গড়ন ও চেহারার মধ্যেও উল্লেখযোগ্য তার রোগা মুখের অদ্ভুত দুটি চোখের দৃষ্টি । 

আসলে মহাপাত্ররূপী সব্যসাচী সব কিছু লুকোলেও , অতলস্পর্শী চোখ দুটিকে তার পক্ষে লুকোনো সম্ভব ছিল না । পোশাক – আশাক তার মাথার সামনের চুল লম্বা । যদিও ঘাড় ও কানের কাছে প্রায় নেই । তার চেরা সিঁথি করা তেল জবজবে মাথা থেকে উগ্র নেবুর তেলের গন্ধ চারদিকে ছড়িয়ে পড়ে । গিরীশের পরনে ছিল জাপানি সিল্কের রামধনু রঙের চুড়িদার পাঞ্জাবি , যার বুকপকেট থেকে বাঘ – আঁকা একটা রুমালের কিছুটা দেখা যাচ্ছিল । যদিও তার কাঁধে উত্তরীয়ের কোনো বালাই ছিল না । সে পরনে বিলাতি মিলের কালো মকমলের সূক্ষ্ম শাড়ি পরেছিল । তার পায়ে ছিল লাল ফিতে বাঁধা সবুজ ফুল মোজা ও তলায় আগাগোড়া নাল বাঁধানো বার্নিশ করা পাম্প শু । আর তার হাতে ধরা একগাছি হরিণের শিং দিয়ে হাতল বাঁধানো বেতের ছড়ি । তবে এত শখশৌখিনতা – পরিপাট্য এসবই জাহাজযাত্রার ধকলে নোংরা ও মলিন এবং তার শরীরে গাঁজা খাওয়ার লক্ষণ আর ক্লান্তির ছাপ বেশ স্পষ্টভাবে প্রতিভাত হচ্ছিল ।

10. ‘ কই এ ঘটনা তো আমাকে বলেননি । — কোন্ ঘটনার প্রশ্ন । কথা বলা হয়েছে ? এ ঘটনা বক্তাকে না বলার কারণ কী ছিল ?

Answer: শরৎচন্দ্রের ‘ পথের দাবী ‘ উপন্যাসের অংশবিশেষ থেকে গৃহীত উদ্ধৃতিটির বক্তা হল অপূর্বর সহকর্মী রামদাস তলওয়ারকর । ঘটনাটি হল , উদ্দিষ্ট ঘটনার ৮ উপন্যাসের অন্যতম চরিত্র অপূর্ব ফিরিঙ্গি যুবকদের পরিচয় হাতে কোনো এক প্ল্যাটফর্মে অপমানিত ও শারীরিকভাবে নিগৃহীত হন । সেই অন্যায়ের প্রতিবাদ করেন অপূর্ব । কিন্তু তিনি ভারতীয় বলে স্টেশনমাস্টার তাঁকে অপমান করে তাড়িয়ে দেন । 

  অপূর্ব তার অপমানের কাহিনি তার সহকর্মী রামদাসকে আগে বলেনি । এই জন্য রামদাস অভিমানের সঙ্গে অভিযোগ জানালে অপূর্ব বলে যে , নিজস্ব অপমান ব্যক্ত করা সহজ নয় । বিশেষত যেখানে শুধু নিজে নয় , সমগ্র জাতি জড়িত , তা প্রকাশ করা আরও বেশি অপমানের । ফিরিঙ্গি যুবকদের অপমান অপূর্বর কাছে বেদনার ছিল । কিন্তু তার চেয়ে বেশি বেদনার ছিল সেদিন ঘটনাস্থলে উপস্থিত ভারতীয়রা তার সেই অপমানকে মেনে নিয়েছিল । এই ঘটনায় শোষিত , পীড়িত , অসম্মানে অভ্যস্ত এক পরাধীন জাতির পঙ্গু ও ক্লীব ছবিটি ফুটে ওঠে । যে – ছবি তরুণ দেশপ্রেমিক অপূর্বর কাছে গভীর যন্ত্রণা ও লজ্জার । পিতৃবন্ধু দারাগো নিমাইবাবুর চেয়ে বিপ্লবী সব্যসাচী মল্লিক কেন তার কাছে বেশি আপন তা বোঝাতে গিয়েই অপূর্ব মনের মধ্যে লুকোনো বেদনাদায়ক অভিজ্ঞতার কথাগুলো বলে ফেলে ।

11. ‘ পথের দাবী ‘ উপন্যাসের যে – অংশ তোমাদের পাঠ্য , তা অনুসারে অপূর্ব চরিত্রটি আলোচনা করো ।

Answer: শরৎচন্দ্রের ‘ পথের দাবী ‘ রচনাংশের মুখ্য চরিত্র অপূর্ব একজন সৎ – শিক্ষিত – আদর্শবাদী ও সংবেদনশীল যুবক । চাকরির সন্ধানে তার বর্মায় আসা । পাঠ্যাংশে অপূর্বর চরিত্রের দুটি প্রধান বৈশিষ্ট্য দেখতে পাওয়া যায়— 

দেশপ্রেমিক : অপূর্ব পরাধীন ভারতের এক তরুণ দেশপ্রেমিক । সব্যসাচীর প্রতি সে আন্তরিকভাবে শ্রদ্ধাশীল । গিরীশ মহাপাত্রকে প্রথম দর্শনে সে হাসি সামলাতে না পারলেও বিপ্লবী সব্যসাচী মল্লিকের বর্মায় আগমন ও পুলিশি সতর্কতা সত্ত্বেও তার ধরা না পড়া অপূর্বকে বিচলিত করে তোলে । গিরীশ মহাপাত্রের প্রতি অপূর্বর সন্দেহ যত বেড়েছে সব্যসাচীর প্রতি শ্রদ্ধা । তত প্রগাঢ় হয়েছে । সহকর্মী রামদাসের কাছে তার সরল স্বীকারোক্তি ইংরেজ ভৃত্য আত্মীয়ের চেয়ে অনাত্মীয় দেশপ্রেমিক সব্যসাচী তার বেশি আপনার । দেশের অপমান ভুক্তভোগী অপূর্বর বুকে বেঁধে । শরৎচন্দ্র সেই বাঙালি বিপ্লবী তরুণদের আদর্শে অপূর্বকে গড়ে তুলেছেন যাদের ধমনিতে পরাধীনতার ও দাসত্বের যন্ত্রণা থেকে মুক্তির আকাঙ্ক্ষা শোণিতের মতো প্রবাহিত । তাই সব্যসাচীর মতো রাজদ্রোহীরা অপূর্বদের আদর্শ নায়ক । এদের মধ্যেই তরুণ বিপ্লবীরা নিজেদের খুঁজে পেতেন । 

গুরুজনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল : বিপ্লবী সব্যসাচীর দৃঢ়তা ব্যক্তিত্বকে অপূর্ব শ্রদ্ধা করলেও প্রকাশ্যে রাজদ্রোহিতার সাহস তার ছিল না । সেই কারণে ইংরেজ বিদ্বেষী অপূর্ব তার পিতার বন্ধু নিমাইবাবু ইংরেজ কর্মচারী জেনেও তার প্রতি শ্রদ্ধাশীল ছিল । 

এভাবেই ‘ পথের দাবী ‘ উপন্যাসের কথক অপূর্ব পরাধীন ভারতের শিক্ষিত তরুণদের এক সার্থক টাইপ চরিত্ররূপে প্রতিভাত হয়েছে ।

12. ‘ পথের দাবী ‘ উপন্যাস থেকে গৃহীত পাঠ্য অংশে অপূর্বর রেলযাত্রার যে – বিবরণ দেওয়া হয়েছে , তা নিজের ভাষায় লেখো ।

Answer: শরৎচন্দ্রের ‘ পথের দাবী ‘ – র অন্যতম চরিত্র অপূর্ব বড়োসাহেবের নির্দেশে অফিসের কাজে ও রেঙ্গুনে ভালো না লাগার কারণে এক বিকেলে আর্দালি ও হিন্দুস্থানি ব্রাহ্মণ পেয়াদা নিয়ে ভামোগামী ট্রেনে চড়ে বসে । তাকে স্টেশনে ছাড়তে আসে তার সহকর্মী রামদাস । গাড়ি ছাড়ার পাঁচ মিনিট আগে হঠাৎ সেখানে উদয় হয় পুলিশস্টেশনে দেখা গিরীশ মহাপাত্র । মহাপাত্রের সঙ্গে আলাপচারিতা শেষ না হতে হতেই অপূর্বর ট্রেন ছেড়ে দেয় । প্রথম শ্রেণির যাত্রী বলে তার কামরায় কেউ ছিল না । অপূর্ব সন্ধ্যাহিক সম্পন্ন করে স্পর্শদোষহীন খাবার খেয়ে শোবার উদ্যোগ নেয় । সে ব্যাঘাতহীন ঘুমের কথা ভাবলেও কয়েকটা স্টেশনের পরই তার ঘুমে ব্যাঘাত ঘটে । সারারাত্রিতে অন্তত তিনবার পুলিশের লোক এসে তার নামঠিকানা লিখে নিয়ে যায় । অবশেষে অপূর্ব বিরক্ত হয়ে প্রতিবাদ করায় বর্মার সাব – ইনস্পেক্টর রুঢ়ভাবে বলেন , যেহেতু সে ইউরোপীয় নয় তাই তারা ইচ্ছে করলেই তাকে ট্রেন থেকে টেনে নামিয়ে দিতে পারে । প্রথম শ্রেণির যাত্রীর পরিচয় দিয়ে নিজের অধিকার রক্ষার কথা বলেও কোনো লাভ হয়নি । পরাধীন দেশের মানুষের দুর্দশা ও লাঞ্ছনার ছবি এভাবেই অপূর্বর ট্রেন যাত্রার ঘটনা থেকে স্পষ্ট হয়ে ওঠে ।

13. ‘ বাবুটির স্বাস্থ্য গেছে , কিন্তু শখ ষোলোআনাই বজায় আছে- বাবুটি কে ? তার সাজসজ্জার পরিচয় দাও ।

Answer: শরৎচন্দ্রের ‘ পথের দাবী ‘ উপন্যাস থেকে গৃহীত উদ্ধৃতিটির বাবুটির পরিচয় বস্তুা হলেন পরাধীন ভারতে ব্রিটিশ অধীনস্থ এক বাঙালি পুলিশকর্তা নিমাইবাবু । তিনি পোলিটিক্যাল সাসপেক্ট হিসেবে চিহ্নিত ছদ্মবেশী গিরীশ মহাপাত্র সম্পর্কে এমন মন্তব্য করেছেন । 

  বছর ত্রিশ – বত্রিশের ছদ্মবেশী গিরীশ মহাপাত্রের ফরসা রং রোদে পুড়ে তামাটে হয়ে গেছে । রোগা চেহারার মানুষটি যখন কাশতে কাশতে থানায় প্রবেশ করল তখন তার দেহের সামগ্রিক অবস্থা দেখে মনে হচ্ছিল সেটি দ্রুত বেগে ক্ষয়প্রাপ্ত হচ্ছে । কিন্তু তার রোগা মুখের দুটি চোখের দৃষ্টি ভারি অদ্ভুত । জলাশয়ের মতো গভীর সে চোখের সঙ্গে খেলা চলবে না । দূরে থাকতে হবে । সেই ক্ষীণ চোখের অতলে কোথাও যেন প্রাণশক্তি লুকিয়ে আছে , আর সে জন্যই সে বেঁচে আছে । গিরীশ মহাপাত্র যে অত্যন্ত শৌখিন মানুষ তা তার বেশভূষাতেই প্রমাণিত । চুলে বাহারি ছাঁট । তাতে সুগন্ধি নেবু তেল । গায়ে জাপানি সিল্কের রামধনু রঙের চুড়িদার পাঞ্জাবি । পকেটে বাঘ – আঁকা রুমাল । পরনে বিলেতি মখমল পাড়ের কালো শাড়ি । হাঁটু পর্যন্ত মোজা লাল রিবন দিয়ে বাঁধা এবং পায়ে নাল লাগানো বার্নিশ করা পাম্প । হাতে হরিণের শিং দিয়ে বাঁধানো বেতের শৌখিন ছড়ি । এসব দেখেই নিমাইবাবু রসিকতার হলে কথাগুলি বলেছিলেন ।

(৪) রচনাধর্মী প্রশ্নগুলির উত্তর দাও :

প্রশ্নঃ ‘পথের দাবী’ উপন্যাসের যে অংশ তোমাদের পাঠ্য, তা অনুসারে অপূর্ব চরিত্রটি আলোচনা করো।

উত্তরঃ শরৎচন্দ্রের ‘পথের দাবী’ রচনাংশের মুখ্য চরিত্র অপূর্ব একজন সৎ–শিক্ষিত–আদর্শবাদী ও সংবেদনশীল যুবক। চাকরির সন্ধানে তার বর্মায় আসা। পাঠ্যাংশে অপূর্বর চরিত্রের দুটি প্রধান বৈশিষ্ট্য দেখতে পাওয়া যায় –

দেশপ্রেমিকঃ অপূর্ব পরাধীন ভারতের এক তরুণ দেশপ্রেমিক। সব্যসাচীর প্রতি সে আন্তরিকভাবে শ্রদ্ধাশীল। গিরীশ মহাপাত্রকে প্রথম দর্শনে সে হাসি সামলাতে না পারলেও বিপ্লবী সব্যসাচী মল্লিকের বর্মায় আগমন ও পুলিশি সতর্কতা সত্ত্বেও তার ধরা না পড়া অপূর্বকে বিচলিত করে তোলে। গিরীশ মহাপাত্রের প্রতি অপূর্বর সন্দেহ যত বেড়েছে সব্যসাচীর প্রতি শ্রদ্ধা তত প্রগাঢ় হয়েছে। সহকর্মী রামদাসের কাছে তার সরল স্বীকারোক্তি ইংরেজ ভৃত্য আত্মীয়ের চেয়ে অনাত্মীয় দেশপ্রেমিক সব্যসাচী তার বেশি আপনার। দেশের অপমান ভুক্তভোগী অপূর্বর বুকে বেঁধে। শরৎচন্দ্র সেই বাঙালি বিপ্লবী তরুণদের আদর্শে অপূর্বকে গড়ে তুলেছেন যাদের ধমনিতে পরাধীনতার ও দাসত্বের যন্ত্রণা থেকে মুক্তির আকাঙ্ক্ষা শোণিতের মতো প্রবাহিত। তাই সব্যসাচীর মতো রাজদ্রোহীরা অপূর্বদের আদর্শ নায়ক। এদের মধ্যেই তরুণ বিপ্লবীরা নিজেদের খুঁজে পেতেন। 

গুরুজনের প্রতি শ্রদ্ধাশীলঃ বিপ্লবী সব্যসাচীর দৃঢ়তা ব্যক্তিত্বকে অপূর্ব শ্রদ্ধা করলেও প্রকাশ্যে রাজদ্রোহিতার সাহস তার ছিল না। সেই কারণে ইংরেজ বিদ্বেষী অপূর্ব তার পিতার বন্ধু নিমাইবাবু ইংরেজ কর্মচারী জেনেও তার প্রতি শ্রদ্ধাশীল ছিল। 

      তাই এভাবেই ‘পথের দাবী’ উপন্যাসের কথক অপূর্ব পরাধীন ভারতের শিক্ষিত তরুণদের এক সার্থক টাইপ চরিত্ররূপে প্রতিভাত হয়েছে।

প্রশ্নঃ ‘এমন তো নিত্য নিয়তই ঘটছে।’ – এখানে কোন ঘটনার কথা বলা হয়েছে?

উত্তরঃ শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের ‘পথের দাবী’ রচনার কেন্দ্রীয় চরিত্র অপূর্ব। সে বন্ধু ও সহকর্মী রামদাস তলওয়ারকরের কাছে রেঙ্গুন পুলিশস্টেশনে ঘটা একটি ঘটনার বিবরণ দিতে গিয়ে; দেশ ও দেশপ্রেমিক বিপ্লবীদের প্রতি নিজের অন্তরের ভালোবাসার কথা স্বীকার করে। মাতৃভূমির স্বাধীনতা কিংবা মুক্তির সংগ্রামে যাঁরা প্রাণপণ সচেষ্ট, তাদের ‘আপনার নয়’ বলবার সাধ্য অপূর্বর নেই। কারণ অন্যায় অবিচারের শাস্তিভোগ করার যন্ত্রণা তাকেও সহ্য করতে হয়েছে। এ প্রসঙ্গে একটি বেদনাদায়ক ঘটনার কথা সে বলে। একদিন কয়েকজন ফিরিঙ্গি ছোঁড়ার হাতে অপূর্বকে বিনা কারণে মানসিক ও শারীরিকভাবে নিগৃহীত হতে হয়। এর প্রতিবাদে সাহেব স্টেশনমাস্টারের কাছে গেলে, সেখানেও তার কপালে জোটে অপমান এবং লাঞ্ছনা। তবে অপূর্বর কাছে এর চেয়েও বেদনাবহ ছিল ঘটনাস্থলে উপস্থিত ভারতীয়দের নীরবতার অভ্যেস। এমন পরিস্থিতিতে অভ্যস্ত এক অসহায় দুর্বল ও ক্লীব জাতির দাসত্বের ছবি, তাকে দুঃখে – লজ্জায় এবং ঘৃণায় হতবাক করে দিয়েছিল। এক শিক্ষিত দেশপ্রেমিক তরুণের কাছে ব্যক্তিগত নয় যেখানে সমগ্র জাতির অপমান জড়িত; তাকে ভাষায় প্রকাশ করা অনেক বেশি লজ্জা ও অসম্মানের। অথচ এমন অন্যায় লাঞ্ছনার ঘটনা প্রতিনিয়তই প্রতিকারহীনভাবে ঘটে চলেছে। এ কথাই অপূর্বর কণ্ঠে ধ্বনিত হয়েছে।

প্রশ্নঃ ‘পথের দাবী’ – তে নিমাইবাবুর চরিত্রটি আলোচনা করো।

উত্তরঃ অপরাজেয় কথাশিল্পী শরত্চন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের লেখা কালজয়ী রাজনৈতিক উপন্যাস ‘পথের দাবী’ থেকে গৃহীত দশম শ্রেণির পাঠ্য অংশে নিমাইবাবু সম্পর্কে যা জানা যায়, তা হল – নিমাইবাবু হলেন কাহিনির কেন্দ্রীয় চরিত্র অপূর্বর পিতৃবন্ধু, সেই সূত্রে আত্মীয়। অপূর্বর পিতা কোনো একসময়ে তাঁকে চাকরিতে ঢুকিয়েছিলেন। এই সূত্রে যে সম্বন্ধ স্থাপিত হয়েছে, তা দুই পক্ষই বহন করে নিয়ে চলেছে । রেঙ্গুনের পুলিশস্টেশনে বাংলা পুলিশের দারোগা নিমাইবাবুকে ছদ্মবেশী বিপ্লবী সব্যসাচী ওরফে গিরীশ মহাপাত্রকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে দেখা যায়। তবে অভিজ্ঞ ও বর্ষীয়ান নিমাইবাবুও সব্যসাচীকে চিনতে ভুল করে ফেলেন। তাকে সাধারণ গঞ্জিকাসেবক বলে ছেড়েও দেন। তবে তাঁর স্নেহপ্রবণ মন বোঝা যায়, যখন গিরীশ মহাপাত্ররুপী সব্যসাচীর রুগ্‌ণ দেহ দেখে তিনি কোমল স্বরে তাকে গাঁজা না খাওয়ার পরামর্শ দেন এবং বলেন ‘বুড়োমানুষের কথাটা শুনো’। এক্ষেত্রে এক প্রৌঢ় স্নেহশীল পিতার প্রতিচ্ছবি নিমাইবাবুর মধ্যে ফুটে ওঠে।

প্রশ্নঃ ‘কিন্তু এই জানোয়ারটাকে ওয়াচ করবার দরকার নেই বড়োবাবু। – ‘জানোয়ারটা’ বলতে কাকে ইঙ্গিত করা হয়েছে? তাকে ওয়াচ করার দরকার নেই কেন? 

উত্তরঃ শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের ‘পথের দাবী’ রচনাংশ থেকে উদ্ধৃত উক্তিটিতে ‘জানোয়ারটা’ বলতে পুলিশস্টেশনে আটক গিরীশ মহাপাত্রকে বলা হয়েছে। বক্তা পুলিশের কর্মচারী জগদীশবাবু। 

     বিপ্লবী সব্যসাচী মল্লিক সন্দেহে পুলিশ গিরীশ মহাপাত্রকে আটক করে। কিন্তু তার রোদে পড়া তামাটে রং, হাঁফ ধরা কাশির দমক ও অকাল বার্ধক্যের ভগ্ন–স্বাস্থ্য দেখে পুলিশের সন্দেহ হয়। বিশেষত তার বেশভূষার বাহার আর পরিপাট্য দেখে পুলিশ নিশ্চিত হয় এই ব্যক্তিটি সব্যসাচী নয়। কারণ বিদেশি বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিগ্রিপ্রাপ্ত চিকিৎসকের সঙ্গে সন্দেহভাজন; কারখানার মিস্ত্রি গিরীশের কোনো মিল থাকাই সম্ভব নয়। খানাতল্লাশির সময় তার ট্যাঁক ও পকেট থেকে বিভিন্ন মামুলি সামগ্রীর সঙ্গে একটি গাঁজার কলকেও পাওয়া যায়। গিরীশ গাঁজা খাওয়ার কথা বারবার অস্বীকার করলেও, গাঁজা খাওয়ার সমস্ত লক্ষণই তার বিদ্যমান দেখে পুলিশ নিঃসংশয় হয়। নিমাইবাবু মহাপাত্রকে ছেড়ে দিলেও, এ শহরে নজর রাখার কথা বলেন। কারণ বর্মায় সব্যসাচী এসেছে। এ খবর নির্ভুল। এ কথায় জগদীশবাবু বলেন, তবে গিরীশ মহাপাত্রকে রাখার কোনো প্রয়োজন নেই।

প্রশ্নঃ গিরীশ মহাপাত্রের চেহারা ও পোশাক–আশাকের বিস্তারিত বিবরণ দাও। 

উত্তরঃ শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের ‘পথের দাবী’ রচনাংশের কেন্দ্রীয় চরিত্র সব্যসাচী মল্লিকের ছদ্মবেশী রূপই হল গিরীশ মহাপাত্র। ছদ্মবেশী সব্যসাচী এই উপন্যাসে যেন সম্পূর্ণ একটি আলাদা চরিত্ররূপে আমাদের কাছে ধরা দেয়। পুলিশস্টেশনের মধ্যে কাশতে কাশতে তার আবির্ভাব। রোদে পুড়ে তার গায়ের অত্যন্ত ফরসা রং প্রায় তামাটে হয়ে গেছে। বয়স ত্রিশ–বত্রিশের মধ্যে হলেও, অত্যধিক বুগণতার জন্য তাকে দেখে মনে হয় যেন আয়ুর শেষ প্রান্তে এসে দাঁড়িয়েছে। তবে এমন শারীরিক গড়ন ও চেহারার মধ্যেও উল্লেখযোগ্য তার রোগা মুখের অদ্ভুত দুটি চোখের দৃষ্টি। 

      আসলে মহাপাত্ররূপী সব্যসাচী সব কিছু লুকোলেও, অতলস্পর্শী চোখ দুটিকে তার পক্ষে লুকোনো সম্ভব ছিল না। পোশাক–আশাক তার মাথার সামনের চুল লম্বা। যদিও ঘাড় ও কানের কাছে প্রায় নেই। তার চেরা সিঁথি করা তেল জবজবে মাথা থেকে উগ্র নেবুর তেলের গন্ধ চারদিকে ছড়িয়ে পড়ে। গিরীশের পরনে ছিল জাপানি সিল্কের রামধনু রঙের চুড়িদার পাঞ্জাবি, যার বুকপকেট থেকে বাঘ–আঁকা একটা রুমালের কিছুটা দেখা যাচ্ছিল। যদিও তার কাঁধে উত্তরীয়ের কোনো বালাই ছিল না। সে পরনে বিলাতি মিলের কালো মকমলের সূক্ষ্ম শাড়ি পরেছিল। তার পায়ে ছিল লাল ফিতে বাঁধা সবুজ ফুল মোজা ও তলায় আগাগোড়া নাল বাঁধানো বার্নিশ করা পাম্প শু। আর তার হাতে ধরা একগাছি হরিণের শিং দিয়ে হাতল বাঁধানো বেতের ছড়ি। তবে এত শখশৌখিনতা–পরিপাট্য এসবই জাহাজযাত্রার ধকলে নোংরা ও মলিন এবং তার শরীরে গাঁজা খাওয়ার লক্ষণ আর ক্লান্তির ছাপ বেশ স্পষ্টভাবে প্রতিভাত হচ্ছিল।

প্রশ্নঃ ‘অপূর্ব তাহার পরিচ্ছদের প্রতি দৃষ্টিপাত করিয়া মুখ ফিরাইয়া হাসি গোপন করিল’ – ‘তাহার’ বলতে কার কথা বোঝানো হয়েছে? তার পরিচ্ছদের প্রতি দৃষ্টিপাত করে হাসি গোপন করার কারণ কী?

উত্তরঃ শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের ‘পথের দাবী’ রচনাংশ অনুসারে, প্রশ্নোধৃত অংশে ‘তাহার’ বলতে গিরীশ মহাপাত্রের কথা বোঝানো হয়েছে। 

     রেঙ্গুন পুলিশস্টেশনে বিপ্লবী সব্যসাচী মল্লিক সন্দেহে গিরীশ মহাপাত্রকে আটক করা হয়। সে কাশতে কাশতে থানার দারাগো নিমাইবাবুর সামনে এসে হাজির হয়। সেখানে অপূর্বও হাজির ছিল। লোকটির রোদে পোড়া তামাটে রং— অকাল বার্ধক্যের হাঁপানি অতিক্রম করে তার দৃষ্টি নিবন্ধ পরিচ্ছদের প্রতি হয় অতলশায়ী চোখ–দুটিতে। আচমকা নিমাইবাবুর দৃষ্টিপাত করে হাসি কথায় অপূর্বর সম্বিৎ ফেরে। সে গিরীশের বেশভূ গোপনের কারণ যা ও পরিচ্ছদের প্রতি দৃষ্টিপাত করে। তার মাথার সামনের চুল লম্বা । যদিও ঘাড় ও কানের কাছে প্রায় নেই। তার চেরা সিঁথি করা তেল জবজবে মাথা থেকে উগ্র নেবুর তেলের গন্ধ চারদিকে ছড়িয়ে পড়ে। গিরীশের পরনে ছিল জাপানি সিল্কের রামধনু রঙের চুড়িদার পাঞ্জাবি, যার বুকপকেট থেকে বাঘ–আঁকা একটা রুমালের কিছুটা দেখা যাচ্ছিল। যদিও তার কাঁধে উত্তরীয়ের কোনো বালাই ছিল না। সে পরনে বিলাতি মিলের কালো মখমলের সূক্ষ্ম শাড়ি পরেছিল। তবে পায়ে ছিল লাল ফিতে বাঁধা সবুজ ফুল মোজা ও তলায় আগাগোড়া নাল বাঁধানো বার্নিশ করা পাম্প শু। আর তার হাতে ধরা একগাছি হরিণের শিং দিয়ে হাতল বাঁধানো বেতের ছড়ি। এই কিম্ভুৎ আর বিচিত্র সাজসজ্জার কারণেই গিরীশ মহাপাত্রকে দেখে অপূর্ব হাসি গোপন করেছিল।

প্রশ্নঃ রামদাস তলওয়ারকর চরিত্রটি বিশ্লেষণ করো।

উত্তরঃ শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় রচিত ‘পথের দাবী’ উপন্যাসের একটি পার্শ্বচরিত্র হল রামদাস তলওয়ারকর। অপূর্বর সহকর্মী তলওয়ারকর খুব গুরুত্বপূর্ণ চরিত্র না হয়েও যথেষ্ট গুরুদায়িত্ব পালন করেছে। তাকে অবলম্বন করেই পাঠ্য অংশে অপূর্ব নিজের ভাবনাচিন্তা ব্যক্ত করেছে। রামদাস তলওয়ারকর সহকর্মীর চেয়েও অনেক বেশি সহমর্মী ও বন্ধু। ছদ্মবেশী সব্যসাচীকে দেখে আনমনা অপূর্বের বাড়ির পরিস্থিতি কুশল কিনা, তা সে জানার চেষ্টা করেছে। তার স্ত্রী প্রতিদিন অপুর্বর জলযোগ সরবরাহ করেছে। তলওয়ারকর অপূর্বর সমস্ত কথা মনোযোগ দিয়ে শুনেছে তা সে অপূর্বর ঘরে চুরি ও উপরতলার ক্রিশ্চান মেয়ের দ্বারা সম্পদ রক্ষার গল্পই হোক বা ইংরেজ কর্তৃক অপূর্বর অপমানের কাহিনিই হোক। রেঙ্গুন পুলিশস্টেশনে দেখা অদ্ভূত দর্শন গিরীশ মহাপাত্রের বর্ণনা দিতে গিয়ে তার সঙ্গে প্রচণ্ড হাসিতে ফেটে পড়েছে অপূর্ব। কিন্তু সঙ্গ দিতে গিয়ে তলওয়ারকর কখনোই অপূর্বর ছায়াতে পরিণত হয়নি। অপূর্বকে ট্রেনে তুলতে গিয়ে গিরীশ মহাপাত্রকে দেখে তার মনে সন্দেহ জেগেছে। প্রখর বুদ্ধিমান ছদ্মবেশী বিপ্লবী সব্যসাচীও তার মন থেকে সন্দেহ দূর করতে পারেনি। রামদাস মনে মনে গিরীশের প্রকৃত পরিচয় হাতড়ে বেড়িয়েছে। এভাবেই বুদ্ধিতে, বন্ধুত্বে, সাহচর্যে এবং সমবেদনায় রামদাস স্বল্প পরিসরেও তার স্বাতন্ত্র্য রক্ষা করে।

প্রশ্নঃ ‘পথের দাবী’ উপন্যাস থেকে গৃহীত পাঠ্য অংশে অপূর্বর রেলযাত্রার যে বিবরণ দেওয়া হয়েছে, তা নিজের ভাষায় লেখো।

উত্তরঃ শরৎচন্দ্রের ‘পথের দাবী’ উপন্যাসের অন্যতম চরিত্র অপূর্ব বড়োসাহেবের নির্দেশে অফিসের কাজে ও রেঙ্গুনে ভালো না লাগার কারণে এক বিকেলে আর্দালি ও হিন্দুস্থানি ব্রাহ্মণ পেয়াদা নিয়ে ভামোগামী ট্রেনে চড়ে বসে। তাকে স্টেশনে ছাড়তে আসে তার সহকর্মী রামদাস। গাড়ি ছাড়ার পাঁচ মিনিট আগে হঠাৎ সেখানে উদয় হয় পুলিশস্টেশনে দেখা গিরীশ মহাপাত্র। মহাপাত্রের সঙ্গে আলাপচারিতা শেষ না হতে হতেই অপূর্বর ট্রেন ছেড়ে দেয়। প্রথম শ্রেণির যাত্রী বলে তার কামরায় কেউ ছিল না। অপূর্ব সন্ধ্যাহিক সম্পন্ন করে স্পর্শদোষহীন খাবার খেয়ে শোবার উদ্যোগ নেয়। সে ব্যাঘাতহীন ঘুমের কথা ভাবলেও কয়েকটা স্টেশনের পরই তার ঘুমে ব্যাঘাত ঘটে। সারারাত্রিতে অন্তত তিনবার পুলিশের লোক এসে তার নামঠিকানা লিখে নিয়ে যায়। অবশেষে অপূর্ব বিরক্ত হয়ে প্রতিবাদ করায় বর্মার সাব–ইনস্পেক্টর রুঢ়ভাবে বলেন, যেহেতু সে ইউরোপীয় নয় তাই তারা ইচ্ছে করলেই তাকে ট্রেন থেকে টেনে নামিয়ে দিতে পারে। প্রথম শ্রেণির যাত্রীর পরিচয় দিয়ে নিজের অধিকার রক্ষার কথা বলেও কোনো লাভ হয়নি। পরাধীন দেশের মানুষের দুর্দশা ও লাঞ্ছনার ছবি এভাবেই অপূর্বর ট্রেন যাত্রার ঘটনা থেকে স্পষ্ট হয়ে ওঠে।

 

পথের দাবী অধ্যায় থেকে আরোও প্রশ্ন ও উত্তর দেখুন :

©kamaleshforeducation.in(2023)

 

 

 

 

 

 

 

বহুরূপী

 

Madhyamik Bengali Suggestion 2025 PDF ...

 বহুরূপী (গল্প) সুবোধ ঘোষ – মাধ্যমিক দশম শ্রেণীর বাংলা প্রশ্ন ও উত্তর  

MCQ প্রশ্ন ও উত্তর | বহুরূপী (গল্প) সুবোধ ঘোষ – মাধ্যমিক বাংলা প্রশ্ন ও উত্তর 

  1. সন্ন্যাসী জগদীশবাবুর বাড়িতে ছিলেন –

(A) সাত দিন

(B) সাত মাস

(C) সাত সপ্তাহ

(D) সাত বছর

Ans: (A) সাত দিন

  1. সন্ন্যাসী থাকেন –

(A) হিমালয়ের চূড়াতে

(B) মরুভূমিতে

(C) হিমালয়ের গুহাতে

(D) বনভূমিতে

  1. জগদীশবাবুর বাড়িতে আগত সন্ন্যাসীর বয়স –

(A) একশো বছর

(B) হাজার বছরের বেশি

(C) একশো বছরের বেশি

(D) হাজার বছর

Ans: (B) হাজার বছরের বেশি

  1. জগদীশবাবু একজোড়া কাঠের খড়মে যা লাগিয়ে সন্ন্যাসীর পায়ের কাছে ধরলেন , তা হল –

(A) সোনার বোল

(B) সোনার মল

(C) সোনার আংটি

(D) সোনার ঘুঙুর

Ans: (A) সোনার বোল

  1. সন্ন্যাসীকে বিদায় দেওয়ার সময় জগদীশবাবু তাকে জোর করে দিয়েছিলেন—

(A) একটা দশ টাকার নোট

(B) একটা পঞ্চাশ টাকার নোট

(C) একটা কুড়ি টাকার নোট

(D) একটা একশো টাকার নোট

Ans: (D) একটা একশো টাকার নোট

  1. হরিদার ঘরে আড্ডা দিত—

(A) পাঁচ জন

(B) চার জন

(C) তিন জন

(D) ছ – জন

Ans: (B) চার জন

  1. লেখক ও তার বন্ধুরা কোন কোন সময়ে আড্ডা দিতেন ?

(A) রাত্রে

(B) সকাল – দুপুরে

(C) রাতদিন

(D) সকালসন্ধে

Ans: (D) সকালসন্ধে

  1. হরিদার কাছে যা অসম্ভব , তা হল –

(A) রোজই ভাত রান্না করা

(B) রোজ চা তৈরি করা

(C) রোজ বহুরূপী সাজা

(D) রোজই একটা চাকরির কাজ করে যাওয়া

Ans: (D) রোজই একটা চাকরির কাজ করে যাওয়া

  1. হরিদার ছোট্ট ঘরটির অবস্থান –

(A) শহরের সবচেয়ে সরু গলির ভিতরে

(B) চকের বাস স্ট্যান্ডের কাছে

(C) দয়ালবাবুর লিচু বাগানে

(D) জগদীশবাবুর বাড়ির বাগানে

Ans: (A) শহরের সবচেয়ে সরু গলির ভিতরে

  1. হরিদার জীবনজুড়ে ছিল –

(A) ভয়ানক আপত্তি

(B) বিচিত্র ছদ্মবেশ

(C) করুণ আবেদন

(D) নাটকীয় বৈচিত্র্য

Ans: (D) নাটকীয় বৈচিত্র্য

[ আরোও দেখুন: Madhyamik Bengali Suggestion 2023 Click here ]

  1. মাঝে মাঝে সত্যিই হরিদা যা করতেন , তা হল –

(A) রোজগার

(B) বিরাগ

(C) উপোস

(D) সন্দেহ

Ans: (C) উপোস

  1. যারা বহুরুপীর সাজে হরিদাকে চিনতে পারে তারা বকশিশ দেয় –

(A) এক আনা

(B) এক পয়সা

(C) এক টাকা

(D) এক আনা দু – আনা

Ans: (D) এক আনা দু – আনা

  1. দুপুরবেলায় আতঙ্কের হল্লা বেজে উঠেছিল-

(A) শহরের সবচেয়ে সরু গলিটিতে

(B) জগদীশবাবুর বাড়ির বাগানে

(C) দয়ালবাবুর লিচু বাগানে

(D) চাকের বাস স্ট্যান্ডে

Ans: (D) চাকের বাস স্ট্যান্ডে

  1. চাকর বাস স্ট্যান্ডে আতঙ্কের হল্লা বেজে ওঠার কারণ ছিল –

(A) একজন বাইজি

(B) একটি উন্মাদ পাগল

(C) একজন সন্ন্যাসী

(D) একজন কাপালিক

Ans: (B) একটি উন্মাদ পাগল

  1. পাগলটা যা হাতে তুলে নিয়ে বাসের যাত্রীদের দিকে তেড়ে যাচ্ছিল , তা হল –

(A) একটা পাথর

(B) একটা থান ইট

(C) একটা লাঠি

(D) একটা ঢিল

Ans: (B) একটা থান ইট

  1. বাসের ড্রাইভারের নাম ছিল –

(A) ভবতোষ

(B) অনাদি

(C) কাশীনাথ

(D) জগদীশ

Ans: (C) কাশীনাথ

  1. ‘ খুব হয়েছে হরি , এইবার সরে পড়ো । অন্যদিকে যাও ।’ কথা বলেছে –

(A) ভবতোষ

(B) অনাদি

(C) কাশীনাথ

(D) জনৈক বাসযাত্রী

Ans: (C) কাশীনাথ

  1. প্রায় নাচতে নাচতে চলে যাচ্ছিল—

(A) একজন কাপালিক

(B) একজন সন্ন্যাসী

(C) একজন বাইজি

(D) একটি পাগল

Ans: (C) একজন বাইজি

  1. শহরে যারা নতুন এসেছে , তারা –

(A) বেশ বিরক্ত হয়

(B) ভয়ে কেঁদে ফেলে

(C) দু – চোখ বড়ো করে তাকিয়ে থাকে

(D) হতাশ স্বরে প্রশ্ন করে ওঠে

Ans: (C) দু – চোখ বড়ো করে তাকিয়ে থাকে

  1. বাইজির ছদ্মবেশে হরিদার রোজগার হয়েছিল—

(A) আট টাকা দশ আনা

(B) আট টাকা তিন আনা

(C) দশ টাকা আট আনা

(D) তিন টাকা আট আনা

Ans: (A) আট টাকা দশ আনা

  1. দয়ালবাবুর লিচু বাগানের ভিতরে হরিদা দাঁড়িয়েছিল—

(A) ফিরিঙ্গি কেরামিন সাহেব সেজে

(B) পুলিশ সেজে

(C) স্কুলের মাস্টারমশাই সেজে

(D) বাউল সেজে

Ans: (B) পুলিশ সেজে

  1. হরিদা পুলিশ সেজে দাঁড়িয়েছিলেন—

(A) লিচু বাগানে

(B) দালানে

(C) বাস স্ট্যান্ডে

Ans: (A) লিচু বাগানে

  1. লিচু বাগানে নকল পুলিশ স্কুলের যে ক – টি ছেলেকে ধরেছিলেন , তার সংখ্যা হল –

(A) পাঁচ

(B) চার

(C) আট

(D) ছয়

Ans: (B) চার

  1. নকল পুলিশকে ঘুষ দিয়েছিলেন—

(A) জগদীশবাবু

(B) ড্রাইভার কাশীনাথ

(C) হরিদা

(D) স্কুলের মাস্টারমশাই

Ans: (D) স্কুলের মাস্টারমশাই

  1. জগদীশবাবু কেমন স্বভাবের মানুষ ছিলেন ?

(A) উদার

(B) কৃপণ

(C) কপট

(D) বিকৃত

Ans: (B) কৃপণ

  1. বড়ো চমৎকার ছিল কোন সময়ের চেহারা ?

(A) রাতের

(B) সকালের

(C) সন্ধ্যার

(D) ভোরের

Ans: (C) সন্ধ্যার

  1. বিরাগীরুপী হরিদার গায়ে ছিল কেবলমাত্র একটি—

(A) জামা

(B) পাঞ্জাবি

(C) শাল

(D) উত্তরীয়

Ans: (D) উত্তরীয়

  1. বিরাগীর ঝোলার ভিতর যে – বইটি ছিল , সেটি হল—

(A) গীতা

(B) কোরান

(C) মহাভারত

(D) উপনিষদ

Ans: (A) গীতা

  1. জগদীশবাবুর সম্পত্তির পরিমাণ ছিল—

(A) বারো লক্ষ টাকার

(B) কুড়ি লক্ষ টাকার

(C) আঠারো লক্ষ টাকার

(D) এগারো লক্ষ টাকার

Ans: (D) এগারো লক্ষ টাকার

  1. রাগ হল এক ধরনের—

(A) অনুভূতি

(B) প্রবৃত্তি

(C) রিপু

(D) আচরণ

Ans: (C) রিপু

  1. লেখকের কানের কাছে ফিশফিশ করে যে – বলেছিল — ‘ না না , হরিদা নয় । হতেই পারে না । ‘ তার নাম হল –

(A) ভবতোষ

(B) জগদীশ

(C) সুবোধ

(D) অনাদি

Ans: (A) ভবতোষ

  1. জগদীশবাবু বিরাগীজিকে প্রণামী দিয়েছিলেন—

(A) পঞ্চাশ টাকা

(B) পঁচিশ টাকা

(C) একশো টাকা

(D) দেড়শো টাকা

Ans: (C) একশো টাকা

  1. বিরাগী আসলে ছিলেন –

(A) হরিদা

(B) জগদীশবাবু

(C) সন্ন্যাসী

(D) পাগল

Ans: (A) হরিদা

  1. ভবতোষ ভেবেছিল জগদীশবাবু হরিদাকে বকশিশ হিসেবে দেবেন –

(A) আট আনা বা দশ আনা

(B) দশ আনা বা বারো আনা

(C) ছ – আনা বা আট আনা

(D) পাঁচ আনা

Ans: (A) আট আনা বা দশ আনা

  1. সপ্তাহে হরিদা বহুরূপী সেজে বাইরে যান—

(A) একদিন

(B) দু – দিন

(C) চার দিন

(D) পাঁচ দিন

Ans: (A) একদিন

  1. সন্ন্যাসী সারাবছর খেতেন—

(A) একটি বেল

(B) একটি আমলকী

(C) একটি বহেড়া

(D) একটি হরীতকী

Ans: (D) একটি হরীতকী

  1. ‘ বাসের যাত্রীরা কেউ হাসে , কেউ বা বেশ বিরক্ত হয় কেউ আবার বেশ বিস্মিত ।’— বাসযাত্রীদের এমন প্রতিক্রিয়ার কারণ –

(A) বাসের ড্রাইভার কাশীনাথ বহুরূপী হরিদাকে ধমক দিয়েছে

(B) বহুরূপী হরিদার পাগলের সাজটা চমৎকার

(C) হরিদা আজ একজন বাউল সেজে এসেছেন

(D) কাপালিক সেজে এলেও হরিদা কোনো পয়সা নেন না

Ans: (B) বহুরূপী হরিদার পাগলের সাজটা চমৎকার

  1. ‘ সে ভয়ানক দুর্লভ জিনিস ‘ — দুর্লভ জিনিসটি হল—

(A) সন্ন্যাসীর আশীর্বাদ

(B) সন্ন্যাসীর সান্নিধ্য

(C) সন্ন্যাসীর উপদেশ

(D) সন্ন্যাসীর পদধূলি

Ans: (D) সন্ন্যাসীর পদধূলি

  1. হরিদার শীর্ণ শরীরটা দেখে মনে হয়েছিল –

(A) মহাপুরুষ

(B) অশরীরী

(C) অতিমানব

(D) বহুরূপী

Ans: (B) অশরীরী

  1. হরিদার মতে সব তীর্থ—

(A) মানুষের বুকের ভিতর

(B) গভীর অরণ্যে

(C) শূন্য আকাশে

(D) হিমালয়ের চূড়ায়

Ans: (A) মানুষের বুকের ভিতর

  1. ভবতোষ চেঁচিয়ে উঠেছিল—

(A) হরিদার বাঘ সাজা দেখে

(B) জগদীশবাবুর টাকার পরিমাণ শুনে

(C) বকশিশের কথা শুনে

(D) হরিদার টাকা ত্যাগ করার কথায়

Ans: (C) বকশিশের কথা শুনে

  1. ‘ ঘুষ নিয়ে তারপর মাস্টারের অনুরোধে রক্ষা করেছিলেন সেই নকল – পুলিশ হরিদা’— ঘুষের পরিমাণ কত ?

(A) চার আনা

(B) আট আনা

(C) আট টাকা

(D) পঁচিশ টাকা

Ans: (B) আট আনা;

  1. বিরাগীর চোখ থেকে ঝরে পড়েছিল –

(A) ক্ষমা

(B) অশ্রু

(C) জ্যোৎস্না

(D) ক্রোধ

Ans: (C) জ্যোৎস্না

 

==============================================================

বহুরূপী(গল্প) থেকে আরোও প্রশ্ন ও উত্তর দেখু:PART-2

বহুরূপী গল্প থেকে সম্পূর্ণ প্রশ্ন উত্তর আলোচনা-PART-3

=============================================================

MCQ প্রশ্ন ও উত্তর | বহুরূপী (গল্প) সুবোধ ঘোষ – মাধ্যমিক বাংলা সাজেশন | Madhyamik Bengali Suggestion :

  1. হরিদার মতে সব তীর্থ—(A) মানুষের বুকের ভিতর (B) গভীর অরণ্যে(C) শূন্য আকাশে (D) হিমালয়ের চূড়ায়

Answer: (A) মানুষের বুকের ভিতর

  1. ভবতোষ চেঁচিয়ে উঠেছিল—(A) হরিদার বাঘ সাজা দেখে (B) জগদীশবাবুর টাকার পরিমাণ শুনে (C) বকশিশের কথা শুনে (D) হরিদার টাকা ত্যাগ করার কথায়

Answer: (C) বকশিশের কথা শুনে

  1. হরিদা পুলিশ সেজে দাঁড়িয়েছিলেন— (A) লিচু বাগানে (B) দালানে (C) বাস স্ট্যান্ডে

Answer: (A) লিচু বাগানে

  1. লিচু বাগানে নকল পুলিশ স্কুলের যে ক – টি ছেলেকে ধরেছিলেন , তার সংখ্যা হল – (A) পাঁচ (B) চার (C) আট(D) ছয়

Answer: (B) চার

  1. নকল পুলিশকে ঘুষ দিয়েছিলেন— (A) জগদীশবাবু(B) ড্রাইভার কাশীনাথ (C) হরিদা (D) স্কুলের মাস্টারমশাই

Answer: (D) স্কুলের মাস্টারমশাই

  1. জগদীশবাবু কেমন স্বভাবের মানুষ ছিলেন ? (A) উদার (B) কৃপণ(C) কপট(D) বিকৃত

Answer: (B) কৃপণ

  1. বড়ো চমৎকার ছিল কোন সময়ের চেহারা ? (A) রাতের(B) সকালের(C) সন্ধ্যার(D) ভোরের

Answer: (C) সন্ধ্যার

  1. বিরাগীরুপী হরিদার গায়ে ছিল কেবলমাত্র একটি— (A) জামা (B) পাঞ্জাবি (C) শাল(D) উত্তরীয়

Answer: (D) উত্তরীয়

  1. বিরাগীর ঝোলার ভিতর যে – বইটি ছিল , সেটি হল—  (A) গীতা (B) কোরান(C) মহাভারত (D) উপনিষদ

Answer: (A) গীতা

  1. জগদীশবাবুর সম্পত্তির পরিমাণ ছিল— (A) বারো লক্ষ টাকার (B) কুড়ি লক্ষ টাকার (C) আঠারো লক্ষ টাকার(D) এগারো লক্ষ টাকার

Answer: (D) এগারো লক্ষ টাকার

  1. রাগ হল এক ধরনের—(A) অনুভূতি (B) প্রবৃত্তি (C) রিপু (D) আচরণ

Answer: (C) রিপু

  1. লেখকের কানের কাছে ফিশফিশ করে যে – বলেছিল — ‘ না না , হরিদা নয় । হতেই পারে না । ‘ তার নাম হল – (A) ভবতোষ (B) জগদীশ (C) সুবোধ(D) অনাদি

Answer: (A) ভবতোষ

  1. জগদীশবাবু বিরাগীজিকে প্রণামী দিয়েছিলেন— (A) পঞ্চাশ টাকা (B) পঁচিশ টাকা (C) একশো টাকা (D) দেড়শো টাকা

Answer: (C) একশো টাকা

  1. বিরাগী আসলে ছিলেন -(A) হরিদা (B) জগদীশবাবু (C) সন্ন্যাসী (D) পাগল

Answer: (A) হরিদা

  1. ভবতোষ ভেবেছিল জগদীশবাবু হরিদাকে বকশিশ হিসেবে দেবেন -(A) আট আনা বা দশ আনা (B) দশ আনা বা বারো আনা (C) ছ – আনা বা আট আনা (D) পাঁচ আনা

Answer: (A) আট আনা বা দশ আনা

  1. সপ্তাহে হরিদা বহুরূপী সেজে বাইরে যান— (A) একদিন (B) দু – দিন (C) চার দিন (D) পাঁচ দিন

Answer: (A) একদিন

  1. সন্ন্যাসী সারাবছর খেতেন— (A) একটি বেল(B) একটি আমলকী (C) একটি বহেড়া (D) একটি হরীতকী

Answer: (D) একটি হরীতকী

  1. ‘ বাসের যাত্রীরা কেউ হাসে , কেউ বা বেশ বিরক্ত হয় কেউ আবার বেশ বিস্মিত ।’— বাসযাত্রীদের এমন প্রতিক্রিয়ার কারণ – (A) বাসের ড্রাইভার কাশীনাথ বহুরূপী হরিদাকে ধমক দিয়েছে (B) বহুরূপী হরিদার পাগলের সাজটা চমৎকার (C) হরিদা আজ একজন বাউল সেজে এসেছেন (D) কাপালিক সেজে এলেও হরিদা কোনো পয়সা নেন না

Answer: (B) বহুরূপী হরিদার পাগলের সাজটা চমৎকার

  1. ‘ সে ভয়ানক দুর্লভ জিনিস ‘ — দুর্লভ জিনিসটি হল— (A) সন্ন্যাসীর আশীর্বাদ (B) সন্ন্যাসীর সান্নিধ্য (C) সন্ন্যাসীর উপদেশ (D) সন্ন্যাসীর পদধূলি

Answer: (D) সন্ন্যাসীর পদধূলি

  1. হরিদার শীর্ণ শরীরটা দেখে মনে হয়েছিল -(A) মহাপুরুষ(B) অশরীরী (C) অতিমানব (D) বহুরূপী

Answer: (B) অশরীরী

  1. ‘ ঘুষ নিয়ে তারপর মাস্টারের অনুরোধে রক্ষা করেছিলেন সেই নকল – পুলিশ হরিদা’— ঘুষের পরিমাণ কত ? (A) চার আনা (B) আট আনা (C) আট টাকা (D) পঁচিশ টাকা

Answer: (B) আট আনা;

  1. বিরাগীর চোখ থেকে ঝরে পড়েছিল -(A) ক্ষমা (B) অশ্রু (C) জ্যোৎস্না (D) ক্রোধ

Answer: (C) জ্যোৎস্না

  1. সন্ন্যাসী জগদীশবাবুর বাড়িতে ছিলেন – (A) সাত দিন (B) সাত মাস (C) সাত সপ্তাহ (D) সাত বছর

Answer: (A) সাত দিন

  1. সন্ন্যাসীকে বিদায় দেওয়ার সময় জগদীশবাবু তাকে জোর করে দিয়েছিলেন—(A) একটা দশ টাকার নোট (B) একটা পঞ্চাশ টাকার নোট (C) একটা কুড়ি টাকার নোট (D) একটা একশো টাকার নোট

Answer: (D) একটা একশো টাকার নোট

  1. হরিদার ঘরে আড্ডা দিত— (A) পাঁচ জন(B) চার জন (C) তিন জন (D) ছ – জন

Answer: (B) চার জন

  1. লেখক ও তার বন্ধুরা কোন কোন সময়ে আড্ডা দিতেন ? (A) রাত্রে (B) সকাল – দুপুরে(C) রাতদিন(D) সকালসন্ধে

Answer: (D) সকালসন্ধে

  1. হরিদার কাছে যা অসম্ভব , তা হল – (A) রোজই ভাত রান্না করা(B) রোজ চা তৈরি করা(C) রোজ বহুরূপী সাজা (D) রোজই একটা চাকরির কাজ করে যাওয়া

Answer: (D) রোজই একটা চাকরির কাজ করে যাওয়া

  1. হরিদার ছোট্ট ঘরটির অবস্থান – (A) শহরের সবচেয়ে সরু গলির ভিতরে (B) চকের বাস স্ট্যান্ডের কাছে (C) দয়ালবাবুর লিচু বাগানে (D) জগদীশবাবুর বাড়ির বাগানে

Answer: (A) শহরের সবচেয়ে সরু গলির ভিতরে

  1. হরিদার জীবনজুড়ে ছিল – (A) ভয়ানক আপত্তি (B) বিচিত্র ছদ্মবেশ (C) করুণ আবেদন (D) নাটকীয় বৈচিত্র্য

Answer: (D) নাটকীয় বৈচিত্র্য

  1. মাঝে মাঝে সত্যিই হরিদা যা করতেন , তা হল – (A) রোজগার (B) বিরাগ (C) উপোস (D) সন্দেহ

Answer: (C) উপোস

  1. যারা বহুরুপীর সাজে হরিদাকে চিনতে পারে তারা বকশিশ দেয় -(A) এক আনা (B) এক পয়সা (C) এক টাকা (D) এক আনা দু – আনা

Answer: (D) এক আনা দু – আনা

  1. দুপুরবেলায় আতঙ্কের হল্লা বেজে উঠেছিল- (A) শহরের সবচেয়ে সরু গলিটিতে (B) জগদীশবাবুর বাড়ির বাগানে (C) দয়ালবাবুর লিচু বাগানে (D) চাকের বাস স্ট্যান্ডে

Answer: (D) চাকের বাস স্ট্যান্ডে

  1. চাকর বাস স্ট্যান্ডে আতঙ্কের হল্লা বেজে ওঠার কারণ ছিল -(A) একজন বাইজি(B) একটি উন্মাদ পাগল (C) একজন সন্ন্যাসী (D) একজন কাপালিক

Answer: (B) একটি উন্মাদ পাগল

  1. পাগলটা যা হাতে তুলে নিয়ে বাসের যাত্রীদের দিকে তেড়ে যাচ্ছিল , তা হল -(A) একটা পাথর (B) একটা থান ইট                (C) একটা লাঠি (D) একটা ঢিল

Answer: (B) একটা থান ইট

  1. বাসের ড্রাইভারের নাম ছিল – (A) ভবতোষ (B) অনাদি (C) কাশীনাথ (D) জগদীশ

Answer: (C) কাশীনাথ

  1. ‘ খুব হয়েছে হরি , এইবার সরে পড়ো । অন্যদিকে যাও ।’ কথা বলেছে – (A) ভবতোষ (B) অনাদি (C) কাশীনাথ (D) জনৈক বাসযাত্রী

Answer: (C) কাশীনাথ

  1. প্রায় নাচতে নাচতে চলে যাচ্ছিল— (A) একজন কাপালিক (B) একজন সন্ন্যাসী (C) একজন বাইজি (D) একটি পাগল

Answer: (C) একজন বাইজি

  1. শহরে যারা নতুন এসেছে , তারা -(A) বেশ বিরক্ত হয় (B) ভয়ে কেঁদে ফেলে(C) দু – চোখ বড়ো করে তাকিয়ে থাকে (D) হতাশ স্বরে প্রশ্ন করে ওঠে

Answer: (C) দু – চোখ বড়ো করে তাকিয়ে থাকে

  1. বাইজির ছদ্মবেশে হরিদার রোজগার হয়েছিল— (A) আট টাকা দশ আনা (B) আট টাকা তিন আনা (C) দশ টাকা আট আনা (D) তিন টাকা আট আনা

Answer: (A) আট টাকা দশ আনা

  1. দয়ালবাবুর লিচু বাগানের ভিতরে হরিদা দাঁড়িয়েছিল— (A) ফিরিঙ্গি কেরামিন সাহেব সেজে (B) পুলিশ সেজে (C) স্কুলের মাস্টারমশাই সেজে (D) বাউল সেজে

Answer: (B) পুলিশ সেজে

  1. সন্ন্যাসী থাকেন – (A) হিমালয়ের চূড়াতে (B) মরুভূমিতে(C) হিমালয়ের গুহাতে(D) বনভূমিতে
  2. জগদীশবাবুর বাড়িতে আগত সন্ন্যাসীর বয়স – (A) একশো বছর (B) হাজার বছরের বেশি (C) একশো বছরের বেশি (D) হাজার বছর

Answer: (B) হাজার বছরের বেশি

  1. জগদীশবাবু একজোড়া কাঠের খড়মে যা লাগিয়ে সন্ন্যাসীর পায়ের কাছে ধরলেন , তা হল -(A) সোনার বোল (B) সোনার মল (C) সোনার আংটি (D) সোনার ঘুঙুর

Answer: (A) সোনার বোল

 

 

 

==============================================================

বহুরূপী(গল্প) থেকে আরোও প্রশ্ন ও উত্তর দেখুন :PART-2

বহুরূপী গল্প থেকে সম্পূর্ণ প্রশ্ন উত্তর আলোচনা-PART-3

=============================================================

(১) বহু বিকল্প ভিত্তিক প্রশ্নগুলির উত্তর দাও :

১.১ “শুনেছেন, হরিদা, কি কান্ড হয়েছে?” – কাণ্ডটি কোথায় হয়েছিল?

(ক) দয়ালবাবুর লিচু বাগানে

(খ) কথকের আড্ডার ঘরে

(গ) জগদীশবাবুর বাড়িতে

(ঘ) চকের বাসস্ট্যান্ডে

উত্তর : (গ) জগদীশ বাবুর বাড়িতে

১.২ সন্ন্যাসী সারা বছরে শুধু একটি –

(ক) আপেল খান

(খ) ছোলা খান

(গ) সুপারি খান

(ঘ) হরিতকী খান

উত্তর : (ঘ) হরিতকী খান

১.৩ “আক্ষেপ করেন হরিদা।” – এটা কিসে আক্ষেপ করেন?

(ক) উপোস করার জন্য

(খ) বহুরূপী সাজতে না পারার জন্য

(গ) সন্ন্যাসীর পায়ের ধুলো নিতে না পারার জন্য

(ঘ) টাকা রোজগার করতে না পারার জন্য

উত্তর : (গ) সন্ন্যাসীর পায়ের ধুলো নিতে না পারার জন্য

১.৪ জগদীশবাবু সন্ন্যাসীর ঝোলাই কত টাকা ফেলে দিয়েছিলেন?

(ক) আট টাকা দশ আনা

(খ) এগারো টাকা

(গ) একশো টাকা

(ঘ) একশো পঞ্চাশ টাকা

উত্তর : (গ) একশো টাকা

১.৫ হরিদা পেশায় ছিলেন –

(ক) দারোয়ান

(খ) বহুরূপী

(গ) অভিনেতা

(ঘ) পুলিশ

উত্তর : (খ) বহুরূপী

১.৬ “খুব হয়েছে হরি, এইবার সরে পড়ো। অন্যদিকে যাও।” –

(ক) কাশীনাথ

(খ) অনাদি

(গ) জগদীশবাবু

(ঘ) ভবতোষ

উত্তর : (ক) কাশীনাথ

১.৭ “সেদিন হরিদার রোজগার বন্ধ হয়নি।” – সেদিন হরিদা কি সেজে রোজগার করেছিল?

(ক) পাগলের ছদ্মবেশে

(খ) বাইজির ছদ্মবেশে

(গ) বিরাগীর ছদ্মবেশে

(ঘ) পুলিশের ছদ্মবেশে

উত্তর : (খ) বাইজির ছদ্মবেশে

১.৮ বাইজি সেজে হরিদার রোজগার হয়েছিল –

(ক) আট টাকা

(খ) আট টাকা চার আনা

(গ) আট টাকা আট আনা

(ঘ) আট টাকা দশ আনা

উত্তর : (ঘ) আট টাকা দশ আনা

১.৯ নকল পুলিশ সেজে হরিদা কত টাকা ঘুষ নিয়েছিল –

(ক) আট আনা

(খ) দশ আনা

(গ) বারো আনা

(ঘ) এক টাকা

উত্তর : (ক) আট আনা

১.১০ কার বাড়িতে খেলা দেখাবার জন্য হরিদা হঠাৎ উৎসাহিত হন?

(ক) কাশীনাথ বাবুর বাড়িতে

(খ) জগদীশ বাবুর বাড়িতে

(গ) ভবতোষ বাবুর বাড়িতে

(ঘ) অনাদি বাবুর বাড়িতে

উত্তর : (খ) জগদীশ বাবুর বাড়িতে

১.১১ ছদ্মবেশে বিরাগী আসলে ছিলেন –

(ক) জগদীশবাবু

(খ) কাশীনাথ বাবু

(গ) দয়ালবাবু

(ঘ) হরিদা

উত্তর : (ঘ) হরিদা

১.১২ হরিদা আবার জগদীশবাবুর বাড়িতে যেতে দিয়েছিলেন কেন?

