মাধ্যমিক দশম শ্রেণীর ভূগোল-বায়ুর চাপবলয় ও বায়ু প্রবাহ-X

 

 

মাধ্যমিক দশম শ্রেণীর ভূগোল প্রশ্ন ও উত্তর  

বায়ুর চাপবলয় ও বায়ু প্রবাহ

(বায়ুমণ্ডল – দ্বিতীয় অধ্যায়)  

মাধ্যমিক ভূগোল প্রশ্ন ও উত্তর

MCQ | বায়ুর চাপবলয় ও বায়ু প্রবাহ

(বায়ুমণ্ডল – দ্বিতীয় অধ্যায়)  

  1. বায়ুর চাপ মাপার যন্ত্রের নাম –

(A) ব্যারোমিটার

(B) থার্মোমিটার

(C) অ্যানিমোমিটার

(D) হাইগ্রোমিটার

Ans: (A) ব্যারোমিটার

  1. ভূপৃষ্ঠে বায়ুচাপ বলয়ের সংখ্যা –

(A) ৫ টি

(B) ১ টি

(C) ৭ টি

(D) ৩ টি

Ans: (C) ৭ টি

  1. ৪০ ° দক্ষিণ অক্ষরেখাকে বলে – 

(A) গর্জনশীল চল্লিশা

(B) তীব্র চিৎকারকারী ষাট

(C) অশ্ব অক্ষাংশ

(D) ক্রোধোন্মত্ত পঞ্চাশ

Ans: (A) গর্জনশীল চল্লিশা

  1. কোন্‌টি নিয়তবায়ুর উদাহরণ ?

(A) মৌসুমি বায়ু 

(B) আয়ন বায়ু

(C) লু বায়ু

(D) জেট বায়ু

Ans: B) আয়ন বায়ু

  1. মেরুবৃত্তপ্রদেশীয় নিম্নচাপ বলয়ের অবস্থান কোন্ অক্ষরেখার মধ্যে ?

(A) ৬০ ° -৭o °

(B) ৮০ ° –৯০ °

(C) 0 ° -১০ °

(D) ২৫ ° – ৩৫ °

Ans: A) ৬০ ° -৭o °

  1. সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে প্রতি ১১০ মিটার উচ্চতা বৃদ্ধিতে বায়ুচাপ –

(A) ১ মিমি 

(B) ১ মিটার

(C) ১ সেমি

(D) ১ মিলিবার

Ans: (C) ১ সেমি

  1. স্থলবায়ু প্রবাহিত হয় –

(A) সকালে

(B) বিকালে

(C) দুপুরে

(D) রাত্রে

Ans: (D) রাত্রে

  1. সমুদ্রবায়ু প্রবাহিত হয় 

(A) দুপুরে

(B) সন্ধ্যায়

(C) রাত্রে

(D) ভোরে

Ans: (A) দুপুরে

  1. একপ্রকার সাময়িক বায়ুর উদাহরণ সাল বায়ু-

(A) ঘূর্ণবায়ু 

(B) আয়ন বায়ু 

(C) মিস্ট্রাল

(D) স্থল বায়ু

Ans: (D) স্থল বায়ু

  1. ভূপৃষ্ঠের স্বাভাবিক বায়ুচাপ হল –

(A) ৭৯০.০ এম বি

(B) ১০৩১.০ এম বি 

(C) ১০১৩.২ এম বি

(D) ১২৩১.০ এম বি

  1. পশ্চিমা বায়ু একপ্রকার-

(A) সাময়িক বায়ু

(B) নিয়ত বায়ু 

(C) স্থানীয় বায়ু

(D) আকস্মিক বায়ু

Ans: B) নিয়ত বায়ু

  1. উত্তর – পূর্ব আয়ন বায়ুর গতিবেগ ঘণ্টায় —

(A) ১৬ কিমি

(B) ১২ কিমি 

(C) ১৫ কিমি

(D) ১৭ কিমি

Ans: (A) ১৬ কিমি

  1. উত্তর গোলার্ধে পশ্চিমাবায়ু প্রবাহিত হয় কোন দিক থেকে ? 

(A) উত্তর – পশ্চিম

(B) দক্ষিণ – পশ্চিম

(C) উত্তর – পূর্ব

(D) দক্ষিণ – পূর্ব

Ans: (B) দক্ষিণ – পশ্চিম

  1. বাতাসের বেগ মাপার যন্ত্রের নাম –

(A) হাইগ্রোমিটার

(B) ব্যারোমিটার

(C) অ্যানিমোমিটার

(D) বাতপতাকা

Ans: (C) অ্যানিমোমিটার

  1. রাইন নদীর উপত্যকায় প্রবাহিত বায়ুর নাম –

(A) পম্পেরো

(B) বোয়া

(C) চিনুক

(D) ফন

Ans: (A) পম্পেরো

  1. যে নিয়তবায়ুর গতিপথে পৃথিবীর বড়ো বড়ো উষ্ণ মরুভূমির সৃষ্টি হয়েছে সেটি হল – 

(A) আয়ন বায়ু

(B) মেরু বায়ু 

(C) পশ্চিমা বায়ু

(D) মৌসুমি বায়ু

Ans: (A) আয়ন বায়ু

  1. অশ্ব অক্ষাংশ দেখা যায় –

(A) ০ ° -১০ ° উত্তর ও দক্ষিণ

(B) ২৫ ° –৩৫ ° উত্তর

(C) ৮০ ° – ৯০ ° দক্ষিণ

(D) ৬০ ° – ৭০ ° উত্তর অক্ষাংশে

Ans: (B) ২৫ ° –৩৫ ° উত্তর

  1. ঘূর্ণবাত একপ্রকার কি স্থানীয় বায়ুপ্রবাহ –

(A) আকস্মিক বায়ুপ্রবাহ

(B) নিয়ত বায়ুপ্রবাহ

(C) সাময়িক বায়ুপ্রবাহ

(D) স্থানীয় বায়ুপ্রবাহ

Ans: (A) আকস্মিক বায়ুপ্রবাহ

  1. উচ্চতা পরিবর্তনের সঙ্গে চাপের পরিবর্তন পরিমাপ করা যায়— 

(A) ফর্টিন ব্যারোমিটার

(B) অল্টিমিটার

(C) অ্যানিরয়েড ব্যারোমিটার

(D) ব্যারোগ্রাম

Ans: (B) অল্টিমিটার

  1. ITCZ সৃষ্টি হয়েছে –

(A) নিরক্ষীয় নিম্নচাপ বলয়ে

(B) ক্রান্তীয় উচ্চচাপ বলয়ে

(C) মেরুবৃত্তীয় নিম্নচাপ বলয়ে

(D) মেরু উচ্চচাপ বলয়ে

Ans: (A) নিরক্ষীয় নিম্নচাপ বলয়ে

  1. বায়ুচাপ মাপার একক হল – 

(A) ° F

(B) ° C

(C) মিলিবার

(D) মিলিমিটার 

Ans: (C) মিলিবার

  1. & Insolation হল –

(A) প্রত্যাগমনকারী সৌররশ্মি

(B) বিকিরিত কার্যকারী সৌররশ্মি

(C) ক্ষুদ্র সৌররশ্মি

(D) আগত সৌররশ্মি

Ans: (D) আগত সৌররশ্মি

  1. বায়ুর গতির দিক মাপা হয় কোন যন্ত্রের সাহায্যে ?

(A) অ্যানিমোমিটার

(B) হাইগ্রোমিটার

(C) ব্যারোমিটার

(D) বাতপতাকা

Ans: (D) বাতপতাকা

  1. বায়ুর চাপ নিম্নলিখিত কার সমান ?

(A) ১ ডাইন

(B) ১ মিমি

(C) ১ সেমি

(D) ১ গ্রাম

Ans: (A) ১ ডাইন

  1. বায়ুচাপের দ্রুত পরিবর্তন যে যন্ত্রে ধরা পড়ে তাকে বলে –

(A) অল্টিমিটার

(B) অ্যানিরয়েড ব্যারোমিটার

(C) ব্যারোগ্রাম

(D) সাইক্লোমিটার 

Ans: (C) ব্যারোগ্রাম

  1. ভারতে শীতকালে মৌসুমি বায়ু কোন্ দিক থেকে প্রবাহিত হয় ?

(A) উত্তর – পূর্ব

(B) দক্ষিণ – পূর্ব

(C) দক্ষিণ – পশ্চিম

(D) উত্তর – পশ্চিম

Ans: (A) উত্তর – পূর্ব

  1. ১০,০০০ মিটার উচ্চতায় বায়ুর চাপ হয় প্রায় –

(A) ৪৪ এম বি 

(B) ১০১৩.২ এম

(C) ৮৪৩.৯ এমবি

(D) ৬৯৭৫ এম বি

Ans: (C) ৮৪৩.৯ এমবি

  1. ডোলড্রামস কোন্ অঞ্চলে সৃষ্টি হয় ?

(A) নিরক্ষীয় অঞ্চলে

(B) কর্কটীয় অঞ্চলে

(C) সুমেরুবৃত্ত অঞ্চলে

(D) কুমেরু অঞ্চলে

Ans: (A) নিরক্ষীয় অঞ্চলে

  1. কোন্ স্থানটিতে উচ্চচাপ বলয় অবস্থান করছে ? 

(A) সুমেরুবৃত্ত 

(B) নিরক্ষীয়

(C) কুমেরুবৃত্ত

(D) সুমেরু

Ans: (C) কুমেরুবৃত্ত

  1. বায়ুচাপের ঢাল বাড়লে বায়ুর কিরূপ পরিবর্তন ঘটে ? 

(A) গতিবেগ কমে

(B) গতিবেগ বাড়ে

(C) গতিবেগ একই থাকে

(D) কোনোকিছুই ঘটে না

Ans: (B) গতিবেগ বাড়ে

  1. কোন্ সূত্রের প্রভাবে বায়ু উত্তর গোলার্ধে ডান দিকে এবং দক্ষিণ গোলার্ধে বাম দিকে বাঁকে –

(A) বিউফোর্ট

(B) টরিসেলি

(C) বাইস ব্যালট

(D) ফেরেল 

Ans: (D) ফেরেল

  1. কোন্ বলের প্রভাবে বায়ুর দিকবিক্ষেপ ঘটে ?

(A) ডবসন

(B) কোরিওলিস

(C) অভিকর্ষজ

(D) বিউফোর্ট

Ans: (B) কোরিওলিস

  1. কোন্ স্থানে কোরিওলিস বলের প্রভাব সর্বাধিক ?

(A) নিরক্ষীয়

(B) কর্কটীয়

(C) মেরুবৃত্ত

(D) মেরু

Ans: (D) মেরু

  1. কোন্ বায়ু প্রবাহিত অঞ্চলে ক্রান্তীয় মরুভূমি সৃষ্টি হয়েছে ?

(A) আয়ন বায়ু

(B) পশ্চিমা বায়ু

(C) প্রত্যায়ন বায়ু

(D) মেরু বায়ু 

Ans: (A) আয়ন বায়ু

  1. ক্রান্তীয় অঞ্চলে মহাদেশের কোন দিকে মরুভূমিগুলি অবস্থান করছে ?

(A) উত্তর

(B) পূর্ব

(C) পশ্চিম

(D) দক্ষিণ 

Ans: (C) পশ্চিম

  1. স্থলবায়ুর বেগ সর্বাধিক হয় কোন সময়ে ?

(A) ভোরবেলা

(B) বিকালবেলা

(C) দুপুরবেলা

(D) সন্ধ্যাবেলা

Ans: A) ভোরবেলা

  1. সমুদ্রবায়ু ও স্থলবায়ুর বৃহৎ সংস্করণ কোন্ বায়ু ?

(A) পশ্চিমা বায়ু

(B) আয়ন বায়ু

(C) মৌসুমি বায়ু

(D) মেরু বায়ু

Ans: (C) মৌসুমি বায়ু

  1. কোন্‌টি ক্যাটাবেটিক বায়ুর উদাহরণ ?

(A) সিরোক্কো

(B) খামসিন 

(C) মিস্ট্রাল

(D) ফন

Ans: (C) মিস্ট্রাল

  1. বায়ুচাপের তারতম্যে কোন্‌টির প্রভাব সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ ?

(A) উচ্চতা 

(B) পৃথিবীর আবর্তন

(C) জলীয় বাষ্প

(D) উষ্ণতা

Ans: (D) উষ্ণতা

  1. কোন্ বায়ুকে সাহসিক পশ্চিমাবায়ু বলা হয় –

(A) উত্তর – পূর্ব আয়ন বায়ু

(B) দক্ষিণ – পূর্ব আয়ন বায়ু

(C) দক্ষিণ – পশ্চিম পশ্চিমা বায়ু

(D) উত্তর – পশ্চিম পশ্চিমা বায়ু

Ans: (D) উত্তর – পশ্চিম পশ্চিমা বায়ু

মাধ্যমিক ভূগোল প্রশ্ন ও উত্তর

  বায়ুর চাপবলয় ও বায়ু প্রবাহ

(বায়ুমণ্ডল – দ্বিতীয় অধ্যায়)  

অতিসংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর 

 

  1. কোন্ যন্ত্রের সাহায্যে বায়ুচাপের পরিবর্তন মাপা যায় ? 

Ans: ব্যারোগ্রাম ।

  1. দীর্ঘকায় উচ্চচাপ অঞ্চলকে কী বলে ?

Ans: Trough .

  1. কোন্ বায়ুকে ‘ সমুদ্রবায়ু ও স্পলবায়ুর বৃহৎ সংস্করণ বলা ।

Ans: মৌসুমি বায়ু ।

  1. কর্কটীয় ও মকরীয় উচ্চচাপ বলয় থেকে মেরুবৃত্তপ্রদেশীয় নিম্নচাপ বলয়ের দিকে যে নিয়ত বায়ু প্রবাহিত হয় তাকে । কী বলে ?

Ans: পশ্চিমা বায়ু । 

  1. দিনের কোন সময়ে সমুদ্রবায়ু সর্বাধিক বেগে প্রবাহিত হয় ?

Ans: দুপুরবেলায় । 

  1. উত্তর আমেরিকায় প্রবাহিত একটি উষ্ণ ও শুষ্ক স্থানীয় বায়ুর নাম লেখো ।

Ans: চিনুক । 

  1. কোন্ মাসে ভারতে লু প্রবাহিত হয় ?

Ans: বৈশাখ – জ্যৈষ্ঠ ( মে – জুন ) । 

  1. জাপান ও চিনসাগরে সৃষ্ট বিধ্বংসী ঘূর্ণিঝড় – এর নাম লেখো ।

Ans: টাইফুন । 

  1. কোন্ স্থানীয় বায়ুকে ‘ স্নো – ইটার ’ বা ‘ তুষার ভক্ষক ‘ বলে ?

Ans: চিনুক ।

  1. ‘ ঘূর্ণিবাতের চক্ষু ‘ কোন ধরনের ঘূর্ণবাতে সৃষ্টি হয় ? 

Ans: ক্রান্তীয় ঘূর্ণিবাত ।

  1. কোন দুই মাসে বায়ুচাপের সর্বাধিক পার্থক্য পরিলক্ষিত হয় ।

Ans: জানুয়ারি ও জুলাই মাসে ।

  1. ক্লান্তীয় উচ্চচাপ বলয়ের অবস্থান উল্লেখ করো ।

Ans: উভয় গোলার্ধে ২৫ ° -৩৫ ° অক্ষাংশের মধ্যে ।

  1. পৃথিবীর আবর্তনের প্রভাবে প্রবাহিত বায়ুর ওপর যে শক্তি কাজ করে তাকে কী বলে ?

Ans: কোরিওলিস বল ।

  1. কার নামানুসারে ফেরেলের সুত্রের নামকরণ করা হয় ?

Ans: বিজ্ঞানী উইলিয়াম ফেরেল ।

  1. সমুদ্রপৃষ্ঠে গড় বায়ুচাপ কত ?

Ans: ১০১৩.২৫ মিলিবার । 

  1. দুটি ক্রান্তীয় মরুভূমির নাম লেখো ।

Ans: আফ্রিকার সাহারা ও উত্তর আমেরিকার সোনেরান । 

  1. দুটি ক্যাটাবেটিক বায়ুর উদাহরণ দাও ।

Ans: বোরা ও মিস্টাল ।

  1. সিরোক্কো বায়ু কোথায় প্রবাহিত হয় ?

Ans: সাহারা মরুভূমিতে ।

  1. সিরোক্কো মিশরে কী নামে পরিচিত ?

Ans: খামসিন ।

  1. উত্তর – পূর্ব ভারতে উষ্ণ গরম বাতাস কী নামে পরিচিত ?

Ans: লু ।

  1. পম্পাস তৃণভূমির উপর দিয়ে বাহিত শীতল বাতাসটির নাম কী ?

Ans: পম্পেরো ।

  1. বায়ুর দিক নির্ণয় কোন যন্ত্রে নির্ধারণ করা হয় ?

Ans: বাতপতাকা ।

  1. বায়ুচাপ কোন্ এককে মাপা হয় ?

Ans: মিলিবার ।

  1. কোন্ বায়ুর কারণে সুইটজারল্যান্ডকে জলবায়ুগত মরুদ্যান বলা হয় ?

Ans: ফন ।

  1. ক্রান্তীয় ঘূর্ণিঝড় ক্যারিবিয়ান সাগরে কী নামে পরিচিত ?

Ans: হ্যারিকেন ।

  1. টুইস্টার কোন্ বায়ুর অপর নাম ?

Ans: টর্নেডো ।

  1. কোন প্রকার ঘূর্ণবাতে চক্ষু সৃষ্টি হয় ?

Ans: ক্রান্তীয় ঘূর্ণবাত ।

  1. গ্রীষ্মকালে থর মরুভূমির উপর দিয়ে বাহিত গরম হাওয়ার নাম কী ?

Ans: লু । 

মাধ্যমিক ভূগোল প্রশ্ন ও উত্তর

  বায়ুর চাপবলয় ও বায়ু প্রবাহ

(বায়ুমণ্ডল – দ্বিতীয় অধ্যায়)  

সংক্ষিপ্ত উত্তরভিত্তিক প্রশ্নোত্তর   

  1. বায়ুচাপ ( Wind pressure ) কী ?

Ans: পৃথিবীর মাধ্যাকর্ষণে বায়ুমণ্ডলের গ্যাসীয় অণুগুলির অবিরাম সংঘর্ষে সমুদ্রপৃষ্ঠে প্রতি একক স্থানের ওপর যে বল প্রয়োগ করে তা হল বায়ুচাপ ।

  1. মিলিবার কী ?

Ans: মিলিবার হল বায়ুচাপ মাপার একক । এক মিলিবার এমন একটি শক্তি , যা প্রতি বর্গসেমিতে ১০০০ ডাইন চাপ দেয় । সমুদ্রপৃষ্ঠের গড় বায়ুচাপ হল ১০১৩.২৫ মিলিবার ।

  1. বায়ুচাপের ঢাল কাকে বলে ?

Ans: সমচাপ রেখার সাথে সমকোণে উচ্চচাপ থেকে নিম্নচাপের দিকে নির্দিষ্ট দূরত্বে বায়ুচাপের যে পার্থক্য ঘটে , তাকেই বায়ুচাপের ঢাল বলা হয় । এর অপর নাম হল বায়ুচাপের অনুভূমিক অবক্রম হার ( Horizontal Pressure Gradient ) 

  1. এটি মিলিবার / কিমি হারে প্রকাশ করা হয় । সর্মচাপ ( Isobar ) রেখা কী ?

Ans: কোনো নির্দিষ্ট সময়ে ভূপৃষ্ঠের সমচাপ যুক্ত স্থানগুলিকে মানচিত্রে যে রেখা দ্বারা যোগ করা হয় , তা হল সমচাপ রেখা ।

  1. নিরক্ষীয় শান্তবলয় বা ডোলড্রামস্ কী ?

Ans: নিরক্ষীয় অঞ্চলের উষ্ণ – আর্দ্র বায়ু হালকা বলে সর্বদা এই ঊর্ধ্বগামী ( বায়ুস্রোত ) । ভূপৃষ্ঠের সমান্তরালে এখানে কোনো বায়ুপ্রবাহ ঘটে না বলে শান্ত থাকে , যা জাহাজ চলাচলের অসুবিধা ঘটাত । তাই নাবিকগণ এর নাম দেন ‘ ডোলড্রামস ‘ । এটিকে ‘ নিরক্ষীয় অক্ষ’ও ( Equatorial trough ) বলা হয় ।

  1. বায়ুচাপ কক্ষ কাকে বলে ?

Ans: সমুদ্রের ওপর বায়ুচাপ বলয়গুলি যতটা স্পষ্ট , মহাদেশের ওপর ততটা নয় । মহাদেশের প্রাকৃতিক বৈচিত্র্য বেশি বলে বলয়গুলি ভেঙে ছোটো ছোটো কোশ আকারে অবস্থান করে । এগুলিকেই বায়ুচাপ কক্ষ বলা হয় । স্থলভাগের বিস্তার যেখানে বেশি কক্ষের সংখ্যাও সেখানে বেশি । 

  1. বায়ুপ্রবাহ ( Winds ) কাকে বলে ?

Ans: ভূপৃষ্ঠের উপর দিয়ে সমান্তরালভাবে উচ্চচাপ অঞ্চল থেকে নিম্নচাপ অঞ্চলের দিকে বায়ু চলাচলকে বায়ুপ্রবাহ বলে । টেওয়ার্থার মতে , ‘ বায়ু হল প্রাকৃতিক শক্তি যা ভূপৃষ্ঠের বায়ুচাপের সমতা রক্ষা করছে । 

  1. বায়ুপ্রবাহ ও বায়ুস্রোতের মধ্যে তফাৎ কী ?

Ans: ভূপৃষ্ঠের সঙ্গে সমান্তরালে বায়ুচলাচলকে বায়ুপ্রবাহ বলে বায়ু উল্লম্বভাবে অর্থাৎ উপর থেকে নীচে বা নীচ থেকে উপরে চলাচল করলে তাকে বলা হয় বায়ুস্রোত ।

  1. ফেরেল সূত্র কী ?

Ans: পৃথিবীর আবর্তনের ফলে সৃষ্ট কোরিওলিস বলের প্রভাবে বায়ু উচ্চচাপ থেকে নিম্নচাপের দিকে প্রবাহিত হওয়ার সময় উত্তর গোলার্ধে ডান দিকে এবং দক্ষিণ গোলার্ধে বামদিকে বেঁকে প্রবাহিত হয় । বিজ্ঞানী ফেরেল – এর নামানুসারে ইহা ফেরেলসূত্র নামে পরিচিত ।

  1. বাইস ব্যালট সূত্র কাকে বলে ?

Ans: ১৯৫৭ খ্রিস্টাব্দে ডাচ্ আবহবিদ্ বাইস ব্যালট , বায়ুচাপের তারতম্য ও বায়ুপ্রবাহের মধ্যে একটি সম্পর্ক নির্ধারণ করেন । তাঁর মতে উত্তর গোলার্ধে বায়ুপ্রবাহের দিকে পিছন করে দাঁড়ালে ডানদিকে উচ্চচাপ এবং বামদিকে নিম্নচাপ থাকে । দক্ষিণ গোলার্ধে – এর ঠিক বিপরীত অবস্থা হয় । একেই বলে বাইস ব্যালট সূত্র ।

  1. নিয়ত বায়ু ( Planetary wind ) কাকে বলে ?

Ans; স্থায়ী বায়ুচাপ বলয়গুলির ওপর ভিত্তি করে যে বায়ুপ্রবাহসমূহ সারাবছর ধরে নিয়মিতভাবে নির্দিষ্ট পথে , নির্দিষ্ট গতিতে ভূপৃষ্ঠের সমান্তরালে প্রবাহিত হয় , তাদেরকেই নিয়ত বায়ুপ্রবাহ বলে ।

  1. নিয়ত বায়ু ক – প্রকার ও কী কী ?

Ans: নিয়ত বায়ু হল তিন প্রকারের । যথা- ( i ) আয়ন বায়ু , ( ii ) পশ্চিমা বায়ু এবং ( iii ) মেরু বায়ু 

  1. আয়ন বায়ুর অপর নাম বাণিজ্য বায়ু কেন ?

Ans: আয়ন বায়ু একটি নির্দিষ্ট পথ বরাবর প্রবাহিত হয় । পালতোলা জাহাজের যুগে এই বায়ুর পথ ধরে বাণিজ্য হত বলে এর অপর নাম ‘ বাণিজ্য বায়ু । 

  1. ITCZ কী ? 

Ans: ইনটার ট্রপিক্যাল কনভার্জেন্স জোন ( Inter tropical convergence zone ) নিরক্ষীয় অঞ্চলে উত্তর – পূর্ব ও দক্ষিণ – পূর্ব আয়ন বায়ু পরস্পর মিলিত হয়ে ঊর্ধ্বমুখী হয় । তাই এই অঞ্চল হল ITCZ ।

  1. নিরক্ষীয় শাস্তবলয় বা ডোলড্রামস্ কাকে বলে ?  

Ans: নিরক্ষীয় অঞ্চলে সূর্যের লম্ব কিরণে বাতাস হালকা ও উন্ন হয়ে সারাবছর উপরের বায়ুস্তরে ঊর্ধ্বাগমন করে । এই বায়ুর কোনো পার্শ্বপ্রবাহ থাকে না তাই , ৫ ° -১০ ° উত্তর ও দক্ষিণ অক্ষরেখার অঞ্চল শাস্ত থাকে । একে বলে নিরক্ষীয় শান্তবলয় বা ডোলড্রামস্ ।

  1. গর্জনশীল চল্লিশা ( Roaring Forties ) বলতে কী বোঝ ?

Ans: দক্ষিণ গোলার্ধে স্থলভাগ অপেক্ষা সমুদ্রের বিস্তার বেশি হওয়ায় পশ্চিমা বায়ু বাধাহীনভাবে প্রবলবেগে গর্জন করে প্রবাহিত হয় । প্রবল বায়ুপ্রবাহের কারণেই ৪০ ° দক্ষিণ অক্ষরেখা ‘ গর্জনশীল চল্লিশা ‘ নামে পরিচিত । 

  1. পশ্চিমা বায়ু ও প্রত্যয়ন বায়ুর মধ্যে পার্থক্য লেখো । 

Ans: কর্কটীয় ও মকরীয় উচ্চচাপ বলয়দ্বয় থেকে নিরক্ষীয় নিম্নচাপ বলয়ের দিকে উভয় গোলার্ধে ভূপৃষ্ঠের সমান্তরালে যে নিয়ত বায়ু প্রবাহিত হয় তাকে পশ্চিমা বায়ু বলে । অপরপক্ষে , নিরক্ষীয় অঞ্চলের ঊর্ধ্বমুখী বায়ু পৃথিবীর আবর্তনজনিত কারণে বিক্ষিপ্ত হয়ে কর্কটক্রান্তি ও মকরক্রান্তি উচ্চচাপ বলয় বরাবর নেমে আসে । একেই প্রত্যয়ন বায়ু বলে ।

  1. সাময়িক বায়ুর শ্রেণিগুলির নাম লেখো । 

Ans: সাময়িক বায়ু হল তিন প্রকার । যথা— ( i ) সমুদ্র বায়ু ও স্থলবায়ু , ( ii ) মৌসুমি বায়ু এবং ( iii ) পার্বত্য ও উপত্যকা বায়ু ।

  1. স্থলবায়ুর থেকে সমুদ্র বায়ুর বেগ বেশি কেন ?

Ans: সমুদ্র বায়ু দিনের বেলা প্রবাহিত হয় । সূর্যের তাপে দিনের বেলা স্থলভাগের উষ্ণতা  বাড়ে । ফলে সমুদ্র ও স্থলভাগের মধ্যে বায়ুচাপের ঢাল বেশি হয় । তাই সমুদ্র বায়ুর গতিবেগও বাড়ে । রাত্রে স্থলভাগ ধীরে ধীরে শীতল হয় বলে সমুদ্র ও স্থলভাগের মধ্যে বায়ুচাপের ঢাল কম হয় । ফলে স্থল বায়ু ধীরে ধীরে প্রবাহিত হয় ।

  1. পার্বত্য বায়ু ও ক্যাটাবেটিক বায়ুর মূল পার্থক্য কী ?

Ans: পার্বত্য বায়ু পর্বতের উপরি অংশ থেকে দ্রুত তাপ বিকিরণে শীতল ও ভারী হয়ে পর্বতের ঢাল বরাবর নীচে নেমে আসে ও উপত্যকায় অবস্থান করে । অপর দিকে , ক্যাটাবেটিক বায়ু বিস্তীর্ণ অঞ্চলজুড়ে দীর্ঘ সময় ধরে প্রবাহিত হয় ।

  1. দুটি বিখ্যাত ক্যাটাবেটিক বায়ুর নাম লেখো ।

Ans: দুটি বিখ্যাত ক্যাটাবেটিক বায়ু হল বোরা ও মিস্টাল । 

  1. স্থানীয় বায়ুর ( Local wind ) সংজ্ঞা দাও ।

Ans: স্থানীয়ভাবে বায়ুচাপের তারতম্য ঘটলে যে বায়ুপ্রবাহ ঘটে তাকে স্থানীয় বায়ু বলে । এর প্রবাহ স্থানীয়ভাবেই হয় । যেমন — লু , বোরা , মিস্টাল ইত্যাদি ।

  1. জলবায়ুগত মরুদ্যান ( Climatic Oasis ) কাকে বলে ?

Ans: ইউরোপের আঙ্কস পর্বতের উত্তর ঢালে প্রবাহিত বায়ুপ্রবাহের ফলে সুইটজারল্যান্ডে শীতকালের আবহাওয়া মনোরম থাকে বলে , সুইটজারল্যান্ডকে জলবায়ুগত মরূদ্যান বলে ।  

মাধ্যমিক ভূগোল প্রশ্ন ও উত্তর

  বায়ুর চাপবলয় ও বায়ু প্রবাহ

(বায়ুমণ্ডল – দ্বিতীয় অধ্যায়) 

সংক্ষিপ্ত ব্যাখ্যাধর্মী প্রশ্নোত্তর  

  1. বায়ুচাপের বৈশিষ্ট্য লেখো । অথবা , বায়ুচাপের গুরুত্ব লেখো ।

Ans: বায়ুচাপের বৈশিষ্ট্যগুলি হল :

( i ) বায়ুচাপের তারতম্যের কারণেই বায়ুপ্রবাহ হয় ।

( ii ) বায়ুচাপের পরিবর্তনে আবহাওয়ার পরিবর্তন ঘটে ।

( iii ) গভীর নিম্নচাপ ও উচ্চচাপ দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার সৃষ্টি করে — ঝড় , বৃষ্টি , তুষারঝড় হয় ।

( iv ) আবহাওয়া মানচিত্রে বায়ুচাপের বণ্টন ও প্রকৃতি দেখে আবহাওয়ার পূর্বাভাস দেওয়া সম্ভব হয় । 

  1. উষ্ণতার সাথে বায়ুচাপের সম্পর্ক কী ? 

অথবা , ‘ উষ্ণতা বাড়লে বায়ুচাপ কমে এবং উষ্ণতা কমলে বায়ুচাপ বাড়ে ? —উদাহরণসহ ব্যাখ্যা করো ।

Ans: বায়ুর উষ্ণতার সঙ্গে বায়ুচাপের সম্পর্ক অত্যন্ত গভীর কিন্তু বিপরীতমুখী অর্থাৎ উষ্ণতা বাড়লে বায়ুর চাপ কমে ও উষ্ণতা  কমলে বায়ুর চাপ বাড়ে । কোনো স্থানে উষ্ণতা  বাড়লে বায়ু হালকা হয়ে উপরে উঠে । যায় , বায়ুর ঘনত্ব কমে , ফলে নিম্নচাপের সৃষ্টি হয় । সারাবছর ধরে অধিক উষ্ণতার জন্যই নিরক্ষীয় অঞ্চল বরাবর নিম্নচাপ বলয়ের সৃষ্টি হয়েছে । অধিক উষ্ণতার কারণেই গ্রীষ্মকালে ভারতের উত্তর পশ্চিমে নিম্নচাপ কেন্দ্রের সৃষ্টি হয় । আবার কোনো স্থানে উষ্ণতা কমলে বায়ুর ঘনত্ব বাড়ে , বায়ু শীতল ও ভারী হয় এবং প্রাকৃতিক কারণেই শীতল ও ভারী বায়ু উচ্চচাপ যুক্ত হয় । সারাবছর উষ্ণতা অত্যন্ত কম থাকে বলেই কোরিওলিস বল সর্বাধিক হওয়া সত্ত্বেও দুই মেরু অঞ্চলে উচ্চচাপ বলয়ের সৃষ্টি হয়েছে । উষ্ণতা  কম থাকে বলেই শীতকালে আমাদের এখানে বায়ুরচাপ বেশি হয় ।

  1. সমচাপ রেখার বৈশিষ্ট্যগুলি লেখো ।

Ans: সমচাপ রেখার বৈশিষ্ট্যগুলি হল –

( i ) পৃথিবীপৃষ্ঠের বিভিন্ন স্থানে বায়ুচাপের বিভিন্নতার জন্য আলাদা আলাদা সমচাপ রেখা আঁকা হয়ে থাকে ।

( ii ) সমচাপ রেখাগুলি সাধারণত বিভিন্ন অক্ষরেখার সঙ্গে সমান্তরালভাবে পূর্ব – পশ্চিমে অবস্থান করে ।

( iii ) সমচাপ রেখাগুলি নিজেদের থেকে দূরে দূরে অবস্থান করলে আবহাওয়া শান্ত থাকে এবং কাছাকাছি অবস্থান করলে বায়ুপ্রবাহের গতি প্রবল হয় ।

( iv ) সমচাপ রেখাগুলি নিজেদের কাছাকাছি চক্রাকারে অবস্থান করলে ঝড়বৃষ্টির সম্ভাবনা থাকে ।

( v ) সমচাপ রেখা চক্রাকার হলে তাকে কোশ ( Air pressure cell ) বলে ।

( vi ) নিম্নচাপযুক্ত অঞ্চলকে বলে Trough এবং উচ্চচাপযুক্ত অঞ্চলকে বলে Ridge 

  1. বায়ুর চাপের ঢাল ( Pressure gradient ) বলতে কী বোঝ ? 

Ans: সমচাপ রেখার সাথে সমকোণে উচ্চচাপ থেকে নিম্নচাপের দিকে প্রতি একক দূরত্বে বায়ুচাপের যে পার্থক্য হয় তা হল বায়ুচাপের ঢাল বা চাপ ঢাল । বায়ুচাপের ঢাল নির্ভর করে দুটি স্থানের দূরত্ব এবং ওই দুটি স্থানের বায়ুচাপের পার্থক্যের ওপর । বায়ুচাপের ঢাল বেশি হলে বায়ুর গতিবেগ বাড়ে এবং কম হলে বায়ুর গতিবেগ কমে ।

  1. পৃথিবীর প্রধান প্রধান বায়ুচাপ বলয় ক – টি ও কী কী ?

Ans: উষ্ণতা  , বায়ুতে জলীয় বাষ্পের পরিমাণ , পৃথিবীর আবর্তন প্রভৃতির তারতম্যজনিত কারণে সাতটি ( ৭ টি ) স্থায়ী বায়ুচাপ বলয়ের উৎপত্তি ঘটেছে ।

এগুলি হল-

( i ) নিরক্ষীয় নিম্নচাপ বলয় ,

( ii ) কটীয় উচ্চচাপ বলয় ,

( iii ) মকরীয় উচ্চচাপ বলয় ,

( iv ) সুমেরুবৃত্ত প্রদেশীয় নিম্নচাপ বলয় ,

( v ) কৃমেরুবৃত্ত প্রদেশীয় নিম্নচাপ বলয় ,

( vi ) সুমেরু উচ্চচাপ বলয় ,

( vii ) কুমেরু উচ্চচাপ বলয় । 

  1. নিরক্ষীয় অঞ্চলে নিম্নচাপ বলয় সৃষ্টির কারণগুলি কী কী ?

Ans: নিরক্ষীয় অঞ্চলে নিম্নচাপ বলয় সৃষ্টির কারণগুলি হল— 

( i ) সারাবছর লম্ব সূর্যরশ্মির কারণে গড় উষ্ণতা  সর্বদা বেশি ।

( ii ) স্থলভাগ অপেক্ষা জলভাগের বিস্তার বেশি এবং উষ্ণতা  বেশি বলে আর্দ্রতাও সারাবছর খুব বেশি ।

( iii ) পৃথিবীর আবর্তন বেগ বেশি বলে ঊর্ধ্বগামী উদ্বু – আর্দ্র হালকা বায়ু বিক্ষিপ্ত হয় ।

  1. সুমেরুবৃত্ত ও কুমেরুবৃত্ত প্রদেশে নিম্নচাপ বলয় সৃষ্টি হয়েছে কেন ?

Ans: সুমেরুবৃত্ত ও কুমেরুবৃত্ত প্রদেশে নিম্নচাপ বলয় সৃষ্টি হওয়ার কারণগুলি হল

( i ) ক্রান্তীয় অঞ্চল অপেক্ষা এখানে কোরিওলিস বল বেশি বলে বায়ুর গতিবিক্ষেপ ঘটে ।

( ii ) মেরু অঞ্চল থেকে আগত শীতল বায়ুর সঙ্গে ক্রান্তীয় অঞ্চল থেকে আগত উদ্বু – আর্দ্র বায়ুর সংঘর্ষে বায়ু ঊর্ধ্বগামী হয় ।     

( iii ) উষ্ণ সমুদ্রস্রোত এই অঞ্চলে প্রচুর তাপ বয়ে নিয়ে আসে , যা এই অঞ্চলের উষ্ণতা  বাড়ায় ।

  1. কর্কটীয় ও মকরীয় অঞ্চল বরাবর উচ্চচাপ বলয় সৃষ্টির কারণগুলি লেখো ।

Ans: কর্কটীয় ও মকরীয় অঞ্চল বরাবর উচ্চচাপ বলয় সৃষ্টির কারণগুলি হল—

( i ) নিরক্ষীয় অঞ্চলের উর্ধ্বমুখী বায়ু পৃথিবীর আবর্তনের প্রভাবে উভয় গোলার্ধ বিক্ষিপ্ত হয়ে কর্কটীয় ও মকরীয় অঞ্চল বরাবর বায়ু স্রোতরূপে নেমে আসে । পলে বায়ুর পরিমাণ এখানে বাড়ে ।

( ii ) মেরুবৃত্ত প্রদেশের বায়ু কোরিওলিস বলের প্রভাবে বিক্ষিপ্ত হয়ে এখানে এসে পৌঁছোয় । উল্লিখিত কারণে কর্কটীয় ও মকরীয় অঞ্চল বরাবর বায়ুর পরিমাণ বাড়ে বলেই এখানে উচ্চচাপ বলয় সৃষ্টি হয়েছে ।

  1. ‘ দুই মেরুতে কোরিওলিস বল বেশি অথচ উচ্চচাপ বলয় সৃষ্টি হয়েছে । ‘ কারণ ব্যাখ্যা করো ।

Ans: দুই মেরুতে কোরিওলিস বল সর্বাধিক । তাই এখানকার বায়ু বিক্ষিপ্ত হওয়ারই কথা । কিন্তু দুই মেরুতে উষ্ণতা সারাবছর খুবই | কম হওয়ায় এখানকার বায়ু শীতল , ভারী , শুষ্ক ও আধক ঘনতৃবুর । ফলে কোরিওলিস বল দুই মেরু অঞ্চলের বায়ুকে বিক্ষিপ্ত করছে । পারে না । অত্যধিক শীতল অবস্থা এখানে উচ্চচাপ সৃষ্টির মূল কারণ । তাই দুই মেরুতে কোরিওলিস বল অধিক হলেও উচ্চচাপ বলয়ের সৃষ্টি হয়েছে ।

  1. কর্কটীয় উচ্চচাপ বলয়কে অশ্ব অক্ষাংশ বলার কারণ কী ? বা , অশ্ব অক্ষাংশ কাকে বলে ?

Ans: গোলার্ধে কর্কটক্রান্তি রেখার নিকটবর্তী ২৫ ° –৩৫ ° উত্তর অক্ষাংশের মধ্যবর্তী কর্কটীয় উচ্চচাপ বলয়ের বায়ু নিম্নমুখী হওয়ায় এর কোনো পার্শ্বপ্রবাহ থাকে না । এই জন্য এই অঞ্চলকে ককটীয় শাস্তবলয় বলে । প্রাচীন কালে পালতোলা জাহাজগুলি কর্কটীয় শাস্তবলয়ে এলে গতিহীন হয়ে পড়ত । শোনা যায় , মধ্যপ্রাচ্য ও ইউরোপ থেকে উত্তর আমেরিকা ও পশ্চিম ভারতীয় দ্বীপপুঞ্জে ঘোড়াভর্তি জাহাজগুলি যাওয়ার সময় কর্কটীয় শাস্ত বলয় অতিকহ । করতে দীর্ঘ সময় লেগে যেত । তাই পানীয় জলের ব্যয়সংকোচের কারণে ঘোড়াগুলিকে সমুদ্রে ফেলে দেওয়া হত । এই ঘটনা থেকেই কর্কটীয় শান্তবলয়কে অশ্ব অক্ষাংশ আখ্যা দেওয়া হয় ।

  1. বায়ুচাপ বলয়গুলি সীমানা পরিবর্তন করে কেন ?

Ans: পৃথিবীর বায়ুচাপের তারতম্যের ক্ষেত্রে উষ্ণতা র প্রভাব সর্বাধিক । পৃথিবীর উষ্ণতার প্রধান উৎস হল সূর্য । সূর্যের উত্তরায়ণ ও দক্ষিণায়নের সঙ্গে সঙ্গে বিভিন্ন অক্ষাংশে সূর্যরশ্মির পতনকোদের তারতম্য হয় বলে উষ্ণতা র তারতম্য ঘটে । তাই চাপবলয়গুলি সূর্যের উত্তরায়ণ ও দক্ষিণায়নের সঙ্গে সঙ্গে সরতে থাকে ।

  1. বায়ুচাপ বলয়গুলির সীমানা পরিবর্তন জলবায়ুর ওপর কীরূপ প্রভাব ফেলে ? 

Ans: বায়ুচাপ বলয়গুলির সীমানা পরিবর্তনের ফলে পৃথিবীর বিভিন্ন অংশে বায়ুপ্রবাহ , বৃষ্টিপাত ও জলবায়ুর পরিবর্তন ঘটে । আবহবিদদের মতে গ্রীষ্মকালে নিরক্ষীয় নিম্নচাপ বলা স্থান পরিবর্তন করে ভারতের মাঝবরাবর মৌসুমি অক্ষরূপে ( Monsoon Trough ) অবস্থান করে বলেই মৌসুমি বায়ু ভারতে প্রবেশ করে । কর্কটীয় ও মকরীয় চাপবলয়ের সীমানা পরিবর্তনের জন্য ভূমধ্যসাগরীয় জলবায়ু অঞ্চলে শীতকালে পশ্চিমাবায়ু প্রবেশ । করে বৃষ্টিপাত ঘটায় । তাই এখানে গ্রীষ্মকাল শুষ্ক ও শীতকাল আর্দ্র হয় ।

  1. দক্ষিণের তুলনায় উত্তর গোলার্ধে বায়ুচাপ কক্ষের সংখ্যা বেশি হয় কেন ?

Ans: বায়ুর চাপ কক্ষের অবস্থান ও সংখ্যা নির্ভর করে । মহাদেশ ও মহাসাগরের অবস্থান ও বিস্তৃতির ওপর । দক্ষিণ গোলার্ধে মহাদেশ অপেক্ষা মহাসমুদ্রের বিস্তার বেশি হওয়ায় বায়ুচাপ বলয়গুলির বিস্তৃতি বেশি । কিন্তু উত্তর গোলার্ধে সমুদ্র অপেক্ষ মহাদেশের বিস্তার বেশি হওয়ায় চাপবলয়গুলি অধিকাংশ ক্ষেত্রে কক্ষের আকারে অবস্থান করে । তাই দক্ষিণ গোলার্ধের তুলনায় উত্তর গোলার্ধে বায়ুচাপ কক্ষের সংখ্যা বেশি ।

  1. ক্রান্তীয় অঞ্চলে মহাদেশের পশ্চিমে মরুভূমি সৃষ্টির কারণ কী ?

Ans: উভয় গোলার্ধের ক্রান্তীয়মণ্ডলে

( i ) মহাদেশের পশ্চিম দিক থেকে আয়ন বায়ু সমুদ্রের দিকে বয়ে যায় , ফলে বায়ুতে জলীয় বাষ্প থাকে না ।

( ii ) এই বায়ু যতই নিরক্ষীয় অঞ্চলের দিকে বয়ে যায় উষ্ণতা  বাড়তে থাকে বলে জলীয় বাষ্প ধারণ ক্ষমতা বাড়তে থাকে ।

( iii ) ক্রান্তীয় মণ্ডলের মরুভূমি অঞ্চলের ওপর উপক্রান্তীয় উচ্চচাপ বলয় অবস্থানের কারণে শুষ্ক বায়ুস্রোত উপর থেকে নীচে নেমে আসে । উল্লিখিত কারণগুলির প্রভাবে ক্রান্তীয়মণ্ডলে মহাদেশের পশ্চিমে দীর্ঘকাল বৃষ্টি না – হওয়ার কারণেই অঞ্চলগুলি মরুভূমিতে ( সাহারা , কালাহারি , সোনেরান , আটাকামা , অস্ট্রেলিয়া ) পরিণত হয়েছে ।

  1. উত্তরের থেকে দক্ষিণ গোলার্ধে আয়ন বায়ু ও পশ্চিমা বায়ুর বেগ বেশি হয় কেন ?

Ans: উত্তর গোলার্ধে সমুদ্র অপেক্ষা স্থলভাগের বিস্তার বেশি হওয়ায় উত্তর – পূর্ব আয়ন বায়ু ঘর্ষণজনিত বাধার কারণে কিছুটা ধীরে ( ১৬ কিমি / ঘণ্টা ) প্রবাহিত হয় । কিন্তু দক্ষিণ গোলার্ধে স্থলভাগের থেকে জলভাগের বিস্তার বেশি বলে দক্ষিণ – পূর্ব আয়ন বায়ু কিছুটা অধিক বেগে ( ২২ কিমি / ঘণ্টা ) প্রবাহিত হয় । দিকের সাথে সমকোণে কাজ করে ,

( ii ) এর প্রভাবে বায়ুর বেগের কোনো হেরফের হয় না ,

( iii ) বায়ুর বেগ যত বাড়ে , এই বলের প্রভাবে দিক্‌বিক্ষেপ তত বাড়ে । মনে রাখবে প্রবহমান ( বায়ু , সমুদ্রস্রোত ইত্যাদি ) বস্তুর ওপরই কেবল কোরিওলিস বল কাজ করে ।

  1. সাহসিক পশ্চিমা বায়ু বলতে কী বোঝ ?