(ক) বকশিশ নেওয়ার জন্য

(খ) চাঁদা তোলার জন্য

(গ) আড্ডা মারার জন্য

(ঘ) ফেলে আসা টাকার থলি আনার জন্য

উত্তর : (ক) বকশিশ নেওয়ার জন্য

==============================================================

বহুরূপী(গল্প) থেকে আরোও প্রশ্ন ও উত্তর দেখুন :PART-2

বহুরূপী গল্প থেকে সম্পূর্ণ প্রশ্ন উত্তর আলোচনা-PART-3

=============================================================

অতিসংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর | বহুরূপী (গল্প) সুবোধ ঘোষ – মাধ্যমিক বাংলা প্রশ্ন ও উত্তর  

  1. ‘ হরিদার কাছে আমরাই গল্প করে বললাম , ‘ আমরা ‘ বলতে এখানে কাদের বোঝানো হয়েছে ? 

Ans: উদ্ধৃতিটি সুবোধ ঘোষের ‘ বহুরূপী ‘ গল্পের অংশ । এখানে ‘ আমরা ‘ বলতে স্বয়ং গল্পকার ও তাঁর বন্ধু ভবতোষ , অনাদি ছাড়াও অন্যদের বোঝানো হয়েছে ।

  1. হরিদার কাছে লেখক ও তাঁর বন্ধুরা কী গল্প করেছিলেন ? 

Ans: হিমালয়ের এক উঁচুদরের সন্ন্যাসী জগদীশবাবুর বাড়িতে সাত দিন ছিলেন । তাঁর বয়স হাজার বছরেরও বেশি । তিনি বছরে একটি মাত্র হরীতকী খান । সেই গল্পই লেখক ও তাঁর বন্ধুরা করেছিলেন ।

  1. ‘ আক্ষেপ করেন হরিদা – হরিদার এই আক্ষেপের কারণ কী ছিল ? 

Ans: হরিদা জগদীশবাবুর বাড়িতে আসা সন্ন্যাসীর মাহাত্ম্যের কথা শুনে তাঁর পায়ের ধুলো নিতে চান । কিন্তু সন্ন্যাসী চলে যাওয়ায় হরিদার সেই ইচ্ছা আক্ষেপে পরিণত হয় ।

  1. ‘ বাঃ , এ তো বেশ মজার ব্যাপার ! ‘ — মজার ব্যাপারটি কী

Ans: মজার ব্যাপারটি হল সর্বত্যাগী সন্ন্যাসীর পায়ের ধুলো দুর্লভ হলেও কাঠের খড়মে সোনার বোল লাগিয়ে তাঁর পায়ের কাছে ধরতেই তিনি পা বাড়িয়ে দিলেন । সেই ফাঁকে জগদীশবাবু সন্ন্যাসীর পায়ের ধুলো নিয়েছিলেন ।

  1. ‘ গল্প শুনে খুব গম্ভীর হয়ে গেলেন হরিদা । – হরিদার গম্ভীর হওয়ার কারণ কী ?

Ans: সর্বস্বত্যাগী সন্ন্যাসী সোনার বোল লাগানো কাঠের খড়ম ও একশো এক টাকা পেয়ে তৃপ্তির হাসি হাসেন । এ কথা শুনে হরিদার বিশ্বাস । টলে যায় । তিনি গম্ভীর হয়ে যান ।

  1. ‘ কিন্তু ওই ধরনের কাজ হরিদার জীবনের পছন্দই নয় । — কোন ধরনের কাজের কথা বলা হয়েছে ?

Ans: অভাবী হরিদা ইচ্ছে করলেই কোনো অফিসে বা দোকানে একটা কাজ পেতে পারতেন । কিন্তু ঘড়ি ধরে নিয়ম করে রোজ একটা চাকরি করা , হরিদার না – পসন্দ ছিল ।

  1. চকের বাস স্ট্যান্ডে বহুরূপী হরিদা কী রূপে হাজির হয় ? 

Ans: কটকটে লাল চোখ , মুখ থেকে লালা ঝরছে , কোমরে ছেঁড়া কম্বল , গলায় টিনের কৌটোর মালা ঝোলানো এক পাগলের ছদ্মবেশে চকের বাস স্ট্যান্ডে হাজির হন হরিদা ।

  1. ‘ খুব হয়েছে হরি , এইবার সরে পড়ো । অন্যদিকে যাও / – কে , কেন কথাটি বলেছেন ? 

Ans: একদিন দুপুরে চাকের বাস স্ট্যান্ডে হরিদা পাগলের ছদ্মবেশে হাতে থান ইঁট নিয়ে বাসে বসা যাত্রীদের দিকে তেড়ে যাচ্ছিলেন । সেই প্রেক্ষিতেই বাস ড্রাইভার কাশীনাথের এই উক্তি ।

  1. কিন্তু দোকানদার হেসে ফেলে – হরির কাণ্ড ! -হরির কোন্ কাণ্ড দেখে দোকানদার হেসে ফেলেছিলেন ? 

Ans: এক সন্ধ্যায় বাইজির ছদ্মবেশে হরি শহরের পথে ঘুঙুরের মিষ্টি শব্দ করে হেঁটে চলে । নতুনরা অবাক হলেও দোকানদার হরিকে চিনতে পেরে হেসে ফেলে ।

  1. ‘ এবারের মতো মাপ করে দিন ওদের – এ কথা কে , কাকে বলেছিলেন ?

Ans: সুবোধ ঘোষের ‘ বহুরূপী ‘ গল্পে দয়ালবাবুর লিচু বাগানে যখন পুলিশের ছদ্মবেশে হরিদা স্কুলের চারটে ছেলেকে ধরেছিলেন , তখন স্কুলের মাস্টারমশাই এ কথা বলেছিলেন ।

  1. ‘বা , সত্যি , খুব চমৎকার পুলিশ সেজেছিল হরি ! —কে , কখন এ কথা বলেছিলেন ? 

Ans: দয়ালবাবুর লিচু বাগানে স্কুলের মাস্টারমশাই পুলিশের কাছে ক্ষমা চেয়ে আট আনা ঘুষ দিয়ে ছেলেদের ছাড়িয়ে আনার পরে পুলিশের আসল পরিচয় জানতে পেরে তখনই এই প্রশংসাসূচক মন্তব্য করেন ।

  1. জগদীশবাবুর বাড়িতে খেলা দেখাবার জন্য হরিদার এত উৎসাহ জেগে উঠেছিল কেন ?

Ans: হরিদার সারাদিন নানান ছদ্মবেশে ঘুরে বেড়িয়েও দু – তিন টাকার বেশি রোজগার হয় না । তাই মোটা টাকা আদায়ের জন্য হরিদার মধ্যে এই উৎসাহ জেগেছিল ।

  1. ‘ আমাদের সন্দেহ মিথ্যে নয় ।’— কোন্ সন্দেহ মিথ্যে নয় বলে মনে করেছেন বক্তা ?

Ans: সন্ন্যাসীর খবর শুনে হরিদা গম্ভীর হয়ে যাওয়ায় কথক ও তাঁর বন্ধুরা বুঝেছিলেন যে , হরিদার মাথায় কোনো মতলব এসেছে । এই প্রসঙ্গেই কথকের এই উক্তিটির অবতারণা ।

  1. ‘ বড়ো চমৎকার আজকে এই সন্ধ্যার চেহারা । সন্ধ্যার চেহারাটির বর্ণনা দাও ।

Ans: সেই সন্ধ্যায় চাঁদের আলোর একটা স্নিগ্ধ ও শান্ত উজ্জ্বলতা চারদিকে ফুটে উঠেছিল । ফুরফুর করে বাতাস বইছিল । জগদীশবাবুর বাগানের গাছের পাতাগুলো ঝিরঝির শব্দ করছিল ।

  1. চমকে উঠলেন জগদীশবাবু / – জগদীশবাবুর চমকে ওঠার কারণ কী ?

Ans: আদুড় গায়ে , সাদা উত্তরীয় জড়ানো , ছোটো সাদা থান , মাথায় সাদা চুল , পায়ে ধুলো মাখা বিরাগীকে দেখে জগদীশবাবু চমকে উঠলেন ।

  1. ‘ আপনি কি ভগবানের চেয়েও বড়ো ? —কথাটি বন্ধা কেন বলেছেন ।

Ans: বিরাগীর ছদ্মবেশে হরিদা জগদীশবাবুর বাড়িতে এলে জগদীশবাবু বিরাগীকে দূর থেকে অভ্যর্থনা জানান । এর পরিপ্রেক্ষিতেই বিরাগী উত্ত মন্তব্যটি করেছেন ।

  1. ‘ আমার অপরাধ হয়েছে । কোন অপরাধের কথা বলা হয়েছে ?

Ans: বিরাগীর ছদ্মবেশে হরিদাকে দেখে মুগ্ধ জগদীশবাবু নেমে এসে বিরাগীকে অভ্যর্থনা না জানানোয় বিরাগী অসন্তুষ্ট হন । সেই অসন্তোষকে শান্ত করতেই জগদীশবাবুর এমন উক্তি ।

  1. ‘ না না , হরিদা নয় । হতেই পারে না । বস্তুা ও তার সঙ্গীদের এই বিশ্বাসের কারণ কী ? 

Ans: বিরাগীর গলার স্বর , মুখের ভাষা ও চোখের দৃষ্টির সঙ্গে হরিদার কোনো মিল না থাকায় বিরাগীকে বক্তা ও তার বন্ধুদের হরিদা বলে মনে হয়নি ।

  1. পরমসুখ বলতে বিরাগী কী বুঝিয়েছেন ?

Ans: ‘ বহুরূপী ‘ গল্পে বিরাগীর মতানুসারে , সব সুখের বন্ধন থেকে মুক্ত হয়ে অনন্তের সাধনায় আত্মনিয়োগ করতে পারলেই ‘ পরমসুখ ’ লাভ করা যায় ।

  1. জগদীশবাবুকে বিরাগী কী উপদেশ দেন ?

Ans: বিরাগী জগদীশবাবুকে বলেন , ধন – জন – যৌবন আসলে মোহময় বঞ্চনা । মন – প্রাণ দিয়ে একজনের আপন হতে চেষ্টা করলে সৃষ্টির সব ঐশ্বর্যই লাভ করা যায় ।

  1. তীর্থযাত্রা সম্পর্কে বিরাগীর অভিমত কী ছিল ?

Ans: জগদীশবাবু তীর্থভ্রমণের জন্য বিরাগীকে একশো টাকা দিতে চাইলে বিরাগী বলেন , মানুষের অন্তরেই ঈশ্বরের বাস , সকল তীর্থের মিলনস্থল । তাই আলাদাভাবে তীর্থদর্শনের প্রয়োজনীয়তা নেই ।

  1. ‘ চমকে ওঠে ভবতোষ । — ভবতোষের চমকে ওঠার কারণ কী ?

Ans: হরিদার বাড়িতে ঢুকে তার পোশাক ইত্যাদি দেখে ভবতোষরা বুঝতে পারল যে , হরিদাই আসলে বিরাগী । তখন তারা চমকে ওঠে ।

  1. ‘ তাতে যে আমার ঢং নষ্ট হয়ে যাবে । -বক্তা কোন্ প্রসঙ্গে উক্তিটি করেছেন ?

Ans: এক্ষেত্রে বক্তা হলেন হরিদা । জগদীশবাবু বিরাগী – বেশী হরিদাকে প্রণামী দিতে গেলে তিনি তা নেন না । কারণ সে বিরাগীর ছদ্মবেশে টাকা নিলে তাতে অভিনয়ের ঢং নষ্ট হয় ।

  1. ‘ অদৃষ্ট কখনও হরিদার এই ভুল ক্ষমা করবে না । হরিদার কোন ভুলের কথা এখানে বলা হয়েছে ?

Ans: জগদীশবাবুর দেওয়া প্রণামীর টাকা অবলীলায় ফেরত দিয়ে দেন বিরাগী – রূপী হরিদা । অভাবের সংসারে হঠাৎ পাওয়া এই টাকা ফেরত দেওয়াকেই হরিদার ভুল বলা হয়েছে ।

  1. জগদীশবাবুর বাড়িতে সন্ন্যাসীটি কত দিন ছিলেন ?

Ans: সুবোধ ঘোষের ‘ বহুরূপী ‘ গল্প অনুসারে , উঁচু দরের সন্ন্যাসীটি জগদীশবাবুর বাড়িতে সাত দিন ছিলেন ।

  1. জগদীশবাবুর বাড়িতে আসা ‘ উঁচু দরের সন্ন্যাসী ‘ – টি কোথায় থাকেন ?

Ans: ‘ বহুরূপী ‘ গল্প অনুসারে জগদীশবাবুর বাড়িতে আসা উঁচু দরের সন্ন্যাসী ‘ টি হিমালয়ের গুহাতে থাকেন ।

  1. ‘ একটু পরেই বাসের ড্রাইভার কাশীনাথ ধমক দেয় । -কেন ধমক দিয়েছিল ?

Ans: সুবোধ ঘোষের ‘ বহুরূপী ‘ গল্পের হরিদা একদিন চকের বাস স্ট্যান্ডের কাছে পাগল সেজে , হাতে থান ইট তুলে নিয়ে যাত্রীদের দিকে তেড়ে যাচ্ছিলেন । তখন ভীত ও আতঙ্কিত যাত্রীরা চেঁচিয়ে ওঠায় বাসের ড্রাইভার কাশীনাথ তাঁকে থামতে বলে ধমক দিয়েছিল ।

  1. ‘ একটু পরেই বাসের ড্রাইভার কাশীনাথ ধর্মকে দেয় । – ধমক দিয়ে কী বলেছিল ?

Ans: ‘ বহুরূপী ‘ হরিদার পাগলামি দেখে বাসযাত্রীরা ভীত ও আতঙ্কিত হয়ে পড়ায় ড্রাইভার কাশীনাথ বলেছিল , ‘ খুব হয়েছে হরি , এই বার সরে পড়ো । অন্যদিকে যাও ।

  1. ‘ বহুরূপী ‘ গল্প অনুসারে লেখা সারাবছর সন্ন্যাসী কী খান ?

Ans: সুবোধ ঘোষের ‘ বহুরুপী ’ গল্পের জগদীশবাবুর বাড়িতে আসা সন্ন্যাসী সারাবছরে শুধু একটি হরীতকী খান , তা ছাড়া আর কিছুই খান না ।

  1. নইলে আমি শান্তি পাব না- বক্তা কী না – হলে শান্তি পাবেন না ।

Ans: সুবোধ ঘোষের ‘ বহুরুপী ‘ গল্পে জগদীশবাবু বিরাগীর বেশধারী হরিদাকে কিছু উপদেশ শুনিয়ে যাওয়ার অনুরোধ করে বলেছিলেন যে , না হলে তিনি শান্তি পাবেন না ।

  1. ‘ অনাদি বলে— এটা কী কাণ্ড করলেন হরিদা ? ‘ এখানে কোন কাণ্ডের কথা বলা হয়েছে ।

Ans: ‘ বহুরূপী ‘ গল্প অনুসারে বিরাগীর বেশধারী হরিদাকে দেখে মুগ্ধ হয়ে জগদীশবাবু তাকে খাঁটি সন্ন্যাসী ভেবে একশো এক টাকা দিতে চাইলে বিরাগী – রূপী হরিদা তা হেলায় ফেলে দিয়ে চলে আসেন । এখানে সেই কাণ্ডের কথাই বলা হয়েছে ।

  1. কিন্তু সেটাই যে হরিদার জীবনের পেশা / – হরিদার পেশা কী ছিল ? 

Ans: সুবোধ ঘোষের ‘ বহুরূপী ‘ গল্পের নায়ক হরিদা মাঝে মাঝে বহুরূপী সেজে সামান্য রোজগার করে ভাতের হাঁড়ির দাবি মিটিয়ে দিতে চেষ্টা করেন । এটাই তার পেশা ।

  1. ‘ চমৎকার পাগল সাজতে পেরেছে তো লোকটা —’লোকটা কে ?

Ans: প্রশ্নে উদ্ধৃত অংশে ‘ লোকটা ‘ বলতে সুবোধ ঘোষের ‘ বহুরূপী ‘ গল্পের নায়ক হরিদাকে বোঝানো হয়েছে ।

  1. জগদীশবাবু কীভাবে সন্ন্যাসীর পায়ের ধুলো নিয়েছিলেন ?

Ans: সুবোধ ঘোষের ‘ বহুরূপী ‘ গল্প অনুসারে জগদীশবাবু একজোড়া কাঠের খড়মে সোনার বোল লাগিয়ে সন্ন্যাসীর পায়ের কাছে ধরলেন । তখন সন্ন্যাসী নতুন খড়ম পরার জন্য বাধ্য হয়ে পা এগিয়ে দিয়ে তা পরলেন ; আর সেই ফাঁকে জগদীশবাবু পায়ের ধুলো নিয়ে নিলেন ।

  1. পুলিশ সেজে হরিদা কী করেছিল ?

Ans: ‘ বহুরূপী ‘ গল্প অনুসারে হরিদা একবার পুলিশ সেজে দয়ালবাবুর লিচু বাগানের ভিতরে স্কুলের চারটে ছেলেকে ধরেছিলেন । তারপর স্কুলের মাস্টারমশাই এসে ক্ষমা চেয়ে আট আনা ঘুষ দেওয়ায় নকল পুলিশ হরিদা তাদের ছেড়ে দেন ।

  1. ‘ হরিদার জীবন এইরকম বহু রূপের খেলা দেখিয়েই একরকম চলে যাচ্ছে ।’— কীরকম খেলা দেখিয়ে হরিদার জীবন চলে যাচ্ছে ? 

Ans: হরিদা পেশায় ছিলেন বহুরূপী । তিনি কখনও পাগল সাজতেন , কখনও বাউল , কখনও কাপালিক , আর কখনও – বা বোঁচকা কাঁধে কাবুলিওয়ালা । এইরকম বহুরূপীর খেলা দেখিয়ে হরিদার জীবন চলে যাচ্ছে ।

  1. ‘ সে ভয়ানক দুর্লভ জিনিস— সেই বস্তুটিকে দুর্লভ বলার কারণ কী ? 

Ans: সুবোধ ঘোষের ‘ বহুরূপী ‘ গল্পের সন্ন্যাসী , জগদীশবাবু ছাড়া আর কাউকেই পায়ের ধুলো নিতে দেননি । তাই সেই বস্তুটিকে দুর্লভ বলা হয়েছে ।

  1. ‘ কী অদ্ভুত কথা বললেন’— অদ্ভুত কথাটি কী ?

Ans: ‘ বহুরূপী ‘ গল্প অনুসারে বিরাগী – রূপী হরিদা , জগদীশবাবুর কাছে টাকা না – নেওয়ার প্রসঙ্গে বলেছিলেন যে , সন্ন্যাসী সেজে টাকা নিলে তার ঢং নষ্ট হয়ে যাবে । এখানে এ কথাটিকেই অদ্ভুত বলা হয়েছে ।

  1. হরিদার জীবনের নাটকীয় বৈচিত্র্যটি কী ?

Ans: সুবোধ ঘোষের ‘ বহুরুপী ‘ গল্পের নায়ক হরিদার পেশাই হল । বহুরূপী সেজে সামান্য রোজগারকে সম্বল করে অম্লের সংস্থান করা । এটাই তাঁর জীবনের নাটকীয় বৈচিত্র্য ।

  1. হরিদা কোথায় থাকেন ?

Ans: ‘ বহুরূপী ‘ গল্পের প্রধান চরিত্র হরিদা শহরের সবচেয়ে সবু গলির ভিতরে একটি ছোট্ট ঘরে থাকেন ।

  1. ‘ আমি বিরাগী , রাগ নামে কোনো রিপু আমার নেই – বক্তার এ কথা বলার কারণ কী ?

Ans: এক প্রকৃত সন্ন্যাসী আসলে সমস্ত জৈবিক প্রবৃত্তিকে জয় করে । তখন সে কাম – ক্রোধ – লোভ ইত্যাদি ষড়রিপুর আর বশবর্তী থাকে না । বিরাগী রূপী হরিদা সে কথাই বলেছেন ।

  1. ‘ সেদিকে ভূলেও একবার তাকালেন না বিরাগী – কোন দিকে না তাকাবার কথা বলা হয়েছে ?

Ans: জগদীশবাবুর দেওয়া একশো এক টাকার থলিটি সিঁড়ির ওপরেই পড়ে রইল । বিরাগী – রূপী হরিদা সেদিকে ভুলেও আর একবার ; ফিরে তাকালেন না ।

  1. ‘ বহুরূপী ‘ গল্পের হরিদা কোন সাজ সেজে সবচেয়ে বেশি আয় করেছিলেন ?

Ans: ‘ বহুরূপী ‘ গল্পের প্রধান চরিত্র হরিদা রূপসি বাইজি সেজে সবচেয়ে বেশি ; মোট আট টাকা দশ আনা রোজগার করেছিলেন ।

  1. বিরাগীর উদ্দেশ্যে জগদীশবাবুর প্রাণের অনুরোধ কী ছিল ?

Ans: ‘ বহুরূপী ‘ গল্প অনুসারে জগদীশবাবু , বিরাগী – রূপী হরিদার পায়ের কাছে একশো এক টাকার থলিটি রেখে , তা গ্রহণ করার অনুরোধ জানিয়েছিলেন ।

  1. হরিদার কয়েকটি বহুরূপী রূপের উল্লেখ করো ।

Ans: ‘ বহুরূপী ‘ গল্পের প্রধান চরিত্র হরিদার কয়েকটি বহুরুপী রূপ হল— পাগল , রূপসি বাইজি , বাউল , কাপালিক , কাবুলিওয়ালা , ফিরিঙ্গি কেরামিন সাহেব , পুলিশ ও বিরাগী ।

  1. সত্যিই যে বিশ্বাস করতে পারছি না’— কী বিশ্বাস করতে পারছে না ?

Ans: ‘ বহুরূপী ‘ গল্প অনুসারে জগদীশবাবুর বাড়িতে বিরাগী – রুপী হরিদাকে দেখে লেখকের সত্যিই বিশ্বাস হয় না যে , এই ব্যক্তিটি আসলে হরিদা ।

  1. জগদীশবাবু তীর্থ ভ্রমণের জন্য কত টাকা বিরাগীকে দিতে চেয়েছিলেন ?

Ans: সুবোধ ঘোষের ‘ বহুরুপী ‘ গল্প অনুসারে জগদীশবাবু বিরাগী – রূপী হরিদাকে তীর্থ ভ্রমণের জন্য একশো এক টাকা দিতে চেয়েছিলেন ।

==============================================================

বহুরূপী(গল্প) থেকে আরোও প্রশ্ন ও উত্তর দেখুন :PART-2

বহুরূপী গল্প থেকে সম্পূর্ণ প্রশ্ন উত্তর আলোচনা-PART-3

=============================================================

অতিসংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর | বহুরূপী (গল্প) সুবোধ ঘোষ – মাধ্যমিক বাংলা সাজেশন | Madhyamik Bengali Suggestion :

  1. ‘ সত্যিই যে বিশ্বাস করতে পারছি না’— কী বিশ্বাস করতে পারছে না ?

Answer: ‘ বহুরূপী ‘ গল্প অনুসারে জগদীশবাবুর বাড়িতে বিরাগী – রুপী হরিদাকে দেখে লেখকের সত্যিই বিশ্বাস হয় না যে , এই ব্যক্তিটি আসলে হরিদা ।

  1. জগদীশবাবু তীর্থ ভ্রমণের জন্য কত টাকা বিরাগীকে দিতে চেয়েছিলেন ?

Answer: সুবোধ ঘোষের ‘ বহুরুপী ‘ গল্প অনুসারে জগদীশবাবু বিরাগী – রূপী হরিদাকে তীর্থ ভ্রমণের জন্য একশো এক টাকা দিতে চেয়েছিলেন ।

  1. ‘ অদৃষ্ট কখনও হরিদার এই ভুল ক্ষমা করবে না । হরিদার কোন ভুলের কথা এখানে বলা হয়েছে ?

Answer: জগদীশবাবুর দেওয়া প্রণামীর টাকা অবলীলায় ফেরত দিয়ে দেন বিরাগী – রূপী হরিদা । অভাবের সংসারে হঠাৎ পাওয়া এই টাকা ফেরত দেওয়াকেই হরিদার ভুল বলা হয়েছে ।

  1. জগদীশবাবুর বাড়িতে সন্ন্যাসীটি কত দিন ছিলেন ?

Answer: সুবোধ ঘোষের ‘ বহুরূপী ‘ গল্প অনুসারে , উঁচু দরের সন্ন্যাসীটি জগদীশবাবুর বাড়িতে সাত দিন ছিলেন ।

  1. জগদীশবাবুর বাড়িতে আসা ‘ উঁচু দরের সন্ন্যাসী ‘ – টি কোথায় থাকেন ?

Answer: ‘ বহুরূপী ‘ গল্প অনুসারে জগদীশবাবুর বাড়িতে আসা উঁচু দরের সন্ন্যাসী ‘ টি হিমালয়ের গুহাতে থাকেন ।

  1. ‘ একটু পরেই বাসের ড্রাইভার কাশীনাথ ধমক দেয় । -কেন ধমক দিয়েছিল ?

Answer: সুবোধ ঘোষের ‘ বহুরূপী ‘ গল্পের হরিদা একদিন চকের বাস স্ট্যান্ডের কাছে পাগল সেজে , হাতে থান ইট তুলে নিয়ে যাত্রীদের দিকে তেড়ে যাচ্ছিলেন । তখন ভীত ও আতঙ্কিত যাত্রীরা চেঁচিয়ে ওঠায় বাসের ড্রাইভার কাশীনাথ তাঁকে থামতে বলে ধমক দিয়েছিল ।

  1. ‘ একটু পরেই বাসের ড্রাইভার কাশীনাথ ধর্মকে দেয় । – ধমক দিয়ে কী বলেছিল ?

Answer: ‘ বহুরূপী ‘ হরিদার পাগলামি দেখে বাসযাত্রীরা ভীত ও আতঙ্কিত হয়ে পড়ায় ড্রাইভার কাশীনাথ বলেছিল , ‘ খুব হয়েছে হরি , এই বার সরে পড়ো । অন্যদিকে যাও ।

  1. ‘ বহুরূপী ‘ গল্প অনুসারে লেখা সারাবছর সন্ন্যাসী কী খান ?

Answer: সুবোধ ঘোষের ‘ বহুরুপী ’ গল্পের জগদীশবাবুর বাড়িতে আসা সন্ন্যাসী সারাবছরে শুধু একটি হরীতকী খান , তা ছাড়া আর কিছুই খান না ।

  1. নইলে আমি শান্তি পাব না- বক্তা কী না – হলে শান্তি পাবেন না ।

Answer: সুবোধ ঘোষের ‘ বহুরুপী ‘ গল্পে জগদীশবাবু বিরাগীর বেশধারী হরিদাকে কিছু উপদেশ শুনিয়ে যাওয়ার অনুরোধ করে বলেছিলেন যে , না হলে তিনি শান্তি পাবেন না ।

  1. ‘ অনাদি বলে— এটা কী কাণ্ড করলেন হরিদা ? ‘ এখানে কোন কাণ্ডের কথা বলা হয়েছে ।

Answer: ‘ বহুরূপী ‘ গল্প অনুসারে বিরাগীর বেশধারী হরিদাকে দেখে মুগ্ধ হয়ে জগদীশবাবু তাকে খাঁটি সন্ন্যাসী ভেবে একশো এক টাকা দিতে চাইলে বিরাগী – রূপী হরিদা তা হেলায় ফেলে দিয়ে চলে আসেন । এখানে সেই কাণ্ডের কথাই বলা হয়েছে ।

  1. কিন্তু সেটাই যে হরিদার জীবনের পেশা / – হরিদার পেশা কী ছিল ? 

Answer: সুবোধ ঘোষের ‘ বহুরূপী ‘ গল্পের নায়ক হরিদা মাঝে মাঝে বহুরূপী সেজে সামান্য রোজগার করে ভাতের হাঁড়ির দাবি মিটিয়ে দিতে চেষ্টা করেন । এটাই তার পেশা ।

  1. ‘ চমৎকার পাগল সাজতে পেরেছে তো লোকটা —’লোকটা কে ?

Answer: প্রশ্নে উদ্ধৃত অংশে ‘ লোকটা ‘ বলতে সুবোধ ঘোষের ‘ বহুরূপী ‘ গল্পের নায়ক হরিদাকে বোঝানো হয়েছে ।

  1. জগদীশবাবু কীভাবে সন্ন্যাসীর পায়ের ধুলো নিয়েছিলেন ?

Answer: সুবোধ ঘোষের ‘ বহুরূপী ‘ গল্প অনুসারে জগদীশবাবু একজোড়া কাঠের খড়মে সোনার বোল লাগিয়ে সন্ন্যাসীর পায়ের কাছে ধরলেন । তখন সন্ন্যাসী নতুন খড়ম পরার জন্য বাধ্য হয়ে পা এগিয়ে দিয়ে তা পরলেন ; আর সেই ফাঁকে জগদীশবাবু পায়ের ধুলো নিয়ে নিলেন ।

  1. পুলিশ সেজে হরিদা কী করেছিল ?

Answer: ‘ বহুরূপী ‘ গল্প অনুসারে হরিদা একবার পুলিশ সেজে দয়ালবাবুর লিচু বাগানের ভিতরে স্কুলের চারটে ছেলেকে ধরেছিলেন । তারপর স্কুলের মাস্টারমশাই এসে ক্ষমা চেয়ে আট আনা ঘুষ দেওয়ায় নকল পুলিশ হরিদা তাদের ছেড়ে দেন ।

  1. ‘ হরিদার জীবন এইরকম বহু রূপের খেলা দেখিয়েই একরকম চলে যাচ্ছে ।’— কীরকম খেলা দেখিয়ে হরিদার জীবন চলে যাচ্ছে ? 

Answer: হরিদা পেশায় ছিলেন বহুরূপী । তিনি কখনও পাগল সাজতেন , কখনও বাউল , কখনও কাপালিক , আর কখনও – বা বোঁচকা কাঁধে কাবুলিওয়ালা । এইরকম বহুরূপীর খেলা দেখিয়ে হরিদার জীবন চলে যাচ্ছে ।

  1. ‘ সে ভয়ানক দুর্লভ জিনিস— সেই বস্তুটিকে দুর্লভ বলার কারণ কী ? 

Answer: সুবোধ ঘোষের ‘ বহুরূপী ‘ গল্পের সন্ন্যাসী , জগদীশবাবু ছাড়া আর কাউকেই পায়ের ধুলো নিতে দেননি । তাই সেই বস্তুটিকে দুর্লভ বলা হয়েছে ।

  1. ‘ কী অদ্ভুত কথা বললেন’— অদ্ভুত কথাটি কী ?

Answer: ‘ বহুরূপী ‘ গল্প অনুসারে বিরাগী – রূপী হরিদা , জগদীশবাবুর কাছে টাকা না – নেওয়ার প্রসঙ্গে বলেছিলেন যে , সন্ন্যাসী সেজে টাকা নিলে তার ঢং নষ্ট হয়ে যাবে । এখানে এ কথাটিকেই অদ্ভুত বলা হয়েছে ।

  1. হরিদার জীবনের নাটকীয় বৈচিত্র্যটি কী ?

Answer: সুবোধ ঘোষের ‘ বহুরুপী ‘ গল্পের নায়ক হরিদার পেশাই হল । বহুরূপী সেজে সামান্য রোজগারকে সম্বল করে অম্লের সংস্থান করা । এটাই তাঁর জীবনের নাটকীয় বৈচিত্র্য ।

  1. হরিদা কোথায় থাকেন ?

Answer: ‘ বহুরূপী ‘ গল্পের প্রধান চরিত্র হরিদা শহরের সবচেয়ে সবু গলির ভিতরে একটি ছোট্ট ঘরে থাকেন ।

  1. ‘ আমি বিরাগী , রাগ নামে কোনো রিপু আমার নেই – বক্তার এ কথা বলার কারণ কী ?

Answer: এক প্রকৃত সন্ন্যাসী আসলে সমস্ত জৈবিক প্রবৃত্তিকে জয় করে । তখন সে কাম – ক্রোধ – লোভ ইত্যাদি ষড়রিপুর আর বশবর্তী থাকে না । বিরাগী রূপী হরিদা সে কথাই বলেছেন ।

  1. ‘ সেদিকে ভূলেও একবার তাকালেন না বিরাগী – কোন দিকে না তাকাবার কথা বলা হয়েছে ?

Answer: জগদীশবাবুর দেওয়া একশো এক টাকার থলিটি সিঁড়ির ওপরেই পড়ে রইল । বিরাগী – রূপী হরিদা সেদিকে ভুলেও আর একবার ; ফিরে তাকালেন না ।

  1. ‘ বহুরূপী ‘ গল্পের হরিদা কোন সাজ সেজে সবচেয়ে বেশি আয় করেছিলেন ?

Answer: ‘ বহুরূপী ‘ গল্পের প্রধান চরিত্র হরিদা রূপসি বাইজি সেজে সবচেয়ে বেশি ; মোট আট টাকা দশ আনা রোজগার করেছিলেন ।

  1. বিরাগীর উদ্দেশ্যে জগদীশবাবুর প্রাণের অনুরোধ কী ছিল ?

Answer: ‘ বহুরূপী ‘ গল্প অনুসারে জগদীশবাবু , বিরাগী – রূপী হরিদার পায়ের কাছে একশো এক টাকার থলিটি রেখে , তা গ্রহণ করার অনুরোধ জানিয়েছিলেন ।

  1. হরিদার কয়েকটি বহুরূপী রূপের উল্লেখ করো ।

Answer: ‘ বহুরূপী ‘ গল্পের প্রধান চরিত্র হরিদার কয়েকটি বহুরুপী রূপ হল— পাগল , রূপসি বাইজি , বাউল , কাপালিক , কাবুলিওয়ালা , ফিরিঙ্গি কেরামিন সাহেব , পুলিশ ও বিরাগী ।

  1. ‘ হরিদার কাছে আমরাই গল্প করে বললাম , ‘ আমরা ‘ বলতে এখানে কাদের বোঝানো হয়েছে ? 

Answer: উদ্ধৃতিটি সুবোধ ঘোষের ‘ বহুরূপী ‘ গল্পের অংশ । এখানে ‘ আমরা ‘ বলতে স্বয়ং গল্পকার ও তাঁর বন্ধু ভবতোষ , অনাদি ছাড়াও অন্যদের বোঝানো হয়েছে ।

  1. ‘ গল্প শুনে খুব গম্ভীর হয়ে গেলেন হরিদা । – হরিদার গম্ভীর হওয়ার কারণ কী ?

Answer: সর্বস্বত্যাগী সন্ন্যাসী সোনার বোল লাগানো কাঠের খড়ম ও একশো এক টাকা পেয়ে তৃপ্তির হাসি হাসেন । এ কথা শুনে হরিদার বিশ্বাস । টলে যায় । তিনি গম্ভীর হয়ে যান ।

  1. ‘ কিন্তু ওই ধরনের কাজ হরিদার জীবনের পছন্দই নয় । — কোন ধরনের কাজের কথা বলা হয়েছে ?

Answer: অভাবী হরিদা ইচ্ছে করলেই কোনো অফিসে বা দোকানে একটা কাজ পেতে পারতেন । কিন্তু ঘড়ি ধরে নিয়ম করে রোজ একটা চাকরি করা , হরিদার না – পসন্দ ছিল ।

  1. চকের বাস স্ট্যান্ডে বহুরূপী হরিদা কী রূপে হাজির হয় ? 

Answer: কটকটে লাল চোখ , মুখ থেকে লালা ঝরছে , কোমরে ছেঁড়া কম্বল , গলায় টিনের কৌটোর মালা ঝোলানো এক পাগলের ছদ্মবেশে চকের বাস স্ট্যান্ডে হাজির হন হরিদা ।

  1. ‘ খুব হয়েছে হরি , এইবার সরে পড়ো । অন্যদিকে যাও / – কে , কেন কথাটি বলেছেন ? 

Answer: একদিন দুপুরে চাকের বাস স্ট্যান্ডে হরিদা পাগলের ছদ্মবেশে হাতে থান ইঁট নিয়ে বাসে বসা যাত্রীদের দিকে তেড়ে যাচ্ছিলেন । সেই প্রেক্ষিতেই বাস ড্রাইভার কাশীনাথের এই উক্তি ।

  1. কিন্তু দোকানদার হেসে ফেলে – হরির কাণ্ড ! -হরির কোন্ কাণ্ড দেখে দোকানদার হেসে ফেলেছিলেন ? 

Answer: এক সন্ধ্যায় বাইজির ছদ্মবেশে হরি শহরের পথে ঘুঙুরের মিষ্টি শব্দ করে হেঁটে চলে । নতুনরা অবাক হলেও দোকানদার হরিকে চিনতে পেরে হেসে ফেলে ।

  1. ‘ এবারের মতো মাপ করে দিন ওদের – এ কথা কে , কাকে বলেছিলেন ?

Answer: সুবোধ ঘোষের ‘ বহুরূপী ‘ গল্পে দয়ালবাবুর লিচু বাগানে যখন পুলিশের ছদ্মবেশে হরিদা স্কুলের চারটে ছেলেকে ধরেছিলেন , তখন স্কুলের মাস্টারমশাই এ কথা বলেছিলেন ।

  1. ‘বা , সত্যি , খুব চমৎকার পুলিশ সেজেছিল হরি ! —কে , কখন এ কথা বলেছিলেন ? 

Answer: দয়ালবাবুর লিচু বাগানে স্কুলের মাস্টারমশাই পুলিশের কাছে ক্ষমা চেয়ে আট আনা ঘুষ দিয়ে ছেলেদের ছাড়িয়ে আনার পরে পুলিশের আসল পরিচয় জানতে পেরে তখনই এই প্রশংসাসূচক মন্তব্য করেন ।

  1. জগদীশবাবুর বাড়িতে খেলা দেখাবার জন্য হরিদার এত উৎসাহ জেগে উঠেছিল কেন ?

Answer: হরিদার সারাদিন নানান ছদ্মবেশে ঘুরে বেড়িয়েও দু – তিন টাকার বেশি রোজগার হয় না । তাই মোটা টাকা আদায়ের জন্য হরিদার মধ্যে এই উৎসাহ জেগেছিল ।

  1. ‘ আমাদের সন্দেহ মিথ্যে নয় ।’— কোন্ সন্দেহ মিথ্যে নয় বলে মনে করেছেন বক্তা ?

Answer: সন্ন্যাসীর খবর শুনে হরিদা গম্ভীর হয়ে যাওয়ায় কথক ও তাঁর বন্ধুরা বুঝেছিলেন যে , হরিদার মাথায় কোনো মতলব এসেছে । এই প্রসঙ্গেই কথকের এই উক্তিটির অবতারণা ।

  1. ‘ বড়ো চমৎকার আজকে এই সন্ধ্যার চেহারা । সন্ধ্যার চেহারাটির বর্ণনা দাও ।

Answer: সেই সন্ধ্যায় চাঁদের আলোর একটা স্নিগ্ধ ও শান্ত উজ্জ্বলতা চারদিকে ফুটে উঠেছিল । ফুরফুর করে বাতাস বইছিল । জগদীশবাবুর বাগানের গাছের পাতাগুলো ঝিরঝির শব্দ করছিল ।

  1. চমকে উঠলেন জগদীশবাবু / – জগদীশবাবুর চমকে ওঠার কারণ কী ?

Answer: আদুড় গায়ে , সাদা উত্তরীয় জড়ানো , ছোটো সাদা থান , মাথায় সাদা চুল , পায়ে ধুলো মাখা বিরাগীকে দেখে জগদীশবাবু চমকে উঠলেন ।

  1. ‘ আপনি কি ভগবানের চেয়েও বড়ো ? —কথাটি বন্ধা কেন বলেছেন ।

Answer: বিরাগীর ছদ্মবেশে হরিদা জগদীশবাবুর বাড়িতে এলে জগদীশবাবু বিরাগীকে দূর থেকে অভ্যর্থনা জানান । এর পরিপ্রেক্ষিতেই বিরাগী উত্ত মন্তব্যটি করেছেন ।

  1. ‘ আমার অপরাধ হয়েছে । কোন অপরাধের কথা বলা হয়েছে ?

Answer: বিরাগীর ছদ্মবেশে হরিদাকে দেখে মুগ্ধ জগদীশবাবু নেমে এসে বিরাগীকে অভ্যর্থনা না জানানোয় বিরাগী অসন্তুষ্ট হন । সেই অসন্তোষকে শান্ত করতেই জগদীশবাবুর এমন উক্তি ।

  1. ‘ না না , হরিদা নয় । হতেই পারে না । বস্তুা ও তার সঙ্গীদের এই বিশ্বাসের কারণ কী ? 

Answer: বিরাগীর গলার স্বর , মুখের ভাষা ও চোখের দৃষ্টির সঙ্গে হরিদার কোনো মিল না থাকায় বিরাগীকে বক্তা ও তার বন্ধুদের হরিদা বলে মনে হয়নি ।

  1. পরমসুখ বলতে বিরাগী কী বুঝিয়েছেন ?

Answer: ‘ বহুরূপী ‘ গল্পে বিরাগীর মতানুসারে , সব সুখের বন্ধন থেকে মুক্ত হয়ে অনন্তের সাধনায় আত্মনিয়োগ করতে পারলেই ‘ পরমসুখ ’ লাভ করা যায় ।

  1. জগদীশবাবুকে বিরাগী কী উপদেশ দেন ?

Answer: বিরাগী জগদীশবাবুকে বলেন , ধন – জন – যৌবন আসলে মোহময় বঞ্চনা । মন – প্রাণ দিয়ে একজনের আপন হতে চেষ্টা করলে সৃষ্টির সব ঐশ্বর্যই লাভ করা যায় ।

  1. তীর্থযাত্রা সম্পর্কে বিরাগীর অভিমত কী ছিল ?

Answer: জগদীশবাবু তীর্থভ্রমণের জন্য বিরাগীকে একশো টাকা দিতে চাইলে বিরাগী বলেন , মানুষের অন্তরেই ঈশ্বরের বাস , সকল তীর্থের মিলনস্থল । তাই আলাদাভাবে তীর্থদর্শনের প্রয়োজনীয়তা নেই ।

  1. ‘ চমকে ওঠে ভবতোষ । — ভবতোষের চমকে ওঠার কারণ কী ?

Answer: হরিদার বাড়িতে ঢুকে তার পোশাক ইত্যাদি দেখে ভবতোষরা বুঝতে পারল যে , হরিদাই আসলে বিরাগী । তখন তারা চমকে ওঠে ।

  1. ‘ তাতে যে আমার ঢং নষ্ট হয়ে যাবে । -বক্তা কোন্ প্রসঙ্গে উক্তিটি করেছেন ?

Answer: এক্ষেত্রে বক্তা হলেন হরিদা । জগদীশবাবু বিরাগী – বেশী হরিদাকে প্রণামী দিতে গেলে তিনি তা নেন না । কারণ সে বিরাগীর ছদ্মবেশে টাকা নিলে তাতে অভিনয়ের ঢং নষ্ট হয় ।

  1. হরিদার কাছে লেখক ও তাঁর বন্ধুরা কী গল্প করেছিলেন ? 

Answer: হিমালয়ের এক উঁচুদরের সন্ন্যাসী জগদীশবাবুর বাড়িতে সাত দিন ছিলেন । তাঁর বয়স হাজার বছরেরও বেশি । তিনি বছরে একটি মাত্র হরীতকী খান । সেই গল্পই লেখক ও তাঁর বন্ধুরা করেছিলেন ।

  1. ‘ আক্ষেপ করেন হরিদা – হরিদার এই আক্ষেপের কারণ কী ছিল ? 

Answer: হরিদা জগদীশবাবুর বাড়িতে আসা সন্ন্যাসীর মাহাত্ম্যের কথা শুনে তাঁর পায়ের ধুলো নিতে চান । কিন্তু সন্ন্যাসী চলে যাওয়ায় হরিদার সেই ইচ্ছা আক্ষেপে পরিণত হয় ।

  1. ‘ বাঃ , এ তো বেশ মজার ব্যাপার ! ‘ — মজার ব্যাপারটি কী ? 

Answer: মজার ব্যাপারটি হল সর্বত্যাগী সন্ন্যাসীর পায়ের ধুলো দুর্লভ হলেও কাঠের খড়মে সোনার বোল লাগিয়ে তাঁর পায়ের কাছে ধরতেই তিনি পা বাড়িয়ে দিলেন । সেই ফাঁকে জগদীশবাবু সন্ন্যাসীর পায়ের ধুলো নিয়েছিলেন ।

(২) অতিসংক্ষিপ্ত প্রশ্নগুলির উত্তর দাও :

২.১ “সে ভয়ানক দুর্লভ জিনিস।” – ভয়ানক দুর্লভ জিনিসটি কি?

উত্তর : হিমালয় থেকে আগত সন্ন্যাসীর পায়ের ধুলো অতি সহজে কেউ পায় না।

২.২ “ওই ধরনের কাজ হরিদার জীবনের পছন্দ নয়।” – কোন, ধরনের কাজ হরিদার পছন্দ নয়?

উত্তর : দোকান বা অফিসে বাঁধাধরা কাজ হরিদার একদমই পছন্দ নয়।

২.৩ “একঘেয়ে কাজ করতে ভয়ানক আপত্তি।” – কেন তার এই আপত্তি?

উত্তর : হরিদার জীবনে একটা নাটকীয় বৈচিত্র আছে।  সে বহুরূপী কাজটাকেই ধরে রাখতে চায়। তাই একঘেয়ে কাজ করতে হরিদার ভয়ানক আপত্তি।

২.৪ “কেউ চিনতে পারে না।” – কাকে এবং কেন চিনতে পারে না?

উত্তর : পেশায় বহুরূপী হরিদা ছদ্মবেশে থাকায় তাকে কেউ চিনতে পারে না।

 

২.৫ “এবারের মত মাফ করে দিন ওদের।” – কে, কাকে একথা বলেছেন?
উত্তর : ছদ্মবেশী হরিদা লিচু বাগানে চারজন স্কুলছাত্রকে ধরে ছিলো। তাদেরকে বাঁচাতে এই স্কুলের শিক্ষক হরিদা কে এই কথাটি বলেছিল।

২.৬ “এবার মারি তো হাতি, লুঠি তো ভান্ডার।” – কে একথা এবং কেন বলেছিল?

উত্তর : বহুরূপী সেজে হরিদা একবারে অনেক বেশি অর্থ উপার্জন করতে চেয়েছিলেন।

২.৭ “চমকে উঠলেন জগদীশবাবু।” – জগদীশবাবু চমকে উঠেছিলেন কেন?

উত্তর : সন্ধ্যাবেলায় অল্প আলোতে অচেনা ছদ্দবেশী হরিদাকে দেখে জগদীশবাবু চমকে উঠেছিলেন।

২.৮ “ছিল একদিন, সেটা পুনর্জন্মের কথা” – কে, কি না থাকার কথা বলেছেন?

উত্তর : ছদ্দবেশী হরিদা বলেছেন রাগ নামে কোন রিপু তার নেই।

২.৯ পরম সুখ বলতে বিরাগী কি বুঝিয়েছেন?

উত্তর : সব সুখের বন্ধন থেকে মুক্ত হয়ে, অনন্তের সাধনায় আত্মনিয়োগ করাকে পরম সুখ বলেন

২.১০ “তারা হাত দুটো ছটফট করতে শুরু করেছে” – কার হাত এবং কেন ছটফট করছিল?

উত্তর : বৈরাগীর ছদ্মবেশে হরিদার পা ছোয়ার জন্য জগদীশ বাবুর হাত করছিল।

২.১১ “কি অদ্ভুত কথা বললেন হরিদা!” – হরিদা কি অদ্ভুত কথা বলেছিল?

উত্তর : একজন বিরাগী সন্ন্যাসীর বেশ ধারণ করে টাকা স্পর্শ করে না। না তাতে বহুরূপীর ঢং নষ্ট হয়ে যায়।

২.১২ “নইলে আমি শান্তি পাবো না।” – কথা বলার কারণ কি?

উত্তর : জগদীশবাবু বিড়ালের ছদ্মবেশে হরিদার মুখ থেকে কিছু উপদেশ শুনতে চান আর তা না হলে তিনি শান্তি পাবেন না।

২.১৩ “সেদিকে ভুলেও তাকালেন না” – কে, কোন্ দিকে তাকালেন না?

উত্তর : জগদীশ বাবুর দেওয়া একশো এক টাকার থলির দিকে ছদ্মবেশী হরিদা একবার তাকালেন না

সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর | বহুরূপী (গল্প) সুবোধ ঘোষ – মাধ্যমিক বাংলা প্রশ্ন ও উত্তর  

  1. ‘ হরিদার কাছে আমরাই গল্প করে বললাম , – হরিদা কে ? তাঁর কাছে বক্তা কী গল্প করেছিল ?

Ans: সুবোধ ঘোষ রচিত ‘ বহুরূপী ‘ গল্পের মুখ্য চরিত্র হল হরিদা । হরিদার পরিচয় তিনি পেশায় একজন বহুরূপী । তাঁর জীবনে অনেক অভাব থাকা সত্ত্বেও নিজের পেশার প্রতি তিনি শ্রদ্ধাশীল ছিল ।

বক্তা ও তাঁর বন্ধুরা হরিদাকে জগদীশবাবুর বাড়িতে আসা সন্ন্যাসীর কথা জানিয়েছিলেন । হিমালয় থেকে আসা সেই সন্ন্যাসী সারাবছরে শুধু একটা হরীতকী খান । সন্ন্যাসী হলেও তিনি জগদীশবাবুর কাছ থেকে সোনার বোল লাগানো কাঠের খড়ম ও একশো এক টাকা দক্ষিণা গ্রহণ করেছিলেন ।

  1. ‘ খুব উঁচু দরের সন্ন্যাসী । — সন্ন্যাসীর পরিচয় দাও ।  

Ans: সুবোধ ঘোষের ‘ বহুরূপী ‘ গল্পে আমরা এক সন্ন্যাসীর পরিচয় পাই । পাড়ার ধনী ব্যক্তি জগদীশবাবুর বাড়িতে সেই সন্ন্যাসী সাত দিন ছিলেন । তিনি সন্ন্যাসীর পরিচয় হিমালয়ের গুহায় থাকতেন । তাঁর সারাবছরের খাদ্য একটি মাত্র হরীতকী , বয়স হাজারেরও বেশি । তাঁর পদধুলি দুর্লভ , জগদীশবাবু ছাড়া কেউ পাননি । তবে এহেন সর্বস্বত্যাগীর প্রকৃত স্বরূপ বোঝা যায় তখন , যখন জগদীশবাবুর দেওয়া সোনার বোল লাগানো কাঠের খড়ম ও একশো টাকার নোট সানন্দ চিত্তে গ্রহণ করেন ।

  1. ‘ বাঃ , এ তো বেশ মজার ব্যাপার ! —কোন ঘটনাকে মজার ব্যাপার বলা হয়েছে ? ঘটনাটি মজার কেন ?

Ans: ‘ বহুরূপী ‘ গল্প অনুসারে জগদীশবাবুর বাড়িতে হিমালয় থেকে যে সন্ন্যাসী এসেছিলেন , তিনি এতই উঁচু দরের যে , কাউকে পদধূলি গ্রহণের ঘটনার পরিচয় অনুমতি পর্যন্ত দিতেন না । শেষপর্যন্ত জগদীশবাবু তাঁর কাঠের খড়মে সোনার বোল লাগিয়ে পায়ের সামনে ধরলে সন্ন্যাসী পা এগিয়ে দিয়েছিলেন । এভাবে একমাত্র জগদীশবাবুই তাঁর পদধূলি পেতে সক্ষম হয়েছিলেন ।

মুখ্য চরিত্র হরিদার মতে , ঘটনাটি মজার । কারণ , সর্বস্বত্যাগী হিমালয়বাসী সন্ন্যাসী ও সোনার আকর্ষণ অগ্রাহ্য করতে পারেননি ।

  1. ঘটনাটি মজার কেন ‘ কিন্তু কাজ করতে হরিদার প্রাণের মধ্যেই যেন একটা বাধা আছে ? — কোন কাজের কথা বলা হয়েছে ? ‘ হরিদার প্রাণের মধ্যেই যেন একটা বাধা আছে ? —বাক্যটির অর্থ পরিস্ফুট করো ।

Ans: ‘ বহুরূপী ’ গল্প থেকে উদ্ধৃত অংশে ‘ কাজ ‘ বলতে যে – কোনো নিয়মমাফিক ঘড়িধরা সময়ের চাকরির কথা বলা হয়েছে । হরিদা নিজের খুশিমতো বহুরূপী সাজেন ; যখন ইচ্ছা , যেদিন ইচ্ছা । প্রশ্নোদৃত বাক্যের কিন্তু যে কাজে বাধ্যবাধকতা রয়েছে , সে – কাজ অর্থ পরিস্ফুটন করার মতো মানসিকতা তাঁর নেই । তিনি মুক্ত পুরুষ । সংসারে যেমন তাঁর কোনো বন্ধন নেই , তেমনি আর্থিক বন্ধনেও জড়িয়ে পড়া তাঁর পক্ষে সম্ভব নয় । হরিদার শিল্পীস্বভাব এবং অন্তর্মনের বৈরাগ্যই এর প্রধান কারণ ।

  1. ‘ হরিদার জীবনে সত্যিই একটা নাটকীয় বৈচিত্র্য আছে ? —জীবনে নাটকীয় বৈচিত্র্য বলতে কী বোঝ ? হরিদার জীবনের নাটকীয় বৈচিত্র্যটি কী ?

Ans: ‘ নাটকীয় ‘ শব্দটির অর্থ হল যা নাটকের মতো , অর্থাৎ ঘটনাবহুল বৈচিত্র্যময় দৈনন্দিন জীবনের একঘেয়েমি কাটাতে মানুষের জীবনে । নাটকীয় বৈচিত্র্য নাটকীয়তা থাকা একান্তভাবে প্রয়োজন । তবেই জীবন উপভোগ্য হয়ে ওঠে । এখানে সেই ব্যতিক্রমকেই নাটকীয় বৈচিত্র্য বলা হয়েছে । হরিদার জীবনের নাটকীয় বৈচিত্র্য ছিল তাঁর বৃত্তি অর্থাৎ বহুরূপী সেঙে মানুষকে চমকে দেওয়ার পেশা । এতে তাঁর রোজগার সামান্য হলেও তাঁর জীবনে বৈচিত্রা এনে দেয় এই পেশা ।

  1. ‘ একদিন চকের বাস স্ট্যান্ডের কাছে ঠিক দুপুরবেলাতে একটা আতঙ্কের হল্লা বেজে উঠেছিল ।’— ‘ আতঙ্কের হল্লা ‘ বলতে কী বোঝানো হয়েছে ? চকের বাস স্ট্যান্ডের কাছে কী ঘটনা ঘটেছিল ?

Ans: সুবোধ ঘোষের ‘ বহুরুপী ‘ গল্পে ঠিক দুপুরবেলা চকের বাস স্ট্যান্ডে বহুরূপী হরিদাকে পাগলের বেশে দেখে সকলে চমকে উঠে ভয়ে চ্যাঁচামেচি শুরু করে । দিয়েছিল । একেই ‘ আতঙ্কের হল্লা ‘ বলা হয়েছে । চক্রে বাস স্ট্যান্ডে ঘটা ঘটনা ● চকের বাস স্ট্যান্ডে দুপুরবেলা এক পাগলের আবির্ভাবে সকলে ভীত হয়ে পড়ে । সেই পাগলের মুখ থেকে লালা ঝরে পড়ছিল , চোখ ছিল কটকটে লাল , কোমরে একটা ছেঁড়া কম্বল জড়ানো , গলায় টিনের কৌটোর মালা । হাতে থান ইট নিয়ে সে বাসের যাত্রীদের দিকে তেড়ে যাচ্ছিল ।

  1. হরিদার জীবন এইরকম বহু রূপের খেলা দেখিয়েই একরকম চলে যাচ্ছে । – হরিদার জীবনের ‘ বহু রূপের খেলা ” -র পরিচয় দাও ।

Ans: গল্পকার সুবোধ ঘোষের ‘ বহুরূপী ‘ গল্পে হরিদা মাঝে মাঝে বিভিন্ন সাজে সেজে রাস্তায় বেরোতেন- কখনও পাগল , কখনও – বা রুপসি বাইজি , কখনও বাউল , কাপালিক ; কোনো দিন বুড়ো কাবুলিওয়ালা , কোনো দিন – বা হ্যাট – কোট – প্যান্ট পরা ফিরিঙ্গি সাহেব । একবার তিনি পুলিশ সেজে স্কুলের মাস্টারমশাই ও তাঁর ছাত্রদের চোখে ধুলো দিয়েছিল । বাইজির সাজেই তাঁর জীবনের সবচেয়ে বেশি উপার্জন হয়েছিল । তবে হরিদার সেরা রূপ ছিল জগদীশবাবুর বাড়িতে বিরাগীর ছদ্মবেশ ।

  1. মোট আট টাকা দশ আনা পেয়েছিলেন।— কে পেয়েছিলেন । কী কারণে তিনি টাকাটা পেয়েছিলেন ?

Ans: সুবোধ ঘোষের ‘ বহুরূপী ‘ গল্পের মুখ্য চরিত্র বহুরূপী হরিদা | মোট আট টাকা দশ আনা পেয়েছিলেন । টাকা পাওয়ার কারণ হরিদা মাঝে মাঝেই বিভিন্ন ছদ্মবেশে সকলকে চমকে দিতেন । একদিন সন্ধ্যাবেলা হঠাৎ এক সুন্দরী বাইজির ঘুঙুরের শব্দে মানুষজন সচকিত হয়ে । ওঠে । সে এক একটি দোকানের সামনে যায় এবং একটি ফুলসাজি এগিয়ে দেয় । দোকানদার সাজিতে একটি সিকি ফেলে দেয় । এই দৃশ্য দেখে নতুন লোকেরা অবাক ও চেনা লোকেরা মুগ্ধ হয়ে যায় । অনেকেই টাকা দেয় । এভাবেই হরিদা টাকাটা পেয়েছিলেন ।

  1. পরদিন অবশ্য স্কুলের মাস্টারমশাইয়ের জানতে বাকি থাকেনি , — কোন ঘটনা জানতে স্কুলের মাস্টারমশাইয়ের বাকি থাকেনি । এতে মাস্টারমশাইয়ের প্রতিক্রিয়া কী ছিল ?

Ans: ‘ বহুরূপী ‘ গল্পে হরিদা একদিন পুলিশ সেজে দয়ালবাবুর লিচু বাগানে স্কুলের চারজন ছাত্রকে হাতেনাতে ধরেছিলেন । স্কুলের মাস্টারমশাই স্বয়ৎ এসে ক্ষমা চেয়ে ও আট আনা ঘুষ দিয়ে ছাত্রদের ছাড়িয়ে নিয়ে যান । হরিদার পুলিশ সাজার ও তাঁর কাছ থেকে আট আনা ঘুষের গোপন কাহিনি জানতে স্কুলের মাস্টারমশাইয়ের আর বাকি থাকেনি । → সব কিছু জানার পর মাস্টারমশাই এতটুকুও রাগ করেননি । বরং হরিদার মাস্টারমশাই – এর অসম্ভব সুন্দর অভিনয় ও সাজের জন্য তাঁর প্রশংসা প্রতিক্রিয়া করেছিলেন ।

  1. ‘ আমি বলছি তোমরা সেখানে থেকো।- ‘ আমি ‘ ও “ তোমরা বলতে কাদের বোঝানো হয়েছে ? শ্রোতাদের সেখানে থাকার কথা কেন বলা হয়েছে ?

Ans: আলোচ্য অংশে ‘ আমি ’ বলতে সুবোধ ঘোষ রচিত ‘ ‘ বহুরূপী ‘ ‘ আমি ‘ ও ‘ তোমারা গল্পের মুখ্য চরিত্র হরিদাকে এবং ‘ তোমরা ’ বলতে কথক ও তার বন্ধু ভবতোষ , অনাদি প্রমুখকে বোঝানো হয়েছে । শ্রোতাদের থাকতে বলার কারণ → সেদিন সন্ধ্যাবেলায় হরিদা পাড়ার ধনী ব্যক্তি জগদীশবাবুর বাড়িতে কথক ও তাঁর বন্ধুদের থাকার কথা বলেছিলেন । কারণ হরিদা সেদিন জগদীশবাবুর বাড়িতে সর্বস্বত্যাগী সন্ন্যাসী সেজে , এক জবর খেলা দেখানোর মতলব করেছিলেন । কিন্তু দর্শক না থাকলে বহুরূপীর সাজ বৃথা হবে । তাই তাদের সেদিন হরিদা সেখানে উপস্থিত থাকতে বলেছিলেন ।

  1. বড়ো চমৎকার আজকে এই সন্ধ্যার চেহারা / -সন্ধ্যার চেহারার বর্ণনা দাও ।

Ans: সুবোধ ঘোষের ‘ বহুরূপী ‘ গল্পে হরিদা কথক ও তাঁর বন্ধুদের এক অত্যাশ্চর্য খেলা দেখার আমন্ত্রণ জানান পাড়ার ধনী ব্যক্তি জগদীশবাবুর বাড়িতে । সেদিনের সন্ধ্যায় প্রকৃতিও যেন হরিদাকে সঙ্গ দিয়েছিল । স্নিগ্ধ ও উজ্জ্বল চাঁদের আলো দীর্ঘকাল পরে শহরের পরিবেশকে সুন্দর করে তুলেছিল । ফুরফুরে বাতাসে জগদীশবাবুর বাড়ির বাগানের গাছের পাতা ঝিরিঝিরি করে যেন কিছু বলতে চাইছিল । এমন মায়াময় পরিবেশেই আবির্ভাব হয়েছিল বিরাগী – রূপী হরিদার ।

  1. ‘ আপনি কি ভগবানের চেয়েও বড়ো ? কাকে এ কথা বলা হয়েছে ? তাঁকে এ কথা বলা হয়েছে কেন ?

Ans: সুবোধ ঘোষের ‘ বহুরূপী ‘ গল্পে বিরাগী – বেশী হরিদা জগদীশবাবুকে কথাগুলি বলেছিলেন ।

এক সন্ধ্যায় হরিদা বিরাগীর ছদ্মবেশে জগদীশবাবুর বাড়িতে হাজির হন । জগদীশবাবু তখন বারান্দায় চেয়ারের ওপর বসেছিলেন । বিরাগীকে দেখতে প্রশ্নোস্তৃত কথাটি । পেয়ে তিনি উঠে দাঁড়িয়ে তাঁকে স্বাগত জানান । বলার কারণ । তখন বিরাগী আলোচ্য উক্তিটি করে জগদীশবাবুকে জানান , জগদীশবাবু নিশ্চয়ই সম্পত্তির অহংকারে নিজেকে ভগবানের চেয়েও বড়ো মনে করেন । তা না হলে তিনি অবশ্যই বিরাগীকে অভ্যর্থনা জানাতে বারান্দা থেকে নেমে আসতেন ।

  1. ‘ বিরাগীর পায়ের কাছে থলিটাকে রেখে দিয়ে ব্যাকুল স্বরে প্রার্থনা করে জগদীশবাবু— বিরাগী কে ? তার কাছে জগদীশবাবুর প্রার্থনার কারণ কী ?

Ans: ‘ বিরাগী ‘ হলেন সর্বত্যাগী সাধুবেশী বহুরূপী হরিদা । । ধনী ও কৃপণ জগদীশবাবু সাধুসঙ্গ করে পুণ্য অর্জন করতে চান । ছদ্মবেশী বিরাগীকে দেখে ও তাঁর মুখে দার্শনিক উক্তি শুনে তিনি মুগ্ধ হয়ে যান । বিরাগীকে নিজের বাড়িতে কয়েকদিন থাকতে জগদীশবাবুর প্রার্থনা অনুরোধ জানিয়েও যখন লাভ হয় না , তখন জগদীশবাবু তাঁকে একশো এক টাকা প্রণামী দিতে চান । এই প্রণামী যাতে বিরাগী তীর্থ ভ্রমণের খরচ হিসেবে গ্রহণ করেন , তাই তিনি ব্যাকুল মনে প্রার্থনা করতে থাকেন ।

  1. ‘ অনাদি বলে — এটা কী কাণ্ড করলেন , হরিদা ? -কোন্ কার্ডের কথা বলা হয়েছে ? কাণ্ডটি বিস্ময়কর কেন ?

Ans: কাণ্ডটি হল জগদীশবাবু হরিদাকে সত্যি সত্যিই বিরাগী ভেবে একশো এক টাকা প্রণামী দিতে চাইলেও বিরাগী – বেশী হরিদা তা নিতে অস্বীকার করেন ।

হরিদা ছিলেন মূলত একজন গরিব মানুষ , উপোস যাঁর প্রায় নিত্যসঙ্গী । বহুরূপীর পেশার অতিসামান্য রোজগারে তাঁর দিন কাঙটি বিস্ময়কর চলত । তবুও হাতের কাছে একশো এক টাকা পেয়ে কেন তিনি তা প্রত্যাখ্যান করেন কেবলমাত্র তাঁর সাজা চরিত্রের সঙ্গে অর্থলোলুপতা মানায় না বলে । শুধুমাত্র পেশার মানরক্ষার জন্য এই ত্যাগ সত্যিই বিস্ময়কর ।

  1. ‘ তাতে যে আমার ঢং নষ্ট হয়ে যায় । —ঢং বলতে এখানে কী বোঝানো হয়েছে ? কীসে ঢং নষ্ট হয়ে যাবে ? 

Ans: উদ্ধৃতাংশে বিরাগী সন্ন্যাসীর ছদ্মবেশে হরিদাকে তাঁর যে আচরণ আত্মস্থ করতে হয়েছিল , তাকেই ঢং বলা হয়েছে । হরিদা জগদীশবাবুর বাড়িতে এমন একজন বিরাগী সন্ন্যাসী সেজে গিয়েছিলেন , যিনি সমস্ত পার্থিব বস্তুর প্রতি উদাসীন । এহেন সন্ন্যাসী যদি সামান্য একশো এক টাকার লোভ সংবরণ করতে না পারেন , তবে বিরাগীর আচরণের সঙ্গে তাঁর বক্তব্যের কোনো সাদৃশ্য থাকবে না । সম্পূর্ণ অভিনয়টিই মাঠে মারা যাবে । একেই ঢং নষ্ট হয়ে যাওয়া বলা হয়েছে । আসলে এক্ষেত্রে বহুরুপী হরিদার আচরণে তাঁর স্বরূপটি প্রকাশ পেয়েছিল ।

  1. যাবই তো । না গিয়ে উপায় কী ? ‘ — কোথায় যাওয়ার কথা বলা হয়েছে ? না গিয়ে উপায় নেই কেন ?

Ans: ‘ বহুরূপী ‘ গল্প থেকে উদ্ধৃত উক্তিটিতে পাড়ার ধনী ব্যক্তি জগদীশবাবুর কাছে যাওয়ার কথা বলা হয়েছে । না – গিয়ে উপায় → হরিদা বহুরূপী । নানা ধরনের চরিত্রে অভিনয় করে মানুষের মনোরঞ্জন করাই তাঁর পেশা । মানুষ খুশি হয়ে যা টাকাপয়সা দেয় , তাতেই তাঁর দিন চলে । জগদীশবাবুর বাড়িতে বিরাগী সেজে গেলেও তাঁর দেওয়া প্রণামীর টাকা তিনি নেন না । কারণ , তাতে হরিদাকৃত বিরাগী চরিত্রের মান যেত । কিন্তু বহুরূপী হিসেবে হরিদার যে পারিশ্রমিক প্রাপ্য , তা নিতে তাঁকে একবার জগদীশবাবুর কাছে যেতেই হবে ।

  1. ‘ কী অদ্ভুত কথা বললেন হরিদা ! ‘ — বক্তা কে ? বক্তার কাছে হরিদার কথা অদ্ভুত বলে মনে হয়েছে কেন ? 

Ans: সুবোধ ঘোষের ‘ বহুরূপী ’ গল্প থেকে উদ্ধৃত অংশটির বক্তা লেখক ।

বিরাগী – বেশধারী হরিদাকে দেখে কৃতার্থ হয়ে জগদীশবাবু তাকে একশো এক টাকা প্রণামী দেন । কিন্তু হরিদা খাঁটি সন্ন্যাসীর মতোই তা হেলায় ফেলে বক্তার কাছে হরিদার দিয়ে চলে আসেন । দরিদ্র হরিদাকে এমন কাণ্ড করতে দেখে ভবতোষ অনাদিরা অবাক হয়ে এর কারণ জানতে চায় । যে – মানুষের বাড়িতে অধিকাংশ দিন ভাতের হাঁড়িতে শুধু জল ফোটে , সে যখন বলে , সন্ন্যাসী সেজে টাকা নিলে ঢং নষ্ট হয়ে যেত ; তাই ইচ্ছেই হয়নি । তখন উপস্থিত সকলের কাছে তা অদ্ভুত বলে মনে হয় ।

  1. ‘ হরির কাণ্ড । – হরি কে ? হরির কান্ড বলতে কোন্ ঘটনার কথা বলা হয়েছে ?

Ans: সুবোধ ঘোষের ‘ বহুরূপী ‘ গল্পের প্রধান চরিত্র পেশায় বহুরূপী হরিদার কথা এখানে বলা হয়েছে ।

হরিদার জীবনের নাটকীয় বৈচিত্র্য লুকিয়ে ছিল তাঁর পেশায় । তিনি বিভিন্ন সময় বিভিন্ন রূপ ধরে খেলা দেখিয়ে নিজের জীবিকানির্বাহ করতেন । ফলে শহরের জীবনেও মাঝে মাঝে বেশ চমৎকার ঘটনা তৈরি হত । একদিন সন্ধের আলোয় দোকানে দোকানে সবে লোকজনের ব্যস্ততা ও মুখরতা জমে উঠেছে , সেইসময় পথের ওপর ঘুঙুরের মিষ্টি আওয়াজ ভেসে আসে । দেখা যায় এক রূপসি বাইজি নাচতে নাচতে চলে যাচ্ছে । নতুনেরা অবাক হয়ে সেদিকে তাকিয়ে থাকে । কিন্তু একজন দোকানদার তাকে চিনতে পেরে হেসে ফেলে প্রশ্নোত মন্তব্যটি করে । এখানে সেই ঘটনার কথা বলা হয়েছে ।

  1. ‘ অদৃষ্ট কখনও হরিদার এই ভুল ক্ষমা করবে না। ‘ অদৃষ্ট ‘ বলতে কী বোঝ ? হরিদার সম্পর্কে এমন উক্তি কেন করা হয়েছে ?

Ans: প্রশ্নোদ্ভূত অংশটি সুবোধ ঘোষের ‘ বহুরূপী ‘ গল্প থেকে নেওয়া । এখানে ‘ অদৃষ্ট ‘ বলতে ভাগ্য , কপাল বা বিধির কথা বলা হয়েছে । ”

বহুরূপী হরিদার বিরাগী – রূপ দেখে মুগ্ধ ও কৃতার্থ জগদীশবাবু তাঁকে একশো এক টাকা প্রণামী দেন । কিন্তু খাঁটি সন্ন্যাসীর মতোই হরিদা তা প্রশ্নোত উক্তির অবলীলায় ফেলে দিয়ে চলে আসেন । কারণ টাকা নিলে তার ঢং নষ্ট হয়ে যেত । অথচ হরিদা নিতান্ত কারণ দরিদ্র মানুষ । বহু রূপ দেখিয়ে তাঁর যৎসামান্য রোজগারে হরিদার দিন চলে । বেশিরভাগ দিন চাল না থাকায় তাঁর হাঁড়িতে শুধু জলই ফুটে যায় । এমন মানুষের পক্ষে অতগুলো টাকা পেয়েও না – নেওয়ার বিলাসিতা ; ভবিষ্যতে তাঁর দুর্ভোগ বাড়াবে । এ কথা বোঝাতেই উপরোক্ত উক্তিটি করা হয়েছে ।

  1. ‘ হরিদার উনানের হাঁড়িতে অনেক সময় শুধু জল ফোটে , ভাত ফোটে না । – হরিদার উপার্জনের উপায় কী ছিল ? অনেক সময় তাঁর হাঁড়িতে ভাত না – ফুটে কেবল জল ফোটে কেন ?

Ans: সুবোধ ঘোষের ‘ বহুরুপী ‘ গল্পের প্রধান চরিত্র হরিদা পেশায় ছিলেন বহুরূপী । মাঝে মাঝে বহুরূপী সেজে খেলা দেখিয়ে যা রোজগার হত ; তা দিয়েই তিনি জীবিকানির্বাহ করতেন ।

হরিদার উপার্জনের উপায় হরিদার বাস্তব জীবন

হরিদা খুব গরিব মানুষ হলেও , গতে বাঁধা কাজ করায় তাঁর প্রাণের মধ্যেই যেন একটা বাধা ছিল । মনে করলে তিনি কোনো অফিসে বা দোকানে বিক্রিওয়ালার কাজ পেয়ে যেতেন । কিন্তু এ ধরনের কাজ তাঁর পছন্দ ছিল না । ঘড়ির কাঁটার সময় ধরে নিয়মমাফিক রোজ একটা চাকরি করতে যাওয়া হরিদার পক্ষে অসম্ভব ছিল । তাই তাঁর উনানের হাঁড়িতে অনেক সময়েই শুধু জল ফুটলেও ; ভাত ফুটত না ।

  1. ‘ একটু পরেই বাসের ড্রাইভার কাশীনাথ ধমক দেয় । — বাসের ড্রাইভার কাকে , কী বলে ধমক দিয়েছিল ? তাকে ধমক দেওয়ার প্রয়োজন হয়েছিল কেন ?

Ans: প্রথম অংশের উত্তরের জন্য 28 নং প্রশ্নের উত্তর দ্যাখো । একদিন দুপুরবেলা চকের বাস স্ট্যান্ডে এক পাগলের আবির্ভাব ঘটে ।

তার মুখ থেকে লালা ঝরে পড়ছে , চোখ কটকটে লাল , কোমরে একটা ছেঁড়া কম্বল জড়ানো আর গলায় টিনের কৌটোর কাশীনাথের ধমকের মালা । সে হাতে একটা থান ইট নিয়ে বাসযাত্রীদের কারণ দিকে তেড়ে যাচ্ছে । ফলে পাগলের কাণ্ড – কারখানায় চারপাশে ভীতি আর আতঙ্কের একটা হল্লা ওঠে । এই পরিস্থিতিতে পাগল – রূপী হরিদাকে থামাতে এবং বাকিদের আশ্বস্ত করতে কাশীনাথ ধমক দিয়েছিল ।

==============================================================

বহুরূপী(গল্প) থেকে আরোও প্রশ্ন ও উত্তর দেখুন :PART-2

বহুরূপী গল্প থেকে সম্পূর্ণ প্রশ্ন উত্তর আলোচনা-PART-3

=============================================================

(৩) ব্যাখ্যা ভিত্তিক প্রশ্নগুলির উত্তর দাও :

প্রশ্নঃ ‘বাঃ, এ তো বেশ মজার ব্যাপার!’ – কোন ঘটনাকে মজার ব্যাপার বলা হয়েছে? ঘটনাটি মজার কেন?

উত্তরঃ ‘বহুরূপী’ গল্প অনুসারে জগদীশবাবুর বাড়িতে হিমালয় থেকে যে সন্ন্যাসী এসেছিলেন, তিনি এতই উঁচু দরের যে, কাউকে পদধূলি গ্রহণের ঘটনার পরিচয় অনুমতি পর্যন্ত দিতেন না। শেষপর্যন্ত জগদীশবাবু তাঁর কাঠের খড়মে সোনার বোল লাগিয়ে পায়ের সামনে ধরলে সন্ন্যাসী পা এগিয়ে দিয়েছিলেন। এভাবে একমাত্র জগদীশবাবুই তাঁর পদধূলি পেতে সক্ষম হয়েছিলেন।

     মুখ্য চরিত্র হরিদার মতে, ঘটনাটি মজার। কারণ, সর্বস্বত্যাগী হিমালয়বাসী সন্ন্যাসী ও সোনার আকর্ষণ অগ্রাহ্য করতে পারেননি।

প্রশ্নঃ ‘হরিদার জীবনে সত্যিই একটা নাটকীয় বৈচিত্র্য আছে’ – জীবনে নাটকীয় বৈচিত্র্য বলতে কী বোঝ? হরিদার জীবনের নাটকীয় বৈচিত্র্যটি কী?

উত্তরঃ ‘নাটকীয়’ শব্দটির অর্থ হল যা নাটকের মতো, অর্থাৎ ঘটনাবহুল বৈচিত্র্যময় দৈনন্দিন জীবনের একঘেয়েমি কাটাতে মানুষের জীবনে। নাটকীয় বৈচিত্র্য নাটকীয়তা থাকা একান্তভাবে প্রয়োজন। তবেই জীবন উপভোগ্য হয়ে ওঠে। এখানে সেই ব্যতিক্রমকেই নাটকীয় বৈচিত্র্য বলা হয়েছে। হরিদার জীবনের নাটকীয় বৈচিত্র্য ছিল তাঁর বৃত্তি অর্থাৎ বহুরূপী সেঙে মানুষকে চমকে দেওয়ার পেশা। এতে তাঁর রোজগার সামান্য হলেও তাঁর জীবনে বৈচিত্রা এনে দেয় এই পেশা।

প্রশ্নঃ ‘একদিন চকের বাস স্ট্যান্ডের কাছে ঠিক দুপুরবেলাতে একটা আতঙ্কের হল্লা বেজে উঠেছিল।’ – ‘আতঙ্কের হল্লা’ বলতে কী বোঝানো হয়েছে? চকের বাস স্ট্যান্ডের কাছে কী ঘটনা ঘটেছিল?

উত্তরঃ সুবোধ ঘোষের ‘বহুরুপী’ গল্পে ঠিক দুপুরবেলা চকের বাস স্ট্যান্ডে বহুরূপী হরিদাকে পাগলের বেশে দেখে সকলে চমকে উঠে ভয়ে চ্যাঁচামেচি শুরু করে। দিয়েছিল। একেই ‘আতঙ্কের হল্লা’ বলা হয়েছে।

      চকের বাস স্ট্যান্ডে দুপুরবেলা এক পাগলের আবির্ভাবে সকলে ভীত হয়ে পড়ে। সেই পাগলের মুখ থেকে লালা ঝরে পড়ছিল, চোখ ছিল কটকটে লাল, কোমরে একটা ছেঁড়া কম্বল জড়ানো, গলায় টিনের কৌটোর মালা। হাতে থান ইট নিয়ে সে বাসের যাত্রীদের দিকে তেড়ে যাচ্ছিল।

প্রশ্নঃ ‘মোট আট টাকা দশ আনা পেয়েছিলেন।’ – কে পেয়েছিলেন? কী কারণে তিনি টাকাটা পেয়েছিলেন?

উত্তরঃ সুবোধ ঘোষের ‘বহুরূপী’ গল্পের মুখ্য চরিত্র বহুরূপী হরিদা। মোট আট টাকা দশ আনা পেয়েছিলেন। টাকা পাওয়ার কারণ হরিদা মাঝে মাঝেই বিভিন্ন ছদ্মবেশে সকলকে চমকে দিতেন। একদিন সন্ধ্যাবেলা হঠাৎ এক সুন্দরী বাইজির ঘুঙুরের শব্দে মানুষজন সচকিত হয়ে ওঠে। সে এক একটি দোকানের সামনে যায় এবং একটি ফুলসাজি এগিয়ে দেয়। দোকানদার সাজিতে একটি সিকি ফেলে দেয়। এই দৃশ্য দেখে নতুন লোকেরা অবাক ও চেনা লোকেরা মুগ্ধ হয়ে যায়। অনেকেই টাকা দেয়। এভাবেই হরিদা টাকাটা পেয়েছিলেন।

প্রশ্নঃ ‘বড়ো চমৎকার আজকে এই সন্ধ্যার চেহারা’ – সন্ধ্যার চেহারার বর্ণনা দাও।

উত্তরঃ সুবোধ ঘোষের ‘বহুরূপী’ গল্পে হরিদা কথক ও তাঁর বন্ধুদের এক অত্যাশ্চর্য খেলা দেখার আমন্ত্রণ জানান পাড়ার ধনী ব্যক্তি জগদীশবাবুর বাড়িতে। সেদিনের সন্ধ্যায় প্রকৃতিও যেন হরিদাকে সঙ্গ দিয়েছিল। স্নিগ্ধ ও উজ্জ্বল চাঁদের আলো দীর্ঘকাল পরে শহরের পরিবেশকে সুন্দর করে তুলেছিল। ফুরফুরে বাতাসে জগদীশবাবুর বাড়ির বাগানের গাছের পাতা ঝিরিঝিরি করে যেন কিছু বলতে চাইছিল। এমন মায়াময় পরিবেশেই আবির্ভাব হয়েছিল বিরাগীরূপী হরিদার।

প্রশ্নঃ ‘আপনি কি ভগবানের চেয়েও বড়ো?’ – কাকে একথা বলা হয়েছে? তাঁকে একথা বলা হয়েছে কেন?

উত্তরঃ সুবোধ ঘোষের ‘বহুরূপী’ গল্পে বিরাগীবেশী হরিদা জগদীশবাবুকে কথাগুলি বলেছিলেন।

      এক সন্ধ্যায় হরিদা বিরাগীর ছদ্মবেশে জগদীশবাবুর বাড়িতে হাজির হন। জগদীশবাবু তখন বারান্দায় চেয়ারের ওপর বসেছিলেন। বিরাগীকে দেখতে প্রশ্নোস্তৃত কথাটি। পেয়ে তিনি উঠে দাঁড়িয়ে তাঁকে স্বাগত জানান বলার কারণ। তখন বিরাগী আলোচ্য উক্তিটি করে জগদীশবাবুকে জানান, জগদীশবাবু নিশ্চয়ই সম্পত্তির অহংকারে নিজেকে ভগবানের চেয়েও বড়ো মনে করেন। তা না হলে তিনি অবশ্যই বিরাগীকে অভ্যর্থনা জানাতে বারান্দা থেকে নেমে আসতেন।

প্রশ্নঃ ‘তাতে যে আমার ঢং নষ্ট হয়ে যায়।’ – ‘ঢং’ বলতে এখানে কী বোঝানো হয়েছে? কীসে ঢং নষ্ট হয়ে যাবে?

উত্তরঃ উদ্ধৃতাংশে বিরাগী সন্ন্যাসীর ছদ্মবেশে হরিদাকে তাঁর যে আচরণ আত্মস্থ করতে হয়েছিল, তাকেই ঢং বলা হয়েছে। হরিদা জগদীশবাবুর বাড়িতে এমন একজন বিরাগী সন্ন্যাসী সেজে গিয়েছিলেন, যিনি সমস্ত পার্থিব বস্তুর প্রতি উদাসীন। এহেন সন্ন্যাসী যদি সামান্য একশো এক টাকার লোভ সংবরণ করতে না পারেন, তবে বিরাগীর আচরণের সঙ্গে তাঁর বক্তব্যের কোনো সাদৃশ্য থাকবে না। সম্পূর্ণ অভিনয়টিই মাঠে মারা যাবে। একেই ঢং নষ্ট হয়ে যাওয়া বলা হয়েছে। আসলে এক্ষেত্রে বহুরুপী হরিদার আচরণে তাঁর স্বরূপটি প্রকাশ পেয়েছিল।

প্রশ্নঃ ‘হরিদার উনানের হাঁড়িতে অনেক সময় শুধু জল ফোটে, ভাত ফোটে না।’ – হরিদার উপার্জনের উপায় কী ছিল? অনেক সময় তাঁর হাঁড়িতে ভাত না ফুটে কেবল জল ফোটে কেন?

উত্তরঃ সুবোধ ঘোষের ‘বহুরুপী’ গল্পের প্রধান চরিত্র হরিদা পেশায় ছিলেন বহুরূপী। মাঝে মাঝে বহুরূপী সেজে খেলা দেখিয়ে যা রোজগার হত, তা দিয়েই তিনি জীবিকানির্বাহ করতেন।

      হরিদা খুব গরিব মানুষ হলেও, গতে বাঁধা কাজ করায় তাঁর প্রাণের মধ্যেই যেন একটা বাধা ছিল। মনে করলে তিনি কোনো অফিসে বা দোকানে বিক্রিওয়ালার কাজ পেয়ে যেতেন। কিন্তু এ ধরনের কাজ তাঁর পছন্দ ছিল না। ঘড়ির কাঁটার সময় ধরে নিয়মমাফিক রোজ একটা চাকরি করতে যাওয়া হরিদার পক্ষে অসম্ভব ছিল। তাই তাঁর উনানের হাঁড়িতে অনেক সময়েই শুধু জল ফুটলেও, ভাত ফুটত না।

==============================================================

বহুরূপী(গল্প) থেকে আরোও প্রশ্ন ও উত্তর দেখুন :PART-2

বহুরূপী গল্প থেকে সম্পূর্ণ প্রশ্ন উত্তর আলোচনা-PART-3

=============================================================

রচনাধর্মী প্রশ্নোত্তর | বহুরূপী (গল্প) সুবোধ ঘোষ – মাধ্যমিক বাংলা প্রশ্ন ও উত্তর 

৪.১ ‘ গল্প শুনে খুব গম্ভীর হয়ে গেলেন হরিদা / -কোন্ 2 গল্পের কথা বলা হয়েছে ? গল্প শুনে হরিদার গম্ভীর হয়ে যাওয়ার কারণ বিশ্লেষণ করো । 

Ans: উদ্ধৃতাংশটি সুবোধ ঘোষের ‘ বহুরুপী ‘ গল্পের অংশ – বিশেষ । গল্পকথক ও তাঁর চার বন্ধু গল্পের কেন্দ্রীয় চরিত্র হরিদাকে জগদীশবাবুর বাড়িতে আগত সন্ন্যাসীর গল্প বলেছিলেন । সেই সন্ন্যাসী হিমালয়ের গুহায় বাস করতেন । তাঁর সারাবছরের খাদ্য বলতে একটি মাত্র হরীতকী । বয়স হাজারেরও বেশি । তাঁর পদধূলি পাওয়া দুর্লভ একমাত্র জগদীশবাবুরই সেই পদধূলি পাওয়ার সৌভাগ্য হয়েছিল । তাও আবার জগদীশবাবু যখন তাঁকে সোনার বোল লাগানো কাঠের খড়ম পরাতে গিয়েছিলেন সেই ফাঁকে তা সংগ্রহ করতে হয়েছিল । সেই সন্ন্যাসী বিদায় নেওয়ার সময় জগদীশবাবুর জোর করে দেওয়া একশো টাকার নোট সানন্দ চিত্তে গ্রহণ করেছিলেন । হওয়ার কারণ কথক ও তাঁর বন্ধুদের মুখে গল্প শুনে হরিদা গম্ভীর হয়ে যান । হরিদার এই গাম্ভীর্যের কারণ কথকরা বুঝে উঠতে পারেননি । তাঁদের সন্দেহ হয়েছিল হরিদার মাথায় নিশ্চয় নতুন কিছু মতলব এসেছে । তাঁদের এই ভাবনা বাস্তবায়িত হয় যখন হরিদা তাঁদের সন্ধ্যায় জগদীশবাবুর বাড়িতে খেলা দেখার আমন্ত্রণ জানান । তাঁর গম্ভীর হওয়ার পিছনে দুটি কারণ উঠে আসে । প্রথমত , জগদীশবাবুর বাড়িতে খেলা দেখিয়ে কিছু হাতাবার চিন্তায় নির্লোভ হরিদার মানবিক বিচ্যুতি । দ্বিতীয়ত , বিষয়সম্পদে নিরাসক্ত সন্ন্যাসীর দান গ্রহণের ব্যাপারটাকেও উড়িয়ে দেওয়া যায় না ।

2. ‘ হরিদার জীবনে সত্যিই একটা নাটকীয় বৈচিত্র্য আছে । – হরিদা কে ? তাঁর কর্মকাণ্ডের মধ্যে যে – নাটকীয় বৈচিত্র্য ধরা পড়েছে তা গল্প অনুসারে লেখো । 

Ans: প্রখ্যাত সাহিত্যিক সুবোধ ঘোষের ‘ বহুরূপী ’ গল্পের কেন্দ্রীয় চরিত্র হলেন হরিদা । গল্পে আমরা তাকে ‘ বহুরূপী হরিদার পরিচয় হিসেবেই দেখতে পাই । বহুরূপীর চরিত্র বর্ণময় । সেখানে নাটকীয়তা থাকবে সেটাই স্বাভাবিক । জীবনে নাটকীয় কিন্তু হরিদার ব্যক্তিগত জীবন ও জীবিকা উভয় বৈচিত্র্য ক্ষেত্রই নাটকীয় বৈচিত্র্যে ভরপুর । ব্যক্তি হরিদা খুবই গরিব মানুষ । ইচ্ছে করলে তিনি ছোটোখাটো কাজ জোগাড় করে আর পাঁচটা সাধারণ মানুষের মতো জীবনযাপন করতেই পারতেন । কিন্তু বাঁধাধরা গণ্ডিবদ্ধ জীবন হরিদার পছন্দ নয় । তাই উনানের হাঁড়িতে ভাতের বদলে জল ফুটলেও হরিদার সেই একঘেয়ে অভাবকে সহ্য করতে আপত্তি নেই ।

হরিদার পেশাগত জীবনও নাটকীয় বৈচিত্র্যে ভরা । তিনি পাগলের ছদ্মবেশে কখনও আতঙ্কের হল্লা সৃষ্টি করেছেন , কখনও আবার রূপসি বাইজির ছদ্মবেশে মানুষের হৃদয়ে দোলা লাগিয়েছেন কিংবা নকল পুলিশ সেজে ছাত্রদের আটকে রেখে মাস্টারমশাইয়ের কাছ থেকে ঘুষ আদায় করেছেন । হরিদার নাটকীয়তার চরম নিদর্শন মেলে জগদীশবাবুর বাড়িতে । সেখানে বিরাগীর ছদ্মবেশে তিনি সকলকে বিস্মিত জীবিকায় নাটকীয় বৈচিত্র্য করেছিলেন । নাটকীয়তার শেষ এখানেই নয় । ছদ্মবেশী বিরাগী অভিনয়ের অহংকারে ও ঢং নষ্ট হওয়ার ভয়ে জগদীশবাবুর দান গ্রহণ করেননি । তবে সেই তিনিই আবার অভিনয়ের পরে বকশিশ নেওয়ার চিন্তা থেকে কিন্তু সরে আসেননি ।

3. ‘ চমকে উঠলেন জগদীশবাবু / – জগদীশবাবুর পরিচয় দাও । তাঁর চমকে ওঠার কারণ আলোচনা করো । 

Ans: সুবোধ ঘোষের ‘ বহুরূপী ‘ গল্পে জগদীশবাবু একটি পার্শ্বচরিত্র । জগদীশবাবুর পরিচয় তিনি শিক্ষিত , মার্জিত ও ভদ্র , সৌম্য – শাস্ত চেহারার অধিকারী , ধনী হলেও কৃপণ । তাঁর জীবনের দুর্বলতা হল তাঁর অন্ধভক্তি । সুখশান্তির আশায় সাধুসন্ন্যাসী দেখলেই তাদের তিনি তুষ্ট করার চেষ্টা করতেন । এর জন্য অবশ্য তিনি মাঝেমধ্যেই ঠকেছেন ।

এক স্নিগ্ধ ও শান্ত জ্যোৎস্নালোকিত উজ্জ্বল সন্ধ্যায় জগদীশবাবু বারান্দার চেয়ারে বসেছিলেন । হঠাৎ বারান্দার সিঁড়ির দিকে তাকিয়ে তিনি অবাক হয়ে গিয়েছিলেন । তাঁর চোখের পাতা পড়ছিল না । কারণ সিঁড়ির কাছে এমন একজন দাঁড়িয়েছিলেন যিনি জটাজুটধারী , চমকে ওঠার কারণ হাতে কমণ্ডলু , চিমটে , মৃগচর্মের আসনসহ গৈরিক বসন পরিহিত কোনো সন্ন্যাসী নয় , তিনি একজন বিরাগী , যাঁর আদুড় গা , তার ওপরে একটি ধবধবে সাদা উত্তরীয় । পরনে ছোটো বহরের থান । তার মাথার শুকনো চুলগুলো বাতাসে উড়ছে , হাত – পা ধুলো মাখা , কাঁধে একটা ঝোলা , যার মধ্যে একটি মাত্র বই গীতা । জগদীশবাবুর তাঁকে দেখে । মনে হয়েছিল তিনি যেন জগতের সীমার ওপার থেকে হেঁটে চলে এসেছেন । তাঁর শীর্ণ শরীর দেখে মনে হচ্ছিল যেন অশরীরী এবং তাঁর চোখ থেকে .. ঝরে পড়ছিল উদাও শান্ত এক উজ্জ্বল দৃষ্টি ।

4. ‘ তাতে যে আমার ঢং নষ্ট হয়ে যাবে ।’— বস্তুা কোন্ প্রসঙ্গে এ কথা বলেছেন ? এই উক্তির আলোকে বক্তার চরিত্রবিশ্লেষণ করো ।

Ans: উদ্ধৃতিটি সুবোধ ঘোষের ‘ বহুরূপী ‘ গল্প থেকে গৃহীত । বক্তা হলেন গল্পের কেন্দ্রীয় চরিত্র বহুরূপী হরিদা । হরিদা জগদীশবাবুর বাড়িতে বিরাগীর ছদ্মবেশে খেলা দেখাতে গিয়ে প্রণামীর টাকা না নিয়ে ফিরে এসেছিলেন । অবাক হয়েছিলেন গল্পের কথক ও তাঁর বন্ধু অনাদি , ভবতোষরা অভাবী হরিদাকে টাকা না নেওয়ার প্রসঙ্গে প্রশ্ন করলে , হরিদা অভিনয়ের প্রতি শ্রদ্ধা এবং একজন আদর্শ শিল্পীর মর্যাদার প্রসঙ্গ তুলে কথাটি বলেছেন । হরিদা শুধুমাত্র পেশাগত জীবনে বহুরূপী নন , তাঁর ব্যক্তিগত জীবনও নাটকীয় বৈচিত্র্যে ভরা । আপাতদৃষ্টিতে সমাজে অবহেলিত এই পেশায় নিযুক্ত মানুষের মধ্যেও যে – সততা , নিষ্ঠা , শ্রদ্ধার মতো গুণগুলি বেঁচে বক্তার চরিত্রবিশ্লেষণ আছে তা লেখক দেখাতে চেয়েছেন এই গল্পে । অভাব হরিদার নিত্যসঙ্গী । হরিদা কিন্তু সেই অভাবকে দূরে সরিয়ে দিতে গতে বাঁধা জীবনের পথে পা বাড়াননি । এসব সম্ভব হয় একমাত্র তাঁর নির্লোভ ও সংযমী জীবনযাপনের জন্যই । তাই জগদীশবাবুর বাড়িতে বিরাগীর ছদ্মবেশে খেলা দেখাতে গিয়ে অভাবী হরিদা তাঁর দেওয়া সমস্ত সুযোগ প্রত্যাখ্যান করেন । কথক ও তাঁর বন্ধুরা যখন অভাবী হরিদাকে প্রণামী না – নেওয়ার জন্য কাঠগড়ায় তুলেছেন , হরিদা তখন শিল্প ও শিল্পীর প্রতি শ্রদ্ধা রেখে নির্লিপ্তভাবে বলেছেন , ‘ তাতে যে আমার ঢং নষ্ট হয়ে যাবে ।

5. ‘ আমি বিরাগী , রাগ নামে কোনো রিপু আমার নেই ।’— বক্তা কোন প্রসঙ্গে এ কথা বলেছেন ? এই উক্তির প্রেক্ষিতে বক্তার চরিত্র গল্পে যেভাবে বর্ণিত হয়েছে তা আলোচনা করো ।

Ans: প্রখ্যাত সাহিত্যিক সুবোধ ঘোষের ‘ বহুরূপী ‘ গল্পে উদ্ধৃত অংশটির বক্তা হলেন ছদ্মবেশী বিরাগী । হরিদা যখন বিরাগীর ছদ্মবেশে জগদীশবাবুর বাড়িতে গিয়েছিলেন , জগদীশবাবু প্রশ্নোধৃত অংশের তখন এগিয়ে এসে তাঁকে অভ্যর্থনা না – জানালে বিরাগী রুষ্ট হন । ভয় পেয়ে জগদীশবাবু অপরাধ স্বীকার করে নেন এবং বিরাগীকে অনুরোধ করেন তাঁর ওপর রাগ না করার জন্য । ছদ্মবেশী বিরাগী এই প্রসঙ্গেই উক্তিটি করেছেন ।

সন্ন্যাসীর চরিত্র প্রকৃতপক্ষে কেমন হওয়া উচিত এ কথা পাঠকদের বোঝাতেই লেখক যেন চরিত্রটি সৃষ্টি করেছেন । জগদীশবাবুর বাড়িতে হিমালয় থেকে আসা সন্ন্যাসীর পাশাপাশি বিরাগীর বস্তার চরিত্রবিশ্লেষণ চরিত্রটি রাখলে তা সহজেই অনুমান করা যায় । বিরাগী প্রথমে জগদীশবাবুর অহংকারে আঘাত করেছেন , তাঁকে অপরাধ স্বীকার করিয়েছেন । আবার সত্যিকার বিরাগীর মতো তাঁকে ক্ষমাও করেছেন । ভান্তের সেবার ইচ্ছাকে মান্যতা দিয়ে গ্রহণ করেছেন মাত্র এক গ্লাস জল । থাকার ও দানগ্রহণের অনুরোধ সবই নির্দ্বিধায় ত্যাগ করেছেন । তিনি । জগদীশবাবু উপদেশ শুনতে চাইলে তিনি স্বভাবসিদ্ধ ভঙ্গিতেই বলেছেন পরমেশ্বরের দেখা পেলেই সমস্ত ঐশ্বর্য পাওয়া যায় । তাঁকে তীর্থ ভ্রমণের অজুহাতে প্রণামী দিতে চাইলে এড়িয়ে যাওয়ার জন্য তিনি বলেন হৃদয়ের মধ্যেই তো সব তীর্থ । বিরাগী চরিত্রটি পূর্ণতা পায় তারই উক্তিতে , ‘ আমি যেমন আনায়াসে ধুলো মাড়িয়ে চলে যেতে পারি , তেমনি সোনাও মাড়িয়ে চলে যেতে পারি । ‘ সত্যিই তা করতে জগদীশবাবুর দেওয়া প্রণামীর টাকার থলিটা সিঁড়িতে পড়ে থাকলেও সেদিকে না তাকিয়ে তিনি চলে যান ।

6. বহুরূপী ‘ গল্পে জগদীশবাবুর চরিত্রটি ব্যাখ্যা করো ।

Ans: সুবোধ ঘোষ রচিত ‘ বহুরূপী ‘ গল্পের একটি পার্শ্বচরিত্র হল জগদীশবাবুর চরিত্রটি । চরিত্রটি সম্পর্কে খুব বেশি তথ্য রচনা মধ্যে পাওয়া না – গেলেও হরিদা চরিত্রের পরিস্ফুটনে জগদীশবাবুর চরিত্রটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা গ্রহণ করে ।

বাবুর কাহিনি থেকে জানা যায় যথেষ্ট অবস্থাপন্ন ধনী ব্যক্তি তিনি । বয়সে বেশ প্রবীণ । সাদা চুল , সাদা দাড়ি , সৌম্য , শান্ত চেহারা । তিনি ধনী মানুষ বটে , তবে বেশ কৃপণও । সাধুসন্ন্যাসীতে তাঁর ভক্তিভাব প্রবল । যদিও এই ভক্তিভাবের অন্তরালে কোথাও না কোথাও তাঁর ঐশ্বর্যের অহংকার কখনো কখনো দেখা মেলে । তাই কাহিনির মধ্যে আমরা দেখতে পাই , হিমালয় থেকে আগত সন্ন্যাসী যিনি কাউকে পায়ের ধুলো দিতে চান না , তাঁর পায়ের ধুলো সংগ্রহ করতে জগদীশবাবু কৌশল অবলম্বন করেন , সোনার বোল লাগানো কাঠের খড়ম নিজ হাতে এগিয়ে দিতে যান । জগদীশবাবু ঈশ্বর বিশ্বাসী , সেইজন্যই সাধুসন্ন্যাসীর সেবা তাঁর কাছে ঈশ্বরসেবার সমতুল্য । অবশ্য নিষ্কাম ঈশ্বরসেবার মনোবৃত্তি তাঁর নেই । নিজ সুখশান্তির সন্ধানেই বস্তুত তিনি ঈশ্বরবিশ্বাসী । সন্ন্যাসী – গোছের লোক দেখলেই তাকে খুশি করার চেষ্টা করেন , প্রয়োজনে কৌশলও অবলম্বন করেন । তাঁর এই মানসিকতার জন্যই ভণ্ড সন্ন্যাসীর পাল্লায় পড়ে তাঁকে বোকাও বনতে হয় । তাই বিরাগীর ছদ্মবেশে হরিদার কাছেও তিনি নতজানু হয়েছেন আশীর্বাদের অভিলাষে । ‘ বহুরূপী ‘ গল্পের কাহিনির নিয়ন্ত্রণে জগদীশবাবু চরিত্রের ভূমিকা অস্বীকার করার উপায় নেই । এই সংসারের সব কিছুই যে ‘ সং ‘ তা হরিদার বিরাগী সাজেই প্রকাশ পায় ; আর সেই বিরাগীকে কাহিনির গতি নিয়ন্ত্রক প্রকৃত সত্যে পরিণত করিয়েছেন জগদীশবাবু । মিথ্যে বহুরূপী বেশধারণকারী হরিদার বিরাগী রূপকে নতমস্তকে প্রণাম জানিয়ে কাহিনির ভাবসত্যকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন জগদীশবাবু । তাই জগদীশবাবু চরিত্রটি কাহিনির পার্শ্বচরিত্র হয়েও কাহিনির এক গুরুত্বপূর্ণ । চরিত্রে পরিণত হয়েছে ।

7. ‘ বহুরূপী ‘ গল্পে যে – হিমালয়বাসী সন্ন্যাসীর প্রসঙ্গ আছে , তার চরিত্রবিশ্লেষণ করো । 

Ans: ছোটোগল্পকার সুবোধ ঘোষ রচিত ‘ বহুরূপী ‘ গল্পে জগদীশবাবুর বাড়িতে আশ্রিত এক হিমালয়বাসী সন্ন্যাসীর কথা জানা যায় পাড়ার কিছু যুবকের মুখ থেকে । বড়োলোক জগদীশবাবুর বাড়িতে সন্ন্যাসী সাত দিন অবস্থান করেন । এই সন্ন্যাসী নাকি হিমালয়ের গুহাতে থাকেন । সারা বছরে একটি হরীতকী ছাড়া তিনি আর কিছু খান না । সন্ন্যাসীর বয়স নাকি হাজার বছরেরও বেশি । নিজের সম্পর্কে তাঁর উচ্চ ধারণা তাঁর ভিতরে এক ধরনের গৃহীসুলভ অহংবোধের জন্ম দিয়েছিল । তাই সাধারণ মানুষকে তাঁর পদধূলি নেওয়ারও অনুমতি তিনি দিতেন না । অথচ যে – সন্ন্যাসী সর্বস্বত্যাগী , তিনি কাঠের খড়মে লাগানো সোনার বোল দেখে আপ্লুত হয়ে পা বাড়িয়ে দেন জগদীশবাবুর দিকে । আবার হিমালয়বাসী সন্ন্যাসী জগদীশবাবুর দেওয়া একশো টাকা প্রণামীও প্রত্যাখ্যান করেন না , বরং মুচকি হাসির মধ্য দিয়ে তা গ্রহণ করে জগদীশবাবুকে বাধিত করেছেন । মোটের ওপর , সন্ন্যাসীর আচরণ ও তাঁর সম্পর্কে প্রাপ্ত তথ্যাবলির মধ্যে যে – বৈপরীত্য ও অসংগতি খুঁজে পাওয়া যায় , তার নিরিখে এ কথা স্পষ্ট যে , তিনি প্রকৃত সন্ন্যাসী ছিলেন না ।

8. ‘ এই শহরের জীবনে মাঝে মাঝে বেশ চমৎকার ঘটনা সৃষ্টি করেন বহুরূপী হরিদা – হরিদার সৃষ্ট চমৎকার ঘটনাগুলির বিবরণ দাও ।

Ans: বাংলা সাহিত্যের অন্যতম শ্রেষ্ঠ লেখক সুবোধ ঘোষের জীবন ছিল বর্ণময় । তাঁর লেখা ‘ বহুরূপী ‘ গল্পটি যেন তাঁর বর্ণময় চরিত্রের ফসল । হরিদার চরিত্রের মধ্যে লেখকের কর্মজীবনের বিভিন্ন অভিজ্ঞতার ছায়া পড়েছে । বাঁধাধরা জীবন পছন্দ নয় বলেই হরিদা বহুরুপীর জীবনকে বেছে নিয়েছিলেন । তাঁর চরিত্রে সত্যিই একটা নাটকীয় বৈচিত্রা ছিল । এই বৈচিত্র্যই তাঁর পেশা । এই বৈচিত্র্যকে কাজে লাগিয়েই হরিদা এই শহুরে জীবনে মাঝে মাঝে বেশ চমৎকার ঘটনা সৃষ্টি করতেন । তিনি একদিন দুপুরে চকের বাস স্ট্যান্ডে পাগলের ছদ্মবেশে আতঙ্কের হল্লা তুলেছিলেন । তাঁর মুখ থেকে লালা ঝরে পড়ছিল , দু – চোখ কটকটে লাল । কোমরে জড়ানো ছেঁড়া কম্বল , গলায় টিনের কৌটোর মালা , হাতে একটা থান ইট তুলে তিনি যাত্রীদের দিকে মাঝে মাঝে তেড়ে যাচ্ছিলেন । পরে বাস ড্রাইভার কাশীনাথের ধর্মকে অবশ্য পাগলের স্বরূপ সকলের কাছে পরিষ্কার হয়েছিল । আর – এক কর্মব্যস্ত সন্ধ্যার উজ্জ্বল আলোকে রূপসি বাইজির ছদ্মবেশে হরিদা তো সকলকে অবাক করে দিয়েছিলেন । সেদিনই হরিদা সবচেয়ে বেশি উপার্জন করেছিলেন । শুধু এখানেই শেষ নয় , দয়ালবাবুর লিচু বাগানে নকল পুলিশের বেশে মাস্টারমশাইয়ের কাছ থেকে ঘুষ আদায় ও পরে তাঁর প্রশংসা ছিল হরিদার জীবনে এক বড়ো প্রাপ্তি ।

9. ‘ বহুরূপী ‘ গল্পের নামকরণের সার্থকতা বিচার করো ।

Ans: নামকরণের সার্থকতা ‘ অংশটি দ্যাখো ।

10. ‘ বহুরূপী ‘ গল্পে হরিদা বহুরূপী হিসেবে কতখানি সফল ছিলেন , এবং তার ছদ্মবেশ বিশ্লেষণ করে বুঝিয়ে দাও । 

Ans: বাঁধাধরা জীবন পছন্দ নয় বলেই হরিদা বহুরুপীর জীবনকে বেছে নিয়েছিলেন । তাঁর চরিত্রে সত্যিই একটা নাটকীয় বৈচিত্র্য ছিল । এই বৈচিত্র্যই তাঁর পেশা । এই বৈচিত্র্যকে কাজে লাগিয়েই হরিদা এই শহুরে জীবনে মাঝে মাঝে বেশ চমৎকার ঘটনার সৃষ্টি করতেন । তিনি একদিন দুপুরে চকের বাস স্ট্যান্ডে পাগলের ছদ্মবেশে আতঙ্কের হল্লা তুলেছিলেন । তাঁর মুখ থেকে লালা ঝরে পড়ছিল , দু – চোখ কটকটে লাল । কোমরে জড়ানো ছেঁড়া কম্বল , গলায় টিনের কৌটোর মালা , হাতে একটা থান ইট তুলে সে যাত্রীদের দিকে মাঝে মাঝে তেড়ে যাচ্ছিলেন । পরে বাস ড্রাইভার কাশীনাথের ধমকে অবশ্য পাগলের স্বরূপ সকলের কাছে পরিষ্কার হয়েছিল । আর – এক কর্মব্যস্ত সন্ধ্যার উজ্জ্বল আলোকে রূপসি বাইজির ছদ্মবেশে হরিদা তো সকলকে অবাক করে দিয়েছিলেন । সেদিনই হরিদা সবচেয়ে বেশি উপার্জন করেছিলেন । শুধু এখানেই শেষ নয় , দয়ালবাবুর লিচু বাগানে নকল পুলিশের বেশে মাস্টারমশাইয়ের কাছ থেকে ঘুষ আদায় ও পরে তাঁর প্রশংসা ছিল হরিদার জীবনে এক বড়ো প্রাপ্তি । হরিদার নাটকীয়তার চরম নিদর্শন মেলে জগদীশবাবুর বাড়িতে । সেখানে বিরাগীর ছদ্মবেশে তিনি সকলকে বিস্মিত করেছিলেন । জগদীশবাবুর মনে হয়েছিল চন্দ্রালোকিত এই রাতে বিরাগী যেন জগতের সীমার ওপার থেকে হেঁটে এসেছেন । এমনকি অনাদি – ভবতোষরাও বিরাগী – রূপী হরিদার বেশভূষা ও কথাবার্তায় তাঁকে চিনতে ভুল করেছিলেন । আর জগদীশবাবুর দেওয়া টাকা প্রত্যাখ্যান করে ‘ বহুরূপী ‘ হরিদা বিরাগীর রূপকে দেন দেবতার পূর্ণতা এবং সর্বত্যাগীর প্রকৃত ঐশ্বর্য । তাই পাঠ্য গঙ্গে হরিদা বহুরূপী হিসেবে শুধু সফল নন , অন্যতম শ্রেষ্ঠ ।

11. আজ তোমাদের একট জবর খেলা দেখার / – বক্তার এই জবর খেলা দেখানোর উদ্দেশ্য কী ছিল ? শেষপর্যন্ত এই খেলার পরিণতিই বা কী হয়েছিল ? 

Ans: সুবোধ ঘোষের ‘ বহুরুপী ‘ গল্প থেকে উপরের উদ্ধৃতিটি নেওয়া । পাঠ্য কাহিনি অনুসারে গ্রামের বিখ্যাত ধনী , জনৈক জগদীশবাবুর বাড়িতে হিমালয়ের গুহা থেকে এক উঁচু দরের সন্ন্যাসীর আগমন ঘটে । বহুরূপী হরিদা পাড়ার ছেলেদের কাছ থেকে তাঁর সম্পর্কে বিভিন্ন ঘটনা শুনে টের পান যে , তিনি প্রকৃত সন্ন্যাসী নন । সর্বত্যাগী সন্ন্যাসীর প্রকৃত স্বরূপ কেমন হওয়া উচিত তা বোঝাতেই , এরপর হরিদা বিরাগী সেজে জগদীশবাবুর বাড়ি যাওয়ার পরিকল্পনা করেন । বিরাগীর ছদ্মবেশে হরিদা সকলকে বিস্মিত করেছিলেন । জ্যোৎস্নালোকিত রাতের স্নিগ্ধ পরিবেশে তাঁর আদুড় গায়ের ওপর সাদা উত্তরীয় এবং পরনে ছোটো বহরের থান আর হাওয়ায় উড়তে থাকা চুল ও কাঁধে ঝোলার মধ্যে থাকা গীতা— সব মিলিয়ে মনে হয়েছিল যেন তিনি জগতের সীমার ওপার থেকে হেঁটে এসেছেন । হরিদার চোখের উদাত্ত উজ্জ্বল দৃষ্টি , কণ্ঠস্বর ও মুখের ভাষায় ; জগদীশবাবুর হৃদয় করুণাময় সজল হয়ে উঠেছিল । তিনি এই সর্বত্যাগী বিরাগীকে তুষ্ট করতে তীর্থ ভ্রমণের অজুহাতে প্রণামী হিসেবে একশো এক টাকা নিবেদন করেন । কিন্তু বহুরূপী হরিদার অন্তরের বৈরাগ্য এবং নিজ শিল্পের প্রতি আন্তরিক সততার কারণে তিনি , সেই টাকার থলি হেলায় ফেলে দিয়ে চলে আসেন । তাতে যে তার ঢং নষ্ট হয়ে যেত । তবে সত্যিকারের বিরাগী সন্ন্যাসী দর্শন করানোর জন্য জগদীশবাবুর কাছ থেকে সামান্য বকশিশ আদায়ের দাবিটুকুকেই হরিদা , পাথেয় বলে স্থির করেছিলেন ।

12. “ বহুরূপী কেবল বহুরূপের কারবারী নয় , তাঁর এই বহুরুপের সাজ তাকে কখনো কখনো দেবত্বে উন্নীত করেছে ।’— মন্তব্যটি বিচার করো ? 

Ans: 10. নং প্রশ্নের উত্তর দেখ ।

13. বহুরুপীর জীবনের যে – মর্মান্তিক বেদনার কথা ‘ বহুরূপী ‘ গল্পের মাধ্যমে বোঝাতে চাওয়া হয়েছে , তা নিজের ভাষায় ব্যাখ্যা করো । 

অথবা , “ খাঁটি মানুষ তো নয় , এই বহুরূপীর জীবন এর বেশি কী আশা করতে পারে ? — বহুরূপী জীবনের এই ট্র্যাজেডি পাঠ্য ‘ বহুরূপী ‘ গল্প অবলম্বনে আলোচনা করো ।

Ans: সুবোধ ঘোষের ‘ বহুরূপী ‘ গল্পের প্রধান চরিত্র হরিদা এক আশ্চর্য মানুষ । তিনি গরিব হলেও কেবল পেটের দায়ে গতে বাঁধা কাজ করতে চান না । নির্লোভ , চিন্তাশীল , স্বাধীনচেতা ও শিল্পীমনের অধিকারী হরিদা , দৈনন্দিন অভাবের সঙ্গে অভ্যস্ত হলেও কাজ নামক দিনগত পাপক্ষয়ের থেকে শতহাত দূরে থাকতেই ভালোবাসেন । তাঁর জীবনের নাটকীয় বৈচিত্র্য হল , তিনি বহুরূপের কারবারি । মাঝে মাঝে তাকে কেমন উপোস করে কাটাতে হয় , তেমনই হঠাৎ একদিন তিনি বিচিত্র ছদ্মবেশে অপরুপ হয়ে রাস্তায় বেরিয়ে পড়েন । কখনও পাগল সেজে হরিদা চকের বাস স্ট্যান্ডের কাছে আতঙ্কের হল্লা তোলেন , আবার কখনও সন্ধ্যার মায়াময় আলোয় রূপসি বাইজি সেজে উপস্থিত সকলকে স্তম্ভিত করে দেন । নিজের পেশায় হরিদা এতটাই পারদর্শী যে , স্থানীয় স্কুলের মাস্টারমশাইও তাঁকে নকল পুলিশ বলে চিনতেই পারেন না । এ হেন হরিদা পাড়ার ছেলেদের মুখে জগদীশবাবুর বাড়িতে আসা ভণ্ড সন্ন্যাসীর গল্প শুনে , তাদের সত্যিকারের বিরাগী সন্ন্যাসী দর্শন করানোর কথা ভাবেন । সেই চন্দ্রালোকিত রাতে জগদীশবাবুর বাড়িতে হাজির হয় এক অন্য হরিদা । তিনি সাজহীন – অলংকারহীন এক সামান্য বিরাগী । তবে তাঁর আচরণ , মুখের ভাষা , তত্ত্বজ্ঞান এবং উদাত্ত উজ্জ্বল চোখের দৃষ্টি সবাইকে মুগ্ধ ও উর্দুবেল করে তোলে । প্রকৃত সন্ন্যাসীর মতোই জগদীশবাবুর দেওয়া একশো এক টাকা তিনি হেলায় ফেলে দিয়ে চলে আসেন । কারণ প্রকৃত বৈরাগ্যের অধিকারী হরিদার কাছে তখন শিল্প ও জীবন মিলেমিশে একাকার হয়ে যায় । আসলে তিনি শুধু নিছক বহুরূপের কারবারি মাত্র নন , সততা – শিল্পীস্বভাব ও জীবনদর্শনে একজন অসামান্য মানুষ । কিন্তু সমাজে সামান্য হরি বহুরূপীর মধ্যে লুকিয়ে থাকা এমন দেবতাসুলভ অসামান্যতা কোনোদিন তার প্রাপ্য মর্যাদা পায় না । জীবনের এই মর্মান্তিক বেদনা – যন্ত্রণা ও ট্র্যাজেডিকে মেনে নিয়েই , তাই নির্লিপ্তভাবে তিনি কেবল বকশিশটুকুই আশা করেন ।

14. জগদীশবাবুর বাড়ি হরিদা বিরাগী সেজে যাওয়ার পর যে ঘটনা ঘটেছিল , তা বর্ণনা করো । 

Ans: সুবোধ ঘোষের ‘ বহুরূপী ‘ গল্প অনুসারে এক স্নিগ্ধ ও শান্ত জ্যোৎস্নালোকিত উজ্জ্বল সন্ধ্যায় জগদীশবাবু বারান্দার চেয়ারে বসেছিলেন । হঠাৎ বারান্দার সিঁড়ির দিকে তাকিয়ে তিনি অবাক হয়ে গিয়েছিলেন । কারণ সিঁড়ির কাছে এমন একজন দাঁড়িয়েছিলেন যিনি জটাজুটধারী , হাতে কমণ্ডলু , চিমটে , মৃগচর্মের আসনসহ গৈরিক বসন পরিহিত কোনো সন্ন্যাসী নয় , তিনি একজন বিরাগী , যার আদুড় গা , তার উপরে একটি ধবধবে সাদা উত্তরীয় । পরনে ছোটো বহরের থান । তার শীর্ণ শরীর দেখে মনে হচ্ছিল যেন অশরীরী এবং তাঁর চোখ থেকে ঝরে পড়ছিল উদাত্ত শান্ত এক উজ্জ্বল দৃষ্টি । ভক্তের সেবার ইচ্ছাকে মান্যতা দিয়ে গ্রহণ করেছেন মাত্র এক গ্লাস জল । থাকার ও দান গ্রহণের অনুরোধ সবই নির্দ্বিধায় ত্যাগ করেছেন তিনি । জগদীশবাবু উপদেশ শুনতে চাইলে তিনি স্বভাবসিদ্ধ ভঙ্গিতেই বলেছেন । পরমেশ্বরের দেখা পেলেই সমস্ত ঐশ্বর্য পাওয়া যায় । তাঁকে তীর্থ ভ্রমণের অজুহাতে প্রণামী দিতে চাইলে এড়িয়ে যাওয়ার জন্য তিনি বলেন হৃদয়ের মধ্যেই তো সব তীর্থ । বিরাগী চরিত্রটি পূর্ণতা পায় তাঁরই উক্তিতে , ‘ আমি যেমন অনায়াসে ধুলো মাড়িয়ে চলে যেতে পারি , তেমনই অনায়াসে সোনাও মাড়িয়ে চলে যেতে পারি । ‘ সত্যিই তা করতে জগদীশবাবুর দেওয়া প্রণামীর টাকার থলিটা সিঁড়িতে পড়ে থাকলেও সেদিকে না তাকিয়ে তিনি চলে যান ।

==============================================================

বহুরূপী(গল্প) থেকে আরোও প্রশ্ন ও উত্তর দেখুন :PART-2

বহুরূপী গল্প থেকে সম্পূর্ণ প্রশ্ন উত্তর আলোচনা-PART-3

=============================================================

রচনাধর্মী প্রশ্নোত্তর | বহুরূপী (গল্প) সুবোধ ঘোষ – মাধ্যমিক বাংলা সাজেশন |  

1. ‘ বহুরূপী ‘ গল্পে যে – হিমালয়বাসী সন্ন্যাসীর প্রসঙ্গ আছে , তার চরিত্রবিশ্লেষণ করো । 

Answer: ছোটোগল্পকার সুবোধ ঘোষ রচিত ‘ বহুরূপী ‘ গল্পে জগদীশবাবুর বাড়িতে আশ্রিত এক হিমালয়বাসী সন্ন্যাসীর কথা জানা যায় পাড়ার কিছু যুবকের মুখ থেকে । বড়োলোক জগদীশবাবুর বাড়িতে সন্ন্যাসী সাত দিন অবস্থান করেন । এই সন্ন্যাসী নাকি হিমালয়ের গুহাতে থাকেন । সারা বছরে একটি হরীতকী ছাড়া তিনি আর কিছু খান না । সন্ন্যাসীর বয়স নাকি হাজার বছরেরও বেশি । নিজের সম্পর্কে তাঁর উচ্চ ধারণা তাঁর ভিতরে এক ধরনের গৃহীসুলভ অহংবোধের জন্ম দিয়েছিল । তাই সাধারণ মানুষকে তাঁর পদধূলি নেওয়ারও অনুমতি তিনি দিতেন না । অথচ যে – সন্ন্যাসী সর্বস্বত্যাগী , তিনি কাঠের খড়মে লাগানো সোনার বোল দেখে আপ্লুত হয়ে পা বাড়িয়ে দেন জগদীশবাবুর দিকে । আবার হিমালয়বাসী সন্ন্যাসী জগদীশবাবুর দেওয়া একশো টাকা প্রণামীও প্রত্যাখ্যান করেন না , বরং মুচকি হাসির মধ্য দিয়ে তা গ্রহণ করে জগদীশবাবুকে বাধিত করেছেন । মোটের ওপর , সন্ন্যাসীর আচরণ ও তাঁর সম্পর্কে প্রাপ্ত তথ্যাবলির মধ্যে যে – বৈপরীত্য ও অসংগতি খুঁজে পাওয়া যায় , তার নিরিখে এ কথা স্পষ্ট যে , তিনি প্রকৃত সন্ন্যাসী ছিলেন না ।

2. ‘ বহুরূপী ‘ গল্পে হরিদা বহুরূপী হিসেবে কতখানি সফল ছিলেন , এবং তার ছদ্মবেশ বিশ্লেষণ করে বুঝিয়ে দাও । 

Answer: বাঁধাধরা জীবন পছন্দ নয় বলেই হরিদা বহুরুপীর জীবনকে বেছে নিয়েছিলেন । তাঁর চরিত্রে সত্যিই একটা নাটকীয় বৈচিত্র্য ছিল । এই বৈচিত্র্যই তাঁর পেশা । এই বৈচিত্র্যকে কাজে লাগিয়েই হরিদা এই শহুরে জীবনে মাঝে মাঝে বেশ চমৎকার ঘটনার সৃষ্টি করতেন । তিনি একদিন দুপুরে চকের বাস স্ট্যান্ডে পাগলের ছদ্মবেশে আতঙ্কের হল্লা তুলেছিলেন । তাঁর মুখ থেকে লালা ঝরে পড়ছিল , দু – চোখ কটকটে লাল । কোমরে জড়ানো ছেঁড়া কম্বল , গলায় টিনের কৌটোর মালা , হাতে একটা থান ইট তুলে সে যাত্রীদের দিকে মাঝে মাঝে তেড়ে যাচ্ছিলেন । পরে বাস ড্রাইভার কাশীনাথের ধমকে অবশ্য পাগলের স্বরূপ সকলের কাছে পরিষ্কার হয়েছিল । আর – এক কর্মব্যস্ত সন্ধ্যার উজ্জ্বল আলোকে রূপসি বাইজির ছদ্মবেশে হরিদা তো সকলকে অবাক করে দিয়েছিলেন । সেদিনই হরিদা সবচেয়ে বেশি উপার্জন করেছিলেন । শুধু এখানেই শেষ নয় , দয়ালবাবুর লিচু বাগানে নকল পুলিশের বেশে মাস্টারমশাইয়ের কাছ থেকে ঘুষ আদায় ও পরে তাঁর প্রশংসা ছিল হরিদার জীবনে এক বড়ো প্রাপ্তি । হরিদার নাটকীয়তার চরম নিদর্শন মেলে জগদীশবাবুর বাড়িতে । সেখানে বিরাগীর ছদ্মবেশে তিনি সকলকে বিস্মিত করেছিলেন । জগদীশবাবুর মনে হয়েছিল চন্দ্রালোকিত এই রাতে বিরাগী যেন জগতের সীমার ওপার থেকে হেঁটে এসেছেন । এমনকি অনাদি – ভবতোষরাও বিরাগী – রূপী হরিদার বেশভূষা ও কথাবার্তায় তাঁকে চিনতে ভুল করেছিলেন । আর জগদীশবাবুর দেওয়া টাকা প্রত্যাখ্যান করে ‘ বহুরূপী ‘ হরিদা বিরাগীর রূপকে দেন দেবতার পূর্ণতা এবং সর্বত্যাগীর প্রকৃত ঐশ্বর্য । তাই পাঠ্য গঙ্গে হরিদা বহুরূপী হিসেবে শুধু সফল নন , অন্যতম শ্রেষ্ঠ ।

3. ‘ এই শহরের জীবনে মাঝে মাঝে বেশ চমৎকার ঘটনা সৃষ্টি করেন বহুরূপী হরিদা – হরিদার সৃষ্ট চমৎকার ঘটনাগুলির বিবরণ দাও ।

Answer: বাংলা সাহিত্যের অন্যতম শ্রেষ্ঠ লেখক সুবোধ ঘোষের জীবন ছিল বর্ণময় । তাঁর লেখা ‘ বহুরূপী ‘ গল্পটি যেন তাঁর বর্ণময় চরিত্রের ফসল । হরিদার চরিত্রের মধ্যে লেখকের কর্মজীবনের বিভিন্ন অভিজ্ঞতার ছায়া পড়েছে । বাঁধাধরা জীবন পছন্দ নয় বলেই হরিদা বহুরুপীর জীবনকে বেছে নিয়েছিলেন । তাঁর চরিত্রে সত্যিই একটা নাটকীয় বৈচিত্রা ছিল । এই বৈচিত্র্যই তাঁর পেশা । এই বৈচিত্র্যকে কাজে লাগিয়েই হরিদা এই শহুরে জীবনে মাঝে মাঝে বেশ চমৎকার ঘটনা সৃষ্টি করতেন । তিনি একদিন দুপুরে চকের বাস স্ট্যান্ডে পাগলের ছদ্মবেশে আতঙ্কের হল্লা তুলেছিলেন । তাঁর মুখ থেকে লালা ঝরে পড়ছিল , দু – চোখ কটকটে লাল । কোমরে জড়ানো ছেঁড়া কম্বল , গলায় টিনের কৌটোর মালা , হাতে একটা থান ইট তুলে তিনি যাত্রীদের দিকে মাঝে মাঝে তেড়ে যাচ্ছিলেন । পরে বাস ড্রাইভার কাশীনাথের ধর্মকে অবশ্য পাগলের স্বরূপ সকলের কাছে পরিষ্কার হয়েছিল । আর – এক কর্মব্যস্ত সন্ধ্যার উজ্জ্বল আলোকে রূপসি বাইজির ছদ্মবেশে হরিদা তো সকলকে অবাক করে দিয়েছিলেন । সেদিনই হরিদা সবচেয়ে বেশি উপার্জন করেছিলেন । শুধু এখানেই শেষ নয় , দয়ালবাবুর লিচু বাগানে নকল পুলিশের বেশে মাস্টারমশাইয়ের কাছ থেকে ঘুষ আদায় ও পরে তাঁর প্রশংসা ছিল হরিদার জীবনে এক বড়ো প্রাপ্তি ।

4. আজ তোমাদের একট জবর খেলা দেখার / – বক্তার এই জবর খেলা দেখানোর উদ্দেশ্য কী ছিল ? শেষপর্যন্ত এই খেলার পরিণতিই বা কী হয়েছিল ? 