Ans: উত্তর গোলার্ধে দক্ষিণপশ্চিম পশ্চিমা বায়ু প্রবাহিত অঞ্চলে মহাসাগরের তুলনায় মহাদেশের বিস্তার খুব বেশি হওয়ায় বায়ুর বেগ খুব কম । কিন্তু দক্ষিণ গোলার্ধে উত্তর – পশ্চিম পশ্চিমা D , বায়ু প্রবাহিত অঞ্চলে মহাদেশের তুলনায় মহাসাগরের বিস্তার খুব বেশি হওয়ায় পশ্চিমা বায়ু অতি প্রবল বেগে গর্জন করে প্রবাহিত হয় । তাই দক্ষিণ গোলার্ধে পশ্চিমা বায়ুকে সাহসিক পশ্চিমা বায়ু বলা হয় ।

  1. সমুদ্র বায়ু ( Sea breeze ) বলতে কী বোঝ ?

Ans: উপকূল অঞ্চলে দিনের বেলা সমুদ্র থেকে স্থলভাগের যে মৃদুমন্দ বাতাস বয় তা হল সমুদ্র বায়ু । সমুদ্র বায়ু উৎপত্তি : দিনের বেলা সূর্যের উত্তাপে প্রকৃতির নিয়মে সমুদ্র অপেক্ষা স্থলভাগ বেশি উত্তপ্ত হয় । ফলে স্থলভাগে সৃষ্ট হয় নিম্নচাপ এবং সমুদ্রে উচ্চচাপ । এইরূপ অবস্থায় চাপের সমতা ল রক্ষার জন্য বায়ু সমুদ্র থেকে স্থলভাগের দিকে বয়ে যায় ।

 বৈশিষ্ট্য : ( ১ ) মোটামুটি সকাল ১০ টার পর থেকে বিকাল পর্যন্ত এই বায়ু বয় ।

( ২ ) দুপুরে বায়ুচাপের ঢাল সর্বাধিক হয় বলে সমুদ্র বায়ুর বেগ দুপুরে সবচেয়ে বেশি ।

  1. স্থলবায়ু ( Land Breeze ) বলতে কী বোঝ ?

Ans: উপকূল অঞ্চলে রাতের বেলা স্থলভাগ থেকে সমুদ্রের দিকে যে মৃদুমন্দ বাতাস বয় তা হল স্থলবায়ু ।

  • উৎপত্তি ; সূর্যাস্তের পর পৃথিবীপৃষ্ঠ তাপ বিকিরণ করে শীতল হয় । প্রকৃতির নিয়মে সমুদ্র অপেক্ষা স্থলভাগ দ্রুত তাপ বিকিরণ করে । ফলে সন্ধ্যার পর এমন এক সময় আসে যখন স্থলভাগ অপেক্ষা সমুদ্র অধিক উষ্ণ হয় । এরূপ অবস্থায় স্থলভাগে বিরাজ করে উচ্চচাপ এবং সমুদ্রে নিম্নচাপ , ফলে স্থলভাগ থেকে বায়ু সমুদ্রের দিকে বয়ে যায় ।
  • বৈশিষ্ট্য :
  • ( ১ ) সন্ধ্যার কিছু পর থেকে পরদিন সূর্যোদয়ের আগে পর্যন্ত রাত্রে এই বায়ু প্রবাহিত হয় ।
  • ( ২ ) ভোরবেলা সমুদ্র ও স্থলভাগের মধ্যে বায়ুচাপ ঢালের পার্থক্য সর্বাধিক বলে স্থলবায়ুর বেগ ভোরবেলা সবচেয়ে বেশি । ( ৩ ) স্থলভাগ থেকে প্রবাহিত এই মৃদু বাতাস শুষ্ক প্রকৃতির । 
  1. “ মৌসুমি বায়ু হল সমুদ্র বায়ু ও স্থলবায়ুর বৃহৎ সংস্করণ ‘ কারণ ব্যাখ্যা করো ।

Ans: মৌসুমি বায়ুর উৎপত্তি , গতিপ্রকৃতি ও বৈশিষ্ট্য সমুদ্র বায়ু ও স্থলবায়ুর মতোই । কিন্তু ইহার ব্যাপ্তি ও প্রবাহকাল স্থলবায়ু ও সমুদ্র বায়ু অপেক্ষা অধিক । গ্রীষ্মকালে প্রবল উষ্ণতায় স্থলভাগে যে গভীর নিম্নচাপের সৃষ্টি হয় , তার প্রভাবেই উচ্চচাপযুক্ত সমুদ্র থেকে জলীয় বাষ্পপূর্ণ বায়ু স্থলভাগে প্রবেশ করে । একেই মৌসুমি বায়ুর আগমন বা গ্রীষ্ম মৌসুমি বলে । আবার শীতকালে সূর্যের আপাত গতির কারণে সমুদ্রে উষ্ণতা  বেশি এবং স্থলভাগে উষ্ণতা কম হওয়ায় সমুদ্রে নিম্নচাপ ও স্থলভাগে উচ্চচাপ বিরাজ করে । এই সময় স্থলভাগ থেকে বায়ু সমুদ্রের দিকে বয়ে যায় । একেই মৌসুমি বায়ুর প্রত্যাগমন বা শীত মৌসুমি বলে । যেহেতু মৌসুমি বায়ুর উৎপত্তি ও গতিপ্রকৃতি সমুদ্র বায়ু ও স্থল বায়ুর মতোই তাই ট্রেওয়ার্থী , ফন্ প্রভৃতি আবহবিদগণের মতে ‘ মৌসুমি বায়ু হল স্থল বায়ু ও সমুদ্র বায়ুর বৃহৎ সংস্করণ ।

  1. ক্যাটাবেটিক ও অ্যানাবেটিক বায়ু কাকে বলে ?

Ans: রাত্রিবেলা পর্বতের উপরি অংশের বায়ু দ্রুত তাপ বিকিরণে শীতল ও ভারী হয়ে পড়ে বলে পর্বতের ঢাল বরাবর ভারী বায়ু নীচে নেমে উপত্যকায় অবস্থান করে । এটি হল পার্বত্য বায়ু । পার্বত্য বায়ু বিস্তৃর্ণ অঞ্চল ও দীর্ঘ সময় ধরে প্রবাহিত হলে তখন । তা ক্যাটাবেটিক বায়ু । বোরা , মিস্টাল প্রভৃতি হল ক্যাটাবেটিক বায়ুর উদাহরণ । দিনের বেলা সূর্যতাপে উপত্যকার নিম্নাংশ অপেক্ষা ঢালু অংশ ( mountain slope ) বেশি গরম হয় । ফলে উপত্যকায় নিম্নাংশের বায়ু পর্বতের ঢাল বরাবর উপরের দিকে ওঠে । এটি হল উপত্যকা বায়ু । একে অ্যানাৰেটিক বায়ুও বলা হয় । এই দুই বায়ু প্রবাহের কারণেই পার্বত্য অংশে উষ্ণতা র বৈপরীত্য দেখা যায় ।

  1. ঘূর্ণবাতের উৎপত্তি কেন ঘটে ?

Ans: কোনো অল্পপরিসর স্থান যদি হঠাৎ বেশিমাত্রায় উত্তপ্ত হয় তবে সেই স্থান তখন নিম্নচাপের সৃষ্টি হওয়ার ফলে চারিদিকের অপেক্ষাকৃত শীতল ও উচ্চচাপের স্থানগুলো থেকে বায়ু প্রচণ্ড বেগে ওই নিম্নচাপ কেন্দ্রের দিকে ছুটে আসে এবং ঘুরতে ঘুরতে ওই নিম্নচাপের কেন্দ্রে প্রবেশ করে । এইভাবে ঘূর্ণবাতের সৃষ্টি হয় ।

  1. ঘূর্ণবাতের বৈশিষ্ট্যগুলি লেখো ।

Ans: ঘূর্ণবাতের বৈশিষ্ট্যগুলি হল : ( i ) এই বায়ুপ্রবাহ উত্তর গোলার্ধে ঘড়ির কাঁটার বিপরীতে অর্থাৎ বামাবর্তে এবং দক্ষিণ গোলার্ধে ঘড়ির কাঁটার দিকে অর্থাৎ দক্ষিণাবর্তে ঘুরে ঘুরে কেন্দ্রের দিকে অগ্রসর হয় ।

( ii ) ঘূর্ণবাত স্বল্পস্থায়ী কিন্তু প্রবল গতিবেগ সম্পন্ন ।

( ii ) ঘূর্ণবাতের সঙ্গে ঝড় , বৃষ্টি এবং বজ্রপাত হয় ।

( iv ) ঘূর্ণবাত দ্রুত স্থান পরিবর্তন করে ।

( v ) ক্রান্তীয় ঘূর্ণবাতের ধ্বংস ক্ষমতা অতি ভয়ংকর ।

( vi ) সরল ক্রান্তীয় ঘূর্ণবাতে ‘ চক্ষু ’ সৃষ্টি হয় ।

  1. নাতিশীতোয় ঘূর্ণবাতের বৈশিষ্ট্য লেখো ।

Ans: নাতিশীতোয় ঘূর্ণবাতের বৈশিষ্ট্যগুলি হল

( i ) এই ঘূর্ণবাতের কেন্দ্রে থাকে নিম্নচাপ এবং বাইরে উচ্চচাপ ।

( ii ) এর কেন্দ্র ও বাইরে চাপের পার্থক্য থাকে ১০-২০ মিলিবার ।

( iii ) এর আকৃতি ও বিস্তৃতি খুব বেশি হয় ।

( iv ) এই ঘূর্ণবাতের স্থায়িত্বকাল দীর্ঘ ও গতিবেগ কম হয় ।

( v ) এর প্রভাবে একটানা বেশ কয়েকদিন ঝিরঝিরে বৃষ্টি ও তুষারপাত হয় ।

( vi ) শীতকালে এই ঘূর্ণবাত বেশি দেখা যায় ।

  1. ক্রান্তীয় ঘূর্ণবাত ( Tropical Cyclone ) বলতে কী বোঝ ?

Ans: ক্রান্তীয় ঘূর্ণবাত কর্কটক্রান্তি ও মকরকান্তি রেখার মধ্যবর্তী অঞ্চল বরাবর সৃষ্ট ঘূর্ণবাতকে ক্রান্তীয় ঘূর্ণবাত বা উপমণ্ডলীয় ঘূর্ণবাত বলে । বিশেষত ৬ ° উত্তর অক্ষাংশ থেকে ২০ ° দক্ষিণ অক্ষাংশে এই ধরনের ঘূর্ণবাত দেখা যায় । সাধারণত অতিরিক্ত উষ্ণতার জন্য সমুদ্রের উপরের বায়ু শুষ্ক , আর্দ্র ও ঊর্ধ্বমুখী হয় , ফলে সেখানে নিম্নচাপের সৃষ্টি হয় এবং চারদিক থেকে প্রবল বেগে বায়ু ঘুরতে ঘুরতে নিম্নচাপের কেন্দ্রের দিকে ছুটে আসে । এই প্রবল গতিবেগসম্পন্ন কেন্দ্রমুখী ঘূর্ণায়মান ঊর্ধ্বমুখী বায়ুপ্রবাহকে ক্রান্তীয় ঘূর্ণবাত বলে । 

বৈশিষ্ট্য : ( i ) এই ঘূর্ণবাতে সমচাপরেখার আকৃতি গোলীয় প্রকৃতির ।

( ii ) ঘূর্ণবাত সবল ও দুর্বল উভয় প্রকৃতির হয় ।

( iii ) সবল ঘূর্ণবাতে প্রবল ঝড়বৃষ্টি এবং দুর্বল ঘূর্ণবাতে প্রবল বৃষ্টি হয় ।

( iv ) সবল ঘূর্ণবাতে ‘ ঘূর্ণবাতের চক্ষু’সৃষ্টি হয় ।

( v ) স্থলভাগ ও সমুদ্র উভয় অংশে এই ঘূর্ণবাতের উৎপত্তি ঘটলেও সমুদ্রের সংখ্যা অধিক ।

( vi ) গ্রীষ্মের শেষে শরৎকালে এই প্রকার ঘূর্ণবাত বেশি সংখ্যায় সৃষ্টি হয় । 

জোন রাখে : কয়েকটি ক্রান্তীয় ঘূর্ণবাত : টাইফুন : এটি জাপান – চিন সাগরে সৃষ্ট এক ধরনের প্রবল বিধ্বংসী ঘূর্ণিঝড় । ও হ্যারিকেন : এটি হল পশ্চিম ভারতীয় দ্বীপপুঞ্জের নিকটবর্তী । ক্যারিবিয়ান সাগরে উদ্ভূত বিধ্বংসী ঘূর্ণিঝড় । ও টর্নেডো : ক্রান্তীয় মণ্ডলে ভূপৃষ্ঠের স্বল্প পরিসর স্থান থেকে ঊর্ধ্বাকাশে প্রসারিত কৃষ্ণকায় ফানেল আকৃতিবিশিষ্ট মেঘ যে সর্বাপেক্ষা বিধ্বংসী ঘূর্ণবাতের জন্ম দেয় , তাই হল টর্নেডো । এটি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মধ্য ও দক্ষিণ অংশে বেশি সংখ্যায় দেখা যায় । পূর্ব ভারতে মাঝে মাঝেই টর্নেডোর আবির্ভাব ঘটে । সাইক্লোন : ভারতমহাসাগর , আরব সাগর ও বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট ক্রান্তীয় | ঘূর্ণবাতকে সাইক্লোন বলে । 

 মাধ্যমিক ভূগোল প্রশ্ন ও উত্তর

  বায়ুর চাপবলয় ও বায়ু প্রবাহ

(বায়ুমণ্ডল – দ্বিতীয় অধ্যায়) 

পার্থক্য নিরূপণ করো | বায়ুর চাপবলয় ও বায়ু প্রবাহ  

  1. আয়ন বায়ু ও পশ্চিমা বায়ুর পার্থক্য ।
ভিত্তি  অয়ন বায়ু পশ্চিমা বায়ু
প্রবাহের নাম কর্কটীয় ও মকরীয় উচ্চচাপ বলয় দুটি থেকে নিরক্ষীয় নিম্নচাপ বলয়ের দিকে এই বায়ু প্রবাহিত হয় । কর্কটীয় ও মকরীয় উচ্চচাপ বলয় দুটি থেকে নিরক্ষীয় নিম্নচাপ বলয়ের দিকে এই বায়ু প্রবাহিত হয় ।
নামকরণ নির্দিষ্ট পথে এই বায়ু প্রবাহিত হয় বলে (আয়ন শব্দের অর্থ পথ) ইহা আয়ন বায়ু নামে পরিচিত । পশ্চিম থেকে প্রবাহিত হয় বলে ইহা পশ্চিমা বায়ু পরিচিত ।
জলবায়ুর ওপর প্রভাব এর প্রভাবে ক্রান্তীয় অঞ্চলে মহাদেশের পূর্বে প্রবল বৃষ্টি হয়, কিন্তু পশ্চিম অংশ বৃষ্টিহীন থাকে । তাই মহাদেশের পশ্চিম অংশে বড়ো বড়ো মরুভূমির সৃষ্টি হয়েছে । এই বায়ুপ্রবাহে নাতিশীতোষ্ণ অঞ্চলে মহাদেশের পশ্চিমে বৃষ্টি হয় কিন্তু পূর্ব অংশ স্বল্প বৃষ্টিপাতযুক্ত বলে নাতিশীতোষ্ণ তৃণভূমির সৃষ্টি হয়েছে ।
  1. নিয়ত বায়ু ও সামরিক বায়ুর মধ্যে পার্থক্য ।
ভিত্তি নিয়ত বায়ু  সামরিক বায়ু
বিষয় ভূপৃষ্ঠের সামন্তরালে সারাবছর একই দিকে একই গতিবেগে প্রবাহিত হয় । বছরের একটি নির্দিষ্ট ঋতুতে বা দিনের বিশেষ সময়ে প্রবাহিত বায়ু হল সাময়িক বায়ু ।
উদাহরণ আয়ন বায়ু, পশ্চিমা বায়ু, সমুদ্র বায়ু । স্থলবায়ু, সমুদ্র বায়ু, মৌসুমি বায়ু হল সাময়িক বায়ু ।
কারণ পৃথিবীর সাতটি স্থায়ী বায়ুচাপ বলয় নিয়ত বায়ু হল নিয়ত বায়ু উৎপত্তির কারণ । বিশেষ ঋতুতে স্থলভাগে নিম্নচাপ ও সমুদ্রে উচ্চচাপ কিংবা এর বিপরীত অবস্থা সাময়িক বায়ুর ।
প্রভাব সারা পৃথিবী জুড়ে জলবায়ুর ওপর নিয়ত বায়ুর প্রভাব রয়েছে । ক্রান্তীয় মণ্ডলে মহাদেশের পশ্চিমে বেশি বৃষ্টি সবায়ুব্রবাহের কারণেই ঘটে । উর্ধাকাশের বায়ু সঞ্চলনে এই প্রভাব অতীব গুরুত্বপূর্ণ । উপকূল, সেই সঙ্গে বেশ কিছু নির্দিষ্ট অঞ্চলের জলবায়ুর ওপর এই বায়ুর প্রভাব রয়েছে । ঊর্ধাকাশের বায়ু সঞ্চালনের এর বায়ুর প্রভাব অতটা নেই ।

 মাধ্যমিক ভূগোল প্রশ্ন ও উত্তর

  বায়ুর চাপবলয় ও বায়ু প্রবাহ

(বায়ুমণ্ডল – দ্বিতীয় অধ্যায়) 

রচনা ধর্মী প্রশ্নোত্তর  

1. বায়ুচাপের তারতম্যের কারণগুলি ব্যাখ্যা করো । 

Ans: বায়ুমণ্ডলের বিভিন্ন অংশে বায়ুর চাপ বিভিন্ন রকম হয় । বায়ুচাপের তারতম্যের এই কারণগুলি হল— 

 ( i ) উষ্ণতা  : বায়ুচাপের সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ নিয়ন্ত্রক হল উষ্ণতা  । বায়ুর উষ্ণতার সাথে বায়ুচাপের সম্পর্ক বিপরীতমুখী । 

উষ্ণতা বাড়লে বায়ুর ঘনত্ব কমে , প্রসারিত হয় এবং হালকা হয়ে উপরে ওঠে ফলে বায়ুচাপ কমে । আবার উষ্ণতা কমলে বায়ুর ঘনত্ব বাড়ে , সংকুচিত হয় এবং ভারী হয়ে নীচে অবস্থান করে বলে চাপ বাড়ে । 

( ii ) উচ্চতা : উচ্চতা বৃদ্ধিতে বায়ুর ওজন ও ঘনত্ব কমতে থাকে বলে বায়ুর চাপও কমে । মাধ্যাকর্ষণ শক্তির কারণে বায়ুকণাগুলির অধিকাংশ ভূপৃষ্ঠসংলগ্ন অঞ্চলে অবস্থান করে বলে বায়ুর ঘনত্ব বেশি এবং ওই বায়ু চাপ বেশি দেয় । ভূপৃষ্ঠে গড় ১০০০ মিটার উচ্চতা বৃদ্ধিতে ১২.৬ মিলিবার বায়ুচাপ কমে । তাই পর্বতের উপরে বায়ুচাপ কম , সমভূমিতে বেশি । 

( iii ) জলীয় বাষ্প : জলীয় বাষ্পপূর্ণ বায়ু সাধারণ বায়ুর থেকে হালকা এবং ঘনত্ব কম বলে প্রসারিত হয়ে ঊর্ধ্বমুখী হয় । ফলে বায়ুর চাপ কমে । তাই যে বায়ুতে জলীয় বাষ্প যত বেশি , সেই বায়ুর চাপও তত কম । শুষ্ক বায়ুর চাপ বেশি । 

( iv ) পৃথিবীর আবর্তন : পৃথিবীর আবর্তনের প্রভাবে যে কেন্দ্রবিমুখ শক্তির ( Centrifugal force ) সৃষ্টি হয় তার ফলে বায়ু বিক্ষিপ্ত হয় । বায়ু বিক্ষিপ্ত হলে বায়ুর ঘনত্ব কমে এবং সেই বায়ু চাপ কম দেয় । 

( v ) স্থলভাগ ও জলভাগের বণ্টন : প্রকৃতির নিয়মে জলভাগ অপেক্ষা স্থলভাগ যেমন তাড়াতাড়ি উত্তপ্ত হয় তেমনি তাড়াতাড়ি ঠান্ডাও হয় । উপকূল অঞ্চলে তাই দিনের বেলা স্থলভাগে বায়ুরচাপ কম এবং জলভাগে বায়ুচাপ বেশি হয় । রাত্রে ঠিক বিপরীত অবস্থা দেখা দেয় ।

2. পৃথিবীর প্রধান বায়ুচাপ বলয়গুলির অবস্থান ও উৎপত্তির কারণ লেখো ?

Ans: পৃথিবীতে মোট ৭ টি স্থায়ী বায়ুচাপ বলয় সৃষ্টি হয়েছে , এর মধ্যে ৩ টি নিম্নচাপ বলয় ও ৪ টি উচ্চচাপ বলয় ।

 ( i ) নিরক্ষীয় নিম্নচাপ বলয় : নিরক্ষরেখার উভয় পাশে গড়ে ৫ ° উত্তর –৫ ° দক্ষিণ অক্ষরেখার মধ্যে অবস্থিত নিম্নচাপ বলয়টি নিরক্ষীয় নিম্নচাপ বলয় নামে পরিচিত । এটি নিরক্ষীয় শান্তবলয় বা ডোলড্রামস নামে পরিচিত । 

কারণ : ( i ) এখানে সারাবছর লম্ব সূর্যরশ্মির কারণে উষ্ণতা  খুব বেশি , ( ii ) বায়ুতে আর্দ্রতা সারাবছরে খুব বেশি এবং ( iii ) আবর্তনবেগ বেশি বলে উষ্ণ আর্দ্র ঊর্ধ্বগামী বায়ু বিক্ষিপ্ত হয় । এই তিনটি কারণে এখানে নিম্নচাপ বলয় সৃষ্টি হয়েছে । ( ii ) কর্কটীয় ও মকরীয় উচ্চচাপ বলয় বা উপক্রান্তীয় উচ্চচাপ বলয় : উভয় গোলার্ধে গড়ে ২৫ ° –৩৫ ° অক্ষরেখার মধ্যে যে – দুটি চাপবলয় রয়েছে , তা হল উপক্রান্তীয় উচ্চচাপ বলয় । এটি অশা অক্ষাংশ নামে পরিচিত । 

কারণ : ( i ) নিরক্ষীয় অঞ্চলের ঊর্ধ্বগামী বায়ু আবর্তনের প্রভাবে শীতল ও ভারী হয়ে এখানে নেমে আসে । ( ii ) মেরুবৃত্ত প্রদেশের শীতল ও ভারী বায়ু , কোরিওলিস বলের প্রভাবে এখানে পৌঁছোয় । এই দুটি কারণে এখানে উচ্চচাপ বলয় সৃষ্টি হয়েছে । ( iii ) সুমেরু ও কুমেরুবৃত্ত প্রদেশীয় নিম্নচাপ বলয় : উত্তর গোলার্ধের ৬০০–৭০ ° অক্ষরেখার মধ্যে এই দুটি নিম্নচাপ বলয় অবস্থিত । 

কারণ : ( i ) মেরু অঞ্চল থেকে আগত শীতল বায়ুর সঙ্গে ক্রান্তীয় মণ্ডল থেকে আগত উষ্ণ বায়ুর সংঘর্ষে বায়ু ঊর্ধ্বগামী হয় । 

কারণ : ( ii ) অধিক কোরিওলিস বলের প্রভাবে বায়ুর গতিবিক্ষেপ ঘটে এবং কারণ : ( iii ) উষ্ণ সমুদ্রস্রোত এই অঞ্চলের উষ্ণতা  বাড়ায় — এই তিনটি কারণে এখানে নিম্নচাপ বলয় – এর সৃষ্টি হয়েছে । ( iv ) মেরুদেশীয় উচ্চচাপ বলয় : উভয় গোলার্ধে ৮০ ° মেরু পর্যন্ত চাপ বলয় দুটি অবস্থিত । কারণ : ( i ) প্রায় সারাবছর উষ্ণতা  হিমাঙ্কের নীচে থাকে বলে বায়ু সর্বদা অতি ঘনত্বযুক্ত শীতল ও ভারী । ( ii ) কোরিওলিস বল বেশি হলেও বায়ু খুবই শীতল বলে বিক্ষিপ্ত হতে পারে না ।

3. পৃথিবীর প্রধান বায়ুচাপ বলয়গুলির নাম লিখে প্রধান একপ্রকার বায়ুচাপ বলয়ের অবস্থান , উৎপত্তির কারণ ও বৈশিষ্ট্য উল্লেখ করো ।

Ans: পৃথিবীতে সৃষ্টি হয়েছে মোট ৭ টি স্থায়ী বায়ুচাপ বলয় , যার মধ্যে ৩ টি নিম্নচাপ বলয় ও ৪ টি উচ্চচাপ বলয় । 

( i ) নিরক্ষীয় নিম্নচাপ বলয় : ২ ও ৩ কর্কটীয় ও মকরীয় উচ্চচাপ বলয় । ৪ ও ৫ সুমেরুবৃত্ত ও কুমেরুবৃত্ত প্রদেশীয় নিম্নচাপ বলয় এবং ৬ ও ৭ সুমেরু ও কুমেরু উচ্চচাপ বলয় । অবস্থান : নিরক্ষরেখার উভয় পাশে গড়ে ৫ ° উত্তর –৫০ দক্ষিণ অক্ষরেখার মধ্যে এই চাপ বলয়টি অবস্থিত । 

উৎপত্তির কারণ : ( i ) প্রায় সারাবছর লম্ব সূর্যরশ্মির কারণে এখানে সারাবছর উষ্ণতা  খুব বেশি । ( ii ) এই অঞ্চলে স্থলভাগের তুলনায় সমুদ্রের বিস্তার বেশি এবং উষ্ণতা  অধিক বলে বাতাসে আর্দ্রতাও খুব বেশি । ( iii ) পৃথিবীর আবর্তন বেগ এখানে খুব বেশি বলে হালকা উন্ন – আর্দ্র ঊর্ধ্বগামী বায়ু বিক্ষিপ্ত হয় । এই তিনটি কারণেই নিরক্ষীয় অঞ্চলে নিম্নচাপ বলয়ের উৎপত্তি ঘটেছে । 

জলবায়ুগত বৈশিষ্ট্য : ( i ) এই অঞ্চলে বায়ু সর্বদা ঊর্ধ্বগামী ( বায়ুস্রোত ) । ভূপৃষ্ঠের সমান্তরালে বায়ুপ্রবাহ হয় না বলেই এই অঞ্চল সারাবছর শান্ত থাকে । তাই অঞ্চলটি নিরক্ষীয় শান্তবলয় বা ডোলড্রাম নামে পরিচিত । ( ii ) এই অঞ্চলটি উভয় গোলার্ধ থেকে আয়ন বায়ুদ্বয়কে পৃথক করে । তাই এই অঞ্চলটি ITCZ ( Inter Tropical Convergence Zone ) নামে পরিচিত ।

4. বায়ুপ্রবাহের কারণগুলি কী কী ?

Ans: বায়ুপ্রবাহের কারণগুলি হল : ( i ) বায়ুচাপের তারতম্য বা বায়ুচাপের ঢালের শক্তি বায়ুচাপের তারতম্যই বায়ুপ্রবাহের মূল কারণ । বায়ু সর্বদা উচ্চচাপ থেকে নিম্নচাপের দিকে বয়ে যায় । বায়ুর গতিবেগ নির্ধারিত হয় বায়ুচাপের ঢালের শক্তির ওপর । বায়ুচাপের ঢাল যত বাড়ে বায়ুর গতিবেগ তত বাড়ে । 

( ii ) পৃথিবীর আবর্তন ও কোরিওলিস বল : পৃথিবীর আবর্তনে সৃষ্ট বল হল কোরিওলিস বল । এই বলের প্রভাব নিরক্ষরেখায় শূন্য এবং মেরুতে সর্বাধিক । এই বলের প্রভাবে বায়ু উত্তর গোলার্ধে ডানদিকে এবং দক্ষিণ গোলার্ধে বাম দিকে বেঁকে প্রবাহিত হয় , যা ফেরেলের সূত্র ( বিজ্ঞানী উইলিয়াম ফেরেল – এর নামানুসারে ১৮৫৫ ) নামে পরিচিত । 

( iii ) বাইস ব্যালট সূত্র : ১৮৫৭ খ্রিস্টাব্দে ডাচ আবহবিদ বাইস ব্যালট বায়ুচাপের তারতম্য ও বায়ুপ্রবাহের মধ্যে একটি সম্পর্ক । নির্ধারণ করেন । তাঁর মতে উত্তর গোলার্ধে বায়ুপ্রবাহের দিকে পিছন করে দাঁড়ালে ডানদিকে উচ্চচাপ এবং বামদিকে নিম্নচাপ থাকে । দক্ষিণ গোলার্ধে এর ঠিক বিপরীত অবস্থা হয় । এটি হল বাইস ব্যালট সূত্র । 

( iv ) ঘর্ষণের প্রভাব : ভূপৃষ্ঠের সাথে বায়ুর সংঘর্ষে বায়ু ধীর গতিসম্পন্ন হয় । উচ্চতা যত বাড়ে বাধা তত কমে বলে বায়ুর বেগ বাড়ে । সংঘর্ষজনিত কারণেই স্থলভাগ অপেক্ষা সমুদ্রে বায়ুর বেগ বেশি ।

5. বিভিন্ন প্রকার নিয়ত বায়ুর গতিপ্রকৃতির ব্যাখ্যা দাও ।

Ans: পৃথিবীতে ৭ টি স্থায়ী বায়ুচাপ বলয়ের ওপর ভিত্তি করে তিনপ্রকার নিয়ত বায়ু প্রবাহিত হয়— ( ক ) আয়ন বায়ু , ( খ ) পশ্চিমা বায়ু , ( গ ) মেরু বায়ু । 

( ক ) আয়ন বায়ু : কর্কটীয় ও মকরীয় উচ্চচাপ বলয়দ্বয় থেকে নিরক্ষীয় নিম্নচাপ বলয়ের দিকে উভয় গোলার্ধে যে বায়ু প্রবাহিত হয় তা হল আয়ন বায়ু । ফেরেল – এর সূত্রানুসারে উত্তর গোলার্ধে ডান দিকে এবং দক্ষিণ গোলার্ধে বাম দিকে বেঁকে যথাক্রমে উত্তর – পূর্ব আয়ন বায়ু ও দক্ষিণ – পূর্ব আয়ন বায়ু রূপে বয়ে যায় ।

 গতিবেগ : উত্তর গোলার্ধে এই বায়ুর বেগ ১৬ কিমি / ঘণ্টা এবং দক্ষিণ গোলার্ধে ২২ কিমি / ঘণ্টা । 

জলবায়ুর ওপর প্রভাব : ( i ) এই বায়ুর প্রভাবে ক্রান্তীয় মণ্ডলে মহাদেশের পূর্বে প্রবল বৃষ্টি হয় এবং পশ্চিম অংশ বৃষ্টিহীন থাকে বলে মরুভূমির সৃষ্টি হয়েছে । ( ii ) নিরক্ষীয় অঞ্চলে এই বায়ুদ্বয় মিলিত ও ঊর্ধ্বমুখী হয়ে প্রবল বৃষ্টি ঘটায় । 

( খ ) পশ্চিমা বায়ু : কর্কটীয় ও মকরীয় উচ্চচাপ বলয়দ্বয় থেকে মেরুবৃত্ত প্রদেশীয় উচ্চচাপ বলয়দ্বয়ের দিকে উভয় গোলার্ধে যে বায়ু বয়ে যায় তা হল পশ্চিমা বায়ু । ফেরেল – এর সূত্রানুসারে এই বায়ু বেঁকে উত্তর গোলার্ধে দক্ষিণ – পশ্চিম । পশ্চিমা বায়ু এবং দক্ষিণ গোলার্ধে উত্তর – পশ্চিম পশ্চিমা বায়ু রূে প্রবাহিত হয় । 

গতিবেগ : উত্তর গোলার্ধে এই বায়ু ধীরে এবং দক্ষিণ গোলাসে প্রবল বেগে বয় । তাই দক্ষিণ গোলার্ধে এই বায়ুকে সাহসী পশ্চিম বায়ু বলা হয় ।

জলবায়ুর ওপর প্রভাব :

( i ) এই বায়ুপ্রবাহে উপক্রান্তীয় মণ্ডল মহাদেশের পশ্চিমে বৃষ্টি ও তুষারপাত ঘটে ।

( ii ) ভূমধ্যসাগরীয় জলবায়ু অঞ্চলে শীতকালে এই বায়ু প্রবেশ করে বৃষ্টিপাত ঘটায় 

( গ ) মেরু বায়ু দুই মেরুদেশীয় উচ্চচাপ বলয়ঙ্গয় থেকে মেরুবৃত্ত প্রদেশীয় নিম্নচাপ বলয়দ্বয়ের দিকে প্রবাহিত বায়ু হল মের বায়ু । এই বায়ু ফেরেল – এর সূত্রানুসারে উত্তর গোলার্ধে উত্তর পূর্ব এবং দক্ষিণ গোলার্ধে দক্ষিণ – পূর্ব মেরু বায়ুরূপে প্রবাহিত হয় । গতিবেগ : উত্তর গোলার্ধের তুলনায় দক্ষিণ গোলার্ধে এই বায়ুর বেগ বেশি । 

জলবায়ুর ওপর প্রভাব :

( i ) মেরু থেকে আগত অত্যন্ত শীত এই বায়ুর প্রভাবে শীতকালে কানাডা , সাইবেরিয়ায় শৈত্যপ্রবাহের কবলে পড়ে ।

( ii ) দক্ষিণ গোলার্ধে এই বায়ুর সাথে উন্ন – আর্দ্র সমুদ্র বায়ুর সংঘর্ষে ঘূর্ণবাতের উৎপত্তি ঘটে ।

6. নিয়ত বায়ুর শ্রেণিবিভাগ করে প্রধান একপ্রকার নিয়ত বায়ুপ্রবাহের , গতিবেগ ও জলবায়ুর ওপর এর প্রভাব ব্যাখ্যা করো ।

Ans: স্থায়ী ৭ টি বায়ুচাপ – এর ওপর ভিত্তি করে ভূপৃষ্ঠের সমান্তরালে নিয়মিতভাবে সারাবছরে প্রবাহিত বায়ু হল নিয়ন্ত বায়ু । 

এটি তিনপ্রকার- ( i ) আয়ন বায়ু ( ii ) পশ্চিমা বায়ু ( iii ) মেরু বায়ু । নিম্নে আয়ন বায়ু সম্পর্কে আলোচনা করা হল ।

আয়ন বায়ুর প্রভাব ( i ) আয়ন বায়ু : কর্কটীয় ও মকরীয় উচ্চচাপ বলয়দ্বয় থেকে নিরক্ষীয় নিম্নচাপ বলয়ের দিকে নির্দিষ্ট পথে ( আয়ন শব্দের অর্থ ‘ পথ ‘ ) প্রবাহিত বায়ু হল আয়ন বায়ু । পালতোলা জাহাজের যুগে এই বায়ুর পথ ধরে বাণিজ্য হত বলে এর অপর নাম ‘ বাণিজ্য বায়ু ‘ । উভয় গোলার্ধে এই বায়ু ৫ ° – ৩৫ ° অক্ষরেখার মধ্যে বাহিত হয় ।

 প্রবাহের দিক : ফেরেল – এর সূত্রানুসারে এই বায়ু উত্তর গোলার্ধে ডানদিকে এবং দক্ষিণ গোলার্ধে বামদিকে বেঁকে যথাক্রমে উত্তর – পূর্ব আয়ন বায়ু ও দক্ষিণ – পূর্ব আয়ন বায়ু রূপে প্রবাহিত হয় । 

গতিবেগ : উত্তর গোলার্ধে এই বায়ুর গড় বেগ ১৬ কিমি / ঘণ্টা কিন্তু দক্ষিণ গোলার্ধে ২২ কিমি / ঘণ্টা । 

জলবায়ুর ওপর প্রভাব : ( i ) এই বায়ুপ্রবাহের কারণেই ক্রান্তীয় মণ্ডলে মহাদেশের পূর্বদিকে প্রবল বৃষ্টি হয় ।

( ii ) পশ্চিম অংশে অনাবৃষ্টি থাকে বলে ৫ টি বড়ো বড়ো মরুভূমি ( সাহারা , কালাহারি , সোনেরান , আটাকামা , অস্ট্রেলিয়া ) সৃষ্টি হয়েছে ।

( iii ) নিরক্ষীয় অঞ্চল হল 

7. আনুচাপ বলয়ের সঙ্গে নিয়ত বায়ুর সম্পর্ক ব্যাখ্যা করো ।

Ans: ভূপৃষ্ঠে স্থায়ী বায়ুচাপ বলয়গুলির ওপর নির্ভর করে সারাবছর ধরে যে বায়ু ভূপৃষ্ঠের সমান্তরালে প্রবাহিত হয় , তাকেই নিয়ত বায়ু বলে । সাতটি স্থায়ী বায়ুচাপ বলয়ের ওপর ভিত্তি করে উভয় গোলার্ধে তিনপ্রকার নিয়ত বায়ু প্রবাহিত হয়— 

( i ) আয়ন বায়ু : কর্কটীয় ও মকরীয় উচ্চচাপ বলয়দ্বয় থেকে নিরক্ষীয় নিম্নচাপ বলয়ের দিকে যে দুটি বায়ু সারাবছর ভূপৃষ্ঠের সমান্তরালে প্রবাহিত হয় , তাকে আয়ন বায়ু বলে । এই বায়ু ‘ বাণিজ্য বায়ু ’ নামেও পরিচিত । ফেরেল – এর সূত্রানুসারে এই বায়ু উত্তর গোলার্ধে ডান দিকে ও দক্ষিণ গোলার্ধে বাম দিকে বেঁকে গিয়ে যথাক্রমে উত্তর পূর্ব ও দক্ষিণ পূর্ব আয়ন বায়ু নামে প্রবাহিত হয় । 

( ii ) পশ্চিমা বায়ু : কর্কটীয় ও মকরীয় উচ্চচাপ বলয়দ্বয় থেকে দুই মেরুবৃত্ত প্রদেশীয় নিম্নচাপ বলয়ের দিকে যে বায়ু সারাবছর প্রবাহিত হয় , তাকেই পশ্চিমা বায়ু বলে । ফেরেল সূত্রানুসারে এই বায়ুদ্বয় উত্তর গোলার্ধে ডানদিকে ও দক্ষিণ গোলার্ধে বাম দিকে বেঁকে গিয়ে যথাক্রমে দক্ষিণ – পশ্চিম পশ্চিমা বায়ু এবং উত্তর – পশ্চিম পশ্চিমা বায়ু রূপে প্রবাহিত হয় । 

( iii ) মেরু বায়ু : সুমেরু ও কুমেরু দেশীয় উচ্চচাপ বলয়দ্বয় । থেকে দুই মেরুবৃত্ত প্রদেশীয় নিম্নচাপ বলয়দ্বয়ের দিকে যে দুটি বায়ু সারাবছর প্রবাহিত হয় তাকেই মেরু বায়ু বলে । ফেরেল – এর সূত্রানুসারে এই বায়ুদ্বয় বেঁকে গিয়ে উত্তর গোলার্ধে উত্তর – পূর্ব মেরু বায়ু এবং দক্ষিণ গোলার্ধে দক্ষিণ – পূর্ব মেরু বায়ু নামে প্রবাহিত হয় ।

SOURCE-BS

 

©kamaleshforeducation.in(2023)

 

 

 

মাধ্যমিক দশম শ্রেণীর ভূগোল-বায়ুর স্তরবিন্যাস

 

 

মাধ্যমিক দশম শ্রেণীর ভূগোল প্রশ্ন ও উত্তর

বায়ুর স্তরবিন্যাস (বায়ুমণ্ডল – দ্বিতীয় অধ্যায়)  

মাধ্যমিক দশম শ্রেণীর ভূগোল প্রশ্ন ও উত্তর

MCQ | বায়ুর স্তরবিন্যাস (বায়ুমণ্ডল – দ্বিতীয় অধ্যায়)  

  1. ভূপৃষ্ঠের নিকটবর্তী বায়ুমণ্ডলীয় স্তরটির হল— 

(A) ট্রপোস্ফিয়ার

(B) স্ট্র্যাটোস্ফিয়ার

(C) মেসোস্ফিয়ার

(D) থার্মোস্ফিয়ার

Ans: (A) ট্রপোস্ফিয়ার

  1. নিরক্ষীয় অঞ্চলে ট্রপোস্ফিয়ারের বিস্তার সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে প্রায় – 

(A) ৮ কিমি উচ্চতায় 

(B) ১৮ কিমি উচ্চতায় 

(C) ৫০ কিমি উচ্চতায় 

(D) ৮০ কিমি উচ্চতায়

Ans: (B) ১৮ কিমি উচ্চতায়

  1. ভূপৃষ্ঠ থেকে ১১০০ – ৩৫০০ কিমি উচ্চতায় বায়ুমণ্ডলে গ্যাসীয় উপাদানের উপস্থিতি দেখা যায় সেটি হল – 

(A) হাইড্রোজেন 

(B) হিলিয়াম 

(C) অক্সিজেন 

(D) নাইট্রোজেন 

Ans: (B) হিলিয়াম

  1. ওজোন গ্যাসের উপস্থিতি লক্ষ করা যায় বায়ুমণ্ডলের – 

(A) ট্রপোস্ফিয়ারে 

(B) স্ট্র্যাটোস্ফিয়ারে

(C) থার্মোস্ফিয়ারে 

(D) মেসোস্ফিয়ারে

Ans: (B) স্ট্র্যাটোস্ফিয়ারে

  1. ওজোন গ্যাস অক্সিজেনের ক – টি পরমাণু নিয়ে গঠিত ? 

(A) ১ টি 

(B) ৩ টি 

(C) ২ টি 

(D) ৪ টি

Ans: (B) ৩ টি

  1. মেরুজ্যোতি সৃষ্টি হয় কোন্ বায়ুমণ্ডলীয় স্তরে ? 

(A) ওজোনোস্ফিয়ারে 

(B) আয়নোস্ফিয়ারে

(C) মেসোস্ফিয়ারে 

(D) এক্সোস্ফিয়ারে

Ans: (B) আয়নোস্ফিয়ারে

  1. বায়ুমণ্ডলীয় ‘ ক্ষুব্বন্তর ‘ নামে পরিচিত স্তরটি হল –

(A) ট্রপোস্ফিয়ার 

(B) স্ট্র্যাটোস্ফিয়ার 

(C) এক্সোস্ফিয়ার

(D) ম্যাগনেটোস্ফিয়ার 

Ans: (A) ট্রপোস্ফিয়ার

  1. বায়ুমণ্ডলের যে স্তরটি ‘ শান্তমণ্ডল ‘ নামে পরিচিত সেটি হল –

(A) ট্রপোস্ফিয়ার 

(B) স্ট্র্যাটোস্ফিয়ার

(C) মেসোস্ফিয়ার

(D) আয়নোস্ফিয়ার

Ans: (C) মেসোস্ফিয়ার

  1. বায়ুমণ্ডলের যে স্তরে মহাজাগতিক উল্কা পুড়ে ছাই হয়ে যায় সেটি হল –

(A) স্ট্র্যাটোস্ফিয়ার 

(B) আয়নোস্ফিয়ার 

(C) মেসোস্ফিয়ার 

(D) এক্সোস্ফিয়ার 

Ans: (C) মেসোস্ফিয়ার

  1. বায়ুমণ্ডলে যে স্তরে ভূপৃষ্ঠের বেতার তরঙ্গ প্রতিহত হয় সেটি হল— 

(A) আয়নোস্ফিয়ার 

(B) এক্সোফিয়ার 

(C) স্ট্র্যাটোস্ফিয়ার

(D) মেসোস্ফিয়ার

Ans: (A) আয়নোস্ফিয়ার

  1. বায়ুমণ্ডলীয় যে স্তর দিয়ে জেট প্লেন যাতায়াত করে সেটি হল –

(A) ট্রপোস্ফিয়ার 

(B) স্ট্যাটোস্ফিয়ার

(C) আয়নোস্ফিয়ার 

(D) মেসোস্ফিয়ার

Ans: (B) স্ট্যাটোস্ফিয়ার

  1. যে সর্বশেষ বায়ুমণ্ডলীয় স্তরে উচ্চতা বাড়ার সাথে উন্নতা কমে সেটি হল –

(A) টপোস্ফিয়ার 

(B) মেসোস্ফিয়ার 

(C) এক্সোস্ফিয়ার

(D) থার্মোস্ফিয়ার 

Ans: (B) মেসোস্ফিয়ার

  1. থার্মোস্ফিয়ার বায়ুমণ্ডলীয় স্তরটি কোন স্তরের অন্তর্গত ? 

(A) স্ট্যাটোস্ফিয়ার

(B) মেসোস্ফিয়ার

(C) আয়নোস্ফিয়ার

(D) এক্সোস্ফিয়ার

Ans: (B) মেসোস্ফিয়ার

  1. সূর্য থেকে আগত ‘ UV – Ray ‘ যে বায়ুমণ্ডলীয় গ্যাসীয় উপাদান শোষণ করে সেটি হল –

(A) অক্সিজেন

(B) নাইট্রোজেন

(C) হাইড্রোজেন 

(D) ওজোন গ্যাস

Ans: (D) ওজোন গ্যাস

  1. ভ্যান অ্যালেন রেডিয়েশন বেল্ট যে উচ্চতায় অবস্থান করে তা হল –

(A) ৯০ কিমি 

(B) ২০০ 

(C) ৪০০০ কিমি

(D) ১০,০০০ কিমি

Ans: (C) ৪০০০ কিমি

  1. ওজোন গ্যাসের ঘনত্বকে পরিমাপ করা হয় –

(A) মিলিবার এককে 

(B) ডবসন এককে 

(C) কিলোগ্রাম এককে

(D) knot এককে

Ans: (B) ডবসন এককে

  1. বায়ুমণ্ডলে গড় জলীয় বাষ্পের পরিমাণ –

(A) ০–০.৫ % 

(B) ০.৫-১.০০ %

(C) ১.০০–২.০০ %

(D) 0.5-8.0 % 

Ans: (D) 0.5-8.0 %

  1. মেসোস্ফিয়ারের ঊর্ধ্বসীমার তাপমাত্রা প্রায় –

(A) ০ ° C 

(B) -৬৩ ° C 

(C) – ১৩ ° C

(D) ১২০০ ° C

Ans: (C) – ১৩ ° C

  1. বায়ুমণ্ডলের যে স্তরে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা লক্ষ করা যায় সেটি –

(A) ট্রপোস্ফিয়ার 

(B) স্ট্যাটোস্ফিয়ার 

(C) মেসোস্ফিয়ার 

(D) আয়নোস্ফিয়ার

Ans: (C) মেসোস্ফিয়ার

  1. বায়ুমণ্ডলের যে স্তরে সবচেয়ে বেশি তাপমাত্রা লক্ষ করা যায় সেটি হল –

(A) আয়নোস্ফিয়ার 

(B) এক্সোস্ফিয়ার 

(C) ম্যাগনেটোস্ফিয়ার 

(D) ট্রপোস্ফিয়ার

Ans: (B) এক্সোস্ফিয়ার

  1. হিলিয়াম গ্যাসের প্রাধান্য দেখা যায় বায়ুমণ্ডলের –

(A) ট্রপোস্ফিয়ারে 

(B) মেসোস্ফিয়ারে 

(C) এক্সোস্ফিয়ারে

(D) ম্যাগনেটোস্ফিয়ারে 

Ans: (C) এক্সোস্ফিয়ারে

  1. মেরু অঞ্চলে ট্রপোস্ফিয়ারের উচ্চতা প্রায় … 

(A) ৮ কিমি 

(B) ১৮ কিমি 

(C) ৫০ কিমি 

(D) ৮০ কিমি 

Ans: (A) ৮ কিমি

  1. ট্রপোপজ স্তরটি দেখা যায় কোন দুই স্তরের মাঝে ? 