Answer: সুবোধ ঘোষের ‘ বহুরুপী ‘ গল্প থেকে উপরের উদ্ধৃতিটি নেওয়া । পাঠ্য কাহিনি অনুসারে গ্রামের বিখ্যাত ধনী , জনৈক জগদীশবাবুর বাড়িতে হিমালয়ের গুহা থেকে এক উঁচু দরের সন্ন্যাসীর আগমন ঘটে । বহুরূপী হরিদা পাড়ার ছেলেদের কাছ থেকে তাঁর সম্পর্কে বিভিন্ন ঘটনা শুনে টের পান যে , তিনি প্রকৃত সন্ন্যাসী নন । সর্বত্যাগী সন্ন্যাসীর প্রকৃত স্বরূপ কেমন হওয়া উচিত তা বোঝাতেই , এরপর হরিদা বিরাগী সেজে জগদীশবাবুর বাড়ি যাওয়ার পরিকল্পনা করেন । বিরাগীর ছদ্মবেশে হরিদা সকলকে বিস্মিত করেছিলেন । জ্যোৎস্নালোকিত রাতের স্নিগ্ধ পরিবেশে তাঁর আদুড় গায়ের ওপর সাদা উত্তরীয় এবং পরনে ছোটো বহরের থান আর হাওয়ায় উড়তে থাকা চুল ও কাঁধে ঝোলার মধ্যে থাকা গীতা— সব মিলিয়ে মনে হয়েছিল যেন তিনি জগতের সীমার ওপার থেকে হেঁটে এসেছেন । হরিদার চোখের উদাত্ত উজ্জ্বল দৃষ্টি , কণ্ঠস্বর ও মুখের ভাষায় ; জগদীশবাবুর হৃদয় করুণাময় সজল হয়ে উঠেছিল । তিনি এই সর্বত্যাগী বিরাগীকে তুষ্ট করতে তীর্থ ভ্রমণের অজুহাতে প্রণামী হিসেবে একশো এক টাকা নিবেদন করেন । কিন্তু বহুরূপী হরিদার অন্তরের বৈরাগ্য এবং নিজ শিল্পের প্রতি আন্তরিক সততার কারণে তিনি , সেই টাকার থলি হেলায় ফেলে দিয়ে চলে আসেন । তাতে যে তার ঢং নষ্ট হয়ে যেত । তবে সত্যিকারের বিরাগী সন্ন্যাসী দর্শন করানোর জন্য জগদীশবাবুর কাছ থেকে সামান্য বকশিশ আদায়ের দাবিটুকুকেই হরিদা , পাথেয় বলে স্থির করেছিলেন ।

5. বহুরুপীর জীবনের যে – মর্মান্তিক বেদনার কথা ‘ বহুরূপী ‘ গল্পের মাধ্যমে বোঝাতে চাওয়া হয়েছে , তা নিজের ভাষায় ব্যাখ্যা করো । 

অথবা , “ খাঁটি মানুষ তো নয় , এই বহুরূপীর জীবন এর বেশি কী আশা করতে পারে ? — বহুরূপী জীবনের এই ট্র্যাজেডি পাঠ্য ‘ বহুরূপী ‘ গল্প অবলম্বনে আলোচনা করো ।

Answer: সুবোধ ঘোষের ‘ বহুরূপী ‘ গল্পের প্রধান চরিত্র হরিদা এক আশ্চর্য মানুষ । তিনি গরিব হলেও কেবল পেটের দায়ে গতে বাঁধা কাজ করতে চান না । নির্লোভ , চিন্তাশীল , স্বাধীনচেতা ও শিল্পীমনের অধিকারী হরিদা , দৈনন্দিন অভাবের সঙ্গে অভ্যস্ত হলেও কাজ নামক দিনগত পাপক্ষয়ের থেকে শতহাত দূরে থাকতেই ভালোবাসেন । তাঁর জীবনের নাটকীয় বৈচিত্র্য হল , তিনি বহুরূপের কারবারি । মাঝে মাঝে তাকে কেমন উপোস করে কাটাতে হয় , তেমনই হঠাৎ একদিন তিনি বিচিত্র ছদ্মবেশে অপরুপ হয়ে রাস্তায় বেরিয়ে পড়েন । কখনও পাগল সেজে হরিদা চকের বাস স্ট্যান্ডের কাছে আতঙ্কের হল্লা তোলেন , আবার কখনও সন্ধ্যার মায়াময় আলোয় রূপসি বাইজি সেজে উপস্থিত সকলকে স্তম্ভিত করে দেন । নিজের পেশায় হরিদা এতটাই পারদর্শী যে , স্থানীয় স্কুলের মাস্টারমশাইও তাঁকে নকল পুলিশ বলে চিনতেই পারেন না । এ হেন হরিদা পাড়ার ছেলেদের মুখে জগদীশবাবুর বাড়িতে আসা ভণ্ড সন্ন্যাসীর গল্প শুনে , তাদের সত্যিকারের বিরাগী সন্ন্যাসী দর্শন করানোর কথা ভাবেন । সেই চন্দ্রালোকিত রাতে জগদীশবাবুর বাড়িতে হাজির হয় এক অন্য হরিদা । তিনি সাজহীন – অলংকারহীন এক সামান্য বিরাগী । তবে তাঁর আচরণ , মুখের ভাষা , তত্ত্বজ্ঞান এবং উদাত্ত উজ্জ্বল চোখের দৃষ্টি সবাইকে মুগ্ধ ও উর্দুবেল করে তোলে । প্রকৃত সন্ন্যাসীর মতোই জগদীশবাবুর দেওয়া একশো এক টাকা তিনি হেলায় ফেলে দিয়ে চলে আসেন । কারণ প্রকৃত বৈরাগ্যের অধিকারী হরিদার কাছে তখন শিল্প ও জীবন মিলেমিশে একাকার হয়ে যায় । আসলে তিনি শুধু নিছক বহুরূপের কারবারি মাত্র নন , সততা – শিল্পীস্বভাব ও জীবনদর্শনে একজন অসামান্য মানুষ । কিন্তু সমাজে সামান্য হরি বহুরূপীর মধ্যে লুকিয়ে থাকা এমন দেবতাসুলভ অসামান্যতা কোনোদিন তার প্রাপ্য মর্যাদা পায় না । জীবনের এই মর্মান্তিক বেদনা – যন্ত্রণা ও ট্র্যাজেডিকে মেনে নিয়েই , তাই নির্লিপ্তভাবে তিনি কেবল বকশিশটুকুই আশা করেন । 

6. জগদীশবাবুর বাড়ি হরিদা বিরাগী সেজে যাওয়ার পর যে ঘটনা ঘটেছিল , তা বর্ণনা করো । 

Answer: সুবোধ ঘোষের ‘ বহুরূপী ‘ গল্প অনুসারে এক স্নিগ্ধ ও শান্ত জ্যোৎস্নালোকিত উজ্জ্বল সন্ধ্যায় জগদীশবাবু বারান্দার চেয়ারে বসেছিলেন । হঠাৎ বারান্দার সিঁড়ির দিকে তাকিয়ে তিনি অবাক হয়ে গিয়েছিলেন । কারণ সিঁড়ির কাছে এমন একজন দাঁড়িয়েছিলেন যিনি জটাজুটধারী , হাতে কমণ্ডলু , চিমটে , মৃগচর্মের আসনসহ গৈরিক বসন পরিহিত কোনো সন্ন্যাসী নয় , তিনি একজন বিরাগী , যার আদুড় গা , তার উপরে একটি ধবধবে সাদা উত্তরীয় । পরনে ছোটো বহরের থান । তার শীর্ণ শরীর দেখে মনে হচ্ছিল যেন অশরীরী এবং তাঁর চোখ থেকে ঝরে পড়ছিল উদাত্ত শান্ত এক উজ্জ্বল দৃষ্টি । ভক্তের সেবার ইচ্ছাকে মান্যতা দিয়ে গ্রহণ করেছেন মাত্র এক গ্লাস জল । থাকার ও দান গ্রহণের অনুরোধ সবই নির্দ্বিধায় ত্যাগ করেছেন তিনি । জগদীশবাবু উপদেশ শুনতে চাইলে তিনি স্বভাবসিদ্ধ ভঙ্গিতেই বলেছেন । পরমেশ্বরের দেখা পেলেই সমস্ত ঐশ্বর্য পাওয়া যায় । তাঁকে তীর্থ ভ্রমণের অজুহাতে প্রণামী দিতে চাইলে এড়িয়ে যাওয়ার জন্য তিনি বলেন হৃদয়ের মধ্যেই তো সব তীর্থ । বিরাগী চরিত্রটি পূর্ণতা পায় তাঁরই উক্তিতে , ‘ আমি যেমন অনায়াসে ধুলো মাড়িয়ে চলে যেতে পারি , তেমনই অনায়াসে সোনাও মাড়িয়ে চলে যেতে পারি । ‘ সত্যিই তা করতে জগদীশবাবুর দেওয়া প্রণামীর টাকার থলিটা সিঁড়িতে পড়ে থাকলেও সেদিকে না তাকিয়ে তিনি চলে যান ।

7. ‘ গল্প শুনে খুব গম্ভীর হয়ে গেলেন হরিদা / -কোন্ গল্পের কথা বলা হয়েছে ? গল্প শুনে হরিদার গম্ভীর হয়ে যাওয়ার কারণ বিশ্লেষণ করো । 

Answer: উদ্ধৃতাংশটি সুবোধ ঘোষের ‘ বহুরুপী ‘ গল্পের অংশ – বিশেষ । গল্পকথক ও তাঁর চার বন্ধু গল্পের কেন্দ্রীয় চরিত্র হরিদাকে জগদীশবাবুর বাড়িতে আগত সন্ন্যাসীর গল্প বলেছিলেন । সেই সন্ন্যাসী হিমালয়ের গুহায় বাস করতেন । তাঁর সারাবছরের খাদ্য বলতে একটি মাত্র হরীতকী । বয়স হাজারেরও বেশি । তাঁর পদধূলি পাওয়া দুর্লভ একমাত্র জগদীশবাবুরই সেই পদধূলি পাওয়ার সৌভাগ্য হয়েছিল । তাও আবার জগদীশবাবু যখন তাঁকে সোনার বোল লাগানো কাঠের খড়ম পরাতে গিয়েছিলেন সেই ফাঁকে তা সংগ্রহ করতে হয়েছিল । সেই সন্ন্যাসী বিদায় নেওয়ার সময় জগদীশবাবুর জোর করে দেওয়া একশো টাকার নোট সানন্দ চিত্তে গ্রহণ করেছিলেন । হওয়ার কারণ কথক ও তাঁর বন্ধুদের মুখে গল্প শুনে হরিদা গম্ভীর হয়ে যান । হরিদার এই গাম্ভীর্যের কারণ কথকরা বুঝে উঠতে পারেননি । তাঁদের সন্দেহ হয়েছিল হরিদার মাথায় নিশ্চয় নতুন কিছু মতলব এসেছে । তাঁদের এই ভাবনা বাস্তবায়িত হয় যখন হরিদা তাঁদের সন্ধ্যায় জগদীশবাবুর বাড়িতে খেলা দেখার আমন্ত্রণ জানান । তাঁর গম্ভীর হওয়ার পিছনে দুটি কারণ উঠে আসে । প্রথমত , জগদীশবাবুর বাড়িতে খেলা দেখিয়ে কিছু হাতাবার চিন্তায় নির্লোভ হরিদার মানবিক বিচ্যুতি । দ্বিতীয়ত , বিষয়সম্পদে নিরাসক্ত সন্ন্যাসীর দান গ্রহণের ব্যাপারটাকেও উড়িয়ে দেওয়া যায় না ।

8. ‘ চমকে উঠলেন জগদীশবাবু / – জগদীশবাবুর পরিচয় দাও । তাঁর চমকে ওঠার কারণ আলোচনা করো । 

Answer: সুবোধ ঘোষের ‘ বহুরূপী ‘ গল্পে জগদীশবাবু একটি পার্শ্বচরিত্র । জগদীশবাবুর পরিচয় তিনি শিক্ষিত , মার্জিত ও ভদ্র , সৌম্য – শাস্ত চেহারার অধিকারী , ধনী হলেও কৃপণ । তাঁর জীবনের দুর্বলতা হল তাঁর অন্ধভক্তি । সুখশান্তির আশায় সাধুসন্ন্যাসী দেখলেই তাদের তিনি তুষ্ট করার চেষ্টা করতেন । এর জন্য অবশ্য তিনি মাঝেমধ্যেই ঠকেছেন । 

  এক স্নিগ্ধ ও শান্ত জ্যোৎস্নালোকিত উজ্জ্বল সন্ধ্যায় জগদীশবাবু বারান্দার চেয়ারে বসেছিলেন । হঠাৎ বারান্দার সিঁড়ির দিকে তাকিয়ে তিনি অবাক হয়ে গিয়েছিলেন । তাঁর চোখের পাতা পড়ছিল না । কারণ সিঁড়ির কাছে এমন একজন দাঁড়িয়েছিলেন যিনি জটাজুটধারী , চমকে ওঠার কারণ হাতে কমণ্ডলু , চিমটে , মৃগচর্মের আসনসহ গৈরিক বসন পরিহিত কোনো সন্ন্যাসী নয় , তিনি একজন বিরাগী , যাঁর আদুড় গা , তার ওপরে একটি ধবধবে সাদা উত্তরীয় । পরনে ছোটো বহরের থান । তার মাথার শুকনো চুলগুলো বাতাসে উড়ছে , হাত – পা ধুলো মাখা , কাঁধে একটা ঝোলা , যার মধ্যে একটি মাত্র বই গীতা । জগদীশবাবুর তাঁকে দেখে । মনে হয়েছিল তিনি যেন জগতের সীমার ওপার থেকে হেঁটে চলে এসেছেন । তাঁর শীর্ণ শরীর দেখে মনে হচ্ছিল যেন অশরীরী এবং তাঁর চোখ থেকে .. ঝরে পড়ছিল উদাও শান্ত এক উজ্জ্বল দৃষ্টি । 

9. ‘ তাতে যে আমার ঢং নষ্ট হয়ে যাবে ।’— বস্তুা কোন্ প্রসঙ্গে এ কথা বলেছেন ? এই উক্তির আলোকে বক্তার চরিত্রবিশ্লেষণ করো ।

Answer: উদ্ধৃতিটি সুবোধ ঘোষের ‘ বহুরূপী ‘ গল্প থেকে গৃহীত । বক্তা হলেন গল্পের কেন্দ্রীয় চরিত্র বহুরূপী হরিদা । হরিদা জগদীশবাবুর বাড়িতে বিরাগীর ছদ্মবেশে খেলা দেখাতে গিয়ে প্রণামীর টাকা না নিয়ে ফিরে এসেছিলেন । অবাক হয়েছিলেন গল্পের কথক ও তাঁর বন্ধু অনাদি , ভবতোষরা অভাবী হরিদাকে টাকা না নেওয়ার প্রসঙ্গে প্রশ্ন করলে , হরিদা অভিনয়ের প্রতি শ্রদ্ধা এবং একজন আদর্শ শিল্পীর মর্যাদার প্রসঙ্গ তুলে কথাটি বলেছেন । হরিদা শুধুমাত্র পেশাগত জীবনে বহুরূপী নন , তাঁর ব্যক্তিগত জীবনও নাটকীয় বৈচিত্র্যে ভরা । আপাতদৃষ্টিতে সমাজে অবহেলিত এই পেশায় নিযুক্ত মানুষের মধ্যেও যে – সততা , নিষ্ঠা , শ্রদ্ধার মতো গুণগুলি বেঁচে বক্তার চরিত্রবিশ্লেষণ আছে তা লেখক দেখাতে চেয়েছেন এই গল্পে । অভাব হরিদার নিত্যসঙ্গী । হরিদা কিন্তু সেই অভাবকে দূরে সরিয়ে দিতে গতে বাঁধা জীবনের পথে পা বাড়াননি । এসব সম্ভব হয় একমাত্র তাঁর নির্লোভ ও সংযমী জীবনযাপনের জন্যই । তাই জগদীশবাবুর বাড়িতে বিরাগীর ছদ্মবেশে খেলা দেখাতে গিয়ে অভাবী হরিদা তাঁর দেওয়া সমস্ত সুযোগ প্রত্যাখ্যান করেন । কথক ও তাঁর বন্ধুরা যখন অভাবী হরিদাকে প্রণামী না – নেওয়ার জন্য কাঠগড়ায় তুলেছেন , হরিদা তখন শিল্প ও শিল্পীর প্রতি শ্রদ্ধা রেখে নির্লিপ্তভাবে বলেছেন , ‘ তাতে যে আমার ঢং নষ্ট হয়ে যাবে ।

10. ‘ আমি বিরাগী , রাগ নামে কোনো রিপু আমার নেই ।’— বক্তা কোন প্রসঙ্গে এ কথা বলেছেন ? এই উক্তির প্রেক্ষিতে বক্তার চরিত্র গল্পে যেভাবে বর্ণিত হয়েছে তা আলোচনা করো ।

Answer: প্রখ্যাত সাহিত্যিক সুবোধ ঘোষের ‘ বহুরূপী ‘ গল্পে উদ্ধৃত অংশটির বক্তা হলেন ছদ্মবেশী বিরাগী । হরিদা যখন বিরাগীর ছদ্মবেশে জগদীশবাবুর বাড়িতে গিয়েছিলেন , জগদীশবাবু প্রশ্নোধৃত অংশের তখন এগিয়ে এসে তাঁকে অভ্যর্থনা না – জানালে বিরাগী রুষ্ট হন । ভয় পেয়ে জগদীশবাবু অপরাধ স্বীকার করে নেন এবং বিরাগীকে অনুরোধ করেন তাঁর ওপর রাগ না করার জন্য । ছদ্মবেশী বিরাগী এই প্রসঙ্গেই উক্তিটি করেছেন । 

  সন্ন্যাসীর চরিত্র প্রকৃতপক্ষে কেমন হওয়া উচিত এ কথা পাঠকদের বোঝাতেই লেখক যেন চরিত্রটি সৃষ্টি করেছেন । জগদীশবাবুর বাড়িতে হিমালয় থেকে আসা সন্ন্যাসীর পাশাপাশি বিরাগীর বস্তার চরিত্রবিশ্লেষণ চরিত্রটি রাখলে তা সহজেই অনুমান করা যায় । বিরাগী প্রথমে জগদীশবাবুর অহংকারে আঘাত করেছেন , তাঁকে অপরাধ স্বীকার করিয়েছেন । আবার সত্যিকার বিরাগীর মতো তাঁকে ক্ষমাও করেছেন । ভান্তের সেবার ইচ্ছাকে মান্যতা দিয়ে গ্রহণ করেছেন মাত্র এক গ্লাস জল । থাকার ও দানগ্রহণের অনুরোধ সবই নির্দ্বিধায় ত্যাগ করেছেন । তিনি । জগদীশবাবু উপদেশ শুনতে চাইলে তিনি স্বভাবসিদ্ধ ভঙ্গিতেই বলেছেন পরমেশ্বরের দেখা পেলেই সমস্ত ঐশ্বর্য পাওয়া যায় । তাঁকে তীর্থ ভ্রমণের অজুহাতে প্রণামী দিতে চাইলে এড়িয়ে যাওয়ার জন্য তিনি বলেন হৃদয়ের মধ্যেই তো সব তীর্থ । বিরাগী চরিত্রটি পূর্ণতা পায় তারই উক্তিতে , ‘ আমি যেমন আনায়াসে ধুলো মাড়িয়ে চলে যেতে পারি , তেমনি সোনাও মাড়িয়ে চলে যেতে পারি । ‘ সত্যিই তা করতে জগদীশবাবুর দেওয়া প্রণামীর টাকার থলিটা সিঁড়িতে পড়ে থাকলেও সেদিকে না তাকিয়ে তিনি চলে যান । 

11. বহুরূপী ‘ গল্পে জগদীশবাবুর চরিত্রটি ব্যাখ্যা করো ।

Answer: সুবোধ ঘোষ রচিত ‘ বহুরূপী ‘ গল্পের একটি পার্শ্বচরিত্র হল জগদীশবাবুর চরিত্রটি । চরিত্রটি সম্পর্কে খুব বেশি তথ্য রচনা মধ্যে পাওয়া না – গেলেও হরিদা চরিত্রের পরিস্ফুটনে জগদীশবাবুর চরিত্রটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা গ্রহণ করে । 

  বাবুর কাহিনি থেকে জানা যায় যথেষ্ট অবস্থাপন্ন ধনী ব্যক্তি তিনি । বয়সে বেশ প্রবীণ । সাদা চুল , সাদা দাড়ি , সৌম্য , শান্ত চেহারা । তিনি ধনী মানুষ বটে , তবে বেশ কৃপণও । সাধুসন্ন্যাসীতে তাঁর ভক্তিভাব প্রবল । যদিও এই ভক্তিভাবের অন্তরালে কোথাও না কোথাও তাঁর ঐশ্বর্যের অহংকার কখনো কখনো দেখা মেলে । তাই কাহিনির মধ্যে আমরা দেখতে পাই , হিমালয় থেকে আগত সন্ন্যাসী যিনি কাউকে পায়ের ধুলো দিতে চান না , তাঁর পায়ের ধুলো সংগ্রহ করতে জগদীশবাবু কৌশল অবলম্বন করেন , সোনার বোল লাগানো কাঠের খড়ম নিজ হাতে এগিয়ে দিতে যান । জগদীশবাবু ঈশ্বর বিশ্বাসী , সেইজন্যই সাধুসন্ন্যাসীর সেবা তাঁর কাছে ঈশ্বরসেবার সমতুল্য । অবশ্য নিষ্কাম ঈশ্বরসেবার মনোবৃত্তি তাঁর নেই । নিজ সুখশান্তির সন্ধানেই বস্তুত তিনি ঈশ্বরবিশ্বাসী । সন্ন্যাসী – গোছের লোক দেখলেই তাকে খুশি করার চেষ্টা করেন , প্রয়োজনে কৌশলও অবলম্বন করেন । তাঁর এই মানসিকতার জন্যই ভণ্ড সন্ন্যাসীর পাল্লায় পড়ে তাঁকে বোকাও বনতে হয় । তাই বিরাগীর ছদ্মবেশে হরিদার কাছেও তিনি নতজানু হয়েছেন আশীর্বাদের অভিলাষে । ‘ বহুরূপী ‘ গল্পের কাহিনির নিয়ন্ত্রণে জগদীশবাবু চরিত্রের ভূমিকা অস্বীকার করার উপায় নেই । এই সংসারের সব কিছুই যে ‘ সং ‘ তা হরিদার বিরাগী সাজেই প্রকাশ পায় ; আর সেই বিরাগীকে কাহিনির গতি নিয়ন্ত্রক প্রকৃত সত্যে পরিণত করিয়েছেন জগদীশবাবু । মিথ্যে বহুরূপী বেশধারণকারী হরিদার বিরাগী রূপকে নতমস্তকে প্রণাম জানিয়ে কাহিনির ভাবসত্যকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন জগদীশবাবু । তাই জগদীশবাবু চরিত্রটি কাহিনির পার্শ্বচরিত্র হয়েও কাহিনির এক গুরুত্বপূর্ণ । চরিত্রে পরিণত হয়েছে । 

12. ‘ হরিদার জীবনে সত্যিই একটা নাটকীয় বৈচিত্র্য আছে । – হরিদা কে ? তাঁর কর্মকাণ্ডের মধ্যে যে – নাটকীয় বৈচিত্র্য ধরা পড়েছে তা গল্প অনুসারে লেখো । 

Answer: প্রখ্যাত সাহিত্যিক সুবোধ ঘোষের ‘ বহুরূপী ’ গল্পের কেন্দ্রীয় চরিত্র হলেন হরিদা । গল্পে আমরা তাকে ‘ বহুরূপী হরিদার পরিচয় হিসেবেই দেখতে পাই । বহুরূপীর চরিত্র বর্ণময় । সেখানে নাটকীয়তা থাকবে সেটাই স্বাভাবিক । জীবনে নাটকীয় কিন্তু হরিদার ব্যক্তিগত জীবন ও জীবিকা উভয় বৈচিত্র্য ক্ষেত্রই নাটকীয় বৈচিত্র্যে ভরপুর । ব্যক্তি হরিদা খুবই গরিব মানুষ । ইচ্ছে করলে তিনি ছোটোখাটো কাজ জোগাড় করে আর পাঁচটা সাধারণ মানুষের মতো জীবনযাপন করতেই পারতেন । কিন্তু বাঁধাধরা গণ্ডিবদ্ধ জীবন হরিদার পছন্দ নয় । তাই উনানের হাঁড়িতে ভাতের বদলে জল ফুটলেও হরিদার সেই একঘেয়ে অভাবকে সহ্য করতে আপত্তি নেই । 

  হরিদার পেশাগত জীবনও নাটকীয় বৈচিত্র্যে ভরা । তিনি পাগলের ছদ্মবেশে কখনও আতঙ্কের হল্লা সৃষ্টি করেছেন , কখনও আবার রূপসি বাইজির ছদ্মবেশে মানুষের হৃদয়ে দোলা লাগিয়েছেন কিংবা নকল পুলিশ সেজে ছাত্রদের আটকে রেখে মাস্টারমশাইয়ের কাছ থেকে ঘুষ আদায় করেছেন । হরিদার নাটকীয়তার চরম নিদর্শন মেলে জগদীশবাবুর বাড়িতে । সেখানে বিরাগীর ছদ্মবেশে তিনি সকলকে বিস্মিত জীবিকায় নাটকীয় বৈচিত্র্য করেছিলেন । নাটকীয়তার শেষ এখানেই নয় । ছদ্মবেশী বিরাগী অভিনয়ের অহংকারে ও ঢং নষ্ট হওয়ার ভয়ে জগদীশবাবুর দান গ্রহণ করেননি । তবে সেই তিনিই আবার অভিনয়ের পরে বকশিশ নেওয়ার চিন্তা থেকে কিন্তু সরে আসেননি ।

==============================================================

বহুরূপী(গল্প) থেকে আরোও প্রশ্ন ও উত্তর দেখুন :PART-2

বহুরূপী গল্প থেকে সম্পূর্ণ প্রশ্ন উত্তর আলোচনা-PART-3

=============================================================

(৪) রচনাধর্মী প্রশ্নগুলির উত্তর দাও :

প্রশ্নঃ ‘চমকে উঠলেন জগদীশবাবু’ – জগদীশবাবুর পরিচয় দাও। তাঁর চমকে ওঠার কারণ আলোচনা করো। 

উত্তরঃ সুবোধ ঘোষের ‘বহুরূপী’ গল্পে জগদীশবাবু একটি পার্শ্বচরিত্র। জগদীশবাবুর পরিচয় তিনি শিক্ষিত, মার্জিত ও ভদ্র, সৌম্য – শাস্ত চেহারার অধিকারী, ধনী হলেও কৃপণ। তাঁর জীবনের দুর্বলতা হল তাঁর অন্ধভক্তি। সুখশান্তির আশায় সাধুসন্ন্যাসী দেখলেই তাদের তিনি তুষ্ট করার চেষ্টা করতেন। এর জন্য অবশ্য তিনি মাঝেমধ্যেই ঠকেছেন। 

      এক স্নিগ্ধ ও শান্ত জ্যোৎস্নালোকিত উজ্জ্বল সন্ধ্যায় জগদীশবাবু বারান্দার চেয়ারে বসেছিলেন। হঠাৎ বারান্দার সিঁড়ির দিকে তাকিয়ে তিনি অবাক হয়ে গিয়েছিলেন। তাঁর চোখের পাতা পড়ছিল না। কারণ সিঁড়ির কাছে এমন একজন দাঁড়িয়েছিলেন যিনি জটাজুটধারী, চমকে ওঠার কারণ হাতে কমণ্ডলু, চিমটে, মৃগচর্মের আসনসহ গৈরিক বসন পরিহিত কোনো সন্ন্যাসী নয়, তিনি একজন বিরাগী, যাঁর আদুড় গা, তার ওপরে একটি ধবধবে সাদা উত্তরীয়। পরনে ছোটো বহরের থান। তার মাথার শুকনো চুলগুলো বাতাসে উড়ছে, হাত-পা ধুলো মাখা, কাঁধে একটা ঝোলা, যার মধ্যে একটি মাত্র বই গীতা জগদীশবাবুর তাঁকে দেখে। মনে হয়েছিল তিনি যেন জগতের সীমার ওপার থেকে হেঁটে চলে এসেছেন। তাঁর শীর্ণ শরীর দেখে মনে হচ্ছিল যেন অশরীরী এবং তাঁর চোখ থেকে ঝরে পড়ছিল উদাও শান্ত এক উজ্জ্বল দৃষ্টি। 

প্রশ্নঃ ‘বহুরূপী’ গল্পে জগদীশবাবুর চরিত্রটি ব্যাখ্যা করো।

উত্তরঃ সুবোধ ঘোষ রচিত ‘বহুরূপী’ গল্পের একটি পার্শ্বচরিত্র হল জগদীশবাবুর চরিত্র। চরিত্রটি সম্পর্কে খুব বেশি তথ্য রচনা মধ্যে পাওয়া না গেলেও হরিদা চরিত্রের পরিস্ফুটনে জগদীশবাবুর চরিত্রটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা গ্রহণ করে। 

     জগদীশবাবুর কাহিনি থেকে জানা যায় যথেষ্ট অবস্থাপন্ন ধনী ব্যক্তি তিনি। বয়সে বেশ প্রবীণ। সাদা চুল, সাদা দাড়ি, সৌম্য, শান্ত চেহারা। তিনি ধনী মানুষ বটে, তবে বেশ কৃপণও। সাধুসন্ন্যাসীতে তাঁর ভক্তিভাব প্রবল। যদিও এই ভক্তিভাবের অন্তরালে কোথাও না কোথাও তাঁর ঐশ্বর্যের অহংকার কখনো কখনো দেখা মেলে। তাই কাহিনির মধ্যে আমরা দেখতে পাই, হিমালয় থেকে আগত সন্ন্যাসী যিনি কাউকে পায়ের ধুলো দিতে চান না, তাঁর পায়ের ধুলো সংগ্রহ করতে জগদীশবাবু কৌশল অবলম্বন করেন, সোনার বোল লাগানো কাঠের খড়ম নিজ হাতে এগিয়ে দিতে যান। জগদীশবাবু ঈশ্বর বিশ্বাসী, সেইজন্যই সাধুসন্ন্যাসীর সেবা তাঁর কাছে ঈশ্বরসেবার সমতুল্য। অবশ্য নিষ্কাম ঈশ্বরসেবার মনোবৃত্তি তাঁর নেই। নিজ সুখশান্তির সন্ধানেই বস্তুত তিনি ঈশ্বরবিশ্বাসী। সন্ন্যাসী মতো লোক দেখলেই তাকে খুশি করার চেষ্টা করেন, প্রয়োজনে কৌশলও অবলম্বন করেন। তাঁর এই মানসিকতার জন্যই ভণ্ড সন্ন্যাসীর পাল্লায় পড়ে তাঁকে বোকাও বনতে হয়। তাই বিরাগীর ছদ্মবেশে হরিদার কাছেও তিনি নতজানু হয়েছেন আশীর্বাদের অভিলাষে। ‘বহুরূপী’ গল্পের কাহিনির নিয়ন্ত্রণে জগদীশবাবু চরিত্রের ভূমিকা অস্বীকার করার উপায় নেই। এই সংসারের সব কিছুই যে ‘সং’ তা হরিদার বিরাগী সাজেই প্রকাশ পায়; আর সেই বিরাগীকে কাহিনির গতি নিয়ন্ত্রক প্রকৃত সত্যে পরিণত করিয়েছেন জগদীশবাবু। মিথ্যে বহুরূপী বেশধারণকারী হরিদার বিরাগী রূপকে নতমস্তকে প্রণাম জানিয়ে কাহিনির ভাবসত্যকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন জগদীশবাবু। তাই জগদীশবাবু চরিত্রটি কাহিনির পার্শ্বচরিত্র হয়েও কাহিনির এক গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রে পরিণত হয়েছে।

প্রশ্নঃ ‘আমি বিরাগী, রাগ নামে কোনো রিপু আমার নেই।’ – বক্তা কোন প্রসঙ্গে একথা বলেছেন? এই উক্তির প্রেক্ষিতে বক্তার চরিত্র গল্পে যেভাবে বর্ণিত হয়েছে তা আলোচনা করো।

উত্তরঃ প্রখ্যাত সাহিত্যিক সুবোধ ঘোষের ‘বহুরূপী’ গল্পে উদ্ধৃত অংশটির বক্তা হলেন ছদ্মবেশী বিরাগী। হরিদা যখন বিরাগীর ছদ্মবেশে জগদীশবাবুর বাড়িতে গিয়েছিলেন, জগদীশবাবু প্রশ্নোধৃত অংশের তখন এগিয়ে এসে তাঁকে অভ্যর্থনা না জানালে বিরাগী রুষ্ট হন। ভয় পেয়ে জগদীশবাবু অপরাধ স্বীকার করে নেন এবং বিরাগীকে অনুরোধ করেন তাঁর ওপর রাগ না করার জন্য। ছদ্মবেশী বিরাগী এই প্রসঙ্গেই উক্তিটি করেছেন। 

      সন্ন্যাসীর চরিত্র প্রকৃতপক্ষে কেমন হওয়া উচিত একথা পাঠকদের বোঝাতেই লেখক যেন চরিত্রটি সৃষ্টি করেছেন। জগদীশবাবুর বাড়িতে হিমালয় থেকে আসা সন্ন্যাসীর পাশাপাশি বিরাগীর বস্তার চরিত্রবিশ্লেষণ চরিত্রটি রাখলে তা সহজেই অনুমান করা যায়। বিরাগী প্রথমে জগদীশবাবুর অহংকারে আঘাত করেছেন, তাঁকে অপরাধ স্বীকার করিয়েছেন। আবার সত্যিকার বিরাগীর মতো তাঁকে ক্ষমাও করেছেন। ভান্তের সেবার ইচ্ছাকে মান্যতা দিয়ে গ্রহণ করেছেন মাত্র এক গ্লাস জল। থাকার ও দানগ্রহণের অনুরোধ সবই নির্দ্বিধায় ত্যাগ করেছেন তিনি। জগদীশবাবু উপদেশ শুনতে চাইলে তিনি স্বভাবসিদ্ধ ভঙ্গিতেই বলেছেন পরমেশ্বরের দেখা পেলেই সমস্ত ঐশ্বর্য পাওয়া যায়। তাঁকে তীর্থ ভ্রমণের অজুহাতে প্রণামী দিতে চাইলে এড়িয়ে যাওয়ার জন্য তিনি বলেন হৃদয়ের মধ্যেই তো সব তীর্থ। বিরাগী চরিত্রটি পূর্ণতা পায় তারই উক্তিতে, ‘আমি যেমন আনায়াসে ধুলো মাড়িয়ে চলে যেতে পারি, তেমনি সোনাও মাড়িয়ে চলে যেতে পারি।’ সত্যিই তা করতে জগদীশবাবুর দেওয়া প্রণামীর টাকার থলিটা সিঁড়িতে পড়ে থাকলেও সেদিকে না তাকিয়ে তিনি চলে যান।

প্রশ্নঃ ‘আজ তোমাদের একট জবর খেলা দেখার’ – বক্তার এই জবর খেলা দেখানোর উদ্দেশ্য কী ছিল? শেষপর্যন্ত এই খেলার পরিণতিই বা কী হয়েছিল? 

উত্তরঃ সুবোধ ঘোষের ‘বহুরুপী’ গল্প থেকে উপরের উদ্ধৃতিটি নেওয়া। পাঠ্য কাহিনি অনুসারে গ্রামের বিখ্যাত ধনী, জনৈক জগদীশবাবুর বাড়িতে হিমালয়ের গুহা থেকে এক উঁচু দরের সন্ন্যাসীর আগমন ঘটে। বহুরূপী হরিদা পাড়ার ছেলেদের কাছ থেকে তাঁর সম্পর্কে বিভিন্ন ঘটনা শুনে টের পান যে, তিনি প্রকৃত সন্ন্যাসী নন। সর্বত্যাগী সন্ন্যাসীর প্রকৃত স্বরূপ কেমন হওয়া উচিত তা বোঝাতেই, এরপর হরিদা বিরাগী সেজে জগদীশবাবুর বাড়ি যাওয়ার পরিকল্পনা করেন। বিরাগীর ছদ্মবেশে হরিদা সকলকে বিস্মিত করেছিলেন। জ্যোৎস্নালোকিত রাতের স্নিগ্ধ পরিবেশে তাঁর আদুড় গায়ের ওপর সাদা উত্তরীয় এবং পরনে ছোটো বহরের থান আর হাওয়ায় উড়তে থাকা চুল ও কাঁধে ঝোলার মধ্যে থাকা গীতা সব মিলিয়ে মনে হয়েছিল যেন তিনি জগতের সীমার ওপার থেকে হেঁটে এসেছেন। হরিদার চোখের উদাত্ত উজ্জ্বল দৃষ্টি, কণ্ঠস্বর ও মুখের ভাষায়; জগদীশবাবুর হৃদয় করুণাময় সজল হয়ে উঠেছিল। তিনি এই সর্বত্যাগী বিরাগীকে তুষ্ট করতে তীর্থ ভ্রমণের অজুহাতে প্রণামী হিসেবে একশো এক টাকা নিবেদন করেন। কিন্তু বহুরূপী হরিদার অন্তরের বৈরাগ্য এবং নিজ শিল্পের প্রতি আন্তরিক সততার কারণে তিনি, সেই টাকার থলি হেলায় ফেলে দিয়ে চলে আসেন। তাতে যে তার ঢং নষ্ট হয়ে যেত। তবে সত্যিকারের বিরাগী সন্ন্যাসী দর্শন করানোর জন্য জগদীশবাবুর কাছ থেকে সামান্য বকশিশ আদায়ের দাবিটুকুকেই হরিদা, পাথেয় বলে স্থির করেছিলেন।

প্রশ্নঃ জগদীশবাবুর বাড়ি হরিদা বিরাগী সেজে যাওয়ার পর যে ঘটনা ঘটেছিল, তা বর্ণনা করো।উত্তরঃ সুবোধ ঘোষের ‘বহুরূপী’ গল্প অনুসারে এক স্নিগ্ধ ও শান্ত জ্যোৎস্নালোকিত উজ্জ্বল সন্ধ্যায় জগদীশবাবু বারান্দার চেয়ারে বসেছিলেন। হঠাৎ বারান্দার সিঁড়ির দিকে তাকিয়ে তিনি অবাক হয়ে গিয়েছিলেন। কারণ সিঁড়ির কাছে এমন একজন দাঁড়িয়েছিলেন যিনি জটাজুটধারী, হাতে কমণ্ডলু, চিমটে, মৃগচর্মের আসনসহ গৈরিক বসন পরিহিত কোনো সন্ন্যাসী নয়, তিনি একজন বিরাগী, যার আদুড় গা, তার উপরে একটি ধবধবে সাদা উত্তরীয় পরনে ছোটো বহরের থান। তার শীর্ণ শরীর দেখে মনে হচ্ছিল যেন অশরীরী এবং তাঁর চোখ থেকে ঝরে পড়ছিল উদাত্ত শান্ত এক উজ্জ্বল দৃষ্টি। ভক্তের সেবার ইচ্ছাকে মান্যতা দিয়ে গ্রহণ করেছেন মাত্র এক গ্লাস জল। থাকার ও দান গ্রহণের অনুরোধ সবই নির্দ্বিধায় ত্যাগ করেছেন তিনি। জগদীশবাবু উপদেশ শুনতে চাইলে তিনি স্বভাবসিদ্ধ ভঙ্গিতেই বলেছেন। পরমেশ্বরের দেখা পেলেই সমস্ত ঐশ্বর্য পাওয়া যায়। তাঁকে তীর্থ ভ্রমণের অজুহাতে প্রণামী দিতে চাইলে এড়িয়ে যাওয়ার জন্য তিনি বলেন হৃদয়ের মধ্যেই তো সব তীর্থ। বিরাগী চরিত্রটি পূর্ণতা পায় তাঁরই উক্তিতে, ‘আমি যেমন অনায়াসে ধুলো মাড়িয়ে চলে যেতে পারি, তেমনই অনায়াসে সোনাও মাড়িয়ে চলে যেতে পারি।’ সত্যিই তা করতে জগদীশবাবুর দেওয়া প্রণামীর টাকার থলিটা সিঁড়িতে পড়ে থাকলেও সেদিকে না তাকিয়ে তিনি চলে যান।

==============================================================

বহুরূপী(গল্প) থেকে আরোও প্রশ্ন ও উত্তর দেখুন :PART-2

বহুরূপী গল্প থেকে সম্পূর্ণ প্রশ্ন উত্তর আলোচনা-PART-3

=============================================================

 

©kamaleshforeducation.in(2023)

জ্ঞানচক্ষু

 

 

WB Madhyamik Exam Date 2025 [ New ] : From Authentic Source

 

শ্রেণী দশম শ্রেণী (মাধ্যমিক)
বিষয় মাধ্যমিক বাংলা
গল্প জ্ঞানচক্ষু
লেখক আশাপূর্ণা দেবী

জ্ঞানচক্ষু (গল্প) আশাপূর্ণা দেবী – মাধ্যমিক দশম শ্রেণীর বাংলা প্রশ্ন ও উত্তর  

MCQ | জ্ঞানচক্ষু (গল্প) আশাপূর্ণা দেবী – মাধ্যমিক বাংলা প্রশ্ন ও উত্তর  Answer :

  1. ‘ জ্ঞানচক্ষু ‘ গল্পের রচয়িতা 

(A) মহাশ্বেতা দেবী 

(B) আশাপূর্ণা দেবী 

(C) অনিমা দেবী 

(D) লীলা মজুমদার

Ans: (A) মহাশ্বেতা দেবী

  1. ‘ কথাটা শুনে তপনের চোখ মার্বেল হয়ে গেল ।’- কথাটা হল 

(A) তপনের মামা একজন লেখক 

(B) তপনের লেখা ছাপা হয়েছে 

(C) তপনের মেসো একজন লেখক 

(D) সবাই তপনের গল্প শুনে হেসেছে 

Ans: (C) তপনের মেসো একজন লেখক

  1. ‘ চোখ মার্বেল হয়ে যাওয়া ‘ – এর অর্থ হল 

(A) চোখ পাকানো 

(B) চোখ গোল গোল হয়ে যাওয়া 

(C) অবাক হয়ে যাওয়া 

(D) রেগে যাওয়া 

Ans: (C) অবাক হয়ে যাওয়া ।

  1. তপনের নতুন মেসোমশাই ছিলেন একজন 

(A) অভিনেতা 

(B) চিত্রপরিচালক 

(C) খেলোয়াড় 

(D) লেখক 

Ans: (D) লেখক

  1. তপনের লেখক মেসোমশাই হলেন তার 

(A) বড়োমাসির স্বামী 

(B) মেজোমাসির স্বামী 

(C) সেজোমাসির স্বামী 

(D) ছোটোমাসির স্বামী 

Ans: (D) ছোটোমাসির স্বামী

  1. তিনি নাকি বই লেখেন । তিনি হলেন 

(A) তপনের নতুন মেসোমশাই 

(B) তপনের বাবা 

(C) তপন 

(D)’ সন্ধ্যাতারা ‘ পত্রিকার সম্পাদক 

Ans: (A) তপনের নতুন মেসোমশাই 

  1. অনেক বই ছাপা হয়েছে 

(A) তপনের 

(B) নতুন মেসোমশাইয়ের 

(C) ছোটোমাসির 

(D) মেজোকাকুর

Ans: (B) নতুন মেসোমশাইয়ের 

  1. তপন কখনো এত কাছ থেকে – 

(A) জলজ্যান্ত ভূত দেখেনি 

(B) সমুদ্র দ্যাখেনি 

(C) জলজ্যান্ত লেখক দ্যাখেনি 

(D) ক্রিকেট ম্যাচ দ্যাখেনি ।

Ans: (C) জলজ্যান্ত লেখক দ্যাখেনি

  1. তপনের নতুন মেসোমশাই খবরের কাগজ নিয়ে গল্প আর তর্ক করেন – 

(A) ছোটোমামাদের মতোই

(B) মা – মাসিদের মতোই 

(C) কাগজের সম্পাদকের মতোই 

(D) সাংবাদিকদের মতোই 

Ans: (A) ছোটোমামাদের মতোই

  1. ঠিক ছোটোমামাদের মতোই খবরের কাগজের সব কথা নিয়ে প্রবল আড্ডা – তর্কের পর শেষপর্যন্ত ‘ এ দেশের কিছু হবে না ‘ বলে মেসোমশাই— 

(A) ঘুমিয়ে পড়েন 

(B) লিখতে বসেন 

(C) সিনেমা দেখতে বা বেড়াতে চলে যান 

(D) সিগারেট ধরান 

Ans: (C) সিনেমা দেখতে বা বেড়াতে চলে যান

  1. নতুন মেসোকে দেখে তপনের – 

(A) জ্ঞানচক্ষু খুলে গেল

(B) দমবন্ধ হয়ে এল

(C) আনন্দ হল 

(D) গলা বুজে এল

Ans: (A) জ্ঞানচক্ষু খুলে গেল

  1. তপনের অবাক হওয়ার কারণ ছিল –

(A) সে কখনও মেসোমশাইকে দ্যাখেনি 

(B) সে কখনও কোনো লেখককে দ্যাখেনি

(C) সে নিজে গল্প লিখে ফেলেছিল

(D) তার গল্প ছাপা হয়েছিল

Ans: (B) সে কখনও কোনো লেখককে দ্যাখেনি

  1. ‘ এবিষয়ে সন্দেহ ছিল তপনের । — তপনের সন্দেহের বিষয়টি হল –

(A) লেখকরা ভারি অহংকারী হয় । 

(B) ছোটোমাসির বিয়েতে আদৌ কোনো ঘটা হয়েছিল কিনা 

(C) নতুন মেসোমশাই প্রকৃতই একজন লেখক কিনা 

(D) লেখকরা তপনের বাবা , ছোটোমামা বা মেজোকাকুর মতো সাধারণ মানুষ

Ans: (D) লেখকরা তপনের বাবা , ছোটোমামা বা মেজোকাকুর মতো সাধারণ মানুষ

  1. তপন মূলত মামার বাড়ি এসেছে—

(A) গরমের ছুটি উপলক্ষ্যে 

(B) পুজোর ছুটি কাটাতে 

(C) বিয়েবাড়ি উপলক্ষ্যে

(D) ‘ সন্ধ্যাতারা ‘ – র প্রকাশ উপলক্ষ্যে

Ans: (C) বিয়েবাড়ি উপলক্ষ্যে

  1. ‘ তাই মেসো শ্বশুরবাড়িতে এসে রয়েছেন ক’দিন ।’— মেসোর শ্বশুরবাড়িতে এসে থাকার কারণ 

(A) তাঁর গরমের ছুটি চলছিল

(B) তাঁর সেখানে কাজ ছিল 

(C) তিনি নিরিবিলিতে গল্প লিখতে চেয়েছিলেন 

(D) তপন তাঁকে থাকতে অনুরোধ করেছিল

Ans: (A) তাঁর গরমের ছুটি চলছিল

  1. ‘ জ্ঞানচক্ষু ‘ গল্পে গরমের ছুটি চলছিল— 

(A) তপনের 

(B) ছোটোমাসির

(C) ছোটোমেসোর

(D) তপন ও ছোটোমেসোর

Ans: (C) ছোটোমেসোর

  1. তপনের মেসোমশাই পেশাগত দিক থেকে যা ছিলেন— 

(A) রাজনীতিবিদ 

(B) চিকিৎসক

(C) সম্পাদক 

(D) অধ্যাপক

Ans: (D) অধ্যাপক

  1. আর সেই সুযোগেই দেখতে পাচ্ছে তপন … এখানে যে – সুযোগের কথা বলা হয়েছে , তা হল— 

(A) মামার বাড়িতে থাকার সুযোগ 

(B) গল্প লেখার সুযোগ 

(C) জলজ্যান্ত লেখককে কাছ থেকে দেখার সুযোগ 

(D) ছুটির সুযোগ 

Ans: (C) জলজ্যান্ত লেখককে কাছ থেকে দেখার সুযোগ

  1. “ আর সেই সুযোগেই দেখতে পাচ্ছে তপন যা দেখতে পাচ্ছে , তা হল –

(A) গল্প লেখা কত কঠিন 

(B) চেনাজানা না থাকলে গল্প ছাপানো যায় না 

(C) নতুন মেসোমশাই ভারি ঘুমকাতুরে 

(D) লেখক মানে কোনো আকাশ থেকে পড়া জীব নয়

Ans: (D) লেখক মানে কোনো আকাশ থেকে পড়া জীব নয়

  1. তপন প্রথম কী লিখেছিল ?

(A) গল্প

(B) উপন্যাস 

(C) প্রবন্ধ 

(D) কবিতা

Ans: (A) গল্প

  1. তপনের লেখা ছোটোমেসোর হাতে পৌঁছে দেয়— 

(A) তপন নিজেই

(B) তপনের মা

(C) তপনের ছোটোমামা 

(D) তপনের ছোটোমাসি

Ans: (D) তপনের ছোটোমাসি

  1. ‘ আর সেই সুযোগেই দিব্যি একখানি দিবানিদ্রা দিচ্ছিলেন। সুযোগটি হল—

(A) গরমের ছুটি

(B) পুজোর ছুটি 

(C) বিয়ের জন্য নেওয়া ছুটি 

(D) বেড়াতে যাওয়ার ছুটি

Ans: (A) গরমের ছুটি

  1. ‘ ছোটোমাসি সেই দিকে ধাবিত হয় ।’— এখানে ‘ সেইদিকে ‘ বলতে বোঝানো হয়েছে— 

(A) তিনতলার সিঁড়ির দিকে

(B) ছোটোমেসোর দিকে

(C) তপনের পড়ার ঘরের দিকে 

(D) মেজোকাকুর দিকে 

Ans: (B) ছোটোমেসোর দিকে

  1. তপনের ছোটোমাসি যখন ছোটোমেসোর দিকে ধাবিত হয় , মেসো তখন 

(A) লিখছিলেন 

(B) দিবানিদ্রা দিচ্ছিলেন 

(C) টিভি দেখছিলেন

(D) খবরের কাগজ পড়ছিলেন

Ans: (B) দিবানিদ্রা দিচ্ছিলেন ।

  1. ‘ তপন অবশ্য ‘ না – আ – আ’- করে প্রবল আপত্তি তোলে ।’ তপন যে বিষয়ে আপত্তি তোলে , তা হল

(A) তার লেখা গল্প ছোটোমেসোকে দেখানো 

(B) অসময়ে ছোটোমেসোর ঘুম ভাঙানো 

(C) ছোটোমাসির শ্বশুরবাড়ি ফিরে যাওয়া 

(D) তার লেখা ছাপতে দেওয়া

Ans: (A) তার লেখা গল্প ছোটোমেসোকে দেখানো

  1. মাসির এই হইচইতে মনে মনে পুলকিত হয় 

(A) তপন 

(B) মা 

(C) ছোটোমেসো 

(D) ছোটোমামা 

Ans: (A) তপন

  1. রত্নের মূল্য – 

(A) দস্যুর কাছে

(B) জহুরির কাছে 

(C) রত্নাকরের কাছে 

(D) নারীর কাছে

Ans: (B) জহুরির কাছে

  1. ‘ রত্নের মূল্য জহুরির কাছেই ।’ — এখানে ‘ রত্ন ‘ ও ‘ জহুরি ‘ হল – 

(A) তপন ও ছোটোমাসি 

(B) তপন ও ছোটোমেসো 

(C) তপন ও ‘ সন্ধ্যাতারা ‘ – র সম্পাদক 

(D) তপন ও মেজোকাকু ‘ 

Ans: (B) তপন ও ছোটোমেসো

  1. মেসোর উপযুক্ত কাজ হবে সেটা ।’— উপযুক্ত কাজটি হল –

(A) গল্প লিখে দেওয়া 

(B) তপনকে গল্প লেখা শিখিয়ে দেওয়া 

(C) তপনের গল্প ছাপিয়ে দেওয়া 

(D) তপনকে বেড়াতে নিয়ে যাওয়া

Ans: (C) তপনের গল্প ছাপিয়ে দেওয়া

  1. যে – পত্রিকায় তপনের গল্প ছাপিয়ে দেওয়ার কথা হয়েছিল , সেই পত্রিকার নাম –

(A) শুকতারা 

(B) নক্ষত্র 

(C) ধ্রুবতারা 

(D) সন্ধ্যাতারা

Ans: (D) সন্ধ্যাতারা

  1. ‘ তোমার গল্প তো দিব্যি হয়েছে । এখানে বক্তা হল – 

(A) তপন 

(B) ছোটোমামা

(C) ‘ সন্ধ্যাতারা ‘ পত্রিকার সম্পাদক 

(D) ছোটোমেসো

Ans: (A) তপন

  1. ‘ তোমার গল্প তো দিব্যি হয়েছে । যাকে উদ্দেশ্য করে এ কথা বলা হয়েছে , সে হল –

(A) তপন 

(B) ছোটোমেসো 

(C) ছোটোমাসি 

(D) ছোটোমামা

Ans: (A) তপন

  1. তপনের লেখাটা ছাপতে দেওয়ার আগে যা করা দরকার , তা – 

(A) নতুন করে লেখা 

(B) টাইপ করিয়ে নেওয়া 

(C) একটু কারেকশন করা 

(D) পরিষ্কার হাতের লেখায় লেখা

Ans: (C) একটু কারেকশন করা

  1. ‘ তপন প্রথমটা ভাবে ঠাট্টা । যে বিষয়টিকে তপন ঠাট্টা বলে মনে করে , তা হল – 

(A) তার লেখা গল্প ছাপতে দেওয়া

(B) তার লেখা গল্প ছাপার অযোগ্য 

(C) ছোটোমেসোর অনেক বই ছাপা হয়েছে

(D) ছোটোমাসি একটা গল্প লিখেছে 

Ans: (A) তার লেখা গল্প ছাপতে দেওয়া

  1. তপন দ্যাখে মেসোর মুখে –

(A) ঠাট্টার আভাস 

(B) বিষাদের ছায়া 

(C) বিরক্তির প্রকাশ 

(D) করুণার ছাপ 

Ans: (D) করুণার ছাপ

  1. তখন আহ্লাদে কাঁদো কাঁদো হয়ে যায় । এখানে যার কথা বলা হয়েছে , সে হল – 

(A) ছোটোমাসি 

(B) তপন 

(C) মেজোকাকু

(D) মা

Ans: (B) তপন

  1. ‘ আমি বললে সন্ধ্যাতারার সম্পাদক না করতে পারবে না। এখানে বক্তা হলেন –

(A) তপনের বাবা 

(B) তপনের ছোটোমামা 

(C) তপনের মেজোকাকু 

(D) তপনের ছোটোমেসো 

Ans: (D) তপনের ছোটোমেসো

  1. তপনের গল্প ছাপিয়ে দেওয়ার কথাটা উঠেছিল— 

(A) বৈঠকখানায় 

(B) বিকেলে চায়ের টেবিলে

(C) রাতে খাবার টেবিলে

(D) দুপুরে খাবার টেবিলে 

Ans: (B) বিকেলে চায়ের টেবিলে

  1. তপনের গল্প শুনে সবাই – 

(A) হাসে 

(B) দুঃখ পায় 

(C) বিরক্ত হয় 

(D) রেগে যায়

Ans: (A) হাসে

  1. ‘ না না আমি বলছি- তপনের হাত আছে ।’— এখানে তপনের ‘ হাত আছে বলতে বোঝানো হয়েছে— 

(A) তপনের লেখার হাত আছে 

(B) বিয়েবাড়িতে ঘটে যাওয়া দুর্ঘটনায় তপনের ভূমিকা আছে (C) তপনের বেহালা বাজানোর হাত আছে 

(D) ‘ সন্ধ্যাতারা ‘ পত্রিকায় লেখা ছাপানোয় তপনের হাত আছে

Ans: (A) তপনের লেখার হাত আছে

  1. না – না আমি বলছি- তপনের হাত আছে ।’- এখানে বক্তা হলেন 

(A) তপনের ছোটোমেসো 

(B) তপনের ছোটোমাসি

(C) ‘ সন্ধ্যাতারা ‘ পত্রিকার সম্পাদক

(D) তপনের মেজোকাকু 

Ans: (A) তপনের ছোটোমেসো

  1. সাধারণত তপনের বয়সি ছেলেমেয়েদের লেখা গল্পের বিষয় হয় – 

(A) রুপকথা 

(B) ভৌতিক ঘটনা

(C) খুন – জখম – অ্যাকসিডেন্ট অথবা না – খেতে পেয়ে মরে যাওয়া ।

(D) ব্যাক্তিগত অভিজ্ঞতা

Ans: (A) রুপকথা

  1. তপন যে – বিষয়টি নিয়ে গল্প লেখে সেটি হল – 

(A) খুন – জখম – অ্যাকসিডেন্ট 

(B) ওর ভরতি হওয়ার দিনের অভিজ্ঞতা 

(C) ঝড়ের রাতের অভিজ্ঞতা 

(D) রূপকথা 

Ans: (B) ওর ভরতি হওয়ার দিনের অভিজ্ঞতা

  1. ‘ তপন বিহ্বল দৃষ্টিতে তাকায় । – তপনের দৃষ্টিতে যা ছিল , তা হল – 

(A) কষ্ট 

(B) অবিশ্বাস 

(C) রাগ

(D) দুঃখ

Ans: (B) অবিশ্বাস

  1. ছুটি ফুরোলে গল্পটি নিয়ে চলে গেলেন – 

(A) ‘ সন্ধ্যাতারা ‘ পত্রিকার সম্পাদক 

(B) তপনের মেজোকাকু 

(C) তপনের ছোটোমাসি 

(D) তপনের ছোটোমেসো 

Ans: (D) তপনের ছোটোমেসো

  1. মেসো চলে গেলে তপন বসে বসে দিন গোনে 

(A) উদ্বিগ্ন হয়ে 

(B) আতঙ্কিত হয়ে 

(C) কৃতার্থ হয়ে 

(D) আনন্দিত হয়ে 

Ans: (C) কৃতার্থ হয়ে

  1. ছেলেবেলা থেকেই তপন গল্প শুনেছে— 

(A) একটা – আধটা 

(B) রাশি রাশি

(C) বাবার মুখে 

(D) ঠাকুমার মুখে

Ans: (B) রাশি রাশি

  1. এখন তপন গল্প পড়ছে— 

(A) রাশি রাশি 

(B) ঝুড়ি ঝুড়ি 

(C) বস্তা বস্তা 

(D) হাতে গোনা 

Ans: (C) বস্তা বস্তা

  1. শুধু এইটাই জানা ছিল না । অজানা বিষয়টি হল 

(A) মেসো একজন লেখক 

(B) তার গল্প ছাপা হবে 

(C) মানুষই গল্প লেখে 

(D) সে গল্প লিখতে পারে 

Ans: (C) মানুষই গল্প লেখে

  1. তপন আস্তে আস্তে উঠে গেল –

(A) চিলেকোঠায় 

(B) তিনতলার সিঁড়িতে 

(C) দোতলার সিঁড়িতে 

(D) ছাদে 

Ans: (B) তিনতলার সিঁড়িতে

  1. তপন আস্তে আস্তে তিনতলার সিঁড়িতে উঠে গেল ( ক ) ভোরবেলা ও বিকেলবেলা দুপুরবেলা ( ঘ ) সন্ধেবেলা ১.৫৪ তপন আস্তে আস্তে তিনতলার সিঁড়িতে উঠে গেল— 

(A) ব্যাটবল নিয়ে 

(B) রং – তুলি নিয়ে 

(C) গুলতি নিয়ে l

(D) খাতা – কলম নিয়ে 

  1. বিয়েবাড়িতেও তপনের মা যেটি না – আনিয়ে ছাড়েননি , সেটি 

(A) বেনারসি শাড়ি 

(B) সোনার গয়না 

(C) পড়ার বই 

(D) হোমটাস্কের খাতা

Ans: (D) হোমটাস্কের খাতা

  1. গায়ে কাঁটা দিয়ে উঠল তপনের ।’- তপনের গায়ে কাঁটা দিয়ে উঠল – 

(A) অন্ধকারে কাউকে সিঁড়িতে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে 

(B) নিজের লেখা গল্প পড়ে

(C) ছাপার হরফে নিজের লেখা পড়ে

(D) নিঝুম দুপুরে একলা ঘরে ভূতের গল্পঃ পড়ে

Ans: (B) নিজের লেখা গল্প পড়ে

  1. মাথার চুল খাড়া হয়ে উঠল –

(A) ছোটোমাসির 

(B) তপনের 

(C) ছোটোমেসোর

(D) তপনের মায়ের

Ans: (B) তপনের

  1. তপন গল্প লিখে প্রথম জানিয়েছিল

(A) ছোটোমামাকে 

(B) ছোটোমেসোকে 

(C) ছোটোমাসিকে

(D) ছোটকাকাকে

Ans: (C) ছোটোমাসিকে

  1. তপনের চিরকালের বন্ধু –

(A) মা 

(B) ছোটমাসি 

(C) বাবা

(D) ছোটমামা

Ans: (B) ছোটমাসি

  1. ছোটোমাসি তপনের থেকে বড়ো ছিল—

(A) পাঁচ বছরের

(B) আট বছরের

(C) সাত বছরের 

(D) দশ বছরের 

Ans: (B) আট বছরের

  1. মামার বাড়ি এলে তপনের সব কিছুই –

(A) দাদুর কাছে 

(B) দিদার কাছে 

(C) ছোটোমামার কাছে 

(D) ছোটোমাসির কাছে 

Ans: (D) ছোটোমাসির কাছে

  1. বিয়ের পর ছোটোমাসি হয়ে গেছে – 

(A) একটু মুরুব্বি মুরুব্বি 

(B) একটু মোটা 

(C) একটু গম্ভীর 

(D) একটু রোগা 

Ans: (A) একটু মুরুব্বি মুরুব্বি

  1. ওমা এ তো বেশ লিখেছিস রে ? ‘ – এখানে বক্তা 

(A) তপনের ছোটোমামা 

(B) তপনের মেজোকাকু 

(C) তপনের ছোটোমাসি

(D) তপনের ছোটোমেসো

Ans: (C) তপনের ছোটোমাসি

  1. ‘ কোনোখান থেকে টুকলিফাই করিসনি তো ? — এ কথা বলেছেন

(A) মা ছোটোমাসিকে

(B) ছোটোমাসি মাকে

(C) ছোটোমাসি তপনকে

(D) ছোটোমেসো তপনকে

Ans: (D) ছোটোমেসো তপনকে

  1. ঠাট্টা – তামাশার মধ্যেই তপন গল্প লিখে ফ্যালে আরও— 

(A) দু – তিনটে 

(B) তিন – চারটে 

(C) পাঁচটা

(D) একটা 

Ans: (A) দু – তিনটে 

  1. ‘ যেন নেশায় পেয়েছে ।’— যাকে নেশায় পেয়েছে , সে হল – 

(A) ছোটোমামা 

(B) তপন 

(C) ছোটোমেসো 

(D) বাবা

Ans: তপন ।

  1. ‘ যেন নেশায় পেয়েছে ।’— তপনকে কীসের নেশায় পেয়েছে ? 