(A) ট্রপোস্ফিয়ার – স্ট্যাটোস্ফিয়ার

(B) সমমণ্ডল – বিষমমণ্ডল

(C) স্ট্যাটোস্ফিয়ার – মেসোস্ফিয়ার

(D) মেসোস্ফিয়ার – থার্মোস্ফিয়ার

Ans: (C) স্ট্যাটোস্ফিয়ার – মেসোস্ফিয়ার

  1. বজ্রপাত ও ঝড় – বৃষ্টি বায়ুমণ্ডলের যে স্তরে দেখা যায় সেটি –

(A) টপোস্ফিয়ার 

(B) স্ট্যাটোস্ফিয়ার 

(C) মেসোস্ফিয়ার 

(D) ম্যাগনেটোস্ফিয়ার

Ans: (B) স্ট্যাটোস্ফিয়ার

  1. কোন্ স্তরটি শান্তমণ্ডল নামে পরিচিত ? 

(A) মেসোস্ফিয়ার 

(B) ট্রপোস্ফিয়ার 

(C) স্ট্যাটোস্ফিয়ার 

(D) থার্মোস্ফিয়ার

Ans: (C) স্ট্যাটোস্ফিয়ার

  1. আকাশকে নীল দেখায় বায়ুমণ্ডলের –

(A) CO₂ – এর উপস্থিতির জন্য

(B) O₂ – এর উপস্থিতির জন্য 

(C) ধূলিকণা – এর উপস্থিতির জন্য

(D) জলীয় বাষ্প – এর উপস্থিতির জন্য

Ans: (C) ধূলিকণা – এর উপস্থিতির জন্য

  1. বায়ুদূষণ সৃষ্টিকারী গ্যাসগুলি বায়ুমণ্ডলের যে স্তরে অবস্থান করে সেটি হল –

(A) ট্রপোস্ফিয়ার

(B) মেসোস্ফিয়ার

(C) স্ট্র্যাটোস্ফিয়ার 

(D) আয়নোস্ফিয়ার 

Ans: (A) ট্রপোস্ফিয়ার

  1. হেটেরোস্ফিয়ারের সর্বনিম্ন স্তর হল – 

(A) হিলিয়াম 

(B) আণবিক নাইট্রোজেন 

(C) পারমাণবিক অক্সিজেন

(D) হাইড্রোজেন স্তর

Ans: (B) আণবিক নাইট্রোজেন

  1. বায়ুমণ্ডলের সর্বোচ্চ স্তর হল –

(A) এক্সোস্ফিয়ার

(B) আয়নোস্ফিয়ার

(C) ম্যাগনেটোস্ফিয়ার

(D) মেসোস্ফিয়ার 

Ans: C) ম্যাগনেটোস্ফিয়ার

  1. বায়ুমণ্ডলের সর্বনিম্ন স্তর হল – 

(A) ট্রপোস্ফিয়ার 

(B) মেসোস্ফিয়ার

(C) স্ট্যাটোস্ফিয়ার

(D) আয়নোস্ফিয়ার

Ans: A) ট্রপোস্ফিয়ার

  1. বায়ুমণ্ডলের ৯০ % জলীয় বাষ্পই ভূপৃষ্ঠ থেকে—

(A) ১০ কিমি উচ্চতায়

(B) ২০ কিমি উচ্চতায়

(C) ৩০ কিমি উচ্চতায়

(D) ৫০ কিমি উচ্চতায় 

Ans: (A) ১০ কিমি উচ্চতায়

  1. ভূপৃষ্ঠ থেকে ৯০-১০,০০০ কিমি পর্যন্ত প্রসারিত স্তরকে বলে— 

(A) হেমোস্ফিয়ার 

(B) হেটেরোস্ফিয়ার 

(C) মেসোস্ফিয ়ার

(D) ম্যাগনেটোস্ফিয়ার

Ans: (B) হেটেরোস্ফিয়ার

  1. ভূপৃষ্ঠ থেকে ৯০ কিমি উচ্চতা পর্যন্ত প্রসারিত স্তরকে বলে – 

(A) সমমণ্ডল 

(B) বিষমমণ্ডল 

(C) সমতল অঞ্চল

(D) শান্তমণ্ডল

Ans: (A) সমমণ্ডল

  1. বায়ুমণ্ডলের যে স্তরে ওজোন গ্যাসের প্রাধান্য দেখা যায় । সেটি হল –

(A) ট্রপোস্ফিয়ার 

(B) মেসোস্ফিয়ার 

(C) স্ট্র্যাটোস্ফিয়ার 

(D) আয়নোস্ফিয়ার 

Ans: (C) স্ট্র্যাটোস্ফিয়ার

( 1 ) মেসোস্ফিয়ার ( ঘ )

  1. বায়ুমণ্ডলের রক্ষাকবচ ‘ বলা হয় যে গ্যাসীয়স্তরকে সেটি হল –

(A) ওজোনোস্ফিয়ার

(B) আয়নোস্ফিয়ার

(C) আয়নোস্ফিয়ার

(D) ম্যাগনেটোস্ফিয়ার

Ans: (A) ওজোনোস্ফিয়ার

মাধ্যমিক দশম শ্রেণীর ভূগোল প্রশ্ন ও উত্তর

  বায়ুর স্তরবিন্যাস (বায়ুমণ্ডল – দ্বিতীয় অধ্যায়) 

অতিসংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর   

  1. হোমোস্ফিয়ার স্তরের বিস্তার কতটা ?

Ans: সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ঊর্ধ্বে প্রায় ৯০ কিমি উচ্চতা পর্যন্ত ।

  1. হেটেরোস্ফিয়ার স্তরের বিস্তার কতটা ?

Ans: ১০ কিমি থেকে ২০,০০০ কিমি পর্যন্ত । 

  1. বায়ুমণ্ডলের ভূপৃষ্ঠসংলগ্ন স্তর কোন্‌টি ?

Ans:ট্রপোস্ফিয়ার 

  1. ট্রপোস্ফিয়ার ও স্ট্র্যাটোস্ফিয়ারের সীমারেখাকে কী বলে ? 

Ans: ট্রপোপোজ । 

  1. স্ট্র্যাটোস্ফিয়ার স্তরের অপর নাম কী ?

Ans: শান্তমণ্ডল ।

  1. ‘ মৌক্তিক মেঘ ‘ কোন্ বায়ুমণ্ডলীয় স্তরে দেখতে পাওয়া যায় ?

Ans: স্ট্র্যাটোস্ফিয়ার ।

  1. বায়ুমণ্ডলের কোন্ স্তরে উল্কাপিণ্ড পুড়ে ছাই হয়ে যায় ?

Ans: মেসোস্ফিয়ার স্তরে ।

  1. স্ট্র্যাটোস্ফিয়ারের সর্বশেষ সীমাকে কী বলা হয় ?

Ans: মেসোপজ । 

  1. মেরুজ্যোতি বা মেরুপ্রভা কোন্ বায়ুমণ্ডলীয় স্তরে দেখা যায় ?

Ans: আয়নোস্ফিয়ার ।

  1. কোন্ স্তর সূর্য থেকে আগত রঞ্জন রশ্মি ও গামা রশ্মি শোষণ করে ?

Ans: আয়নোস্ফিয়ার ।

  1. বায়ুমণ্ডলের ঊর্ধ্বতম স্তর কোন্‌টি ?

Ans: ম্যাগনেটোস্ফিয়ার । 

  1. হোমোস্ফিয়ারের অন্তর্গত বায়ুমণ্ডলীয় স্তর কোনগুলি ?

Ans: ট্রপোস্ফিয়ার , স্ট্র্যাটোস্ফিয়ার ও মেসোস্ফিয়ার ।

  1. হেটেরোস্ফিয়ারের অন্তর্গত বায়ুমণ্ডলীয় স্তর কী কী ?

Ans: আয়নোস্ফিয়ার , এক্সোস্ফিয়ার ও ম্যাগনেটোস্ফিয়ার । 

  1. বায়ুমণ্ডলের কোন্ কোন্ স্তরের উচ্চতা বৃদ্ধিতে উন্নতা কমে যায় ?

Ans: বায়ুমণ্ডলের ট্রপোস্ফিয়ার ও মেসোস্ফিয়ার স্তরের উচ্চতা বৃদ্ধিতে উন্নতা কমে যায় ।

  1. ট্রপোস্ফিয়ারের সীমানা নির্দেশ করো ।

Ans: ভূপৃষ্ঠ থেকে ঊর্ধ্বে নিরক্ষীয় অঞ্চলে ১৮ কিমি ও মেরুতে ৮ কিমি । 

 

মাধ্যমিক দশম শ্রেণীর ভূগোল প্রশ্ন ও উত্তর

MCQ | বায়ুর স্তরবিন্যাস (বায়ুমণ্ডল – দ্বিতীয় অধ্যায়) 

সংক্ষিপ্ত উত্তরভিত্তিক প্রশ্নোত্তর  

  1. স্বাভাবিক উয়তা হ্রাসের বিধি বা ল্যাপস রেট কাকে বলে ?

Ans: টুপোস্ফিয়ারে উচ্চতা বাড়ার সাথে সাথে উয়তা ৬.৪ ° সেলসিয়াস / কিমি হারে হ্রাস পায় । একেই বলে Normal Lapse Rate I

  1. ট্রপোস্ফিয়ারের নামকরণের কারণ কী ?

Ans: গ্রিক শব্দ ” Tropos’- এর অর্থ ‘ অশাস্ত ‘ এবং ‘ Sphere’ এর অর্থ অঞ্চল । বায়ুমণ্ডলের এই স্তর বায়ুমণ্ডল গঠনকারী উপাদানগুলির প্রভাবে সর্বদা অশান্ত থাকে বলে একে Troposphere নামকরণ করা হয়েছে ।

  1. ট্রপোপজ ( Tropopause ) কী ? 

Ans: ট্রপোস্ফিয়ারের ঊর্ধ্বে ৩ কিমি পর্যন্ত অংশে উন্নতা একই থাকে— হ্রাস বা বৃদ্ধি কিছুই ঘটে না । একে ট্রপোপজ ( ‘ Pause ’ অর্থ ‘ থামা ’ ) বলে । ট্রপোপজ হল ট্রপোস্ফিয়ার ও স্ট্র্যাটোস্ফিয়ারের সীমারেখা ।

  1. স্ট্র্যাটোস্ফিয়ার ( Stratosphere ) কাকে বলে ?

Ans: ট্রপোস্ফিয়ার – এর ওপরের ১৮–৫০ কিলোমিটার উচ্চতা পর্যন্ত বিস্তৃত বায়ুস্তরকে স্ট্র্যাটোস্ফিয়ার বা শান্তমণ্ডল বলে । 

  1. স্ট্যাটোপজ ( Stratopause ) কী ? 

Ans: ঊর্ধ্বে ৫০ – ৫৫ কিমি অংশে স্ট্র্যাটোস্ফিয়ার ও মেসোস্ফিয়ারের সীমারেখা হল স্ট্র্যাটোপজ ।

  1. মেসোস্ফিয়ার ( Mesosphere ) কাকে বলে ?

Ans: স্ট্যাটোপজের ঊর্ধ্বে ভূপৃষ্ঠ থেকে ৮০ কিমি পর্যন্ত উচ্চতাযুক্ত স্থান পর্যন্ত যে অংশের উন্নতা কমতে থাকে , তাকে মেসোস্ফিয়ার বলে ।

  1. অরোরা বোরিওলিস ও অরোরা অস্ট্রালিস কী ?

Ans: আয়নোস্ফিয়ারে রঞ্জনরশ্মি ও অতিবেগুনি রশ্মির সংঘাতে আয়ন বা তড়িদাহত অণুর সৃষ্টি হয় যা উত্তর মেরুতে মেরুজ্যোতি বা আলোকপ্রভা সৃষ্টি করে একে অরোরা বোরিওলিস বলে । আয়নোস্ফিয়ারে তড়িদাহত অণুর চৌম্বক বিক্ষেপের ফলে পৃথিবীর দক্ষিণ মেরুতে মেরুপ্রভার সৃষ্টি হয় তাকে বলে অরোরা অস্ট্রালিস ।

  1. আয়নোস্ফিয়ারের গুরুত্ব কী ?

Ans: আয়নোস্ফিয়ারের গুরুত্ব হল— ( i )

Ans: বৃদ্ধির সাথে উন্নতা দ্রুতহারে বাড়ে এবং থার্মোস্ফিয়ারের ঊর্ধ্বে উন্নতা হয় ১২০০ সে . – এর বেশি । ( ii ) বায়ুর ঘনত্ব খুবই কম । ( iii ) অতিবেগুনি ও রঞ্জন রশ্মি এই স্তরে শোষিত হয় । ( iv ) বস্তুকণা আয়নিত আছে বলেই বেতার তরঙ্গ এই স্তর থেকে প্রতিফলিত হয় । ( v ) অরোরা বা মেরুপ্রভা এই স্তরে সৃষ্টি হয় । 

জেনে রাখো : মৌক্তিক মেঘ কী ? 

শীতকালে অ্যান্টার্কটিকা ঊর্ধ্বাংশে জলীয় বাষ্প প্রবেশ করে বর্ণময় মেঘের সঞ্চার ঘটায় । একেই বলে মৌক্তিক মেঘ ( ‘ nacreous cloud ‘ or ‘ mother of pearl ) | 

নৈশদ্যুতি মেঘ ( Noctilucent cloud ) কী ? 

মেসোস্ফিয়ারে সৃষ্ট হালকা মেঘকে নৈশদ্যুতি মেঘ বলে ।

  1. বায়ুমণ্ডলের নিম্নস্তর কোনগুলি ? 

Ans: নিম্নস্তরগুলি হল — ট্রপোস্ফিয়ার , উত্তর বায়ুমণ্ডলের স্ট্র্যাটোস্ফিয়ার ও মেসোস্ফিয়ার ।

  1. ওজোন ( Ozone ) কী ? 

Ans: ওজোন ( গ্রিক শব্দ ‘ Ozo ‘ থেকে ‘ Ozone ‘ শব্দের , উৎপত্তি , যার অর্থ ‘ Smell ‘ বা গল্প ) হল হালকা নীলাভ আঁশ গন্ধযুক্ত একটি গ্যাস , যার রাসায়নিক সংকেত O .

  1. ভ্যান অ্যালেন বিকিরণ বলয় কী ?

Ans: নিরক্ষীয় অঞ্চলের দুটি ম্যাগনেটোপজ বলয়কে ভ্যান অ্যালেন বিকিরণ বলয় বলে ।

  1. ওজোনস্তর কাকে বলে ?

Ans: স্ট্র্যাটোস্ফিয়ারের নিম্নাংশে ( ১৫–৩০ কিমি উচ্চতায় ) ওজোন গ্যাসের ঘনত্ব সর্বাধিক । বায়ুমণ্ডলের এই অংশটি হল ওজোনস্তর ।

  1. ওজোনস্তরের অবস্থান লেখো ।

Ans: স্ট্র্যাটোস্ফিয়ারের নিম্নাংশে প্রায় ১৫–৩০ কিমি উচ্চতার মধ্যবর্তী স্থানে ওজোনস্তরের অবস্থান লক্ষ করা যায় । বিশেষ কথা :: ওজোন গ্যাসের অস্তিত্বের কথা প্রথম । বলেন জার্মান রসায়নবিদ সি . এফ . স্কোনবি এবং Oz সংকেতের আবিষ্কারক জে . এল . সোরেত । ওজোন ঘনত্ব মাপার একক ডবসন , স্ট্র্যাটোস্ফিয়ারে ওজোনের ঘনত্ব ২০০ ডবসন হলে সেখানে ওজোন হোল সৃষ্টি হয়েছে বলে ধরা হয় ।

  1. ওজোন ধ্বংসকারী গ্যাসগুলির নাম লেখো ।

Ans: ওজোন ধ্বংসকারী গ্যাসগুলি হল ক্লোরোফ্লুরোকার্বন ( CFC ) , হ্যালন , মিথেন এবং নাইট্রাস অক্সাইড ।

  1. ওজোন গহ্বর ( Ozone Hole ) কী ?

Ans: যেখানে স্ট্র্যাটোস্ফিয়ারের ওজোনের ঘনত্ব ২০০ ডবসন ইউনিট – এর কম এবং সেখান দিয়ে অতিবেগুনি রশ্মি প্রবেশ করে । তা হল ওজোন হোল বা ওজোন গহ্বর । অ্যান্টার্কটিকা অঞ্চলে ওজোন গহ্বর তৈরি হয়েছে ।

  1. সমতাপ অঞ্চল ( Isotherm Zone ) কাকে বলে ?

Ans: ট্রপোস্ফিয়ারের ঊর্ধ্বে প্রায় ৩ কিমি উচ্চতা পর্যন্ত অংশে উন্নতার হ্রাস বা বৃদ্ধি ঘটে না । উচ্চতা বৃদ্ধি পেলেও উয়তা ব অপরিবর্তিত থাকে বলেই একে সমতাপ অঞ্চল বলে ।

মাধ্যমিক দশম শ্রেণীর ভূগোল প্রশ্ন ও উত্তর

  বায়ুর স্তরবিন্যাস (বায়ুমণ্ডল – দ্বিতীয় অধ্যায়) 

সংক্ষিপ্ত ব্যাখ্যাধর্মী প্রশ্নোত্তর  

  1. ট্রপোস্ফিয়ার কেন ক্ষুষ্মমণ্ডল বলা হয় ?

Ans: আবহাওয়া ও জলবায়ুর উপাদানগুলি অর্থাৎ ধূলিকণা , জলীয় বাষ্প , মেঘ প্রভৃতি ট্রপোস্ফিয়ারেই অবস্থান করে । এগুলির প্রভাবে ট্রপোস্ফিয়ারে ঝড় – ঝঞ্ঝা , কুয়াশা , বৃষ্টি , তুষারপাত প্রভৃতি ঘটে অর্থাৎ ঘনীভবনের প্রক্রিয়া ট্রপোস্ফিয়ারেই কার্যকর । আবহাওয়া ও জলবায়ুর উপাদানগুলির প্রভাবে ট্রপোস্ফিয়ার সর্বদাই অশাস্ত থাকে বলেই ট্রপোস্ফিয়ারকে ‘ ক্ষুদ্দমন্ডল ‘ বলে । 

  1. ট্রপোস্ফিয়ারের বৈশিষ্ট্যগুলি কী কী ?

Ans:  ট্রপোস্ফিয়ারের বৈশিষ্ট্যগুলি হল 7 ( i ) এই স্তরের প্রধান বৈশিষ্ট্য হল উচ্চতা বৃদ্ধির সাথে সাথে প্রতি কিমি উচ্চতায় ৬.৪ সে . হারে উয়তা হ্রাস পায় – একেই নর্ম্যাল ল্যাপরেট বা স্বাভাবিক উন্নতা হ্রাসের বিপি বলে । তবে মেরু অঞ্চলে মেরু অঞ্চল সারাবছর বরফে ঢাকা থাকে বলে কিছুটা উন্নতার বৈপরীত্য ঘটে । 

( ii ) নিরক্ষীয় অঞ্চলে ট্রপোস্ফিয়ারের ঊর্ধ্বাংশের উন্নতা থাকে । -৮০ ° সে . এবং মধ্য অক্ষাংশে –৫৮ ° সে .। 

( iii ) মোট গ্যাসীয় ভরের ৭৫ শতাংশ রয়েছে এই স্তরে । কেবলমাত্র ট্রপোস্ফিয়ারে জলীয়বাষ্প , ধূলিকণা ও মেঘ রয়েছে বলেই আবহাওয়া ও জলবায়ুর যাবতীয় ঘটনা এই স্তরেই ঘটে । তাই একে ‘ ক্ষুখমণ্ডল বলে । 

( iv ) বায়ুদূষণকারী প্রায় সমস্ত পদার্থই এই স্তরে অবস্থান করে । 

( v ) টুপোস্ফিয়ারে ২ কিমি উচ্চতা পর্যন্ত ভূপ্রকৃতি বায়ুকে বাধা দেয় বলে বায়ুর গতিবেগ কম হয় , কিন্তু তারপর গতিবেগ ক্রমশ বাড়তে থাকে ।

  1. স্ট্র্যাটোস্ফিয়ারকে কেন শাশুমণ্ডল বলা হয় ? 

অথবা , স্ট্যাটোস্ফিয়ারে জেট প্লেন যাতায়াত করে কেন ?

Ans: স্ট্র্যাটোস্ফিয়ার স্তরে আবহাওয়া ও জলবায়ুর বিভিন্ন উপাদান , যেমন — বায়ুপ্রবাহ , আর্দ্রতা , মেঘ , ধূলিকণা , কুয়াশা প্রভৃতি থাকে না । ঘনীভবন প্রক্রিয়া কার্যকর নয় বলে আবহাওয়া ও জলবায়ুর বিভিন্ন ঘটনাও এখানে ঘটে না । তাই এই অংশে সর্বদাই শাস্তভাব বিরাজ করে । সর্বদা শাস্তভাব বিরাজ করে বলেই অতি দ্রুতগামী জেট প্লেন কোনোরূপ বাধার সম্মুখীন হয় না , তাই জেট প্লেনগুলি এই স্তরে যাতায়াত করে ।

  1. স্ট্র্যাটোস্ফিয়ারের বৈশিষ্ট্যগুলি লেখো ।

Ans: স্ট্যাটোস্ফিয়ার স্তরের বৈশিষ্ট্যগুলি হল— ( i ) এই স্তরের প্রধান যেখানে উচ্চল উচ্চতা বৈশিষ্ট্য হল উচ্চতা বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে উন্নতা বৃদ্ধি । টপোপজে যেখানে উয়তা থাকে – ৮০ ° সে . , সেখান থেকে স্ট্র্যাটোস্ফিয়ারের ঊর্ধ্বে উদ্ধৃতা বেড়ে হয় প্রায় ৪ ° সে .। 

( ii ) স্ট্যাটোস্ফিয়ারের ঊর্ধ্বাংশে ওজোন ( O ) গ্যাসের ঘনত্ব সবচেয়ে বেশি বলে এই স্তরকে ওজোনস্তরও ( ২০ – ৫০ কিমি ) বলে । ক্ষতিকারক অতিবেগুনি রশ্মি এই স্তরে শোষিত হয় বলেই এই অংশে উন্নতা বাড়ে । 

( iii ) এই স্তরে বায়ুপ্রবাহ , জলীয়বাষ্প , মেঘ প্রভৃতি থাকে না বলে একে শান্তমণ্ডল ’ বলে । দ্রুতগামী জেট প্লেনগুলি এই স্তরেই যাতায়াত করে । তবে অ্যান্টার্কটিকা অঞ্চলে শীতকালে মাঝে মাঝে সামান্য মেঘের সঞ্চার ঘটে । একে মৌক্তিক মেঘ বলে । 

  1. মেসোস্ফিয়ারের বৈশিষ্ট্যগুলি লেখো ।

Ans: মেসোস্ফিয়ারের বৈশিষ্ট্যগুলি হল— ( i ) এই স্তরের উচ্চতা বৃদ্ধির সঙ্গে উন্নতা কমতে থাকে । ( ii ) এখানে বায়ুর চাপ খুব কম থাকে । ( iii ) মহাজাগতিক জ্বলন্ত উল্কা এই স্তরে পুড়ে ছাই হয়ে যায় ।। ( iv ) এটি বায়ুস্তরের সর্বশেষ শীতল স্তর । এরপরে উন্নতা আর কমে না , বাড়তে থাকে । প্রশ্ন ৬ আয়নোস্ফিয়ারের বৈশিষ্ট্যগুলি লেখো । উত্তর আয়নোস্ফিয়ারের বৈশিষ্ট্যগুলি হল : ( i ) এই স্তরে উচ্চতা বৃদ্ধির সাথে উন্নতা ক্রমবর্ধমান হারে বাড়ে । নীচের দিকে ৮৫–৫০০ কিমি পর্যন্ত ক্রমান্বয়ে বাড়ে । ৫০০ কিমি উচ্চতায় উন্নতা হয় ১২০০ ° সেন্টিগ্রেড , একে বলে থার্মোস্ফিয়ার । ৫০০-৭৫০ কিমি উচ্চতায় উন্নতা একইরকম বাড়ে না একে বলে সমতাপ অঞ্চল । ( ii ) প্রখর সূর্যকিরণের জন্য হালকা বায়ু গঠিত এই স্তরের বায়ুমণ্ডলের মোট ভরের মাত্র ০.৫ শতাংশ আছে । প্রশ্ন ৭ ম্যাগনেটোস্ফিয়ারের বৈশিষ্ট্য লেখো । উত্তর ম্যাগনেটোস্ফিয়ারের বৈশিষ্ট্যগুলি হল ( i ) সূর্য থেকে আগত সৌরবায়ু এই স্তরে আবদ্ধ হয় । যায় , তাকে ম্যাগনেটোপজ ( magnetopause ) বলে । ( iii ) নিরক্ষীয় অঞ্চলের দুটি ম্যাগনেটোপজ বলয়কে ভ্যান অ্যালেন বিকিরণ বলয় বলা হয় ।। ( iv ) এই বায়ুমণ্ডলকে বেষ্টন করে একটি প্রোটন ও ইলেকট্রনের চৌম্বকক্ষেত্র আছে । ( v ) মুক্ত আয়নের মিশ্রিত স্তর এটি । ( vi ) এই বায়ুস্তর গোলীয় আকৃতির হয় ।

  1. ওজোনস্তরের গুরুত্ব কী ? অথবা , ওজোনস্তর কেন এত গুরুত্বপূর্ণ ?

Ans: বায়ুমণ্ডলের ২০–৩৫ কিমির মধ্যে ওজোনস্তরের অবস্থানের কারণেই সূর্য থেকে আগত ক্ষতিকারক অতিবেগুনি রশ্মি শোষিত হচ্ছে । ফলে ভূপৃষ্ঠ ও বায়ুমণ্ডলের নিম্নস্তর অধিক তাপমাত্রার হাত থেকে রক্ষা পাচ্ছে । তাই বিজ্ঞানীদের মতে , ‘ Without O

3 layer bilogical furnace will turn into blast furnace .”

   বর্তমানে ক্লোরোফ্লুরোকার্বন ( CFC ) হ্যালোন , নাইট্রাস অক্সাইড প্রভৃতি গ্যাসের প্রভাবে ওজোনস্তর ধীরে ধীরে ধ্বংস হচ্ছে । অ্যান্টার্কটিকা মহাদেশের ঠিক ওপরে বায়ুমণ্ডলে ওজোন গহ্বর ( Ozone hole ) সৃষ্টি হয়েছে । ওজোনস্তর ধ্বংসের প্রভাবে পৃথিবীর তাপমাত্রা ধীরে ধীরে বাড়ছে , মানুষের শরীরে বিভিন্ন রোগের প্রাদুর্ভাব হচ্ছে ও বাস্তুতন্ত্রের পরিবর্তন ঘটছে ।

জেনে রাখো : ওজোন গ্যাসের অস্তিত্বের কথা প্রথম বলেন জার্মান রসায়নবিদ জে . এল . স্লোনবি এবং সংকেতটি ( O

3 ) উদ্ভাবন করেন । জে . এল . সোরেট । ওজোনস্তর সম্পর্কে প্রথম বিস্তৃত ব্যাখ্যা দেন ব্রিটিশ পদার্থ ও আবহবিদ জি . বি . এম . ডবসন । তাঁর নামানুসারে ওজোন ঘনত্ব মাপার একক তুল ডবসন একক ।

  1. জোনস্তর বিনাশের কারণ কী ?

Anss: বায়ুমণ্ডলে ওজোন ( O ) গঠন ( O₂ + O = 03 ) ও বিনাশ ( 3 O₂ + O ) এক প্রাকৃতিক নিয়ম । পূর্বে দুটি প্রক্রিয়াই সমানহারে কার্যকর হওয়ায় তেমন সমস্যার সৃষ্টি হয়নি । কিন্তু বর্তমানে গঠনের থেকে ধ্বংসের মাত্রা বৃদ্ধি পাওয়ায় সমস্যা সৃষ্টি হচ্ছে । ওজোনস্তর ধ্বংসের কারণগুলি হল . 

( i ) ক্লোরোফ্লুরোকার্বন ও হ্যালন : রেফ্রিজারেটর , শীততাপ যন্ত্র প্রভৃতি এবং ফোম ও প্লাস্টিক উৎপাদনের সময় নির্গত CFCs WHAT WE P ওজোন গ্যাসকে ধ্বংস করে । 

( ii ) সালফেট কণা : কারখানার চিমনি ও আগ্নেয়গিরি দিয়ে নির্গত সালফেট কণা ওজোনস্তরকে ধ্বংস করছে । 

( iii ) নাইট্রোজেন অক্সাইড : ঊর্ধ্বাকাশে অতিদ্রুতগামী জেট বিমান থেকে নির্গত নাইট্রোজেন অক্সাইডের মাধ্যমে ওজোনস্তর ধ্বংস হচ্ছে ।

  1. ওজোনস্তর ধ্বংসের ফলাফল লেখো ।

Ans: জলবায়ুগত পরিবর্তন বায়ুমণ্ডলে O , ক্ষয় হলে UV Ray শোষণ কমে যাবে সরাসরি ভূপৃষ্ঠে ও পতিত হবে ফলে পৃথিবী পৃষ্ঠের তাপমাত্রা বাড়বে । যার অনিবার্য ফলস্বরূপ ঘটবে বিশ্ব উয়ায়ন বা Global Warming যার ফলে যুগান্তসঞ্জিত বরফ গলবে , সমুদ্র জলতলে উত্থান ঘটবে ।

( ii ) বাস্তুতান্ত্রিক প্রভাব : UV Ray- র সঙ্গে তড়িৎ চুম্বকীয় রশ্মির মাধ্যমে ভূপৃষ্ঠে যে শক্তি এসে পৌঁছোবে তাতে আবহাওয়ার উয়তা বৃদ্ধি পাবে । জীবজন্তুর জৈবিক আচরণে পরিবর্তন ঘটবে । শারীরবৃত্তীয় বৈশিষ্ট্যে তারতম্য ঘটবে । বহু প্রাণী জীবের ধ্বংস হবে । বৃষ্টির পরিমাণ বাড়বে , বাষ্পীভবন বাড়বে । ফলে বাস্তুতান্ত্রিক চক্রগুলি বিঘ্নিত হবে । 

( iii ) মানবশরীরে পরিবর্তন : UV Ray সরাসরি ভূপৃষ্ঠে পৌঁছোলে মানবশরীরে নানা রোগের প্রবণতা বাড়বে । ত্বকে ক্যানসার , চোখের ছানি , অন্ধত্ব বাড়বে । জীবের বংশগতির ধারায় পরিবর্তন ঘটবে । বন্ধ্যাত্বের প্রবণতা বাড়বে ।

মাধ্যমিক দশম শ্রেণীর ভূগোল প্রশ্ন ও উত্তর

MCQ | বায়ুর স্তরবিন্যাস (বায়ুমণ্ডল – দ্বিতীয় অধ্যায়) 

রচনাধর্মী প্রশ্নোত্তর  

1. বায়ুমণ্ডলের স্তরগুলির সংক্ষিপ্ত ব্যাখ্যা দাও । 

অথবা , বায়ুমণ্ডলের স্তরগুলির নাম লিখে দুটি স্তরের ব্যাখ্যা দাও । অথবা , বায়ুমণ্ডলের ট্রপোস্ফিয়ার ও স্ট্র্যাটোস্ফিয়ার স্তর সম্পর্কে সংক্ষেপে লেখো ।

Ans: উন্নতার তারতম্যের ওপর ভিত্তি করে বায়ুমণ্ডলকে প্রধানত ৭ ভাগে ভাগ করা যায় , যথা : 

( 1 ) ট্রপোস্ফিয়ার ( Troposphere ) : ভূপৃষ্ঠ থেকে ১৮ কিলোমিটার পর্যন্ত ঊর্ধ্বের বায়ুস্তরকে ঘনমণ্ডল বা ট্রপোস্ফিয়ার বলে । মেরু অঞ্চলে এর উচ্চতা প্রায় ৮ কিমি । বায়ুমণ্ডলের এই স্তরে আমরা বাস করি । ও এই স্তরের বায়ুতে ধূলিকণা , জলীয় বাষ্প , কুয়াশা , মেঘ প্রভৃতি থাকে । এই জন্য এই স্তরে ঝড় , বৃষ্টি , শিলাবৃষ্টি , বজ্রপাত প্রভৃতি ঘটনাগুলি ঘটতে দেখা যায় । বায়ুমণ্ডলের মোট গ্যাসীয় ভরের প্রায় ৭৫ % গ্যাসীয় পদার্থ এই স্তরে থাকায় এখানে বায়ুর ঘনত্ব ও বায়ুচাপ সবচেয়ে বেশি । ট্রপোস্ফিয়ারের ঊর্ধ্বে ৩ কিমি পর্যন্ত অংশে উন্নতার হ্রাসবৃদ্ধি কিছুই হয় না বলে একে ট্রিপোপজ বলে [ পজ ( Pause ) – এর অর্থ থামা ] । ট্রপোপজের অর্থ হল ‘ স্তব্ধ যে স্তর ‘ । টুপোপজকে ট্রপোস্ফিয়ার ও স্ট্যাটোস্ফিয়ারের সীমারেখাও বলা হয় । 

( ২ ) স্ট্র্যাটোস্ফিয়ার ( Stratosphere ) : 1. ট্রপোস্ফিয়ার – এর ওপরের ১৮–৫০ কিলোমিটার উচ্চতা পর্যন্ত বিস্তৃত বায়ুস্তরকে স্ট্যাটোস্ফিয়ার বা শান্তমণ্ডল বলে । 2.  স্ট্যাটোস্ফিয়ার স্তরে ধূলিকণা , মেঘ প্রভৃতি না থাকায় এখানে ঝড় , বৃষ্টি , বজ্রপাত প্রভৃতি প্রাকৃতিক ঘটনা ঘটে । না । 3. স্ট্যাটোস্ফিয়ার স্তরে বায়ুপ্রবাহ , মেঘ , ঝড়বৃষ্টি ও বজ্রপাত দেখা যায় না বলে দ্রুতগতিসম্পন্ন জেট বিমানগুলি ঝড়বৃষ্টি এড়িয়ে চলার জন্য স্ট্যাটোস্ফিয়ারের মধ্য দিয়ে চলাচল করে । জেট বিমানগুলি সাধারণত এই বায়ুস্তরের মধ্য দিয়ে চলার সময় আকাশে সাদা দাগ রেখে যায় । ভূপৃষ্ঠ থেকে ৫০-৫৫ কিমি ঊর্ধ্বে স্ট্যাটোস্ফিয়ার ও মেসোস্ফিয়ারের সীমারেখা স্ট্যাটোপজ নামে পরিচিত ।

( ৩ ) মেসোস্ফিয়ার ( Mesosphere ) : স্ট্যাটোপজের ওপর ভূপৃষ্ঠ থেকে প্রায় ৮০ কিমি উচ্চতাযুক্ত স্থান পর্যন্ত যে অংশের উন্নতা কমতে থাকে , তাকে মেসোস্ফিয়ার বলে । ও এই স্তরে বায়ুর তাপমাত্রা সবচেয়ে কম থাকে ( কমবেশি -৯৩ ° সেলসিয়াস ) ।

৩. মহাকাশ থেকে যেসব উল্কা পৃথিবীর দিকে ছুটে আসে সেগুলো এই স্তরের মধ্যে এসে পুড়ে ছাই হয়ে যায় । স্ট্র্যাটোস্ফিয়ারের শেষপ্রান্তে স্ট্র্যাটোস্ফিয়ার ও মেসোস্ফিয়ারের সীমারেখা মেসোপজ নামে পরিচিত । 

( ৪ ) আয়োনোস্ফিয়ার ( Tonosphere ) : মেসোপজের পর প্রায় ৫০০ কিমি উচ্চতা পর্যন্ত এই স্তরের বায়ু আয়নিত অবস্থায় রয়েছে । তড়িৎযুক্ত কণা বা আয়নের উপস্থিতির জন্য এই স্তরকে আয়োনোস্ফিয়ার বলা হয় । মেরুজ্যোতি বা মেরুপ্রভা এই স্তরেই দেখা যায় । এই স্তরের উপাদানগুলি আয়নিত অবস্থায় থাকে বলে ভূপৃষ্ঠে সৃষ্ট বেতার তরঙ্গগুলি এই আয়োনোস্ফিয়ারে প্রতিহত হয়ে , আবার পৃথিবীতে ফিরে আসে , ফলে পৃথিবীর এক প্রান্ত থেকে অপর প্রান্তে বেতার সংযোগ রক্ষা করা যায় । 

( ৫ ) এক্সোস্ফিয়ার ( Exosphere ) : আয়নমণ্ডলের ওপরের দিকে ৬০০–১,৫০০ কিলোমিটার পর্যন্ত বিস্তৃত হালকা বায়ুস্তরকে বহিঃমণ্ডল বা এক্সোস্ফিয়ার বলে । এই স্তরে হাইড্রোজেন ও হিলিয়াম গ্যাসের প্রাধান্য দেখা যায় । এখানে বায়ুর সব উপাদানই আয়নিত অবস্থায় থাকে । ও এক্সোস্ফিয়ার স্তরটি ধীরে ধীরে মহাশূন্যে মিশে গিয়েছে । 

( ৬ ) ম্যাগনেটোস্ফিয়ার ( Magnetosphere ) বহিঃমণ্ডলের ওপরে ১,৫০০-১০,০০০ কিমি উচ্চতা পর্যন্ত বিস্তৃত প্রায় বায়ুশূন্য অঞ্চলটিকে চৌম্বকমণ্ডল বা ম্যাগনেটোস্ফিয়ার বলে । এই স্তরে বায়ুমণ্ডলকে বেষ্টন করে একটি প্রোটন ও ইলেকট্রনের চৌম্বকক্ষেত্র আছে । 

2. বায়ুমণ্ডলের নিম্নস্তরগুলির ব্যাখ্যা দাও ।

Ans: ( ১ ) ট্রপোস্ফিয়ার ( Troposphere ) : 1. ভূপৃষ্ঠ থেকে ১৮ কিলোমিটার পর্যন্ত ঊর্ধ্বের বায়ুস্তরকে ঘনমণ্ডল বা ট্রপোস্ফিয়ার বলে । মেরু অঞ্চলে এর উচ্চতা প্রায় ৮ কিমি । বায়ুমণ্ডলের এই স্তরে আমরা বাস করি । ও এই স্তরের বায়ুতে ধূলিকণা , জলীয় বাষ্প , কুয়াশা , মেঘ প্রভৃতি থাকে । 2. এই জন্য এই স্তরে ঝড় , বৃষ্টি , শিলাবৃষ্টি , বজ্রপাত প্রভৃতি ঘটনাগুলি ঘটতে দেখা যায় । বায়ুমণ্ডলের মোট গ্যাসীয় ভরের প্রায় ৭৫ % গ্যাসীয় পদার্থ এই স্তরে থাকায় এখানে বায়ুর ঘনত্ব ও বায়ুচাপ সবচেয়ে বেশি । ট্রপোস্ফিয়ারের ঊর্ধ্বে ৩ কিমি পর্যন্ত অংশে উষ্ণতার হ্রাসবৃদ্ধি কিছুই হয় না বলে একে টুপোপজ বলে [ পজ ( Pause ) – এর অর্থ থামা ] । ট্রপোপজের অর্থ হল ‘ স্তব্ধ যে স্তর ’ । ট্রপোপজকে ট্রপোস্ফিয়ার ও স্ট্র্যাটোস্ফিয়ারের সীমারেখাও বলা হয় । 

( ২ ) স্ট্র্যাটোস্ফিয়ার ( Stratosphere ) : ট্রপোস্ফিয়ার – এর ওপরের ১৮–৫০ কিলোমিটার উচ্চতা পর্যন্ত বিস্তৃত বায়ুস্তরকে স্ট্র্যাটোস্ফিয়ার বা শান্তমণ্ডল বলে । 

  1. স্ট্র্যাটোস্ফিয়ার স্তরে ধূলিকণা , মেঘ প্রভৃতি না – থাকায় এখানে ঝড় , বৃষ্টি , বজ্রপাত প্রভৃতি প্রাকৃতিক ঘটনা ঘটে না । 1. স্ট্র্যাটোস্ফিয়ার স্তরে বায়ুপ্রবাহ , মেঘ , ঝড়বৃষ্টি ও বজ্রপাত দেখা যায় না বলে দ্রুতগতিসম্পন্ন জেট বিমানগুলি ঝড়বৃষ্টি এড়িয়ে চলার জন্য স্ট্র্যাটোস্ফিয়ারের মধ্য দিয়ে চলাচল করে । জেট বিমানগুলি সাধারণত এই বায়ুস্তরের মধ্য দিয়ে চলার সময় আকাশে সাদা দাগ রেখে যায় । ভূপৃষ্ঠ থেকে ৫০-৫৫ কিমি ঊর্ধ্বে স্ট্র্যাটোস্ফিয়ার ও মেসোস্ফিয়ারের সীমারেখা স্ট্যাটোপজ নামে পরিচিত ।

(৩) মেসোস্ফিয়ার ( Mesosphere ) : স্ট্র্যাটোপজের ওপর ভূপৃষ্ঠ থেকে প্রায় ৮০ কিমি উচ্চতাযুক্ত স্থান পর্যন্ত যে অংশের উন্নতা কমতে থাকে , তাকে মেসোস্ফিয়ার বলে । এই স্তরে বায়ুর তাপমাত্রা সবচেয়ে কম থাকে ( কমবেশি ৯৩ ° সেলসিয়াস ) ।

এ মহাকাশ থেকে যেসব উল্কা পৃথিবীর দিকে ছুটে আসে সেগুলো এই স্তরের মধ্যে এসে পুড়ে ছাই হয়ে যায় । 4. স্ট্যাটোস্ফিয়ারের শেষপ্রান্তে স্ট্র্যাটোস্ফিয়ার ও মেসোস্ফিয়ারের সীমারেখা মেসোপজ নামে পরিচিত । 

3. বায়ুমণ্ডলে ওজোনস্তরের গুরুত্ব , ধ্বংসের কারণ ও ফলাফল লেখো ।

Ans: ওজোনস্তরের গুরুত্ব । এই স্তরে ওজোন গ্যাসের ( O

3 ) একটি স্তর বা পর্দা আছে , যা ভেদ করে সূর্যের অতিবেগুনি রশ্মি ( Ultra Violet Ray ) ও রঞ্জন রশ্মি ( X – ray ) ভূপৃষ্ঠে আসতে পারে না । বায়ুমণ্ডলের ওজোন গ্যাসের স্তর সূর্যের তাপ এবং অতিবেগুনি ও রঞ্জন রশ্মি শোষণ করে নেয় বলে এই স্তরের তাপমাত্রা খুব বেশি হয় । ওজোনোস্ফিয়ার স্তর সূর্য থেকে আসা অত্যন্ত ক্ষতিকারক রশ্মি শোষণ করে নিয়ে পৃথিবীর জীবজগৎকে ধ্বংসের হাত থেকে রক্ষা করে । 

ওজোনস্তরের বিনাশের কারণ : ওজোনস্তর বিনাশে প্রকৃতি ও মানুষ উভয়ই দায়ী হলেও মানুষই প্রধান দোষী । বিগত কয়েক দশক ধরে মানুষের অবিবেচনা – প্রসূত কাজের কারণে বাতাসে ক্লোরোফ্লুরোকার্বন ( প্রধান ওজোন ধ্বংসকারী গ্যাস ) , নাইট্রাস অক্সাইড , হ্যালন , মিথেন , মিথাইল ব্রোমাইড প্রভৃতি গ্যাসের মাত্রাতিরিক্ত বৃদ্ধির কারণেই ওজোনস্তরের বিনাশ ঘটছে । 

ওজোনস্তর ধ্বংসের ফলাফল : 1. জলবায়ুগত পরিবর্তন : বায়ুমণ্ডলে O₂ , ক্ষয় হলে UV Ray শোষণ কমে যাবে সরাসরি ভূপৃষ্ঠে ও পতিত হবে ফলে পৃথিবীপৃষ্ঠের তাপমাত্রা বাড়বে । যার অনিবার্য ফলস্বরূপ ঘটবে বিশ্ব উয়ায়ন বা Global Warming যার ফলে যুগান্তসঞ্চিত বরফ গলবে , সমুদ্র জলতলে উত্থান ঘটবে । ওজোন বিন্যাসে অ্যাসিড বৃষ্টির মাত্রা বাড়বে সাথে ধোঁয়াশার প্রবণতা বাড়বে বলে আশঙ্কা । 