(A) ক্রিকেট খেলার 

(B) গল্প লেখার 

(C) গান শোনার 

(D) টিভি দেখার

Ans: (B) গল্প লেখার

  1. ‘ এমন সময় ঘটল সেই ঘটনা ।’— ঘটনাটি হল— 

(A) ছোটোমাসির বিয়ে 

(B) তপনের গল্প লেখা 

(C) মেসোকে গল্প পড়ানো

(D) তপনের গল্প ছাপা হওয়া

Ans: 

  1. ‘ বুকের রক্ত ছলকে ওঠে তপনের ।’- এর কারণ – 

(A) ছোটোমাসি – মেসোর হঠাৎ আগমন

(B) ‘ সন্ধ্যাতারা ‘ পত্রিকায় তপনের গল্প ছাপার সম্ভাবনা

(C) দীর্ঘদিন পর তার চিরকালের বন্ধু ছোটমাসির সাথে দেখা হয়

(D) তার লুকিয়ে গল্পঃ লেখার কথা প্রকাশ্যে এসে যাওয়া ।

Ans: (A) ছোটোমাসি – মেসোর হঠাৎ আগমন

  1. ‘ পৃথিবীতে এমন অলৌকিক ঘটনাও ঘটে ? ‘ — অলৌকিক ঘটনাটি হল – 

(A) এক লেখকের সঙ্গে তপনের ছোটোমাসির বিয়ে হয়েছে 

(B) বাড়িতে তপনের নাম হয়ে গেছে কবি , সাহিত্যিক , কথাশিল্পী

(C) তপনের লেখা গল্প ‘ সন্ধ্যাতারা ‘ পত্রিকায় ছাপা হয়েছে 

(D) তপন দেখল ছাপানো গল্পের একটি লাইনও তার নিজের নয় । 

  1. তপনের সম্পূর্ণ নাম ছিল – 

(A) তপনকান্তি রায় 

(B) তপনকুমার রায় 

(C) তপনকুমার সেন 

(D) তপন রায় 

Ans: (B) তপনকুমার রায়

  1. তপনের লেখা গল্পের নাম ছিল – 

(A) প্রথম দিন 

(B) প্রথম পরীক্ষা 

(C) শেষ দিন 

(D) শেষ রাত 

Ans: (A) প্রথম দিন

  1. গল্প লেখার জন্য তপনের বাড়িতে তপনের নাম হয়ে গেছে – 

(A) কবি , সাহিত্যিক , কথাশিল্পী 

(B) সাহিত্যিক , কথাশিল্পী 

(C) কবি , গল্পকার , কথাশিল্পী 

(D) কবি , নাট্যকার , ঔপন্যাসিক 

Ans: (A) কবি , সাহিত্যিক , কথাশিল্পী

  1. ক্রমশ ও কথাটাও ছড়িয়ে পড়ে ।’— যে – কথাটি ছড়িয়ে পড়ে , সেটি হল— 

(A) তপনের গল্প লেখার কথা 

(B) তপনের গল্প ‘ সন্ধ্যাতারা ‘ – য় ছেপে বেরোনোর কথা 

(C) তপনের লেখা ছোটোমেসোর কারেকশন করে দেওয়ার কথা 

(D) তপনের পরীক্ষায় পাসের কথা

Ans: (C) তপনের লেখা ছোটোমেসোর কারেকশন করে দেওয়ার কথা

  1. আমাদের থাকলে আমরাও চেষ্টা করে দেখতাম ।’- উক্তিটির বক্তা –

(A) ছোটোমাসি 

(B) তপনের বন্ধুরা 

(C) মেজোকাকু 

(D) মেসো 

Ans: 

  1. তপনের বাড়িতে বেড়াতে এসে ছোটোমাসি খায়—

(A) চা – বিস্কুট 

(B) মাংস – ভাত 

(C) ডিমভাজা আর চা 

(D) কফি আর কেক 

Ans: (C) ডিমভাজা আর চা

  1. তপনদের বাড়িতে বেড়াতে এসে ছোটোমেসো খান— 

(A) শুধু কফি 

(B) কেক আর কফি 

(C) ডিমভাজা আর চা 

(D) ডিমভাজা আর কফি 

Ans: 

  1. ‘ কই তুই নিজের মুখে একবার পড় তো তপন শুনি ।’— উদ্ধৃতিটির বক্তা

(A) তপন 

(B) তপনের মা 

(C) তপনের বাবা 

(D) তপনের ছোটোমাসি

Ans: (B) তপনের মা

  1. ‘ বাবা , তোর পেটে পেটে এত ।’— এখানে ‘ তোর ’ বলতে বোঝানো হয়েছে 

(A) তপনকে 

(B) তপনের মেজোকাকুকে 

(C) তপনের ছোটোমাসিকে 

(D) তপনের বন্ধুকে 

Ans: (A) তপনকে

  1. তপনের মেশোমশাই কোন্ পত্রিকার সম্পাদককে চিনতেন ? 

(A) শুকতারা 

(B) আনন্দমেলা 

(C) সন্ধ্যাতারা 

(D) দেশ 

Ans: (C) সন্ধ্যাতারা

  1. তপনের লেখাটা নতুন করে নিজের পাকা হাতের কলমে লিখেছেন— 

(A) ‘ সন্ধ্যাতারা ‘ পত্রিকার সম্পাদক 

(B) তপনের ছোটোমেসো 

(C) তপনের মেজোকাকু 

(D) তপনের বাবা 

Ans: (B) তপনের ছোটোমেসো

  1. তপন আর পড়তে পারে না কারণ – 

(A) তার ঘুম পেয়েছিল 

(B) তার কষ্ট হচ্ছিল 

(C) তার রাগ হচ্ছিল 

(D) তার বিরক্ত লাগছিল 

Ans: (B) তার কষ্ট হচ্ছিল

  1. ‘ তপনের অপরিচিত ।’- যে – বস্তুর কথা বলা হয়েছে , তা হল – 

(A) মেসোর পরিচয় 

(B) তার নিজের লেখা গল্প 

(C) ‘ সন্ধ্যাতারা ‘ – র সম্পাদকের পরিচয় 

(D) ‘ সন্ধ্যাতারা ‘ পত্রিকাটি 

Ans: (B) তার নিজের লেখা গল্প

  1. ‘ তবু ‘ ধন্যি ধন্যি ‘ পড়ে যায় ।’— ‘ ধন্যি ধন্যি ‘ – র অর্থ হল – 

(A) প্রশংসা 

(B) ব্যঙ্গ

(C) নিন্দা 

(D) তামাশা

Ans: (A) প্রশংসা 

  1. ‘ আজ যেন তার জীবনের সবচেয়ে দুঃখের দিন – দিনটিকে সবচেয়ে দুঃখের দিন মনে হয়েছিল , সেটি ছিল –

(A) ছোটোমাসির বিয়ের দিন 

(B) মামাবাড়িতে আসার দিন 

(C) নিজের গল্প ছাপা অক্ষরে দেখার দিন 

(D) মামাবাড়ি থেকে চলে যাওয়ার দিন 

Ans: (C) নিজের গল্প ছাপা অক্ষরে দেখার দিন

  1. ‘ কীরে তোর যে দেখি পারা ভারী হয়ে নেয়া শব্দের অর্থ হল—

(A) কে পা মোটা হয়ে যাওয়া 

(B) গম্ভীর হয়ে যাওয়া 

(C) ভারিক্কি হয়ে যাওয়া 

(D) অহংকারী হয়ে যাওয়া

Ans: (D) অহংকারী হয়ে যাওয়া

  1. ‘ ছাপা হয় হোক , না হয় না হোক ।’— এর মধ্যে তপনের যে – মানসিকতা প্রকাশ পায় , তা হল 

(A) মরিয়া 

(B) বিরক্তি 

(C) দুঃখ 

(D) অভিমান 

Ans: (A) মরিয়া

  1. তপনকে যেন আর কখনো শুনতে না হয় । যা না – শোনার কথা বলা হয়েছে , তা হল – 

(A) সে গল্প লিখতে পারে না 

(B) ছোটোমেসো গল্প লিখে দিয়েছেন 

(C) ছোটোমাসি সুপারিশ করেছেন 

(D) অন্য কেউ তার গল্প ছাপিয়ে দিয়েছেন

Ans: (D) অন্য কেউ তার গল্প ছাপিয়ে দিয়েছেন

  1. ‘ তার চেয়ে দুঃখের কিছু নেই , তার থেকে অপমানের ! ‘ — যে বিষয়ে কথা বলা হয়েছে , তা হল— 

(A) নিজের গল্প ছাপা না – হওয়া 

(B) নিজের গল্পে অন্যের ্যর লেখা লাইন পড়াশোন

(C) বাড়ির লোকেদের ঠাট্টাতামাশা 

(D) নিজের গল্প লিখতে না – পারা 

Ans: (B) নিজের গল্পে অন্যের ্যর লেখা লাইন পড়াশোনা

  1. তপন প্রথমটা ভাবে ঠাট্টা , কিন্তু যখন দেখে মেসোর মুখে করুণার ছাপ , তখন আহ্লাদে _____ হয়ে যায় । 

(A) আনন্দিত 

(B) দুঃখিত 

(C) কাঁদো কাঁদো 

(D) বিহ্বল 

Ans: (C) কাঁদো কাঁদো

  1. ছোটো মেসোমশাই তপনের গল্প হাতে পেয়ে কী বলেছিলেন ? 

(A) এমন চমৎকার গল্প আগে কখনও পড়েননি 

(B) এই গল্পটাই একটু ‘ কারেকশান ‘ করতে হবে 

(C) তোমার এখন পড়াশোনা করার বয়স , তাই করো 

(D) গল্পটা পড়ে যদি ভালো লাগে তাহলে ছাপাতে দেবেন

Ans: (B) এই গল্পটাই একটু ‘ কারেকশান ‘ করতে হবে

  1. গল্প পড়ার পর তপন সংকল্প করে – 

(A) আর কোনোদিন গল্প লিখবে না 

(B) আরও বেশি করে গল্প লিখবে 

(C) ভবিষ্যতে নিজের লেখা নিজে গিয়ে ছাপতে দেবে 

(D) নিজের পয়সা দিয়ে নিজের গল্প ছাপবে 

Ans: (C) ভবিষ্যতে নিজের লেখা নিজে গিয়ে ছাপতে দেবে

  1. ‘ চায়ের টেবিলে তপনের গল্প নিয়ে কথা ওঠে’ 

(A) সকালে 

(B) বিকালে 

(C) সন্ধ্যায় 

(D) রাতে 

Ans: (B) বিকালে

  1. ‘ কই পড্ ? লজ্জা কী ? পড় , সবাই শুনি ।’— কথাটা বলেছিলেন— 

(A) কাকা 

(B) বাবা 

(C) মা 

(D) ছোটোমাসি 

Ans: (C) মা

  1. ছোটোমাসি আর মেসো একদিন বেড়াতে এল , হাতে এক সংখ্যা – 

(A) আনন্দধারা 

(B) সন্ধ্যাতারা 

(C) বঙ্গবাণী 

(D) সাহিত্যসন্ধ্যা

Ans: (B) সন্ধ্যাতারা

জ্ঞানচক্ষু (গল্প) থেকে আরোও প্রশ্ন ও উত্তর দেখুন-PART-2 :

জ্ঞানচক্ষু গল্প থেকে আরও প্রশ্ন ও উত্তর-PART-3(CLICK HERE)

জ্ঞানচক্ষু গল্প থেকে আরও প্রশ্ন ও উত্তর-PART-4(CLICK HERE)

MCQ | জ্ঞানচক্ষু (গল্প) আশাপূর্ণা দেবী – মাধ্যমিক বাংলা সাজেশন | Madhyamik Bengali Suggestion :

  1. তপন দ্যাখে মেসোর মুখে – (A) ঠাট্টার আভাস (B) বিষাদের ছায়া (C) বিরক্তির প্রকাশ (D) করুণার ছাপ 

Answer : (D) করুণার ছাপ

  1. তখন আহ্লাদে কাঁদো কাঁদো হয়ে যায় । এখানে যার কথা বলা হয়েছে , সে হল – (A) ছোটোমাসি (B) তপন (C) মেজোকাকু (D) মা

Answer : (B) তপন

  1. ‘ আমি বললে সন্ধ্যাতারার সম্পাদক না করতে পারবে না। এখানে বক্তা হলেন – (A) তপনের বাবা (B) তপনের ছোটোমামা (C) তপনের মেজোকাকু (D) তপনের ছোটোমেসো 

Answer : (D) তপনের ছোটোমেসো

  1. তপনের গল্প ছাপিয়ে দেওয়ার কথাটা উঠেছিল—  (A) বৈঠকখানায় (B) বিকেলে চায়ের টেবিলে(C) রাতে খাবার টেবিলে(D) দুপুরে খাবার টেবিলে 

Answer : (B) বিকেলে চায়ের টেবিলে

  1. তপনের গল্প শুনে সবাই –  (A) হাসে (B) দুঃখ পায় (C) বিরক্ত হয় (D) রেগে যায়

Answer : (A) হাসে

  1. ‘ না না আমি বলছি- তপনের হাত আছে ।’— এখানে তপনের ‘ হাত আছে বলতে বোঝানো হয়েছে—  (A) তপনের লেখার হাত আছে (B) বিয়েবাড়িতে ঘটে যাওয়া দুর্ঘটনায় তপনের ভূমিকা আছে (C) তপনের বেহালা বাজানোর হাত আছে (D) ‘ সন্ধ্যাতারা ‘ পত্রিকায় লেখা ছাপানোয় তপনের হাত আছে

Answer : (A) তপনের লেখার হাত আছে

  1. না – না আমি বলছি- তপনের হাত আছে ।’- এখানে বক্তা হলেন  (A) তপনের ছোটোমেসো (B) তপনের ছোটোমাসি(C) ‘ সন্ধ্যাতারা ‘ পত্রিকার সম্পাদক(D) তপনের মেজোকাকু 

Answer : (A) তপনের ছোটোমেসো

  1. ‘ তোমার গল্প তো দিব্যি হয়েছে । যাকে উদ্দেশ্য করে এ কথা বলা হয়েছে , সে হল – (A) তপন (B) ছোটোমেসো (C) ছোটোমাসি (D) ছোটোমামা

Answer : (A) তপন

  1. তপনের লেখাটা ছাপতে দেওয়ার আগে যা করা দরকার , তা –  (A) নতুন করে লেখা (B) টাইপ করিয়ে নেওয়া (C) একটু কারেকশন করা (D) পরিষ্কার হাতের লেখায় লেখা

Answer : (C) একটু কারেকশন করা

  1. ‘ তপন প্রথমটা ভাবে ঠাট্টা । যে বিষয়টিকে তপন ঠাট্টা বলে মনে করে , তা হল –  (A) তার লেখা গল্প ছাপতে দেওয়া(B) তার লেখা গল্প ছাপার অযোগ্য (C) ছোটোমেসোর অনেক বই ছাপা হয়েছে(D) ছোটোমাসি একটা গল্প লিখেছে 

Answer : (A) তার লেখা গল্প ছাপতে দেওয়া

  1. সাধারণত তপনের বয়সি ছেলেমেয়েদের লেখা গল্পের বিষয় হয় –  (A) রুপকথা (B) ভৌতিক ঘটনা(C) খুন – জখম – অ্যাকসিডেন্ট অথবা না – খেতে পেয়ে মরে যাওয়া ।(D) ব্যাক্তিগত অভিজ্ঞতা

Answer : (A) রুপকথা

  1. তপন যে – বিষয়টি নিয়ে গল্প লেখে সেটি হল –  (A) খুন – জখম – অ্যাকসিডেন্ট (B) ওর ভরতি হওয়ার দিনের অভিজ্ঞতা (C) ঝড়ের রাতের অভিজ্ঞতা (D) রূপকথা 

Answer : (B) ওর ভরতি হওয়ার দিনের অভিজ্ঞতা

  1. ‘ তপন বিহ্বল দৃষ্টিতে তাকায় । – তপনের দৃষ্টিতে যা ছিল , তা হল –  (A) কষ্ট (B) অবিশ্বাস (C) রাগ(D) দুঃখ

Answer : (B) অবিশ্বাস

  1. ছুটি ফুরোলে গল্পটি নিয়ে চলে গেলেন –  (A) ‘ সন্ধ্যাতারা ‘ পত্রিকার সম্পাদক (B) তপনের মেজোকাকু (C) তপনের ছোটোমাসি (D) তপনের ছোটোমেসো 

Answer : (D) তপনের ছোটোমেসো

  1. মেসো চলে গেলে তপন বসে বসে দিন গোনে  (A) উদ্বিগ্ন হয়ে (B) আতঙ্কিত হয়ে (C) কৃতার্থ হয়ে (D) আনন্দিত হয়ে 

Answer : (C) কৃতার্থ হয়ে

  1. ছেলেবেলা থেকেই তপন গল্প শুনেছে—  (A) একটা – আধটা (B) রাশি রাশি(C) বাবার মুখে (D) ঠাকুমার মুখে

Answer : (B) রাশি রাশি

  1. এখন তপন গল্প পড়ছে—  (A) রাশি রাশি (B) ঝুড়ি ঝুড়ি (C) বস্তা বস্তা (D) হাতে গোনা 

Answer : (C) বস্তা বস্তা

  1. শুধু এইটাই জানা ছিল না । অজানা বিষয়টি হল  (A) মেসো একজন লেখক (B) তার গল্প ছাপা হবে (C) মানুষই গল্প লেখে (D) সে গল্প লিখতে পারে 

Answer : (C) মানুষই গল্প লেখে

  1. তপন আস্তে আস্তে উঠে গেল – (A) চিলেকোঠায় (B) তিনতলার সিঁড়িতে (C) দোতলার সিঁড়িতে (D) ছাদে 

Answer : (B) তিনতলার সিঁড়িতে

  1. তপন আস্তে আস্তে তিনতলার সিঁড়িতে উঠে গেল ( ক ) ভোরবেলা ও বিকেলবেলা দুপুরবেলা ( ঘ ) সন্ধেবেলা ১.৫৪ তপন আস্তে আস্তে তিনতলার সিঁড়িতে উঠে গেল—  (A) ব্যাটবল নিয়ে (B) রং – তুলি নিয়ে (C) গুলতি নিয়ে l(D) খাতা – কলম নিয়ে 
  2. বিয়েবাড়িতেও তপনের মা যেটি না – আনিয়ে ছাড়েননি , সেটি  (A) বেনারসি শাড়ি (B) সোনার গয়না (C) পড়ার বই (D) হোমটাস্কের খাতা

Answer : (D) হোমটাস্কের খাতা

  1. গায়ে কাঁটা দিয়ে উঠল তপনের ।’- তপনের গায়ে কাঁটা দিয়ে উঠল –  (A) অন্ধকারে কাউকে সিঁড়িতে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে (B) নিজের লেখা গল্প পড়ে(C) ছাপার হরফে নিজের লেখা পড়ে(D) নিঝুম দুপুরে একলা ঘরে ভূতের গল্পঃ পড়ে

Answer : (B) নিজের লেখা গল্প পড়ে

  1. মাথার চুল খাড়া হয়ে উঠল – (A) ছোটোমাসির (B) তপনের (C) ছোটোমেসোর(D) তপনের মায়ের

Answer : (B) তপনের

  1. তপন গল্প লিখে প্রথম জানিয়েছিল (A) ছোটোমামাকে (B) ছোটোমেসোকে (C) ছোটোমাসিকে(D) ছোটকাকাকে

Answer : (C) ছোটোমাসিকে

  1. তপনের চিরকালের বন্ধু – (A) মা (B) ছোটমাসি (C) বাবা(D) ছোটমামা

Answer : (B) ছোটমাসি

  1. ছোটোমাসি তপনের থেকে বড়ো ছিল— (A) পাঁচ বছরের(B) আট বছরের(C) সাত বছরের (D) দশ বছরের 

Answer : (B) আট বছরের

  1. মামার বাড়ি এলে তপনের সব কিছুই – (A) দাদুর কাছে (B) দিদার কাছে (C) ছোটোমামার কাছে (D) ছোটোমাসির কাছে 

Answer : (D) ছোটোমাসির কাছে

  1. বিয়ের পর ছোটোমাসি হয়ে গেছে –  (A) একটু মুরুব্বি মুরুব্বি (B) একটু মোটা (C) একটু গম্ভীর (D) একটু রোগা 

Answer : (A) একটু মুরুব্বি মুরুব্বি

  1. ওমা এ তো বেশ লিখেছিস রে ? ‘ – এখানে বক্তা  (A) তপনের ছোটোমামা (B) তপনের মেজোকাকু (C) তপনের ছোটোমাসি(D) তপনের ছোটোমেসো

Answer : (C) তপনের ছোটোমাসি

  1. ‘ কোনোখান থেকে টুকলিফাই করিসনি তো ? — এ কথা বলেছেন (A) মা ছোটোমাসিকে(B) ছোটোমাসি মাকে(C) ছোটোমাসি তপনকে(D) ছোটোমেসো তপনকে

Answer : (D) ছোটোমেসো তপনকে

  1. ঠাট্টা – তামাশার মধ্যেই তপন গল্প লিখে ফ্যালে আরও—  (A) দু – তিনটে (B) তিন – চারটে (C) পাঁচটা(D) একটা 

Answer : (A) দু – তিনটে 

  1. ‘ যেন নেশায় পেয়েছে ।’— যাকে নেশায় পেয়েছে , সে হল –  (A) ছোটোমামা (B) তপন (C) ছোটোমেসো (D) বাবা

Answer : তপন ।

  1. ‘ যেন নেশায় পেয়েছে ।’— তপনকে কীসের নেশায় পেয়েছে ?  (A) ক্রিকেট খেলার (B) গল্প লেখার (C) গান শোনার (D) টিভি দেখার

Answer : (B) গল্প লেখার

  1. ‘ এমন সময় ঘটল সেই ঘটনা ।’— ঘটনাটি হল—  (A) ছোটোমাসির বিয়ে (B) তপনের গল্প লেখা (C) মেসোকে গল্প পড়ানো(D) তপনের গল্প ছাপা হওয়া

Answer : 

  1. ‘ বুকের রক্ত ছলকে ওঠে তপনের ।’- এর কারণ –  (A) ছোটোমাসি – মেসোর হঠাৎ আগমন(B) ‘ সন্ধ্যাতারা ‘ পত্রিকায় তপনের গল্প ছাপার সম্ভাবনা(C) দীর্ঘদিন পর তার চিরকালের বন্ধু ছোটমাসির সাথে দেখা হয়(D) তার লুকিয়ে গল্পঃ লেখার কথা প্রকাশ্যে এসে যাওয়া ।

Answer : (A) ছোটোমাসি – মেসোর হঠাৎ আগমন

  1. ‘ পৃথিবীতে এমন অলৌকিক ঘটনাও ঘটে ? ‘ — অলৌকিক ঘটনাটি হল –  (A) এক লেখকের সঙ্গে তপনের ছোটোমাসির বিয়ে হয়েছে (B) বাড়িতে তপনের নাম হয়ে গেছে কবি , সাহিত্যিক , কথাশিল্পী(C) তপনের লেখা গল্প ‘ সন্ধ্যাতারা ‘ পত্রিকায় ছাপা হয়েছে (D) তপন দেখল ছাপানো গল্পের একটি লাইনও তার নিজের নয় । 
  2. তপনের সম্পূর্ণ নাম ছিল –  (A) তপনকান্তি রায় (B) তপনকুমার রায় (C) তপনকুমার সেন (D) তপন রায় 

Answer : (B) তপনকুমার রায়

  1. তপনের লেখা গল্পের নাম ছিল –  (A) প্রথম দিন (B) প্রথম পরীক্ষা (C) শেষ দিন (D) শেষ রাত 

Answer : (A) প্রথম দিন

  1. গল্প লেখার জন্য তপনের বাড়িতে তপনের নাম হয়ে গেছে –  (A) কবি , সাহিত্যিক , কথাশিল্পী (B) সাহিত্যিক , কথাশিল্পী (C) কবি , গল্পকার , কথাশিল্পী (D) কবি , নাট্যকার , ঔপন্যাসিক 

Answer : (A) কবি , সাহিত্যিক , কথাশিল্পী

  1. ক্রমশ ও কথাটাও ছড়িয়ে পড়ে ।’— যে – কথাটি ছড়িয়ে পড়ে , সেটি হল—  (A) তপনের গল্প লেখার কথা (B) তপনের গল্প ‘ সন্ধ্যাতারা ‘ – য় ছেপে বেরোনোর কথা (C) তপনের লেখা ছোটোমেসোর কারেকশন করে দেওয়ার কথা (D) তপনের পরীক্ষায় পাসের কথা

Answer : (C) তপনের লেখা ছোটোমেসোর কারেকশন করে দেওয়ার কথা

  1. আমাদের থাকলে আমরাও চেষ্টা করে দেখতাম ।’- উক্তিটির বক্তা – (A) ছোটোমাসি (B) তপনের বন্ধুরা (C) মেজোকাকু (D) মেসো 

Answer : 

  1. তপনের বাড়িতে বেড়াতে এসে ছোটোমাসি খায়— (A) চা – বিস্কুট (B) মাংস – ভাত (C) ডিমভাজা আর চা (D) কফি আর কেক 

Answer : (C) ডিমভাজা আর চা

  1. তপনদের বাড়িতে বেড়াতে এসে ছোটোমেসো খান—  (A) শুধু কফি (B) কেক আর কফি (C) ডিমভাজা আর চা (D) ডিমভাজা আর কফি 

Answer : 

  1. ‘ কই তুই নিজের মুখে একবার পড় তো তপন শুনি ।’— উদ্ধৃতিটির বক্তা (A) তপন (B) তপনের মা (C) তপনের বাবা (D) তপনের ছোটোমাসি

Answer : (B) তপনের মা

  1. ‘ বাবা , তোর পেটে পেটে এত ।’— এখানে ‘ তোর ’ বলতে বোঝানো হয়েছে  (A) তপনকে (B) তপনের মেজোকাকুকে (C) তপনের ছোটোমাসিকে (D) তপনের বন্ধুকে 

Answer : (A) তপনকে

  1. তপনের মেশোমশাই কোন্ পত্রিকার সম্পাদককে চিনতেন ?  (A) শুকতারা (B) আনন্দমেলা (C) সন্ধ্যাতারা (D) দেশ 

Answer : (C) সন্ধ্যাতারা

  1. তপনের লেখাটা নতুন করে নিজের পাকা হাতের কলমে লিখেছেন—  (A) ‘ সন্ধ্যাতারা ‘ পত্রিকার সম্পাদক (B) তপনের ছোটোমেসো (C) তপনের মেজোকাকু (D) তপনের বাবা 

Answer : (B) তপনের ছোটোমেসো

  1. তপন আর পড়তে পারে না কারণ –  (A) তার ঘুম পেয়েছিল (B) তার কষ্ট হচ্ছিল (C) তার রাগ হচ্ছিল (D) তার বিরক্ত লাগছিল 

Answer : (B) তার কষ্ট হচ্ছিল

  1. ‘ তপনের অপরিচিত ।’- যে – বস্তুর কথা বলা হয়েছে , তা হল –  (A) মেসোর পরিচয় (B) তার নিজের লেখা গল্প (C) ‘ সন্ধ্যাতারা ‘ – র সম্পাদকের পরিচয় (D) ‘ সন্ধ্যাতারা ‘ পত্রিকাটি 

Answer : (B) তার নিজের লেখা গল্প

  1. ‘ তবু ‘ ধন্যি ধন্যি ‘ পড়ে যায় ।’— ‘ ধন্যি ধন্যি ‘ – র অর্থ হল –  (A) প্রশংসা (B) ব্যঙ্গ(C) নিন্দা (D) তামাশা

Answer : (A) প্রশংসা 

  1. ‘ আজ যেন তার জীবনের সবচেয়ে দুঃখের দিন – দিনটিকে সবচেয়ে দুঃখের দিন মনে হয়েছিল , সেটি ছিল – (A) ছোটোমাসির বিয়ের দিন (B) মামাবাড়িতে আসার দিন (C) নিজের গল্প ছাপা অক্ষরে দেখার দিন (D) মামাবাড়ি থেকে চলে যাওয়ার দিন 

Answer : (C) নিজের গল্প ছাপা অক্ষরে দেখার দিন

  1. ‘ কীরে তোর যে দেখি পারা ভারী হয়ে নেয়া শব্দের অর্থ হল— (A) কে পা মোটা হয়ে যাওয়া (B) গম্ভীর হয়ে যাওয়া (C) ভারিক্কি হয়ে যাওয়া (D) অহংকারী হয়ে যাওয়া

Answer : (D) অহংকারী হয়ে যাওয়া

  1. ‘ ছাপা হয় হোক , না হয় না হোক ।’— এর মধ্যে তপনের যে – মানসিকতা প্রকাশ পায় , তা হল  (A) মরিয়া (B) বিরক্তি (C) দুঃখ (D) অভিমান 

Answer : (A) মরিয়া

  1. তপনকে যেন আর কখনো শুনতে না হয় । যা না – শোনার কথা বলা হয়েছে , তা হল –  (A) সে গল্প লিখতে পারে না (B) ছোটোমেসো গল্প লিখে দিয়েছেন (C) ছোটোমাসি সুপারিশ করেছেন (D) অন্য কেউ তার গল্প ছাপিয়ে দিয়েছেন

Answer : (D) অন্য কেউ তার গল্প ছাপিয়ে দিয়েছেন

  1. ‘ তার চেয়ে দুঃখের কিছু নেই , তার থেকে অপমানের ! ‘ — যে বিষয়ে কথা বলা হয়েছে , তা হল—  (A) নিজের গল্প ছাপা না – হওয়া (B) নিজের গল্পে অন্যের ্যর লেখা লাইন পড়াশোন(C) বাড়ির লোকেদের ঠাট্টাতামাশা (D) নিজের গল্প লিখতে না – পারা 

Answer : (B) নিজের গল্পে অন্যের ্যর লেখা লাইন পড়াশোন

  1. তপন প্রথমটা ভাবে ঠাট্টা , কিন্তু যখন দেখে মেসোর মুখে করুণার ছাপ , তখন আহ্লাদে _____ হয়ে যায় ।  (A) আনন্দিত (B) দুঃখিত (C) কাঁদো কাঁদো (D) বিহ্বল 

Answer : (C) কাঁদো কাঁদো

  1. ছোটো মেসোমশাই তপনের গল্প হাতে পেয়ে কী বলেছিলেন ?  (A) এমন চমৎকার গল্প আগে কখনও পড়েননি (B) এই গল্পটাই একটু ‘ কারেকশান ‘ করতে হবে (C) তোমার এখন পড়াশোনা করার বয়স , তাই করো (D) গল্পটা পড়ে যদি ভালো লাগে তাহলে ছাপাতে দেবেন

Answer : (B) এই গল্পটাই একটু ‘ কারেকশান ‘ করতে হবে

  1. গল্প পড়ার পর তপন সংকল্প করে –  (A) আর কোনোদিন গল্প লিখবে না (B) আরও বেশি করে গল্প লিখবে (C) ভবিষ্যতে নিজের লেখা নিজে গিয়ে ছাপতে দেবে (D) নিজের পয়সা দিয়ে নিজের গল্প ছাপবে 

Answer : (C) ভবিষ্যতে নিজের লেখা নিজে গিয়ে ছাপতে দেবে

  1. ‘ চায়ের টেবিলে তপনের গল্প নিয়ে কথা ওঠে’  (A) সকালে (B) বিকালে (C) সন্ধ্যায় (D) রাতে 

Answer : (B) বিকালে

  1. ‘ কই পড্ ? লজ্জা কী ? পড় , সবাই শুনি ।’— কথাটা বলেছিলেন—  (A) কাকা (B) বাবা (C) মা (D) ছোটোমাসি 

Answer : (C) মা

  1. ছোটোমাসি আর মেসো একদিন বেড়াতে এল , হাতে এক সংখ্যা –  (A) আনন্দধারা (B) সন্ধ্যাতারা (C) বঙ্গবাণী (D) সাহিত্যসন্ধ্যা

Answer : (B) সন্ধ্যাতারা

 

  1. ‘ জ্ঞানচক্ষু ‘ গল্পের রচয়িতা  (A) মহাশ্বেতা দেবী (B) আশাপূর্ণা দেবী (C) অনিমা দেবী (D) লীলা মজুমদার

Answer : (A) মহাশ্বেতা দেবী

  1. ‘ কথাটা শুনে তপনের চোখ মার্বেল হয়ে গেল ।’- কথাটা হল  (A) তপনের মামা একজন লেখক (B) তপনের লেখা ছাপা হয়েছে (C) তপনের মেসো একজন লেখক (D) সবাই তপনের গল্প শুনে হেসেছে 

Answer : (C) তপনের মেসো একজন লেখক

  1. ‘ চোখ মার্বেল হয়ে যাওয়া ‘ – এর অর্থ হল  (A) চোখ পাকানো (B) চোখ গোল গোল হয়ে যাওয়া (C) অবাক হয়ে যাওয়া (D) রেগে যাওয়া 

Answer : (C) অবাক হয়ে যাওয়া ।

  1. তপনের নতুন মেসোমশাই ছিলেন একজন  (A) অভিনেতা (B) চিত্রপরিচালক (C) খেলোয়াড় (D) লেখক 

Answer : (D) লেখক

  1. তপনের লেখক মেসোমশাই হলেন তার  (A) বড়োমাসির স্বামী (B) মেজোমাসির স্বামী (C) সেজোমাসির স্বামী (D) ছোটোমাসির স্বামী 

Answer : (D) ছোটোমাসির স্বামী

  1. তিনি নাকি বই লেখেন । তিনি হলেন  (A) তপনের নতুন মেসোমশাই (B) তপনের বাবা (C) তপন (D)’ সন্ধ্যাতারা ‘ পত্রিকার সম্পাদক 

Answer : (A) তপনের নতুন মেসোমশাই 

  1. অনেক বই ছাপা হয়েছে  (A) তপনের (B) নতুন মেসোমশাইয়ের (C) ছোটোমাসির (D) মেজোকাকুর

Answer : (B) নতুন মেসোমশাইয়ের 

  1. তপন কখনো এত কাছ থেকে –  (A) জলজ্যান্ত ভূত দেখেনি (B) সমুদ্র দ্যাখেনি (C) জলজ্যান্ত লেখক দ্যাখেনি (D) ক্রিকেট ম্যাচ দ্যাখেনি ।

Answer : (C) জলজ্যান্ত লেখক দ্যাখেনি

  1. তপনের নতুন মেসোমশাই খবরের কাগজ নিয়ে গল্প আর তর্ক করেন –  (A) ছোটোমামাদের মতোই(B) মা – মাসিদের মতোই (C) কাগজের সম্পাদকের মতোই (D) সাংবাদিকদের মতোই 

Answer : (A) ছোটোমামাদের মতোই

  1. ঠিক ছোটোমামাদের মতোই খবরের কাগজের সব কথা নিয়ে প্রবল আড্ডা – তর্কের পর শেষপর্যন্ত ‘ এ দেশের কিছু হবে না ‘ বলে মেসোমশাই—  (A) ঘুমিয়ে পড়েন (B) লিখতে বসেন (C) সিনেমা দেখতে বা বেড়াতে চলে যান (D) সিগারেট ধরান 

Answer : (C) সিনেমা দেখতে বা বেড়াতে চলে যান

  1. নতুন মেসোকে দেখে তপনের –  (A) জ্ঞানচক্ষু খুলে গেল(B) দমবন্ধ হয়ে এল(C) আনন্দ হল (D) গলা বুজে এল

Answer : (A) জ্ঞানচক্ষু খুলে গেল

  1. তপনের অবাক হওয়ার কারণ ছিল – (A) সে কখনও মেসোমশাইকে দেখেনি (B) সে কখনও কোনো লেখককে দেখেনি (C) সে নিজে গল্প লিখে ফেলেছিল(D) তার গল্প ছাপা হয়েছিল

Answer : (B) সে কখনও কোনো লেখককে দেখেনি

  1. ‘ এবিষয়ে সন্দেহ ছিল তপনের । — তপনের সন্দেহের বিষয়টি হল – (A) লেখকরা ভারি অহংকারী হয় । (B) ছোটোমাসির বিয়েতে আদৌ কোনো ঘটা হয়েছিল কিনা (C) নতুন মেসোমশাই প্রকৃতই একজন লেখক কিনা (D) লেখকরা তপনের বাবা , ছোটোমামা বা মেজোকাকুর মতো সাধারণ মানুষ

Answer : (D) লেখকরা তপনের বাবা , ছোটোমামা বা মেজোকাকুর মতো সাধারণ মানুষ

  1. তপন মূলত মামার বাড়ি এসেছে— (A) গরমের ছুটি উপলক্ষ্যে (B) পুজোর ছুটি কাটাতে (C) বিয়েবাড়ি উপলক্ষ্যে(D) ‘ সন্ধ্যাতারা ‘ – র প্রকাশ উপলক্ষ্যে

Answer : (C) বিয়েবাড়ি উপলক্ষ্যে

  1. ‘ তাই মেসো শ্বশুরবাড়িতে এসে রয়েছেন ক’দিন ।’— মেসোর শ্বশুরবাড়িতে এসে থাকার কারণ  (A) তাঁর গরমের ছুটি চলছিল(B) তাঁর সেখানে কাজ ছিল (C) তিনি নিরিবিলিতে গল্প লিখতে চেয়েছিলেন (D) তপন তাঁকে থাকতে অনুরোধ করেছিল

Answer : (A) তাঁর গরমের ছুটি চলছিল

  1. ‘ জ্ঞানচক্ষু ‘ গল্পে গরমের ছুটি চলছিল—  (A) তপনের (B) ছোটোমাসির(C) ছোটোমেসোর(D) তপন ও ছোটোমেসোর

Answer : (C) ছোটোমেসোর

  1. তপনের মেসোমশাই পেশাগত দিক থেকে যা ছিলেন—  (A) রাজনীতিবিদ (B) চিকিৎসক(C) সম্পাদক (D) অধ্যাপক

Answer : (D) অধ্যাপক

  1. আর সেই সুযোগেই দেখতে পাচ্ছে তপন … এখানে যে – সুযোগের কথা বলা হয়েছে , তা হল—  (A) মামার বাড়িতে থাকার সুযোগ (B) গল্প লেখার সুযোগ (C) জলজ্যান্ত লেখককে কাছ থেকে দেখার সুযোগ (D) ছুটির সুযোগ 

Answer : (C) জলজ্যান্ত লেখককে কাছ থেকে দেখার সুযোগ

  1. “ আর সেই সুযোগেই দেখতে পাচ্ছে তপন যা দেখতে পাচ্ছে , তা হল – (A) গল্প লেখা কত কঠিন (B) চেনাজানা না থাকলে গল্প ছাপানো যায় না (C) নতুন মেসোমশাই ভারি ঘুমকাতুরে (D) লেখক মানে কোনো আকাশ থেকে পড়া জীব নয়

Answer : (D) লেখক মানে কোনো আকাশ থেকে পড়া জীব নয়

  1. তপন প্রথম কী লিখেছিল ? (A) গল্প(B) উপন্যাস (C) প্রবন্ধ (D) কবিতা

Answer : (A) গল্প

  1. তপনের লেখা ছোটোমেসোর হাতে পৌঁছে দেয়—  (A) তপন নিজেই(B) তপনের মা(C) তপনের ছোটোমামা (D) তপনের ছোটোমাসি

Answer : (D) তপনের ছোটোমাসি

  1. ‘ আর সেই সুযোগেই দিব্যি একখানি দিবানিদ্রা দিচ্ছিলেন। সুযোগটি হল— (A) গরমের ছুটি(B) পুজোর ছুটি (C) বিয়ের জন্য নেওয়া ছুটি (D) বেড়াতে যাওয়ার ছুটি

Answer : (A) গরমের ছুটি

  1. ‘ ছোটোমাসি সেই দিকে ধাবিত হয় ।’— এখানে ‘ সেইদিকে ‘ বলতে বোঝানো হয়েছে—  (A) তিনতলার সিঁড়ির দিকে(B) ছোটোমেসোর দিকে(C) তপনের পড়ার ঘরের দিকে (D) মেজোকাকুর দিকে 

Answer : (B) ছোটোমেসোর দিকে

  1. তপনের ছোটোমাসি যখন ছোটোমেসোর দিকে ধাবিত হয় , মেসো তখন  (A) লিখছিলেন (B) দিবানিদ্রা দিচ্ছিলেন (C) টিভি দেখছিলেন(D) খবরের কাগজ পড়ছিলেন

Answer : (B) দিবানিদ্রা দিচ্ছিলেন ।

  1. ‘ তপন অবশ্য ‘ না – আ – আ’- করে প্রবল আপত্তি তোলে ।’ তপন যে বিষয়ে আপত্তি তোলে , তা হল (A) তার লেখা গল্প ছোটোমেসোকে দেখানো (B) অসময়ে ছোটোমেসোর ঘুম ভাঙানো (C) ছোটোমাসির শ্বশুরবাড়ি ফিরে যাওয়া (D) তার লেখা ছাপতে দেওয়া

Answer : (A) তার লেখা গল্প ছোটোমেসোকে দেখানো

  1. মাসির এই হইচইতে মনে মনে পুলকিত হয়  (A) তপন (B) মা (C) ছোটোমেসো (D) ছোটোমামা 

Answer : (A) তপন

  1. রত্নের মূল্য –  (A) দস্যুর কাছে(B) জহুরির কাছে (C) রত্নাকরের কাছে (D) নারীর কাছে

Answer : (B) জহুরির কাছে

  1. ‘ রত্নের মূল্য জহুরির কাছেই ।’ — এখানে ‘ রত্ন ‘ ও ‘ জহুরি ‘ হল –  (A) তপন ও ছোটোমাসি (B) তপন ও ছোটোমেসো (C) তপন ও ‘ সন্ধ্যাতারা ‘ – র সম্পাদক (D) তপন ও মেজোকাকু ‘ 

Answer : (B) তপন ও ছোটোমেসো

  1. মেসোর উপযুক্ত কাজ হবে সেটা ।’— উপযুক্ত কাজটি হল – (A) গল্প লিখে দেওয়া (B) তপনকে গল্প লেখা শিখিয়ে দেওয়া (C) তপনের গল্প ছাপিয়ে দেওয়া (D) তপনকে বেড়াতে নিয়ে যাওয়া

Answer : (C) তপনের গল্প ছাপিয়ে দেওয়া

  1. যে – পত্রিকায় তপনের গল্প ছাপিয়ে দেওয়ার কথা হয়েছিল , সেই পত্রিকার নাম – (A) শুকতারা (B) নক্ষত্র (C) ধ্রুবতারা (D) সন্ধ্যাতারা

Answer : (D) সন্ধ্যাতারা

  1. ‘ তোমার গল্প তো দিব্যি হয়েছে । এখানে বক্তা হল –  (A) তপন (B) ছোটোমামা(C) ‘ সন্ধ্যাতারা ‘ পত্রিকার সম্পাদক (D) ছোটোমেসো

Answer : (A) তপন

জ্ঞানচক্ষু (গল্প) থেকে আরোও প্রশ্ন ও উত্তর দেখুন-PART-2 :

জ্ঞানচক্ষু গল্প থেকে আরও প্রশ্ন ও উত্তর-PART-3(CLICK HERE)

জ্ঞানচক্ষু গল্প থেকে আরও প্রশ্ন ও উত্তর-PART-4(CLICK HERE)

অতিসংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর | জ্ঞানচক্ষু (গল্প) আশাপূর্ণা দেবী – মাধ্যমিক বাংলা প্রশ্ন ও উত্তর | Madhyamik Bengali Gyanchakshu Question and Answer :

  1. ‘ জ্ঞানচক্ষু ’ গল্পটি কার লেখা ? এর উৎস উল্লেখ করো ।

Ans: আশাপূর্ণা দেবী রচিত ‘ জ্ঞানচক্ষু ’ গল্পটির উৎস হল তাঁর ‘ কুমকুম ‘ নামক ছোটোদের গল্পসংকলন । 

  1. ‘ কথাটা শুনে তপনের চোখ মার্বেল হয়ে গেল। কোন কথা শুনে তপনের চোখ মার্বেল হয়ে গেল ? 

Ans: লেখকরা ভিন্ন জগতের প্রাণী — এটিই ছিল তপনের ধারণা । কিন্তু তার নতুন মেসোমশাই একজন লেখক শুনে বিস্ময়ে তপনের চোখ মার্বেল হয়ে গেল । 

  1. ‘ তিনি নাকি বই লেখেন ।’— কার কথা বলা হয়েছে ?

Ans: তপনের ছোটোমাসির বিয়ের পর সে জানতে পারে তার নতুন মেসোমশাই একজন লেখক । এখানে তাঁর কথাই বলা হয়েছে । 

  1. ‘ সত্যিকার লেখক ।’— এই উক্তির মধ্য দিয়ে তপনের মনের কোন্ ভাব প্রকাশিত হয়েছে বলে তোমার মনে হয় ? 

Ans: এই উক্তির মধ্য দিয়ে তপনের মনের বিস্ময় প্রকাশ পেয়েছে । লেখকরা আদৌ বাস্তব জগতের মানুষ নন – এই অলীক ভাবনা নতুন মেসোর সঙ্গে পরিচয়ে ভেঙে যাওয়াতেই এমন উক্তি । 

  1. ‘ এবিষয়ে সন্দেহ ছিল তপনের / —কোন বিষয়ে তপনের সন্দেহ ছিল ? 

Ans: লেখকদের যে বাস্তব জীবনে কখনও দেখা যেতে পারে , তাঁরাও যে তপনের বাবা , ছোটোমামা বা মেজোকাকার মতোই সাধারণ মানুষ— সে – বিষয়ে তপনের সন্দেহ ছিল । 

  1. তপনের বাবা – কাকা – মামাদের সঙ্গে লেখক মেসোমশাইয়ের কী কী মিল আছে ? 

Ans: তপনের বাবা – কাকা – মামাদের মতোই তার লেখক মেসোমশাইও দাড়ি কামান , সিগারেট খান , খেতে বসে খাবার তুলে দেন , সময়মতো স্নান করেন , ঘুমোন , খবরের কাগজ পড়েন , এমনকি সিনেমাও দেখেন । 

  1. তপনের নতুন মেসোমশাই শ্বশুরবাড়িতে এসে রয়েছেন কেন ? 

Ans: তপনের নতুন মেসোমশাই একজন অধ্যাপক । এই সময় তাঁর কলেজে গরমের ছুটি থাকায় তিনি শ্বশুরবাড়িতে এসে রয়েছেন ক – দিন । 

  1. ‘ আর সেই সুযোগেই দেখতে পাচ্ছে তপন । — কোন্ সুযোগে তপন কী দেখতে পাচ্ছে ? 

Ans: লেখক মেসোমশাইকে কাছ থেকে দেখার সুযোগ পেয়ে তপন বুঝতে পারে লেখকরা কোনো আকাশ থেকে পড়া জীব নয় , তাদেরই মতো মানুষ । 

  1. ‘ তপনদের মতোই মানুষ ।’— এ কথা বলার কারণ কী ? 

Ans: ছুটিতে মামার বাড়িতে এসে নতুন মেসোকে দেখে ও তাঁর লে সঙ্গে সময় কাটিয়ে তপনের বিশ্বাস হয় যে , লেখকরা কোনো আকাশ থেকে পড়া জীব নয় ; তাদের মতোই মানুষ ।

  1. তপনের মনে লেখক হওয়ার বাসনা জাগল কেন ?

Ans: লেখক নতুন মেসোমশাইকে দেখে তপন বুঝেছিল লেখকরা আসলে তাদের মতোই সাধারণ মানুষ । তাই উৎসাহিত তপন তার এতদিনের গল্প পড়ার ও শোনার অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে লেখক হতে চায় । 

  1. ‘ ছোটোমাসি সেই দিকে ধাবিত হয় । — তপনের ছোটোমাসি কোন্‌দিকে ধাবিত হয়েছিলেন ? 

Ans: তপন মেসোর দ্বারা অনুপ্রাণিত হয়ে একটি গল্প লিখে মাসিকে দেখায় । মাসি গল্পটিতে চোখ বুলিয়ে গল্পটির উৎকর্ষ বিচারের জন্য তপনের মেসো যেখানে ঘুমোচ্ছিলেন সেদিকে ধাবিত হয়েছিলেন । 

  1. ‘ রত্নের মূল্য জহুরির কাছেই । – কথাটির অর্থ কী ?

Ans: কেবলমাত্র গুণী ব্যক্তিই অপরের গুণের কদর করতে পারে । তাই তপনের লেখা গল্পের প্রকৃত সমঝদার যদি কেউ থাকেন তবে তিনি তার লেখক মেসোমশাই ।

  1. তপনের গল্প পড়ে তার নতুন মেসোমশাই কী বলেন ? 

Ans: তপনের লেখা গল্প পড়ে তার নতুন মেসোমশাই তাকে উৎসাহ দিয়ে বলেন , গল্পটা ভালোই হয়েছে , একটু কারেকশন করে দিলে সেটা ছাপানোও যেতে পারে । 

  1. ‘ তখন আহ্লাদে কাঁদো কাঁদো হয়ে যায় ।’— কে , কেন আহ্লাদে কাঁদো কাঁদো হয়ে যায় ?

Ans: ছোটোমেসো তপনের লেখাটা ছাপানোর কথা বললে তপন প্রথমে সেটাকে ঠাট্টা বলে ভাবে । কিন্তু মেসোর মুখে করুণার ছাপ দেখে তপন আহ্লাদে কাঁদো কাঁদো হয়ে যায় । 

  1. ‘ মেসোর উপযুক্ত কাজ হবে সেটা — উক্তিটি কার ? কোন্‌টা মেসোর উপযুক্ত কাজ হবে ?

Ans: উক্তিটি তপনের ছোটোমাসির । তাঁর মতে , তপনের লেখা গল্পটা ছোটোমেসো যদি একটু কারেকশন করে ছাপানোর ব্যবস্থা করে দেন , তবে সেটাই মেসোর উপযুক্ত কাজ হবে ।

  1. ‘ না করতে পারবে না । ‘ – কে , কাকে , কী বিষয়ে না – করতে পারবে না ? 

Ans: তপনের লেখক ছোটোমেসো ‘ সন্ধ্যাতারা ’ পত্রিকার সম্পাদককে তপনের লেখা গল্পটা ছাপানোর জন্য অনুরোধ করলে সম্পাদকমশাই না করতে পারবেন না ।

  1. তপনের বয়সি আর পাঁচটা ছেলেমেয়ের লেখার সঙ্গে তপনের লেখার তফাত কী ? 

Ans: তপনের বয়সি ছেলেমেয়েরা সাধারণত রাজারানি , খুন – জখম – অ্যাকসিডেন্ট অথবা না – খেতে পেয়ে মরা- এইসব বিষয়ে গল্প লেখে । কিন্তু তপনের লেখার বিষয় ছিল তার প্রথম দিন স্কুলে ভরতির অভিজ্ঞতা । 

  1. এটা খুব ভালো , ওর হবে । — কে , কোন প্রসঙ্গে এ কথা বলেছেন ? 

Ans: তপন তার স্কুলে ভরতির প্রথম দিনের অভিজ্ঞতা নিয়ে = একটি গল্প লিখেছিল । মাসির মাধ্যমে লেখাটি তার লেখক মেসোর কাছে পৌঁছোলে সেটি পড়ে মেসো এমন মন্তব্য করেছেন ।

  1. ‘ নতুন মেসোকে দেখে জানলে সেটা।- তপন কী জেনেছিল ? 

Ans: তপন ছোটো থেকেই বহু গল্প শুনেছে ও পড়েছে । কিন্তু সে জানত না যে , সাধারণ মানুষ সহজেই তা লিখতে পারে । নতুন মেসোকে দেখে সেটাই জানল ।

  1. ‘ মাথার চুল খাড়া হয়ে উঠল । — এর কারণ কী ছিল ? 

Ans: নতুন মেসোর দ্বারা অনুপ্রাণিত হয়ে তপন নিজেই চেষ্টা করে একটা গল্প লিখে ফেলে । নিজের সৃষ্টিতে রোমাঞ্চিত হয়ে তার মাথার চুল খাড়া হয়ে ওঠে ।

  1. ‘ ভালো হবে না বলছি ।’— কে , কাকে , কেন এই কথা বলেছে ?

Ans: তপনের লেখা গল্পটা কিছুটা পড়েই ছোটোমাসি তার প্রশংসা করেন । তারপর তিনি জিজ্ঞাসা করেন লেখাটা অন্য কোনো স্থান থেকে টোকা কিনা । তখন বিরক্ত হয়ে তপন আলোচ্য উদ্ধৃতিটি করে ।

  1. ‘ কিন্তু গেলেন তো — গেলেনই যে ! – কার প্রসঙ্গে এ কথা বলা হয়েছে ? 

Ans: তপনের লেখা গল্প সামান্য কারেকশন করে ‘ সন্ধ্যাতারা ‘ – য় ছাপিয়ে দেবেন বলে ছোটোমেসো তা নিয়ে যান । তারপর অনেকদিন কেটে গেলেও সে – ব্যাপারে কোনো সংবাদ না পাওয়ায় এ কথা বলা খা হয়েছে ।

  1. ” যেন নেশায় পেয়েছে । কোন নেশার কথা বলা হয়েছে ?

Ans: নতুন মেসোকে দেখে অনুপ্রাণিত হয়ে তপন যে – গল্প লিখেছিল তা মাসির উৎসাহে মেসো ছাপিয়ে দেওয়ার কথা বলেন । এরপর থেকে ক তপনকে গল্প লেখার নেশায় পায় । 

  1. ‘ বুকের রক্ত ছলকে ওঠে তপনের।- তপনের বুকের রক্ত ছলকে ওঠার কারণ কী ছিল ?

Ans: গল্প ছাপানোর প্রতিশ্রুতি দিয়ে দীর্ঘদিন অদৃশ্য থাকার পর হঠাৎই একদিন ছোটোমাসি ও মেসো ‘ সন্ধ্যাতারা ‘ পত্রিকা হাতে নিয়ে তপনদের বাড়িতে আসেন । তাতে তার গল্প ছাপার কথা ভেবে তপনের বুকের রক্ত ছলাত করে ওঠে ।

  1. পৃথিবীতে এমন অলৌকিক ঘটনাও ঘটে ? – এখানে কোন্ ঘটনাকে অলৌকিক ঘটনা বলা হয়েছে ? 

Ans: পত্রিকায় তপনকুমার রায়ের লেখা গল্প ছাপার অক্ষরে প্রকাশিত হওয়া এবং সেই পত্রিকা বহু মানুষের কাছে পৌঁছে যাওয়ার ঘটনাকেই ‘ জ্ঞানচক্ষু ’ গল্পে অলৌকিক ঘটনা বলা হয়েছে । 

  1. ‘ তা ঘটেছে , সত্যিই ঘটেছে । — কোন ঘটনার কথা বলা হয়েছে ? 

Ans: তপনের লেখক মেসো তার একটি গল্প ‘ সন্ধ্যাতারা ‘ পত্রিকার সম্পাদককে বলে ছাপিয়ে দিয়েছিলেন । এই অবিশ্বাস্য , অভূতপূর্ব ঘটনার কথাই এখানে বলা হয়েছে ।

  1. ‘ বাবা , তোর পেটে পেটে এত ! ‘ — কে , কোন প্রসঙ্গে এ কথা বলেছিলেন ?

Ans: ‘ জ্ঞানচক্ষু ’ গল্পে তপনের লেখা গল্প ‘ সন্ধ্যাতারা ’ পত্রিকায় প্রকাশিত হওয়ার পর বাড়িময় শোরগোল পড়ে যায় । তখন তপনের মা এই কথাটি তপনের সুপ্ত প্রতিভা সম্পর্কে বলেন ।

  1. ‘ এর মধ্যে তপন কোথা ? ’ – উক্তিটির তাৎপর্য বুঝিয়ে দাও । 

Ans: সন্ধ্যাতারা ‘ – য় ছেপে বেরোনো তপনের গল্পটা মেসোর হাতে পড়ে কারেকশনের নামে আগাগোড়াই পালটে যায় । বাড়ির সকলের অনুরোধে গল্পটা পড়তে গিয়ে তপন লেখার মধ্যে নিজেকে আর খুঁজে পায় না । 

  1. ‘ ক্রমশ ও কথাটাও ছড়িয়ে পড়ে ।’— কোন্ কথা ছড়িয়ে পড়ে ? 

Ans: ‘ সন্ধ্যাতারা ‘ – য় তপনের গল্প প্রকাশকে কেন্দ্র করে বাড়িতে শোরগোল পড়লেও পরে জানা যায় যে , তার লেখাটি মেসো কারেকশন করে ছাপারে ব্যবস্থা করেছেন — এই কথাটিই ছড়িয়ে পড়ে । 

  1. তপনের লেখা সম্পর্কে তার বাবার কী বক্তব্য । 

Ans: তপনের বাবা মনে করেন , তপনের লেখক ছোটোমেসো তপনের লেখাটা কারেকশন করে দিয়েছিলেন বলেই এত সহজে সেটা পত্রিকায় ছাপানো সম্ভব হয়েছে । 

  1. তপনের লেখা পত্রিকায় ছেপে বেরোতে দেখে তার মেজোকাকু কী বলেন ?

Ans: তপনের লেখা ছেপে বেরোনোর কৃতিত্ব তপনকে না – দিয়ে মেজোকাকু ব্যঙ্গ করে বলেন , তাঁদের ওরকম লেখক – মেসোমশাই থাকলে তাঁরাও গল্প লেখার চেষ্টা করে দেখতেন । 

  1. ‘ গল্পটা ছাপা হলে যে ভয়ংকর আহ্লাদটা হবার কথা , সে আহ্লাদ খুঁজে পায় না।- উদ্দিষ্ট ব্যক্তির আহ্লাদিত না – হতে পারার কারণ কী ? 

Ans: নিজের লেখা ছেপে বেরোলে যে – তীব্র আনন্দ হওয়ার কথা সেই আহ্লাদ খুঁজে পায় না তপন । তার কৃতিত্বের চেয়েও যেন বড়ো হয়ে ওঠে ছোটোমেসোর গল্প ছাপিয়ে দেওয়ার কৃতিত্ব । 

  1. ‘ বোবার মতো বসে থাকে / – কে , কেন বোবার মতো বসে থাকে ?

Ans: নিজের লেখা গল্প ছেপে বেরোনোর পর পড়তে গিয়ে তপন দেখে কারেকশনের নাম করে মেসো লেখাটা আগাগোড়াই বদলে দিয়েছেন । তাই স্তম্ভিত তপন তা দেখে বোবার মতো বসে থাকে । 

  1. ” তপন বইটা ফেলে রেখে চলে যায় , তপনের বই ফেলে রেখে যাওয়ার কারণ কী ? 

Ans: পত্রিকায় গল্প প্রকাশিত হওয়ায় তপনের যে – আনন্দ হয়েছিল তা মুহূর্তেই স্তিমিত হয়ে যায় । কারেকশনের নামে তার লেখাটা আগাগোড়াই বদলে গেছে । তাই অভিমানে তপন বই ফেলে চলে যায় । 

  1. বইটা ফেলে রেখে তপন কী করে ?

Ans: বইটা ফেলে রেখে তপন ছাতে উঠে গিয়ে শার্টের তলাটা তুলে চোখের জল মোছে । 

  1. ‘ তপন আর পড়তে পারে না । – তপনের আর পড়তে না পারার কারণ কী ? 

Ans: নিজের লেখা গল্প পত্রিকায় ছেপে বেরোনোর পর পড়তে গিয়ে তপন দেখে কারেকশনের নাম করে ছোটো মেসোমশাই তার লেখাটা পুরোটাই পালটে দিয়েছেন । তাই তপন আর পড়তে পারে না ।

  1. “ তপনের মনে হয় আজ যেন তার জীবনের সবচেয়ে দুঃখের দিন ! – দিনটিতে কোন্ উল্লেখযোগ্য ঘটনা ঘটেছিল ? 

Ans: জীবনের প্রথম লেখা গল্প ছেপে বেরোনোর পর তপন দেখে কারেকশনের নামে নতুন মেসো পুরো গল্পটাই বদলে দিয়েছেন । গল্পের স্বকীয়তা হারানোয় ব্যথিত তপনের সেই দিনটা সবচেয়ে দুঃখের মনে হয়েছে । 

  1. ‘ এই দুঃখের মুহূর্তে গভীরভাবে সংকল্প করে তপন , প্রশ্ন ২.৩৮ —সংকল্পটি কী ? 

Ans: তপন সংকল্প করেছিল , ভবিষ্যতে  যদি কখনও আর কোনো লেখা ছাপাতে হয় , তবে সে নিজে হাতে সেই লেখা পৌঁছে দিয়ে আসবে পত্রিকার অফিসে ।

  1. ‘ তপনকে যেন আর কখনো না শুনতে হয় ….. —এখানে কী শোনার কথা বলা হয়েছে ? 

Ans: তপনকে যেন আর কখনও শুনতে না – হয় যে , অমুক তপনের লেখা ছাপিয়ে দিয়েছে ।

  1. ” তার চেয়ে দুঃখের কিছু নেই , — কীসের কথা বলা হয়েছে ? 

Ans: আশাপূর্ণা দেবী রচিত ‘ জ্ঞানচক্ষু ‘ গঙ্গে তপনের মনে হয়েছে নিজের গল্প পড়তে বসে অন্যের লেখা লাইন পড়ার চেয়ে দুঃখের আর কিছুই নেই । 

  1. ‘ তপন প্রথমটা ভাবে ঠাটা- তপন কোন্ কথাকে প্রথমটায় ঠাট্টা ভেবেছিল ? 

Ans: লেখক নতুন মেসোমশাই যখন তপনকে জানান তার গল্প দিব্যি হয়েছে , এমনকি একটু সংশোধন করে দিলে ছাপতেও দেওয়া যায় তখন সম্পূর্ণ বিশ্বাস করতে না পেরে তপন এই কথাটাকে নিছক ঠাট্টা বলে মনে করেছিল ।

  1. ‘ দুপুরবেলা , সবাই যখন নিথর নিথর’- তখন তপন কী করেছিল ?

Ans: বিয়েবাড়ির দুপুরবেলা সবাই যখন নিথর , তখন তপন হোমটাস্কের খাতা নিয়ে তিনতলায় উঠে একাসনে বসে আস্ত একটা গল্প লিখে ফেলেছিল । 

  1. ‘ না না আমি বলছি — তপনের হাত আছে – কখন বক্তা এ কথা বলেন ?

Ans: বিকেলে চায়ের টেবিলে তপনের গল্পের কথা শুনে সবাই হেসে ওঠায় লেখক মেসোমশাই এ কথা বলেন ।

  1. নতুন মেসোকে দেখে জ্ঞানচক্ষু গেল তপনের এখানে কোন জ্ঞানের কথা বলা হয়েছে ? 

Ans: এখানে লেখকেরাও যে নিছক সুস্থ – স্বাভাবিক ও সাধারণ মানুষ , তপনের এই জ্ঞানলাভ ের কথাই বলা হয়েছে ।

  1. ‘ নতুন মেসোকে ’ দেখে তপন কী জেনেছিল ?

Ans: লেখকেরা যে অন্য গ্রহ থেকে পড়া কোনো জীব নয় , আর পাঁচ জনের মতোই নিছক সাধারণ মানুষ ; নতুন মেসোকে দেখে তপন এ কথাই জেনেছিল ।

  1. ‘ তাই জানতো না’- কে , কী জানত না ?

Ans: জলজ্যান্ত একজন লেখককে যে এত কাছ থেকে দেখা যায় , ‘ জ্ঞানচক্ষু ‘ গল্পের নায়ক তপন তাই জানত না । 

  1. ‘ তপন কৃতার্থ হয়ে বসে বসে দিন গোনে । – তপন ‘ বসে বসে দিন গোনে কেন ? 

Ans: পত্রিকায় গল্প ছাপা হওয়ার আশায় তপন কৃতার্থ হয়ে বসে বসে দিন গোনে ।

  1. ‘ গায়ে কাঁটা দিয়ে উঠল তপনের- তপনের গায়ে কাঁটা দিয়ে উঠল কেন ? 

Ans: তপনের নিজের লেখা গল্প , যা কারেকশনের পর সম্পূর্ণ পরিবর্তিত হয়ে গিয়েছিল তা পাঠ করে তার গায়ে কাঁটা দিয়ে উঠেছিল ।

  1. ‘ জ্ঞানচক্ষু গল্পে তপনের মেসো কোন্ মহত্ত্ব দেখিয়েছিলেন ?

Ans: লেখক মেসোমশাই সকলের সামনে তপনের গল্পের প্রশংসা করেন এবং গল্পটি সংশোধন করে ‘ সন্ধ্যাতারা ‘ পত্রিকায় ছাপিয়ে দেন ।

  1. এর মধ্যে তপন কোথা ? – কেন এমন বলা হয়েছে ? 

Ans: লেখক মেসোমশাইয়ের সংশোধনের পরে তপনের নামে প্রকাশিত গল্প তার কাছেই অপরিচিত ও নতুন হয়ে ওঠে । তাই এমন কথা বলা হয়েছে । 

  1. ‘ বিকেলে চায়ের টেবিলে ওঠে কথাটা কোন্ কথাটা ? 

Ans: লেখক মেসোমশাইকে দেখে অনুপ্রাণিত হয়ে তপন যে একটা আস্ত গল্প লিখে ফেলেছে , এই কথাটা বিকেলে চায়ের টেবিলে উঠেছিল ।

  1. তপনদের মতোই মানুষ ‘ — এ কথা বলার কারণ কী ? 

Ans: লেখক যে কোনো আকাশ থেকে পড়া জীব নয় আর সকলের মতোই সাধারণ মানুষ ; নতুন মেসোকে দেখে তপন এই সত্য টের পায় ।

  1. ‘ সারাবাড়িতে শোরগোল পড়ে যায় — শোরগোলের কারণ কী ? 

Ans: তপনের লেখা গল্প পত্রিকায় ছাপা হয়েছে , এই শুনে সারাবাড়িতে শোরগোল পড়ে যায় ।

  1. তিনি নাকি বই লেখেন , ‘ — এখানে কার কথা বলা হয়েছে ? 

Ans: এখানে তপনের নতুন মেসোমশাইয়ের কথা বলা হয়েছে ।

  1. ‘ মেসো তেমনি করুণার মূর্তিতে বলেন— কী বলেন ?

Ans: মেসো তেমনি করুণার মূর্তিতে তপনের মাসিকে বলেন যে , তিনি ‘ সন্ধ্যাতারা ‘ – র সম্পাদককে বলে তপনের গল্পটা ছাপিয়ে দেবেন ।

  1. ‘ তা ঘটেছে , সত্যিই ঘটেছে— কী ঘটেছে ?

Ans: তপনের লেখা গল্প ‘ সন্ধ্যাতারা ‘ পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে ।

  1. ‘ একটু ‘ কারেকশান ’ করে হয়ে করে দিলে ছাপাতে দেওয়া চলে । –কে , কী ছাপানোর কথা বলেছেন । 

Ans: তপনের লেখক মেসোমশাই তপনের অপরিণত হাতের লেখা পর গল্পটি একটু ‘ কারেকশান ‘ ও ‘ ইয়ে করে ‘ ছাপানোর কথা বলেছেন ।

জ্ঞানচক্ষু (গল্প) থেকে আরোও প্রশ্ন ও উত্তর দেখুন-PART-2 :

জ্ঞানচক্ষু গল্প থেকে আরও প্রশ্ন ও উত্তর-PART-3(CLICK HERE)

জ্ঞানচক্ষু গল্প থেকে আরও প্রশ্ন ও উত্তর-PART-4(CLICK HERE)

অতিসংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর | জ্ঞানচক্ষু (গল্প) আশাপূর্ণা দেবী – মাধ্যমিক বাংলা সাজেশন | Madhyamik Bengali Suggestion :

  1. ‘ ক্রমশ ও কথাটাও ছড়িয়ে পড়ে ।’— কোন্ কথা ছড়িয়ে পড়ে ? 

Answer : ‘ সন্ধ্যাতারা ‘ – য় তপনের গল্প প্রকাশকে কেন্দ্র করে বাড়িতে শোরগোল পড়লেও পরে জানা যায় যে , তার লেখাটি মেসো কারেকশন করে ছাপারে ব্যবস্থা করেছেন — এই কথাটিই ছড়িয়ে পড়ে । 

  1. তপনের লেখা সম্পর্কে তার বাবার কী বক্তব্য । 

Answer : তপনের বাবা মনে করেন , তপনের লেখক ছোটোমেসো তপনের লেখাটা কারেকশন করে দিয়েছিলেন বলেই এত সহজে সেটা পত্রিকায় ছাপানো সম্ভব হয়েছে । 

  1. তপনের লেখা পত্রিকায় ছেপে বেরোতে দেখে তার মেজোকাকু কী বলেন ?

Answer : তপনের লেখা ছেপে বেরোনোর কৃতিত্ব তপনকে না – দিয়ে মেজোকাকু ব্যঙ্গ করে বলেন , তাঁদের ওরকম লেখক – মেসোমশাই থাকলে তাঁরাও গল্প লেখার চেষ্টা করে দেখতেন । 

 

  1. ‘ গল্পটা ছাপা হলে যে ভয়ংকর আহ্লাদটা হবার কথা , সে আহ্লাদ খুঁজে পায় না।- উদ্দিষ্ট ব্যক্তির আহ্লাদিত না – হতে পারার কারণ কী ? 

Answer : নিজের লেখা ছেপে বেরোলে যে – তীব্র আনন্দ হওয়ার কথা সেই আহ্লাদ খুঁজে পায় না তপন । তার কৃতিত্বের চেয়েও যেন বড়ো হয়ে ওঠে ছোটোমেসোর গল্প ছাপিয়ে দেওয়ার কৃতিত্ব । 

  1. ‘ বোবার মতো বসে থাকে / – কে , কেন বোবার মতো বসে থাকে ?

Answer : নিজের লেখা গল্প ছেপে বেরোনোর পর পড়তে গিয়ে তপন দেখে কারেকশনের নাম করে মেসো লেখাটা আগাগোড়াই বদলে দিয়েছেন । তাই স্তম্ভিত তপন তা দেখে বোবার মতো বসে থাকে । 

  1. ” তপন বইটা ফেলে রেখে চলে যায় , তপনের বই ফেলে রেখে যাওয়ার কারণ কী ? 

Answer : পত্রিকায় গল্প প্রকাশিত হওয়ায় তপনের যে – আনন্দ হয়েছিল তা মুহূর্তেই স্তিমিত হয়ে যায় । কারেকশনের নামে তার লেখাটা আগাগোড়াই বদলে গেছে । তাই অভিমানে তপন বই ফেলে চলে যায় । 

 

  1. বইটা ফেলে রেখে তপন কী করে ?

Answer : বইটা ফেলে রেখে তপন ছাতে উঠে গিয়ে শার্টের তলাটা তুলে চোখের জল মোছে । 

  1. ‘ তপন আর পড়তে পারে না । – তপনের আর পড়তে না পারার কারণ কী ? 

Answer : নিজের লেখা গল্প পত্রিকায় ছেপে বেরোনোর পর পড়তে গিয়ে তপন দেখে কারেকশনের নাম করে ছোটো মেসোমশাই তার লেখাটা পুরোটাই পালটে দিয়েছেন । তাই তপন আর পড়তে পারে না ।

  1. “ তপনের মনে হয় আজ যেন তার জীবনের সবচেয়ে দুঃখের দিন ! – দিনটিতে কোন্ উল্লেখযোগ্য ঘটনা ঘটেছিল ? 

Answer : জীবনের প্রথম লেখা গল্প ছেপে বেরোনোর পর তপন দেখে কারেকশনের নামে নতুন মেসো পুরো গল্পটাই বদলে দিয়েছেন । গল্পের স্বকীয়তা হারানোয় ব্যথিত তপনের সেই দিনটা সবচেয়ে দুঃখের মনে হয়েছে । 

  1. ‘ এই দুঃখের মুহূর্তে গভীরভাবে সংকল্প করে তপন , প্রশ্ন ২.৩৮ —সংকল্পটি কী ? 

Answer : তপন সংকল্প করেছিল , ভবিষ্যতে  যদি কখনও আর কোনো লেখা ছাপাতে হয় , তবে সে নিজে হাতে সেই লেখা পৌঁছে দিয়ে আসবে পত্রিকার অফিসে ।

  1. ‘ তপনকে যেন আর কখনো না শুনতে হয় ….. —এখানে কী শোনার কথা বলা হয়েছে ? 

Answer : তপনকে যেন আর কখনও শুনতে না – হয় যে , অমুক তপনের লেখা ছাপিয়ে দিয়েছে ।

  1. ” তার চেয়ে দুঃখের কিছু নেই , — কীসের কথা বলা হয়েছে ? 

Answer : আশাপূর্ণা দেবী রচিত ‘ জ্ঞানচক্ষু ‘ গঙ্গে তপনের মনে হয়েছে নিজের গল্প পড়তে বসে অন্যের লেখা লাইন পড়ার চেয়ে দুঃখের আর কিছুই নেই । 

  1. ‘ তপন প্রথমটা ভাবে ঠাটা- তপন কোন্ কথাকে প্রথমটায় ঠাট্টা ভেবেছিল ? 

Answer : লেখক নতুন মেসোমশাই যখন তপনকে জানান তার গল্প দিব্যি হয়েছে , এমনকি একটু সংশোধন করে দিলে ছাপতেও দেওয়া যায় তখন সম্পূর্ণ বিশ্বাস করতে না পেরে তপন এই কথাটাকে নিছক ঠাট্টা বলে মনে করেছিল

  1. ‘ দুপুরবেলা , সবাই যখন নিথর নিথর’- তখন তপন কী করেছিল ?

Answer : বিয়েবাড়ির দুপুরবেলা সবাই যখন নিথর , তখন তপন হোমটাস্কের খাতা নিয়ে তিনতলায় উঠে একাসনে বসে আস্ত একটা গল্প লিখে ফেলেছিল । 

  1. ‘ না না আমি বলছি — তপনের হাত আছে – কখন বক্তা এ কথা বলেন ?

Answer : বিকেলে চায়ের টেবিলে তপনের গল্পের কথা শুনে সবাই হেসে ওঠায় লেখক মেসোমশাই এ কথা বলেন ।

  1. নতুন মেসোকে দেখে জ্ঞানচক্ষু গেল তপনের এখানে কোন জ্ঞানের কথা বলা হয়েছে ? 

Answer : এখানে লেখকেরাও যে নিছক সুস্থ – স্বাভাবিক ও সাধারণ মানুষ , তপনের এই জ্ঞানলাভ ের কথাই বলা হয়েছে ।

  1. ‘ নতুন মেসোকে ’ দেখে তপন কী জেনেছিল ?

Answer : লেখকেরা যে অন্য গ্রহ থেকে পড়া কোনো জীব নয় , আর পাঁচ জনের মতোই নিছক সাধারণ মানুষ ; নতুন মেসোকে দেখে তপন এ কথাই জেনেছিল ।

  1. ‘ তাই জানতো না’- কে , কী জানত না ?

Answer : জলজ্যান্ত একজন লেখককে যে এত কাছ থেকে দেখা যায় , ‘ জ্ঞানচক্ষু ‘ গল্পের নায়ক তপন তাই জানত না । 

  1. ‘ তপন কৃতার্থ হয়ে বসে বসে দিন গোনে । – তপন ‘ বসে বসে দিন গোনে কেন ? 

Answer : পত্রিকায় গল্প ছাপা হওয়ার আশায় তপন কৃতার্থ হয়ে বসে বসে দিন গোনে

  1. ‘ গায়ে কাঁটা দিয়ে উঠল তপনের- তপনের গায়ে কাঁটা দিয়ে উঠল কেন ? 

Answer : তপনের নিজের লেখা গল্প , যা কারেকশনের পর সম্পূর্ণ পরিবর্তিত হয়ে গিয়েছিল তা পাঠ করে তার গায়ে কাঁটা দিয়ে উঠেছিল ।

  1. ‘ জ্ঞানচক্ষু গল্পে তপনের মেসো কোন্ মহত্ত্ব দেখিয়েছিলেন ?

Answer : লেখক মেসোমশাই সকলের সামনে তপনের গল্পের প্রশংসা করেন এবং গল্পটি সংশোধন করে ‘ সন্ধ্যাতারা ‘ পত্রিকায় ছাপিয়ে দেন ।

  1. এর মধ্যে তপন কোথা ? – কেন এমন বলা হয়েছে ? 

Answer : লেখক মেসোমশাইয়ের সংশোধনের পরে তপনের নামে প্রকাশিত গল্প তার কাছেই অপরিচিত ও নতুন হয়ে ওঠে । তাই এমন কথা বলা হয়েছে । 

  1. ‘ বিকেলে চায়ের টেবিলে ওঠে কথাটা কোন্ কথাটা ? 

Answer : লেখক মেসোমশাইকে দেখে অনুপ্রাণিত হয়ে তপন যে একটা আস্ত গল্প লিখে ফেলেছে , এই কথাটা বিকেলে চায়ের টেবিলে উঠেছিল ।

  1. তপনদের মতোই মানুষ ‘ — এ কথা বলার কারণ কী ? 

Answer : লেখক যে কোনো আকাশ থেকে পড়া জীব নয় আর সকলের মতোই সাধারণ মানুষ ; নতুন মেসোকে দেখে তপন এই সত্য টের পায় ।

  1. ‘ সারাবাড়িতে শোরগোল পড়ে যায় — শোরগোলের কারণ কী ? 

Answer : তপনের লেখা গল্প পত্রিকায় ছাপা হয়েছে , এই শুনে সারাবাড়িতে শোরগোল পড়ে যায় ।

  1. ‘ তিনি নাকি বই লেখেন , ‘ — এখানে কার কথা বলা হয়েছে ? 

Answer : এখানে তপনের নতুন মেসোমশাইয়ের কথা বলা হয়েছে ।

  1. ‘ মেসো তেমনি করুণার মূর্তিতে বলেন— কী বলেন ?

Answer : মেসো তেমনি করুণার মূর্তিতে তপনের মাসিকে বলেন যে , তিনি ‘ সন্ধ্যাতারা ‘ – র সম্পাদককে বলে তপনের গল্পটা ছাপিয়ে দেবেন ।

  1. ‘ তা ঘটেছে , সত্যিই ঘটেছে— কী ঘটেছে ?

Answer : তপনের লেখা গল্প ‘ সন্ধ্যাতারা ‘ পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে ।

  1. ‘ একটু ‘ কারেকশান ’ করে হয়ে করে দিলে ছাপাতে দেওয়া চলে । –কে , কী ছাপানোর কথা বলেছেন । 

Answer : তপনের লেখক মেসোমশাই তপনের অপরিণত হাতের লেখা পর গল্পটি একটু ‘ কারেকশান ‘ ও ‘ ইয়ে করে ‘ ছাপানোর কথা বলেছেন ।

  1. ‘ জ্ঞানচক্ষু ’ গল্পটি কার লেখা ? এর উৎস উল্লেখ করো ।

Answer : আশাপূর্ণা দেবী রচিত ‘ জ্ঞানচক্ষু ’ গল্পটির উৎস হল তাঁর ‘ কুমকুম ‘ নামক ছোটোদের গল্পসংকলন । 

  1. ‘ কথাটা শুনে তপনের চোখ মার্বেল হয়ে গেল। কোন কথা শুনে তপনের চোখ মার্বেল হয়ে গেল ? 

Answer : লেখকরা ভিন্ন জগতের প্রাণী — এটিই ছিল তপনের ধারণা । কিন্তু তার নতুন মেসোমশাই একজন লেখক শুনে বিস্ময়ে তপনের চোখ মার্বেল হয়ে গেল । 

  1. ‘ তিনি নাকি বই লেখেন ।’— কার কথা বলা হয়েছে ?

Answer : তপনের ছোটোমাসির বিয়ের পর সে জানতে পারে তার নতুন মেসোমশাই একজন লেখক । এখানে তাঁর কথাই বলা হয়েছে । 

  1. ‘ সত্যিকার লেখক ।’— এই উক্তির মধ্য দিয়ে তপনের মনের কোন্ ভাব প্রকাশিত হয়েছে বলে তোমার মনে হয় ? 

Answer : এই উক্তির মধ্য দিয়ে তপনের মনের বিস্ময় প্রকাশ পেয়েছে । লেখকরা আদৌ বাস্তব জগতের মানুষ নন – এই অলীক ভাবনা নতুন মেসোর সঙ্গে পরিচয়ে ভেঙে যাওয়াতেই এমন উক্তি । 

  1. ‘ এবিষয়ে সন্দেহ ছিল তপনের / —কোন বিষয়ে তপনের সন্দেহ ছিল ? 

Answer : লেখকদের যে বাস্তব জীবনে কখনও দেখা যেতে পারে , তাঁরাও যে তপনের বাবা , ছোটোমামা বা মেজোকাকার মতোই সাধারণ মানুষ— সে – বিষয়ে তপনের সন্দেহ ছিল । 

  1. তপনের বাবা – কাকা – মামাদের সঙ্গে লেখক মেসোমশাইয়ের কী কী মিল আছে ? 

Answer : তপনের বাবা – কাকা – মামাদের মতোই তার লেখক মেসোমশাইও দাড়ি কামান , সিগারেট খান , খেতে বসে খাবার তুলে দেন , সময়মতো স্নান করেন , ঘুমোন , খবরের কাগজ পড়েন , এমনকি সিনেমাও দেখেন । 

  1. তপনের নতুন মেসোমশাই শ্বশুরবাড়িতে এসে রয়েছেন কেন ? 

Answer : তপনের নতুন মেসোমশাই একজন অধ্যাপক । এই সময় তাঁর কলেজে গরমের ছুটি থাকায় তিনি শ্বশুরবাড়িতে এসে রয়েছেন ক – দিন । 

  1. ‘ আর সেই সুযোগেই দেখতে পাচ্ছে তপন । — কোন্ সুযোগে তপন কী দেখতে পাচ্ছে ? 

Answer : লেখক মেসোমশাইকে কাছ থেকে দেখার সুযোগ পেয়ে তপন বুঝতে পারে লেখকরা কোনো আকাশ থেকে পড়া জীব নয় , তাদেরই মতো মানুষ । 

  1. ‘ তপনদের মতোই মানুষ ।’— এ কথা বলার কারণ কী ? 

Answer : ছুটিতে মামার বাড়িতে এসে নতুন মেসোকে দেখে ও তাঁর লে সঙ্গে সময় কাটিয়ে তপনের বিশ্বাস হয় যে , লেখকরা কোনো আকাশ থেকে পড়া জীব নয় ; তাদের মতোই মানুষ ।

  1. তপনের মনে লেখক হওয়ার বাসনা জাগল কেন ?

Answer : লেখক নতুন মেসোমশাইকে দেখে তপন বুঝেছিল লেখকরা আসলে তাদের মতোই সাধারণ মানুষ । তাই উৎসাহিত তপন তার এতদিনের গল্প পড়ার ও শোনার অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে লেখক হতে চায় । 

  1. ‘ ছোটোমাসি সেই দিকে ধাবিত হয় । — তপনের ছোটোমাসি কোন্‌দিকে ধাবিত হয়েছিলেন ? 

Answer : তপন মেসোর দ্বারা অনুপ্রাণিত হয়ে একটি গল্প লিখে মাসিকে দেখায় । মাসি গল্পটিতে চোখ বুলিয়ে গল্পটির উৎকর্ষ বিচারের জন্য তপনের মেসো যেখানে ঘুমোচ্ছিলেন সেদিকে ধাবিত হয়েছিলেন । 

  1. ‘ রত্নের মূল্য জহুরির কাছেই । – কথাটির অর্থ কী ?

Answer : কেবলমাত্র গুণী ব্যক্তিই অপরের গুণের কদর করতে পারে । তাই তপনের লেখা গল্পের প্রকৃত সমঝদার যদি কেউ থাকেন তবে তিনি তার লেখক মেসোমশাই ।

  1. তপনের গল্প পড়ে তার নতুন মেসোমশাই কী বলেন ? 

Answer : তপনের লেখা গল্প পড়ে তার নতুন মেসোমশাই তাকে উৎসাহ দিয়ে বলেন , গল্পটা ভালোই হয়েছে , একটু কারেকশন করে দিলে সেটা ছাপানোও যেতে পারে । 

  1. ‘ তখন আহ্লাদে কাঁদো কাঁদো হয়ে যায় ।’— কে , কেন আহ্লাদে কাঁদো কাঁদো হয়ে যায় ?

Answer : ছোটোমেসো তপনের লেখাটা ছাপানোর কথা বললে তপন প্রথমে সেটাকে ঠাট্টা বলে ভাবে । কিন্তু মেসোর মুখে করুণার ছাপ দেখে তপন আহ্লাদে কাঁদো কাঁদো হয়ে যায় । 

  1. ‘ মেসোর উপযুক্ত কাজ হবে সেটা — উক্তিটি কার ? কোন্‌টা মেসোর উপযুক্ত কাজ হবে ?

Answer : উক্তিটি তপনের ছোটোমাসির । তাঁর মতে , তপনের লেখা গল্পটা ছোটোমেসো যদি একটু কারেকশন করে ছাপানোর ব্যবস্থা করে দেন , তবে সেটাই মেসোর উপযুক্ত কাজ হবে ।

  1. ‘ না করতে পারবে না । ‘ – কে , কাকে , কী বিষয়ে না – করতে পারবে না ? 

Answer : তপনের লেখক ছোটোমেসো ‘ সন্ধ্যাতারা ’ পত্রিকার সম্পাদককে তপনের লেখা গল্পটা ছাপানোর জন্য অনুরোধ করলে সম্পাদকমশাই না করতে পারবেন না ।

  1. তপনের বয়সি আর পাঁচটা ছেলেমেয়ের লেখার সঙ্গে তপনের লেখার তফাত কী ? 

Answer : তপনের বয়সি ছেলেমেয়েরা সাধারণত রাজারানি , খুন – জখম – অ্যাকসিডেন্ট অথবা না – খেতে পেয়ে মরা- এইসব বিষয়ে গল্প লেখে । কিন্তু তপনের লেখার বিষয় ছিল তার প্রথম দিন স্কুলে ভরতির অভিজ্ঞতা । 

  1. এটা খুব ভালো , ওর হবে । — কে , কোন প্রসঙ্গে এ কথা বলেছেন ? 

Answer : তপন তার স্কুলে ভরতির প্রথম দিনের অভিজ্ঞতা নিয়ে = একটি গল্প লিখেছিল । মাসির মাধ্যমে লেখাটি তার লেখক মেসোর কাছে পৌঁছোলে সেটি পড়ে মেসো এমন মন্তব্য করেছেন ।

  1. ‘ নতুন মেসোকে দেখে জানলে সেটা।- তপন কী জেনেছিল ? 

Answer : তপন ছোটো থেকেই বহু গল্প শুনেছে ও পড়েছে । কিন্তু সে জানত না যে , সাধারণ মানুষ সহজেই তা লিখতে পারে । নতুন মেসোকে দেখে সেটাই জানল ।

  1. ‘ মাথার চুল খাড়া হয়ে উঠল । — এর কারণ কী ছিল ? 

Answer : নতুন মেসোর দ্বারা অনুপ্রাণিত হয়ে তপন নিজেই চেষ্টা করে একটা গল্প লিখে ফেলে । নিজের সৃষ্টিতে রোমাঞ্চিত হয়ে তার মাথার চুল খাড়া হয়ে ওঠে ।

  1. ‘ ভালো হবে না বলছি ।’— কে , কাকে , কেন এই কথা বলেছে ?

Answer : তপনের লেখা গল্পটা কিছুটা পড়েই ছোটোমাসি তার প্রশংসা করেন । তারপর তিনি জিজ্ঞাসা করেন লেখাটা অন্য কোনো স্থান থেকে টোকা কিনা । তখন বিরক্ত হয়ে তপন আলোচ্য উদ্ধৃতিটি করে ।

  1. ‘ কিন্তু গেলেন তো — গেলেনই যে ! – কার প্রসঙ্গে এ কথা বলা হয়েছে ? 

Answer : তপনের লেখা গল্প সামান্য কারেকশন করে ‘ সন্ধ্যাতারা ‘ – য় ছাপিয়ে দেবেন বলে ছোটোমেসো তা নিয়ে যান । তারপর অনেকদিন কেটে গেলেও সে – ব্যাপারে কোনো সংবাদ না পাওয়ায় এ কথা বলা খা হয়েছে ।

  1. ” যেন নেশায় পেয়েছে । কোন নেশার কথা বলা হয়েছে ?

Answer : নতুন মেসোকে দেখে অনুপ্রাণিত হয়ে তপন যে – গল্প লিখেছিল তা মাসির উৎসাহে মেসো ছাপিয়ে দেওয়ার কথা বলেন । এরপর থেকে ক তপনকে গল্প লেখার নেশায় পায় । 

  1. ‘ বুকের রক্ত ছলকে ওঠে তপনের।- তপনের বুকের রক্ত ছলকে ওঠার কারণ কী ছিল ?

Answer : গল্প ছাপানোর প্রতিশ্রুতি দিয়ে দীর্ঘদিন অদৃশ্য থাকার পর হঠাৎই একদিন ছোটোমাসি ও মেসো ‘ সন্ধ্যাতারা ‘ পত্রিকা হাতে নিয়ে তপনদের বাড়িতে আসেন । তাতে তার গল্প ছাপার কথা ভেবে তপনের বুকের রক্ত ছলাত করে ওঠে ।

  1. পৃথিবীতে এমন অলৌকিক ঘটনাও ঘটে ? – এখানে কোন্ ঘটনাকে অলৌকিক ঘটনা বলা হয়েছে ? 

Answer : পত্রিকায় তপনকুমার রায়ের লেখা গল্প ছাপার অক্ষরে প্রকাশিত হওয়া এবং সেই পত্রিকা বহু মানুষের কাছে পৌঁছে যাওয়ার ঘটনাকেই ‘ জ্ঞানচক্ষু ’ গল্পে অলৌকিক ঘটনা বলা হয়েছে । 

  1. ‘ তা ঘটেছে , সত্যিই ঘটেছে । — কোন ঘটনার কথা বলা হয়েছে ? 

Answer : তপনের লেখক মেসো তার একটি গল্প ‘ সন্ধ্যাতারা ‘ পত্রিকার সম্পাদককে বলে ছাপিয়ে দিয়েছিলেন । এই অবিশ্বাস্য , অভূতপূর্ব ঘটনার কথাই এখানে বলা হয়েছে ।

  1. ‘ বাবা , তোর পেটে পেটে এত ! ‘ — কে , কোন প্রসঙ্গে এ কথা বলেছিলেন ?

Answer : ‘ জ্ঞানচক্ষু ’ গল্পে তপনের লেখা গল্প ‘ সন্ধ্যাতারা ’ পত্রিকায় প্রকাশিত হওয়ার পর বাড়িময় শোরগোল পড়ে যায় । তখন তপনের মা এই কথাটি তপনের সুপ্ত প্রতিভা সম্পর্কে বলেন ।

  1. ‘ এর মধ্যে তপন কোথা ? ’ – উক্তিটির তাৎপর্য বুঝিয়ে দাও । 

Answer : সন্ধ্যাতারা ‘ – য় ছেপে বেরোনো তপনের গল্পটা মেসোর হাতে পড়ে কারেকশনের নামে আগাগোড়াই পালটে যায় । বাড়ির সকলের অনুরোধে গল্পটা পড়তে গিয়ে তপন লেখার মধ্যে নিজেকে আর খুঁজে পায় না ।

জ্ঞানচক্ষু (গল্প) থেকে আরোও প্রশ্ন ও উত্তর দেখুন-PART-2 :

জ্ঞানচক্ষু গল্প থেকে আরও প্রশ্ন ও উত্তর-PART-3(CLICK HERE)

জ্ঞানচক্ষু গল্প থেকে আরও প্রশ্ন ও উত্তর-PART-4(CLICK HERE)

সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর | জ্ঞানচক্ষু (গল্প) আশাপূর্ণা দেবী – মাধ্যমিক বাংলা প্রশ্ন ও উত্তর | Madhyamik Bengali Gyanchakshu Question and Answer :

  1. ‘ কথাটা শুনে তপনের চোখ মার্বেল হয়ে গেল । কোন্ কথা শুনে কেন তপনের চোখ মার্বেল হয়ে গেল ? 

Ans: তপন এতদিন ভেবে এসেছে লেখকরা বুঝি অন্য জগতের মানুষ । সাধারণ মানুষদের সঙ্গে তাদের কোনো মিলই নেই । তাই যখন সে শুনল যে তার ছোটো মেসোমশাই বই লেখেন , আর সেই বই ছাপাও হয় তখন তার বিস্ময়ের সীমা রইল না । নতুন মেসোমশাই একজন সত্যিকারের লেখক । এই আশ্চর্য খবরটা শুনেই তপনের চোখ মার্বেলের মতো গোল গোল হয়ে গেল । 

  1. ‘ সে সব বই নাকি ছাপাও হয় ।’— উক্তিটিতে যে – বিস্ময় প্রকাশিত হয়েছে , তা পরিস্ফুট করো । 

Ans: উক্তিটিতে প্রকাশিত বিস্ময় উত্তর / আশাপূর্ণা দেবী রচিত ‘ জ্ঞানচক্ষু ’ গল্পে তপন নামের বালকটি তার ছোটোমাসির সদ্যবিবাহিত স্বামী অর্থাৎ তার মেসো যে একজন লেখক , এ কথা জেনে বিস্ময়ে হতবাক হয়ে যায় । লেখকেরা যে সাধারণ মানুষ এবং তার মেসোমশাই একজন লেখক , যাঁর বই ছাপা হয় — এ তথ্য তার কাছে অবিশ্বাস্য মনে হয়েছিল । আলোচ্য উদ্ধৃতাংশে বালক তপনের মনের সেই বিস্ময় প্রকাশ পেয়েছে । 

  1. ‘ এ বিষয়ে সন্দেহ ছিল তপনের / – তপনের কোন্ বিষয়ে কেন সন্দেহ ছিল ? তপনের সন্দেহ কীসে এবং কেন ? 

Ans: আশাপূর্ণা দেবী রচিত ‘ জ্ঞানচক্ষু ’ গল্পের তপন লেখকদেরকে এক অন্য জগতের বাসিন্দা বলে মনে করত । তাঁরাও যে আর – পাঁচজন সাধারণ মানুষের মতোই রোজকার জীবনযাপন করেন , তা ছিল তপনের কল্পনার বাইরে । সে আগে কোনোদিন কোনো লেখক কাছ থেকে দেখেনি । এমনকি লেখকদের যে দেখা পাওয়া যায় এ কথাও তার জানা ছিল না । তাই লেখকরা যে তার বাবা , কাকা , মামাদের মতোই সাধারণ মানুষ এ ব্যাপারে তার সন্দেহ ছিল । 

  1. ‘ একেবারে নিছক মানুষ’— এ কথার প্রমাণ কী ছিল ? 

Ans: নতুন মেসোমশাইয়ের লেখক পরিচয়ে আপ্লুত তপন লক্ষ করে যে , লেখক হলেও তিনি সাধারণের মতোই দাড়ি কামান , খেতে বসে খেতে পারবেন না বলে অর্ধেক তুলে দেন , স্নান করেন , ঘুমোন , খবরের কাগজের খবর নিয়ে গল্প ও তর্ক করেন , সিনেমা দেখেন ও বেড়াতে বেরোন — একেবারে সাধারণ মানুষের এই সমস্ত আটপৌরে ব্যাপার মেসোমশাইয়ের মধ্যে দেখে তপন প্রশ্নোধৃত মন্তব্যটি করেছিল । 

  1. ‘ নতুন মেসোকে দেখে জ্ঞানচক্ষু খুলে গেল তপনের ।— ‘ জ্ঞানচক্ষু ’ বলতে কী বোঝ ? তা কীভাবে তপনের খুলে গিয়েছিল ?

Ans: আশাপূর্ণা দেবীর ‘ জ্ঞানচক্ষু ’ গল্পে জ্ঞানচক্ষু বলতে মানুষের অন্তর্দৃষ্টিকে বোঝানো হয়েছে , যার সাহায্যে মানুষ প্রকৃত সত্যকে যাচাই করে নিতে পারে । → একজন লেখক সম্পর্কে তপনের মনে যে ধারণা ছিল তা নতুন মেসোর সংস্পর্শে এসে ভেঙে যায় । লেখকরা যে তার বাবা , মামা ও কাকাদের মতোই সাধারণ জীবনযাপন করে সেটা সে প্রত্যঙ্গ করে । তাদের মতোই দাড়ি কামান , সিগারেট খান , খেতে বসে খাবার তুলে দেন , পলিটিকাল তর্কও করেন — এসব দেখেই তপনের জ্ঞানচক্ষু খুলে যায় । সে ভাবে লেখকরা আকাশ থেকে পড়া কোনো জীব নয় , নিছক মানুষ ।

  1. ‘ রত্নের মূল্য জহুরির কাছেই / —কথাটির তাৎপর্য ব্যাখ্যা করো । 

Ans: উদ্ধৃতিটি আশাপূর্ণা দেবীর ‘ জ্ঞানচক্ষু ‘ গল্প থেকে গৃহীত । ‘ জহর ’ অর্থাৎ মূল্যবান রত্ন বিশেষজ্ঞকে জহুরি বলা হয় । এক্ষেত্রে জহুরি বলতে নতুন মেসোকে বোঝানো হয়েছে । লেখক মেসোকে দেখে অনুপ্রাণিত হয়ে তপন একটা আস্ত গল্প লিখে মাসিকে দেখায় । মাসি তা নিয়ে সারাবাড়িতে শোরগোল বাধিয়ে মেসোকে দেখাতে যান । তপন ব্যাপারটায় আপত্তি তুললেও মনে মনে পুলকিত হয় এই ভেবে যে , তার লেখার মূল্য একমাত্র কেউ যদি বোঝে তবে ছোটোমেসোই বুঝবে , কেন – না জহুরির জহর চেনার মতো একজন লেখকই পারে কোনো লেখার মূল্যায়ন করতে ।

  1. ‘ তপন অবশ্য মাসির এই হইচইতে মনে মনে পুলকিত হয় / — মাসি কেন হইচই করেছিলেন ?

Ans: উত্তর গরমের ছুটিতে মামার বাড়িতে এসে নতুন মেসোকে দেখে তপনের মনে লেখক সম্পর্কে যেসব ধারণা ছিল তা ভেঙে যায় । জলজ্যান্ত লেখকের সঙ্গে কাটিয়ে তপন অনুপ্রাণিত হয়ে একটা আস্ত গল্প লিখে ফেলে । আর তা মাসির হাতে পড়ায় মাসি হইচই শুরু করে দেয় এবং তা নিয়ে তার লেখক স্বামীর কাছে যায় । এতে লাজুক তপন অপ্রস্তুত হলেও মনে মনে পুলকিত হয় , কারণ তার লেখার প্রকৃত মূল্য কেউ বুঝলে তা নতুন মেসোই বুঝবে ।

  1. ‘ মেসোর উপযুক্ত কাজ হবে সেটা / —কোন্ কাজকে মেসোর উপযুক্ত কাজ বলা হয়েছে ।

Ans: লেখকরা যে সাধারণ মানুষ এ ব্যাপারে নতুন মেসোকে দেখে তপনের জ্ঞানচক্ষু খুলে গেল । তপন নতুন মেসোকে অহরহ কাছ থেকে দেখে অনুপ্রাণিত হয়ে একটা আস্ত গল্প লিখে তার মেসোর উপযুক্ত কাজ প্রিয় ছোটোমাসিকে দেখায় । গল্পটি নিয়ে ছোটোমাসি রীতিমতো হইচই ফেলে দেয় । শুধু তাই নয় , তিনি গল্পটি তার লেখক স্বামীকেও দেখান । গল্প দেখে তিনি সামান্য কারেকশন করে দিলে সেটা O.D যে ছাপা যেতে পারে এ কথা বলেন । আর এ কথা শুনেই মাসি সেটা ছাপিয়ে দেওয়ার অনুরোধ জানান , যেটা কিনা মেসোর উপযুক্ত কাজ হবে ।

  1. ‘ তোমার গল্প আমি ছাপিয়ে দেব । এখানে বক্তা কে ? উদ্ধৃতিটির মধ্যে দিয়ে বস্তার কোন মানসিকতার পরিচয় পাওয়া যায় ? 

Ans: আলোচ্য উদ্ধৃতিটির বস্তুা তপনের ছোটোমেসো । তপনের লেখা পড়ে তার লেখক- ছোটোমোসো তাকে উৎসাহ দেন । তিনি এ কথাও বলেন যে , লেখাটা একটু কারেকশন করে দিলে ছাপানোও যায় । তাঁর সঙ্গে সন্ধ্যাতারা ‘ পত্রিকার সম্পাদকের জানাশোনা আছে । মেসো অনুরোধ করলে তিনি তা না করতে পারবেন না । আপাতদৃষ্টিতে এটি তাঁর উদারতার পরিচয় বলেই মনে হয় । কিন্তু একটু গভীরে বিচার করলে বোঝা যায় , শ্বশুরবাড়ির লোকেদের কাছে নিজের প্রভাব জাহির করার জন্যই তিনি এ কাজ করেছিলেন ।

  1. বিকেলে চায়ের টেবিলে ওঠে কথাটা / কোন কথা উঠেছিল ?

Ans: ‘ জ্ঞানচলু ‘ গল্পে তপন লেখক মেসোকে দেখে অনুপ্রাণিত হয়ে একটি গল্প লেখে তার স্কুলে ভরতি হওয়ার দিনের অভিজ্ঞতা নিয়ে । তা ছোটোমাসির হাতে পড়ে এবং মাসি তা নিয়ে বেশ হইচই করে তাঁর লেখক – স্বামীকে গল্পটি দেখান । তাঁর স্বামী গল্প দেখে উত্থাপিত কথা তপনকে ডেকে তার গল্পের প্রশংসা করেন এবং সামান্য কারেকশন করে দিলে তা ছাপার যোগ্য এ কথাও বলেন । মাসির অনুরোধে মেসো তপনকে কথা দেন সন্ধ্যাতারা ‘ – য় তার গল্প ছাপিয়ে দেবেন । এ কথাটাই চায়ের টেবিলে উঠেছিল । 

  1. ‘ তপনের হাত আছে । চোখও আছে । এখানে ‘ হাত ’ ও ‘ চোখ ” আছে বলতে কী বোঝানো হয়েছে ?

Ans: তপনের গল্প শুনে আর সবাই হাসাহাসি করলেও নতুন মেসো তার প্রতিবাদ করে আলোচ্য উক্তিটি করেন । এখানে ‘ হাত ’ আছে বলতে বোঝানো হয়েছে যে , তপনের লেখার ক্ষমতা আছে , বা ভাষার দখল আছে । আর ‘ চোখ ‘ আছে । কথার অর্থ হল তপন তার চারপাশের দুনিয়াটা ভালো করে পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে দেখতে ও উপলব্ধি করতে পারে । তার গল্প লেখার বিষয় নির্বাচন থেকেই এ কথা স্পষ্ট হয়ে যায় ।

  1. ‘ তপন কৃতার্থ হয়ে বসে বসে দিন গোনে । – তপন কৃতার্থ হয়েছিল কেন ?

Ans: তপনের জীবনে প্রথম ও সদ্য লেখা গল্পটি তার মাসি , তপনের লেখক মেসোকে দেখান ও গল্পটি ছাপিয়ে দেওয়ার কথা বলেন । এ কথা শুনে তপনের মেসো ‘ সন্ধ্যাতারা ‘ পত্রিকায় গল্পটি ছাপিয়ে দেওয়ার অঙ্গীকার করে নিয়ে যান । এতে তপন কৃতার্থ হয়েছিল । সেইসঙ্গে রোমান্বিত হয়ে সে দুরুদুরু বুঝে গল্প প্রকাশের আশায় দিন গোনা শুরু করেছিল । বালক হৃদয়ের উত্তেজনা বোঝাতেই এমন কথা বলা হয়েছে ।

  1. বিয়েবাড়িতেও যেটি মা না আনিয়ে ছাড়েননি ! কীসের কথা বলা হয়েছে ? তা মা না – আনিয়ে ছাড়েননি কেন ? 

Ans: আশাপূর্ণা দেবী রচিত ‘ জ্ঞানচক্ষু ‘ গল্পে আলোচ্য উত্তিটিতে তপনের হোমটাস্কের খাতার কথা বলা হয়েছে , যা পরবর্তীতে উদ্দিষ্ট বস্তু তার গল্প লেখার খাতায় পরিণত হয়েছিল । লেখিকা আশাপূর্ণা দেবী সূক্ষ্ম আঁচড়ে মধ্যবিত্ত বাঙালি জীবনের স্বাভাবিক ছবিটিকে ফুটিয়ে তুলেছেন । বাঙালি মায়েদের সন্তানের পড়াশোনার প্রতি সাধারণত তীক্ষ্ণ নজর থাকে । তপনের মা – ও এর ব্যতিক্রম নন । বিয়েবাড়িতে আসার জন্য তপনের পড়াশোনার যে ক্ষতি হবে , তা কিছুটা অবসর সময়ে পুষিয়ে নিতে তিনি তার হোমটাস্কের খাতাটি সঙ্গে আনিয়েছিলেন ।

  1. তপনের প্রথম গল্প লেখার অভিজ্ঞতার বর্ণনা দাও ।

Ans: ছোটোমেসোকে দেখার আগে তপন জানতই না যে সাধারণ মানুষের পক্ষেও গল্প লেখা সম্ভব । কিন্তু ছোটোমেসোকে দেখে অনুপ্রাণিত তপন একদিন দুপুরে সবাই যখন ঘুমের ঘোরে , তখন চুপিচুপি তিনতলার সিঁড়িতে উঠে যায় । তারপর একাসনে বসে অভিজ্ঞতার বর্ণনা । হোমটাস্কের খাতায় লিখে ফেলে আস্ত একটা গল্প । লেখা শেষ হলে নিজের লেখা পড়ে নিজেরই গায়ে কাঁটা দেয় তপনের , মাথার চুল খাড়া হয়ে ওঠে । উত্তেজিত তপন ছুটে নীচে এসে তার লেখক হওয়ার খবরটা ছোটোমাসিকে দেয় । 

  1. ‘ জ্ঞানচক্ষু গল্পে তপনের সঙ্গে তার ছোটোমাসির সম্পর্ক কেমন ছিল লেখো । 

Ans: তপন ও ছোটোমাসির সম্পর্ক উত্তর / তপনের ছোটোমাসি তপনের চেয়ে বছর আষ্টেকের বড়ো হলেও তিনি ছিলেন তপনের সমবয়সি বন্ধুর মতো । তাই মামার বাড়িতে এলে তপনের সব কিছুই ছিল ছোটোমাসির কাছে । তাই তার প্রথম লেখা গল্পটা সে ছোটোমাসিকেই আগে দেখায় । ছোটোমাসিও তাঁর স্নেহের বোনপোকে উৎসাহ জোগান এবং তাঁর লেখক – স্বামীকে অনুরোধ করেন তপনের লেখাটি ছাপিয়ে দিতে । আবার লেখা নিয়ে খুনসুটিও করে তপনের সঙ্গে । এসব থেকেই বোঝা যায় দুজনের মধ্যে একটা মধুর বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক ছিল ।

  1. ‘ আঃ ছোটোমাসি , ভালো হবে না বলছি । কার উক্তি ? এই হুমকির কারণ কী ?

Ans: প্রশ্নোধৃত উদ্ভিটি আশাপূর্ণা দেবী রচিত ‘ জ্ঞানচক্ষু ‘ গল্পের কেন্দ্রীয় কার উক্তি চরিত্র তপনের । → লেখক – মেসোমশাইয়ের দৃষ্টাস্তে উদ্বুদ্ধ তপন একটি গল্প লিখে তার ছোটোমাসিকে দেখায় । তিনি তপনের গল্পটি সবটা কারণ । না পড়েই তার প্রশংসা করেন এবং তা কোথাও থেকে নকল করা কিনা তা জিজ্ঞেস করেন । এ কথায় রেগে গিয়ে তপন প্রশ্নে উদ্ধৃত উক্তিটি করে । 

  1. ‘ যেন নেশায় পেয়েছে । কাকে , কীসের নেশায় প্রশ্ন পেয়েছে বুঝিয়ে বলো । 

Ans: আশাপূর্ণা দেবীর ‘ জ্ঞানচক্ষু ‘ গল্পের কেন্দ্রীয় চরিত্র তপনকে গল্প লেখার নেশায় পেয়েছে । আগে তপন মনে করত গল্প লেখা ভারী কঠিন কাজ , সাধারণ মানুষের পক্ষে তা সম্ভব নয় । লেখকরা বুঝি ভিন্ন গোত্রের মানুষ । কিন্তু লেখক- ছোটোমেসোকে দেখে অনুপ্রাণিত তপন সাহস করে লিখে ফেলে আস্ত গল্প । ছোটোমাসির হাত ঘুরে সেই গল্প ছোটোমেসোর হাতে পড়ে । তিনি তপনকে উৎসাহ দিতে গল্পটা পত্রিকায় ছাপিয়ে দেবেন বলে কথা দেন । উৎসাহিত তপন গল্প লেখার নেশায় মেতে ওঠে ।

  1. ‘ কিন্তু তাই কি সম্ভব ? ‘ – কী সম্ভব নয় বলে বক্তার মনে হয়েছে ?

Ans: আশাপূর্ণা দেবী রচিত ‘ জ্ঞানচক্ষু ‘ গল্পে তপনের লেখক – মেসো তার সদ্য লেখা গল্পটি পড়ে মুগ্ধ হয়ে যান । তপনের মাসি গল্পটি ছাপিয়ে দেওয়ার অনুরোধ জানালে তিনি তাতে রাজি হয়ে গল্পটি নিজের সঙ্গে নিয়ে যান । অবশেষে একদিন সত্যিই তা ছাপা হলে তপন বিস্মিত হয়ে প্রশ্নে উদ্ধৃত কথাটি ভাবে । এই ভাবনায় বালক তপনের কিশোর – হৃদয়ের অবিশ্বাস ও মুগ্ধতাবোধ প্রকাশ কী সম্ভব নয় ।

  1. ‘ ওর লেখক মেসো ছাপিয়ে দিয়েছে । – “ ও ’ কে ? লেখক – মেসোর কী ছাপিয়ে দেওয়ার কথা বলা হয়েছে ? 

Ans: ‘ ও ’ বলতে আলোচ্য অংশে গল্পকার আশাপূর্ণা দেবী রচিত ‘ জ্ঞানচক্ষু ’ গল্পের কেন্দ্রীয় চরিত্র বালক তপনের কথা বলা হয়েছে । → তপনের লেখক মেসো তাঁর পরিচয় ও প্রভাবকে কাজে লাগিয়ে তপনের লেখা গল্প ‘ সন্ধ্যাতারা ‘ পত্রিকায় ছাপিয়ে দিয়েছিলেন । এই সত্য জানার পর তপনের কোনো কোনো আত্মীয় তার কৃতিত্বকে খাটো করে দেখিয়ে প্রশ্নোদ্ভূত মন্তব্যটি করেছিলেন ।

  1. ‘ আমাদের থাকলে আমরাও চেষ্টা করে দেখতাম । ‘ আমাদের বলতে কাদের কথা বলা হয়েছে ? তাদের কোন চেষ্টার কথা বোঝানো হয়েছে ? 

Ans: আলোচ্য উদ্ধৃতিটি আশাপূর্ণা দেবী রচিত ‘ জ্ঞানচক্ষু ‘ গল্প থেকে গৃহীত । উদ্ধৃতির বস্তুা তপনের মেজোকাকু ‘ আমাদের ’ বলতে এখানে নিজেকে এবং বাড়ির ‘ আমাদের কারা অন্য ব্যক্তিদেরকে বুঝিয়েছেন । লেখক মেসোর দৌলতে তপনের আনাড়ি হাতের লেখা গল্পও নামি পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছিল । বালক তপনকে তাদের চেষ্টা উৎসাহ দেওয়ার পরিবর্তে তার মেজোকাকু উদ্ধৃত উক্তিটির দ্বারা সুযোগ পেলে যে তাঁরাও গল্প লিখতে পারতেন তাই বোঝাতে চেয়েছেন । 

  1. ‘ আজ আর অন্য কথা নেই –‘আজ ’ দিনটির বিশেষত্ব কী ? সেদিন আর অন্য কথা নেই কেন ? 

Ans: আশাপূর্ণা দেবী রচিত ‘ জ্ঞানচক্ষু ‘ গল্পে ‘ আজ ’ বলতে সেই দিনটির ‘ আজ ’ দিনটির বিশেষত্ব কথা বোঝানো হয়েছে , যেদিন তপনের মাসি ও মেসো ‘ সন্ধ্যাতারা ‘ পত্রিকার সেই সংস্করণটি নিয়ে এলেন , যাতে তপনের লেখা গল্প প্রকাশিত হয়েছিল । → বালক তপনের লেখা গল্প যে সত্যি সত্যিই কোনো পত্রিকায় ছাপা হতে পারে , তা কেউই বিশ্বাস করেনি । কিন্তু যেদিন সত্যিই সেই অবিশ্বাস্য ঘটনাটি ঘটল , সেদিন সকলের কেন অন্য কথা নেই মুখে মুখে বারবার এই ঘটনার কথাই আলোচিত হচ্ছিল ।

  1. তারপর ধমক খায় , তপনের ধমক খাওয়ার কারণ কী ছিল

Ans: ‘ জ্ঞানচক্ষু ‘ গল্পের নায়ক তপন পত্রিকায় প্রকাশিত নিজের লেখা গল্পটি সকলকে পড়ে শোনাতে উদ্যত হয় । কিন্তু পড়তে গিয়ে সে আশ্চর্যের সঙ্গে লক্ষ করে যে , তার লেখক মেসোমশাই তার গল্পটি সংশোধনের নামে প্রায় সম্পূর্ণ বদলে ফেলেছেন । এই ঘটনায় হতবাক তপনের অভিমানে গলা বুজে আসে । এদিকে গল্প পড়তে না – শুরু করায় সকলে অধৈর্য হয়ে গাকে ধমক দিতে শুরু করে ।

  1. ‘ সন্ধ্যাতারা ‘ পত্রিকায় তপনের গল্প ছেপে বেরোয় । তবু তপনের এত দুঃখ হয়েছিল কেন ? 

Ans: তপন ভাবত লেখকরা কোনো স্বপ্নের জগতের মানুষ । কিন্তু লেখক – মেসোকে দেখে তার ভুল ভাঙে । উৎসাহিত তপন নিজেই লিখে ফেলে একটা গল্প । ছোটোমেসোর উদ্যোগে সামান্য কারেকশনের পর সেটা ছেপেও বেরোয় সন্ধ্যাতারা ‘ পত্রিকায় । পত্রিকার সূচিপত্রে নিজের নাম ছাপার অক্ষরে দেখে আনন্দে আত্মহারা হয় তপন । কিন্তু গল্পটা পড়া শুরু করতেই সে বুঝতে পারে কারেকশনের নাম করে ছোটোমেসো তার গল্পটা আগাগোড়াই পালটে দিয়েছেন । নিজের লেখার পরিবর্তে একটা সম্পূর্ণ অচেনা লেখা দেখে তপনের আনন্দ মিলিয়ে যায় । 

  1. শুধু এই দুঃখের মুহূর্তে গভীর সংকল্প করে তপন , দুঃখের মুহূর্তটি কী ? তপন কী সংকল্প করেছিল ? 

Ans: দুঃখের মুহূর্ত উত্তর ‘ জ্ঞানচক্ষু ’ গল্পের নায়ক তপনের জীবনের সবচেয়ে আনন্দের মুহূর্তটি একপলকে দুঃখের মুহূর্তে পর্যবসিত হয় । কারণ সে প্রকাশিত গল্পটি পড়তে গিয়ে টের পায় , লেখক – মেসো গল্পটিকে সংশোধনের নামে প্রায় সম্পূর্ণ বদলে ফেলেছেন । এ গল্পকে আর যাই হোক তার নিজের লেখা বলা যায় না । → এই ঘটনায় তপন সংকল্প করেছিল যে , যদি কোনোদিন নিজের কোনো লেখা ছাপতে দেয় , তবে নিজে গিয়ে ছাপতে কৃত সংকল্প দেবে । ছাপা হোক বা না হোক অন্তত তাকে এ কথা শুনতে হবে না যে , কেউ তার লেখা প্রভাব খাটিয়ে ছাপিয়ে দিয়েছে ।

  1. ‘ তপনকে যেন আর কখনো শুনতে না হয় কী না – শোনার কথা বলা হয়েছে ?

Ans: ‘ জ্ঞানচক্ষু ‘ গল্পের নায়ক বালক তপন গল্প লেখায় যতই আনাড়ি হোক না কেন , সে মনেপ্রাণে একজন লেখক । তার লেখা । গল্পের ওপরে তার লেখক মেসোর সংশোধনের নামে খোলনলচে বদলে দেওয়া তপনের কাছে অপমানজনক । এই ঘটনায় সে অভিমানে বাদ্ধ হয়ে যায় । আত্ম – অসম্মানে আহত তপন সংকল্প নেয় যে , পরবর্তীকালে লেখা ছাপাতে দিলে সে নিজে দেবে । তবু এ কথা তাকে শুনতে হবে না । যে , অন্য কেউ তা ছাপিয়ে দিয়েছে ।

  1. ‘ তার চেয়ে দুঃখের কিছু নেই , তার থেকে অপমানের ! — ‘ তার চেয়ে বলতে কী বোঝানো হয়েছে ?

Ans: আশাপূর্ণা দেবী রচিত ‘ জ্ঞানচক্ষু ‘ গল্পে আলোচ্য অংশে ‘ তার চেয়ে ’ বলতে তপনের নিজের লেখা গল্প লেখক মেসোর হাতে পড়ে নির্বিচারে পরিবর্তিত হওয়ার কথা বলা হয়েছে । নিজের গল্প পড়তে বসে অন্যের লেখা পড়াটা তার কাছে গভীর দুঃখের ও অপমানের বলে মনে হয়েছিল । এই আত্মসম্মানবোধ থেকেই তৃপনের অন্তর্মনে মৌলিকতার অনুপ্রেরণা জেগে ওঠে ।

  1. তার চেয়ে দুঃখের কিছু নেই , তার থেকে অপমানের ! – কে অপমানিত হয়েছিল ?