  1. বাস্তুতান্ত্রিক প্রভাব : UV , Ray- র সঙ্গে তড়িৎ চুম্বকীয় রশ্মির মাধ্যমে ভূপৃষ্ঠে যে শক্তি এসে পৌঁছোবে তাতে আবহাওয়ার উষ্ণতা বৃদ্ধি পাবে । জীবজন্তুর জৈবিক আচরণে পরিবর্তন ঘটবে । শারীরবৃত্তীয় বৈশিষ্ট্যে তারতম্য ঘটবে । বহু প্রাণী জীবের ধ্বংস হবে । বৃষ্টির পরিমাণ বাড়বে , বাষ্পীভবন বাড়বে । ফলে বাস্তুতান্ত্রিক চক্রগুলি বিঘ্নিত হবে । জলচক্রে পরিবর্তন ঘটবে । স্ট্র্যাটোস্ফিয়ারের ওজোনস্তর হ্রাস পেলে উদ্ভিদের বৃদ্ধি ও ঘনত্ব বাড়বে । 
  2. মানবশরীরে পরিবর্তন : UV Ray সরাসরি ভূপৃষ্ঠে পৌঁছোলে মানবশরীরে নানা রোগের প্রবণতা বাড়বে । ত্বকে ক্যানসার , চোখের ছানি , অন্ধত্ব বাড়বে । জীবের বংশগতির ধারায় পরিবর্তন ঘটবে । বন্ধ্যাত্বের প্রবণতা বাড়বে । ধোঁয়াশার প্রবণতা বাড়লে মানুষের শ্বাসকষ্ট , ব্রংকাইটিসের প্রবণতা বাড়বে ।
  3. প্রাণীদের উপর প্রভাব : ওজোনস্তর ধ্বংসে অতিবেগুনি রশ্মির আগমনে প্ল্যাংকটনের মৃত্যুহার বাড়বে , যার প্রভাব পড়বে সামুদ্রিক মাছের উপর , প্রচুর সূক্ষ্মাতিসূক্ষ্ম জীবাণু ধ্বংস হবে । প্রাণীজগতের প্রজনন ও রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমবে । প্রাণীজগতের ভারসাম্য বিনষ্ট হবে । 
  4. উদ্ভিদের উপর প্রভাব : সালোকসংশ্লেষের হার বেড়ে যাওয়ায় উদ্ভিদজগতের ভারসা্য বিনষ্ট হবে , গাছের পাতা , ফুল , ফল বিনষ্ট হওয়ার সম্ভাবনা বাড়বে , মৃত্তিকার আর্দ্রতা কমে উদ্ভিদ ধ্বংস হবে ।
SOURCE-BS

 

©kamaleshforeducation.in(2023)

 

 

মাধ্যমিক দশম শ্রেণীর ভূগোল-বায়ুমণ্ডলে তাপ, উষ্ণতা ও বিশ্ব উষ্ণায়ন-X

 

 

মাধ্যমিক দশম শ্রেণীর ভূগোল প্রশ্ন ও উত্তর 

বায়ুমণ্ডলে তাপ, উষ্ণতা ও বিশ্ব উষ্ণায়ন

(বায়ুমণ্ডল – দ্বিতীয় অধ্যায়) 

 

মাধ্যমিক দশম শ্রেণীর ভূগোল প্রশ্ন ও উত্তর  

MCQ | বায়ুমণ্ডলে তাপ, উষ্ণতা ও বিশ্ব উষ্ণায়ন

(বায়ুমণ্ডল – দ্বিতীয় অধ্যায়)  

  1. সূর্যকিরণের যে – অংশ পৃথিবীকে উত্তপ্ত করতে পারে না তাকে বলে –

(A) অ্যালবেডা 

(B) Solar Constant

(C) ইনসোলেশন 

(D) Heat Budget 

Ans: (A) অ্যালবেডা

  1. পৃথিবীর অ্যালবেডোর পরিমাণ— 

(A) ৬৬ % 

(B) ৩৪ %

(C) ১৯ %

(D) ৪৭ %

Ans: (B) ৩৪ %

  1. কার্যকারী সৌর বিকিরণের মোট পরিমাণ –

(A) ৪৭ % 

(B) ৩৪ % 

(C) ৬৬ % 

(D) ১৯ %

Ans: (C) ৬৬ %

  1. কার্যকারী সৌর বিকিরণের যে অংশ সরাসরি পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলকে উত্তপ্ত করে তার পরিমাণ –

(A) ৪৭ %

(B) ১৫ %

(C) ৬৬ %

(D) ৩৪ % 

Ans: (B) ১৫ %

  1. কার্যকারী সৌর বিকিরণের যে – অংশ ভূপৃষ্ঠ সরাসরি শোষণ করে তার পরিমাণ –

(A) ১৯ % 

(B) ৬৬ %

(C) ৪৮ % 

(D) ৩৪ % 

Ans: (C) ৪৮ %

  1. পৃথিবীর অ্যালবেডোর যে – অংশ মেঘ দ্বারা প্রতিফলিত হয় তার পরিমাণ –

(A) ৭ % 

(B) ২ %

(C) ২৫ %

(D) ৩৪ %

Ans: (C) ২৫ %

  1. পৃথিবীর অ্যালবেডোর যে অংশ বায়ুস্থিত ধূলিকণা দ্বারা প্রতিফলিত হয় তার পরিমাণ –

(A) ৭ % 

(B) ৩৪ % 

(C) ২৫ %

(D) ৩ %

Ans: (D) ৩ %

  1. পাশাপাশি অবস্থিত অণুগুলির সংস্পর্শের মাধ্যমে উত্তাপের অপসারণ প্রক্রিয়াকে বলে –

(A) পরিচলন 

(B) বিকিরণ 

(C) অ্যাডভেকশন 

(D) পরিবহণ

Ans: (D) পরিবহণ

  1. যে পদ্ধতিতে তাপ কোনো জড়মাধ্যম ছাড়াও ঠান্ডা স্থানে সঞ্চালিত হয় তাকে বলে –

(A) পরিবহণ 

(B) বিকিরণ 

(C) অ্যাডভেকশন

(D) পরিচলন

Ans: (C) অ্যাডভেকশন

  1. চন্দ্র যে পদ্ধতিতে সূর্যকিরণ বায়ুমণ্ডল ভেদ করে সরাসরি ভূপৃষ্ঠকে উত্তপ্ত করে তাকে বলে –

(A) পরিচলন 

(B) পরিবহণ 

(C) বিকিরণ 

(D) অ্যাডভেকশন

Ans: (C) বিকিরণ

  1. নীচ থেকে উপরে ও উপর থেকে নীচে বায়ু চলাচলের মাধ্যমে বায়ুমণ্ডল উষ্ণ হবার পদ্ধতিকে বলে –

(A) পরিবহণ

(B) পরিচলন 

(C) বিকিরণ 

(D) তাপশোষণ

Ans: (B) পরিচলন

  1. বায়ুর তাপমাত্রা মাপার যন্ত্রের নাম –

(A) থার্মোমিটার 

(B) হাইগ্রোমিটার 

(C) ফারেনহাইট 

(D) অ্যানিমোমিটার 

Ans: (A) থার্মোমিটার

  1. ফারেনহাইট স্কেলের হিমাঙ্ক –

(A) ১২ ° F 

(B) ২১২ ° F

(C) ৩২ ° F 

(D) 0 ° F 

Ans: (C) ৩২ ° F

  1. সেন্টিগ্রেড স্কেলের স্ফুটনাঙ্ক – 

(A) ৩২ ° C

(B) ২১২ ° C

(C) ১০০ ° C

(D) ১২ ° C

Ans: (C) ১০০ ° C

  1. সমান উষ্ণতাযুক্ত স্থানগুলিকে যে রেখার মাধ্যমে যুক্ত করা হয় তাকে বলে –

(A) সমপ্রেষ রেখা 

(B) সমবর্ষণ রেখা ।

(C) সমোন্নতি রেখা

(D) সমষ্ণরেখা 

Ans: (D) সমষ্ণরেখা

  1. ( ২৩ ,১/২ ° – ৬৬ ১ / ২ ° উত্তর অক্ষরেখার মধ্যবর্তী স্থান যে তাপবলয়ের অন্তর্গত তাকে বলে –

(A) উত্তর নাতিশীতোয়মণ্ডল 

(B) দক্ষিণ নাতিশীতোয়মণ্ডল

(C) উত্তর হিমমণ্ডল

(D) উষ্ণমণ্ডল 

Ans: (A) উত্তর নাতিশীতোয়মণ্ডল

  1. ৪৫ ° – ৬৬ ১ / ২ ° পর্যন্ত অঞ্চল— 

(A) শীতল নাতিশীতোয়মণ্ডল 

(B) উষ্ণ নাতিশীতোয়মণ্ডল

(C) উষ্ণমণ্ডল

(D) উত্তর হিমণ্ডলের অন্তর্গত 

Ans: (A) শীতল নাতিশীতোয়মণ্ডল

  1. কোনো নির্দিষ্ট পরিমাণ উষ্ণতায় একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ বায়ুতে উপস্থিত জলীয় বাষ্পের মোট পরিমাণকে বলে – 

(A) আপেক্ষিক

(B) বিশেষ আর্দ্রতা 

(C) সাপেক্ষ

(D) নিরপেক্ষ

Ans: (D) নিরপেক্ষ

  1. প্রতি ৩০০ ফুট উচ্চতায় উষ্ণতা হ্রাস পায়— 

(A) ১ ° F হারে 

(B) ২ ° F হারে

(C) ৩ ° F হারে

(D) ৬.৪ ° F হারে

Ans: (C) ৩ ° F হারে

  1. নির্দিষ্ট উষ্ণতায় নির্দিষ্ট পরিমাণ জলরাশি তার সমপরিমাণ স্থলভাগ অপেক্ষা বেশি তাপ গ্রহণ করে ।

(A) 1/4 গুণ 

(B) 1/3 গুণ

(C) ½ গুন

(D) 1 গুন 

Ans: (A) 1/4 গুণ

  1. দক্ষিণ গোলার্ধের উষ্ণতম মাস হল –

(A) জুলাই 

(B) সেপ্টেম্বর

(C) জানুয়ারি

(D) নভেম্বর

Ans: (C) জানুয়ারি

  1. উত্তর গোলার্ধের শীতলতম মাস হল 

(A) মার্চ

(B) জানুয়ারি 

(C) জুলাই

(D) ডিসেম্বর

Ans: (C) জুলাই

  1. বায়ুমণ্ডলের সবচেয়ে বেশি পরিমাণে যে গ্রিনহাউস গ্যাসের উপস্থিতি লক্ষ করা যায় সেটি হল –

(A) CO²

(B) CFC

(C) NH³

(D) NO²

Ans: (A) CO²

  1. উত্তর গোলার্ধের উষ্ণতম মাস –

(A) ডিসেম্বর

(B) মার্চ

(C) জুলাই

(D) জানুয়ারি

Ans: (C) জুলাই

  1. এল নিনোর সর্বাধিক প্রভাব পরিলক্ষিত হয় –

(A) প্রশান্ত মহাসাগরে

(B) ভারত মহাসাগরে

(C) উত্তর আটলান্টিক মহাসাগরে

(D) দক্ষিণ কুমেরু মহাসাগরে

Ans: (A) প্রশান্ত মহাসাগরে

  1. কোন্‌টি এল নিনো অবস্থায় দেখা যায় ? 

(A) প্রশান্ত মহাসাগরের

(B) প্রশান্ত মহাসাগরের পূর্বে প্রবল বৃষ্টি

(C) প্রশান্ত মহাসাগরের পূর্বে খরা

(D) কোনোটিই নয়

Ans: (B) প্রশান্ত মহাসাগরের পূর্বে প্রবল বৃষ্টি

  1. অন্যতম গ্রিনহাউস গ্যাস মিথেনের প্রধান উৎস হল –

(A) কয়লা

(B) রেফ্রিজারেটর

(C) খনিজ তেল

(D) ধানজমি

Ans: (D) ধানজমি

  1. ভারতের কোন্ শহরটিতে বার্ষিক উষ্ণতার প্রসার বেশি ? 

(A) দিল্লি 

(B) মুম্বাই

(C) কোচিন

(D) চেন্নাই

Ans: (A) দিল্লি

  1. কোন্ পদ্ধতিতে বায়ুমণ্ডল সর্বাধিক উত্তপ্ত হয় ।

(A) পরিচলন

(B) অ্যাডভেকশন

(C) পরিবহণ 

(D) বিকিরণ

Ans: (D) বিকিরণ

  1. নিম্নলিখিত কোন্ মৃত্তিকায় তাপবিকিরণ সর্বাধিক ?

(A) পলি

(B) রেগুর

(C) পডজল

(D) বালি

Ans: (D) বালি

  1. সূর্যের বহিঃপৃষ্ঠের গড় তাপমাত্রা প্রায় –

(A) ৬০০ ° C 

(B) ৬oooºC

(C) ৬০,০০০০ ° C

(D) ৬০,০০০ ° C

Ans: (B) ৬oooºC

  1. নিষ্ক্রিয় সৌরতাপ বলতে কাকে বোঝায় ?

(A) কার্যকারী সৌরবিকিরণ

(B) নিটবিকিরণ

(C) পার্থিব বিকিরণ

(D) পৃথিবীর অ্যালবেডো

Ans: (D) পৃথিবীর অ্যালবেডো

  1. পার্থিব বিকিরণের পরিমাণ কত ?

(A) ৩৪ %

(B) ৪৮ %

(C) ৬৬ %

(D) ৭৮ %

Ans: (B) ৪৮ %

  1. নিম্নলিখিত কোন্ অক্ষাংশে গড় তাপমাত্রা বেশি হবে ?

(A) ১০ ° উত্তর

(B) ২০ ° দক্ষিণ

(C) ৮০ ° উত্তর

(D) ৬০ ° দক্ষিণ

Ans: (A) ১০ ° উত্তর

  1. পশ্চিমবঙ্গের কোন্‌খানটিতে বার্ষিক গড় উষ্ণতা কম হবে ? 

(A) কলকাতা 

(B) শিলিগুড়ি

(C) কৃষ্ণনগর

(D) দার্জিলিং

Ans: (D) দার্জিলিং

  1. কোন অক্ষরেখায় সারাবছর গড় লম্বসূর্যরশ্মি সর্বাধিক –

(A) 0 °

(B) 23 1/2° 

(C) ৯০ উত্তর

(D) ৬৬1/2°

Ans: (A) 0 °

  1. পৃথিবীর চিরবসন্তের শহর কাকে বলা হয় –

(A) লন্ডন

(B) প্যারিস

(C) কুইটো 

(D) সিডনি

Ans: (C) কুইটো

  1. কোন্ অঞ্চলে বার্ষিক গড় উষ্ণতার প্রসর সবচেয়ে কম – 

(A) উপকূল অঞ্চল

(B) পার্বত্য অঞ্চল

(C) মরুভূমি অঞ্চল

(D) মালভূমি অঞ্চল

Ans: (A) উপকূল অঞ্চল

  1. ট্রপোস্ফিয়ারে উচ্চতা বৃদ্ধিতে উষ্ণতা হ্রাসের হার হল –

(A) ২.৪ ° C / কিমি

(B) ৪.৬ ° C / কিমি

(C) / ৬.৪ ° C / কিমি

(D) ৮.৬ ° C / কিমি

Ans: (C) / ৬.৪ ° C / কিমি

  1. নিম্নলিখিত কোন্ মাটির তাপবিকিরণ ক্ষমতা তুলনামূলক বেশি—

(A) রেগুর মাটি

(B) ল্যাটেরাইট মাটি

(C) পলি মাটি

(D) পডজল মাটি

Ans: 

  1. উপকূল সমভাবাপন্ন হওয়ার কারণ –

(A) লম্ব সূর্যরশ্মি

(B) তির্যক সূর্যরশ্মি

(C) সারাবছর বৃষ্টি পড়ল

(D) সমুদ্রবায়ু ও স্থলবায়ুর প্রভাব

Ans: (D) সমুদ্রবায়ু ও স্থলবায়ুর প্রভাব

  1. কোন্ বায়ু বসন্তকালে উত্তর আমেরিকার প্রেইরি অঞ্চলের উষ্ণতাকে হঠাৎ বাড়িয়ে দেয় –

(A) চিনুক

(B) রিজার্ড

(C) ফন

(D) সান্টাআনা

Ans: (A) চিনুক

  1. কোনটি গ্রিনহাউস গ্যাস – এর অন্তর্গত নয় –

(A) অক্সিজেন

(B) কার্বন ডাইঅক্সাইড

(C) নাইট্রাস অক্সাইড

(D) মিথেন

Ans: (A) অক্সিজেন

  1. সর্বনিম্ন উষ্ণতা রেকর্ড হয় কোন্ সময়ে ?

(A) সকাল ১০ টায়

(B) দুপুরবেলা

(C) সন্ধ্যাবেলা

(D) ভোরবেলা

Ans: (D) ভোরবেলা

  1. কোন্‌খানে দিনের সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন উষ্ণতা যোগ করে দুই দিয়ে ভাগ করলে পাওয়া যায় ?

(A) দৈনিক গড় উষ্ণতা

(B) দৈনিক উষ্ণতার প্রসর

(C) সর্বনিম্ন উষ্ণতা

(D) সর্বোচ্চ উষ্ণতা

Ans: (D) সর্বোচ্চ উষ্ণতা

  1. প্রশান্ত মহাসাগরের জলবায়ুগত কোন অবস্থায় ভারতে খরা দেখা দেয় –

(A) লা – নাদা

(B) লা – নিনা

(C) এল নিনো

(D) কোনোটিই নয়

Ans: (C) এল নিনো

  1. বিকিরণ পদ্ধতি সর্বাধিক কার্যকর হয় কোন সময়ে ? 

(A) সকাল ১০ টায়

(B) দুপুর ২ টোয়

(C) বিকাল ৪ টায়

(D) রাত্রি ৮ টায়

Ans: (D) রাত্রি ৮ টায়

  1. কোনটি সমোষ্ণরেখার ক্ষেত্রে প্রযোজ্য নয় ?

(A) সমোষ্ণরেখার মান নিরক্ষরেখা থেকে মেরুর দিকে কমে 

(B) সমোষ্ণরেখার প্রায় অক্ষরেখার সমান্তরালে থাকে

(C) সমোষ্ণরেখা সমুদ্রে একে অপরের প্রায় সমান্তরাল

(D) স্থলভাগে সমোষ্ণরেখা একে অপরকে ছেদ করে ।

Ans: (D) স্থলভাগে সমোষ্ণরেখা একে অপরকে ছেদ করে ।

 

মাধ্যমিক দশম শ্রেণীর ভূগোল প্রশ্ন ও উত্তর  

  বায়ুমণ্ডলে তাপ, উষ্ণতা ও বিশ্ব উষ্ণায়ন

(বায়ুমণ্ডল – দ্বিতীয় অধ্যায়)  

অতিসংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর 

  1. কোনো নির্দিষ্ট স্থানে নির্দিষ্ট সময়ে বায়ুমণ্ডলের অবস্থাকে কী বলে ?

Ans: আবহাওয়া ।

  1. কোনো অঞ্চলের ৩০-৩৫ বছরের আবহাওয়ার গড়কে কী বলে ?

Ans: জলবায়ু ।

  1. দিনের কোন সময়ে তাপমাত্রা সবথেকে বেশি হয় ?

Ans: দুপুর ২ টোর সময় ।

  1. ফারেনহাইট স্কেলের স্ফুটনাঙ্ক কত ?

Ans: ২১২ ° F

  1. কোন্ থার্মোমিটারের সাহায্যে দিনের সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন উষ্ণতা পরিমাপ করা হয় ?

Ans: সিক্সের গরিষ্ঠ ও লঘিষ্ঠ থার্মোমিটার ।

  1. উষ্ণতা মাসের মোট দিনের সংখ্যা কোন্ তাপমণ্ডলে শীতঋতু বেশি পরিলক্ষিত হয় না ?

Ans: উষ্ণমণ্ডলে ।

  1. কোন্ তাপমণ্ডলে উষ্ণতা সারাবছরই ০ ° C- এর কম থাকে ?

Ans: হিমমণ্ডলের ।

  1. গ্রিনহাউস গ্যাসের বৃদ্ধির কারণে পৃথিবীর উষ্ণতা বৃদ্ধি পাওয়াকে কী বলে ?

Ans: বিশ্ব উষ্ণায়ন ও গ্লোবাল ওয়ার্মিং ।

  1. যে – কোনো দুটি গ্রিনহাউস গ্যাসের নাম লেখো ।

Ans: কার্বন ডাইঅক্সাইড ও ক্লোরোফ্লুরোকার্বন ।

  1. কোন্ তাপমণ্ডলে সারাবছর দিন ও রাতের দৈর্ঘ্য প্রায় সমান ।

Ans: উষ্ণমণ্ডল ।

  1. বায়ুমণ্ডল উত্তপ্ত হওয়ার প্রধান পদ্ধতিগুলি কী কী ?

Ans: বিকিরণ , পরিচলন এবং পরিবহণ পদ্ধতি ।

  1. কোনো স্থানের দিনের সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন উদ্ধৃতার পার্থক্যারে কী বলে ?

Ans: দৈনিক উষ্ণতার প্রসর ।

  1. মহাদেশীয় জলবায়ু অঞ্চলের অন্যতম প্রধান বৈশিষ্ট্য কী ?

Ans: শীতকালীন ও গ্রীষ্মকালীন তাপমাত্রার বিরাট ব্যবধান । 

  1. নিরক্ষরেখা থেকে উত্তর বা দক্ষিণে প্রতি ১ ° অক্ষাংশের তফাতে উত্তাপ কত ডিগ্রি হারে কমতে থাকে ?

Ans: ০.২৮ ° C ।

  1. সূর্যরশ্মির পতনকোণের পার্থক্যে তাপের কী তফাৎ ঘটে ।

Ans: লম্বভাবে পতিত সূর্যরশ্মি তির্যকভাবে পতিত সূর্যরশ্মিশ্ম চেয়ে বেশি উষ্ণ হয় ।

  1. এল নিনো শব্দের অর্থ কী ?

Ans: স্প্যানিশ শব্দ এল নিনোর অর্থ Christ Child বা বাংলায় শিশু খ্রিস্ট ।

  1. সর্বাধিক এল নিনো প্রভাবিত অঞ্চল কোনটি ?

Ans: ক্রান্তীয়মণ্ডলে প্রশান্ত মহাসাগরের উভয় দিক ।

  1. অধঃক্ষেপণের সাথে বায়ুর উষ্ণতার সম্পর্ক নির্ণয় করো ।

Ans: অধঃক্ষেপণ বেশি হলে উষ্ণতা কমে এবং অধঃক্ষেপণ কমলে উষ্ণতা বাড়ে ।

  1. সমুদ্র থেকে দূরবর্তী স্থানের জলবায়ু কী প্রকৃতির হয় ।

Ans: চরমভাবাপন্ন ।

  1. পার্থিব বিকিরণের পরিমাণ কত ?

Ans: ৪৮ % ।

  1. সিক্সের গরিষ্ঠ ও লঘিষ্ঠ থার্মোমিটারের উদ্ভাবন কে করেন ?

Ans: James Six .

  1. পৃথিবীর অক্ষ মেরুরেখার সঙ্গে কত ডিগ্রি কোণে হেলে আছে ?

Ans: ২৩ / ২ ° ।

  1. চিরবসন্তের শহর কাকে বলা হয় ?

Ans: ইকুয়েডরের রাজধানী কুইটো ।

  1. মানচিত্রে কোন্ রেখার সাহায্যে উষ্ণতা সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যায় ?

Ans: সমোষ্ণরেখা । 

মাধ্যমিক দশম শ্রেণীর ভূগোল প্রশ্ন ও উত্তর  

MCQ | বায়ুমণ্ডলে তাপ, উষ্ণতা ও বিশ্ব উষ্ণায়ন

(বায়ুমণ্ডল – দ্বিতীয় অধ্যায়)  

সংক্ষিপ্ত উত্তরভিত্তিক প্রশ্নোত্তর  

  1. ইনসোলেশন ( Insolation ) কাকে বলে ?

Ans: সৌরশক্তির প্রায় ২০০ কোটি ভাগের মাত্র এক ভাগ ক্ষুদ্র তরঙ্গ হিসেবে প্রতি সেকেন্ডে ২,৯৭,০০০ কিমি বেগে পৃথিবীতে আসে , একে ইনসোলেশন বা সূর্যরশ্মির তাপীয় ফল বলে । 

  1. নিট বিকিরণ কাকে বলে ?

Ans: সূর্য থেকে আগত সকল তরঙ্গদৈর্ঘ্যের বিকিরণ এবং পৃথিবী ও বায়ুমণ্ডল থেকে বহির্গামী সকল তরঙ্গের বিকিরণের যে পার্থক্য তা হল নিট বিকিরণ । দিনের বেলা নিট বিকিরণ উদ্বৃত্ত বলে গরম বেশি এবং রাত্রে নিট বিকিরণে ঘাটতি দেখা যায় বলে তাপ কম ।

  1. পার্থিব বিকিরণ ( Terrestrial Radiation ) কাকে বলে ?

Ans: পুনঃবিকিরিত শক্তি যা দীর্ঘতর তরঙ্গরূপে ভূপৃষ্ঠ থেকে রাত্রে ফিরে যায় ( ৪৮ % ) তাকে পার্থিব বিকিরণ বলে । পার্থিব বিকিরণের ( ৪৮ % ) মধ্যে ৬ % যায় সরাসরি মহাশূন্যে এবং বাকি ৪২ % যায় বায়ুমণ্ডলে ।

  1. অ্যালবেডো ( Albedo ) কী ?

Ans: আগত সৌররশ্মির প্রায় ৩৪ % মেঘপুঞ্জ , ধূলিকণা , দ্বারা প্রতিফলিত হয়ে মহাশূন্যে ফিরে যায় । এই রশ্মি পৃথিবী ও বায়ুমণ্ডলকে উত্তপ্ত করে না , একে অ্যালবেডো বলে । 

  1. কার্যকারী সৌর বিকিরণ ( Effective Solar Radiation ) কী ?

Ans: পৃথিবীতে আগত সৌররশ্মির যে অংশ ভূমিপৃষ্ঠ ও বায়ুমণ্ডলকে উত্তপ্ত করে , তাকে বলে কার্যকারী সৌর বিকিরণ । এর শতকরা পরিমাণ ৬৬ % ।

  1. বিকিরণ ( Radiation ) কাকে বলে ?

Ans: সূর্য থেকে আগত শক্তি পৃথিবীকে উত্তপ্ত করে এবং উত্তপ্ত পৃথিবী থেকে তাপ বৃহৎ তরঙ্গরূপে বেরিয়ে যায় । এই বৃহৎ তরঙ্গের তাপ বায়ুমণ্ডলের ধূলিকণা শোষণ করে পৃথিবীকে উত্তপ্ত করে । এই পদ্ধতি হল বিকিরণ ।

  1. পরিচলন পদ্ধতি ( Convection ) কাকে বলে ?

Ans: উষ্ণতার প্রভাবে ভূপৃষ্ঠসংলগ্ন বায়ু উত্তপ্ত হয়ে প্রসারিত ও হালকা হয়ে উপরে উঠে যায় এবং অপেক্ষাকৃত শীতল ও ভারী বায়ু নীচের দিকে নামতে থাকে । পরবর্তীকালে সেগুলিও উত্তপ্ত হয়ে উপরে উঠতে থাকে । এইভাবে বায়ুর উল্লম্ব সঞ্চালন এবং তার প্রভাবে বায়ুর উত্তপ্ত হওয়ার পদ্ধতি হল পরিচলন ।

  1. পরিবহণ পদ্ধতি ( Conduction ) কাকে বলে ?

Ans: যে পদ্ধতিতে দুটি বস্তু পরস্পর সংলগ্ন অবস্থায় থাকলে উষ্ণ বস্তু থেকে শীতল বস্তুতে তাপ সঞ্চালিত হয় , তাকে পরিবহণ পদ্ধতি বলে । 

  1. ইন্দ্রিয়গ্রাহ্য উষ্ণতা ( Sensible temperature ) কাকে বলে ?

Ans: যে উষ্ণতা ও শীতলতা মানবশরীরের ত্বক অনুভব করতে পারে তাকে বলে ইন্দ্রিয়গ্রাহ্য উষ্ণতা ।

  1. সিক্সের গরিষ্ঠ ও লঘিষ্ঠ থার্মোমিটার কোন কাজে ব্যবহৃত হয় ?

Ans: সিক্সের গরিষ্ঠ ও লঘিষ্ট থার্মোমিটার এর সাহায্যে দিনের ( ২৪ ঘণ্টা ) সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন উষ্ণতা নথিভুক্ত করা হয় । James Six , 1782 খ্রিস্টাব্দে এই যন্ত্রটির উদ্ভাবন ঘটান ।

  1. বায়ুর উষ্ণতা কোন কোন এককে মাপা হয় ?

Ans: বায়ুর উষ্ণতা ( i ) সেলসিয়াস স্কেল ( ° C ) , ( ii ) ফারেনহাইট স্কেল ( ° F ) ও ( iii ) রোপার স্কেল ( ° R ) – এ পরিমাপ করা হয় ।

  1. বার্ষিক গড় উষ্ণতা ( Annual Mean Temperature ) কাকে বলে ?

Ans: কোনো নির্দিষ্ট স্থানের প্রতি মাসের গড় উষ্ণতা যোগ করে ১২ দিয়ে ভাগ করলে পাওয়া যায় বার্ষিক গড় উষ্ণতা ।

  1. লীনতাপ ( Latent Heat ) কী ?

Ans: কোনো বস্তু বা পদার্থের অবস্থার পরিবর্তনের সময় ওই বস্তু বা পদার্থ যে তাপ গ্রহণ বা বর্জন করে তাকে বলে লীনতাপ ( Latent Heat ) ।

  1. বৈপরীত্য উষ্ণতা ( Inversion of temperature ) বলতে কী বোঝ ?

Ans: সাধারণ নিয়ম অনুসারে ভূপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে বায়ুর উষ্ণতা ৬.৪ ° সে . হারে হ্রাস পায় । কিন্তু কখনো – কখনো উচ্চতার বৃদ্ধি সঙ্গে সঙ্গে বায়ুমণ্ডলের তাপমাত্রা হ্রাস না – পেয়ে বরং বেড়ে যায় । একেই বায়ুমণ্ডলের বৈপরীত্য উত্তাপ বলে ।

  1. উষ্ণতা হ্রাসের স্বাভাবিক হার কাকে বলে ?

Ans: সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে প্রতি ১০০০ মিটার উচ্চতা বৃদ্ধিতে ৬.৪ ° সে . হারে উষ্ণতা কমে , একে বায়ুমণ্ডলের উষ্ণতা হ্রাসের স্বাভাবিক হার বলে ।

  1. সমুদ্র অপেক্ষা স্থলভাগে উষ্ণতার তারতম্য বেশি কেন ?

Ans: প্রাকৃতিক নিয়মে স্থলভাগ ( মহাদেশ ) জলভাগ ( সমুদ্র ) অপেক্ষা দ্রুতহারে উষ্ণ হয় এবং দ্রুতহারে শীতল হয় । আবার , স্থলভাগ গঠনকারী উপাদানের বৈষম্য খুব বেশি থাকায় উষ্ণ ও শীতল হওয়ার হারে খুব বেশি পার্থক্য লক্ষ করা যায় । কিন্তু জলভাগ বা সমুদ্র তরল পদার্থ ( জল ) দিয়ে গঠিত হওয়ায় এই পার্থক্য লক্ষণীয় নয় ।

  1. পৃথিবীর তিনটি তাপমণ্ডলের নাম লেখো ।

Ans: পৃথিবীর তিনটি তাপমণ্ডলের নাম হল – ( i ) উষ্ণুমণ্ডল , ( ii ) নাতিশীতোয়মণ্ডল ও ( iii ) হিমমণ্ডল ।

  1. সমো রেখা ( Isotherm ) কী ?

Ans: ভূপৃষ্ঠের সম উষ্ণতা বিশিষ্ট বিভিন্ন স্থানগুলিকে মানচিত্রে যে রেখা দিয়ে যুক্ত করা হয় , তাকে সমোয় রেখা বলা হয় ।

  1. সমোয় রেখার গুরুত্ব কী ?

Ans: সমোয় রেখার মানচিত্রের সাহায্যে ( i ) ভূপৃষ্ঠের কোনো স্থানের উষ্ণতার বণ্টন সম্বন্ধে ধারণা করা যায় । ( ii ) উষ্ণতা কোন্‌দিকে বাড়ছে বা কমছে এবং তার পরিবর্তনের হার সম্পর্কে জানা যায় ।

  1. তাপবিষুব রেখা কী ?

Ans: কোনো নির্দিষ্ট দিনে প্রতিটি দ্রাঘিমার সর্বোচ্চ উষ্ণতাকে রেখা দিয়ে যোগ করে প্রাপ্ত রেখা হল তাপবিষুব রেখা । এই রেখা নিরক্ষরেখার নিকটে অবস্থান করলেও সূর্যের উত্তরায়ণ ও দক্ষিণায়নের সাথে সাথে স্থান পরিবর্তন করে ।

  1. গ্রিনহাউস প্রভাব ( Green house effect ) কী ?

Ans: যে পদ্ধতিতে ক্ষুদ্র তরঙ্গদৈর্ঘ্যের সূর্যালোক পৃথিবীপৃষ্ঠে প্রতিফলিত হওয়ার ফলে সৃষ্ট দীর্ঘ তরঙ্গ রশ্মি বায়ুমণ্ডলের কিছু গ্যাস দ্বারা শোষিত হয় এবং পৃথিবীর উষ্ণতা বৃদ্ধি করে তা হল । গ্রিনহাউস প্রভাব ।

  1. প্রধান গ্রিনহাউস গ্যাসগুলির নাম লেখো । 

Ans: প্রধান প্রধান গ্রিনহাউস গ্যাসগুলি হল- ( i ) কার্বন ডাইঅক্সাইড ( CO2 ) , ( ii ) মিথেন ( CH4 ) , ( iii ) ক্লোরোফ্লুরোকার্বন ( CFC ) , ( iv ) নাইট্রাস অক্সাইড ( N2O ) এবং ( v ) জলীয় বাষ্প ।

  1. বিশ্ব উষ্ণায়ন ( Global warming ) কাকে বলে ?

Ans: গ্রিনহাউস গ্যাসের প্রভাবে পৃথিবীর উষ্ণতা ক্রমবর্ধমান হারে বেড়েই চলেছে । ফলে জলবায়ুরও পরিবর্তন হচ্ছে । এই বিশেষ উষ্ণকরণের প্রক্রিয়াকে বলে বিশ্ব উষ্ণায়ন ।

  1. বৈপরীত্য উত্তাপ কোথায় কোথায় দেখা যায় ?

Ans: বৈপরীত্য উত্তাপ দেখা যায় পার্বত্য উপত্যকায় , বরফাবৃত মেরু ভূপৃষ্ঠে , দীর্ঘ শীতকালীন রাতে , শান্ত ও শুষ্ক বায়ুস্তরে এবং মেঘমুক্ত আকাশে ।

  1. পৃথিবীর সর্বনিম্ন ও সর্বাধিক উষ্ণতাবিশিষ্ট স্থান দুটির নাম লেখো ।

Ans: পৃথিবীর উষ্ণতম স্থান হল লিবিয়ার আল আজিজিয়া ( ৫৮ ° সে . ) এবং শীতলতম স্থান হল অ্যান্টার্কটিকার ভস্টক ( −৮৮ ° সে . ) ।

  1. উত্তর গোলার্ধে শীতকালে স্থলভাগে সমোয় রেখাগুলি দক্ষিণে বেঁকে যায় কেন ?

Ans: শীতকালে উত্তর গোলার্ধে সমুদ্র অপেক্ষা স্থলভাগ অধিক শীতল থাকে বলে সমোয় রেখাগুলি শীতকালে সমুদ্র অপেক্ষা মহাদেশে কিছুটা দক্ষিণে বেঁকে অবস্থান করে ।

  1. উষ্ণতার প্রসর কাকে বলে ? 

Ans: কোনো নির্দিষ্ট স্থানে নির্দিষ্ট সময়ে সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন উষ্ণতার পার্থক্যকে উষ্ণতার প্রসর বলে । 

  1. কোনো স্থানে সর্বাধিক সূর্যালোক দুপুর ১২ টায় পেলেও বায়ুমণ্ডল দুপুর ২ টোয় সর্বাধিক উত্তপ্ত হয় কেন ?

Ans: যেসকল পদ্ধতির মাধ্যমে বায়ুমণ্ডল উত্তপ্ত হয় , তার মধ্যে বিকিরণ হল সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ । কোনো স্থানে আগত সূর্যরশ্মি দুপুর ১২ টায় সর্বাধিক হারে পতিত হলেও বিকিরণের হার সর্বাধিক হয় দুপুর ২ টোয় । তাই বায়ুমণ্ডলও সর্বাধিক উত্তপ্ত হয় দুপুর ২ টোয় ।

মাধ্যমিক দশম শ্রেণীর ভূগোল প্রশ্ন ও উত্তর  

MCQ | বায়ুমণ্ডলে তাপ, উষ্ণতা ও বিশ্ব উষ্ণায়ন

(বায়ুমণ্ডল – দ্বিতীয় অধ্যায়)  

সংক্ষিপ্ত ব্যাখ্যাধর্মী প্রশ্নোত্তর   

  1. তাপ বাজেট ( Heat Budget ) কাকে বলে ? 

Ans: যে পরিমাণ আগত সৌরবিকিরণ ক্ষুদ্রতরঙ্গ রূপে পৃথিবী পৃষ্ঠ ও বায়ুমণ্ডলে পৌঁছায় , তা দীর্ঘতরঙ্গ রূপে পুনঃবিকিরিত হয়ে আবার মহাশূন্যে ( space ) ফিরে যায় । এর ফলে পৃথিবীতে উষ্ণতার ভারসাম্য দেখা যায় । একেই পৃথিবীর উষ্ণতার সমতা বা তাপ বাজেট বলে । সূর্য থেকে আগত মোট শক্তিকে ( ২০০ কোটি ভাগের ১ ভাগ ) যদি আমরা ১০০ % ধরি তাহলে দেখা যায় ৬৬ % ( ১৫ % বায়ুমণ্ডল , ৩ % মেঘ এবং ৪৮ % ভূপৃষ্ঠ দ্বারা শোষিত হয় ) বিভিন্ন পদ্ধতিতে বায়ুমন্ডলে উতপ্ত করে । এটি কার্যকর সৌরবিকিরণ । এর দ্বারা পৃথিবী ও বায়ুমণ্ডল উতপ্ত হয় । আগত ১০০ % সৌরশক্তির বাকি ৩৪ % বিভিন্ন মাধ্যম দ্বারা ( মেঘ দ্বারা ২৫ % , মহাকাশে বিচ্ছুরিত হয়ে ৬ % , ভূপৃষ্ঠ দ্বারা প্রতিফলিত হয়ে ৩ % ) , প্রতিফলিত ও বিচ্ছুরিত হয়ে পুনরায় মহাশূন্যে ফিরে যায় । ইহা বায়ুমণ্ডলকে উত্তপ্ত করতে পারে না বলে , এটি হল নিষ্ক্রিয় সৌরতাপ । একে বলে পৃথিবীর অ্যালবেডো ( Albedo ) । এইভাবেই তাপ বাজেটের হিসাবনিকাশ করা হয়ে থাকে ।

  1. কার্যকর সৌর বিকিরণ ও অ্যালবেডো বলতে কী বোঝ ? 

Ans: কার্যকর সৌর বিকিরণ : সূর্য থেকে আগত মোট শক্তিকে ( ২০০ কোটি ভাগের ১ ভাগ ) যদি আমরা ১০০ শতাংশ ধরি তবে দেখা যাবে এর ৬৬ শতাংশ [ ১৫ % বায়ুমণ্ডল , ৩ % মেঘ , ৪৮ % ভূপৃষ্ঠের দ্বারা শোভিত হয় । বিভিন্ন পদ্ধতিতে বায়ুমণ্ডলকে উত্তপ্ত করে । একেই কার্যকর সৌর বিকিরণ বলে । 

অ্যালবেডো : আগত সৌরশক্তির বাকি ৩৪ ভাগ বিভিন্ন মাধ্যম দ্বারা ( মেঘের দ্বারা ২৫ % , মহাকাশে বিচ্ছুরিত হয়ে ৬ % , ভূপৃষ্ঠ দ্বারা প্রতিফলিত হয়ে ৩ % ) প্রতিফলিত ও বিচ্ছুরিত হয়ে পুনরায় মহাশূন্যে ফিরে যায় । ইহা বায়ুমণ্ডলকে উত্তপ্ত করতে পারে না । একেই পৃথিবীর অ্যালবেডো ( Albedo ) বলে ।

  1. কার্যকর সেরোবি অক্ষাংশ অনুসারে বায়ুমণ্ডলের উষ্ণতার কী ধরনের পরিবর্তন ঘটে ?

Ans: পৃথিবীর আকৃতি অভিগত গোলকের মতো ; ফলে সূর্যরশ্মি পৃথিবীর মাঝবরাবর ( নিরক্ষীয় অঞ্চলে ) লম্বভাবে পতিত হয় । অক্ষাংশ যত বাড়ে সূর্যরশ্মির পতনকোণের তির্যকতা বাড়ে । লম্বভাবে পতিত রশ্মির সূর্যতাপের পরিমাণ বেশি , তার বায়ুমণ্ডলে উষ্ণতার পরিমাণ বাড়ে । অপরপক্ষে ক্রান্তীয় অঞ্চলে বছরে দু – দিন সূর্যরশ্মি পুরোপুরি লম্বভাবে পড়ে ফলে উষ্ণতা তুলনামূলক কম হয় । ক্রান্তীয় অঞ্চল সূর্যের লম্বরশ্মি পতনের শেষ সীমা ; এরপর কোথাও লম্বভাবে পড়ে না তির্যকভাবে পতিত হয় সুতরাং গরমের পরিমাণ কমতে থাকে ।

  1. দৈনিক উষ্ণতার প্রসর ( Durinal Range of Temperature ) কাকে বলে ? 

Ans: কোনো স্থানের দিনের সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন উষ্ণতার পার্থক্য হল – দৈনিক উষ্ণতার প্রসর । উদাহরণস্বরূপ বলা যায় যে , জুন মাসের কোনো ১ দিনের তাপমাত্রা ধরা হল , সর্বোচ্চ ৩৭ ° সে . এবং সর্বনিম্ন হল ২৯ ° সে .। এইক্ষেত্রে , তাপমাত্রার দৈনিক প্রসর হল ৩৭ ° সে -২৯ ° সে = ৮ ° সে .। 

  1. উচ্চস্থান শীতল হয় কেন ? 

অথবা , উচ্চতা বাড়লে উষ্ণতা কমে যায় কেন ? 

অথবা , টুপোস্ফিয়ারে উচ্চতা বৃদ্ধির সঙ্গে উষ্ণতা হ্রাস পায় কেন ?

Ans: উচ্চস্থান শীতল হয় কারণ-

( i ) উচ্চতা যত বাড়ে বিকিরণ পদ্ধতির প্রভাব তত কমে ।

( ii ) উচ্চতা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ধুলিকণার জলীয় বাষ্প ও অন্যান্য উপাদান কমতে থাকে বলে তাপশোষণ ও সংরক্ষণ কম ।

( iii ) ঊর্ধ্বাকাশে বায়ুর চাপ কম বলে বায়ু হালকা ও পাতলা হয় , যা দ্রুত তাপ বিকিরণ করে শীতল হয় ।

  1. কী কী কারণে বায়ুমণ্ডলে উষ্ণতার বৈপরীত্য ঘটে ?

Ans: বায়ুমণ্ডলে উষ্ণতার বৈপরীত্যর কারণ হল

( i ) নাতিশীতোয় অঞ্চলের পার্বত্য উপত্যকায় উচ্চ অংশের শীতল ও ভারী বায়ু ঢাল বেয়ে নেমে আসে ( ক্যাটাবেটিক বায়ু ) এবং উপত্যকার নিম্নাংশের অপেক্ষাকৃত উষ্ণ বায়ু উপরে ওঠে । এই অবস্থায় উপত্যকার নিম্নাংশে উষ্ণতা কমে যায় এবং উপরের দিকে উষ্ণতা ধীরে ধীরে বাড়তে থাকে ।

( ii ) অধিক উচ্চতায় ঘন ও শুষ্ক বায়ুর অবনমন ঘটলে উষ্ণতা বেড়ে গিয়ে উষ্ণতার বৈপরীত্য ঘটায় ।

( iii ) শীতকালে মহাদেশের কোনো কোনো স্থান অতিদ্রুত হারে তাপ বিকিরণে শীতল হয় । ফলে ওই অঞ্চলের ভূপৃষ্ঠসংলগ্ন অঞ্চলও শীতল হয় । কিন্তু উপরের বায়ু অত দ্রুত শীতল হয় না বলে উপরে উষ্ণতা কিছুটা বেশি থাকে । এই প্রক্রিয়া রাতের বেলা হয় কিন্তু সাময়িক ।

( iv ) পরস্পর বিপরীত দিক থেকে আগত উষ্ণ ও শীতল বায়ুর সম্মিলনে শীতল বায়ুর ঢাল বরাবর উষ্ণবায়ু উঠে পড়লে সীমান্ত বরাবর বৈপরীত্য উষ্ণতা ঘটে ।

  1. বৈপরীত্য উষ্ণতার প্রভাবে কী কী বায়ুমণ্ডলীয় আবহাওয়ার পরিবর্তন ঘটে ?

Ans: বৈপরীত্য উষ্ণতার প্রভাবে সাধারণত

( i ) পার্বত্য উপত্যকায় শান্ত আবহাওয়া দেখতে পাওয়া যায় ,

( ii ) ভোরবেলায় বৈপরীত্য উত্তাপের জন্য উপত্যকাগুলি মেঘে ঢেকে যায় । বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বায়ুর উষ্ণতা বাড়লে উপত্যকাগুলি মেঘমুক্ত হয় ।

( iii ) শীতল বায়ুর উপর উষ্ণ বায়ু উঠলে কুয়াশা সৃষ্টি হয় এবং সীমান্ত অঞ্চলে ঝিরঝিরে বৃষ্টি হয় । এর ফলে মধ্য অক্ষাংশে তুহিন । সৃষ্টি হয় ।

( iv ) নাতিশীতোয় অঞ্চলে উপত্যকার মধ্যভাগে চাষবাস হয় , জনবসতি গড়ে ওঠে ।

  1. শিলিগুড়ি অপেক্ষা দার্জিলিং বা দিল্লি অপেক্ষা সিমলা শীতল হয় কেন ?

Ans: আমরা জানি উচ্চতা বৃদ্ধির সাথে সাথে উষ্ণতা ৬.৪ ° সে . / কিমি হারে হ্রাস পায় । শিলিগুড়ি প্রায় সমুদ্রপৃষ্ঠে অবস্থিত হলেও দার্জিলিং সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে অনেক উঁচুতে অবস্থিত । আবার দিল্লি সমুদ্রপৃষ্ঠের নিকটে অবস্থিত হলেও সিমলা অনেক উঁচুতে অবস্থিত । অধিক উচ্চতায় অবস্থানের কারণে শিলিগুড়ি অপেক্ষা দার্জিলিং এবং দিল্লি অপেক্ষা সিমলায় সারাবছর উষ্ণতা কম থাকে ।

  1. পুরী বা মুম্বাই অপেক্ষা দিল্লির জলবায়ু চরম হয় কেন ?

Ans: মুম্বাই , পুরী প্রভৃতি স্থান সমুদ্র উপকূলে অবস্থিত । উপকূল বরাবর ২৪ ঘণ্টায় বায়ুপ্রবাহের কারণে ( দিনের বেলায় সমুদ্র থেকে স্থলবাগের দিকে সমুদ্রবায়ু এবং রাতের বেলায় স্থলভাগ থেকে সমুদ্রের দিকে স্থলবায়ু ) উষ্ণতা সারাবছর সমভাবাপন্ন থাকে , অর্থাৎ বার্ষিক উষ্ণতার প্রসার খুব বেশি হয় না । পক্ষান্তরে দিল্লি সমুদ্র থেকে দূরবর্তী স্থানে অবস্থানের কারণে সমুদ্রবায়ুর প্রভাব এখানে থাকে না বললেই চলে । তাই উষ্ণতায় এখানে চরমভাব লক্ষ করা যায় । অর্থাৎ উষ্ণতার প্রসার এখানে খুব বেশি হয় । তাই পুরী ও মুম্বাই অপেক্ষা দিল্লির জলবায়ু চরম প্রকৃতির ।

  1. উচ্চতা বাড়লে বায়ুর উষ্ণতা হ্রাস পায় ।’— কেন ব্যাখ্যা করো ।

Ans: বায়ুমণ্ডলীয় নিম্নস্তরে উচ্চতা বৃদ্ধির সাথে উষ্ণতা ক্রমবর্ধমান হারে কমতে থাকে ; হিসাব অনুসারে প্রতি ১০০০ মিটারে ৬.৪ ° সেলসিয়াস হারে কমে । কারণ— 

( ক ) সূর্যরশ্মি প্রথমে ভূপৃষ্ঠে এসে পৌঁছোয় , ভূপৃষ্ঠ উত্তপ্ত করে , ভূপৃষ্ঠ থেকে তাপগ্রহণ করে বায়ুমণ্ডল উত্তপ্ত হয় । 

( খ ) ভূপৃষ্ঠসংলগ্ন বায়ুস্তর ঘন , যত ওপরে যাওয়া যায় বায়ুস্তর হালকা হয় ; ঘন বায়ুর উত্তাপ শোষণ ক্ষমতা বেশি । 

( গ ) ভূপৃষ্ঠের নিকটবর্তী স্থানের বায়ুর চাপ বেশি ; ওপরের পাতলা হালকা বায়ুস্তর তাপের বিক্রিরণ করে শীতল হয় । 

( ঘ ) উচ্চতা বৃদ্ধির সাথে সাথে গ্যাসীয় উপাদান , ধূলিকণা , জলকণার পরিমাণ কমতে থাকে , ফলে ভূপৃষ্ঠ থেকে বিকিরিত তাপ এবং সূর্য থেকে আসা তাপ শোষণ কম হয় ।  

  1. মহাদেশের অভ্যন্তরে জলবায়ু চরম কেন ?

Ans: সমুদ্র থেকে দূরে অবস্থিত মহাদেশের ভিতরে সমুদ্র বায়ু ও স্থল বায়ুর প্রভাব ততটা পড়ে না বলে চরমভাবাপন্ন । সহায়িকা , জলবায়ু দেখা যায় , অর্থাৎ এখানে ঠান্ডা ও গরম উভয়ই খুব বেশি হয় । এই ধরনের জলবায়ুকে মহাদেশীয় জলবায়ু বলে । শীতকালীন ও গ্রীষ্মকালীন তাপমাত্রার বিরাট ব্যবধান হল মহাদেশীয় জলবায়ুর অন্যতম বৈশিষ্ট্য । 

উদাহরণ : মধ্য এশিয়া , মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডার মধ্যভাগ মহাদেশীয় জলবায়ুর অন্তর্গত ।

  1. শীতকালে মেঘাচ্ছন্ন অপেক্ষা মেঘমুক্ত রাত্রি অধিক শীতল হয় কেন ?

Ans: মেঘের আবরণ দিনের বেলা সূর্যরশ্মিকে ভূপৃষ্ঠে পৌঁছোতে বাধা দেয় এবং রাত্রিবেলা ভূপৃষ্ঠ থেকে বিকিরিত তাপকে পৃথিবীর আবহমণ্ডলের বাইরে পৌঁছোতে দেয় না । এজন্য মেঘাচ্ছন্ন রাত্রিতে ভূপৃষ্ঠ যে তাপ বিকিরণ করে তা মেঘের দ্বারা বাধাপ্রাপ্ত হয় এবং খুব বেশি উপরে না উঠতে পেরে গ্রিনহাউস এফেক্ট প্রক্রিয়ায় তা বায়ুমণ্ডলের নীচের স্তরকে উত্তপ্ত করে । এর ফলে মেঘাচ্ছন্ন রাত্রি উষু হয় । অন্যদিকে , মেঘমুক্ত রাত্রিতে ভূপৃষ্ঠ থেকে বিকীর্ণ তাপ পৃথিবীর আবহমণ্ডলের বাইরে চলে যেতে পারে , তাই মেঘমুক্ত রাত্রি মেঘাচ্ছন্ন রাতের তুলনায় শীতল হয় ।

  1. শিলিগুড়ি থেকে দার্জিলিং – এর তাপমাত্রা কম কেন ?

Ans: স্বাভাবিক অবস্থায় উচ্চতা বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলের উষ্ণতা হ্রাস পায় । বায়ুমণ্ডলের উষ্ণতা হ্রাসের হার হল প্রতি ১ কিলোমিটারে ৬.৪ ° সেলসিয়াস । শিলিগুড়ি থেকে দার্জিলিঙের দূরত্ব বেশি নয় , কিন্তু যেহেতু দার্জিলিং – এর উচ্চতা শিলিগুড়ির তুলনায় অনেক বেশি সেই হেতু দার্জিলিং – এর তাপমাত্রা সবসময়েই শিলিগুড়ির তাপমাত্রার তুলনায় অনেক কম হয় ।

  1. লম্বভাবে পতিত সূর্যরশ্মির তুলনায় তির্যকভাবে পতিত সূর্যরশ্মিতে উত্তাপের পরিমাণ কম হয় কেন ?

Ans: ( ক ) তির্যকভাবে পতিত সূর্যরশ্মি লম্বভাবে পতিত সূর্যরশ্মির তুলনায় অনেক বেশি পথ অতিক্রম করে ভূপৃষ্ঠে পৌঁছোয় এবং বেশি স্থানজুড়ে ছড়িয়ে পড়ে , ফলে তির্যকভাবে পতিত সূর্যরশ্মিতে উত্তাপের পরিমাণ কম হয় ।

 ( খ ) লম্বভাবে পতিত রশ্মি অক্ষোকৃত কম পথ অতিক্রম করে ভূপৃষ্ঠে পৌঁছোয় এবং অপেক্ষাকৃত কম স্থানজুড়ে ছড়িয়ে পড়ে । ফলে লম্বভাবে পতিত সূর্যরশ্মিতে উত্তাপের পরিমাণ বেশি হয় ।

  1. দিনের বিভিন্ন সময়ে ভূপৃষ্ঠে তাপের তারতম্য হয় কেন ?

Ans: সকালে এবং বিকালে কোনো স্থান থেকে সূর্য অনেক দূরে থাকে বলে—

( ১ ) সূর্যরশ্মি সকাল ও বিকালবেলা ভূপৃষ্ঠের সেই স্থানে তুলনামূলকভাবে বেশি তির্যকভাবে পড়ে ।

( ২ ) সূর্যরশ্মি বেশি বায়ুস্তর ভেদ করে আসে এবং

( ৩ ) বেশি স্থানজুড়ে ছড়িয়ে পড়ে । এজন্য সকাল এবং বিকালে আমরা সূর্য থেকে কম তাপ পাই ।

অন্যদিকে , ( ১ ) দুপুরে সূর্যরশ্মি পৃথিবীপৃষ্ঠের কোনো স্থানে লম্বভাবে পড়ে ,

( ২ ) অল্প বায়ুস্তর ভেদ করে আসে এবং

( ৩ ) অল্প স্থানজুড়ে ছড়িয়ে পড়ে বলে দুপুরবেলা আমরা তুলনামূলকভাবে বেশি উত্তাপ পাই । দুপুরে তুলনামূলকভাবে বেশি তাপ পাওয়ার আরও একটি প্রধান কারণ হল যে , বেলা ২ টো পর্যন্ত ভূপৃষ্ঠের তাপ ক্রমশ বাড়তে থাকে , কিন্তু এই সময়ের পর থেকে ভূপৃষ্ঠ যে পরিমাণ তাপ গ্রহণ করে সেই পরিমাণ তাপই বিকিরণ করে বলে সঞ্চিত তাপ আর বাড়ে না । এজন্য কোনো স্থানে বেলা ২ টোয় দিনের মধ্যে সর্বাধিক তাপ অনুভূত হয় ।

  1. দিনের বেলায় সমুদ্র থেকে স্থলভাগের দিকে বাতাস বয় । – কেন ?

Ans: সাধারণত দিনের বেলায় সমুদ্র থেকে স্থলভাগের দিকে প্রবাহিত বায়ুকে সমুদ্রবায়ু বলে । সমুদ্রবায়ুর প্রবাহের কারণ :

( ১ ) সমুদ্র তীরবর্তী অঞ্চলে দিনের বেলায় স্থলভাগ জলভাগের তুলনায় বেশি গরম হয়ে পড়ে । গরম স্থলভাগের সংস্পর্শে এসে স্থলভাগসংলগ্ন বায়ু ও গরম এবং হালকা হয়ে উপরে উঠে যেতে থাকে , ফলে সেখানে নিম্নচাপের সৃষ্টি হয় । স্থলভাগের তুলনায় সমুদ্রের জলভাগ অপেক্ষাকৃত কম উত্তপ্ত হওয়ায় সেখানে উচ্চচাপের সৃষ্টি হয় । স্থলভাগ ও জলভাগের বায়ুচাপের তারতম্যের ফলে সমুদ্রসংলগ্ন ঠান্ডা ও উচ্চচাপের বায়ু তখন উপকূলের উত্তপ্ত স্থলভাগের দিকে প্রবাহিত হয়ে আসতে থাকে । সমুদ্র থেকে প্রবাহিত হওয়ায় এই বায়ুকে সমুদ্রবায়ু বলে । 

( ২ ) সমুদ্রবায়ু সাধারণত দিনের বেলায় প্রবাহিত হলেও দুপুরবেলায় সর্বাধিক বেগে প্রবাহিত হয় ।

  1. সমোয়রেখাগুলি সমুদ্রে পরস্পর সমান্তরাল কিন্তু মহাদেশে এঁকেবেঁকে অবস্থান করে । কারণ ব্যাখ্যা করো ।

Ans: সমুদ্রভাগ সমাকৃতি ( Honogeneous ) অঞ্চল হওয়ায় উষ্ণতার বণ্টনে তেমন বৈচিত্র্য ঘটে না । সাধারণ নিয়মে অক্ষাংশ পরিবর্তনে উষ্ণতার পরিবর্তন ঘটে । কিন্তু স্থলভাগে উচ্চতা , ভূমির ঢাল , বায়ুপ্রবাহ মৃত্তিকার পার্থক্য , বনভূমির বন্টন প্রভৃতির তারতম্যজনিত কারণে উষ্ণতার আঞ্চলিক বৈষম্য অত্যন্ত প্রকট । তাই সমুদ্রে সমোয় রেখাগুলি একে অপরের সমান্তরালে বা অক্ষরেখার সমান্তরালে অবস্থান করলেও স্থলভাগে বা মহাদেশে সমোয় রেখাগুলি একে অপরের সমান্তরালে অবস্থান করে না ।

  1. ‘ পার্বত্য অঞ্চলে অধিবাসীরা উপত্যকা ছেড়ে পাহাড়ের ঢালে বসবাস করে ।’— কেন ?

Ans: উষ্ণতার স্বাভাবিক হ্রাস হার অনুসারে প্রতি ১০০০ মিটার উচ্চতা বৃদ্ধিতে ১ ° সেলসিয়াস হারে উষ্ণতা কমে । পার্বত্য অঞ্চলে মাঝে মাঝে এর ব্যতিক্রমও ঘটে অর্থাৎ উচ্চতা বৃদ্ধির সাথে উষ্ণতা বেড়ে যায় । একে বলে বৈপরীত্য উত্তাপ । রাতের বেলায় তাপ বিকিরণ করে উঁচু পর্বতের ঢাল খুব ঠান্ডা হয়ে পড়ে ; বাতাস শীতল ও ভারী হয় । মাধ্যাকর্ষণের প্রভাবে তা উচ্চ পর্বতগাত্রের ঢাল বৈপরীত্য উত্তাপ বেয়ে নেমে আসে । উপত্যকার নীচের অংশের উষ্ণতা কমিয়ে দেয় । পর্বতগাত্র কিন্তু তখনও উষ্ণ থাকে ।

  1. এল নিনো ও লা নিনা বলতে কী বোঝ ?

Ans: সাধারণ অবস্থায় প্রশান্ত মহাসাগরের পূর্বে পেরু , ইকুয়েডর উপকূল বরাবর হামবোল্ড স্রোত আসে । কোনো কোনো বছর এই অঞ্চলে উত্তর দিক থেকে গরমজলের স্রোত ( এল নিনো স্রোত ) এসে অঞ্চলটিকে ঢেকে ফেলে উষ্ণতা বাড়িয়ে দেয় । ফলে প্রশান্ত মহাসাগরের পূর্বে হয় নিম্নচাপ এবং পশ্চিমে উচ্চচাপ । এই অবস্থায় পেরু , ইকুয়েডরে প্রবল বৃষ্টি ও বন্যা দেখা দেয় এবং পশ্চিমে অস্ট্রেলিয়া ও ইন্দোনেশিয়ায় হয় খরা । এই অবস্থা হল এল নিনো ( অর্থ ‘ শিশু খ্রিস্ট ‘ ) । 

কোনো কোনো বছর পেরু , ইকুয়েডর উপকূলের উষ্ণতা সাধারণ অবস্থার থেকে অনেকটা কমে যায় । এই সময়ে নিরক্ষরেখা বরাবর প্রশান্ত মহাসাগরের পূর্বে হয় উচ্চচাপ এবং পশ্চিমে নিম্নচাপ । এই অবস্থায় পেরু , ইকুয়েডর অঞ্চলে হয় খরা এবং পশ্চিমে অস্ট্রেলিয়া ও ইন্দোনেশিয়ায় হয় বন্যা । এই অবস্থা হল লা নিনা ( অর্থ “ ছোট্ট বালিকা ‘ ) । যে বছর সাধারণ অবস্থা বিরাজ করে তা হল লা না ( অর্থ ‘ কিছুই নয় ‘ ) । এল নিনো বছরে আমাদের দেশে খরা এবং লা নিনা বছরে বন্যা দেখা দেয় ।

  1. এল নিনো ও লা নিনার প্রভাব ব্যাখ্যা করো ।

Ans: এল নিনো ও লা নিনার প্রভাব : এলনিনোর প্রভাবে

( ১ ) দক্ষিণ পূর্ব প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের পেরু , চিলি ও ইকুয়েডর – এ বজ্রপাতসহ ঝড়শবৃষ্টি ও বন্যা হয় ।

( ২ ) উত্তর আমেরিকার উত্তর – পশ্চিম অংশ ও কানাডায় শীতের প্রকোপ কমে ।

( ৩ ) দক্ষিণ – পশ্চিম প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে উচ্চচাপের সৃষ্টি হয় যার প্রভাবে পূর্ব অস্ট্রেলিয়া , নিউগিনি , ফিলিপাইনস , ইন্দোনেশিয়া , বাংলাদেশ ও ভারতে গ্রীষ্মকালে প্রবল তাপপ্রবাহ , অনাবৃষ্টি , খরা ইত্যাদির প্রাদুর্ভাব দেখা যায় ।

( ৪ ) যে বছর এল নিনো প্রবাহিত হয় সেই বছর দক্ষিণ – পূর্ব এশিয়াতে গ্রীষ্মকালীন মৌসুমি বায়ুর ( দক্ষিণ – পশ্চিম মৌসুমি বায়ু ) স্বাভাবিক প্রবাহ ব্যাহত হয় এবং কম বৃষ্টিপাতের ফলে খরা পরিস্থিতির সৃষ্টি হয় । অন্যদিকে লা নিনা অবস্থায় জেট প্রবাহ শক্তিশালী হয়ে , এই অঞ্চলে ( দক্ষিণ এশিয়া ) অত্যধিক মৌসুমি বৃষ্টিপাত ও বন্যার সৃষ্টি করে । অর্থাৎ দেখা যাচ্ছে যে প্রশান্ত মহাসাগরে তৈরি হওয়া সহায়িকা , এল নিনো ( সমুদ্রের উপরিতলের তাপমাত্রা বৃদ্ধির অবস্থা ) এবং না নিনা ( সমুদ্রের উপরিতলের তাপমাত্রা হ্রাসের অবস্থা ) স্থিতাবস্থা নেই । 

  1. উষ্ণতার তারতম্যে বায়ুচাপের তারতম্য ঘটে কেন ?

Ans: উষ্ণতার বৃদ্ধিতে বায়ু প্রসারিত হয় এবং আয়তনে বেড়ে যায় । আয়তনে বেড়ে গেলে বায়ুর চাপ কমে যায় — অর্থাৎ বায়ু উষ্ণ হলে বায়ুর চাপ কমে । নিরক্ষীয় অঞ্চলের বায়ু উষ্ণ হওয়ায় এই অঞ্চলে নিম্নচাপের সৃষ্টি হয় । একইভাবে বায়ুর উষ্ণতা কমে গেলে বায়ু সংকুচিত হয় এবং বায়ুচাপ বেড়ে যায় । এইজন্য প্রচণ্ড ঠান্ডার জন্য দুই মেরু অঞ্চলে বায়ুচাপও বেশি হয় । সুতরাং বায়ুর উষ্ণতার সঙ্গে বায়ুচাপের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে । বায়ুর উষ্ণতার সঙ্গে বায়ুর চাপ ‘ ব্যস্তানুপাতে ’ পরিবর্তিত হয় — অর্থাৎ উষ্ণতা কমলে বায়ুচাপ বাড়ে এবং উষ্ণতা বাড়লে বায়ুচাপ কমে । অর্থাৎ অন্যান্য অবস্থা অপরিবর্তিত থাকলে উষ্ণতা x বায়ুচাপ ।

  1. সমোয় রেখার বৈশিষ্ট্যগুলি লেখো ।

Ans: ভূপৃষ্ঠের যেসব স্থানে বার্ষিক উষ্ণতা একইরকম থাকে , সেইসব স্থানকে কাল্পনিক রেখার সাহায্যে যুক্ত করে মানচিত্রে দেখানো হয় । একে বলে সমোয় রেখা বা Isotherm ; ISO = same . thermos = Temperature ; সমোয় রেখার বিশেষ কয়েকটি বৈশিষ্ট্য লক্ষ করা যায় । যেমন – ( ক ) সমোয় রেখাগুলি মূলত পূর্ব – পশ্চিমে । বিস্তৃত থাকে ও অক্ষরেখা বরাবর পরস্পর সমান্তরালভাবে অবস্থান । করে । ( খ ) স্থলভাগ ও জলভাগের পাশাপাশি অবস্থান থাকলে সমোয় রেখাগুলি বাঁক নেয় । ( গ ) গ্রীষ্মকালে রেখাগুলি স্থলভাগ থেকে সমুদ্রের দিকে নিরক্ষরেখার দিকে বাঁক নেয় । ( ঘ ) শীতকালে এর বিপরীত পরিস্থিতি দেখা যায় ।

 

মাধ্যমিক দশম শ্রেণীর ভূগোল প্রশ্ন ও উত্তর  

MCQ | বায়ুমণ্ডলে তাপ, উষ্ণতা ও বিশ্ব উষ্ণায়ন

(বায়ুমণ্ডল – দ্বিতীয় অধ্যায়)  

রচনাধর্মী প্রশ্নোত্তর  

1. বায়ুমণ্ডল উত্তপ্ত হওয়ার পদ্ধতিগুলির ব্যাখ্যা  দাও । 

Ans: বায়ুমণ্ডল বিভিন্নভাবে উত্তপ্ত হয়— ( ক ) প্রধান পদ্ধতি : 

( i ) বিকিরণ ( Radiation ) কোনো মাধ্যম ছাড়াই যখন তাপ এক বস্তু থেকে অন্য বস্তুতে সঞ্চালিত ( transmission ) হয় , তখন তাকে বিকিরণ পদ্ধতি বলে । সূর্যরশ্মি ক্ষুদ্র তড়িৎ চুম্বক তরঙ্গরূপে বায়ুস্তর ভেদ করে পৃথিবীতে এসে পৌঁছোয় এবং পৃথিবীপৃষ্ঠ তাপ শোষণ করে উত্তপ্ত হয় । উত্তপ্ত ভূপৃষ্ঠ বৃহৎ তরঙ্গরূপে তাপ বিকিরণ করে বায়ুমণ্ডলকে উত্তপ্ত করে । 

( ii ) পরিবহণ ( Conduction ) পাশাপাশি অণুর সংস্পর্শের মাধ্যমে উষ্ণতার অপসারণ প্রক্রিয়াকে পরিবহণ বলে । এই পদ্ধতিতে বায়বীয় কণার মাধ্যমে বেশি উত্তপ্ত পদার্থ থেকে কম উত্তপ্ত পদার্থের দিকে তাপের সঞ্চালন ঘটে । 

( iii ) পরিচলন ( Con – vection ) : উষ্ণতার প্রভাবে ভূপৃষ্ঠসংলগ্ন বায়ুর অণুগুলি উত্তপ্ত হয়ে প্রসারিত ও হালকা হয় । ফলে তা ক্রমশ ঊর্ধ্বমুখী হতে থাকে এবং ঊর্ধ্বাংশের অপেক্ষাকৃত শীতল ও ভারী বায়ু নীচের দিকে নামতে থাকে । পরবর্তীকালে সেগুলিও উত্তপ্ত উপরে উঠতে থাকে । ফলে বায়ুতে উল্লম্ব সঞ্চালন ও তার প্রভাবে বায়ুমণ্ডল উত্তপ্ত হওয়ার প্রক্রিয়াকে পরিচলন পদ্ধতি বলে । 

( iv ) অ্যাডভেকশন ( Advection ) : ভূপৃষ্ঠের সমান্তরালে অনুভূমিকভাবে বায়ুপ্রবাহের মাধ্যমে তাপের সঞ্চালন ঘটলে তাকে অ্যাডভেকশন বলে । এই পদ্ধতির মাধ্যমেই নিম্ন অক্ষাংশের উষ্ণতা উচ্চ অক্ষাংশের দিকে সঞ্চালিত হয় । ভারতের উত্তর – পশ্চিমে প্রবাহিত ‘ লু ’ অ্যাডভেকশন পদ্ধতির প্রকৃষ্ট উদাহরণ । ( খ ) অপ্রধান পদ্ধতি : 018 ) বাষ্প , কার্বন ডাইঅক্সাইড 

( v ) বায়ুমণ্ডলে ধূলিকণা , জলীয় বাষ্প , প্রভৃতি সূর্য থেকে আগত শক্তিকে সরাসরি শোষণ করে বায়ুমণ্ডলকে উত্তপ্ত করে । JPURCU PATRES PART 

( vi ) বায়ুরাশি যত উপরে ওঠে ততই প্রসারিত হয় বলে উষ্ণতা কমে এবং বায়ু যখন উপর থেকে নীচে নামে তখন সংকুচিত হয় বলে উষ্ণতা বাড়ে । 

( vii ) ভূ – অভ্যন্তরের বিভিন্ন তেজস্ক্রিয় পদার্থের ( ইউরেনিয়াম , থোরিয়াম , রেডিয়াম প্রভৃতি ) তেজস্ক্রিয়তায় উষ্ণতা বৃদ্ধি পায় । 

( viii ) আগ্নেয়গিরি , প্রস্রবণ প্রভৃতির মাধ্যমে নির্গত ভূ – অভ্যন্তরীণ তাপের প্রভাবে । এবং 

( ix ) কিছু কিছু শিলার ( CaCO3 ) রাসায়নিক আবহবিকারে সৃষ্ট তাপের মাধ্যমে বায়ুমণ্ডল সামান্য হারে উত্তপ্ত হয় । 

2. বায়ুমণ্ডলে উষ্ণতার তারতম্যের কারণগুলি কী কী ?

 অথবা , বায়ুমণ্ডলের উষ্ণতা তারতম্যের প্রধান তিনটি কারণ ব্যাখ্যা করো ।

Ans: বায়ুমণ্ডলের তাপের তারতম্যের কারণসমূহ ( Causes of variation of atmospheric temperature ) : বায়ুমণ্ডলের এই তাপের তারতম্যের কারণগুলি হল Riehote sims 

( ১ ) অক্ষাংশ ( Latitude ) : সৌরশক্তি পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলের উষ্ণতার প্রধান উৎস হলেও , অক্ষাংশ অনুসারে সূর্যকিরণ ভূপৃষ্ঠের কোথাও লম্বভাবে এবং কোথাও তির্যকভাবে পড়ে । লম্বভাবে পতিত রশ্মির তুলনায় তির্যকভাবে পতিত রশ্মিতে উত্তাপের পরিমাণ কম হয় । নিরক্ষরেখার ওপর প্রায় সারাবছর ধরে সূর্যরশ্মি লম্বভাবে পড়ে । নিরক্ষরেখা থেকে যতই উত্তর বা দক্ষিণ মেরুর দিকে যাওয়া যায় ততই সূর্যরশ্মি পৃথিবীপৃষ্ঠে তির্যকভাবে পড়তে থাকে যার ফলে নিরক্ষীয় অঞ্চল থেকে উভয় মেরুর দিকে উত্তাপ ক্রমশ কমতে থাকে । সাধারণত , নিরক্ষরেখা থেকে উত্তর বা দক্ষিণে প্রতি ১ ° অক্ষাংশের পার্থক্যে ০.২৮ ° সেলসিয়াস হারে উদ্বৃতা কমে যায় । 

( ২ ) উচ্চতা ( Altitude ) : সূর্য থেকে বিকিরণ পদ্ধতিতে আগত তাপশক্তি বায়ুমণ্ডলের মধ্য দিয়ে এলেও বায়ুমণ্ডলকে সরাসরিভাবে উত্তপ্ত না করে প্রথমে কঠিন ভূপৃষ্ঠকে উত্তপ্ত করে । পরে ওই উত্তপ্ত বায়ু ভূপৃষ্ঠের সংস্পর্শে আসলে ভূপৃষ্ঠসংলগ্ন বায়ুস্তর উত্তপ্ত হয় এবং সমপৃষ্ঠ 3056 ওই তাপ ধীরে ধীরে ওপরের বায়ুস্তরে সঞ্চারিত হয় । তাই নীচের বায়ুস্তরের উষ্ণতা বেশি হয় এবং যত উপরে ওঠা যায় বায়ুর উষ্ণতা ততই কমতে থাকে । সাধারণত প্রতি ১ কিলোমিটার উচ্চতা বৃদ্ধির জন্য ৬.৪ ° সেলসিয়াস হারে বায়ুমণ্ডলের উষ্ণতা কমতে থাকে , একে ‘ উষ্ণতা হ্রাসের গড় ’ বা ‘ Lapse rate of temperature ” বলে । এই কারণেই একই অক্ষাংশে অবস্থিত হলেও উচ্চস্থান অপেক্ষাকৃত শীতল হয় । উদাহরণ : জম্মু অপেক্ষা উঁচুতে অবস্থিত শ্রীনগর শীতলতর । 

( ৩ ) স্থলভাগ ও জলভাগের বণ্টন ( Distribution of Land & Water Bodies ) :

( i ) পৃথিবীর কোনো স্থান সমুদ্র থেকে যত দূরে অবস্থিত হয় , সেখানে উষ্ণতার ততই চরমভাব দেখা যায় , কারণ : গ্রীষ্মকালে একই অক্ষাংশে অবস্থিত মহাদেশগুলির স্থলভাগের উপরিভাগ সমুদ্রের জলের চেয়ে অনেক বেশি উত্তপ্ত হয় । এইজন্য সমুদ্রের নিকটবর্তী অঞ্চলে আবহাওয়া কখনোই চরমভাবাপন্ন হয় না । উদাহরণ : উত্তর গোলার্ধের ৩৫ ° থেকে ৬০ ° উত্তর অক্ষাংশের মধ্যে অবস্থিত জার্মানি , পোল্যান্ড এবং আল্পস পর্বতের পাদদেশীয় দেশসমূহে এক বিশেষ ধরনের সামুদ্রিক জলবায়ু পরিলক্ষিত হয় একে পশ্চিম উপকূলীয় সামুদ্রিক জলবায়ু বলে । শীত ও গ্রীষ্মকালীন তাপমাত্রার স্বল্প ব্যবধান , বেশিরভাগ সময়ে মেঘাচ্ছন্ন আকাশ এবং বাতাসে অতিরিক্ত আর্দ্রতা হল সামুদ্রিক জলবায়ুর অন্যতম বৈশিষ্ট্য । অন্যদিকে ,

( ii ) সমুদ্র থেকে দূরে অবস্থিত মহাদেশের ভিতরের দিকে সমুদ্রের প্রভাব ততটা পড়ে না বলে চরমভাবাপন্ন জলবায়ু দেখা যায় , অর্থাৎ এখানে ঠান্ডা ও গরম খুব বেশি হয় । এই ধরনের জলবায়ুকে মহাদেশীয় জলবায়ু বলে । শীতকালীন ও গ্রীষ্মকালীন তাপমাত্রার বিরাট ব্যবধান হল মহাদেশীয় জলবায়ু অঞ্চলের অন্যতম বৈশিষ্ট্য । উদাহরণ : মধ্য এশিয়া , কানাডা , রাশিয়া , ব্রিটিশ দ্বীপপুঞ্জের পূর্বাঞ্চল এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মধ্য ও পশ্চিম ভাগে মহাদেশীয় জলবায়ু দেখা যায় । 

( ৪ ) বায়ুপ্রবাহ ( Movement of winds ) বায়ুপ্রবাহ হল জলবায়ুর তারতম্যের অপর একটি কারণ । ক্রান্তীয়মণ্ডলে অপেক্ষাকৃত শীতল সমুদ্র বায়ুর প্রভাবে স্থলভাগের উদ্বৃতা কিছুটা হ্রাস পায় , অন্যদিকে উদ্ভুতর সমুদ্র থেকে আগত পশ্চিমা বায়ুর প্রভাবে নাতিশীতোয় মণ্ডলের উপকূলবর্তী স্থলভাগের উষ্ণতা কিছুটা বৃদ্ধি পায় । এ ছাড়াও বিভিন্ন দিক থেকে প্রবাহিত উষ্ণ কিংবা শীতল স্থানীয় বায়ুপ্রবাহগুলিও ( চিনুক , ফন , সিরোক্কো , মিস্টাল , খামসিন প্রভৃতি ) স্থানীয়ভাবে উষ্ণতার তারতম্য ঘটাতে সাহায্য করে । আর্দ্রবায়ুর প্রভাবে কোথাও বৃষ্টি হয় মাবার শুষ্কবায়ুর প্রভাবে কোনো কোনো স্থানে আবহাওয়া শুষ্ক হয় । 

( ৫ ) সমুদ্রস্রোত ( Ocean currents ) : বায়ুপ্রবাহের মতো বিভিন্ন সমুদ্রস্রোতের মধ্যেও তাপমাত্রার পার্থক্য দেখা যায় যার প্রধান কারণ হল সমুদ্রস্রোতগুলির উৎস অঞ্চলের তাপমাত্রার পার্থক্য । সাধারণত কোনো অঞ্চলের কাছ দিয়ে উষ্ণুস্রোত প্রবাহিত হলে তার প্রভাবে অঞ্চলটির তাপমাত্রা বাড়ে , পক্ষান্তরে কোনো অঞ্চলের কাছ দিয়ে শীতল সমুদ্রস্রোত প্রবাহিত হলে সেই স্থানটির তাপমাত্রা কমে । উদাহরণ হিসেবে বলা যায় , ব্রিটিশ দ্বীপপুঞ্জ ও ল্যাব্রাডর উপকূ ল একই অক্ষাংশে অবস্থিত হলেও উষ্ণ উপসাগরীয় স্রোতের প্রভাবে ব্রিটিশ দ্বীপপুঞ্জের বায়ুমণ্ডল উষু হওয়ায় নিকটস্থ সমুদ্রে বরফ জমে না , কিন্তু শীতল ল্যাব্রাডর স্রোতের প্রভাবে ল্যাব্রাডর উপকূলে বরফ জমে । 

( ৬ ) ভূমির ঢাল ( Inclination of the Land ) ভূমির ঢালের তারতম্যের জন্য কোনো স্থানের উত্তাপের তারতম্য ঘটতে দেখা যায় , যেমন : ( i ) উত্তর গোলার্ধে কোনো স্থানের ভূমির ঢাল দক্ষিণমুখী অর্থাৎ নিরক্ষরেখার দিকে হলে সেখানে সূর্যকিরণ লম্বভাবে পড়ে , ফলে সেখানকার বায়ুমণ্ডল বেশি উত্তপ্ত হয় ।

আবার ( ii ) উত্তর গোলার্ধের কোনো স্থানের ভূমির ঢাল ( সাইবেরিয়া অঞ্চল ) নিরক্ষরেখার বিপরীত দিকে হলে সেখানে সূর্যকিরণ তির্যকভাবে পড়ে এবং স্থানটির উষ্ণতা তুলনামূলকভাবে কম হয় ।

( iii ) দক্ষিণ গোলার্ধে কোনো স্থানের ভূমির ঢাল উত্তরমুখী —অর্থাৎ নিরক্ষরেখার দিকে হলে সেখানে সূর্যকিরণ লম্বভাবে পড়ে , কারণ দক্ষিণ গোলার্ধের উত্তরমুখী ঢালে সূর্য প্রায় লম্বভাবে কিরণ দেয় । 

( ৭ ) মেঘাচ্ছন্নতা ও অধঃক্ষেপণ ( Cloud cover & precipitation ) : মেঘ সৌরকিরণকে বহুলাংশে প্রতিফলিত করে , যার ফলে সৌরতাপের অনেকাংশই ভূপৃষ্ঠে এসে পৌঁছতে পারে না । এ ছাড়া বৃষ্টিপাতের ফলেও তাপমাত্রা কমে । বৃষ্টির জলকণা বেশ কিছুটা তাপ শোষণ করে নেয় । আমাদের দেশে গ্রীষ্মকালের তুলনায় বর্ষাকালে সৌর – বিকিরণ কিছুই কমে না ; তবুও বর্ষাকালে গ্রীষ্মকালের তুলনায় তাপমাত্রা কম হওয়ার কারণ হল অধঃক্ষেপণ তথা বৃষ্টিপাত । 

( ৮ ) স্বাভাবিক উদ্ভিদ ( Natural vegetation ) : বনভূমি সৃি কার অভ্যন্তরে জলীয় বাষ্প ধরে রাখে ফলে মাটি আর্দ্র থাকে । ভূপৃষ্ঠে বনভূমির আচ্ছাদন থাকলে বায়ুমণ্ডল দিনের বেলা সহজে গরম হতে পারে না এবং রাত্রিতে খুব তাড়াতাড়ি তাপ হারিয়ে ঠান্ডা হয়ে যায় না । নিরক্ষীয় অঞ্চলের গহন বনভূমি সূর্যের তাপীয় ফল অনেকাংশে হ্রাস করে এবং এখানকার বায়ুমণ্ডলের তাপমাত্রা একই অক্ষাংশে অবস্থিত বনভূমিহীন অঞ্চল থেকে অনেকাংশে কম হয় । তা ছাড়া বনভূমির বৃক্ষসমূহ প্রস্বেদন প্রক্রিয়ায় বায়ুমণ্ডলে জলীয় বাষ্প সংযোজন করে বৃষ্টিপাত ঘটায় ফলে বৃষ্টিপাত বৃদ্ধি পেলে বায়ুমণ্ডলের তাপমাত্রা স্বাভাবিক ভাবে কমে আসে । 

( ৯ ) মৃত্তিকা ( Soil ) : পাললিক মৃত্তিকায় কাদার ভাগ বেশি থাকায় পার্বত্য মৃত্তিকা থেকে এর জলধারণের ক্ষমতা বেশি । ফলে এই মৃত্তিকা সহজে গরম বা ঠান্ডা হয় না । পার্বত্য মৃত্তিকায় জলধারণ ক্ষমতা কম তাই এই মাটি দ্রুত উত্তপ্ত হয় এবং দ্রুত শীতলও হয়ে যায় । এইজন্য পাললিক মৃত্তিকায় গড়া সমতল ভূভাগের তুলনায় পার্বত্য অঞ্চলে দৈনিক উষ্ণতার প্রসরও ( Diurnal range of temperature ) বেশি হয় । আবার মরুভূমির দৈনিক উষ্ণতার প্রসরও এই একই কারণে বেশি হয় । কালো রঙের মাটি বেশি পরিমাণে সূর্যতাপ গ্রহণে সক্ষম বলে , হালকা রঙের মৃত্তিকা অঞ্চল থেকে এখানকার বায়ুমণ্ডলের তাপমাত্রা বেশি হয় । 

( ১০ ) নগরায়ণ ও শিল্পায়ন ( Urbanisation & Industrialisation ) : শহরাঞ্চলের বায়ুমণ্ডলের তাপমাত্রা গ্রামাঞ্চল থেকে বেশি হয় । শহরের বাড়িগুলি সাধারণত ইট , লোহা , সিমেন্ট , বালি প্রভৃতি মালমশলা দিয়ে তৈরি হয় । যাদের আপেক্ষিক তাপ কম । ফলে , দিনের বেলা শহর যতটা উত্তপ্ত হয় , গ্রাম ততটা হয় না । শহরাঞ্চলের বায়ুমণ্ডলের উত্তাপ বৃদ্ধির আরও একটি কারণ হল কলকারখানার চিমনি থেকে নির্গত ধোঁয়া , ধূলিকণা প্রভৃতি — যারা শুধুমাত্র তাপের উৎসই নয় , তারা ভূপৃষ্ঠের তাপ বিকিরণকেও প্রতিহত করে ।

3. অক্ষাংশ ও উচ্চতা বায়ুমণ্ডলের উষ্ণতা কীভাবে নিয়ন্ত্রণ করে , উদাহরণসহ ব্যাখ্যা করো ।

Ans: অক্ষাংশ ও উচ্চতার ভিত্তিতে বায়ুমণ্ডলের উষ্ণতার পরিবর্তনের কারণসমূহ – 

( i ) অক্ষাংশের ভিত্তিতে অবস্থান ভূপৃষ্ঠসংলগ্ন বায়ুমণ্ডলের উষ্ণতা নির্ভর করে কোনো স্থানে আগত সূর্যরশ্মির পরিমাণের উপর এবং আগত সূর্যরশ্মির পরিমাণের ওপর এবং আগত সূর্যরশ্মির পরিমাণ নির্ভর করে সেই স্থানের অক্ষাংশের ওপর । অক্ষাংশের পরিবর্তনের সাথে সাথে সূর্যরশ্মির পতনকোপের যেমন তারতম্য হয় , তেমনি দিনরাত্রির দৈর্ঘ্যেরও হ্রাসবৃদ্ধি ঘটে । নিরক্ষীয় অঞ্চল বরাবর সারাবছর গড় সূর্যরশ্মি লম্বভাবে , মধ্য অক্ষাংশে তির্যকভাবে ও উচ্চ অক্ষাংশে অতি তির্যকভাবে পতিত রশ্মি অপেক্ষা কম বায়ুস্তর ভেদ করে আসে এবং কম অঞ্চল জুড়ে ছড়িয়ে পড়ে — তাই উষ্ণতা বেশি হয় । এই কারণে নিরক্ষরেখা থেকে উত্তরে ও দক্ষিণে উষ্ণতা ক্রমশ কমতে থাকে । 

( ii ) উচ্চতার প্রভাব : উষ্ণতার নিয়ন্ত্রণে উচ্চতাও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে । ট্রপোস্ফিয়ারে উচ্চতাবৃদ্ধির সঙ্গে উষ্ণতা ৬.৪ ° সে . / কিমি হারে হ্রাস পায় — একে ‘ ল্যাপস্ রেট ’ বলে । সাধারণভাবে উচ্চতা বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে বিকিরণের প্রভাব কমে , ধুলিকণার পরিমাণ কমতে থাকে এবং বায়ুর চাপও কম হয় । তাই উচ্চতা বৃদ্ধিতে উষ্ণতা হ্রাস পায় । এই কারণেই অধিক উচ্চ অঞ্চলের উষ্ণতা কম হয় । অধিক উচ্চতার কারণেই প্রায় নিরক্ষরেখা বরাবর অবস্থিত । হওয়া সত্ত্বেও কিনিয়ার মাউন্ট কিলিমাঙ্খারো পর্বতের ওপর সারাবছর বরফ জমে থাকে । এই কারণেই শিলিগুড়ি অপেক্ষা | দার্জিলিং এবং দিল্লি অপেক্ষা সিমলার উষ্ণতা সারাবছর কম ।

4. চিত্রসহ বিভিন্ন তাপমণ্ডলের সংক্ষিপ্ত ব্যাখ্যা দাও ।

Ans: অক্ষরেখার নিরিখে যেসকল অঞ্চলে উষ্ণতা মোটামুটি সমান সেগুলিকেই বলে তাপমণ্ডল । তাপমণ্ডল তিনটি— 

( i ) উষ্ণুমণ্ডল : অবস্থান : নিরক্ষরেখাকে মাঝখানে রেখে উত্তরে কর্কটক্রান্তি এবং দক্ষিণে মকরক্রান্তির মধ্যবর্তী অঞ্চল । 

বৈশিষ্ট্য : ( i ) গড় উষ্ণতা বেশি , গড়ে ২৭ ° সে .

( ii ) এখানে শীত ঋতু অতটা পরিলক্ষিত হয় না । হলেও খুব শীতল নয় ।

( iii ) বাৎসরিক উষ্ণতার প্রসার কম । উৎপত্তির কারণ :

( i ) গড় সূর্যরশ্মির পতনকোণ সারাবছর বেশি ( ৯০ ° -এর কাছাকাছি ) ।

( ii ) সারাবছর দিন ও রাতের দৈর্ঘ্য প্রায় সমান ।

( ii ) নাতিশীতোর মণ্ডল অবস্থান : উ . গোলার্ধে কর্কটক্রান্তি রেখা থেকে সুমেরুবৃত্ত এবং দ . গোলার্ধে মকরক্রান্তি থেকে কুমেরুবৃত্ত পর্যন্ত অঞ্চল । 

বৈশিষ্ট্য : ( i ) গড় উদ্বৃতা ০ ° -২৭ ° সে .