Ans: আশাপূর্ণা দেবীর ‘ জ্ঞানচক্ষু ‘ গল্পের নায়ক তপন অপমানিত কেন অপমানিত ] লেখক মেসোমশাইকে দেখে অনুপ্রাণিত হয়ে ছোট্ট তপন একটি গল্প লিখে ফেলে । গল্প লেখার উত্তেজনায় ও রোমাঞ্চে সে গল্পটি ছোটোমাসিকে দেখায় । ফলে তা নতুন মেসোর হাতে পড়ে এবং তিনি তপনের লেখার প্রশংসা করেন ; সেটি পত্রিকায় ছাপিয়ে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন । পত্রিকায় গল্প ছাপা হওয়ার পর তপন দেখে সমস্ত গল্পটাই মেসো তার পাকা হাতের কলমে আগাগোড়া নতুন করে লিখে দিয়েছেন । নিজের লেখা গল্প পড়তে বসে অন্যের লেখা পড়ার যন্ত্রণা তাকে বিদ্ধ করে । এভাবে আত্মমর্যাদা হারানোর ফলে তপন অপমানিত বোধ করেছিল ।

  1. ‘ আজ যেন তার জীবনে সবচেয়ে দুঃখের দিন কার কথা বলা হয়েছে ? ‘ আজ ‘ কী কারণে বক্তার কাছে সবচেয়ে দুঃখের দিন ? 

Ans: এখানে ‘ জ্ঞানচক্ষু ‘ গল্পের প্রধান চরিত্র তপনের কথা বলা হয়েছে । মেসোমশাইয়ের দৃষ্টাস্তে উদ্বুদ্ধ হয়ে তপন একটি গল্প লিখে ফেলে । এরপর মাসির প্রশ্রয়ে এবং তাঁর প্ররোচনায় লেখক নতুন মেসো সেই গল্পটি ‘ সন্ধ্যাতারা ’ পত্রিকায় ছাপিয়ে দেন । কিন্তু পত্রিকায় প্রকাশ হওয়ার পর সে দেখে পুরো গল্পটাই আজ কেন দুঃখের দিন মেসো আগাগোড়া নতুন করে লিখে দিয়েছেন । এ গল্পে শুধু তার নামটুকুই আছে ; অথচ সে কোথাও নেই । এই ঘটনা তপনের অন্তমনে আঘাত করে । লজ্জায় , অনুতাপে , আত্মসম্মানহীনতায় সে সকলের কাছ থেকে পালিয়ে ছাতের অন্ধকারে একলা দাঁড়িয়ে কেঁদে ফেলে । নিজের কাছে নিজেই । এভাবে ছোটো হয়ে যাওয়ায় তার মনে হয় , ‘ আজ ‘ জীবনে সবচেয়ে দুঃখের দিন ।

  1. যদি কখনো লেখা ছাপতে দেয় তো , তপন নিজে গিয়ে দেবে — কোন্ লেখার কথা বলা হয়েছে ? সে – লেখা তপন নিজে গিয়ে ছাপতে দেবে কেন ? 

Ans: ‘ জ্ঞানচক্ষু ‘ গল্প থেকে গৃহীত উদ্ধৃতাংশে ‘ লেখা ‘ বলতে তপনের গল্পের কথা বলা হয়েছে । লেখা নিজে ছাপতে দেবে কেন তপনের জীবনের সবচেয়ে আনন্দঘন দিনটি মুহূর্তের মধ্যে সবচেয়ে দুঃখের দিনে পর্যবসিত হয় । কারণ পত্রিকায় প্রকাশিত গল্পটি তপন পড়তে গিয়ে টের পায় , সংশোধনের নামে লেখক – মেসো প্রায় সম্পূর্ণ গল্পটিই বদলে দিয়েছেন । এ ঘটনায় সে আহত হয় । আর যাই হোক গল্পটিকে নিজের গল্প বলা যায় না । বিশেষত নিজের গল্প পড়তে বসে অন্যের লেখা লাইন পড়া যে কতটা দুঃখ ও অসম্মানের তা তপন উপলব্ধি করে । তাই এমন দুঃখের দিনে সে সংকল্প করে লেখা ছাপা হোক কিংবা নাই হোক ; ভবিষ্যতে লেখা ছাপতে দিলে নিজে গিয়ে দেবে ।

  1. সত্যিই তপনের জীবনের সবচেয়ে সুখের দিনটি এল আজ— তপনের জীবনে সুখের দিনটি কীভাবে এল ? গল্পের শেষে সুখের দিনটি কীভাবে দুঃখের দিন হয়ে উঠল ?

 Ans: লেখক – মেসোমশাইয়ের সৌজন্যে ও বদান্যতায় ‘ সন্ধ্যাতারা ’ পত্রিকায় তপনের গল্পটি প্রকাশিত হয় । ছাপার অক্ষরে তপনকুমার রায়ের গল্প প্রকাশ পাওয়ার এই দিনটি প্রাথমিকভাবে তার জীবনে সবচেয়ে সুখের দিন হয়ে উঠেছিল । 

  1. আমাদের থাকলে আমরাও চেষ্টা করে দেখতাম প্রশ্ন কার উক্তি ? এমন উক্তির কারণ উল্লেখ করো ।

Ans: প্রশ্নে উদ্ধৃত উক্তিটির বক্তা হল তপনের মেজোকাকু । তপনের লেখক – মেসো তাঁর প্রভাব আর পরিচিতিকে কাজে লাগিয়ে ছোট্ট তপনের গল্পটি পত্রিকায় ছাপিয়ে দেন । এ উক্তির কারণ কথা শুনে বাড়ির বিভিন্ন সদস্য তপনের কৃতিত্বকে খাটো করার চেষ্টা করে । তপনের মেজোকাকুর উক্তিতেও সেই মধ্যবিত্ত মানসিকতারই প্রকাশ লক্ষ করা যায় । 

  1. ‘ তপনের মাথায় ঢোকে না’— কী মাথায় ঢোকে না ? কেন ঢোকে না ?

Ans: ‘ সন্ধ্যাতারা ‘ পত্রিকায় প্রকাশিত গল্পটি পড়তে গিয়ে তপন কাঁ মাথায় ঢোকে না টের পায় সংশোধনের নামে লেখক মেসো তা আগাগোড়া বদলে দিয়েছেন । নিজের নামে প্রকাশিত এই আনকোরা , অপরিচিত গল্পটি সে গড়গড়িয়ে পড়লেও ; আসলে তার মাথায় ঢোকে না । ■ তপন পত্রিকা হাতে পেয়ে পড়ার সময় হতবাক হয়ে যায় । এ গল্প তার নামে প্রকাশিত হলেও , মূলত মেসোর পাকা হাতের লেখা । এই লেখায় কোথাও সে নিজেকে খুঁজে পায় না । লেখাটি পড়তে কেন ঢোকে না । চেষ্টা করলেও সে স্তম্ভিত ও বোবা হয়ে যায় । পরে সকলের বকুনি খেয়ে গড়গড়িয়ে পড়ে , কিন্তু নিজের বলে ভাবতে পারে না ।

  1. পৃথিবীতে এমন অলৌকিক ঘটনাও ঘটে— কোন্ ঘটনাকে ‘ অলৌকিক ঘটনা ‘ বলা হয়েছে ? 

Ans: মেসোমশাইকে দেখে অনুপ্রাণিত হয়ে তপন একটা গল্প লিখে ফ্যালে । সেই গল্পটি মাসির প্ররোচনায় ও মেসোর প্রভাবে সত্যিই একটি পত্রিকায় প্রকাশিত হয় । ছোট্ট তপনের কাছে তার ‘ অলৌকিক ঘটনা গল্প ছাপার অক্ষরে প্রকাশ পাওয়ার ঘটনা ছিল স্বপ্নের মতোই কাল্পনিক । তাই এই ঘটনাটিকে অলৌকিক বলা হয়েছে । ‘ অলৌকিক ’ শব্দটির আভিধানিক অর্থ হল অবাস্তব বা অসম্ভব ব্যাপার ।

  1. গল্প ছাপা হলে যে ভয়ংকর আহ্লাদটা হওয়ার কথা , সে আহ্লাদ খুঁজে পায় না – কার গল্প ? গল্প ছাপা হওয়ার পরেও বক্তার মনে আনন্দ নেই কেন ?

Ans: গল্পটির কথা বলা হয়েছে । এখানে ‘ জ্ঞানচক্ষু গল্পের নায়ক তপনের লেখা ‘ প্রথম দিন ’ আনন্দ না থাকার কারণ → লেখক মেসোর প্রভাব ও পরিচিতির জোরে ছোট্ট তপনের লেখা গল্পটি ‘ সন্ধ্যাতারা ‘ পত্রিকায় প্রকাশিত হয় । তপনের লেখা গল্প ছাপা হওয়ার সংবাদে সারাবাড়িতে শোরগোল পড়ে যায় । কিন্তু তপনের কৃতিত্বের বদলে মেসোর মহত্ত্বকেই বাড়ির বড়োরা বেশি গুরুত্ব দেয় । তাদের মতে মেসোই ও গল্প ছাপিয়ে দিয়েছেন । মেজোকাকু বলেন , এমন মেসো থাকলে তারাও একবার চেষ্টা করে দেখতেন । এসব নানা কথায় তপন ক্রমশ যেন হারিয়ে যায় । তাই মনটা একটু তিক্ত হয়ে যাওয়ায় ; গল্প ছাপা হওয়ার ভয়ংকর আহ্লাদটা সে আর খুঁজে পায় না । 

  1. ‘ গায়ে কাঁটা দিয়ে উঠল তপনের তপন কে ? তার গায়ে কেন কাঁটা দিয়ে উঠল ?

Ans: আশাপূর্ণা দেবীর ‘ জ্ঞানচক্ষু ’ গল্পের নায়ক হল তপন । তপন তার নতুন গায়ে কেন কাঁটা দিল মেসোমশাইকে দেখে বোঝে লেখকেরাও আর সকলেরই মতো সাধারণ মানুষ । এর আগে সে কখনও জলজ্যান্ত একজন লেখককে এভাবে এত কাছ থেকে দেখেনি । ফলে মেসোমশাইয়ের দৃষ্টাস্তে অনুপ্রাণিত হয়ে সে স্কুলের হোমটাস্কের খাতায় একাসনে বসে আস্ত একটা গল্প লিখে ফেলে । লেখার পর নিজের প্রথম গল্পটি পড়ে রোমাঞ্চে ও উত্তেজনায় তার গায়ে কাঁটা দিয়ে উঠেছিল । 

জ্ঞানচক্ষু (গল্প) থেকে আরোও প্রশ্ন ও উত্তর দেখুন-PART-2 :

জ্ঞানচক্ষু গল্প থেকে আরও প্রশ্ন ও উত্তর-PART-3(CLICK HERE)

জ্ঞানচক্ষু গল্প থেকে আরও প্রশ্ন ও উত্তর-PART-4(CLICK HERE)

সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর | জ্ঞানচক্ষু (গল্প) আশাপূর্ণা দেবী – মাধ্যমিক বাংলা সাজেশন | Madhyamik Bengali Suggestion :

  1. ‘ কিন্তু তাই কি সম্ভব ? ‘ – কী সম্ভব নয় বলে বক্তার মনে হয়েছে ?

Answer : আশাপূর্ণা দেবী রচিত ‘ জ্ঞানচক্ষু ‘ গল্পে তপনের লেখক – মেসো তার সদ্য লেখা গল্পটি পড়ে মুগ্ধ হয়ে যান । তপনের মাসি গল্পটি ছাপিয়ে দেওয়ার অনুরোধ জানালে তিনি তাতে রাজি হয়ে গল্পটি নিজের সঙ্গে নিয়ে যান । অবশেষে একদিন সত্যিই তা ছাপা হলে তপন বিস্মিত হয়ে প্রশ্নে উদ্ধৃত কথাটি ভাবে । এই ভাবনায় বালক তপনের কিশোর – হৃদয়ের অবিশ্বাস ও মুগ্ধতাবোধ প্রকাশ কী সম্ভব নয় ।

  1. ‘ ওর লেখক মেসো ছাপিয়ে দিয়েছে । – “ ও ’ কে ? লেখক – মেসোর কী ছাপিয়ে দেওয়ার কথা বলা হয়েছে ? 

Answer : ‘ ও ’ বলতে আলোচ্য অংশে গল্পকার আশাপূর্ণা দেবী রচিত ‘ জ্ঞানচক্ষু ’ গল্পের কেন্দ্রীয় চরিত্র বালক তপনের কথা বলা হয়েছে । → তপনের লেখক মেসো তাঁর পরিচয় ও প্রভাবকে কাজে লাগিয়ে তপনের লেখা গল্প ‘ সন্ধ্যাতারা ‘ পত্রিকায় ছাপিয়ে দিয়েছিলেন । এই সত্য জানার পর তপনের কোনো কোনো আত্মীয় তার কৃতিত্বকে খাটো করে দেখিয়ে প্রশ্নোদ্ভূত মন্তব্যটি করেছিলেন ।

  1. ‘ আমাদের থাকলে আমরাও চেষ্টা করে দেখতাম । ‘ আমাদের বলতে কাদের কথা বলা হয়েছে ? তাদের কোন চেষ্টার কথা বোঝানো হয়েছে ? 

Answer : আলোচ্য উদ্ধৃতিটি আশাপূর্ণা দেবী রচিত ‘ জ্ঞানচক্ষু ‘ গল্প থেকে গৃহীত । উদ্ধৃতির বস্তুা তপনের মেজোকাকু ‘ আমাদের ’ বলতে এখানে নিজেকে এবং বাড়ির ‘ আমাদের কারা অন্য ব্যক্তিদেরকে বুঝিয়েছেন । লেখক মেসোর দৌলতে তপনের আনাড়ি হাতের লেখা গল্পও নামি পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছিল । বালক তপনকে তাদের চেষ্টা উৎসাহ দেওয়ার পরিবর্তে তার মেজোকাকু উদ্ধৃত উক্তিটির দ্বারা সুযোগ পেলে যে তাঁরাও গল্প লিখতে পারতেন তাই বোঝাতে চেয়েছেন । 

  1. ‘ আজ আর অন্য কথা নেই –‘আজ ’ দিনটির বিশেষত্ব কী ? সেদিন আর অন্য কথা নেই কেন ? 

Answer : আশাপূর্ণা দেবী রচিত ‘ জ্ঞানচক্ষু ‘ গল্পে ‘ আজ ’ বলতে সেই দিনটির ‘ আজ ’ দিনটির বিশেষত্ব কথা বোঝানো হয়েছে , যেদিন তপনের মাসি ও মেসো ‘ সন্ধ্যাতারা ‘ পত্রিকার সেই সংস্করণটি নিয়ে এলেন , যাতে তপনের লেখা গল্প প্রকাশিত হয়েছিল । → বালক তপনের লেখা গল্প যে সত্যি সত্যিই কোনো পত্রিকায় ছাপা হতে পারে , তা কেউই বিশ্বাস করেনি । কিন্তু যেদিন সত্যিই সেই অবিশ্বাস্য ঘটনাটি ঘটল , সেদিন সকলের কেন অন্য কথা নেই মুখে মুখে বারবার এই ঘটনার কথাই আলোচিত হচ্ছিল ।

  1. ‘ তারপর ধমক খায় , তপনের ধমক খাওয়ার কারণ কী ছিল ? 

Answer : ‘ জ্ঞানচক্ষু ‘ গল্পের নায়ক তপন পত্রিকায় প্রকাশিত নিজের লেখা গল্পটি সকলকে পড়ে শোনাতে উদ্যত হয় । কিন্তু পড়তে গিয়ে সে আশ্চর্যের সঙ্গে লক্ষ করে যে , তার লেখক মেসোমশাই তার গল্পটি সংশোধনের নামে প্রায় সম্পূর্ণ বদলে ফেলেছেন । এই ঘটনায় হতবাক তপনের অভিমানে গলা বুজে আসে । এদিকে গল্প পড়তে না – শুরু করায় সকলে অধৈর্য হয়ে গাকে ধমক দিতে শুরু করে ।

  1. ‘ সন্ধ্যাতারা ‘ পত্রিকায় তপনের গল্প ছেপে বেরোয় । তবু তপনের এত দুঃখ হয়েছিল কেন ? 

Answer : তপন ভাবত লেখকরা কোনো স্বপ্নের জগতের মানুষ । কিন্তু লেখক – মেসোকে দেখে তার ভুল ভাঙে । উৎসাহিত তপন নিজেই লিখে ফেলে একটা গল্প । ছোটোমেসোর উদ্যোগে সামান্য কারেকশনের পর সেটা ছেপেও বেরোয় সন্ধ্যাতারা ‘ পত্রিকায় । পত্রিকার সূচিপত্রে নিজের নাম ছাপার অক্ষরে দেখে আনন্দে আত্মহারা হয় তপন । কিন্তু গল্পটা পড়া শুরু করতেই সে বুঝতে পারে কারেকশনের নাম করে ছোটোমেসো তার গল্পটা আগাগোড়াই পালটে দিয়েছেন । নিজের লেখার পরিবর্তে একটা সম্পূর্ণ অচেনা লেখা দেখে তপনের আনন্দ মিলিয়ে যায় । 

  1. শুধু এই দুঃখের মুহূর্তে গভীর সংকল্প করে তপন , দুঃখের মুহূর্তটি কী ? তপন কী সংকল্প করেছিল ? 

Answer : দুঃখের মুহূর্ত উত্তর ‘ জ্ঞানচক্ষু ’ গল্পের নায়ক তপনের জীবনের সবচেয়ে আনন্দের মুহূর্তটি একপলকে দুঃখের মুহূর্তে পর্যবসিত হয় । কারণ সে প্রকাশিত গল্পটি পড়তে গিয়ে টের পায় , লেখক – মেসো গল্পটিকে সংশোধনের নামে প্রায় সম্পূর্ণ বদলে ফেলেছেন । এ গল্পকে আর যাই হোক তার নিজের লেখা বলা যায় না । → এই ঘটনায় তপন সংকল্প করেছিল যে , যদি কোনোদিন নিজের কোনো লেখা ছাপতে দেয় , তবে নিজে গিয়ে ছাপতে কৃত সংকল্প দেবে । ছাপা হোক বা না হোক অন্তত তাকে এ কথা শুনতে হবে না যে , কেউ তার লেখা প্রভাব খাটিয়ে ছাপিয়ে দিয়েছে ।

  1. ‘ তপনকে যেন আর কখনো শুনতে না হয় কী না – শোনার কথা বলা হয়েছে ?

Answer : ‘ জ্ঞানচক্ষু ‘ গল্পের নায়ক বালক তপন গল্প লেখায় যতই আনাড়ি হোক না কেন , সে মনেপ্রাণে একজন লেখক । তার লেখা । গল্পের ওপরে তার লেখক মেসোর সংশোধনের নামে খোলনলচে বদলে দেওয়া তপনের কাছে অপমানজনক । এই ঘটনায় সে অভিমানে বাদ্ধ হয়ে যায় । আত্ম – অসম্মানে আহত তপন সংকল্প নেয় যে , পরবর্তীকালে লেখা ছাপাতে দিলে সে নিজে দেবে । তবু এ কথা তাকে শুনতে হবে না । যে , অন্য কেউ তা ছাপিয়ে দিয়েছে ।

  1. ‘ তার চেয়ে দুঃখের কিছু নেই , তার থেকে অপমানের ! — ‘ তার চেয়ে বলতে কী বোঝানো হয়েছে ?

Answer : আশাপূর্ণা দেবী রচিত ‘ জ্ঞানচক্ষু ‘ গল্পে আলোচ্য অংশে ‘ তার চেয়ে ’ বলতে তপনের নিজের লেখা গল্প লেখক মেসোর হাতে পড়ে নির্বিচারে পরিবর্তিত হওয়ার কথা বলা হয়েছে । নিজের গল্প পড়তে বসে অন্যের লেখা পড়াটা তার কাছে গভীর দুঃখের ও অপমানের বলে মনে হয়েছিল । এই আত্মসম্মানবোধ থেকেই তৃপনের অন্তর্মনে মৌলিকতার অনুপ্রেরণা জেগে ওঠে ।

  1. ‘ তার চেয়ে দুঃখের কিছু নেই , তার থেকে অপমানের ! – কে অপমানিত হয়েছিল ?

Answer : আশাপূর্ণা দেবীর ‘ জ্ঞানচক্ষু ‘ গল্পের নায়ক তপন অপমানিত কেন অপমানিত ] লেখক মেসোমশাইকে দেখে অনুপ্রাণিত হয়ে ছোট্ট তপন একটি গল্প লিখে ফেলে । গল্প লেখার উত্তেজনায় ও রোমাঞ্চে সে গল্পটি ছোটোমাসিকে দেখায় । ফলে তা নতুন মেসোর হাতে পড়ে এবং তিনি তপনের লেখার প্রশংসা করেন ; সেটি পত্রিকায় ছাপিয়ে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন । পত্রিকায় গল্প ছাপা হওয়ার পর তপন দেখে সমস্ত গল্পটাই মেসো তার পাকা হাতের কলমে আগাগোড়া নতুন করে লিখে দিয়েছেন । নিজের লেখা গল্প পড়তে বসে অন্যের লেখা পড়ার যন্ত্রণা তাকে বিদ্ধ করে । এভাবে আত্মমর্যাদা হারানোর ফলে তপন অপমানিত বোধ করেছিল ।

  1. ‘ আজ যেন তার জীবনে সবচেয়ে দুঃখের দিন কার কথা বলা হয়েছে ? ‘ আজ ‘ কী কারণে বক্তার কাছে সবচেয়ে দুঃখের দিন ? 

Answer : এখানে ‘ জ্ঞানচক্ষু ‘ গল্পের প্রধান চরিত্র তপনের কথা বলা হয়েছে । মেসোমশাইয়ের দৃষ্টাস্তে উদ্বুদ্ধ হয়ে তপন একটি গল্প লিখে ফেলে । এরপর মাসির প্রশ্রয়ে এবং তাঁর প্ররোচনায় লেখক নতুন মেসো সেই গল্পটি ‘ সন্ধ্যাতারা ’ পত্রিকায় ছাপিয়ে দেন । কিন্তু পত্রিকায় প্রকাশ হওয়ার পর সে দেখে পুরো গল্পটাই আজ কেন দুঃখের দিন মেসো আগাগোড়া নতুন করে লিখে দিয়েছেন । এ গল্পে শুধু তার নামটুকুই আছে ; অথচ সে কোথাও নেই । এই ঘটনা তপনের অন্তমনে আঘাত করে । লজ্জায় , অনুতাপে , আত্মসম্মানহীনতায় সে সকলের কাছ থেকে পালিয়ে ছাতের অন্ধকারে একলা দাঁড়িয়ে কেঁদে ফেলে । নিজের কাছে নিজেই । এভাবে ছোটো হয়ে যাওয়ায় তার মনে হয় , ‘ আজ ‘ জীবনে সবচেয়ে দুঃখের দিন ।

  1. যদি কখনো লেখা ছাপতে দেয় তো , তপন নিজে গিয়ে দেবে — কোন্ লেখার কথা বলা হয়েছে ? সে – লেখা তপন নিজে গিয়ে ছাপতে দেবে কেন ? 

Answer : ‘ জ্ঞানচক্ষু ‘ গল্প থেকে গৃহীত উদ্ধৃতাংশে ‘ লেখা ‘ বলতে তপনের গল্পের কথা বলা হয়েছে । লেখা নিজে ছাপতে দেবে কেন তপনের জীবনের সবচেয়ে আনন্দঘন দিনটি মুহূর্তের মধ্যে সবচেয়ে দুঃখের দিনে পর্যবসিত হয় । কারণ পত্রিকায় প্রকাশিত গল্পটি তপন পড়তে গিয়ে টের পায় , সংশোধনের নামে লেখক – মেসো প্রায় সম্পূর্ণ গল্পটিই বদলে দিয়েছেন । এ ঘটনায় সে আহত হয় । আর যাই হোক গল্পটিকে নিজের গল্প বলা যায় না । বিশেষত নিজের গল্প পড়তে বসে অন্যের লেখা লাইন পড়া যে কতটা দুঃখ ও অসম্মানের তা তপন উপলব্ধি করে । তাই এমন দুঃখের দিনে সে সংকল্প করে লেখা ছাপা হোক কিংবা নাই হোক ; ভবিষ্যতে লেখা ছাপতে দিলে নিজে গিয়ে দেবে ।

  1. ‘ সত্যিই তপনের জীবনের সবচেয়ে সুখের দিনটি এল আজ— তপনের জীবনে সুখের দিনটি কীভাবে এল ? গল্পের শেষে সুখের দিনটি কীভাবে দুঃখের দিন হয়ে উঠল ?

 Answer : লেখক – মেসোমশাইয়ের সৌজন্যে ও বদান্যতায় ‘ সন্ধ্যাতারা ’ পত্রিকায় তপনের গল্পটি প্রকাশিত হয় । ছাপার অক্ষরে তপনকুমার রায়ের গল্প প্রকাশ পাওয়ার এই দিনটি প্রাথমিকভাবে তার জীবনে সবচেয়ে সুখের দিন হয়ে উঠেছিল । 

  1. ‘ আমাদের থাকলে আমরাও চেষ্টা করে দেখতাম প্রশ্ন কার উক্তি ? এমন উক্তির কারণ উল্লেখ করো ।

Answer : প্রশ্নে উদ্ধৃত উক্তিটির বক্তা হল তপনের মেজোকাকু । তপনের লেখক – মেসো তাঁর প্রভাব আর পরিচিতিকে কাজে লাগিয়ে ছোট্ট তপনের গল্পটি পত্রিকায় ছাপিয়ে দেন । এ উক্তির কারণ কথা শুনে বাড়ির বিভিন্ন সদস্য তপনের কৃতিত্বকে খাটো করার চেষ্টা করে । তপনের মেজোকাকুর উক্তিতেও সেই মধ্যবিত্ত মানসিকতারই প্রকাশ লক্ষ্য করা যায় । 

  1. ‘ তপনের মাথায় ঢোকে না’— কী মাথায় ঢোকে না ? কেন ঢোকে না ?

Answer : ‘ সন্ধ্যাতারা ‘ পত্রিকায় প্রকাশিত গল্পটি পড়তে গিয়ে তপন কাঁ মাথায় ঢোকে না টের পায় সংশোধনের নামে লেখক মেসো তা আগাগোড়া বদলে দিয়েছেন । নিজের নামে প্রকাশিত এই আনকোরা , অপরিচিত গল্পটি সে গড়গড়িয়ে পড়লেও ; আসলে তার মাথায় ঢোকে না । তপন পত্রিকা হাতে পেয়ে পড়ার সময় হতবাক হয়ে যায় । এ গল্প তার নামে প্রকাশিত হলেও , মূলত মেসোর পাকা হাতের লেখা । এই লেখায় কোথাও সে নিজেকে খুঁজে পায় না । লেখাটি পড়তে কেন ঢোকে না । চেষ্টা করলেও সে স্তম্ভিত ও বোবা হয়ে যায় । পরে সকলের বকুনি খেয়ে গড়গড়িয়ে পড়ে , কিন্তু নিজের বলে ভাবতে পারে না ।

  1. পৃথিবীতে এমন অলৌকিক ঘটনাও ঘটে— কোন্ ঘটনাকে ‘ অলৌকিক ঘটনা ‘ বলা হয়েছে ? 

Answer : মেসোমশাইকে দেখে অনুপ্রাণিত হয়ে তপন একটা গল্প লিখে ফ্যালে । সেই গল্পটি মাসির প্ররোচনায় ও মেসোর প্রভাবে সত্যিই একটি পত্রিকায় প্রকাশিত হয় । ছোট্ট তপনের কাছে তার ‘ অলৌকিক ঘটনা গল্প ছাপার অক্ষরে প্রকাশ পাওয়ার ঘটনা ছিল স্বপ্নের মতোই কাল্পনিক । তাই এই ঘটনাটিকে অলৌকিক বলা হয়েছে । ‘ অলৌকিক ’ শব্দটির আভিধানিক অর্থ হল অবাস্তব বা অসম্ভব ব্যাপার ।

  1. গল্প ছাপা হলে যে ভয়ংকর আহ্লাদটা হওয়ার কথা , সে আহ্লাদ খুঁজে পায় না – কার গল্প ? গল্প ছাপা হওয়ার পরেও বক্তার মনে আনন্দ নেই কেন ?

Answer : গল্পটির কথা বলা হয়েছে । এখানে ‘ জ্ঞানচক্ষু গল্পের নায়ক তপনের লেখা ‘ প্রথম দিন ’ আনন্দ না থাকার কারণ → লেখক মেসোর প্রভাব ও পরিচিতির জোরে ছোট্ট তপনের লেখা গল্পটি ‘ সন্ধ্যাতারা ‘ পত্রিকায় প্রকাশিত হয় । তপনের লেখা গল্প ছাপা হওয়ার সংবাদে সারাবাড়িতে শোরগোল পড়ে যায় । কিন্তু তপনের কৃতিত্বের বদলে মেসোর মহত্ত্বকেই বাড়ির বড়োরা বেশি গুরুত্ব দেয় । তাদের মতে মেসোই ও গল্প ছাপিয়ে দিয়েছেন । মেজোকাকু বলেন , এমন মেসো থাকলে তারাও একবার চেষ্টা করে দেখতেন । এসব নানা কথায় তপন ক্রমশ যেন হারিয়ে যায় । তাই মনটা একটু তিক্ত হয়ে যাওয়ায় ; গল্প ছাপা হওয়ার ভয়ংকর আহ্লাদটা সে আর খুঁজে পায় না । 

  1. ‘ গায়ে কাঁটা দিয়ে উঠল তপনের তপন কে ? তার গায়ে কেন কাঁটা দিয়ে উঠল ?

Answer : আশাপূর্ণা দেবীর ‘ জ্ঞানচক্ষু ’ গল্পের নায়ক হল তপন । তপন তার নতুন গায়ে কেন কাঁটা দিল মেসোমশাইকে দেখে বোঝে লেখকেরাও আর সকলেরই মতো সাধারণ মানুষ । এর আগে সে কখনও জলজ্যান্ত একজন লেখককে এভাবে এত কাছ থেকে দেখেনি । ফলে মেসোমশাইয়ের দৃষ্টাস্তে অনুপ্রাণিত হয়ে সে স্কুলের হোমটাস্কের খাতায় একাসনে বসে আস্ত একটা গল্প লিখে ফেলে । লেখার পর নিজের প্রথম গল্পটি পড়ে রোমাঞ্চে ও উত্তেজনায় তার গায়ে কাঁটা দিয়ে উঠেছিল । 

  1. ‘ কথাটা শুনে তপনের চোখ মার্বেল হয়ে গেল । কোন্ কথা শুনে কেন তপনের চোখ মার্বেল হয়ে গেল ? 

Answer : তপন এতদিন ভেবে এসেছে লেখকরা বুঝি অন্য জগতের মানুষ । সাধারণ মানুষদের সঙ্গে তাদের কোনো মিলই নেই । তাই যখন সে শুনল যে তার ছোটো মেসোমশাই বই লেখেন , আর সেই বই ছাপাও হয় তখন তার বিস্ময়ের সীমা রইল না । নতুন মেসোমশাই একজন সত্যিকারের লেখক । এই আশ্চর্য খবরটা শুনেই তপনের চোখ মার্বেলের মতো গোল গোল হয়ে গেল । 

  1. ‘ সে সব বই নাকি ছাপাও হয় ।’— উক্তিটিতে যে – বিস্ময় প্রকাশিত হয়েছে , তা পরিস্ফুট করো । 

Answer : উক্তিটিতে প্রকাশিত বিস্ময় উত্তর / আশাপূর্ণা দেবী রচিত ‘ জ্ঞানচক্ষু ’ গল্পে তপন নামের বালকটি তার ছোটোমাসির সদ্যবিবাহিত স্বামী অর্থাৎ তার মেসো যে একজন লেখক , এ কথা জেনে বিস্ময়ে হতবাক হয়ে যায় । লেখকেরা যে সাধারণ মানুষ এবং তার মেসোমশাই একজন লেখক , যাঁর বই ছাপা হয় — এ তথ্য তার কাছে অবিশ্বাস্য মনে হয়েছিল । আলোচ্য উদ্ধৃতাংশে বালক তপনের মনের সেই বিস্ময় প্রকাশ পেয়েছে । 

  1. ‘ এ বিষয়ে সন্দেহ ছিল তপনের / – তপনের কোন্ বিষয়ে কেন সন্দেহ ছিল ? তপনের সন্দেহ কীসে এবং কেন ? 

Answer : আশাপূর্ণা দেবী রচিত ‘ জ্ঞানচক্ষু ’ গল্পের তপন লেখকদেরকে এক অন্য জগতের বাসিন্দা বলে মনে করত । তাঁরাও যে আর – পাঁচজন সাধারণ মানুষের মতোই রোজকার জীবনযাপন করেন , তা ছিল তপনের কল্পনার বাইরে । সে আগে কোনোদিন কোনো লেখক কাছ থেকে দেখেনি । এমনকি লেখকদের যে দেখা পাওয়া যায় এ কথাও তার জানা ছিল না । তাই লেখকরা যে তার বাবা , কাকা , মামাদের মতোই সাধারণ মানুষ এ ব্যাপারে তার সন্দেহ ছিল । 

  1. ‘ একেবারে নিছক মানুষ’— এ কথার প্রমাণ কী ছিল ? 

Answer : নতুন মেসোমশাইয়ের লেখক পরিচয়ে আপ্লুত তপন লক্ষ করে যে , লেখক হলেও তিনি সাধারণের মতোই দাড়ি কামান , খেতে বসে খেতে পারবেন না বলে অর্ধেক তুলে দেন , স্নান করেন , ঘুমোন , খবরের কাগজের খবর নিয়ে গল্প ও তর্ক করেন , সিনেমা দেখেন ও বেড়াতে বেরোন — একেবারে সাধারণ মানুষের এই সমস্ত আটপৌরে ব্যাপার মেসোমশাইয়ের মধ্যে দেখে তপন প্রশ্নোধৃত মন্তব্যটি করেছিল । 

  1. ‘ নতুন মেসোকে দেখে জ্ঞানচক্ষু খুলে গেল তপনের ।— ‘ জ্ঞানচক্ষু ’ বলতে কী বোঝ ? তা কীভাবে তপনের খুলে গিয়েছিল ?

Answer : আশাপূর্ণা দেবীর ‘ জ্ঞানচক্ষু ’ গল্পে জ্ঞানচক্ষু বলতে মানুষের অন্তর্দৃষ্টিকে বোঝানো হয়েছে , যার সাহায্যে মানুষ প্রকৃত সত্যকে যাচাই করে নিতে পারে । → একজন লেখক সম্পর্কে তপনের মনে যে ধারণা ছিল তা নতুন মেসোর সংস্পর্শে এসে ভেঙে যায় । লেখকরা যে তার বাবা , মামা ও কাকাদের মতোই সাধারণ জীবনযাপন করে সেটা সে প্রত্যঙ্গ করে । তাদের মতোই দাড়ি কামান , সিগারেট খান , খেতে বসে খাবার তুলে দেন , পলিটিকাল তর্কও করেন — এসব দেখেই তপনের জ্ঞানচক্ষু খুলে যায় । সে ভাবে লেখকরা আকাশ থেকে পড়া কোনো জীব নয় , নিছক মানুষ ।

  1. ‘ রত্নের মূল্য জহুরির কাছেই / —কথাটির তাৎপর্য ব্যাখ্যা করো । 

Answer : উদ্ধৃতিটি আশাপূর্ণা দেবীর ‘ জ্ঞানচক্ষু ‘ গল্প থেকে গৃহীত । ‘ জহর ’ অর্থাৎ মূল্যবান রত্ন বিশেষজ্ঞকে জহুরি বলা হয় । এক্ষেত্রে জহুরি বলতে নতুন মেসোকে বোঝানো হয়েছে । লেখক মেসোকে দেখে অনুপ্রাণিত হয়ে তপন একটা আস্ত গল্প লিখে মাসিকে দেখায় । মাসি তা নিয়ে সারাবাড়িতে শোরগোল বাধিয়ে মেসোকে দেখাতে যান । তপন ব্যাপারটায় আপত্তি তুললেও মনে মনে পুলকিত হয় এই ভেবে যে , তার লেখার মূল্য একমাত্র কেউ যদি বোঝে তবে ছোটোমেসোই বুঝবে , কেন – না জহুরির জহর চেনার মতো একজন লেখকই পারে কোনো লেখার মূল্যায়ন করতে ।

  1. ‘ তপন অবশ্য মাসির এই হইচইতে মনে মনে পুলকিত হয় / — মাসি কেন হইচই করেছিলেন ?

Answer : উত্তর গরমের ছুটিতে মামার বাড়িতে এসে নতুন মেসোকে দেখে তপনের মনে লেখক সম্পর্কে যেসব ধারণা ছিল তা ভেঙে যায় । জলজ্যান্ত লেখকের সঙ্গে কাটিয়ে তপন অনুপ্রাণিত হয়ে একটা আস্ত গল্প লিখে ফেলে । আর তা মাসির হাতে পড়ায় মাসি হইচই শুরু করে দেয় এবং তা নিয়ে তার লেখক স্বামীর কাছে যায় । এতে লাজুক তপন অপ্রস্তুত হলেও মনে মনে পুলকিত হয় , কারণ তার লেখার প্রকৃত মূল্য কেউ বুঝলে তা নতুন মেসোই বুঝবে ।

  1. ‘ মেসোর উপযুক্ত কাজ হবে সেটা / —কোন্ কাজকে মেসোর উপযুক্ত কাজ বলা হয়েছে ।

Answer : লেখকরা যে সাধারণ মানুষ এ ব্যাপারে নতুন মেসোকে দেখে তপনের জ্ঞানচক্ষু খুলে গেল । তপন নতুন মেসোকে অহরহ কাছ থেকে দেখে অনুপ্রাণিত হয়ে একটা আস্ত গল্প লিখে তার মেসোর উপযুক্ত কাজ প্রিয় ছোটোমাসিকে দেখায় । গল্পটি নিয়ে ছোটোমাসি রীতিমতো হইচই ফেলে দেয় । শুধু তাই নয় , তিনি গল্পটি তার লেখক স্বামীকেও দেখান । গল্প দেখে তিনি সামান্য কারেকশন করে দিলে সেটা O.D যে ছাপা যেতে পারে এ কথা বলেন । আর এ কথা শুনেই মাসি সেটা ছাপিয়ে দেওয়ার অনুরোধ জানান , যেটা কিনা মেসোর উপযুক্ত কাজ হবে ।

  1. ‘ তোমার গল্প আমি ছাপিয়ে দেব । এখানে বক্তা কে ? উদ্ধৃতিটির মধ্যে দিয়ে বস্তার কোন মানসিকতার পরিচয় পাওয়া যায় ?

Answer : আলোচ্য উদ্ধৃতিটির বস্তুা তপনের ছোটোমেসো । তপনের লেখা পড়ে তার লেখক- ছোটোমোসো তাকে উৎসাহ দেন । তিনি এ কথাও বলেন যে , লেখাটা একটু কারেকশন করে দিলে ছাপানোও যায় । তাঁর সঙ্গে সন্ধ্যাতারা ‘ পত্রিকার সম্পাদকের জানাশোনা আছে । মেসো অনুরোধ করলে তিনি তা না করতে পারবেন না । আপাতদৃষ্টিতে এটি তাঁর উদারতার পরিচয় বলেই মনে হয় । কিন্তু একটু গভীরে বিচার করলে বোঝা যায় , শ্বশুরবাড়ির লোকেদের কাছে নিজের প্রভাব জাহির করার জন্যই তিনি এ কাজ করেছিলেন ।

  1. বিকেলে চায়ের টেবিলে ওঠে কথাটা / কোন কথা উঠেছিল ?

Answer : ‘ জ্ঞানচলু ‘ গল্পে তপন লেখক মেসোকে দেখে অনুপ্রাণিত হয়ে একটি গল্প লেখে তার স্কুলে ভরতি হওয়ার দিনের অভিজ্ঞতা নিয়ে । তা ছোটোমাসির হাতে পড়ে এবং মাসি তা নিয়ে বেশ হইচই করে তাঁর লেখক – স্বামীকে গল্পটি দেখান । তাঁর স্বামী গল্প দেখে উত্থাপিত কথা তপনকে ডেকে তার গল্পের প্রশংসা করেন এবং সামান্য কারেকশন করে দিলে তা ছাপার যোগ্য এ কথাও বলেন । মাসির অনুরোধে মেসো তপনকে কথা দেন সন্ধ্যাতারা ‘ – য় তার গল্প ছাপিয়ে দেবেন । এ কথাটাই চায়ের টেবিলে উঠেছিল । 

  1. ‘ তপনের হাত আছে । চোখও আছে । এখানে ‘ হাত ’ ও ‘ চোখ ” আছে বলতে কী বোঝানো হয়েছে ?

Answer : তপনের গল্প শুনে আর সবাই হাসাহাসি করলেও নতুন মেসো তার প্রতিবাদ করে আলোচ্য উক্তিটি করেন । এখানে ‘ হাত ’ আছে বলতে বোঝানো হয়েছে যে , তপনের লেখার ক্ষমতা আছে , বা ভাষার দখল আছে । আর ‘ চোখ ‘ আছে । কথার অর্থ হল তপন তার চারপাশের দুনিয়াটা ভালো করে পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে দেখতে ও উপলব্ধি করতে পারে । তার গল্প লেখার বিষয় নির্বাচন থেকেই এ কথা স্পষ্ট হয়ে যায় ।

  1. ‘ তপন কৃতার্থ হয়ে বসে বসে দিন গোনে । – তপন কৃতার্থ হয়েছিল কেন ?

Answer : তপনের জীবনে প্রথম ও সদ্য লেখা গল্পটি তার মাসি , তপনের লেখক মেসোকে দেখান ও গল্পটি ছাপিয়ে দেওয়ার কথা বলেন । এ কথা শুনে তপনের মেসো ‘ সন্ধ্যাতারা ‘ পত্রিকায় গল্পটি ছাপিয়ে দেওয়ার অঙ্গীকার করে নিয়ে যান । এতে তপন কৃতার্থ হয়েছিল । সেইসঙ্গে রোমান্বিত হয়ে সে দুরুদুরু বুঝে গল্প প্রকাশের আশায় দিন গোনা শুরু করেছিল । বালক হৃদয়ের উত্তেজনা বোঝাতেই এমন কথা বলা হয়েছে ।

  1. বিয়েবাড়িতেও যেটি মা না আনিয়ে ছাড়েননি ! কীসের কথা বলা হয়েছে ? তা মা না – আনিয়ে ছাড়েননি কেন ? 

Answer : আশাপূর্ণা দেবী রচিত ‘ জ্ঞানচক্ষু ‘ গল্পে আলোচ্য উত্তিটিতে তপনের হোমটাস্কের খাতার কথা বলা হয়েছে , যা পরবর্তীতে উদ্দিষ্ট বস্তু তার গল্প লেখার খাতায় পরিণত হয়েছিল । লেখিকা আশাপূর্ণা দেবী সূক্ষ্ম আঁচড়ে মধ্যবিত্ত বাঙালি জীবনের স্বাভাবিক ছবিটিকে ফুটিয়ে তুলেছেন । বাঙালি মায়েদের সন্তানের পড়াশোনার প্রতি সাধারণত তীক্ষ্ণ নজর থাকে । তপনের মা – ও এর ব্যতিক্রম নন । বিয়েবাড়িতে আসার জন্য তপনের পড়াশোনার যে ক্ষতি হবে , তা কিছুটা অবসর সময়ে পুষিয়ে নিতে তিনি তার হোমটাস্কের খাতাটি সঙ্গে আনিয়েছিলেন ।

  1. তপনের প্রথম গল্প লেখার অভিজ্ঞতার বর্ণনা দাও ।

Answer : ছোটোমেসোকে দেখার আগে তপন জানতই না যে সাধারণ মানুষের পক্ষেও গল্প লেখা সম্ভব । কিন্তু ছোটোমেসোকে দেখে অনুপ্রাণিত তপন একদিন দুপুরে সবাই যখন ঘুমের ঘোরে , তখন চুপিচুপি তিনতলার সিঁড়িতে উঠে যায় । তারপর একাসনে বসে অভিজ্ঞতার বর্ণনা । হোমটাস্কের খাতায় লিখে ফেলে আস্ত একটা গল্প । লেখা শেষ হলে নিজের লেখা পড়ে নিজেরই গায়ে কাঁটা দেয় তপনের , মাথার চুল খাড়া হয়ে ওঠে । উত্তেজিত তপন ছুটে নীচে এসে তার লেখক হওয়ার খবরটা ছোটোমাসিকে দেয় । 

  1. ‘ জ্ঞানচক্ষু গল্পে তপনের সঙ্গে তার ছোটোমাসির সম্পর্ক কেমন ছিল লেখো । 

Answer : তপন ও ছোটোমাসির সম্পর্ক উত্তর / তপনের ছোটোমাসি তপনের চেয়ে বছর আষ্টেকের বড়ো হলেও তিনি ছিলেন তপনের সমবয়সি বন্ধুর মতো । তাই মামার বাড়িতে এলে তপনের সব কিছুই ছিল ছোটোমাসির কাছে । তাই তার প্রথম লেখা গল্পটা সে ছোটোমাসিকেই আগে দেখায় । ছোটোমাসিও তাঁর স্নেহের বোনপোকে উৎসাহ জোগান এবং তাঁর লেখক – স্বামীকে অনুরোধ করেন তপনের লেখাটি ছাপিয়ে দিতে । আবার লেখা নিয়ে খুনসুটিও করে তপনের সঙ্গে । এসব থেকেই বোঝা যায় দুজনের মধ্যে একটা মধুর বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক ছিল ।

  1. ‘ আঃ ছোটোমাসি , ভালো হবে না বলছি । কার উক্তি ? এই হুমকির কারণ কী ?

Answer : প্রশ্নোধৃত উদ্ভিটি আশাপূর্ণা দেবী রচিত ‘ জ্ঞানচক্ষু ‘ গল্পের কেন্দ্রীয় কার উক্তি চরিত্র তপনের । → লেখক – মেসোমশাইয়ের দৃষ্টাস্তে উদ্বুদ্ধ তপন একটি গল্প লিখে তার ছোটোমাসিকে দেখায় । তিনি তপনের গল্পটি সবটা কারণ । না পড়েই তার প্রশংসা করেন এবং তা কোথাও থেকে নকল করা কিনা তা জিজ্ঞেস করেন । এ কথায় রেগে গিয়ে তপন প্রশ্নে উদ্ধৃত উক্তিটি করে । 

  1. ‘ যেন নেশায় পেয়েছে । কাকে , কীসের নেশায় প্রশ্ন পেয়েছে বুঝিয়ে বলো । 

Answer : আশাপূর্ণা দেবীর ‘ জ্ঞানচক্ষু ‘ গল্পের কেন্দ্রীয় চরিত্র তপনকে গল্প লেখার নেশায় পেয়েছে । আগে তপন মনে করত গল্প লেখা ভারী কঠিন কাজ , সাধারণ মানুষের পক্ষে তা সম্ভব নয় । লেখকরা বুঝি ভিন্ন গোত্রের মানুষ । কিন্তু লেখক- ছোটোমেসোকে দেখে অনুপ্রাণিত তপন সাহস করে লিখে ফেলে আস্ত গল্প । ছোটোমাসির হাত ঘুরে সেই গল্প ছোটোমেসোর হাতে পড়ে । তিনি তপনকে উৎসাহ দিতে গল্পটা পত্রিকায় ছাপিয়ে দেবেন বলে কথা দেন । উৎসাহিত তপন গল্প লেখার নেশায় মেতে ওঠে

জ্ঞানচক্ষু (গল্প) থেকে আরোও প্রশ্ন ও উত্তর দেখুন-PART-2 :

জ্ঞানচক্ষু গল্প থেকে আরও প্রশ্ন ও উত্তর-PART-3(CLICK HERE)

জ্ঞানচক্ষু গল্প থেকে আরও প্রশ্ন ও উত্তর-PART-4(CLICK HERE)

রচনাধর্মী প্রশ্নোত্তর | জ্ঞানচক্ষু (গল্প) আশাপূর্ণা দেবী – মাধ্যমিক বাংলা প্রশ্ন ও উত্তর |   Answer : 

1. কিন্তু নতুন মেসোকে দেখে জ্ঞানচক্ষু খুলে গেল তপনের । —নতুন মেসোর পরিচয় দাও । তাকে দেখে তপনের জ্ঞানচক্ষু খুলে যাওয়ার কারণ কী ? 

Ans: ‘ জ্ঞানচক্ষু ’ গল্পে তপনের নতুন মেসো তার ছোটোমাসির স্বামী । তিনি একজন লেখক , বই লেখেন । ইতিমধ্যে তাঁর অনেক বই ছাপাও হয়েছে । সর্বোপরি তিনি একজন প্রফেসর । 

 তপনের ছোটোমাসির বিয়ের পর নতুন মেসো যে লেখক , এ কথা শুনে তার কৌতূহলের অন্ত ছিল না । তার কাছে লেখক মানে ভিন গ্রহের কোনো মানুষ , যারা সাধারণের ধরাছোঁয়ার বাইরে । একজন লেখককে যে এত কাছ থেকে দেখা যায় কিংবা লেখকরা যে তপনের বাবা , ছোটোমামা বা মেজোকাকুদের মতো সাধারণ মানুষ হতে পারে , এ বিষয়েও তার যথেষ্ট সন্দেহ ছিল । কিন্তু তার সেই ধারণাগুলো ভেঙে গেল , যখন দেখল তার ছোটোমেসোও তার বাবা , ছোটোমামা বা মেজোকাকুর মতোই দাড়ি কামান , সিগারেট খান , খেতে বসে অর্ধেক খাবার তুলে দেন , সময়মতো স্নান করেন ও ঘুমোন । ছোটোমামাদের মতোই খবরের কাগজের কথায় তর্ক ও শেষ পর্যন্ত দেশ সম্পর্কে একরাশ হতাশা ঝেড়ে ফেলে সিনেমা দেখতে বা বেড়াতে চলে যান । এসব বিষয়ে অন্যদের সঙ্গে মেসোর মিল দেখে তপনের জ্ঞানচক্ষু উন্মোচিত হয় । সে বুঝতে পারে লেখকরা আকাশ থেকে পড়া জীব নয় , নিছকই মানুষ । 

2. ‘ রত্নের মূল্য জহুরির কাছেই ।’— ‘ রত্ন ’ ও ‘ জহুরি বলতে কী বোঝানো হয়েছে ? উদ্ধৃত উক্তিটির তাৎপর্য বুঝিয়ে দাও । 

Ans: আশাপূর্ণা দেবীর ‘ জ্ঞানচক্ষু ’ গল্পে উদ্ধৃতিটি পাই । ‘ রত্ন ’ বলতে মূল্যবান পাথর বোঝায় । ‘ জহুরি ‘ বলতে বোঝায় জহর অর্থাৎ রত্ন বিশেষজ্ঞকে । যে – কোনো পাথরকে রত্ন বলে চালালে তা জহুরির চোখ এড়ানো মুশকিল । ‘ জ্ঞানচক্ষু ‘ গল্পে ‘ রত্ন ‘ বলতে তপনের লেখা গল্পকে আর ‘ জহুরি ‘ বলতে তার ছোটোমাসির স্বামী তথা নতুন মেসোমশাইকে বোঝানো হয়েছে । 

 সীমিত জীবনবৃত্তের পরিধিতে তপনের গল্পের বইয়ের সঙ্গে পরিচিতি থাকলেও লেখকদের সম্পর্কে তার কিছুই অভিজ্ঞতা ছিল না । তপন তাদের গ্রহান্তরের কোনো জীব ভাবত । নতুন মাসির বিয়ের পর লেখক নতুন মেসোর সঙ্গে যখন পরিচিত হল তখনই তপনের লেখক সম্পর্কে সমস্ত ধারণা বদলে গেল । তার জ্ঞানচক্ষু খুলে গেল । তপন তার বাবা , কাকা ও মামাদের সঙ্গে নতুন মেসোর কোনো তফাত পেল না । এসব কিছু মিলিয়েই তপন ভাবে তারই বা লেখক হতে বাধা কোথায় ? তাই সে গল্প লিখতে গিয়ে আস্ত একটা গল্প লিখে ফেলায় উত্তেজনায় ছোটোমাসিকে দেখায় । ছোটোমাসি তা মেসোকে ঘুম থেকে তুলে দেখায় । ব্যাপারটায় তপনের মত না থাকলেও সে মনে মনে পুলকিত হয় , কেন – না জহুরির রত্ন চেনার মতো তার লেখার কদর একমাত্র নতুন মেসোই বুঝতে পারবে ।

3. ‘ আর সবাই তপনের গল্প শুনে হাসে । সকলের তপনের গল্প শুনে হাসার কারণ কী ? তার গল্পের যথাযথ মূল্যায়ন কে , কীভাবে করেছিলেন ? 

অথবা , ‘ বিকেলে চায়ের টেবিলে ওঠে কথাটা । চায়ের টেবিলে ওঠা কথাটি সম্পর্কে বাড়ির মানুষদের প্রতিক্রিয়া কী ছিল ? নতুন মেসোরই – বা এই ঘটনায় বক্তব্য কী ছিল ? হাসার কারণ ? 

Ans: ‘ জ্ঞানচক্ষু ’ গল্প থেকে গৃহীত অংশটিতে ‘ সবাই ’ বলতে তপনের বাড়ির লোকজনকে বোঝানো হয়েছে । বাড়ির বড়োদের চোখে সে ছিল নেহাতই ছোটো , তার গুরুত্ব কম । সে যে রাতারাতি একটা গল্প লিখে ফেলতে পারে , আর সে – গল্প যে ছাপানোর যোগ্য হতে পারে তা প্রথমে কেউই বিশ্বাস করতে পারেননি । তাই সকলে তপনের গল্প শুনে হেসেছিলেন । বাড়ির সকলে তার লেখা গল্পকে গুরুত্ব না দিলেও , তার লেখক নতুন মেসো কিন্তু এই গল্পের যথাযোগ্য মর্যাদা দিয়েছিলেন । তপনের মাসি তার গল্পটি মেসোকে দেখালে , তিনি তা একটি পত্রিকায় গল্পের মূল্যায়ন কে , কীভাবে করেছিলেন ? প্রকাশ করে দেওয়ার আশ্বাস দেন । বিকেলে চায়ের টেবিলে সকলে তপনের লেখা গল্প নিয়ে হাসাহাসি ত করলেও , লেখক – মেসো কিন্তু তপনের প্রশংসা করেন । তিনি বলেন যে , না তপনের লেখার হাত ও দেখার চোখ দুই – ই আছে । কারণ তার বয়সি ছেলেমেয়েরা সাধারণত রাজারানি , খুন , জখম , অ্যাকসিডেন্ট , নয়তো না – খেতে পেয়ে মরে যাওয়া প্রভৃতি বিষয়ে গল্প লেখে । কিন্তু তপন সেসব না – লিখে তার ভরতি হওয়ার দিনের অভিজ্ঞতা আর অনুভূতি নিয়ে গল্প লিখেছে । তপনের লেখক মেসোর মতে , এ খুব বিরল লক্ষণ । এইভাবে তপনের মেসো তার লেখা গল্পের মূল্যায়ন করেছিলেন । তবে তপনের গল্পে আনাড়ি হাতের ছাপ থাকায় , তিনি তা সংশোধন করে দিয়েছিলেন । 

4. পৃথিবীতে এমন অলৌকিক ঘটনাও ঘটে ? – কোন্ ঘটনাকে অলৌকিক বলা হয়েছে । একে অলৌকিক বলার কারণ কী ? 

Ans: প্রখ্যাত শিশুসাহিত্যিক আশাপূর্ণা দেবীর গল্প ‘ জ্ঞানচক্ষু ‘ – র কেন্দ্রীয় চরিত্র তপন । বিশাল পৃথিবীতে স্বল্প বাস্তবতাবোধ নিয়ে আর পাঁচটা শিশুর মতোই তারও পথ চলা । লেখকদের সম্পর্কে তার ধারণা সে – কথাই বলে । সেই তপন তার নতুন লেখক মেসোমশাইয়ের অলৌকিক ঘটনা সান্নিধ্যে এসে তার প্রতিভাকে বিকশিত করে কাঁচা হাতে লিখে ফেলে একটা আস্ত গল্প । সেই গল্প মেসোর হাতে গেলে মেসো তপনের ও বাড়ির লোকেদের মন রাখার জন্য তা সামান্য কারেকশন করে সন্ধ্যাতারা ‘ পত্রিকায় ছাপিয়ে দেওয়ার অঙ্গীকার করেন ও সেটি নিয়ে যান । এর বেশ কিছু দিন পর ‘ সন্ধ্যাতারা ‘ পত্রিকায় গল্পটি ছেপে বেরোয় । তপনের কাছে এই চমকপ্রদ ঘটনাটিই অলৌকিক বলে মনে হয়েছিল । → ‘ অলৌকিক ’ শব্দটির আভিধানিক অর্থ হল মানুষের পক্ষে যা সম্ভব নয় বা পৃথিবীতে সচরাচর যা ঘটে না । এক্ষেত্রে ছোট্ট তপনের লেখা গল্প কেন অলৌকিক পরিবেশ ও পরিস্থিতির সমন্বয়ে যেভাবে ছাপার অক্ষরে প্রকাশিত হয়েছিল সেটাই অলৌকিক । আসলে তপনের লেখক সম্পর্কে ধারণার অবসান , গল্প লেখা , তা মেসোর হাত ধরে ছাপার অক্ষরে প্রকাশিত হওয়া প্রভৃতি ঘটনাগুলি তার কাছে এতটাই অবিশ্বাস্য যে , তার মনে হয় সমস্ত ঘটনাটিই যেন অলৌকিক ।

5. ‘ এর প্রত্যেকটি লাইনই তো নতুন আনকোরা , তপনের অপরিচিত ’ – ‘ এর ’ বলতে কীসের কথা বলা হয়েছে । বিষয়টি পরিস্ফুট করো । 

Ans: উদ্ধৃত লাইনটি আশাপূর্ণা দেবীর ‘ জ্ঞানচক্ষু ‘ গল্পের অংশবিশেষ । ‘ এর ‘ – এর উদ্দেশ্য এখানে ‘ এর ’ বলতে গল্পের কেন্দ্রীয় চরিত্র তপনের প্রথম ছেপে বেরোনো গল্প ‘ প্রথম দিন ‘ – এর কথা বলা হয়েছে । গল্পের নায়ক তপন ছোটোবেলা থেকেই ভাবত লেখকরা বুঝি অন্য জগতের মানুষ । কিন্তু ছোটোমাসির সঙ্গে বিয়ে হওয়া নতুন মেসোকে দেখে তার সেই ভুল ভাঙে । তার নতুন মেসো বই লেখেন । সেসব বই ছাপাও হয় — অথচ মেসোর আচার – আচরণের সঙ্গে তার বাবা , ছোটোমামা বা মেজোকাকুর আচার – আচরণের কোনো তফাতই বিস্তারিত আলোচনা সে খুঁজে পায় না । তপন বোঝে , লেখকরা আকাশ থেকে পড়া কোনো জীব নয় । অনুপ্রাণিত তপন একটা আস্ত গল্প লেখে যেটা তার মাসির হাত ঘুরে মেসোর হাতে পড়ে । মাসির পীড়াপীড়িতে সামান্য কারেকশন করে সে গল্প ‘ সন্ধ্যাতারা ‘ – য় ছাপিয়ে দেন নতুন মেসো । বাড়িতে সে নিয়ে আনন্দের শেষ নেই । কিন্তু ছোট্ট তপন সকলের অনুরোধে গল্প পড়তে শুরু করতেই সুর কেটে যায় । তপন দেখে কারেকশনের নাম করে মেসো তার লেখাটা আগাগোড়াই বদলে দিয়েছেন । গল্পের প্রত্যেকটি লাইনই তার কাছে নতুন লাগে । তার শিশুমন ব্যথায় ভরে ওঠে । 

6. ‘ তপনের মনে হয় আজ যেন তার জীবনের সবচেয়ে দুঃখের দিন।— ‘ আজ ’ বলতে কোন দিনের কথা বলা হয়েছে । তপনের এমন মনে হওয়ার কারণ কী ?