( ii ) নিম্ন অক্ষাংশ থেকে উচ্চ অক্ষাংশের দিকে তাপমাত্রা দ্রুতহারে কমে ।

( iii ) বার্ষিক উষ্ণতার প্রসর বেশি ।

( iv ) ক্রান্তিরেখাদ্বয় অঞ্চল হল গ্রীষ্মপ্রধান নাতিশীতোয় মন্ডল এবং মেরুবৃত্ত রেখাদ্বয় অঞ্চল হল শীতপ্রধান নাতিশীতোয় মণ্ডল ।

উৎপত্তির কারণ : ( i ) গড় সূর্যরশ্মির পতনকোণ মধ্যম প্রকৃতির । গ্রীষ্মকালে পতনকোণ বাড়ে এবং শীতকালে কমে ।

( ii ) দিন ও রাতের গড় দৈর্ঘ্য সারাবছর মাঝামাঝি ।  

হিমমণ্ডল : অবস্থান : উ . গোলার্ধে সুমেরুবৃত্ত থেকে সুমেরুবিন্দু এবং দ . গোলার্ধে কুমেরুবৃত্ত থেকে কুমেরুবিন্দু হল হিমমণ্ডল । 

বৈশিষ্ট্য : ( i ) গড় উষ্ণতা সারাবছরই ০ ° সে . – এর কম ।

( ii ) দু – একটি স্থানে কদাচিৎ উষ্ণতা হিমাঙ্কের উপরে ওঠে ।

( iii ) বাৎসরিক উষ্ণতার প্রসর খুব বেশি ।

( iv ) অঞ্চলটি বরফে ঢাকা ।

( v ) মাঝে মাঝে অরোরা দেখা যায় ।

উৎপত্তির কারণ : ( i ) দিন ও রাতের দৈর্ঘ্যের তারতম্য খুব বেশি ।

( ii ) কোনো কোনো স্থানে একটানা ৬ মাস দিন ও ৬ মাস রাত বিরাজ করে ।

( iii ) দিনের সময়কালে সূর্যরশ্মির পতনকোণ অতি তির্যক । 

5. পৃথিবীব্যাপী বিশ্বউষ্ণায়নের প্রভাব ব্যাখ্যা করো ।

Ans: বিশ্ব উষ্ণায়নের প্রভাব ( Effects of global warming ) ক্রমবর্ধমান হারে গ্রিনহাউস গ্যাসগুলি বায়ুতে নির্গত হওয়ার ফলে বিশ্বব্যাপী উষ্ণতা ক্রমশ বাড়ছে । যেমন- ১৮৫০-১৯৯০ খ্রিস্টাব্দের মধ্যে বায়ুমণ্ডলের উষ্ণতা ১ ° সেন্টিগ্রেড বেড়েছে । বিজ্ঞানীদের অনুমান ২০৩০ খ্রিস্টাব্দে উষ্ণতা বাড়ার হার হবে ২ ° সেন্টিগ্রেড । গ্লোবাল ওয়ার্মিং – এর সম্ভাব্য প্রভাবগুলি নীচে আলোচনা করা হল – 

( ১ ) মেরু অঞ্চলের বরফের গলন ও পার্বত্য হিমবাহের গলন ( Melting of polar ice caps and mountain glacier ) : 

বায়ুমণ্ডলের উষ্ণতা বৃদ্ধির ফলে কুমেরু মহাদেশের গভীর পুরু বরফের স্তর এবং অন্যান্য মহাদেশীয় ও পার্বত্য হিমবাহ খুব দ্রুত গলতে থাকবে এবং বরফগলা জল সমুদ্রে যুক্ত হয়ে সমুদ্রের জলের পরিমাণকে আরও বাড়িয়ে দেবে এবং সমুদ্রজলের উষ্ণতা ও লবণতার হেরফের ঘটবে , যার পরোক্ষ ফলস্বরূপ সমুদ্রস্রোতের পরিবর্তন ও অন্যান্য সামুদ্রিক পরিবেশের পরিবর্তন ঘটবে । এর ফলাফল স্বরূপ-

( i ) স্বাভাবিক ক্ষয়চক্র ব্যাহত হবে ,

( ii ) ভূমিরূপের পরিবর্তন ঘটবে ,

( iii ) উপকূলবর্তী এলাকার নীচু অংশ জলমগ্ন হবে ,

( iv ) সমুদ্রের লবণাক্ত জলের প্রভাবে মাটি অনুর্বর হয়ে পড়বে । 

( ২ ) সমুদ্রতলের উচ্চতা বৃদ্ধি ( Rise of sea level ) : বায়ুমণ্ডলের তাপমাত্রা বৃদ্ধি পেলে মেরু ও উঁচু পার্বত্য অঞ্চলের বরফ বেশি পরিমাণে গলবে এবং সমুদ্র জলতলের উচ্চতা বৃদ্ধি পাবে । বিগত শতাব্দীতে ১.৫ ° C তাপমাত্রা বৃদ্ধিতে সমুদ্র জলতলের উচ্চতা বৃদ্ধি পেয়েছে প্রায় ১০–১২ সেমি । বিজ্ঞানীদের আশঙ্কা , এই হারে বিশ্ব উষ্ণায়ন চলতে থাকলে এই শতাব্দীর শেষে সমুদ্র জলতলের উচ্চতা ৩০–৯০ সেমি বৃদ্ধি পাবে । এর ফলে সমুদ্র উপকূল অঞ্চল প্লাবিত হবে , জলাভূমি ও নীচুভূমি বিনষ্ট হবে , উপকূল অঞ্চলে ক্ষয়ের পরিমাণ বাড়বে , ম্যানগ্রোভ বনভূমি ও বন্যপ্রাণীর বিনাশ ঘটবে এবং নদীর জলের লবণতার পরিমাণ বাড়বে । এর ফলে আগামী কয়েক দশকে সিসিলি , মালদ্বীপ ও মার্শাল দ্বীপপুঞ্জ , বাংলাদেশের উপকূলের এক বিরাট অংশ , মিশর , আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডা , লুইসিয়ানা ও ক্যারোলিনা এবং ভারতের উপকূল অঞ্চল সমুদ্রে তলিয়ে যাবে । 

( ৩ ) অধঃক্ষেপণের প্রকৃতি পরিবর্তন ( Change in nature of precipitation ) : বায়ুমণ্ডলীয় উষ্ণতা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে জলবায়ুগত পরিবর্তন অবশ্যম্ভাবী । বৃষ্টিপাতের বণ্টনে সামগ্রিক পরিবর্তন ঘটবে । উত্তর গোলার্ধের উত্তরদিকের দেশগুলিতে অতিবৃষ্টি এবং দক্ষিণদিকের দেশগুলিতে খরার প্রকোপ বাড়ার যথেষ্ট সম্ভাবনা আছে । 

( ৪ ) শস্য উৎপাদনের হ্রাসবৃদ্ধি ( Over and under production of crops ) : তাপমাত্রা বৃদ্ধি পেলে ঋতুগুলির সময়সীমা বৃদ্ধি পাবে , ফলে কৃষিপণ্যের উৎপাদন হ্রাস পাবে । এ ছাড়া তাপমাত্রা সহায়িকা , বাড়লে উদ্ভিদের সালোকসংশ্লেষের হার বাড়ে । এই কারণে ভুট্টা , আম , জোয়ার , বাজরা প্রভৃতি ফসলের উৎপাদন বাড়লেও ধান , গম , ওট , বার্লি , সয়াবিন , তামাক , তুলো , পাট প্রভৃতি ফসলের উৎপাদন কমে যাবে । বিজ্ঞানীদের অনুমান , প্রধান খাদ্যফসলগুলির বিশ্বব্যাপী উৎপাদনের হার ১০ % – ৭০ % পর্যন্ত কমবে । 

( ৫ ) কৃষিপদ্ধতির পরিবর্তন ( Change in agricultural methods ) : বিশ্ব উষ্ণায়নের প্রভাবে জলবায়ুর পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে কৃষিক্ষেত্রের স্থান পরিবর্তন ঘটবে এবং কৃষিজমির পরিমাণ ১০ % -৫০ % কমে যাবে । উদাহরণ হিসেবে বলা যায় , যেসব অঞ্চলে গমচাষ হত , উষ্ণতা বৃদ্ধির ফলে সেসব অঞ্চলে গমের পরিবর্তে অন্য শস্যের চাষ হচ্ছে । তাপমাত্রা ও বৃষ্টিপাতের পরিবর্তনের ফলে প্রধান কৃষিকাজের এলাকা আরও উচ্চ অক্ষাংশের দিকে বিস্তৃত হবে । ভুট্টা , আখ , জোয়ার বাজরার উৎপাদন বাড়লেও ধান , গম , বার্লি , ওট , সয়াবিন , তুলো , তামাকের উৎপাদন কমে যাবে । 

( ৬ ) এল নিনো ও পৃথিবীব্যাপী তার প্রভাব ( Bl – Nine and its global effects ) : বিশ্ব উষ্ণায়নের ফলে সমুদ্রের জল উগ্ন হয়ে উঠলে যে নিম্নচাপ তৈরি হয় তা আয়ন বায়ুপ্রবাহকে দুর্বল করে এবং দক্ষিণ আমেরিকার পশ্চিম উপকূলে প্রচুর বৃষ্টিপাত হয় । অন্যদিকে , পশ্চিম প্রশান্ত মহাসাগরে স্বাভাবিকের থেকে বেশি শীতল আবহাওয়া সৃষ্টি হয় । একে এল নিনো ঘটনা বলে । এল নিনো বলতে দক্ষিণমুখী বিশেষ একটি অস্থির ও উষ্ণ সমুদ্রস্রোতকে বোঝায় , যা দক্ষিণ – পূর্ব প্রশান্ত মহাসাগরে ১০০-৩৫ ° দ , অক্ষাংশ ও ৯০ ° -১২০ ° প দ্রাঘিমায় লক্ষ করা যায় । এই স্রোত প্রতি বছর ক্রিসমাসের কাছাকাছি সময় পেরু ও ইকুয়েডরের পশ্চিম উপকূল দিয়ে প্রবাহিত হয় ।

SOURCE-BS

 

©kamaleshforeducation.in(2023)

 

 

 

মাধ্যমিক দশম শ্রেণীর ভূগোল-বায়ুমণ্ডল-X

 

মাধ্যমিক দশম শ্রেণীর ভূগোল প্রশ্ন ও উত্তর 

  (বায়ুমণ্ডল – দ্বিতীয় অধ্যায়) 

মাধ্যমিক দশম শ্রেণীর ভূগোল প্রশ্ন ও উত্তর  

   (বায়ুমণ্ডল – দ্বিতীয় অধ্যায়)

MCQ | বায়ু (বায়ুমণ্ডল – দ্বিতীয় অধ্যায়) মাধ্যমিক ভূগোল প্রশ্ন ও উত্তর 

  1. পৃথিবীর বৃহত্তম মরুভূমির নাম –

(A) সাহারা

(B) কালাহারি

(C) থর

(D) আটাকামা

Ans: (A) সাহারা

  1. এশিয়ার বৃহত্তম মরুভূমির নাম –

(A) আরব

(B) গোবি

(C) থর

(D) তুর্কিস্তান

Ans: (B) গোবি

  1. পৃথিবীর শুষ্কতম মরুভূমির নাম –

(A) গোবি

(B) আটাকামা

(C) তুর্কিস্তান

(D) লাডাক

Ans: (B) আটাকামা

  1. ভারতের কোন্ রাজ্যে বায়ুকার্যের মাধ্যমে ভূমিরূপের পরিবর্তন ঘটে ?

(A) রাজস্থান

(B) উত্তরপ্রদেশ

(C) মধ্যপ্রদেশ

(D) বিহার

Ans: (A) রাজস্থান

  1. আফ্রিকার মরু অঞ্চলে প্লায়া হ্রদকে বলে— 

(A) ধান্দ 

(B) শস 

(C) স্যালিনা

(D) বোলসন

Ans: (A) ধান্দ

  1. রাজস্থানে মরু অঞ্চলে প্লায়া হ্রদকে বলে— 

(A) ধান্দ

(B) ধ্রিয়ান

(C) বোলসন

(D) শটস

Ans: (A) ধান্দ

  1. লোয়েস সমভূমি দেখা যায়—

(A) হোয়াংহো

(B) ইংয়াংসিকিয়াং

(C) আমুর অববাহিকা

(D) নীলনদের অববাহিকা

Ans: (A) হোয়াংহো

  1. ‘ Defiation ‘ বলতে বোঝায় বায়ুর 

(A) অপসারণ প্রক্রিয়া

(B) অবঘর্ষ প্রক্রিয়া

(C) ঘর্ষণ প্রক্রিয়া

(D) লম্ফদান প্রক্রিয়া

Ans: (A) অপসারণ প্রক্রিয়া

  1. বায়ুপ্রবাহে বাহিত ছোটো শিলাখণ্ডের পারস্পরিক ঠোকাঠুকিকে বলে –

(A) অপসারণ 

(B) ঘর্ষণ

(C) অবঘর্ষ

(D) উপলেপন

Ans: (B) ঘর্ষণ

  1. কোন্ প্রক্রিয়ায় বায়ুপ্রবাহের দ্বারা শিলাস্তরে আঁচড়কাটার মতো দাগ পড়ে –

(A) অবঘর্ষ প্রক্রিয়া

(B) ঘর্ষণ প্রক্রিয়া 

(C) অপসারণ প্রক্রিয়া

(D) অধিগ্রহণ প্রক্রিয়ায়

Ans: (A) অবঘর্ষ প্রক্রিয়া

  1. মরুভূমির শুষ্ক নদীখাতকে কী বলে ?

(A) বোলসন

(B) ওয়াদি

(C) বাজাদা

(D) ধান্দ

Ans: (B) ওয়াদি

  1. বালির মধ্যে কোন্ খনিজ বেশি পরিমাণে থাকে ?

(A) সিলিকন

(B) কোয়ার্টজ

(C) ফেল্ডস্পার

(D) মাইকা

Ans: (B) কোয়ার্টজ

  1. বালুকাপূর্ণ মরুভূমিকে সাহারায় বলে –

(A) কুম 

(B) হামাদা

(C) রেগ

(D) আর্গ

Ans: (D) আর্গ

  1. এশিয়ায় ‘ Koum desert ‘ বলতে বোঝায় –

(A) বালিময় 

(B) কোণাকার শিলাময় 

(C) প্রস্তরখণ্ডময়

(D) কাদাময় মরুভূমি

Ans: (A) বালিময়

  1. পৃথিবীর বৃহত্তম অপসারণ সৃষ্ট গর্ত হল –

(A) সম্বর 

(B) কাতারা 

(C) পুষ্কর

(D) কোনোটাই নয়

Ans: (B) কাতারা

  1. বায়ু দ্বারা সুক্ষ্ম পীত বালিকণা বহুদুর বাহিত হয়ে সঞ্চিত হলে তাকে বলে –

(A) সিফ

(B) বার্থান

(C) লোয়েস

(D) পেডিমেন্ট

Ans: (C) লোয়েস

  1. বায়ুর গতিপথে উল্লম্বভাবে অবস্থিত অর্ধচন্দ্রাকার বালিয়াড়িকে কী বলে ?

(A) বার্খান 

(B) সিফ্

(C) অধিবৃত্তীয়

(D) পেডিমেন্ট 

Ans: (A) বার্খান

  1. প্রায় সমতল মরু অঞ্চলে বিক্ষিপ্তভাবে দাঁড়িয়ে থাকা কঠিন শিলা গঠিত টিলাকে বলে –

(A) ইনসেলবার্জ

(B) পেডিমেন্ট 

(C) বাজাদা

(D) গৌর

Ans: (A) ইনসেলবার্জ

  1. ইয়ারদাং গড়ে ওঠে কোন্ জলবায়ু অঞ্চলে ? 

(A) আর্দ্র 

(B) শীতল 

(C) উষ্ণ – আর্দ্র

(D) শুষ্ক

Ans: (D) শুষ্ক

  1. বায়ুর কাজ সবচেয়ে বেশি দেখা যায় –

(A) উষ্ণ মরুভূমিতে

(B) শীতল মরুভূমিতে

(C) উচ্চ পার্বত্য অঞ্চল

(D) নাতিউচ্চ মালভূমিতে

  1. কোন্‌টি উত্তর গোলার্ধের মরুভূমি ?

(A) আটাকামা

(B) কালাহারি

(C) সোনেরান

(D) প্যাটাগোনিয়া

Ans: (C) সোনেরান

  1. কোন্‌টি নাতিশীতোয় মরুভূমির অন্তর্গত ।

(A) সাহারা 

(B) কালাহারি

(C) গোবি

(D) থর

Ans: (C) গোবি

  1. মরুভূমিতে বৃষ্টির পরিমাণ –

(A) < ২৫ সেমি

(B) ৫০-৭৫ সেমি

(C) ৭৫-১০০ সেমি

(D) > ১০০ সেমি 

Ans: (A) < ২৫ সেমি

  1. প্যাটাগোনিয়া মরুভূমিটি কোন্ মহাদেশে রয়েছে ? 

(A) এশিয়া

(B) আফ্রিকা

(C) অস্ট্রেলিয়া

(D) দক্ষিণ আমেরিকা

Ans: (D) দক্ষিণ আমেরিকা

  1. কোন্ প্রক্রিয়ায় মরুভূমির বালি উড়ে গিয়ে গর্তের সৃষ্টি হয় ?

(A) অবঘর্ষ দিয়ে

(B) ঘর্ষণ ক্ষয়

(C) দ্রবণ

(D) অপবাহন

Ans: (D) অপবাহন

  1. কোন্ ভূমিরূপকে ‘ Mushroom rocks ‘ বলা হয় ?

(A) ইয়ারদাংকের

(B) গৌর

(C) জুগ্যান

(D) ইনসেলবার্জ

Ans: (B) গৌর

  1. ইনসেলবার্জ – এর নামকরণ করেন – 

(A) L. C. King 

(B) R. A. Bagnold

(C) W. M. Davis

(D) J. W. Powell

Ans: (A) L. C. King

  1. কোন্ মরুভূমির বালি উড়ে গিয়ে হোয়াংহো অববাহিকার লোয়েস ভূমি গঠিত হয়েছে ?

(A) তাকলামাকান

(B) থর

(C) সাহারা

(D) গোবি

Ans: (A) তাকলামাকান

  1. কোনটি দক্ষিণ গোলার্ধের মরুভূমি –

(A) আটাকামা

(B) সাহারা

(C) গোবি

(D) সোনেরান 

Ans: (A) আটাকামা

  1. কোন্‌টি নাতিশীতোয় মরুভূমি –

(A) সাহারা

(B) কালাহারি

(C) তাকলামাকান

(D) অস্ট্রেলিয়

Ans: (C) তাকলামাকান

  1. শিলাময় মরুভূমি কী নামে পরিচিত— 

(A) আগ

(B) রেগ

(C) গৌর

(D) হামাদা

Ans: (D) হামাদা

  1. Mushroom rock কোন্ ভূমিরূপকে বলা হয় –

(A) জুগ্যান

(B) ইনসেলবার্জ

(C) প্লায়া

(D) গৌর

Ans: (D) গৌর

  1. বালিয়াড়ি শব্দটির সঙ্গে কোন্ নামটি সম্পর্কিত ? 

(A) ডেভিস

(B) বিউফোর্ট

(C) ব্যাগনল্ড

(D) গিলবার্ট

Ans: (C) ব্যাগনল্ড

  1. প্যানফ্যান কোন্ ভূমিরূপটিকে বলা হয় ?

(A) পেডিমেন্ট

(B) ইনসেলবার্জ

(C) বার্খান 

(D) ইয়ার্দাং 

Ans: (A) পেডিমেন্ট

  1. মরুভূমি অবনমিত অংশে সৃষ্ট হ্রদ হল— 

(A) অশ্বক্ষুরাকৃতি হ্রদ

(B) প্যাটার্নওস্টার হ্রদ

(C) কেটেল হ্রদ 

(D) প্লায়া হ্রদ

Ans: (D) প্লায়া হ্রদ

  1. বায়ুকার্যে কোন্ ভূমিরূপে দুটি শিং – এর মতো শিরা থাকে –

(A) ইনসেলবার্জ 

(B) বার্খান

(C) পেডিমেন্ট

(D) ওয়াদি

Ans: (B) বার্খান

  1. কোন্ মহাদেশে ‘ গ্রেট গ্রিন ওয়াল ‘ নির্মাণ করা হয়েছে – 

(A) এশিয়া

(B) উত্তর আমেরিকা

(C) আফ্রিকা

(D) অস্ট্রেলিয়া

Ans: (C) আফ্রিকা

  1. কোন্ ভূমিরূপটি বায়ু ও জলধারার মিলিত কার্যে গঠিত –

(A) গৌর

(B) ইয়ার্দাং

(C) ওয়াদি

(D) বার্খান 

Ans: (C) ওয়াদি

  1. ভারতের মরুভূমি গবেষণাকেন্দ্র কোন শহরে রয়েছে – 

(A) যোধপুর

(B) জয়সালমির

(C) দেরাদুন 

(D) জয়পুর 

Ans: (A) যোধপুর

  1. কালাহারি কোন্ মহাদেশের মরুভূমি ?

(A) উত্তর আমেরিকা

(B) আফ্রিকা

(C) দক্ষিণ আমেরিকা

(D) এশিয়া

Ans: (B) আফ্রিকা

 মাধ্যমিক দশম শ্রেণীর ভূগোল প্রশ্ন ও উত্তর 

  (বায়ুমণ্ডল – দ্বিতীয় অধ্যায়) 

অতিসংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর | বায়ু (বায়ুমণ্ডল – দ্বিতীয় অধ্যায়)   

  1. কোন্ জলবায়ুতে বায়ুর কার্য বেশিমাত্রায় ক্রিয়াশীল ?  

Ans: উষ্ণমরু জলবায়ুতে ।

  1. বায়ু কী কী প্রক্রিয়ায় ক্ষয়সাধন করে ?

Ans: অপবাহন , অবঘর্ষ ও ঘর্ষণ প্রক্রিয়ায় । 

  1. বায়ু কী কী প্রক্রিয়ায় বহনকার্য চালায় ? 

Ans: লম্ফদান , ভাসমান ও গড়ানো প্রক্রিয়ায় ।

  1. বায়ু কী কী প্রক্রিয়ায় সঞ্চয়কার্য করে ?

Ans: অধঃক্ষেপণ , উপলেপন ও অধিগ্রহণ প্রক্রিয়ায় ।  

  1. ‘ সিফ্ ‘ শব্দের অর্থ কী ?

Ans: সোজা তরবারি ।

  1. কোন কোন অঞ্চলে বায়ুর কাজ দেখা যায় ? 

Ans: শুষ্ক মরু অঞ্চল ও সমুদ্র উপকূলবর্তী অঞ্চলে । 

  1. ভেন্টিফ্যাক্ট শব্দের অর্থ কী ?

Ans: লাতিন Ventus শব্দের অর্থ বাতাস , Fact = সৃষ্ট অর্থাৎ Ventifact = বায়ুপ্রবাহের ফলে সৃষ্ট ।

  1. ড্রেইকান্টার শব্দের অর্থ কী ?

Ans: জার্মান শব্দ ‘ Dreikanter’- এর অর্থ Three sided অর্থাৎ ত্রিপার্শ্ব অর্থাৎ তিন দিক থেকে সৃষ্ট । 

  1. বায়ুর ক্ষয়জাত কোন্ ভূমিরূপ দেখতে ব্রাজিল নাটের মতো ?

Ans: ভেন্টিফ্যাক্ট ।

  1. পৃথিবীর বৃহত্তম বালুকাময় মরু অঞ্চলের উদাহরণ দাও ।

Ans: সৌদি আরবের রুব – আল – খালি । 

  1. রেগ কী ?

Ans: কোণাকার শিলাখণ্ডপূর্ণ মরুভূমি ।

  1. রেগ মরুভূমি কোন্ দেশে দেখা যায় ?

Ans: আলজিরিয়ায় ।

  1. ‘ Deflation ‘ শব্দের অর্থ কী ?

Ans: গ্রিক শব্দ Deflare = to blow away অর্থাৎ অন্যত্র বয়ে নিয়ে যাওয়া , বাংলায় অপবাহন ।

  1. ‘ বার্থান ‘ শব্দের অর্থ কী ?

Ans: তুর্কি শব্দ ‘ Barchan’- এর অর্থ কিরঘিজ , স্টেপ অঞ্চলের বালিয়াড়ি ।

  1. মরু অঞ্চলের শুষ্ক নদীখাতকে কী বলে ?

Ans: ওয়াদি ।

  1. মেক্সিকোর মরুভূমিতে প্লায়া হ্রদকে কী বলে ?

Ans: বোলসন ( Bolson ) ।

  1. অতিরিক্ত লবণাক্ত প্লায়াকে কী বলে ?

Ans: স্যালিনা ।

  1. কেরলের মালাবার উপকূলের বালিয়াড়িকে স্থানীয় ভাষায় কী বলে ?

Ans: টেরিস ।

  1. সিফ বালিয়াড়ি নামকরণ কে করেন ?

Ans: ব্যাগনল্ড ।

  1. ইনসেলবার্জ ক্ষয় পেয়ে বোল্ডাররূপী ভূমিরূপ গঠন করে , তাকে কী বলে ?

Ans: ক্যাসেল কপিজ । 

মাধ্যমিক দশম শ্রেণীর ভূগোল প্রশ্ন ও উত্তর 

  (বায়ুমণ্ডল – দ্বিতীয় অধ্যায়) 

সংক্ষিপ্ত উত্তরভিত্তিক প্রশ্নোত্তর  

  1. পৃথিবীর কোন্ অঞ্চলে বায়ু ভূমিরূপ পরিবর্তনে অংশগ্রহণ করে ?

Ans: বায়ু ( i ) মরুভূমি ( ক্রান্তীয় ও উপক্রান্তীয় উভয় থরনের মরুভূমিতে ) , ( ii ) মরুভূমিসংলগ্ন মরুপ্রায় ও ( iii ) উপকূল অঞ্চলে তার কার্যের মাধ্যমে ভূমিরূপের পরিবর্তন ঘটায় । 

  1. মরুভূমি ( Desert ) কাকে বলে ? 

Ans: ভূপৃষ্ঠের যেসব স্থানে দীর্ঘকাল থরে গড় বৃষ্টি ২৫ সেমির কম , গাছপালা প্রায় নেই এবং অঞ্চলটি মানুষ বসবাসের অনুপযোগী , সেই স্থানকে মরুভূমি বলে । যেমন — সাহারা , থর , গোবি ইত্যাদি হল পৃথিবীর উল্লেখযোগ্য মরুভূমি ।

  1. উত্তর গোলার্ধের দুটি ক্রান্তীয় মরুভূমির নাম লেখো ।

Ans: উত্তর গোলার্ধের দুটি ক্রান্তীয় মরুভূমির নাম হল ( i ) আফ্রিকার সাহারা এবং ( ii ) উত্তর আমেরিকার সোনেরান মরুভূমি ।

  1. দক্ষিণ গোলার্ধের দুটি ক্রান্তীয় মরুভূমির নাম লেখো ।

Ans: দক্ষিণ গোলার্ধের দুটি ক্রান্তীয় মরুভূমির নাম হল— ( i ) চিলির আটাকামা মরুভূমি ও ( ii ) অস্ট্রেলিয়ার গ্রেট অস্ট্রেলিয়া মরুভূমি ।

  1. দুটি নাতিশীতোয় মরুভূমির নাম লেখো ।

Ans: দুটি নাতিশীতোয় মরুভূমির নাম হল – ( i ) চিনের তাকলামাকান এবং ( ii ) মঙ্গোলিয়ার গোবি মরুভূমি ।

  1. মরূদ্যান ( Oasis ) কাকে বলে ?

Ans: মরুভূমির ভিতরের কোনো কোনো জায়গায় জলের উৎস ( আর্টেজীয় কুপ বা হ্রদ ) থাকলে সেখানে গাছপালা , কৃষিকাজ গড়ে ওঠে । এই জায়গাগুলিকেই বলে মরুদ্যান । মরুদ্যান , মরুভূমি অতিক্রমকারী মানুষের কাছে স্বর্গের সমান ।

  1. মরূদ্যানে জনবসতি গড়ে ওঠে কেন ?

Ans: মরূদ্যানে ভৌমজল পাওয়া যায় , ফলে সেখানে গাছপালা গড়ে ওঠে এবং কৃষিকাজ ও পশুপালনের পরিবেশ সৃষ্টি হয় । তাই মরুদ্যান জনবসতি গড়ে ওঠার সহায়ক ।

  1. হামাদা কাকে বলে ?

Ans: মরু অঞ্চলে বায়ুপ্রবাহ দ্বারা বালুকারাশি অপসারিত হওয়ার ফলে , নিম্নস্থ শিলাময় স্তর বেরিয়ে পড়ে । আবরণহীন কেবলমাত্র শিলা দ্বারা গঠিত এই মরুভূমিকে হামাদা বলে । 

  1. আর্গ কী ?

Ans: বিশালাকার অঞ্চলজুড়ে কেবলমাত্র বালি দ্বারা গঠিত মরুভূমিকে সাহারা আর্গ বলে । তুর্কিস্তানে একেই কুম বলে । উদাহরণ — সৌদি আরবের বুব – আল – খালি হল পৃথিবীর বৃহত্তম আর্গ ।

  1. রেগ কাকে বলে ?

Ans: বিভিন্ন আকৃতির প্রস্তরখণ্ড দিয়ে ঢাকা মরুভূমিকে আলজিরিয়ার রেগ বলে । মিশর ও লিবিয়ায় এটিই সেরীর নামে পরিচিত ।

  1. বায়ুর মাধ্যমে অবঘর্ষ প্রক্রিয়া ভূপৃষ্ঠের সামান্য ওপরে কার্যকর কেন ?

Ans: ভূপৃষ্ঠসংলগ্ন অঞ্চল বায়ুর প্রকৃতি হওয়ায় এবং ভূমিতে ঝোপঝাড় থাকায় বায়ুর গতিবেগ কম হয় এবং বায়ুবাহিত পদার্থসমূহ বাধাপ্রাপ্ত হয় । আবার ঊর্ধ্ব অংশে বায়ুর গতিবেগ বেশি থাকলেও বায়ুবাহিত পদার্থের পরিমাণ কম থাকে । তাই অবঘর্ষ প্রক্রিয়া ভূপৃষ্ঠসংলগ্ন অঞ্চল বা ঊর্ধ্বে তত কার্যকর হয় না । ভূপৃষ্ঠ থেকে সামান্য ওপরে ( ২–১ মিটার ) এই প্রক্রিয়া সবচেয়ে বেশি কার্যকর হয়ে থাকে ।

  1. ব্লো আউট বা অপবাহনসৃষ্ট গর্ত কাকে বলে ? বা , অপসারণসৃষ্ট গর্ত কীভাবে সৃষ্টি হয় ?

Ans: প্রবল বায়ুপ্রবাহে বালিস্তর অপসারিত হয়ে কোনো কোনো স্থানে গর্ত বা অবনমিত অঞ্চল সৃষ্টি করে । একেই অপবাহনসৃষ্ট গর্ত বা ব্লো আউট বলে ।

  1. গৌর ( Gour ) কী ? 

Ans: বায়ুর গতিপথে কঠিন ও কোমল শিলায় গড়া কোনো বৃহৎ শিলাখণ্ড অনুভূমিকভাবে অবস্থান করলে নীচের কোমল অংশ বিভিন্ন ঋতুতে বায়ুর ঘর্ষণের ফলে ক্ষয়প্রাপ্ত হয়ে সরু স্তম্ভের মতো হয় এবং উপরের কম ক্ষয়প্রাপ্ত কঠিন অংশটি বিরাট আয়তন নিয়ে ব্যাঙের ছাতার মতো দাঁড়িয়ে থাকে । স্তম্ভাকৃতি এই কঠিন শিলাখণ্ডকে গৌর বলে ।

  1. জিউগেন ( Zeugen ) কাকে বলে ?

Ans: মরুভূমি বা মরুপ্রায় অঞ্চলে উপরের স্তরে কঠিন । শিলা ও নীচের স্তরে কোমল শিলা পর্যায়ক্রমে অনুভূমিকভাবে অবস্থান করলে অবঘর্ষ প্রক্রিয়ায় বায়ুর ক্ষয়কাজের ফলে কঠিন শিলাগঠিত অংশ অতি অল্প ক্ষয় পেয়ে চ্যাপটা ও প্রায় সমতল চূড়াবিশিষ্ট টিলার মতো দাঁড়িয়ে থাকে এবং কোমল শিলাস্তরগুলি বেশি ক্ষয় পেয়ে ফাটল বরাবর লম্বা খাত বা গহ্বরের সৃষ্টি হয় । এই রকম দুটি গহ্বর বা খাতের মধ্যে চ্যাপটা মাথা টিলার মতো যে ভূমিরূপ গঠিত হয় তাকে জিউগেন বলে ।

  1. ইয়ারদাং ( Yardang ) কী ?

Ans: মরুভূমি বা মরুপ্রায় অঞ্চলে কঠিন ও কোমল শিলাস্তরগুলি পাশাপাশি লম্বভাবে অবস্থান করলে দীর্ঘকাল থরে অবঘর্ষ প্রক্রিয়ায় বায়ুর ক্ষয়কাজের ফলে কোমল শিলাস্তরগুলি দ্রুত ক্ষয়প্রাপ্ত হয়ে গহ্বর বা সুড়ঙ্গের আকার ধারণ করে এবং কঠিন শিলাস্তরগুলি পরস্পর থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে বিভিন্ন মূর্তি আকৃতির শৈলশিরার মতো দাঁড়িয়ে থাকে । এই থরনের ভূমিরূপ ইয়ারদাং নামে পরিচিত ।

  1. ভেন্টিফ্যাক্ট ( Ventifact ) কী ?

Ans: বায়ুর প্রবাহপথে কোনো বৃহৎ প্রস্তরখণ্ড অবস্থান করলে এর প্রতিবাত পার্শ্ব দীর্ঘকাল থরে অবঘর্ষ পদ্ধতিতে ক্ষয় হয়ে মসৃণ ও ছুঁচোলো হয় এবং শিলাস্তরটি ব্রাজিল দেশীয় বাদামের ন্যায় আকৃতি ধারণ করে । একে ভেন্টিফ্যাক্ট বলে ।

  1. ড্রেইকান্টার ( Dreikanter ) কাকে বলে ?

Ans: মরুভূমির কোনো প্রস্তরখণ্ড যদি বিভিন্ন ঋতুতে প্রবাহিত ভিন্নমুখী বায়ুপ্রবাহে অবঘর্ষ পদ্ধতিতে দীর্ঘকাল ক্ষয় হয়ে ত্রিকোণাকার বা ক্ষুদ্র পিরামিড আকৃতি ধারণ করে , তাকেই ড্রেইকান্টার বলে ।

  1. ধান্দ কী ?

Ans: ভারতের থর মরুভূমি অঞ্চলে অপসারণের ফলে ছোটো ছোটো গর্তের সৃষ্টি হয় । এই গর্তগুলিতে জল জমে সাময়িক হ্রদের সৃষ্টি হয় । এগুলি ‘ ধান্দ ‘ নামে পরিচিত ।

  1. ইনসেলবার্জ ( Inselberg ) কাকে বলে ?

Ans: মরুভূমি বা মরুপ্রায় শুষ্ক অঞ্চলে বায়ুপ্রবাহ ও অস্থায়ী জলধারা বা ওয়াদির মিলিত ক্ষয়কাজের ফলে অনেক সময় এইসব অঞ্চলে স্থানে স্থানে কঠিন শিলায় গঠিত অনুচ্চ ক্ষয়ীভূত পাহাড় টিলার আকারে বিক্ষিপ্তভাবে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায় । এইসব অনুচ্চ টিলাকে ইনসেলবার্জ বলে ।

  1. মেসা ও বিউট ( Mesa and Butte ) কী ?

Ans: বায়ু ও জলধারার মিলিত কার্যে মরুভূমি অঞ্চলের উচ্চ মালভূমি ক্ষয় হয়ে বিচ্ছিন্নভাবে টেবিলের আকারে অবস্থান করলে তাকে মেসা বলে । মেসা ক্ষুদ্রাকৃতির হলে তা বিউট নামে পরিচিত ।

  1. পেডিমেন্ট ( Pediment ) কাকে বলে ?

Ans: মরুভূমিতে উচ্চভূমি থেকে পাদদেশের দিকে মৃদু ঢালু ( ঢাল ১.৫ ° – ৭ ° ) ভূমিকে বলা হয় পেডিমেন্ট ।

  1. বালিয়াড়ি ( Sand dunes ) কী ?

Ans: বায়ুপ্রবাহের দ্বারা বালুকারাশি এক স্থান থেকে অন্য স্থানে বাহিত হয়ে সঞ্চিত হওয়ার পর দীর্ঘ ও উচ্চ বালির স্তূপ গঠন করে । একেই বালিয়াড়ি বলা হয় ।

  1. কোথায় কোথায় বালিয়াড়ি দেখা যায় ?

Ans: বালিয়াড়ি সাধারণত মরুভূমি ( ক্রান্তীয় ও নাতিশীতোর ) মরুপ্রায় ও উপকূল অঞ্চলে গড়ে ওঠে ।

  1. বাৰ্খান ( Barchan ) কাকে বলে ? 

Ans: বায়ুর প্রবাহপথের সঙ্গে আড়াআড়িভাবে গড়ে ওঠা অর্ধচন্দ্রাকার বালিয়াড়িকে বাৰ্খান বলে ।

  1. সিক্ বালিয়াড়ি ( Seif dune ) কী ?

Ans: বায়ুপ্রবাহের সমান্তরালে দীর্ঘ ও সংকীর্ণ শৈলশিরার মতো বালির পাহাড়গুলিকে সিক্ বালিয়াড়ি বলে । এই বালিয়াড়ি দেখতে খানিকটা তলোয়ারের মতো হয় ।

  1. টেরিস কী ?

Ans: কেরলের মালাবার উপকূলের গঠিত বালিয়াড়িকে স্থানীয় ভাষায় টেরিস বলে ।

  1. ধ্রিয়ান কাকে বলে ?

Ans: আসলে বায়ুপ্রবাহের গতি ; উত্তর : মরু অঞ্চলে বায়ুপ্রবাহের গতি পরিবর্তনের ফলে বালি এক স্থান থেকে অন্য স্থানে সরে যায় । এই থরনের বালিয়াড়িকে বলে অস্থায়ী বা চলমান বালিয়াড়ি । রাজস্থানের মরু অঞ্চলের এই থরনের বালিয়াড়িকে থ্রিয়ান বলে । 

  1. লোয়েস ( Loess ) কী ?

Ans: মরুভূমি ও মরুপ্রায় অঞ্চলে হলুদ ও ধূসর বর্ণের কোয়ার্টজ , ফেল্ডস্পার , ডলোমাইট ও অন্যান্য খনিজ সমৃদ্ধ শিথিল সূক্ষ্ম পলিকণার সঞ্চয়কে লোয়েস বলে ।

  1. প্লায়া ( Playa ) কাকে বলে ?

Ans: মরুভূমি অঞ্চলে উচ্চভূমি বেষ্টিত অবনমিত অঞ্চলে জল জমে  যে সাময়িক হ্রদের সৃষ্টি হয় , তাকে প্লায়া বলে । এই প্লায়াই আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্রে বোলসন নামে পরিচিত ।

  1. ডেজার্ট পেভমেন্ট ( Desert pavement ) কাকে বলে ?

Ans: কেবলমাত্র নুড়ি ও পাথর দ্বারা গঠিত একটি এবড়োখেবড়ো অবশিষ্ট মরুভূমি অঞ্চলকে ডেজার্ট পেভমেন্ট বলে ।

  1. বাজাদা ( Bajada ) কী ?

Ans: প্লায়া ও পার্শ্ববর্তী অংশে স্বল্পমেয়াদি প্রবল বর্ষায় উৎপন্ন পলি জমে সৃষ্ট সমভূমি হল বাজাদা বা বাহাদা ।

  1. ওয়াদি ( Wadi ) কাকে বলে ?

Ans: মরুভূমিতে বৃষ্টির জলধারার ক্ষয়কাজের ফলে যে সমস্ত ছোটো ছোটো অনিত্যবহ ক্ষণস্থায়ী প্রকৃতির নদী বা শুষ্ক নদীখাতের সৃষ্টি হয় , তাদের ওয়াদি বলে ।

  1. মরু সম্প্রসারণ ( Expansion of Desert ) বলতে কী বোঝ ?

Ans: যে প্রক্রিয়ার দ্বারা উৎপাদনশীল ভূমি ক্রমশ সম্পূর্ণভাবে উৎপাদনে অক্ষম অনুর্বর মরুভূমিতে পরিণত হয় , তাকে মরুকরণ বা মরু অঞ্চলের সম্প্রসারণ বলে ।

  1. CAZRI- এর গুরুত্ব লেখো ।

Ans: CAZRI- এর পুরো নাম হল Central Arid Zone Research Institute । এটি হল ভারতের একটি সংস্থা , যার সদর দপ্তর যোধপুরে অবস্থিত । এই সংস্থা দেশের মরুকরণ বা মরুভূমির সম্প্রসারণ বোধ করার সম্পর্কে গবেষণা চালায় ও গাছ লাগিয়ে নানা প্রকল্প রূপায়ণ করে ।

  1. উপকূল ও নদীর মোহানায় বালির সঞ্চয় দেখা যায় কেন ?

Ans: উপকূল ও নদীর মোহানায় বালি তৈরি হয়েছে সিলিকেট সমৃদ্ধ শিলা যান্ত্রিক ও রাসায়নিক প্রক্রিয়ার মাধ্যমে । কোয়ার্টজ খনিজ রাসায়নিকভাবে পরিবর্তিত হয় না বলেই তা মোটা দানা বালিতে পরিণত হয় । কোনো কোনো উপকূলে চুনাপাথর ( সাদাবালি ) ও প্রবালের খোলক থেকেও বালির উৎপত্তি হয়েছে । এই কারণেই উপকূল ও নদীর মোহানায় বালির সঞ্চয় দেখা যায় ।

  1. উপকূলে কীভাবে বায়ু ভূমির পরিবর্তন ঘটায় ?

Ans: উপকূল অঞ্চলে সমুদ্রের দিক থেকে জোরে বাতাস বয় । এই বাতাস উপকূলের বালিকে উড়িয়ে নিয়ে অন্য স্থানে সঞ্চয় করে বালিয়াড়ি তৈরি করে । তাই উপকূলে বায়ু সঞ্চয়কার্যের মাধ্যমে ভূমি গড়ে ওঠে — ক্ষয়কার্যের ফলে অতটা নয় । এইভাবেই উপকূলে বায়ু ভূমির পরিবর্তন ঘটায় । 

 

 

মাধ্যমিক দশম শ্রেণীর ভূগোল প্রশ্ন ও উত্তর 

  (বায়ুমণ্ডল – দ্বিতীয় অধ্যায়) 

ব্যাখ্যাধর্মী প্রশ্নোত্তর 

  1. মরুভূমিতে বায়ু প্রধান শক্তিরূপে কাজ করে কেন ? অথবা , মরু অঞ্চলে বায়ুর কাজের প্রাধান্য দেখা যায় কেন ?    

Ans: মরুভূমিতে বায়ু প্রধান শক্তিরূপে কাজ করে –

( ১ ) যান্ত্রিক আবহবিকারের প্রাবল্য : যান্ত্রিক আবহবিকারে শিলা ভেঙে টুকরো টুকরো হয়ে অবশেষে বালিকণায় পরিণত হয় । বালি বায়ু ক্ষয়কার্যের প্রধান উপাদান ।

( ২ ) বৃষ্টির অভাব : বৃষ্টি এখানে হয় না । বালিস্তর সর্বদা আলগা ও শিথিল থাকে , যা বায়ু সহজেই উড়িয়ে নিয়ে যেতে পারে ।

( ৩ ) গাছপালার অভাব : বৃষ্টির অভাবে গাছপালা নেই বলেই বায়ু বাধাহীনভাবে প্রবাহিত হতে পারে ।

  1. মরুভূমিতে বালির উৎপত্তি কীভাবে ঘটেছে ?

Ans: বালি হল শিলাজাত অজৈব পদার্থ যার ব্যাস ০.০২-২.০ মিমি । মরুভূমি গঠনের প্রধান উপাদান হল বালি । এই বালি গঠনের প্রধান উপাদান হল কোয়ার্টজ খনিজ । এ ছাড়া বালির মধ্যে থাকে ফেল্ডস্পার , অভ্র , জিপসাম প্রভৃতি খনিজ । মরুভূমি অঞ্চলের সিলিকেট সমৃদ্ধ শিলা ( গ্রানাইট , ডায়োরাইট , গ্যাব্রো , বেলেপাথর ইত্যাদি ) যান্ত্রিক অববাহিকা – এর প্রভাবে প্রথমে চূর্ণবিচূর্ণ এবং পরে অবঘর্ষ ও ঘর্ষণক্ষয় প্রক্রিয়ায় ছোটো হতে হতে শেষে বালিকণায় পরিণত হয় । এইভাবেই মরুভূমিতে বালির উৎপত্তি হয় ।

  1. বায়ু কোন্ কোন্ পদ্ধতিতে ক্ষয়কাজ করে ?

Ans: বায়ু তিনটি পদ্ধতিতে ক্ষয়কাজ করে—

( 1 ) অবঘর্ষ : মরু অঞ্চলে বায়ুর সাথে বাহিত বালি , অতিক্ষুদ্র প্রস্তরখণ্ড শিলাস্তরের ওপরে আছড়ে পড়ে এবং শিলার ওপর আঁচড় কাটা দাগ , গভীর ক্ষত , মৌচাকের মতো দাগ , অসংখ্য গর্ত সৃষ্টি করে , একে বলে অবঘর্ষ । অবঘর্ষ প্রক্রিয়া ভূমির সামান্য উপরে শিলাস্তরের ওপর সর্বাধিক ক্রিয়াশীল ।

( 2 ) ঘর্ষণ ক্ষয় : ভূপৃষ্ঠের উপর দিয়ে বায়ুর প্রভাবে বাহিত বিভিন্ন আকৃতির নুড়ি , প্রস্তরখণ্ড একে অপরের সাথে ঠোকাঠুকিতে ভেঙে অবশেষে বালিকণায় পরিণত হয় , এটি হল ঘর্ষণ ক্ষয় প্রক্রিয়া ।

( 3 ) অপবাহন : জলের অভাবে মরুভূমির বালি , পলি আলগা শিথিল অবস্থায় থাকে । তাই প্রবল বায়ুপ্রবাহে এই বালি ও পলিকণা অপসারিত হয় । এটি হল অপবাহন প্রক্রিয়া বা deflation । এর প্রভাবে মরুভূমিতে অবনত স্থান , ছোটো – বড়ো গর্তের সৃষ্টি হয় ।

  1. বায়ুর ক্ষয়কাজ কোন কোন বিষয়ের ওপর নির্ভর করে ।

Ans: যে যে বিষয়গুলি বায়ুর ক্ষয়কার্যকে প্রভাবিত করে , সেগুলি হল – 

( ক ) শুষ্ক জলবায়ু ( Dry climate ) 

( খ ) স্বল্প বৃষ্টিপাত ( Scanty rainfall ) 

( গ ) উদ্ভিদের আবরণের স্বল্পতা ( Low vegetation ) 

( ঘ ) আল্গা ভূপৃষ্ঠ ( Lonse earth cover ) 

( ঙ ) যান্ত্রিক আবহবিকারের প্রাবল্য ( Importance of mechanical weathering )

  1. উপকূলে বালিয়াড়ি কীভাবে গঠিত হয় ?

Ans: সমুদ্র উপকূলের ঠিক পিছনের দিকে , প্রধানত বায়ু ও সমুদ্রতরঙ্গের কার্যের ফলে বালিয়াড়ি গড়ে ওঠে । উন্মুক্ত উপকূলের বালি উড়ে গিয়ে বেশ কিছুটা দূরে স্তূপাকারে সঞ্চিত হয় । বেলাভূমিতে এই বালি সঞ্চিত হয়ে ঢিবির মতো দেখতে বালিয়াড়ি গঠিত হয় । পূর্ব মেদিনীপুরের কাথিতে এইরূপ বালিয়াড়ি দেখা যায় ।

  1. বায়ু কোন্ কোন্ প্রক্রিয়ায় বহনকাজ সম্পন্ন করে ?

Ans: বায়ু ক্ষয় করে যেসকল পদার্থ সৃষ্টি করে তা তিনটি পদ্ধতির মাধ্যমে বাহিত হয় –

( i ) ভাসমান প্রক্রিয়া : অপেক্ষাকৃত সূক্ষ্ম ধূলিকণা বায়ুপ্রবাহের ফলে এক স্থান থেকে অন্য স্থানে স্থানান্তরিত হয় ।

( ii ) লম্ফদান : অপেক্ষাকৃত মাঝারি আকারের নুড়ি , শিলাখণ্ড ভূমির সাথে ধাক্কা খেয়ে লাফিয়ে লাফিয়ে এগিয়ে চলে ।

( iii ) গড়ানো প্রক্রিয়া : বড়ো আকারের নুড়ি ও প্রস্তরখণ্ড বায়ুপ্রবাহের ফলে ভূমির সাথে গড়িয়ে গড়িয়ে এগিয়ে যায় । 

  1. লোয়েস ভূমি কীভাবে গঠিত হয় , তা উদাহরণসহ লেখো ।

Ans: মরুভূমি ও মরুপ্রায় অঞ্চলে হলুদ ও ধূসর বর্ণের কোয়ার্টজ , ফেল্ডস্পার , ডলোমাইট ও অন্যান্য খনিজ সমৃদ্ধ শিথিল সুক্ষ্ম পলিকণার সঞ্চয়কে লোয়েস বলে । বায়ুপ্রবাহের মাধ্যমে এই সূক্ষ্ম পলিকণা বহুদুরে পরিবাহিত ও সঞ্চিত হয়ে যে ভূমি গঠন করে তাকে লোয়েস ভূমি বলে । মধ্য এশিয়ার গোবি মরুভূমি থেকে হাজার হাজার বছর থরে লোয়েস মৃত্তিকা বহন করে চিনের হোয়াংহো অববাহিকার বিস্তীর্ণ অঞ্চলে সমভূমি গঠন করেছে ।

  1. কী কী কারণে মরুভূমি সম্প্রসারণ ঘটে ?

Ans: মরুভূমি সম্প্রসারণের কারণগুলি হল— 

( ১ ) বিশ্ব উষ্ণায়ন বা গ্লোবাল ওয়ার্মিং মরু সম্প্রসারণের প্রধান কারণ । 

( ২ ) মরুপ্রান্ত ও মরুপ্রায় অঞ্চলে দীর্ঘদিন থরা হলে তা মরুগ্রাসে পড়ে । 

( ৩ ) মরুপ্রায় অঞ্চলে অত্যধিক পশুচারণে মাটি আলগা হয়ে অঞ্চলটি মরুগ্রাসের কবলে পড়ে । পশ্চিম সাহারায় এই কারণে মরুভূমি বেড়েছে । 

( ৪ ) গাছপালা কেটে ফেলা মরু সম্প্রসারণের অন্যতম কারণ । মিশরে ফ্যারাওদের অবিবেচনাপ্রসূতভাবে গাছ কাটার কারণে মরুভূমি প্রাচীনকাল থেকেই বেড়ে চলেছে । 

( ৫ ) মরুপ্রায় অঞ্চলে অবৈজ্ঞানিক প্রথায় চাষ , অধিক জলসেচে মাটির লবণতা বৃদ্ধি ইত্যাদি কারণে মরু সম্প্রসারণ ঘটছে । ভারতে থর মরুভূমি এই কারণেই একটু একটু করে বাড়ছে ।

  1. মরুভূমি সম্প্রসারণের কারণে কী কী সমস্যার সৃষ্টি হচ্ছে ? অথবা , মরুসম্প্রসারণের ফলাফলগুলি কী কী ?

Ans: মরুভূমি সম্প্রসারণের ফলে সৃষ্ট সমস্যাগুলি হল – 

( ১ ) বিশাল কৃষিজমি ধ্বংস হয় , সিন্ধু সভ্যতাও মরুকরণের কারণেই ধ্বংস হয়েছিল বলে মনে করা হয় । 

( ২ ) জীববৈচিত্র্য ধ্বংস হয় এবং উদ্ভিদ ও প্রাণীর উৎপাদন Unge IMPLE BI ক্ষমতা কমে । 

( ৩ ) মাটির জৈব পদার্থের পরিমাণ কমে জমি উর্বরতা শক্তি হারায় । 

( ৪ ) ভৌমজলের ভাণ্ডার কমে । 

( ৫ ) মরুকরণ কবলিত এলাকা থেকে মানুষকে সরতে হয় ফলে সামাজিক সমস্যা বাড়ে এবং environmental refugee এর সৃষ্টি হয় । 

( ৬ ) মরুকরণ অঞ্চলগুলিতে অর্থনৈতিক চাপ বাড়ে ।

  1. মরুভূমি সম্প্রসারণ রোধ কী কী উপায়ে করা যায় ?

Ans: মরুভূমি সম্প্রসারণ রোধ করার উপায়গুলি হল— 

( ১ ) মরুভূমিতে যে সামান্য বৃষ্টি হয় তা থরে রাখার জন্য গর্ত , চেক ড্যাম তৈরি দরকার । 

( ২ ) জমির লবণতা যাতে কমে তার জন্য বিভিন্ন ফসলের চাষ দরকার । শুঁটি জাতীয় উদ্ভিদ চাষে জমির উর্বরতা বাড়ে । 

( ৩ ) বালিয়াড়ি সম্প্রসারণ রোধের জন্য বেড়া দেওয়ার মতো করে গাছ লাগানো দরকার । ভারতের Central Arid Zone Research . Institute ( CAZRI – সদর দপ্তর যোধপুর ) এই ব্যাপারে বেশ সাফল্য পেয়েছে । 

( ৪ ) অগভীর বালিস্তরে মুনা জাতীয় ঘাস লাগালে তা দ্রুত বেড়ে অঞ্চলকে ঢেকে দেয় । ফলে বালি উড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা কমে । 

( ৫ ) খরা প্রতিরোধকারী বিভিন্ন গাছ লাগিয়ে সবুজ অরণ্যে ভরিয়ে দেওয়া দরকার । 

( ৬ ) পশুচারণ নিয়ন্ত্রণ দরকার । 

 

মাধ্যমিক দশম শ্রেণীর ভূগোল প্রশ্ন ও উত্তর 

  (বায়ুমণ্ডল – দ্বিতীয় অধ্যায়) 

পার্থক্য নিরূপণ করো    

  1. পেডিমেন্ট ও ইনসেলবার্জ এর মধ্যে পার্থক্য করো ।
বিষয় পেডিমেন্ট ইনসেলবার্জ
সংজ্ঞা পর্বত পাদদেশের ঢালু সমতল উচ্চভূমিকে বলে পেডিমেন্ট । পেডিমেন্ট বা পদদেশীয় সমভূমির মাঝে অবস্থিত অনুচ্চ টিলাগুলিকে বলে ইনসেলবার্জ ।
ক্ষয়ের মাধ্যম বায়ু ও সাময়িক জলধারার মিলিত কর্যের ফলে পেডিমেন্ট গঠিত হয় । প্রধানত বায়ুর কার্যের ফলেই এই ভূমিরূপ গঠিত হয় ।
আকৃতি এটি হল প্রস্তরময় এক সমতলভূমি । এগুলি গোলাকৃতি শিখরদেশযুক্ত এবং খাড়া পার্শ্বদেশ বিশিষ্ট হয় ।
  1. মোনাডনক ও ইনসেলবার্জের মধ্যে পার্থক্য করো ।

 

বিষয় মোনাডনক ইনসেলবার্জের
বিষয় সমপ্রায়ভূমির মধ্যে কঠিন শিলা দ্বারা গঠিত অনুচ্চ টিলা বা পাহারগুলিকে মোনাডনক বলে । পেডিপ্লেনের মধ্যে কঠিন শিলা দ্বারা গঠিত অনুচ্চ টিলাগুলিকে ইনসেলবার্জ বলে ।
উৎপত্তি এটি নদী বা জলধারার কার্যে গঠিত ভূমিকার । এটি বায়ু ও জলধারার কার্যে গঠিত হয় ।
আকৃতি এটি প্রায় গোলাকার এবং আকৃতি কিছুটা ওল্টানো গামলার মতো । এটি মোনাডনক অপেক্ষা তীক্ষ্ণ আকৃতি বিশিষ্ট ।
অঞ্চল এটি আদ্র অঞ্চলে গঠিত ভূমিরূপ । এটি শুষ্ক মরুভূমি ও মরুপ্রায় অঞ্চলে গঠিত ভূমিরূপ ।
  1. বার্খান  ও   সিফ্ বালিয়াড়ি 
বিষয় বার্খান সিফ্ বালিয়াড়ি
সংজ্ঞা বায়ুর গতিপথে উল্লম্বভাবে গঠিত অর্ধ চন্দ্রকার বালিয়াড়ি ।  বায়ুর গতিপথে আড়াআড়িভাবে গঠিত দীর্ঘ তরবারির মতো বালিয়াড়ি ।
উচ্চতা এর উচ্চতা ৩২ মিটার বা ১০০ ফুট । এর উচ্চতা ১০০ মিটার ।
ঢাল এর প্রতিবাদ অংশ মৃদু ঢাল এবং অনুবাত অংশ খাড়া । এর ঢালের তেমন কোনো পার্থক্য নেই, উভয় দিকই প্রায় সমান ঢালবিশিষ্ট ।
অবস্থান এগুলি ইতস্তত বিক্ষিপ্তভাবে অবস্থান করে । এগুলি একে অপরের সামন্তরালে অবস্থান করে ।
বৈশিষ্ট্য এর দু – প্রান্তে দুটো শিং থাকে । দুটি সিফের মাঝে করিডোর দেখা যায় ।

 

মাধ্যমিক দশম শ্রেণীর ভূগোল প্রশ্ন ও উত্তর 

  (বায়ুমণ্ডল – দ্বিতীয় অধ্যায়) 

রচনাধর্মী প্রশ্নোত্তর  

1. মরুভূমি অঞ্চলে বায়ু কীভাবে কাজ করে ?

Ans:  মরুভূমি অঞ্চলে বায়ু প্রধানত ক্ষয়সাধন , বহন  ও অবক্ষেপণ — এই তিন থরনের কাজের মাধ্যমে ভূত্বকের পরিবর্তন ঘটিয়ে নানারকম ভূমিরূপ গঠন করে । 

( ক ) মরুভূমি অঞ্চলে বায়ুর ক্ষয়কাজ : মরু অঞ্চলে বায়ুর প্রধান কাজ ক্ষয়সাধন করা । বায়ুতে ভাসমান বালির পরিমাণ এবং বায়ুর গতিপথের ওপর বায়ুর ক্ষয়সাধনের ক্ষমতা নির্ভর করে । ভূপৃষ্ঠের সঙ্গে ঘর্ষণের ফলে বায়ুর শক্তি কিছুটা কমে যাওয়ায় ভূপৃষ্ঠের একেবারে কাছাকাছি বায়ুর গতিবেগ অনেকটা কম হয় । আবার ভূপৃষ্ঠ থেকে যতই উপরে ওঠা যায় — বায়ুর সঙ্গে উদ্বৃত্ত বালির পরিমাণ ততই কমে যেতে থাকে , ফলে ভূমির বেশি উপরেও বায়ুর ক্ষয়কাজের শক্তি হ্রাস পায় । সাধারণত মাটি থেকে ১ মিটার পর্যন্ত উচ্চতায় বায়ুর ক্ষয়কাজ সবচেয়ে বেশি হয়ে থাকে । বায়ুর ক্ষয়কাজের প্রকারভেদ : বায়ু প্রধানত তিনভাবে ক্ষয়কাজ করে , যথা— ( 1 ) অবঘর্ষ , ( 2 ) অপসারণ এবং ( 3 ) ঘর্ষণ । 

(1) অবঘর্ষ ( Abrasion ) । বায়ুপ্রবাহের সঙ্গে ভাসমান বালি , ছোটো ছোটো পাথরখণ্ড , শক্ত কোয়ার্টজ কশা প্রভৃতির সঙ্গে ঘর্ষণে শিলাস্তর ক্ষয় পায় , একে অবঘর্ষ বলে । এই রকমের ঘর্ষণে শিলাস্তরে গভীর দাগ বা আঁচড়ানোর দাগ বা মৌচাকের মতো অসংখ্য ছোটো ছোটো ছিদ্রের সৃষ্টি হয় । অপবাহন না অপসারণ ( Deflation ) প্রবল বায়ুপ্রবাহের ফলে মরুভূমির শিথিল বালুকারাশি এক স্থান থেকে অপর স্থানে স্থানান্তরিত হলে তাকে অপসারণ বলা হয় । অপসারণের কাজের ফলে ধান্দ ও মরুদ্যানের সৃষ্টি হয় ।

(2) ঘর্ষণ ( Attrition ) : মরুভূমিতে প্রবলবেগে বায়ুপ্রবাহের ফলে বড়ো বড়ো পাথরগুলি পরস্পরের সঙ্গে ঠোকাঠুকি লেগে ঘষা খেয়ে চূর্ণবিচূর্ণ হয়ে গিয়ে অবশেষে ছোটো ছোটো গোলাকৃতি বালুকণায় । পরিণত হলে তাকে ঘর্ষণ প্রক্রিয়া বলে । এই প্রক্রিয়া মরুভূমি অঞ্চলে বড়ো বড়ো পাথরের খণ্ডকে ক্ষয়প্রাপ্ত করে বালিতে পরিণত করতে সাহায্য করে । অর্থাৎ পাথরখণ্ড থেকে বায়ুর ক্ষয়কাজের শেষ পর্যায় হল বালি । 

( খ ) মরুভূমি অঞ্চলে বায়ুর বহন কাজ ক্ষয়কাজের ওপর বায়ুর দ্বিতীয় পর্যায়ের কাজ হল বহন প্রক্রিয়া । এই প্রক্রিয়ায় বায়ু ক্ষয়িত শিলাচূর্ণ এবং বালিকে প্রধানত তিনভাবে বহন করে , যথা 1. ভাসমান প্রক্রিয়া , 2. লঘদান প্রক্রিয়া এবং 3. গড়ানো প্রক্রিয়া ।

  1. ভাসমান প্রক্রিয়া : ( Suspension ) ধূলিকণা প্রভৃতি অতি সূক্ষ্ম কণা বায়ুতে ভাসমান অবস্থায় এক স্থান থেকে অন্য স্থানে বাহিত হয় । 
  2. লম্ফদান প্রক্রিয়া ( Saltation ) বায়ুকণা ভারী হওয়ায় বেশিক্ষণ বাতাসে ভেসে থাকতে পারে না । এগুলি উপর থেকে পড়ামাত্র অন্য বালুকণার সঙ্গে সংঘর্ষে প্রতিক্ষিপ্ত ( Rebound ) হয়ে আবার উপরে উঠে যায় । এইভাবে বারবার উত্থিত ও প্রতিক্ষিপ্ত হতে হতে এগুলি এক স্থান থেকে বহুদুরে বাহিত হয় ।
  3. গড়ালো প্রক্রিয়া ( Surface creep ) বড়ো বড়ো বালুকণা ও প্রস্তরখণ্ড ভারী হওয়ায় বাতাসে ভেসে থাকতে পারে না , মাঝে মাঝে এগুলি বায়ুতাড়িত হয়ে গড়িয়ে গড়িয়ে এক স্থান থেকে অন্যত্র বাহিত হয় । 

  বায়ুবাহিত বালিকণার লম্ফদান প্রক্রিয়ায় সর্বাপেক্ষা বেশি পরিমাণে বালি মরুভূমিতে এক স্থান থেকে অন্যত্র বাহিত হয় । সাহারা মরুভূমিতে এক – একটি ধূলিঝড় ( Dust – storm ) একেবারে প্রায় ২০ লক্ষ টন ধূলিকণা এক স্থান থেকে অন্যত্র বহন করতে পারে । 

( গ ) মরুভূমি অঞ্চলে বায়ুর সঞ্জয়কাজ : মরু অঞ্চলে কোনো বড়ো শিলাখণ্ডে বা ক্যাকটাস জাতীয় গাছে বায়ুবাহিত বালি বাধা পেয়ে সঞ্চিত হয় । একে বায়ুর সঞ্চয়কাজ বলে । সঞ্চয়কাজ তিনটি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে সম্পাদিত হয় , যথা— 1. থিতানো প্রক্রিয়া , 2. উপলেপন প্রক্রিয়া এবং 3. অধিগ্রহণ প্রক্রিয়া । 

  1. থিভালো ক্রিয়া ( Sedimentation ) : বায়ুবাহিত বালি দীর্ঘদিন থরে ধীরে ধীরে সঞ্চিত হলে তাকে থিতানো প্রক্রিয়া বলে । 
  2. উপালপন প্রক্রিয়া ( Accretion ) : বালিকণা গড়াতে গড়াতে বা লাফাতে লাফাতে দূরে গিয়ে সঞ্চিত হলে তাকে উপলেপন প্রক্রিয়া বলে ।
  3. অধিগ্রহণ প্রক্রিয়া ( Enchor achment ) : সমতল ভূপৃষ্ঠে বালি আটকে গিয়ে সজ্জিত হলে তাকে অধিগ্রহণ প্রক্রিয়া বলে । 

3. বায়ুর ক্ষয়কার্যের ফলে গঠিত ভূমিরূপের বিবরণ দাও ।

Ans: শুদ্ধ গাছপালাহীন মরু বা মরুপ্রায় প্রান্তের ও উপকূলের বালিয়াড়ি অঞ্চলের সর্বাধিক ক্ষয়কারী প্রাকৃতিক শক্তি বায়ুপ্রবাহ বায়ুর ক্ষয়জাত ভূমিরূপগুলির মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল – 

( ক ) সার সৃষ্ট গর্ভ ( Defiation hollow ) : মরু অঞ্চলে বায়ুপ্রবাহের তীর আঘাতে স্থানে স্থানে হাজার হাজার টন বালি অপসারণ প্রক্রিয়ার ফলে স্থানান্তরে পরিবাহিত হয় । ফলে বিশাল অঞ্চলজুড়ে ছোটো – বড়ো গর্ভ সৃষ্টি হয় । একে বলে অপসারণ সৃষ্ট গর্ত । 

  • বৈশিষ্ট্য অনেকদিন থরে অপসারণ কার্য চলায় ভূমিভাগে গভীর গর্ত সৃষ্টি হয় । ফলে কখনো কখনো ভূমিভাগের ভৌমজলস্তর উন্মুক্ত হয়ে জলাশয় গড়ে উঠতে পারে । ওই মরূদ্যানের সিপ্ত অঞ্চলে গাছপালা জন্মায় । 
  • উদাহরণ মিশরে কাতার ( প্রায় ৪৪০ ফুট গভীর ) পৃথিবীর বৃহত্তম অপসারণ সৃষ্ট গর্ত । 

( খ ) গৌর ( Gour ) : গৌর হল বায়ুর ক্ষয়কাজের দ্বারা সৃষ্ট ভূমিরূপের এক অন্যতম নিদর্শন । বায়ুর গতিপথে কঠিন ও কোমল শিলায় গড়া কোনো বৃহৎ শিলাখণ্ড অনুভূমিকভাবে অবস্থান করলে নীচের কোমল অংশে বিভিন্ন ঋতুতে বিভিন্ন দিক থেকে প্রবাহিত বায়ুর অবঘর্ষজনিত ক্ষয়কাজের তীব্রতা বেশি হওয়ার জন্য শিলাস্তূপটির নীচের অংশ ক্ষয়প্রাপ্ত হয়ে সরু স্তম্ভের মতো হয় এবং উপরের কম ক্ষয়প্রাপ্ত কঠিন অংশটি বিরাট আয়তন নিয়ে ব্যাঙের ছাতা বা স্তম্ভের মতো দাঁড়িয়ে থাকে । স্তম্ভাকৃতি এইরকম শিলাখণ্ডকে গৌর বলে ।

 উদাহরণ : আফ্রিকার সাহারা মরুভূমি এবং এশিয়ার ইরান মরুভূমিতে অনেক গৌর আকৃতির ভূমিরূপ দেখা যায় ।

বৈশিষ্ট্য : ( i ) জার্মান ভাষায় গৌরকে ফিটজফেলসেন ( pitzfelsen ) বলে ।

( ii ) অনেক সময় গৌরের মধ্যে রাসায়নিক বিক্রিয়ার ফলে এক থরনের রঙের প্রলেপ সৃষ্টি হয় । এই থরনের গৌরকে ডেজার্টভার্নিস বলে । 

 উদাহরণ আফ্রিকার সাহারা ও এশিয়ার ইরানের মরুভূমিতে দেখা যায় ।

( গ ) ইয়ারদাং ( Yardang ) : মরুভূমি অঞ্চলে কঠিন ও কোমল শিলাস্তর পাশাপাশি লম্বভাবে অবস্থান করলে দীর্ঘকাল থরে অবঘর্ষ প্রক্রিয়ায় বায়ু কোমল শিলা দ্রুত ক্ষয় করে গহ্বর বা সুড়ঙ্গের মতো ভূমিরূপ গঠন করে । কঠিন শিলাস্তরগুলি পরস্পর থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে বিভিন্ন মূর্তি গঠন করে । এই বিশেষ ভূমিরূপকে বলে ইয়ারদাং । 

বৈশিষ্ট্য : ( ক ) ইয়ারদাং দেখতে অনেকটা পাঁজরের মতো ।

( খ ) এর গড় উচ্চতা প্রায় ৭ মিটার ।

( গ ) কোমল শিলায় গঠিত গর্তের দু – পাশ নালিকার মতো হয় । 

 উদাহরণ : দক্ষিণ আমেরিকার চিলির আটাকামা মরুভূমি , মধ্যএশিয়ার তুর্কিস্তান মরুভূমিতে ইয়ারদাং দেখা যায় ।

( ঘ ) জিউগেন ( Zeugen ) : মরুভূমি অঞ্চলে উপরের স্তরে কঠিন শিলা ও নীচে কোমল শিলাগঠিত অংশে পর্যায়ক্রমে –অনুভূমিকভাবে থাকা পাঠন ও কোমল অনুভূমিকভাবে অবস্থান করলে অবঘর্ষ প্রক্রিয়ায় বায়ুর ক্ষয়কাজে কঠিন শিলাগঠিত অংশে অতি অল্প ক্ষয় পেয়ে চ্যাপটা প্রায় সমতল চুড়াবিশিষ্ট টিলার মতো দাঁড়িয়ে থাকে এবং কোমল শিলাস্তর বেশি ক্ষয় পেয়ে ফাটল বরাবর লম্বা খাত বা গহ্বর সৃষ্টি হয় । এই বিশেষ ভূমিরূপের নাম জিউগেন । 

বৈশিষ্ট্য : জিউগেনের গড় উচ্চতা ৩ – ৩০ মিটার পর্যন্ত হয় । জিউগেন দেখতে সারিবদ্ধ চ্যাপটা মাথাযুক্ত ভূমিরূপ । 

 উদাহরণ : উত্তর আমেরিকার সোনেরান মরুভূমিতে দেখা যায় । 

( ঙ ) ইনসেলবার্জ ( Inselberg ) : জার্মান শব্দ ইনসেলবার্জ – এর অর্থ দ্বীপময় পাহাড় । প্রায় সমতল মরুভূমির মাঝে বিক্ষিপ্তভাবে জেগে থাকা সমান উচ্চতাবিশিষ্ট কঠিন শিলা গঠিত অবশিষ্ট মসৃণ টিলাকে বলে ইনসেলবার্জ । • নামকরণ : ১৯২৬ খ্রিস্টাব্দে ভূবিজ্ঞানী পাসার্জ ( S. Passarge ) সমগ্ৰায়ভূমির অবশিষ্ট টিলাকে ইনসেলবার্জ নামকরণ করেন । ১৯০০ খ্রিস্টাব্দে ভূবিজ্ঞানী বর্নহার্ডট ( W.A. Bornhardt ) পূর্ব আফ্রিকার অবশিষ্ট পাহাড়কে প্রথম নামকরণ করেন ।

বৈশিষ্ট্য : ( i ) দীর্ঘদিন থরে ক্ষয়ে যাওয়ার ফলে মসৃণ , গোলাকার হয় ;

( ii ) ইনসেলবার্জ গ্রানাইট , নিস্ জাতীয় আগ্নেয় ও রূপান্তরিত শিলা দ্বারা গঠিত ;

( iii ) এদের উচ্চতা ৩০–৩০০ মিটার ; ভূমির ঢাল তীক্ষ্ণ ,

( iv ) ক্ষয়ে গেলে বোর্নহার্ড , ক্যাসেলকপিজ ও টরস্ ( Tors ) গঠিত হয় । 

জেনে রাখো : দীর্ঘদিন থরে ক্ষয়কার্য চলার ফলে ইনসেলবার্জগুলি ক্ষয়প্রাপ্ত হয়ে যে ছোটো ছোটো টিলায় পরিণত হয় , তাকে বলে টরস্ ( Tors ) । আবার প্রচুর পরিমাণে শিলাখণ্ড কোনো স্থানে একসাথে যে ভূমিরূপ গড়ে ওঠে , তাকে বলে কোপিস | ( Koppise ) । ভারতের দাক্ষিণাত্য মালভূমির বৃষ্টিচ্ছায় অঞ্চলে এইসব দেখতে পাওয়া যায় ।

3. বায়ুর সঞ্জয়কার্যের ফলে গঠিত ভূমিরূপের বিবরণ দাও ।

Ans: কোনো বিস্তীর্ণ অঞ্চলে বায়ুবাহিত বালি বাধা পেয়ে জমা হয় । বায়ুর সঞ্চয়কার্যের ফলে গঠিত ভূমিরূপের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল – 

( ক ) বালিয়াড়ি ( Dune ) : কোনো বিস্তীর্ণ স্থানজুড়ে থাকা উঁচু ও দীর্ঘ বালির স্তূপকে বলে বালিয়াড়ি । মরুভূমি ও সমুদ্রোপকূলে বালিয়াড়ি দেখা যায় । TOMARTISORY বিজ্ঞানী ব্যাগনল্ডের মতে আকৃতি অনুসারে বালিয়াড়ি দু – রকম— ( ১ ) তির্যক বালিয়াড়ি ( ২ ) অনুদৈর্ঘ্য বালিয়াড়ি । 

( ১ ) তির্যক বালিয়াড়ি ( Transverse dune ) : মরুভূমি অঞ্চলে যেখানে সারাবছর থরে একই দিকে বায়ু প্রবাহিত হতে থাকে সেখানে বায়ুর গতির সঙ্গে তির্যক বা আড়াআড়ি ভাবে যেসব বালিয়াড়ি গড়ে ওঠে তাকে বলে তির্যক বালিয়াড়ি । তির্যক বালিয়াড়িগুলির মধ্যে বার্খান  পাঠ্যক্রমের অন্তর্গত । 

( ২ ) বাৰ্খান বালিয়াড়ি ( Barkhan ) : বাৰ্খান একটি তুর্কি শব্দ ; এর অর্থ হল কিরঘিজ , স্টেপ অঞ্চলের বালিয়াড়ি । যে সমস্ত বালিয়াড়ির গঠন অর্ধচন্দ্রাকার বা আধখানা চাঁদের মতো দেখতে হয় তাদের বাৰ্খান বলে । 

 বৈশিষ্ট্য : ( ক ) বার্খানের দুটি প্রান্তে দুটি শিরার মতো শিং ( Horn ) দেখা যায় ।

( খ ) এরা বায়ুর গতির দিকে ক্রমশ ঢালু এবং বিপরীত দিকে খাড়া হয়ে থাকে ।

( গ ) বার্থানের উচ্চতা ১৫–৩৫ মিটার , প্রস্থ ৪০–৭০ মিটার , আয়তন ৫ বর্গকিমি থেকে ২০০ বর্গমিটার পর্যন্ত হয় । 

 উদাহরণ : সাহারা মরুভূমিতে অনেক বৃহদায়তন বাৰ্খান দেখা যায় । 

( ২ ) অনুদৈর্ঘ্য বালিয়াড়ি বা সিক্‌ বালিয়াড়ি ( Scif dune ) স্থায়ী বালিয়াড়ির মধ্যভাগ বায়ুতাড়িত হয়ে ভেঙে গিয়ে বায়ুর গতিপ্রবাহের সঙ্গে সমান্তরালে অনুদীর্ঘ বালিয়াড়ি গঠন করে । বায়ুর গতির সঙ্গে সমান্তরালভাবে গড়ে ওঠা বালিয়াড়িকে অনুদৈর্ঘ্য বালিয়াড়ি বলা হয় । অনুদৈর্ঘ্য বালিয়াড়ির একটি বিশেষ রূপ হল সিফ দয়াড়ি । 

সিদ্ধ বালিয়াতি : সিফ্ট একটি আরবি শব্দ , যার অর্থ সোজা তলোয়ার । অনুদৈর্ঘ্য বালিয়াড়ির মধ্যে যেসব বালিয়াড়ি আকারে বেশ সরু কিন্তু খুব লম্বা তাদের বলে সিফ্ বালিয়াড়ি । 

বৈশিষ্ট্য : ( ক ) এই বালিয়াড়ির অনুবাত প্রান্তটি তলোয়ারের মতো সরু এবং প্রতিবাত প্রান্তটি চওড়া ও গোল হয় । 

( খ ) দুটো সিফ্ বালিয়াড়ির মধ্যবর্তী অঞ্চলকে করিডোর বলে ; এর মধ্য দিয়ে বায়ু প্রবলবেগে সোজা প্রবাহিত হয় । 

( গ ) সি বালিয়াড়ি দৈর্ঘ্যে খুব বড়ো হয় ; প্রস্থে ছোটো হয় । 

( ঘ ) সি বালিয়াড়ির উচ্চতা ১০০ মিটার হয় । 

( ঙ ) পরস্পর সমান্তরালে একাধিক সিফ্ বালিয়াড়ি গঠিত হয় । উদাহরণ : দক্ষিণ ইরানের মরুভূমিতে সিফ্ বালিয়াড়ি দেখা যায় । 

[ খ ] লোয়েস ( Loess ) বায়ুর পরিবহণ ও অবক্ষেপণের মাধ্যমে গঠিত সমভূমি হল লোয়েস । লোয়েস শব্দের অর্থ ‘ স্থানচ্যূত বস্তু ’ । মরুভূমির হলুদ ও ধূসের বর্ণের কোয়ার্টজ , ফেল্ডস্পার , ডলোমাইট ও অন্যান্য খনিজ সমৃন্য ০.০৫ মিমি ব্যাসযুক্ত সূক্ষ্ম বালিকণা , মাটিকণা বায়ুর সঙ্গে দূরে উড়ে গিয়ে দূরবর্তী নীচু ভূমি ভরাট করে লোয়েস গঠন করে । বৈশিষ্ট্য কখনো কখনো মরুভূমির বালি বায়ু দ্বারা অপসারিত হয়ে পার্শ্ববর্তী কোনো উর্বর কৃষি ভূমিকে ক্রমশ ঢেকে ফেলে জমির উর্বরতা নষ্ট করে দেয় । ধীরে ধীরে কৃষি ভূমিটিকে মরুভূমি গ্রাস করে ফেলে ।

 উদাহরণ মধ্য এশিয়ার গোবি মরুভূমি থেকে শীতকালীন উত্তর – পূর্ব মৌসুমি বায়ু বাহিত হয়ে বিপুল পরিমাণে বালি ও মাটি কণা উত্তর চিনের হোয়াংহো নদী অববাহিকায় দীর্ঘদিন থরে সঞ্ছিত হয়ে সেখানে লোয়েস সমভূমি সৃষ্টি করেছে । 

4. আকৃতি অনুসারে বালিয়াড়ির শ্রেণিবিভাগ করো ।

Ans: বিজ্ঞানী ব্যাগনন্ডের মতে , আকৃতি অনুসারে বালিয়াড়ি প্রধানত দু – রকমের হয় , যেমন- তির্যক বালিয়াড়ি এবং ও অনুদৈর্ঘ্য বালিয়াড়ি । 

(1) তির্যক বালিয়াড়ি ( Transverse Dunes ) : মরুভূমি অঞ্চলে যেখানে সারাবছর থরে একই দিক থেকে বায়ু প্রবাহিত হতে থাকে । সেখানে বায়ুর গতির সঙ্গে তির্যক বা আড়াআড়ি ভাবে যেসব বালিয়াড়ি গঠিত হয় তাদের তির্যক য়াড়ি বলা হয় । তির্যক বালিয়াড়ির মধ্যে বাৰ্খান উল্লেখযোগ্য ।

  ‘ বাৰ্খান ’ একটি তুর্কি শব্দ , এর অর্থ হল ‘ কিরঘিজ স্টেপস অঞ্চলের বালিয়াড়ি ‘ । তির্যক বালিয়াড়ির মধ্যে যে সমস্ত বালিয়াড়ির গঠন অর্ধচন্দ্রাকৃতি , অর্থাৎ যেসব বালিয়াড়িকে আধখানা চাঁদের মতো দেখতে হয় তাদের বার্খান  বলে ।

 বৈশিষ্ট্য : ( i ) বার্খানের দুই প্রান্তে দুটি শিং ( Horn ) – এর মতো শিরা দেখা যায় ।

( ii ) এরা বায়ুর গতির দিকে ক্রমশ ঢালু এবং বিপরীত দিকে খাড়া হয়ে থাকে ।

( iii ) সাধারণত মরুভূমিতে সমতল অংশে বার্থান গড়ে ওঠে । পৃথিবীর বিভিন্ন মরুভূমিতে ছোটো – বড়ো নানান আকৃতির বাখনি দেখা যায় ।

( iv ) সাধারণত বার্খানের উচ্চতা ১৫-৩৫ মিটার , প্রস্থ ৪০-৭০ মিটার এবং আয়তন ৫ বর্গমিটার থেকে ২০০ বর্গমিটার পর্যন্ত হয় । সাহারা মরুভূমি অঞ্চলে অনেক বৃহদায়তন বার্খান  দেখা যায় ।

(2) অনুদৈর্ঘ্য বালিয়াড়ি : বায়ুর গতির সঙ্গে সমান্তরালভাবে গড়ে ওঠা বালিয়াড়িকে অনুদৈর্ঘ্য বালিয়াড়ি বলা হয় । একেই সিফ বালিয়াড়ি বলা হয় । সিফ একটি আরবি শব্দ , যার অর্থ হল ‘ সোজা তলোয়ার । অনুদৈর্ঘ্য বালিয়াড়ির মধ্যে যেসব বালিয়াড়ি আকারে বেশ সরু, কিন্তু খুব লম্বা তাদের সিফ্ বালিয়াড়ি বলা হয় । এই বালিয়াড়ির অনুবাত প্রাপ্তটি তলোয়ারের মতো সরু এবং প্রতিবাত প্রান্তটিচওড়া ও গোল হয় । দুটি সি বালিয়াড়ির মধ্যবর্তী অঞ্চলকে ‘ করিডোর ’ বলে , এর মধ্য দিয়ে বায়ু প্রবল বেগে সোজা প্রবাহিত হয় । অনুদৈর্ঘ্য তথা সিহ বালিয়াড়ির কয়েকটি বৈশিষ্ট্য হল : 

  1. i) বার্থানের মধ্যভাগ বায়ুপ্রবাহের ফলে ভেঙে গিয়ে সিঙ্গ বালিয়াড়ি গঠন করে ।
  2. Ii) সিফ্ট বালিয়াড়িগুলির দৈর্ঘ্য খুব বেশি কিন্তু প্রস্থ খুব কম ।
  3. iii) সিক্ বালিয়াড়িগুলি কয়েক কিলোমিটার পর্যন্ত বিস্তৃত হতে পারে ।
  4. iv) সময় সময় সিক্‌ বালিয়াড়িগুলির উচ্চতা ১০০ মিটারেরও অনেক বেশি হতে পারে । দক্ষিণ ইরানের মরুভূমিতে অবস্থিত । সিফ্ বালিয়াড়িগুলির উচ্চতা অনেক সময় ২০০ মিটার পর্যন্ত হয় ।
  5. v) পরস্পর সমান্তরালভাবে একাধিক সিফ বালিয়াড়ি গড়ে ওঠে । 

5. বায়ু ও জলধারার মিলিত কার্যের ফলে সৃষ্ট ভূমিরূপ গড়ে ওঠার কার্যকারণ সম্পর্কে আলোচনা করো ।

Ans: মর্ মরুপ্রায় অঞ্চলে হঠাৎ অতিরিক্ত বৃষ্টি হলে সাময়িক সময়ের জন্য অস্থায়ী নালা সৃষ্টি হয়ে যায় । বায়ু ও জলধারার মিলিত কার্যে ভূমিরূপে নানা পরিবর্তন হয় । ( ক ) পেডিমেন্ট ( Pediment ) : পেডিমেন্ট শব্দের অর্থ ‘ পাহাড়ের দেশ ‘ ( Pedi = পাদদেশ ; Mont = পর্বত ) । 

উৎপত্তি : বায়ু ও জলধারার মিলিত কার্যের ফলে মরুভূমির পর্বতের পাদদেশে এই পেডিমেন্টের উৎপত্তি হয় । মরুমধ্যস্থিত পর্বত পাদদেশে বায়ুবাহিত ও জলধারার মিলিত ক্ষয় ও সঞ্চয় ক্রিয়ায় গড়ে ওঠা ঊর্ধ্বাংশ ঢালু ও নিম্নাংশ প্রায় সমতল আকৃতির বিশিষ্ট ভূমিরূপকে  পেডিমেন্ট বলে । 

বৈশিষ্ট্য : পেডিমেন্ট শব্দটি ব্যবহার করেন জে . কে . গিলবার্ট । এর ঢাল ৬০-৭ ° মতো হয় । এর আকৃতি অবতল প্রকৃতির । পাদদেশে নুড়ি বালি জমে সাময়িক জলধারার সৃষ্টি হয় ।

শ্রেণিবিভাগ : পেডিমেন্ট তিন থরনের—

( i ) আবৃত পেডিমেন্ট পাতলা নুড়ির আবরণে ঢাকা পেডিমেন্ট ।

( ii ) সম্মিলিত বা একত্রীভূত পেডিমেন্ট : একাধিক পেডিমেন্ট পরস্পর মিশে সৃষ্ট পেডিমেন্ট ।

( iii ) ব্যবচ্ছিন্ন পেডিমেন্ট : ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র জলস্রোত দ্বারা বিচ্ছিন্ন পেডিমেন্ট । উদাহরণ : আফ্রিকার সাহারা মরুভূমির উত্তর – পশ্চিম প্রান্তে আটলাস পর্বতের পাদদেশে পেডিমেন্ট দেখা যায় ।

( খ ) বাজাদা ( Bajada ) : মরুভূমি ও মরুপ্রায় অঞ্চলে স্বল্পমেয়াদি প্রবল বর্ষণের প্রভাবে সৃষ্ট হওয়া অস্থায়ী জলধারা ও বায়ুপ্রবাহের মিলিত সঞ্চয়কাজের ফলে যে প্রায় সমতল ভূমির সৃষ্টি করে তাকে বলে বাজাদা । উৎপত্তি : কখনো কখনো মরু ও মরুপ্রায় অঞ্চলের পর্বতের পাদদেশে অস্থায়ী জলধারা বা ওয়াদি গঠিত একাধিক পলল ব্যঞ্ছনী একসঙ্গে অবস্থান করলে বাজাদা গড়ে ওঠে । 

বৈশিষ্ট্য : ( i ) সুক্ষ্ম পলি ও বালি দ্বারা গঠিত এই বাজাদা কয়েক কিমি পর্যন্ত বিস্তৃত হয় ।

( ii ) এর গড় ঢাল হয় ৩ ° —৪ ° 

উদাহরণ : সাহারা মরুভূমির আটলাস পর্বতের পাদদেশবর্তী অঞ্চলে বাজাদা ভূমিরূপ দেখা যায় । এ ছাড়া কালাহারি , আরব ও অস্ট্রেলীয় মরুভূমিতেও বাজাদা দেখা যায় ।

( গ ) ওয়াদি ( Wadi ) : আরবি শব্দ ‘ ওয়াদি ’ – এর অর্থ ‘ শুষ্ক উপত্যকা ’ । মরু অঞ্চলে সৃষ্ট শুষ্ক নদীখাতগুলিকে ওয়াদি বলে । ↑ উৎপত্তি : মরু অঞ্চলে হঠাৎ প্রবল বৃষ্টি হলে , বহু ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র বেগবতী ক্ষণস্থায়ী জলধারা ঢালু পর্বতগাত্রে নদীখাতের সৃষ্টি করে । শুষ্ক অঞ্চলে জলের অধিগ্রহণ ( Infiltration ) এবং অধিক পরিমাণে বাষ্পীভবন ( Evaporation ) ফলে নদীখাত দ্রুত শুকিয়ে যায় এবং ওয়াদি সৃষ্টি হয় । মরুভূমি অঞ্চলে যেখানে ২৫-৫০ সেমি বাৎসরিক বৃষ্টি ঘটে , তখন সেখানে ওয়াদি গড়ে ওঠে ।

 বৈশিষ্ট্য : ( i ) এটি স্বল্প দৈর্ঘ্যবিশিষ্ট নদীখাত ।

( ii ) বছরের অধিকাংশ সময়ই নদীখাত শুষ্ক থাকে । • উদাহরণ : আরব মরুভূমিতে বহু ওয়াদি দেখা যায় ।

( ঘ ) প্লয়া ( Playa ) : মরু অঞ্চলে অপসারণ সৃষ্ট গর্ভে লবণাক্ত জল জমে যে হ্রদ সৃষ্টি হয় তাকে বলে পায়া । লবণাক্ত জল জমা হয় বলে ওই হ্রদকে বলে প্রায়া ; মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পশ্চিমে W মেক্সিকোর মরু অঞ্চলে পর্বতবেষ্টিত লবণাক্ত হ্রদকে বলে বোলসন । আফ্রিকায় প্রায়াকে শট্স ( Shotts ) বলে । 

উৎপত্তি : প্রবল বায়ুপ্রবাহের ফলে মরুভূমির বালি অপসারিত হয়ে ছোটো – বড়ো অনেক গর্তের সৃষ্টি হয় । এই গর্তগুলি যদি খুব গভীর হয়ে ভূগর্ভের জলস্তরকে স্পর্শ করে , তাহলে ভূগর্ভস্থ জল ও বৃষ্টির জল জমা হয়ে সেখানে প্লায়া হ্রদের সৃষ্টি হয় ।

6. মরু অঞ্চলের সম্প্রসারণের কারণগুলি উল্লেখ করো । কোন্ কোন্ পদ্ধতিতে এই মরুপ্রসারণ প্রতিরোধ করা যায় উল্লেখ করো ।

Ans: মরুকরণ বা ‘ Desertification ‘ শব্দটি বর্তমানে বহুল প্রচলিত । জলবায়ুর পরিবর্তন , মানুষের অবিবেচক ক্রিয়াকলাপ , প্রভৃতির কারণে পৃথিবীতে মরুভূমির আয়তন ক্রমশ বেড়েই চলেছে । 

মরুভূমি সম্প্রসারণের কারণ : অরণ্যনিধন : বর্ধিত জনসংখ্যার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে নগরায়ণ । বন কেটে বসতি গড়ে উঠছে । অরণ্য বিনাশের ফলে মাটি আলগা হয়ে পড়ায় ভূমিক্ষয় বাড়ছে । ভারতে প্রতিবছর গড়ে প্রায় ১৫ লক্ষ হেক্টর অরণ্য বিনষ্ট হয় । ফলে মোট ভূমিভাগের ১ % ভূমি পরিণত হয় বন্ধ্যাভূমিতে । 

ভূমি ব্যবহার : ভূমি ব্যবহার বলতে মূলত নানা উদ্দেশ্য । পুরণের জন্য কখনও অর্থনৈতিকভাবে , কখনও বা সামাজিক ব্যবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে ভূমির কার্যকারিতাকে বোঝায় । ভারতের মরু অঞ্চল পৃথিবীর সব মরুভূমির মধ্যে সর্বাধিক জনবহুল । কৃষিকার্যেই যেখানে লাভজনক অর্থনৈতিক ক্রিয়াকলাপ , সেখানে অতিরিক্ত কৃষিকার্যে মাটির কণাগুলি শিথিল হয়ে ভূমিক্ষয় বাড়ায় । 

অনিয়ন্ত্রিত পশুচারণ : শুষ্ক পরিবেশে অল্প জলের মাধ্যমে যদি তৃণভূমি সৃষ্টি করা যায় তাহলে সেখানে পশুচারণভূমি গড়ে ওঠে যা জীবিকার অন্যতম মাধ্যম । কিন্তু অতিরিক্ত পশুচারণ ভূমিক্ষয় বাড়ায় । পশুর খুরের আঘাতে মাটি আলগা হয় , গাছপালার আচ্ছাদন বিনষ্ট হয় । 

ভৌমজলের অভিব্যবহার : জলসেচের মাধ্যমে শুষ্ক ভূমিকে । কৃষিযোগ্য করার ক্ষেত্রে অতিরিক্ত ভৌমজল তুলে নেওয়া হয় , ফলে জলের সাথে কৌশিক প্রক্রিয়ায় লবণও উঠে আসে যা কৃষি প্রক্রিয়াকে ব্যাহত করে । তার সাথে জলের স্তর বেশি নেমে যাওয়ায় মরুভূমির মাটি আর্দ্রতা হারিয়ে মরুকরণ পদ্ধতিকে ত্বরান্বিত করে । 

খনিজ উত্তোলন : খনিজসম্পদের দুর্লভ ভাঙার থাকায় ভূগর্ভ থেকে তা উত্তোলন করা হয় । খননকার্যের মাধ্যমে ভূমিতে ধস নামার সম্ভাবনা থাকে , মাটির স্বাভাবিক প্রথন বা বুনন নষ্ট হয় । এটিও পরোক্ষভাবে মরুপ্রসারণে সাহায্য করে । 

মরুভূমি সম্প্রসারণ রোধের উপায় : মরুভূমি সম্প্রসারণের জন্য দায়ী কারণগুলিকে নিয়ন্ত্রণ করা যদি সম্ভব হয় তাহলে মরুপ্রসারণ রোধ করা যাবে । মরু আগ্রাসন থেকে পৃথিবীকে রক্ষা করার জন্য নিম্নলিখিত উপায়গুলি অবলম্বন করা একান্ত আবশ্যক । 

( 1 ) বৃক্ষরোপণ : গাছপালা ধুলোর ঝড়কে আটকায় , ভূমিক্ষয় রোধ করে । মরুভূমিতে গাছ লাগালে প্রাকৃতিক সুরক্ষাপ্রাচীর গড়ে তোলা যায় । বালিয়াড়ির প্রসারণের দিকে আড়াআড়িভাবে গাছ লাগাতে হবে যাতে বায়ুর ক্ষয় রোধ করা যায় । এক্ষেত্রে যে গাছগুলিকে নির্বাচন করা হয় সেগুলি হল- Senna , Gum , Acacia , Prospis , Julflora , Lebber প্রভৃতি । Wind Break দিয়ে দেয়াল তৈরি করতে হবে যাতে ঝড়ের প্রবাহ আটকানো যায় । 

( ২ ) তৃণভূমি সৃষ্টি : মরুভূমিতে মাটির আর্দ্রতা সংরক্ষণে খুঁড়ে নীচু জমিতে জল থরে রেখে মুথাজাতীয় ঘাস লাগাতে হবে । এই প্রক্রিয়ায় পশুচারণ ভূমি যেমন গড়ে তোলা যাবে , সেইসঙ্গে মাটির সিক্ততা রক্ষা করা যাবে । 

( ৩ ) জলসেচ প্রকল্প : মরুভূমির মাটিতে খনিজ মৌল উপস্থিত থাকে , জলসেচের ব্যবস্থা করা গেলে মাটির উর্বরতা বাড়ে , কৃষিকাজ করা যায় । ফলে মরুভূমি শস্যশ্যামলা হবে ও মরুকরণ বাধা পাবে । 

( ৪ ) জলসংরক্ষণ পদ্ধতি : ( i ) বেড়া দিয়ে গাছগুলিকে সংরক্ষণ করতে হবে ,

( ii ) গাছের গুঁড়ির আশেপাশে নুড়ি – পাথর জড়ো করে রাখতে হবে , রাতে যে অল্প শিশির জমে সেই জল যাতে অপচয় না হয় , ( iii ) বালিয়াড়ির গায়ে দাবার ছকের মতো ছোটো ছোটো ঘর কেটে কাদাপাথর দিয়ে পাঁচিল গাঁথতে হবে । বৃষ্টির জল সাময়িক ভাবে ওই দেয়ালে বাধা পাবে যা ঘাস গজাতে সাহায্য করবে ,

( iv ) মরুভূমি অঞ্চলে ঝোপ গাছ জ্বালানি রুপে ব্যবহার না করে সৌর উনুন ব্যবহারে গুরুত্ব দেওয়া ,

( v ) বাঁধ বা জলাধার তৈরি করে জল থরে রাখার ব্যবস্থা করা ,

( vi ) মরুভূমিতে উদ্যান তৈরি করা ও মরূদ্যানকে সংরক্ষণ করা ।

( vii ) গাছের গুঁড়ির আশেপাশে নুড়িপাথর বেষ্টিত করে রাখা যাতে মরুভূমিতে রাতে ঠান্ডায় শিশির জমে ।

SOURCE-BS

©Kamaleshforeducation.in (2023)

 

 

 

 

মাধ্যমিক জীবনবিজ্ঞান-জীবনের প্রবহমানতা-X

 

 

মাধ্যমিক জীবনবিজ্ঞান

জীবনের প্রবহমানতা মাধ্যমিক জীবনবিজ্ঞান MCQ প্রশ্ন-উত্তর

kamaleshforeducation.in  ওয়বসাইটে আপনাকে স্বাগতম্

আজ আসন্ন মাধ্যমিক পরীক্ষার জন্য   

Kamaleshforeducation.in  -এর তরফ থেকে নিয়ে আসা হয়েছে মাধ্যমিক জীবনবিজ্ঞান জীবনের প্রবহমানতা MCQ প্রশ্ন-উত্তর। এই   MCQ প্রশ্ন উত্তর   মাধ্যমিক ছাত্রছাত্রীদের জন্য খুবই মূল্যবান যেটি, দশম শ্রেণি [WBBSE Class 10] -এর সিলেবাসের ওপর ভিত্তি করে তৈরি হয়েছে।   অক্লান্ত পরিশ্রম এবং অভিজ্ঞতা দিয়ে তৈরি করার এর ফলে   প্রশ্নগুলি মাধ্যমিকের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ ।মাধ্যমিক পরীক্ষার Life Science Chapter  MCQ Question Answer প্রস্তুতিতে অনেকটাই সাহায্য করবে এই MCQ প্রশ্ন উত্তর

 

তাই এটি থেকে মাধ্যমিক জীবন বিজ্ঞান পরীক্ষায় MCQ প্রশ্ন উত্তর কমন আসার চান্স 99% ।  

 এটি দশম শ্রেণি (Class X) -এর পরীক্ষার পাশাপাশি বিভিন্ন কম্পিটিটিভ পরীক্ষার (Competitive Exam) [ WB TET, WBCS, PSC, WB JEXPO, ANM GNM, JENPAS BHA, Railway Group-D, RRB NTPC,West Bengal Police, Kolkata Police ,CGL,CHSl ,Etc.] জন্যও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ।  

মাধ্যমিক জীবনবিজ্ঞান

জীবনের প্রবহমানতা]মাধ্যমিক জীবনবিজ্ঞান MCQ প্রশ্ন-উত্তর

Madhyamik Life Science Chapter MCQ প্রশ্ন উত্তর

[জীবনের প্রবহমানতা]মাধ্যমিক জীবনবিজ্ঞান MCQ প্রশ্ন-উত্তর

Madhyamik Life Science Chapter 2 MCQ Question Answer

Q1.মাইটোসিস কোশ বিভাজনের কোন দশায় নিউক্লীয় পর্দার পুনরাবির্ভাব ঘটে ?