Ans: ‘ আজ ‘ বলতে সেই দিনটির কথা বলা হয়েছে , যেদিন তপনের মাসি ও মেসো ‘ সন্ধ্যাতারা ‘ পত্রিকার একটি সংস্করণ নিয়ে তাদের বাড়িতে আসেন , যাতে তপনের প্রথম ‘ আজ ‘ –যে দিন গল্প প্রকাশিত হয় । 

 কারণ শিশুমন কোমল , সামান্য আঘাত পেলেই তারা ভীষণভাবে মুষড়ে পড়ে । এক্ষেত্রেও তাই ঘটেছে । ছোট্ট তপনের লেখক সম্পর্কে সব কৌতূহলের শেষ হয় নতুন মেসোকে দেখে । অনুপ্রাণিত তপন একটি গল্প লেখে । সেই গল্প মাসির পীড়াপীড়িতে মেসোর হাত ধরে ‘ সন্ধ্যাতারা ‘ পত্রিকায় ছাপা হয় । স্বাভাবিক কারণে তপন উৎফুল্ল হয়ে ওঠে । নানান বিরুপতা সত্ত্বেও সে গর্ব অনুভব করে । কিন্তু তার গর্ব মাটিতে মিশে যায় গল্পটি পড়ার সময় । সে দেখে প্রকাশিত গল্পে তার লেখার লেশমাত্র নেই । কারণ গল্পটা সামান্য কারেকশনের নামে পুরোটাই বদলে গিয়েছিল । এতে তপনের লেখকসত্তা অপমানিত হয় । তার চোখে জল এসে যায় । এই কারণে দিনটিকে তার সবচেয়ে দুঃখের মনে হয় । 

7. ‘ জ্ঞানচক্ষু গল্পে তপন চরিত্রটি বিশ্লেষণ করো ।

Ans: আশাপূর্ণা দেবীর ‘ জ্ঞানচক্ষু ’ গল্পের তপনের মধ্যেও সব শিশুর মতোই আশা – আকাঙ্ক্ষা , স্বপ্ন – স্বপ্নভঙ্গ , কল্পনা বাস্তব , আনন্দ – অভিমানের টানাপোড়েন দেখা যায় । তবে তার চরিত্রের বিশেষ কিছু বৈশিষ্ট্য তাকে আলাদা করে রাখে । তপন মনে মনে তার কল্পনার জগৎকে সাজিয়ে নিতে ভালোবাসে । তাই তার কল্পনার জগতে লেখকরা ছিলেন ভিন কল্পনাপ্রবণ গ্রহেরপ্রাণী । সাধারণ মানুষদের সঙ্গে তাদের বুঝি বা কোনো মিলই নেই । সাহিত্যপ্রেমী সাহিত্যের প্রতি তপনের ঝোঁক ছোটোবেলা থেকেই । সে অনেক গল্প শুনেছে ও পড়েছে । লেখকদের সম্পর্কেও তার কৌতূহল অসীম । ছোটোমেসোকে দেখে তার মনেও লেখক হওয়ার ইচ্ছে জাগে । উৎসাহী হয়ে বেশ কয়েকটা গল্পও লিখে বয়স অনুপাতে তপন একটু বেশিই সংবেদনশীল । সমবয়সি ছেলেমেয়েদের মতো রাজারানি , খুন – জখম ও অ্যাকসিডেন্ট নিয়ে না – লিখে , তার ব্যক্তিগত জীবনের অভিজ্ঞতা আর অনুভূতি সংবেদনশীল ও অন্তর্মুখী ২ ঠাট্টাতামাশা বা মাসি মেসোর উৎসাহদান কোনোটাতেই সে প্রকাশ্যে তার প্রতিক্রিয়া দেখায় না । এটা তার অন্তর্মুখী স্বভাবেরই পরিচয় । তাই কারেকশনের নামে মেসো তার গল্পটা আগাগোড়া বদলে দিলে তপন তার কষ্ট লুকোতে ছাদে গিয়ে কাঁদে । 

 তপনের আত্মমর্যাদা বোধ ছিল প্রবল । তার গল্প ছোটোমেসো কারেকশনের নাম করে আগাগোড়াই বদলে দিলে তপনের লেখকসত্তা আহত হয় । সে মনে মনে শপথ নেয় , ভবিষ্যতে লেখা ছাপাতে হালে সে নিজে গিয়ে লেখা দিয়ে আসবে পত্রিকা অফিসে । তাতে যদি তার মতো নতুন লেখকের লেখা ছাপা না হয় , তাতেও দুঃখ নেই । 

8. নতুন মেসোর চরিত্রটি আলোচনা করো ।

Ans: কথাশিল্পী আশাপূর্ণা দেবী রচিত ‘ জ্ঞানচক্ষু ’ গল্পের মূল চরিত্র তপনের আত্মোপলব্ধির পিছনে যে – চরিত্রটির প্রত্যক্ষ প্রভাব রয়েছে , তিনি হলেন তপনের নতুন মেসো । এই মেসো পেশায় অধ্যাপক এবং লেখক । তাঁর লেখক পরিচয় তপনের মনের বহু ভুল ধারণা ভেঙে দেয় । অধ্যাপক ও লেখক হওয়া সত্ত্বেও মেসো ব্যক্তিটি বেশ মিশুকে , ফুর্তিবাজ । তিনি শ্যালক – শ্যালিকাদের সঙ্গে গল্প করেন , তর্ক করেন , কবজি ডুবিয়ে খাওয়াদাওয়া করেন , সিনেমায় মিশুকে যান ও বেড়াতেও যান । 

 শ্বশুরবাড়ির সদস্য হিসেবে তপনের প্রথম লেখা গল্পের তিনি প্রশংসা সহানুভূতিশীল করেন ও তা ছাপার দায়িত্ব নিয়ে নেন । শুধু যে তপনকে উৎসাহ দিতে ছোটোমেসো তার গল্পটা ছাপিয়ে দেন , নিজের প্রতিপত্তি এমনটা নয় । শ্বশুরবাড়িতে নিজের প্রতিপত্তি জাহির বাহিরে আগ্রহী করতেও তিনি এ কাজ করেন । তপনের গল্প যাতে প্রসিদ্ধি পায় , তাই সংশোধনের নামে গল্পের খোলনলচে বদলে দেন মেসো । তাঁর উদ্দেশ্য হয়তো মহৎ ছিল । কিন্তু তাঁর অন্যের আবেগ বুঝতে অক্ষম এই উদ্যোগ তপনের লেখকসত্তাকে আঘাত করে । একদিকে চারিত্রিক উদারতায় ও মহত্ত্বে আবার অন্যদিকে অসতর্কতায় , তপনের নতুন মেসো এক পরিপূর্ণ রক্তমাংসের চরিত্র হয়ে ওঠেন । যদিও একজন লেখক হয়ে অন্য লেখকের এই আত্মসম্মান ও অহংবোধকে উপলব্ধি করা তাঁর উচিত ছিল ।

9. তপনের ছোটোমাসির চরিত্রটি আলোচনা করো । 

অথবা , ‘ জ্ঞানচক্ষু ‘ গল্পে তপনের ছোটোমাসির স্বভাব ও ভাবনার যে – পরিচয় ফুটে উঠেছে , আলোচনা করো

Ans:  ‘ জ্ঞানচক্ষু ’ গল্পে আশাপূর্ণা দেবী সৃষ্ট চরিত্রগুলির মধ্যে ছোটো অথচ বেশ শক্তিশালী চরিত্র হল তপনের ছোটোমাসির চরিত্রটি । ছোটোমাসি বয়সে তপনের চেয়ে বছর আষ্টেকের বড়ো । প্রায় সমবয়সি ছোটোমাসি ছিল তপনের চিরকালের বন্ধু । মামার বাড়িতে এলে তপনের যাবতীয় কর্মকাণ্ডের সঙ্গী ছিল সে । তাই তপন প্রথমবার গল্প লিখে বন্ধুত্বপূর্ণ ছোটোমাসিকেই সকলের আগে দেখায় । সদ্যবিবাহিতা ছোটোমাসির স্বামী একজন অধ্যাপক । তিনি আবার বইও লেখেন । তাই বিয়ের পর থেকে ছোটোমাসির মধ্যে একটা মুরুব্বি মুরুব্বি ভাব এসেছে । তপনের লেখা গল্পটি পুরোটা না পড়েই স্বামী গর্বে গর্বিতা সে তার মতামত জানায় এবং লেখাটা নিয়ে যায় । তার স্বামীর কাছে । তার জোরাজুরিতেই তার স্বামীর তপনের গল্পটা ছাপানোর ব্যবস্থা করতে রাজি হয়ে যান । তাই সেই গল্প ‘ সন্ধ্যাতারা পত্রিকায় ছেপে বেরোলে মাসির মুখে আত্মপ্রসাদের আনন্দ দেখা যায় । প্রায় সমবয়সি হলেও তপন ছিল তার বিশেষ স্নেহের পাত্র । তাই তার লেখা গল্প ছাপানোর ব্যাপারে মাসি এত উদ্যোগ । নেয় । সে যখন মজা করে তপনের লেখাটা ‘ টুকলিফাই ’ কিনা জানতে চায় , তখনও সেই বক্তব্যের মধ্যে অভিযোগ বা সন্দেহের বদলে স্নেহেরই সুর বাজে ।

10. ‘ জ্ঞানচক্ষু ‘ গল্পের গৌণ চরিত্রগুলি গল্পে কী ভূমিকা পালন করেছে , তা আলোচনা করো ।

Ans: আশাপূর্ণা দেবী রচিত ‘ জ্ঞানচক্ষু ‘ গল্পে যেসব গৌণ চরিত্রের দেখা মেলে তারা হলেন তপনের ছোটোমামা , মেজোকাকু , মা এবং তার বাবা । এই চরিত্রগুলির মধ্যে একমাত্র ‘ ছোটোমামা ‘ চরিত্রটির মুখে কোনো সংলাপ দেখতে পাওয়া যায় না । বাকিদের ক্ষেত্রেও সংলাপ অতিসামান্য । তবে কমবেশি সবকটি চরিত্রই প্রাপ্তবয়স্ক হওয়া সত্ত্বেও তাদের মধ্যে বয়সজনিত পরিণতমনস্কতা লক্ষ করা যায় না । তপনের বয়সি কোনো ছেলে প্রথম গল্প লিখলে বা সেই গল্প ছাপা হলে যেভাবে তাকে উৎসাহ ও প্রশংসা দেওয়া উচিত , তা এই অভিভাবকস্থানীয় ব্যক্তিরা করেননি । উলটে ব্যঙ্গ ও রসিকতায় তাকে জড়োসড়ো ও আড়ষ্ট তুলেছেন । একমাত্র তপনের মাকেই ছেলের প্রতি কিছুটা সহানুভূতিশীল হতে দেখা যায় । তবে লেখিকা আগাগোড়া রসিকতার ঢঙে গল্পটি পরিবেশন করায় | গল্পের গৌণ চরিত্রগুলিও আবহের সঙ্গে বেশ মানানসই । আসলে বাঙালি মধ্যবিত্ত পরিবারে একটি কল্পনাপ্রবণ ও সৃষ্টিশীল বালকের প্রকৃত অসহায় অবস্থা ফুটিয়ে তুলতে দৈনন্দিনতার যে আটপৌরে ছবিটির প্রয়োজন | হয় , এই চরিত্রগুলির মাধ্যমে লেখিকা মুনশিয়ানার সঙ্গে সেই পরিবেশটাই স্পষ্ট করে তুলেছেন ।

11. ছোটোগল্প হিসেবে আশাপূর্ণা দেবী রচিত ‘ জ্ঞানচক্ষু ’ গল্পের সার্থকতা বিচার করো । 

Ans: শুধু আয়তনে ছোটো হলেই কোনো গল্প ছোটোগল্পের পর্যায়ে পড়ে না । ছোটোগল্পের কিছু নিজস্ব বৈশিষ্ট্য থাকে । সেই বৈশিষ্ট্যগুলির সাপেক্ষে ‘ জ্ঞানচক্ষু ‘ গল্পটিকে বিচার করলে বোঝা যাবে ছোটোগল্প হিসেবে সেটি কতটা সার্থক । 

 ছোটোগল্প শুরু হয় হঠাৎ করে । ‘ জ্ঞানচক্ষু ’ গল্পতেও এই বৈশিষ্ট্যটি লক্ষ করা যায় । ‘ কথাটা শুনে তপনের চোখ মার্বেল হয়ে গেল’— এই বাক্যটি দিয়ে আচমকাই গল্পটি শুরু হয় । হঠাৎ শুরু গল্প লেখাকে কেন্দ্র করে তপনের মোহ এবং সেই মোহভঙ্গের কাহিনিকে ঘিরেই এই গল্প । গল্পে অন্য কোনো উপকাহিনি গড়ে একটি মাত্র য় বিষয়কেন্দ্রিকতা ওঠেনি । তাই গল্পটি তার সংক্ষিপ্ত পরিধির মধ্যে একটি মাত্র বিষয়েই সীমাবদ্ধ । ‘ জ্ঞানচক্ষু ’ গল্পে তপন ছাড়াও যে চরিত্রগুলির ভূমিকা নজর কাড়ে , তাঁরা হলেন তপনের ছোটোমাসি এবং মেসো । বাকি কম চরিত্রের উপস্থিতি চরিত্রগুলি নেহাতই গৌণ । এক্ষেত্রেও ছোটোগল্পের বৈশিষ্ট্য অক্ষুণ্ণ রয়েছে । অতিরিক্ত চরিত্রের ভিড় নেই । ছোটোগল্প যেমন হঠাৎ করে শুরু হয় , তেমনই হঠাৎই শেষ হয় । গল্প শেষ হয়ে যাওয়ার পরেও পাঠকের মনে এক ধরনের অতৃপ্তি থেকে যায় । ‘ জ্ঞানচক্ষু ‘ গল্পটিও এর ব্যতিক্রম নয় । ছাপার অক্ষরে অসমাপ্তির রেশ নিজের নামের মতোই নিজের লেখাকেও দেখতে চেয়েছিল তপন । তার সেই স্বপ্নভঙ্গের যন্ত্রণা নিয়েই গল্পটি শেষ হয় । ‘ জ্ঞানচক্ষু ’ গল্পটির মধ্যে ছোটোগল্পের প্রতিটি বৈশিষ্ট্যই রয়েছে । সুতরাং , ছোটোগল্প হিসেবে এটি নিঃসন্দেহে সার্থক ।

12. নতুন মেসোকে দেখে জ্ঞানচক্ষু খুলে গেল তপনের— প্রশ্ন কোন্ ঘটনায় জ্ঞানচক্ষু খুলে গেল ? 

Ans: গল্প অনুসারে সত্যিই কি এই ঘটনায় তপনের জ্ঞানচক্ষু খুলেছিল ? 545 জ্ঞানচক্ষু উন্মোচনের উত্তর / গল্পকার আশাপূর্ণা দেবীর ‘ জ্ঞানচক্ষু ‘ গল্পের প্রধান চরিত্র তপন । তার শিশুমনে লেখক বা সাহিত্যিক সম্পর্কে স্পষ্ট কোনো ধারণা ছিল না । সে ভাবত লেখকেরা বুঝি কোনো ভিন গ্রহের জীব । ছোটোমাসির বিয়ে হওয়ার পর তপন জানতে পারে নতুন মেসো একজন লেখক এবং তাঁর অনেক বই ছাপা হয়েছে । জলজ্যান্ত একজন সত্যিকারের লেখককে চোখের সামনে দেখে সে বুঝতে পারে লেখকেরা ছোটোমামা কিংবা মেজোকাকুর মতোই নিছক সাধারণ মানুষ । এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতেই তপনের প্রাথমিক জ্ঞানচক্ষু খুলে  যায় । জ্ঞানচক্ষু উন্মোচনে ঘটনার প্রেক্ষিত 

 লেখক মেসোমশাইয়ের দৃষ্টান্তে অনুপ্রাণিত হয়ে তপন নিজেও একটা আস্ত গল্প লিখে ফেলে । এভাবে সহজেই একটা গল্প লিখে ফেলার রোমাঞে ও উত্তেজনায় তা সে বন্ধুমনোভাবাপন্ন ছোটোমাসিকে দেখায় । এরপর ছোটোমাসির প্ররোচনায় আর নতুন মেসোর প্রভাবে সেই গল্পটি ‘ সন্ধ্যাতারা ’ পত্রিকায় প্রকাশিত হয় । কিন্তু পত্রিকায় ছাপা গল্পটি পড়ে তপন টের পায় সংশোধনের নামে মেসো লেখাটির আগাগোড়া বদলে দিয়েছেন । এ গল্পে তপন কোথাও নেই । আর বাড়িতেও মুখে মুখে রটে যায় মেসোর দৌলতেই তার গল্প ছাপা হয়েছে । এ ঘটনা আত্মমর্যাদাবোধসম্পন্ন তপনের সংবেদনশীল লেখক মনে আঘাত করে । লজ্জায় অনুশোচনায় সে সিদ্ধান্ত নেয় ভবিষ্যতে কারও সুপারিশে নির্ভর না করে নিজের লেখা নিজেই ছাপতে দেবে । এক কিশোরের আত্মস্বরূপ আবিষ্কারের এ কাহিনির মধ্যেই আসলে লুকিয়ে আছে প্রকৃত জ্ঞানচক্ষু লাভের সার্থকতা । 

13. তার চেয়ে দুঃখের কিছু নেই , তার থেকে অপমানের ! – কার এ কথা মনে হয়েছে ? জীবনের কোন অভিজ্ঞতার মধ্য দিয়ে সে এই সিদ্ধান্তে পৌঁছেছে ? 

অথবা , ‘ তার চেয়ে দুঃখের কিছু নেই , তার থেকে অপমানের ।– উদ্দিষ্ট ব্যক্তির কাছে কোন্ ঘটনা কেন দুঃখের ও অপমানের ।

 উত্তর / কথাশিল্পী আশাপূর্ণা দেবীর ‘ জ্ঞানচক্ষু ’ গল্পের নায়ক তপনের এ কথা মনে হয়েছিল । শিশুমন কোমল , সামান্য আঘাত পেলেই তারা ভীষণভাবে মুষড়ে পড়ে । এক্ষেত্রেও তাই ঘটেছে । ছোট্ট তপনের লেখক সম্পর্কে সব কৌতূহলের শেষ হয় নতুন মেসোকে দেখে । অনুপ্রাণিত তপন একটি গল্প লেখে । 

সেই গল্প মাসির পীড়াপীড়িতে মেসোর হাত ধরে ‘ সন্ধ্যাতারা ‘ পত্রিকায় ছাপা হয় । স্বাভাবিক কারণে তপন উৎফুল্ল হয়ে ওঠে । নানান বিরূপতা সত্ত্বেও সে গর্ব অনুভব করে । কিন্তু তার গর্ব মাটিতে মিশে যায় গল্পটি পড়ার সময় । সে দেখে প্রকাশিত গঙ্গে তার লেখার লেশমাত্র নেই । কারণ গল্পটা সামান্য কারেকশনের নামে পুরোটাই বদলে গিয়েছিল । এতে তপনের লেখকসত্তা অপমানিত হয় । তার চোখে জল এসে যায় । নিজের গল্প পড়তে বসে অন্যের লেখা লাইন পড়ার দুঃখ ও যন্ত্রণা তাকে কুরেকুরে খায় । লজ্জা , অনুশোচনা এবং আত্মসম্মানহীনতার সংকোচ থেকে এভাবেই সে উপরিউক্ত সিদ্ধান্তে উপনীত হয় । 

14. ‘ জ্ঞানচক্ষু গল্পে জ্ঞানচক্ষু বলতে কী বোঝানো হয়েছে ? গল্পটি পড়ে তুমি কী শিক্ষা পেলে লেখো । 

Ans: ‘ জ্ঞানচক্ষু ‘ গল্পটির লেখিকা কথাশিল্পী আশাপূর্ণা দেবী । তিনি জ্ঞানচক্ষু কী ? জ্ঞানচক্ষু ’ বলতে মানুষের আত্ম – অনুভূতি এবং অন্তদৃষ্টি লাভের বিষয়টিকে তুলে ধরতে চেয়েছেন । ” জ্ঞানচক্ষু ‘ গল্পটির নায়ক তপন । ছোট্ট তপন তার সীমিত জীবনবৃত্তে কখনও কোনো লেখককে দেখেনি । তাই সত্যিকারের লেখক নতুন মেসোকে দেখে সাহিত্যিক সম্পর্কে তার সমস্ত ভুল ধারণার নিরসন হয় । মেসোকে হাতের কাছে পেয়ে অনুপ্রাণিত হয়ে সে নিজেই এবার একটা আস্ত গল্প লিখে ফেলে । 

এরপর মাসির প্রশ্রয়ে এবং লেখক মেসোর প্রভাবে সেই গল্পটি পত্রিকায় প্রকাশিত হয় । সে মনে মনে বেশ গর্বও অনুভব করে । কিন্তু ছাপা লেখাটি পড়তে গিয়ে টের পায় সংশোধন করতে গিয়ে লেখক – মেসো গল্পের আগাগোড়া বদলে দিয়েছেন । নির্বিচারে কলম চালানোয় নিজের নামে সঙ্গ পড়ে প্রাপ্ত শিক্ষা ছাপানো গল্পে সে আর নিজেকেই কোথাও খুঁজে পায় না । ফলে তপনের লেখকমন আহত হয় । সে দুঃখে , লজ্জায় ও অসম্মানে একলা হাতে গিয়ে কেঁদে ফেলে । এমন গভীর খারাপ লাগার দিনে দাঁড়িয়ে সে সংকল্প করে ; ভবিষ্যতে কারও মুখাপেক্ষী না হয়ে নিজের লেখা নিজেই ছাপতে দেবে । আসলে কাউকে অবলম্বন করে কিছু পেতে গেলে যে আত্মসম্মান খুইয়ে নিজের মনের আয়নায় নিজেকেই ছোটো হয়ে যেতে হয় এই শিক্ষাই তপন লাভ করে আর আমরাও তার সঙ্গে টের পাই স্বকীয়তা এবং আত্মমর্যাদাবোধের সঙ্গে আপস করে কখনই জীবনে কিছু লাভ করা যায় না । 

15. ” তপন আর পড়তে পারে না । বোবার মতো বসে থাকে – তপনের এরকম অবস্থার কারণ বর্ণনা করো ।

Ans: আশাপূর্ণা দেবীর ‘ জ্ঞানচক্ষু ‘ গল্পের কেন্দ্রীয় চরিত্র তপনের ইচ্ছে ছিল লেখক হওয়ার । একই সঙ্গে লেখকদের সম্বন্ধে তার ধারণা ছিল , তাঁরা বুঝি আকাশ থেকে পড়া অতিলৌকিক কোনো প্রতিভা । কিন্তু তার ছোটোমাসির বিয়ের পর নতুন মেসোকে দেখে তার সেই ভুল ভাঙে । তার নতুন মেসো অধ্যাপক , বই লেখেন । সেসব বই ছাপাও হয় অথচ প্রান্তিক মাধ্যমিক বাং মেসোর আচার – আচরণের সঙ্গে তার বাবা , ছোটোমামা বা মেজোকাকুর আচার – অচারণের কোনো তফাতই সে খুঁজে পায় না । নতুন মেসোকে দেখে অনুপ্রাণিত তপন একটি আস্ত গল্প লেখে , যেটি তার মাসির হাত ঘুরে মেসোর হাতে গিয়ে পড়ে । মাসির পীড়াপীড়িতে সামান্য কারেকশন করে সেই গল্প ‘ সন্ধ্যাতারা ‘ পত্রিকায় ছাপানোর আশ্বাস দেন নতুন মেসো । বাড়িতেও সে নিয়ে আনন্দের শেষ নেই । অনেকদিনের ইচ্ছে হয়তো এবার পূরণ হতে চলেছে — এই ভেবেই একটু সংশয়কে সঙ্গী করেই তপনের মনও উচ্ছ্বসিত হয়ে ওঠে । কিন্তু যথাসময়ে ‘ সন্ধ্যাতারা ‘ – য় ছাপা লেখাটি পড়তে গিয়ে তপন টের পায় কারেকশনের নামে লেখক – মেসো গল্পের আগাগোড়া বদলে দিয়েছেন । নির্বিচারে কলম চালানোয় নিজের নামে ছাপানো গল্পে সে আর নিজেকেই খুঁজে পায় না । তপনের লেখকমন আহত হয় । নিজের গল্প পড়তে বসে অন্যের লেখা লাইন পড়ার দুঃখযন্ত্রণা তাকে কুরে কুরে খায় । লজ্জা , অনুশোচনা আর আত্মসম্মানহীনতায় তার বাক্‌রোধ হয়ে আসে ।

জ্ঞানচক্ষু (গল্প) থেকে আরোও প্রশ্ন ও উত্তর দেখুন-PART-2 :

জ্ঞানচক্ষু গল্প থেকে আরও প্রশ্ন ও উত্তর-PART-3(CLICK HERE)

জ্ঞানচক্ষু গল্প থেকে আরও প্রশ্ন ও উত্তর-PART-4(CLICK HERE)

রচনাধর্মী প্রশ্নোত্তর | জ্ঞানচক্ষু (গল্প) আশাপূর্ণা দেবী – মাধ্যমিক বাংলা সাজেশন | Madhyamik Bengali Suggestion : 

1. নতুন মেসোর চরিত্রটি আলোচনা করো ।

Answer : কথাশিল্পী আশাপূর্ণা দেবী রচিত ‘ জ্ঞানচক্ষু ’ গল্পের মূল চরিত্র তপনের আত্মোপলব্ধির পিছনে যে – চরিত্রটির প্রত্যক্ষ প্রভাব রয়েছে , তিনি হলেন তপনের নতুন মেসো । এই মেসো পেশায় অধ্যাপক এবং লেখক । তাঁর লেখক পরিচয় তপনের মনের বহু ভুল ধারণা ভেঙে দেয় । অধ্যাপক ও লেখক হওয়া সত্ত্বেও মেসো ব্যক্তিটি বেশ মিশুকে , ফুর্তিবাজ । তিনি শ্যালক – শ্যালিকাদের সঙ্গে গল্প করেন , তর্ক করেন , কবজি ডুবিয়ে খাওয়াদাওয়া করেন , সিনেমায় মিশুকে যান ও বেড়াতেও যান । 

 শ্বশুরবাড়ির সদস্য হিসেবে তপনের প্রথম লেখা গল্পের তিনি প্রশংসা সহানুভূতিশীল করেন ও তা ছাপার দায়িত্ব নিয়ে নেন । শুধু যে তপনকে উৎসাহ দিতে ছোটোমেসো তার গল্পটা ছাপিয়ে দেন , নিজের প্রতিপত্তি এমনটা নয় । শ্বশুরবাড়িতে নিজের প্রতিপত্তি জাহির বাহিরে আগ্রহী করতেও তিনি এ কাজ করেন । তপনের গল্প যাতে প্রসিদ্ধি পায় , তাই সংশোধনের নামে গল্পের খোলনলচে বদলে দেন মেসো । তাঁর উদ্দেশ্য হয়তো মহৎ ছিল । কিন্তু তাঁর অন্যের আবেগ বুঝতে অক্ষম এই উদ্যোগ তপনের লেখকসত্তাকে আঘাত করে । একদিকে চারিত্রিক উদারতায় ও মহত্ত্বে আবার অন্যদিকে অসতর্কতায় , তপনের নতুন মেসো এক পরিপূর্ণ রক্তমাংসের চরিত্র হয়ে ওঠেন । যদিও একজন লেখক হয়ে অন্য লেখকের এই আত্মসম্মান ও অহংবোধকে উপলব্ধি করা তাঁর উচিত ছিল ।

2. তপনের ছোটোমাসির চরিত্রটি আলোচনা করো । 

অথবা , ‘ জ্ঞানচক্ষু ‘ গল্পে তপনের ছোটোমাসির স্বভাব ও ভাবনার যে – পরিচয় ফুটে উঠেছে , আলোচনা করো ।

Answer :  ‘ জ্ঞানচক্ষু ’ গল্পে আশাপূর্ণা দেবী সৃষ্ট চরিত্রগুলির মধ্যে ছোটো অথচ বেশ শক্তিশালী চরিত্র হল তপনের ছোটোমাসির চরিত্রটি । ছোটোমাসি বয়সে তপনের চেয়ে বছর আষ্টেকের বড়ো । প্রায় সমবয়সি ছোটোমাসি ছিল তপনের চিরকালের বন্ধু । মামার বাড়িতে এলে তপনের যাবতীয় কর্মকাণ্ডের সঙ্গী ছিল সে । তাই তপন প্রথমবার গল্প লিখে বন্ধুত্বপূর্ণ ছোটোমাসিকেই সকলের আগে দেখায় । সদ্যবিবাহিতা ছোটোমাসির স্বামী একজন অধ্যাপক । তিনি আবার বইও লেখেন । তাই বিয়ের পর থেকে ছোটোমাসির মধ্যে একটা মুরুব্বি মুরুব্বি ভাব এসেছে । তপনের লেখা গল্পটি পুরোটা না পড়েই স্বামী গর্বে গর্বিতা সে তার মতামত জানায় এবং লেখাটা নিয়ে যায় । তার স্বামীর কাছে । তার জোরাজুরিতেই তার স্বামীর তপনের গল্পটা ছাপানোর ব্যবস্থা করতে রাজি হয়ে যান । তাই সেই গল্প ‘ সন্ধ্যাতারা পত্রিকায় ছেপে বেরোলে মাসির মুখে আত্মপ্রসাদের আনন্দ দেখা যায় । প্রায় সমবয়সি হলেও তপন ছিল তার বিশেষ স্নেহের পাত্র । তাই তার লেখা গল্প ছাপানোর ব্যাপারে মাসি এত উদ্যোগ । নেয় । সে যখন মজা করে তপনের লেখাটা ‘ টুকলিফাই ’ কিনা জানতে চায় , তখনও সেই বক্তব্যের মধ্যে অভিযোগ বা সন্দেহের বদলে স্নেহেরই সুর বাজে ।

 

3. ‘ জ্ঞানচক্ষু ‘ গল্পের গৌণ চরিত্রগুলি গল্পে কী ভূমিকা পালন করেছে , তা আলোচনা করো ।

Answer : আশাপূর্ণা দেবী রচিত ‘ জ্ঞানচক্ষু ‘ গল্পে যেসব গৌণ চরিত্রের দেখা মেলে তারা হলেন তপনের ছোটোমামা , মেজোকাকু , মা এবং তার বাবা । এই চরিত্রগুলির মধ্যে একমাত্র ‘ ছোটোমামা ‘ চরিত্রটির মুখে কোনো সংলাপ দেখতে পাওয়া যায় না । বাকিদের ক্ষেত্রেও সংলাপ অতিসামান্য । তবে কমবেশি সবকটি চরিত্রই প্রাপ্তবয়স্ক হওয়া সত্ত্বেও তাদের মধ্যে বয়সজনিত পরিণতমনস্কতা লক্ষ করা যায় না । তপনের বয়সি কোনো ছেলে প্রথম গল্প লিখলে বা সেই গল্প ছাপা হলে যেভাবে তাকে উৎসাহ ও প্রশংসা দেওয়া উচিত , তা এই অভিভাবকস্থানীয় ব্যক্তিরা করেননি । উলটে ব্যঙ্গ ও রসিকতায় তাকে জড়োসড়ো ও আড়ষ্ট তুলেছেন । একমাত্র তপনের মাকেই ছেলের প্রতি কিছুটা সহানুভূতিশীল হতে দেখা যায় । তবে লেখিকা আগাগোড়া রসিকতার ঢঙে গল্পটি পরিবেশন করায় | গল্পের গৌণ চরিত্রগুলিও আবহের সঙ্গে বেশ মানানসই । আসলে বাঙালি মধ্যবিত্ত পরিবারে একটি কল্পনাপ্রবণ ও সৃষ্টিশীল বালকের প্রকৃত অসহায় অবস্থা ফুটিয়ে তুলতে দৈনন্দিনতার যে আটপৌরে ছবিটির প্রয়োজন | হয় , এই চরিত্রগুলির মাধ্যমে লেখিকা মুনশিয়ানার সঙ্গে সেই পরিবেশটাই স্পষ্ট করে তুলেছেন ।

4. ছোটোগল্প হিসেবে আশাপূর্ণা দেবী রচিত ‘ জ্ঞানচক্ষু ’ গল্পের সার্থকতা বিচার করো । 

Answer : শুধু আয়তনে ছোটো হলেই কোনো গল্প ছোটোগল্পের পর্যায়ে পড়ে না । ছোটোগল্পের কিছু নিজস্ব বৈশিষ্ট্য থাকে । সেই বৈশিষ্ট্যগুলির সাপেক্ষে ‘ জ্ঞানচক্ষু ‘ গল্পটিকে বিচার করলে বোঝা যাবে ছোটোগল্প হিসেবে সেটি কতটা সার্থক । 

 ছোটোগল্প শুরু হয় হঠাৎ করে । ‘ জ্ঞানচক্ষু ’ গল্পতেও এই বৈশিষ্ট্যটি লক্ষ করা যায় । ‘ কথাটা শুনে তপনের চোখ মার্বেল হয়ে গেল’— এই বাক্যটি দিয়ে আচমকাই গল্পটি শুরু হয় । হঠাৎ শুরু গল্প লেখাকে কেন্দ্র করে তপনের মোহ এবং সেই মোহভঙ্গের কাহিনিকে ঘিরেই এই গল্প । গল্পে অন্য কোনো উপকাহিনি গড়ে একটি মাত্র য় বিষয়কেন্দ্রিকতা ওঠেনি । তাই গল্পটি তার সংক্ষিপ্ত পরিধির মধ্যে একটি মাত্র বিষয়েই সীমাবদ্ধ । ‘ জ্ঞানচক্ষু ’ গল্পে তপন ছাড়াও যে চরিত্রগুলির ভূমিকা নজর কাড়ে , তাঁরা হলেন তপনের ছোটোমাসি এবং মেসো । বাকি কম চরিত্রের উপস্থিতি চরিত্রগুলি নেহাতই গৌণ । এক্ষেত্রেও ছোটোগল্পের বৈশিষ্ট্য অক্ষুণ্ণ রয়েছে । অতিরিক্ত চরিত্রের ভিড় নেই । ছোটোগল্প যেমন হঠাৎ করে শুরু হয় , তেমনই হঠাৎই শেষ হয় । গল্প শেষ হয়ে যাওয়ার পরেও পাঠকের মনে এক ধরনের অতৃপ্তি থেকে যায় । ‘ জ্ঞানচক্ষু ‘ গল্পটিও এর ব্যতিক্রম নয় । ছাপার অক্ষরে অসমাপ্তির রেশ নিজের নামের মতোই নিজের লেখাকেও দেখতে চেয়েছিল তপন । তার সেই স্বপ্নভঙ্গের যন্ত্রণা নিয়েই গল্পটি শেষ হয় । ‘ জ্ঞানচক্ষু ’ গল্পটির মধ্যে ছোটোগল্পের প্রতিটি বৈশিষ্ট্যই রয়েছে । সুতরাং , ছোটোগল্প হিসেবে এটি নিঃসন্দেহে সার্থক ।

5. নতুন মেসোকে দেখে জ্ঞানচক্ষু খুলে গেল তপনের— প্রশ্ন কোন্ ঘটনায় জ্ঞানচক্ষু খুলে গেল ? 

Answer : গল্প অনুসারে সত্যিই কি এই ঘটনায় তপনের জ্ঞানচক্ষু খুলেছিল ? 545 জ্ঞানচক্ষু উন্মোচনের উত্তর / গল্পকার আশাপূর্ণা দেবীর ‘ জ্ঞানচক্ষু ‘ গল্পের প্রধান চরিত্র তপন । তার শিশুমনে লেখক বা সাহিত্যিক সম্পর্কে স্পষ্ট কোনো ধারণা ছিল না । সে ভাবত লেখকেরা বুঝি কোনো ভিন গ্রহের জীব । ছোটোমাসির বিয়ে হওয়ার পর তপন জানতে পারে নতুন মেসো একজন লেখক এবং তাঁর অনেক বই ছাপা হয়েছে । জলজ্যান্ত একজন সত্যিকারের লেখককে চোখের সামনে দেখে সে বুঝতে পারে লেখকেরা ছোটোমামা কিংবা মেজোকাকুর মতোই নিছক সাধারণ মানুষ । এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতেই তপনের প্রাথমিক জ্ঞানচক্ষু খুলে  যায় । জ্ঞানচক্ষু উন্মোচনে ঘটনার প্রেক্ষিত 

 লেখক মেসোমশাইয়ের দৃষ্টান্তে অনুপ্রাণিত হয়ে তপন নিজেও একটা আস্ত গল্প লিখে ফেলে । এভাবে সহজেই একটা গল্প লিখে ফেলার রোমাঞে ও উত্তেজনায় তা সে বন্ধুমনোভাবাপন্ন ছোটোমাসিকে দেখায় । এরপর ছোটোমাসির প্ররোচনায় আর নতুন মেসোর প্রভাবে সেই গল্পটি ‘ সন্ধ্যাতারা ’ পত্রিকায় প্রকাশিত হয় । কিন্তু পত্রিকায় ছাপা গল্পটি পড়ে তপন টের পায় সংশোধনের নামে মেসো লেখাটির আগাগোড়া বদলে দিয়েছেন । এ গল্পে তপন কোথাও নেই । আর বাড়িতেও মুখে মুখে রটে যায় মেসোর দৌলতেই তার গল্প ছাপা হয়েছে । এ ঘটনা আত্মমর্যাদাবোধসম্পন্ন তপনের সংবেদনশীল লেখক মনে আঘাত করে । লজ্জায় অনুশোচনায় সে সিদ্ধান্ত নেয় ভবিষ্যতে কারও সুপারিশে নির্ভর না করে নিজের লেখা নিজেই ছাপতে দেবে । এক কিশোরের আত্মস্বরূপ আবিষ্কারের এ কাহিনির মধ্যেই আসলে লুকিয়ে আছে প্রকৃত জ্ঞানচক্ষু লাভের সার্থকতা । 

6. তার চেয়ে দুঃখের কিছু নেই , তার থেকে অপমানের ! – কার এ কথা মনে হয়েছে ? জীবনের কোন অভিজ্ঞতার মধ্য দিয়ে সে এই সিদ্ধান্তে পৌঁছেছে ? 

অথবা , ‘ তার চেয়ে দুঃখের কিছু নেই , তার থেকে অপমানের ।– উদ্দিষ্ট ব্যক্তির কাছে কোন্ ঘটনা কেন দুঃখের ও অপমানের ।

 উত্তর / কথাশিল্পী আশাপূর্ণা দেবীর ‘ জ্ঞানচক্ষু ’ গল্পের নায়ক তপনের এ কথা মনে হয়েছিল । শিশুমন কোমল , সামান্য আঘাত পেলেই তারা ভীষণভাবে মুষড়ে পড়ে । এক্ষেত্রেও তাই ঘটেছে । ছোট্ট তপনের লেখক সম্পর্কে সব কৌতূহলের শেষ হয় নতুন মেসোকে দেখে । অনুপ্রাণিত তপন একটি গল্প লেখে । 

সেই গল্প মাসির পীড়াপীড়িতে মেসোর হাত ধরে ‘ সন্ধ্যাতারা ‘ পত্রিকায় ছাপা হয় । স্বাভাবিক কারণে তপন উৎফুল্ল হয়ে ওঠে । নানান বিরূপতা সত্ত্বেও সে গর্ব অনুভব করে । কিন্তু তার গর্ব মাটিতে মিশে যায় গল্পটি পড়ার সময় । সে দেখে প্রকাশিত গঙ্গে তার লেখার লেশমাত্র নেই । কারণ গল্পটা সামান্য কারেকশনের নামে পুরোটাই বদলে গিয়েছিল । এতে তপনের লেখকসত্তা অপমানিত হয় । তার চোখে জল এসে যায় । নিজের গল্প পড়তে বসে অন্যের লেখা লাইন পড়ার দুঃখ ও যন্ত্রণা তাকে কুরেকুরে খায় । লজ্জা , অনুশোচনা এবং আত্মসম্মানহীনতার সংকোচ থেকে এভাবেই সে উপরিউক্ত সিদ্ধান্তে উপনীত হয় । 

7. ‘ জ্ঞানচক্ষু গল্পে জ্ঞানচক্ষু বলতে কী বোঝানো হয়েছে ? গল্পটি পড়ে তুমি কী শিক্ষা পেলে লেখো । 

Answer : ‘ জ্ঞানচক্ষু ‘ গল্পটির লেখিকা কথাশিল্পী আশাপূর্ণা দেবী । তিনি জ্ঞানচক্ষু কী ? জ্ঞানচক্ষু ’ বলতে মানুষের আত্ম – অনুভূতি এবং অন্তদৃষ্টি লাভের বিষয়টিকে তুলে ধরতে চেয়েছেন । ” জ্ঞানচক্ষু ‘ গল্পটির নায়ক তপন । ছোট্ট তপন তার সীমিত জীবনবৃত্তে কখনও কোনো লেখককে দেখেনি । তাই সত্যিকারের লেখক নতুন মেসোকে দেখে সাহিত্যিক সম্পর্কে তার সমস্ত ভুল ধারণার নিরসন হয় । মেসোকে হাতের কাছে পেয়ে অনুপ্রাণিত হয়ে সে নিজেই এবার একটা আস্ত গল্প লিখে ফেলে । 

এরপর মাসির প্রশ্রয়ে এবং লেখক মেসোর প্রভাবে সেই গল্পটি পত্রিকায় প্রকাশিত হয় । সে মনে মনে বেশ গর্বও অনুভব করে । কিন্তু ছাপা লেখাটি পড়তে গিয়ে টের পায় সংশোধন করতে গিয়ে লেখক – মেসো গল্পের আগাগোড়া বদলে দিয়েছেন । নির্বিচারে কলম চালানোয় নিজের নামে সঙ্গ পড়ে প্রাপ্ত শিক্ষা ছাপানো গল্পে সে আর নিজেকেই কোথাও খুঁজে পায় না । ফলে তপনের লেখকমন আহত হয় । সে দুঃখে , লজ্জায় ও অসম্মানে একলা হাতে গিয়ে কেঁদে ফেলে । এমন গভীর খারাপ লাগার দিনে দাঁড়িয়ে সে সংকল্প করে ; ভবিষ্যতে কারও মুখাপেক্ষী না হয়ে নিজের লেখা নিজেই ছাপতে দেবে । আসলে কাউকে অবলম্বন করে কিছু পেতে গেলে যে আত্মসম্মান খুইয়ে নিজের মনের আয়নায় নিজেকেই ছোটো হয়ে যেতে হয় এই শিক্ষাই তপন লাভ করে আর আমরাও তার সঙ্গে টের পাই স্বকীয়তা এবং আত্মমর্যাদাবোধের সঙ্গে আপস করে কখনই জীবনে কিছু লাভ করা যায় না । 

8. ” তপন আর পড়তে পারে না । বোবার মতো বসে থাকে – তপনের এরকম অবস্থার কারণ বর্ণনা করো ।

Answer : আশাপূর্ণা দেবীর ‘ জ্ঞানচক্ষু ‘ গল্পের কেন্দ্রীয় চরিত্র তপনের ইচ্ছে ছিল লেখক হওয়ার । একই সঙ্গে লেখকদের সম্বন্ধে তার ধারণা ছিল , তাঁরা বুঝি আকাশ থেকে পড়া অতিলৌকিক কোনো প্রতিভা । কিন্তু তার ছোটোমাসির বিয়ের পর নতুন মেসোকে দেখে তার সেই ভুল ভাঙে । তার নতুন মেসো অধ্যাপক , বই লেখেন । সেসব বই ছাপাও হয় অথচ প্রান্তিক মাধ্যমিক বাং মেসোর আচার – আচরণের সঙ্গে তার বাবা , ছোটোমামা বা মেজোকাকুর আচার – অচারণের কোনো তফাতই সে খুঁজে পায় না । নতুন মেসোকে দেখে অনুপ্রাণিত তপন একটি আস্ত গল্প লেখে , যেটি তার মাসির হাত ঘুরে মেসোর হাতে গিয়ে পড়ে । মাসির পীড়াপীড়িতে সামান্য কারেকশন করে সেই গল্প ‘ সন্ধ্যাতারা ‘ পত্রিকায় ছাপানোর আশ্বাস দেন নতুন মেসো । বাড়িতেও সে নিয়ে আনন্দের শেষ নেই । অনেকদিনের ইচ্ছে হয়তো এবার পূরণ হতে চলেছে — এই ভেবেই একটু সংশয়কে সঙ্গী করেই তপনের মনও উচ্ছ্বসিত হয়ে ওঠে । কিন্তু যথাসময়ে ‘ সন্ধ্যাতারা ‘ – য় ছাপা লেখাটি পড়তে গিয়ে তপন টের পায় কারেকশনের নামে লেখক – মেসো গল্পের আগাগোড়া বদলে দিয়েছেন । নির্বিচারে কলম চালানোয় নিজের নামে ছাপানো গল্পে সে আর নিজেকেই খুঁজে পায় না । তপনের লেখকমন আহত হয় । নিজের গল্প পড়তে বসে অন্যের লেখা লাইন পড়ার দুঃখযন্ত্রণা তাকে কুরে কুরে খায় । লজ্জা , অনুশোচনা আর আত্মসম্মানহীনতায় তার বাক্‌রোধ হয়ে আসে ।

9. কিন্তু নতুন মেসোকে দেখে জ্ঞানচক্ষু খুলে গেল তপনের । —নতুন মেসোর পরিচয় দাও । তাকে দেখে তপনের জ্ঞানচক্ষু খুলে যাওয়ার কারণ কী ? 

Answer : ‘ জ্ঞানচক্ষু ’ গল্পে তপনের নতুন মেসো তার ছোটোমাসির স্বামী । তিনি একজন লেখক , বই লেখেন । ইতিমধ্যে তাঁর অনেক বই ছাপাও হয়েছে । সর্বোপরি তিনি একজন প্রফেসর । 

 তপনের ছোটোমাসির বিয়ের পর নতুন মেসো যে লেখক , এ কথা শুনে তার কৌতূহলের অন্ত ছিল না । তার কাছে লেখক মানে ভিন গ্রহের কোনো মানুষ , যারা সাধারণের ধরাছোঁয়ার বাইরে । একজন লেখককে যে এত কাছ থেকে দেখা যায় কিংবা লেখকরা যে তপনের বাবা , ছোটোমামা বা মেজোকাকুদের মতো সাধারণ মানুষ হতে পারে , এ বিষয়েও তার যথেষ্ট সন্দেহ ছিল । কিন্তু তার সেই ধারণাগুলো ভেঙে গেল , যখন দেখল তার ছোটোমেসোও তার বাবা , ছোটোমামা বা মেজোকাকুর মতোই দাড়ি কামান , সিগারেট খান , খেতে বসে অর্ধেক খাবার তুলে দেন , সময়মতো স্নান করেন ও ঘুমোন । ছোটোমামাদের মতোই খবরের কাগজের কথায় তর্ক ও শেষ পর্যন্ত দেশ সম্পর্কে একরাশ হতাশা ঝেড়ে ফেলে সিনেমা দেখতে বা বেড়াতে চলে যান । এসব বিষয়ে অন্যদের সঙ্গে মেসোর মিল দেখে তপনের জ্ঞানচক্ষু উন্মোচিত হয় । সে বুঝতে পারে লেখকরা আকাশ থেকে পড়া জীব নয় , নিছকই মানুষ । 

10. ‘ রত্নের মূল্য জহুরির কাছেই ।’— ‘ রত্ন ’ ও ‘ জহুরি বলতে কী বোঝানো হয়েছে ? উদ্ধৃত উক্তিটির তাৎপর্য বুঝিয়ে দাও । 

Answer : আশাপূর্ণা দেবীর ‘ জ্ঞানচক্ষু ’ গল্পে উদ্ধৃতিটি পাই । ‘ রত্ন ’ বলতে মূল্যবান পাথর বোঝায় । ‘ জহুরি ‘ বলতে বোঝায় জহর অর্থাৎ রত্ন বিশেষজ্ঞকে । যে – কোনো পাথরকে রত্ন বলে চালালে তা জহুরির চোখ এড়ানো মুশকিল । ‘ জ্ঞানচক্ষু ‘ গল্পে ‘ রত্ন ‘ বলতে তপনের লেখা গল্পকে আর ‘ জহুরি ‘ বলতে তার ছোটোমাসির স্বামী তথা নতুন মেসোমশাইকে বোঝানো হয়েছে । 

 সীমিত জীবনবৃত্তের পরিধিতে তপনের গল্পের বইয়ের সঙ্গে পরিচিতি থাকলেও লেখকদের সম্পর্কে তার কিছুই অভিজ্ঞতা ছিল না । তপন তাদের গ্রহান্তরের কোনো জীব ভাবত । নতুন মাসির বিয়ের পর লেখক নতুন মেসোর সঙ্গে যখন পরিচিত হল তখনই তপনের লেখক সম্পর্কে সমস্ত ধারণা বদলে গেল । তার জ্ঞানচক্ষু খুলে গেল । তপন তার বাবা , কাকা ও মামাদের সঙ্গে নতুন মেসোর কোনো তফাত পেল না । এসব কিছু মিলিয়েই তপন ভাবে তারই বা লেখক হতে বাধা কোথায় ? তাই সে গল্প লিখতে গিয়ে আস্ত একটা গল্প লিখে ফেলায় উত্তেজনায় ছোটোমাসিকে দেখায় । ছোটোমাসি তা মেসোকে ঘুম থেকে তুলে দেখায় । ব্যাপারটায় তপনের মত না থাকলেও সে মনে মনে পুলকিত হয় , কেন – না জহুরির রত্ন চেনার মতো তার লেখার কদর একমাত্র নতুন মেসোই বুঝতে পারবে ।

11. ‘ আর সবাই তপনের গল্প শুনে হাসে । সকলের তপনের গল্প শুনে হাসার কারণ কী ? তার গল্পের যথাযথ মূল্যায়ন কে , কীভাবে করেছিলেন ? 

অথবা , ‘ বিকেলে চায়ের টেবিলে ওঠে কথাটা । চায়ের টেবিলে ওঠা কথাটি সম্পর্কে বাড়ির মানুষদের প্রতিক্রিয়া কী ছিল ? নতুন মেসোরই – বা এই ঘটনায় বক্তব্য কী ছিল ? হাসার কারণ ? 

Answer : ‘ জ্ঞানচক্ষু ’ গল্প থেকে গৃহীত অংশটিতে ‘ সবাই ’ বলতে তপনের বাড়ির লোকজনকে বোঝানো হয়েছে । বাড়ির বড়োদের চোখে সে ছিল নেহাতই ছোটো , তার গুরুত্ব কম । সে যে রাতারাতি একটা গল্প লিখে ফেলতে পারে , আর সে – গল্প যে ছাপানোর যোগ্য হতে পারে তা প্রথমে কেউই বিশ্বাস করতে পারেননি । তাই সকলে তপনের গল্প শুনে হেসেছিলেন । বাড়ির সকলে তার লেখা গল্পকে গুরুত্ব না দিলেও , তার লেখক নতুন মেসো কিন্তু এই গল্পের যথাযোগ্য মর্যাদা দিয়েছিলেন । তপনের মাসি তার গল্পটি মেসোকে দেখালে , তিনি তা একটি পত্রিকায় গল্পের মূল্যায়ন কে , কীভাবে করেছিলেন ? প্রকাশ করে দেওয়ার আশ্বাস দেন । বিকেলে চায়ের টেবিলে সকলে তপনের লেখা গল্প নিয়ে হাসাহাসি ত করলেও , লেখক – মেসো কিন্তু তপনের প্রশংসা করেন । তিনি বলেন যে , না তপনের লেখার হাত ও দেখার চোখ দুই – ই আছে । কারণ তার বয়সি ছেলেমেয়েরা সাধারণত রাজারানি , খুন , জখম , অ্যাকসিডেন্ট , নয়তো না – খেতে পেয়ে মরে যাওয়া প্রভৃতি বিষয়ে গল্প লেখে । কিন্তু তপন সেসব না – লিখে তার ভরতি হওয়ার দিনের অভিজ্ঞতা আর অনুভূতি নিয়ে গল্প লিখেছে । তপনের লেখক মেসোর মতে , এ খুব বিরল লক্ষণ । এইভাবে তপনের মেসো তার লেখা গল্পের মূল্যায়ন করেছিলেন । তবে তপনের গল্পে আনাড়ি হাতের ছাপ থাকায় , তিনি তা সংশোধন করে দিয়েছিলেন । 

12. পৃথিবীতে এমন অলৌকিক ঘটনাও ঘটে ? – কোন্ ঘটনাকে অলৌকিক বলা হয়েছে । একে অলৌকিক বলার কারণ কী ? 

Answer : প্রখ্যাত শিশুসাহিত্যিক আশাপূর্ণা দেবীর গল্প ‘ জ্ঞানচক্ষু ‘ – র কেন্দ্রীয় চরিত্র তপন । বিশাল পৃথিবীতে স্বল্প বাস্তবতাবোধ নিয়ে আর পাঁচটা শিশুর মতোই তারও পথ চলা । লেখকদের সম্পর্কে তার ধারণা সে – কথাই বলে । সেই তপন তার নতুন লেখক মেসোমশাইয়ের অলৌকিক ঘটনা সান্নিধ্যে এসে তার প্রতিভাকে বিকশিত করে কাঁচা হাতে লিখে ফেলে একটা আস্ত গল্প । সেই গল্প মেসোর হাতে গেলে মেসো তপনের ও বাড়ির লোকেদের মন রাখার জন্য তা সামান্য কারেকশন করে সন্ধ্যাতারা ‘ পত্রিকায় ছাপিয়ে দেওয়ার অঙ্গীকার করেন ও সেটি নিয়ে যান । এর বেশ কিছু দিন পর ‘ সন্ধ্যাতারা ‘ পত্রিকায় গল্পটি ছেপে বেরোয় । তপনের কাছে এই চমকপ্রদ ঘটনাটিই অলৌকিক বলে মনে হয়েছিল । → ‘ অলৌকিক ’ শব্দটির আভিধানিক অর্থ হল মানুষের পক্ষে যা সম্ভব নয় বা পৃথিবীতে সচরাচর যা ঘটে না । এক্ষেত্রে ছোট্ট তপনের লেখা গল্প কেন অলৌকিক পরিবেশ ও পরিস্থিতির সমন্বয়ে যেভাবে ছাপার অক্ষরে প্রকাশিত হয়েছিল সেটাই অলৌকিক । আসলে তপনের লেখক সম্পর্কে ধারণার অবসান , গল্প লেখা , তা মেসোর হাত ধরে ছাপার অক্ষরে প্রকাশিত হওয়া প্রভৃতি ঘটনাগুলি তার কাছে এতটাই অবিশ্বাস্য যে , তার মনে হয় সমস্ত ঘটনাটিই যেন অলৌকিক ।

13. ‘ এর প্রত্যেকটি লাইনই তো নতুন আনকোরা , তপনের অপরিচিত ’ – ‘ এর ’ বলতে কীসের কথা বলা হয়েছে । বিষয়টি পরিস্ফুট করো । 

Answer : উদ্ধৃত লাইনটি আশাপূর্ণা দেবীর ‘ জ্ঞানচক্ষু ‘ গল্পের অংশবিশেষ । ‘ এর ‘ – এর উদ্দেশ্য এখানে ‘ এর ’ বলতে গল্পের কেন্দ্রীয় চরিত্র তপনের প্রথম ছেপে বেরোনো গল্প ‘ প্রথম দিন ‘ – এর কথা বলা হয়েছে । গল্পের নায়ক তপন ছোটোবেলা থেকেই ভাবত লেখকরা বুঝি অন্য জগতের মানুষ । কিন্তু ছোটোমাসির সঙ্গে বিয়ে হওয়া নতুন মেসোকে দেখে তার সেই ভুল ভাঙে । তার নতুন মেসো বই লেখেন । সেসব বই ছাপাও হয় — অথচ মেসোর আচার – আচরণের সঙ্গে তার বাবা , ছোটোমামা বা মেজোকাকুর আচার – আচরণের কোনো তফাতই বিস্তারিত আলোচনা সে খুঁজে পায় না । তপন বোঝে , লেখকরা আকাশ থেকে পড়া কোনো জীব নয় । অনুপ্রাণিত তপন একটা আস্ত গল্প লেখে যেটা তার মাসির হাত ঘুরে মেসোর হাতে পড়ে । মাসির পীড়াপীড়িতে সামান্য কারেকশন করে সে গল্প ‘ সন্ধ্যাতারা ‘ – য় ছাপিয়ে দেন নতুন মেসো । বাড়িতে সে নিয়ে আনন্দের শেষ নেই । কিন্তু ছোট্ট তপন সকলের অনুরোধে গল্প পড়তে শুরু করতেই সুর কেটে যায় । তপন দেখে কারেকশনের নাম করে মেসো তার লেখাটা আগাগোড়াই বদলে দিয়েছেন । গল্পের প্রত্যেকটি লাইনই তার কাছে নতুন লাগে । তার শিশুমন ব্যথায় ভরে ওঠে । 

14. ‘ তপনের মনে হয় আজ যেন তার জীবনের সবচেয়ে দুঃখের দিন।— ‘ আজ ’ বলতে কোন দিনের কথা বলা হয়েছে । তপনের এমন মনে হওয়ার কারণ কী ?

Answer : ‘ আজ ‘ বলতে সেই দিনটির কথা বলা হয়েছে , যেদিন তপনের মাসি ও মেসো ‘ সন্ধ্যাতারা ‘ পত্রিকার একটি সংস্করণ নিয়ে তাদের বাড়িতে আসেন , যাতে তপনের প্রথম ‘ আজ ‘ –যে দিন গল্প প্রকাশিত হয় । 

 কারণ শিশুমন কোমল , সামান্য আঘাত পেলেই তারা ভীষণভাবে মুষড়ে পড়ে । এক্ষেত্রেও তাই ঘটেছে । ছোট্ট তপনের লেখক সম্পর্কে সব কৌতূহলের শেষ হয় নতুন মেসোকে দেখে । অনুপ্রাণিত তপন একটি গল্প লেখে । সেই গল্প মাসির পীড়াপীড়িতে মেসোর হাত ধরে ‘ সন্ধ্যাতারা ‘ পত্রিকায় ছাপা হয় । স্বাভাবিক কারণে তপন উৎফুল্ল হয়ে ওঠে । নানান বিরুপতা সত্ত্বেও সে গর্ব অনুভব করে । কিন্তু তার গর্ব মাটিতে মিশে যায় গল্পটি পড়ার সময় । সে দেখে প্রকাশিত গল্পে তার লেখার লেশমাত্র নেই । কারণ গল্পটা সামান্য কারেকশনের নামে পুরোটাই বদলে গিয়েছিল । এতে তপনের লেখকসত্তা অপমানিত হয় । তার চোখে জল এসে যায় । এই কারণে দিনটিকে তার সবচেয়ে দুঃখের মনে হয় । 

15. ‘ জ্ঞানচক্ষু গল্পে তপন চরিত্রটি বিশ্লেষণ করো ।

Answer : আশাপূর্ণা দেবীর ‘ জ্ঞানচক্ষু ’ গল্পের তপনের মধ্যেও সব শিশুর মতোই আশা – আকাঙ্ক্ষা , স্বপ্ন – স্বপ্নভঙ্গ , কল্পনা বাস্তব , আনন্দ – অভিমানের টানাপোড়েন দেখা যায় । তবে তার চরিত্রের বিশেষ কিছু বৈশিষ্ট্য তাকে আলাদা করে রাখে । তপন মনে মনে তার কল্পনার জগৎকে সাজিয়ে নিতে ভালোবাসে । তাই তার কল্পনার জগতে লেখকরা ছিলেন ভিন কল্পনাপ্রবণ গ্রহেরপ্রাণী । সাধারণ মানুষদের সঙ্গে তাদের বুঝি বা কোনো মিলই নেই । সাহিত্যপ্রেমী সাহিত্যের প্রতি তপনের ঝোঁক ছোটোবেলা থেকেই । সে অনেক গল্প শুনেছে ও পড়েছে । লেখকদের সম্পর্কেও তার কৌতূহল অসীম । ছোটোমেসোকে দেখে তার মনেও লেখক হওয়ার ইচ্ছে জাগে । উৎসাহী হয়ে বেশ কয়েকটা গল্পও লিখে বয়স অনুপাতে তপন একটু বেশিই সংবেদনশীল । সমবয়সি ছেলেমেয়েদের মতো রাজারানি , খুন – জখম ও অ্যাকসিডেন্ট নিয়ে না – লিখে , তার ব্যক্তিগত জীবনের অভিজ্ঞতা আর অনুভূতি সংবেদনশীল ও অন্তর্মুখী ২ ঠাট্টাতামাশা বা মাসি মেসোর উৎসাহদান কোনোটাতেই সে প্রকাশ্যে তার প্রতিক্রিয়া দেখায় না । এটা তার অন্তর্মুখী স্বভাবেরই পরিচয় । তাই কারেকশনের নামে মেসো তার গল্পটা আগাগোড়া বদলে দিলে তপন তার কষ্ট লুকোতে ছাদে গিয়ে কাঁদে । 

 তপনের আত্মমর্যাদা বোধ ছিল প্রবল । তার গল্প ছোটোমেসো কারেকশনের নাম করে আগাগোড়াই বদলে দিলে তপনের লেখকসত্তা আহত হয় । সে মনে মনে শপথ নেয় , ভবিষ্যতে লেখা ছাপাতে হালে সে নিজে গিয়ে লেখা দিয়ে আসবে পত্রিকা অফিসে । তাতে যদি তার মতো নতুন লেখকের লেখা ছাপা না হয় , তাতেও দুঃখ নেই ।

জ্ঞানচক্ষু (গল্প) থেকে আরোও প্রশ্ন ও উত্তর দেখুন-PART-2 :

জ্ঞানচক্ষু গল্প থেকে আরও প্রশ্ন ও উত্তর-PART-3(CLICK HERE)

জ্ঞানচক্ষু গল্প থেকে আরও প্রশ্ন ও উত্তর-PART-4(CLICK HERE)

 ©kamaleshforeducation.in(2023)

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

MADHYAMIK LIFE SCIENCE SUGGESTION-2025

 

 

মাধ্যমিক জীবন বিজ্ঞান –

Madhyamik Life Science Question Pattern 2025 Mark Details  

পশ্চিমবঙ্গ মাধ্যমিক জীবন বিজ্ঞান প্রশ্নের বিবরণ ২০২৫ :

Madhyamik Life Science Question Pattern 2025 Mark Details |

পশ্চিমবঙ্গ মাধ্যমিক জীবন বিজ্ঞান প্রশ্নের বিবরণ ২০২৫ :

The total marks for Madhyamik Class 10th Life Science 2025 Examination will 100, out of which 90 marks for the written exam and 10 marks for viva voce. The question pattern and Marks distribution of Madhyamik Life Science question paper are given below.

Topics MCQ Very Short Short & Explanatory Analytical Essay Type
Chapter-1 1×5 1×7 2×5 3×2 5×3=15 (±5)
Chapter-2 1×5 1×7 2×5 3×2 5×2=10 (±5)
Chapter-3 1×5 1×7 2×2 0 5

Madhyamik Life Science Suggestion 2025 

   মাধ্যমিক দশম শ্রেণী জীবন বিজ্ঞান সাজেশন ২০২৫

মাধ্যমিক জীবন বিজ্ঞান সাজেশন ২০২৫ :

  1. জীবজগতে নিয়ন্ত্রণ ও সমন্বয় (প্রথম অধ্যায়) Click Here
  2. জীবনের প্রবমানতা (দ্বিতীয় অধ্যায়Click Here
  3. বংশগতি এবং কয়েকটি সাধারণ জিনগত রোগ (তৃতীয় অধ্যায়) Click Here
  4. অভিব্যক্তি অভিযোজন (চতুর্থ অধ্যায়) Click Here
  5. পরিবেশ, তার সম্পদ এবং তাদের সংরক্ষণ (পঞ্চম অধ্যায়) Click Here

 

©kamaleshforeducation.in(2023)

 

error: Content is protected !!