  • টেলোফেজ দশায়
  • মেটাফেজ দশায়
  • অ্যানাফেজ দশায়
  • প্রফেজ দশায়

ANS-টেলোফেজ দশায়

Q2.যে জীবে অ্যামাইটোসিস কোশ বিভাজন দেখা যায় তা হল –

  • মানুষ
  • মটর গাছ
  • অ্যামিবা
  • ব্যাঙ

ANS-অ্যামিবা

Q3. মানুষের জনন কোশে ক্রোমোজোম সংখ্যা –

  • 46
  • 50
  • 23
  • 10

ANS-23

Q4. কোনো জীবের ক্রোমোজোম সংখ্যা 2n=24 হলে ওই জীবেদ্র শুক্রাণু / ডিম্বাণুতে ক্রোমোজোম সংখ্যা হবে –

  • 6
  • 12
  • 18
  • 24

ANS-12

Q5. শুক্রাণু ও ডিম্বাণু উৎপাদিত হয় –

  • মাইটোসিস পদ্ধতিতে
  • মিয়োসিস পদ্ধতিতে
  • অ্যামাইটোসিস পদ্ধতিতে
  • কোরদ্গম পদ্ধতিতে

ANS-মিয়োসিস পদ্ধতিতে

Q6. প্রত্যক্ষ বিভাজন পদ্ধতি হল –

  • মাইটোসিস
  • মিয়োসিস
  • অ্যামাইটোসিস
  • এন্ডোমাইটোসিস

ANS-অ্যামাইটোসিস

Q7. ব্যাকটেরিয়ার কোশ বিভাজন পদ্ধতিটি হল –

  • মাইটোসিস 
  • অ্যামাইটোসিস
  • মিয়োসিস
  • এন্ডোমাইটোসিস

ANS-অ্যামাইটোসিস

Q8. যে ক্রোমোজমের মাঝখানে সেন্ট্রোমিয়ার উপস্থিত সেটি হল –

  • টেলোসেন্ট্রিক
  • অ্যাক্রোসেন্ট্রিক
  • মেটাসেন্ট্রিক
  • সাবমেটাসেন্ট্রিক

ANS-মেটাসেন্ট্রিক

Q9.বিভাজনরত কোশের নিউক্লিয়াস বিলুপ্ত হয় যে দশায় সেটি হল –

  • প্রোফেজ
  • মেটাফেজ
  • অ্যানাফেজ
  • টেলোফেজ

ANS-প্রোফেজ

Q10. বিভাজন পদ্ধতিতে জনন সম্পন্ন করে –

  • প্লাসমোডিয়াম
  • হাইড্রা
  • ফার্ণ
  • প্ল্যানেরিয়া

ANS-প্লাসমোডিয়াম

[জীবনের প্রবহমানতা]মাধ্যমিক জীবনবিজ্ঞান MCQ প্রশ্ন-উত্তর

Madhyamik Life Science Chapter  MCQ Question Answer

Q11. কোরকোদগম পদ্ধতিতে জন সম্পন্ন করে –

  • অ্যামিবা
  • প্লাসমোডিয়াম
  • হাইড্রা
  • প্ল্যানেরিয়া

ANS-হাইড্রা

Q12. অ্যামিবা -তে লক্ষ্য করা যায় –

  • বিভাজন
  • কোরকোদগম
  • খন্ডীভবন
  • রেণু উৎপাদন

ANS-বিভাজন

Q13. সস্য নিউক্লিয়াসে ক্রোমোজোম সংখ্যা হল –

  • n
  • 2n
  • 3n
  • 4n

ANS-3n

Q14. বুলবিল গঠনের মাধ্যমে বংশবিস্তার করে-

  • রাঙ্গা -আলু
  • আমরুল
  • চুপড়ি আলু
  • ডালিয়া

ANS-চুপড়ি আলু

Q15. কর্ষণ দ্রবণ লাগে যে প্রকার কৃত্রিম জননে তা হল –

  • শাখাকলম
  • গ্রাফটিং
  • অণুবিস্তারণ
  • সবগুলি

ANS-অণুবিস্তারণ

Q16. DNA-এর প্রতিলিপিকরণ যে দশায় ঘটে সেটি হল –

  • G1দশা
  • S দশা
  • G2 দশা
  • M দশা 

ANS-S দশা

Q17.দেহকোশ সাধারণত যে প্রক্রিয়ায় বিভাজিত হয় সেটি হল –

  • মাইটোসিস বিভাজন
  • মিয়োসিস বিভাজন
  • অ্যামাইটোসিস বিভাজন
  • খন্ডীভবন

ANS-মাইটোসিস বিভাজন

Q18. অ্যানাফেজীয় চলনকালে মেটাসেন্ট্রিক ক্রোমোজোমের আকৃতি –

  • I অক্ষরের মত
  • J অক্ষরের মত
  • V অক্ষরের মত
  • L অক্ষরের মত

ANS-V অক্ষরের মত

Q19. মাইটোসিসের দীর্ঘতম দশাটি হল –

  • প্রোফেজ
  • মেটাফেজ
  • অ্যানাফেজ
  • টেলোফেজ

ANS-প্রোফেজ

Q20. মাইটোসিসের অত্যন্ত স্বল্পস্থায়ী দশাটি হল –

  • প্রোফেজ
  • মেটাফেজ
  • অ্যানাফেজ
  • টেলোফেজ

ANS-অ্যানাফেজ

SOURCE-aushilan.com

©Kamaleshforeducation.in(2023)

MADHYAMIK SUGGESTION-X

 

 

 

 

T-1

LIFE SCIENCE

মাধ্যমিক জীবনবিজ্ঞান-জীবজগতে নিয়ন্ত্রণ ও সমন্বয় (প্রথম অধ্যায়)-X

মাধ্যমিক জীবনবিজ্ঞান-জীবনের প্রবহমানতা-X

 

GEOGRAPHY

মাধ্যমিক দশম শ্রেণীর ভূগোল-বায়ুমণ্ডল-X

মাধ্যমিক দশম শ্রেণীর ভূগোল-বায়ুমণ্ডলে তাপ, উষ্ণতা ও বিশ্ব উষ্ণায়ন-X

মাধ্যমিক দশম শ্রেণীর ভূগোল-বায়ুর স্তরবিন্যাস

মাধ্যমিক দশম শ্রেণীর ভূগোল-বায়ুর চাপবলয় ও বায়ু প্রবাহ-X

 

BENGALI

মাধ্যমিক দশম শ্রেণীর বাংলা-জ্ঞানচক্ষু (গল্প)-T-1-X

জ্ঞানচক্ষু গল্প থেকে আরও প্রশ্ন ও -T-2-X

জ্ঞানচক্ষু গল্প থেকে আরও প্রশ্ন ও -T-3-X

জ্ঞানচক্ষু গল্প থেকে আরও প্রশ্ন ও উত্তর-T-4-X

 ======================

©kamaleshforeducation.in(2023)

মাধ্যমিক জীবনবিজ্ঞান-জীবজগতে নিয়ন্ত্রণ ও সমন্বয় (প্রথম অধ্যায়)-X

 

 

 

 

জীবজগতে নিয়ন্ত্রণ ও সমন্বয় (প্রথম অধ্যায়) |

Madhyamik Life Science Question and Answer

kamaleshforeducation.in  ওয়েবসাইটে আপনাকে স্বাগতম্

আজ আসন্ন মাধ্যমিক পরীক্ষার জন্য   

Kamaleshforeducation.in  -এর তরফ থেকে নিয়ে আসা হয়েছে মাধ্যমিক জীবনবিজ্ঞান ‘জীবজগতে নিয়ন্ত্রণ ও সমন্বয়’ (প্রথম অধ্যায়) থেকে বহুবিকল্পভিত্তিক, সংক্ষিপ্ত, অতিসংক্ষিপ্ত এবং রচনাধর্মী প্রশ্ন উত্তর (MCQ, Very Short, Short,  Descriptive Question and Answer) গুলি যা আগামী পশ্চিমবঙ্গ মাধ্যমিক জীবন বিজ্ঞান পরীক্ষার(West Bengal Class 10th   Life Science Examination) জন্য খুব ইম্পর্টেন্ট।অক্লান্ত পরিশ্রম এবং অভিজ্ঞতা দিয়ে তৈরি করার এর ফলে   প্রশ্নগুলি মাধ্যমিকের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ ।মাধ্যমিক পরীক্ষার Life Science Chapter 1 MCQ Question Answer প্রস্তুতিতে অনেকটাই সাহায্য করবে এই MCQ প্রশ্ন উত্তর

 

  মাধ্যমিক জীবন বিজ্ঞান – জীবজগতে নিয়ন্ত্রণ ও সমন্বয় (প্রথম অধ্যায়)

MCQ প্রশ্নোত্তর

 

  1. সুন্দরী গাছের শ্বাসমূলের চলন হলো একপ্রকার 

(A) অনুকুল আলোকবর্তী 

(B) অনুকুল অভিকর্ষবর্তী 

(C) প্রতিকূল অভিকর্ষবর্তী 

(D) তির্যক অভিকর্ষবর্তী 

Ans: (C) প্রতিকূল অভিকর্ষবর্তী

  1. ট্রপিক চলন সম্পর্কিত নীচের কোন বক্তব্যটি সঠিক তা নির্বাচন করো 

(A) এটি উদ্দীপকের তীব্রতা দ্বারা নিয়ন্ত্রিত 

(B) উদ্ভিদ বা উদ্ভিদ অঙ্গের সামগ্রিক স্থান পরিবর্তন হয় 

(C) ভলভক্স নামক শ্যাওলায় এই চলন দেখা যায় 

(D) এটি উদ্দীপকের গতিপথ দ্বারা নিয়ন্ত্রিত আবিষ্ট বক্ৰচলন । 

Ans: (D) এটি উদ্দীপকের গতিপথ দ্বারা নিয়ন্ত্রিত আবিষ্ট বক্ৰচলন । 

  1. অক্সিন হরমোনের রাসায়নিক উপাদান হলো— (A) কার্বন , হাইড্রোজেন , অক্সিজেন 

(B) কার্বন , হাইড্রোজেন , অক্সিজেন ও নাইট্রোজেন 

(C) কার্বন ও হাইড্রোজেন 

(D) কার্বন , হাইড্রোজেন , নাইট্রোজেন । 

Ans: (B) কার্বন , হাইড্রোজেন , অক্সিজেন ও নাইট্রোজেন 

  1. বল ও সকেট সন্ধি দেখা যায়– 

(A) কব্জিতে / 

(B) কনুইতে / 

(C) স্কন্ধের সন্ধিতে / 

(D) হাঁটুতে 

Ans: (C) স্কন্ধের সন্ধিতে /

  1. পিটুইটারি গ্রন্থি থেকে ক্ষরিত হরমোন হলো 

(A) ACTH 

(B) থাইরক্সিন 

(C) ইনসুলিন

(D) ইস্ট্রোজেন । 

Ans: (A) ACTH

  1. নীচের বাক্যগুলি পড়ো এবং যে বাক্যটি সঠিক নয় সেটিকে চিহ্নিত করো – 

(A) FSH , LH ও প্রোল্যাকটিন হলো বিভিন্ন ধরনের GTH 

(B) অ্যাড্রিনালিন হার্দ উৎপাদন কমায় 

(C) ইনসুলিন কোশপর্দার মাধ্যমে কোশের ভিতরে গ্লুকোজের শোষণে সাহায্য করে 

(D) প্রোজেস্টেরন স্ত্রীদেহে প্লাসেন্টা গঠনে সাহায্য করে 

Ans: (B) অ্যাড্রিনালিন হার্দ উৎপাদন কমায় 

  1. ন্যাস্টিক চলন সম্পর্কিত নীচের কোন বক্তব্যটি সঠিক 

(A) এটি উদ্দীপকের গতিপথ দ্বারা নিয়ন্ত্রিত আবিষ্ট বক্র চলন 

(B) এতে উদ্ভিদ বা উদ্ভিদঅঙ্গের সামগ্রিক স্থান পরিবর্তন হয় । 

(C) এটি উদ্দীপকের তীব্রতা দ্বারা নিয়ন্ত্রিত চলন 

(D) এটি ক্ল্যামাইডোমোনাস নামক শৈবালে দেখা যায় । 

Ans: (C) এটি উদ্দীপকের তীব্রতা দ্বারা নিয়ন্ত্রিত চলন

  1. মানবদেহে করোটি স্নায়ুর সংখ্যা সঠিকভাবে নিরূপণ করো 

(A) ১০ জোড়া 

(B) ৩১ জোড়া 

(C) ১২ জোড়া 

(D) ২১ জোড়া 

Ans: (C) ১২ জোড়া

  1. মানবদেহে সুষুম্না স্নায়ুর সংখ্যা হলো 

(A) ১১ জোড়া 

(B) ২১ জোড়া 

(C) ১০ জোড়া 

(D) ৩১ জোড়া 

Ans: (D) ৩১ জোড়া

  1. মানুষের মস্তিষ্কে স্নায়ুকোশের সংখ্যা প্রায় 

(A) ১০ শত কোটি 

(B) ২০ শত কোটি 

(C) ৪০ শত কোটি 

(D) ৫০ শত কোটি 

Ans: (A) ১০ শত কোটি

  1. স্নায়ুতন্ত্রের গঠনগত ও কার্যগত একককে বলে— 

(A) নিউরোন / 

(B) নেফ্রন / 

(C) নিউরোগ্লিয়া / 

(D) মস্তিষ্ক 

Ans: (A) নিউরোন

  1. সিলিয়ারি গমন দেখা যায় নিম্নলিখিত কোন প্রাণীর মধ্যে তা সঠিক ভাবে নিরূপণ করো 

(A) অ্যামিবা 

(B) প্যারামেসিয়াম 

(C) ইউমিনা

(D) মাছ । 

Ans: (B) প্যারামেসিয়াম

  1. গমনের সময় মানবদেহের ভারসাম্য নিয়ন্ত্রণ করে 

(A) গুরুমস্তিষ্ক / 

(B) লঘুমস্তিষ্ক / 

(C) পনস / 

(D) থ্যালামাস 

Ans: (B) লঘুমস্তিষ্ক

  1. ফ্ল্যাজেলা কোন প্রাণীর গমন অঙ্গ ? 

(A) ইউক্লিনার / 

(B) অ্যামিবার / 

(C) প্যারামেসিয়ামের / 

(D) মাছের 

Ans: (A) ইউক্লিনার

  1. বীজের সুপ্তাবস্থা ভাঙতে সাহায্য করে— 

(A) অক্সিন / 

(B) জিব্বেরেলিন / 

(C) সাইটোকাইনিন / 

(D) ইথিলিন 

Ans: (B) জিব্বেরেলিন 

  1. দু’টি নিউরোনের সংযোগস্থলকে বলে— 

(A) সাইন্যাপসিস / 

(B) সাইন্যাপটিক নব / 

(C) সাইন্যাস / 

(D) অ্যাক্সন হিলক 

Ans: (C) সাইন্যাস

  1. মস্তিষ্কের আবরণকে বলে– 

(A) মেনিনজেস / 

(B) প্লুরা / 

(C) পেরিকার্ডিয়াম / 

(D) পেরিটোনিয়াম 

Ans: (A) মেনিনজেস

  1. নিউরোনের দীর্ঘ প্রবর্ধকের নাম হলো- 

(A) ডেনড্রন / 

(B) অ্যাক্সন / 

(C) ডেনড্রাইট / 

(D) অ্যাক্সেলিমা 

Ans: (B) অ্যাক্সন

  1. মানুষের অক্ষিগোলকের যে স্তরটি আলোকসুবেদী সেটি হলো– 

(A) কোরয়েড / 

(B) স্ক্লেরা / 

(C) রেটিনা / 

(D) কর্নিয়া 

Ans: (C) রেটিনা

  1. ডিম্বাশয় নিঃসৃত হরমোনটি হলো– 

(A) ইনসুলিন / 

(B) ইস্ট্রোজেন / 

(C) থাইরক্সিন / 

(D) অ্যাড্রিনালিন 

Ans: (B) ইস্ট্রোজেন

  1. আইলেট্স অব ল্যাঙ্গারহ্যান্স থাকে- 

(A) মস্তিস্কে / 

(B) থাইরয়েড গ্রন্থিতে / 

(C) অগ্ন্যাশয়ে / 

(D) শুক্রাশয়ে 

Ans: (C) অগ্ন্যাশয়ে 

 

 মাধ্যমিক জীবন বিজ্ঞান – জীবজগতে নিয়ন্ত্রণ ও সমন্বয় (প্রথম অধ্যায়)

অতিসংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর

 Madhyamik Life Science Question and Answer : 

  1. অক্সিন হরমোনের রাসায়নিক নাম কী ? 

Ans: ইন্ডোল অ্যাসেটিক অ্যাসিড ( IAA ) ।

  1. গমনে সক্ষম একটি উদ্ভিদের উদাহরণ দাও । 

Ans: ভলবস্ক । 

  1. একটি ক্ষারীয় উদ্ভিদ হরমোনের উদাহরণ দাও ।

Ans: সাইটোকাইনিন । 

  1. উদ্ভিদের কোশ বিভাজন নিয়ন্ত্রণকারী হরমোনের নাম কী ? 

Ans: সাইটোকাইনিন । 

  1. স্নায়ুকোশের মৃত্যুর পর কে তার স্থান দখল করে ?

Ans: নিউরোগ্লিয়া ।

  1. স্নায়ুর আবরণকে কী বলে ? 

Ans: এপিনিউরিয়াম ।

  1. স্নায়ুকোশ বিভাজিত হয় না কেন ? 

Ans: সেন্ট্রোজোম নিষ্ক্রিয় থাকার কারণে ।

  1. একটি মিশ্র স্নায়ুর উদাহরণ দাও । 

Ans: ভেগাস ।

  1. মস্তিষ্কের কোন অংশ দেহের ভারসাম্য নিয়ন্ত্রণ করে ? 

Ans: লঘুমস্তিষ্ক । 

  1. একটি নিউরোট্রান্সমিটারের উদাহরণ দাও । 

Ans: অ্যাসিটাইল কোলিন ।

  1. গুরুমস্তিষ্কের যোজককে কী বলে ? 

Ans: করপাস ক্যালোসাম ।

  1. লঘুমস্তিষ্কের যোজককে কী বলে ? 

Ans: ভারমিস । 

  1. একটি সরল প্রতিবর্ত ক্রিয়ার উদাহরণ দাও । 

Ans: চোখে আলো পড়লে তৎক্ষণাৎ চোখের পাতা বন্ধ হয়ে যায় ।

  1. ব্ল্যানভিয়ারের পর্ব নিউরোনের কোথায় থাকে ?

Ans: অ্যাক্সনে । 

  1. চোখের সঙ্গে যুক্ত স্নায়ুটির নাম লেখো । 

Ans: অপটিক স্নায়ু । 

  1. CSF- এর পুরো নাম লেখো । 

Ans: Cerebro Spinal Fluid .

  1. মস্তিষ্কের রিলে স্টেশন কাকে বলে ? 

Ans: স্টেশন বলে ।

  1. দু’টি স্নায়ুকোশের সংযোগস্থলকে কী বলে ? 

Ans: সাইন্যাপ্স । 

  1. কোন হরমোন উদ্ভিদের অঙ্গবিভেদ নিয়ন্ত্রণ করে ? 

Ans: কাইনিন উদ্ভিদের অঙ্গবিভেদ নিয়ন্ত্রণ

  1. দু’টি অস্থির সংযোগস্থলে যে তরল থাকে তার নাম কী ?

Ans: সাইনোভিয়াল তরল ।

  

মাধ্যমিক জীবন বিজ্ঞান – জীবজগতে নিয়ন্ত্রণ ও সমন্বয় (প্রথম অধ্যায়)

সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর প্রশ্ন ও উত্তর |

Madhyamik Life Science Question and Answer : 

  1. দরজায় ঘন্টা বাজার শব্দ শুনে তুমি যেভাবে দরজা খুলবে , সেই স্নায়বিক পথটি একটি শব্দছকের মাধ্যমে দেখাও । 

Ans: দরজায় ঘন্টা বাজা ( উদ্দীপক ) কান ( গ্রাহক ) সংজ্ঞাবহ স্নায়ুকোশ স্নায়ুকেন্দ্র ( মস্তিষ্ক ) → আজ্ঞাবহ স্নায়ুকোশ হাত , পায়ের পেশি ( কারক ) → দরজা খুলে দেওয়া । 

  1. মেনিনজেস ও CSF ও এর অবস্থান বিবৃত করো । 

Ans: মেনিনজেস মস্তিষ্ক ও সুষুম্নাকান্ডকে ঘিরে অবস্থান করে । CSF- কেন্দ্রীয় স্নায়ুতন্ত্রের গহ্বরে সুষুম্নাকান্ডের কেন্দ্রীয়নালী ও সাবঅ্যারাকনয়েড স্থানে অবস্থান করে । 

  1. উদ্ভিদের বীজ ও পর্বমধ্যের ওপর জিব্বেরেলিন হরমোন কী কী প্রভাব ফেলে তা ব্যাখ্যা করো । 

Ans: জিব্বেরেলিন বীজের সুপ্ত দশা ভঙ্গ করে অঙ্কুরোদ্গমে সাহায্য করে । জিব্বেরেলিন উদ্ভিদের পর্বমধ্যের দৈর্ঘ্য বৃদ্ধি ঘটায় । 

  1. অক্ষিগোলকের বিভিন্ন প্রতিসারক মাধ্যমগুলির নাম ক্রমানুসারে লেখো । 

Ans: কর্নিয়া অ্যাকুয়াস হিউমর লেন্স → ভিট্রিয়াস হিউমর । 

  1. অ্যাক্সন ও ডেনড্রনের পার্থক্য লেখো , নিম্নলিখিত বৈশিষ্ট্যের ভিত্তিতে ১- গঠন গত ২- কার্যগত 

Ans: অ্যাক্সন সাধারণত শাখাহীন কিন্তু ডেনড্রন শাখা প্রশাখাযুক্ত হয় । অ্যাক্সনের কাজ হলো স্নায়ুস্পন্দন কোশদেহ থেকে পরবর্তী স্নায়ুকোশে বহন করা আর ডেনড্রনের কাজ হলো স্নায়ুস্পদন গ্রহণ করে কোশদেহে পাঠিয়ে দেওয়া । 

  1. সহজাত এবং অর্জিত প্রতিবর্ত ক্রিয়া কাকে বলে ? উদাহরণ দাও । 

Ans: যে প্রতিবর্ত ক্রিয়া জন্মসূত্রে প্রাণী পেয়ে থাকে তাকে সহজাত বা জন্মগত বা শর্ত নিরপেক্ষ প্রতিবর্ত ক্রিয়া বলে । উদাহরণ— শিশুর মাতৃস্তন বা দুগ্ধ পান ৷ যে প্রতিবর্ত ক্রিয়া অভ্যাসের মাধ্যমে গড়ে ওঠে ( জন্মসূত্রে নয় ) তাকে অর্জিত বা শর্তাধীন প্রতিবর্ত ক্রিয়া বলে । উদাহরণ— শিশুর হাঁটতে শেখা । 

  1. পিটুইটারিকে প্রভুগ্রন্থি ( মাস্টার গ্ল্যান্ড ) বলে কেন ?

Ans: পিটুইটারি গ্রন্থি নিঃসৃত হরমোন অন্যান্য গ্রন্থির কার্যকারিতা নিয়ন্ত্রণ করে , তাই একে প্রভুগ্রন্থি বা মাস্টার গ্ল্যান্ড বলে । 

8.একনেত্র ও দ্বিনেত্র দৃষ্টি বলতে কী বোঝায় ?                                                                                                                                                         

  Ans: যে দৃষ্টিতে দু’টি চোখ দিয়ে দু’টি আলাদা আলাদা বস্তু দেখা যায় তাকে একনেত্র দৃষ্টি বলে ।                                                                       উদাহরণ— গোরু , মহিষের চোখ ।                                                                                                                                                                  

 যে দৃষ্টিতে দু’টি চোখ দিয়ে একটিই বস্তু দেখা যায় তাকে দ্বিনেত্র দৃষ্টি বলে ।                                                                                                     

উদাহরণ— মানুষের চোখ

 

      9মেনিনজেস কী ? এর কাজ কী ? 

Ans: কেন্দ্রীয় স্নায়ুতন্ত্রের ( মস্তিষ্ক ও সুষুম্নাকাণ্ড ) বাইরের ত্রিস্তরীয় আবরণকে মেনিনজেস বলে । এর তিনটি স্তর হলো – বাইরের ডুরাম্যাটার , মধ্যের অ্যারাকনয়েড ম্যাটার ও ভিতরের প্যারাম্যাটার । 

> কাজ – কেন্দ্রীয় স্নায়ুতন্ত্র অর্থাৎ মস্তিষ্ক ও সুষুম্নাকাণ্ডকে রক্ষা করা । 

  1. ক্যাটারাক্ট বা চোখে ছানি পড়া বলতে কী বোঝায় ?

Ans: বয়স বাড়লে লেন্স অস্বচ্ছ হয়ে পড়ে এবং রেটিনাতে অস্বচ্ছ প্রতিবিম্ব গঠিত হয় । ফলে দৃষ্টিশক্তি ক্রমশ হ্রাস পায় । একে চোখের ছানি পড়া বা ক্যাটারাক্ট বলে । 

কারণ : লেন্সের প্রোটিন ( Crystalline Protein ) বিনষ্ট হওয়ায় এই রোগ হয় । 

সংশোধন : অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে ছানি অপসারণ করে তার পরিবর্তে Intra Ocular Lens ( IOL ) ব্যবহার করলে এই সমস্যা দূর হয় । 

  1. মাছের গমনে মায়োটম পেশির ভূমিকা লেখো ।

Ans: রুই মাছের দেহের দুই পাশে ‘ V ’ আকৃতির পেশিকে মায়োটম পেশি বলে । এই পেশির সংকোচন ও প্রসারণে মাছের দেহ আন্দোলিত হয় এবং মাছ সামনের দিকে গমন করতে পারে । 

  1. গমনের যেকোনো তিনটি উদ্দেশ্য লেখো ।

Ans: গমনের উদ্দেশ্য : খাদ্যান্বেষণ : সমস্ত প্রাণী এবং নিম্নশ্রেণির কয়েকটি উদ্ভিদ ( যেমন— ভলভক্স ) খাদ্য সংগ্রহের জন্য এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় গমন করে । 

আত্মরক্ষা : খাদক প্রাণীর হাত থেকে বাঁচার জন্য প্রাণীদের গমন দরকার হয় । আশ্রয় পছন্দমতো এবং অনুকূল আশ্রয়ের জন্য প্রাণী গমন করে । 

  1. সাইনোভিয়াল অস্থিসন্ধি কাকে বলে ? 

Ans: দু’টি অস্থির সংযোগস্থলে সাইনোভিয়াল পর্দার মধ্যে অবস্থিত ক্ষুদ্র গহ্বরকে সাইনোভিয়াল গহ্বর বলে যা সাইনোভিয়াল তরল দ্বারা পূর্ণ থাকে । এই ধরনের অস্থিসন্ধিকে সাইনোভিয়াল অস্থিসন্ধি বলে । 

  1. মিশ্র গ্রন্থি কাকে বলে ? উদাহরণ দাও ।

Ans: যেসকল গ্রন্থি অন্তঃক্ষরা ও বহিঃক্ষরা উভয় প্রকার কাজ করে তাকে মিশ্র গ্রন্থি বলে । উদাহরণ— অগ্ন্যাশয় । 

  1. ট্রপিক ও স্থানীয় হরমোন কাকে বলে ? 

Ans: যেসকল হরমোন উৎসস্থল থেকে বাহিত হয়ে অন্য স্থানে ক্রিয়া করে তাকে ট্রপিক হরমোন বলে । যেমন- ACTH , TSH । যেসকল হরমোন উৎসস্থলে ক্রিয়া করে তাকে স্থানীয় বা লোকাল হরমোন বলে । যেমন— টেস্টোস্টেরন । 

  1. উপযোজন কাকে বলে ? 

Ans: যে প্রতিক্রিয়া সিলিয়ারি পেশি বা সাসপেনসরি লিগামেন্ট – এর সাহায্যে , লেন্সের আকৃতির পরিবর্তন ঘটিয়ে বস্তুর সঠিক দর্শনে সাহায্য করে তাকে উপযোজন বলে । 

  1. থাইরক্সিনের দু’টি কাজ লেখো । 

Ans: মৌল বিপাকীয় হার নিয়ন্ত্রণ করে  ও লোহিত রক্তকণিকার ক্রমপরিণতিতে সাহায্য করে ।                                                                                  শর্করা , প্রোটিন ও ফ্যাটের বিপাক ক্রিয়ার হার বৃদ্ধি করে । 

  1. সাইন্যাপ কী ? এর কাজ কী ? 

Ans: দু’টি নিউরোনের সংযোগস্থল , যেখানে একটি নিউরোন শেষ এবং অপর নিউরোন শুরু হয় সেই সংযোগস্থলকে সাইন্যাস বা প্রান্তসন্নিকর্ষ বলে । 

> কাজ— এক নিউরোন থেকে অপর নিউরোনে স্নায়ুস্পন্দন পরিবহণ করা এর মুখ্য কাজ ।  

  1. স্নায়ুগ্রন্থি বা নার্ভ গ্যাংলিয়ন কী ? এর কাজ কী ?

Ans: কেন্দ্রীয় স্নায়ুতন্ত্রের বাইরে অসংখ্য নিউরোনের কোশদেহ মিলিত হয়ে যে গ্রন্থি সৃষ্টি করে তাকে স্নায়ুগ্রন্থি বা নার্ভ গ্যাংলিয়ন বলে ।

> কাজ – স্নায়ু উৎপন্ন করা , নিউরোসিক্রেটারি পদার্থ ক্ষরণ করে স্নায়ুকে সিত্ত রাখা । 

  1. অশ্রুগ্রন্থি কোথায় থাকে ? এর কাজ কী ?

Ans: চোখের ঊর্ধ্বপল্লবের নীচে থাকে । 

> কাজ – চোখে আর্দ্রতা প্রদান করে । অশ্রুতে উপস্থিত লাইসোজাইম জীবাণু ধ্বংস করে চোখকে রক্ষা করে । 

  1. কোরয়েড কোথায় থাকে ? এর কাজ কী ?

Ans: অক্ষিগোলকের স্লেরা ও রেটিনা স্তরের মাঝের স্তরটিকে কোরয়েড বলে । 

> কাজ– অক্ষিগোলকে পুষ্টি সরবরাহ করে । ও অক্ষিগোলকের বিচ্ছুরিত আলোর প্রতিফলন রোধ করে । 

  1. সুষুম্নাকাণ্ডের কাজ লেখো । 

Ans: বিভিন্ন প্রকার প্রতিবর্ত ক্রিয়া নিয়ন্ত্রণ করে । ও সুষুম্নাকাণ্ডের মাধ্যমে মস্তিষ্কের সঙ্গে দেহের পেশি ও অন্তরযন্ত্রের যোগাযোগ স্থাপন হয় । সুষুম্নাকাণ্ড পেশিটান নিয়ন্ত্রণ করে দেহভঙ্গি বজায় রাখে । 

  1. ফোটোট্যাকটিক চলন কাকে বলে ? 

Ans: আলোক উদ্দীপকের প্রভাবে সমগ্র উদ্ভিদদেহের স্থান পরিবর্তনকে ফোটোট্যাকটিক চলন বলে । 

  1. সরল ও জটিল প্রতিবর্ত ক্রিয়ার একটি করে উদাহরণ দাও ।

Ans: সরল প্রতিবর্ত ক্রিয়া চোখে ধুলোবালি পড়লে চোখ বন্ধ হয় । জটিল প্রতিবর্ত ক্রিয়া শিশুর হাঁটতে শেখা । 

  1. হরমোনকে রাসায়নিক সমন্বয়সাধক বলে কেন ? 

Ans: হরমোন উৎপত্তিস্থল থেকে রক্ত , লসিকা বা কলারসের মাধ্যমে বাহিত হয়ে অন্য অঙ্গের কলাকোশের কার্যকারিতা নিয়ন্ত্রণ করে এবং তাদের মধ্যে সমন্বয় সাধন করে । তাই হরমোনকে সমন্বয়সাধক বলে । 

  1. ক্রেসকোগ্রাফ যন্ত্র কে আবিষ্কার করেন ? এর কাজ কী ? 

Ans: বিজ্ঞানী জগদীশচন্দ্র বসু ক্রেসকোগ্রাফ যন্ত্র আবিষ্কার করেন । এই যন্ত্রের সাহায্যে উদ্ভিদের সাড়া প্রদান পরিমাপ করা হয় । 

  1. সংবেদন বলতে কী বোঝায় ? 

Ans: পরিবেশের বিভিন্ন প্রকার বাহ্যিক ও অভ্যন্তরীণ উদ্দীপকের প্রভাবে যে সকল অনুভূতির সৃষ্টি হয় তাকে সংবেদন বলে । যেমন— চাপ , তাপ , আলো , ক্ষুধা , তৃয়া ইত্যাদি উদ্দীপকের প্রভাবে সাড়া প্রদান করা । 

  1. অন্ধবিন্দু বা ব্লাইন্ড স্পট বলতে কী বোঝায় ?

Ans: তারারন্ধ্রের বিপরীত দিকে রেটিনার যে স্থানে অপটিক স্নায়ু বের হয় সেই স্থানে রড ও কোন কোশ না থাকায় ঐ স্থানে প্রতিবিম্ব গঠিত হয় না । এই অংশটিকে অন্ধবিন্দু বলে । 

  1. গোনাড কী ? উদাহরণ দাও । 

Ans: জননগ্রন্থি দু’টিকে অর্থাৎ পুরুষদেহে শুক্রাশয় এবং স্ত্রীদেহে ডিম্বাশয়কে একত্রে গোনাড বলে । 

উদাহরণ— শুক্রাশয় ও ডিম্বাশয় ।

30.প্রশ্ন : নাৰ্ভ বা স্নায়ু কাকে বলে ? এটি কয় প্রকারের ?                                                                                                                       Ans: যোগকলার আবরণবেষ্টিত স্নায়ুতহুগুচ্ছকে স্নায়ু বা নার্ভ বলে । গঠন অনুসারে নার্ভ বা স্নায়ু দুই প্রকারের মেডুলেটেড স্নায়ু বা মেডুলারি আবরণযুক্ত স্নায়ু । নন – মেডুলেটেড স্নায়ু বা মেডুলারি আবরণবিহীন স্নায়ু । 

  1. চলন ও গমন বলতে কী বোঝায় ? 

Ans: চলন : যে প্রক্রিয়ায় জীব এক জায়গায় স্থির থেকে অঙ্গপ্রত্যঙ্গের সঞ্চালন করে তাকে চলন বলে ।

গমন : যে প্রক্রিয়ায় জীব অঙ্গপ্রত্যঙ্গ সঞ্চালনের মাধ্যমে সামগ্রিকভাবে স্থান পরিবর্তন করে তাকে গমন বলে । 

  1. সিসমোন্যাস্টিক চলন কাকে বলে ? উদাহরণ দাও । 

Ans: স্পর্শ , আঘাত , ঘর্ষণ , বায়ুপ্রবাহ ইত্যাদি উদ্দীপকের তীব্রতার প্রভাবে উদ্ভিদ অঙ্গের যে ন্যাস্টিক চলন হয় তাকে সিসমোন্যাস্টিক বা স্পর্শব্যাপ্তি চলন বলে । যেমন লজ্জাবতী পাতা স্পর্শ করা হলে তা সঙ্গে সঙ্গে নুয়ে পড়ে । 

  1. দু’টি কৃত্রিম অক্সিন ও দু’টি কৃত্রিম সাইটোকাইনিনের নাম লেখো । 

Ans: কৃত্রিম অক্সিন -ইন্ডোল বিউটারিক অ্যাসিড ( IBA ) ।  ইন্ডোল প্রোপিওনিক অ্যাসিড ( IPA ) ।                                                                                           কৃত্রিম সাইটোকাইনিন : 1) ইমিডাজোল 2) অ্যাজাকাইনেটিন । 

  1. বহিঃক্ষরা ( সনাল গ্রন্থি ) ও অন্তঃক্ষরা ( অনাল গ্রন্থি ) কাকে বলে ? উদাহরণ দাও ।

Ans: যেসব গ্রন্থির ক্ষরণ নালির মাধ্যমে বাইরে আসে তাদের বহিঃক্ষরা বা সনাল গ্রন্থি বলে ।                                                               যেমন— লালাগ্রন্থি , ঘর্মগ্রন্থি ইত্যাদি

যেসব গ্রন্থির নালি থাকে না , ক্ষরিত পদার্থ সরাসরি রক্ত ও লসিকায় মেশে তাদের অস্তঃক্ষরা গ্রন্থি বা অনাল গ্রন্থি বলে ।                    উদাহরণ পিটুইটারি গ্রন্থি ও থাইরয়েড গ্রন্থি ইত্যাদি । 

  1. অ্যাড্রিনালিনকে আপৎকালীন বা জরুরিকালীন হরমোন বলে কেন ? 

Ans: অ্যাড্রিনালিন হরমোন অ্যাড্রেনাল গ্রন্থির মেডালা হতে ক্ষরিত হয় এবং আপৎকালীন বা জরুরিকালীন অবস্থায় ( রাগ , ভয় , দুশ্চিন্তা ইত্যাদি ) দেহকে স্বাভাবিক অবস্থায় নিয়ে আসে , তাই এই হরমোনকে আপৎকালীন হরমোন বলে । 

  1. প্রতিবর্ত পথ বা প্রতিবর্ত চাপ কাকে বলে ? এর বিভিন্ন অংশের নাম লেখো । 

Ans: যে পথে প্রতিবর্ত ক্রিয়া সম্পন্ন হয় সেই পথকে অর্থাৎ প্রতিবর্ত ক্রিয়ার পথকে প্রতিবর্ত পথ বা প্রতিবর্ত চাপ বলে ৷

বিভিন্ন অংশ— গ্রাহক । অন্তর্বাহী নিউরোন । কেন্দ্রীয় স্নায়ুতন্ত্র । বহির্বাহী নিউরোন । কারক । 

  1. অ্যাফারেন্ট বা অন্তর্বাহী স্নায়ু কাকে বলে ? উদাহরণ দাও ।

Ans: অ্যাফারেন্ট বা অন্তর্বাহী স্নায়ু যে স্নায়ু গ্রাহক থেকে কেন্দ্রীয় স্নায়ুতন্ত্রে উদ্দীপনা বহন করে তাকে অ্যাফারেন্ট বা অন্তর্বাহী স্নায়ু বলে । 

উদাহরণ – অলফ্যাক্টরি , অপটিক স্নায়ু । 

  1. ইফারেন্ট বা বহির্বাহী স্নায়ু কাকে বলে ? উদাহরণ দাও । 

Ans: ইফারেন্ট বা বহির্বাহী স্নায়ু যে স্নায়ু কেন্দ্রীয় স্নায়ুতন্ত্র থেকে উদ্দীপনা বহন করে কারকে ( ইফেক্টরে ) নিয়ে যায় তাকে বহির্বাহী বা ইফারেন্ট স্নায়ু বলে । 

উদাহরণ – অকিউলোমোটর ( 3rd অ্যাকসেসরি ( 11th ) হাইপোগ্লসাল ( 12th ) | 

  1. মিশ্র স্নায়ু কাকে বলে ? উদাহরণ দাও । 

Ans: মিশ্র স্নায়ু : অন্তর্বাহী ও বহির্বাহী উভয় প্রকার স্নায়ুর সমন্বয়ে গঠিত স্নায়ুকে মিশ্র স্নায়ু বলে । উদাহরণ – ফেসিয়াল ( 7th ) , ভেগাস স্নায়ু ( 10th ) । 

  1. অ্যামিবয়েড গমন বলতে কী বোঝো ? 

Ans: অ্যামিবয়েড গমন : ক্ষণপদ সৃষ্টির মাধ্যমে গমনকে অ্যামিবয়েড গমন বলে । অ্যামিবাতে এই প্রকার গমন দেখা যায় । 

  1. ফ্লাজেলীয় গমন কাকে বলে ? 

Ans: ফ্লাজেলীয় গমন কোশের সাইটোপ্লাজম থেকে উৎপন্ন সিলিয়া অপেক্ষা মোটা ও দীর্ঘ যে সূক্ষ্ম তত্ত্ব আন্দোলনের মাধ্যমে বা সঞ্চালনের মাধ্যমে প্রাণীর গমনে সাহায্য করে তাকে ফ্লাজেলা বলে । ফ্লাজেলার মাধ্যমে গমন পদ্ধতিকে ফ্লাজেলীয় গমন বলে । 

  1. অক্সিন হরমোনের দুটি কাজ লেখো । 

Ans: অক্সিন হরমোনের কাজ উদ্ভিদের বৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণ করা অক্সিন হরমোনের প্রধান কাজ । এটি কোশের বৃদ্ধি , মুলের বৃদ্ধিতে সাহায্য করে । এটি উদ্ভিদের বর্ধনশীল অঞ্চলের কোশ বিভাজন ও ক্যাম্বিয়ামের সক্রিয়তায় সাহায্য করে । ও অক্সিন হরমোন উদ্ভিদের ট্রপিক চলন নিয়ন্ত্রণ করে । 

  1. টেস্টোস্টেরন হরমোনের উৎস ও কাজ লেখো । 

Ans: টেস্টোস্টেরন ( Testosterone ) : • উৎস— শুক্রাশয়ের লেডিগের অন্তরকোশ থেকে ক্ষরিত হয় । কাজ— পুরুষদেহের যৌনাঙ্গের বৃদ্ধি ঘটায় । পুরুষের গৌণ যৌন বৈশিষ্ট্য ( যেমন – পেশিবহুল দেহ , গলার স্বর মোটা , গোঁফ – দাড়ি গজানো ) প্রকাশ ঘটায় । শুক্রাণু উৎপাদনে সাহায্য করে । 

  1. ইস্ট্রোজেন হরমোনের উৎস ও কাজ লেখো ।

Ans: ইস্ট্রোজেন ( Estrogen ) : উৎস — ডিম্বাশয়ের পরিণত ডিম্বথলি থেকে ক্ষরিত হয় । কাজ-

1) এর প্রভাবে জরায়ু , ডিম্বনালি বৃদ্ধি হয় , নারীদের ত্বক কোমল ও মসৃণ হয় , স্তনগ্রন্থির বৃদ্ধি হয় ।

2) এই হরমোনের প্রভাবে স্ত্রীদেহে মাসিক যৌন চক্র বা ঋতুচক্র নিয়ন্ত্রিত হয় । 

  1. প্রোজেস্টেরন হরমোনের উৎস ও কাজ লেখো । 

Ans: প্রোজেস্টেরন ( Progesterone ) উৎস— ডিম্বাশয়ের করপাস লিউটিয়াম থেকে ক্ষরিত হয় । কাজ—

1) স্ত্রীদেহের জরায়ুর এন্ডোমেট্রিয়াম বৃদ্ধি করে ।

2) নিষিক্ত ডিম্বাণুর রোপণে সাহায্য করে ।

3) প্লাসেন্টা গঠনে সাহায্য করে । 

  1. অ্যাড্রিনালিন এর প্রধান কাজগুলি লেখো । 

Ans: অ্যাড্রিনালিনের কাজ : অ্যাড্রিনালিন হৃৎপিণ্ডের গতি বাড়ায় । ফলে হৃদস্পন্দন বাড়ে এবং রক্তচাপ বাড়ে । অ্যাড্রিনালিন মৌল বিপাকীয় হার ( BMR ) বৃদ্ধি করে

  1. অ্যাড্রিনালিন হরমোনকে জরুরিকালীন হরমোন বলে কেন ?

Ans: অ্যাড্রিনালিন হরমোন অ্যাড্রেনাল গ্রন্থির মেডালা হতে ক্ষরিত হয় এবং আপৎকালীন বা জরুরিকালীন অবস্থায় ( যথা রাগ , ভয় , দুশ্চিন্তা ইত্যাদি )ইহা দেহকে স্বাভাবিক অবস্থায় নিয়ে আসে । তাই এই হরমোনকে আপৎকালীন হরমোন বলে । 

  1. প্রাণী হরমোনের তিনটি বৈশিষ্ট্য লেখো । 

Ans: প্রাণী হরমোনের বৈশিষ্ট্য : প্রাণী হরমোন অস্তঃক্ষরা গ্রন্থি থেকে নিঃসৃত হয়  রক্ত ও লসিকার মাধ্যমে ।

 

SOURCE-  BS

 

©kamaleshforeducation.in(2023)

error: Content is protected !!